Matthew 1:1 এই হল যীশু খ্রীষ্টের বংশ তালিকা৷ ইনি ছিলেন রাজা দায়ূদের বংশধর, দায়ূদ ছিলেন অব্রাহামের বংশধর৷ 2 অব্রাহামের ছেলে ইসহাক৷ ইসহাকের ছেলে যাকোব৷ যাকোবের ছেলে যিহূদা ও তার ভাইরা৷ 3 যিহূদার ছেলে পেরস ও সেরহ৷ এদের মায়ের নাম তামর৷ পেরসের ছেলে হিষ্রোণ৷ হিষ্রোণের ছেলে রাম৷ 4 রামের ছেলে অম্মীনাদব৷ অম্মীনাদবের ছেলে নহশোন৷ নহশোনের ছেলে সল্মোন৷ 5 সল্মোনের ছেলে বোয়স৷ এর মায়ের নাম রাহব৷ বোয়সের ছেলে ওবেদ৷ এর মায়ের নাম রূত্৷ ওবেদের ছেলে যিশয়৷ 6 যিশয়ের ছেলে রাজা দায়ূদ৷ দায়ূদের ছেলে রাজা শলোমন৷ এর মা ছিলেন ঊরিয়ের বিধবা স্ত্রী৷ 7 শলোমনের ছেলে রহবিয়াম৷ রহবিয়ামের ছেলে অবিয়৷ অবিয়ের ছেলে আসা৷ 8 আসার ছেলে যিহোশাফট৷ যিহোশাফটের ছেলে য়োরাম৷ য়োরামের ছেলে ঊষিয়৷ 9 উষিয়ের ছেলে য়োথম৷ য়োথমের ছেলে আহস৷ আহসের ছেলে হিষ্কিয়৷ 10 হিষ্কিয়ের ছেলে মনঃশি৷ মনঃশির ছেলে আমোন৷ আমোনের ছেলে য়োশিয়৷ 11 য়োশিয়ের ছেলে যিকনিয় ও তার ভাইরা৷ বাবিলে ইহুদীদের নির্বাসনের সময় এঁরা জন্মেছিলেন৷ 12 যিকনিয়ের ছেলে শল্টীয়েল৷ ইনি বাবিলে নির্বাসনের পর জন্মেছিলেন৷ শল্টীয়েলের ছেলে সরুব্বাবিল৷ 13 সরুব্বাবিলের ছেলে অবীহূদ৷ অবীহূদের ছেলে ইলীয়াকীম৷ ইলীয়াকীমের ছেলে আসোর৷ 14 আসোরের ছেলে সাদোক৷ সাদোকের ছেলে আখীম৷ আখীমের ছেলে ইলীহূদ৷ 15 ইলীহূদের ছেলে ইলিয়াসর৷ ইলিয়াসরের ছেলে মত্তন৷ মত্তনের ছেলে যাকোব৷ 16 যাকোবের ছেলে য়োষেফ৷ এই য়োষেফই ছিলেন মরিয়মের স্বামী এবং মরিয়মের গর্ভে যীশুর জন্ম হয়, যাঁকে মশীহ বা খ্রীষ্ট বলে৷ 17 এইভাবে অব্রাহাম থেকে দায়ূদ পর্যন্ত মোট চৌদ্দ পুরুষ৷ দায়ূদের পর থেকে বাবিলে নির্বাসন পর্যন্ত মোট চৌদ্দ পুরুষ এবং বাবিলে নির্বাসনের পর থেকে খ্রীষ্টের আগমন পর্যন্ত মোট চৌদ্দ পুরুষ৷ 18 এই হল যীশু খ্রীষ্টের জন্ম সংক্রান্ত বিবরণ: য়োষেফের সঙ্গে তাঁর মা মরিয়মের বাগদান হয়েছিল; কিন্তু তাঁদের বিয়ের আগেই জানতে পারা গেল য়ে পবিত্র আত্মার শক্তিতে মরিয়ম গর্ভবতী হয়েছেন৷ 19 তাঁর ভাবী স্বামী য়োষেফ ন্যায়পরায়ণ লোক ছিলেন৷ তিনি মরিয়মকে লোক চক্ষে লজ্জায় ফেলতে চাইলেন না, তাই তিনি মরিয়মের সাথে বিবাহের এই বাগদান বাতিল করে গোপনে তাকে ত্যাগ করতে চাইলেন৷ 20 তিনি যখন এসব কথা চিন্তা করছেন, তখন প্রভুর এক দূত স্বপ্নে তাঁকে দেখা দিয়ে বললেন, "য়োষেফ, দায়ূদের সন্তান, মরিয়মকে তোমার স্ত্রীরূপে গ্রহণ করতে ভয় করো না, কারণ তার গর্ভে য়ে সন্তান এসেছে, তা পবিত্র আত্মার শক্তিতেই হয়েছে৷ 21 দেখ, সে এক পুত্র সন্তান প্রসব করবে, তুমি তাঁর নাম রেখো যীশু, কারণ তিনি তাঁর লোকদের তাদের পাপ থেকে উদ্ধার করবেন৷" 22 এই সব ঘটেছিল যাতে ভাববাদীর মাধ্যমে প্রভু যা বলেছিলেন তা পূর্ণ হয়৷ 23 শোন! "এক কুমারী গর্ভবতী হবে, আর সে এক পুত্র সন্তান প্রসব করবে, তারা তাঁকে ইম্মানূয়েল যার অর্থ ‘আমাদের সঙ্গে ঈশ্বর’ বলে ডাকবে৷ 24 য়োষেফ ঘুম থেকে উঠে প্রভুর দূতের আদেশ অনুসারে কাজ করলেন৷ তিনি মরিয়মকে বিয়ে করে বাড়ি নিয়ে গেলেন৷ 25 কিন্তু মরিয়মের সেই সন্তানের জন্ম না হওয়া পর্যন্ত য়োষেফ মরিয়মের সঙ্গে সহবাস করলেন না৷ য়োষেফ সেই সন্তানের নাম রাখলেন যীশু৷
Matthew 2:1 হেরোদ যখন রাজা ছিলেন, সেই সময় যিহূদিয়ার বৈত্লেহমে যীশুর জন্ম হয়৷ সেই সময় প্রাচ্য থেকে কয়েকজন পণ্ডিত জেরুশালেমে এসে যীশুর খোঁজ করতে লাগলেন৷ 2 তাঁরা এসে জিজ্ঞেস করলেন, ‘ইহুদীদের য়ে নতুন রাজা জন্মেছেন তিনি কোথায়? কারণ পূর্ব দিকে আকাশে আমরা তাঁর তারা দেখে তাঁকে প্রণাম জানাতে এসেছি৷’ 3 রাজা হেরোদ একথা শুনে খুব বিচলিত হলেন এবং তাঁর সঙ্গে জেরুশালেমের সব লোক বিচলিত হল৷ 4 তখন তিনি ইহুদীদের মধ্যে যাঁরা প্রধান যাজক ও ব্যবস্থার শিক্ষক ছিলেন, তাঁদের ডেকে জিজ্ঞেস করলেন, মশীহ (খ্রীষ্ট) কোথায় জন্মগ্রহণ করবেন? 5 তাঁরা হেরোদকে বললেন, ‘যিহূদিয়া প্রদেশের বৈত্লেহমে, কারণ ভাববাদী সেরকমই লিখে গেছেন: 6 ‘আর তুমি যিহূদা প্রদেশের বৈত্লেহম, তুমি যিহূদার শাসনকর্তাদের চোখে কোন অংশে নগন্য নও, কারণ তোমার মধ্য থেকে একজন শাসনকর্তা উঠবেন যিনি আমার প্রজা ইস্রায়েলকে চরাবেন৷'" মীখা 5:2 7 তখন হেরোদ সেই পণ্ডিতদের সঙ্গে একান্তে দেখা করার জন্য তাঁদের ডেকে পাঠালেন৷ তিনি তাঁদের কাছ থেকে জেনে নিলেন ঠিক কোন সময় তারাটা দেখা গিয়েছিল৷ 8 এরপর হেরোদ তাদের বৈত্লেহমে পাঠিয়ে দিলেন আর বললেন, ‘দেখ, তোমরা সেখানে গিয়ে ভাল করে সেই শিশুর খোঁজ কর; আর খোঁজ পেলে, আমাকে জানিয়ে য়েও,. য়েন আমিও সেখানে গিয়ে তাঁকে প্রণাম করতে পারি৷’ 9 তাঁরা রাজার কথা শুনে রওনা দিলেন৷ তাঁরা পূর্ব দিকে আকাশে য়ে তারাটা উঠতে দেখেছিলেন, সেটা তাঁদের আগে আগে চলল এবং শিশুটি য়েখানে ছিলেন তার ওপরে থামল৷ 10 তাঁরা সেই তারাটি দেখে আনন্দে আত্মহারা হলেন৷ 11 পরে সেই ঘরের মধ্যে ঢুকে শিশুটি ও তাঁর মা মরিয়মকে দেখতে পেয়ে তাঁরা মাথা নত করে তাঁকে প্রণাম করলেন ও তাঁর উপাসনা করলেন৷ তারপর তাঁদের উপহার সামগ্রী খুলে বের করে তাঁকে সোনা, সুগন্ধি গুগ্গুল ও সুগন্ধি নির্যাস উপহার দিলেন৷ 12 এরপর ঈশ্বর স্বপ্নে তাঁদের সাবধান করে দিলেন য়েন তাঁরা হেরোদের কাছে ফিরে না যান, তাই তাঁরা অন্য পথে নিজেদের দেশে ফিরে গেলেন৷ 13 তাঁরা চলে যাবার পর প্রভুর এক দূত স্বপ্নে য়োষেফকে দেখা দিয়ে বললেন, ‘ওঠো!’ শিশুটি ও তাঁর মাকে নিয়ে মিশরে পালিয়ে যাও৷ যতদিন না আমি তোমাদের বলি, তোমরা সেখানেই থেকো, কারণ এই শিশুটিকে মেরে ফেলার জন্য হেরোদ এর খোঁজ করবে৷’ 14 তখন য়োষেফ উঠে সেই শিশু ও তাঁর মাকে নিয়ে রাতে মিশরে রওনা হলেন৷ 15 আর হেরোদের মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকলেন৷ এরূপ ঘটল যাতে ভাববাদীর মাধ্যমে প্রভুর কথা সফল হয়; প্রভু বললেন, ‘আমি মিশর থেকে আমার পুত্রকে ডেকে আনলাম৷’ 16 হেরোদ যখন দেখলেন য়ে সেই পণ্ডিতরা তাঁকে বোকা বানিয়েছে, তখন তিনি প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ হলেন৷ তিনি সেই পণ্ডিতদের কাছ থেকে য়ে সময়ের কথা জেনেছিলেন, সেই হিসাব মতো দু’বছর ও তার কম বয়সের যত ছেলে বৈত্লেহম ও তার আশেপাশের অঞ্চলে ছিল, সকলকে হত্যা করার হুকুম দিলেন৷ 17 এর ফলে ভাববাদী যিরমিয়র মাধ্যমে ঈশ্বর য়ে কথা বলেছিলেন তা পূর্ণ হল: 18 ‘রামায় একটা শব্দ শোনা গেল, কান্নার রোল ও তীব্র হাহাকার, রাহেল তাঁর সন্তানদের জন্য কাঁদছেন৷ তিনি কিছুতেই শান্ত হতে চাইছেন না, কারণ তারা কেউ আর বেঁচে নেই৷’ যিরমিয় 31:15 19 হেরোদ মারা যাবার পর প্রভুর এক দূত মিশরে য়োষেফকে স্বপ্নে দেখা দিয়ে বললেন, 20 ‘ওঠো! এই শিশু ও তাঁর মাকে সঙ্গে নিয়ে ইস্রায়েল দেশে ফিরে যাও, কারণ যাঁরা এই ছেলের প্রাণ নাশের চেষ্টা করেছিল তারা সকলে মারা গেছে৷’ 21 তখন য়োষেফ উঠে সেই শিশু ও তাঁর মাকে নিয়ে ইস্রায়েল দেশে গেলেন৷ 22 কিন্তু য়োষেফ যখন শুনলেন য়ে হেরোদের জায়গায় তাঁর পুত্র আর্খিলায় যিহূদিয়ার রাজা হয়েছে, তখন তিনি সেখানে ফিরে যেতে ভয় পেলেন৷ পরে আর এক স্বপ্নে তাঁকে সাবধান করে দেওয়া হল, 23 তখন তিনি গালীলে ফিরে নাসরত্ নগরে বসবাস করতে লাগলেন৷ এই রকম ঘটল য়েন ভাববাদীর মাধ্যমে ঈশ্বর যা বলেছিলেন তা পূর্ণ হয়: তিনি নাসরতীয়বলে আখ্যাত হলেন৷
Matthew 3:1 সেই সময় বাপ্তিস্মদাতা য়োহন এসে যিহূদিয়ার প্রান্তর এলাকায় প্রচার করতে লাগলেন৷ 2 তিনি বললেন, ‘তোমরা মন ফেরাও, দেখ স্বর্গরাজ্য এসে পড়ল৷’ 3 এই য়োহনের বিষয়েই ভাববাদী যিশাইয় বলেছিলেন: ‘প্রান্তরে এক উচ্চ রব শোনা যাচ্ছে, ‘তোমরা প্রভুর পথ প্রস্তুত কর; য়ে পথ দিয়ে তিনি যাবেন তা সমান কর৷’ যিশাইয় 40:3 4 য়োহন উটের লোমের তৈরী পোশাক পরতেন, কোমরে চামড়ার বেল্ট বাঁধতেন৷পঙ্গপালও বনমধু ছিল তাঁর খাদ্য৷ 5 জেরুশালেম, সমগ্র যিহূদিয়া ও যর্দনের আশপাশের অঞ্চলের লোকেরা প্রান্তরে তাঁর কাছে আসতে লাগল৷ 6 তারা এসে নিজেদের পাপ স্বীকার করত আর তিনি তাদের যর্দন নদীতে বাপ্তাইজ করতেন৷ 7 য়োহন যখন দেখলেন য়ে অনেক ফরীশীও সদ্দূকীতাঁর কাছে বাপ্তিস্মের জন্য আসছে, তখন তিনি তাদের বললেন, ‘তোমরা সাপের বাচ্চারা! ঈশ্বরের আসন্ন ক্রোধ থেকে নিষ্কৃতি পাবার জন্য কে তোমাদের চেতনা দিল? 8 তোমরা কাজে দেখাও, যাতে বোঝা যায় য়ে তোমরা সত্যিই মন ফিরিয়েছ৷ 9 আর নিজেরা মনে মনে একথা চিন্তা করে গর্ব করো না য়ে, ‘আমাদের পিতৃপুরুষ অব্রাহাম৷’ আমি তোমাদের বলছি, ঈশ্বর এই পাথরগুলিকেও অব্রাহামের সন্তানে পরিণত করতে পারেন৷ 10 প্রতিটি গাছের গোড়াতে কুড়ুল লাগানোই আছে৷ আর য়ে গাছে ভাল ফল ধরে না, তা কেটে আগুনে ফেলে দেওয়া হবে৷’ 11 ‘তোমরা মন ফিরিয়েছ বলে আমি তোমাদের জলে বাপ্তাইজ করছি৷ আমার পরে একজন আসছেন, যিনি আমার থেকে মহান, তাঁর জুতো জোড়া বইবার য়োগ্যও আমি নই ৷ তিনি পবিত্র আত্মায় ও আগুনে তোমাদের বাপ্তাইজ করবেন৷ 12 তাঁর কুলা তাঁর হাতেই আছে, তাঁর খামার তিনি পরিষ্কার করবেন৷ তিনি তাঁর গম গোলায় তুলবেন৷ কিন্তু য়ে আগুন কখনও নেভে না সেই আগুনে তূষ পুড়িয়ে ফেলবেন৷’ 13 সেই সময় যীশু গালীল থেকে যর্দন নদীর ধারে এলেন৷ তিনি য়োহনের কাছে বাপ্তিস্মের জন্য এগিয়ে গেলেন৷ 14 কিন্তু য়োহন তাঁকে বাধা দিতে চেষ্টা করলেন৷ য়োহন বললেন, ‘আমারই বরং আপনার কাছে বাপ্তাইজ হওয়া উচিত৷ আর আপনি কি না আমার কাছে এসেছেন?’ 15 এর উত্তরে যীশু তাঁকে বললেন, ‘এখন এরকমই হতে দাও, কারণ ঈশ্বরের ইচ্ছা এই ভাবেই আমাদের পূর্ণ করা উচিত৷’ তখন য়োহন যীশুকে বাপ্তাইজ করতে রাজী হলেন৷ 16 যীশু বাপ্তাইজিত হয়ে জল থেকে উঠে আসার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর সামনে আকাশ খুলে গেল, আর তিনি দেখলেন ঈশ্বরের আত্মা কপোতের মতো নেমে তাঁর ওপরে আসছেন৷ 17 স্বর্গ থেকে একটি স্বর শোনা গেল, সেই স্বর বলল, ‘এই আমার প্রিয় পুত্র, এর প্রতি আমি অত্যন্ত প্রীত৷’
Matthew 4:1 এরপর দিয়াবল য়েন যীশুকে পরীক্ষা করতে পারে তাই আত্মা যীশুকে প্রান্তরে নিয়ে গেলেন৷ 2 একটানা চল্লিশ দিন ও চল্লিশ রাত সেখানে উপোস করে কাটানোর পর যীশু ক্ষুধিত হলেন৷ 3 তখন সেই পরীক্ষক দিয়াবল তাঁর কাছে এসে বলল, ‘তুমি যদি ঈশ্বরের পুত্র হও, তবে এই পাথরগুলিকে রুটিতে পরিণত হতে বল৷’ 4 কিন্তু যীশু এর উত্তরে বললেন: ‘শাস্ত্রে একথা লেখা আছে, ‘মানুষ কেবল রুটিতে বাঁচে না, কিন্তু ঈশ্বরের মুখের প্রত্যেকটি বাক্যেই বাঁচে৷’দ্বিতীয় বিবরণ 8:3 5 দিয়াবল তখন পবিত্র নগরী জেরুশালেমের মন্দিরের চূড়ায় যীশুকে নিয়ে গেল; 6 আর যীশুকে বলল, ‘তুমি যদি ঈশ্বরের পুত্র হও তবে লাফ দিয়ে নীচে পড়, কারণ শাস্ত্রে তো একথা লেখা আছে: ‘তিনি তাঁর স্বর্গদূতদের তোমার উপর দৃষ্টি রাখতে আদেশ দেবেন আর তারা তোমাকে তুলে ধরবেন, য়েন পাথরের উপর পড়ে তোমার পায়ে আঘাত না লাগে৷'" গীতসংহিতা 91:11-12 7 যীশু তখন তাকে বললেন, ‘শাস্ত্রে একথাও লেখা আছে, ‘তোমার প্রভু ঈশ্বরকে তুমি পরীক্ষা করবে না৷’ দ্বিতীয় বিবরণ 6:16 8 এরপর দিয়াবল আবার তাঁকে খুব উঁচু একটা পাহাড়ে নিয়ে গিয়ে জগতের সমস্ত রাজ্য ও তার সম্পদ দেখাল৷ 9 পরে দিয়াবল যীশুকে বলল, ‘তুমি যদি আমার সামনে মাথা নত করে আমার উপাসনা কর, তবে এসবই আমি তোমায় দেব৷’ 10 তখন যীশু তাকে বললেন, ‘দূর হও শয়তান! কারণ শাস্ত্রে লেখা আছে,‘তোমরা অবশ্যই প্রভু ঈশ্বরেরই উপাসনা করবে, একমাত্র তাঁরই সেবা করবে৷'" দ্বিতীয় বিবরণ 6:13 11 তখন দিয়াবল তাঁকে ছেড়েচলে গেল আর স্বর্গদূতরা এসে যীশুর সেবা করলেন৷ 12 যীশু যখন শুনলেন য়োহনকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে, তখন তিনি গালীলে চলে গেলেন৷ 13 তিনি নাসরতে থাকলেন না, সেখান থেকে সবূলূন ও নপ্তালির সীমানার মধ্যে গালীল হ্রদের ধারে কফরনাহূমে গিয়ে বাস করতে লাগলেন৷ 14 এই সকল ঘটল যাতে ভাববাদী যিশাইয়র মাধ্যমে ঈশ্বর যা বলেছিলেন তা পূর্ণ হয়: 15 সাগরের পথে যর্দনের পশ্চিমপারে সবূলূন ও নপ্তালি দেশ, অইহুদীদের গালীল৷ 16 য়ে লোকরা অন্ধকারে বাস করে, তারা মহাজ্যোতি দেখতে পেল, আর যাঁরা মৃত্যুছায়ার দেশে থাকে, তাদের উপর আলোর উদয় হল৷’যিশাইয় 9:1-2 17 সেই সময় থেকে যীশু এই বলে প্রচার করতে শুরু করলেন, ‘তোমরা মন ফেরাও, কারণ স্বর্গরাজ্য কাছে এসে গেছে৷’ 18 যীশু যখন গালীল হ্রদের ধার দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন তিনি দুই ভাইকে দেখতে পেলেন, শিমোন যার অন্য নাম পিতর ও তাঁর ভাই আন্দ্রিয়৷ তাঁরা তখন ্ব্রদে জাল ফেলছিলেন৷ 19 যীশু তাদের বললেন, ‘আমার সঙ্গে চল, মাছ নয়, কেমন করে মানুষ ধরতে হয়, আমি তা তোমাদের শেখাব৷’ 20 শিমোন এবং আন্দরিয় তখনই জাল ফেলে যীশুর সঙ্গে চললেন৷ 21 সেখান থেকে যীশু আরও এগিয়ে গেলে আরো দুজন লোককে দেখতে পেলেন৷ সিবদিয়ের ছেলে যাকোব ও তাঁর ভাইয়োহন৷ যীশু দেখলেন, ‘তাঁরা তাদের বাবার সঙ্গে নৌকাতে জাল সারাচ্ছেন৷ যীশু তাঁদের ডাকলেন, 22 তাঁরা তখনইনৌকা ও তাঁদের বাবাকে ছেড়ে যীশুর সঙ্গে চললেন৷ 23 যীশু গালীলের সব জায়গায় ঘুরে ঘুরে, ইহুদীদের সমাজ-গৃহে গিয়ে শিক্ষা দিতে লাগলেন এবং সকলের কাছে স্বর্গরাজ্যের বিষয়ে সুসমাচার প্রচার করতে লাগলেন৷ তিনি লোকদের মধ্যে নানারকম রোগ-ব্যাধি ভাল করতে থাকলেন৷ 24 সমস্ত সুরিয়া দেশে তাঁর কথা ছড়িয়ে পড়ল, ফলে লোকরা নানা রোগে অসুস্থ রোগীদের সুস্থ করার জন্য তাঁর কাছে নিয়ে এলো, য়েমন ব্যথা-বেদনাগ্রস্ত, ভূতে পাওয়া, মৃগীরোগী ও পক্ষাঘাতগ্রস্ত, আর তিনি তাদের সকলকেই ভাল করলেন৷ 25 গালীল, দিকাপলি, জেরুশালেম, যিহূদিয়া ও যর্দনের ওপার থেকেও বহুলোক তাঁর পিছনে পিছনে চলল৷
Matthew 5:1 যীশু অনেক লোকের ভীড় দেখে একটা পাহাড়ের ওপর উঠে গেলেন৷ তিনি সেখানে বসলে শিষ্যরা তাঁর কাছে এলেন৷ 2 এরপর তিনি তাঁদের কাছে শিক্ষা দিতে শুরু করলেন, বললেন: 3 ‘ধন্য সেই লোকেরা যাঁরা আত্মায় নত-নম্র, কারণ স্বর্গরাজ্য তাদেরই৷ 4 ধন্য সেইলোকেরা যাঁরা শোক করে, কারণ তারা ঈশ্বরের কাছ থেকে সান্ত্বনা পাবে৷ 5 বিনযী লোকেরা ধন্য৷ তারা ঈশ্বরের প্রতিশ্রুত দেশের অধিকার লাভ করবে৷’ 6 ধন্য সেইলোকেরা, যাঁরা ন্যায়পরায়ণতার জন্য ক্ষুধার্ত ও তৃষ্ণার্ত কারণ তারা তৃপ্ত হবে৷ 7 যাঁরা দয়াবান তারা ধন্য, কারণ তারা দয়া পাবে৷ যাদের অন্তর পরিশুদ্ধ তারা ধন্য, কারণ তারা ঈশ্বরের দর্শন পাবে৷ 8 ধন্য তারা যাঁরা তাদের চিন্তায় পরিশুদ্ধ, কারণ তারা ঈশ্বরের সঙ্গে থাকবে৷ 9 ধন্য তারা যাঁরা শান্তি স্থাপনের জন্য কাজ করে, কারণ তারা ঈশ্বরের সন্তানরূপে পরিচিত হবে৷ 10 ঈশ্বরের পথে চলতে গিয়ে যাঁরা নির্য়াতন ভোগ করছে তারা ধন্য, কারণ স্বর্গরাজ্য তাদেরই হবে৷ 11 তোমরা আমার অনুসারী হয়েছ বলে যখন লোকে তোমাদের অপমান ও নির্য়াতন করে আর তোমাদের নামে মিথ্যা কুত্সা রটায় তখন তোমরা ধন্য৷ 12 তোমরা আনন্দ করো, খুশী হও, কারণ স্বর্গে তোমাদের জন্য মহাপুরস্কার সঞ্চিত আছে৷ তোমাদের আগে য়ে ভাববাদীরা ছিলেন লোকে তাঁদেরও এভাবেইনির্য়াতন করেছে৷ 13 ‘তোমরা পৃথিবীর লবন, কিন্তু লবন যদি তার নিজের স্বাদ হারায় তবে কেমন করে তা আবার নোন্তা করা যাবে? তখন তা আর কোন কাজে লাগে না৷ তা কেবল বাইরে ফেলে দেওযা হয় আর লোকরা তা মাড়িয়ে যায়৷ 14 ‘তোমরা জগতের আলো, পাহাড়ের ওপরে কোন শহর, যা কখনও লুকানো যায় না৷ 15 বাতি জে্বলে কেউ পাত্রের নীচে রাখে না, তা বাতিদানের ওপরেইরাখে আর তা ঘরের সকলকে আলো দেয়৷ 16 তেমনি তোমাদের আলোও লোকদের সামনে উজ্জ্বল হোক, য়েন তারা তোমাদের সত্কাজ দেখে তোমাদের স্বর্গের পিতা ঈশ্বরের মহিমা কীর্তন করে৷ 17 ভেবো না য়ে আমি মোশির বিধি-ব্যবস্থা ও ভাববাদীদের শিক্ষা ধ্বংস করতে এসেছি৷ আমি তা ধ্বংস করতে আসিনি বরং তা পূর্ণ করতেইএসেছি৷ 18 আমি তোমাদের সত্যি বলছি আকাশ ও পৃথিবীর লোপ না হওয়া পর্যন্ত বিধি-ব্যবস্থার বিন্দু বিসর্গও লোপ হবে না, বিধি-ব্যবস্থার সবই পূর্ণ হবে৷ 19 তাই কেউ যদি এইসব আদেশের মধ্যে অতি সামান্য আদেশও অমান্য করে আর অপরকে তা করতে শিক্ষা দেয়, তবে সে স্বর্গরাজ্যে সব থেকে তুচ্ছ বলে গন্য হবে৷ কিন্তু যাঁরা বিধি-ব্যবস্থা পালন করে ও অপরকে তা পালন করতে শিক্ষা দেয়, তারা স্বর্গরাজ্যে মহান বলে গন্য হবে৷ 20 আমি তোমাদের সত্যি বলছি ব্যবস্থার শিক্ষক ও ফরীশীদের থেকে তোমাদের ধার্মিকতা যদি উন্নত মানের না হয় তবে তোমরা স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে না৷ 21 ‘তোমরা শুনেছ, আমাদের পিতৃপুরুষদের কাছে বলা হয়েছিল, ‘নরহত্যা করো না;আর কেউ নরহত্যা করলে তাকে বিচারালয়ে তার জবাবদিহি করতে হবে৷ 22 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, যদি কেউ কোনো লোকের প্রতি ক্রুদ্ধ হয় বিচারে তাকে তার জবাবদিহি করতে হবে৷ আর কেউ যদি কোন লোককে বলে, ‘ওরে মূর্খ’ (অর্থাত্ নির্বোধ) তবে তাকে ইহুদী মহাসভার সামনে তার জবাব দিতে হবে৷ কেউ যদি কাউকে বলে ‘তুমি পাষণ্ড,’ তবে তাকে নরকের আগুনেই তার জবাব দিতে হবে৷ 23 ‘মন্দিরে যজ্ঞবেদীর সামনে নৈবেদ্য উত্সর্গ করার সময় যদি তোমার মনে পড়ে য়ে তোমার বিরুদ্ধে তোমার ভাইয়ের কোন অভিযোগ আছে, 24 তবে সেই নৈবেদ্য যজ্ঞবেদীর সামনে রেখে চলে যাও, প্রথমে গিয়ে তার সঙ্গে সে বিষয়ে মিটমাট করে নাও, পরে এসে তোমার নৈবেদ্য উত্সর্গ কোরো৷ 25 ‘তোমার শত্রু যদি তোমার বিরুদ্ধে মামলা করতে চায় তবে আদালতে নিয়ে যাবার সময় পথেই তার সঙ্গে তাড়াতাড়ি মিটমাট করে ফেল; তা না হলে সে তোমাকে বিচারকের হাতে তুলে দেবে, বিচারক তোমাকে রক্ষীর হাতে দেবে আর রক্ষীরা তোমাকে কারাগারে পাঠাবে৷ 26 আমি তোমায় সত্যি বলছি, সেখান থেকে তুমি ছাড়া পাবে না, যতক্ষণ না তোমার দেনার শেষ পয়সাটা চুকিয়ে দাও৷ 27 তোমরা শুনেছ, একথা বলা হয়েছে: ‘য়ৌনপাপ করো না৷’ 28 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি কেউ যদি কোন স্ত্রীলোকের দিকে লালসাপূর্ণ দৃষ্টিতে তাকায় তবে সে মনে মনে তার সঙ্গে য়ৌন পাপ করল৷ 29 সেই রকম তোমার ডান চোখ যদি পাপ করার জন্য তোমায় প্ররোচিত করে তবে তা উপড়ে ফেলে দাও৷ সমস্ত দেহ নিয়ে নরকে যাওয়ার চেয়ে বরং তার একটা অংশ হারানো তোমার পক্ষে ভালো৷ 30 যদি তোমার ডান হাত পাপ করতে প্ররোচিত করে, তবে তা কেটে ফেলে দাও৷ তোমার সমস্ত শরীর নরকে যাওয়ার চেয়ে বরং তার একটা অঙ্গ নষ্ট হওয়া তোমার পক্ষে ভালো৷ 31 ‘আবার বলা হয়েছে, ‘কেউ যদি তার স্ত্রীকে ত্যাগ করতে চায়, তবে তাকে ত্যাগপত্র দিতে হবে৷ 32 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, একমাত্র য়ৌনপাপের দোষ ছাড়া অন্য কোন কারণে কেউ যদি তার স্ত্রীকে ত্যাগ করে, তবে সে তাকে ব্যাভিচারিণী হবার পথে নামিয়ে দেয়৷ আর য়ে কেউ সেই পরিত্যক্তা স্ত্রীকে বিয়ে করে সেও য়ৌনপাপ করে৷ 33 ‘তোমরা একথা ও শুনেছ, আমাদের পিতৃপুরুষদের বলা হয়েছিল, ‘তোমরা ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে য়ে সব প্রতিশ্রুতি কর তা ভেঙ্গো না, তোমাদের কথা মতো সে সবই পূর্ণ করো৷’ 34 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, তোমরা কোন শপথইকরো না৷ স্বর্গের নামে করো না, কারণ তা ঈশ্বরের সিংহাসন৷ 35 পৃথিবীর নামে শপথ করো না, কারণ পৃথিবী ঈশ্বরের পাদপীঠ৷ জেরুশালেমের নামেও শপথ করো না, কারণ তা হল মহান রাজার নগরী৷ 36 এমন কি তোমার মাথার দিব্যিও দিও না, কারণ তোমার মাথার একগাছা চুল সাদা কি কালো করার ক্ষমতা তোমার নেই ৷ 37 তোমাদের কথার ‘হ্যাঁ’ য়েন ‘হ্যাঁ’ আর ‘না’ য়েন ‘না’ হয়, এছাড়া অন্য আর যা কিছু তা মন্দের কাছ থেকে আসে৷ 38 ‘তোমরা শুনেছ, একথা বলা হয়েছে য়ে, ‘চোখের বদলে চোখ ও দাঁতের বদলে দাঁত৷’ 39 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, দুষ্ট লোকদের প্রতিরোধ করো না, বরং কেউ যদি তোমার ডান গালে চড় মারে, তবে তার দিকে অপর গালটিও বাড়িয়ে দিও৷ 40 কেউ যদি তোমার পাজামা নেবার জন্য আদালতে মামলা করতে চায়; তবে তাকে তোমার ধূতিটাও ছেড়ে দিও৷ 41 যদি কেউ তার বোঝা নিয়ে তোমাকে এক মাইল পথ য়েতে বাধ্য করে, তার সঙ্গে দু মাইল য়েও৷ 42 কেউ যদি তোমার কাছ থেকে কিছু চায়, তাকে তা দিও৷ তোমার কাছ থেকে কেউ ধার চাইলে তাকে তা দিতে অস্বীকার করো না৷ 43 ‘তোমরা তাদের বলতে শুনেছ, ‘তোমার প্রতিবেশীকে ভালবাসো,শত্রুকে ঘৃণা করো৷ 44 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, তোমাদের শত্রুদের ভালবাসো৷ যাঁরা তোমাদের প্রতি নির্য়াতন করে তাদের জন্য প্রার্থনা করো, 45 য়েন তোমরা স্বর্গের পিতার সন্তান হতে পার৷ তিনি তো ভাল মন্দ সকলের উপর সূর্য়্য়ালোক দেন, ধার্মিক অধার্মিক সকলের উপর বৃষ্টি দেন৷ 46 আমি একথা বলছি, কারণ যাঁরা তোমাদের ভালবাসে তোমরা যদি কেবল তাদেরইভালবাস, তবে তোমরা কি পুরস্কার পাবে? কর আদায়কারীরাও কি তাইকরে না? 47 তোমরা যদি কেবল তোমাদের ভাইদেরইশুভেচ্ছা জানাও, তবে অন্যদের থেকে আর বেশী কি করলে? বিধর্মীরাও তো এমন করে থাকে৷ 48 তাই তোমাদের স্বর্গের পিতা য়েমন সিদ্ধ তোমরাও তেমন সিদ্ধ হও৷
Matthew 6:1 ‘সাবধান! লোক দেখানো ধর্ম কর্ম বা ঈশ্বরের কাজ করো না৷ তাহলে তোমাদের স্বর্গের পিতার কাছ থেকে কোন পুরস্কার পাবে না৷ 2 ‘তাই তুমি যখন কোন অভাবী মানুষকে কিছু দাও, তখন তূরী বাজিয়ে তা দিও না৷ যাঁরা ভণ্ড তারা লোকদের প্রশংসা পাবার আশায় সমাজ-গৃহে ও পথে-ঘাটে ঐভাবে তূরী বাজিয়ে দান করে৷ আমি বলছি, তাদের পুরস্কার তারা পেয়ে গেছে৷ 3 কিন্তু তুমি যখন অভাবী লোকদের কিছু দান কর, তখন তোমার ডান হাত কি করছে তা তোমার বাঁ হাতকে জানতে দিও না, 4 য়েন তোমার দান গোপনে দেওয়া হয়৷ তাহলে তোমার পিতা ঈশ্বর যিনি গোপনে সব কিছু দেখেন, তিনি তোমায় পুরস্কার দেবেন৷ 5 ‘তোমরা যখন প্রার্থনা কর, তখন ভণ্ডদের মতো করো না, তারা লোকদের কাছে নিজেদের দেখাবার জন্য সমাজ-গৃহে ও রাস্তার মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে প্রার্থনা করতে ভালবাসে৷ আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তারা তাদের পুরস্কার পেয়ে গেছে৷ 6 কিন্তু তুমি যখন প্রার্থনা কর, তখন তোমার ঘরের ভেতরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে তোমার পিতা য়াঁকে দেখা যায় না, তাঁর কাছে প্রার্থনা করো৷ তাহলে তোমার পিতা যিনি গোপনে যা কিছু করা হয় দেখেন, তিনি তোমাকে পুরস্কার দেবেন৷ 7 ‘তোমরা যখন প্রার্থনা কর, তখন বিধর্মীদের মতো একই প্রার্থনার পুনরাবৃত্তি করো না, কারণ তারা মনে করে তাদের বাক্যবাহুল্যের গুনে তারা প্রার্থনার উত্তর পাবে৷ 8 তাইতোমরা তাদের মতো হযো না, কারণ তোমাদের চাওয়ার আগেই তোমাদের পিতা জানেন তোমাদের কি প্রযোজন আছে৷ 9 তাইতোমরা এইভাবে প্রার্থনা করো,‘হে আমাদের স্বর্গের পিতা, তোমার নাম পবিত্র বলে মান্য হোক্৷ 10 তোমার রাজত্ব আসুক৷ তোমার ইচ্ছা য়েমন স্বর্গে তেমনি পৃথিবীতেও পূর্ণ হোক৷ 11 য়ে খাদ্য় আমাদের প্রযোজন তা আজ আমাদের দাও৷ 12 আমাদের কাছে যাঁরা অপরাধী, আমরা য়েমন তাদের ক্ষমা করেছি, তেমনি তুমিও আমাদের সব অপরাধ ক্ষমা কর৷ 13 আমাদের প্রলোভনে পড়তে দিও না, কিন্তু মন্দের হাত থেকে উদ্ধার কর৷’ 14 তোমরা যদি অন্যদের অপরাধ ক্ষমা কর, তবে তোমাদের স্বর্গের পিতাও তোমাদের ক্ষমা করবেন৷ 15 কিন্তু তোমরা যদি অন্যদের ক্ষমা না কর, তবে তোমাদের স্বর্গের পিতা তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করবেন না৷ 16 ‘যখন তোমরা উপবাস কর, তখন ভণ্ডদের মতো মুখ শুকনো করে রেখো না৷ তারা য়ে উপবাস করেছে তা লোকেদের দেখাবার জন্য তারা মুখ শুকনো করে ঘুরে বেড়ায়৷ আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তারা তাদের পুরস্কার পেয়ে গেছে৷ 17 কিন্তু তুমি যখন উপবাস করবে, তোমার মাথায় তেল দিও আর মুখ ধুযো৷ 18 য়েন অন্য লোকে জানতে না পারে য়ে তুমি উপবাস করছ৷ তাহলে তোমার পিতা ঈশ্বর, য়াঁকে তুমি চোখে দেখতে পাচ্ছ না, তিনি দেখবেন৷ তোমার পিতা ঈশ্বর যিনি গোপন বিষয়ও দেখতে পান, তিনি তোমায় পুরস্কার দেবেন৷ 19 ‘এই পৃথিবীতে তোমরা নিজেদের জন্য ধন-সম্পদ সঞ্চয় করো না৷ এখানে ঘুন ধরে ও মরচে পড়ে তা নষ্ট হয়ে যায়, আর চোরে সিঁধ কেটে তা চুরিও করতে পারে৷ 20 বরং স্বর্গে তোমার জন্য সম্পদ সঞ্চয় কর, সেখানে ঘুন ধরবে না, মরচেও পড়বে না, চোরেও চুরি করবে না৷ 21 তোমার ধন-সম্পদ য়েখানে রয়েছে, তোমার মনও সেখানে পড়ে থাকবে৷ 22 ‘চোখইদেহের প্রদীপ, তাই তোমার চোখ যদি নির্মল হয়, তোমার সারা দেহও উজ্জ্বল হবে৷ 23 কিন্তু তোমার চোখ যদি অশুচি হয়, তবে তোমার সমস্ত দেহ অন্ধকারে ছেয়ে যাবে৷ তোমার মধ্যেকার আলো যদি অন্ধকারাচ্ছন্নইহয়, তবে সে অন্ধকার নিজে কি ভীষণ৷ 24 ‘কোন মানুষ দুজন কর্তার দাসত্ব করতে পারে না৷ সে হয়তো প্রথম জনকে ঘৃণা করবে ও দ্বিতীয় জনকে ভালবাসবে অথবা প্রথম জনের প্রতি অনুগত হবে ও দ্বিতীয় জনকে তুচ্ছ করবে৷ ঈশ্বর ও ধন-সম্পত্তি এই উভয়ের দাসত্ব তোমরা করতে পারো না৷ 25 ‘তাই আমি তোমাদের বলছি, বেঁচে থাকার জন্য কি আহার করব বা কি পান করব এ নিয়ে চিন্তা করো না৷ আর কি পরব একথা ভেবে দেহের বিষয়েও চিন্তা করো না৷ খাদ্য়ের চেয়ে জীবন কি মূল্যবান নয়, অথবা পোশাকের চেয়ে দেহটা কি মূল্যবান নয়? 26 আকাশের পাখীদের দিকে একবার তাকাও, দেখ, তারা বীজ বোনে না বা ফসলও কাটে না, অথবা গোলা ঘরে নিয়ে গিয়ে তা জমাও করে না৷ তোমাদের স্বর্গের পিতা ঈশ্বর তাদের আহার য়োগান৷ তোমরা কি ওদের থেকে আরও মূল্যবান নও? 27 তোমাদের মধ্যে কে ভাবনা চিন্তা করে নিজের আযু একঘন্টা বাড়াতে পারে? 28 ‘পোশাকের বিষয়েই বা কেন এত চিন্তা কর? মাঠের লিলি ফুলগুলির দিকে চেয়ে দেখ কিভাবে তারা ফুটে উঠেছে৷ তারা পরিশ্রম করে না, নিজেদের জন্য পোশাকও তৈরী করে না৷ 29 কিন্তু আমি তোমাদের সত্যি বলছি, রাজা শলোমন তার সমস্ত জাঁকজমক সত্ত্বেও তার পোশাকে ঐ ফুলগুলির একটির মতোও নিজেকে সাজাতে পারে নি৷ 30 মাঠে য়ে ঘাস আছে আর কাল উনুনে ফেলে দেওয়া হবে, ঈশ্বর যখন তাদের এত সুন্দর করে সাজান, তখন হে অল্প বিশ্বাসী লোকেরা, তিনি কি তোমাদের আরও সুন্দর করে সাজাবেন না? 31 তোমরা এই বলে চিন্তা করো না, ‘আমরা কি খাবো?’ বা ‘কি পান করবো?’ বা ‘কি পরবো? 32 বিধর্মীরাইএসব নিয়ে চিন্তা করে৷ তোমাদের স্বর্গের পিতা ঈশ্বর তো জানেন এসব জিনিসের তোমাদের প্রযোজন আছে৷ 33 তাই তোমরা প্রথমে ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয়ে ও তাঁর ইচ্ছা কি তা পূর্ণ করতে চেষ্টা কর, তাহলে তোমাদের যা কিছু প্রযোজন সে সব দেওয়া হবে৷ 34 কালকের জন্য চিন্তা করো না; কালকের চিন্তা কালকের জন্য থাক৷ প্রতিটি দিনের পক্ষে সেই দিনের কষ্টই যথেষ্ট৷
Matthew 7:1 ‘পরের বিচার করো না, তাহলে তোমার বিচারও কেউ করবে না৷ 2 কারণ য়েভাবে তোমরা অন্যর বিচার কর, সেই ভাবে তোমাদেরও বিচার করা হবে; আর য়েভাবে তুমি মাপবে সেই ভাবে তোমার জন্যও মাপা হবে৷ 3 ‘তোমার ভাইয়ের চোখে য়ে কুটো আছে কেবল তা-ইদেখছ; কিন্তু নিজের চোখের মধ্যে য়ে তক্তা আছে তা দেখতে পাও না? 4 যখন তোমার নিজের চোখেই একটা তক্তা রয়েছে তখন কিভাবে তোমার ভাইকে বলছ, ‘এস তোমার চোখ থেকে কুটোটা বের করে দিই?’ 5 ভণ্ড! প্রথমে তোমার নিজের চোখ থেকে তক্তাটা বের করে ফেল, তাহলে তোমার ভাইয়ের চোখ থেকে কুটোটা বের করার জন্য স্পষ্ট দেখতে পাবে৷ 6 ‘কোন পবিত্র বস্তু কুকুরকে দিও না আর শুযোরের সামনে তোমাদের মুক্তো ছুঁড়ো না, তাহলে সে তা পায়ের তলায় মাড়িয়ে নষ্ট করবে ও তোমার দিকে ফিরে তোমায় আক্রমণ করবে৷ 7 ‘চাইতে থাক, তোমাদের দেওয়া হবে৷ খুঁজতে থাক, পাবে৷ দরজায় ধাক্কা দিতে থাক, তোমাদের জন্য দরজা খুলে দেওয়া হবে৷ 8 কারণ য়ে চাইতে থাকে সে পায়, য়ে খুঁজতে থাকে সে খুঁজে পায়, আর য়ে দরজায় ধাক্কা দিতে থাকে তার জন্য দরজা খুলে দেওয়া হয়৷ 9 তোমার ছেলে যদি তোমার কাছে রুটি চায়, তবে তোমাদের মধ্যে এমন কেউ আছে কি, য়ে তার সন্তানকে রুটির বদলে পাথরের টুকরো দেবে? 10 যদি সে একটা মাছ চায় তবে বাবা কি তার হাতে একটা সাপ তুলে দেবে? নিশ্চয় না৷ 11 তোমরা মন্দ হয়েও যদি তোমাদের সন্তানদের ভাল ভাল জিনিস দিতে জানো, তবে তোমাদের স্বর্গের পিতা ঈশ্বরের কাছে যাঁরা চায়, তাদের তিনি নিশ্চয়ই উত্কৃষ্ট জিনিস দেবেন৷ 12 ‘তাই অপরের কাছ থেকে তোমরা য়ে ব্যবহার প্রত্যাশা কর, তাদের প্রতিও তেমনি ব্যবহার কর৷ এটাই হল মোশির বিধি-ব্যবস্থা ও ভাববাদীদের শিক্ষার অর্থ৷ 13 ‘সংকীর্ণ দরজা দিয়ে সেই পথে প্রবেশ করো, য়ে পথ স্বর্গের দিকে নিয়ে যায়৷ য়ে পথ ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায় তার দরজা প্রশস্ত, পথও চওড়া, বহু লোক সেই পথেইচলছে৷ 14 কিন্তু য়ে পথ জীবনের দিকে গেছে তার দরজা সংকীর্ণ আর পথও দুর্গম, খুব অ’ লোকইতার সন্ধান পায়৷ 15 ‘ভণ্ড ভাববাদীদের থেকে সাবধান৷ তারা তোমাদের কাছে নিরীহ মেষের ছদ্মবেশে আসে অথচ ভেতরে তারা হিংস্র নেকড়ে বাঘ৷ 16 তাদের জীবনের ফল দেখেই তোমরা তাদের চিনতে পারবে৷ কেউ কি কাঁটাঝোপের মধ্যে থেকে দ্রাক্ষা বা শিয়ালকাঁটার ভেতর থেকেডুমুর পেতে পারে? 17 ঠিক সেই ভাবে প্রত্যেক ভাল গাছে ভাল ফলই ধরে, কিন্তু খারাপ গাছে খারাপ ফলইধরে৷ 18 ভাল গাছে খারাপ ফল এবং খারাপ গাছে ভাল ফল ধরতে পারে না৷ 19 য়ে গাছে ভাল ফল ধরে না তা কেটে আগুনে ফেলে দেওয়া হয়৷ 20 তাই আমি তোমাদের আবার বলছি, তারা যা করে তা দেখেইতোমরা তাদের চিনতে পারবে৷ 21 ‘যাঁরা আমাকে ‘প্রভু, প্রভু’ বলে তাদের প্রত্যেকেইয়ে স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে তা নয়৷ আমার স্বর্গের পিতার ইচ্ছা য়ে পালন করবে, কেবল সেই স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে৷ 22 সেই দিন অনেকে আমায় বলবে, ‘প্রভু, প্রভু আমরা কি আপনার নামে ভাববাণী বলিনি? আপনার নামে আমরা কি ভূতদের তাড়াই নি? আপনার নামে আমরা কি অনেক অলৌকিক কাজ করিনি?’ 23 তখন আমি তাদের স্পষ্ট বলব, ‘আমি তোমাদের কখনও আপন বলে জানিনি, দুষ্টের দল! আমার সামনে থেকে দূর হও৷’ 24 ‘তাইবলি, য়ে কেউ আমার কথা শোনে ও তা পালন করে, সে এমন এক বুদ্ধিমান লোকের মতো য়ে পাথরের ভিতের ওপর তার বাড়ি তৈরী করল৷ 25 পরে বৃষ্টি নামল, বন্যা এল এবং প্রচণ্ড ঝোড়ো বাতাস বয়ে সেই বাড়ির গায়ে লাগল; কিন্তু সেই বাড়িটা ধসে পড়ল না, কারণ তা পাথরের ওপরে তৈরী করা হয়েছিল৷ 26 আবার য়ে কেউ আমার এই সব কথা শুনে তা পালন না করে, সে একজন মূর্খ লোকের মতো, য়ে বালির উপরে বাড়ি তৈরী করেছিল৷ 27 পরে বৃষ্টি নামল, বন্যা এল, আর ঝোড়ো বাতাস এসে তার বাড়িতে ধাক্কা মারল, তাতে বাড়িটা কি সাংঘাতিক ভাবেই না ধসে পড়ল৷’ 28 যীশু যখন এই সব কথা বলা শেষ করলেন, তখন জনতা তাঁর এই সব শিক্ষা শুনে হতবুদ্ধি হয়ে গেল৷ 29 কারণ যীশু একজন ব্যবস্থার শিক্ষকের মতো শিক্ষা দিচ্ছিলেন না, বরং যার অধিকার আছে সেইরকম লোকের মতোইশিক্ষা দিচ্ছিলেন৷
Matthew 8:1 যীশু সেই পাহাড় থেকে নেমে এলে অনেক লোক তাঁর পিছনে পিছনে চলতে লাগল৷ 2 সেই সময় একজন কুষ্ঠ রোগী যীশুর কাছে এসে তাঁর সামনে নতজানু হয়ে বলল, ‘প্রভু, আপনি ইচ্ছে করলেই আমাকে ভাল করে দিতে পারেন৷’ 3 তখন যীশু সেইকুষ্ঠ রোগীর দিকে হাত বাড়িয়ে তাকে স্পর্শ করলেন৷ তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ, আমি তাই-ইচাই৷ তুমি ভাল হয়ে যাও৷’ সঙ্গে সঙ্গে তার কুষ্ঠ রোগ ভাল হয়ে গেল৷ 4 তখন যীশু তাকে বললেন, ‘দেখ, তুমি কাউকে একথা বোলো না, বরং যাও যাজকের কাছে গিয়ে নিজেকে দেখাও; আর গিয়ে মোশির আদেশ অনুসারে নৈবেদ্য উত্সর্গ কর৷ তাতে তারা জানবে য়ে তুমি ভাল হয়ে গেছ৷’ 5 এরপর যীশু যখন কফরনাহূম শহরে গেলেন, তখন একজন শতপতি তাঁর কাছে এসে অনুনয় করে বললেন, 6 ‘প্রভু, আমার চাকরের পক্ষাঘাত হয়েছে, সে বিছানায় পড়ে আছে ও যন্ত্রণায় ছট্ফট্ করছে৷’ 7 যীশু তাঁকে বললেন, ‘হ্যাঁ, আমি যাব, এবং তাকে সুস্থ করব৷’ 8 সেইশতপতি তখন যীশুকে বললেন, ‘প্রভু, আমি এমন য়োগ্য নইয়ে আমার বাড়ীতে আপনি আসবেন৷ আপনি কেবল মুখে বলে দিন, তাতেইআমার চাকর ভাল হয়ে যাবে৷ 9 আমি নিজে অপরের কর্তৃত্বের অধীন আর আমার সৈন্যদের উপরে আমি কর্তৃত্ব করি৷ আমি কাউকে ‘যাও’ বললে সে যায়, আবার কাউকে ‘এস’ বললে সে আসে; আর আমার চাকরকে ‘এটা কর’ বললে সে তা করে৷’ 10 যীশু একথা শুনে আশ্চর্য হলেন; যাঁরা তাঁর পিছনে পিছনে যাচ্ছিল তাদের বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি সমগ্র ইস্রায়েলে আমি এত বেশী বিশ্বাস কারও মধ্যে দেখতে পাইনি৷ 11 আমি তোমাদের আরো বলছি য়ে, পূর্ব ও পশ্চিম থেকে অনেকে আসবে আর অব্রাহাম, ইসহাক ও যাকোবের সঙ্গে স্বর্গরাজ্যে ভোজে বসবে৷ 12 কিন্তু যাঁরা রাজ্যের উত্তরাধিকারী, তাদের বাইরে অন্ধকারে ফেলে দেওয়া হবে৷ সেখানে লোকেরা কান্নাকাটি করবে ও যন্ত্রণায় দাঁতে দাঁত ঘষবে৷’ 13 এরপর যীশু সেই শতপতিকে বললেন, ‘যাও, তুমি য়েমন বিশ্বাস করেছ, তেমনি হোক্৷’ আর সেই মূহুর্তেই তার চাকর সুস্থ হয়ে গেল৷ 14 যীশু পিতরের বাড়ীতে গিয়ে দেখলেন, পিতরের শাশুড়ীর ভীষণ জ্বর হয়েছে, আর তিনি বিছানায় শুয়ে আছেন৷ 15 যীশু তাঁর হাত স্পর্শ করা মাত্রই জ্বর ছেড়ে গেল৷ তখন তিনি বিছানা ছেড়ে উঠে যীশুর সেবা করতে লাগলেন৷ 16 সন্ধ্যা হলে লোকেরা ভূতে পাওয়া অনেক লোককে যীশুর কাছে নিয়ে এল৷ আর তিনি তাঁর হুকুমে সেই সব ভূতদের দূর করে দিলেন৷ এছাড়া তিনি রোগীদের সুস্থ করলেন৷ 17 এর দ্বারা ভাববাদী যিশাইয়র ভাববাণী পূর্ণ হল:‘তিনি আমাদের দুর্বলতা গ্রহণ করলেন, আমাদের ব্যাধিগুলি বহন করলেন৷’ যিশাইয় 53:4 18 যীশু যখন দেখলেন য়ে তাঁর চারপাশে অনেক লোক জড়ো হয়েছে, তখনহ্রদের ওপারে যাওয়ার জন্য অনুগামীদের আদেশ দিলেন৷ 19 একজন ব্যবস্থার শিক্ষক তাঁর কাছে এসে বললেন, ‘গুরু, আপনি য়েখানে যাবেন আমিও সেখানে যাব৷’ 20 তখন যীশু তাকে বললেন, ‘শিয়ালের গর্ত আছে এবং আকাশের পাখীদের বাসা আছে; কিন্তু মানবপুত্রের মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই৷’ 21 তাঁর অনুগামীদের মধ্যে আর একজন বললেন, ‘প্রভু আগে আমার বাবাকে কবর দিয়ে আসার অনুমতি দিন, তারপর আমি আপনাকে অনুসরণ করব৷’ 22 কিন্তু যীশু তাকে বললেন, ‘তুমি আমার সঙ্গে এস, যাঁরা মৃত তারাই মৃতদের কবর দেবে৷’ 23 এরপর যীশু একটা নৌকাতে উঠলেন আর তার শিষ্যরা তাঁর সঙ্গে গেলেন৷ 24 সেইহ্রদের মধ্যে হঠাত্ ভীষণ ঝড় উঠল, তাতে নৌকার উপর ঢেউ আছড়ে পড়তে লাগল৷ যীশু তখন ঘুমোচ্ছিলেন৷ 25 তাইশিষ্যরা তাঁর কাছে গিয়ে তাঁর ঘুম ভাঙ্গিয়ে বললেন, ‘প্রভু বাঁচান! আমরা য়ে ডুবে মরলাম৷’ 26 তখন যীশু তাঁদের বললেন, ‘হে অল্প বিশ্বাসীর দল! কেন তোমরা এত ভয় পাচ্ছ?’ তারপর তিনি উঠে ঝোড়ো বাতাস ওহ্রদের ঢেউকে ধমক দিলেন, তখন সব কিছু শান্ত হল৷ 27 এতে শিষ্যরা আশ্চর্য হয়ে বললেন, ‘ইনি কিরকম লোক? এঁর কথা এমন কি বাতাস ও সাগর শোনে!’ 28 যীশু যখনহ্রদের অপর পারে গাদারীয়দের দেশে এলেন সেই সময় ভূতে পাওয়া দুজন লোক কবর থেকে বেরিয়ে তাঁর সামনে এল৷ তারা এমন ভয়ঙ্কর ছিল য়ে কোন মানুষ সেই পথ দিয়ে চলতে পারত না৷ 29 ‘তারা চিত্কার করে বলল, ‘হে ঈশ্বরের পুত্র, আপনি আমাদের নিয়ে কি করতে চান? নির্দিষ্ট সময়ের আগেইকি আপনি আমাদের নির্য়াতন করতে এসেছেন?’ 30 সেখান থেকে কিছু দূরে এক পাল শুযোর চরছিল৷ 31 তখন ভূতেরা যীশুকে অনুনয় করে বলল, ‘আপনি যদি আমাদের তাড়িয়েইদেবেন তবে ঐ শুযোর পালের মধ্যে ঢুকতে হুকুম দিন৷’ 32 যীশু তাদের বললেন, ‘তাইযাও!’ তখন তারা সেইলোকদের মধ্যে থেকে বের হয়ে এসে সেইশুযোরগুলির মধ্যে গিয়ে ঢুকল; তাতে সেইশুযোরের পাল ঢালু পাড় দিয়ে জোরে দৌড়াতে দৌড়াতে ব্রদের জলে গিয়ে ডূবে মরল৷ 33 যাঁরা সেইপাল চরাচ্ছিল, তারা দৌড়ে পালাল৷ তারা নগরের মধ্যে গিয়ে সব খবর জানাল৷ বিশেষ করে সেইভূতে পাওয়া লোকদের বিষয়ে বলল৷ 34 তখন নগরের সব লোক যীশুকে দেখার জন্য বের হয়ে এল৷ তারা যীশুর দেখা পেয়ে তাঁকে অনুনয় করে বলল তিনি য়েন তাদের অঞ্চল ছেড়ে চলে যান৷
Matthew 9:1 এরপর যীশু নৌকায় উঠেহ্রদের অপর পারে নিজের শহরে এলেন৷ 2 কয়েকজন লোক তখন খাটিয়ায় শুয়ে থাকা এক পঙ্গুকে যীশুর কাছে নিয়ে এল৷ তাদের এমন বিশ্বাস দেখে তিনি সেই পঙ্গুকে বললেন, ‘বাছা, সাহস সঞ্চয় কর, তোমার সব পাপের ক্ষমা হল৷’ 3 তখন কয়েকজন ব্যবস্থার শিক্ষক বলতে লাগলেন, ‘এইলোকটা দেখছি এধরণের কথা বলে ঈশ্বরের নিন্দা করছে৷’ 4 তারা কি চিন্তা করছে, তা জানতে পেরে যীশু বললেন, ‘তোমরা মনে মনে কেন এমন মন্দ চিন্তা করছ? 5 কোনটা বলা সহজ, ‘তোমার পাপ ক্ষমা করা হল’ না, ‘তুমি উঠে হেঁটে বেড়াও? 6 কিন্তু আমি তোমাদের দেখাব য়ে এইপৃথিবীতে মানবপুত্রের পাপ ক্ষমা করার ক্ষমতা আছে৷’ এই বলে যীশু সেই পঙ্গু লোকটির দিকে ফিরে বললেন, ‘ওঠ, তোমার খাটিয়া নিয়ে বাড়ি চলে যাও৷’ 7 তখন সেই পঙ্গু লোকটি উঠে তার বাড়ি চলে গেল৷ 8 লোকেরা এই ঘটনা দেখে ভয় পেয়ে গেল; আর ঈশ্বর মানুষকে এমন ক্ষমতা দিয়েছেন বলে তারা ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগল৷ 9 যীশু সেখান থেকে চলে যাবার সময় দেখলেন একজন লোক কর আদায়ের গদিতে বসে আছে৷ তাঁর নাম মথি৷ যীশু তাঁকে বললেন, ‘আমার সঙ্গে এস৷’ মথি তখনইউঠে তাঁর সঙ্গে গেলেন৷ 10 পরে মথির বাড়িতে যীশু খেতে বসলে সেখানে অনেক কর আদায়কারী ও পাপী-তাপী মানুষ এসে যীশু ও তাঁর শিষ্যদের সঙ্গে খেতে বসল৷ 11 ফরীশীরা তা দেখে যীশুর অনুগামীদের বললেন, ‘তোমাদের গুরু কর আদায়কারী ও পাপী-তাপীর সঙ্গে কেন খাওয়া-দাওয়া করেন?’ 12 একথা শুনে যীশু বললেন, ‘যাঁরা সুস্থ আছে তাদের জন্য ডাক্তারের প্রযোজন নেই, বরং রোগীদেরই ডাক্তারের প্রযোজন৷’ 13 বলিদান নয়, আমি চাইতোমরা দয়া করতে শেখ,’শাস্ত্রের এইকথার অর্থ কি তা বুঝে দেখ৷ কারণ সত্ ও ধার্মিক লোকদের নয়, পাপীদেরই আমি ডাকতে এসেছি৷’ 14 পরে য়োহনের অনুগামীরা যীশুর কাছে এসে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আমরা ও ফরীশীরা প্রায়ই উপোস করি; কিন্তু আপনার শিষ্যরা কেন উপোস করে না?’ 15 তখন যীশু তাদের বললেন, ‘বর সঙ্গে থাকতে কি বরের বন্ধুরা শোক করতে পারে? কিন্তু দিন আসছে যখন বরকে তাদের কাছ থেকে নিয়ে যাওয়া হবে, তখন তারা উপোস করবে৷ 16 ‘নতুন কাপড়ের টুকরো নিয়ে কেউ পুরানো কাপড়ে তালি দেয় না, তাহলে ছেঁড়াটা আরো বিশ্রী হবে৷ 17 পুরানো চামড়ার থলিতে কেউ নতুন দ্রাক্ষা রস রাখে না, রাখলে চামড়ার থলিটি ফেটে যায়, ফলে দ্রাক্ষারস পড়ে যায় আর থলিটিও নষ্ট হয়৷ টাটকা রস নতুন থলিতেই রাখতে হয়, তাতে দুটোই সুরক্ষিত থাকে৷’ 18 যীশু যখন তাদের এসব কথা বলছিলেন, সেই সময় সমাজ-গৃহের নেতাদের একজন তাঁর কাছে এসে নতজানু হয়ে বললেন, ‘আমার মেয়েটা এই মাত্র মারা গেল, আপনি এসে তাকে একটু স্পর্শ করুন তাহলে সে বেঁচে উঠবে৷’ 19 তখন যীশু উঠে তাঁর সঙ্গে গেলেন, আর তাঁর শিষ্যরাও তাঁর সঙ্গে চললেন৷ 20 পথে যাবার সময় একজন স্ত্রীলোক যীশুর পিছন দিকে এসে তাঁর পোশাকের খুঁট স্পর্শ করল, সে বারো বছর ধরে রক্তস্রাবে কষ্ট পাচ্ছিল৷ 21 সে মনে মনে ভাবল, ‘আমি যদি যীশুর পোশাক কেবল ছুঁতে পারি, তাহলেই ভাল হয়ে যাব৷’ 22 যীশু ঘুরে দাঁড়ালেন আর তাকে দেখতে পেয়ে বললেন, ‘বাছা, তুমি মনে সাহস রাখো, তোমার বিশ্বাসই তোমায় সুস্থ করল৷’ তখন থেকে স্ত্রীলোকটি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে গেল৷ 23 যীশু সেইনেতার বাড়িতে পরে গিয়ে দেখলেন, যাঁরা করুণ সুরে বাঁশি বাজায় তারা রয়েছে আর লোকরা হৈ হৈ করছে৷ 24 যীশু বললেন, ‘তোমরা বাইরে যাও৷ মেয়েটি মরে নি, ও তো ঘুমিয়ে আছে৷’ লোকগুলো এইকথা শুনে তাঁকে নিয়ে হাসাহাসি করতে লাগল৷ 25 লোকদের ঘর থেকে বের করে দেওয়া হলে, যীশু ভেতরে গিয়ে মেয়েটির হাত ধরলেন, তাতে সে উঠে বসল৷ 26 এই ঘটনার কথা সেইঅঞ্চলের সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়ল৷ 27 যীশু যখন সেই জায়গা ছেড়ে চলে যাচ্ছেন, তখন দুজন অন্ধ তাঁর পিছনে পিছনে চলল৷ তারা চিত্কার করে বলতে লাগল, ‘হে দায়ূদের পুত্র, আমাদের প্রতি দয়া করুন৷’ 28 যীশু বাড়িতে এলে সেই দুজন অন্ধ তাঁর কাছে এল৷ তখন যীশু তাদের বললেন, ‘তোমরা কি বিশ্বাস কর য়ে আমি তোমাদের দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিতে পারি?’অন্ধ লোক দুটি বলল, ‘হ্যাঁ, প্রভু আমরা বিশ্বাস করি৷’ 29 তখন তিনি তাদের চোখ স্পর্শ করে বললেন, ‘তোমরা য়েমন বিশ্বাস করেছ, তোমাদের প্রতি তেমনি হোক্৷’ 30 আর তখনই তারা চোখে দেখতে পেল৷ যীশু তাদের দৃঢ়ভাবে নিষেধ করে বললেন, ‘দেখ, একথা কেউ য়েন জানতে না পারে৷’ 31 কিন্তু তারা সেখান থেকে গিয়ে যীশুর বিষয়ে সেইঅঞ্চলের সব জায়গায় বলতে লাগল৷ 32 ঐ দুজন লোক যখন চলে যাচ্ছে, এমন সময় কয়েকজন লোক ভূতে পাওয়া একজন লোককে যীশুর কাছে নিয়ে এল, সে কথা বলতে পারত না৷ 33 সেই ভূতকে তার ভেতর থেকে তাড়িয়ে দেবার পর বোবা লোকটি কথা বলতে লাগল৷ তাতে সমবেত সব লোক আশ্চর্য হয়ে গেল৷ তারা বলল, ‘ইস্রায়েলে এমন কখনও দেখা যায় নি৷’ 34 কিন্তু ফরীশীরা বলতে থাকল, ‘সে ভূতদের শাসনকর্তার শক্তিতে তাদের তাড়ায়৷’ 35 যীশু সেই অঞ্চলের সমস্ত নগর ও গ্রামে গ্রামে ঘুরে ইহুদীদের সমাজ-গৃহে শিক্ষা দিতে এবং স্বর্গরাজ্যের সুসমাচার প্রচার করতে লাগলেন৷ তাছাড়া তিনি লোকেদের সমস্ত রোগ ব্যাধি ভাল করতে লাগলেন৷ 36 লোকদের ভীড় দেখে তাদের জন্য যীশুর মমতা হল, কারণ তারা পালকবিহীন মেষপালের মতো ক্লান্ত ও অসহায় ছিল৷ 37 তখন যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, ‘ফসল প্রচুর কিন্তু কাটার লোক কত অল্প, 38 তাইতোমরা ফসলের মালিকের কাছে অনুরোধ কর, য়েন তিনি ফসল কাটার জন্য মজুর পাঠান৷’
Matthew 10:1 যীশু তাঁর বারো জন শিষ্যকে কাছে ডেকে তাঁদের অশুচিআত্মা তাড়িয়ে দেবার ও সব রোগ ব্যধি সারাবার ক্ষমতা দিলেন৷ 2 সেই বারো জন প্রেরিতের নাম - প্রথম হলেন শিমোন যাকে পিতর বলা হয়, তারপর তার ভাই আন্দরিয়, সিবদিয়ের ছেলে যাকোব ও তার ভাই য়োহন, 3 ফিলিপ ও বর্থলময়, থোমা ও কর আদায়কারী মথি, আলফেয়ের ছেলে যাকোব ও থদ্দেয়, 4 দেশভক্তশিমোন ও যীশুকে য়ে শত্রুর হাতে ধরিয়ে দিয়েছিল সেই যিহূদা ঈষ্করিযোতীয়৷ 5 এই বারো জনকে যীশু এই নির্দেশ দিয়ে পাঠালেন, ‘তোমরা অইহুদীদের অঞ্চলে বা শমরীয়দের কোন নগরে য়েও না, 6 বরং ইস্রায়েল জাতির হারানো মেষদের কাছে য়েও৷ 7 তাদের কাছে গিয়ে প্রচার কর য়ে, ‘স্বর্গরাজ্য এসে পড়েছে৷’ 8 তোমরা গিয়ে রোগীদের সারিয়ে তোল, মৃতদের বাঁচিয়ে তোল, কুষ্ঠ রোগীদের পরিষ্কার করো, ভূতদের বের করে দাও৷ তোমরা এসব কাজ বিনামূল্যে করো, কারণ তোমরা সেই ক্ষমতা বিনামূল্যেই পেয়েছ৷ 9 তোমাদের কোমরের কাপড়ে বেঁধে তোমরা সোনা, রূপো বা টাকা পয়সা সঙ্গে নিও না৷ 10 পথ চলতে কোন থলি বা বাড়তি জামাকাপড় কিংবা জুতো নিও না, এমন কি লাঠিও না, কারণ আমি বলছি শ্রমিক তার পারিশ্রমিক পাবার য়োগ্য৷ 11 ‘তোমরা যখন কোন শহর বা গ্রামে যাবে, সেখানে এমন কোন উপযুক্ত লোক খুঁজে বের করো যার উপর আস্থা রাখতে পার এবং কোথাও চলে না যাওয়া পর্যন্ত তার বাড়িতেই থেকো৷ 12 যখন তোমরা সেই বাড়িতে গিয়ে উঠবে তখন সেখানকার লোকদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলো, ‘তোমাদের শান্তি হোক্৷’ 13 সেই বাড়ির লোকরা যদি তোমাদের স্বাগত জানায়, তবে তারা সেই শান্তি লাভের উপযুক্ত৷ কিন্তু তারা যদি তোমাদের স্বাগত না জানায়, তবে তোমাদের শান্তি তোমাদেরই কাছে ফিরে আসুক৷ 14 কেউ যদি তোমাদের গ্রহণ না করে বা তোমাদের কথা শুনতে না চায়, তবে সেই বাড়ি বা সেইশহর ছেড়ে চলে য়েও৷ যাবার সময় সেখানকার পায়ের ধূলো ঝেড়ে ফেলো৷ 15 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, মহাবিচারের দিনে সদোম ও ঘমোরারলোকদের থেকে সেইশহরের অবস্থা ভয়ঙ্কর হবে৷ 16 ‘সাবধান! দেখ, আমি নেকড়ের পালের মধ্যে মেষের মতো তোমাদের পাঠাচ্ছি৷ তাইতোমরা সাপের মতো চতুর ও পায়রার মতো অমাযিক হযো৷ 17 কিন্তু লোকদের থেকে সাবধান থেকো, কারণ তারা তোমাদের গ্রেপ্তার করে সমাজগৃহের মহাসভার হাতে তুলে দেবে৷ আর তারা সমাজ-গৃহে নিয়ে গিয়ে তোমাদের বেত মারবে৷ 18 আমার অনুসারী হওয়ার জন্য শাসকদের সামনে ও রাজাদের দরবারে তোমাদের হাজির করা হবে৷ তোমরা এইভাবে তাদের কাছে ও অইহুদীদের কাছে আমার বিষয়ে বলার সুয়োগ পাবে৷ 19 তারা যখন তোমাদের ধরে নিয়ে যাবে, তখন কিভাবে বলবে এবং কি বলবে সে নিয়ে চিন্তা করো না, কারণ কি বলতে হবে ঠিক সময়ে তা তোমাদের মুখে যুগিয়ে দেওয়া হবে৷ 20 মনে রেখো, তোমরা য়ে বলবে, তা নয়, কিন্তু তোমাদের ভেতর দিয়ে তোমাদের স্বর্গের পিতা ঈশ্বরের আত্মাই কথা বলবেন৷ 21 ‘ভাই ভাইকে এবং বাবা ছেলেকে মৃত্যুদণ্ডের জন্য ধরিয়ে দেবে৷ ছেলেমেয়েরা বাবা-মার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে তাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেবে৷ 22 আমার নামের জন্য সকলে তোমাদের ঘৃণা করবে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত য়ে স্থির থাকবে সেইরক্ষা পাবে৷ 23 যখন তারা এক শহরে তোমাদের ওপর নির্য়াতন করবে, তখন তোমরা অন্য শহরে পালিয়ে য়েও৷ আমি তোমাদের সত্যি বলছি, মানবপুত্র ফিরে না আসা পর্যন্ত তোমরা ইস্রায়েলের সমস্ত শহরে তোমাদের কাজ শেষ করতে পারবে না৷ 24 ‘ছাত্র তার গুরু থেকে বড় নয়, আর ক্রীতদাসও তার মনিব থেকে বড় নয়৷ 25 ছাত্র যদি গুরুর মতো হয়ে উঠতে পারে, আর ক্রীতদাস যদি তার মনিবের মতো হয়ে উঠতে পারে তাহলেই যথেষ্ট৷ বাড়ির কর্তাকে তারা যদি বেল্সবুল বলে, তবে বাড়ির অন্যদের তারা আরও কত কি বলবে৷’ 26 ‘তাই তাদের ভয় করো না, কারণ গুপ্ত সব বিষয়ই প্রকাশ পাবে, গোপন সব বিষয়ইপ্রকাশ করা হবে৷ 27 অন্ধকারের মধ্যে আমি যা বলছি, আমি চাই তা তোমরা দিনের আলোতে বল৷ আর আমি তোমাদের কানে যা বলছি, আমি চাইতা তোমরা ছাদের উপর থেকে চিত্কার করে বল৷ 28 যাঁরা কেবল তোমাদের দৈহিকভাবে হত্যা করতে পারে তাদের ভয় করো না, কারণ তারা তোমাদের আত্মাকে ধ্বংস করতে পারে না৷ কিন্তু যিনি দেহ ও আত্মা উভয়ই নরকে ধ্বংস করতে পারেন বরং তাঁকেইভয় কর৷ 29 দুটো চড়াই পাখি কি মাত্র কয়েক পয়সায় বিক্রি হয় না? তবু তোমাদের পিতার অনুমতি ছাড়া তাদের একটাও মাটিতে পড়ে না৷ 30 হ্যাঁ, এমন কি তোমাদের মাথার সব চুলও গোনা আছে৷ 31 কাজেইতোমরা ভয় পেও না৷ অনেকগুলি চড়াই পাখির থেকেও তোমাদের মূল্য ঢ়েব বেশী৷ 32 ‘য়ে কেউ মানুষের সামনে আমাকে স্বীকার করে, আমিও আমার স্বর্গের পিতা ঈশ্বরের সামনে তাকে স্বীকার করব৷ 33 কিন্তু য়ে কেউ মানুষের সামনে আমাকে অস্বীকার করবে, আমিও আমার স্বর্গের পিতা ঈশ্বরের সামনে তাকে অস্বীকার করব৷ 34 ‘একথা ভেবো না য়ে আমি পৃথিবীতে শান্তি দিতে এসেছি৷ আমি শান্তি দিতে আসি নি কিন্তু খড়গ দিতে এসেছি৷ 35 - 36 আমি এই ঘটনা ঘটাতে এসেছি:‘আমি ছেলেকে বাবার বিরুদ্ধে, মেয়েকে মায়ের বিরুদ্ধে, বৌমাকে শাশুড়ীর বিরুদ্ধে দাঁড় করাতে এসেছি৷ নিজের আত্মীয়েরাই হবে একজন ব্যক্তির সবচেয়ে বড় শত্রু৷’ মীখা 7:6 37 ‘য়ে কেউ আমার চেয়ে তার বাবা-মাকে বেশী ভালবাসে সে আমার আপনজন হবার য়োগ্য নয়৷ আর য়ে কেউ তার ছেলে বা মেয়েকে আমার চেয়ে বেশী ভালবাসে, সে আমার আপনজন হবার য়োগ্য নয়৷ 38 য়ে নিজের ক্রুশ তুলে নিয়ে আমার পথে না চলে, সেও আমার শিষ্য হবার য়োগ্য নয়৷ 39 য়ে কেউ নিজের জীবন লাভ করতে চায়, সে তা হারাবে; কিন্তু য়ে আমার জন্য তার জীবন উত্সর্গ করে, সে তা লাভ করবে৷ 40 য়ে তোমাদের সাদরে গ্রহণ করে, সে আমাকেইগ্রহণ করে৷ আর য়ে আমাকে গ্রহণ করে, সে তো যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন সেইঈশ্বরকেই গ্রহণ করে৷ 41 কেউ যদি কোন ভাববাদীকে একজন ভাববাদী বলেই সাদরে গ্রহণ করে, তবে ভাববাদীর য়ে পুরস্কার সেও তা লাভ করবে৷ আর কেউ যদি কোন ধার্মিক লোককে ধার্মিক বলে সাদরে গ্রহণ করে, তবে ধার্মিক ব্যক্তির প্রাপ্য় য়ে পুরস্কার সেও তা পাবে৷ 42 এই সামান্য লোকদের মধ্যে কাউকে যদি আমার অনুগামী বলে কেউ এক ঘটি ঠাণ্ডা জল দেয়, আমি সত্যি বলছি, সেও তার পুরস্কার পাবে৷’
Matthew 11:1 যীশু তাঁর বারোজন শিষ্যকে এই ভাবে নির্দেশদেওয়া শেষ করলেন৷ এরপর তিনি গালীল শহরে শিক্ষা দেবার ও প্রচার করার জন্য সেখান থেকে চলে গেলেন৷ 2 য়োহন (বাপ্তাইজ) কারাগার থেকে খ্রীষ্টের কাজের কথা শুনলেন৷ তখন তিনি তাঁর অনুগামীদের যীশুর কাছে পাঠালেন৷ 3 অনুগামীরা যীশুকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘যার আগমনের কথা ছিল, আপনি কি সেই লোক, না আমরা আর কারও জন্য অপেক্ষা করব?’ 4 এর উত্তরে যীশু তাঁদের বললেন, ‘তোমরা যা শুনছ ও দেখছ, য়োহনকে গিয়ে তা বল 5 অন্ধেরা দৃষ্টিশক্তি পাচ্ছে, খোঁড়ারা হাঁটছে, কুষ্ঠরোগীরা আরোগ্য লাভ করছে, কালারা শুনতে পাচ্ছে, মরা মানুষ বেঁচে উঠছে, আর দরিদ্র লোকদের কাছে সুসমাচার প্রচার করা হচ্ছে৷ 6 ধন্য সেইলোক, আমাকে গ্রহণ করতে যার কোন বাধা নেই৷’ 7 য়োহনের অনুগামীরা যখন চলে যাচ্ছেন, তখন লোকদের উদ্দেশ্য করে যীশু য়োহনের বিষয়ে বলতে শুরু করলেন, ‘তোমরা মরুপ্রান্তরে কি দেখতে গিয়েছিলে? বাতাসে দোলায়মান বেত গাছ? 8 না, তা নয়৷ তাহলে কি দেখতে গিয়েছিলে? জমকালো পোশাক পরা কোন লোককে? শোন! যাঁরা জমকালো পোশাক পরে তাদের রাজপ্রাসাদে দেখতে পাবে৷ 9 তাহলে তোমরা কি দেখবার জন্য গিয়েছিলে? একজন ভাববাদীকে? হ্যাঁ, আমি তোমাদের বলছি, যাকে তোমরা দেখেছ তিনি ভাববাদীর চেয়েও মহান! 10 তিনি সেইলোক যার বিষয়ে শাস্ত্রে লেখা আছে,‘শোন! আমি তোমার আগে আগে আমার এক দূতকে পাঠাচ্ছি৷ সে তোমার জন্য পথ প্রস্তুত করবে৷’মালাখি 3:1 11 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, স্ত্রীলোকের গর্ভে যত মানুষের জন্ম হয়েছে তাদের মধ্যে বাপ্তিস্মদাতা য়োহনের চেয়ে কেউই মহান নয়, তবু স্বর্গরাজ্যের কোন ক্ষুদ্রতম ব্যক্তিও য়োহনের থেকে মহান৷ 12 বাপ্তিস্মদাতা য়োহনের সময় থেকে আজ পর্যন্ত স্বর্গরাজ্য ভীষণভাবে আক্রান্ত হচ্ছে৷ আর শক্তিধর লোকরা তা জোরের সাথে অধিকার করতে চেষ্টা করছে৷ 13 য়োহনের আগমণের পূর্ব পর্যন্ত যা ঘটবে সকল ভাববাদী ও মোশির বিধি-ব্যবস্থার মধ্যে তা বলা হয়েছে৷ 14 তোমরা যদি একথা বিশ্বাস করতে রাজী থাক তবে শোন, এই য়োহনই সেই ভাববাদী এলীয়,য়াঁর আসবার কথা ছিল৷ 15 যার শোনবার মতো কান আছে সে শুনুক৷ 16 ‘আমি কিসের সঙ্গে এই যুগের লোকদের তুলনা করব? এরা এমন একদল ছোট ছেলেমেয়েদের মতো যাঁরা হাটে বসে অন্য ছেলেমেয়েদের ডেকে বলে, 17 ‘আমরা তোমাদের জন্য বাঁশি বাজালাম, তোমরা নাচলে না৷ আমরা শোকের গান গাইলাম, কিন্তু তোমরা বিলাপ করলে না৷’ 18 য়োহন অন্য লোকদের মতো না করলেন আহার, না করলেন পান, আর লোকরা বলে, ‘ওকে ভূতে পেয়েছে৷’ 19 এরপর মানবপুত্র এসে অন্য লোকদের মতো পান ও আহার করলেন বলে লোকে বলছে, ‘ঐ দেখ! একজন পেটুক ও মদখোর, কর আদায়কারী ও পাপীদের বন্ধু৷’ কিন্তু প্রজ্ঞা তার কাজের দ্বারাইসত্য বলে প্রমাণিত হবে৷’ 20 ‘য়ে সমস্ত শহরে যীশু বেশীর ভাগ অলৌকিক কাজ করেছিলেন, তাদের তিনি ভর্ত্সনা করলেন, কারণ তারা তাদের মন ফেরায় নি৷ তিনি তাদের বললেন, 21 ‘ধিক্ কোরাসীন! ধিক বৈত্সৈদা!তোমাদের কি ভয়ঙ্কর দুর্দশাই না হবে! আমি তোমাদের একথা বলছি কারণ, তোমাদের মধ্যে য়ে সব অলৌকিক কাজ আমি করেছি তা যদি সোর ও সীদোনে করা হত, তবে সেখানকার লোকেরা অনেক আগেই তাদের পাপের জন্য অনুতপ্ত হয়ে চটের বস্ত্র পরে ছাই মেখে মন-ফিরাতো৷ 22 তাই আমি তোমাদের বলছি, বিচারের দিনে তোমাদের থেকে সোর ও সীদোনেরঅবস্থা সহ্য করবার মতো হবে৷ 23 আর য়ে কফরনাহূম তুমি নাকি স্বর্গীয় মহিমায় মণ্ডিত হবে? না! তোমাকে পাতালে নামিয়ে আনা হবে৷ য়ে সমস্ত অলৌকিক কাজ তোমার মধ্যে করা হয়েছে তা যদি সদোমে করা হত তবে সদোম আজও টিকে থাকত৷ 24 আমি তোমাদের বলছি, বিচারের দিনে তোমাদের চেয়ে বরং সদোম দেশের দশা অনেক সহনীয় হবে৷ 25 এই সময় যীশু বললেন, ‘স্বর্গ ও পৃথিবীর প্রভু, আমার পিতা, আমি তোমার প্রশংসা করি, কারণ জগতের জ্ঞানী ও পণ্ডিতদের কাছে এসব তত্ত্ব তুমি গোপন রেখে শিশুর মতো সরল লোকদের কাছে তা প্রকাশ করেছ৷ 26 হ্যাঁ, পিতা এই ভাবেইতো তুমি এটা করতে চেয়েছিলে৷ 27 ‘আমার পিতা সব কিছুই আমার হাতে সঁপে দিয়েছেন৷ পিতা ছাড়া পুত্রকে কেউ জানে না; আর পুত্র ছাড়া পিতাকে কেউ জানে না৷ পুত্র যার কাছে পিতাকে প্রকাশ করতে ইচ্ছা করেন সে-ইতাঁকে জানে৷ 28 ‘তোমরা যাঁরা শ্রান্ত-ক্লান্ত ও ভারাক্রান্ত মানুষ, তারা আমার কাছে এস, আমি তোমাদের বিশ্রাম দেব৷ 29 আমার জোয়াল তোমাদের কাঁধে তুলে নাও, আর আমার কাছ থেকে শেখ, কারণ আমি বিনযী ও নম্র, তাতে তোমাদের প্রাণ বিশ্রাম পাবে৷ 30 কারণ আমার দেওয়া জোয়াল বয়ে নেওয়া সহজ ও আমার দেওয়া ভার হাল্কা৷’
Matthew 12:1 সেই সময় একদিন যীশু এক বিশ্রামবারে শস্য ক্ষেতের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন৷ শিষ্যদের খিদে পাওয়ায় তারা গমের শীষ ছিঁড়ে ছিঁড়ে খেতে লাগলেন৷ 2 কিন্তু ফরীশীরা তা দেখে যীশুকে বললেন, ‘দেখ! বিশ্রামবারে যা করা নিয়ম বিরুদ্ধ, তোমার শিষ্যরা তাই করছে৷’ 3 তখন যীশু তাঁদের বললেন, ‘দায়ূদ ও তাঁর সঙ্গীদের যখন খিদে পেয়েছিল তখন তিনি কি করেছিলেন তা কি তোমরা পড় নি? 4 তিনি তো ঈশ্বরের মন্দিরে ঢুকে সেই পবিত্র রুটি খেয়েছিলেন৷ দায়ূদ ও তাঁর সঙ্গীদের অবশ্যই তা খাওয়া ন্যায়সঙ্গত ছিল না, কেবল যাজকরাই তা খেতে পারতেন৷ 5 এছাড়া তোমরা কি মোশির বিধি-ব্যবস্থা পড়নি য়ে বিশ্রামবারে মন্দিরের মধ্যে য়ে যাজকরা কাজ করেন তাঁরাও বিশ্রামবারের বিধি-ব্যবস্থা লঙঘন করেন; আর তার জন্য তাদের কোন দোষ হয় না? 6 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, মন্দির থেকেও মহান কিছু এখানে আছে৷ 7 ‘বলিদান ও নৈবেদ্য থেকে আমি দয়াইচাই৷’শাস্ত্রের এইবাণীর অর্থ কি তা যদি তোমরা জানতে, তবে যাঁরা দোষী নয় তাদের তোমরা দোষী করতে না৷ 8 ‘কারণ মানবপুত্র বিশ্রামবারেরও প্রভু৷’ 9 এরপর যীশু সেখান থেকে তাদের সমাজ-গৃহে গেলেন৷ 10 সেখানে একজন লোক ছিল, যার একটা হাত শুকিয়ে পঙ্গু হয়ে গিয়েছিল৷ যীশুকে দোষী করবার উদ্দেশ্য নিয়ে লোকরা তাঁকে জিজ্ঞেস করল, ‘মোশির বিধি-ব্যবস্থা অনুসারে বিশ্রামবারে কি রোগীকে সুস্থ করা উচিত?’ 11 কিন্তু তিনি তাদের বললেন, ‘ধর তোমাদের মধ্যে কারও একটা ভেড়া আছে, সেই ভেড়াটা যদি বিশ্রামবারে গর্তে পড়ে যায়, তবে তুমি কি তাকে ধরে তুলবে না? 12 আর ভেড়ার চেয়ে মানুষের মূল্য অনেক বেশী৷ তাই মোশির বিধি-ব্যবস্থা অনুসারে বিশ্রামবারে ভাল কাজ করা ন্যায়সঙ্গত৷’ 13 তারপর যীশু সেই লোকটিকে বললেন, ‘তোমার হাতটা বাড়িয়ে দাও৷’ সে তার হাতটা বাড়িয়ে দিলে পর সেটা ভাল হয়ে অন্য হাতটার মতো হয়ে গেল৷ 14 তখন ফরীশীরা বাইরে গিয়ে যীশুকে মেরে ফেলার জন্য চক্রান্ত করতে লাগল৷ 15 কিন্তু যীশু সে কথা জানতে পেরে সেখান থেকে চলে গেলেন৷ অনেক লোক তাঁর পিছনে পিছনে চলতে লাগল৷ তাদের মধ্যে যাঁরা রোগী ছিল, তিনি তাদের সকলকে সুস্থ করলেন৷ 16 কিন্তু তাঁর এই কাজের কথা সকলকে বলে বেড়াতে তিনি তাদের দৃঢ়ভাবে নিষেধ করে দিলেন৷ 17 আর এইভাবে তাঁর বিষয়ে ভাববাদী যিশাইয়র মাধ্যমে বলা ঈশ্বরের বাণী পূর্ণ হল: 18 ‘এই আমার দাস, এঁকে আমি মনোনীত করেছি৷ আমার অতি প্রিয় জন, যার উপর আমি সন্তুষ্ট৷ আমি তাঁর উপরে আমার আত্মার প্রভাব রাখব, তাতে তিনি অইহুদীদের কাছে ন্যায়নীতির বাণী প্রচার করবেন৷ 19 তিনি কলহ বিবাদ করবেন না, লোকেরা পথে ঘাটে তাঁর গলার স্বর শুনবে না৷ 20 মচকানো বেতগাছ তিনি ভাঙ্গবেন না, মিট্-মিট্ করে জ্বলতে থাকা পলতেকে তিনি নিভিয়ে দেবেন না (যতদিন না ন্যায়নীতিকে জযী করেন ততদিন)৷ 21 সর্বজাতির লোক তাঁর ওপর প্রত্যাশা রাখবে৷যিশাইয় 42:1-4 22 সেই সময় লোকেরা ভূতে পাওয়া একজন লোককে যীশুর কাছে নিয়ে এল৷ লোকটা অন্ধ ও বোবা ছিল৷ যীশু তাকে সুস্থ করলেন: তাতে সে দেখতে পেল ও কথা বলতে পারল৷ 23 এই দেখে লোকেরা বিস্মিত হয়ে বলল, ‘ইনিই কি দায়ূদের সন্তান?’ 24 ফরীশীরা একথা শুনে বললেন, ‘এ তো ভূতদের শাসনকর্তা বেল্সবূলেরশক্তিতে ভূতদের তাড়ায়৷’ 25 যীশু ফরীশীদের মনের কথা বুঝতে পেরে তাদের বললেন, ‘বিবাদে বিভক্ত য়ে কোন রাজ্যইধ্বংস হয়ে যায়৷ য়ে শহর বা পরিবার নিজেদের মধ্যে বিবাদে বিভক্ত তা টিকে থাকতে পারে না৷ 26 শয়তান যদি ভূতকে তাড়ায় তবে সে নিজেইনিজের বিরুদ্ধে ভাগ হয়ে গেলে তার রাজ্য কি করে টিকে থাকবে? 27 আমি যদি বেল্সবুলের শক্তিতে ভূত তাড়াই, তবে তোমাদের লোকেরা কার শক্তিতে তাদের তাড়ায়? সুতরাং তোমাদের নিজেদের অনুগামীরাইপ্রমাণ করবে য়ে তোমরা ভুল বলছ৷ 28 কিন্তু আমি যদি ঈশ্বরের আত্মার শক্তিতে ভূতদের তাড়াই, তবে ঈশ্বরের রাজ্য তো তোমাদের কাছে এসে গেছে৷’ 29 ‘আবার বলছি, কোন শক্তিমান লোককে আগে না বেঁধে কেউ কি তার বাড়িতে ঢুকে তার সবকিছু লুট করতে পারে? তাকে বাঁধবার পর তবেই তো তার বাড়ির সবকিছু লুট করতে পারবে৷ 30 ‘য়ে আমার পক্ষ নয়, সে আমার বিপক্ষে, য়ে আমার সঙ্গে কুড়ায় না, সে তা ছড়াচ্ছে৷ 31 তাই আমি তোমাদের বলছি, মানুষের সব পাপ এবং ঈশ্বর নিন্দার ক্ষমা হবে, কিন্তু পবিত্র আত্মার বিরুদ্ধে কোন অসম্মানজনক কথা-বার্তার ক্ষমা হবে না৷ 32 মানবপুত্রের বিরুদ্ধে কেউ যদি কোন কথা বলে, তাকে ক্ষমা করা হবে, কিন্তু পবিত্র আত্মার বিরুদ্ধে কথা বললে তার ক্ষমা নেই , এযুগে বা আগামী যুগে কখনইনা৷ 33 ‘ভাল ফল পেতে হলে ভাল গাছ থাকা দরকার, কিন্তু খারাপ গাছ থাকলে তোমরা খারাপ ফলই পাবে, কারণ ফল দেখেই গাছ চেনা যায়৷ 34 তোমরা কালসাপ! তোমাদের মতো দুষ্ট লোকেরা কি করে ভাল কথা বলতে পারে? মানুষের অন্তরে যা আছে, মুখ দিয়ে তো সে কথাইবের হয়৷ 35 ভাল লোক তার অন্তরে ভাল কথাইসঞ্চিত রাখে, আর ভাল কথাই বলে; কিন্তু যার অন্তরে মন্দ বিষয় থাকে, সে তার মুখ দিয়ে মন্দ কথাইবলে৷ 36 আমি তোমাদের বলছি, লোকে যত বেহিসেবী কথা বলে, বিচারের দিনে তার প্রতিটি কথার হিসাব তাদের দিতে হবে৷ 37 তোমাদের কথার সুত্র ধরেই তোমাদের নির্দোষ বলা হবে, অথবা তোমাদের কথার ওপর ভিত্তি করেইতোমাদের দোষী সাব্যস্ত করা হবে৷’ 38 এরপর কয়েকজন ফরীশী ও ব্যবস্থার শিক্ষক যীশুর কাছে এসে বললেন, ‘হে গুরু, আমরা আপনার কাছ থেকে কোন চিহ্ন বা অলৌকিক কাজ দেখতে চাই৷’ 39 যীশু তাদের বললেন, ‘এ যুগের দুষ্ট ও পাপী লোকেরা চিহ্নের খোঁজ করে; কিন্তু ভাববাদী য়োনার চিহ্ন ছাড়া আর কোন চিহ্নইতাদের দেখান হবে না৷ 40 য়োনা য়েমন সেইবিরাট মাছের পেটে তিন দিন তিন রাত ছিলেন, তেমন মানবপুত্র তিন দিন তিন রাত পৃথিবীর অন্তঃস্থলে কাটাবেন৷ 41 বিচারের দিনে নীনবীয় লোকেরা এই কালের লোকদের বিরুদ্ধে উঠে দাঁড়িয়ে তাদের দোষী করবে, কারণ নীনবীয় লোকেরা য়োনার প্রচারের ফলে তাদের মন ফেরাল৷ আর দেখ, য়োনার চেয়ে এখানে আরও একজন মহান আছেন৷ 42 বিচারের দিনে দক্ষিণ দেশের রাণী উঠে এইযুগের লোকদের দোষী করবে, কারণ রাজা শলোমনের জ্ঞানের কথা শোনবার জন্য তিনি পৃথিবীর প্রান্ত থেকে এসেছিলেন, আর দেখ শলোমনের চেয়ে মহান একজন এখানে আছেন৷ 43 ‘যখন কোন দুষ্ট আত্মা কোন মানুষের মধ্য থেকে বের হয়ে যায়, তখন সে জলবিহীন শুকনো অঞ্চলে বিশ্রাম পাবার জন্য ঘোরাঘুরি করতে থাকে কিন্তু তা পায় না৷ 44 তারপর সে বলে, ‘আমি য়ে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে এসেছি, সেখানে ফিরে যাব৷’ আর ফিরে এসে দেখে সেই ঘর খালি পড়ে আছে; পরিষ্কার ও সাজানো আছে৷ 45 পরে সে গিয়ে তার থেকে আরো খারাপ অন্য সাতটা দুষ্ট আত্মাকে সঙ্গে করে নিয়ে আসে৷ তারপর তারা সকলে সেখানে গিয়ে বাস করতে থাকে, তাতে সেই লোকটার প্রথম অবস্থা থেকে শেষ অবস্থা আরো খারাপ হয়ে ওঠে৷ এই যুগের মন্দ লোকদের অবস্থাও সেরকম হবে৷’ 46 যীশু যখন সমবেত লোকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন, তখন তাঁর মা ও ভাইরা এসে তাঁর সঙ্গে কথা বলার ইচ্ছায় বাইরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলেন৷ 47 সেই সময় একজন লোক তাঁকে বলল, ‘দেখুন, আপনার মা ও ভাইরা বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন, তাঁরা আপনার সঙ্গে কথা বলতে চান৷’ 48 যীশু তখন তাকে বললেন, ‘কে আমার মা? কারাই বা আমার ভাই ?’ 49 এরপর তিনি তাঁর অনুগামীদের দেখিয়ে বললেন, ‘দেখ! এরাই আমার মা, আমার ভাই৷ 50 হ্যাঁ, য়ে কেউ আমার স্বর্গের পিতার ইচ্ছা পালন করে, সেই আমার মা, ভাই ও বোন৷’
Matthew 13:1 সেই দিনই যীশু ঘর থেকে বের হয়েহ্রদের ধারে এসে বসলেন৷ 2 তাঁর চারপাশে বহু লোক এসে জড় হল, তাইতিনি একটা নৌকায় উঠে বসলেন, আর সেই সমবেত জনতা তীরে দাঁড়িয়ে রইল৷ 3 তখন তিনি দৃষ্টান্তের মাধ্যমে তাদের অনেক বিষয়ে শিক্ষা দিতে লাগলেন৷ তিনি বললেন, ‘একজন চাষী বীজ বুনতে গেল৷ 4 সে যখন বীজ বুনছিল, তখন কতকগুলি বীজ পথের ধারে পড়ল, আর পাখিরা এসে সেগুলি খেয়ে ফেলল৷ 5 আবার কতকগুলি বীজ পাথুরে জমিতে পড়ল, সেখানে মাটি বেশী ছিল না৷ মাটি বেশী না থাকাতে তাড়াতাড়ি অঙ্কুর বের হল৷ 6 কিন্তু সূর্য় উঠলে পর অঙ্কুরগুলি ঝলসে গেল, আর শেকড় মাটির গভীরে যায়নি বলে তা শুকিয়ে গেল৷ 7 আবার কিছু বীজ কাঁটাঝোপের মধ্যে পড়ল৷ কাঁটাঝোপ বেড়ে উঠে চারাগুলোকে চেপে দিল৷ 8 কিছু বীজ ভাল জমিতে পড়ল, তাতে ফসল হতে লাগল৷ সে যা বুনেছিল, কোথাও তার ত্রিশগুণ, কোথাও ষাটগুণ, কোথাও শতগুণ ফসল হল৷ 9 যার শোনার মতো কান আছে সে শুনুক!’ 10 যীশুর শিষ্যরা তাঁর কাছে এসে বললেন, ‘কেন আপনি দৃষ্টান্তের মাধ্যমে লোকদের সঙ্গে কথা বললেন?’ 11 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, ‘স্বর্গরাজ্যের বিষয়ে ঈশ্বরের গুপ্ত সত্য বোঝার ক্ষমতা কেবল মাত্র তোমাদেরই দেওয়া হয়েছে, কিন্তু সকলকে এ ক্ষমতা দেওয়া হয় নি৷ 12 কারণ যার কিছু আছে, তাকে আরও দেওয়া হবে, তাতে তার প্রচুর হবে; কিন্তু যার নেই, তার যা আছে তাও তার কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হবে৷ 13 আমি তাদের সঙ্গে দৃষ্টান্তের মাধ্যমে কথা বলি, কারণ তারা দেখেও দেখে না, শুনেও শোনে না আর তারা বোঝেও না৷ 14 এদের এই অবস্থার মধ্য দিয়েই ভাববাদী যিশাইয়র ভাববাণী পূর্ণ হয়েছে:‘তোমরা শুনবে আর শুনবে, কিন্তু বুঝবে না৷ তোমরা তাকিয়ে থাকবে, কিন্তু কিছুইদেখবে না৷ 15 এইসব লোকদের অন্তর অসাড়, এরা কানে শোনে না, চোখ থাকতেও সত্য দেখতে অস্বীকার করে৷ এরকমটাই ঘটেছে য়েন এরা চোখে দেখে, কানে শুনে আর অন্তরে বুঝে ভাল হবার জন্য আমার কাছে ফিরে না আসে৷’ যিশাইয় 6:9-10 16 কিন্তু ধন্য তোমাদের চোখ, কারণ তা দেখতে পায়; আর ধন্য তোমাদের কান, কারণ তা শুনতে পায়৷ 17 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমরা যা দেখছ অনেক ভাববাদী ও ধার্মিক লোকেরা দেখতে চেয়েও তা দেখতে পায় নি৷ আর তোমরা যা যা শুনছ, তা তারা শুনতে চেয়েও শুনতে পায় নি৷ 18 ‘এখন তবে সেইচাষী ও তার বীজ বোনার মর্মার্থ শোন৷ 19 কেউ যখন স্বর্গরাজ্যের শিক্ষার বিষয় শুনেও তা বোঝে না, তখন দুষ্ট আত্মা এসে তার অন্তরে যা বোনা হয়েছিল তা সরিয়ে নেয়৷ এটা হল সেই পথের ধারে পড়া বীজের কথা৷ 20 আর পাথুরে জমিতে য়ে বীজ পড়েছিল, তা সেই সব লোকদের কথাই বলে যাঁরা স্বর্গরাজ্যের শিক্ষা শুনে সঙ্গে সঙ্গে আনন্দের সাথে তা গ্রহণ করে; 21 কিন্তু তাদের মধ্যে সেই শিক্ষার শেকড় ভাল করে গভীরে য়েতে দেয় না বলে তারা অল্প সময়ের জন্য স্থির থাকে৷ যখন সেই শিক্ষার জন্য সমস্যা, দুঃখ কষ্ট ও তাড়না আসে, তখনই তারা পিছিয়ে যায়৷ 22 কাঁটাঝোপে য়ে বীজ পড়েছিল, তা এমন লোকদের বিষয় বলে যাঁরা সেই শিক্ষা শোনে, কিন্তু সংসারের চিন্তা ভাবনা ও ধনসম্পত্তির মাযা সেই শিক্ষাকে চেপে রাখে৷ সেজন্য তাদের জীবনে কোন ফল হয় না৷ 23 য়ে বীজ উত্কৃষ্ট জমিতে বোনা হল, তা এমন লোকদের কথা প্রকাশ করে যাঁরা শিক্ষা শোনে, তা বোঝে এবং ফল দেয়৷ কেউ একশ গুণ, কেউ ষাট গুণ আর কেউ বা তিরিশ গুণ ফল দেয়৷ 24 এবার যীশু তাদের কাছে আর একটি দৃষ্টান্ত রাখলেন৷ ‘স্বর্গরাজ্য এমন একজন লোকের মতো যিনি তাঁর জমিতে ভাল বীজ বুনলেন৷ 25 কিন্তু লোকেরা যখন সবাইঘুমিয়ে ছিল, তখন সেইমালিকের শত্রু এসে গমের মধ্যে শ্যামা ঘাসের বীজ বুনে দিয়ে চলে গেল৷ 26 শেষে গমের চারা যখন বেড়ে উঠে ফল ধরল, তখন তার মধ্যে শ্যামাঘাসও দেখা গেল৷ 27 সেইমালিকের মজুররা এসে তাঁকে বলল, ‘আপনি কি জমিতে ভাল বীজ বোনেন নি? তবে শ্যামাঘাস কোথা থেকে এল?’ 28 তিনি তাদের বললেন, ‘এটা নিশ্চয়ই কোন শত্রুর কাজ৷’তাঁর চাকরেরা তখন তাঁকে বলল, ‘আপনি কি চান, আমরা গিয়ে কি শ্যামা ঘাসগুলি উপড়ে ফেলব?’ 29 ‘তিনি বললেন, ‘না, কারণ তোমরা যখন শ্যামা ঘাস ওপড়াতে যাবে তখন হয়তো ঐগুলোর সাথে গমের গাছগুলোও উপড়ে ফেলবে৷ 30 ফসল কাটার সময় না হওয়া পর্যন্ত একসঙ্গে সব বাড়তে দাও৷ পরে ফসল কাটার সময় আমি মজুরদের বলব তারা য়েন প্রথমে শ্যামা ঘাস সংগ্রহ করে আঁটি আঁটি করে বাঁধে ও তা পুড়িয়ে দেয় এবং গম সংগ্রহ করে গোলায় তোলে৷’ 31 যীশু তাদের সামনে আর একটি দৃষ্টান্ত রাখলেন, ‘স্বর্গরাজ্য এমন একটা সরষে দানার মতো যা নিয়ে কোন একজন লোক তার জমিতে লাগাল৷ 32 সমস্ত বীজের মধ্যে ওটা সত্যিই সবচেয়ে ছোট, কিন্ত গাছ হয়ে বেড়ে উঠলে পর তা সমস্ত শাক-সব্জীর থেকে বড় হয়ে একটা বড় গাছে পরিণত হয়, যাতে পাখিরা এসে তার ডালপালায় বাসা বাঁধে৷’ 33 তিনি তাদের আর একটা দৃষ্টান্ত বললেন, ‘স্বর্গরাজ্য য়েন খামিরের মতো৷ একজন স্ত্রীলোক তা নিয়ে একতাল ময়দার সঙ্গে মেশাল ও তার ফলে সমস্ত ময়দা ফেঁপে উঠল৷’ 34 জনসাধারণের কাছে উপদেশ দেবার সময় যীশু প্রায়ই এই ধরণের দৃষ্টান্ত দিতেন৷ তিনি দৃষ্টান্ত ছাড়া কোন শিক্ষাই দিতেন না৷ 35 যাতে ভাববাদীর মাধ্যমে ঈশ্বর যা বলেছিলেন, তা পূর্ণ হয়:‘আমি দৃষ্টান্তের মাধ্যমে কথা বলব; জগতের সৃষ্টি থেকে য়ে সমস্ত বিষয় এখনও গুপ্ত আছে সেগুলি প্রকাশ করব৷’ গীতসংহিতা 78:2 36 পরে যীশু লোকদের বিদায় দিয়ে ঘরে চলে গেলেন৷ তখন তাঁর শিষ্যরা এসে তাঁকে বললেন, ‘সেইক্ষেতের ও শ্যামা ঘাসের দৃষ্টান্তটি আমাদের বুঝিয়ে দিন৷’ 37 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, ‘যিনি ভাল বীজ বোনেন, তিনি মানবপুত্র৷ 38 জমি বা ক্ষেত হল এই জগত, স্বর্গরাজ্যের লোকরা হল ভাল বীজ৷ আর শ্যামাঘাস তাদেরই বোঝায়, যাঁরা মন্দ লোক৷ 39 গমের মধ্যে য়ে শত্রু শ্যামা ঘাস বুনে দিয়েছিল, সে হল দিয়াবল৷ ফসল কাটার সময় হল জগতের শেষ সময় এবং মজুররা যাঁরা সংগ্রহ করে, তারা ঈশ্বরের স্বর্গদূত৷ 40 ‘শ্যামা ঘাস জড় করে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়৷ এইপৃথিবীর শেষের সময়েও ঠিক তেমনি হবে৷ 41 মানবপুত্র তাঁর স্বর্গদূতদের পাঠিয়ে দেবেন, আর যাঁরা পাপ করে ও অপরকে মন্দের পথে ঠেলে দেয়, তাদের সবাইকে সেইস্বর্গদূতরা মানবপুত্রের রাজ্যের মধ্য থেকে একসঙ্গে জড় করবেন৷ 42 তাদের জ্বলন্ত আগুনের মধ্যে ফেলে দেবেন৷ সেখানে লোকে কান্নাকাটি করবে ও দাঁতে দাঁত ঘষতে থাকবে৷ 43 তারপর যাঁরা ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়েছে, তারা পিতার রাজ্যে সূর্যের মতো উজ্জ্বল হয়ে দেখা দেবে৷ যার শোনার মতো কান আছে সে শুনুক! 44 ‘স্বর্গরাজ্য ক্ষেতের মধ্যে লুকিয়ে রাখা ধনের মতো৷ একজন লোক তা খুঁজে পেয়ে আবার সেই ক্ষেতের মধ্যে লুকিয়ে রাখল৷ সে এতে এত খুশী হল য়ে সেখান থেকে গিয়ে তার সর্বস্ব বিক্রি করে সেই ক্ষেতটি কিনল৷ 45 ‘আবার স্বর্গরাজ্য এমন একজন সওদাগরের মতো, য়ে ভাল মুক্তা খুঁজছিল৷ 46 যখন সে একটা খুব দামী মুক্তার খোঁজ পেল, তখন গিয়ে তার যা কিছু ছিল সব বিক্রি করে সেইমুক্তাটাই কিনল৷ 47 ‘স্বর্গরাজ্য আবার এমন একটা বড় জালের মতো যা সমুদ্রে ফেলা হলে তাতে সব রকম মাছ ধরা পড়ল৷ 48 জাল পূর্ণ হলে লোকরা সেটা পাড়ে টেনে তুলল, পরে তারা বসে ভালো মাছগুলো বেছে ঝুড়িতে রাখল এবং খারাপগুলো ফেলে দিল৷ 49 জগতের শেষের দিনে এই রকমই হবে৷ স্বর্গদূতরা এসে ধার্মিক লোকদের মধ্য থেকে দুষ্ট লোকদের আলাদা করবেন৷ 50 স্বর্গদূতরা জ্বলন্ত আগুনের মধ্যে দুষ্ট লোকদের ফেলে দেবেন৷ সেখানে লোকে কান্নাকাটি করবে ও দাঁতে দাঁত ঘসবে৷’ 51 যীশু তাঁর শিষ্যদের জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তোমরা কি এসব কথা বুঝলে?’তারা তাঁকে বলল, ‘হ্যাঁ, আমরা বুঝেছি৷’ 52 তখন তিনি তাদের বললেন, ‘প্রত্যেক ব্যবস্থার শিক্ষক, যিনি স্বর্গরাজ্যের বিষয়ে শিক্ষা লাভ করেছেন তিনি এমন একজন গৃহস্থের মতো, যিনি তাঁর ভাঁড়ার থেকে নতুন ও পুরানো উভয় জিনিসই বের করেন৷’ 53 যীশু এই দৃষ্টান্তগুলি বলার পর সেখান থেকে চলে গেলেন৷ 54 তারপর তিনি নিজের শহরে গিয়ে সেখানে সমাজ-গৃহে তাদের মধ্যে শিক্ষা দিতে লাগলেন৷ তাঁর কথা শুনে লোকেরা আশ্চর্য হয়ে গেল৷ তারা বলল, ‘এইজ্ঞান ও এইসব অলৌকিক কাজ করার ক্ষমতা এ কোথা থেকে পেল? 55 এ কি সেই ছূতোর মিস্ত্রির ছেলে নয়? এর মায়ের নাম কি মরিয়ম নয়? আর এর ভাইদের নাম কি যাকোব, য়োষেফ, শিমোন ও যিহূদা নয়? 56 আর এর সব বোনেরা এখানে আমাদের মধ্যে কি থাকে না? তাহলে কোথা থেকে সে এসব পেল?’ 57 এইভাবে তাঁকে মেনে নিতে তারা মহা সমস্যায় পড়ল৷কিন্তু যীশু তাদের বললেন, ‘নিজের গ্রাম ও বাড়ি ছাড়া আর সব জায়গাতেই ভাববাদী সম্মান পান৷’ 58 তাঁর প্রতি লোকদের অবিশ্বাস দেখে তিনি সেখানে বেশী অলৌকিক কাজ করলেন না৷
Matthew 14:1 সেই সময় গালীলের শাসনকর্তা হেরোদ, যীশুর বিষয়শুনতেপেলেন৷ 2 তিনি তাঁরচাকরদের বললেন, ‘এই লোক নিশ্চয়ই বাপ্তিস্মদাতা য়োহন৷ সে নিশ্চয়ইমৃত লোকদের মধ্য থেকে বেঁচে উঠেছে৷ আর সেইজন্যইএইসব অলৌকিক কাজ করতে পারছে৷ 3 এই হেরোদই য়োহনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারের মধ্যে শেকলে বেঁধে রেখেছিলেন৷ তাঁর ভাই ফিলিপেরস্ত্রী হেরোদিয়ার অনুরোধেই তিনি একাজ করেছিলেন৷ 4 কারণ য়োহন হেরোদকে বার-বার বলতেন, ‘হেরোদিয়াকে তোমার ঐভাবে রাখা বৈধ নয়৷’ 5 হেরোদ এই জন্য য়োহনকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তিনি লোকদের ভয় করতেন, কারণ সাধারণ লোক য়োহনকে ভাববাদী বলে মানত৷ 6 এরপর হেরোদের জন্মদিন এল, সেইউত্সবে হেরোদিয়ার মেয়ে, হেরোদ ও তাঁর অতিথিদের সামনে নেচে হেরোদকে খুব খুশী করল৷ 7 সেজন্য হেরোদ শপথ করে বললেন য়ে, সে যা চাইবে তিনি তাকে তাইদেবেন৷ 8 মেয়েটি তার মায়ের পরামর্শ অনুসারে বলল, ‘থালায় করে বাপ্তিস্মদাতা য়োহনের মাথাটা আমায় এনে দিন৷’ 9 যদিও রাজা হেরোদ এতে খুব দুঃখিত হলেন, তবু তিনি শপথ করেছিলেন বলে এবং যাঁরা তাঁর সঙ্গে খেতে বসেছিলেন তারা সেই শপথের কথা শুনেছিলেন বলে সম্মানের কথা ভেবে তিনি তা দিতে হুকুম করলেন৷ 10 তিনি লোক পাঠিয়ে কারাগারের মধ্যে য়োহনের শিরশ্ছেদ করালেন৷ 11 এরপর য়োহনের মাথাটি থালায় করে নিয়ে এসে সেই মেয়েকে দেওয়া হলে, সে তা নিয়ে তার মায়ের কাছে গেল৷ 12 তারপর য়োহনের অনুগামীরা এসে তাঁর দেহটি নিয়ে গিয়ে কবর দিলেন৷ আর তাঁরা যীশুর কাছে গিয়ে সব কথা জানালেন৷ 13 যীশু সব কথা শুনে একা একটা নৌকা করে সেখান থেকে রওনা হয়ে কোন এক নির্জন জায়গায় চলে গেলেন৷ কিন্তু লোকেরা তা জানতে পেরে বিভিন্ন নগর থেকে বেরিয়ে হাঁটা পথ ধরে তাঁর সঙ্গ ধরল৷ 14 তিনি নৌকা থেকে তীরে নেমে দেখলেন বহুলোক জড় হয়েছে, তাদের প্রতি তাঁর করুণা হল৷ তাদের মধ্যে যাঁরা অসুস্থ ছিল, তাদের সকলকে তিনি সুস্থ করলেন৷ 15 সন্ধ্যা হলে শিষ্যরা তাঁর কাছে এসে বললেন, ‘এ জনহীন প্রান্তর আর এখন বেলাও শেষ হয়ে এল, এইলোকদের চলে য়েতে বলুন, তারা য়েন গ্রামে গ্রামে গিয়ে নিজেদের জন্য খাবার কিনে নিতে পারে৷’ 16 কিন্তু যীশু তাদের বললেন, ‘তাদের যাবার দরকার নেই, তোমরাইতাদের কিছু খেতে দাও৷’ 17 তখন তার শিষ্যরা তাঁকে বললেন, ‘এখানে আমাদের কাছে পাঁচখানা রুটি আর দুটো মাছ ছাড়া আর কিছুই নেই৷’ 18 তিনি তাঁদের বললেন, ‘ওগুলো আমার কাছে নিয়ে এস৷’ 19 এরপর তিনি সেই লোকদের ঘাসের ওপর বসে য়েতে বললেন৷ পরে তিনি সেই পাঁচখানা রুটি ও দুটো মাছ নিয়ে স্বর্গের দিকে তাকিয়ে সেইখাবারের জন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিলেন৷ তারপর সেই রুটিটুকরো টুকরো করে তাঁর শিষ্যদের হাতে পরিবেশন করার জন্য দিলেন৷ শিষ্যরা এক এক করে লোকদের তা দিলেন৷ 20 আর লোকেরা সকলে খেয়ে পরিতৃপ্ত হল৷ পরে শিষ্যরা পড়ে থাকা খাবারের টুকরো-টাকরা তুলে নিলে তাতে বারোটি টুকরি ভর্তি হয়ে গেল; 21 যাঁরা খেয়েছিল তাদের মধ্যে স্ত্রীলোক ও ছোট ছোট ছেলেমেয়ে ছাড়া পাঁচ হাজার পুরুষ মানুষ ছিল৷ 22 এরপরইযীশু তাঁর শিষ্যদের নৌকায় করে হ্রদের অপর পারে তাঁর সেখানে যাবার আগে তাদের পৌঁছাতে বললেন৷ এরপর তিনি লোকদের বিদায় জানালেন৷ 23 লোকদের বিদায় দিয়ে., প্রার্থনা করবার জন্য তিনি একা পাহাড়ে উঠে গেলেন৷ অন্ধকার হয়ে গেলেও তিনি সেখানে একাই রইলেন৷ 24 নৌকাটি তীর থেকে দূরে গিয়ে পড়েছিল, উল্টো হাওয়া বইতে থাকায় ঢেউয়ের ধাক্কায় ভীষণভাবে দুলছিল৷ 25 সকাল তিনটে থেকে ছ’টার মধ্যে যীশুর শিষ্যরা নৌকায় ছিলেন৷ এমন সময় যীশু জলের উপর দিয়ে হেঁটে তাঁদের কাছে এলেন৷ 26 যীশুকে হ্রদের জলের ওপর দিয়ে হেঁটে আসতে দেখে শিষ্যরা ভয়ে আঁতকে উঠলেন, তারা ‘ভূত, ভূত’ বলে ভয়ে চিত্কার করে উঠলেন৷ 27 সঙ্গে সঙ্গে যীশু তাঁদের বললেন, ‘এতো আমি! সাহস কর! ভয় করো না৷’ 28 এর উত্তরে পিতর তাঁকে বললেন, ‘প্রভু, এ যদি সত্যিই আপনি হন, তবে জলের ওপর দিয়ে আমাকেও আপনার কাছে আসতে আদেশ করুন৷’ 29 যীশু বললেন, ‘এস৷’ পিতর তখন নৌকা থেকে নেমে জলের ওপর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে যীশুর দিকে এগোতে লাগলেন৷ 30 কিন্তু যখন দেখলেন প্রচণ্ড ঝোড়ো বাতাস বইছে, তখন খুবই ভয় পেয়ে গেলেন৷ তিনি আস্তে আস্তে ডুবতে লাগলেন আর চিত্কার করে বললেন, ‘প্রভু, আমাকে বাঁচান৷’ 31 যীশু তখনইহাত বাড়িয়ে পিতরকে ধরে ফেলে বললেন, ‘হে অল্প-বিশ্বাসী! তুমি কেন সন্দেহ করলে?’ 32 যীশু ও পিতর নৌকায় উঠলে পর ঝোড়ো বাতাস থেমে গেল৷ 33 যাঁরা নৌকায় ছিলেন তাঁরা যীশুকে প্রণাম করে বললেন, ‘আপনি সত্যিইঈশ্বরের পুত্র৷’ 34 তাঁরা ্ব্রদ পার হয়ে গিনেষরত্ অঞ্চলে এলেন৷ 35 সেইঅঞ্চলের লোকরা তাঁকে চিনতে পেরে সেইঅঞ্চলের সব জায়গায় লোকদের কাছে তাঁর আসার খবর রটিয়ে দিল৷ তখন লোকেরা তাদের মধ্যে যাঁরা অসুস্থ ছিল তাদের সকলকে যীশুর কাছে নিয়ে এল৷ 36 তারা যীশুকে অনুরোধ করল, য়েন সেইরোগীরা কেবল তাঁর পোশাকের ঝালর স্পর্শ করতে পারে৷ আর যাঁরা স্পর্শ করল, তারাইসুস্থ হয়ে গেল৷
Matthew 15:1 জেরুশালেম থেকে কয়েকজন ফরীশী ও ব্যবস্থার শিক্ষক যীশুর সঙ্গে দেখা করতে এলেন৷ তাঁরা যীশুকে বললেন, 2 ‘আমাদের পিতৃপুরুষরা য়ে নিয়ম আমাদের দিয়েছেন, আপনার অনুগামীরা কেন তা মেনে চলে না? খাওয়ার আগে তারা ঠিকমতো হাত ধোয় না!’ 3 এর উত্তরে যীশু তাঁদের বললেন, ‘তোমাদের পরম্পরাগত আচার পালনের জন্য তোমরাই বা কেন ঈশ্বরের আদেশ অমান্য করো? 4 কারণ ঈশ্বর বলেছেন, ‘তোমরা বাবা-মাকে সম্মান করো৷’আর ‘য়ে কেউ তার বাবা-মার নিন্দা করবে তার মৃত্যুদণ্ড হবে৷’ 5 কিন্তু তোমরা বলে থাকো, কেউ যদি তার বাবা কিংবা মাকে বলে, ‘আমি তোমাদের কিছুই সাহায্য করতে পারব না, কারণ তোমাদের দেবার মত যা কিছু সব আমি ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে দানস্বরূপ উত্সর্গ করেছি,’ 6 তবে বাবা মায়ের প্রতি তার কর্তব্য কিছু থাকে না৷ তাই তোমাদের পরম্পরাগত রীতির দ্বারা তোমরা ঈশ্বরের আদেশ মূল্যহীন করেছ৷ 7 তোমরা হলে ভণ্ড! ভাববাদী যিশাইয় তোমাদের বিষয়ে ঠিকই ভাববাণী করেছেন: 8 ‘এই লোকগুলো মুখেই আমায় সম্মান করে, কিন্তু তাদের অন্তর আমার থেকে অনেক দূরে থাকে৷ 9 এরা আমার য়ে উপাসনা করে তা মিথ্যা, কারণ এরা য়ে শিক্ষা দেয় তা মানুষের তৈরী কতকগুলি নিয়ম মাত্র৷'" যিশাইয় 29:13 10 এরপর যীশু লোকদের তাঁর কাছে ডেকে বললেন, ‘আমি যা বলি তা শোন ও তা বুঝে দেখ৷ 11 মানুষ যা খায় তা মানুষকে অশুচি করে না৷ কিন্তু মুখের ভেতর থেকে যা বের হয়ে আসে, তাইমানুষকে অশুচি করে৷’ 12 তখন যীশুর শিষ্যরা তাঁর কাছে এসে বললেন, ‘আপনি কি জানেন ফরীশীরা আপনার এই কথা শুনে অপমান বোধ করছেন?’ 13 এর উত্তরে যীশু বললেন, ‘য়ে চারাগুলি আমার স্বর্গের পিতা লাগাননি, সেগুলি উপড়ে ফেলা হবে৷ 14 তাই ওদের কথা বাদ দাও৷ ওরা নিজেরা অন্ধ, ওরা আবার অন্য অন্ধদের পথ দেখাচ্ছে৷ দেখ, অন্ধ যদি অন্ধকে পথ দেখাতে যায়, তবে দুজনেইগর্তে পড়বে৷’ 15 তখন পিতর যীশুকে বললেন, ‘আপনি যা বললেন, তার অর্থ আমাদের বুঝিয়ে দিন৷’ 16 যীশু বললেন, ‘তোমরাও কি এখনও বুঝতে পারছ না? 17 তোমরা কি বোঝ না য়ে, যা কিছু মুখের মধ্যে যায় তা উদরে গিয়ে পৌঁছায় ও পরে তা বেরিয়ে পায়খানায় পড়ে৷ 18 কিন্তুমুখেরমধ্য থেকে যা বের হয় তা মানুষের অন্তর থেকেই বের হয় আর তাই মানুষকে অশুচি করে তোলে৷ 19 আমি একথা বলছি কারণ মানুষের অন্তর থেকেইসমস্ত মন্দচিন্তা, নরহত্যা, ব্যভিচার, য়ৌনপাপ, চুরি, মিথ্যা সাক্ষ্য ও নিন্দা বার হয়৷ 20 এসবইমানুষকে অশুচি করে, কিন্তু হাত না ধুয়ে খেলে মানুষ অশুচি হয় না৷’ 21 এরপর যীশু সেইজায়গা ছেড়ে সোর ও সীদোন অঞ্চলে গেলেন৷ 22 একজন কনান দেশীয় স্ত্রীলোক সেইঅঞ্চল থেকে এসে চিত্কার করে বলতে লাগল, ‘হে প্রভু, দায়ূদের পুত্র, আমাকে দয়া করুন৷ একটা ভূত আমার মেয়ের ওপর ভর করেছে, তাতে সে ভয়ানক যন্ত্রণা পাচ্ছে৷’ 23 যীশু তাকে একটা কথাও বললেন না, তখন তাঁর শিষ্যরা এসে যীশুকে অনুরোধ করে বললেন, ‘ওকে চলে য়েতে বলুন, কারণ ও চিত্কার করতে করতে আমাদের পিছন পিছন আসছে৷’ 24 এর উত্তরে যীশু বললেন, ‘সকলের কাছে নয়, কেবল ইস্রায়েলের হারানো মেষদের কাছে আমাকে পাঠানো হয়েছে৷’ 25 তখন সেই স্ত্রীলোকটি যীশুর কাছে এসে তাঁকে প্রণাম করে বলল, ‘প্রভু, দয়া করে আমায় সাহায্য করুন!’ 26 এর উত্তরে যীশু তাকে বললেন, ‘ছেলেমেয়েদের খাবার নিয়ে কুকুরের সামনে ছুঁড়ে দেওয়া ঠিক নয়৷’ 27 স্ত্রীলোকটি তখন বলল, ‘হ্যাঁ, প্রভু, কিন্তু মনিবদের টেবিল থেকে খাবারের য়ে সব টুকরো পড়ে কুকুরেই তা খায়৷’ 28 তখন যীশু তাকে বললেন, ‘হে নারী, তোমার বড়ইবিশ্বাস! যাও, তুমি য়েমন চাইছ, তেমনইহোক৷’ আর সেইমুহূর্ত্ত থেকেইতার মেয়েটি সুস্থ হয়ে গেল৷যীশু বহু মানুষকে আরোগ্যদান করলেন 29 এরপর যীশু সেখান থেকে গালীলহ্রদের তীর ধরে চললেন৷ তিনি একটা পাহাড়ের ওপর উঠে সেখানে বসলেন৷ 30 আর বহু লোক সেখানে এসে জড়ো হল, তারা খোঁড়া, অন্ধ, নুলো, বোবা এবং আরও অনেককে সঙ্গে নিয়ে এল৷ তারা ঐসব রোগীদের তাঁর পায়ের কাছে রাখল আর যীশু তাদের সকলকে সুস্থ করলেন৷ 31 লোকেরা যখন দেখল বোবা কথা বলছে, নূলো সুস্থ সবল হচ্ছে, খোঁড়া চলাফেরা করছে, অন্ধরা দৃষ্টিশক্তি লাভ করছে, তখন তারা আশ্চর্য হয়ে গেল আর ইস্রায়েলের ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিতে লাগল৷ 32 যীশু তখন তাঁর শিষ্যদের বললেন, ‘এইলোকদের জন্য আমার মনে কষ্ট হচ্ছে, কারণ এরা আজ তিন দিন হল আমার সঙ্গে সঙ্গে আছে, এদের কাছে আর কোন খাবার নেই৷ এই ক্ষুধার্ত অবস্থায় এদের আমি চলে য়েতে বলতে পারি না, তাহলে হয়তো এরা পথে মুর্ছা যাবে৷’ 33 তখন শিষ্যরা তাঁকে বললেন, ‘এইনির্জন জায়গায় এত লোককে খাওয়ানোর মতো অতো খাবার আমরা কোথায় পাবো?’ 34 যীশু তাঁদের বললেন, ‘তোমাদের কাছে কটা রুটি আছে?’তারা বললেন, ‘সাতখানা রুটি ও কয়েকটা ছোট মাছ আছে৷’ 35 যীশু সেই সব লোককে মাটিতে বসে য়েতে বললেন৷ 36 তারপর তিনি সেই সাতটা রুটি ও মাছ কটা নিয়ে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিলেন, পরে সেই রুটি টুকরো করে শিষ্যদের হাতে দিলেন, আর শিষ্যরা তা লোকদের দিতে লাগলেন৷ 37 লোকেরা সবাইবেশ পেট ভরে খেল৷ টুকরো-টাকরা যা পড়ে রইল, তা তোলা হলে পর তা দিয়ে সাতটাটুকরি ভর্তি হয়ে গেল৷ 38 যারা খেয়েছিল তাদের মধ্যে মহিলা ও ছোট ছোট ছেলেমেয়ে বাদ দিয়ে কেবল পুরুষ মানুষের সংখ্যাই ছিল চার হাজার৷ 39 এরপর যীশু লোকদের বিদায় দিয়ে নৌকায় উঠে মগদনের অঞ্চলে গেলেন৷
Matthew 16:1 ফরীশী ও সদ্দূকীরা যীশুরকাছেএসেতাঁকে পরীক্ষা করতে চাইলেন৷ তাই তারা ঐশ্বরিক শক্তির চিহ্নস্বরূপ কোন অলৌকিক কাজ করে দেখাতে বললেন৷ 2 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, ‘সন্ধ্যা হলে তোমরা বলে থাকো দিনে আবহাওয়া ভাল থাকবে, কারণ আকাশের রঙ লাল হয়েছে৷ 3 আবার সকাল বেলা বলে থাকো, আজকে ঝোড়ো আবহাওয়া চলবে কারণ আজ আকাশ লাল ও অন্ধকার হয়েছে৷ তোমরা আকাশের অবস্থা ভালই বিচার করে বোঝ, অথচ কালের চিহ্ন বুঝতে পারো না৷ 4 এ যুগের দুষ্ট ও ভ্রষ্টাচারী লোকেরা চিহ্নের খোঁজ করে, কিন্তু য়োনার চিহ্ন ছাড়া আর কোন চিহ্নই তাদের দেখানো হবে না৷’ এরপর যীশু তাদের ছেড়ে সেখান থেকে চলে গেলেন৷ 5 যীশু ও তাঁর শিষ্যরা হ্রদের ওপারে যাবার সময় সঙ্গে রুটি নিয়ে য়েতে ভুলে গিয়েছিলেন৷ 6 তখন যীশু তাদের বললেন, ‘তোমরা সাবধান! ফরীশী ও সদ্দূকীদের খামির থেকে সতর্ক থেকো৷’ 7 শিষ্যরা নিজেদেরমধ্যে বলাবলি করতেলাগলেন, ‘আমরা রুটিআনিনি বলে সন্ভবতঃ উনি এইকথা বলছেন?’ 8 তাঁরা কি বলাবলি করছেন, তা জানতে পেরে যীশু বললেন, ‘হে অল্প-বিশ্বাসী মানুষ, তোমরা নিজেদের মধ্যে কেন বলাবলি করছ য়ে তোমাদের রুটি নেই? 9 তোমরা কি বোঝ না অথবা তোমাদের কি মনে নেই সেই পাঁচ হাজার লোকের জন্য পাঁচ খানা রুটির কথা আর তারপরে কত টুকরি তোমরা ভর্তি করেছিলে? 10 আবার সেইচার হাজার লোকের জন্য সাতখানা রুটির কথা, আর কত টুকরি তোমরা তুলে নিয়েছিলে? 11 তোমরা কেন বুঝতে পার না য়ে আমি তোমাদের রুটির বিষয় বলিনি? আমি তোমাদের ফরীশী ও সদ্দূকীদের খামির থেকে সতর্ক থাকতে বলেছি৷’ 12 তখন তাঁরা বুঝতে পারলেন য়ে রুটির খামির থেকে তিনি তাঁদের সতর্ক হতে বলেন নি, কিন্তু বলেছিলেন তাঁরা য়েন ফরীশী ও সদ্দূকীদের শিক্ষা থেকে সাবধান হন৷ 13 এরপর যীশু কৈসরিয়া, ফিলিপী অঞ্চলে এলেন৷ তিনি তাঁর শিষ্যদের জিজ্ঞেস করলেন, ‘মানবপুত্রকে?’ এবিষয়ে লোকে কি বলে? 14 তাঁরা বললেন, ‘কেউ কেউ বলে আপনি বাপ্তিস্মদাতা য়োহন, কেউ বলে এলীয়,আবার কেউ বলে আপনি যিরমিয়বা ভাববাদীদের মধ্যে কেউ একজন হবেন৷’ 15 তিনি তাঁদের বললেন, ‘কিন্তু তোমরা কি বল, আমি কে?’ 16 এর উত্তরে শিমোন পিতর বললেন, ‘আপনি সেইমশীহ (খ্রীষ্ট), জীবন্ত ঈশ্বরের পুত্র৷’ 17 এর উত্তরে যীশু তাঁকে বললেন, ‘য়োনার ছেলে শিমোন, তুমি ধন্য, কোনো মানুষের কাছ থেকে একথা তুমি জাননি, কিন্তু আমার স্বর্গের পিতা একথা তোমায় জানিয়েছেন৷ 18 আর আমিও তোমাকে বলছি, তুমি পিতরআর এইপাথরের ওপরেই আমি আমার মণ্ডলী গেঁথে তুলব৷ মৃত্যুর কোন শক্তিতার ওপর জয়লাভ করতে পারবে না৷ 19 আমি তোমাকে স্বর্গরাজ্যের চাবিগুলি দেব, তাতে তুমি এইপৃথিবীতে যা বাঁধবে তা স্বর্গেও বেঁধে রাখা হবে৷ আর পৃথিবীতে যা হতে দেবে তা স্বর্গেও হতে দেওযা হবে৷’ 20 এরপর যীশু তাঁর শিষ্যদের দৃঢ়ভাবে নিষেধ করে দিলেন, য়েন তারা কাউকে না বলে তিনিইখ্রীষ্ট৷ 21 সেই সময় থেকে যীশু তাঁর শিষ্যদের জানাতে লাগলেন য়ে তাঁকে অবশ্যইজেরুশালেমে য়েতে হবে৷ আর সেখানে কিভাবে তাঁকে ইহুদী নেতা, প্রধান যাজক ও ব্যবস্থার শিক্ষকদের কাছ থেকে অনেক কষ্ট ভোগ করতে হবে৷ তাঁকে মেরে ফেলা হবে ও তিন দিনের মাথায় তিনি মৃত্যুলোক থেকে বেঁচে উঠবেন৷ 22 তখন পিতর তাঁকে একপাশে ডেকে নিয়ে ভর্ত্সনার সুরে বললেন, ‘প্রভু, এসবের হাত থেকে ঈশ্বর আপনাকে রক্ষা করুন৷ এর কোন কিছুই আপনার প্রতি ঘটবে না৷’ 23 যীশু পিতরের দিকে ফিরে বললেন, ‘আমার কাছ থেকে দূর হও শয়তান! তুমি আমার বাধা স্বরূপ! তুমি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গী দিয়ে এ বিষয় চিন্তা করছ, ঈশ্বরের যা তা তুমি ভাবছ না৷’ 24 এরপর যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন ‘কেউ যদি আমায় অনুসরণ করতে চায় তবে সে নিজেকে অস্বীকার করুক আর নিজের ক্রুশ তুলে নিয়ে আমার অনুসারী হোক৷ 25 য়ে কেউ নিজের জীবন রক্ষা করতে চায়, সে তা হারাবে৷ কিন্তু য়ে আমার জন্য তার নিজের প্রাণ হারাতে চাইবে সে তা রক্ষা করবে৷ 26 কেউ যদি সমস্ত জগত্ লাভ করে তার প্রাণ হারায় তবে তার কি লাভ? প্রাণ ফিরে পাবার জন্য তার দেবার মতো কি-ইবা থাকতে পারে? 27 মানবপুত্র যখন তাঁর স্বর্গদূতদের সঙ্গে নিয়ে তাঁর পিতার মহিমায় আসবেন, তখন তিনি প্রত্যেক লোককে তার কাজ অনুসারে প্রতিদান দেবেন৷ 28 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যাঁরা এখানে দাঁড়িয়ে আছে তাদের মধ্যে এমন কেউ কেউ আছে যার কোনও মতে মৃত্যু দেখবে না, য়ে পর্যন্ত মানবপুত্রকে তাঁর রাজ্যে আসতে না দেখে৷’
Matthew 17:1 ছ’দিন পর যীশু পিতর, যাকোব ও তার ভাই য়োহনকেসঙ্গে নিয়ে নির্জন এক পাহাড়ের চূড়ায় গিয়ে উঠলেন৷ 2 সেখানে তাদের সামনে যীশুর রূপান্তর হল৷ তাঁর মুখমণ্ডল সূর্যের মতো উজ্জ্বল ও তাঁর পোশাক আলোর মত সাদা হয়ে গেল৷ 3 তারপর হঠাত্ মোশি ও এলীয় তাদের কাছে উপস্থিত হয়ে যীশুর সঙ্গে কথা বলতে লাগলেন৷ 4 এই দেখে পিতর যীশুকে বললেন, ‘প্রভু, ভালইহয়েছে য়ে আমরা এখানে আছি৷ যদি আপনার ইচ্ছে হয় তবে আমি এখানে তিনটে তাঁবু খাটাতে পারি, একটা হবে আপনার, একটা মোশির জন্য আর একটা এলীয়র জন্য৷’ 5 পিতর যখন কথা বলছিলেন, সেইসময় একটা উজ্জ্বল মেঘ তাঁদের ঢেকে দিল৷ সেই মেঘ থেকে একটি রব শোনা গেল, ‘ইনিই আমার প্রিয় পুত্র, এর প্রতি আমি খুবই প্রীত৷ তোমরা এঁর কথা শোন৷’ 6 যীশুর শিষ্যরা একথা শুনে খুব ভয় পেয়ে মাটিতে উপুড় হয়ে পড়ে গেলেন৷ 7 তখন যীশু এসে তাদের স্পর্শ করে বললেন, ‘ওঠো, ভয় করো না৷’ 8 তাঁরা মুখ তুলে তাকালে যীশু ছাড়া আর কাউকে সেখানে দেখতে পেলেন না৷ 9 তাঁরা যখন সেই পাহাড় থেকে নেমে আসছিলেন, সেই সময় যীশু তাদের বললেন, ‘তোমরা যা দেখলে তা মানবপুত্র মৃতদের মধ্য থেকে জীবিত হয়ে না ওঠা পর্যন্ত কাউকে বলো না৷’ 10 তখন তাঁর শিষ্যরা তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তাহলে ব্যবস্থার শিক্ষকরা কেন বলে থাকেন য়ে, প্রথমে এলীয়র আসা আবশ্যক?’ 11 এর উত্তরে যীশু তাঁদের বললেন, ‘এলীয় আসবেন, আর তিনি সব কিছু পুনঃস্থাপন করবেন৷ 12 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, এলীয় এসে গেছেন, আর লোকে তাকে চেনেনি৷ লোকেরা তাঁর প্রতি যাচ্ছেতাইব্যবহার করেছে৷ মানবপুত্রকেও তাদের হাতে সেই একই রকম নির্য়াতন ভোগ করতে হবে৷’ 13 তখন তাঁর শিষ্যরা বুঝতে পারলেন য়ে, তিনি তাঁদের বাপ্তিস্মদাতা য়োহনের কথা বলছেন৷ 14 যীশু যখন লোকদের মাঝে আবার ফিরে এলেন, তখন একজন লোক যীশুর কাছে এসে তাঁর সামনে হাঁটু গেড়ে বলল, 15 ‘প্রভু আমার ছেলেটিকে দয়া করুন৷ তার মৃগী রোগ হয়েছে, তাতে সে খুবই কষ্ট পাচ্ছে৷ সে প্রায়ই হয় আগুনে, নয় তো জলে পড়ে যায়৷ 16 আমি তাকে আপনার শিষ্যদের কাছে এনেছিলাম, কিন্তু তাঁরা তাকে সুস্থ করতে পারেন নি৷’ 17 এর উত্তরে যীশু বললেন, ‘তোমরা অবিশ্বাসী ও দুষ্ট প্রকৃতির লোক৷ কতকাল আমি তোমাদের সঙ্গে থাকব? কতকাল আমি তোমাদের বহন করব? ছেলেটিকে আমার কাছে নিয়ে এস৷’ 18 তখন যীশু সেইভূতকে তিরস্কার করলে ভূতটি ছেলেটির মধ্য থেকে বের হয়ে গেল, আর সেই মুহূর্ত্ত থেকেইছেলেটি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে গেল৷ 19 পরে শিষ্যরা একান্তে যীশুর কাছে এসে তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আমরা সেইভুতকে তাড়াতে পারলাম না কেন?’ 20 যীশু তাদের বললেন, ‘তোমাদের অল্প বিশ্বাসের কারণেইতোমরা তা পারলে না৷ আমি তোমাদের সত্যি বলছি, ছোট্ট সরষে দানার মতো এতটুকু বিশ্বাসও যদি তোমাদের থাকে, তবে তোমরা যদি এই পাহাড়কে বল, ‘এখান থেকে সরে ওখানে যাও’ তবে তা সরে যাবে৷ তোমাদের পক্ষে কিছুই অসন্ভব হবে না৷’ 21 22 যীশু ও তাঁর শিষ্যেরা একসঙ্গে যখন গালীলে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন, তখন যীশু তাঁদের বললেন, ‘মানবপুত্রকে মানুষের হাতে তুলে দেওয়া হবে৷ 23 তারা তাঁকে হত্যা করবে; কিন্তু তিন দিনের দিন মানবপুত্র মৃত্যু থেকে জীবিত হয়ে উঠবেন৷’ এতে শিষ্যরা খুবইদুঃখিত হলেন৷ 24 যীশু ও তাঁর শিষ্যরা কফরনাহূমে গেলে, মন্দিরের জন্য যারা কর আদায় করত তারা পিতরের কাছে এসে বলল, ‘আপনাদের গুরু কি মন্দিরের কর দেন না?’ 25 পিতর বললেন, ‘হ্যাঁ, দেন৷’আর তিনি ঘরে গিয়ে কিছু বলার আগেই যীশু প্রথমে তাঁকে বললেন, ‘শিমোন তোমার কি মনে হয়? এই পৃথিবীর রাজারা কাদের কাছ থেকে নানারকম কর আদায় করে? তারা কি তাদের নিজের সন্তানদের কাছ থেকে কর আদায় করে, না বাইরের লোকেদের কাছ থেকে কর আদায় করে?’ 26 পিতর বললেন, ‘তারা অন্য লোকদের কাছ থেকেই আদায় করে৷’তখন যীশু বললেন, ‘তাহলে তাদের সন্তানদের জন্য ছাড় আছে৷ 27 কিন্তু আমরা য়েন ঐ কর আদায়কারীদের কোনরকম অপমান বোধের কারণ না হই , সেই জন্য তুমি হ্রদে গিয়ে বঁড়শী ফেল আর প্রথমে য়ে মাছটা উঠবে তা নিয়ে এসে সেই মাছটার মুখ খুললে তুমি একটি মুদ্রা পাবে, ওটা দিয়ে আমার ও তোমার দেয় কর মিটিয়ে দিও৷’
Matthew 18:1 সেই সময় যীশুর শিষ্যরা তাঁর কাছে এসে বললেন, ‘প্রভু, স্বর্গরাজ্যের মধ্যে শ্রেষ্ঠ কে?’ 2 তখন যীশু একটি শিশুকে ডেকে তাঁদের মধ্যে দাঁড় করিয়ে বললেন, 3 ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যতদিন পর্যন্ত না তোমাদের মনের পরিবর্তন ঘটিয়ে এই শিশুদের মতো হবে, ততদিন তোমরা কখনই স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে না৷ 4 তাই, য়ে কেউ নিজেকে নত-নম্র করে শিশুর মতো হয়ে ওঠে, সেই স্বর্গরাজ্যের মধ্যে শ্রেষ্ঠ৷ 5 ‘আর য়ে কেউ এরকম কোন সামান্য সেবককে আমার নামে গ্রহণ করে, সে আমাকেই গ্রহণ করে৷ 6 এই রকম নম্র মানুষদের মধ্যে যাঁরা আমাকে বিশ্বাস করে, তাদের কারও বিশ্বাসে যদি কেউ বিঘ্ন ঘটায়, তবে তার গলায় ভারী একটা য়াঁতা বেঁধে সমুদ্রের অতল জলে তাকে ডুবিয়ে দেওয়াই তার পক্ষে ভাল হবে৷ 7 ধিক্ এই জগত সংসার! কারণ এখানে কত রকমেরই না প্রলোভনের জিনিস আছে৷ প্রলোভন জগতে থাকবে ঠিকই, কিন্তু ধিক্ সেই মানুষকে যার দ্বারা তা আসে৷ 8 তাই তোমার হাত কিংবা পা যদি তোমার প্রলোভনে পড়ার কারণ স্বরূপ হয়, তবে তা কেটে ফেল৷ দুহাত ও পা নিয়ে নরকের অনন্ত আগুনে পড়ার চেয়ে বরং নূলো বা খোঁড়া হয়ে অনন্ত জীবনে প্রবেশ করা ভাল৷ 9 তোমার চোখ যদি তোমাকে প্রলোভনের পথে টেনে নিয়ে যায়, তবে তা উপড়ে ফেলে দিও৷ দুচোখ নিয়ে নরকের আগুনে পড়ার চেয়ে বরং কানা হয়ে অনন্ত জীবনে প্রবেশ করা তোমার পক্ষে ভাল৷ 10 ‘দেখো, তোমরা আমার এই নম্র মানুষদের মধ্যে একজনকেও তুচ্ছ করো না, কারণ আমি তোমাদের বলছি য়ে স্বর্গে তাদের স্বর্গদূতেরা সব সময় আমার স্বর্গীয় পিতার মুখের দিকে চেয়ে আছেন৷ 11 12 ‘তোমরা কি মনে কর? যদি কোন লোকের একশোটি ভেড়া থাকে, আর তার মধ্যে যদি একটা ভুল পথে চলে যায় তবে সে কি নিরানব্বইটাকে পাহাড়ের ধারে রেখে দিয়ে সেই হারানো ভেড়াটা খুঁজতে যাবে না? 13 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যখন সে সেইভেড়াটা খুঁজে পায় তখন য়ে নিরানব্বইটা ভুল পথে যায় নি, তাদের চেয়ে য়েটা হারিয়ে গিয়েছিল তাকে ফিরে পেয়ে সে বেশী আনন্দ করে৷ 14 ঠিক সেই ভাবে, তোমাদের পিতা যিনি স্বর্গে আছেন, তিনি চান না, য়ে এই ছোট্টদের মধ্যে একজনও হারিয়ে যায়৷ 15 ‘তোমার ভাই যদি তোমার বিরুদ্ধে কোন অন্যায় করে, তবে তার কাছে একান্তে গিয়ে তার দোষ দেখিয়ে দাও৷ সে যদি তোমার কথা শোনে, তবে তুমি তাকে আবার তোমার ভাই বলে ফিরে পেলে৷ 16 কিন্তু সে যদি তোমার কথা না শোনে, তবে আরো দু-একজনকে সঙ্গে নিয়ে তার কাছে যাও, য়েন ঐ দুজন কিংবা তিনজন সাক্ষীর কথায় প্রত্যেকটা বিষয় সত্য বলে প্রমাণিত হয়৷ 17 সে যদি তাদের কথা শুনতে না চায়, তবে মণ্ডলীতে তা জানাও৷ আর সে যদি মণ্ডলীর কথাও শুনতে না চায়, তবে সে তোমার কাছে বিধর্মী ও কর আদায়কারীর মত হোক৷ 18 ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি, পৃথিবীতে তোমরা যা বেঁধে রাখবে, স্বর্গেও তা বাঁধা হবে৷ আর পৃথিবীতে তোমরা যা খুলে দেবে স্বর্গেও তা খুলে দেওয়া হবে৷ 19 ‘আমি তোমাদের আবার বলছি, পৃথিবীতে তোমাদের মধ্যে দুজন যদি একমত হয়ে কোন বিষয় নিয়ে প্রার্থনা কর, তবে আমার স্বর্গের পিতা তাদের জন্য তা পূরণ করবেন৷ 20 একথা সত্য, কারণ আমার অনুসারীদের মধ্যে দুজন কিংবা তিনজন য়েখানে আমার নামে সমবেত হয়, সেখানে তাদের মাঝে আমি আছি৷’ 21 তখন পিতর যীশুর কাছে এসে তাঁকে বললেন, ‘প্রভু, আমার ভাই আমার বিরুদ্ধে কতবার অন্যায় করলে আমি তাকে ক্ষমা করব? সাত বার পর্যন্ত করব কি?’ 22 যীশু তাঁকে বললেন, ‘আমি তোমাকে বলছি, কেবল সাত বার নয়, কিন্তু সাতকে সত্তর দিয়ে গুণ করলে যতবার হয় ততবার৷’ 23 ‘স্বর্গরাজ্য এভাবে তুলনা করা যায়, য়েমন একজন রাজা যিনি তাঁর দাসদের কাছে হিসাব মিটিয়ে দিতে বললেন৷ 24 তিনি যখন হিসাব নিতে শুরু করলেন, তখন তাদের মধ্যে একজন লোককে আনা হল য়ে রাজার কাছে দশ হাজার রৌপ্যমুদ্রা ধারত৷ 25 কিন্তু তার সেই ঋণ শোধ করার ক্ষমতা ছিল না৷ তখন সেইমনিব রাজা হুকুম করলেন য়েন সেইলোকটাকে তার স্ত্রী ও ছেলেমেয়েকে আর তার যা কিছু আছে সমস্ত বিক্রি করে পাওনা আদায় করা হয়৷ 26 ‘তাতে সেইদাস মাটিতে উপুড় হয়ে পড়ে মনিবের পা ধরে বলল, ‘আমার ওপর ধৈর্য্য ধরুন, আমি আপনার সমস্ত ঋণই শোধ করে দেব’ 27 সেইকথা শুনে সেই দাসের প্রতি মনিবের অনুকম্পা হল, তিনি তার সব ঋণ মকুব করে দিয়ে তাকে মুক্ত করে দিলেন৷ 28 ‘কিন্তু সেইদাস ছাড়া পেয়ে বাইরে গিয়ে তার একজন সহকর্মীর দেখা পেল, য়ে তার কাছে প্রায় একশো মুদ্রা ধারত৷ সেই দাস তখন তার গলাটিপে ধরে বলল, ‘তুই য়ে টাকা ধার করেছিস তা শোধ কর৷’ 29 ‘তখন তার সহকর্মী তার সামনে উপুড় হয়ে অনুনয় করে বলল, ‘আমার প্রতি ধৈর্য্য ধর৷ আমি তোমার সব ঋণ শোধ করে দেব৷’ 30 কিন্তু সে তাতে রাজী হল না, বরং ঋণ শোধ না করা পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটকে রাখল৷ 31 তার অন্য সহকর্মীরা এইঘটনা দেখে খুবইদুঃখ পেল, তাই তারা গিয়ে তাদের মনিবের কাছে যা যা ঘটেছে সব জানাল৷ 32 ‘তখন সেই মনিব তাকে ডেকে বললেন, ‘তুমি দুষ্ট দাস! তুমি আমায় অনুরোধ করলে আর আমি তোমার সব ঋণ মকুব করে দিলাম৷ 33 আমি য়েমন তোমার প্রতি দয়া দেখিয়েছিলাম তেমনি তোমার সহকর্মীর প্রতিও কি তোমার দয়া করা উচিত ছিল না?’ 34 তখন তার মনিব ক্রুদ্ধ হয়ে সমস্ত ঋণ শোধ না করা পর্যন্ত তাকে শাস্তি দিতে কারাগারে দিয়ে দিলেন৷ 35 ‘তোমরা প্রত্যেকে যদি তোমাদের ভাইকে অন্তর দিয়ে ক্ষমা না কর, তবে আমার স্বর্গের পিতাও তোমাদের প্রতি ঠিক ঐভাবে ব্যবহার করবেন৷’
Matthew 19:1 এসব কথা বলা শেষ করে যীশু গালীল ছেড়ে যর্দননদীরঅন্য পারেযিহূদিয়া প্রদেশে এলেন৷ 2 বহুলোক তাঁর পিছু পিছু চলতে লাগল আর তিনি সেখানে তাদের সুস্থ করলেন৷ 3 সেই সময় কয়েকজন ফরীশী এসে পরীক্ষা করবার জন্য তাঁকে জিজ্ঞেস করল, কোন লোকের পক্ষে তার খুশী মতো য়ে কোন কারণে স্ত্রীকে ত্যাগ করা কি বিধি-সম্মত?’ 4 যীশু বললেন, ‘তোমরা কি শাস্ত্রে পড়নি, য়ে শুরুতেই ঈশ্বর তাদের পুরুষ ও নারী করে সৃষ্টি করেছিলেন?’ 5 এরপর ঈশ্বর বলেছিলেন, ‘এজন্য মানুষ বাবা-মাকে ছেড়ে স্ত্রীর সঙ্গে যুক্ত হবে, আর সেইদুজন এক দেহ হবে৷’ 6 তাইতারা আর দুজন নয় কিন্তু একজন৷ তাইঈশ্বর যাদের যুক্ত করেছেন, মানুষ তাদের পৃথক না করুক৷’ 7 তখন ফরীশীরা তাঁকে বললেন, ‘তবে মোশির বিধানে শুধুমাত্র বিবাহ বিচ্ছেদ পত্র দিয়ে স্ত্রীকে ত্যাগ করার বিষয়ে লেখা আছে কেন?’ 8 তখন যীশু তাদের বললেন, ‘তোমাদের অন্তরের কঠোরতার জন্যই মোশি সেই বিধান দিয়েছিলেন, শুরুতে কিন্তু এরকম ছিল না৷ 9 তাইআমি তোমাদের বলছি, যদি কোন মানুষ ব্যভিচার দোষ ছাড়া অন্য কোন কারণে স্ত্রীকে ছেড়ে দিয়ে অন্য কোন স্ত্রীলোককে বিয়ে করে তবে সে ব্যভিচার করে৷’ 10 তখন তাঁর শিষ্যরা তাঁকে বললেন, ‘স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পরিস্থিতি যখন এমনইহয়, তখন বিয়ে না করাইভাল৷’ 11 যীশু তাঁদের বললেন, ‘সবাইএইশিক্ষা গ্রহণ করতে পারে না, কেবল যাদের সেই ক্ষমতা দেওযা হয়েছে, তারাইতা মেনে নিতে পারে৷ 12 কিছু লোক নপুংসক হয়েই মাতৃগর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হয়,যারা বিয়ে করেই না৷ আর কিছু লোককে মানুষে খোজা করে দেয়, সেজন্য তারা বিয়ে করে না৷ আবার এমন কিছু লোক আছে, যাঁরা স্বর্গরাজ্যের জন্য বিয়ে করতে চায় না৷ য়ে কেউ এ শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে, সে গ্রহণ করুক৷’ 13 এরপর লোকেরা ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের যীশুর কাছে নিয়ে এল, য়েন তিনি তাদের মাথায় হাত রেখে প্রার্থনা করেন৷ কিন্তু যীশুর শিষ্যরা তাদের ধমক দিলেন৷ 14 তখন যীশু তাদের বললেন, ‘ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের বাধা দিও না, ওদের আমার কাছে আসতে নিষেধ করো না; এদের মতো লোকদের জন্যইতো স্বর্গরাজ্য৷’ 15 এরপর যীশু সব ছেলেমেয়েদের মাথায় হাত রাখলেন, তারপর তিনি সেখান থেকে চলে গেলেন৷ 16 একজন লোক একদিন যীশুর কাছে এসে জিজ্ঞেস করল, ‘গুরু অনন্ত জীবন পাবার জন্য আমাকে কোন্ ভাল কাজ করতে হবে?’ 17 যীশু তাকে বললেন, ‘কোনটি ভাল একথা তুমি আমায় জিজ্ঞেস করছ কেন? ভাল তো কেবল একজনই আর তিনি ঈশ্বর৷ যাই হোক তুমি যদি অনন্ত জীবন পেতে চাও, তবে তাঁর সব আজ্ঞা পালন কর৷’ 18 সে বলল, ‘কোন্ কোন্ আজ্ঞা পালন করব?’যীশু তাকে বললেন, ‘তুমি অবশ্যইনরহত্যা করবে না, ব্যভিচার করবে না, চুরি করবে না, মিথ্যা সাক্ষ্য দেবে না, 19 তোমার বাবা-মাকে সম্মান করোও প্রতিবেশীকে নিজের মতো ভালবেসো৷'" 20 সেই যুবক তখন যীশুকে বলল, ‘আমি তো এর সবইপালন করে আসছি, তাহলে আমার আর কি করা বাকি আছে?’ 21 যীশু তাঁকে বললেন, ‘যদি তুমি সম্পূর্ণ নিখুঁত হতে চাও, তবে যাও, তোমার সমস্ত সম্পত্তি বিক্রি করে গরীবদের মধ্যে বিলিয়ে দাও৷ তাতে তুমি স্বর্গে প্রচুর সম্পদ পাবে৷ তারপর এস, আমার অনুসারী হও৷’ 22 কিন্তু সেই যুবক এই কথা শুনে বিষন্ন হয়ে চলে গেল, কারণ তার প্রচুর সম্পত্তি ছিল৷ 23 যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি, ধনী ব্যক্তির পক্ষে স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করা কঠিন হবে৷ 24 হ্যাঁ, আমি তোমাদের বলছি, ধনীর পক্ষে স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করার চেয়ে বরং ছুঁচের ফুটো দিয়ে উটের গলে যাওয়া সহজ৷’ 25 একথা শুনে শিষ্যরা আশ্চর্য হয়ে গেলেন৷ তাঁরা তখন বললেন, ‘তাহলে উদ্ধার পাওয়া কার পক্ষে সন্ভব?’ 26 যীশু তাঁদের দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘মানুষের পক্ষে তা অসন্ভব বটে, কিন্তু ঈশ্বরের পক্ষে সবই সন্ভব৷’ 27 তখন পিতর বললেন, ‘দেখুন, আমরা সব কিছু ছেড়ে দিয়ে আপনার অনুসারী হয়েছি, তাহলে আমরা কি পাব?’ 28 যীশু তাঁদের বললেন., ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি, সেইনতুন জগতে যখন মানবপুত্র তাঁর মহিমামণ্ডিত সিংহাসনে বসবেন, তখন তোমরা যাঁরা আমার অনুসারী হয়েছ, তোমরাও বারোটি সিংহাসনে বসবে আর ইস্রায়েলের বারো গোষ্ঠীর বিচার করবে৷ 29 আর য়ে কেউ আমার জন্য বাড়ি ঘর, ভাই বোন, বাবা-মা, ছেলেমেয়ে অথবা জায়গা জমি ছেড়েছে, সে তার শতগুন বেশী পাবে এবং অনন্ত জীবনেরও অধিকারী হবে৷ 30 কিন্তু এমন অনেকে যাঁরা এখন প্রথমে আছে তারা শেষে যাবে, আর যাঁরা এখন শেষে আছে তারা প্রথম হবে৷
Matthew 20:1 ‘স্বর্গরাজ্য এমন একজন জমিদারের মতো, যিনি তাঁর দ্রাক্ষা ক্ষেতে কাজ করার জন্য ভোরবেলাই মজুর আনতে বেরিয়ে পড়লেন৷ 2 তিনি মজুরদের দিনে একটি রৌপ্যমুদ্রা মজুরী দেবেন বলে ঠিক করে, তাদের তাঁর দ্রাক্ষা ক্ষেতে পাঠিয়ে দিলেন৷ 3 প্রায় নটার সময় তিনি বাড়ির বাইরে গেলেন আর দেখলেন, কিছু লোক বাজারে তখনও কিছু না করে দাঁড়িয়ে আছে৷ 4 তিনি তাদের বললেন, ‘তোমরাও আমার দ্রাক্ষা ক্ষেতে কাজ করতে যাও, আমি তোমাদের ন্যায় মজুরী দেব৷’ 5 তখন তারাও দ্রাক্ষা ক্ষেতে কাজ করতে গেল৷ ‘সেই ব্যক্তি আবার প্রায় বেলা বারোটা ও তিনটার সময় বাড়ির বাইরে গিয়ে ঐ একই রকম ভাবে মজুরদের কাজে পাঠালেন৷ 6 প্রায় পাঁচটার সময় তিনি আবার বাইরে গেলেন ও আরো কিছু লোককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তাদের বললেন, ‘তোমরা সারাদিন কোন কাজ না করে এখানে দাঁড়িয়ে আছ কেন? 7 ‘তারা তাঁকে বলল, ‘কেউ আমাদের কাজে নেয় নি৷’‘তখন ক্ষেতের মালিক তাদের বললেন, ‘তোমরাও গিয়ে আমার ক্ষেতে কাজে লাগো৷’ 8 ‘দিনের শেষে ক্ষেতের মালিক তাঁর নায়েবকে ডেকে বললেন, ‘মজুরদের সকলকে ডাক ও তাদের মজুরী মিটিয়ে দাও; শেষের জন থেকে শুরু করে প্রথম জন পর্যন্ত সকলকে দাও৷’ 9 ‘বিকেল পাঁচটায় য়ে মজুররা কাজে লেগেছিল, তারা এসে প্রত্যেকে একটা রূপোর টাকা নিয়ে গেল৷ 10 প্রথমে যাদের কাজে লাগানো হয়েছিল, তারা বেশী পাবে বলে আশা করেছিল, কিন্তু তারাও প্রত্যেকে একটা করে রূপোর টাকা পেল৷ 11 তারা তা নিল বটে কিন্তু ক্ষেতের মালিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলল, 12 যাঁরা শেষে কাজে লেগেছিল তারা মাত্র একঘন্টা কাজ করেছে, আর আপনি তাদের ও আমাদের সমান মজুরী দিলেন; অথচ আমরা কড়া রোদে সারা দিন ধরে কাজ করলাম৷’ 13 ‘এর উত্তরে তিনি তাদের একজনকে বললেন, ‘বন্ধু, আমি তো তোমার সঙ্গে কোন অন্যায় ব্যবহার করিনি৷ তুমি কি এক টাকা মজুরীতে কাজ করতে রাজী হও নি? 14 তোমার যা পাওনা তা নিয়ে বাড়ি যাও৷ আমার ইচ্ছা, আমি তোমাকে যা দিয়েছি, এই শেষের জনকেও তাই দেব৷ 15 যা আমার নিজের, তা আমার খুশীমতো ব্যবহার করার অধিকার কি আমার নেই ? আমি দয়ালু, এই জন্য কি তোমার ঈর্ষা হচ্ছে?’ 16 ‘ঠিক এই রকম যাঁরা শেষের তারা প্রথম হবে, আর যাঁরা প্রথম, তারা শেষে পড়ে যাবে৷’ 17 এরপর যীশু জেরুশালেমের দিকে যাত্রা করলেন৷ সঙ্গে তাঁর বারোজন শিষ্যও ছিলেন, পথে তিনি তাঁদের একান্তে ডেকে নিয়ে গিয়ে বললেন, 18 ‘শোন, আমরা এখন জেরুশালেমের দিকে যাচ্ছি৷ সেখানে মানবপুত্রকে প্রধান যাজকদের ও ব্যবস্থার শিক্ষকদের হাতে সঁপে দেওয়া হবে, তারা তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেবে৷ 19 তারা তাঁকে বিদ্রূপ করবার জন্য, বেত মারবার ও ক্রুশে দেবার জন্য অইহুদীদের হাতে তুলে দেবে৷ কিন্তু মৃত্যুর তিন দিনের মাথায় তিনি জীবিত হয়ে উঠবেন৷’ 20 পরে সিবদিয়ের ছেলেদের মা তার দুই ছেলেকে নিয়ে যীশুর কাছে এসে তাঁকে প্রণাম করে বললেন, আমার জন্য কিছু করুন৷ 21 যীশু তাকে বললেন, ‘তুমি কি চাও?’তিনি বললেন, ‘আপনি আমায় এই প্রতিশ্রুতি দিন য়েন আপনার রাজ্যে আমার এইদুই ছেলে একজন আপনার ডানপাশে আর একজন বাঁ পাশে বসতে পায়৷’ 22 এর উত্তরে যীশু বললেন, ‘তোমরা কি চাইছ তা তোমরা জান না৷ আমি য়ে দুঃখের পেয়ালায় পান করতে যাচ্ছি তাতে কি তোমরা পান করতে পার?’ছেলেরা তাঁকে বলল, ‘হ্যাঁ, পারি!’ 23 তিনি তাদের বললেন, ‘বাস্তবিক, তোমরা আমার পেয়ালায় পান করবে; কিন্তু আমার ডানদিকে বা বাঁদিকে বসতে দেবার অধিকার আমার নেই৷ আমার পিতা যাদের জন্য তা ঠিক করে রেখেছেন, তারাই তা পাবে৷’ 24 বাকি দশজন শিষ্য এই কথা শুনে ঐ দুই ভাইয়ের ওপর রেগে গেলেন৷ 25 তখন যীশু তাঁদের নিজের কাছে ডেকে বললেন, ‘তোমরা একথা জান য়ে, অইহুদীদের শাসনকর্তারাই তাদের প্রভু, আর তাদের মধ্যে যাঁরা প্রধান তারা তাদের ওপর হুকুম চালায়৷ 26 কিন্তু তোমাদের মধ্যে সেরকম হওয়া উচিত নয়৷ তোমাদের মধ্যে য়ে বড় হতে চায়, তাকে তোমাদের সেবক হতে হবে৷ 27 আর তোমাদের মধ্যে য়ে শ্রেষ্ঠ স্থান লাভ করতে চায়, সে য়েন তোমাদের দাস হয়৷ 28 মনে রেখো, তোমাদের মানবপুত্রের মতো হতে হবে, যিনি সেবা পেতে নয় বরং সেবা করতে এসেছেন, আর অনেক লোকের মুক্তির মূল্য হিসাবে নিজের প্রাণ উত্সর্গ করতে এসেছেন৷’ 29 তাঁরা যখন যিরীহো শহর ছেড়ে যাচ্ছিলেন, তখন বহু লোক যীশুর পিছু পিছু চলল৷ 30 সেখানে পথের ধারে দুজন অন্ধ বসেছিল৷ যীশু সেই পথ দিয়ে যাচ্ছেন শুনে তারা চিত্কার করে বলল, ‘প্রভু, দায়ূদের পুত্র, আমাদের প্রতি দয়া করুন৷’ 31 লোকেরা তাদের ধমক দিয়ে চুপ করতে বলল৷ কিন্তু তারা আরো চিত্কার করে বলতে লাগল, ‘প্রভু দায়ূদের পুত্র, আমাদের প্রতি দয়া করুন!’ 32 তখন যীশু দাঁড়ালেন আর তাদের ডেকে বললেন, ‘তোমরা কি চাও? আমি তোমাদের জন্য কি করব?’ 33 তারা বলল, ‘প্রভু আমরা য়েন দেখতে পাই৷’ 34 তখন তাদের প্রতি যীশুর করুণা হল৷ তিনি তাদের চোখ স্পর্শ করলেন, আর তখনইতারা দৃষ্টি ফিরে পেল ও তাঁর পেছনে পেছনে চলল৷
Matthew 21:1 যীশু ও তাঁর শিষ্যরা জেরুশালেমের কাছাকাছিজৈতুন পর্বতমালার ধারে অবস্থিত বৈত্ফগী গ্রামের ধারে এসে পৌঁছালেন৷ 2 তিনি তাঁর দুজন শিষ্যকে এইবলে পাঠালেন, ‘তোমরা ঐ সামনের গ্রামে যাও৷ সেখানে দেখবে একটা গাধা বাঁধা আছে আর একটা বাচ্চাও তার সাথে আছে৷ তাদের খুলে আমার কাছে নিয়ে এস৷ 3 কেউ যদি তোমাদের কিছু জিজ্ঞেস করে, তবে তাকে বোলো, ‘প্রভুএদের চান৷ তিনি পরে তাদের ফেরত দেবেন৷’ 4 এমনটি হল য়েন এর দ্বারা ভাববাদীর ভাববাণী পূর্ণ হয়: 5 ‘সিযোন নগরীকে বল, ‘দেখ তোমার রাজা তোমার কাছে আসছেন৷ তিনি নম্র, তিনি গাধার ওপরে, একটি ভারবাহী গাধার বাচ্চার ওপরে চড়ে আসছেন৷'" সখরিয় 9:9 6 যীশু য়েমন বলেছিলেন তাঁর শিষ্যেরা গিয়ে তেমনি করলেন৷ 7 তারা সেই গাধা ও গাধার বাচ্চাটা এনে তাদের ওপর নিজেদের গায়ের কাপড় বিছিয়ে দিলে যীশু তাদের উপর বসলেন৷ 8 লোকদের মধ্যে অনেকেই নিজেদের জামা খুলে পথে বিছিয়ে দিল, আবার অনেকে গাছের ডাল কেটে নিয়ে পথের ওপরে বিছিয়ে দিল৷ 9 যাঁরা যীশুর সামনে ও পিছনে ভীড় করে যাচ্ছিল, তারা চিত্কার করে বলতে লাগল,‘দায়ূদের পুত্রের প্রশংসা হোক৷ যিনি প্রভুর নামে আসছেন, তিনি ধন্য! স্বর্গে ঈশ্বরের প্রশংসা হোক্৷’গীতসংহিতা 118:25-26 10 যীশু যখন জেরুশালেমে প্রবেশ করলেন, তখন সমস্ত শহরে খুব শোরগোল পড়ে গেল৷ লোকেরা বলাবলি করতে লাগল, ‘ইনি কে?’ 11 জনতা বলে উঠল, ‘ইনি যীশু, গালীলের নাসরতীয় শহরের সেই ভাববাদী৷’ 12 এরপর যীশু মন্দির চত্বরে ঢুকলেন; আর যাঁরা সেই মন্দির চত্বরের মধ্যে বেচাকেনা করছিল, তাদের তাড়িয়ে দিলেন৷ যাঁরা টাকা বদল করে দেবার জন্য টেবিল সাজিয়ে বসেছিল ও যাঁরা ডালায় করে পায়রা বিক্রি করছিল তিনি তাদের টেবিল ও ডালা উল্টে দিলেন৷ 13 যীশু তাদের বললেন, ‘শাস্ত্রে লেখা আছে, ‘আমার গৃহ হবে প্রার্থনা গৃহ৷’কিন্তু তোমরা তা দস্যুদের আস্তানায় পরিণত করেছ৷'" 14 এরপর মন্দির চত্বরের মধ্যে অনেক অন্ধ ও খঞ্জ যীশুর কাছে এলে তিনি তাদের সুস্থ করলেন৷ 15 প্রধান যাজকরা ও ব্যবস্থার শিক্ষকরা দেখলেন য়ে, যীশু অনেক অলৌকিক কাজ করছেন, আর যখন দেখলেন মন্দির চত্বরের মধ্যে ছেলেমেয়েরা চিত্কার করে বলছে, ‘প্রশংসা, দায়ূদের পুত্রের প্রশংসা হোক্,’ তখন তাঁরা রেগে গেলেন৷ 16 তাঁরা যীশুকে বললেন, ‘ওরা যা বলছে, তা কি তুমি শুনতে পাচ্ছ?’যীশু তাদের জবাব দিলেন, ‘হ্যাঁ, পাচ্ছি, তোমরা কি শাস্ত্রে পড় নি? ‘তুমি ছোট ছোট ছেলেমেয়ে ও দুগ্ধপোষ্য শিশুদেরই প্রশংসা করতে শিখিয়েছ৷'" 17 এরপর যীশু তাদের ছেড়ে শহরের বাইরে বৈথনিয়ায় গিয়ে রাতে সেখানেই থাকলেন৷ 18 পরদিন সকালে তিনি যখন জেরুশালেমে ফিরছিলেন, সেই সময় যীশুর খিদে পেল৷ 19 তিনি পথের ধারে একটি ডুমুর গাছ দেখতে পেয়ে সেই গাছটার কাছে গেলেন৷ কিন্তু পাতা ছাড়া তাতে কিছু দেখতে পেলেন না৷ তখন তিনি সেই গাছটিকে বললেন, ‘তোমাতে আর কখনও ফল হবে না৷’ আর সেইডুমুর গাছটি শুকিয়ে গেল৷ 20 এই ঘটনা দেখে শিষ্যরা আশ্চর্য হয়ে বললেন, ‘এই ডুমুর গাছটা এত তাড়াতাড়ি কেমন করে শুকিয়ে গেল?’ 21 এর উত্তরে যীশু তাঁদের বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমাদের যদি ঈশ্বরের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস থাকে, যদি সন্দেহ না কর, তবে ডুমুর গাছের প্রতি আমি যা করেছি, তোমরাও তা করতে পারবে৷ শুধু তাই নয়, তোমরা যদি ঐ পাহাড়কে বল, ‘ওঠ, ঐ সাগরে গিয়ে আছড়ে পড়’ দেখবে তাই হবে৷ 22 যদি বিশ্বাস থাকে, তবে প্রার্থনায় তোমরা যা চাইবে তা পাবে৷’ 23 যীশু যখন আবার মন্দির চত্বরে লোকদের শিক্ষা দিচ্ছিলেন, সেই সময় প্রধান যাজকরা ও সমাজপতিরা তাঁর কাছে এসে বললেন, ‘তুমি কোন অধিকারে এসব করছ? এই অধিকার তোমায় কে দিয়েছে?’ 24 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, ‘আমি তোমাদের একটা প্রশ্ন করতে চাই, আর তোমরা যদি তার উত্তর দাও তাহলে আমিও তোমাদের বলব আমি কোন অধিকারে এসব করছি৷ 25 আমার প্রশ্ন হচ্ছে, বাপ্তিস্ম দেবার অধিকার য়োহন কোথা থেকে পেয়েছিলেন? তা কি ঈশ্বরের কাছ থেকে, না মানুষের কাছ থেকে এসেছিল?’তখন তারা নিজেদের মধ্যে এই আলোচনা করে বলল, ‘আমরা যদি বলি, ঈশ্বরের কাছ থেকে, তাহলে ও আমাদের বলবে, ‘তবে তোমরা কেন তাকে বিশ্বাস কর নি?’ 26 কিন্তু আমরা যদি বলি, ‘মানুষের কাছ থেকে,’ তবে জনসাধারণের কাছ থেকে ভয় আছে, কারণ লোকেরা য়োহনকে ভাববাদী বলে মানে৷’ 27 তাই এর উত্তরে তারা যীশুকে বললেন, ‘আমরা জানি না৷’তখন যীশু তাদের বললেন, ‘তবে আমিও তোমাদের বলব না, কোন্ অধিকারে আমি এসব করছি৷ 28 তারপর যীশু বললেন, ‘আচ্ছা, এবিষয়ে তোমরা কি বলবে? একজন লোকের দুটি ছেলে ছিল৷ সে তার বড় ছেলের কাছে গিয়ে বলল, ‘বাছা, আজ তুমি আমার দ্রাক্ষা ক্ষেতে গিয়ে কাজ কর৷’ 29 ‘কিন্তু তার ছেলে বলল, ‘আমি য়েতে চাইনা৷’ কিন্তু পরে সে তার মত বদলিয়ে কাজে গেল৷ 30 ‘এরপর লোকটি তার অপর ছেলের কাছে গিয়ে তাকেও সেই একইকথা বলল৷ এর উত্তরে অন্য ছেলেটি বলল, ‘হ্যাঁ, মহাশয় যাচ্ছি৷’ কিন্তু সে গেল না৷ 31 ‘এই দুজনের মধ্যে কে তার বাবার ইচ্ছা পালন করল? তারা বললেন, ‘বড় ছেলে৷’যীশু তাদের বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি, কর-আদায়কারীরা ও বেশ্যারা,. তোমাদের আগে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করছে৷ 32 আমি একথা বলছি কারণ জীবনের সঠিক পথ দেখাবার জন্য য়োহন তোমাদের কাছে এসেছিলেন আর তোমরা তাঁকে বিশ্বাস করনি৷ কিন্তু কর-আদায়কারী ও বেশ্যারা তাকে বিশ্বাস করেছে৷ এসব দেখেও তোমরা মন পরিবর্তন করনি ও তাঁর প্রতি বিশ্বাস করনি৷ 33 ‘আর একটি দৃষ্টান্ত শোন! এক জমিদার একটি দ্রাক্ষা ক্ষেত তৈরী করে তার চারদিকে বেড়া দিলেন৷ পরে সেই ক্ষেতের মধ্যে দ্রাক্ষা মাড়াবার জন্য গর্ত খুঁড়লেন৷ পাহারা দেবার জন্য একটা উঁচু পাহারা ঘর তৈরী করলেন৷ পরে কয়েকজন চাষীর কাছে সেই দ্রাক্ষা ক্ষেত ইজারা দিয়ে বিদেশে চলে গেলেন৷ 34 যখন দ্রাক্ষা তোলার সময় হল, তখন তিনি তাঁর ভাগ নিয়ে আসবার জন্য তাঁর ক্রীতদাসদের সেই চাষীদের কাছে পাঠালেন৷ 35 ‘কিন্তু চাষীরা তাঁর দাসদের একজনকে মারল, একজনকে খুন করল আর তৃতীয়জনকে পাথর ছুঁড়ে খুন করল৷ 36 এরপর তিনি প্রথম বারের চেয়ে আরো বেশী দাস সেখানে পাঠালেন, আর সেইচাষীরা ঐ দাসদের সঙ্গে একই রকম ব্যবহার করল৷ 37 পরে তিনি তাঁর নিজের ছেলেকে তাদের কাছে পাঠালেন; তিনি ভাবলেন, ‘ওরা নিশ্চয়ই ওঁর ছেলেকে মান্য করবে৷ 38 ‘কিন্তু চাষীরা যখন দেখল য়ে মালিকের ছেলে আসছে, তখন তারা নিজেদের মধ্যে পরামর্শ করে বলল, ‘দেখ, এই হচ্ছে আইনসম্মত উত্তরাধিকারী, এস, একে আমরা খুন করি, তাহলে আমরাইতার সম্পত্তির মালিক হয়ে যাব৷’ 39 তখন তারা সেই ছেলেকে ধরে দ্রাক্ষা ক্ষেতের বাইরে ছুঁড়ে ফেলে দিল ও তাকে হত্যা করল৷ 40 এক্ষেত্রে দ্রাক্ষা ক্ষেতের মালিক যখন ফিরে আসবেন, তখন ঐ চাষীদের তিনি কি করবেন, তোমরা কি বল?’ 41 ইহুদী যাজকরা যীশুকে বললেন, ‘তারা দুষ্ট লোক বলে তিনি তাদের নির্মমভাবে ধ্বংস করবেন ও সেইদ্রাক্ষা ক্ষেত অন্য চাষীদের হাতে দেবেন, যাঁরা ফলের মরশুমে তাঁকে তাঁর প্রাপ্য অংশ দেবে৷’ 42 তখন যীশু তাদের বললেন, ‘তোমরা কি শাস্ত্রের এই অংশ পড় নি:‘রাজমিস্ত্রিরা য়ে পাথরটা বাতিল করে দিয়েছিল, সেই পাথরটাই হয়ে উঠেছে কোণের প্রধান পাথর৷ এটা প্রভুরইকাজ, এটা আমাদের চোখে আশ্চর্য লাগে৷’গীতসংহিতা 118:22-23 43 ‘অতএব, আমি তোমাদের বলছি, ঈশ্বরের রাজ্য তোমাদের কাছ থেকে নিয়ে নেওযা হবে, আর এমন লোকদের দেওয়া হবে, যাঁরা ঈশ্বরের রাজ্যের পক্ষে উপযুক্ত ব্যবহার করবে৷ 44 আর ঐ য়ে পাথর তার ওপরে য়ে পড়বে সে ভেঙ্গে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাবে, আর সেই পাথর যার ওপরে পড়বে তাকে গুঁড়িয়ে ধূলিসাত্ করবে৷’ 45 প্রধান যাজকরা ও ফরীশীরা যীশুর দেওয়া এই দৃষ্টান্তগুলি শুনে বুঝতে পারলেন যীশু তাদেরই বিষয়ে এই কথাগুলি বললেন৷ 46 তাই তাঁরা যীশুকে গ্রেপ্তার করাতে চাইলেন, কিন্তু জনসাধারণের ভয়ে তা করলেন না, কারণ সাধারণ লোকে তাঁকে ভাববাদী বলে মনে করত৷
Matthew 22:1 দৃষ্টান্তের মাধ্যমে যীশু আবার তাদের বলতেশুরু করলেন৷ 2 তিনি বললেন, “স্বর্গরাজ্যের বিষয়ে এইতুলনা দেওয়া য়েতে পারে, একজন রাজা যিনি তাঁর ছেলের বিয়ের ভোজ প্রস্তুত করলেন৷ 3 সেইভোজে নিমন্ত্রিত লোকদের ডাকবার জন্য তিনি তাঁর দাসদের পাঠালেন, কিন্তু তারা আসতে চাইল না৷ 4 ‘রাজা আবার তাঁর অন্য দাসদের পাঠালেন, বললেন, ‘যাঁরা নিমন্ত্রিত তাদের সকলকে বল৷ দেখ, আমার ভোজ প্রস্তুত, আমার বলদ ও হৃষ্টপুষ্ট বাছুরগুলো সব মারা হয়েছে, আর সব কিছুই প্রস্তুত৷ তোমরা বিবাহ ভোজে য়োগ দিতে এস৷’ 5 ‘কিন্তু নিমন্ত্রিত লোকেরা তাদের কথায় কান না দিয়ে য়ে যার কাজে চলে গেল৷ কেউ বা তার ক্ষেতের কাজে গেল, আবার কেউ গেল তার ব্যবসার কাজে৷ 6 অন্যরা রাজার সেই দাসদের ধরে তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করল ও তাদের খুন করল৷ 7 এতে রাজা খুব রেগে গেলেন, তিনি তাঁর সৈন্য পাঠিয়ে সেইখুনীদের মেরে ফেললেন, সৈন্যরা তাদের শহরটিও পুড়িয়ে দিল৷ 8 ‘এরপর রাজা তাঁর দাসদের বললেন, ‘বিয়ের ভোজ প্রস্তুত কিন্তু যাঁরা নিমন্ত্রিত হয়েছিল তারা তার য়োগ্য ছিল না৷ 9 তাইতোমরা রাস্তার মোড়ে মোড়ে যাও আর যত লোকের দেখা পাও, তাদের সকলকে এই ভোজে য়োগ দেবার জন্য ডেকে আনো৷ 10 তখন সেই দাসরা রাস্তায় রাস্তায় গিয়ে ভাল ও মন্দ যাদের পেল তাদের সকলকে ডেকে আনল৷ তাতে বিয়ে বাড়ির ভোজের ঘর অতিথিতে ভরে গেল৷ 11 ‘কিন্তু রাজা অতিথিদের সঙ্গে দেখা করতে এসে সেখানে একজন লোককে দেখতে পেলেন য়ে বিয়ে বাড়ির পোশাক পরে আসে নি৷ 12 রাজা তাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘বন্ধু, বিয়ে বাড়ির উপযুক্ত পোশাক ছাড়াই তুমি কেমন করে এখানে এলে?’ কিন্তু সে চুপ করে থাকল৷ 13 তখন রাজা তাঁর পরিচারকদের বললেন, ‘এর হাত পা বেঁধে একে বাইরে অন্ধকারে ফেলে দাও, য়েখানে লোকেরা কান্নাকাটি করে ও যন্ত্রণায় দাঁতে দাঁত ঘষে৷’ 14 ‘কারণ অনেকেই আহুত, কিন্তু অল্পই মনোনীত৷’ 15 তখন ফরীশীরা সেখান থেকে চলে গেল, আর কেমন করে যীশুকে তাঁর কথার ফাঁদে ফেলা যায় সেই পরিকল্পনা করল৷ 16 তারা হেরোদীয়দের কয়েকজনের সঙ্গে নিজেদের কয়েকজন অনুগামীকে যীশুর কাছে পাঠাল৷ এইলোকেরা এসে বলল, ‘গুরু, আমরা জানি আপনি একজন সত্ লোক৷ ঈশ্বরের পথের বিষয়ে সঠিক ভাবে শিক্ষা দিয়ে থাকেন৷ আর কে কি বলে তার ধার ধারেন না কারণ লোকে কি ভাববে তাতে আপনার কিছু যায় আসে না৷ 17 তাহলে আপনার কি মত, কৈসরকে কর দেওয়া উচিত কি না?’ 18 যীশু তাদের বদ মতলব বুঝতে পেরে বললেন, ‘ভণ্ডের দল আমাকে ফাঁদে ফেলতে চাইছ কেন? 19 য়ে টাকায় কর দেওয়া হয় তা আমাকে দেখাও৷’ তারা একটা রূপোর টাকা তাঁর কাছে নিয়ে এল৷ 20 তখন তিনি তাদের বললেন, ‘এর ওপরে এইমূর্তি ও নাম কার?’ 21 তারা বলল, ‘রোম সম্রাট কৈসরের৷’তখন তিনি তাদের বললেন, ‘তবে যা কৈসরের তা কৈসরকে দাও, আর যা ঈশ্বরের তা ঈশ্বরকে দাও৷’ 22 তারা এইজবাব শুনে আশ্চর্য হয়ে গেল, তাঁকে আর বিরক্ত না করে সেখান থেকে চলে গেল৷ 23 যাঁরা বলে পুনরুত্থান নেই, সেই সদ্দূকী সম্প্রদায়ের কিছু লোক সেই দিন যীশুর কাছে এসে তাঁকে একটি প্রশ্ন করলেন৷ 24 তাঁরা বললেন, ‘গুরু, মোশি বলেছেন যদি কোন লোক নিঃসন্তান অবস্থায় মারা যায়, তবে তার নিকটতম আত্মীয়রূপে তার ভাইসেই বিধবাকে বিয়ে করবে ও তার ভাইয়ের হয়ে তার বংশ উত্পন্ন করবে৷ 25 আমাদের জানা এক পরিবারে সাত ভাই ছিল৷ প্রথম জন বিয়ে করল, তারপরে সে মারা গেল৷ আর তার কোন সন্তান না থাকাতে, তার ভাই সেই বিধবাকে বিয়ে করল৷ 26 এইঅবস্থা দ্বিতীয়, তৃতীয় ও সপ্তম জন পর্যন্ত হল, তারা সেই স্ত্রীকে বিয়ে করল ও মারা গেল৷ 27 শেষে সেই স্ত্রীলোকটিও মারা গেল৷ 28 এখন আমাদের প্রশ্ন হল, পুনরুত্থানের সময় ঐ সাত ভাইয়ের মধ্যে সেই স্ত্রী কার হবে, সকলেইতো তাকে বিয়ে করেছিল?’ 29 ‘এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, ‘তোমরা ভুল করছ, কারণ তোমরা না জান শাস্ত্র, না জান ঈশ্বরের পরাক্রম৷ 30 জেনে রাখো, পুনরুত্থানের পর লোকেরা বিয়ে করে না, বা তাদের বিয়েও দেওয়া হয় না, তারা বরং স্বর্গদূতদের মতো থাকে৷ 31 মৃতদের জীবিত হয়ে ওঠার বিষয়ে তোমাদের ভালোর জন্য ঈশ্বর নিজে য়ে কথা বলেছেন, তা কি তোমরা পড়নি? 32 তিনি বলেছেন, ‘আমি অব্রাহামের ঈশ্বর, ইসহাকের ঈশ্বর ও যাকোবের ঈশ্বর৷’ঈশ্বর মৃতদের ঈশ্বর নন, কিন্তু জীবিতদেরই ঈশ্বর৷ 33 সমবেত লোকেরা তাঁর এই শিক্ষা শুনে আশ্চর্য হয়ে গেল৷ 34 ফরীশীরা যখন শুনলেন য়ে যীশুর জবাবে সদ্দূকীরা নিরুত্তর হয়ে গেছেন তখন তাঁরা দল বেঁধে যীশুর কাছে এলেন৷ 35 তাঁদের মধ্যে একজন শাস্ত্রজ্ঞ পণ্ডিত যীশুকে ফাঁদে ফেলবার জন্য জিজ্ঞাসা করলেন, 36 ‘গুরু, বিধি-ব্যবস্থার মধ্যে সবচেয়ে মহান আদেশ কোনটি?’ 37 যীশু তাঁকে বললেন, ‘তোমার সমস্ত অন্তর ও তোমার সমস্ত প্রাণ ও মন দিয়ে তুমি তোমার প্রভু ঈশ্বরকে ভালবাসবে৷’ 38 এটিই হচ্ছে সর্বপ্রথম ও মহান আদেশ৷ 39 আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে এরই অনুরূপ, ‘তুমি নিজেকে য়েমন ভালবাস, তেমনি তোমার প্রতিবেশীকেও ভালবাসবে৷’ 40 সমস্ত বিধি-ব্যবস্থা ভাববাদীদের সমস্ত শিক্ষা, এই দুটি আদেশের উপর নির্ভর করে৷’ 41 ফরীশীরা তখনও সেখানে সমবেত ছিলেন, সেই সময় যীশু তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, 42 ‘খ্রীষ্টের বিষয়ে তোমরা কি মনে কর? তিনি কার বংশধর?’তারা বললেন, ‘তিনি দায়ূদের পুত্র৷’ 43 যীশু তাদের বললেন, ‘তবে দায়ূদ কিভাবে পবিত্র আত্মার অনুপ্রেরণায় তাঁকে ‘প্রভু’ বলে সম্বোধন করেছেন? তিনি বলেছিলেন, 44 ‘প্রভু আমার প্রভুকে বললেন, যতক্ষন না আমি তোমার শত্রুদের তোমার পায়ের নীচে রাখি ততক্ষণ তুমি আমার ডান দিকে বস ও শাসন কর৷’ গীতসংহিতা 110:1 45 তাহলে, দায়ূদ যখন তাঁকে ‘প্রভু’ বলে সম্বোধন করেছেন, তখন তিনি কেমন করে তাঁর সন্তান হতে পারেন?’ 46 কিন্তু এর উত্তরে কেউ একটি কথাও তাঁকে বলতে পারলেন না, আর সেই দিন থেকে কেউ তাঁকে আর কিছু জিজ্ঞাসা করতেও সাহস করলেন না৷
Matthew 23:1 এরপর যীশু লোকদের ও তাঁর শিষ্যদের বললেন, 2 ‘মোশির বিধি-ব্যবস্থার ব্যাখ্যা দেবার অধিকার ব্যবস্থার শিক্ষক ও ফরীশীদের আছে৷ 3 তাই তারা যা যা বলে, তা তোমরা করো এবং মেনে চলো: কিন্তু তারা যা করে তোমরা তা করো না৷ আমি একথা বলছি, কারণ তারা যা বলে তারা তা করে না৷ 4 তারা ভারী ভারী বোঝা যা বওয়া কঠিন, তা লোকদের কাঁধে চাপিয়ে দেয়; কিন্তু সেগুলো সরাবার জন্য নিজেরা একটা আঙ্গুলও নাড়াতে চায় না৷ 5 ‘তারা যা কিছু করে সবই লোক দেখানোর জন্য৷ তারা শাস্ত্রের পদ লেখা তাবিজ বড় করে তৈরী করে, আর নিজেদের ধার্মিক দেখাবার জন্য পোশাকের প্রান্তে লম্বা লম্বা ঝালর লাগায়৷ 6 তারা ভোজসভায় সম্মানের জায়গায় এবং সমাজ-গৃহে গুরুত্বপূর্ণ আসনে বসতে ভালবাসে৷ 7 তারা হাটে-বাজারে লোকদের কাছ থেকে সম্মানসূচক অভিবাদন ও ‘গুরু’ ডাক শুনতে খুবইভালবাসে৷ 8 ‘কিন্তু তোমরা দেখো, লোকে য়েন তোমাদের ‘শিক্ষক’ বলে না ডাকে, কারণ একজনই তোমাদের শিক্ষক, আর তোমরা সকলে পরস্পর ভাই বোন৷ 9 এই পৃথিবীতে কাউকে ‘পিতা’ বলে ডেকো না, কারণ তোমাদের পিতা একজনই, তিনি স্বর্গে থাকেন৷ 10 কেউ য়েন তোমাদের ‘আচার্য্য় বলে না ডাকে, কারণ তোমাদের আচার্য়্য় একজনই, তিনি খ্রীষ্ট৷ 11 তোমাদের মধ্যে য়ে সব থেকে শ্রেষ্ঠ, সে তোমাদের সেবক হবে৷ 12 য়ে কেউ নিজেকে বড় করে, তাকে নত করা হবে৷ আর য়ে কেউ নিজেকে নত করে, তাকে উন্নত করা হবে৷ 13 ‘ধিক্ ব্যবস্থার শিক্ষক ও ফরীশীর দল, তোমরা ভণ্ড! তোমরা লোকদের জন্য স্বর্গরাজ্যের দরজা বন্ধ করে রাখছ, নিজেরাও তাতে প্রবেশ করো না, আর যাঁরা প্রবেশ করতে চেষ্টা করছে তাদেরও প্রবেশ করতে দিচ্ছ না৷ 14 ৷ 15 ‘ধিক ব্যবস্থার শিক্ষক ও ফরীশীর দল, তোমরা ভণ্ড! একজন লোককে নিজেদের ধর্মমতে নিয়ে আসার জন্য তোমরা জলে স্থলে ঘুরে বেড়াও৷ আর সে যখন তোমাদের ধর্মে আসে, তখন তোমরা নিজেদের চেয়ে তাকে দ্বিগুণ নরকের উপযুক্ত করে তোল৷ 16 ‘ধিক্ ব্যবস্থার শিক্ষক ও ফরীশীর দল, তোমর ভণ্ড! তোমরা নিজেরা অন্ধ অথচ অন্যদের পথ দেখাও৷ তোরা বলে থাক, ‘কেউ যদি মন্দিরের দিব্যি দেয়, তবে তাতে কিছু এসে যায় না৷ কিন্তু কেউ যদি মন্দিরের সোনার দিব্যি দেয়, তবে সে সেইশপথে বাঁধা পড়ল; তাকে অবশ্যইতা পূরণ করতে হবে৷’ 17 মূর্খ অন্ধের দল! কোনটা শ্রেষ্ঠ, মন্দিরের সোনা অথবা মন্দির, যা সেই সোনাকে পবিত্র করে? 18 তোমরা আবার একথাও বলে থাক, ‘কেউ যদি যজ্ঞবেদীর নামে শপথ করে, তাহলে সেইশপথ রক্ষা করার জন্য তার কোন বাধ্যবাধকতা নেই ৷ কিন্তু কেউ যদি যজ্ঞবেদীর ওপর য়ে নৈবেদ্য থাকে তার নামে শপথ করে, তবে তার শপথ রক্ষা করার জন্য সে দায়বদ্ধ রইল৷’ 19 তোমরা অন্ধের দল! কোনটা বেশী গুরুত্বপূর্ণ, যজ্ঞবেদীতে নৈবেদ্য অথবা বেদী, যা তার ওপরের নৈবেদ্যকে পবিত্র করে? 20 তাই যখন কেউ যজ্ঞবেদীর নামে শপথ করে, তখন সে যজ্ঞবেদীর ওপর যা কিছু থাকে সে সব কিছুরইবিষয়ে শপথ করে৷ 21 আর কেউ যখন মন্দিরের নামে শপথ করে, তখন সে জায়গা ও তার মধ্যে যিনি থাকেন, তাঁর নামেও শপথ করে৷ 22 আর যদি কোন লোক স্বর্গের নামে শপথ করে, তখন সে ঈশ্বরের সিংহাসন ও যিনি সেই সিংহাসনে বসে আছেন তাঁর নামেও শপথ করে৷ 23 ‘ধিক্ ব্যবস্থার শিক্ষক ও ফরীশীর দল, তোমরা ভণ্ড! তোমরা পুদিনা, মৌরী ও জিরার দশভাগের একভাগ ঈশ্বরকে দিয়ে থাক অথচ ন্যায়, দযা ও বিশ্বস্ততা, ব্যবস্থার এই বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা অবহেলা করে থাক৷ আগের ঐ বিষয়গুলি পালন করার সঙ্গে সঙ্গে পরের এই বিষয়গুলি পালন করাও তোমাদের উচিত৷ 24 তোমরা অন্ধ পথপ্রদর্শক, তোমরা মশা ছেঁকে ফেল, কিন্তু উট গিলে থাক৷ 25 ‘ধিক্ ব্যবস্থার শিক্ষক ও ফরীশীর দল, তোমরা ভণ্ড! তোমরা থালা বাটির বাইরেটা পরিষ্কার করে থাক, কিন্তু ভেতরটা থাকে লোভ ও আত্মতোষণে ভরা৷ 26 অন্ধ ফরীশী! প্রথমে তোমাদের পেয়ালার ভেতরটা পরিষ্কার কর, তাহলে গোটা পেয়ালার ভেতরে ও বাইরে উভয় দিকই পরিষ্কার হবে৷ 27 ‘ধিক্ ব্যবস্থার শিক্ষক ও ফরীশীর দল, তোমরা ভণ্ড! তোমরা চুনকাম করা কবরের মতো, যার বাইরেটা দেখতে খুব সুন্দর, কিন্তু ভেতরে মরা মানুষের হাড়গোড় ও সব রকমের পচা জিনিস রয়েছে৷ 28 তোমরা ঠিক সেইরকম, বাইরের লোকদের চোখে ধার্মিক, কিন্তু ভেতরে ভণ্ডামী ও দুষ্টতায় পূর্ণ৷ 29 ‘ধিক্ ব্যবস্থার শিক্ষক ও ফরীশীর দল, তোমরা ভণ্ড! তোমরা ভাববাদীদের জন্য স্মৃতিসৌধ গাঁথ ও ঈশ্বর ভক্ত লোকদের কবর সাজাও, 30 আর বলে থাক, ‘আমরা যদি আমাদের পূর্বপুরুষদের সময়ে থাকতাম, তবে ভাববাদীদেব হত্যা করার জন্য তাদের সাহায্য করতাম না৷’ 31 এতে তোমরা নিজেদের বিষয়েই সাক্ষ্য দিচ্ছ য়ে, ভাববাদীদের যাঁরা হত্যা করেছিল তোমরা তাদেরই বংশধর৷ 32 তাহলে যাও তোমাদের পূর্বপুরুষেরা যা শুরু করে গেছে তোমরা তার বাকি কাজ শেষ করো৷ 33 সাপ, বিষধর সাপের বংশধর! কি করে তোমরা ঈশ্বরের হাত থেকে রক্ষা পাবে? তোমরা দোষী প্রমাণিত হবে ও নরকে যাবে৷ 34 তাই আমি তোমাদের বলছি, আমি তোমাদের কাছে য়ে ভাববাদী, জ্ঞানীলোক ও শিক্ষকদের পাঠাচ্ছি তোমরা তাদের কারো কারোকে হত্যা করবে, আর কাউকে বা ক্রুশে দেবে, কাউকে বা তোমরা সমাজ-গৃহে চাবুক মারবে৷ এক শহর থেকে অন্য শহরে তোমরা তাদের তাড়া করে ফিরবে৷ 35 এই ভাবে নির্দোষ হেবলের রক্তপাত থেকে শুরু করে বরখায়ার পুত্র সখরিয়, যাকে তোমরা মন্দিরের পবিত্র স্থান ও যজ্ঞবেদীর মাঝখানে হত্যা করেছিলে, সেই দিন থেকে আজ পর্যন্ত যত নির্দোষ ব্যক্তির রক্ত মাটিতে ঝরে পড়েছে, সেই সমস্তের দায় তোমাদের ওপরে পড়বে৷ 36 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, এই যুগের লোকদের ওপর ঐ সবের শাস্তি এসে পড়বে৷’ 37 ‘হায় জেরুশালেম, জেরুশালেম! তুমি, তুমিই ভাববাদীদের হত্যা করে থাক, আর তোমার কাছে ঈশ্বর যাদের পাঠান তাদের পাথর মেরে থাক৷ মুরগী য়েমন তার বাচ্চাদের ডানার নীচে জড়ো করে, তেমনি আমি তোমার লোকদের কতবার আমার কাছে জড়ো করতে চেয়েছি, কিন্তু তোমরা রাজী হও নি৷ 38 এখন তোমাদের মন্দির পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে থাকবে৷ 39 বাস্তবিক, আমি তোমাদের বলছি, য়ে পর্যন্ত না তোমরা বলবে, ‘ধন্য, তিনি যিনি প্রভুর নামে আসছেন, সে পর্যন্ত তোমরা আর আমাকে দেখতে পাবে না৷
Matthew 24:1 যীশু মন্দির থেকে যখন বের হয়ে যাচ্ছিলেন, সেইসময়তাঁর শিষ্যরা তাঁর কাছে এসে মন্দিরের বড় বড় দালানের দিকে তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইলেন৷ 2 এর জবাবে যীশু তাঁদের বললেন, ‘তোমরা এখন এখানে এসব দেখছ, কিন্তু আমি তোমাদের সত্যি বলছি, এখানে একটা পাথর আর একটা পাথরের ওপর থাকবে না, এসবই ভুমিস্যাত্ হবে৷’ 3 যীশু যখন জৈতুন পর্বতমালার ওপর বসেছিলেন, তখন তাঁর শিষ্যরা একান্তে তাঁর কাছে এসে তাঁকে বললেন, ‘আমাদের বলুন, কখন এসব ঘটবে, আর আপনার আসার এবং এযুগের শেষ পরিণতির সময় জানার চিহ্নই বা কি হবে?’ 4 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, ‘দেখো! কেউ য়েন তোমাদের না ঠকায়৷ 5 আমি তোমাদের একথা বলছি কারণ অনেকে আমার নামে আসবে আর তারা বলবে, ‘আমি খ্রীষ্ট৷’ আর তারা অনেক লোককে ঠকাবে৷ 6 তোমরা নানা যুদ্ধের কথা শুনবে এবং তোমাদের কানে যুদ্ধের গুজব আসেব৷ কিন্তু দেখো, তোমরা ভয় পেও না, কারণ ঐ সব ঘটনা অবশ্যই ঘটবে কিন্তু তখনও শেষ নয়৷ 7 হ্যাঁ, এক জাতি অন্য জাতির বিরুদ্ধে লড়াইকরবে; আর এক রাজ্য অন্য রাজ্যের বিরুদ্ধে যাবে৷ সর্বত্র দুর্ভিক্ষ ও ভূমিকম্প হবে৷ 8 কিন্তু এসব কেবল যন্ত্রণার আরন্ভ মাত্র৷ 9 ‘সেই সময় শাস্তি দেবার জন্য তারা তোমাদের ধরিয়ে দেবে ও হত্যা করবে৷ আমার শিষ্য হয়েছ বলে জগতের সকল জাতির লোকেরা তোমাদের ঘৃণা করবে৷ 10 সেই সময় অনেক লোক বিশ্বাস থেকে সরে যাবে৷ তারা একে অপরকে শাসনকর্তাদের হাতে ধরিয়ে দেবে আর তারা পরস্পরকে ঘৃণা করবে৷ 11 অনেক ভণ্ড ভাববাদীর আবির্ভাব হবে, যাঁরা বহু লোককে ঠকাবে৷ 12 অধর্ম বেড়ে যাওযার ফলে অধিকাংশ লোকদের মধ্য থেকে ভালবাসা কমে যাবে৷ 13 কিন্তু শেষ পর্যন্ত য়ে নিজেকে স্থির রাখবে, সে রক্ষা পাবে৷ 14 আর রাজ্যের (স্বর্গ) এইসুসমাচার জগতের সর্বত্র প্রচার করা হবে৷ সমস্ত জাতির কাছে তা সাক্ষ্যরূপে প্রচারিত হবে, আর তারপরই উপস্থিত হবে সেই সময়৷ 15 ‘তোমরা তখন দেখবে য়ে, ভাববাদী দানিয়েলের মধ্য দিয়ে য়ে ‘সর্বনাশা ঘৃণার বস্তুর’কথা বলা হয়েছিল তা পবিত্র স্থানে দাঁড়িয়ে আছে৷’ য়ে একথা পড়ছে সে বুঝুক এর অর্থ কি৷ 16 ‘সেই সময় যাঁরা যিহূদিয়াতে থাকবে, তারা পাহাড় অঞ্চলে পালিয়ে যাক্৷ 17 য়ে ছাদে থাকবে, সে য়েন ঘর থেকে তার জিনিস নেবার জন্য নীচে না নামে৷ 18 ক্ষেতের মধ্যে য়ে কাজ করবে, সে তার জামা নেবার জন্য ফিরে না আসুক৷ 19 হায়! সেই মহিলারা, যাঁরা সেইদিনগুলিতে গর্ভবতী থাকবে, বা যাদের কোলে থাকবে দুধের শিশু৷ 20 তাই প্রার্থনা কর য়েন শীতকালে বা বিশ্রামবারে তোমাদের পালাতে না হয়৷ 21 ‘সেই দিনগুলিতে এমন মহাকষ্ট হবে যা জগতের শুরু থেকে এই সময় পর্যন্ত আর কখনও হয় নি এবং হবে ও না৷ 22 আরো বলছি, সেইদিনগুলির সংখ্যা ঈশ্বর যদি কমিয়ে না দিতেন তবে কেউই অবশিষ্ট থাকত না৷ কিন্তু তাঁর মনোনীত লোকদের জন্য তিনি সেই দিনের সংখ্যা কমিয়ে রেখেছেন৷ 23 সেই সময় কেউ যদি তোমাদের বলে, ‘দেখ, মশীহ (খ্রীষ্ট)’ এখানে, অথবা ‘দেখ, তিনি ওখানে,’ তাহলে সে কথায় বিশ্বাস করো না৷ 24 ‘আমি একথা বলছি, কারণ অনেক ভণ্ড খ্রীষ্ট ও ভণ্ড ভাববাদীর উদয় হবে৷ তারা মহা আশ্চর্য কাজ করবে ও চিহ্ন দেখাবে, য়েন লোকদের ঠকাতে পারে৷ যদি সন্ভব হয় এমনকি ঈশ্বরের মনোনীত লোকদেরও ঠকাবে৷ 25 দেখ, আমি আগে থেকেইতোমাদের এসব কথা বলে রাখলাম৷ 26 ‘তাইতারা যদি তোমাদের বলে, ‘দেখ, খ্রীষ্ট প্রান্তরে আছেন!’ তবে তোমরা সেখানে য়েও না, অথবা যদি বলে দেখ, ‘তিনি ভেতরের ঘরে লুকিয়ে আছেন, তাদের কথায় বিশ্বাস করো না৷ 27 আকাশে বিদ্য়ুত্ য়েমন পূর্ব দিকে দেখা দিয়ে পশ্চিম দিক পর্যন্ত চমকে দেয়, তেমনি করেইমানবপুত্রের আবির্ভাব হবে৷ 28 য়েখানে শব, সেখানেইশকুন এসে জড় হবে৷ 29 মহাক্লেশের সেইদিনগুলির পরই, ‘সূর্য় অন্ধকার হয়ে যাবে, চাঁদ আর আলো দেবে না৷ তারাগুলো আকাশ থেকে খসে পড়বে আর আকাশমণ্ডলে মহা আলোড়নের সৃষ্টি হবে৷’ যিশাইয় 13:10; 34:4 30 ‘সেই সময় আকাশে মানবপুত্রের চিহ্ন দেখা দেবে৷ তখন পৃথিবীর সকল গোষ্ঠী হাহুতাশ করবে; আর তারা মানবপুত্রকে মহাপরাক্রম ও মহিমামণ্ডিত হয়ে আকাশের মেঘে করে আসতে দেখবে৷ 31 খুব জোরে তূরীধ্বনির সঙ্গে তিনি তাঁর স্বর্গদূতদের পাঠাবেন৷ তাঁরা আকাশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পর্যন্ত, চার দিক থেকে তাঁর মনোনীত লোকদের জড়ো করবেন৷ 32 ‘ডুমুর গাছ দেখে শিক্ষা নাও, তার কচি ডালে পাতা বের হলে জানা যায় গ্রীষ্মকাল কাছে এসে গেছে৷ 33 ঠিক সেই রকম, যখন তোমরা দেখবে এসব ঘটছে, বুঝবে মানবপুত্রের পুনরুত্থানের সময় এসে গেছে, তা দরজার গোড়ায় এসে পড়েছে৷ 34 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যতক্ষণ পর্যন্ত না এসব ঘটছে এই যুগের লোকদের শেষ হবে না৷ 35 আকাশ ও সমগ্র পৃথিবী বিলুপ্ত হয়ে যাবে, কিন্তু আমার কোন কথা বিলুপ্ত হবে না৷ 36 ‘সেই দিন ও মুহূর্ত্তের কথা কেউ জানে না, এমন কি স্বর্গদূতেরা অথবা পুত্র নিজেও তা জানেন না, কেবলমাত্র পিতা (ঈশ্বর) তা জানেন৷ 37 নোহের সময় য়েমন হয়েছিল, মানবপুত্রের আগমনের সময় সেইরকম হবে৷ 38 নোহের সময়ে বন্যা আসার আগে, য়ে পর্যন্ত না নোহ সেই জাহাজে ঢুকলেন, লোকেরা সমানে ভোজন পান করেছে, বিয়ে করেছে ও ছেলেমেয়েদের বিয়ে দিয়েছে৷ 39 ‘য়ে পর্যন্ত না বন্যা এসে তাদের সবাইকে ভাসিয়ে নিয়ে গেল, সে পর্যন্ত তারা কিছুইবুঝতে পারে নি য়ে কি ঘটতে যাচ্ছে৷ মানবপুত্রের আগমনও ঠিক সেই রকমভাবেইহবে৷ 40 সেই সময় দুজন লোক মাঠে কাজ করবে৷ তাদের একজনকে নিয়ে যাওযা হবে, অন্য জন পড়ে থাকবে৷ 41 দুজন স্ত্রীলোক য়াঁতা পিষবে, তাদের একজনকে নিয়ে যাওযা হবে, আর অন্যজন পড়ে থাকবে৷ 42 ‘তাই তোমরা সজাগ থাক, কারণ তোমাদের প্রভু কোন দিন আসবেন, তা তোমরা জানো না৷ 43 তবে একথা মনে রেখো, যদি গৃহস্থ জানত রাত্রে কোন সময় চোর আসবে, তবে সে জেগে থাকত৷ সে চোরকে নিজের ঘরের সিঁধ কাটতে দিত না৷ 44 তাই তোমরাও প্রস্তুত থাক, কারণ তোমরা যখন তাঁর আগমনের বিষয়ে ভাববেও না, মানবপুত্র সেই সময়ই আসবেন৷ 45 ‘সেইবিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান দাস তাহলে কে, যার ওপর তার প্রভু তাঁর বাড়ির অন্যান্য দাসদের ঠিক সময়ে খাবার দেবার দাযিত্ব দিয়েছেন? 46 সেই দাস ধন্য যার মনিব ফিরে এসে তাকে তার কর্তব্য করতে দেখবেন৷ 47 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তিনি সেই দাসকেই তাঁর সমস্ত সম্পত্তি দেখাশোনার ভার দেবেন৷ 48 কিন্তু ধর, সেই দাস যদি দুষ্ট হয়, আর মনে মনে বলে, ‘আমার মনিবের ফিরে আসতে অনেক দেরী আছে৷ 49 ‘তাই সে তার সঙ্গী দাসদের মারধর করে এবং মাতালদের সঙ্গে খাওযা-দাওযা করতে শুরু করে৷ 50 তাহলে য়ে দিন ও য়ে সময়ের কথা সেইদাস ভাবতেও পারবে না বা জানবেও না, সেই দিন ও সেই মুহূর্ত্তেইতার মনিব এসে হাজির হবেন৷ 51 তখন তার মনিব তাকে কঠোর শাস্তি দেবেন, ভণ্ডদের মধ্যে তাকে স্থান দেবেন; য়েখানে লোকেরা কান্নাকাটি করে ও যন্ত্রণায় দাঁতে দাঁত ঘসে৷
Matthew 25:1 ‘স্বর্গরাজ্য কেমন হবে, তা দশ জন কনের সঙ্গে তুলনা করা চলে, যাঁরা তাদের প্রদীপ নিয়ে বরের সঙ্গে সাক্ষাত্ করতে বার হল৷ 2 তাদের মধ্যে পাঁচজন ছিল নির্বোধ আর অন্য পাঁচজন ছিল বুদ্ধিমতী৷ 3 সেই নির্বোধ কনেরা তাদের বাতি নিল বটে কিন্তু সঙ্গে তেল নিল না৷ 4 অপরদিকে বুদ্ধিমতী কনেরা তাদের প্রদীপের সঙ্গে পাত্রে তেলও নিল৷ 5 বর আসতে দেরী হওযাতে তারা সকলেই তন্দ্রায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ল৷ 6 কিন্তু মাঝরাতে চিত্কার শোনা গেল, ‘দেখ, বর আসছে! তাকে বরণ করতে এগিয়ে যাও৷’ 7 ‘সেই কনেরা তখন উঠে তাদের প্রদীপ ঠিক করল৷ 8 কিন্তু নির্বোধ কনেরা বুদ্ধিমতী কনেদের বলল, ‘তোমাদের তেল থেকে আমাদের কিছু তেল দাও, কারণ আমাদের প্রদীপ নিভে যাচ্ছে৷’ 9 ‘এর উত্তরে সেই বুদ্ধিমতী কনেরা বলল, ‘না৷ তেল যা আছে তাতে হয়তো আমাদের ও তোমাদের কুলোবে না, তোমরা বরং যাঁরা তেল বিক্রি করে তাদের কাছে গিয়ে নিজেদের জন্য তেল কিনে আনো৷’ 10 ‘তারা যখন তেল কেনার জন্য বাইরে যাচ্ছে, এমন সময় বর এসে উপস্থিত হল, তখন য়ে কনেরা প্রস্তুত ছিল তারা বরের সঙ্গে বিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করল৷ তারপর দরজা বন্ধ করে দেওযা হল৷ 11 ‘শেষে অন্য কনেরা এসে বলল, ‘শুনছেন, আমাদের জন্য দরজা খুলে দিন৷’ 12 ‘কিন্তু এর উত্তরে বর বলল, ‘সত্যি বলছি, আমি তোমাদের চিনি না৷’ 13 ‘তাইতোমরা সজাগ থেকো, কারণ তোমরা সেই দিন বা মুহূর্ত্তের কথা জান না, কখন মানবপুত্র ফিরে আসবেন৷ 14 ‘স্বর্গরাজ্য এমন একজন লোকের মতো, যিনি বিদেশে যাবার আগে চাকরদের ডেকে সম্পত্তির ভার তাদের হাতে দিয়ে গেলেন৷ 15 তিনি একজনকে পাঁচ থলি মোহর, আর একজনকে দু থলি মোহর এবং আর একজনকে এক থলি মোহর দিলেন৷ যার য়েমন ক্ষমতা সেই অনুসারে দিয়ে তিনি বিদেশে চলে গেলেন৷ 16 য়ে পাঁচ থলি মোহর পেয়েছিল, সে সঙ্গে সঙ্গে সেই টাকা খাটাতে শুরু করল, আর তাই দিয়ে আরো পাঁচ থলি মোহর লাভ করল৷ 17 য়ে লোক দু’থলি মোহর পেয়েছিল সেও সেই টাকা খাটিয়ে আরো দু’থলি মোহর রোজগার করল৷ 18 কিন্তু য়ে এক থলি মোহর পেয়েছিল, সে গিয়ে মাটিতে গর্ত খুঁড়ে তার মনিবের টাকা সেই গর্তে পুঁতে রাখল৷ 19 ‘অনেক দিন পর সেইচাকরদের মনিব ফিরে এসে তাদের কাছে হিসাব চাইলেন৷ 20 য়ে পাঁচ থলি মোহর পেয়েছিল, সে আরো পাঁচ থলি মোহর এনে বলল, ‘হুজুর, আপনি আমাকে পাঁচ থলি মোহর দিয়েছিলেন, দেখুন আমি তাই দিয়ে আরো পাঁচ থলি মোহর রোজগার করেছি৷’ 21 ‘তার মনিব তখন তাকে বললেন, ‘বেশ, তুমি উত্তম ও বিশ্বস্ত দাস৷ তুমি এই সামান্য বিষয়ে বিশ্বস্ত থাকাতে আমি তোমার হাতে অনেক বিষয়ের ভার দেব৷ এস, তোমার মনিবের আনন্দের সহভাগী হও৷ 22 ‘এরপর য়ে দু থলি মোহর পেয়েছিল, সেও তার মনিবের কাছে এসে বলল, ‘হুজুর, আপনি আমায় দু থলি মোহর দিয়েছিলেন, দেখুন আমি তাই দিয়ে আরো দু থলি মোহর রোজগার করেছি৷’ 23 ‘তার মনিব তাকে বললেন, ‘বেশ! তুমি উত্তম ও বিশ্বস্ত দাস৷ তুমি সামান্য বিষয়ের উপর বিশ্বস্ত হলে, তাই আমি আরো অনেক কিছুর ভার তোমার ওপর দেব৷ এস, তুমি তোমার মনিবের আনন্দের সহভাগী হও৷ 24 ‘এরপর য়ে লোক এক থলি মোহর পেয়েছিল সে তার মনিবের কাছে এসে বলল, ‘হুজুর আমি জানি আপনি বড় কড়া লোক৷ আপনি য়েখানে বীজ বোনেন নি সেখানে কাটেন; আর য়েখানে কোন বীজ ছড়ান নি সেখান থেকে শস্য সংগ্রহ করেন: 25 তাই আমি ভয়ে আপনার দেওযা মোহরের থলি মাটিতে পুঁতে লুকিয়ে রেখেছিলাম৷ আপনার যা ছিল তা নিন৷’ 26 ‘এর উত্তরে তার মনিব তাকে বললেন, ‘তুমি দুষ্ট ও অলস দাস! তুমি তো জানতে আমি য়েখানে বুনি না সেখানেই কাটি; আর তুমি এও জান য়েখানে আমি বীজ ছড়াইনা সেখান থেকেই সংগ্রহ করি৷ 27 তাই তোমার উচিত ছিল মহাজনদের কাছে আমার টাকা জমা রাখা, তাহলে আমি এসে আমার টাকার সঙ্গে কিছু সুদও পেতাম৷’ 28 ‘তাই তোমরা এর কাছ থেকে, ঐ মোহর নিয়ে যার দশ থলি মোহর আছে তাকে দাও৷ 29 হ্যাঁ, যার আছে তাকে আরো দেওযা হবে, তাতে তার প্রচুর হবে৷ কিন্তু যার নেই, তার যা আছে তাও তার কাছে থেকে নিয়ে নেওযা হবে৷’ 30 তোমরা ঐ অকর্মন্য দাসকে অন্ধকারে বাইরে ফেলে দাও; সেখানে লোকেরা কান্নাকাটি করে ও যন্ত্রণায় দাঁতে দাঁত ঘষে৷’ 31 ‘মানবপুত্র যখন নিজ মহিমায় মহিমান্বিত হয়ে তাঁর স্বর্গদূতদেব সঙ্গে নিয়ে এসে মহিমার সিংহাসনে বসবেন, 32 তখন সমস্ত জাতি তাঁর সামনে জড়ো হবে৷ রাখাল য়েমন ভেড়া ও ছাগল আলাদা করে, তেমনি তিনি সব লোককে দুভাগে ভাগ করবেন৷ 33 তিনি নিজের ডানদিকে ভেড়াদের রাখবেন আর বাঁদিকে ছাগলদের রাখবেন৷ 34 ‘এরপর রাজা তাঁর ডানদিকের যাঁরা তাদের বলবেন, ‘আমার পিতার আশীর্বাদ পেয়েছ, তোমরা এস! জগত সৃষ্টির শুরুতেইয়ে রাজ্য তোমাদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে, তার অধিকার গ্রহণ কর৷ 35 কারণ আমি ক্ষুধিত ছিলাম, তোমরা আমায় খেতে দিয়েছিলে৷ আমি পিপাসিত ছিলাম আর তোমরা আমাকে পান করবার জল দিয়েছিলে৷ আমি অচেনা আগন্তুক রূপে এসেছিলাম আর তোমর আমায় আশ্রয় দিয়েছিলে৷ 36 যখন আমার পরনে কোন কাপড় ছিল না, তখন তোমরা আমায় পোশাক পরিয়েছিলে৷ আমি অসুস্থ ছিলাম, তোমরা আমার সেবা করেছিলে৷ আমি কারাগারে ছিলাম, তোমর আমায় দেখতে এসেছিলে৷’ 37 ‘এর উত্তরে যাঁরা ভাল তারা বলবে, ‘প্রভু, কখন আমরা আপনাকে ক্ষুধার্ত দেখে খেতে দিয়েছিলাম, পিপাসিত দেখে জল পান করতে দিয়েছিলাম? 38 কখনই বা আপনাকে অচেনা আগন্তুক দেখে আতিথেয়তা করেছিলাম অথবা আপনার পরনে কাপড় নেই দেখে পোশাক পরিয়েছিলাম? 39 আর কখনই বা অসুস্থ বা কারাগারে আছেন দেখে আপনাকে দেখতে গিয়েছিলাম? 40 ‘এর উত্তরে রাজা তাদের বলবেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি, আমার এইতুচ্ছতমদের মধ্যে যখন কোন একজনের প্রতি তোমরা এরূপ করেছিলে, তখন আমারই জন্য তা করেছিলে৷’ 41 ‘এরপর রাজা তাঁর বাম দিকের লোকদের বলবেন, ‘ওহে অভিশপ্তরা, তোমরা আমার কাছ থেকে দূর হও, দিয়াবল ও তার দূতদের জন্য য়ে ভযাবহ অনন্ত আগুন প্রস্তুত করা হয়েছে, তার মধ্যে গিয়ে পড়৷ 42 কারণ আমি যখন ক্ষুধার্ত ছিলাম, তখন তোমরা আমায় খেতে দাও নি৷ আমার যখন পিপাসা পেয়েছিল, তখন আমায় জল দাও নি৷ 43 আমি অচেনা আগন্তুকরূপে এসেছিলাম, কিন্তু তোমরা আমার আতিথেয়তা করনি৷ আমার পোশাক ছিল না, কিন্তু তোমরা আমায় পোশাক দাও নি৷ আমি অসুস্থ ছিলাম ও কারাগারে গিয়েছিলাম, কিন্তু তোমরা আমার খোঁজ নাও নি৷ 44 ‘এর উত্তরে তারা তাঁকে বলবে, ‘প্রভু, কবে আপনাকে ক্ষুধার্ত, কি পিপাসিত, কি আগন্তুকরূপে দেখে অথবা কবেইবা আপনার পরনে কাপড় ছিল না, বা আপনি অসুস্থ ছিলেন ও কারাগারে গিয়েছিলেন বলে আমরা আপনার সাহায্য করিনি?’ 45 ‘এ কথার উত্তরে রাজা বলবেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমরা যখন এই অতি সামান্য যাঁরা তাদের কোন একজনের প্রতি তা করনি, তখন আমারই প্রতি তা কর নি৷’ 46 ‘এরপর অধার্মিক লোকেরা যাবে অনন্ত শাস্তি ভোগ করতে, কিন্তু ধার্মিকেরা প্রবেশ করবে অনন্ত জীবনে৷’
Matthew 26:1 এই সব কথা শেষ করে যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, 2 ‘তোমরা জানো, আর দুদিন পরই নিস্তারপর্ব শুরু হবে, তখন মানবপুত্রকে ক্রুশে দেবার জন্য শত্রুদের হাতে তুলে দেওযা হবে৷’ 3 সেইসময় মহাযাজক কায়াফার বাড়ির উঠানে প্রধান যাজকরা ও ইহুদী নেতারা এসে ষড়যন্ত্র করতে বসল, 4 য়েন তারা যীশুকে গ্রেপ্তার করতে পারে ও তাঁকে ফাঁদে ফেলে হত্যা করতে পারে৷ 5 তারা বলল, ‘আমরা নিস্তারপর্বের সময় একাজ করব না, তাতে লোকদের মধ্যে হয়তো গণ্ডগোল বাধতে পারে৷’ 6 যীশু যখন বৈথনিযায় কুষ্ঠরোগী শিমোনের বাড়িতে ছিলেন সেই সময় একজন স্ত্রীলোক যীশুর কাছে এল৷ 7 তার কাছে শ্বেতপাথরেরবোতলে খুব দামী সুগন্ধি ছিল৷ যীশু যখন সেখানে খেতে বসেছিলেন, তখন সে ঐ আতর যীশুর মাথায় ঢেলে দিল৷ 8 তাই দেখে তাঁর শিষ্যরা রেগে গেলেন, তাঁরা বললেন, ‘এভাবে অপচয় করা হচ্ছে কেন? 9 এটা তো অনেক টাকায় বিক্রি করা য়েত, আর সেই টাকা গরীবদের দেওযা য়েত৷’ 10 তারা যা বলাবলি করছিল, যীশু তা জানতে পেরে তাদের বললেন, ‘তোমরা এই স্ত্রীলোককে কেন দুঃখ দিচ্ছ? ও তো আমার প্রতি ভাল কাজইকরল৷ 11 কারণ গরীবরা তোমাদের সঙ্গে সবসময়ইথাকবে৷কিন্তু তোমরা আমায় সব সময় পাবে না৷ 12 আমার দেহের ওপর আতর ঢেলে দিয়ে সে তো আমাকে সমাধিতে রাখার উপয়োগী কাজইকরল৷ 13 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, সারা জগতে য়েখানেই এই সুসমাচার প্রচার করা হবে, সেখানেইএর এইকাজের কথা বলা হবে৷’ 14 তখন বারো জন শিষ্যর মধ্যে একজন, যার নাম যিহূদা ঈষ্করিযোতীয়, সে প্রধান যাজকদের কাছে গিয়ে বলল, 15 ‘আমি যদি তাঁকে আপনাদের হাতে ধরিয়ে দিই, তবে আপনারা আমায় কি দেবেন বলুন?’ তারা তাকে গুনে গুনে ত্রিশটা রূপোর টাকা দিল৷ 16 সেই মুহূর্ত্ত থেকেই যিহূদা তাঁকে ধরিয়ে দেবার সুয়োগ খুঁজতে লাগল৷ 17 খামিরবিহীন রুটির পর্বের প্রথম দিনে যীশুর শিষ্যরা তাঁর কাছে এসে বললেন, ‘আপনার জন্য আমরা কোথায় নিস্তারপর্বের ভোজের আযোজন করব? আপনি কি চান?’ 18 যীশু বললেন, ‘তোমরা ঐ গ্রামে আমার পরিচিত একজনের কাছে যাও, তাকে গিয়ে বল, ‘গুরু বলেছেন, আমার নির্ধারিত সময় কাছে এসে গেছে, আমি আমার শিষ্যদের সঙ্গে তোমার বাড়িতে নিস্তারপর্ব পালন করব৷” 19 তখন শিষ্যরা যীশুর কথামতো কাজ করলেন, তারা সেখানে নিস্তারপর্বের ভোজ প্রস্তুত করলেন৷ 20 সন্ধ্যা হলে পর যীশু সেই বারো জন শিষ্য়ের সঙ্গে নিস্তারপর্বের ভোজ খেতে বসলেন৷ 21 তাঁরা যখন খাচ্ছেন সেই সময় যীশু বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমাদের মধ্যে একজন আমাকে শত্রুর হাতে তুলে দেবে৷’ 22 এতে শিষ্যরা খুবই দুঃখ পেয়ে এক একজন করে যীশুকে জিজ্ঞেস করতে লাগলেন, ‘প্রভু, সে কি আমি?’ 23 তখন যীশু বললেন, ‘য়ে আমার সঙ্গে বাটিতে হাত ডোবালো, সেই আমাকে শত্রুর হাতে সঁপে দেবে৷ 24 মানবপুত্রের বিষয়ে শাস্ত্রে য়েমন লেখা আছে, সেইভাবেই তাঁকে য়েতে হবে৷ কিন্তু ধিক্ সেই লোক, য়ে মানবপুত্রকে ধরিয়ে দেবে৷ সেই লোকের জন্ম না হওযাই তার পক্ষে ভাল ছিল৷ 25 য়ে যীশুকে শত্রুর হাতে ধরিয়ে দিতে যাচ্ছিল, সেই যিহূদা বলল, ‘গুরু সে নিশ্চয়ই আমি নই ?’ যীশু তাকে বললেন, ‘তুমি নিজেইতো একথা বলছ৷’ 26 তাঁরা খাচ্ছিলেন, এমন সময় যীশু একটি রুটি নিয়ে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিলেন, আর সেই রুটি টুকরো টুকরো করে শিষ্যদের দিয়ে বললেন, ‘এই নাও, খাও, এ আমার দেহ৷’ 27 এরপর তিনি পানপাত্র নিয়ে ধন্যবাদ দিলেন আর পানপাত্রটি শিষ্যদের দিয়ে বললেন, ‘তোমরা সকলে এর থেকে পান কর৷ 28 কারণ এ আমার রক্ত, নতুন নিয়ম প্রতিষ্ঠিত হওযার রক্ত যা বহুলোকের পাপ মোচনের জন্য পাতিত হল৷ 29 আমি তোমাদের বলছি, এখন থেকে আমি এইদ্রাক্ষারস আর কখনও পান করব না, য়ে পর্যন্ত না আমার পিতার রাজ্যে তোমাদের সঙ্গে নতুন দ্রাক্ষারস পান করি৷’ 30 এরপর তাঁরা একটি গান করতে করতে জৈতুন পর্বতমালায় চলে গেলেন৷ 31 যীশু তাদের বললেন, ‘আমার কারণে তোমরা আজ রাত্রেইবিশ্বাস হারিয়ে ফেলবে৷ আমি একথা বলছি কারণ শাস্ত্রে লেখা আছে,‘আমি মেষপালককে আঘাত করবো৷ তাঁর মৃত্যু হলে পালের মেষরা চারদিকে ছড়িয়ে পড়বে৷’ সখরিয় 13:7 32 কিন্তু আমি পুনরুত্থিত হলে পর, তোমাদের আগে আগে গালীলে যাব৷’ 33 এর উত্তরে পিতর বললেন, ‘আপনার কারণে সকলেই বিশ্বাস হারিয়ে ফেলতে পারে কিন্তু আমি কখনইবিশ্বাস হারাবো না৷’ 34 যীশু বললেন, ‘আমি সত্যি বলছি, আজ রাত্রেইতুমি বলবে য়ে তুমি আমাকে চেনো না৷ ভোরে মোরগ ডাকার আগেই তুমি আমাকে তিনবার অস্বীকার করবে৷’ 35 কিন্তু পিতর তাঁকে বললেন, ‘আমি আপনাকে চিনি না, একথা আমি কখনও বলব না৷ আপনার সঙ্গে আমি মরতেও প্রস্তুত৷’ অন্য শিষ্যরা ও সকলে একইকথা বললেন৷ 36 এরপর যীশু তাঁদের সঙ্গে গেত্শিমানী নামে একটা জায়গায় গিয়ে তাঁর শিষ্যদের বললেন, ‘আমি ওখানে গিয়ে যতক্ষণ প্রার্থনা করি, তোমরা এখানে বসে থাক৷’ 37 এরপর তিনি পিতর ও সিবদিয়ের দুই ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে চলতে থাকলেন৷ য়েতে য়েতে তাঁর মন উদ্বেগ ও ব্যথায় ভরে গেল, তিনি অভিভূত হয়ে পড়লেন৷ 38 তখন তিনি তাদের বললেন, ‘দুঃখে আমার হৃদয় ভেঙ্গে যাচ্ছে৷ তোমরা এখানে থাক আর আমার সঙ্গে জেগে থাকো৷’ 39 পরে তিনি কিছু দূরে গিয়ে মাটিতে উপুড় হয়ে পড়ে প্রার্থনা করে বললেন, ‘আমার পিতা, যদি সন্ভব হয় তবে এই কষ্টের পানপাত্র আমার কাছ থেকে দূরে যাক; তবু আমার ইচ্ছামতো নয়, কিন্তু তোমারই ইচ্ছা পূর্ণ হোক্৷’ 40 এরপর তিনি শিষ্যদের কাছে ফিরে গিয়ে দেখলেন, তাঁরা ঘুমাচ্ছেন৷ তিনি পিতরকে বললেন, ‘একি! তোমরা আমার সঙ্গে এক ঘন্টাও জেগে থাকতে পারলে না? 41 জেগে থাক ও প্রার্থনা কর য়েন প্রলোভনে না পড়৷ তোমাদের আত্মা ইচ্ছুক বটে, কিন্তু দেহ দুর্বল৷’ 42 তিনি গিয়ে আর একবার প্রার্থনা করলেন, ‘হে আমার পিতা, এই দুঃখের পানপাত্র থেকে আমি পান না করলে যদি তা দূর হওযা সন্ভব না হয় তবে তোমারইইচ্ছা পূর্ণ হোক্৷’ 43 পরে তিনি ফিরে এসে দেখলেন, শিষ্যরা আবার ঘুমিয়ে পড়েছেন, কারণ তাদের চোখ ভারী হয়ে গিয়েছিল৷ 44 তখন তিনি তাঁদের ছেড়ে চলে গেলেন ও তৃতীয় বার প্রার্থনা করলেন৷ তিনি আগের মতো সেই একই কথা বলে প্রার্থনা করলেন৷ 45 পরে তিনি শিষ্যদের কাছে এসে বললেন, ‘তোমরা এখনও ঘুমিয়ে রয়েছ ও বিশ্রাম করছ? শোন, সময় ঘনিয়ে এল, মানবপুত্রকে পাপীদের হতে তুলে দেওযা হবে৷ 46 ওঠ, চল আমরা যাই! ঐ দেখ! য়ে লোক আমায় ধরিয়ে দেবে, সে এসে গেছে৷’ 47 তিনি তখনও কথা বলছেন, এমন সময় সেইবারোজন শিষ্যের মধ্যে একজন, যিহূদা সেখানে এসে হাজির হল, তার সঙ্গে বহুলোক ছোরা ও লাঠি নিয়ে এল৷ প্রধান যাজকরা ও সমাজপতিরা এদের পাঠিয়েছিলেন৷ 48 য়ে তাঁকে ধরিয়ে দিচ্ছিল, সে ঐ লোকদের একটা সাঙ্কেতিক চিহ্ন দিয়ে বলেছিল, ‘আমি যাকে চুমু দেব, সেই ঐ লোক, তাকে তোমরা ধরবে৷’ 49 এরপর যিহূদা যীশুর কাছে এগিয়ে এসে বলল, ‘গুরু, নমস্কার,’ এই বলে সে তাঁকে চুমু দিল৷ 50 যীশু তাঁকে বললেন, ‘বন্ধু, তুমি যা করতে এসেছ কর৷’তখন তারা এগিয়ে এসে জাপটে ধরে যীশুকে গ্রেপ্তার করল৷ 51 সেই সময় যীশুর সঙ্গীদের মধ্যে একজন তাঁর তরোয়ালের দিকে হাত বাড়ালেন আর তা বের করে মহাযাজকদের দাসকে আঘাত করে তার একটা কান কেটে দিলেন৷ 52 তখন যীশু তাকে বললেন, ‘তোমার তরোয়ালটি খাপে রাখ৷ যাঁরা তরোয়াল চালায় তারা তরোয়ালের আঘাতেইমরবে৷ 53 তোমরা কি ভাব য়ে, আমি আমার পিতা ঈশ্বরের কাছে চাইতে পারি না? চাইলে তিনি সঙ্গে সঙ্গে আমার জন্য বারোটিরও বেশী স্বর্গদূতবাহিনী পাঠিয়ে দেবেন৷ 54 কিন্তু তাই যদি হয় তাহলে শাস্ত্রের বাণী কিভাবে পূর্ণ হবে, শাস্ত্রে যখন বলছে এভাবেই সব কিছু অবশ্যই ঘটবে?’ 55 সেই সময় যীশু লোকদের বললেন, ‘লোকে য়েমন ডাকাত ধরতে যায়, সেই ভাবে তোমরা ছোরা ও লাঠি নিয়ে আমায় ধরতে এসেছ? আমি তো প্রতিদিন মন্দিরের মধ্যে বসে শিক্ষা দিয়েছি; 56 কিন্তু তোমরা আমায় গ্রেপ্তার কর নি৷ যাইহোক, এসব কিছুই ঘটল য়েন ভাববাদীদের লেখা সকল কথাই পূর্ণ হয়৷’ তখন তাঁর শিষ্যরা তাঁকে ফেলে পালিয়ে গেলেন৷ 57 তারা যীশুকে গ্রেপ্তার করে মহাযাজক কায়াফার বাড়িতে নিয়ে এল, সেখানে ব্যবস্থার শিক্ষক ও ইহুদী নেতারা জড়ো হয়েছিলেন৷ 58 পিতর দূর থেকে যীশুর পিছনে পিছনে মহাযাজকের বাড়ির উঠোন পর্যন্ত গেলেন৷ শেষ পর্যন্ত কি হয় তা দেখবার জন্য তিনি ভেতরে গিয়ে দাসদের সঙ্গে বসলেন৷ 59 যীশুকে য়েন মৃত্যুদণ্ড দিতে পারে তাই যীশুর বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষী য়োগাড় করার জন্য প্রধান যাজকরা ও ইহুদী মহাসভার সব সভ্য়রা সেখানে সমবেত হয়েছিলেন৷ 60 অনেকে মিথ্যা সাক্ষ্য দেবার জন্য সেখানে হাজির হয়েছিল, তবু য়ে সাক্ষ্য যীশুকে হত্যা করার জন্য দরকার তা পাওযা গেল না৷ 61 শেষে দুজন লোক এসে বলল, ‘এইলোক বলেছিল, ‘আমি ঈশ্বরের মন্দির ভেঙ্গে ফেলতে ও তা আবার তিন দিনের ভেতরে গেঁথে তুলতে পারি৷’ 62 তখন মহাযাজক উঠে দাঁড়িয়ে যীশুকে বললেন, ‘তুমি কি এর জবাবে কিছুই বলবে না? এরা তোমার বিরুদ্ধে কি সাক্ষ্য দিচ্ছে?’ 63 কিন্তু যীশু নীরব থাকলেন৷তখন মহাযাজক তাঁকে বললেন, ‘আমি তোমাকে জীবন্ত ঈশ্বরের নামে দিব্যি দিচ্ছি, আমাদের বল, তুমি কি সেইখ্রীষ্ট, ঈশ্বরের পুত্র?’ 64 যীশু তাঁকে বললেন, ‘হ্যাঁ, তুমিই একথা বললে৷ তবে আমি তোমাকে এটাও বলছি, এখন থেকে তোমরা মানবপুত্রকে মহাপরাক্রান্ত ঈশ্বরের ডানপাশে বসে থাকতে ও আকাশে মেঘের মধ্যে দিয়ে আসতে দেখবে৷’ 65 তখন মহাযাজক তাঁর পোশাক ছিঁড়ে ফেলে বললেন, ‘এ ঈশ্বরের নিন্দা করল, আমাদের আর অন্য সাক্ষ্যের দরকার কি?দেখ, তোমরা এখন ঈশ্বর নিন্দা শুনলে! 66 তোমরা কি মনে কর? এর উত্তরে তারা বলল, ‘এ মৃত্যুর য়োগ্য৷’ 67 তখন তারা যীশুর মুখে থুথু দিল ও তাঁকে ঘুসি মারল৷ 68 কেউ কেউ তাঁকে চড় মারল ও বলল, ‘ওরে খ্রীষ্ট, আমাদের জন্য কিছু ভাববানী বল, কে তোকে মারল?’ 69 পিতর যখন বাইরে উঠোনে বসেছিলেন তখন একজন দাসী এসে বলল, ‘তুমিও গালীলে যীশুর সঙ্গে ছিলে৷’ 70 কিন্তু পিতর সবার সামনে একথা অস্বীকার করে বললেন, ‘তুমি কি বলছ, আমি তার কিছুইজানি না৷’ 71 তিনি যখন ফটকের সামনে গেলেন, তখন আর একজন দাসী তাকে দেখে সেখানে যাঁরা ছিল তাদের বলল, ‘এ লোকটা নাসরতীয় যীশুর সঙ্গে ছিল৷’ 72 পিতর আবার অস্বীকার করলেন৷ তিনি দিব্যি করে বললেন, ‘আমি ঐ লোকটাকে মোটেই চিনি না৷’ 73 এর কিছু পরে, সেখানে যাঁরা দাঁড়িয়েছিল তারা পিতরের কাছে এসে বলল, ‘তুমি ঠিক ওদেরই একজন কারণ তোমার কথার উচ্চারণের ধরণ দেখেই তা বুঝতে পারা যাচ্ছে৷’ 74 তখন পিতর দিব্যি করে শাপ দিয়ে বললেন, ‘আমি ঐ লোকটাকে আদৌ চিনি না৷’ আর তখনইমোরগ ডেকে উঠল৷ 75 তখন পিতরের মনে পড়ে গেল যীশু তাকে যা বলেছিলেন, ‘ভোরের মোরগ ডাকার আগেই তুমি তাকে তিনবার অস্বীকার করবে৷’ আর পিতর বাইরে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন৷
Matthew 27:1 ভোর হলে প্রধান যাজকরা ও সমাজপতিরা সবাইমিলেযীশুকে হত্যা করার চক্রান্ত করল৷ 2 তারা তাঁকে বেঁধে রোমীয় রাজ্যপাল পীলাতের কাছে হাজির করল৷ 3 যীশুকে শত্রুদের হাতে য়ে ধরিয়ে দিয়েছিল, সেই যিহূদা যখন দেখল যীশুকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে তখন তার মনে খুব ক্ষোভ হল৷ সে তখন যাজকদের ও সমাজপতিদের কাছে গিয়ে সেই ত্রিশটা রূপোর টাকা ফিরিয়ে দিয়ে বলল, 4 ‘একজন নিরপরাধ লোককে হত্যা করার জন্য আপনাদের হাতে তুলে দিয়ে তাঁর প্রতি আমি বিশ্বাসঘাতকতা করেছি, আমি মহাপাপ করেছি৷ইহুদী নেতারা বলল, ‘তাতে আমাদের কি? তুমি বোঝগে যাও৷’ 5 তখন যিহূদা সেই টাকা মন্দিরের মধ্যে ছুঁড়ে ফেলে দিল, পরে বাইরে গিয়ে গলায় দড়ি দিয়ে মরল৷ 6 প্রধান যাজকরা সেইরূপোর টাকাগুলি কুড়িয়ে নিয়ে বললেন, ‘মন্দিরের তহবিলে এই টাকা জমা করা আমাদের বিধি-ব্যবস্থা বিরুদ্ধ কাজ, কারণ এটা খুনের টাকা৷’ 7 তাই তারা পরামর্শ করে ঐ টাকায় কুমোরদের একটা জমি কিনলেন৷ য়েন জেরুশালেমে য়েসব বিদেশী মারা যাবে, তাদের সেখানে কবর দেওযা য়েতে পারে৷ 8 সেই জন্য ঐ কবরখানাকে আজও লোকে ‘রক্তক্ষেত্র’ বলে৷ 9 এর ফলে ভাববাদী যিরমিয়র ভাববাণী পূর্ণ হল:‘তারা সেইত্রিশটা রূপোর টাকা নিল, এটাই হল তাঁর মূল্য, ইস্রায়েলের জনগণই তাঁর মূল্য নির্ধারণ করেছিল৷ 10 আর প্রভুর নির্দেশ অনুসারেই সেই টাকা দিয়ে তারা কুমোরের জমি কিনেছিল৷’৷ 11 এদিকে যীশুকে রাজ্যপালের সামনে হাজির করা হল; রাজ্যপাল যীশুকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি কি ইহুদীদের রাজা?’যীশু বললেন, ‘হ্যাঁ, আপনি য়েমন বললেন৷’ 12 কিন্তু প্রধান যাজকরা ও ইহুদী নেতারা সমানে যখন তাঁর বিরুদ্ধে দোষ দিচ্ছিল, তখন তিনি তার একটারও জবাব দিলেন না৷ 13 তখন পীলাত তাঁকে বললেন, ‘ওরা, তোমার বিরুদ্ধে কত দোষ দিচ্ছে, তুমি কি শুনতে পাচ্ছ না?’ 14 কিন্তু যীশু তাঁকে কোন জবাব দিলেন না, এমন কি তাঁর বিরুদ্ধে একটা অভিযোগেরও উত্তর দিলেন না, এতে পীলাত আশ্চর্য হয়ে গেলেন৷ 15 রাজ্যপালের রীতি অনুসারে প্রত্যেক নিস্তারপর্বের সময় জনসাধারণের ইচ্ছানুযাযী য়ে কোন কয়েদীকে তিনি মুক্ত করে দিতেন৷ 16 সেই সময় বারাব্বানামে এক কুখ্যাত আসামী কারাগারে ছিল৷ 17 তাই লোকরা সেখানে একসঙ্গে জড়ো হলে পীলাত তাদের জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমাদের জন্য আমি কাকে ছেড়ে দেব? তোমরা কি চাও, বারাব্বাকে বা যীশু, যাকে খ্রীষ্ট বলে তাকে?’ 18 কারণ পীলাত জানতেন, তারা যীশুর ওপর ঈর্ষাপরায়ণ হয়ে তাঁকে ধরিয়ে দিয়েছিল৷ 19 পীলাত যখন বিচার আসনে বসে আছেন, সেই সময় তাঁর স্ত্রী তাঁকে বলে পাঠালেন, ‘ঐ নির্দোষ লোকটির প্রতি তুমি কিছু করো না, কারণ রাত্রে স্বপ্নে আমি তাঁর বিষয়ে যা দেখেছি তাতে আজ বড়ই উদ্বেগে কাটছে৷’ 20 কিন্তু প্রধান যাজকরা ও ইহুদী নেতারা জনতাকে প্ররোচনা দিতে লাগল, য়েন তারা বারাব্বাকে ছেড়ে দিতে ও যীশুকে মৃত্যুদণ্ড দেওযার কথা বলে৷ 21 তখন রাজ্যপাল তাদের জিজ্ঞেস করলেন, ‘এই দুজনের মধ্যে তোমরা কাকে চাও য়ে আমি তোমাদের জন্য ছেড়ে দিই?’ তারা বলল, ‘বারাব্বাকে!’ 22 পীলাত তখন তাদের বললেন, ‘তাহলে যীশু যাকে মশীহ বলে তাকে নিয়ে কি করব?’তারা সবাইবলল, ‘ওকে ক্রুশে দেওযা হোক৷’ 23 পীলাত বললেন, ‘কেন? ও কি অন্যায় করেছে?’ কিন্তু তারা তখন আরো জোরে চিত্কার করতে লাগল, ‘ওকে ক্রুশে দাও, ক্রুশে দাও!’ 24 পীলাত যখন দেখলেন য়ে তাঁর চেষ্টার কোন ফল হল না, বরং আরো গোলমাল হতে লাগল, তখন তিনি জল নিয়ে লোকদের সামনে হাত ধুয়ে বললেন, ‘এই লোকের রক্তপাতের জন্য আমি দাযী নই৷’ এটা তোমাদেরইদায়৷ 25 এই কথার জবাবে লোকেরা সমস্বরে বলল, ‘আমরা ও আমাদের সন্তানরা ওব রক্তের জন্য দাযী থাকব৷’ 26 তখন পীলাত তাদের জন্য বারাব্বাকে ছেড়ে দিলেন; কিন্তু যীশুকে চাবুক মেরে ক্রুশে দেবার জন্য সঁপে দিলেন৷ 27 এরপর রাজ্যপালের সেনারা যীশুকে রাজভবনের সভাগৃহে নিয়ে গিয়ে সেখানে সমস্ত সেনাদলকে তাঁর চারধারে জড়ো করল৷ 28 তারা যীশুর পোশাক খুলে নিল, আর তাঁকে একটা লাল রঙের পোশাক পরাল৷ 29 পরে কাঁটা লতা দিয়ে একটা মুকুট তৈরী করে তা তাঁর মাথায় চেপে বসিয়ে দিল, আর তাঁর ডান হাতে একটা লাঠি দিল৷ পরে তাঁর সামনে হাঁটু গেড়ে তাঁকে ঠাট্টা করে বলল, ‘ইহুদীদের রাজা, দীর্ঘজীবি হোন্!’ 30 তারা তাঁর মুখে থুথু দিল ও তাঁর লাঠিটি নিয়ে তাঁর মাথায় মারতে লাগল৷ 31 এইভাবে তাঁকে বিদ্রূপ করবার পর তারা সেইপোশাকটি তাঁর গা থেকে খুলে নিয়ে তাঁর নিজের পোশাক আবার পরিয়ে দিল, তারপর তাঁকে ক্রুশে দেবার জন্য নিয়ে চলল৷ 32 সৈন্যরা যখন যীশুকে নিয়ে নগরের বাইরে যাচ্ছে, তখন পথে শিমোন নামে কুরীশীয় অঞ্চলের একজন লোককে দেখতে পেয়ে যীশুর ক্রুশ বইবার জন্য তাকে তারা জোর করে বাধ্য করল৷ 33 পরে তারা ‘গলগথা’ নামে এক জায়গায় এসে পৌঁছল৷ ‘গলগথা’ শব্দটির অর্থ ‘মাথার খুলিস্থান৷’ 34 সেখানে পৌঁছে তারা যীশুকে মাদক দ্রব্য মেশানো তিক্ত দ্রাক্ষারস পান করতে দিল; কিন্তু তিনি তা সামান্য আস্বাদ করে আর খেতে চাইলেন না৷ 35 তারা তাঁকে ক্রুশে দিয়ে তাঁর জামা কাপড় খুলে নিয়ে ঘুঁটি চেলে সেগুলো নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিল৷ 36 আর সেখানে বসে যীশুকে পাহারা দিতে লাগল৷ 37 তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের এই লিপি ফলকটি তাঁর মাথার উপরে ক্রুশে লাগিয়ে দিল, ‘এ যীশু, ইহুদীদের রাজা৷’ 38 তারা দুজন দস্যুকেও যীশুর সঙ্গে ক্রুশে দিল, একজনকে তাঁর ডানদিকে ও অন্যজনকে তাঁর বাঁ দিকে৷ 39 সেই সময় ঐ রাস্তা দিয়ে য়ে সব লোক যাতাযাত করছিল, তারা তাদের মাথা নেড়ে তাঁকে ঠাট্টা করে বলল, 40 ‘তুমি না মন্দির ভেঙ্গে আবার তা তিন দিনের মধ্যে তৈরী করতে পার! তাহলে এখন নিজেকে রক্ষা কর৷ তুমি যদি ঈশ্বরের পুত্র হও তবে ক্রুশ থেকে নেমে এস৷’ 41 সেইভাবেই প্রধান যাজকরা, ব্যবস্থার শিক্ষকরা ও ইহুদী নেতারা বিদ্রূপ করে তাঁকে বলতে লাগলেন, 42 ‘এ লোক তো অপরকে রক্ষা করত, কিন্তু এ নিজেকে বাঁচাতে পারে না! ও তো ইস্রায়েলের রাজা, তাহলে এখন ও ক্রুশ থেকে নেমে আসুক, তাহলে আমরা ওর ওপর বিশ্বাস করব৷ 43 ঐ লোকটি ঈশ্বরের ওপর বিশ্বাস করে৷ যদি তিনি চান, তবে ওকে এখনই রক্ষা করুন, কারণ ও তো বলেছে, ‘আমি ঈশ্বরের পুত্র৷'" 44 তাঁর সঙ্গে য়ে দুজন দস্যুকে ক্রুশে দেওযা হয়েছিল, তারাও সেইভাবেই তাঁকে বিদ্রূপ করতে লাগল৷ 45 সেই দিন দুপুর বারোটা থেকে বেলা তিনটে পর্যন্ত সমস্ত দেশ অন্ধকারে ঢেকে রইল৷ 46 প্রায় তিনটের সময় যীশু খুব জোরে বলে উঠলেন, ‘এলি, এলি লামা শবক্তানী?’ যার অর্থ, ‘ঈশ্বর আমার, ঈশ্বর আমার, তুমি কেন আমায় ত্যাগ করেছ?’ 47 যাঁরা সেখানে দাঁড়িয়েছিল, তাদের মধ্যে কয়েকজন একথা শুনে বলতে লাগল, ‘ও এলীয়কে ডাকছে৷’ 48 তাদের মধ্যে একজন তখনই দৌড়ে গিয়ে একটা স্পঞ্জ কতকটা সিরকায় ডুবিয়ে দিয়ে একটা নলের মাথায় সেটা লাগিয়ে তা যীশুর মুখে তুলে ধরে তাকে খেতে দিল৷ 49 কিন্তু অন্যরা বলতে লাগল, ‘ছেড়ে দাও, দেখি এলীয় ওকে রক্ষা করতে আসেন কি না?’ 50 পরে যীশু আর একবার খুব জোরে চিত্কার করে প্রাণ ত্যাগ করলেন৷ 51 সঙ্গে সঙ্গে মন্দিরের মধ্যেকার সেই ভারী পর্দাটা ওপর থেকে নীচ পর্যন্ত চিরে দুভাগ হয়ে গেল, পৃথিবী কেঁপে উঠল, বড় বড় পাথরের চাঁই ফেটে গেল, 52 সমাধিগুহাগুলি খুলে গেল, আর মারা গিয়েছিলেন এমন অনেক ঈশ্বরের লোকের দেহ পুনরুত্থিত হল৷ 53 যীশুর পুনরুত্থানের পর এরা কবর ছেড়ে পবিত্র নগর জেরুশালেমে গিয়ে বহুলোককে দেখা দিয়েছিলেন৷ 54 ক্রুশের পাশে শতপতি ও তার সঙ্গে যাঁরা যীশুকে পাহারা দিচ্ছিল, তারা ভূমিকম্প ও অন্য সব ঘটনা দেখে ভীষণ ভয় পেয়ে বলল, ‘সত্যইইনি ঈশ্বরের পুত্র ছিলেন৷’ 55 সেখানে বহু স্ত্রীলোক ছিলেন, যাঁরা দূরে দাঁড়িয়ে সব কিছু দেখছিলেন৷ এই মহিলারা গালীল থেকে যীশুর দেখাশোনার জন্য তাঁর সঙ্গে এসেছিলেন৷ 56 তাঁদের মধ্যে ছিলেন মগ্দলীনী মরিয়ম, যাকোব ও য়োষেফের মা মরিয়ম আর যাকোব ও য়োহনেরমা৷ 57 সন্ধ্যা নেমে আসছে এমন সময় আরিমাথিযার য়োষেফ নামে এক ধনী ব্যক্তি জেরুশালেমে এলেন; তিনিও যীশুর একজন অনুগামী ছিলেন৷ 58 পীলাতের কাছে গিয়ে য়োষেফ যীশুর দেহটা চাইলেন৷ তখন পীলাত তাকে তা দিতে হুকুম করলেন৷ 59 য়োষেফ দেহটি নিয়ে পরিষ্কার একটা কাপড়ে জড়ালেন৷ 60 তারপর সেই দেহটা নিয়ে তিনি নিজের জন্য পাহাড়ের গায়ে য়ে নতুন সমাধিগুহা কেটে রেখেছিলেন, তাতে রাখলেন৷ পরে সেই সমাধির মুখ বন্ধ করতে বড় একটা পাথর গড়িয়ে নিয়ে গিয়ে তা বন্ধ করে দিয়ে চলে গেলেন৷ 61 মরিয়ম মগ্দলীনী ও সেই অন্য মরিয়ম কবরের সামনে বসে রইলেন৷ 62 পরের দিন, যখন শুক্রবার শেষ হল, অর্থাত্ প্রস্তুতি পর্বের পরের দিন, প্রধান যাজকরা ও ফরীশীরা গিয়ে পীলাতের সঙ্গে দেখা করল৷ 63 তারা বলল, ‘হুজুর, আমাদের মনে পড়ছে সেই প্রতারক তাঁর জীবনকালে বলেছিল, ‘আমি তিনদিন পরে মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হব৷’ 64 তাই আপনি হুকুম দিন য়েন তিন দিন কবরটা পাহারা দেওযা হয়, তা না হলে ওর শিষ্যরা হয়তো এসে দেহটা চুরি করে নিয়ে গিয়ে বলবে, তিনি মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হয়েছেন; তাহলে প্রথমটার চেয়ে শেষ ছলনাটা আরো খারাপ হবে৷’ 65 পীলাত তাদের বললেন, ‘তোমাদের কাছে পাহারা দেবার লোক আছে, তোমরা গিয়ে যত ভালভাবে পারো পাহারা দেবার ব্যবস্থা কর৷’ 66 তখন তারা সকলে গিয়ে কবরের মুখের সেই পাথররাশির উপর সীলমোহর করল ও সেখানে একদল প্রহরী মোতায়েন করে সমাধিটি সুরক্ষিত রাখার ব্যবস্থা করল৷
Matthew 28:1 বিশ্রামবারেরশেষে সপ্তাহের প্রথম দিন, অর্থাত্, ববিবার খুব ভোরে মগ্দলীনী মরিয়ম ও অন্য মরিয়ম কবরটা দেখতে এলেন৷ 2 তখন হঠাত্ ভীষণ ভূমিকম্প হল, কারণ প্রভুর একজন স্বর্গদূত স্বর্গ থেকে নেমে এসে সেই পাথরখানা সমাধিগুহার মুখ থেকে সরিয়ে দিলেন ও তার ওপরে বসলেন৷ 3 তাঁর চেহারা বিদ্যুত ঝলকের মতো উজ্জ্বল ও তাঁর পোশাক তুষারশুভ্র৷ 4 তাঁর ভয়ে পাহারাদাররা কাঁপতে কাঁপতে মড়ার মতো হয়ে গেল৷ 5 সেই স্বর্গদূত ঐ স্ত্রীলোকদের বললেন, ‘তোমরা ভয় পেও না, আমি জানি তোমরা, য়াঁকে ক্রুশে দিয়েছিলে তাঁকে খুঁজছ৷ 6 কিন্তু তিনি এখানে নেই৷ তিনি য়েমন বলেছিলেন, তেমনি পুনরুত্থিত হয়েছেন৷ এস, য়েখানে তাঁকে শুইয়ে রাখা হয়েছিল তা দেখ; 7 আর তাড়াতাড়ি গিয়ে তাঁর শিষ্যদের বল, ‘তিনি মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত হয়েছেন৷ তিনি তোমাদের আগে আগে গালীলে যাচ্ছেন, তোমরা তাঁকে সেখানে দেখতে পাবে৷'" আমি তোমাদের য়ে কথা বললাম তা মনে রেখো৷ 8 তখন সেইস্ত্রীলোকেরা তাড়াতাড়ি কবরের কাছ থেকে চলে গেলেন৷ তাঁরা খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন, তবু তাঁদের মন আনন্দে ভরে গিয়েছিল, তাঁরা যীশুর শিষ্যদের একথা বলার জন্য দৌড়ালেন৷ 9 হঠাত্ যীশু তাঁদের সঙ্গে সাক্ষাত্ করে বললেন, ‘শুভেচ্ছা নাও!’ তখন তাঁরা যীশুর কাছে গিয়ে তাঁর পা জড়িয়ে ধরে তাঁকে প্রণাম করলেন৷ 10 যীশু তাঁদের বললেন, ‘ভয় করো না, তোমরা যাও, আমার ভাইদের গিয়ে বল, তারা য়েন গালীলে যায়, সেখানেই আমার দেখা পাবে৷’ 11 সেই মহিলারা যখন যাচ্ছিলেন, তখন সেই পাহারাদারদের কয়েকজন শহরে গিয়ে যা যা ঘটেছিল তা প্রধান যাজকদের বলল৷ 12 প্রধান যাজকরা ইহুদী নেতাদের সঙ্গে দেখা করে একটা ফন্দি আঁটলো৷ তারা সেই পাহারাদারদের অনেক টাকা দিয়ে বলল, 13 ‘তোমরা লোকদের বলো, ‘আমরা রাতে যখন ঘুমাচ্ছিলাম সেইসময় যীশুর শিষ্যরা এসে তাঁর দেহটা চুরি করে নিয়ে গেছে৷ 14 আর একথা যদি রাজ্যপালের কানে যায়, আমরা তাঁকে বোঝাব আর তোমাদের ঝামেলার হাত থেকে দূরে রাখব৷’ 15 তারা সেইটাকা নিয়ে তাদের য়েমন বলতে শেখানো হয়েছিল তেমনই বলল৷ ইহুদীদের মধ্যে আজও এই গল্পটাই প্রচলিত আছে৷ 16 এবার সেই এগারো জন শিষ্য গালীলে ফিরে গিয়ে যীশু তাঁদের য়েমন বলেছিলেন সেই মতো সেই পর্বতে গেলেন৷ 17 তাঁরা যীশুকে দেখে ভুমিষ্ঠ হয়ে তাঁকে প্রণাম করলেন৷ তবে তাঁদের কয়েকজনের মধ্যে সন্দেহ দেখা দিল, 18 তখন যীশু কাছে এসে তাদের বললেন, ‘স্বর্গে ও পৃথিবীতে পূর্ণ ক্ষমতা ও কর্ত্তৃত্ব আমাকে দেওযা হয়েছে৷ 19 তাই তোমরা যাও, তোমরা গিয়ে সকল জাতির মানুষকে আমার শিষ্য কর৷ পিতা, পুত্র ও পবিত্র আত্মার নামে বাপ্তিস্ম দাও৷ 20 আমি তোমাদের য়েসব আদেশ দিয়েছি, সেসব তাদের পালন করতে শেখাও আর দেখ যুগান্ত পর্যন্ত প্রতিদিন আমি সর্বদাইতোমাদের সঙ্গে সঙ্গে আছি৷’
Mark 1:1 ঈশ্বর পুত্র যীশু খ্রীষ্টের সুসমাচারের সুচনা: 2 ভাববাদী যিশাইয়র পুস্তকে য়েমন লেখা আছে, ‘শোন! আমি নিজের সহায়কে তোমার আগে পাঠাবো৷ সে তোমার জন্য পথ প্রস্তুত করবে৷’ মালাখি 3:1 3 ‘মরুপ্রান্তরে একজনের রব ঘোষণা করছে, ‘তোমরা প্রভুর জন্য পথ প্রস্তুত কর, তাঁর জন্য পথ সরল কর৷” যিশাইয় 40:3 4 তাই বাপ্তিস্মদাতা য়োহন এলেন, তিনি মরুপ্রান্তরে লোকদের বাপ্তাইজকরছিলেন৷ তিনি প্রচার করেছিলেন য়েন লোকেরা পাপের ক্ষমা পাবার জন্য মন-ফেরায় ও বাপ্তিস্ম নেয়৷ 5 তাতে যিহূদিযা ও জেরুশালেমের সমস্ত মানুষ তাঁর কাছে য়েতে শুরু করল৷ তারা নিজের নিজের পাপ স্বীকার করে যর্দন নদীতে তাঁর কাছে বাপ্তাইজ হতে লাগল৷ 6 য়োহন উটের লোমের তৈরী কাপড় পরতেন৷ তাঁর কোমরে চামড়ার কোমর বন্ধনী ছিল এবং তিনি পঙ্গপাল ও বনমধু খেতেন৷ 7 তিনি প্রচার করতেন, ‘আমার পরে এমন একজন আসছেন, যিনি আমার থেকে শক্তিমান, আমি নীচু হয়ে তাঁর পায়ের জুতোর ফিতে খোলার য়োগ্য নই৷ 8 আমি তোমাদের জলে বাপ্তাইজ করলাম কিন্তু তিনি তোমাদের পবিত্র আত্মায় বাপ্তাইজ করবেন৷’ 9 সেই সময় যীশু গালীলের নাসরত্ থেকে এলেন আর য়োহন তাঁকে যর্দন নদীতে বাপ্তাইজ করলেন৷ 10 জল থেকে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে তিনি দেখলেন, আকাশ দুভাগ হয়ে গেল এবং পবিত্র আত্মা কপোতের মতো তাঁর ওপর নেমে আসছেন৷ 11 আর স্বর্গ থেকে এই রব শোনা গেল, ‘তুমিই আমার প্রিয় পুত্র৷ আমি তোমাতে খুবই সন্তুষ্ট৷’ 12 এরপরই আত্মা যীশুকে প্রান্তরে নিয়ে গেলেন৷ 13 সেখানে তিনি চল্লিশ দিন ছিলেন, সেই সময় শয়তান তাঁকে প্রলুধ্ধ করছিল৷ তিনি বন্য পশুদের সঙ্গে থাকতেন আর স্বর্গদূতরা এসে তাঁর সেবা করতেন৷ 14 য়োহন কারাগারে বন্দী হবার পর যীশু গালীলে গেলেন; আর সেখানে তিনি ঈশ্বরের সুসমাচার প্রচার করলেন৷ 15 যীশু বললেন, ‘সময় এসে গেছে; ঈশ্বরের রাজ্য খুব কাছে৷ তোমরা পাপের পথ থেকে মন ফেরাও এবং ঈশ্বরের সুসমাচারে বিশ্বাস কর৷’ 16 গালীল হ্রদের পাশ দিয়ে য়েতে য়েতে যীশু শিমোন এবং তার ভাই আন্দরিয়কে হ্রদে জাল ফেলতে দেখলেন, কারণ তাঁরা মাছ ধরতেন৷ 17 যীশু তাঁদের বললেন, ‘ওহে তোমরা আমার সঙ্গে এস, আমি তোমাদের মাছ নয়, ঈশ্বরের জন্য মানুষ ধরতে শেখাব৷’ 18 আর তখনই শিমোন এবং আন্দরিয় তাঁদের জাল ফেলে রেখে যীশুকে অনুসরণ করলেন৷ 19 এরপর তিনি কিছুটা দূর গালীল হ্রদের পাশ দিয়ে এগিয়ে গেলে সিবদিয়ের ছেলে যাকোব ও তার ভাই য়োহনকে দেখতে পেলেন৷ তাঁরা তাঁদের নৌকায় বসে জাল ঠিক করছিলেন৷ 20 যীশু তাদের ডাকলেন,তাঁরাও সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের বাবা সিবদিয়কে ভাড়াটে মজুরদের সঙ্গে নৌকায় রেখে যীশুর সঙ্গে চললেন৷ 21 এরপর তাঁরা কফরনাহূম শহরে গেলেন৷ পরদিন শনিবার সকালে, অর্থাত্ বিশ্রামবারে তিনি সমাজ-গৃহে গিয়ে লোকদের শিক্ষা দিতে শুরু করলেন৷ 22 যীশুর শিক্ষা শুনে সবাই আশ্চর্য় হলেন, কারণ তিনি ব্যবস্থার শিক্ষকের মতো নয় কিন্তু সম্পূর্ণ কর্ত্তৃত্ব সম্পন্ন ব্যক্তির মতোই শিক্ষা দিতেন৷ 23 সেই সমাজ-গৃহে হঠাত্ অশুচি আত্মায় পাওযা এক ব্যক্তি চেঁচিয়ে বলল, 24 ‘হে নাসরতীয় যীশু! আপনি আমাদের কাছে কি চান? আপনি কি আমাদের ধ্বংস করতে এসেছেন? আমি জানি আপনি কে, আপনি ঈশ্বরের সেই পবিত্র ব্যক্তি!’ 25 কিন্তু যীশু তাকে ধমক দিয়ে বললেন, ‘চুপ কর! এই লোকটার ভেতর থেকে বেরিয়ে এসো!’ 26 সঙ্গে সঙ্গে সেই অশুচি আত্মা ঐ লোকটাকে দুমড়ে মুচড়ে প্রচণ্ড জোরে চিত্কার করে লোকটির মধ্যে থেকে বেরিয়ে এল৷ 27 এতে প্রত্যেকে অবাক হয়ে নিজেদের মধ্যে বলাবলি করতে লাগল, ‘এ কি ব্যাপার? এটা কি একটা নতুন শিক্ষা? সম্পূর্ণ কর্ত্তৃত্বের সঙ্গে তিনি শিক্ষা দেন, এমনকি অশুচি আত্মাদের আদেশ করেন এবং তারা তাঁর আদেশ মানে৷’ 28 আর গালীলের সমস্ত অঞ্চলে তাঁর কথা ছড়িয়ে পড়ল৷ 29 তখন যীশু ও তাঁর শিষ্যরা সমাজ-গৃহ ছেড়ে যাকোব এবং য়োহনকে সঙ্গে নিয়ে সোজা শিমোন এবং আন্দরিয়ের বাড়িতে গেলেন৷৷ 30 সেখানে শিমোনের শাশুড়ী জ্বরে শয্যাশায়ী ছিলেন৷ তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে শিমোনের শাশুড়ীর জ্বরের কথা যীশুকে বললেন৷ 31 যীশু তাঁর কাছে গেলেন এবং তাঁর হাত ধরে উঠিয়ে বসালেন, সঙ্গে সঙ্গে তাঁর জ্বর ছেড়ে গেল এবং তিনি তাঁদের সেবা করতে লাগলেন৷ 32 সূর্য় অস্ত যাওযার পর সন্ধ্যে হলে, লোকেরা অনেক অসুস্থ ও ভূতে পাওযা লোককে যীশুর কাছে নিয়ে এল৷ 33 আর শহরের সমস্ত লোক সেই বাড়ির দরজায় জমা হল৷ 34 তিনি বহু অসুস্থ রোগীকে নানা প্রকার রোগ থেকে সুস্থ করলেন এবং লোকদের মধ্যে থেকে বহু ভূত তাড়ালেন৷ কিন্তু তিনি ভুতদের কোন কথা বলতে দিলেন না, কারণ তারা তাঁকে চিনত৷ 35 পরের দিন ভোর হবার আগে, রাত থাকতে থাকতে তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়লেন আর নির্জন স্থানে গিয়ে প্রার্থনায় কাটালেন৷ 36 শিমোন ও তাঁর সঙ্গী যাঁরা যীশুর সঙ্গে ছিলেন, তাঁকে খুঁজতে বেরিয়ে পড়লেন৷ 37 পরে যীশুকে দেখতে পেয়ে বললেন, ‘সবাই আপনার খোঁজ করছে৷’ 38 কিন্তু তিনি তাদের বললেন, ‘চল, আমরা অন্য শহরে যাই৷ য়েন সেখানেও আমি প্রচার করতে পারি, কারণ সেই জন্যই আমি এসেছি৷’ 39 তাই তিনি সমস্ত গালীল প্রদেশে বিভিন্ন সমাজ-গৃহে গিয়ে প্রচার করতে ও ভূত ছাড়াতে লাগলেন৷ 40 একদিন এক কুষ্ঠরোগী তাঁর কাছে এসে হাঁটু গেড়ে বিনীতভাবে তাঁর সাহায্য চাইল৷ সে যীশুকে বলল, ‘আপনি ইচ্ছে করলে আমাকে ভাল করে দিতে পারেন৷’ 41 যীশু তার প্রতি মমতায় পূর্ণ হয়ে হাত বাড়িয়ে তাকে স্পর্শ করে বললেন, ‘আমি তা-ই চাই, তুমি ভাল হয়ে যাও৷’ 42 আর সঙ্গে সঙ্গে তার কুষ্ঠ রোগ তাকে ছেড়ে গেল এবং সে সুস্থ হল৷ 43 যীশু তাকে তখনই বিদায় দিলেন৷ 44 তিনি তাকে দৃঢ়ভাবে বললেন, ‘দেখ, একথা কাউকে বলো না, কিন্তু যাজকের কাছে নিজেকে দেখাও এবং কুষ্ঠরোগ থেকে সুস্থ হওযার জন্য মোশির বিধান অনুযায়ী ঈশ্বরকে উপহার দাও, এতে সকলে জানতে পারবে য়ে তুমি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়েছ৷’ 45 কিন্তু সে বাইরে গিয়ে তার সুস্থ হওযার কথা এত বেশী প্রচার করতে ও চারদিকে বলতে লাগল য়ে যীশু আর প্রকাশ্যে কোন শহরে প্রবেশ করতে পারলেন না৷ কাজেই তিনি শহরের বাইরে নির্জনে থেকে গেলেন আর লোকরা চারদিক থেকে তাঁর কাছে আসতে লাগল৷
Mark 2:1 কয়েকদিন পরে তিনি কফরনাহূমে ফিরে এলে এই খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়ল য়ে তিনি বাড়ি ফিরে এসেছেন৷ 2 এর ফলে এত লোক জড় হল য়ে সেখানে তিল ধারণেরও জায়গা রইল না, এমনকি দরজার বাইরেও এতটুকু জায়গা রইল না৷ তিনি তাদের কাছে ঈশ্বরের বাক্য প্রচার করতে লাগলেন৷ 3 সেই সময় চারজন লোক খাটে করে এক পঙ্গুকে তাঁর কাছে নিয়ে এল৷ 4 তারা সেই পঙ্গু লোকটিকে যীশুর কাছে নিয়ে য়েতে পারল না, তাই যীশু য়েখানে ছিলেন সেখানকার ছাদের কিছু টালি খুলে ফাঁকা করে, ঠিক তাঁর সামনে খাটিযা সমেত সেই পঙ্গু লোকটিকে নামিয়ে দিল৷ 5 তাদের বিশ্বাস দেখে যীশু সেই পঙ্গু লোকটিকে বললেন, ‘বাছা, তোমার সব পাপের ক্ষমা হল৷’ 6 সেখানে কিছু ব্যবস্থার শিক্ষক বসে ছিলেন, তাঁরা মনে মনে ভাবতে লাগলেন, 7 ‘এ লোকটি এমন কথা বলছে কেন? এ য়ে ঈশ্বর নিন্দা করছে; ঈশ্বর ছাড়া আর কে পাপ ক্ষমা করতে পারেন?’ 8 যীশু নিজের আত্মায় ব্যবস্থার শিক্ষকদের মনের কথা জানতে পেরে তখনই তাদের বললেন, ‘তোমরা এসব কথা ভাবছ কেন? 9 কোনটা বলা সহজ, ‘তোমার পাপ ক্ষমা করা হল’ অথবা ওঠ, তোমার খাটিযা নিয়ে চলে যাও?’ 10 কিন্তু পৃথিবীতে পাপ ক্ষমা করার ক্ষমতা য়ে মানবপুত্রের আছে এটা আমি তোমাদের প্রমাণ করে দেব৷’ তাই তিনি সেই পঙ্গু লোকটিকে বললেন, 11 ‘আমি তোমায় বলছি ওঠ! তোমার খাটিযাটি তুলে নিয়ে তোমার ঘরে চলে যাও৷’ 12 সে উঠে দাঁড়াল এবং সঙ্গে সঙ্গে তার খাটিযাটি তুলে নিয়ে সকলের সামনে দিয়ে হেঁটে বেরিয়ে গেল৷ এতে সকলে আশ্চর্য হয়ে ঈশ্বরের প্রশংসা করে বলল, ‘এর আগে আমরা এমন কখনও দেখিনি৷’ 13 এরপর তিনি আবার হ্রদের ধারে ফিরে গেলে, সমস্ত লোক তাঁর কাছে এল, আর তিনি তাদের শিক্ষা দিতে লাগলেন৷ 14 পরে তিনি পথে য়েতে য়েতে দেখলেন, এক কর আদায়কারী, আলফেয়ের ছেলে লেবি কর আদায়ের ঘরে বসে আছেন৷ তিনি তাকে বললেন, ‘এস, আমার সাথে চল৷’ তা শুনে লেবি উঠে পড়লেন এবং যীশুর সঙ্গে গেলেন৷ 15 পরে তিনি লেবির বাড়িতে এসে খেতে বসলেন, আর অনেক কর আদায়কারী এবং মন্দ লোক যীশুর ও তাঁর শিষ্যদের সঙ্গে খেতে বসল, কারণ তাদের মধ্যে অনেকেই তাঁর অনুগামী ছিল৷ 16 কিন্তু ফরীশী দলের ব্যবস্থার শিক্ষকরা যীশুকে কর আদায়কারী ও মন্দ লোকদের সঙ্গে খেতে দেখে তাঁর শিষ্যদের বললেন, ‘যীশু কর আদায়কারী ও মন্দ লোকদের সঙ্গে খেতে বসেন কেন?’ 17 এই কথা শুনে যীশু তাদের বললেন, ‘সুস্থ লোকের চিকিত্সকের প্রযোজন নেই, কিন্তু রোগীদের জন্যই চিকিত্সকের প্রযোজন৷ আমি ধার্মিকদের নয়, কিন্তু পাপীদের ডাকতে এসেছি৷’ 18 সেই সময় য়োহনেরশিষ্যরা এবং ফরীশীরা উপোস করছিলেন৷ তাই কিছু লোক যীশুর কাছে এসে তাঁকে বলল, ‘য়োহনের এবং ফরীশীদের শিষ্যরা উপোস করে; কিন্তু আপনার শিষ্যরা উপোস করে না কেন?’ 19 যীশু তাদের বললেন, ‘বর সঙ্গে থাকতে কি বিয়ে বাড়ির অতিথিরা উপোস করতে পারে? য়েহেতু বর তাদের সঙ্গে আছে তাই তারা উপোস করে না৷ 20 কিন্তু এমন সময় আসবে যখন বরকে তাদের কাছ থেকে নিয়ে যাওযা হবে; আর সেই দিন তারা উপোস করবে৷ 21 ‘পুরানো কাপড়ে কেউ নতুন কাপড়ের টুকরো দিয়ে তালি দেয় না; তালি দিলে সেই নতুন কাপড়টি পুরানো কাপড় থেকে ছিঁড়ে বেরিয়ে আসে আর ছেঁড়া জায়গাটি আরো বড় হয়ে যায়৷ 22 পুরানো চামড়ার থলিতে কেউ নতুন দ্রাক্ষারস ঢালে না, ঢাললে থলি ফেটে যায়, তাতে দ্রাক্ষারস এবং চামড়ার থলি দুটোই নষ্ট হয়ে যায়৷ নতুন দ্রাক্ষারসের জন্য নতুন থলিরই প্রযোজন৷’ 23 কোন এক বিশ্রামবারে যীশু শস্য ক্ষেত্রের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন; আর তাঁর শিষ্যেরা য়েতে য়েতে শস্যের শীষ ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাচ্ছিলেন৷ 24 এতে ফরীশীরা তাঁকে বলল, ‘দেখ, বিশ্রামবারে তোমার শিষ্যেরা এমন কাজ কেন করছে, যা করা উচিত নয়?’ 25 তিনি তাদের বললেন, ‘দাযূদ ও তাঁর সঙ্গীরা খাবারের অভাবে ক্ষুধার্ত হয়ে কি করেছিলেন তোমরা কি পড় নি? 26 অবিযাথর যখন প্রধান যাজক ছিলেন সেই সময় দাযূদ কেমন করে ঈশ্বরের গৃহে গিয়ে য়ে রুটি যাজক ছাড়া অন্য আর কারো খাওযা বিধি-সম্মত ছিল না, তা নিজে খেয়েছিলেন ও তাঁর সঙ্গীদের খাইয়েছিলেন?’ 27 যীশু তাদের আরো বললেন, ‘মানুষের জন্যই বিশ্রামবারের সৃষ্টি হয়েছে, কিন্তু বিশ্রামবারের জন্য মানুষ সৃষ্ট হয়নি৷ 28 তাই মানবপুত্রবিশ্রামবারেরও প্রভু৷’
Mark 3:1 আবার তিনি সমাজ-গৃহে গেলেন৷ সেখানে একটা লোক ছিল, যার একটা হাত পঙ্গু হয়ে গিয়েছিল৷ 2 তিনি লোকটিকে সুস্থ করেন কি না, তা দেখার জন্য কিছু লোক তাঁর দিকে নজর রাখল, যাতে তাঁর দোষ ধরতে পারে৷ 3 যীশু সেই লোকটিকে, যার হাত পঙ্গু হয়ে গেছে তাকে বললেন, ‘সকলের সামনে এসে দাঁড়াও৷’ 4 পরে তিনি তাদের বললেন, ‘বিশ্রামবারে লোকের উপকার, না ক্ষতি করা, কোনটি বিধিসম্মত? জীবন রক্ষা করা না জীবন নষ্ট করা, কোনটি বিধিসম্মত? কিন্তু তারা চুপ করে থাকল৷ 5 তখন তিনি ক্রুদ্ধ দৃষ্টিতে তাদের চারিদিকে তাকালেন এবং তাদের কঠোর মনের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে সেই লোকটিকে বললেন, ‘তোমার হাত বাড়াও৷’ সে তার হাত বাড়িয়ে দিলে তার হাত ভাল হয়ে গেল৷ 6 ফরীশীরা বেরিয়ে গিয়ে সঙ্গে সঙ্গে হেরোদীয়দের সাথে যীশুর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে লাগল, য়ে কেমন করে তাঁকে হত্যা করতে পারে৷ 7 যীশু তাঁর শিষ্যদের নিয়ে গালীল হ্রদের দিকে গেলেন৷ গালীল, যিহূদিযা, জেরুশালেম, ইদোম এমন কি যর্দন নদীর অপর পারে সোর ও সীদোন থেকে বহুলোক তাঁদের পিছনে পিছনে এল৷ 8 তিনি য়ে সমস্ত অলৌকিক কাজ করেছিলেন তা শুনে এই বিশাল জনতা তাঁর কাছে এসেছিল৷ 9 যাতে ভীড়ের চাপ তাঁর ওপরে না পড়ে, তাই তিনি শিষ্যদের তাঁর জন্য একটা ছোট নৌকা প্রস্তুত রাখতে বললেন৷ 10 তিনি বহুলোককে সুস্থ করেছিলেন, তাই সমস্ত রোগী তাঁকে স্পর্শ করার জন্য ঠেলাঠেলি করছিল৷ 11 অশুচি আত্মায় পাওযা রোগীরা তাঁকে দেখতে পেলেই তাঁর পায়ের সামনে পড়ে চেঁচিয়ে বলত, ‘আপনি ঈশ্বরের পুত্র৷’ 12 কিন্তু তিনি তাদের কঠোরভাবে তিরস্কার করতেন যাতে তারা তাঁর পরিচয় না দেয়৷ 13 তারপর তিনি পাহাড়ের ওপরে উঠে নিজের ইচ্ছামতো কিছু লোককে কাছে ডাকলে তাঁরা তাঁর কাছে এলেন৷ 14 আর তিনি বারোজনকে প্রেরিত পদে নিযোগ করলেন য়েন তাঁরা তাঁর সাথে সাথে থাকে এবং বাক্য প্রচারের জন্য য়েন তিনি তাঁদের পাঠাতে পারেন৷ 15 তাঁদের তিনি ভূত ছাড়াবার ক্ষমতাও দিলেন৷ 16 তিনি য়ে বারোজনকে মনোনীত করেন তাঁদের নাম শিমোন যাকে তিনি নাম দিলেন পিতর; 17 যাকোব যিনি সিবদিয়ের ছেলে এবং যাকোবের ভাই য়োহন; যাদের তিনি নাম দিয়েছিলেন, বোনেরগশ যার অর্থ ‘মেঘধ্বনির পুত্র৷’ 18 আন্দরিয়, ফিলিপ, বর্থলময়, মথি, থোমা, আলফেয়ের ছেলে যাকোব, থদ্দেয়, দেশ-ভক্ত,দলের শিমোন 19 এবং যিহূদা ঈষ্করিযোতীয় য়ে যীশুকে শত্রুর হাতে ধরিয়ে দিয়েছিল৷ 20 তিনি ঘরে ফিরে এলে সেখানে আবার এত লোকের ভীড় হল, য়ে তাঁরা খেতেও সময় পেলেন না৷ 21 যীশুর বাড়ির লোকরা এইসব বিষয় জানতে পেরে তাঁকে বাড়ি নিয়ে যাবার জন্য এলেন, কারণ লোকরা বলছিল য়ে তিনি পাগল হয়ে গেছেন৷ 22 জেরুশালেম থেকে য়ে ব্যবস্থার শিক্ষকরা এসেছিলেন তাঁরা বললেন, ‘যীশুকে বেলসবুবে পেয়েছে, ভুতদের রাজার সাহায্যে যীশু ভূত ছাড়ায়৷’ 23 তখন তিনি তাদের কাছে ডেকে দৃষ্টান্ত দিয়ে বলতে শুরু করলেন, ‘কেমন করে শয়তান নিজে শয়তানকে ছাড়াতে পারে? 24 কোন রাজ্য যদি নিজের বিপক্ষে নিজে ভাগ হয়ে যায়, তবে সেই রাজ্য টিকতে পারে না৷ 25 আবার কোন পরিবারে যদি পারিবারিক কলহ শুরু হয়, তবে সেই পরিবার এক থাকতে পারে না৷ 26 আবার শয়তান যদি নিজের বিরুদ্ধেই নিজে দাঁড়ায় তবে সেও টিকতে পারে না, তার শেষ হবেই৷ 27 কেউই একজন শক্তিশালী মানুষের বাড়িতে ঢুকে তার দ্রব্য লুঠ করতে পারে না, যদি না সে সেই শক্তিশালী লোকটিকে আগে বাঁধে৷ আর বাঁধার পরই সে তার ঘর লুঠ করতে পারে৷ 28 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, মানুষ য়ে সমস্ত পাপ এবং ঈশ্বরের নিন্দা করে সেই সমস্ত পাপের ক্ষমা হতে পারে; 29 কিন্তু যদি কেউ পবিত্র আত্মার নিন্দা করে তবে তার ক্ষমা নেই, তার পাপ চিরস্থাযী৷’ 30 তিনি এইসব কথা ব্যবস্থার শিক্ষকদের বললেন, কারণ তারা বলেছিল, তাঁকে অশুচি আত্মায় পেয়েছে৷ 31 সেই সময় তাঁর মা ও ভাইরা তাঁর কাছে এলেন এবং বাইরে দাঁড়িয়ে তাঁরা যীশুকে লোক মারফত্ ডেকে পাঠালেন৷ 32 তখন তাঁর চারদিকে ভীড় করে য়ে লোকরা বসেছিল, তারা তাঁকে বলল, ‘দেখুন, আপনার মা, ভাই ও বোনেরা আপনার জন্য বাইরে অপেক্ষা করছেন৷’ 33 তার উত্তরে তিনি তাদের বললেন, ‘কে আমার মা? আমার ভাইরা বা কারা?’ 34 যাঁরা তাঁকে ঘিরে বসেছিল তাদের দিকে তাকিয়ে তিনি বললেন, ‘এরাই আমার মা ও ভাই৷ 35 য়ে কেউ ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করে, সেই আমার মা, ভাই ও বোন৷’
Mark 4:1 পরে আবার তিনি হ্রদের ধারে লোকদের কাছে শিক্ষা দিতে লাগলেন৷ তাতে এত লোক তাঁর কাছে জড়ো হল য়ে, তিনি একটা নৌকায় উঠে বসলেন আর হ্রদের পাড়ে সমস্ত লোকরা এসে ভীড় করল৷ 2 তখন দৃষ্টান্তের মাধ্যমে তিনি তাদের উদ্দেশ্যে শিক্ষা দিতে লাগলেন, বললেন, 3 ‘শোন! এক চাষী বীজ বুনতে গেল৷ 4 বোনার সময় কতকগুলো বীজ পথের পাশে পড়ল, তাতে পাখিরা এসে তা খেয়ে ফেলল৷ 5 আবার কতকগুলো বীজ পাথুরে জমিতে পড়ল, সেখানে বেশী মাটি ছিল না৷ বেশী মাটি না থাকাতে খুব তাড়াতাড়ি বীজ থেকে অঙ্কুর বের হল: 6 কিন্তু সূর্য় ওঠার সাথে সাথে অঙ্কুরগুলো শুকিয়ে গেল, কারণ এর শেকড় গভীরে ছিল না৷ 7 কতকগুলো বীজ কাঁটাঝোপের মধ্যে গিয়ে পড়ল, কাঁটাবন বেড়ে গিয়ে চারাগাছগুলোকে বাড়তে দিল না, ফলে সে গাছে কোন ফল হল না৷ 8 কতকগুলো বীজ ভাল জমিতে পড়ল এবং তার থেকে অঙ্কুর বের হল, আর তা বেড়ে ফল দিল৷ যা বোনা হয়েছিল তার ত্রিশ গুণ, ষাট গুণ ও একশো গুণ ফল দিল৷’ 9 তিনি তাদের বললেন, ‘যার শোনার মত কান আছে সে শুনুক৷’ 10 পরে যখন তিনি একা ছিলেন, তাঁর শিষ্যেরা সেই বারোজন প্রেরিতের সাথে তাঁকে তাঁর দৃষ্টান্তের অর্থ জিজ্ঞাসা করলেন৷ 11 তখন তিনি তাঁদের বললেন, ‘ঈশ্বরের রাজ্যের নিগূঢ় তত্ত্ব তোমাদের বলা হয়েছে; কিন্তু যাঁরা ঈশ্বরের রাজ্যের বাইরের লোক তাদের কাছে সব কিছুই দৃষ্টান্তের মাধ্যমে বলা হচ্ছে৷ 12 যাতে, ‘তারা দেখবে কিন্তু উপলধ্ধি করতে পারবে না৷ তারা শুনবে অথচ বুঝবে না, পাছে তারা ফিরে আসে ও তাদের ক্ষমা করা যায়৷” যিশাইয় 6:9-10 13 তিনি তাদের বললেন, ‘তোমরা কি এই দৃষ্টান্তের অর্থ বুঝতে পার না? তবে কেমন করে অন্য সব দৃষ্টান্ত বুঝবে? 14 সেই চাষী হল সেই লোক, য়ে ঈশ্বরের শিক্ষা মানুষেব কাছে নিয়ে যায়৷ 15 কিছু লোক সেই পথের পাশে পড়া বীজের মতো, যাদের মধ্যে ঈশ্বরের শিক্ষা বোনা যায়, আর তারা শোনার সঙ্গে সঙ্গে শয়তান এসে তাদের মন থেকে য়ে শিক্ষা বোনা হয়েছিল তা নিয়ে যায়৷ 16 কিছু লোক সেই পাথুরে জমিতে পড়া বীজের মতো, যাঁরা শিক্ষা শোনার সাথে সাথে তা আনন্দে গ্রহণ করে৷ 17 কিন্তু তাদের হৃদয়ের গভীরে মূল যায় না, তারা অল্প সময় স্থির থাকে৷ সেই শিক্ষা গ্রহণের জন্য য়েই তাদের ওপর কষ্ট অথবা তাড়না আসে, অমনি তারা সেই পথ ছেড়ে দেয়৷ 18 কিছু লোক সেই কাঁটাঝোপে বোনা বীজের মতো যাঁরা শিক্ষা শোনে, 19 কিন্তু সংসারের চিন্তা, অর্থের মাযা ও অন্যান্য বিষয়ের অভিলাষ মনের ভেতর গিয়ে ঐ বাক্য চেপে রাখে, আর তাই তাতে কোন ফল হয় না৷ 20 আর কিছু লোক সেই উর্বর জমিতে পড়া বীজের মত, যাঁরা সেই বাক্য সকল শুনে গ্রহণ করে এবং ত্রিশ গুণ, কেউ ষাট গুণ ও কেউ শত গুণ ফল উত্পন্ন করে৷’ 21 তিনি তাদের আরো বললেন, ‘প্রদীপ জ্বেলে কি কেউ ধামা চাপা দিয়ে বা খাটের নীচে রাখে? বাতিদানের ওপরে রাখবার জন্য কি তা জ্বালে না? 22 কারণ এমন গোপন কিছুই নেই যা প্রকাশ করা যাবে না, এমন লুকানো কিছু নেই যা প্রকাশ হবে না৷ 23 যদি তোমাদদের কান থাকে তবে শোন! 24 ‘তারপর তিনি তাদের বললেন, তোমরা যা শুনছ সেই বিষয়ে মনোয়োগ দাও৷ য়ে দাঁড়ি-পাল্লায় তুমি মাপবে সেই দাঁড়িপাল্লায় তোমাদের জন্যও মেপে দেওযা হবে, এমনকি আরো বেশী দেওযা হবে৷ 25 কারণ যার আছে তাকে আরো দেওযা হবে; আর যার নেই তার যা আছে তাও তার কাছ থেকে কেড়ে নেওযা হবে৷’ 26 তিনি আরো বললেন, ‘ঈশ্বরের রাজ্য এইবকম, একজন লোক জমিতে বীজ ছড়াল৷ 27 পরে সে দিন রাত ঘুমিয়ে জেগে উঠল; ইতিমধ্যে ঐ বীজ থেকে অঙ্কুর হল ও বাড়তে লাগল; কেমন করে বাড়ছে সে তা জানল না৷ 28 জমিতে নিজে থেকে চারা গাছ বড় হতে লাগল৷ প্রথমে অঙ্কুর, তারপর শীষ এবং শীষের মধ্যে সম্পূর্ণ শস্য দানা হল৷ 29 সেই ফসল পাকলে পরে সে সাথে সাথে কাস্তে লাগাল কারণ ফসল কাটার সময় হয়েছে৷’ 30 যীশু বললেন, ‘আমরা কিসের সাথে ঈশ্বরের রাজ্যের তুলনা করব? কোন্ দৃষ্টান্তের সাহায্যেই বা তা বোঝাব? 31 এটা হল সরষে দানার মতো, সেই বীজ মাটিতে বোনার সময় মাটির সমস্ত বীজের মধ্যে সবচেয়ে ছোট; 32 কিন্তু রোপণ করা হলে তা বাড়তে বাড়তে সমস্ত চারাগাছের থেকে বড় হয়ে ওঠে এবং তাতে লম্বা লম্বা ডালপালা গজায় যাতে পাখিরা তার ছাযার নীচে বাসা বাঁধতে পারে৷’ 33 এইরকম আরও অনেক দৃষ্টান্তের সাহায্যে তিনি তাদের কাছে শিক্ষা দিতেন; তিনি তাদের বোঝবার ক্ষমতা অনুসারে শিক্ষা দিতেন, 34 দৃষ্টান্ত ছাড়া তাদের কিছুই বলতেন না; কিন্তু শিষ্যদের সঙ্গে একা থাকার সময়, তিনি তাদের সমস্ত কিছু বুঝিয়ে বলতেন৷ 35 ঐদিন সন্ধ্যে হলে তিনি শিষ্যদের বললেন, ‘চল, আমরা হ্রদের ওপারে যাই৷’ 36 তখন তাঁরা লোকদের বিদায় দিয়ে, তিনি নৌকায় য়ে অবস্থায় বসেছিলেন, তেমনিভাবেই তাঁকে সঙ্গে নিয়ে গেলেন, সেখানে আরও নৌকা তাদের সঙ্গে ছিল৷ 37 দেখতে দেখতে প্রচণ্ড ঝড় উঠল এবং ঢেউগুলো নৌকায় এমন আছড়ে পড়তে লাগল য়ে নৌকা জলে ভরে উঠতে লাগল৷ 38 সেইসময় যীশু নৌকার পিছন দিকে বালিশে মাথা দিয়ে ঘুমোচ্ছিলেন৷ তাঁরা তাঁকে জাগিয়ে বললেন, ‘গুরু, আপনার কি চিন্তা হচ্ছে না য়ে আমরা সকলে ডুবতে বসেছি?’ 39 তখন তিনি জেগে উঠে ঝড়কে ধমক দিলেন ও সমুদ্রকে বললেন, ‘থাম!শান্ত হও!’ সঙ্গে সঙ্গে ঝড় থেমে গেল, আর সবকিছু শান্ত হল৷ 40 তখন তিনি তাদের বললেন, ‘তোমরা এত ভীতু কেন? তোমাদের কি এখনও বিশ্বাস হয় নি?’ 41 কিন্তু শিষ্যরা আরও ভয় পেয়ে পরস্পরের মধ্যে বলাবলি করতে লাগলেন, ‘ইনি তবে কে? এমন কি ঝড় এবং সমুদ্রও এঁর কথা শোনে৷’
Mark 5:1 এরপর যীশু এবং তাঁর শিষ্যরা হ্রদের ওপারে গেরাসেনীদের দেশে এলেন৷ 2 তিনি নৌকা থেকে নামার সাথে সাথে একটি লোক কবরস্থান থেকে তাঁর সামনে এল, তাকে অশুচি আত্মায় পেয়েছিল৷ 3 সে কবরস্থানে বাস করত, কেউ তাকে শেকল দিয়েও বেঁধে রাখতে পারত না৷ 4 লোকে বারবার তাকে বেড়ী ও শেকল দিয়ে বাঁধত; কিন্তু সে শেকল ছিঁড়ে ফেলত এবং বেড়ী ভেঙ্গে টুকরো করত, কেউ তাকে বশ করতে পারত না৷ 5 সে রাত দিন সব সময় কবরখানা ও পাহাড়ি জায়গায় থাকত এবং চিত্কার করে লোকদের ভয় দেখাত এবং ধারালো পাথর দিয়ে নিজেকে ক্ষত-বিক্ষত করত৷ 6 সে দূর থেকে যীশুকে দেখে ছুটে এসে প্রণাম করল৷ 7 আর খুব জোরে চেঁচিয়ে বলল, ‘হে ঈশ্বরের সবচেয়ে মহান পুত্র যীশু, আপনি আমায় নিয়ে কি করতে চান? আমি আপনাকে ঈশ্বরের দিব্যি দিচ্ছি, আমাকে যন্ত্রণা দেবেন না!’ কারণ তিনি তাকে বলেছিলেন, ‘ওহে অশুচি আত্মা, এই লোকটি থেকে বেরিয়ে যাও৷’ 8 9 তিনি তাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমার নাম কি?’ সে তাঁকে বলল, ‘আমার নাম বাহিনী, কারণ আমরা অনেকগুলো আছি৷’ 10 তখন সে যীশুর কাছে মিনতি করতে লাগল, য়েন তিনি তাদের সেই অঞ্চল থেকে তাড়িয়ে না দেন৷ 11 সেখানে পর্বতের পাশে একদল শুযোর চরছিল, 12 আর তারা (অশুচি আত্মারা) যীশুকে অনুনয় করে বলল, ‘আমাদের এই শুযোরের পালের মধ্যে ঢুকতে হুকুম দিন৷’ 13 তিনি তাদের অনুমতি দিলে সেই অশুচি আত্মারা বের হয়ে শুযোরদের মধ্যে ঢুকে পড়ল৷ তাতে সেই শুযোরের পাল, কমবেশী দুহাজার শুযোর দৌড়ে ঢালু পাড় দিয়ে হ্রদে গিয়ে পড়ল এবং ডুবে মরল৷ 14 তখন যারা শুযোরগুলোকে চরাচ্ছিল তারা পালিয়ে গেল এবং শহরে ও খামার বাড়িগুলিতে গিয়ে খবর দিল৷ তখন কি হয়েছে তা দেখার জন্য লোকরা এল৷ 15 তারা যীশুর কাছে এসে দেখল, সেই অশুচি আত্মায় পাওযা লোকটি, যাকে ভূতে পেয়েছিল, সে কাপড় পরে সম্পূর্ণ সুস্থ অবস্থায় বসে আছে৷ তাতে তারা ভয় পেল, 16 আর যাঁরা ঐ অশুচি আত্মায় পাওযা লোকটির ও শুযোরের পালের ঘটনা দেখেছিল তারা সমস্ত ঘটনা যা ঘটেছিল তা বলল৷ 17 তখন তারা যীশুকে অনুনয় করে তাদের অঞ্চল ছেড়ে চলে য়েতে বলল৷ 18 পরে তিনি নৌকায় উঠছেন, এমন সময় য়ে লোকটিকে ভূতে পেয়েছিল, সে তাঁকে অনুনয় করে বলল, য়েন সে তাঁর সঙ্গে থাকতে পারে৷ 19 কিন্তু যীশু তাকে অনুমতি দিলেন না, বরং বললেন, ‘তুমি তোমার পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের কাছে ফিরে যাও আর ঈশ্বর তোমার জন্য যা যা করেছেন ও তোমার প্রতি য়ে দযা দেখিয়েছেন তা তাদের বুঝিয়ে বল৷’ 20 তখন সে চলে গেল এবং প্রভু তার জন্য যা যা করেছেন, তা দিকাপলি অঞ্চলে প্রচার করতে লাগল, তাতে সকলে অবাক হয়ে গেল৷ 21 পরে যীশু নৌকায় আবার হ্রদ পার হয়ে অন্য পাড়ে এলে অনেক লোক তাঁর কাছে ভীড় করল৷ তিনি হ্রদের তীরেই ছিলেন৷ 22 আর সমাজগৃহের নেতাদের মধ্যে যাযীর নামে এক ব্যক্তি এসে তাঁকে দেখে তাঁর পায়ে পড়লেন 23 এবং অনেক অনুনয় করে তাঁকে বললেন, ‘আমার মেয়ে মর মর, আপনি এসে মেয়েটির ওপর হাত রাখুন যাতে সে সুস্থ হয় ও বাঁচে৷’ 24 তখন তিনি তার সঙ্গে গেলেন৷ বহুলোক তাঁর পেছন পেছন চলল, আর তাঁর চারদিকে ঠেলাঠেলি করতে লাগল৷ 25 একটি স্ত্রীলোক বারো বছর ধরে রক্তস্রাব রোগে ভুগছিল৷ 26 অনেক চিকিত্সকের সাহায্য নিয়ে এবং সর্বস্ব ব্যয় করেও এতটুকু ভাল না হয়ে বরং আরো অসুস্থ হয়ে পড়েছিল৷ 27 সে যীশুর বিষয় শুনে ভীড়ের মধ্যে তাঁর পিছন দিকে এসে তাঁর পোশাক স্পর্শ করল৷ 28 সে মনে মনে ভেবেছিল, ‘যদি কেবল তাঁর পোশাক ছুঁতে পারি, তবেই আমি সুস্থ হব৷’ 29 আর সঙ্গে সঙ্গে তাঁর রক্তস্রাব বন্ধ হল এবং সে তার শরীরে অনুভব করল য়ে সেই রোগ থেকে সুস্থ হয়েছে৷ 30 যীশু সঙ্গে সঙ্গে বুঝতে পারলেন য়ে তাঁর মধ্য থেকে শক্তি বের হয়েছে৷ তাই ভীড়ের মধ্যে মুখ ফিরিয়ে বললেন, ‘কে আমার পোশাক স্পর্শ করেছে?’ 31 তাঁর শিষ্যেরা তাঁকে বললেন, ‘আপনি দেখছেন, লোকরা আপনার ওপরে ঠেলাঠেলি করে পড়ছে, তবু বলছেন, ‘কে আমাকে স্পর্শ করল?” 32 কিন্তু য়ে এই কাজ করেছে, তাকে দেখবার জন্য তিনি চারদিকে দেখতে লাগলেন৷ 33 তখন সেই স্ত্রীলোকটি ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে তার প্রতি কি করা হয়েছে তা জানাতে তাঁর পায়ে পড়ল এবং সমস্ত সত্যি কথা তাঁকে বলল৷ 34 তখন যীশু তাকে বললেন, ‘তোমার বিশ্বাস তোমাকে ভাল করেছে, শান্তিতে চলে যাও ও তোমার রোগ থেকে সুস্থ থাক৷’ 35 তিনি এই কথা বলছেন, সেইসময় সমাজগৃহের নেতা যাযীরের বাড়ি থেকে লোক এসে বলল, ‘আপনার মেয়ে মারা গেছে, গুরুকে আর কষ্ট দেবার কোন কারণ নেই৷’ 36 কিন্তু যীশু তাদের কথায় কান না দিয়ে যাযীরকে বললেন, ‘ভয় করো না, কেবল বিশ্বাস রাখো৷’ 37 আর তিনি পিতর, যাকোব ও যাকোবের ভাই য়োহনকে ছাড়া আর কাউকে নিজের সঙ্গে য়েতে দিলেন না৷ 38 পরে তারা সমাজগৃহের নেতার বাড়িতে এসে দেখলেন সেখানে গোলমাল হচ্ছে, কেউ কেউ শোকে চিত্কার করে কাঁদছে ও বিলাপ করছে৷ 39 তিনি ভিতরে গিয়ে তাদের বললেন, ‘তোমরা গোলমাল করছ ও কাঁদছ কেন? মেয়েটি তো মরে নি, সে ঘুমিয়ে আছে৷’ 40 এতে তারা তাঁকে উপহাস করল৷ কিন্তু তিনি সকলকে বাইরে বার করে দিয়ে, মেয়েটির বাবা, মা ও নিজের শিষ্যদের নিয়ে য়েখানে মেয়েটি ছিল সেখানে গেলেন৷ 41 আর মেয়েটির হাত ধরে বললেন, ‘টালিথা কুমী!’ যার অর্থ ‘খুকুমনি, আমি তোমাকে বলছি ওঠ!’ 42 মেয়েটি সঙ্গে সঙ্গে উঠে হেঁটে বেড়াতে লাগল৷ তার বয়স তখন বারো বছর ছিল৷ তাই দেখে তারা সকলে খুব আশ্চর্য হয়ে গেল৷ 43 পরে তিনি তাদের এই দৃঢ় আদেশ দিলেন যাতে কেউ এটা জানতে না পারে; আর মেয়েটিকে কিছু খেতে দিতে বললেন৷
Mark 6:1 পরে যীশু তাঁর শিষ্যদের নিয়ে সেখান থেকে নিজের শহরে চলে এলেন৷ 2 এরপর তিনি বিশ্রামবারে সমাজ-গৃহে শিক্ষা দিতে লাগলেন; আর সমস্ত লোক তাঁর শিক্ষা শুনে আশ্চর্য হল৷ তারা বলল, ‘এ কোথা থেকে এ সমস্ত বিজ্ঞতা অর্জন করল? এ কি করে এমন বিজ্ঞতার সঙ্গে কথা বলে? কি করেই বা এইসব অলৌকিক কাজ করে? 3 এ তো সেই ছুতোর মিস্ত্রি এবং মরিয়মের ছেলে; যাকোব, য়োসি, যিহূদা ও শিমোনের ভাই; তাই নয় কি? আর এর বোনেরা কি আমাদের মধ্যে নেই?’ এইসব চিন্তা তাদের মাথায় আসায় তারা তাঁকে গ্রহণ করতে পারল না৷ 4 তখন যীশু তাদের বললেন, ‘নিজের শহর ও নিজের আত্মীয় স্বজন এবং পরিজনদের মধ্যে ভাববাদী সম্মানিত হন না৷’ 5 তিনি সেখানে কোন অলৌকিক কাজ করতে পারলেন না৷ শুধু কয়েকজন রোগীর ওপর হাত রেখে তাদের সুস্থ করলেন৷ 6 তারা য়ে তাঁর ওপর বিশ্বাস করল না, এতে তিনি আশ্চর্য হয়ে গেলেন৷ এর পরে তিনি চারদিকে গ্রামে গ্রামে ঘুরে শিক্ষা দিলেন৷ 7 পরে তিনি সেই বারোজনকে ডেকে দুজন দুজন করে তাঁদের পাঠাতে শুরু করলেন এবং তাঁদের অশুচি আত্মার ওপরে ক্ষমতা দান করলেন৷ 8 তিনি তাঁদের আদেশ দিলেন য়েন তাঁরা পথে চলবার জন্য একটা লাঠি ছাড়া আর কিছু সঙ্গে না নেয় এবং রুটি, থলে এমনকি কোমরবন্ধনীতে কোন টাকাপয়সা নিতেও বারণ করলেন৷ 9 তবে বললেন, পায়ে জুতো পরবে কিন্তু কোন বাড়তি জামা নেবে না৷ 10 তিনি আরও বললেন, তোমরা য়ে কোন শহরে য়ে বাড়িতে ঢুকবে, সেই শহর না ছাড়া পর্য়্ন্ত সেই বাড়িতে থেকো৷ 11 যদি কোন শহরের লোক তোমাদের গ্রহণ না করে বা তোমাদের কথা না শোনে তবে সেখান থেকে চলে যাবার সময় তাদের উদ্দেশ্যে সাক্ষ্যের জন্য নিজের নিজের পায়ের ধূলো সেখানে ঝেড়ে ফেলো৷ 12 পরে তাঁরা বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়লেন, প্রচার করতে আরন্ভ করলেন এবং লোকদের মন-ফেরাতে বললেন৷ 13 তাঁরা অনেক ভূত ছাড়ালেন ও অনেক লোককে তেল মাখিয়ে সুস্থ করলেন৷ 14 যীশুর সুনাম চারদিকে এমন ছড়িয়ে পড়েছিল, য়ে রাজা হেরোদওসে কথা শুনতে পেলেন৷ কিছু লোক বলল, ‘বাপ্তিস্মদাতা য়োহন বেঁচে উঠেছেন, আর সেইজন্যই তিনি এইসব অলৌকিক কাজ করছেন৷’ 15 কিন্তু কেউ কেউ বলল, ‘তিনি এলীয়৷’আবার কেউ কেউ বলল, ‘তিনি প্রাচীনকালের কোন ভাববাদীর মতোই একালের একজন ভাববাদী৷’ 16 কিন্তু হেরোদ তাঁর কথা শুনে বললেন, ‘উনি সেই য়োহন, য়াঁর মাথা কেটে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিলেন, তিনিই আবার বেঁচে উঠেছেন৷’ 17 হেরোদ নিজের ভাই ফিলিপের স্ত্রী হেরোদিযাকে বিয়ে করেছিলেন, সেই জন্য নিজের লোক পাঠিয়ে য়োহনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে রেখেছিলেন৷ 18 কারণ য়োহন হেরোদকে বলেছিলেন, ‘ভাইয়ের স্ত্রীকে নিজের কাছে রাখা ঠিক নয়৷’ 19 হেরোদিযা রাগে য়োহনকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল, কিন্তু পারে নি৷ 20 কারণ হেরোদ য়োহনকে ধার্মিক এবং পবিত্র লোক জেনে ভয় করতেন, সেইজন্যে তিনি তাঁকে রক্ষা করতেন৷ তাঁর কথা শুনে তিনি অত্যন্ত বিচলিত হতেন তবুও তাঁর কথা শুনতে ভালবাসতেন৷ 21 শেষ পর্যন্ত হেরোদিযা যা চেয়েছিলেন সেই সুয়োগ এসে গেল৷ হেরোদ তাঁর জন্মদিনে প্রাসাদের উচ্চপদস্থ কর্মচারী, সেনাবাহিনীর অধ্যক্ষ ও গালীলের গন্যমান্য নাগরিকদের জন্য নৈশভোজের আযোজন করলেন; 22 আর হেরোদিযার মেয়ে এসে রাজা ও নিমন্ত্রিত অতিথিদের নাচ দেখিয়ে মুগ্ধ করল৷ রাজা সেই মেয়েকে বললেন, ‘আমাকে বল তুমি কি চাও? তুমি যা চাইবে তা-ই দেব৷’ 23 তিনি শপথ করে আরো বললেন, ‘আমার কাছে যা চাইবে আমি তাই দেব, এমনকি অর্ধেক রাজ্যও দেব৷’ 24 তাতে সে বেরিয়ে গিয়ে তার মাকে জিজ্ঞাসা করল, ‘আমি কি চাইব?’ সে বলল, ‘বাপ্তিস্মদাতা য়োহনের মাথা৷’ 25 মেয়েটি তাড়াতাড়ি রাজার কাছে ফিরে গেল এবং বলল, ‘আমার ইচ্ছা য়ে, আপনি বাপ্তিস্মদাতা য়োহনের মাথাটি এনে এখনই থালায় করে আমাকে দিন৷’ 26 তাতে রাজা হেরোদ দুঃখ পেলেন: কিন্তু নিজের শপথের জন্য এবং ভোজসভার অতিথিদের জন্য তিনি মেয়েকে ফেরাতে চাইলেন না৷ 27 তাই রাজা সঙ্গে সঙ্গে একজন সেনাকে য়োহনের মাথা কেটে নিয়ে আসতে পাঠালেন৷ সে কারাগারে গিয়ে তাঁর শিরশ্ছেদ করল, 28 এবং থালায় করে মাথাটি নিয়ে মেয়েটিকে দিল, মেয়েটি তা তার মাকে দিল৷ 29 এই সংবাদ শুনে য়োহনের শিষ্যরা এসে, তাঁর দেহটিকে নিয়ে গিয়ে কবর দিলেন৷ 30 এরপর য়ে প্রেরিতদের যীশু প্রচার করতে পাঠিয়েছিলেন, তাঁরা যীশুর কাছে ফিরে এসে যা কিছু করেছিলেন ও যা কিছু শিক্ষা দিয়েছিলেন সে সব কথা তাঁকে জানালেন৷ 31 তখন তিনি তাঁদের বললেন, ‘তোমরা কোন নির্জন স্থানে গিয়ে একটু বিশ্রাম কর৷’ কারণ এত লোক যাতাযাত করছিল য়ে তাঁদের খাবার সময় হচ্ছিল না৷ 32 তাই তাঁরা নৌকা করে কোন নির্জন স্থানে চললেন৷ 33 কিন্তু লোকরা তাঁদের য়েতে দেখল এবং অনেকে তাঁদের চিনতে পারল, তাই সমস্ত শহর থেকে লোকেরা বের হয়ে কিনারা ধরে দৌড়ে তাঁদের আগে সেখানে পৌঁছল৷ 34 যীশু নৌকা থেকে বাইরে বেরিয়ে বহু লোককে দেখতে পেলেন, তাঁর প্রাণে তাদের জন্য খুবই দযা হল; কারণ তাদের পালকহীন মেষপালের মতো দেখাচ্ছিল৷ তখন তিনি তাদের অনেক বিষয়ে শিক্ষা দিতে লাগলেন৷ 35 সেই দিন বেলা প্রায় শেষ হয়ে এলে যীশুর শিষ্যরা এসে তাঁকে বললেন, ‘এটা নির্জন স্থান এবং সন্ধ্যাও ঘনিয়ে এল৷ 36 এদের বিদায় করুন; যাতে এরা আশপাশের গ্রামে গিয়ে খাবার কিনতে পারে৷’ 37 কিন্তু যীশু তাঁদের বললেন, ‘তোমরাই ওদের খেতে দাও৷’ তাঁরা যীশুকে বললেন, ‘এতো লোককে রুটি কিনে খাওযাতে গেলে তো দুশো দীনার লাগবে৷’ 38 তিনি তাঁদের বললেন, ‘তোমাদের কাছে কখানা রুটি আছে খুঁজে দেখ৷’ 39 তাঁরা দেখে বললেন, ‘আমাদের কাছে পাঁচখানা রুটি ও দুটো মাছ আছে৷’ তখন তিনি প্রত্যেককে সবুজ ঘাসের উপর বসিয়ে দিতে বললেন৷ 40 তাঁরা শ’ শ’ জন এবং পঞ্চাশ পঞ্চাশ জন করে সারি সারি বসে পড়ল৷ 41 তখন তিনি সেই পাঁচটা রুটি ও দুটো মাছ নিয়ে স্বর্গের দিকে তাকিয়ে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানিয়ে রুটিগুলোকে টুকরো টুকরো করে শিষ্যদের হাতে দিয়ে লোকদের দিতে বললেন৷ আর সেই দুটো মাছকেও টুকরো টুকরো করে সকলকে ভাগ করে দিলেন৷ 42 তারা সকলে তৃপ্তির সঙ্গে খেল৷ 43 আর যা পড়ে রইল সেই সমস্ত টুকরো রুটি ও মাছে বারোটি টুকরি ভর্তি হয়ে গেল৷ 44 যত পুরুষ সেদিন খেয়েছিল, তারা সংখ্যায় পাঁচ হাজার ছিল৷ 45 পরে তিনি তাঁর শিষ্যদের নৌকায় উঠে তাঁর আগে ওপারে বৈত্সৈদাতে পৌঁছাতে বললেন, সেইসময় তিনি লোকেদের বিদায় দিচ্ছিলেন৷ 46 লোকেদের বিদায় করে তিনি প্রার্থনা করবার জন্য পাহাড়ে চলে গেলেন৷ 47 সন্ধ্যাকালে নৌকাটিহ্রদের মাঝখানে ছিল এবং তিনি একা ডাঙ্গায় ছিলেন৷ 48 তিনি দেখলেন য়ে শিষ্যরা বাতাসের বিরুদ্ধে খুব কষ্টের সঙ্গে দাঁড় টেনে চলেছেন৷ খুব ভোর বেলা প্রায় তিনটে ও ছটার মধ্যে তিনি হ্রদের জলের উপর দিয়ে হেঁটে তাদের কাছে এলেন৷ তিনি তাঁদের পাশ কাটিয়ে এগিয়ে য়েতে চাইলেন৷ 49 কিন্তু হ্রদের উপর দিয়ে তাঁকে হাঁটতে দেখে তাঁরা ভাবলেন ভূত, আর এই ভেবে তাঁরা চেঁচিয়ে উঠলেন৷ 50 কারণ তাঁরা সকলেই তাঁকে দেখে ভয় পেয়েছিলেন; কিন্তু যীশু সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের বললেন, ‘সাহস করো ! ভয় করো না, এতো আমি!’ 51 পরে তিনি তাদের নৌকায় উঠলে ঝড় থেমে গেল৷ তাতে তাঁরা আশ্চর্য হয়ে গেলেন৷ 52 কারণ এর আগে তাঁরা পাঁচটা রুটির ঘটনার অর্থ বুঝতে পারেন নি, তাঁদের মন কঠোর হয়ে পড়েছিল৷ 53 পরে তাঁরা ্ব্রদ পার হয়ে গিনেষরত্ প্রদেশে এসে নৌকা বাঁধলেন৷ 54 তিনি নৌকা থেকে নামলে লোকরা তাঁকে চিনে ফেলল৷ 55 তারা ঐ এলাকার সমস্ত অঞ্চলে চারদিকে দৌড়াদৌড়ি করে অসুস্থ লোকদের খাটিযা করে তাঁর কাছে নিয়ে আসতে লাগল৷ 56 গ্রামে, শহরে বা পাড়ায় য়েখানে তিনি য়েতেন, সেখানে লোকেরা অসুস্থ রোগীদের এনে বাজারের মধ্যে জড়ো করত৷ তারা মিনতি করত য়েন শুধু যীশুর কাপড়ের ঝালর স্পর্শ করতে পারে৷ আর যাঁরা তাঁর কাপড় স্পর্শ করত তারা সকলেই সুস্থ হয়ে য়েত৷
Mark 7:1 কয়েকজন ফরীশী ও ব্যবস্থার শিক্ষক জেরুশালেম থেকে যীশুর কাছে এলেন৷ 2 তাঁরা দেখলেন য়ে, তাঁর কয়েকজন শিষ্য হাত না ধুয়ে খাবার খাচ্ছেন৷ 3 ফরীশী সম্প্রদায়ের লোকেরা এবং সমস্ত ইহুদীরা প্রাচীন রীতি অনুসারে ভাল করে হাত না ধুয়ে খাবার খেতো না৷ 4 আর বাজার থেকে কোন কিছু কিনলে তা বিশেষভাবে না ধুয়ে খেতো না৷ আরও বহু প্রাচীন রীতি নীতি তারা মেনে চলত, য়েমন পানপাত্রটি, কলসী ও পিতলের নানা পাত্র ধোওযা ইত্যাদি৷ 5 সেই ফরীশীরা ও ব্যবস্থার শিক্ষকরা যীশুকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘আপনার শিষ্যরা প্রাচীন রীতিনীতি অনুসারে চলে না, তারা হাত না ধুয়ে তাদের খাবার খায়, এর কারণ কি?’ 6 যীশু তাঁদের বললেন, ‘ভণ্ডরা, ভাববাদী যিশাইয় তোমাদের বিষয়ে ঠিকই বলেছেন, য়েমন লেখা আছে, ‘এই লোকেরা মুখেই শুধু আমাকে সম্মান করে, কিন্তু তাদের মন আমার থেকে অনেক দূরে থাকে৷ 7 এরা অনর্থক আমার উপাসনা করে৷ কারণ এরা মানুষের তৈরী রীতি-নীতি ঈশ্বরের আদেশ বলে লোকদের শিক্ষা দেয়৷’যিশাইয় 29:13 8 তোমরা ঈশ্বরের আদেশ অমান্য করে মানুষের প্রচলিত প্রথা পালন করে থাকো৷’ 9 যীশু তাদের আরো বললেন, ‘তোমরা নিজেদের ঐতিহ্য় বজায় রাখার জন্য খুব বুদ্ধি খাটিয়ে ঈশ্বরের আদেশ অমান্য করছ৷ 10 মোশি বলেছেন, ‘তুমি নিজের বাবা, মাকে সম্মান করো,’আর ‘য়ে লোকটি বাবা কিংবা মায়ের নিন্দা করবে তার মৃত্যুদণ্ড হবে৷’ 11 কিন্তু তোমরা বল লোকটি যদি তার বাবা-মাকে বলে, ‘আমি যা কিছু দিয়ে তোমাদের উপকার করতে পারতাম, তা ঈশ্বরকে উত্সর্গ করেছি,’ 12 তখন এমন লোককে তোমরা বাবা বা মায়ের জন্য কিছুই করতে দাও না৷ 13 ঈশ্বরের বাক্য তোমাদের বংশানুক্রমে পালন করা ঐতিহ্য দ্বারা তোমরা নিষ্ফল কর৷ 14 তিনি সমস্ত লোককে আবার তাঁর কাছে ডেকে বললেন, ‘তোমরা সকলে আমার কথা শোন এবং বোঝ৷ 15 মানুষের বাইরে এমন কিছু নেই যা ভেতরে গিয়ে তাকে কলুষিত করতে পারে কিন্তু যা যা মানুষের ভেতর থেকে বের হয় সেটাই মানুষকে কলুষিত করে৷’ 16 17 পরে তিনি লোকদের ছেড়ে বাড়িতে ঢুকলে, তাঁর শিষ্যরা তাঁকে সেই দৃষ্টান্তটির অর্থ জিজ্ঞাসা করলেন৷ 18 তিনি তাঁদের বললেন, ‘তোমরাও কি অবোধ? তোমরা কি বোঝ না, বাইরে থেকে যা কিছু মানুষের ভেতরে যায় তা তাকে কলুষিত করতে পারে না? 19 কারণ এটা তার অন্তরে য়েতে পারে না, পাকস্থলীতে যায় এবং তারপর দেহের বাইরে গিয়ে পড়ে৷’ এই কথার মাধ্যমে তিনি সমস্ত খাবারকেই শুদ্ধ বললেন৷ 20 তিনি আরও বললেন, ‘মানুষের অন্তর থেকে যা বার হয়, সেটাই মানুষকে কলুষিত করে৷ 21 কারণ মানুষের ভেতর অর্থাত্ মন থেকে বার হয় কুত্সিত চিন্তা, লালসা, চুরি, খুন, 22 য়ৌন পাপ, লোভ, দুষ্টামি, প্রতারণা, অশ্লীলতা, ঈর্ষা, নিন্দা, অভিমান ও অহঙ্কার৷ 23 এই সমস্ত খারাপ বিষয় মানুষের ভেতর থেকে বার হয় ও মানুষকে কলুষিত করে৷’ 24 পরে তিনি সেই স্থান ছেড়ে সোর অঞ্চলে গিয়ে সেখানে একটা বাড়িতে ঢুকলেন, আর তিনি য়ে সেখানে এসেছেন সেটা গোপন রাখতে চাইলেন: কিন্তু পারলেন না৷ 25 যীশুর আসার কথা শুনে একটি স্ত্রীলোক, যার মেয়ের ওপর অশুচি আত্মা ভর করেছিল, সে সঙ্গে সঙ্গে এসে যীশুর পায়ে লুটিয়ে পড়ল৷ 26 স্ত্রীলোকটি ছিল জাতিতে গ্রীক, সুরফৈনীকী৷ সে মিনতি করে যীশুকে বলল য়েন তিনি তার মেয়ের ভেতর থেকে ভূতকে তাড়িয়ে দেন৷ 27 তিনি স্ত্রীলোকটিকে বললেন, ‘প্রথমে ছেলেমেয়েরা তৃপ্ত হোক, কারণ ছেলেমেয়েদের খাবার নিয়ে কুকুরকে খাওযানো ঠিক নয়৷’ 28 তখন সেই স্ত্রীলোকটি বলল, ‘প্রভু এটা সত্য; কিন্তু কুকুররাও তো খাবার টেবিলের নীচে ছেলেমেয়েদের ফেলে দেওযা খাবারের টুকরোগুলো খেতে পায়৷’ 29 তখন তিনি তাকে বললেন, ‘তুমি ভালোই বলেছ, বাড়ি যাও, গিয়ে দেখ ভূত তোমার মেয়েকে ছেড়ে চলে গেছে৷ 30 তখন সে বাড়ি গিয়ে দেখতে পেল, মেয়েটি বিছানায় শুয়ে আছে এবং ভূত তার মধ্য থেকে বেরিয়ে গেছে৷ 31 পরে তিনি সোর থেকে সীদোন হয়ে দিকাপলি অঞ্চলের ভেতর দিয়ে গালীলহ্রদের কাছে ফিরে এলেন৷ 32 তখন কিছু লোক একটা বোবা কালাকে তাঁর কাছে এনে তাঁকে তার ওপর হাত রাখতে মিনতি করল৷ 33 তিনি তাঁকে ভীড়ের মধ্যে থেকে এক পাশে এনে তার দুই কানে নিজের আঙ্গুল দিলেন৷ তারপর থুথু ফেলে তার জিভ ছুঁলেন৷ 34 আর স্বর্গের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বললেন, ‘ইপফাথা!’ যার অর্থ ‘খুলে যাক!’ 35 সঙ্গে সঙ্গে লোকটি কানে শুনতে পেল, তার জিভের জড়তা কেটে গেল আর সে ভালভাবেই কথা বলতে লাগল৷ 36 পরে তিনি তাদের একথা আর কাউকে বলতে নিষেধ করলেন; কিন্তু তিনি যতই বারণ করলেন ততই তারা আরো বেশী করে বলতে লাগল৷ 37 যীশুর এই কাজ দেখে তারা অত্যন্ত আশ্চর্য হয়ে গিয়ে বলল, ‘তিনি যা কিছু করেন তা অপূর্ব৷ তিনি কালাকে শোনার শক্তি, বোবাকে কথা বলার শক্তি দেন৷’
Mark 8:1 সেই দিনগুলিতে আবার একবার অনেক লোকের ভীড় হল৷ তাদের কাছে খাবার ছিল না, তাই তিনি তাঁর শিষ্যদের ডেকে বললেন, 2 ‘এই লোকদের জন্য আমার মমতা হচ্ছে, কারণ এরা আজ তিনদিন ধরে আমার কাছে রয়েছে, এদের কাছে কিছু খাবার নেই৷ 3 যদি আমি এদের ক্ষুধার্ত ও অভুক্ত অবস্থায় বাড়ি পাঠাই, তবে এরা রাস্তায় অজ্ঞান হয়ে পড়বে৷ এদের মধ্যে কেউ কেউ আবার বহু দূর থেকে এসেছে৷’ 4 তাঁর শিষ্যেরা এর উত্তরে বললেন, ‘এই জনমানবহীন জায়গায় আমরা কোথা থেকে এতগুলো লোকের খাবার জোগাড় করব?’ 5 তিনি তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তোমাদের কখানা রুটি আছে?’ তারা বলল, ‘সাতখানা৷’ 6 তখন তিনি লোকেদের মাটিতে বসতে আদেশ দিলেন৷ পরে সেই সাতটা রুটি তুলে নিয়ে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিয়ে রুটি গুলোকে টুকরো টুকরো করে পরিবেশনের জন্য শিষ্যদের হাতে তুলে দিলেন৷ তাঁরাও লোকদের মধ্যে পরিবেশন করলেন৷ 7 তাদের কাছে কতগুলো ছোট মাছ ছিল; তিনি সেগুলোর জন্যও ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিয়ে শিষ্যদের বললেন, ‘এগুলো পরিবেশন করে দাও৷’ 8 লোকরা খেয়ে তৃপ্তি পেল৷ অবশিষ্ট টুকরো দিয়ে তারা সাতটি ঝুড়ি ভর্তি করল৷ 9 সেদিন প্রায় চার হাজার লোক খেয়েছিল৷ এরপর তিনি তাদের বাড়ি পাঠিয়ে দিলেন; 10 আর সঙ্গে সঙ্গে তিনি শিষ্যদের নিয়ে নৌকা করে দল্মনুথা অঞ্চলে চলে এলেন৷ 11 পরে সেখানে ফরীশীরা এসে যীশুর সঙ্গে তর্ক জুড়ে দিল৷ তাঁর কাছে আকাশ থেকে কোন অলৌকিক চিহ্ন দেখতে চাইল৷ তাদের উদ্দেশ্য ছিল তাঁকে পরীক্ষা করা৷ 12 তখন তিনি দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে বললেন, ‘এই যুগের লোকরা কেন অলৌকিক চিহ্ন দেখতে চায়? আমি তোমাদের সত্যি বলছি কোন অলৌকিক চিহ্ন এই লোকদের দেখানো হবে না৷’ 13 তখন তিনি তাদের ছেড়ে নৌকা করেহ্রদের অপর পারে গেলেন৷ 14 কিন্তু শিষ্যেরা রুটি আনতে ভুলে গিয়েছিলেন: নৌকায় তাদের কাছে কেবল একখানা রুটি ছাড়া আর কোন রুটি ছিল না৷ 15 তখন তিনি তাদের সতর্ক করে দিয়ে বললেন, ‘সাবধান! তোমরা হেরোদ এবং ফরীশীদের খামিরের বিষয়ে সাবধান থেকো!’ 16 তখন তাঁরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে লাগলেন, ‘আমাদের কাছে কোন রুটি নেই৷’ 17 তাঁরা যা বলছেন, তা বুঝতে পেরে যীশু বললেন, ‘তোমাদের রুটি নেই বলে কেন আলোচনা করছ? তোমরা এখনও কি দেখ না বা বোঝ না, তোমাদের মন কি এতই কঠিন? 18 চোখ থাকতে কি তোমরা দেখতে পাও না? কান থাকতে কি শুনতে পাও না? আর তোমাদের কি মনেও পড়ে না? 19 যখন আমি পাঁচ হাজার লোকের মধ্যে পাঁচটি রুটি টুকরো করে দিয়েছিলাম: তখন তোমরা কত টুকরি উদ্বৃত্ত রুটির টুকরো কুড়িয়ে নিয়েছিলে?’ তাঁরা বললেন, ‘বারো টুকরি৷’ 20 যীশু আবার বললেন, ‘আমি যখন সাতটা রুটি চার হাজার লোকের মধ্যে টুকরো করে দিয়েছিলাম তখন কত টুকরি উদ্বৃত্ত রুটির টুকরো তোমরা তুলে নিয়েছিলে?’ তাঁরা বললেন, ‘সাত টুকরি৷’ 21 তখন তিনি তাঁদের বললেন, ‘তোমরা কি এখনও বুঝতে পারছ না?’ 22 তারপর তাঁরা বৈত্সৈদায় এলেন: আর লোকরা তাঁর কাছে একটা অন্ধ লোককে নিয়ে এসে মিনতি করল যাতে তিনি তাকে স্পর্শ করেন৷ 23 তখন তিনি অন্ধ লোকটির হাত ধরে তাকে গ্রামের বাইরে নিয়ে গেলেন৷ তিনি লোকটির চোখে খানিকটা থুথু লাগিয়ে তার ওপরে হাত রেখে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি কি কিছু দেখতে পাচ্ছ?’ 24 সে চোখ তুলে চেয়ে বলল, ‘আমি মানুষ দেখতে পাচ্ছি; গাছের মত দেখতে, তারা ঘুরে বেড়াচ্ছে৷’ 25 তখন তিনি আবার তার চোখের ওপর হাত রাখলেন৷ এইবার লোকটি চোখ বড় বড় করে তাকাল৷ তার দৃষ্টিশক্তি সম্পূর্ণভাবে ফিরে পেল এবং সবকিছু স্পষ্টভাবে দেখতে পেল৷ 26 তারপর তিনি তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়ে বললেন, ‘এই গ্রামে য়েও না৷’ 27 তারপর যীশু এবং তাঁর শিষ্যরা সেখান থেকে কৈসরিযা ফিলিপীয় অঞ্চলে চলে গেলেন৷ রাস্তার মধ্যে তিনি তাঁর শিষ্যদের জিজ্ঞাসা করলেন, ‘আমি কে, এ বিষয়ে লোকের কি বলে?’ 28 তাঁরা বললেন, ‘অনেকে বলে আপনি, ‘বাপ্তিস্মদাতা য়োহন৷ কেউ কেউ বলে, আপনি এলীয়৷ আবার কেউ কেউ বলে, আপনি ভাববাদীদের মধ্যে একজন৷’ 29 তখন তিনি তাঁদের জিজ্ঞাসা করলেন, ‘কিন্তু তোমরা কি বল, আমি কে?’ পিতর তাঁকে বললেন, ‘আপনি সেই খ্রীষ্ট৷’ 30 তখন তিনি তাঁদের সাবধান করে দিয়ে বললেন, ‘তোমরা এ কথা কাউকে বলো না৷’ 31 এরপর তিনি তাঁদের এই শিক্ষা দিতে শুরু করলেন য়ে, মানবপুত্রকে অনেক দুঃখ ভোগ করতে হবে এবং বয়স্ক ইহুদী নেতারা, প্রধান যাজক ও ব্যবস্থার শিক্ষকরা তাঁকে প্রত্যাখ্যান করবে, হত্যা করবে এবং মৃত্যুর তিনদিন পর তিনি আবার বেঁচে উঠবেন৷ 32 এই কথা তিনি তাঁদের স্পষ্টভাবে বললেন, তাতে পিতর তাঁকে একপাশে নিয়ে গিয়ে অনুয়োগ করতে লাগলেন৷ 33 কিন্তু যীশু তাঁর শিষ্যদের দিকে মুখ ফিরিয়ে পিতরকে ধমক দিয়ে বললেন, ‘আমার সামনে থেকে দূর হও, শয়তান! কারণ তুমি ঈশ্বরের ইচ্ছার সমাদর করছ না; তুমি মানুষের মতোই ভেবে এই কথা বলছ৷’ 34 এরপর তিনি শিষ্যদেব সঙ্গে অন্যান্য লোকদেরও নিজের কাছে ডেকে বললেন, ‘কেউ যদি আমার সঙ্গে আসতে চায়., সে নিজেকে অস্বীকার করুক এবং তার নিজের ক্রুশ তুলে নিয়ে আমার অনুসারী হোক৷ 35 কারণ কেউ যদি নিজের প্রাণ রক্ষা করতে চায় তবে সে তা হারাবে; কিন্তু কেউ যদি আমার এবং সুসমাচারের জন্য নিজের প্রাণ হারায় তবে তার জীবন চিরস্থায়ী হবে৷ 36 মানুষ যদি নিজের জীবন হারিয়ে সমস্ত জগত্ লাভ করে তবে তার কি লাভ? 37 কিংবা মানুষ তার প্রাণের বিনিময়ে কি দিতে পারে? 38 য়ে কেউ এই ব্যভিচারী ও পাপীদের যুগে আমাকে এবং আমার শিক্ষাকে লজ্জার বিষয় মনে করে, মানবপুত্র যখন তাঁর পিতার মহিমায় মহিমান্বিত হয়ে পবিত্র স্বর্গদূতদের সঙ্গে ফিরে আসবেন, তখন তিনিও সেই লোকের বিষয়ে লজ্জাবোধ করবেন৷
Mark 9:1 তিনি তাঁর শিষ্যদের বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি যাঁরা এখানে দাঁড়িয়ে আছে, তদের মধ্যে কয়েকজন আছে, যাঁরা কোনমতেই মৃত্যু দেখবে না; যতক্ষণ পর্যন্ত ঈশ্বরের রাজ্য মহাপরাক্রমের সঙ্গে আসতে না দেখে৷’ 2 ছদিন বাদে যীশু পিতর, যাকোব এবং য়োহনকে সঙ্গে করে এক উঁচু পাহাড়ে উঠে গেলেন৷ তাঁদের সামনে তাঁর রূপ পরিবর্তিত হয়ে গেল৷ 3 তাঁর পোশাক এত উজ্জ্বল ও শুভ্র হল য়ে পৃথিবীর কোন রজক সেই রকম সাদা করতে পারে না৷ 4 তখন মোশি এবং এলীয় তাঁদের সামনে এসে যীশুর সাথে কথা বলতে শুরু করলেন৷ 5 তখন পিতর যীশুকে বললেন, ‘গুরুদেব, এখানে আমাদের থাকা ভাল৷ আমরা তিনটি তাঁবু তৈরী করি৷ একটা আপনার জন্য, একটা মোশির জন্য এবং একটা এলীয়র জন্য৷’ 6 কারণ কি বলতে হবে তা তিনি জানতেন না, তাঁরা অত্যন্ত ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন৷ 7 পরে একখানা মেঘ এসে তাঁদের ছাযা দিয়ে ঢেকে ফেলল; আর সেই মেঘ থেকে এই রব শোনা গেল, ‘ইনি আমার প্রিয় পুত্র৷ তোমরা তাঁর কথা শোন৷’ 8 শিষ্যেরা তখনই চারদিকে তাকালেন; কিন্তু যীশু ছাড়া আর কাউকে সেখানে দেখতে পেলেন না৷ 9 পাহাড় থেকে নামার সময় তিনি তাঁর শিষ্যদের বললেন, ‘তোমরা যা যা দেখলে তা কাউকে বলো না যতক্ষণ না মৃত্যু থেকে মানবপুত্র বেঁচে উঠছেন৷’ 10 তারা সেই ঘটনার কথা নিজেদের মধ্যেই চেপে রাখলেন; কিন্তু ভাবতে লাগলেন, মৃত্যু থেকে বেঁচে ওঠা কথাটির অর্থ কি হতে পারে৷ 11 পরে শিষ্যরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘কেন ব্যবস্থার শিক্ষকরা বলেন য়ে প্রথমে এলীয়কে আসতে হবে?’ 12 তিনি তাদের বললেন, ‘হ্যাঁ, এলীয় প্রথমে এসে সব কিছু পুনঃস্থাপন করবেন বটে, কিন্তু মানবপুত্রের বিষয়ে কেন এসব লেখা হয়েছে য়ে তাঁকে অনেক দুঃখ পেতে হবে আর লোকে তাঁকে প্রত্যাখ্যান করবে? 13 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, এলীয়ের বিষয়ে য়েমন লেখা আছে, সেই অনুসারে তিনি এসে গেছেন এবং লোকরা তাঁর প্রতি যা ইচ্ছে তাই করেছে৷’ 14 পরে তাঁরা অন্য শিষ্যদের কাছে এসে দেখলেন তাঁদের চারদিকে অনেক লোক আর ব্যবস্থার শিক্ষকরা তাদের সাথে তর্ক করছেন৷ 15 তাঁকে দেখামাত্র সমস্ত লোক অবাক হল এবং তাঁর কাছে দৌড়ে গিয়ে তাঁকে প্রণাম জানাতে লাগল৷ 16 তিনি তাঁদের জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তোমরা এদের সঙ্গে কি নিয়ে তর্ক করছ?’ 17 তাতে লোকেদের মধ্যে থেকে একজন বলে উঠল, ‘হে গুরু, আমার ছেলেটিকে আপনার কাছে এনেছিলাম৷ তাকে এক বোবা আত্মায় পেয়েছে, সে কথা বলতে পারে না৷ 18 সেই আত্মা তাকে য়েখানে ধরে, সেইখানে আছাড় মারে; আর তার মুখে ফেনা ওঠে, সে দাঁত কিড়মিড় করে আর শক্ত হয়ে যায়৷ আমি আপনার শিষ্যদের এই আত্মাটাকে ছাড়াতে বললাম, কিন্তু তাঁরা পারলেন না৷’ 19 তখন যীশু তাঁদের বললেন, ‘হে অবিশ্বাসী বংশ, আমাকে আর কতকাল তোমাদের সঙ্গে থাকতে হবে? তোমাদের নিয়ে আর আমি কত ধৈর্য্য ধরব? তাকে আমার কাছে নিয়ে এস৷’ 20 তারা তাকে তাঁর কাছে নিয়ে এল৷ যীশুকে দেখামাত্র সেই আত্মা ছেলেটিকে মুচড়ে ধরল; আর সে মাটিতে পড়ে গড়াগড়ি দিতে লাগল, তার মুখ দিয়ে ফেনা বের হচ্ছিল৷ 21 তখন যীশু তার বাবাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘এর কতদিন এমন হয়েছে?’ছেলেটির বাবা বলল, ‘ছেলেবেলা থেকে এরকম হয়েছে৷ 22 এই আত্মা একে মেরে ফেলার জন্য অনেকবার আগুনে ও জলে ফেলে দিয়েছে৷ আপনি যদি কিছু করতে পারেন, তবে দযা করে আমাদের উপকার করুন৷’ 23 যীশু তাকে বললেন, ‘কি বললে, ‘যদি পারেন! য়ে বিশ্বাস করে তার পক্ষে সবই সন্ভব৷’ 24 সঙ্গে সঙ্গে ছেলেটির বাবা চিত্কার করে কেঁদে বলল, ‘আমি বিশ্বাস করি! আমার অবিশ্বাসের প্রতিকার করুন!’ 25 অনেক লোক সেদিকে আসছে দেখে যীশু সেই অশুচি আত্মাকে ধমকে বললেন, ‘হে বোবা কালার আত্মা, আমি তোমাকে বলছি, এর মধ্যে আর কখনও ঢুকবে না!’ 26 তখন সেই আত্মা চেঁচিয়ে তাকে ভয়ঙ্করভাবে মুচড়ে দিয়ে বাইরে বেরিয়ে গেল৷ তাতে ছেলেটি মড়ার মত হয়ে পড়ল, এমন কি অধিকাংশ লোক বলল, ‘সে মরে গেছে৷’ 27 কিন্তু যীশু তার হাত ধরে তুললে সে উঠে দাঁড়াল৷ 28 পরে যীশু বাড়ি ফিরে এলে শিষ্যরা তাঁকে একান্তে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আমরা কেন ঐ অশুচি আত্মাকে তাড়াতে পারলাম না?’ 29 যীশু তাঁদের বললেন, ‘প্রার্থনা ছাড়া আর কোন কিছুতেই এ আত্মাকে তাড়ানো যায় না৷’ 30 পরে সেই স্থান ছেড়ে তাঁরা গালীলের মধ্য দিয়ে চললেন; আর তিনি চাইলেন না য়ে তাঁরা কোথায় আছে সেকথা অন্য কেউ জানুক৷ 31 কারণ তখন তিনি তাঁর শিষ্যদের শিক্ষা দিচ্ছিলেন৷ তিনি তাঁদের বললেন, ‘মানবপুত্রকে লোকদের হাতে তুলে দেওযা হবে, এবং তারা তাঁকে হত্যা করবে আর মৃত্যুর তিনদিন পরে তিনি বেঁচে উঠবেন৷’ 32 কিন্তু তাঁরা সেই কথা বুঝলেন না এবং এই বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞেস করতেও ভয় পেলেন৷ 33 এরপর তাঁরা কফরনাহূমে ফিরে এলেন আর বাড়ির ভেতরে গিয়ে তিনি শিষ্যদের জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমরা রাস্তায় কি আলোচনা করছিলে?’ 34 কিন্তু তাঁরা চুপচাপ থাকলেন কারণ তাঁদের মধ্যে কে সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ এই নিয়ে তর্ক চলছিল৷ 35 তখন যীশু বসে সেই বারোজন প্রেরিতদের ডেকে বললেন, ‘কেউ যদি প্রথম হতে চায়, তবে সে সকলের শেষে থাকবে এবং সকলের পরিচারক হবে৷’ 36 পরে যীশু একটা শিশুকে নিয়ে তাঁদের মধ্যে দাঁড় করিয়ে দিলেন এবং তাকে কোলে করে তাঁদের বললেন, 37 ‘য়ে কেউ আমার নামে এর মতো কোন শিশুকে গ্রহণ করে, সে আমাকেই গ্রহণ করে৷ আর কেউ যদি আমাকে গ্রহণ করে, সে আমাকে নয়, কিন্তু যিনি (ঈশ্বর) আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁকেই গ্রহণ করে৷’ 38 য়োহন তাঁকে বললেন, ‘গুরু, আমরা একটি লোককে আপনার নামে ভুত তাড়াতে দেখে তাকে বারণ করেছিলাম, কারণ সে আমাদের লোক নয়৷’ 39 কিন্তু যীশু বললেন, ‘তাকে বারণ করো না, কারণ এমন কেউ নেই য়ে আমার নামে অলৌকিক কাজ করে সহজে আমার নিন্দা করতে পরে৷ 40 য়ে কেউই আমাদের বিপক্ষে নয় সে আমাদের সপক্ষে৷ 41 কেউ যদি খ্রীষ্টের লোক বলে তোমাদেরকে এক ঘটি জল দেয়, আমি তোমাদের সত্যি বলছি, সে কোন মতেই নিজের পুরস্কার থেকে বঞ্চিত হবে না৷ 42 ‘আর এই য়ে সাধারণ লোক যাঁরা আমায় বিশ্বাস করে, যদি কেউ তাদের একজনকে পাপের পথে নিয়ে যায়, তবে সেই লোকের গলায় একটা বড় যাতাঁর পাট বেঁধে তাকে সমুদ্রে ফেলে দেওযাই তার পক্ষে ভাল৷ 43 তোমার হাত যদি তোমার পাপের কারণ হয়, তবে তাকে কেটে ফেল, কারণ দুই হাত নিয়ে নরকের অনন্ত আগুনে পোড়ার থেকে বরং নুলো হয়ে জীবনে প্রবেশ করা ভাল৷ 44 45 তোমার পা যদি তোমার পাপের কারণ হয় তবে তাকে কেটে ফেল, কারণ দুই পা নিয়ে নরকে যাওযার থেকে বরং খোঁড়া হয়ে জীবনে প্রবেশ করা ভাল৷ 46 47 আর যদি তোমার চোখ তোমার পাপের কারণ হয়, তবে সে চোখকে উপড়ে ফেল৷ দুচোখ নিয়ে নরকে যাওযার থেকে এক চোখ নিয়ে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করা তোমার পক্ষে ভাল৷ 48 নরকে য়ে কীট মানুষকে খায় তারা কখনও মরে না এবং আগুন কখনও নেভে না৷ 49 লবণ দেওযার মত প্রত্যেকের ওপর আগুন দেওযা হবে৷ 50 ‘লবণ ভাল, কিন্তু লবণ যদি লবণত্ব হারায়, তবে কেমন করে তাকে তোমরা আস্বাদযুক্ত করবে? তোমরা নিজের নিজের মনে লবণ রাখ এবং পরস্পর শান্তিতে থাক৷’
Mark 10:1 এরপর যীশু সেই স্থান ছেড়ে যর্দন নদীর অন্য পাড়ে যিহূদিযার অঞ্চলে এলেন৷ আবার লোকরা তাঁর কাছে এল এবং তিনি তাঁর রীতি অনুসারে তাঁদের শিক্ষা দিলেন৷ 2 তখন কয়েকজন ফরীশী তাঁর কাছে এসে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘একটি লোকের পক্ষে তার স্ত্রীকে ত্যাগ করা কি আইনত ঠিক?’ তাঁরা তাঁকে পরীক্ষা করার জন্যই এই কথা জিজ্ঞাসা করলেন৷ 3 যীশু তাদের প্রশ্নের উত্তরে বললেন ‘এই ব্যাপারে মোশি তোমাদের কি নির্দেশ দিয়েছেন?’ 4 তারা বললেন, ‘বিবাহ বিচ্ছেদ পত্র লিখে নিজের স্ত্রীকে পরিত্যাগ করবার অনুমতি মোশি দিয়েছেন৷’ 5 যীশু তাঁদের বললেন, ‘তোমাদের কঠিন মনের জন্য তিনি আজ্ঞা লিখেছিলেন৷ 6 কিন্তু সৃষ্টির প্রথম থেকেই ‘ঈশ্বর স্ত্রী পুরুষ হিসাবে তাদের তৈরী করেছেন৷’ 7 ‘সেইজন্যই মানুষ তার বাবা-মাকে ত্যাগ করে স্ত্রীর প্রতি আসক্ত হয়, 8 আর ঐ দুজন একদেহে পরিণত হয়৷’তখন তারা আর দুজন নয়, তারা এক৷ 9 অতএব ঈশ্বর যাদের য়োগ করে দিয়েছেন, মানুষ তাদের বিচ্ছিন্ন না করুক৷’ 10 তারা বাড়িতে এলে শিষ্যেরা তাঁকে সেই বিষয় জিজ্ঞাসা করলেন৷ 11 যীশু তাদের বললেন, ‘কেউ যদি নিজের স্ত্রীকে ত্যাগ করে অন্য কাউকে বিয়ে করে তবে সে তার বিরুদ্ধে ব্যভিচার করে৷ 12 যদি সেই স্ত্রীলোকটি নিজের স্বামীকে ত্যাগ করে আর একজনকে বিয়ে করে সেও ব্যভিচার করে৷’ 13 পরে লোকরা ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের তাঁর কাছে নিয়ে এল, য়েন তিনি তাদের স্পর্শ করেন: কিন্তু শিষ্যরা তাদের ধমক দিলেন৷ 14 যীশু তা দেখে ক্রুদ্ধ হলেন এবং তাদের বললেন, ‘ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের আমার কাছে আসতে দাও৷ তাদের বারণ করো না, কারণ এদের মত লোকদের জন্যই তো ঈশ্বরের রাজ্য৷ 15 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, কেউ যদি ছোট ছেলেমেয়েদের মন নিয়ে ঈশ্বরের রাজ্য গ্রহণ না করে, তবে সে কোনমতেই সেখানে প্রবেশ করতে পারবে না৷’ 16 এরপর তিনি তাদের কোলে নিলেন এবং তাদের ওপর হাত রেখে আশীর্বাদ করলেন৷ 17 পরে তিনি বেরিয়ে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছেন, এমন সময় একজন লোক দৌড়ে এসে, তাঁর সামনে হাঁটু গেড়ে জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে সত্ গুরু, অনন্ত জীবন লাভের জন্য আমি কি করব?’ 18 তখন যীশু তাকে বললেন, ‘তুমি কেন আমাকে সত্ বলছ? ঈশ্বর ছাড়া আর কেউই সত্ নয়৷ 19 তুমি তো ঈশ্বরের সব আদেশ জানো, ‘নরহত্যা কোরো না, ব্যভিচার কোরো না, চুরি কোরো না, বাবা-মাকে সম্মান কোরো৷” 20 লোকটি তাঁকে বলল, ‘হে গুরু, ছোটবেলা থেকে এগুলো আমি পালন করে আসছি৷’ 21 যীশু লোকটির দিকে সস্নেহে তাকালেন এবং বললেন, ‘একটা বিষয়ে তোমার ত্রুটি আছে৷ যাও তোমার যা কিছু আছে বিক্রি কর; আর সেই অর্থ গরীবদের মধ্যে বিলিয়ে দাও, তাতে তুমি স্বর্গে ধন পাবে৷ তারপর এসে আমাকে অনুসরণ কর৷’ 22 এই কথায় সে মর্মাহত ও দুঃখিত হল এবং ম্লান মুখে চলে গেল, কারণ তার অনেক সম্পত্তি ছিল৷ 23 তখন যীশু চারদিকে তাকিয়ে শিষ্যদের বললেন, ‘যাদের ধন আছে তাদের পক্ষে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করা খুবই দুষ্কর!’ 24 শিষ্যেরা তাঁর কথা শুনে অবাক হলেন৷ যীশু আবার তাঁদের বললেন, ‘শোন, ঈশ্বরের রাজ্যে যাওযা সত্যিই কষ্টকর৷ 25 একজন ধনী লোকের ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করার চেয়ে বরং সূচের ছিদ্র দিয়ে উটের যাওযা সহজ৷’ 26 তখন তারা আরও আশ্চর্য হয়ে নিজেদের মধ্যে বলাবলি করলেন, ‘তবে কারা উদ্ধার পেতে পারে?’ 27 তখন যীশু তাদের দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘এটা মানুষের পক্ষে অসন্ভব; কিন্তু ঈশ্বরের পক্ষে নয়, কারণ সমস্ত কিছুই ঈশ্বরের পক্ষে সন্ভব৷’ 28 তখন পিতর তাঁকে বলতে লাগলেন, ‘দেখুন! আমরা সবকিছু ত্যাগ করে আপনার অনুসারী হয়েছি৷’ 29 যীশু বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছিয়ে কেউ আমার জন্য বা আমার সুসমাচার প্রচারের জন্য বাড়িঘর, ভাইবোন, মা-বাবা, ছেলেমেয়ে জমিজমা ছেড়ে এসেছে, 30 তার বদলে সে এই জগতে তার শতগুণ ফিরে পাবে৷ তাকে তাড়না ভোগ করতে হলেও এই জগতে শতগুণ বাড়িঘর, ভাইবোন, মা, ছেলেমেয়ে এবং জমিজমা পাবে, আর পরবর্তী যুগে পাবে অনন্ত জীবন৷ 31 কিন্তু আজ যাঁরা প্রথম, এমন অনেক লোক শেষে পড়বে এবং যাঁরা আজ শেষের তাদের মধ্যে অনেকেপ্রথম হবে৷ 32 একদিন তাঁরা রাস্তা দিয়ে জেরুশালেমের দিকে যাচ্ছেন এবং যীশু তাঁদের আগে আগে চলেছেন৷ শিষ্যেরা আশ্চর্য হচ্ছিলেন আর তাঁর সঙ্গে যাঁরা চলছিল, সেই লোকেরা ভীত হল৷ তখন তিনি আবার সেই বারোজন প্রেরিতকে নিয়ে নিজের প্রতি যা যা ঘটবে তা তাদের বলতে লাগলেন৷ 33 শোন, ‘আমরা জেরুশালেমে যাচ্ছি আর প্রধান যাজক এবং ব্যবস্থার শিক্ষকের হাতে মানবপুত্রকে সঁপে দেওযা হবে তারা তাকে মৃত্যুদণ্ড দেবে এবং অইহুদীদের হাতে তুলে দেবে৷ 34 তারা বিদ্রূপ করবে, তাঁর মুখে থুথু দেবে, তাঁকে চাবুক মারবে এবং হত্যা করবে, আর তিন দিন পরে তিনি আবার বেঁচে উঠবেন৷’ 35 পরে সিবদিয়ের ছেলে যাকোব এবং য়োহন তাঁর কাছে এসে বললেন, ‘হে গুরু, আমাদের ইচ্ছা এই, আমরা আপনার কাছে যা চাইব, আপনি আমাদের জন্য তা করবেন৷’ 36 যীশু তখন তাঁদের বললেন, ‘তোমাদের ইচ্ছা কি, তোমাদের জন্য আমি কি করব?’ 37 তাঁরা তাঁকে বললেন, ‘আমাদের এই বর দান করুন যাতে আপনি মহিমান্বিত হলে আমরা একজন আপনার ডানদিকে আর একজন বাঁ দিকে বসতে পাই৷’ 38 যীশু তাঁদের বললেন, ‘তোমরা জান না তোমরা কি চাইছ? আমি য়ে পেযালায় পান করি, তাতে তোমরা কি চুমুক দিতে পারবে বা আমি য়ে বাপ্তিস্মে বাপ্তাইজ হই তাতে কি তোমরা বাপ্তাইজ হতে পারবে?’ 39 তাঁরা তাঁকে বললেন, ‘আমরা পারব!’ তখন যীশু তাদের বললেন, ‘আমি য়ে পেযালায় পান করি তাতে তোমরা অবশ্যই চুমুক দেবে এবং আমি য়ে বাপ্তিস্মে বাপ্তাইজ হই তাতে তোমরাও বাপ্তাইজ হবে৷ 40 কিন্তু আমার ডান দিকে বা বাঁদিকে বসতে দেবার অধিকার আমার নেই৷ কারা সেখানে বসবে তা আগেই স্থির হয়ে গেছে৷’ 41 এই কথা শুনে অন্য দশ জন য়োহন ও যাকোবের প্রতি অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হলেন৷ 42 কিন্তু যীশু তাঁদের ডেকে বললেন, ‘তোমরা জান জগতের মধ্যে যাঁরা শাসনকর্তা বলে গন্য, তারা তাদের উপর প্রভুত্ব করে এবং তাদের মধ্যে যাঁরা প্রধান, তারা তাদের উপর কর্ত্তৃত্ব করে৷ 43 তোমাদের ক্ষেত্রে সেইরকম হবে না৷ তোমাদের মধ্যে কেউ যদি প্রধান হতে চায়, তবে সে তোমাদের ক্রীতদাস হবে, 44 এবং তোমাদের মধ্যে কেউ যদি প্রধান হতে চায়, সে সকলের দাস হবে৷ 45 কারণ বাস্তবে মানবপুত্রও সেবা পেতে আসেন নি, তিনি অন্য়ের সেবা করতেই এসেছেন এবং অনেক মানুষের মুক্তিপণ হিসাবে নিজের জীবন দিতে এসেছেন৷’ 46 তারপর তাঁরা যিরীহোতে এলেন৷ তিনি যখন নিজের শিষ্যদের এবং বহুলোকের সাথে যিরীহো ছেড়ে যাচ্ছিলেন, সেই সময় পথের ধারে তীময়ের ছেলে বরতীময় নামে এক অন্ধ ভিখারী বসেছিল৷ 47 সে যখন শুনতে পেল য়ে উনি নাসরতীয় যীশু, তখন চেঁচিয়ে বলতে লাগল, ‘হে যীশু, দাযূদের পুত্র, আমার প্রতি দযা করুন৷’ 48 তখন বহুলোক ‘চুপ চুপ’ বলে তাকে ধমক দিল৷ কিন্তু সে আরও জোরে চেঁচিয়ে বলতে লাগল, ‘হে দাযূদের পুত্র, আমার প্রতি দযা করুন!’ 49 তখন যীশু সেখানে দাঁড়িয়ে পড়ে বললেন, ‘তাকে ডাকো৷’ তারা সেই অন্ধ লোকটিকে ডাকল এবং বলল, ‘ওহে সাহস কর, ওঠ, উনি তোমাকে ডাকছেন৷’ 50 তখন সে নিজের পায়ের চাদর ফেলে দিয়ে লাফ দিয়ে উঠে যীশুর কাছে এল৷ 51 যীশু তাকে বললেন, ‘তুমি কি চাও, আমি তোমার জন্য কি করব?’ অন্ধ লোকটি তাকে বলল, ‘হে গুরু, আমি য়েন দেখতে পাই৷’ 52 তখন যীশু তাকে বললেন, ‘যাও, তোমার বিশ্বাসই তোমায় সুস্থ করল৷’ সঙ্গে সঙ্গে সে দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেল এবং রাস্তা দিয়ে যীশুর পেছন পেছন চলতে লাগল৷
Mark 11:1 এরপর তাঁরা জেরুশালেমের কাছাকাছি পৌঁছে জৈতুন পর্বতমালায় বৈত্ফগী ও বৈথনিযা গ্রামে এলেন৷ সেখানে পৌঁছে তিনি তাঁর শিষ্যদের মধ্যে দুজনকে আগে পাঠিয়ে দিলেন৷ 2 তিনি তাঁদের বললেন, ‘তোমরা তোমাদের সামনের ঐ গ্রামে যাও, গ্রামে ঢুকেই দেখবে একটা বাচ্চা গাধা বাঁধা আছে, যাতে কেউ কখনও বসে নি৷ সেই গাধাটাকে খুলে আন৷ 3 যদি কেউ তোমাদের জিজ্ঞাসা করে, ‘কেন তুমি গাধাটি খুলছ? তখন তাকে বলবে, ‘এটা প্রভুর কাজে লাগবে আর সে তখনই সেটা পাঠিয়ে দেবে৷’ 4 তাঁরা সেখানে গেলেন এবং দেখলেন দরজার কাছে রাস্তার ওপর একটা গাধা বাঁধা আছে৷ তখন তাঁরা দড়িটাকে খুলতে লাগলেন, 5 আর কিছু লোক সেখানে দাঁড়িয়েছিল, তারা তাঁদের বলল, ‘তোমরা কি করছ, গাধার বাচ্চাটাকে খুলছ কেন?’ 6 তাতে যীশু য়েমন বলেছিলেন, তাঁরা সেইমতো উত্তর দিলেন, তখন লোকেরা আর কিছু বলল না, গাধার বাচ্চাটাকে নিয়ে য়েতে দিল৷ 7 তাঁরা গাধার বাচ্চাটাকে যীশুর কাছে নিয়ে এসে গাধাটির উপরে তাদের জামাকাপড় পেতে দিলেন এবং যীশু তার উপরে বসলেন৷ 8 তখন অনেকে তাদের জামাকাপড় রাস্তায় পেতে দিল আর অন্য়েরা মাঠ থেকে পাতা ঝরা গাছের ডালপালা কেটে এনে রাস্তার উপরে ছড়িয়ে দিল৷ 9 আর য়ে সমস্ত লোক আগে এবং পেছনে যাচ্ছিল তারা চেঁচিয়ে বলতে লাগল,‘হোশান্না!‘ধন্য তিনি, যিনি প্রভুর নামে আসছেন!’গীতসংহিতা 118:25-26 10 আমাদের পিতৃপুরুষ দাযূদের য়ে রাজ্য আসছে, তা ধন্য! হোশান্না! স্বর্গে ঈশ্বরের মহিমা হোক্৷’ 11 তিনি জেরুশালেমে ঢুকে মন্দিরে গেলেন৷ সেখানে চারদিকের সমস্ত কিছু লক্ষ্য করলেন; কিন্তু সন্ধ্যে হয়ে যাওযায় বারোজন প্রেরিতকে সঙ্গে নিয়ে তিনি বৈথনিযাতে ফিরে গেলেন৷ 12 পরের দিন বৈথনিযা ছেড়ে আসার সময় তাঁর খিদে পেল৷ 13 দূর থেকে তিনি একটি পাতায় ভরা ডুমুর গাছ দেখে তাতে কিছু ফল পাবেন ভেবে তার কাছে গেলেন, কিন্তু গাছটির কাছে গেলে পাতা ছাড়া আর কিছুই দেখতে পেলেন না; কারণ তখন ডুমুর ফলের মরশুম নয়৷ 14 তখন তিনি গাছটিকে বললেন, ‘এখন থেকে তোমার ফল আর কেউ কোন দিন খাবে না!’ এই কথা তাঁর শিষ্যেরা শুনতে পেলেন৷ 15 পরে তাঁরা জেরুশালেমে গেলেন; আর মন্দিরের মধ্যে ঢুকে যাঁরা কেনা বেচা করছিল সেইসব ব্যবসাযীদের বের করে দিলেন৷ তিনি পোদ্দারদের টেবিল এবং যাঁরা পায়রা বিক্রি করছিল তাদের আসন উল্টে দিলেন৷ 16 তিনি মন্দিরের মধ্যে দিয়ে কাউকে কোন জিনিস নিয়ে য়েতে দিলেন না৷ 17 তিনি শিক্ষা দিয়ে তাদের বললেন, ‘এটা কি লেখা নেই ‘আমার মন্দিরকে সমগ্র জাতির উপাসনা গৃহ বলা হবে?”কিন্তু তোমরা এটাকে দস্য়ুদের আস্তানায় পরিণত করেছ৷’ 18 প্রধান যাজকরা এবং ব্যবস্থার শিক্ষকরা এই কথা শুনে তাঁকে হত্যা করার রাস্তা খুঁজতে থাকল, কারণ তারা তাঁকে ভয় করত, য়েহেতু তাঁর শিক্ষায় সমগ্র লোক আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিল 19 সেই দিন সন্ধ্যে হলেই যীশু ও তাঁর শিষ্যরা মহানগরীর বাইরে গেলেন৷ 20 পরের দিন সকালে য়েতে য়েতে তাঁরা দেখলেন, সেই ডুমুর গাছটি মূল থেকে শুকিয়ে গেছে৷ 21 পিতর আগের দিনের কথা মনে করে তাঁকে বললেন, ‘হে গুরু, দেখুন, আপনি য়ে ডুমুর গাছটিকে অভিশাপ দিয়েছিলেন সেটি শুকিয়ে গেছে৷’ 22 তখন যীশু বললেন, ‘ঈশ্বরে বিশ্বাস রাখ! 23 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, কেউ যদি ঐ পাহাড়কে বলে, ‘উপরে যাও এবং সমুদ্রে গিয়ে পড়,’ আর তার মনে কোন সন্দেহ না থাকে এবং সে যদি বিশ্বাস করে য়ে সে যা বলছে তা হবে, তাহলে ঈশ্বর তার জন্য তাই করবেন৷ 24 এইজন্য আমি তোমাদের বলি, তোমরা যা কিছুর জন্য প্রার্থনা কর, যদি বিশ্বাস কর য়ে, তোমরা তা পেয়েছ, তাহলে তোমাদের জন্য তা হবেই৷ 25 আর তোমরা যখনই প্রার্থনা করতে দাঁড়াও, যদি কারোর বিরুদ্ধে তোমাদের কোন কথা থাকে, তাকে ক্ষমা কর, যাতে তোমাদের স্বর্গের পিতাও তোমাদের সমস্ত পাপ ক্ষমা করেন৷’ 26 27 পরে তাঁরা জেরুশালেমে ফিরে এলেন৷ আর যখন তিনি মন্দিরের মধ্যে দিয়ে হাঁটছেন, সেই সময় প্রধান যাজকরা, ব্যবস্থার শিক্ষকরা ও বয়স্ক ইহুদী নেতারা তাঁর কাছে এলেন৷ 28 তাঁরা তাকে বললেন, ‘কোন ক্ষমতায় তুমি এসব করছ? এসব করতে তোমাকে কেই বা এই ক্ষমতা দিয়েছে?’ 29 যীশু তাঁদের বললেন, ‘আমি তোমাদের একটা প্রশ্ন করছি, যদি তোমরা উত্তর দিতে পারো, তাহলে আমি তোমাদের বলব কোন ক্ষমতায় এসব করছি৷ 30 য়োহন য়ে বাপ্তাইজ করেছিলেন তা করার অধিকার তিনি স্বর্গ থেকে পেয়েছিলেন না মানুষের কাছ থেকে পেয়েছিলেন? আমাকে বলো৷’ 31 তখন তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে বললেন, ‘যদি আমরা বলি, ‘স্বর্গ থেকে,’ তাহলে বলবে ‘তবে তোমরা তাকে বিশ্বাস কর নি কেন?’ 32 কিন্তু যদি আমরা বলি, ‘মানুষের কাছ থেকে,’ তাহলে জনসাধারণ আমাদের ওপর রেগে যাবে৷’ তাঁরা জনসাধারণকে ভয় করতেন কারণ জনসাধারণের দৃঢ় বিশ্বাস ছিল য়ে য়োহন একজন ভাববাদী৷ 33 তাই তাঁরা যীশুকে বললেন, ‘আমরা জানি না৷’ তখন যীশু তাঁদের বললেন, ‘তবে আমিও কোন্ ক্ষমতায় এসব করছি, তা তোমাদের বলব না৷’
Mark 12:1 তখন যীশু দৃষ্টান্ত দিয়ে তাদের কাছে বলতে লাগলেন, ‘একটি লোক দ্রাক্ষা ক্ষেতের চারদিকে বেড়া দিলেন৷ তিনি দ্রাক্ষা মাড়াই করতে একটি গর্ত খুঁড়লেন, একটি উঁচু ঘর তৈরী করলেন এবং সেই ক্ষেত চাষীদের কাছে জমা দিয়ে অন্য দেশে চলে গেলেন৷ 2 এরপর চাষীদের কাছে ফলের পাওনা অংশ পাবার জন্য তাদের কাছে ঠিক সময়ে তাঁর চাকরকে পাঠিয়ে দিলেন৷ 3 কিন্তু চাষীরা তাকে মারধর করে খালি হাতে ফিরিয়ে দিল৷ 4 তিনি আর একজন চাকরকে তাদের কাছে পাঠালেন, তারা তার মাথায় আঘাত করল, 5 এবং তাকে অপমান করল৷ তখন তিনি আর একজন চাকরকে পাঠালেন, তারা তাকে মেরে ফেলল৷ এইভাবে তিনি আরো অনেককে পাঠালেন৷ তারা তাদের মধ্যে কয়েকজনকে মারধোর করল এবং কয়েকজনকে মেরেই ফেলল৷ 6 তাঁর একমাত্র প্রিয় পুত্র ছিল৷ তিনি শেষ পর্যন্ত তাঁকেই পাঠালেন, ভাবলেন তারা নিশ্চয়ই তাঁর পুত্রকে সম্মান করবে৷ 7 চাষীরা তখন নিজেদের মধ্যে বলাবলি করল, ‘এই তো মালিকের ছেলে, ওর বাবা মরলে ক্ষেতের মালিক তো ওই হবে, এস! একে মেরে ফেল, তাহলে আমরা ক্ষেতের মালিক হব৷ 8 তখন তারা তাকে মেরেই ফেলল ও তার মৃতদেহটি দ্রাক্ষা ক্ষেতের বাইরে ফেলে দিল৷ 9 তখন সেই দ্রাক্ষা ক্ষেতের মালিক কি করবেন? তিনি এসে চাষীদের মেরে ফেলবেন এবং সেই দ্রাক্ষা ক্ষেতটি অন্যদের দিয়ে দেবেন৷ 10 শাস্ত্রের এই কথা কি তোমরা পড় নি, ‘য়ে পাথর রাজমিস্ত্রিরা বাতিল করেছিল সেটিই হয়ে উঠল কোণের প্রধান পাথর? 11 এটা প্রভুই করেছেন, আর আমাদের চোখে এটা খুব চমকপ্রদ৷’গীতসংহিতা 118:22-23 12 তখন তারা তাঁকে গ্রেপ্তার করার চেষ্টা করতে লাগল, কিন্তু লোকদের ভয় পেল, কারণ তারা জানত য়ে দৃষ্টান্তটি তিনি তাদের উদ্দেশ্যেই বলেছেন, তাই তারা তাঁকে ছেড়ে চলে গেল৷ 13 পরে ইহুদী নেতারা কয়েকজন ফরীশী এবং হেরোদীয়কে তাঁর কাছে পাঠিয়ে দিল, যাতে তারা যীশুকে কথার ফাঁদে ফেলতে পারে৷ 14 তারা এসে তাঁকে বলল, ‘হে গুরু, আমরা জানি আপনিই সত্, এবং আপনি কোন লোককে ভয় করেন না৷ আপনি ঈশ্বরের পথের বিষয়ে সত্য শিক্ষা দেন৷ আচ্ছা, কৈসর সরকারকে কর দেওযা কি উচিত? আমরা দেব, কি দেব না?’ 15 তিনি তাদের ভণ্ডামি বুঝতে পেরে বললেন, ‘তোমরা আমায় কেন পরীক্ষা করছ? আমাকে একটি দীনার এনে দেখাও৷’ 16 তারা তাঁকে দীনার এনে দিলে তিনি তাদের বললেন, ‘এই মুখ এবং এই নাম কার?’ তারা তাঁকে বলল, ‘কৈসরের প্রতিমূর্তি, কৈসরের নাম৷’ 17 তখন যীশু তাদের বললেন, ‘কৈসরের যা তা কৈসরকে দাও৷ আর ঈশ্বরের যা তা ঈশ্বরকে দাও৷’ তখন তারা তাঁর কথা শুনে বিস্ময়ে হতবাক্ হয়ে গেল৷ 18 পরে কয়েকজন সদ্দূকী তাঁর কাছে এল যাঁরা বলত পুনরুত্থান বলে কিছু নেই৷ তারা তাঁকে জিজ্ঞেস করল, 19 ‘গুরু, মোশি আমাদের জন্য লিখেছেন, কারও ভাই যদি স্ত্রী রেখে মারা যায়, আর সে যদি কোন ছেলেমেয়ে না রেখে যায় তবে তার ভাই য়েন ঐ বিধবাকে বিয়ে করে নিজের ভাইয়ের বংশ রক্ষা করে৷ 20 সাত ভাই ছিল, প্রথম জন একজন স্ত্রীলোককে বিয়ে করল আর সে ছেলেমেয়ে না রেখে মারা গেল৷ 21 পরে দ্বিতীয় জন তাকে বিয়ে করল; কিন্তু সেও ছেলেমেয়ে না রেখে মারা গেল৷ তৃতীয় ভাই আগের ভাইয়ের মত বিয়ে করে ছেলেমেয়ে না রেখে মার গেল৷ 22 এই সাত ভাইয়ের কেউই কোন ছেলেমেয়ে রেখে যায় নি৷ সবশেষে সেই স্ত্রীলোকটিও মারা গেল৷ 23 মৃত্যুর পরে যখন তারা বেঁচে উঠবে, সে তাদের মধ্যে কার স্ত্রী হবে? কারণ তারা সাতজনই তো তাকে বিয়ে করেছিল৷’ 24 যীশু তাদের বললেন, ‘তোমরা কেন এই ভুলের মধ্যে রয়েছ? তোমরা না জান শাস্ত্র, না জান ঈশ্বরের শক্তির কথা৷ 25 কারণ মৃতদের মধ্যে থেকে পুনরুত্থিত হলে তারা বিয়ে করে না, বা তাদের বিয়ে দেওযা হয় না, বরং তারা স্বর্গে স্বর্গদূতদের মতোই থাকে৷’ 26 কিন্তু পুনরুত্থান হবে কিনা এ ব্যাপারে মোশির পুস্তকে লেখা জ্বলন্ত ঝোপেরঅংশটিতে ঈশ্বর তাকে কি বলেছিলেন তা কি তোমরা পড় নি? তিনি বলেছিলেন, ‘আমি অব্রাহামের ঈশ্বর, ইসহাকের ঈশ্বর এবং যাকোবের ঈশ্বর৷’ 27 তিনি মৃতদের ঈশ্বর নন, জীবিতদেরই ঈশ্বর৷ তোমরা বড়ই ভুল করেছ৷’ 28 ব্যবস্থার শিক্ষকদের মধ্যে একজন কাছে এসে তাদের আলোচনা শুনলেন৷ যীশু তাদের ঠিক উত্তর দিয়েছেন জেনে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘শাস্ত্রে সমস্ত আদেশের মধ্যে কোনটি প্রধান?’ 29 যীশু উত্তর দিলেন, ‘এটাই প্রধান! ‘শোন, হে ইস্রায়েল, আমাদের ঈশ্বর প্রভু একমাত্র প্রভু৷ 30 তুমি তোমার সমস্ত হৃদয়, মন, প্রাণ ও সমস্ত শক্তি দিয়ে তোমার ঈশ্বর প্রভুকে ভালবাসবে৷’ 31 আর দ্বিতীয় আদেশ হল, এই, ‘তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মতো ভালবাসবে৷’এই আদেশ দুটি থেকে আর কোন বড় আদেশ নেই৷’ 32 তখন ব্যবস্থার শিক্ষকরা তাঁকে বললেন, ‘বেশ, গুরু, আপনি ঠিক বলেছেন য়ে ঈশ্বরই প্রভু, তিনি ছাড়া অন্য কেউ নেই৷ 33 আর সমস্ত হৃদয়, সমস্ত শক্তি দিয়ে তাঁকে ভালবাসো এবং প্রতিবেশীকে নিজের মতো ভালবাসা হচ্ছে সমস্ত রকম বলিদান ও উত্সর্গের থেকে অনেক ভাল৷’ 34 তখন তিনি বুদ্ধির সঙ্গে উত্তর দিয়েছেন দেখে যীশু তাঁকে বললেন, ‘ঈশ্বরের রাজ্য থেকে তুমি খুব বেশী দূরে নও৷’ এরপরে তাঁকে কোন কথা জিজ্ঞেস করতে আর কারো সাহস হল না৷ 35 যীশু মন্দিরে শিক্ষা দেবার সময় বললেন, ‘ব্যবস্থার শিক্ষকরা কেমন করে বলে য়ে খ্রীষ্ট দাযূদের পুত্র? 36 দাযূদ তো নিজেই পবিত্র আত্মার প্রেরণাতেই এই কথা বলেছেন: ‘প্রভু আমার প্রভুকে বললেন, ‘তুমি আমার ডানদিকে বস যতক্ষণ না তোমার শত্রুদের তোমার পায়ের তলায় রাখি৷’ গীতসংহিতা 110:1 37 দাযূদ নিজেই খ্রীষ্টকে ‘প্রভু’ বলেন৷ তবে কেমন করে খ্রীষ্ট দাযূদের পুত্র হলেন?’ অনেক লোক আনন্দের সাথে তাঁর কথা শুনল৷ 38 আর তাঁর শিক্ষায় তিনি তাদের বললেন, ‘ব্যবস্থার শিক্ষকদের থেকে সাবধান, তারা লম্বা লম্বা পোশাক পরতে চায়, হাটে বাজারে লোকদের সম্মান, 39 সমাজগৃহে গুরুত্বপূর্ণ আসন এবং নৈশ ভোজে গুরুত্বপূর্ণ আসন পেতে ভালবাসে৷ 40 এই লোকেরাই বিধবাদের বাড়িগুলি আত্মসাত্ করে, আর সেই দোষ ঢাকতে লম্বা লম্বা প্রার্থনা করে৷ ঐ সমস্ত লোকেরা বিচারে আরো কড়া শাস্তি পাবে৷’ 41 যীশু দানের বাক্সের সামনে বসে, লোকেরা কেমন করে তাতে টাকা পয়সা ফেলছে তা দেখছিলেন৷ বহু ধনী লোক প্রচুর টাকা পয়সা তার মধ্যে রাখল৷ 42 পরে একজন গরীব বিধবা এসে তাতে দুটি তামার মুদ্রা ফেলল, যার মূল্য এক সিকিরও কম৷ 43 তখন যীশু নিজের শিষ্যদের কাছে ডেকে বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি, দানবাক্সে যাঁরা টাকা পয়সা রেখেছে, তাদের সবার থেকে এই গরীব বিধবা বেশী রাখল৷ 44 কারণ তারা সকলে নিজের নিজের অতিরিক্ত অর্থ থেকে কিছু কিছু রেখেছে কিন্তু এই গরীব বিধবা তার যা কিছু সম্বল ছিল, তার সবটুকুই দিয়ে গেল৷’
Mark 13:1 যীশু যখন মন্দির ছেড়ে যাচ্ছেন, সেই সময় শিষ্যদের মধ্যে একজন তাঁকে বললেন, ‘হে গুরু, দেখুন কত চমত্কার বিশাল বিশাল পাথর ও কত সুন্দর দালান৷’ 2 তখন যীশু তাঁকে বললেন, ‘তুমি এইসব বড় বড় দালান দেখছ? এর একটা পাথর আর একটা পাথরের ওপরে থাকবে না; সবই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হবে৷’ 3 পরে তিনি মন্দিরের সামনে জৈতুন পর্বতমালায় বসলে, পিতর, যাকোব, য়োহন এবং আন্দরিয় তাঁকে একা পেয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, 4 ‘আমাদের বলুন দেখি, এই সমস্ত ঘটনা কখন ঘটবে? আর কি চিহ্ন দেখেই বা বুঝতে পারব য়ে এই সমস্ত ঘটনা ঘটতে চলেছে?’ 5 তখন যীশু তাঁদের বলতে লাগলেন, ‘সতর্ক থেকো, কেউ য়েন তোমাদের না ভোলায়৷ 6 সেদিন অনেকে আমার নাম নিয়ে আসবে এবং বলবে, ‘আমিই তিনি’ এবং তারা আরও অনেকের মন ভোলাবে৷ 7 কিন্তু তোমরা যখন যুদ্ধের কথা ও যুদ্ধের জনরব শুনবে, তখন অস্থির হযো না; এটা ঘটবেই, কিন্তু তখনও শেষ নয়৷ 8 কারণ জাতির বিরুদ্ধে জাতি এবং রাজ্যের বিরুদ্ধে রাজ্য জেগে উঠবে৷ স্থানে স্থানে ভূমিকম্প, দুর্ভিক্ষ হবে৷ এসব কেবল জন্ম যন্ত্রণার আরন্ভ মাত্র৷ 9 ‘তোমরা নিজেদের ব্যাপারে সাবধান! লোকে তোমাদের আদালতে হাজির করবে এবং সমাজগৃহের মধ্যে তোমাদের ধরে মারবে৷ আমার জন্য তোমরা দেশের শাসনকর্তা ও রাজাদের কাছে সাক্ষী দেবার জন্য তাদের সামনে দাঁড়াবে৷ 10 আর সব কিছু শেষ হবার আগে সমস্ত জাতির কাছে সুসমাচার প্রচার করা হবে৷ 11 কিন্তু লোকে যখন তোমাদের গ্রেপ্তার করে বিচার সভায় নিয়ে যাবে তখন তাদের সামনে কি বলবে তা আগে থেকে ভেবো না, বরং সেই সময়ে পবিত্র আত্মা যা বলতে বলবেন তাই বলবে৷ কারণ তোমরাই য়ে কথা বলবে তা নয়, পবিত্র আত্মাই তোমাদের মধ্যে দিয়ে কথা বলবেন৷ 12 তখন ভাই ভাইকে ও বাবা সন্তানকে মৃত্যুর হাতে তুলে দেবে এবং সন্তানরা বাবা-মার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে তাদের হত্যার জন্য ধরিয়ে দেবে৷ 13 আর আমার নামের জন্য সকলে তোমাদের ঘৃণা করবে৷ কিন্তু য়ে শেষ পর্যন্ত স্থির থাকবে সেই রক্ষা পাবে৷ 14 ‘যখন তোমরা দেখবে, ‘ধ্বংসের সেই ঘৃণার বস্তু য়েখানে দাঁড়াবার নয় সেখানে দাঁড়িয়ে আছে৷’পাঠকের বোঝা উচিত্ এর অর্থ কি,’তখন যাঁরা যিহূদিযাতে থাকে তারা পাহাড়ে পালিয়ে যাক৷ 15 এবং কেউ যদি ছাদে থাকে, সে য়েন বাড়ি থেকে কোন কিছু নেবার জন্য নীচে না নামে বা ঘরে না ঢোকে৷ 16 কেউ যদি মাঠে থাকে, সে য়েন জামাকাপড় নেবার জন্য ফিরে না যায়৷ 17 হায়, সেই সময়ে গর্ভবতী বা যাদের কোলে শিশু থাকবে তাদের কত কষ্ট! 18 আর প্রার্থনা কর য়েন এটা শীতকালে না ঘটে, 19 কারণ সেই সময় হবে বড়ই কষ্টের সময়৷ তেমনটি প্রথম যখন ঈশ্বর পৃথিবী সৃষ্টি করলেন, তখন থেকে এখন পর্যন্ত কখনই হয় নি আর কখনও হবেও না৷ 20 আর প্রভু যদি সেই দিনের সংখ্যা কমিয়ে না দিতেন, তবে কোন প্রাণই রক্ষা পেত না৷ কিন্তু তিনি যাদের মনোনীত করেছেন, সেই মনোনীতদের জন্য সেই দিনের সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছেন৷ 21 কেউ যদি তখন তোমাদের বলে, ‘দেখ, খ্রীষ্ট এখানে বা ওখানে আছেন, তোমরা বিশ্বাস কোরো না৷ 22 কারণ ভণ্ড খ্রীষ্টেরা এবং ভাববাদীরা উঠবে এবং নানা চিহ্ন ও অলৌকিক কাজ করে দেখাবে, এমন কি সন্ভব হলে মনোনীত লোকদেরও ভোলাবে৷ 23 কিন্তু তোমরা সাবধান থেকো৷ আমি তোমাদের আগেই সমস্ত কিছু বলে দিলাম৷ 24 ‘কিন্তু সেই সময়, সেই কষ্টের শেষে, ‘সূর্য় অন্ধকার হয়ে যাবে এবং চাঁদ আর আলো দেবে না৷ 25 আকাশ থেকে তারা খসে পড়বে, আকাশের সমস্ত শক্তি বিচলিত হবে৷’যিশাইয় 13:10, 34:4 26 ‘তখন লোকেরা দেখবে, মানবপুত্র মহামহিমায় ও পরাক্রমের সঙ্গে মেঘরথে আসছেন৷ 27 তখন মানবপুত্র তাঁর স্বর্গদূতদের পাঠিয়ে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে আকাশের অন্য প্রান্ত পর্যন্ত চারিবাযু থেকে তাঁর মনোনীত লোকদের সংগ্রহ করবেন৷ 28 ‘ডুমুর গাছ থেকে এই দৃষ্টান্ত শেখো; যখন তার শাখা-প্রশাখা কোমল হয়ে পাতা বের করে, তখন তোমরা জানতে পার গরম কাল এসে গেল৷ 29 ঠিক তেমনি ঐ সমস্ত ঘটনা ঘটতে দেখলেই তোমরা বুঝতে পারবে য়ে সময়খুব কাছে, এমনকি দরজার সামনে৷ 30 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, সমস্ত ঘটনা না ঘটা পর্যন্ত এই প্রজন্মের শেষ হবে না৷ 31 আকাশ এবং পৃথিবীর লোপ হবে, কিন্তু আমার কথা লোপ কখনও হবে না৷ 32 ‘সেই দিনের বা সেই সময়ের কথা কেউ জানে না; স্বর্গদূতরাও নয়, মানবপুত্রও নয়, কেবলমাত্র পিতাই জানেন৷ 33 সাবধান! তোমরা সতর্ক থেকো৷ কারণকখন য়ে সেই সময় হবে তোমরা তা জানো না৷ 34 সেই দিনটা এমনভাবেই আসবে য়েমন কোন লোক নিজের বাড়ি ছেড়ে বিদেশে বেড়াতে যায় এবং তার চাকরদের দাযিত্ব দিয়ে প্রত্যেকের কাজ ঠিক করে দেয় আর দ্বাররক্ষককে সজাগ থাকতে বলে৷ 35 তাই তোমরা সতর্ক থাকবে, কারণ তোমরা জান না কখন বাড়ির মালিক আসবেন, সন্ধ্যাবেলায়, কি মাঝরাতে, কুকড়া ডাকের সময় কি ভোরবেলায়৷ 36 হঠাত্ তিনি এসে য়েন না দেখেন য়ে তোমরা ঘুমিয়ে রয়েছ৷ 37 আমি তোমাদের যা বলছি, তা সবাইকে বলি, ‘সজাগ থেকো৷”
Mark 14:1 দুদিন পরে নিস্তারপর্ব এবং খামিরবিহীন রুটির উত্সব পর্ব৷প্রধান যাজকরা এবং ব্যবস্থার শিক্ষকরা সেই সময়ে তাঁকে কেমন করে ছলে বলে গ্রেপ্তার করে মেরে ফেলতে পারে তারই চেষ্টা করছিলেন৷ 2 তাঁরা বললেন, ‘উত্সবের সময় আমরা এটা করব না, কারণ তাতে লোকেদের মধ্যে গণ্ডগোল বেধে যাতে পারে৷’ 3 যখন তিনি বৈথনিযাতে কুষ্ঠী শিমোনের বাড়িতে ছিলেন, তখন তিনি খেতে বসলে একটি স্ত্রীলোক শ্বেত পাথরের শিশিতে দামী সুগন্ধি জটামাংসীর তেলনিয়ে এল৷ সে শিশিটি ভেঙ্গে তাঁর মাথায় সেই তেল ঢেলে দিল৷ 4 কিছু লোক এতে খুব রেগে গিয়ে নিজেদের মধ্যে বলাবলি করল, ‘সুগন্ধি তেলের অপচয় করা হল কেন? 5 এই তেল তো তিনশো দীনারের বেশী দামে বিক্রি করা য়েত এবং সেই টাকা গরীবদের দেওযা য়েত৷’ আর তারা স্ত্রীলোকটির কঠোর সমালোচনা করল৷ 6 কিন্তু যীশু বললেন, ‘ওকে য়েতে দাও৷ তোমরা কেন ওকে দুঃখ দিচ্ছ? সে তো আমার জন্য ভাল কাজই করেছে৷ 7 কারণ গরীবরা তোমাদের কাছে সবসময় আসে, তোমরা যখন ইচ্ছা তাদের উপকার করতে পার; কিন্তু আমাকে তোমরা সবসময় পাবে না৷ 8 সে যা করতে পারত তাই করেছে৷ সে আগে থেকে সমাধির উদ্দেশ্যে আমার গায়ে সুগন্ধি তেল ঢেলে দিয়েছে৷ 9 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, জগতে য়েখানেই আমার সুসমাচার প্রচার করা হবে, সেখানেই এই স্ত্রীলোকটির স্মরণার্থে তার কাজের কথা বলা হবে৷’ 10 তখন সেই বারোজনের মধ্যে একজন যিহূদা ঈষ্করিযোতীয় প্রধান যাজকদের কাছে যীশুকে ধরিয়ে দেবার মতলবে গেল৷ 11 তারা এই কথা শুনে খুব খুশী হলো এবং তাকে টাকা দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিল৷ তখন সে যীশুকে ধরিয়ে দেবার জন্য সুয়োগ খুঁজতে লাগল৷ 12 খামিরবিহীন রুটির পর্বের প্রথম দিন, য়েদিন ইহুদীরা মেষ উত্সর্গ করত, সেইদিন তাঁর শিষ্যেরা তাঁকে বললেন, ‘আমরা কোথায় গিয়ে আপনার জন্য ভোজ প্রস্তুত করব, আপনার ইচ্ছা কি?’ 13 তখন তিনি শিষ্যদের মধ্যে দুজনকে পাঠিয়ে দিয়ে বললেন, ‘তোমরা শহরে যাও, একটা লোক তোমাদের সামনে পড়বে, য়ে এক কলসী জল নিয়ে আসবে, তাকে অনুসরণ কর৷ 14 সে য়ে বাড়িতে ঢুকবে সেই বাড়ির মালিককে বলবে, ‘গুরু বলেছেন, সেই অতিথির ঘর কোথায় য়েখানে আমি আমার শিষ্যদের সাথে নিস্তারপর্বের ভোজ খেতে পারি৷’ 15 তখন সে ওপরের একটি বড় সাজানো গোছান ঘর দেখিয়ে দেবে৷ সেখানেই আমাদের জন্য ভোজ প্রস্তুত করো৷’ 16 পরে শিষ্যরা সেখান থেকে শহরে চলে এলেন৷ তিনি য়েরকম বলেছিলেন তাঁরা ঠিক সেইরকম দেখতে পেলেন; আর নিস্তারপর্বের ভোজের আযোজন সেখানেই করলেন৷ 17 সন্ধ্যে হলে সেই বারো জন প্রেরিতদের সাথে তিনি সেখানে এলেন৷ 18 যখন তাঁরা একসঙ্গে খেতে বসেছেন, যীশু বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমরা যাঁরা আমার সঙ্গে খেতে বসেছ, তোমাদের মধ্যে একজন আমাকে শত্রুর হাতে তুলে দেবে৷’ 19 এতে তাঁরা অত্যন্ত দুঃখ পেলেন এবং প্রত্যেকে এক এক করে জিজ্ঞেস করলেন, ‘সে কি আমি?’ 20 তিনি তাদের বললেন, ‘এই বারোজনের মধ্যে য়ে জন আমার সঙ্গে বাটিতে রুটি ডুবিয়ে খাচ্ছে সেই সে জন৷ 21 মানবপুত্রের ব্যাপারে শাস্ত্রে য়েমন লেখা আছে, ঠিক সেইভাবে তিনি চলে যাবেন৷ কিন্তু ধিক্ সেই লোকটিকে য়ে মানবপুত্রকে শত্রুর হাতে ধরিয়ে দেবে৷ সেই লোকটির জন্ম না হওযাই ভাল ছিল৷ 22 তাঁরা যখন খাচ্ছিলেন, সেই সময় তিনি রুটি নিয়ে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিলেন৷ রুটি খানি ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে তা শিষ্যদের দিয়ে বললেন, ‘এটা নাও: এটা আমার শরীর৷’ 23 তারপর তিনি পেযালা তুলে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিয়ে শিষ্যদের হাতে দিলেন৷ আর তাঁরা সকলে তা থেকে পান করলেন৷ 24 তিনি তাঁদের বললেন, ‘এটা আমার নতুন নিয়মের রক্ত যা অনেকের জন্যই পাতিত হবে৷ 25 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, আমি আর দ্রাক্ষারস পান করব না, যতদিন পর্যন্ত না আমি ঈশ্বরের রাজ্যে সেই দিনে নতুন দ্রাক্ষারস পান না করি৷’ 26 এরপর তাঁরা স্তবগান করে জৈতুন পর্বতের দিকে গেলেন৷ 27 যীশু তাদের বললেন, ‘তোমরা সকলে বিশ্বাস হারাবে, কারণ শাস্ত্রে লেখা আছে, ‘আমি মেষপালককে আঘাত করব এবং মেষেরা চারদিকে ছড়িয়ে পড়বে৷’সখরিয় 13:7 28 আমি বেঁচে উঠলে, তোমাদের আগে গালীলে যাব৷’ 29 পিতর তাঁকে বললেন, ‘এমনকি সকলে বিশ্বাস হারালেও আমি হারাব না৷’ 30 তখন যীশু তাঁকে বললেন, ‘আমি সত্যি বলছি, আজ এই রাতেই দুবার মোরগ ডাকার আগে তুমি আমাকে তিনবার অস্বীকার করবে৷’ 31 কিন্তু পিতর আরও জোর দিয়ে বললেন, ‘যদি আপনার সঙ্গে মরতেও হয়, তবুও আমি আপনাকে অস্বীকার করব না৷’ বাকি সকলে সেই একই শপথ করলেন৷ 32 তখন তাঁরা গেত্শিমানী নামে একস্থানে এলেন৷ আর যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, ‘যতক্ষণ আমি প্রার্থনা করি, তোমরা এখানে বসে থাক৷’ 33 পরে তিনি পিতর, যাকোব এবং য়োহনকে সঙ্গে নিয়ে গেলেন, সেসময় ব্যথায় তাঁর আত্মা ব্যাকুল হয়ে উঠল৷ 34 তিনি তাঁদের বললেন, ‘আমার প্রাণ মৃত্যু পর্যন্ত উদ্বেগে আচ্ছন্ন৷ তোমরা এখানে থাক আর জেগে থাক৷’ 35 পরে কিছুটা এগিয়ে মাটিতে উপুড় হয়ে পড়ে তিনিপ্রার্থনা করলেন য়ে যদি সন্ভব হয় তবে এই দুঃখের সময়টা তাঁর কাছ থেকে সরে যাক৷ 36 তিনি বললেন, ‘আব্বা, পিতা তোমার পক্ষে তো সবই সন্ভব৷ এই পানপাত্রআমার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নাও৷ কিন্তু তবুও আমি যা চাই তা নয়; তোমার ইচ্ছাই পূর্ণ হোক৷’ 37 পরে তিনি এসে দেখলেন তাঁরা ঘুমিয়ে পড়েছেন, আর তিনি পিতরকে বললেন, ‘শিমোন তুমি কি ঘুমিয়ে পড়েছ? তুমি একঘন্টাও জেগে থাকতে পারলে না? 38 তোমরা জেগে থাক এবং প্রার্থনা কর, যাতে প্রলুধ্ধ না হও৷ আত্মা ইচ্ছুক কিন্তু শরীর দুর্বল৷’ 39 তিনি আবার গেলেন এবং একই কথা বলে প্রার্থনা করলেন৷ 40 তারপর ফিরে এসে দেখলেন তাঁরা ঘুমাচ্ছেন, কারণ ঘুমে তাদের চোখ বন্ধ হয়ে আসছিল৷ তাঁরা যীশুর দিকে তাকিয়ে তাঁকে কি বলবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না৷ 41 পরে তিনি তৃতীয়বার এসে তাঁদের বললেন, ‘তোমরা কি এখনও ঘুমোচ্ছ, বিশ্রাম করছ? যথেষ্ট হয়েছে৷ সময় হয়ে গেছে৷ দেখ, মানবপুত্রকে বিশ্বাসঘাতকতা করে পাপীদের হাতে তুলে দেওযা হচ্ছে৷ 42 ওঠ! আমরা যাই! ঐ দেখ, য়ে আমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে সে আসছে৷’ 43 আর তিনি যখন কথা বলছিলেন, সেই সময় যিহূদা, সেই বারোজন প্রেরিতের মধ্যে একজন এল৷ আর তার সাথে অনেক লোক তরোয়াল লাঠি নিয়ে এল৷ প্রধান যাজক, ব্যবস্থার শিক্ষক এবং বয়স্ক ইহুদী নেতারা এই লোকদের পাঠিয়েছিলেন৷ 44 সেই বিশ্বাসঘাতক যিহূদা তাদের এই সঙ্কেত দিয়েছিল; ‘যাকে আমি চুমু দেব, সেই ঐ লোকটি৷ তোমরা তাকে ধরে পাহারা দিয়ে নিয়ে যাবে৷’ 45 সে উপস্থিত হয়েই যীশুর কাছে গিয়ে বলল, ‘গুরু!’ বলেই তাঁকে চুমু দিল৷ 46 তখন তারা তাঁকে ধরে গ্রেপ্তার করল৷ 47 যাঁরা তাঁর কাছে দাঁড়িয়েছিল তাদের মধ্যে একজন নিজের তরোয়াল বের করে মহাযাজকের চাকরকে আঘাত করে তার কান কেটে দিল৷ 48 তখন যীশু তাদের বললেন, ‘তোমরা লাঠি, তরোযাল নিয়ে আমাকে ধরতে এসেছ৷ মনে হচ্ছে আমি একজন দস্যু৷ 49 আমি প্রতিদিন মন্দিরে তোমাদের মধ্যে থেকেছি ও শিক্ষা দিয়েছি, তখন তো আমায় ধরলে না৷ কিন্তু শাস্ত্রের বাণী সফল হবেই৷’ 50 তখন তাঁর সব শিষ্যেরা তাঁকে ফেলে পালিয়ে গেলেন৷ 51 আর একজন যুবক উলঙ্গ শরীরে একটি চাদর জড়িয়ে তাঁকে অনুসরণ করল৷ তারা তাকে গ্রেপ্তার করার চেষ্টা করল৷ 52 কিন্তু সে চাদরটি ফেলে উলঙ্গ অবস্থায় পালিয়ে গেল৷ 53 তখন তারা যীশুকে মহাযাজকের কাছে নিয়ে এল৷ প্রধান যাজকরা, বয়স্ক ইহুদী নেতারা এবং ব্যবস্থার শিক্ষকরা সকলে এক জায়গায় জড়ো হলেন৷ 54 আর পিতর দূরে দূরে থেকে যীশুর পেছনে য়েতে য়েতে মহাযাজকের উঠোন পর্যন্ত গেলেন এবং রক্ষীদের সঙ্গে বসে আগুন পোহাতে লাগলেন৷ 55 তখন প্রধান যাজকরা এবং মহাসভার সকলেই এমন একজন সাক্ষী খুঁজছিলেন যার কথার জোরে যীশুকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা যায়; কিন্তু তেমন সাক্ষ্য তারা পেলেন না৷ 56 কারণ অনেকে তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষী দিল বটে কিন্তু তাদের সাক্ষ্য মিলল না৷ 57 তখন কিছু লোক তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষী দিয়ে বলল, 58 ‘আমরা তাঁকে বলতে শুনেছি, ‘মানুষের হাতে তৈরী এই মন্দিরটি ভেঙ্গে ফেলব এবং তিন দিনের মধ্যে মানুষের হাত দিয়ে তৈরী নয় এমনই একটি মন্দির আমি গড়ে তুলব৷” 59 কিন্তু এতেও তাদের সাক্ষ্যের প্রমাণ মিলল না৷ 60 তখন মহাযাজক সকলের সামনে দাঁড়িয়ে যীশুকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি কি কিছুই উত্তর দেবে না? এই সমস্ত লোকরা তোমার বিরুদ্ধে কি সাক্ষ্য দিচ্ছে?’ 61 কিন্তু তিনি চুপচাপ থাকলেন, কোন উত্তর দিলেন না৷ আবার মহাযাজক তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি কি সেই পরম খ্রীষ্ট পরম ধন্য, ঈশ্বরের পুত্র?’ 62 যীশু বললেন, ‘হ্যাঁ, আমিই ঈশ্বরের পুত্র৷ তোমরা একদিন মানবপুত্রকে ঈশ্বরের ডানপাশে বসে থাকতে আকাশের মেঘে আবৃত হয়ে আসতে দেখবে৷’ 63 তখন মহাযাজক তাঁর পোশাক ছিঁড়ে বললেন, ‘আমাদের সাক্ষীর আর কি প্রযোজন? 64 তোমরা তো ঈশ্বর নিন্দা শুনলে৷ তোমাদের কি মনে হয়?’ তারা সকলে তাঁকে দোষী স্থির করে বলল, ‘এঁর মৃত্যুদণ্ড হওযা উচিত৷’ 65 তখন কেউ কেউ তাঁর মুখে থুথু ছিটিয়ে দিল, তাঁর মুখ ঢেকে ঘুষি মারল এবং বলতে লাগল, ‘ভাববাণী করে বল তো, কে তোমাকে ঘুষি মারল?’ পরে রক্ষীরা তাঁকে মারতে মারতে নিয়ে গেল৷ 66 পিতর যখন নীচে উঠোনে ছিলেন, তখন মহাযাজকের একজন চাকরানী এল৷ 67 সে পিতরকে আগুন পোহাতে দেখে তাঁর দিকে তাকিয়ে বলল, ‘তুমিও তো নাসরতীয় যীশুর সঙ্গে ছিলে?’ 68 কিন্তু পিতর অস্বীকার করে বললেন, ‘আমি জানি না, আর বুঝতেও পারছি না তুমি কি বলছ?’ এই বলে তিনি বারান্দার দিকে য়েতেই একটা মোরগ ডেকে উঠল৷ 69 কিন্তু চাকরানীটা তাকে দেখে, যাঁরা তার কাছে দাঁড়িয়েছিল তাদের বলতে লাগল, ‘এই লোকটি ওদেরই একজন!’ 70 তিনি আবার অস্বীকার করলেন৷ কিছুক্ষণ বাদে যাঁরা সেখানে দাঁড়িয়েছিল তারা পিতরকে বলল, ‘সত্যি তুমি তাদের একজন, কারণ তুমি গালীলের লোক৷’ 71 তিনি অভিশাপ দিয়ে শপথ করে বলতে লাগলেন, ‘তোমরা য়ে লোকটির কথা বলছ, তাকে আমি চিনি না৷’ 72 আর সঙ্গে সঙ্গে দ্বিতীয়বার মোরগটি ডেকে উঠল, তাতে যীশু য়ে কথা বলেছিলেন, ‘মোরগটি দুবার ডাকার আগে তুমি তিনবার আমাকে অস্বীকার করবে’ সে কথা পিতরের মনে পড়ল আর তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন৷
Mark 15:1 সকাল হতেই প্রধান যাজকরা, বয়স্ক ইহুদী নেতারা, ব্যবস্থার শিক্ষকরা ও সমস্ত মহাসভার লোকেরা শলাপরামর্শ করলেন৷ তাঁরা যীশুকে বেঁধে পীলাতের কাছে পাঠালেন এবং তাঁর হাতে তুলে দিলেন৷ 2 তখন পীলাত তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি কি ইহুদীদের রাজা?’যীশু তাঁকে বললেন, ‘হ্যাঁ, আপনি য়েমন বললেন তেমনই৷’ 3 তখন প্রধান যাজকরা যীশুর বিরুদ্ধে নানান দোষের কথা বলতে লাগলেন৷ 4 পীলাত তাঁকে আবার জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি কি কিছুই উত্তর দেবে না? দেখ, এরা তোমার বিরুদ্ধে কত অভিযোগ করছে!’ 5 কিন্তু তবু যীশু কোন উত্তর দিলেন না দেখে পীলাত আশ্চর্য হয়ে গেলেন৷ 6 নিস্তারপর্বের সময়ে পীলাত লোকদের ইচ্ছে মতো একজন বন্দীকে মুক্ত করে দিতেন৷ 7 সেই সময় বারাব্বা নামে একটি লোক বিদ্রোহীদের সাথে কারাগারে ছিল, যাঁরা বিদ্রোহের সময় অনেক খুন জখম করেছিল৷ 8 আর তিনি পীলাত লোকদের জন্য সচরাচর যা করতেন, সেই লোকেরা তাকে তাই করতে বলল৷ 9 পীলাত তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, ‘ইহুদীদের রাজাকে আমি তোমাদের জন্য মুক্ত করে দিই, এটাই কি তোমাদের ইচ্ছা?’ 10 কারণ তিনি বুঝতে পেরেছিলেন প্রধান যাজকরা হিংসার বশবর্তী হয়ে যীশুকে তার হাতে তুলে দিয়েছিল৷ 11 কিন্তু প্রধান যাজকরা জনতাকে ক্ষেপিয়ে তুলল যাতে তারা যীশুর পরিবর্তে বারাব্বার মুক্তি দাবি করে৷ 12 কিন্তু পীলাত আবার তাদের বললেন, ‘তবে তোমরা যাকে ইহুদীদের রাজা বল তাকে কি করব?’ 13 তারা চেঁচিয়ে বলল, ‘ওকে ক্রুশে দাও!’ 14 কিন্তু তিনি তাদের বললেন, ‘কেন? এ কি মন্দ কাজ করেছে?’ তারা আরও চেঁচিয়ে বলল, ‘ওকে ক্রুশে দাও!’ 15 তখন পীলাত লোকদের খুশী করতে বারাব্বাকে তাদের জন্য ছেড়ে দিলেন এবং যীশুকে চাবুক মেরে ক্রুশে বিদ্ধ করবার জন্য তাদের হাতে তুলে দিলেন৷ 16 পরে সেনারা প্রাসাদের মধ্যে অর্থাত্ প্রধান শাসনকর্তার সদর দপ্তরের উঠোনে যীশুকে নিয়ে গিয়ে সমস্ত সেনাদের ডাকল৷ 17 তারা যীশুকে বেগুনী রঙের কাপড় পরিয়ে দিল এবং কাঁটার মুকুট তৈরী করে তাঁর মাথায় চাপিয়ে দিল৷ 18 তারা তাঁকে অভিবাদন জানিয়ে বলতে লাগল, ‘ইহুদীদের রাজা নমস্কার!’ 19 তারা তাঁর মাথায় একটা লাঠি দিয়ে বার বার মারতে লাগল ও তাঁর গায়ে থুথু ছিটিয়ে দিল৷ তাঁর সামনে হাঁটু গেড়ে তাঁকে প্রণাম করতে থাকল৷ 20 তাঁকে নিয়ে এইভাবে মজা করবার পর তারা ঐ বেগুনী রঙের কাপড় খুলে নিয়ে তাঁর নিজের কাপড় পরিয়ে দিল৷ আর ক্রুশে দেবার জন্য তাঁকে বাইরে নিয়ে গেল৷ 21 সেই সময় শিমোন নামে একটা লোক কুরীশীর গ্রামাঞ্চল থেকে সেই পথ ধরে আসছিল৷ সে আলেকসান্দর ও রূফের বাবা৷ সেনারা তাকে যীশুর ক্রুশ বয়ে নিয়ে যাবার জন্য বেগার ধরল৷ 22 পরে তারা যীশুকে গলগথা নামে এক জায়গায় নিয়ে এল৷ গলগথার অর্থ ‘মাথার খুলির স্থান৷’ 23 তারা তাঁকে গন্ধরস মেশানো দ্রাক্ষারস পান করতে দিল; কিন্তু তিনি তা পান করলেন না৷ 24 পরে তারা তাঁকে ক্রুশে বিদ্ধ করল৷ তাঁর কাপড়গুলোকে আলাদা আলাদা করে ঘুঁটি চেলে ঠিক করল কে তাঁর পোশাকের কোন অংশ পাবে৷ 25 সকাল ন’টার সময়ে তারা তাঁকে ক্রুশে দিল৷ 26 তারা তাঁর ক্রুশের ওপর তাঁর বিরুদ্ধে দোষপত্র লেখা একটা ফলক লাগিয়ে দিয়েছিল৷ তাতে লেখা ছিল, ‘ইহুদীদের রাজা৷’ 27 তারা তাঁর সাথে আর দুজন দস্য়ুকে ক্রুশে দিল৷ একজনকে তাঁর ডানদিকে এবং অপরজনকে তার বাঁদিকে৷ 28 29 লোকেরা সেই পথ দিয়ে য়েতে য়েতে যীশুর নিন্দা করতে লাগল৷ তারা মাথা নেড়ে বলল, ‘ওহে, তুমি না মন্দির ভেঙ্গে ফেলে তিনদিনের মধ্যে তা আবার গেঁথে তোল? 30 ক্রুশ থেকে নেমে নিজেকে রক্ষা কর৷’ 31 ঠিক একইভাবে প্রধান যাজকরা এবং ব্যবস্থার শিক্ষকরা তাঁকে ঠাট্টা করে নিজেদের মধ্যে বলাবলি করলেন, ‘ঐ লোকটি অন্যদের রক্ষা করত, কিন্তু নিজেকে রক্ষা করতে পারে না৷ 32 খ্রীষ্ট, ঐ ইস্রায়েলের রাজা এখন ক্রুশ থেকে নেমে আসুক, তাহলে আমরা বিশ্বাস করব৷’ তাঁর সঙ্গে যাঁরা ক্রুশে বিদ্ধ হয়েছিল, তারাও তাঁকে ঠাট্টা করতে লাগল৷ 33 পরে বেলা বারোটা থেকে তিনটে পর্যন্ত সমস্ত দেশ অন্ধকারে ছেয়ে গেল৷ 34 আর তিনটের সময় যীশু চিত্কার করে উঠলেন, ‘এলোই, এলোই, লামা শবক্তানী?’ যার অর্থ ‘ঈশ্বর আমার, ঈশ্বর আমার, তুমি কেন আমায় ত্যাগ করেছ?’৷ 35 যাঁরা তাঁর কাছে দাঁড়িয়েছিল, তাদের মধ্যে কেউ কেউ এই কথা শুনে বলল, ‘দেখ, ও এলীয়কে ডাকছে৷’ 36 একজন লোক দৌড়ে গিয়ে একটা স্পঞ্জ এনে সিরকায় ভিজিয়ে নলে করে তাঁর মুখে তুলে ধরে বলল, ‘দেখা যাক, এলীয় ওকে নামাতে আসে কি না৷’ 37 পরে যীশু জোরে চিত্কার করে উঠে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন৷ 38 আর মন্দিরের পর্দা উপর থেকে নীচে পর্যন্ত চিরে দুভাগ হয়ে গেল৷ 39 আর য়ে সেনাপতি তাঁর সামনে দাঁড়িয়েছিলেন, তিনি যীশুকে এইভাবে মৃত্যুবরণ করতে দেখে বললেন, ‘সত্যিই ইনি ঈশ্বরের পুত্র ছিলেন৷’ 40 কয়েকজন স্ত্রীলোক দূর থেকে দেখছিলেন, তাদের মধ্যে মগ্দলীনী মরিয়ম, শালোমী আর ছোট যাকোব এবং য়োশির মা মরিয়ম সেখানে ছিলেন৷ 41 যখন যীশু গালীলে ছিলেন, তখন এই মহিলারা তাঁর সঙ্গে য়েতেন এবং তাঁর দেখাশোনা করতেন৷ আরও বহু স্ত্রীলোক তখন সেখানে ছিলেন যাঁরা যীশুর সাথে জেরুশালেমে এসেছিলেন৷ 42 সেই দিনটা ছিল আযোজনের দিন অর্থাত্ বিশ্রামের আগের দিন৷ 43 সন্ধ্যাবেলায় আরিমাথিযার য়োষেফ এলেন, তিনি ছিলেন ইহুদী মহাসভার একজন মাননীয় সভ্য়, যিনি ঈশ্বরের রাজ্যের জন্য অপেক্ষা করছিলেন৷ তিনি সাহস করে পীলাতের কাছে গিয়ে সমাধি দেওযার জন্য যীশুর দেহটি চাইলেন৷ 44 যীশু এর মধ্যে মারা গেছেন শুনে পীলাত আশ্চর্য হলেন, তিনি তাই সেনাপতিকে ডেকে জিজ্ঞাসা করলেন তাঁর মৃত্যু হয়েছে কিনা৷ 45 সেনাপতির কাছে মৃত্যুর খবরটি জানতে পেরে তিনি য়োষেফকে যীশুর দেহটি নিয়ে য়েতে দিলেন৷ 46 য়োষেফ কিছুটা মসীনা কাপড় কিনে ক্রুশ থেকে যীশুর দেহ নামিয়ে ঐ মসীনা কাপড়ে জড়ালেন এবং পাথর কেটে তৈরী এমন একটা সমাধিগুহার মধ্যে তাঁর দেহটাকে রাখলেন৷ তারপর একটা পাথর গুহার মুখে গড়িয়ে সমাধির মুখটি বন্ধ করে দিলেন৷ 47 যীশুকে য়েখানে সমাধি দেওযা হল সেই স্থানটি মরিয়ম মগ্দলীনী ও য়োশির মা মরিয়ম দেখলেন৷
Mark 16:1 বিশ্রাম শেষ হলে মরিয়ম মগ্দলীনী, যাকোবের মা মরিয়ম সুগন্ধি মশলা কিনলেন য়েন গিয়ে যীশুর দেহে মাখাতে পারেন৷ 2 সপ্তাহের প্রথম দিন ভোরে, ঠিক সূর্য় ওঠার পরই তাঁরা সমাধিগুহার কাছে গেলেন৷ 3 তাঁরা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করছিলেন, ‘কে আমাদের জন্য সমাধিগুহার মুখ থেকে পাথরটি সরিয়ে দেবে?’ 4 তখন তাঁরা দেখতে পেলেন য়ে পাথরটা সরানো রয়েছে৷ সেই পাথরটা মস্ত বড় ছিল৷ 5 পরে তাঁরা সমাধিগুহার ভিতরে গিয়ে দেখলেন, একজন যুবক ডানদিকে সাদা পোশাক পরে বসে আছেন; তাতে তারা ভয়ে চমকে উঠলেন৷ 6 তখন তিনি তাঁদের বললেন, ‘ভয় পেও না৷ তোমরা তো নাসরতীয় যীশুর খোঁজ করছ যাকে ক্রুশে বিদ্ধ করা হয়েছিল? তিনি বেঁচে উঠেছেন! তিনি এখানে নেই৷ দেখ, এখানে তাঁকে রাখা হয়েছিল৷ 7 যাও, পিতর ও তাঁর অন্যান্য শিষ্যদের বল গিয়ে, দেখ তিনি তোমাদের আগেই গালীলে যাচ্ছেন৷ তিনি য়েমন তোমাদের বলেছিলেন, ঠিক সেখানে তাঁকে দেখতে পাবে৷’ 8 তখন তারা সমাধিগুহা থেকে বেরিয়ে দৌড়ালেন, কারণ তাঁর ভীষণ ভয় পেয়েছিলেন এবং কিছুই বুঝে উঠতে পারলেন না৷ তাঁরা কাউকে কিছু বললেন না, কারণ তাঁরা ভয় পেয়েছিলেন৷ 9 তাঁর পুনরুত্থানের পর সপ্তাহের প্রথম দিনে অর্থাত্ রবিবার ভোরে, তিনি প্রথমে মগ্দলীনী মরিয়মকে দেখা দিলেন, যার থেকে তিনি সাতটা ভূতকে তাড়িয়েছিলেন৷ 10 মরিয়ম গিয়ে যাঁরা যীশুর সঙ্গে থাকতেন তাঁদের এই কথা বললেন৷ তাঁরা তখনও শোকে কাঁদছিলেন; 11 কিন্তু যখন শুনলেন য়ে যীশু বেঁচে আছেন এবং তাঁকে দেখা দিয়েছেন, তাঁরা ঐ কথা বিশ্বাস করলেন না৷ 12 পরে তাদের মধ্যে দুজন যখন গ্রামের দিকে হেঁটে যাচ্ছিলেন এমন সময় তিনি তাঁদের দেখা দিলেন, আর তাঁকে অন্যরকম দেখাল৷ 13 তাঁরা গিয়ে অন্য বাকী সব শিষ্যদের এটা জানালেন, কিন্তু তাঁদের কথাতেও তাঁরা বিশ্বাস করলেন না৷ 14 পরে সেই এগারোজন শিষ্য যখন খেতে বসেছেন, তিনি তাঁদের কাছে দেখা দিলেন৷ তিনি তাঁদের অবিশ্বাস ও কঠোর মনোভাবের জন্য তিরস্কার করলেন, কারণ তিনি বেঁচে ওঠার পর যাঁরা তাঁকে দেখেছিলেন, তাঁদের কথায়ও তাঁরা বিশ্বাস করেন নি৷ 15 আর তিনি তাঁদের বললেন, ‘তোমরা সমস্ত পৃথিবীতে যাও, এবং সব লোকের কাছে সুসমাচার প্রচার কর৷ 16 যাঁরা বিশ্বাস করে বাপ্তাইজ হবে, তারা রক্ষা পাবে, কিন্তু যাঁরা বিশ্বাস করবে না, তাদের দোষী সাব্যস্ত করা হবে৷ 17 যাঁরা বিশ্বাস করবে এই চিহ্নগুলি তাদের অনুবর্তী হবে৷ আমার নামে তারা ভূত তাড়াবে; নতুন নতুন ভাষায় কথা বলবে; 18 হাতে করে সাপ তুলবে এবং মারাত্মক কিছু খেলেও তাদের কোন ক্ষতি হবে না; আর তারা অসুস্থ লোকের ওপর হাত রাখলে তারা সুস্থ হবে৷’ 19 তাঁদের সঙ্গে কথা বলার পর প্রভু যীশুকে স্বর্গে তুলে নেওযা হল এবং তিনি ঈশ্বরের ডানদিকে বসলেন৷ 20 আর তাঁরা গিয়ে সব জায়গায় সুসমাচার প্রচার করতে লাগলেন, এবং প্রভু তাঁদের সঙ্গে কাজ করলেন, আর অলৌকিক কাজের মধ্য দিয়ে তাঁর সুসমাচারের সত্যতা প্রমাণ করলেন৷
Luke 1:1 মাননীয় থিয়ফিল, আমাদের মধ্যে য়ে সব ঘটনা ঘটেছে সেগুলির বিবরণ লিপিবদ্ধ করার জন্য বহু ব্যক্তি চেষ্টা করেছেন৷ 2 তাঁরা সেই একই বিষয় লিখেছেন, যা আমরা জেনেছি তাঁদের কাছ থেকে, যাঁরা প্রথম থেকে নিজেদের চোখে দেখেছেন এবং এই বার্তা ঘোষণা করেছেন৷ 3 তাই আমার মনে হল য়ে যখন আমি সেই সব বিষয় প্রথম থেকে ভালভাবে খোঁজ খবর নিয়েছি তখন তা সুন্দরভাবে গুছিয়ে লিখি৷ 4 যার ফলে আপনি জানবেন, য়ে বিষয়গুলি আপনাকে জানানো হয়েছে সেগুলি সত্য৷ 5 যিহূদিযার রাজা হেরোদের সময়ে সখরিয় নামে একজন যাজক ছিলেন৷ ইনি ছিলেন অবিয়ের দলেরযাজকদের একজন৷ সখরিয়র স্ত্রী ইলীশাবেত্ ছিলেন হারোণের বংশধর৷ 6 তাঁরা উভয়েই ঈশ্বরের দৃষ্টিতে ধার্মিক ছিলেন৷ প্রভুর সমস্ত আদেশ ও বিধি-ব্যবস্থা তাঁরা নিখুঁতভাবে পালন করতেন৷ 7 ইলীশাবেত্ বন্ধ্যা হওযার দরুন তাঁদের কোন সন্তান হয় নি৷ তাঁদের উভয়েরই অনেক বয়স হয়ে গিয়েছিল৷ 8 একবার তাঁর দলের যাজকদের ওপর দাযিত্বভার পড়েছিল, তখন সখরিয় যাজক হিসেবে মন্দিরে ঈশ্বরের সেবা করছিলেন৷ 9 যাজকদের কার্য়প্রণালী অনুযাযী তাঁকে বেছে নেওযা হয়েছিল য়েন তিনি মন্দিরের মধ্যে গিয়ে প্রভুর সামনে ধূপ জ্বালাতে পারেন৷ 10 ধূপ জ্বালাবার সময় বাইরে অনেক লোক জড় হয়ে প্রার্থনা করছিল৷ 11 এমন সময় প্রভুর এক স্বর্গদূত সখরিয়র সামনে এসে উপস্থিত হয়ে ধূপবেদীর ডানদিকে দাঁড়ালেন৷ 12 সখরিয় সেই স্বর্গদূতকে দেখে চমকে উঠলেন এবং খুব ভয় পেলেন৷ 13 কিন্তু স্বর্গদূত তাঁকে বললেন, ‘সখরিয় ভয় পেও না, কারণ তুমি য়ে প্রার্থনা করেছ, ঈশ্বর তা শুনেছেন৷ তোমার স্ত্রী ইলীশাবেতের একটি পুত্র সন্তান হবে, তুমি তার নাম রাখবে য়োহন৷ 14 সে তোমার জীবনে আনন্দ ও সুখের কারণ হবে, তার জন্মের দরুণ আরো অনেকে আনন্দিত হবে৷ 15 কারণ প্রভুর দৃষ্টিতে য়োহন হবে এক মহান ব্যক্তি৷ সে অবশ্যই দ্রাক্ষারস বা নেশার পানীয় গ্রহণ করবে না৷ জন্মের সময় থেকেই য়োহন পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হবে৷ 16 ইস্রায়েলীয়দের অনেক লোককেই সে তাদের প্রভু ঈশ্বরের পথে ফেরাবে৷ 17 য়োহন এলীয়েরআত্মায় ও শক্তিতে প্রভুর আগে চলবে৷ সে পিতাদের মন তাদের সন্তানদের দিকে ফেরাবে, আর অধার্মিকদের মনের ভাব বদলে ধার্মিক লোকদের মনের ভাবের মতো করবে৷ প্রভুর জন্য সে এইভাবে লোকদের প্রস্তুত করবে৷’ 18 তখন সখরিয় সেই স্বর্গদূতকে বললেন, ‘আমি কিভাবে জানব য়ে সত্যিই এসব হবে? কারণ আমি তো বৃদ্ধ হয়ে গেছি, আর আমার স্ত্রীরও অনেক বয়স হয়ে গেছে৷’ 19 এর উত্তরে স্বর্গদূত তাঁকে বললেন, ‘আমি গাব্রিয়েল, ঈশ্বরের সামনে দাঁড়িয়ে থাকি; আর তোমার সঙ্গে কথা বলার জন্য ও তোমাকে এই সুখবর দেবার জন্যই আমাকে পাঠানো হয়েছে৷ 20 কিন্তু জেনে রেখো! এইসব ঘটনা ঘটা পর্যন্ত তুমি বোবা হয়ে থাকবে, কথা বলতে পারবে না, কারণ তুমি আমার কথা বিশ্বাস করলে না, কিন্তু আমার এইসব কথা নিরুপিত সময়েই পূর্ণ হবে৷’ 21 এদিকে বাইরে লোকেরা সখরিয়র জন্য অপেক্ষা করছিল, তিনি এতক্ষণ পর্যন্ত মন্দিরের মধ্যে কি করছেন একথা ভেবে তারা অবাক হচ্ছিল৷ 22 পরে তিনি যখন বেরিয়ে এলেন, তখন লোকদের সঙ্গে কথা বলতে পারলেন না, এতে লোকেরা বুঝতে পারল মন্দিরের মধ্যে তিনি নিশ্চয়ই কোন দর্শন পেয়েছেন৷ তিনি লোকদের ইশারায় তাঁর বক্তব্য বোঝাতে লাগলেন, কিন্তু কোনরকম কথা বলতে পারলেন না৷ 23 এরপর দৈনিক সেবাকার্য়ের শেষে তিনি তাঁর বাড়ি ফিরে গেলেন৷ 24 এর কিছুক্ষণ পরে তার স্ত্রী ইলীশাবেত্ গর্ভবতী হলেন; আর পাঁচ মাস পর্যন্ত লোক সাক্ষাতে বের হলেন না৷ তিনি বলতেন, 25 ‘এখন প্রভুই এইভাবে আমায় সাহায্য করেছেন! সমাজে আমার য়ে লজ্জা ছিল, কৃপা করে এখন এইভাবে তিনি তা দূর করে দিলেন৷’ 26 ইলীশাবেত্ যখন ছমাসের গর্ভবতী, তখন ঈশ্বর গাব্রিয়েল, স্বর্গদূতকে গালীলে নাসরত্ নগরে এক কুমারীর কাছে পাঠালেন৷ এই কুমারী ছিলেন য়োষেফ নামে এক ব্যক্তির বাগদত্তা৷ য়োষেফ ছিলেন রাজা দাযূদের বংশধর, আর য়ে কুমারীর কাছে তাঁকে পাঠানো হয়েছিল তাঁর নাম মরিয়ম৷ 27 28 গাব্রিয়েল মরিয়মের কাছে এসে বললেন, ‘তোমার মঙ্গল হোক্! প্রভু তোমার প্রতি মুখ তুলে চেয়েছেন, তিনি তোমার সঙ্গে আছেন৷’ 29 এই কথা শুনে মরিয়ম খুবই বিচলিত ও অবাক হয়ে ভাবতে লাগলেন, ‘এ কেমন শুভেচ্ছা?’ 30 স্বর্গদূত তাঁকে বললেন, ‘মরিয়ম তুমি ভয় পেও না, কারণ ঈশ্বর তোমার ওপর সন্তুষ্ট হয়েছেন৷ 31 শোন! তুমি গর্ভবতী হবে আর তোমার এক পুত্র সন্তান হবে৷ তুমি তাঁর নাম রাখবে যীশু৷ 32 তিনি হবেন মহান, তাঁকে পরমেশ্বরের পুত্র বলা হবে, আর প্রভু ঈশ্বর তাঁর পিতৃপুরুষ রাজা দাযূদের সিংহাসন তাঁকে দেবেন৷ 33 তিনি যাকোবের বংশের লোকদের ওপরে চিরকাল রাজত্ব করবেন, তাঁর রাজত্বের কখনও শেষ হবে না৷’ 34 তখন মরিয়ম স্বর্গদূতকে বললেন, ‘এ কেমন করে সন্ভব? কারণ আমি তো কুমারী!’ 35 এর উত্তরে স্বর্গদূত বললেন, ‘পবিত্র আত্মাতোমার ওপর অধিষ্ঠান করবেন আর পরমেশ্বরের শক্তি তোমাকে আবৃত করবে; তাই য়ে পবিত্র শিশুটি জন্মগ্রহণ করবে তাঁকে ঈশ্বরের পুত্র বলা হবে৷ 36 আর শোন, তোমার আত্মীযা ইলীশাবেত্ যদিও এখন অনেক বৃদ্ধা তবু সে গর্ভে পুত্রসন্তান ধারণ করছে৷ এই স্ত্রীলোকের বিষয়ে লোকে বলত য়ে তার কোন সন্তান হবে না, কিন্তু সে এখন ছমাসের গর্ভবতী৷ 37 কারণ ঈশ্বরের পক্ষে কোন কিছুই অসাধ্য নয়!’ 38 মরিয়ম বললেন, ‘আমি প্রভুর দাসী৷ আপনি যা বলেছেন আমার জীবনে তাই হোক্!’ এরপর স্বর্গদূত মরিয়মের কাছ থেকে চলে গেলেন৷ 39 তখন মরিয়ম উঠে তাড়াতাড়ি করে যিহূদার পার্বত্য অঞ্চলের একটি নগরে গেলেন৷ 40 সেখানে সখরিয়র বাড়িতে গিয়ে ইলীশাবেতকে অভিবাদন জানালেন৷ 41 ইলীশাবেত্ যখন মরিয়মের সেই অভিবাদন শুনলেন, তখনই তাঁর গর্ভের সন্তানটি আনন্দে নেচে উঠল; আর ইলীশাবেত্ পবিত্র আত্মাতে পূর্ণ হলেন৷ 42 এরপর তিনি খুব জোরে জোরে বলতে লাগলেন, ‘সমস্ত স্ত্রীলোকের মধ্যে তুমি ধন্যা, আর তোমার গর্ভে য়ে সন্তান আছেন তিনি ধন্য৷ 43 কিন্তু আমার প্রভুর মা য়ে আমার কাছে এসেছেন, এমন সৌভাগ্য আমার কি করে হল? 44 কারণ য়ে মুহূর্তে তোমার কন্ঠস্বর আমি শুনলাম, আমার গর্ভের শিশুটি তখনই নড়ে উঠল৷ 45 আর তুমি ধন্যা, কারণ তুমি বিশ্বাস করেছ য়ে প্রভু তোমায় যা বলেছেন তা পূর্ণ হবে৷’ 46 তখন মরিয়ম বললেন, 47 ‘আমার আত্মা প্রভুর প্রশংসা করছে, আর আমার আত্মা আমার ত্রাণকর্তা ঈশ্বরকে পেয়ে আনন্দিত৷ 48 কারণ তাঁর এই তুচ্ছ দাসীর দিকে তিনি মুখ তুলে চেয়েছেন৷ হ্যাঁ, এখন থেকে সকলেই আমাকে ধন্যা বলবে৷ 49 কারণ সেই একমাত্র সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমার জীবনে কত না মহত্ কাজ করেছেন৷ পবিত্র তাঁর নাম৷ 50 আর যাঁরা বংশানুক্রমে তাঁর উপাসনা করে তিনি তাদের দযা করেন৷ 51 তাঁর বাহুর য়ে পরাক্রম, তা তিনি দেখিয়েছেন৷ যাদের মন অহঙ্কার ও দন্ভপূর্ণ চিন্তায় ভরা, তাদের তিনি ছিন্নভিন্ন করে দেন৷ 52 তিনিই শাসকদের সিংহাসনচ্যুত করেন, যাঁরা নতনম্র তাদের উন্নত করেন৷ 53 ক্ষুধার্তকে তিনি উত্তম দ্রব্য দিয়ে তৃপ্ত করেন; আর বিত্তবানকে নিঃস্ব করে বিদায় করেন৷ 54 তিনি তাঁর দাস ইস্রায়েলকে সাহায্য করতে এসেছেন৷ 55 য়েমন তিনি আমাদের পূর্বপুরুষদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি তেমনই করবেন৷ অব্রাহাম ও তাঁর বংশের লোকদের চিরকাল দযা করার কথা তিনি মনে রেখেছেন৷’ 56 ইলীশাবেতের ঘরে মরিয়ম প্রায় তিনমাস থাকলেন৷ পরে তিনি তাঁর নিজের বাড়িতে ফিরে গেলেন৷ 57 ইলীশাবেতের প্রসবের সময় হলে তিনি একটি পুত্র সন্তান প্রসব করলেন৷ 58 তাঁর প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজনেরা যখন শুনল য়ে প্রভু তাঁর প্রতি কি মহা দযা করেছেন, তখন তারা তাঁর আনন্দে আনন্দিত হল৷ 59 শিশুটি যখন আট দিনের, সেইসময় তাঁরা শিশুটিকে নিয়ে সুন্নত করাতে এলেন৷ সবাই শিশুটির বাবার নাম অনুসারে শিশুর নাম সখরিয় রাখার কথা চিন্তা করছিলেন৷ 60 কিন্তু তার মা বলে উঠলেন, ‘না! ওর নাম হবে য়োহন৷’ 61 তখন তাঁরা ইলীশাবেতকে বললেন, ‘আপনার আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে তো কারও ঐ নাম নেই!’ 62 এরপর তারা ইশারা করে ছেলেটির বাবার কাছে জানতে চাইলেন তিনি কি নাম দিতে চান৷ 63 সখরিয় ইশারা করে লেখার ফলক চেয়ে নিলেন ও তাতে লিখলেন, ‘ওর নাম য়োহন৷’ এতে তাঁরা সকলে আশ্চর্য হয়ে গেলেন, 64 তখনই সখরিয়র জিভের জড়তা চলে গেল ও মুখ খুলে গেল, আর তিনি ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগলেন৷ 65 আশপাশের সকলে এতে খুব ভয় পেয়ে গেল, যিহূদিযার পার্বত্য অঞ্চলের লোকরা সকলে এবিষয়ে বলাবলি করতে লাগল৷ 66 যাঁরা এসব কথা শুনল তারা সকলেই আশ্চর্য হয়ে বলতে লাগল, ‘ভবিষ্যতে এই ছেলেটি কি হবে?’ কারণ প্রভুর শক্তি এর সঙ্গে আছে৷ 67 পরে ছেলেটির বাবা সখরিয় পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হয়ে ভাববাণী বলতে লাগলেন: 68 ‘ইস্রায়েলের প্রভু ঈশ্বরের প্রশংসা হোক্, কারণ তিনি তাঁর নিজের লোকদের সাহায্য করতে ও তাদের মুক্ত করতে এসেছেন৷ 69 আমাদের জন্য তিনি তাঁর দাস দাযূদের বংশে একজন মহাশক্তিসম্পন্ন ত্রাণকর্তাকে দিয়েছেন৷ 70 এ বিষয়ে তাঁর পবিত্র ভাববাদীদেরমাধ্যমে তিনি বহুপূর্বেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন৷ 71 শত্রুদের হাত থেকে ও যাঁরা আমাদের ঘৃণা করে তাদের কবল থেকে উদ্ধার করার প্রতিশ্রুতি৷ 72 তিনি বলেছিলেন, আমাদের পিতৃপুরুষদের প্রতি দযা করবেন এবং তিনি সেই প্রতিশ্রুতি স্মরণ করেছেন৷ 73 এ সেই প্রতিশ্রুতি যা তিনি আমাদের পিতৃপুরুষ অব্রাহামের কাছে করেছিলেন৷ 74 শত্রুদের হাত থেকে আমাদের উদ্ধার করার প্রতিশ্রুতি য়েন আমরা নির্ভয়ে তাঁর সেবা করতে পারি: 75 আর আমাদের জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তাঁর দৃষ্টিতে পবিত্র ও ধার্মিক থেকে তাঁর সেবা করে য়েতে পারি৷ 76 এখন হে বালক, তোমাকে বলা হবে পরমেশ্বরের ভাববাদী; কারণ তুমি প্রভুর পথ প্রস্তুত করবার জন্য তাঁর আগে আগে চলবে৷ 77 তুমি তাঁর লোকদের বলবে, ঈশ্বরের দযায় তোমরা পাপের ক্ষমা দ্বারা উদ্ধার পাবে৷ 78 কারণ আমাদের ঈশ্বরের দযা ও করুণার উর্দ্ধ থেকে এক নতুন দিনের ভোরের আলো আমাদের ওপর ঝরে পড়বে৷ 79 যাঁরা অন্ধকার ও মৃত্যুর ছাযায় বসে আছে তাদের ওপর সেই আলো এসে পড়বে; আর তা আমাদের শান্তির পথে পরিচালিত করবে৷’ 80 সেই শিশু য়োহন বড় হয়ে উঠতে লাগলেন, আর দিন দিন আত্মায় শক্তিশালী হয়ে উঠতে থাকলেন৷ ইস্রায়েলীয়দের কাছে প্রকাশ্যে বেরিয়ে আসার আগে পর্যন্ত তিনি নির্জন স্থানগুলিতে জীবনযাপন করছিলেন৷
Luke 2:1 সেই সময় আগস্ত কৈসর হুকুম জারি করলেন য়ে, রোম সাম্রাজ্যের সব জায়গায় লোক গণনা করা হবে৷ 2 এটাই হল সুরিযার রাজ্যপাল কুরীণিয়ের সময়ে প্রথম আদমশুমারি৷ 3 আর প্রত্যেকে নিজের নিজের শহরে নাম লেখাবার জন্য গেল৷ 4 য়োষেফ ছিলেন রাজা দাযূদের বংশধর, তাই তিনি গালীল প্রদেশের নাসরত্ থেকে রাজা দাযূদের বাসভূমি বৈত্লেহমে গেলেন৷ 5 য়োষেফ তাঁর বাগ্দত্তা স্ত্রী মরিয়মকে সঙ্গে নিয়ে নাম লেখাতে চললেন৷ এই সময় মরিয়ম ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা৷ 6 তাঁরা যখন সেখানে ছিলেন, তখন মরিয়মের প্রসব বেদনা উঠল৷ 7 আর মরিয়ম তাঁর প্রথম সন্তান প্রসব করলেন৷ তিনি সদ্য়োজাত সেই শিশুকে কাপড়ের টুকরো দিয়ে জড়িয়ে একটি জাবনা খাবার পাত্রে শুইয়ে রাখলেন, কারণ ঐ নগরের অতিথিশালায় তাঁদের জন্য জায়গা ছিল না৷ 8 সেখানে গ্রামের বাইরে মেষপালকেরা রাতে মাঠে তাদের মেষপাল পাহারা দিচ্ছিল৷ 9 এমন সময় প্রভুর এক স্বর্গদূত তাদের সামনে উপস্থিত হলে প্রভুর মহিমা চারদিকে উজ্জ্বল হয়ে দেখা দিল৷ এই দেখে মেষপালকরা খুব ভয় পেয়ে গেল৷ 10 সেই স্বর্গদূত তাদের বললেন, ‘ভয় নেই, দেখ আমি তোমাদের কাছে এক আনন্দের সংবাদ নিয়ে এসেছি৷ এই সংবাদ সকলের জন্য মহা আনন্দের হবে৷ 11 কারণ রাজা দাযূদের নগরে আজ তোমাদের জন্য একজন ত্রাণকর্তার জন্ম হয়েছে৷ তিনি খ্রীষ্ট প্রভু৷ 12 আর তোমাদের জন্য এই চিহ্ন রইল, তোমরা দেখবে একটি শিশুকে কাপড়ে জড়িয়ে একটা জাবনা খাবার পাত্রে শুইয়ে রাখা হয়েছে৷’ 13 সেই সময় হঠাত্ স্বর্গীয় বাহিনীর এক বিরাট দল ঐ স্বর্গদূতদের সঙ্গে য়োগ দিয়ে ঈশ্বরের প্রশংসা করতে করতে বললেন, 14 ‘স্বর্গে ঈশ্বরের মহিমা, পৃথিবীতে তাঁর প্রীতির পাত্র মনুষ্যদের মধ্যে শান্তি৷’ 15 স্বর্গদূতেরা তাদের কাছ থেকে স্বর্গে ফিরে গেলে মেষপালকরা পরস্পর বলাবলি করতে লাগল, ‘চল, আমরা বৈত্লেহমে যাই, প্রভু আমাদের য়ে ঘটনার কথা জানালেন সেখানে গিয়ে তা দেখি৷’ 16 তারা সেখানে ছুটে গেলে মরিয়ম, য়োষেফ এবং সেই শিশুটিকে একটি জাবনা খাবার পাত্রে শোযানো দেখল৷ 17 মেষপালকেরা শিশুটিকে দেখতে পেয়ে, সেই শিশুটির বিষয়ে তাদের যা বলা হয়েছিল সেকথা সকলকে জানাল৷ 18 মেষপালকদের মুখে ঐ কথা যাঁরা শুনল তারা সকলে আশ্চর্য হয়ে গেল৷ 19 কিন্তু মরিয়ম এই কথা মনের মধ্যে গেঁথে নিয়ে সব সময় এবিষয়ে চিন্তা করতে লাগলেন৷ 20 এরপর মেষপালকরা তাদের কাছে যা বলা হয়েছিল সেই অনুসারে সব কিছু দেখে ও শুনে ঈশ্বরের প্রশংসা করতে করতে ঘরে ফিরে গেল৷ 21 এর আট দিন পরে সুন্নত করার সময়ে শিশুটির নাম রাখা হল যীশু৷ তাঁর মাতৃগর্ভে আসার আগেই স্বর্গদূত এই নাম রেখেছিলেন৷ 22 মোশির বিধি-ব্যবস্থা অনুসারে শুচিকরণ অনুষ্ঠানের সময় হলে তাঁরা যীশুকে জেরুশালেমে নিয়ে গেলেন, য়েন সেখানে প্রভুর সামনে তাঁকে উত্সর্গ করতে পারেন৷ 23 কারণ প্রভুর বিধি-ব্যবস্থায় লেখা আছে, ‘স্ত্রীলোকের প্রথম সন্তানটি যদি পুত্র হয়, তবে তাকে ‘প্রভুর উদ্দেশ্যে উত্সর্গ করতে হবে,” 24 আর প্রভুর বিধি-ব্যবস্থা অনুসারে, ‘এক জোড়া ঘুঘু অথবা দুটি পায়রার বাচ্চা উত্সর্গ করতে হবে৷’৷ সুতরাং য়োষেফ এবং মরিয়ম সেইমত কাজ করবার জন্য জেরুশালেমে গেলেন৷ 25 জেরুশালেমে সেই সময় শিমিযোন নামে একজন ধার্মিক ও ঈশ্বরভক্ত লোক বাস করতেন৷ তিনি ইস্রায়েলের মুক্তির অপেক্ষায় ছিলেন৷ পবিত্র আত্মা তাঁর ওপর অধিষ্ঠান করছিলেন৷ 26 পবিত্র আত্মার মাধ্যমে তাঁর কাছে একথা প্রকাশ করা হয়েছিল য়ে প্রভু খ্রীষ্টকে না দেখা পর্যন্ত তাঁর মৃত্যু হবে না৷ 27 পবিত্র আত্মার প্রেরণায় তিনি সেদিন মন্দিরে এসেছিলেন৷ যীশুর বাবা-মা মোশির বিধি-ব্যবস্থা পালন করতে যীশুকে নিয়ে সেখানে এলেন৷ 28 তখন শিমিযোন যীশুকে কোলে তুলে নিয়ে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিয়ে বললেন, 29 ‘হে প্রভু, তোমার প্রতিশ্রুতি অনুসারে তুমি তোমার দাসকে শান্তিতে বিদায় দাও৷ 30 কারণ আমি নিজের চোখে তোমার পরিত্রাণ দেখেছি৷ 31 য়ে পরিত্রাণ তুমি সকল লোকের সাক্ষাতে প্রস্তুত করেছ৷ 32 তিনি অইহুদীদের অন্তর আলোকিত করার জন্য আলো; আর তিনিই তোমার প্রজা ইস্রায়েলের জন্য সম্মান আনবেন৷’ 33 তাঁর বিষয়ে যা বলা হল তা শুনে য়োষেফ ও মরিয়ম আশ্চর্য হয়ে গেলেন৷ 34 এরপর শিমিযোন তাঁদের আশীর্বাদ করে যীশুর মা মরিয়মকে বললেন, ‘ইনি হবেন ইস্রায়েলের মধ্যে বহু লোকের পতন ও উত্থানের কারণ৷ ঈশ্বর হতে আগত এমন চিহ্ন যা বহু লোকই অগ্রাহ্য় করবে৷ 35 এতে বহু লোকের হৃদয়ের গোপন চিন্তা প্রকাশ হয়ে পড়বে৷ যা যা ঘটবে তাতে তোমার হৃদয় বিদীর্ণ হবে৷’ 36 সেখানে হান্না নামে একজন ভাববাদিনী ছিলেন৷ তিনি আশের গোষ্ঠীর পনুয়েলের কন্যা৷ তাঁর অনেক বয়স হয়েছিল৷ বিবাহের পর সাত বছর তিনি স্বামীর ঘর করেন, 37 তারপর চুরাশি বছর বয়স পর্যন্ত তিনি বৈধব্য জীবনযাপন করেছিলেন৷ মন্দির ছেড়ে তিনি কোথাও য়েতেন না; উপবাস ও প্রার্থনাসহ সেখানে দিন-রাত ঈশ্বরের উপাসনা করতেন৷ 38 ঠিক সেই মুহূর্তে তিনি তাঁদের দিকে এগিয়ে এসে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিতে আরন্ভ করলেন; আর যাঁরা জেরুশালেমের মুক্তির অপেক্ষায় ছিল তাদের সকলের কাছে সেই শিশুটির বিষয় বলতে লাগলেন৷ 39 প্রভুর বিধি-ব্যবস্থা অনুসারে যা যা করণীয় তা সম্পূর্ণ করে য়োষেফ ও মরিয়ম তাঁদের নিজেদের নগর নাসরতে ফিরে গেলেন৷ 40 শিশুটি ক্রমে ক্রমে বেড়ে উঠতে লাগলেন ও বলিষ্ঠ হয়ে উঠলেন৷ তিনি জ্ঞানে পূর্ণ হতে থাকলেন, তাঁর ওপরে ঈশ্বরের আশীর্বাদ ছিল৷ 41 নিস্তারপর্বপালনের জন্য তাঁর মা-বাবা প্রতি বছর জেরুশালেমে য়েতেন৷ 42 যীশুর বয়স যখন বারো বছর, তখন তাঁরা যথারীতি সেই পর্বে য়োগ দিতে গেলেন৷ 43 পর্বের শেষে তাঁরা যখন বাড়ি ফিরছিলেন, তখন বালক যীশু জেরুশালেমেই রয়ে গেলেন, এবিষয়ে তাঁর মা-বাবা কিছুই জানতে পারলেন না৷ 44 তাঁরা মনে করলেন য়ে তিনি দলের সঙ্গেই আছেন৷ তাঁরা এক দিনের পথ চলার পর আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের মধ্যে তাঁর খোঁজ করতে লাগলেন৷ 45 কিন্তু তাঁকে না পেয়ে তাঁরা যীশুর খোঁজ করতে করতে আবার জেরুশালেমে ফিরে গেলেন৷ 46 শেষ পর্যন্ত তিন দিন পরে মন্দির চত্বরে তাঁর দেখা পেলেন৷ সেখানে তিনি ধর্ম শিক্ষকদের সাথে বসে তাঁদের কথা শুনছিলেন ও তাঁদের নানা প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করছিলেন৷ 47 যাঁরা তাঁর কথা শুনছিলেন তাঁরা সকলে যীশুর বুদ্ধি আর প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেওযা দেখে অবাক হয়ে গেলেন৷ 48 যীশুর মা-বাবা তাঁকে সেখানে দেখে আশ্চর্য হয়ে গেলেন৷ তাঁরমা তাঁকেবললেন, ‘বাছা, তুমি আমাদের সঙ্গে কেন এমন করলে? তোমার বাবা ও আমি ভীষণ ব্যাকুল হয়ে তোমার খোঁজ করে বেড়াচ্ছি৷’ 49 যীশু তখন তাঁদের বললেন, ‘তোমরা কেন আমার খোঁজ করছিলে? তোমরা কি জানতে না য়ে য়েখানে আমার পিতার কাজ, সেখানেই আমাকে থাকতে হবে?’ 50 কিন্তু তিনি তাঁদের যা বললেন তার অর্থ তাঁরা বুঝতে পারলেন না৷ 51 এরপর তিনি তাঁদের সঙ্গে নাসরতে ফিরে গেলেন, আর তাঁদের বাধ্য হয়ে রইলেন৷ তাঁর মা এসব কথা মনের মাঝে গেঁথে রাখলেন৷ 52 এইভাবে যীশু বয়সে ও জ্ঞানে বড় হয়ে উঠলেন, আর ঈশ্বর ও মানুষের ভালবাসা লাভ করলেন৷
Luke 3:1 তিবিরিয় কৈসরের রাজত্বের পনের বছরের মাথায় যিহূদিযার রাজ্যপাল ছিলেন পন্তীয় পীলাত৷ সেই সময় হেরোদ ছিলেন গালীলের শাসনকর্তা এবং তাঁর ভাই ফিলিপ ছিলেন যিতুরিযা ও ত্রাখোনীতি যার শাসনকর্তা, লুষাণিয় ছিলেন অবিলীনীর শাসনকর্তা৷ 2 হামন ও কায়াফা ছিলেন ইহুদীদের মহাযাজক৷ সেই সময় প্রান্তরের মধ্যে সখরিয়র পুত্র য়োহনের কাছে ঈশ্বরের আদেশ এল৷ 3 আর তিনি যর্দনের চারপাশে সমস্ত জায়গায় গিয়ে প্রচার করতে লাগলেন য়েন লোকে পাপের ক্ষমা লাভের জন্য মন ফেরায় ও বাপ্তিস্ম নেয়৷ 4 ভাববাদী যিশাইয়র পুস্তকে য়েমন লেখা আছে:‘প্রান্তরের মধ্যে একজনের কন্ঠস্বর ডেকে ডেকে বলছে, ‘প্রভুর জন্য পথ প্রস্তুত কর৷ তার জন্য চলার পথ সোজা কর৷ 5 সমস্ত উপত্যকা ভরাট কর, প্রতিটি পর্বত ও উপপর্বত সমান করতে হবে৷ আঁকা-বাঁকা পথ সোজা করতে হবে এবং এবড়ো-খেবড়ো পথ সমান করতে হবে৷ 6 তাতে সকল লোকে ঈশ্বরের পরিত্রাণ দেখতে পাবে৷”যিশাইয় 40:3-5 7 তখন বাপ্তিস্ম নেবার জন্য অনেক লোক য়োহনের কাছে আসতে লাগল৷ তিনি তাদের বললেন, ‘হে সাপের বংশধরেরা! ঈশ্বরের কাছ থেকে য়ে ক্রোধ নেমে আসছে তা থেকে বাঁচার জন্য কে তোমাদের সতর্ক করে দিল? 8 তোমরা য়ে মন ফিরিয়েছ তার ফল দেখাও৷ একথা বলতে শুরু করো না, য়ে ‘আরে অব্রাহাম তো আমাদের পিতৃপুরুষ’ কারণ আমি তোমাদের বলছি এই পাথরগুলো থেকে ঈশ্বর অব্রাহামের জন্য সন্তান উত্পন্ন করতে পারেন৷ 9 গাছের গোড়াতে কুড়ুল লাগানোই আছে, য়ে গাছ ভাল ফল দিচ্ছে না তা কেটে আগুনে ফেলে দেওযা হবে৷’ 10 তখন লোকরা তাঁকে জিজ্ঞেস করল, ‘তাহলে আমাদের কি করতে হবে?’ 11 এর উত্তরে তিনি তাদের বললেন, ‘যদি কারো দুটো জামা থাকে, তবে যার নেই তাকে য়েন তার থেকে একটি জামা দেয়; আর যার খাবার আছে, সেও অন্য়ের সঙ্গে সেইরকম য়েন ভাগ করে নেয়৷’ 12 কয়েকজন কর আদায়কারীও বাপ্তাইজহবার জন্য এল৷ তারা তাঁকে বলল, ‘গুরু, আমরা কি করব?’ 13 তখন তিনি তাদের বললেন, ‘যতটা কর আদায় করার কথা তার চেয়ে বেশী আদায় কোরো না৷’ 14 কয়েকজন সৈনিকও তাঁকে জিজ্ঞেস করল, ‘আমাদের কি হবে? আমরা কি করব? তিনি তাদের বললেন, ‘কারো কাছ থেকে জোর করে কোন অর্থ নিও না৷ কারো প্রতি মিথ্যা দোষারোপ করো না৷ তোমাদের যা বেতন তাতেই সন্তুষ্ট থেকো৷’ 15 লোকরা মনে মনে আশা করেছিল, ‘য়ে য়োহনই হয়তো তাদের সেই প্রত্যাশিত খ্রীষ্ট৷’ 16 তাদের এই রকম চিন্তার জবাবে য়োহন বললেন, ‘আমি তোমাদের জলে বাপ্তাইজ করি, কিন্তু আমার থেকে আরো শক্তিশালী একজন আসছেন, আমি তাঁর জুতোর ফিতে খোলবার য়োগ্য নই৷ তিনিই তোমাদের পবিত্র আত্মায় ও আগুনে বাপ্তাইজ করবেন৷ 17 কুলোর বাতাস দিয়ে খামার পরিষ্কার করার জন্য কুলো তাঁর হাতেই আছে, তা দিয়ে তিনি সব শস্য জড়ো করে তাঁর গোলায় তুলবেন আর অনির্বাণ আগুনে তূষ পুড়িয়ে দেবেন৷’ 18 আরো বিভিন্ন উপদেশের মাধ্যমে লোকদের উত্সাহিত করে য়োহন তাদের কাছে সুসমাচার প্রচার করবেন৷ 19 শাসনকর্তা হেরোদ তাঁর ভাইয়ের স্ত্রী হেরোদিযাকে বিয়ে করেছিলেন, এরজন্য এবং এছাড়াও তাঁর আরো অনেক অন্যায় কাজের জন্য য়োহন হেরোদকে তিরস্কার করলেন৷ 20 তাতে হেরোদ য়োহনকে বন্দী করে কারাগারে পাঠালেন আর এইভাবে তিনি তাঁর অন্য সব দুষ্কর্মের সঙ্গে এইটিও য়োগ করলেন৷ 21 লোকেরা যখন বাপ্তিস্ম নিচ্ছিল সেই সময় একদিন যীশুও বাপ্তিস্ম নিলেন৷ বাপ্তিস্মের পর যীশু যখন প্রার্থনা করছিলেন, তখন স্বর্গ খুলে গেল, 22 আর স্বর্গ থেকে পবিত্র আত্মা কপোতের মতো তাঁর ওপর নেমে এলেন৷ তখন স্বর্গ থেকে এই রব শোনা গেল, ‘তুমি আমার প্রিয় পুত্র, তোমার ওপর আমি খুবই সন্তষ্ট৷’ 23 প্রায় ত্রিশ বছর বয়সে যীশু তাঁর কাজ শুরু করেন৷ লোকেরা মনে করত তিনি য়োষেফেরই ছেলে৷য়োষেফ হলেন এলির ছেলে৷ 24 এলি মত্ততের ছেলে৷ মত্তত্ লেবির ছেলে৷ লেবি মল্কির ছেলে৷ মল্কি যান্নায়ের ছেলে৷ যান্না য়োষেফের ছেলে৷ 25 য়োষেফ মত্তথিয়ের ছেলে৷ মত্তথিয় আমোসের ছেলে৷ আমোস নহূমের ছেলে৷ নহূম ইষলির ছেলে৷ ইষ্লি নগির ছেলে৷ 26 নগি মাটের ছেলে৷ মাট মত্তথিয়ের ছেলে৷ মত্তথিয় শিমিযির ছেলে৷ শিমিযি য়োষেখের ছেলে৷ য়োষেখ য়ূদার ছেলে৷ 27 য়ূদা য়োহানার ছেলে৷ য়োহানা রীষার ছেলে৷ রীষা সরুব্বাবিলের ছেলে৷ সরুব্বাবিল শল্টীয়েলের ছেলে৷ শল্টীয়েল নেরির ছেলে৷ 28 নেরি মল্কির ছেলে৷ মল্কি অদ্দীর ছেলে৷ অদ্দী কোষমের ছেলে৷ কোষম ইল্মাদমের ছেলে৷ ইল্মাদম এরের ছেলে৷ 29 এর যিহোশূর ছেলে৷ যিহোশূ ইলীয়েষরের ছেলে৷ ইলীয়েষর য়োরীমের ছেলে৷ য়োরীম মত্ততের ছেলে৷ মত্তত লেবির ছেলে৷ 30 লেবি শিমিযোনের ছেলে৷ শিমিযোন য়ূদার ছেলে৷ য়ূদা য়োষেফের ছেলে৷ য়োষেফ য়োনমের ছেলে৷ য়োনম ইলিযাকীমের ছেলে৷ 31 ইলিযাকীম মিলেযার ছেলে৷ মিলেযা মিন্নার ছেলে৷ মিন্না মত্তথের ছেলে৷ মত্তথ নাথনের ছেলে৷ নাথন দাযূদের ছেলে৷ 32 দাযূদ যিশয়ের ছেলে৷ যিশয় ওবেদের ছেলে৷ ওবেদ বোয়সের ছেলে৷ বোয়স সলমোনের ছেলে৷ সলমোন নহশোনের ছেলে৷ 33 নহশোন অম্মীনাদবের ছেলে৷ অম্মীনাদব অদমানের ছেলে৷ অদমান অর্ণির ছেলে৷ অর্ণি হিষ্রোণের ছেলে৷ হিষ্রোণ পেরসের ছেলে৷ পেরস যিহূদার ছেলে৷ 34 যিহূদা যাকোবের ছেলে৷ যাকোব ইসহাকের ছেলে৷ ইসহাক অব্রাহামের ছেলে৷ অব্রাহাম তেরূহের ছেলে৷ তেরূহ নাহোরের ছেলে৷ 35 নাহোর সরূগের ছেলে৷ সরূগ রিযুর ছেলে৷ রিযু পেলগের ছেলে৷ পেলগ এবরের ছেলে৷ এবর শেলহের ছেলে৷ 36 শেলহ কৈননের ছেলে৷ কৈনন অর্ফক্ষদের ছেলে৷ অর্ফক্ষদ শেমের ছেলে৷ শেম নোহের ছেলে৷ নোহ লেমকের ছেলে৷ 37 লেমক মথূশেলহের ছেলে৷ মথূশেলহ হনোকের ছেলে৷ হনোক য়েরদের ছেলে৷ য়েরদ মহললেলের ছেলে৷ মহললেল কৈননের ছেলে৷ 38 কৈনন ইনোশের ছেলে৷ ইনোশ শেথের ছেলে৷ শেথ আদমের ছেলে৷ আদম ঈশ্বরের ছেলে৷
Luke 4:1 এরপর যীশু পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হয়ে যর্দন নদী থেকে ফিরে এলেন: আর আত্মার পরিচালনায় প্রান্তরের মধ্যে গেলেন৷ 2 সেখানে চল্লিশ দিন ধরে দিযাবল তাঁকে প্রলোভনে ফেলতে চাইল৷ সেই সময় তিনি কিছুই খাদ্য গ্রহণ করেন নি৷ ঐ সময় পার হয়ে গেলে যীশুর খিদে পেল৷ 3 তখন দিযাবল তাঁকে বলল, ‘তুমি যদি ঈশ্বরের পুত্র হও, তবে এই পাথরটিকে রুটি হয়ে য়েতে বল৷’ 4 এর উত্তরে যীশু তাকে বললেন, ‘শাস্ত্রে লেখা আছে: ‘মানুষ কেবল রুটিতেই বাঁচে না৷” দ্বিতীয় বিবরণ 8:3 5 এরপর দিযাবল তাঁকে একটা উঁচু জায়গায় নিয়ে গেল আর মুহূর্তের মধ্যে জগতের সমস্ত রাজ্য দেখাল৷ 6 দিযাবল যীশুকে বলল, ‘এই সব রাজ্যের পরাক্রম ও মহিমা আমি তোমায় দেব, কারণ এই সমস্তই আমাকে দেওযা হয়েছে, আর আমি যাকে চাই তাকেই এসব দিতে পারি৷ 7 এখন তুমি যদি আমার উপাসনা কর তবে এসবই তোমার হবে৷’ 8 এর উত্তরে যীশু তাকে বললেন, ‘শাস্ত্রে লেখা আছে:‘তুমি কেবল তোমার প্রভু ঈশ্বরকেই উপাসনা করবে, কেবল তাঁরই সেবা করবে!’দ্বিতীয় বিবরণ 6:13 9 এরপর দিযাবল তাঁকে জেরুশালেমে নিয়ে গিয়ে মন্দিরের চূড়ার ওপরে দাঁড় করিয়ে বলল, ‘তুমি যদি ঈশ্বরের পুত্র হও, তবে এখান থেকে লাফ দিয়ে নীচে পড়৷ 10 কারণ শাস্ত্রে লেখা আছে:‘ঈশ্বর তাঁর স্বর্গদূতদের তোমার বিষয়ে আদেশ দেবেন য়েন তারা তোমাকে রক্ষা করে৷’ গীতসংহিতা 91:11 11 আরো লেখা আছে:‘তারা তোমাকে তাদের হাতে করে তুলে ধরবে য়েন তোমার পায়ে পাথরের আঘাত না লাগে৷” গীতসংহিতা 91:12 12 এর উত্তরে যীশু তাকে বললেন, ‘শাস্ত্রে একথাও বলা হয়েছে:‘তুমি তোমার প্রভু ঈশ্বরের পরীক্ষা করো না৷” দ্বিতীয় বিবরণ 6:16 13 এইভাবে দিযাবল তাঁকে সমস্ত রকমের প্রলোভনে ফেলার চেষ্টা করে, আরো ভাল সুয়োগের অপেক্ষায় যীশুকে ছেড়ে চলে গেল৷ 14 যীশু পবিত্র আত্মার পরিচালনায় গালীলে ফিরে গেলে ঐ সংবাদ সেই অঞ্চলের সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়ল৷ 15 তিনি তাদের সমাজ-গৃহে শিক্ষা দিতে লাগলেন, আর সবাই তাঁর প্রশংসা করতে লাগল৷ 16 এরপর যীশু নাসরতে গেলেন, এখানেই তিনি প্রতিপালিত হয়েছিলেন৷ তাঁর রীতি অনুসারে বিশ্রামবারে তিনি সমাজ-গৃহেগিয়ে সেখানে শাস্ত্র পাঠ করার জন্য উঠে দাঁড়ালেন৷ 17 তাঁর হাতে ভাববাদী যিশাইয়র লেখা পুস্তকটি দেওযা হল৷ তিনি পুস্তকটি খুলে সেই অংশটি পেলেন, য়েখানে লেখা আছে: 18 ‘প্রভুর আত্মা আমার ওপর আছেন কারণ দীন দরিদ্রের কাছে সুসমাচার প্রচারের জন্য তিনিই আমায় নিযুক্ত করেছেন৷ তিনি আমাকে বন্দীদের কাছে স্বাধীনতার কথা ও অন্ধদের কাছে দৃষ্টি ফিরে পাবার কথা ঘোষণা করতে পাঠিয়েছেন; আর নির্যাতিতদের মুক্ত করতে বলেছেন৷ 19 এছাড়া প্রভুর অনুগ্রহ দানের বত্সরের কথা ঘোষণা করতেও পাঠিয়েছেন৷ যিশাইয় 61:1-2 20 এরপর তিনি পুস্তকটি গুটিয়ে সেখানকার সহায়কদের হাতে দিয়ে বসলেন৷ সমাজ-গৃহে যাঁরা সে সময় ছিল, তাদের সকলের দৃষ্টি তাঁর ওপর গিয়ে পড়ল৷ 21 তখন তিনি তাদের বললেন, ‘শাস্ত্রের এই কথা যা তোমরা শুনলে তা আজ পূর্ণ হল৷’ 22 সকলেই তাঁর খুব প্রশংসা করল, তাঁর মুখে অপূর্ব সব কথা শুনে তারা আশ্চর্য হয়ে গেল৷ তারা বলল, ‘এ কি য়োষেফের ছেলে নয়?’ 23 তখন তিনি তাদের বললেন, ‘তোমরা নিশ্চয়ই আমার বিষয়ে প্রচলিত প্রবাদটি বলবে, ‘চিকিত্সক, আগে নিজেকে সুস্থ কর৷’ কফরনাহূমে য়ে সমস্ত কাজ করেছ বলে আমরা শুনেছি সে সব এখন এখানে নিজের গ্রামেও কর দেখি!” 24 তারপর যীশু বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি, কোন ভাববাদী তাঁর নিজের গ্রামে গ্রাহ্য হন না৷ 25 সত্যি বলতে কি এলীয়র সময়ে যখন সাড়ে তিন বছর ধরে আকাশ রুদ্ধ ছিল এবং সারা দেশে ভয়ঙ্কর দুর্ভিক্ষ চলছিল, সেই সময ইস্রায়েল দেশে অনেক বিধবা ছিল৷ 26 কিন্তু তাদের কারো কাছে এলীয়কে পাঠানো হয় নি, কেবল সীদোন প্রদেশে সারিফতে সেই বিধবার কাছেই তাঁকে পাঠানো হয়েছিল৷ 27 আবার ভাববাদী ইলীশায়ের সময়ে ইস্রায়েল দেশে অনেক কুষ্ঠরোগী ছিল, কিন্তু তাদের কেউ সুস্থ হয় নি, কেবল সুরীয় নামান সুস্থ হয়েছিল৷’ 28 এই কথা শুনে সমাজ-গৃহের সমস্ত লোক রেগে আগুন হয়ে গেল৷ 29 তারা উঠে যীশুকে নগরের বাইরে বের করে দিল আর নগরটি য়ে পাহাড়ের ওপর ছিল তার শেষ প্রান্তে তাঁকে ঠেলে নিয়ে গেল, য়েন পাহাড়ের চূড়া থেকে তাঁকে নীচে ফেলে দিতে পারে৷ 30 কিন্তু তিনি তাদের মাঝখান দিয়ে চলে গেলেন৷ 31 এরপর যীশু গালীলের কফরনাহূম শহরে গেলেন৷ সেখানে তিনি বিশ্রামবারে তাদের শিক্ষা দিচ্ছিলেন৷ 32 তাঁর দেওযা শিক্ষায় তারা আশ্চর্য হয়ে গেল, কারণ তাঁর শিক্ষা ছিল ক্ষমতাযুক্ত৷ 33 সেই সমাজগৃহে অশুচি আত্মায় পাওযা একজন লোক ছিল, সে চিত্কার করে বলে উঠল, 34 ‘ওহে নাসরতীয় যীশু! আমাদের কাছে আপনার কি দরকার? আপনি কি আমাদের ধ্বংস করতে এসেছেন? আমি জানি আপনি কে, আপনি ঈশ্বরের পবিত্র ব্যক্তি!’ 35 যীশু তাকে ধমক দিয়ে বললেন, ‘চুপ করো! আর ওর মধ্য থেকে বের হয়ে যাও!’ তখন সেই অশুচি আত্মা লোকটিকে সকলের মাঝখানে আছড়ে ফেলে দিয়ে তার কোন ক্ষতি না করে তার মধ্যে থেকে বের হয়ে গেল৷ 36 এই দেখে লোকেরা অবাক হয়ে নিজেদের মধ্যে বলাবলি করতে লাগল, ‘এর মানে কি? সম্পূর্ণ ক্ষমতা ও কর্ত্তৃত্বের সঙ্গে তিনি অশুচি আত্মাদের হুকুম করেন আর তারা বের হয়ে যায়৷’ 37 তাঁর বিষয়ে এই কথা সেই অঞ্চলের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ল৷ 38 যীশু সমাজ-গৃহ থেকে বেরিয়ে শিমোনের বাড়িতে গেলেন৷ সেখানে শিমোনের শাশুড়ী খুব জ্বরে ভুগছিলেন, তাই তারা এসে তাঁকে অনুরোধ করল য়েন তিনি তাঁকে সুস্থ করেন৷ 39 তখন যীশু তাঁর কাছে দাঁড়িয়ে জ্বরকে ধমক দিলেন, এর ফলে জ্বর ছেড়ে গেল, আর তিনি তখনই উঠে তাদের খাওযা দাওযার ব্যবস্থা করতে লাগলেন৷ 40 সূর্য় অস্ত যাবার সময় লোকরা তাদের বন্ধু-বান্ধব ও পরিবারের লোকজন, যাঁরা নানা রোগে অসুস্থ ছিল তাদের যীশুর কাছে নিয়ে এল৷ যীশু তাদের প্রত্যেকের ওপরে হাত রেখে তাদের সুস্থ করলেন৷ 41 তাদের অনেকের মধ্যে থেকে ভূত বের হয়ে এল৷ তারা চিত্কার করে বলতে লাগল, ‘আপনি ঈশ্বরের পুত্র৷’ কিন্তু তিনি তাদের ধমক দিলেন, তাদের কথা বলতে দিলেন না, কারণ তারা জানত য়ে তিনিই সেই খ্রীষ্ট৷ 42 ভোর হলে যীশু সেই জায়গা ছেড়ে এক নির্জন জায়গায় চলে গেলেন৷ কিন্তু বিরাট জনতা তাঁর খোঁজ করতে লাগল; আর তিনি য়েখানে ছিলেন সেখানে এসে হাজির হল এবং তিনি য়েন তাদের কাছ থেকে চলে না যান সেজন্য তাঁকে আটকাতে চেষ্টা করল৷ 43 কিন্তু তিনি তাদের বললেন, ‘ঈশ্বরের রাজ্যের এই সুসমাচার আমাকে অন্যান্য শহরেও বলতে হবে, কারণ এরই জন্য আমাকে পাঠানো হয়েছে৷’ 44 এরপর তিনি যিহূদিযার বিভিন্ন সমাজ-গৃহে প্রচার করতে লাগলেন৷.
Luke 5:1 একদিন যীশু গিনেষরত হ্রদের ধারে দাঁড়িয়েছিলেন৷ বহুলোক তাঁর চারপাশে ভীড় করে দাঁড়িয়ে ঈশ্বরের শিক্ষা শুনছিল৷ 2 তিনি দেখলেন, হ্রদের ধারে দুটি নৌকা দাঁড়িয়ে আছে আর জেলেরা নৌকা থেকে নেমে জাল ধুচ্ছে৷ 3 তিনি একটি নৌকায় উঠলেন, সেই নৌকাটি ছিল শিমোনের৷ যীশু তাঁকে তীর থেকে নৌকাটিকে একটু দূরে নিয়ে য়েতে বললেন৷ তারপর তিনি নৌকায় বসে সেখান থেকে লোকদের শিক্ষা দিতে লাগলেন৷ 4 তাঁর কথা শেষ হলে তিনি শিমোনকে বললেন, ‘এখন গভীর জলে নৌকা নিয়ে চল, আর সেখানে মাছ ধরার জন্য তোমাদের জাল ফেল৷’ 5 শিমোন উত্তর দিলেন, ‘প্রভু, আমরা সারা রাত ধরে কঠোর পরিশ্রম করে কিছুই ধরতে পারি নি; কিন্তু আপনি যখন বলছেন তখন আমি জাল ফেলব৷’ 6 তাঁরা জাল ফেললে প্রচুর মাছ জালে ধরা পড়ল৷ মাছের ভারে তাদের জাল ছিঁড়ে যাবার উপক্রম হল৷ 7 তখন তাঁরা সাহায্যের জন্য ইশারা করে অন্য নৌকার সঙ্গীদের ডাকলেন৷ সঙ্গীরা এসে দুটো নৌকায় এত মাছ বোঝাই করলেন য়ে সেগুলো ডুবে যাবার উপক্রম হল৷ 8 এই দেখে পিতর যীশুর পায়ে পড়ে বললেন, ‘প্রভু আমি একজন পাপী৷ আপনি আমার কাছ থেকে চলে যান৷’ কারণ জালে এত মাছ ধরা পড়েছে দেখে তিনি ও তাঁর সঙ্গীরা সকলে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন৷ 9 10 সিবদিয়ের ছেলে যাকোব ও য়োহন যাঁরা তাঁর ভাগীদার ছিলেন তাঁরাও অবাক হয়ে গিয়েছিলেন৷ তখন যীশু শিমোনকে বললেন, ‘ভয় পেও না, এখন থেকে তুমি মাছ নয় বরং মানুষ ধরবে৷’ 11 এরপর তাঁরা নৌকাগুলো তীরে এনে সব কিছু ফেলে রেখে যীশুর সঙ্গে চললেন৷ 12 একবার যীশু কোন এক নগরে ছিলেন, সেখানে একজন লোক যার সর্বাঙ্গ কুষ্ঠরোগে ভরে গিয়েছিল, সে যীশুকে দেখে তাঁর সামনে উপুড় হয়ে পড়ে মিনতি করে বলল, ‘প্রভু, আপনি যদি ইচ্ছা করেন তাহলেই আমাকে ভালো করতে পারেন৷’ 13 তখন যীশু হাত বাড়িয়ে তাকে ছুঁয়ে বললেন, ‘আমি তা-ই চাই৷ তুমি আরোগ্য লাভ কর!’ আর সঙ্গে সঙ্গে তার কুষ্ঠ ভালো হয়ে গেল৷ 14 তখন যীশু তাকে আদেশ করলেন, ‘দেখ, একথা কাউকে বোলো না; কিন্তু যাও, যাজকদের কাছে গিয়ে নিজেকে দেখাও, আর শুচি হবার জন্য মোশির নির্দেশ মতো বলি উত্সর্গ কর৷ তুমি য়ে আরোগ্য লাভ করেছ, সবার সামনে এইভাবে তা প্রকাশ কর৷’ 15 যীশুর বিষয়ে নানা খবর চতুর্দিকে আরো ছড়িয়ে পড়তে লাগল, আর বহুলোক ভীড় করে তাঁর কথা শুনতে ও রোগ থেকে সুস্থ হবার জন্য তাঁর কাছে আসতে লাগল৷ 16 কিন্তু যীশু প্রায়ই নির্জন জায়গায় প্রান্তরের মধ্যে গিয়ে প্রার্থনা করতেন৷ 17 একদিন তিনি যখন শিক্ষা দিচ্ছেন তখন সেখানে কয়েকজন ফরীশী ও ব্যবস্থার শিক্ষক বসেছিল৷ এরা গালীল ও যিহূদিযার প্রতিটি নগর ও জেরুশালেম থেকে এসেছিল৷ রোগীদের সুস্থ করার জন্য প্রভুর শক্তি যীশুর মধ্যে ছিল৷ 18 সেই সময় কয়েকজন লোক খাটে করে একজন পঙ্গুকে বয়ে নিয়ে এল৷ তারা তাকে ভেতরে যীশুর কাছে নিয়ে যাবার চেষ্টা করছিল; 19 কিন্তু ভীড়ের জন্য ভেতরে যাবার পথ পেল না৷ তখন তারা ছাদে উঠে ছাদের টালি সরিয়ে তাকে তার খাটিযা সমেত লোকদের মাঝে য়েখানে যীশু ছিলেন সেখানে নামিয়ে দিল৷ 20 তাদের এই বিশ্বাস দেখে যীশু বললেন, ‘তোমার পাপ ক্ষমা করা হল৷’ 21 এই শুনে ইহুদী ব্যবস্থার শিক্ষকরা ও ফরীশীরা নিজেদের মধ্যে মনে মনে ভাবতে লাগল, ‘এই লোকটা কে য়ে ঈশ্বর নিন্দা করছে! একমাত্র ঈশ্বর ছাড়া আর কে পাপ ক্ষমা করতে পারে?’ 22 কিন্তু যীশু তাদের মনের চিন্তা বুঝতে পেরে বললেন, ‘তোমরা মনে মনে কেন ঐ কথা ভাবছ? 23 কোনটা বলা সহজ, ‘তোমার পাপ ক্ষমা করা হল,’ না ‘তুমি উঠে হেঁটে বেড়াও?’ 24 কিন্তু তোমরা য়েন জানতে পারো য়ে পৃথিবীতে পাপ ক্ষমা করার ক্ষমতা মানবপুত্রেরআছে৷’ তাই তিনি পঙ্গু লোকটিকে বললেন, ‘আমি তোমায় বলছি, ওঠো! তোমার খাটিযা তুলে নিয়ে বাড়ি যাও৷’ 25 আর লোকটি সঙ্গে সঙ্গে তাদের সামনে উঠে দাঁড়াল আর য়ে খাটিযার ওপর সে শুয়েছিল তা তুলে নিয়ে ঈশ্বরের প্রশংসা করতে করতে বাড়ি চলে গেল৷ 26 এই দেখে সবাই খুব আশ্চর্য হয়ে গেল, আর ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগল৷ তারা ভয় ও ভক্তিতে পূর্ণ হয়ে বলতে লাগল, ‘আজ আমরা এক বিস্ময়কর ঘটনা দেখলাম৷’ 27 এই ঘটনার পর যীশু সেখান থেকে বাইরে গেলে কর আদায় করার জায়গায় লেবি নামে একজন কর আদায়কারীকে বসে থাকতে দেখলেন৷ যীশু তাকে বললেন, ‘আমার সঙ্গে এস!’ 28 আর লেবি সব কিছু ফেলে রেখে উঠে পড়লেন ও যীশুর সঙ্গে চললেন৷ 29 যীশুর জন্য লেবি তাঁর বাড়িতে একটা বড় ভোজের আযোজন করলেন৷ তাদের সঙ্গে অনেক কর আদায়কারী ও অন্যান্য আরো অনেকে খেতে বসল৷ 30 তখন ফরীশী ও তাদের ব্যবস্থার শিক্ষকরা যীশুর অনুগামীদের কাছে অভিযোগ করে বলল, ‘তোমরা কেন কর আদায়কারী ও মন্দ লোকদের সঙ্গে ভোজন পান কর?’ 31 এর জবাবে যীশু তাদের বললেন, ‘সুস্থ লোকেদের জন্য চিকিত্সকের প্রযোজন নেই; কিন্তু যাঁরা অসুস্থ তাদের জন্য চিকিত্সকের দরকার আছে৷ 32 আমি ধার্মিকদের নয় কিন্তু মন্দ লোকদের ডাকতে এসেছি; য়েন তারা পাপের পথ থেকে ফেরে৷’ 33 তারা যীশুকে বলল, ‘য়োহনের অনুগামীরা প্রায়ই প্রার্থনা ও উপবাস করে, ফরীশীদের অনুগামীরাও তা করে; কিন্তু আপনার অনুগামীরা তো সব সময়ই ভোজন পান করছে৷’ 34 যীশু তাদের বললেন, ‘বর সঙ্গে থাকতে কি তোমরা বর যাত্রীদের উপোস করে থাকতে বলতে পার? 35 কিন্তু এমন সময় আসছে যখন বরকে তাদের কাছ থেকে সরিয়ে নেওযা হবে আর সেই সময় তারা উপোস করবে৷’ 36 তিনি তাদের কাছে একটি দৃষ্টান্ত দিয়ে বললেন, ‘নতুন জামা থেকে একটি টুকরো ছিঁড়ে নিয়ে কেউ কি পুরানো জামায় তালি দেয়? যদি কেউ তা করে তবে সে তার নতুন জামাটি ছিঁড়ল, আবার সেই ছেঁড়া কাপড়ের টুকরো পুরানোর সঙ্গে মানাবে না৷ 37 পুরানো চামড়ার থলিতে কেউ টাটকা দ্রাক্ষারস রাখে না, রাখলে টাটকা দ্রাক্ষারস চামড়ার থলিটি ফাটিয়ে দেবে তাতে রস ও পড়ে যাবে আর থলি ও নষ্ট হবে৷ 38 টাটকা দ্রাক্ষারস নতুন চামড়ার থলিতে রাখাই উচিত; 39 আর পুরানো দ্রাক্ষারস পান করার পর কেউ টাটকা দ্রাক্ষারস পান করতে চায় না, কারণ সে বলে ‘পুরাতনটাই ভাল৷”
Luke 6:1 কোন এক বিশ্রামবারে যীশু একটি শস্য ক্ষেতের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন৷ তাঁর শিষ্যরা শীষ ছিঁড়ে হাতে মেড়ে মেড়ে খাচ্ছিলেন৷ 2 এই দেখে কয়েকজন ফরীশী বলল, ‘য়ে কাজ করা বিশ্রামবারে বিধি-সম্মত নয় তা তোমরা করছ কেন?’ 3 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, ‘দাযূদ ও তাঁর সঙ্গীদের যখন খিদে পেয়েছিল তখন তাঁরা কি করেছিলেন তা কি তোমরা পড় নি? 4 তিনি তো ঈশ্বরের গৃহে ঢুকে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে নিবেদিত রুটি নিয়ে খেয়েছিলেন, আর তাঁর সঙ্গীদের তা দিয়েছিলেন, যা যাজক ছাড়া অন্য কারো খাওযা বিধি-সম্মত ছিল না৷’ 5 যীশু তাদের আরও বললেন, ‘মানবপুত্রই বিশ্রামবারের প্রভু৷’ 6 আর এক বিশ্রামবারে তিনি সমাজ-গৃহে গিয়ে শিক্ষা দিতে লাগলেন৷ সেখানে একজন লোক ছিল যার ডান হাতটি শুকিয়ে গিয়েছিল৷ 7 তিনি তাকে বিশ্রামবারে সুস্থ করেন কি না দেখার জন্য ব্যবস্থার শিক্ষকরা ও ফরীশীরা তাঁর ওপর নজর রাখছিল, য়েন তারা যীশুর বিরুদ্ধে দোষ দেবার কোন সূত্র খুঁজে পায়৷ 8 যীশু তাদের মনের চিন্তা জানতেন, তাই য়ে লোকটির হাত শুকিয়ে গিয়েছিল তাকে বললেন, ‘তুমি সকলের সামনে উঠে দাঁড়াও!’ তখন সেই লোকটি সকলের সামনে উঠে দাঁড়াল৷ 9 যীশু তাদের বললেন, ‘আমি তোমাদের একটা প্রশ্ন করি, বিশ্রামবারে কি করা বিধিসম্মত, ভাল করা না ক্ষতি করা? কাউকে প্রাণে বাঁচানো না ধ্বংস করা?’ 10 চারপাশে তাদের সকলের দিকে তাকিয়ে তিনি লোকটিকে বললেন, ‘তোমার হাতখানা বাড়াও৷’ সে তাই করলে তার হাত সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়ে গেল৷ 11 কিন্তু ফরীশী ও ব্যবস্থার শিক্ষকরা রাগে জ্বলতে লাগল৷ তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে লাগল, ‘যীশুর প্রতি কি করা হবে?’ 12 যীশু সেই সময় একবার প্রার্থনা করার জন্য একটি পর্বতে গেলেন৷ সারা রাত ধরে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনায় কাটালেন৷ 13 সকাল হলে তিনি তাঁর অনুগামীদেব নিজের কাছে ডাকলেন ও তাঁদের মধ্য থেকে বারোজনকে মনোনীত করে তাঁদের ‘প্রেরিত’ পদে নিযোগ করলেন৷ তাঁরা হলেন, 14 শিমোন যার নাম রাখলেন তিনি পিতর আর তাঁর ভাই আন্দরিয়, যাকোব ও য়োহন আর ফিলিপ ও বর্থলময়, 15 মথি, থোমা, আলফেয়ের ছেলে যাকোব, শিমোন য়ে ছিল দেশ ভক্ত দলের লোক৷ 16 যাকোবের ছেলে যিহূদা আর যিহূদা ঈষ্করিযোতীয়, য়ে পরে বিশ্বাসঘাতকে পরিণত হয়েছিল৷ 17 যীশু তাঁর প্রেরিতদেরসঙ্গে নিয়ে পর্বত থেকে নেমে একটা সমতল জায়গায় গিয়ে দাঁড়ালেন৷ সেখানে তাঁর আরো অনুগামী এসে জড়ো হয়েছিল৷ সমস্ত যিহূদা জেরুশালেম এবং সোর সীদোনের সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চল থেকে বিস্তর লোক তাঁর কাছে এসে জড় হল৷ 18 তাঁরা তার কথা শুনতে ও তাদের রোগ-ব্যধি থেকে সুস্থ হতে তাঁর কাছে এসেছিল৷ যাঁরা মন্দ আত্মার প্রকোপে কষ্ট পাচ্ছিল তারাও সুস্থ হল৷ 19 সকলেই তাঁকে স্পর্শ করার চেষ্টা করতে লাগল, কারণ তাঁর মধ্য থেকে শক্তি বের হয়ে তাদের আরোগ্য দান করছিল৷ 20 যীশু তাঁর অনুগামীদের দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলেন,‘দরিদ্রেরা তোমরা ধন্য, কারণ ঈশ্বরের রাজ্য তোমাদেরই৷ 21 তোমরা এখন যাঁরা ক্ষুধিত, তারা ধন্য কারণ তোমরা পরিতৃপ্ত হবে৷ তোমরা এখন যাঁরা চোখের জল ফেলছ, তারা ধন্য, কারণ তোমরা আনন্দ করবে৷ 22 ‘ধন্য তোমরা যখন মানবপুত্রের লোক বলে অন্য়েরা তোমাদের ঘৃণা করে, সমাজচ্যুত করে, অপমান করে, তোমাদের নাম মুখে আনতে চায় না এবং তোমাদেরকে কিছুতেই মেনে নিতে পারে না৷ 23 সেই দিন তোমরা আনন্দ করো, আনন্দে নৃত্য করো কারণ দেখ স্বর্গে তোমাদের জন্য পুরস্কার সঞ্চিত আছে৷ ওদের পূর্বপুরুষেরা ভাববাদীদের সঙ্গে এই রকমই ব্যবহার করেছে৷ 24 কিন্তু ধনী ব্যক্তিরা, ধিক্ তোমাদের, কারণ তোমরা তো এখনই দুঃখ পাচ্ছ৷ 25 তোমরা যাঁরা আজ পরিতৃপ্ত, ধিক্ তোমাদের, কারণ তোমরা ক্ষুধার্ত হবে৷ তোমরা যাঁরা আজ হাসছ, ধিক্ তোমাদের, কারণ তোমরা কাঁদবে, শোক করবে৷ 26 ধিক্ তোমাদের, যখন সব লোক তোমাদের প্রশংসা করে, কারণ এই সব লোকদের পূর্বপুরুষেরা ভণ্ড ভাববাদীদেরও প্রশংসা করত৷ 27 ‘তোমরা যাঁরা শুনছ, আমি কিন্তু তোমাদের বলছি, তোমরা তোমাদের শত্রুদের ভালবেসো৷ যাঁরা তোমাদের ঘৃণা করে, তাদের মঙ্গল কোর৷ 28 যাঁরা তোমাদের অভিশাপ দেয়, তাদের আশীর্বাদ কোর৷ যাঁরা তোমাদের সঙ্গে দুর্য়্ববহার করে, তাদের জন্য প্রার্থনা কোর৷ 29 কেউ যদি তোমার একগালে চড় মারে, তার কাছে অপর গালটি বাড়িয়ে দাও৷ কেউ যদি তোমার চাদর কেড়ে নেয়, তাকে তোমার জামাটিও নিতে দাও৷ 30 তোমার কাছে য়ে চায় তাকে দাও৷ আর তোমার কোন জিনিস যদি কেউ নেয়, তবে তা ফেরত চেও না৷ 31 অন্যের কাছ থেকে তুমি য়েমন ব্যবহার পেতে চাও, তাদের সঙ্গেও তুমি তেমনি ব্যবহার কোর৷ 32 যাঁরা তোমাদের ভালবাসে, তোমরা যদি কেবল তাদেরই ভালবাস, তবে তাতে প্রশংসার কি আছে? কারণ পাপীরাও তো একই রকম করে৷ 33 যাঁরা তোমাদের উপকার করে, তোমরা যদি কেবল তাদেরই উপকার কর, তাতে প্রশংসার কি আছে? পাপীরাও তো তাই করে৷ 34 যাঁরা ধার শোধ করতে পারে এমন লোকদেরই যদি কেবল তোমরা ধার দাও, তবে তাতে প্রশংসার কি আছে? এমন কি পাপীরাও তা ফিরে পাবার আশায় তাদের মতো পাপীদের ধার দেয়৷ 35 কিন্তু তোমরা তোমাদের শত্রুদের ভালবেসো, তাদের মঙ্গল কোর, আর কিছুই ফিরে পাবার আশা না রেখে ধার দিও৷ তাহলে তোমাদের মহাপুরস্কার লাভ হবে, আর তোমরা হবে পরমেশ্বরের সন্তান, কারণ তিনি অকৃতজ্ঞ ও দুষ্টদের প্রতিও দযা করেন৷ 36 তোমাদের পিতা, য়েমন দযালু তোমরাও তেমন দযালু হও৷ 37 অপরের বিচার কোর না, তাহলে তোমাদেরও বিচারের সম্মুখীন হতে হবে না৷ অপরের দোষ ধরো না, তাহলে তোমাদেরও দোষ ধরা হবে না৷ অন্যকে ক্ষমা কোর, তাহলে তোমাদেরও ক্ষমা করা হবে৷ 38 দান কর, প্রতিদান তুমিও পাবে৷ তারা তোমাদের অনেক বেশী করে, চেপে চেপে, ঝাঁকিয়ে ঝাঁকিয়ে উপচে দেবে৷ কারণ অন্য়ের জন্য য়ে মাপে মেপে দিচ্ছ, সেই মাপেই তোমাদের মেপে দেওযা হবে৷’ 39 যীশু তাদের কাছে আর একটি দৃষ্টান্ত দিলেন, ‘একজন অন্ধ কি অন্য একজন অন্ধকে পথ দেখাতে পারে? তাহলে কি তারা উভয়েই গর্তে পড়বে না? 40 কোন ছাত্র তার শিক্ষকের উর্দ্ধে নয়; কিন্তু শিক্ষা সম্পূর্ণ হলে প্রত্যেক ছাত্র তাঁর শিক্ষকের মতো হতে পারে৷ 41 ‘তোমার ভাইয়ের চোখে য়ে কুটো আছে তুমি সেটা দেখছ, কিন্তু তোমার নিজের চোখে য়ে তক্তা আছে সেটা দেখছ না, কেন? 42 তোমার নিজের চোখে য়ে তক্তা আছে তা যখন লক্ষ্য করছ না, তখন কেমন করে তোমার ভাইকে বলতে পার, ‘ভাই তোমার চোখে য়ে কুটোটা আছে, এস তা বের করে দিই৷’ কেন তুমি একথা বল? ভণ্ড প্রথমে তোমার নিজের চোখ থেকে তক্তা বের করে ফেল, আর তবেই তোমার ভাইয়ের চোখে য়ে কুটো আছে, তা বের করার জন্য স্পষ্ট করে দেখতে পাবে৷ 43 ‘কারণ এমন কোন ভাল গাছ নেই যাতে খারাপ ফল ধরে, আবার এমন কোন খারাপ গাছ নেই যাতে ভাল ফল ধরে৷ 44 প্রত্যেক গাছকে তার ফল দিয়েই চেনা যায়৷ লোকে কাঁটা-ঝোপ থেকে ডুমুর ফল তোলে না, বা বুনো ঝোপ থেকে দ্রাক্ষা সংগ্রহ করে না৷ 45 সত্ লোকের অন্তরের ভাল ভাণ্ডার থেকে ভাল জিনিসই বের হয়৷ আর দুষ্ট লোকের মন্দ অন্তর থেকে মন্দ বিষয়ই বের হয়৷ মানুষের অন্তরে যা থাকে তার মুখ সে কথাই বলে৷ 46 ‘তোমরা কেন আমাকে ‘প্রভু, প্রভু বলে ডাক, অথচ আমি যা বলি তা কর না? 47 য়ে কেউ আমার কাছে আসে ও আমার কথা শুনে সেসব পালন করে, সে কার মতো? 48 সে এমন একজন লোকের মতো, য়ে বাড়ি তৈরী করতে গভীর ভাবে খুঁড়ে পাথরের ওপর ভিত গাঁথল৷ তাই যখন বন্যা এল, তখন নদীর জলের ঢেউ এসে সেই বাড়িটিতে আঘাত করল, কিন্তু তা নড়াতে পারল না, কারণ তার ভিত ছিল মজবুত৷ 49 য়ে আমার কথা শোনে অথচ সেই মতো কাজ না করে, সে এমন একজন লোকের মতো, য়ে মাটির উপর ভিত ছাড়াই বাড়ি তৈরী করেছিল৷ পরে নদীর স্রোত এসে তাতে আঘাত করলে তখনই বাড়িটা ভেঙ্গে পড়ল এবং একেবারে ধ্বংস হয়ে গেল৷’
Luke 7:1 যীশু লোকদের যা বলতে চেয়েছিলেন তা বলা শেষ করে কফরনাহূম শহরে গেলেন৷ 2 সেখানে একজন রোমীয় শতপতির এক ক্রীতদাস গুরুতর অসুখে মরনাপন্ন হয়েছিল৷ এই ক্রীতদাসটি শতপতির অতি প্রিয় ছিল৷ 3 শতপতি যখন যীশুর কথা শুনতে পেলেন তখন ইহুদীদের কয়েকজন নেতাকে দিয়ে যীশুর কাছে বলে পাঠালেন, য়েন যীশু এসে তার দাসের জীবন রক্ষা করেন৷ 4 তারা যীশুর কাছে এসে তাকে বিশেষভাবে অনুরোধ করে বললেন, ‘যার জন্য আপনাকে এই কাজ করতে বলছি, তিনি একজন য়োগ্য লোক৷ 5 কারণ তিনি আমাদের লোকদের ভালবাসেন, আর তিনি আমাদের জন্য একটা সমাজ-গৃহ নির্মাণ করে দিয়েছেন৷’ 6 তখন যীশু তাদের সঙ্গে গেলেন৷ তিনি যখন সেই বাড়ির কাছাকাছি এসেছেন তখন সেই শতপতি তাঁর বন্ধুদের দিয়ে বলে পাঠালেন, ‘প্রভু আপনি আর কষ্ট করবেন না, কারণ আপনি য়ে আমার বাড়িতে আসেন তার য়োগ্য আমি নই৷ 7 এই কারণেই আমি নিজেকে আপনার কাছে যাবার উপযুক্ত মনে করি না৷ আপনি কেবল মুখে বলুন তাতেই আমার ঐ দাস ভাল হয়ে যাবে৷ 8 কারণ আমিও একজনের অধীনে কাজ করি, আর আমার অধীনেও সৈনিকেরা কাজ করে৷ আমি যদি কাউকে বলি ‘যাও’ তখন সে যায়, আবার কাউকে যদি বলি ‘এস’ তবে সে আসে৷ আর আমি যখন একজনকে বলি, ‘এটা কর,’ তখন সে তা করে৷’ 9 এই কথা শুনে যীশু আশ্চর্য হলেন৷ য়ে সব লোক ভীড় করে তাঁর পিছনে পিছনে আসছিল, তাদের দিকে ফিরে তিনি বললেন, ‘আমি তোমাদের বলছি, এমন কি ইস্রায়েলীয়দের মধ্যেও এত বড় বিশ্বাস আমি কখনও দেখিনি৷’ 10 সেনাপতি যাদের পাঠিয়েছিলেন, তারা বাড়ি ফিরে গিয়ে দেখল য়ে সেই চাকর ভাল হয়ে গেছে৷ 11 এর অল্প দিন পরেই যীশু নাযিন্নামে এক নগরের দিকে যাচ্ছিলেন৷ তাঁর শিষ্যরা এবং আরও অনেক লোক তাঁর সঙ্গে সঙ্গে যাচ্ছিল৷ 12 তিনি যখন সেই নগরের ফটকের কাছাকাছি এসেছেন, তখন একজন মৃত লোককে বয়ে নিয়ে যাওযা হচ্ছিল৷ সেই মৃত লোকটি ছিল তার বিধবা মায়ের একমাত্র পুত্র৷ সেই নগরের অনেক লোক সেই বিধবার সঙ্গে সঙ্গে যাচ্ছিল৷ 13 সেই বিধবাকে দেখে তার জন্য প্রভুর খুবই দযা হল৷ তিনি তাকে বললেন, ‘তুমি কেঁদো না৷’ 14 তারপর তিনি কাছে এসে শবের খাট ছুঁলেন, তখন যাঁরা মৃতদেহ বয়ে নিয়ে যাচ্ছিল তারা দাঁড়িয়ে পড়ল৷ এমন সময় যীশু বললেন, ‘যুবক, আমি তোমায় বলছি তুমি ওঠো৷’ 15 তখন সেই লোকটি উঠে বসল, আর কথা বলতে শুরু করল৷ যীশু তখন তাকে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিলেন৷ 16 এই দেখে সকলের মন ভয় ও ভক্তিতে পূর্ণ হল৷ তারা ঈশ্বরের প্রশংসা করে বলতে লাগল, ‘আমাদের মধ্যে একজন মহান ভাববাদীর আবির্ভাব হয়েছে৷’ তারা আরও বলতে লাগল, ‘ঈশ্বর তাঁর লোকদের সাহায্য করতে এসেছেন৷’ 17 যীশুর বিষয়ে এই সব কথা যিহূদিযায় ও তার আশপাশের সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়ল৷ 18 বাপ্তিস্মদাতা য়োহনের অনুগামীরা এই সব ঘটনার কথা য়োহনকে জানাল৷ তখন য়োহন তাঁর দুজন অনুগামীকে ডেকে 19 প্রভুর কাছে জিজ্ঞেস করে পাঠালেন য়ে, ‘য়াঁর আগমণের কথা আছে আপনিই কি সেই, না আমরা অন্য কারোর জন্য অপেক্ষা করব?’ 20 সেই লোকেরা যীশুর কাছে এসে বলল, ‘বাপ্তিস্মদাতা য়োহন আপনার কাছে আমাদের জিজ্ঞেস করতে পাঠিয়েছেন৷ ‘য়াঁর আসবার কথা আপনিই কি সেই ব্যক্তি, না আমরা অন্য কারো অপেক্ষায় থাকব?” 21 সেই সময় যীশু অনেক লোককে বিভিন্ন রোগ ও ব্যাধি থেকে সুস্থ করছিলেন, অশুচি আত্মায় পাওযা লোকদের ভাল করছিলেন, আর অনেক অন্ধ লোককে দৃষ্টি শক্তি দান করছিলেন৷ 22 তখন তিনি তাদের প্রশ্নের জবাবে বললেন, ‘তোমরা যা দেখলে ও শুনলে তা গিয়ে য়োহনকে বল৷ অন্ধেরা দেখতে পাচ্ছে, খোঁড়ারা হাঁটছে, কুষ্ঠ রোগীরা সুস্থ হচ্ছে, বধিরেরা শুনছে, মরা মানুষ বেঁচে উঠছে;আর দরিদ্ররা সুসমাচার শুনতে পাচ্ছে৷ 23 ধন্য সেই লোক, য়ে আমাকে গ্রহণ করার জন্য মনে কোন দ্বিধা বোধ করে না৷’ 24 য়োহনের কাছ থেকে যাঁরা এসেছিল তারা চলে গেলে পর যীশু সমবেত সেই লোকদের কাছে য়োহনের বিষয়ে বললেন, ‘তোমরা প্রান্তরের মধ্যে কি দেখতে গিয়েছিলে? বাতাসে একটি বেত গাছ দুলছে তাই? 25 তা না হলে কি দেখতে গিয়েছিলে? একজন লোক বেশ জমকালো পোশাক পরা? না৷ যাঁরা দামী জামা কাপড় পরে এবং বিলাসে জীবন কাটায় তারা তো প্রাসাদে থাকে৷ 26 তবে তোমরা কি দেখতে গিয়েছিলে? একজন ভাববাদীকে? হ্যাঁ, আমি তোমাদের বলছি, তোমরা য়াঁকে দেখেছ তিনি একজন ভাববাদীর থেকেও মহান৷ 27 ইনি সেই লোক য়াঁর বিষয়ে লেখা হয়েছে:‘দেখ, আমি তোমার আগে আগে আমার এক সহায়কে পাঠাচ্ছি৷ সে তোমার আগে গিয়ে তোমার পথ প্রস্তুত করবে৷’ মালাখি 3:1 28 আমি তোমাদের বলছি, স্ত্রীলোকের গর্ভজাত সকল মানুষের মধ্যে য়োহনের চেয়ে শ্রেষ্ঠ কেউ নেই, তবু ঈশ্বরের রাজ্যে ক্ষুদ্রতম ব্যক্তিও য়োহনের চেয়ে মহান৷’ 29 যাঁরা যীশুর প্রচার শুনেছিল, তাদের মধ্যে পাপীষ্ঠরা ও কর আদায়কারীরাও য়োহনের বাপ্তিস্ম নিয়ে স্বীকার করল য়ে ঈশ্বর ন্যায়পরায়ণ৷ 30 কিন্তু ফরীশী ও ব্যবস্থার শিক্ষকরা য়োহনের কাছে বাপ্তিস্ম নিতে অস্বীকার করে তাদের জীবনে ঈশ্বরের ইচ্ছাকে অগ্রাহ্য় করল৷ 31 ‘তাহলে আমি কিসের সঙ্গে এই যুগের লোকদের তুলনা করব? এরা কেমন ধরণের লোক? 32 এরা ছোট ছেলেদের মতো, যাঁরা হাটে বসে একে অপরকে বলে,‘আমরা তোমাদের জন্য বাঁশি বাজালাম, কিন্তু তোমরা নাচলে না৷ আমরা তোমাদের জন্য শোকগাথা গাইলাম, কিন্তু তোমরা কাঁদলে না৷’ 33 কারণ বাপ্তিস্মদাতা য়োহন এসেছেন, তিনি রুটি খান না আর দ্রাক্ষারস পানও করেন না, আর তোমরা বল, ‘ওকে ভূতে পেয়েছে৷’ 34 মানবপুত্র এসে পানাহার করেন; আর তোমরা বল, ‘দেখ! ও পেটুক, মদ্য়পাযী, আবার পাপী ও কর আদায়কারীদের বন্ধু৷’ 35 প্রজা তার কাজের দ্বারাই প্রমাণ করে য়ে তা নির্দোষ৷’ 36 একদিন একজন ফরীশী তাঁর বাড়িতে যীশুকে নিমন্ত্রণ করল৷ তাই তিনি তার বাড়িতে গিয়ে সেখানে খাবার আসন নিলেন৷ 37 সেই নগরে একজন দুশ্চরিত্রা স্ত্রীলোক ছিলেন৷ ফরীশীর বাড়িতে যীশু খেতে এসেছেন জানতে পেরে সে একটা শ্বেত পাথরের শিশিতে করে বহুমূল্য আতর নিয়ে এল৷ 38 সে যীশুর পিছনে তাঁর পায়ের কাছে নতজানু হয়ে কেঁদে কেঁদে চোখের জলে তাঁর পা ভিজাতে লাগল৷ তারপর সে তার মাথার চুল দিয়ে তাঁর পা মুছিয়ে দিল, আর তাঁর পায়ে চুমু দিয়ে সেই আতর তাঁর পায়ে ঢেলে দিল৷ 39 য়ে ফরীশী যীশুকে নিমন্ত্রণ করেছিল, এই দেখে সে মনে মনে বলল, ‘এই লোকটা যদি ভাববাদী হয় তবে নিশ্চয়ই বুঝতে পারত, য়ে তার পা ছুঁচ্ছে সে কে এবং কি ধরণের স্ত্রীলোক, এবং এও জানতে পারত য়ে স্ত্রীলোকটি পাপী৷’ 40 এর জবাবে যীশু তাকে বললেন, ‘শিমোন, তোমাকে আমার কিছু বলার আছে৷’শিমোন বলল, ‘বেশ তো গুরু, বলুন৷’ 41 যীশু বললেন, ‘কোন এক মহাজনের কাছে দুজন লোক টাকা ধারত৷ একজন পাঁচশো রূপোর মুদ্রা আর একজন পঞ্চাশ রূপোর মুদ্রা৷ 42 কিন্তু তারা কেউই ঋণ শোধ করতে না পারাতে তিনি দযা করে উভয়ের ঋণই মুকুব করে দিলেন৷ এখন এদের মধ্যে কে তাঁকে বেশী ভালবাসবে?’ 43 শিমোন বলল, ‘আমি মনে করি যার বেশী ঋণ মকুব করা হল সেই৷’যীশু তাকে বললেন, ‘তুমি ঠিক বলেছ৷’ 44 এরপর যীশু সেই স্ত্রীলোকটির দিকে ফিরে শিমোনকে বললেন, ‘তুমি এই স্ত্রীলোকটিকে দেখছ? আমি তোমার বাড়িতে এলাম আর তুমি আমায় পা ধোবার জল পর্যন্ত দিলে না৷ কিন্তু ও চোখের জলে আমার পা ধুইয়ে দিল আর নিজের চুল দিয়ে তা মুছিয়ে দিল৷ 45 স্বাগত জানাবার প্রথা অনুসারে তুমি আমায় চুমু দিলে না; কিন্তু আমি আসার পর থেকেই সে আমার পায়ে চুমু দিয়ে চলেছে৷ 46 তুমি আমার মাথায় তেল দিয়ে অভিষেক করলে না; কিন্তু সে আমার পায়ে সুগন্ধি আতর ঢেলে তা অভিষিক্ত করল৷ 47 এতেই বোঝা যায় য়ে সে বেশী ভালবাসা দেখাচ্ছে, সেইজন্যই আমি বলছি, এর পাপ অনেক হলেও তা ক্ষমা করা হয়েছে; কিন্তু যাকে অল্প ক্ষমা করা হয়, সে অল্প ভালবাসে৷’ 48 এরপর যীশু সেই স্ত্রী লোকটিকে বললেন, ‘তোমার পাপের ক্ষমা হল৷’ 49 যাঁরা তাঁর সঙ্গে খেতে বসেছিল, তারা পরস্পর বলাবলি করতে লাগল, ‘ইনি কে য়ে পাপ ক্ষমা করেন?’ 50 কিন্তু যীশু সেই স্ত্রী লোকটিকে বললেন, ‘তোমার বিশ্বাসই তোমায় মুক্ত করেছে, তোমার শান্তি হোক৷’
Luke 8:1 এরপর যীশু গ্রামে ও নগরে নগরে ঘুরে ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার প্রচার করতে লাগলেন; তাঁর সঙ্গে ছিলেন সেই বারোজন প্রেরিত৷ 2 এমন কয়েকজন স্ত্রীলোকও তাঁর সঙ্গে ছিলেন, যাঁরা নানারকম রোগ ব্যাধি থেকে সুস্থ হয়েছিলেন ও অশুচি আত্মার কবল থেকে মুক্ত হয়েছিলেন৷ এঁদের মধ্যে ছিলেন মরিয়ম মগ্দলীনী, এর মধ্যে যীশু সাতটি মন্দ আত্মা দূর করে দিয়েছিলেন৷ 3 রাজা হেরোদের বাড়ির অধ্যক্ষ কূষেরস্ত্রী শোশন্না ও আরো অনেক স্ত্রীলোক ছিলেন৷ যীশু ও তাঁর শিষ্যদের সেবা যত্নের জন্য এরা নিজেদের টাকা খরচ করতেন৷ 4 সেই সময় বিভিন্ন শহর থেকে দলে দলে লোক এসে যীশুর কাছে জড়ো হচ্ছিল, তখন যীশু তাদের উপদেশ দিতে গিয়ে এই দৃষ্টান্তটি বললেন: 5 ‘একজন চাষী বীজ বুনতে গেল৷ সে যখন বীজ বুনছিল তখন কিছু পথের পাশে পড়ল, আর লোকে তা মাড়িয়ে গেল, পাখিতে তা খেয়ে গেল৷ 6 কিছু বীজ পাথুরে জমির ওপর পড়ল, সেই বীজগুলো থেকে অঙ্কুর বের হল বটে, কিন্তু মাটিতে রস না থাকায় তা শুকিয়ে গেল৷ 7 কিছু বীজ ঝোপের মধ্যে পড়ল৷ কাঁটাগাছ বেড়ে উঠে চারাগুলিকে চেপে দিল৷ 8 আবার কিছু বীজ ভাল জমিতে পড়ল, সেগুলি বেড়ে উঠলে যা বোনা হয়েছিল তার একশো গুণ বেশী ফসল হল৷’এই কথা বলার পর তিনি চিত্কার করে বললেন, ‘যার শোনবার মত কান আছে, সে শুনুক৷’ 9 তাঁর শিষ্যেরা তাঁকে এই দৃষ্টান্তটির অর্থ কি তা জিজ্ঞেস করলেন৷ 10 তখন যীশু তাঁদের বললেন, ‘ঈশ্বরের রাজ্যের নিগূঢ় তত্ত্ব তোমাদের জানতে দেওযা হয়েছে; কিন্তু বাকি সকলের কাছে দৃষ্টান্তের মাধ্যমে বলা হয়েছে:‘য়েন তারা দেখেও না দেখে, শুনেও না বোঝে৷’যিশাইয় 6:9 11 ‘দৃষ্টান্তটির অর্থ এই, বীজ হল ঈশ্বরের শিক্ষা৷ 12 য়ে বীজ পথের ধারে পড়েছিল তা এমন লোকদের বোঝায়, যাঁরা শোনে, তারপর দিযাবল এসে তাদের অন্তর থেকে ঈশ্বরের শিক্ষা হরণ করে নিয়ে যায়, য়েন তারা বিশ্বাস করে মুক্তি না পায়৷ 13 য়ে বীজ পাথুরে জমিতে পড়েছিল তা এমন লোকদের বোঝায়, যাঁরা শোনার সঙ্গে সঙ্গে আনন্দের সঙ্গে তা গ্রহণ করে; কিন্তু মাটি না থাকাতে তাদের কোন শিকড় গজায়নি৷ কিছু দিনের জন্য তারা বিশ্বাস করে বটে; কিন্তু কঠিন পরীক্ষার সময় তারা পিছিয়ে যায়৷ 14 কাঁটা ঝোপের মধ্যে য়ে বীজ পড়ল তা সেই সব লোককে বোঝায়, যাঁরা শোনে; কিন্তু পরে জগত সংসারের চিন্তা ভাবনা, ধন-সম্পত্তি ও সুখভোগের মধ্যে তা চাপা পড়ে যায়, আর তারা কখনও ভাল ফল উত্পন্ন করে না৷ 15 য়ে বীজ ভাল জমিতে পড়ল তা হচ্ছে সেই সব লোকের প্রতীক যাদের অন্তর সত্যতা ও সরলতায় ভরা, তারা যখন ঈশ্বরের শিক্ষা শোনে তখন তা ধরে রাখে, আর স্থির থেকে জীবনে ফল উত্পন্ন করে৷ 16 ‘কেউ বাতি জ্বেলে তা কোন পাত্র দিয়ে ঢেকে রাখে না, অথবা খাটের নীচে রাখে না৷ তার পরিবর্তে সে তা বাতিদানের ওপরই রাখে, য়েন ভেতরে যাঁরা আসে তারা আলো দেখতে পায়৷ 17 এমন কিছু লুকানো নেই যা প্রকাশ পাবে না, এমন কিছু গোপন নেই যা জানা যাবে না কিংবা আলোয় ফুটে উঠবে না৷ 18 তাই কিভাবে শুনছ তাতে মন দাও, কারণ যার আছে তাকে আরো দেওযা হবে৷ আর যার নেই তার যা আছে বলে সে মনে করে, তাও তার কাছ থেকে কেড়ে নেওযা হবে৷ 19 এই সময় যীশুর মা ও ভাইরা তাঁকে দেখতে এসেছিলেন; কিন্তুভীড়ের জন্য তাঁরা যীশুর কাছে পৌঁছাতে পারলেন না৷ 20 তখন একজন লোক তাঁকে বলল, ‘আপনার মা ও ভাইরা বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন, তাঁরা আপনার সঙ্গে দেখা করতে চান৷’ 21 কিন্তু তিনি তাদের বললেন, ‘তারাই আমার মা, আমার ভাই, যাঁরা ঈশ্বরের শিক্ষা শুনে সেই অনুসারে কাজ করে৷’ 22 সেই সময় একদিন যীশু তাঁর শিষ্যদের সঙ্গে নিয়ে একটি নৌকায় উঠলেন৷ তিনি তাঁদের বললেন, ‘চল, আমরা হ্রদের ওপারে যাই৷’ তাঁরা রওনা দিলেন৷ 23 নৌকা চলতে থাকলে যীশু নৌকার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়লেন৷হ্রদের মধ্যে হঠাত্ ঝড় উঠল আর তাঁদের নৌকাটি জলে ভর্তি হয়ে য়েতে লাগল, এতে তাঁরা খুবই বিপদে পড়লেন৷ 24 তখন শিষ্যরা যীশুর কাছে এসে তাঁকে জাগিয়ে তুলে বললেন, ‘গুরু! গুরু! আমরা য়ে সত্যিই ডুবতে বসেছি৷তখন যীশু উঠে ঝোড়ো বাতাস ও তুফানকে ধমক দিলেন৷ সঙ্গে সঙ্গে ঝড় ও তুফান থেমে গেল, আর সব কিছু শান্ত হোল৷ 25 তখন যীশু তাঁর অনুগামীদের বললেন, ‘তোমাদের বিশ্বাস কোথায়?’কিন্তু তাঁরা ভয় ও বিস্ময়ে বিহ্বল হয়ে গিয়েছিলেন৷ তাঁরা পরস্পর বলাবলি করতে লাগলেন, ‘ইনি কে য়ে ঝড় এবং সমুদ্রকে হুকুম করেন আর তারা তাঁর কথা শোনে!’ 26 এরপর তাঁরা গালীল হ্রদের ওপারে গেরাসেনীদের অঞ্চলে গিয়ে পৌঁছালেন৷ 27 যীশু যখন তীরে নামছেন, সেই সময় সেই নগর থেকে একজন লোক তাঁর সামনে এল৷ এই লোকটির মধ্যে অনেকগুলো মন্দ আত্মা ছিল৷ বহুদিন ধরে সে জামা কাপড় পরত না ও বাড়িতে থাকত না কিন্তু কবরখানায় থাকত৷ 28 সে যীশুকে দেখতে পেয়ে চিত্কার করে উঠল ও তাঁর সামনে এসে উবুড় হয়ে পড়ে চিত্কার করে বলতে লাগল, ‘পরমেশ্বরের পুত্র যীশু, আমাকে নিয়ে আপনার কি কাজ, আমি আপনাকে মিনতি করছি, আমায় যন্ত্রণা দেবেন না৷’ সে এই কথা বলল, কারণ যীশু সেই ভূতকে তার মধ্য থেকে বের হয়ে যাবার জন্য হুকুম করলেন৷ সেই ভূত প্রায়ই লোকটাকে চেপে ধরত, তাকে বেড়ি ও শেকল দিয়ে বেঁধে রাখলেও তা ছিঁড়ে ফেলে ভূত তাকে প্রান্তরে তাড়িয়ে নিয়ে য়েত৷ 29 30 তখন যীশু তাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমার নাম কি?’সে বলল, ‘বাহিনী!’ কারণ অনেকগুলো ভূত একসঙ্গে তার মধ্যে ঢুকেছিল৷ 31 তারা যীশুকে মিনতির সুরে বলল, য়েন তিনি তাদের রসাতলে যাওযার হুকুম না করেন৷ 32 সেই সময় পাহাড়ের ঢালে একপাল শুযোর চরছিল৷ সেই ভূতরা যীশুকে মিনতি করে বলল য়েন তিনি তাদেরকে ঐ শুযোর পালে ঢোকার অনুমতি দেন৷ যীশু তখন তাদের সেই অনুমতি দিলেন৷ 33 তাতে ভূতরা সেই লোকটির ভেতর থেকে বেরিয়ে ঐ শুযোরগুলোর মধ্যে ঢুকল, আর সেই শুযোরের পাল হ্রদের ঢাল দিয়ে জোরে দৌড়ে গিয়ে জলে ডুবে মরল৷ 34 যাঁরা শুযোরের পাল চরাচ্ছিল, এই ঘটনা দেখে তারা দৌড়ে গিয়ে সেই নগরে ও সারা দেশে এই খবর দিল; 35 আর কি হয়েছে তা দেখবার জন্য লোকেরা বের হয়ে এল৷ তারা যীশুর কাছে এসে দেখল, যার মধ্যে থেকে ভূতগুলো বের হয়েছে সে কাপড় পরে শান্তভাবে যীশুর পায়ের কাছে বসে আছে৷ এই দেখে তারা ভয় পেয়ে গেল৷ 36 যাঁরা এই ঘটনা দেখেছিল তারা ঐ লোকদের কাছে বলল, কেমন করে ঐ ভূতে পাওযা লোকটি সুস্থ হল৷ 37 তখন গেরাসেনী অঞ্চলের সমস্ত লোক যীশুকে তাদের কাছ থেকে চলে য়েতে অনুরোধ করল, কারণ তারা ভীষণ ভয় পেয়ে গিয়েছিল৷ তখন যীশু ফিরে যাবার জন্য নৌকায় উঠলেন৷ 38 তখন য়ে লোকটির মধ্য থেকে ভূত বের হয়ে গিয়েছিল, সে যীশুর সঙ্গে যাবার জন্য মিনতি করতে লাগল৷কিন্তু যীশু তাকে অনুমতি দিলেন না৷ 39 তিনি বললেন, ‘তুমি বাড়ি ফিরে যাও; আর ঈশ্বর তোমার জন্য যা করেছেন তা সকলকে বল৷’ তখন সে সেখান থেকে চলে গেল, আর যীশু তার জন্য যা করেছেন তা সারা শহর বলে বেড়াতে লাগল৷ 40 যীশু যখন ফিরে এলেন তখন এক বিরাট জনতা তাঁকে স্বাগত জানাল, কারণ তারা সকলে যীশুর ফিরে আসার অপেক্ষায় ছিল৷ 41 ঠিক সেই সময় যাযীর নামে একজন লোক সেখানে এলেন, ইনি সেখানকার সমাজগৃহের নেতা৷ তিনি যীশুর পায়ের কাছে উপুড় হয়ে পড়ে তাঁকে অনুরোধ করলেন, য়েন যীশু তাঁর সঙ্গে তাঁর বাড়িতে যান৷ 42 কারণ তখন তাঁর একমাত্র সন্তান, বারো বছরের মেয়েটি মৃত্যুশয়্য়ায় ছিল৷যীশু যখন যাচ্ছিলেন, লোকেরা তাঁর চারদিকে ভীড় করে ধাক্কা-ধাক্কি করতে লাগল৷ 43 সেই ভীড়ের মধ্যে একজন স্ত্রীলোক ছিল য়ে বারো বছর ধরে রক্তস্রাব রোগে ভুগছিল৷ চিকিত্সকদের পিছনে সে তার যথাসর্বস্ব ব্যয় করেছিল, কিন্তু কেউ তাকে ভাল করতে পারে নি৷ 44 সে যীশুর পেছন দিকে এসে তাঁর পোশাকের ঝালর স্পর্শ করল, সঙ্গে সঙ্গে তার রক্তস্রাব বন্ধ হয়ে গেল৷ 45 তখন যীশু বললেন, ‘কে আমাকে স্পর্শ করল?’ সবাই অস্বীকার করল, তখন পিতর বললেন, ‘গুরু, লোকেরা আপনার চারপাশে ধাক্কা-ধাক্কি করে আপনার ওপর পড়ছে৷’ 46 কিন্তু যীশু বললেন, ‘কেউ আমায় স্পর্শ করেছে! কারণ আমি জানি আমার মধ্যে থেকে শক্তি বের হয়েছে৷’ 47 সেই স্ত্রীলোকটি যখন দেখল য়ে সে কোনমতে এড়িয়ে য়েতে পারবে না, তখন কাঁপতে কাঁপতে যীশুর কাছে এসে তার সামনে উপুড় হয়ে পড়ল এবং সকলের সামনে বলল কেন সে যীশুকে স্পর্শ করেছে, আর কিভাবে সঙ্গে সঙ্গে ভাল হয়ে গেছে৷ 48 তখন যীশু সেই স্ত্রীলোকটিকে বললেন, ‘তোমার বিশ্বাসই তোমাকে সুস্থ করেছে, তোমার শান্তি হোক্৷’ 49 তিনি তখনও কথা বলছেন, এমন সময় সমাজ-গৃহের নেতার বাড়ি থেকে একজন এসে বলল, ‘আপনার মেয়ে মারা গেছে! গুরুকে আর কষ্ট দেবেন না৷’ 50 যীশু এই কথা শুনতে পেয়ে সমাজ-গৃহের নেতাকে বললেন, ‘ভয় পেও না! কেবল বিশ্বাস কর, সে নিশ্চয়ই সুস্থ হয়ে উঠবে৷’ 51 যীশু সেই বাড়িতে পৌঁছে পিতর, যাকোব, য়োহন ও মেয়েটির মা-বাবা ছাড়া আর কাউকে সেই ঘরে ঢুকতে দিলেন না৷ 52 সেখানে অনেক লোক মেয়েটির জন্য শোক করছিল ও কাঁদছিল৷ যীশু তাদের বললেন, ‘কান্না বন্ধ কর, কারণ ও তো মরে নি, ও ঘুমোচ্ছে৷’ 53 তাঁর কথা শুনে লোকেরা হাসাহাসি করতে লাগল, কারণ তারা জানত মেয়েটি মারা গেছে৷ 54 যীশু মেয়েটির হাত ধরে ডাক দিলেন, ‘খুকুমনি ওঠ!’ 55 সেই মুহূর্তে তার আত্মা ফিরে এল, আর সে উঠে দাঁড়াল৷ যীশু তাদের আদেশ করলেন, ‘য়েন তাকে কিছু খেতে দেওযা হয়৷’ 56 মেয়েটির মা বাবা খুবই অবাক হয়ে গিয়েছিলেন৷ যীশু তাদের বারণ করলেন য়েন তারা এই ঘটনার কথা কাউকে না বলে৷
Luke 9:1 যীশু সেই বারোজন প্রেরিতকে ডেকে তাঁদের সব রকমের ভূত তাড়াবার ক্ষমতা ও নানান রোগ ভাল করার ক্ষমতা দিলেন৷ 2 এরপর তিনি তাঁদের ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয় প্রচার করতে ও রোগীদের সুস্থ করার জন্য পাঠালেন৷ 3 তিনি তাঁদের বললেন, ‘তোমরা যাত্রা পথের জন্য কিছুই নিও না, পথে যাবার জন্য লাঠি, ঝুলি, খাবার বা টাকা পয়সা কিছুই নিও না, এমন কি দুটো জামাও না৷ 4 য়ে বাড়িতে তোমরা প্রবেশ করবে, সেই গ্রাম ছেড়ে না যাওযা পর্যন্ত সেই বাড়িতেই থেকো৷ 5 য়েখানে লোকেরা তোমাদের স্বাগত জানাবে না সেখানে শহর ছেড়ে অন্যত্র যাবার সময় তাদের বিরুদ্ধে প্রামাণিক সাক্ষ্যস্বরূপ তোমাদের পায়ের ধূলো ঝেড়ে ফেল৷’ 6 তখন তাঁরা গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে য়েতে য়েতে ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার প্রচার ও রোগীদের সুস্থ করতে লাগলেন৷ 7 সেই সময় য়ে সব ঘটনা ঘটছিল রাজ্যপাল হেরোদ তা শুনে খুবই বিচলিত হয়ে পড়লেন৷ কারণ কেউ কেউ বলছিল, ‘য়োহন আবার বেঁচে উঠেছেন৷’ 8 আবার অনেকে বলছিল, ‘এলীয় পুনরায় আবির্ভূত হয়েছেন৷’ কেউ কেউ বলছিল, ‘প্রাচীনকালের, ভাববাদীদের মধ্যে কোন একজন পুনরায় মৃতদের মধ্য থেকে উত্থাপিত হয়েছেন৷’ 9 কিন্তু হেরোদ বললেন, ‘আমি য়োহনের মাথা কেটে ফেলেছি; কিন্তু যার বিষয়ে আমি এসব কথা শুনছি, এ তবে কে?’ আর তিনি যীশুকে দেখবার চেষ্টা করতে লাগলেন৷ 10 প্রেরিতরা ফিরে এসে তাঁরা কি কি করেছেন তা যীশুকে জানালেন৷ তখন যীশু তাঁদের নিয়ে নিভৃতে বৈত্সৈদা নগরে চলে গেলেন৷ 11 কিন্তু লোকেরা জানতে পেরে গেল য়ে তিনি কোথায় যাচ্ছেন, আর তারা যীশুর পিছু পিছু চলল৷ যীশুও তাদের সাদরে গ্রহণ করে তাদের কাছে ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয়ে বললেন, আর য়ে সব লোকের রোগ-ব্যাধি ভাল হবার প্রযোজন ছিল, তাদের সুস্থ করলেন৷ 12 দিন প্রায় শেষ হয়ে আসছে, এমন সময় সেই বারোজন প্রেরিত যীশুর কাছে ফিরে এসে বললেন, ‘আমরা য়েখানে আছি এটা একটা নির্জন স্থান, তাই এই লোকদের বিদায় দিন য়েন এরা আশপাশের গ্রামে গিয়ে নিজেদের জন্য থাকবার স্থান ও খাবার জোগাড় করে নিতে পারে৷’ 13 কিন্তু যীশু তাঁদের বললেন, ‘তোমরাই এদের খেতে দাও৷’কিন্তু তারা বললেন, ‘আমাদের কাছে তো পাঁচখানা রুটি আর দুটো মাছ ছাড়া আর কিছুই নেই৷ আমরা গিয়ে কি এই সব লোকদের জন্য খাবার কিনে আনব?’ 14 সেখানে পুরুষ মানুষই ছিল প্রায় পাঁচ হাজার৷কিন্তু যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, ‘ওদেরকে এক এক দলে পঞ্চাশ জন করে বসিয়ে দাও৷’ 15 তাঁরা সেই রকমই করলেন, তাদের সকলকেই বসিয়ে দিলেন৷ 16 এরপর যীশু সেই পাঁচখানা রুটি ও দুটো মাছ নিয়ে সেগুলোর জন্য স্বর্গের দিকে তাকিয়ে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিলেন৷ পরে তিনি সেগুলোকে টুকরো টুকরো করে তা পরিবেশন করার জন্য শিষ্যদের হাতে দিলেন৷ 17 সকলে বেশ তৃপ্তি করে খেল, বাকি যা পড়ে রইল তা একসঙ্গে জড় করলে বারোটি টুকরি ভরে গেল৷ 18 একদিন যীশু কোন এক জায়গায় নিভৃতে প্রার্থনা করছিলেন৷ তাঁর শিষ্যরা সেখানে এলে তিনি তাঁদের জিজ্ঞেস করলেন, ‘লোকেরা কি বলে, আমি কে?’ 19 তাঁরা বললেন, ‘কেউ কেউ বলে আপনি বাপ্তিস্মদাতা য়োহন, কেউ বা বলে এলীয়, আবার কেউ কেউ বলে প্রাচীনকালের ভাববাদীদের মধ্যে একজন বেঁচে উঠেছেন৷’ 20 তিনি তাঁদের বললেন, ‘কিন্তু তোমরা কি বল, আমি কে?’পিতর বললেন, ‘ঈশ্বরের সেই খ্রীষ্ট৷’ 21 তখন তিনি তাঁদের সতর্ক করে দিলেন য়েন একথা তাঁরা কারো কাছে প্রকাশ না করেন৷ 22 তিনি আরো বললেন, ‘মানবপুত্রের অনেক দুঃখ ও যাতনা ভোগ করার প্রযোজন আছে; ইহুদী নেতারা, প্রধান যাজকেরা ও ব্যবস্থার শিক্ষকেরা তাঁকে প্রত্যাখ্যান করবে, তারা তাঁকে হত্যা করবে; আর তিন দিনের মাথায় তিনি মৃত্যুলোক থেকে পুনরুত্থিত হবেন৷’ 23 পরে তিনি তাঁদের সকলের উদ্দেশ্যে বললেন, ‘যদি কেউ আমার সঙ্গে আসতে চায়, তবে সে নিজেকে অস্বীকার করুক; আর প্রতিদিন নিজের ক্রুশ তুলে নিক এবং আমায় অনুসরণ করুক৷ 24 য়ে কেউ নিজের জীবন রক্ষা করতে চায় সে তা হারাবে, কিন্তু য়ে কেউ আমার জন্য নিজের জীবন হারায় সে তা রক্ষা করবে৷ 25 সমগ্র জগত্ লাভ করে কেউ যদি নিজেকে ধ্বংস করে তবে তার কি লাভ হল? 26 যদি কেউ আমার জন্য ও আমার শিক্ষার জন্য লজ্জা বোধ করে, তবে যখন মানবপুত্র নিজ মহিমায় এবং পিতা পবিত্র স্বর্গদূতদের মহিমায় আসবেন তখন তিনিও তার জন্য লজ্জিত হবেন৷ 27 কিন্তু আমি তোমাদের সত্যি বলছি, এখানে এমন কয়েকজন আছে যাঁরা ঈশ্বরের রাজ্য না দেখা পর্যন্ত মৃত্যুর মুখ দেখবে না৷’ 28 এইসব কথা বলার প্রায় আট দিন পর, তিনি পিতর, যাকোব ও য়োহনকে নিয়ে প্রার্থনা করার জন্য একটা পর্বতে গেলেন৷ 29 যীশু যখন প্রার্থনা করছিলেন, তখন তাঁর মুখের চেহারা অন্যরকম হয়ে গেল, তাঁর পোশাক আলোক শুভ্র হয়ে উঠল৷ 30 দু ব্যক্তি মোশি ও এলীয় মহিমান্বিত হয়ে সেখানে এসে যীশুর সঙ্গে কথা বলতে লাগলেন৷ 31 তাঁরা ঈশ্বরের পরিকল্পনা অনুযাযী জেরুশালেমে কিভাবে যীশুর মৃত্যু হবে তাই নিয়ে কথা বলছিলেন৷ 32 কিন্তু পিতর ও তাঁর অন্য সঙ্গীরা সেই সময় ঢুলতে ঢুলতে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন৷ তাঁরা জেগে উঠে যীশুকে মহিমান্বিত রূপে দেখতে পেলেন, আর ঐ দুই ব্যক্তিকে যীশুর সঙ্গে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলেন৷ 33 সেই ব্যক্তিরা যখন যীশুর কাছ থেকে চলে যাচ্ছিলেন, তখন পিতর যীশুকে বললেন, ‘গুরু, ভালোই হয়েছে য়ে আমরা এখানে আছি৷ আমরা এখানে তিনটে কুটীর তৈরী করি, একটা আপনার জন্য, একটা মোশির জন্য আর একটা এলিয়র জন্য৷’ তিনি জানতেন না য়ে তিনি কি বলছিলেন৷ 34 কিন্তু তিনি যখন এইসব কথা বলছিলেন, সেই সময় এক খণ্ড মেঘ এসে তাঁদের ঢেকে ফেলল, মেঘের মধ্যে প্রবেশ করে তাঁরা ভীত হলেন৷ 35 সেই মেঘের মধ্য থেকে এক রব শোনা গেল৷ সেই রব বলল, ‘এই আমার পুত্র, আমার মনোনীত পাত্র, তাঁর কথা শোন৷’ 36 সেই রব মিলিয়ে যাবার পরই দেখা গেল কেবল যীশু একা সেখানে রয়েছেন আর শিষ্যরা যা দেখলেন সে বিষয়ে কাউকে কিছু না বলে চুপ করে রইলেন৷ 37 পরদিন তাঁরা পর্বত থেকে নেমে এলে বহু লোক যীশুর সঙ্গে দেখা করতে এল, 38 আর সেই সময় ঐ ভীড়ের মধ্য থেকে একটি লোক চিত্কার করে বলল, ‘গুরু, আমি আপনাকে মিনতি করছি আপনি আমার এই একমাত্র সন্তানের দিকে একটু দেখুন৷ 39 হঠাত্, একটা অশুচি আত্মা তাকে ধরে, আর সে চিত্কার করতে থাকে৷ সেই আত্মা যখন তাকে মুচড়ে ধরে তখন তার মুখ থেকে ফেনা কাটতে থাকে৷ এটা সহজে তাকে ছেড়ে য়েতে চায় না, তাকে একবারে ঝাঁঝরা করে দেয়৷ 40 আমি আপনার শিষ্যদের কাছে মিনতি করেছিলাম য়েন তাঁরা ঐ অশুচি আত্মাকে তাড়িয়ে দেন, কিন্তু তাঁরা পারলেন না৷’ 41 যীশু বললেন, ‘হে অবিশ্বাসী ও পথভ্রষ্ট লোকেরা, আমি আর কতকাল তোমাদের নিয়ে ধৈর্য্য ধরব, কতকালই বা তোমাদের সঙ্গে থাকব?’ যীশু লোকটিকে বললেন, ‘তোমার ছেলেকে এখানে আন৷’ 42 ছেলেটা যখন আসছিল, তখন সেই ভূত তাকে আছাড় মারল আর তাতে সে প্রবলভাবে হাত-পা ছোঁড়াছুঁড়ি করতে লাগল৷ যীশু সেই অশুচি আত্মাকে ধমক দিলেন৷ তারপর ছেলেটিকে সম্পূর্ণ সুস্থ করে তার বাবার কাছে ফেরত্ দিলেন৷ 43 ঈশ্বর য়ে কত মহান তা দেখে লোকেরা অবাক হয়ে গেল৷যীশু যা করলেন তা দেখে লোকেরা আশ্চর্য হচ্ছিল, তখন যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, 44 ‘আমি তোমাদের যা বলছি তা মন দিয়ে শোন, শীঘ্রই মানবপুত্রকে মানুষের হাতে সঁপে দেওযা হবে৷’ 45 কিন্তু এ কথার অর্থ কি শিষ্যরা তা বুঝতে পারলেন না৷ এটা তাঁদের কাছে গুপ্ত রয়ে গেল, তাই তাঁরা এর কিছুই উপলদ্ধি করতে পারলেন না৷ 46 সেই সময়ই তাঁদের মধ্যে এই বিতর্কের সূত্রপাত হল য়ে কে তাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ৷ 47 কিন্তু যীশু তাঁদের মনোভাব বুঝতে পেরে একটি শিশুকে এনে নিজের পাশে দাঁড় করালেন৷ 48 তিনি তাঁদের বললেন, ‘য়ে কেউ আমার নামে এই শিশুকে সাদরে গ্রহণ করে, সে আমাকেই গ্রহণ করে; আর য়ে আমাকে সাদরে গ্রহণ করে, সে আমাকে যিনি পাঠিয়েছেন তাঁকেই গ্রহণ করে৷ তোমাদের মধ্যে য়ে সবচেয়ে ছোট, সেই শ্রেষ্ঠ৷’ 49 য়োহন বললেন, ‘প্রভু আমরা আপনার নামে একজনকে ভূত তাড়াতে দেখেছি৷ সে আমাদের সঙ্গী নয় বলে আমরা তাকে বারণ করেছি৷’ 50 কিন্তু যীশু তাঁকে বললেন, ‘তাকে বারণ কোর না, কারণ য়ে তোমাদের বিপক্ষ নয়, সে তোমাদের সপক্ষ৷’ 51 যীশুর স্বর্গে যাবার সময় হয়ে এলে তিনি স্থির চিত্তে জেরুশালেমের দিকে এগিয়ে চললেন৷ 52 তিনি তাঁর পৌঁছাবার আগেই সেখানে কিছু বার্তবাহক পাঠালেন৷ তাঁরা গিয়ে শমরীয়দের এক গ্রামে উঠলেন, য়েন যীশুর জন্য সব কিছু ব্যবস্থা করতে পারেন৷ 53 কিন্তু যীশু জেরুশালেমে যাবেন বলে স্থির করায় শমরীয়রা তাঁকে গ্রহণ করল না৷ 54 যীশুর অনুগামী যাকোব ও য়োহন এই দেখে বললেন, ‘প্রভু, আপনি কি চান য়ে এদের ধ্বংস করার জন্য আমরা আকাশ থেকে আগুন নামিয়ে আনি?’ 55 কিন্তু যীশু ফিরে দাঁড়িয়ে তাদের ধমক দিলেন৷ 56 তখন তাঁরা অন্য গ্রামে গেলেন৷ 57 তাঁরা যখন রাস্তা দিয়ে যাচ্ছেন, সেই সময় একজন লোক যীশুকে বলল, ‘আপনি য়েখানেই যান না কেন আমিও আপনার সঙ্গে যাব৷’ 58 যীশু তাকে বললেন, ‘শেযালের গর্ত আছে, আকাশের পাখিদেরও বাসা আছে, কিন্তু মানবপুত্রের কোথাও মাথা রাখার ঠাঁই নেই৷’ 59 আর একজনকে তিনি বললেন, ‘আমায় অনুসরণ কর৷’ কিন্তু সেই লোকটি বলল, ‘আগে গিয়ে আমার বাবাকে কবর দিয়ে আসতে দিন৷’ 60 কিন্তু যীশু তাকে বললেন, ‘মৃতরাই তাদের মৃতদের কবর দেবে৷ তুমি গিয়ে বরং ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয় ঘোষণা কর৷’ 61 আর একজন লোক বলল, ‘প্রভু, আমি আপনার অনুসারী হব: কিন্তু প্রথমে আমার বাড়ির সকলকে বিদায় জানিয়ে আসতে দিন৷’ 62 কিন্তু যীশু তাকে বললেন, ‘লাঙ্গলে হাত রেখে য়ে পেছন ফিরে তাকায়, সে ঈশ্বরের রাজ্যের য়োগ্য নয়৷’
Luke 10:1 এরপর প্রভু আরও বাহাত্তরজন লোককে মনোনীত করলেন৷ তিনি নিজে য়ে সমস্ত নগরে ও য়ে সমস্ত জায়গায় যাবেন বলে ঠিক করেছিলেন, সেই সব জায়গায় তাঁদের দুজন দুজন করে পাঠিয়ে দিলেন৷ 2 তিনি তাঁদের বললেন, ‘শস্য প্রচুর হয়েছে, কিন্তু তা কাটার জন্য মজুরের সংখ্যা অল্প, তাই শস্যের যিনি মালিক তাঁর কাছে প্রার্থনা কর, য়েন তিনি তাঁর ফসল কাটার জন্য মজুর পাঠান৷ 3 যাও! আর মনে রেখো, নেকড়ে বাঘের মধ্যে ভেড়ার মতোই আমি তোমাদের পাঠাচ্ছি৷ 4 তোমরা টাকার বটুযা, থলি বা জুতো সঙ্গে নিও না এবং পথের মধ্যে কাউকে শুভেচ্ছা জানিও না৷ 5 য়ে বাড়িতে তোমরা প্রবেশ করবে সেখানে প্রথমে বলবে, ‘এই গৃহে শান্তি হোক!’ 6 সেখানে যদি শান্তির পাত্র কেউ থাকে, তবে তোমাদের শান্তি তার সহবর্তী হবে৷ কিন্তু যদি সেরকম কেউ না থাকে, তাহলে তোমাদের শান্তি তোমাদের কাছে ফিরে আসবে৷ 7 য়ে বাড়িতে যাবে সেখানেই থেকো, আর তারা যা খেতে দেয় তাই খেও, কারণ য়ে কাজ করে সে বেতন পাবার য়োগ্য৷ এ বাড়ি সে বাড়ি করে ঘুরে বেড়িও না৷ 8 তোমরা যখন কোন নগরে প্রবেশ করবে তখন সেই নগরের লোকেরা যদি তোমাদের স্বাগত জানায়, তবে সেখানকার লোকেরা তোমাদের সামনে যা কিছু ধরে, তা খেও৷ 9 সেই নগরের রোগীদের সুস্থ কোর ও সেখানকার লোকদের বোল, ‘ঈশ্বরের রাজ্য তোমাদের কাছে এসে পড়েছে৷’ 10 তোমরা কোন নগরে প্রবেশ করলে যদি সেই নগরের লোকেরা তোমাদের স্বাগত না জানায়, তবে সেখানকার রাস্তায় বেরিয়ে এসে তোমরা বোল, 11 ‘এমনকি তোমাদের নগরের য়ে ধূলো আমাদের পায়ে লেগেছে তা আমরা তোমাদের বিরুদ্ধে ঝেড়ে ফেললাম; তবে একথা জেনে রেখো য়ে ঈশ্বরের রাজ্য তোমাদের কাছে এসে গেছে৷’ 12 আমি তোমাদের বলছি, সেই দিন এই নগরের থেকে সদোমের লোকদের অবস্থা অনেক বেশী সহনীয় হবে৷’ 13 ‘কোরাসীন ধিক্ তোমাকে! বৈত্সৈদা ধিক্ তোমাকে! তোমাদের মধ্যে য়ে সব অলৌকিক কাজ করা হয়েছে তা যদি সোর ও সীদোনে করা হত, তবে সেখানকার লোকেরা অনেক আগেই চটের বস্ত্র পরে মাথায় ভস্ম ছিটিয়ে অনুতাপ করতে বসত৷ 14 যাইহোক, বিচারের দিনে সোর সীদোনের অবস্থা বরং তোমাদের চেয়ে অনেক সহনীয় হবে৷ 15 তুমি কফরনাহূম! তুমি কি স্বর্গ পর্যন্ত উন্নীত হবে? না! তোমাকে নরক পর্যন্ত নামানো যাবে! 16 ‘যাঁরা তোমাদের কথা শোনে, তারা আমারই কথা শোনে; আর যাঁরা তোমাদের অগ্রাহ্য় করে, তারা আমাকেই অগ্রাহ্য় করে৷ যাঁরা আমাকে অগ্রাহ্য় করে, তারা যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁকেই অগ্রাহ্য করে৷’ 17 এরপর সেই বাহাত্তরজন আনন্দের সঙ্গে ফিরে এসে বললেন, ‘প্রভু, আপনার নামে এমন কি ভূতরাও আমাদের বশ্যতা স্বীকার করে!’ 18 তখন যীশু তাঁদের বললেন, ‘আমি শয়তানকে বিদ্য়ুত্ ঝলকের মতো আকাশ থেকে পড়তে দেখলাম৷ 19 শোন! সাপ ও বিছেকে পায়ে দলবার ক্ষমতা আমি তোমাদের দিয়েছি; আর তোমাদের শত্রুর সমস্ত শক্তির ওপরে ক্ষমতাও আমি তোমাদের দিয়েছি; কোন কিছুই তোমাদের ক্ষতি করতে পারবে না৷ 20 তবু আত্মারা য়ে তোমাদের বশীভূত হয়, এ জেনে আনন্দ কোর না; কিন্তু স্বর্গে তোমাদের নাম লেখা হয়েছে বলে আনন্দ কর৷’ 21 ঠিক সেই মুহূর্তে পবিত্র আত্মার আনন্দে পূর্ণ হয়ে যীশু বললেন, ‘পিতা, আমি তোমার প্রশংসা করি, কারণ স্বর্গ ও পৃথিবীর প্রভু, তুমি এসব বিষয় জ্ঞানীগুণী ও বুদ্ধিমান লোকদের কাছে গোপন রেখে শিশুদের কাছে প্রকাশ করেছ৷ হ্যাঁ, পিতা, এতেই তোমার আনন্দ৷ 22 ‘আমার পিতা আমায় সবই দিয়েছেন৷ পিতা ছাড়া আর কেউ জানে না পুত্র কে, আমার পুত্র ছাড়া আর কেউ জানে না পিতা কে৷ এছাড়া পুত্র যার কাছে পিতাকে প্রকাশ করতে ইচ্ছা করেন, কেবল সে-ই জানে৷’ 23 এরপর শিষ্যদের দিকে ফিরে তিনি একান্তে তাঁদের বললেন, ‘তোমরা যা দেখছ, য়ে চোখ তা দেখতে পায় তা ধন্য! 24 কারণ আমি তোমাদের বলছি, তোমরা যা দেখছ, অনেক ভাববাদী ও রাজা তা দেখার ইচ্ছা করলেও তা দেখতে পান নি; তোমরা যা শুনছ, তা শোনার ইচ্ছা করলেও তাঁরা তা শুনতে পান নি৷’ 25 এরপর একজন ব্যবস্থার শিক্ষক যীশুকে পরীক্ষার ছলে জিজ্ঞাসা করল, ‘গুরু, অনন্ত জীবন লাভ করার জন্য আমায় কি করতে হবে?’ 26 যীশু তাকে বললেন, ‘বিধি-ব্যবস্থায় এ বিষয়ে কি লেখা আছে? সেখানে তুমি কি পড়েছ?’ 27 সে জবাব দিল, ‘তোমার সমস্ত অন্তর, মন, প্রাণ ও শক্তি দিয়ে অবশ্যই তোমার প্রভু ঈশ্বরকে ভালবাসো৷’আর ‘তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মতো ভালবাসো৷” 28 তখন যীশু তাকে বললেন, ‘তুমি ঠিক উত্তরই দিয়েছ; ঐ সবই কর, তাহলে অনন্ত জীবন লাভ করবে৷’ 29 কিন্তু সে নিজেকে ধার্মিক দেখাতে চেয়ে যীশুকে জিজ্ঞেস করল, ‘আমার প্রতিবেশী কে?’ 30 এর উত্তরে যীশু বললেন, ‘একজন লোক জেরুশালেম থেকে যিরীহোর দিকে নেমে যাচ্ছিল, পথে সে ডাকাতের হাতে ধরা পড়ল৷ তারা লোকটির জামা কাপড় খুলে নিয়ে তাকে মারধোর করে আধমরা অবস্থায় সেখানে ফেলে রেখে চলে গেল৷ 31 ঘটনাক্রমে সেই পথ দিয়ে একজন ইহুদী যাজক যাচ্ছিল, যাজক তাকে দেখতে পেয়ে পথের অন্য ধার দিয়ে চলে গেল৷ 32 সেই পথে এরপর একজন লেবীয়এল৷ তাকে দেখে সেও পথের অন্য ধার দিয়ে চলে গেল৷ 33 কিন্তু একজন শমরীয় ঐ পথে য়েতে য়েতে সেই লোকটির কাছাকাছি এল৷ লোকটিকে দেখে তার মনে মমতা হল৷ 34 সে ঐ লোকটির কাছে গিয়ে তার ক্ষতস্থান দ্রাক্ষারস দিয়ে ধুয়ে তাতে তেল ঢেলে বেঁধে দিল৷ এরপর সেই শমরীয় লোকটিকে তার নিজের গাধার ওপর চাপিয়ে একটি সরাইখানায় নিয়ে এসে তার সেবা যত্ন করল৷ 35 পরের দিন সেই শমরীয় দুটি রৌপ্যমুদ্রা বের করে সরাইখানার মালিককে দিয়ে বলল, ‘এই লোকটির যত্ন করবেন আর আপনি যদি এর চেয়ে বেশী খরচ করেন, তবে আমি ফিরে এসে আপনাকে তা শোধ করে দেব৷’ 36 এখন বল, ‘এই তিনজনের মধ্যে সেই ডাকাত দলের হাতে পড়া লোকটির প্রকৃত প্রতিবেশী কে?’ 37 সে বলল, ‘য়ে লোকটি তার প্রতি দযা করল৷’তখন যীশু তাকে বললেন, ‘সে য়েমন করল, যাও তুমি গিয়ে তেমন কর৷’ 38 এরপর যীশু ও তাঁর শিষ্যরা জেরুশালেমের পথে য়েতে য়েতে কোন এক গ্রামে প্রবেশ করলেন৷ সেখানে মার্থা নামে একজন স্ত্রীলোক তাঁদের সাদর অভ্যর্থনা করলেন৷ 39 মরিয়ম নামে তাঁর একটি বোন ছিল, তিনি যীশুর পায়ের কাছে বসে তাঁর শিক্ষা শুনছিলেন৷ 40 কিন্তু খাওযা-দাওযার নানা রকম আযোজন করতে মার্থা খুবই ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন৷ তিনি যীশুর কাছে এসে বললেন, ‘প্রভু, আপনি কি দেখছেন না, আমার বোন সমস্ত কাজ একা আমার ঘাড়ে ফেলে দিয়েছে? ওকে বলুন ও য়েন আমায় সাহায্য করে৷’ 41 প্রভু তখন মার্থাকে বললেন, ‘মার্থা, মার্থা তুমি অনেক বিষয় নিয়ে বড়ই উদ্বিগ্ন ও চিন্তিত হয়ে পড়েছ৷ 42 কিন্তু কেবলমাত্র একটা বিষয়ের প্রযোজন আছে৷ আর মরিয়ম সেই উত্তম বিষয়টি মনোনীত করেছে, যা তার কাছ থেকে কখনও কেড়ে নেওযা হবে না৷’
Luke 11:1 যীশু এক জায়গায় প্রার্থনা করছিলেন৷ প্রার্থনা শেষ হলে পর তাঁর একজন শিষ্য এসে তাঁকে বললেন, ‘প্রভু, য়োহন য়েমন তাঁর শিষ্যদের প্রার্থনা করতে শিখিয়েছিলেন, আপনিও তেমনি আমাদের প্রার্থনা করতে শেখান৷’ 2 তখন যীশু তাঁদের বললেন, ‘তোমরা যখন প্রার্থনা কর তখন বোল,‘পিতা, তোমার পবিত্র নামের সমাদর হোক্, তোমার রাজ্য আসুক৷ 3 দিনের আহার তুমি প্রতিদিন আমাদের দাও৷ 4 আমাদের পাপ ক্ষমা কর, কারণ আমাদের বিরুদ্ধে যাঁরা অন্যায় করেছে, আমরাও তাদের ক্ষমা করেছি, আর আমাদের পরীক্ষায় পড়তে দিও না৷” 5 এরপর যীশু তাঁদের বললেন, ‘ধর, তোমাদের কারো একজন বন্ধু আছে৷ আর সে মাঝরাতে তার কাছে গিয়ে বলল, ‘বন্ধু আমায় খান তিনেক রুটি ধার দাও, কারণ আমার এক বন্ধু যাত্রাপথে এই মাত্র আমার ঘরে এসেছে, তাকে খেতে দেবার মতো ঘরে কিছু নেই৷’ 6 7 সেই লোক যদি ঘরের ভেতর থেকে উত্তর দেয়, ‘দেখ, আমায় বিরক্ত কোর না! এখন দরজা বন্ধ আছে আর ছেলেমেয়েদের নিয়ে আমি শুয়ে পড়েছি৷ আমি এখন তোমাকে কিছু দেবার জন্য উঠতে পারব না৷’ 8 আমি তোমাদের বলছি, সে যদি বন্ধু হিসাবে উঠে তাকে কিছু না দেয়, তবু লোকটি বার বার করে অনুরোধ করছে বলে সে উঠবে ও তার যা দরকার তা তাকে দেবে৷ 9 তাই আমি তোমাদের বলছি, তোমরা চাও, তোমাদের দেওযা হবে, খোঁজ তোমরা পাবে৷ দরজায় ধাক্কা দাও, তোমাদের জন্য দরজা খোলা হবে৷ 10 কারণ যাঁরা চায়, তারা পায়৷ যাঁরা খোঁজ করে, তারা সন্ধান পায় আর যাঁরা দরজায় ধাক্কা দেয়, তাদের জন্য দরজা খোলা হয়৷ 11 তোমাদের মধ্যে এমন বাবা কি কেউ আছে যার ছেলে মাছ চাইলে সে তাকে মাঝের বদলে সাপ দেবে? 12 অথবা ছেলে যদি ডিম চায় তবে তাকে কাঁকড়াবিছা দেবে? 13 তাই তোমরা যদি মন্দ প্রকৃতির হয়েও তোমাদের ছেলেমেয়েদের ভাল ভাল জিনিস দিতে জান, তবে স্বর্গের পিতার কাছে যাঁরা চায়, তিনি য়ে তাদের পবিত্র আত্মা দেবেন, এটা কত না নিশ্চয়৷’ 14 একসময় যীশু একজনের মধ্য থেকে একটা বোবা ভূতকে বের করে দিলেন৷ সেই ভূত বের হয়ে যাবার সঙ্গে সঙ্গে ঐ লোকটি কথা বলতে শুরু করল৷ এই দেখে লোকেরা অবাক হয়ে গেল৷ 15 কিন্তু তাদের মধ্যে কেউ কেউ বলল, ‘ভূতদের রাজা বেলস্বূলের সাহায্যেই ও ভূত তাড়ায়!’ 16 আবার কেউ কেউ যীশুকে পরীক্ষা করবার জন্য আকাশ থেকে কোন চিহ্ন দেখাতে বলল.৷ 17 কিন্তু তিনি তাদের মনের কথা জানতে পেরে বললেন, ‘য়ে রাজ্য আত্মকলহে নিজেদের মধ্যে ভাগ হয়ে যায়, সেই রাজ্য ধ্বংস হয়৷ আবার কোন পরিবার যদি নিজেদের মধ্যে ঝগড়া করে, তবে সেই পরিবারও ভেঙ্গে যায়৷ 18 তাই শয়তানও যদি নিজের বিরুদ্ধে নিজে দাঁড়ায় তবে কেমন করে তার রাজ্য টিকবে? আমি তোমাদের একথা জিজ্ঞেস করছি কারণ তোমরা বলছ আমি বেল্সবূলের সাহায্যে ভূত ছাড়াই৷ 19 কিন্তু আমি যদি বেলস্বূলের সাহায্যে ভূত ছাড়াই, তবে তোমাদের অনুগামীরা কার সাহায্যে তা ছাড়ায়? তাই তারাই তোমাদের বিচার করুক৷ 20 কিন্তু আমি যদি ঈশ্বরের শক্তিতে ভূতদের ছাড়াই, তাহলে স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে য়ে ঈশ্বরের রাজ্য তোমাদের কাছে ইতিমধ্যেই এসে পড়েছে৷ 21 ‘যখন কোন শক্তিশালী লোক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তার ঘর পাহারা দেয়, তখন তার ধনসম্পদ নিরাপদে থাকে৷ 22 ‘কিন্তু তার থেকে পরাক্রান্ত কোন লোক যখন তাকে আক্রমণ করে পরাস্ত করে, তখন নিরাপদে থাকার জন্য য়ে অস্ত্রশস্ত্রের ওপর সে নির্ভর করেছিল, অন্য শক্তিশালী লোকটি সেগুলো কেড়ে নেয় আর ঐ লোকটির ঘরের সব জিনিসপত্র লুটে নেয়৷ 23 ‘য়ে আমার পক্ষে নয়, সে আমার বিপক্ষ৷ য়ে আমার সঙ্গে কুড়ায়না, সে ছড়ায়৷ 24 ‘কোন অশুচি আত্মা যখন কোন লোকের মধ্য থেকে বের হয়ে আসে, তখন সে বিশ্রামের খোঁজে নির্জন স্থানে ঘোরাফেরা করে আর বিশ্রাম না পেয়ে বলে, ‘য়ে ঘর থেকে আমি বের হয়ে এসেছি, সেখানেই ফিরে যাব৷’ 25 কিন্তু সেখানে ফিরে গিয়ে সে যখন দেখে সেই ঘরটি পরিষ্কার করা হয়েছে আর সাজানো-গোছানো আছে, 26 তখন সে গিয়ে তার থেকে আরো দুষ্ট সাতটা আত্মাকে নিয়ে এসে ঐ ঘরে বসবাস করতে থাকে৷ তাই ঐ লোকের প্রথম দশা থেকে শেষ দশা আরো ভয়ঙ্কর হয়৷’ 27 যীশু যখন এইসব কথা বলছিলেন, তখন সেই ভীড়ের মধ্য থেকে একজন স্ত্রীলোক চিত্কার করে বলে উঠল, ‘ধন্য সেই মা, যিনি আপনাকে গর্ভে ধারণ করেছিলেন, আর য়াঁর স্তন আপনি পান করেছিলেন৷’ 28 কিন্তু যীশু বললেন, ‘এর থেকেও ধন্য তারা যাঁরা ঈশ্বরের শিক্ষা শোনে ও তা পালন করে৷’ 29 এরপর যখন ভীড় বাড়তে লাগল, তখন যীশু বললেন, ‘এ যুগের লোকেরা খুবই দুষ্ট, তারা কেবল অলৌকিক চিহ্নের খোঁজ করে৷ কিন্তু য়োনার চিহ্ন ছাড়া তাদেরকে আর কোন চিহ্ন দেখানো হবে না৷ 30 য়োনা য়েমন নীনবীয় লোকদের কাছে চিহ্নস্বরূপ হয়েছিলেন, তেমনি এই যুগের লোকদের কাছে মানবপুত্র হবেন৷ 31 দক্ষিণ দেশের রাণীবিচার দিনে উঠে এই যুগের লোকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করবেন ও তাদের দোষী সাব্যস্ত করবেন৷ কারণ শলোমনের জ্ঞানের কথা শোনার জন্য তিনি পৃথিবীর প্রান্ত থেকে এসেছিলেন, আর শলোমন এর থেকে মহান একজন এখন এখানে আছেন৷ 32 বিচার দিনে নীনবীয় লোকেরা এই যুগের লোকদের বিরুদ্ধে উঠে দাঁড়াবে, তারা এদের ওপর দোষারোপ করবে, কারণ তারা য়োনার প্রচার শুনে অনুশোচনা করেছিল, আর এখন য়োনার থেকে মহান একজন এখানে আছেন৷ 33 ‘প্রদীপ জে্বলে কেউ আড়ালে রাখে না বা ধামা চাপা দিয়ে রাখে না বরং তা বাতিদানের ওপরেই রাখে, য়েন যাঁরা ঘরে আসে, তারা আলো দেখতে পায়৷ 34 তোমার চোখ যদি সুস্থ থাকে, তবে তোমার সমস্ত দেহটি দীপ্তিময় হবে; কিন্তু তা যদি মন্দ হয় তবে তোমার দেহ অন্ধকারময় হবে৷ 35 তাই সাবধান, তোমার মধ্যে য়ে আলো আছে তা য়েন অন্ধকার না হয়৷ 36 তোমার সারা দেহ যদি আলোকময় হয়, তার মধ্যে যদি এতটুকু অন্ধকার না থাকে, তবে তা সম্পূর্ণ আলোকিত হবে, ঠিক য়েমন বাতির আলো তোমার ওপর পড়ে তোমায় আলোকিত করে তোলে৷’ 37 যীশু এই কথা শেষ করলে একজন ফরীশী তার বাড়িতে যীশুকে খাওযার জন্য নিমন্ত্রণ করল৷ তাই তিনি তার বাড়িতে গিয়ে খাবার আসনে বসলেন৷ 38 কিন্তু সেই ফরীশী দেখল য়ে খাওযার আগে প্রথা মতো যীশু হাত ধুলেন না৷ 39 প্রভু তাকে বললেন, ‘তোমরা ফরীশীরা থালা বাটির বাইরেটা পরিষ্কার কর, কিন্তু ভেতরে তোমরা দুষ্টতা ও লোভে ভরা৷ 40 তোমরা মূর্খের দল! তোমরা কি জান না যিনি বাইরেটা করেছেন তিনি ভেতরটাও করেছেন? 41 তাই তোমাদের থালা বাটির ভেতরে যা কিছু আছে তা দরিদ্রদের বিলিয়ে দাও, তাহলে সবকিছুই তোমাদের কাছে সম্পূর্ণ শুচি হয়ে যাবে৷ 42 কিন্তু হায়, ফরীশীরা ধিক্ তোমাদের কারণ তোমরা পুদিনা, ধনে ও বাগানের অন্যান্য শাকের দশমাংশ ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে উত্সর্গ করে থাক, কিন্তু ন্যায়বিচার ও ঈশ্বরের প্রতি প্রেমের বিষয়টি অবহেলা কর৷ কিন্তু প্রথম বিষয়গুলির সঙ্গে সঙ্গে শেষেরগুলিও তোমাদের জীবনে পালন করা কর্তব্য৷ 43 ধিক্ ফরীশীরা! তোমরা সমাজ-গৃহে সম্মানিত আসন আর হাটে বাজারে সকলের সশ্রদ্ধ অভিবাদন পেতে কত না ভালবাস৷ 44 ধিক্ তোমাদের! তোমরা মাঠের মাঝে মিশে থাকা কবরের মতো, লোকেরা না জেনে যার ওপর দিয়ে হেঁটে যায়৷ 45 একজন ব্যবস্থার শিক্ষক এর উত্তরে যীশুকে বললেন, ‘গুরু, আপনি এসব যা বললেন, তার দ্বারা আমাদেরও অপমান করলেন৷’ 46 তখন যীশু তাকে বললেন, ‘হে ব্যবস্থার শিক্ষকরা, ধিক্ তোমাদের, তোমরা লোকদের ওপর এমন ভারী বোঝা চাপিয়ে দাও যা তাদের পক্ষে গ্রহণ করা অসন্ভব; আর তোমরা নিজেরা সেই ভার বইবার জন্য সাহায্য করতে তাতে একটা আঙ্গুল পর্যন্ত ছোঁযাও না৷ 47 ধিক্ তোমাদের, কারণ তোমরা ভাববাদীদের সমাধিগুহা গেঁথে থাকো; আর এই সব ভাববাদীদের তোমাদের পূর্বপুরুষেরাই হত্যা করেছিল৷ 48 তাই এই কাজ করে তোমরা এই সাক্ষ্যই দিচ্ছ য়ে তোমাদের পূর্বপুরুষেরা য়ে কাজ করেছিল তা তোমরা ঠিক বলে মেনে নিচ্ছ৷ কারণ তারা ওদের হত্যা করেছিল আর তোমরা ওদের সমাধিগুহা রচনা করছ৷ 49 এই কারণেই ঈশ্বরের প্রজ্ঞা বলছে, ‘আমি তাদের কাছে য়ে ভাববাদী ও প্রেরিতদের পাঠাবো, তাদের মধ্যে কাউকে কাউকে তারা হত্যা করবে, কাউকে বা নির্য়াতন করবে৷’ 50 সেই জন্যই জগত্ সৃষ্টির শুরু থেকে আজ পর্যন্ত যত ভাববাদী হত্যা করা হয়েছে, তাদের সকলের হত্যার জন্য এই কালের লোকদের শাস্তি পেতে হবে৷ 51 হ্যাঁ, আমি তোমাদের বলছি, হেবলের রক্তপাত থেকে আরন্ভ করে য়ে সখরিয়কে যজ্ঞবেদী ও মন্দিরের মধ্যবর্তী স্থানে হত্যা করা হয়েছিল, সেই সখরিয়ের হত্যা পর্যন্ত সমস্ত রক্তপাতের দায়ে দাযী হবে একালের লোকেরা৷ 52 ‘ধিক্ ব্যবস্থার শিক্ষকরা কারণ তোমরা জ্ঞানের চাবিটি ধরে আছ৷ তোমরা নিজেরাও প্রবেশ করনি আর যাঁরা প্রবেশ করার চেষ্টা করছে তাদেরও বাধা দিচ্ছ৷’ 53 তিনি যখন সেই জায়গা ছেড়ে চলে গেলেন, তখন ব্যবস্থার শিক্ষকরা ও ফরীশীরা তাঁর বিরুদ্ধে ভীষণভাবে শত্রুতা করতে আরন্ভ করল এবং পরে তাঁকে নানাভাবে প্রশ্ন করতে থাকল৷ 54 তারা সুয়োগের অপেক্ষা করতে লাগল য়েন যীশু ভুল কিছু করলে তাই দিয়ে তাঁকে ধরতে পারে৷
Luke 12:1 এর মধ্যে হাজার হাজার লোক এসে জড়ো হল৷ প্রচণ্ড ভীড়ের চাপে ধাক্কা-ধাক্কি করে একে অপরের উপর পড়তে লাগল৷ তখন তিনি প্রথমে তাঁর শিষ্যদের বললেন, ‘ফরীশীদের খামির থেকে সাবধান থেকো৷ 2 এমন কিছুই লুকানো নেই যা প্রকাশ পাবে না, আর এমন কিছুই গুপ্ত নেই যা জানা যাবে না৷ 3 তাই তোমরা অন্ধকারে যা বলছ তা আলোতে শোনা যাবে৷ তোমরা গোপন কক্ষে ফিস্ফিস্করে কানে কানে যা বলবে তা বাড়ির ছাদের ওপর থেকে ঘোষণা করা হবে৷’ 4 কিন্তু হে আমার বন্ধুরা, ‘আমি তোমাদের বলছি, যাঁরা তোমাদের দেহটাকে ধ্বংস করে দিতে পারে, কিন্তু এর বেশী কিছু করতে পারে না তাদের তোমরা ভয় কোর না৷ 5 তবে কাকে ভয় করবে তা আমি তোমাদের বলে দিচ্ছি৷ তোমাদের মেরে ফেলার পর নরকে পাঠাবার ক্ষমতা য়াঁর আছে, তাঁকেই ভয় কর৷ হ্যাঁ, আমি তোমাদের বলছি, তাঁকেই ভয় কোর৷ 6 ‘পাঁচটা চড়াই পাখি কি মাত্র কয়েক পয়সায় বিক্রি হয় না? তবু ঈশ্বর তার একটাকেও ভুলে যান না৷ 7 এমন কি তোমাদের মাথার প্রতিটি চুল গোনা আছে৷ ভয় নেই, বহু চড়াই পাখির চেয়ে তোমাদের মূল্য অনেক বেশী৷ 8 ‘কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, য়ে কেউ অন্য লোকদের সামনে আমাকে স্বীকার করে, মানবপুত্রও ঈশ্বরের স্বর্গদূতদের সামনে তাকে স্বীকার করবেন৷ 9 কিন্তু য়ে কেউ সর্বসাধারণের সামনে আমায় অস্বীকার করবে, ঈশ্বরের স্বর্গদূতদের সামনে তাদের অস্বীকার করা হবে৷ 10 মানবপুত্রের বিরুদ্ধে কেউ কোন কথা বললে তাকে ক্ষমা করা হবে; কিন্তু কেউ পবিত্র আত্মার নামে নিন্দা করলে তাকে ক্ষমা করা হবে না৷ 11 ‘তারা তখন তোমাদের সমাজ-গৃহের সমাবেশে শাসনকর্তাদের বা কর্ত্তৃত্ব সম্পন্ন ব্যক্তিদের সামনে হাজির করবে, তখন কিভাবে আত্মপক্ষ সমর্থন করবে বা কি বলবে তা নিয়ে চিন্তা কোর না৷ 12 কারণ সেই সময় কি বলতে হবে তা পবিত্র আত্মা তোমাদের সেইক্ষণেই শিখিয়ে দেবেন৷’ 13 এরপর সেই ভীড়ের মধ্য থেকে একজন লোক যীশুকে বলল, ‘গুরু, উত্তরাধিকার সূত্রে আমাদের য়ে সম্পত্তি রয়েছে তা আমার ভাইকে আমার সঙ্গে ভাগ করে নিতে বলুন৷’ 14 কিন্তু যীশু তাকে বললেন, ‘বিচারকর্তা হিসাবে কে তোমাদের ওপর আমায় নিযোগ করেছে?’ 15 এরপর যীশু লোকদের বললেন, ‘সাবধান! সমস্ত রকম লোক থেকে নিজেদের দূরে রাখ, কারণ মানুষের প্রযোজনের অতিরিক্ত সম্পত্তি থাকলেও তার জীবন তার সম্পত্তির ওপর নির্ভর করে না৷’ 16 তখন তিনি তাদের একটি দৃষ্টান্ত দিলেন, ‘একজন ধনবান লোকের জমিতে প্রচুর ফসল হয়েছিল৷ 17 এই দেখে সে মনে মনে বলল, ‘আমি কি করব? এতো ফসল রাখার জায়গা তো আমার নেই৷’ 18 এরপর সে বলল, ‘আমি এই রকম করব; আমার য়ে গোলাঘরগুলো আছে তা ভেঙ্গে ফেলে তার থেকে বড় গোলাঘর বানাবো; আর সেখানেই আমার সমস্ত ফসল ও জিনিস মজুত করব৷ 19 আর আমার প্রাণকে বলব, হে প্রাণ, অনেক বছরের জন্য অনেক ভাল ভাল জিনিস তোমার জন্য সঞ্চয় করা হয়েছে৷ এখন আরাম করে খাও-দাও, স্ফূর্তি কর, 20 কিন্তু ঈশ্বর তাকে বললেন, ‘ওরে মূর্খ! আজ রাতেই তোমার প্রাণ কেড়ে নেওযা হবে; আর তুমি যা কিছু আযোজন করেছ তা কে ভোগ করবে?’ 21 ‘য়ে লোক নিজের জন্য ধন সঞ্চয় করে কিন্তু ঈশ্বরের দৃষ্টিতে ধনবান নয়, তার এইরকম হয়৷’ 22 এরপর যীশু তাঁর অনুগামীদের বললেন, ‘তাই আমি তোমাদের বলছি, কি খাব বলে প্রাণের বিষয়ে বা কি পরব বলে শরীরের বিষয়ে চিন্তা কোর না৷ 23 কারণ খাদ্য়বস্তু থেকে প্রাণ অনেক মূল্যবান এবং পোশাক-আশাকের থেকে দেহের গুরুত্ব অনেক বেশী৷ 24 কাকদের বিষয় চিন্তা কর, তারা বীজ বোনেও না বা ফসলও কাটেও না৷ তাদের কোন গুদাম বা গোলাঘর নেই, তবু ঈশ্বরই তাদের আহার য়োগান৷ এই সব পাখিদের থেকে তোমরা কত অধিক মূল্যবান! 25 তোমাদের মধ্যে কে দুশ্চিন্তা করে নিজের আযু এক ঘন্টা বাড়াতে পারে? 26 এই সামান্য কাজটাই যদি করতে না পার তবে বাকী সব বিষয়ের জন্য এত চিন্তা কর কেন? 27 ছোট্ট ছোট্ট লিলি ফুলের কথা চিন্তা কর দেখি, তারা কিভাবে বেড়ে ওঠে৷ তারা পরিশ্রমও করে না, সুতাও কাটেনা৷ তবু আমি তোমাদের বলছি, এমন কি রাজা শলোমন তাঁর সমস্ত প্রতাপ ও গৌরবে মণ্ডিত হয়েও এদের একটার মতোও নিজেকে সাজাতে পারেন নি৷ 28 মাঠে য়ে ঘাস আজ আছে আর কাল উনুনে ফেলে দেওযা হবে, ঈশ্বর তা যদি এত সুন্দর করে সাজান, তবে হে অল্প বিশ্বাসীর দল তিনি তোমাদের আরো কত না বেশী সাজাবেন! 29 আর কি খাবে বা কি পান করবে এ নিয়ে তোমরা চিন্তা কোর না, এর জন্য উদ্বিগ্ন হওযার কোন দরকার নেই৷ 30 এই পৃথিবীর আর সব জাতির লোকেরা যাঁরা ঈশ্বরকে জানে না, তারাই এই সবের পিছনে ছোটে৷ কিন্তু তোমাদের পিতা ঈশ্বর জানেন য়ে এসব জিনিস তোমাদের প্রযোজন আছে৷ 31 তার চেয়ে বরং তোমরা ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয়ে সচেষ্ট হও তখন এসবই ঈশ্বর তোমাদের জোগাবেন৷ 32 ‘ক্ষুদ্র মেষপাল! তোমরা ভয় পেও না, কারণ তোমাদের পিতা আনন্দের সাথেই সেই রাজ্য তোমাদের দেবেন, এটাই তাঁর ইচ্ছা৷ 33 তোমাদের সম্পদ বিক্রি করে অভাবীদের দাও৷ নিজেদের জন্য এমন টাকার থলি তৈরী কর যা পুরানো হয় না, স্বর্গে এমন ধনসঞ্চয় কর যা শেষ হয় না, সেখানে চোর ঢুকতে পারে না বা মথ কাটে না৷ 34 কারণ য়েখানে তোমাদের সম্পদ সেখানেই তোমাদের মনও পড়ে থাকবে৷ 35 ‘তোমরা কোমর বেঁধে বাতি জ্বালিয়ে নিয়ে প্রস্তুত থাক৷ 36 তোমরা এমন লোকদের মতো হও যাঁরা তাদের মনিব বিয়ে বাড়ি থেকে কখন ফিরে আসবে তারই অপেক্ষায় থাকে; য়েন তিনি ফিরে এসে দরজায় কড়া নাড়লেই তখনই তাঁর জন্য দরজা খুলে দিতে পারে৷ 37 ধন্য সেই সব দাস, মনিব এসে যাদের জেগে প্রস্তুত থাকতে দেখবেন৷ আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তিনি নিজে পোশাক বদলে প্রস্তুত হয়ে তাদের খেতে বসাবেন, এবং নিজেই পরিবেশন করবেন৷ 38 তিনি রাতের দ্বিতীয় প্রহরে ও তৃতীয় প্রহরে এসে যদি তাদেরকে প্রস্তুত থাকতে দেখেন তাহলে ধন্য তারা৷ 39 কিন্তু একথা জেনে রেখো, চোর কোন সময় আসবে তা যদি বাড়ির কর্তা জানতে পারে তাহলে সে তার বাড়িতে সিঁদ কাটতে দেবে না৷ 40 তাই তোমরাও প্রস্তুত থেকো, কারণ তোমরা য়ে সময় আশা করবে না, মানবপুত্র সেই সময় আসবেন৷ 41 তখন পিতর বললেন, ‘প্রভু এই দৃষ্টান্তটি কি আপনি শুধু আমাদের জন্য বললেন, না এটা সকলের জন্য?’ 42 তখন প্রভু বললেন, ‘সেই বিশ্বস্ত ও বিচক্ষণ কর্মচারী কে, যাকে তার মনিব তাঁর অন্য কর্মচারীদের সময়মতো খাবার ভাগ করে দেবার ভার দেবেন? 43 ধন্য সেই দাস, যাকে তার মনিব এসে বিশ্বস্তভাবে কাজ করতে দেখবেন৷ 44 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, মনিব সেই কর্মচারীর ওপর তাঁর সমস্ত সম্পত্তি দেখাশোনার ভার দেবেন৷ 45 কিন্তু সেই কর্মচারী যদি মনে মনে বলে, ‘আমার মনিবের আসতে এখন অনেক দেরী আছে,’ এই মনে করে সে যদি তার অন্য দাস-দাসীদের মারধর করে আর পানাহারে মত্ত হয়, 46 তাহলে য়ে দিন ও য়ে সময়ের কথা সে একটুকু চিন্তাও করবে না, সেই দিন ও সেই সময়েই তার মনিব এসে হাজির হবেন৷ তার মনিব তাকে কেটে টুকরো টুকরো করে ফেলবেন; আর অবিশ্বাসীদের জন্য য়ে জায়গা ঠিক করা হয়েছে, তার স্থান সেখানেই হবে৷ 47 ‘য়ে দাস তার মনিবের ইচ্ছা জেনেও প্রস্তুত থাকে নি, অথবা য়ে তার মনিবের ইচ্ছানুসারে কাজ করে নি, সেই দাস কঠোর শাস্তি পাবে৷ 48 কিন্তু য়ে তার মনিব কি চায় তা জানে না, এই না জানার দরুন এমন কাজ করে ফেলেছে যার জন্য তার শাস্তি হওযা উচিত্, সেই দাসের কম শাস্তি হবে৷ যাকে বেশী দেওযা হয়েছে, তার কাছ থেকে বেশী পাবার আশা করা হবে৷ যার ওপর বেশী দাযিত্ব দেওযা হয়েছে, লোকেরা তার কাছ থেকে অধিক চাইবে৷’ 49 ‘আমি পৃথিবীতে আগুন নিক্ষেপ করতে এসেছি, ‘আহা, যদি তা আগেই জ্বলে উঠত৷ 50 এক বাপ্তিস্মে আমায় বাপ্তাইজিত হতে হবে, আর যতক্ষণ না তা হচ্ছে, আমি ব্যাকুল হয়ে উঠেছি৷ 51 তোমরা কি মনে কর এই পৃথিবীতে আমি শান্তি স্থাপন করতে এসেছি? না, আমি তোমাদের বলছি, বরং বিভেদ ঘটাতে এসেছি৷ 52 কারণ এখন থেকে একই পরিবারে পাঁচজন থাকলে তারা পরস্পরের মধ্যে ভাগ হয়ে যাবে৷ তিনজন দুজনের বিরুদ্ধে যাবে, আর দুজন তিনজনের বিরুদ্ধে যাবে৷ 53 বাবা ছেলের বিরুদ্ধে ও ছেলে বাবার বিরুদ্ধে যাবে৷ মা মেয়ের বিরুদ্ধে ও মেয়ে মায়ের বিরুদ্ধে যাবে৷ শাশুড়ী বৌমার বিরুদ্ধে ও বৌমা শাশুড়ীর বিরুদ্ধে যাবে৷’ 54 এরপর যীশু সমবেত জনতার দিকে ফিরে বললেন, ‘পশ্চিমদিকে মেঘ জমতে দেখে তোমরা বলে থাকো, ‘বৃষ্টি আসলো বলে, আর তা-ই হয়৷’ 55 যখন দক্ষিণা বাতাস বয়, তোমরা বলে থাক, ‘গরম পড়বে,’ আর তা-ই হয়৷ 56 ভণ্ডের দল! তোমরা পৃথিবী ও আকাশের চেহারা দেখে তার অর্থ বুঝতে পার; কিন্তু এ কেমন য়ে তোমরা বর্তমান সময়ের অর্থ বুঝতে পার না? 57 ‘যা কিছু ন্যায়, নিজেরাই কেন তার বিচার কর না? 58 তোমাদের প্রতিপক্ষের সঙ্গে তোমরা যখন বিচারকের কাছে যাও, তখন পথেই তা মিটিয়ে নেওযার চেষ্টা কর৷ নতুবা সে হয়তো তোমাকে বিচারকের কাছে টেনে নিয়ে যাবে, বিচারক তোমাকে সেপাইয়ের হাতে দেবে আর সেপাই তোমায় কারাগারে দেবে৷ 59 আমি তোমাকে বলছি, শেষ পয়সাটি না দেওযা পর্যন্ত তুমি কোন মতেই কারাগার থেকে ছাড়া পাবে না৷’
Luke 13:1 সেই সময় কয়েকজন লোক যীশুকে সেই সব গালীলীয়দের বিষয় বলল, ‘যাদের রক্ত রাজ্যপাল পীলাত তাদের উত্সর্গ করা বলির রক্তের সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছিলেন৷ 2 যীশু এর উত্তরে বললেন, ‘তোমরা কি মনে কর এই গালীলীয়রা কষ্টভোগ করেছিল বলে অন্যান্য সব গালীলীয়দের থেকে বেশী পাপী ছিল? 3 না, আমি তোমাদের বলছি, তোমরা যদি পাপ থেকে মন না ফিরাও, তাহলে তোমরাও তাদের মত মরবে৷ 4 শীলোহ চূড়ো ভেঙ্গে পড়ে য়ে আঠারো জনের মৃত্যু হয়েছিল, তাদের বিষয়ে তোমাদের কি মনে হয়? তোমরা কি মনে কর জেরুশালেমের বাকী সব লোকদের থেকে তারা বেশী দোষে দোষী ছিল? 5 না, আমি তোমাদের বলছি, তোমরা যদি পাপ থেকে মন না ফিরাও, তাহলে তোমরাও তাদের মতো মরবে৷’ 6 এরপর যীশু তাদের এই দৃষ্টান্তটি বললেন, ‘একজন লোক তার বাগানে একটি ডুমুর গাছ পুঁতেছিল৷ পরে সে এসে সেই গাছে ফল হয়েছে কি না খোঁজ করল, কিন্তু কোন ফল দেখতে পেল না৷ 7 তখন সে বাগানের মালীকে বলল, ‘দেখ, আজ তিন বছর ধরে এই ডুমুর গাছে ফলের খোঁজে আমি আসছি, কিন্তু আমি এতে কোন ফলই দেখতে পাচ্ছি না, তাই তুমি এই গাছটা কেটে ফেল, এটা অযথা জমি নষ্ট করবে কেন?’ 8 মালী তখন বলল, ‘প্রভু, এ বছরটা দেখতে দিন৷ আমি এর চারপাশে খুঁড়ে সার দিই৷ 9 সামনের বছর যদি এতে ফল আসে তো ভালোই! তা না হলে আপনি ওটাকে কেটে ফেলবেন৷ 10 কোন এক বিশ্রামবারে যীশু এক সমাজগৃহে শিক্ষা দিচ্ছিলেন৷ 11 সেখানে একজন স্ত্রীলোক ছিল যাকে এক দুষ্ট আত্মা আঠারো বছর ধরে পঙ্গু করে রেখেছিল৷ সে কুঁজো হয়ে গিয়েছিল, কোনরকমেও সোজা হতে পারত না৷ 12 যীশু তাকে দেখে কাছে ডাকলেন, এবং স্ত্রীলোকটিকে বললেন, ‘হে নারী, তোমার রোগ থেকে তুমি মুক্ত হলে!’ 13 এরপর তিনি তার ওপর হাত রাখলেন, সঙ্গে সঙ্গে সে সোজা হয়ে দাঁড়াল, আর ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগল৷ 14 যীশু তাকে বিশ্রামবারে সুস্থ করলেন বলে সেই সমাজগৃহের নেতা খুবই রেগে গিয়ে লোকদের উদ্দেশ্যে বললেন, ‘সপ্তাহে দুদিন তো কাজ করার জন্য আছে, তাই ঐ সব দিনে এসে সুস্থ হও, বিশ্রামবারে এসো না৷’ 15 প্রভু এর উত্তরে তাঁকে বললেন, ‘ভণ্ডের দল! তোমরা কি বিশ্রামবারে গরু বা গাধা খোঁযাড় থেকে বের করে জল খাওযাতে নিয়ে যাও না? 16 এই স্ত্রীলোকটি, য়ে অব্রাহামের বংশে জন্মেছে, যাকে শয়তান আঠারো বছর ধরে বেঁধে রেখেছিল, বিশ্রামবার বলে কি সে সেই বাঁধন থেকে মুক্ত হবে না?’ 17 তিনি এই কথা বলাতে যাঁরা তাঁর বিরুদ্ধে ছিল তারা সকলেই খুব লজ্জা পেল; আর তিনি য়ে অপূর্ব কাজ করেছেন তার জন্য সমবেত জনতা আনন্দ করতে লাগল৷ 18 এরপর যীশু বললেন, ‘ঈশ্বরের রাজ্য কেমন, আমি কিসের সঙ্গে এর তুলনা করব? 19 এ হল একটা ছোট্ট সরষে বীজের মতো, যা একজন লোক নিয়ে তার বাগানে পুঁতল, আর তা থেকে অঙ্কুর বেরিয়ে সেটা বাড়তে লাগল, পরে সেটা একটা গাছে পরিণত হলে তার ডালপালাতে আকাশের পাখিরা এসে বাসা বাঁধল৷’ 20 তিনি আরও বললেন, ‘ঈশ্বরের রাজ্যকে আমি কিসের সঙ্গে তুলনা করব? 21 এ হল খামিরের মতো, যা কোন একজন স্ত্রীলোক একতাল ময়দার সঙ্গে মেশাল, পরে সেই খামিরে সমস্ত তালটা ফুলে উঠল৷’ 22 যীশু বিভিন্ন নগর ও গ্রামের মধ্য দিয়ে য়েতে য়েতে শিক্ষা দিচ্ছিলেন, এইভাবে তিনি জেরুশালেমের দিকে এগিয়ে চললেন৷ 23 কোন একজন লোক তাঁকে জিজ্ঞেস করল, ‘প্রভু উদ্ধার কি কেবল অল্প কয়েকজন লোকই পাবে?’তিনি তাদের বললেন, 24 ‘সরু দরজা দিয়ে ঢোকার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা কর, কারণ আমি তোমাদের বলছি, অনেকেই ঢোকার চেষ্টা করবে; কিন্তু ঢুকতে পারবে না৷ 25 ঘরের কর্তা উঠে যখন দরজা বন্ধ করবেন, তখন তোমরা বাইরে দাঁড়িয়ে দরজায় ঘা দিতে দিতে বলবে, ‘প্রভু আমাদের জন্য দরজা খুলে দিন৷’ কিন্তু তিনি তোমাদের বলবেন, ‘তোমরা কোথা থেকে এসেছ; আমি জানি না৷ 26 তারপর তোমরা বলতে থাকবে, ‘আমরা আপনার সঙ্গে খাওযা দাওযা করেছি; আর আপনি তো আমাদের পথে পথে উপদেশ দিয়েছেন৷’ 27 তখন তিনি তোমাদের বলবেন, ‘তোমরা কোথা থেকে এসেছ, আমি জানি না৷ তোমরা সব দুষ্টের দল, আমার কাছ থেকে দূর হও৷’ 28 তোমরা যখন দেখবে য়ে অব্রাহাম, ইসহাক, যাকোব ও সব ভাববাদীরা ঈশ্বরের রাজ্যে আছেন; কিন্তু তোমাদের বাইরে ফেলে দেওযা হয়েছে, তখন কান্নাকাটি করবে ও দাঁতে দাঁত ঘসতে থাকবে; 29 আর লোকেরা উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব ও পশ্চিম থেকে এসে ঈশ্বরের রাজ্যে নিজের নিজের আসন গ্রহণ করবে৷ 30 মনে রেখো, যাঁরা আজ শেষে রয়েছে, তারা প্রথমে স্থান নেবে, আর যাঁরা আজ প্রথমে রয়েছে, তারা শেষের হবে৷’ 31 সেই সময় কয়েকজন ফরীশী যীশুর কাছে এসে বললেন, ‘তুমি এখান থেকে অন্য কোথাও যাও! কারণ হেরোদ তোমায় হত্যা করতে চাইছে৷’ 32 যীশু তাদের বললেন, ‘তোমরা গিয়ে সেই শিযালটাকেবল, ‘আমি আজ ও কাল ভূত ছাড়াবো ও রোগীদের সুস্থ করব, আর তৃতীয় দিনে আমি আমার কাজ শেষ করব৷’ 33 আমি আমার পথে চলতেই থাকব, কারণ জেরুশালেমের বাইরে কোন ভাববাদী প্রাণ হারাবে তেমনটি হতে পারে না৷ 34 ‘জেরুশালেম, হায় জেরুশালেম! তুমি ভাববাদীদের হত্যা করেছ; আর ঈশ্বর তোমার কাছে যাদের পাঠিয়েছেন তুমি তাদের পাথর মেরেছ! মুরগী য়েমন তার বাচ্চাদের নিজের ডানার নীচে জড়ো করে, তেমনি আমি কতবার তোমার লোকদের আমার কাছে জড়ো করতে চেয়েছি৷ কিন্তু তুমি রাজী হও নি৷ 35 এইজন্য দেখ তোমাদের গৃহ পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকবে৷ আমি তোমাদের বলছি, যতদিন না তোমরা বলবে, ‘ধন্য তিনি, যিনি প্রভুর নামে আসছেন, ততদিন তোমরা আমায় আর দেখতে পাবে না৷’
Luke 14:1 এক বিশ্রামবারে যীশু ফরীশীদের একজন নেতৃস্থানীয় লোকের বাড়িতে নিমন্ত্রণ খেতে গেলেন৷ সেখানে সমবেত লোকেরা যীশুর প্রতি লক্ষ্য রাখছিল৷ 2 যীশুর সামনে একটি লোক ছিল য়ে উদরী রোগে ভুগছিল৷ 3 যীশু তখন ব্যবস্থার শিক্ষক ও ফরীশীদের লক্ষ্য করে জিজ্ঞেস করলেন, ‘বিশ্রামবারে কাউকে সুস্থ করা কি বিধিসম্মত?’ 4 কিন্তু তারা সকলে চুপ করে রইল৷ তখন যীশু সেই অসুস্থ লোকটিকে ধরে তাকে সুস্থ করলেন, পরে বিদায় নিলেন৷ 5 এরপর তিনি তাদের দিকে লক্ষ্য করে বললেন, ‘তোমাদের মধ্যে কারোর সন্তান বা গরু যদি বিশ্রামবারে কুয়ায় পড়ে যায় তাহলে তোমরা কি সঙ্গে সঙ্গে তাকে সেখান থেকে টেনে তুলবে না?’ 6 তারা কেউ এই কথার জবাব দিতে পারল না৷ 7 যীশু দেখলেন নিমন্ত্রিত অতিথিরা কিভাবে নিজেরাই ভোজের শ্রেষ্ঠ আসন দখল করার চেষ্টা করছে৷ তাই তিনি তাদের কাছে এই দৃষ্টান্তটি নিয়ে বললেন, 8 ‘বিয়ের ভোজে যখন কেউ তোমাদের নিমন্ত্রণ করে তখন সেখানে গিয়ে সম্মানের আসনটা দখল করে বসবে না৷ কারণ তোমার চেয়ে হয়তো আরো সম্মানিত কাউকে নিমন্ত্রণ করা হয়েছে৷ 9 তা করলে যিনি তোমাদের উভয়কেই নিমন্ত্রণ করেছেন, তিনি এসে তোমায় বলবেন, ‘এঁকে তোমার জায়গাটা ছেড়ে দাও!’ তখন তুমি লজ্জায় পড়বে, কারণ তোমাকে সবচেয়ে নীচু জায়গায় বসতে হবে৷ 10 কিন্তু তুমি যখন নিমন্ত্রিত হয়ে যাও, সেখানে গিয়ে সবচেয়ে নীচু জায়গায় বসবে৷ যিনি তোমায় নিমন্ত্রণ করেছেন তিনি এসে এরকম দেখে তোমায় বলবেন, ‘বন্ধু এস, এই ভাল আসনে বস৷’ তখন নিমন্ত্রিত অন্য সব অতিথিদের সামনে তোমার সম্মান হবে৷ 11 য়ে কেউ নিজেকে সম্মান দিতে চায় তাকে নত করা হবে, আর য়ে নিজেকে নত করে তাকে সম্মানিত করা হবে৷’ 12 তখন য়ে তাঁকে নিমন্ত্রণ করেছিল, তাকে যীশু বললেন, ‘তুমি যখন ভোজের আযোজন করবে তখন তোমার বন্ধু, ভাই, আত্মীয়স্বজন বা ধনী প্রতিবেশীদের নিমন্ত্রণ কোর না, কারণ তারা তোমাকে পাল্টা নিমন্ত্রণ করে প্রতিদান দেবে৷ 13 কিন্তু তুমি যখন ভোজের আযোজন করবে তখন দরিদ্র, খোঁড়া, বিকলাঙ্গ ও অন্ধদের নিমন্ত্রণ কোর৷ 14 তাতে যাদের প্রতিদান দেবার ক্ষমতা নেই, সেই রকম লোকদের নিমন্ত্রণ করার জন্য ধার্মিকদের পুনরুত্থানের সময় ঈশ্বর তোমায় পুরস্কার দেবেন৷’ 15 যাঁরা খেতে বসেছিল তাদের মধ্যে একজন এই কথা শুনে যীশুকে বলল, ‘ঈশ্বরের রাজ্যে যাঁরা খেতে বসবে তারা সকলে ধন্য৷’ 16 তখন যীশু তাকে বললেন, ‘একজন লোক এক বিরাট ভোজের আযোজন করেছিল আর সে অনেক লোককে নিমন্ত্রণ করেছিল৷ 17 ভোজ খাওযার সময় হলে সে তার দাসকে দিয়ে নিমন্ত্রিত লোকদের বলে পাঠাল, ‘তোমরা এস! কারণ এখন সবকিছু প্রস্তুত হয়েছে! 18 তারা সকলেই নানা অজুহাত দেখাতে শুরু করল৷ প্রথম জন তাকে বলল, ‘আমায় মাপ কর, কারণ আমি একটা ক্ষেত কিনেছি, তা এখন আমায় দেখতে য়েতে হবে৷’ 19 আর একজন বলল, ‘আমি পাঁচ জোড়া বলদ কিনেছি, এখন সেগুলি একটু পরখ করে নিতে চাই, তাই আমি য়েতে পারব না আমায় মাপ কর৷’ 20 এরপর আর একজন বলল, ‘আমি সবে মাত্র বিয়ে করেছি, সেই কারণে আমি আসতে পারব না৷’ 21 সেই দাস ফিরে গিয়ে তার মনিবকে একথা জানালে, তার মনিব রেগে গিয়ে তার দাসকে বলল, ‘যাও, শহরের পথে পথে, অলিতে গলিতে গিয়ে গরীব, খোঁড়া, পঙ্গু ও অন্ধদের ডেকে নিয়ে এস৷’ 22 এরপর সেই দাস মনিবকে বলল, ‘প্রভু, আপনি যা যা বলেছেন তা করেছি, তা সত্ত্বেও এখনও অনেক জায়গা আছে৷ 23 তখন মনিব সেই দাসকে বলল, ‘এবার তুমি গ্রামের পথে পথে, বেড়ার ধারে ধারে যাও, যাকে পাও তাকেই এখানে আসবার জন্য জোর কর, য়েন আমার বাড়ি ভরে যায়৷ 24 আমি তোমাদের বলছি, যাদের প্রথমে নিমন্ত্রণ করা হয়েছিল, তাদের কেউই আমার এই ভোজের স্বাদ পাবে না!” 25 যীশুর সঙ্গে সঙ্গে এক বিরাট জনতা চলেছিল, তাদের দিকে ফিরে যীশু বললেন, 26 ‘যদি কেউ আমার কাছে আসে অথচ তার বাবা, মা, স্ত্রী, সন্তান, ভাই-বোন, এমন কি নিজের প্রাণকেও আমার চেয়ে বেশী ভালবাসে সে আমার শিষ্য হতে পারবে না৷ 27 য়ে কেউ নিজের ক্রুশ কাঁধে তুলে নিয়ে আমায় অনুসরণ না করে, সে আমার শিষ্য হতে পারে না৷ 28 তোমাদের মধ্যে কেউ যদি উঁচু একটি ঘর তুলতে চায়, তবে সে কি প্রথমে তা নির্মাণ করতে কত খরচ পড়বে তার হিসাব করে দেখবে না, য়ে তা শেষ করার মতো যথেষ্ট অর্থ তার আছে কি না? 29 তা না হলে সে ভিত গাঁথবার পর যদি তা শেষ করতে না পারে, তবে যাঁরা সেটা দেখবে তারা সবাই তাকে নিয়ে ঠাট্টা করবে, আর বলবে, 30 এই লোকটা গাঁথতে শুরু করেছিল ঠিকই কিন্তু শেষ করতে পারল না৷’ 31 ‘যদি একজন রাজা আর একজন রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যায়, তবে সে প্রথমে বসে চিন্তা করবে না য়ে তার মাত্র দশ হাজার সৈন্য বিপক্ষের বিশ হাজার সৈন্য়ের মোকাবিলা করতে পারবে কিনা? 32 যদি তা না পারে তবে তার শত্রু পক্ষ দূরে থাকতেই সে তার প্রতিনিধি পাঠিয়ে সন্ধির প্রস্তাব দেবে৷ 33 ঠিক সেইরকমভাবে তোমাদের মধ্যে য়ে কেউ তার সর্বস্ব ত্যাগ না করে, সে আমার শিষ্য হতে পারে না৷’ 34 ‘লবণ ভাল, তবে লবণের নোনতা স্বাদ যদি নষ্ট হয়ে যায় তাহলে তা কি আবার নোনতা করা যায়? 35 তখন তা না জমির জন্য, না সারের গাদার জন্য উপযুক্ত থাকে, লোকে তা বাইরেই ফেলে দেয়৷‘যার শোনার মতো কান আছে সে শুনুক৷’
Luke 15:1 অনেক কর আদায়কারী ও পাপী লোকেরা প্রায়ই যীশুর কথা শোনার জন্য আসত৷ 2 এতে ফরীশী ও ব্যবস্থার শিক্ষকরা এই বলে তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করতে লাগল, ‘এই লোকটা জঘন্য পাপী লোকদের সঙ্গে মেলামেশা ও খাওযা দাওযা করে৷’ 3 তখন যীশু তাদের কাছে এই দৃষ্টান্ত দিলেন, 4 ‘যদি তোমাদের মধ্যে কারোর একশোটি ভেড়া থাকে, তার মধ্যে থেকে একটা হারিয়ে যায়, তবে সে কি মাঠের মধ্যে বাকি নিরানব্বইটা রেখে য়েটা হারিয়ে গেছে তাকে না পাওযা পর্যন্ত তার খোঁজ করবে না? 5 আর যখন সে ঐ ভেড়াটাকে খুঁজে পায়, তখন তাকে আনন্দের সঙ্গে কাঁধে তুলে নেয়৷ 6 তারপর বাড়ি এসে তার বন্ধুবান্ধব ও প্রতিবেশীদের ডেকে বলে, ‘এস, আমার সঙ্গে তোমরাও আনন্দ কর, কারণ আমার য়ে ভেড়াটা হারিয়ে গিয়েছিল তাকে আমি খুঁজে পেয়েছি৷’ 7 আমি তোমাদের বলছি, ঠিক সেইভাবে নিরানব্বই জন ধার্মিক, যাদের মন পরিবর্তনের প্রযোজন নেই তাদের থেকে একজন পাপী যদি ঈশ্বরের কাছে মন ফিরায়, তাকে নিয়ে স্বর্গে মহানন্দ হয়৷ 8 ধর, কোন একজন স্ত্রীলোকের দশটা রূপোর সিকির একটা হার ছিল৷ তার মধ্য থেকে সে যদি একটা হারিয়ে ফেলে, তাহলে সে কি প্রদীপ জ্বেলে সেই সিকিটি না পাওযা পর্যন্ত ঘরের প্রতিটি জায়গা ভাল করে ঝাঁট দিয়ে খুঁজে দেখবে না?’ 9 আর সে তা খুঁজে পেলে তার বন্ধু-বান্ধব ও প্রতিবেশীদের ডেকে বলবে, ‘এস, আমার সঙ্গে আনন্দ কর, কারণ আমার য়ে সিকিটি হারিয়ে গিয়েছিল তা আমি খুঁজে পেয়েছি৷’ 10 আমি তোমাদের বলছি, ঠিক এইভাবে একজন পাপী যখন মন-ফিরায়, তখন ঈশ্বরের স্বর্গদূতদের সামনে আনন্দ হয়৷’ 11 এরপর যীশু বললেন, ‘একজন লোকের দুটি ছেলে ছিল৷ 12 ছোট ছেলেটি তার বাবাকে বলল, ‘বাবা, সম্পত্তির য়ে অংশ আমার ভাগে পড়বে তা আমায় দিয়ে দাও৷’ তখন বাবা দুই ছেলের মধ্যে সম্পত্তি ভাগ করে দিলেন৷ 13 কিছু দিন পর ছোট ছেলে তার সমস্ত কিছু নিয়ে দূর দেশে চলে গেল৷ সেখানে সে উচ্ছৃঙ্খল জীবন-যাপন করে সমস্ত টাকা পয়সা উড়িয়ে দিল৷ 14 তার সব টাকা পয়সা খরচ হয়ে গেলে সেই দেশে ভীষণ দুর্ভিক্ষ দেখা দিল আর সেও অভাবে পড়ল৷ 15 তাই সে সেই দেশের এক ব্যক্তির কাছে দিন মজুরীর একটা কাজ চাইল৷ সেই ব্যক্তি তাকে তার শুযোর চরাবার জন্য মাঠে পাঠিয়ে দিল৷ 16 শুযোর য়ে শুঁটি খায় তা খেয়ে সে তার পেট ভরাতে চাইত, কিন্তু কেউ তাকে তাও দিত না৷ 17 শেষ পর্যন্ত একদিন তার চেতনা হল, আর সে বলল, ‘আমার বাবার কাছে কত মজুর পেট ভরে খেতে পায় আর এখানে আমি খিদের জ্বালায় মরছি৷ 18 আমি উঠে আমার বাবার কাছে যাব, তাকে বলব, বাবা, আমি ঈশ্বরের বিরুদ্ধে ও তোমার বিরুদ্ধে অন্যায় পাপ করেছি৷ 19 তোমার ছেলে বলে পরিচয় দেবার কোন য়োগ্যতা আর আমার নেই৷ তোমার চাকরদের একজনের মতো করে তুমি আমায় রাখ!’ 20 এরপর সে উঠে তার বাবার কাছে গেল৷‘সে যখন বাড়ি থেকে বেশ কিছুটা দূরে আছে, এমন সময় তার বাবা তাকে দেখতে পেলেন, বাবার অন্তর দুঃখে ভরে গেল৷ বাবা দৌড়ে গিয়ে ছেলের গলা জড়িয়ে ধরে তাকে চুমু খেলেন৷ 21 ছেলে তখন তার বাবাকে বলল, ‘বাবা, আমি ঈশ্বরের দৃষ্টিতে ও তোমার কাছে অন্যায় পাপ করেছি৷ তোমার ছেলে বলে পরিচয় দেবার য়োগ্যতা আমার নেই৷ 22 কিন্তু তার বাবা চাকরদের ডেকে বললেন, ‘তাড়াতাড়ি কর, সব থেকে ভাল জামাটা নিয়ে এসে একে পরিয়ে দাও৷ এর হাতে আংটি ও পায়ে জুতো পরিয়ে দাও৷ 23 হৃষ্টপুষ্ট একটা বাছুর নিয়ে এসে সেটা কাট, আর এস, আমর সবাই মিলে খাওযা দাওযা করি, আনন্দ করি! 24 কারণ আমার এই ছেলেটা মারা গিয়েছিল আর এখন সে জীবন ফিরে পেয়েছে! সে হারিয়ে গিয়েছিল, এখন তাকে খুঁজে পাওযা গেছে৷’এই বলে তারা সকলে আনন্দ করতে লাগল৷ 25 ‘সেই সময় তাঁর বড় ছেলে মাঠে ছিল৷ বাড়ির কাছাকাছি এসে সে বাজনা আর নাচের শব্দ শুনতে পেল৷ 26 তখন সে একজন চাকরকে ডেকে জিজ্ঞাসা করল, ‘কি ব্যাপার, এসব কি হচ্ছে?’ 27 চাকরটি বলল, ‘আপনার ভাই এসেছে, আর সে সুস্থ শরীরে নিরাপদে ফিরে এসেছে বলে আপনার বাবা হৃষ্টপুষ্ট বাছুর কেটে ভোজের আযোজন করেছেন৷’ 28 এই শুনে বড় ছেলে খুব রেগে গেল, সে বাড়ির ভেতরে য়েতে চাইল না৷ তখন তার বাবা বেরিয়ে এসে তাকে সান্ত্বনা দিলেন৷ 29 কিন্তু সে তার বাবাকে বলল, ‘দেখ, এত বছর ধরে আমি তোমাদের সেবা করেছি, কখনও তোমার কথার অবাধ্য হই নি৷ তবু আমার বন্ধুদের সঙ্গে একটু আমোদ করার জন্য তুমি আমায় কখনও একটা ছাগলও দাও নি৷ 30 কিন্তু তোমার এই ছেলে য়ে বেশ্যাদের পেছনে তোমার টাকা উড়িয়ে দিয়েছে, সে যখন এল তখন তুমি তার জন্য হৃষ্টপুষ্ট বাছুর কাটলে৷’ 31 তার বাবা তাকে বললেন, ‘বাছা, তুমি তো সব সময় আমার সঙ্গে সঙ্গে আছ; আর আমার যা কিছু আছে সবই তো তোমার৷ 32 কিন্তু আমাদের আনন্দিত হয়ে উত্সব করা উচিত, কারণ তোমার এই ভাই মরে গিয়েছিল আর এখন সে জীবন ফিরে পেয়েছে৷ সে হারিয়ে গিয়েছিল, এখন তাঁকে খুঁজে পাওযা গেছে৷’
Luke 16:1 এরপর যীশু তাঁর অনুগামীদের বললেন, ‘কোন একজন ধনী ব্যক্তির একজন দেওযান ছিল; আর এই দেওযান তার মনিবের সম্পদ নষ্ট করছে বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠল৷ 2 তখন সেই ধনী ব্যক্তি ঐ দেওযানকে ডেকে বললেন, ‘তোমার বিষয়ে আমি এ কি শুনছি? তোমার কাজের হিসাব আমায় দাও, কারণ তুমি আর আমার দেওযান থাকতে পারবে না৷’ 3 তখন সেই দেওযান মনে মনে বলল, ‘এখন আমি কি করব? আমার মনিব তো আমাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করলেন৷ আমি য়ে মজুরের কাজ করে খাব তার ক্ষমতাও আমার নেই, আর ভিক্ষা করতেও আমার লজ্জা লাগে৷ 4 আমার দেওযানী পদ গেলেও লোকে যাতে তাদের বাড়িতে আমায় থাকতে দেয় সে জন্য আমায় কি করতে হবে তা আমি জানি৷’ 5 তখন তার মনিবের কাছে যাঁরা ধারে জিনিস নিয়েছিল তাদের প্রত্যেককে সে ডেকে তাদের প্রথম জনকে বলল, ‘আমার মনিবের কাছে তুমি কত ধার?’ 6 সে বলল, ‘একশো মন অলিভ তেল৷’ তখন সেই দেওযান তাকে বলল, ‘এই নাও তোমার হিসাবের কাগজটা, তাড়াতাড়ি করে লেখ, পঞ্চাশ মন৷’ 7 এরপর আর একজন লোককে সে বলল, ‘আর তুমি, তুমি কত ধার?’ সে বলল, ‘একশো মন গম৷’ সেই দেওযান তাকে বলল, ‘তোমার রসিদটা দেখি, এটাতে আশি মন লেখ৷’ 8 সেই মনিব তাঁর অসত্ দেওযানের প্রশংসা করলেন, কারণ সে বুদ্ধিমানের মত কাজ করেছিল৷ এ জগতের লোকেরা নিজেদের মত লোকেদের সঙ্গে আচার আচরণে জ্যোতির সন্তানদের থেকে বেশী বিচক্ষণ৷ 9 ‘আমি তোমাদের বলছি, তোমাদের জাগতিক সম্পদ দিয়ে নিজেদের জন্য বন্ধু লাভ কর, য়েন যখন তা শেষ হয়ে যাবে, তখন তারা তোমাদের অনন্ত আবাসে স্বাগত জানায়৷ 10 য়ে সামান্য বিষয়ে বিশ্বস্ত হতে পারে, বড় ব্যাপারেও তাকে বিশ্বাস করা চলে৷ য়ে ছোটখাটো বিষয়ে অবিশ্বস্ত, সে বড় বড় বিষয়েও অবিশ্বস্ত হবে৷ 11 তাই জাগতিক সম্পদ সম্বন্ধে তুমি যদি বিশ্বস্ত না হও, তবে প্রকৃত সত্য সম্পদের বিষয়ে কে তোমাকে বিশ্বাস করবে৷ 12 অপরের জিনিসের ব্যাপারে তোমাদের যদি বিশ্বাস করা না যায়, তবে তোমাদের যা নিজস্ব সম্পদ তাই বা কে তোমাদের দেবে? 13 ‘কোন দাস দুজন কর্তার দাসত্ব করতে পারে না, হয় সে একজনকে ঘৃণা করবে ও অন্যজনকে ভালবাসবে, অথবা একজনের অনুগত হয়ে অন্য জনকে তুচ্ছ করবে৷ তোমরা ঈশ্বর ও ধন-সম্পদ উভয়েরই দাসত্ব করতে পার না৷’ 14 অর্থলোভী ফরীশীরা যীশুর এই সব কথা শুনে যীশুকে ব্যঙ্গ করতে লাগল৷ 15 তখন যীশু তাদের বললেন, ‘তোমরা সেই রকম লোক, যাঁরা লোকচক্ষে নিজেদের খুব ধার্মিক বলে জাহির করে থাকে, কিন্তু তোমাদের অন্তরে কি আছে ঈশ্বর তা জানেন৷ মানুষের চোখে যা মহান, ঈশ্বরের দৃষ্টিতে তা ঘৃন্য৷ 16 ‘য়োহন বাপ্তাইজকের সময় পর্যন্ত বিধি-ব্যবস্থা ও ভাববাদীদের শিক্ষার প্রচলন ছিল৷ তারপর থেকে ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয় সুসমাচার প্রচার করা শুরু হয়েছে৷ আর সেই রাজ্যে প্রবেশ করার জন্য সবাই প্রবলভাবে চেষ্টা করছে৷ 17 তবে বিধি-ব্যবস্থার এক বিন্দু বাদ পড়ার চেয়ে বরং আকাশ ও পৃথিবীর লোপ পাওযা সহজ৷ 18 ‘য়ে কেউ নিজের স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ করে অন্য কোন স্ত্রীলোককে বিয়ে করে, সে ব্যভিচার করে; আর য়ে সেই পরিত্যক্তা স্ত্রীকে বিয়ে করে সেও, ব্যভিচার করে৷’ 19 ‘এক সময় একজন ধনী ব্যক্তি ছিল, সে বেগুনী রঙের কাপড় ও বহুমূল্য পোশাক পরত; আর প্রতিদিন বিলাসে দিন কাটাতো৷ 20 তারই দরজার সামনে লাসার নামে একজন ভিখারী পড়ে থাকত, যার সারা শরীর ঘায়ে ভরে গিয়েছিল৷ 21 সেই ধনী ব্যক্তির টেবিল থেকে টুকরো-টাকরা য়ে খাবার পড়ত তাই খেয়ে সে পেট ভরাবার আশায় থাকত, এমনকি কুকুররা এসে তার ঘা চেটে দিত৷ 22 একদিন সেই গরীব ভিখারী মারা গেল, আর স্বর্গদূতেরা এসে তাকে নিয়ে গেল এবং সে অব্রাহামের কোলে স্থান পেল৷ সেই ধনী ব্যক্তি ও একদিন মারা গেল, আর তাকে সমাধি দেওযা হল৷ 23 সেই ধনী ব্যক্তি পাতালে নরকে খুব যন্ত্রণার মধ্যে কাটাতে থাকল৷ এই অবস্থায় সে মুখ তুলে তাকাতে বহুদূরে অব্রাহামকে দেখতে পেল; আর অব্রাহামের কোলে সেই লাসারকে দেখতে পেল৷ 24 সেই ধনী ব্যক্তি তখন চিত্কার করে বলে উঠল, ‘হে পিতা, অব্রাহাম, আমার প্রতি দযা করুন, লাসারকে এখানে পাঠিয়ে দিন, য়েন সে এখানে এসে ওর আঙ্গুলের ডগা জলে ডুবিয়ে আমার জিভ জুড়িয়ে দেয়, কারণ আমি এই আগুনের মধ্যে বড়ই কষ্ট পাচ্ছি!’ 25 কিন্তু অব্রাহাম বললেন, ‘হে আমার বত্স, মনে করে দেখ, জীবনে সুখের সব কিছুই তুমি ভোগ করেছ আর সেই সময় লাসার অনেক কষ্ট পেয়েছে৷ কিন্তু এখন এখানে সে সুখ পাচ্ছে আর তুমি কষ্ট পাচ্ছ৷ 26 এছাড়া তোমাদের ও আমাদের মাঝে এক মহাশূন্য স্থান আছে, যাতে ইচ্ছা থাকলেও কেউ এখানে থেকে পার হয়ে তোমাদের কাছে য়েতে না পারে, আর ওখান থেকে পার হয়ে কেউ আমাদের কাছে আসতে না পারে৷’ 27 সেই ধনী ব্যক্তি তখন বলল, ‘তাহলে পিতা দযা করে লাসারকে আমার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দিন! 28 য়েন আমার য়ে পাঁচ ভাই সেখানে আছে, তাদের সে সাবধান করে দেয়, যাতে তারা এই যন্ত্রণার জায়গায় না আসে৷’ 29 কিন্তু অব্রাহাম বললেন, ‘মোশি ও অন্যান্য ভাববাদীরা তো তাদের জন্য আছেন, তাঁদের কথা তারা শুনুক৷’ 30 তখন ধনী লোকটি বলল, ‘না, না, পিতা অব্রাহাম মৃতদের মধ্য থেকে কেউ যদি তাদের কাছে যায়, তবে তারা অনুতাপ করবে৷’ 31 অব্রাহাম তাকে বললেন, ‘তারা যদি মোশি ও ভাববাদীদের কথা না শোনে, তবে মৃতদের মধ্য থেকে উঠে গিয়েও যদি কেউ তাদের সঙ্গে কথা বলে তবু তারা তা শুনবে না৷’
Luke 17:1 যীশু তাঁর অনুগামীদের বললেন, ‘পাপের প্রলোভন সব সময়ই থাকবে, কিন্তু ধিক্ সেই লোক যার মাধ্যমে তা আসে৷ 2 এই ক্ষুদ্রতমদের মধ্যে একজনকেও কেউ যদি পাপের পথে নিয়ে যায়, তবে তার গলায় এক পট্টি জাঁতা বেঁধে তাকে সমুদ্রের অতল জলে ডুবিয়ে দেওযা তার পক্ষে ভাল৷ 3 তোমরা নিজেদের বিষয়ে সাবধান!‘তোমার ভাই যদি পাপ করে, তাকে তিরস্কার কর৷ সে যদি অনুতপ্ত হয় তবে তাকে ক্ষমা কর৷ 4 সে যদি এক দিনে সাতবার তোমার বিরুদ্ধে পাপ করে, আর সাতবারই তোমার কাছে ফিরে এসে বলে, ‘আমি অনুতপ্ত,’ তবে তাকে ক্ষমা কর৷’ 5 এরপর প্রেরিতেরা প্রভুকে বললেন, ‘আমাদের বিশ্বাসের বৃদ্ধি করুন!’ 6 প্রভু বললেন, ‘একটা সরষে দানার মতো এতটুকু বিশ্বাস যদি তোমাদের থাকে, তাহলে এই তুঁত গাছটাকে তোমরা বলতে পার, ‘শেকড়শুদ্ধ উপড়ে নিয়ে সমুদ্রে নিজেকে পোঁত!’ আর দেখবে সে তোমাদের কথা শুনবে৷ 7 ‘ধর তোমাদের মধ্যে কারো একজনের দাস হাল চষছে বা ভেড়া চরাচ্ছে৷ সে যখন মাঠ থেকে আসে তখন তুমি কি তাকে বলবে, ‘তাড়াতাড়ি করে এস, খেতে বস?’ 8 বরং তাকে কি বলবে না, ‘আমি কি খাব তার জোগাড় কর, আর আমি যতক্ষণ খাওযা-দাওযা করি, তুমি কোমরে গামছা জড়িয়ে আমার সেবা যত্ন কর, এরপর তুমি খাওযা-দাওযা করবে৷’ 9 ঐ দাস তোমার হুকুম অনুসারে কাজ করল বলে কি তুমি তাকে ধন্যবাদ দেবে? 10 তোমাদের ক্ষেত্রে সেই একই কথা প্রয়োজ্য৷ তোমাদের য়ে কাজ করতে বলা হয়েছে তা করা শেষ হলে তোমরা বলবে, ‘আমরা অয়োগ্য দাস, আমরা আমাদের কর্তব্য করেছি৷” 11 যীশু জেরুশালেমের দিকে যাচ্ছিলেন, যাবার পথে তিনি গালীল ও শমরীযার মাঝখান দিয়ে গেলেন৷ 12 তাঁরা যখন একটি গ্রামে ঢুকছেন, এমন সময় দশ জন কুষ্ঠরোগী তাঁর সামনে পড়ল, তারা একটু দূরে দাঁড়াল, 13 ও চিত্কার করে বলল, ‘প্রভু যীশু! আমাদের দযা করুন!’ 14 তাদের দেখে যীশু বললেন, ‘যাজকদের কাছে গিয়ে নিজেদের দেখাও৷’পথে য়েতে য়েতে তারা সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে গেল; 15 কিন্তু তাদের মধ্যে একজন যখন দেখল য়ে সে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে গেছে তখন যীশুর কাছে ফিরে এসে খুব জোর গলায় ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগল৷ 16 সে যীশুর সামনে উপুড় হয়ে পড়ে তাঁকে ধন্যবাদ জানাল৷ এই লোকটি ছিল অইহুদী শমরীয়৷ 17 এই দেখে যীশু তাকে বললেন, ‘তোমাদের মধ্যে দশ জনই কি আরোগ্য লাভ করেনি? তবে বাকী নজন কোথায়? 18 ঈশ্বরের প্রশংসা করার জন্য এই ভিন্ন জাতের লোকটি ছাড়া আর কেউ কি ফিরে আসেনি?’ 19 এরপর যীশু সেই লোকটিকে বললেন, ‘ওঠ, যাও, তোমার বিশ্বাসই তোমাকে সুস্থ করে তুলেছে৷’ 20 একসময় ফরীশীরা যীশুকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘ঈশ্বরের রাজ্য কখন আসবে?’যীশু তাদের বললেন, ‘ঈশ্বরের রাজ্য এমনভাবে আসে, যা চোখে দেখা যায় না৷ 21 লোকেরা বলবে না য়ে, ‘এই য়ে এখানে ঈশ্বরের রাজ্য’ বা ‘ওই য়ে ওখানে ঈশ্বরের রাজ্য৷’ কারণ ঈশ্বরের রাজ্য তো তোমাদের মাঝেই আছে৷’ 22 কিন্তু অনুগামীদের উদ্দেশ্যে তিনি বললেন, ‘সময় আসবে, যখন মানবপুত্রের রাজত্বের সময়ের একটা দিন তোমরা দেখতে চাইবে, কিন্তু তোমরা তা দেখতে পাবে না৷ 23 লোকেরা তোমাদের বলবে, ‘দেখ, তা ওখানে! বা দেখ তা এখানে!’ তাদের কথা শুনে য়েও না, বা তাদের পেছনে দৌড়িও না৷ 24 ‘কারণ বিদ্যুত্ চমকালে আকাশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত য়েমন আলো হয়ে যায়, মানবপুত্রের দিনে তিনি সেইরকম হবেন৷ 25 কিন্তু প্রথমে তাঁকে অনেক দুঃখভোগ করতে হবে, তাছাড়া এই যুগের লোকেরা তাঁকে অগ্রাহ্য় করবে৷ 26 নোহের সময়ে য়েমন হয়েছিল, মানবপুত্রের সময়েও তেমনি হবে৷ 27 য়ে পর্যন্ত না নোহ জাহাজে উঠলেন আর বন্যা এসে লোকদের ধ্বংস করল, সেই সময় পর্যন্ত লোকেরা খাওযা দাওযা করছিল, বিয়ে করছিল ও বিয়ে দিচ্ছিল৷ 28 লোটের সময়েও সেই একই রকম হয়েছিল৷ তারা খাওযা-দাওযা করছিল, কেনা-বেচা, চাষ-বাস, গৃহ নির্মাণ সবই করত৷ 29 কিন্তু লোট য়ে দিন সদোম থেকে বেরিয়ে এলেন, তারপরেই আকাশ থেকে আগুন ও গন্ধক বর্ষিত হয়ে সেখানকার সব লোককে ধ্বংস করে দিল৷ 30 য়ে দিন মানবপুত্র প্রকাশিত হবেন, সেদিন এই রকমই হবে৷ 31 ‘সেই দিন কেউ যদি ছাদের উপর থাকে, আর তার জিনিস পত্র যদি ঘরের মধ্যে থাকে, তবে সে তা নেবার জন্য য়েন নীচে না নামে৷ তেমনি যদি কেউ ক্ষেতের কাজে থাকে, তবে সে কোন কিছু নিতে ফিরে না আসুক৷ 32 লোটের স্ত্রীরকথা য়েন মনে থাকে৷ 33 য়ে তার জীবন নিরাপদ রাখতে চায়, সে তা খোযাবে; আর য়ে তার জীবন হারায়, সেই তা বাঁচিয়ে রাখবে৷ 34 আমি তোমাদের বলছি, সেই রাত্রে একই বিছানায় দুজন শুয়ে থাকবে, তাদের মধ্যে একজনকে তুলে নেওযা হবে অন্যজন পড়ে থাকবে৷ 35 দুজন স্ত্রীলোক একসঙ্গে যাঁতাতে শস্য পিষবে, একজনকে তুলে নেওযা হবে আর অন্য জন পড়ে থাকবে৷’ 36 37 তখন অনুগামীরা তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘প্রভু, কোথায় এমন হবে?’যীশু তাদের বললেন, ‘য়েখানে শব, সেখানেই শকুন এসে জড়ো হবে৷’
Luke 18:1 নিরাশ না হয়ে তাদের য়ে সব সময় প্রার্থনা করা উচিত, তা বোঝাতে গিয়ে যীশু তাদের এই দৃষ্টান্তটি দিলেন, 2 তিনি বললেন, ‘কোন এক শহরে একজন বিচারক ছিলেন৷ তিনি ঈশ্বরকে ভয় করতেন না, আবার মানুষকে গ্রাহ্য করতেন না৷ 3 সেই শহরে একজন বিধবা ছিল৷ সে বার বার সেই বিচারকের কাছে এসে বলত, ‘আপনাকে দেখতে হবে য়েন আমার প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে আমি ন্যায় বিচার পাই!’ 4 কিছু দিন ধরে সেই বিচারক তার কোন কথাই শুনতে চাইলেন না৷ কিন্তু এক সময় তিনি মনে মনে বললেন, ‘যদিও আমি ঈশ্বরকে ভয় করি না আর মানুষকে মানি না, 5 তবু এই বিধবা যখন আমায় এত বিরক্ত করছে তখন আমি দেখব সে য়েন ন্যায় বিচার পায়, তাহলে সে আর বার বার এসে আমাকে জ্বালাতন করবে না৷” 6 এরপর প্রভু বললেন, ‘লক্ষ্য কর! ঐ অধার্মিক বিচারকর্তা কি বলল৷ 7 তাহলে ঈশ্বর কি তাঁর মনোনীত লোকেরা, যাঁরা দিন-রাত তাঁকে ডাকছে, তারা য়েন ন্যায় বিচার পায় তা দেখবেন না? তিনি কি তাদের সাহায্য করতে অযথা দেরী করবেন? 8 আমি তোমাদের বলছি, তিনি তাদের পক্ষে ন্যায় বিচার করবেনই আর তা তাড়াতাড়িই করবেন৷ যাইহোক, মানবপুত্র যখন আসবেন, তখন কি তিনি এই পৃথিবীতে বিশ্বাস দেখতে পাবেন?’ 9 যাঁরা নিজেদেরকে ধার্মিক মনে করত আর অন্যকে তুচ্ছ করত, তাদের উদ্দেশ্যে তিনি এই দৃষ্টান্তটি দিলেন, 10 ‘দুজন লোক মন্দিরে প্রার্থনা করার জন্য গেল; তাদের মধ্যে একজন ফরীশী আর অন্য জন কর-আদায়কারী৷ 11 ফরীশী দাঁড়িয়ে নিজের সম্বন্ধে এইভাবে প্রার্থনা করতে লাগল, ‘য়ে ঈশ্বর, আমি তোমায় ধন্যবাদ দিচ্ছি য়ে আমি অন্য সব লোকদের মতো নই; দস্য়ু, প্রতারক, ব্যভিচারী অথবা এই কর-আদায়কারীর মতো নই৷ 12 আমি সপ্তাহে দুদিন উপোস করি, আর আমার আয়ের দশ ভাগের একভাগ দান করি৷’ 13 ‘কিন্তু সেই কর-আদায়কারী দাঁড়িয়ে স্বর্গের দিকে মুখ তুলে তাকাতেও সাহস করল না, বরং সে বুক চাপড়াতে চাপড়াতে বলল, ‘হে ঈশ্বর, আমি পাপী! আমার প্রতি দযা কর!’ 14 আমি তোমাদের বলছি, এই কর-আদায়কারী ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়ে বাড়ি চলে গেল কিন্তু ঐ ফরীশী নয়৷ য়ে কেউ নিজেকে বড় করে তাকে ছোট করা হবে; আর য়ে নিজেকে ছোট করে তাকে বড় করা হবে৷’ 15 লোকেরা একসময় তাদের ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের যীশুর কাছে নিয়ে এল য়েন তিনি তাদের স্পর্শ করে আশীর্বাদ করেন৷ এই দেখে শিষ্যরা তাদের খুব ধমক দিলেন৷ 16 কিন্তু যীশু সেই ছেলেমেয়েদের তাঁর কাছে ডাকলেন, আর বললেন, ‘ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের আমার কাছে আসতে দাও, তাদের বারণ করো না, কারণ এই শিশুদের মতো লোকদের জন্যই তো ঈশ্বরের রাজ্য৷ 17 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যদি কেউ শিশুর মতো ঈশ্বরের রাজ্যকে গ্রহণ না করে তবে সে কোনমতে তার মধ্যে প্রবেশ করতে পারবে না!’ 18 ইহুদীদের একজন দলনেতা তাঁকে জিজ্ঞেস করল, ‘হে সদগুরু, অনন্ত জীবন পেতে হলে আমাকে কি করতে হবে?’ 19 যীশু তাঁকে বললেন, ‘তুমি আমায় সত্ বলছ, কেন? ঈশ্বর ছাড়া আর কেউ সত্ নয়৷ 20 তুমি তো ঈশ্বরের সব আজ্ঞা জান, ব্যভিচার কোর না, নরহত্যা করো না, চুরি করো না, মিথ্যা সাক্ষী দিও না, তোমরা বাবা-মাকে সম্মান করো৷” 21 সে বলল, ‘আমি ছোটবেলা থেকেই সে সব পালন করে আসছি৷’ 22 একথা শুনে যীশু তাকে বললেন, ‘কিন্তু তোমার মধ্যে একটি বিষয়ের এখনও ত্রুটি আছে৷ তোমার যা কিছু আছে সে সব বিক্রি করে তা গরীবদের মধ্যে বিলিয়ে দাও, তাহলে স্বর্গে তোমার ধন-সম্পদ জমা হবে, তারপর আমায় অনুসরণ কর৷’ 23 কিন্তু এই কথা শুনে তার খুবই দুঃখ হল, কারণ তার প্রচুর ধন-সম্পদ ছিল৷ 24 যীশু তাকে দুঃখিত হতে দেখে বললেন, ‘যাদের ধন-সম্পদ আছে তাদের পক্ষে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করা কত কঠিন! 25 হ্যাঁ, একজন ধনীর পক্ষে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করা অপেক্ষা ছুঁচের মধ্য দিয়ে উটের পার হওযা সহজ৷’ 26 য়ে সব লোক একথা শুনল তারা বলে উঠল, ‘তাহলে কে উদ্ধার পেতে পারে?’ 27 যীশু বললেন, ‘মানুষের পক্ষে যা সন্ভব নয় ঈশ্বরের পক্ষে তা সন্ভব৷’ 28 তখন পিতর বললেন, ‘দেখুন, আমরা তো সব কিছু ছেড়ে ছুড়ে আপনার অনুসারী হয়েছি৷’ 29 যীশু তখন তাদের বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি যাঁরা ঈশ্বরের রাজ্যের জন্য ঘর-বাড়ি, স্ত্রী, ভাই-বোন, মা-বাবা কিংবা ছেলে-মেয়ে ত্যাগ করেছে, 30 তারা প্রত্যেকে এ জীবনেই সেই সব বহুগুণে ফিরে পাবে, এছাড়া আগামী যুগে লাভ করবে অনন্ত জীবন৷’ 31 যীশু তাঁর বারোজন প্রেরিতকে একপাশে ডেকে নিয়ে গিয়ে বললেন, ‘শোন! আমরা জেরুশালেমে যাচ্ছি; আর ভাববাদীরা মানবপুত্রের বিষয়ে যা কিছু লিখে গেছেন, সে সবই পূর্ণ হবে৷ 32 হ্যাঁ, অইহুদীদের হাতে তাঁকে তুলে দেওযা হবে, তারা তাঁকে উপহাস করবে, গালাগালি দেবে, তাঁর গায়ে থুতু ছেটাবে৷ 33 তারা তাঁকে কশাঘাত করবে ও শেষ পর্যন্ত হত্যাই করবে; আর তৃতীয় দিনে মৃত্যুর মধ্য থেকে তিনি পুনরুত্থিত হবেন৷’ 34 তিনি কি বলতে চাইছেন, প্রেরিতেরা কিন্তু তার কিছুই বুঝতে পারলেন না৷ তিনি য়ে কি বলছেন তা তাঁরা বুঝতে পারলেন না, কারণ এসব কথার অর্থ তাদের কাছে গোপন রাখা হয়েছিল৷ 35 যীশু যখন যিরীহোর কাছাকাছি পৌঁছালেন, তখন সেখানে রাস্তার ধারে বসে একজন অন্ধ ভিক্ষা করছিল৷ 36 অনেক লোকজন যাওযার আওযাজ শুনে সেই ভিখারী ব্যাপার কি তা জিজ্ঞাসা করল৷ 37 লোকেরা তাঁকে বলল, ‘নাসরতীয় যীশু সেখান দিয়ে যাচ্ছেন৷’ 38 তখন সে চিত্কার করে বলে উঠল, ‘হে দাযূদের বংশধর যীশু, আমাকে দয়া করুন৷’ 39 য়ে সব লোক সেই ভীড়ের সামনে ছিল তারা তাকে চুপ করতে বলল, কিন্তু সে আরও চিত্কার করে বলল, ‘হে দাযূদের বংশধর আমায় দয়া করুন!’ 40 যীশু থেমে গেলেন, তিনি সেই অন্ধকে তাঁর কাছে নিয়ে আসতে বললেন৷ সেই অন্ধ তাঁর কাছে এলে পর তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, 41 ‘তুমি কি চাও? তোমার জন্য আমি কি করব?’সে বলল, ‘প্রভু, আমি য়েন দেখতে পাই৷’ 42 যীশু তাকে বললেন, ‘বেশ! তুমি চোখে দেখতে পাও, তোমার বিশ্বাসই তোমাকে সুস্থ করল৷’ 43 সঙ্গে সঙ্গে সে দেখতে পেল আর ঈশ্বরের প্রশংসা করতে করতে যীশুর পেছনে পেছনে চলল৷ যাঁরা এই ঘটনা দেখল তারা ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগল৷
Luke 19:1 যীশু যিরীহো শহরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন৷ 2 সেখানে সক্কেয় নামে একজন লোক ছিল৷ সে ছিল একজন উচ্চ-পদস্থ কর আদায়কারী ও খুব ধনী ব্যক্তি৷ 3 কে যীশু তা দেখার জন্য সক্কেয় খুবই চেষ্টা করছিল, কিন্তু বেঁটে হওযাতে ভীড়ের জন্য যীশুকে দেখতে পাচ্ছিল না৷ 4 তাই সবার আগে ছুটে গিয়ে য়ে পথ ধরে যীশু আসছিলেন, সেই পথের পাশে একটা সুকমোর গাছে উঠল যাতে সেখান থেকে যীশুকে দেখতে পায়৷ 5 যীশু সেখানে এসে ওপর দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘সক্কেয় তাড়াতাড়ি নেমে এস, কারণ আজ আমায় তোমার ঘরে থাকতে হবে৷’ 6 সক্কেয় তাড়াতাড়ি নেমে এসে মহানন্দে যীশুকে তার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে অভ্যর্থনা জানাল৷ 7 সেখানে যাঁরা ছিল, এই দেখে তারা সকলে অনুয়োগের সুরে বলল, ‘উনি একজন পাপীর ঘরে অতিথি হয়ে গেলেন৷’ 8 কিন্তু সক্কেয় উঠে দাঁড়িয়ে প্রভুকে বলল, ‘প্রভু দেখুন, আমি আমার সম্পদের অর্ধেক গরীবদের মধ্যে বিলিয়ে দেব, আর যদি কাউকে ঠকিয়ে থাকি তবে তার চতুর্গুণ ফিরিয়ে দেব৷’ 9 যীশু তাকে বললেন, ‘আজ এই বাড়িতে পরিত্রাণ এসেছে, য়েহেতু এই মানুষটি অব্রাহামের পুত্র৷ 10 কারণ যা হারিয়ে গিয়েছিল তা খুঁজে বের করতে ও উদ্ধার করতেই মানবপুত্র এ জগতে এসেছেন৷’ 11 যীশু জেরুশালেমের কাছাকাছি এগিয়ে গেলে লোকদের ধারণা হল য়ে তখনই বুঝি ঈশ্বরের রাজ্য এসে পড়ল৷ তাই তিনি তাদের কাছে এই দৃষ্টান্তটি দিলেন৷ 12 যীশু বললেন, ‘একজন সম্ভ্রান্ত বংশের লোক রাজ পদ নিয়ে ফিরে আসার জন্য দূর দেশে যাত্রা করলেন৷ 13 আবার আগে তিনি তাঁর দশজন কর্মচারীকে ডেকে প্রত্যেকের হাতে একটি করে মোট দশটি মোহর দিয়ে বললেন, ‘আমি ফিরে না আসা পর্যন্ত এই দিয়ে ব্যবসা করো৷’ 14 কিন্তু তাঁর প্রজারা তাকে ঘৃণা করত; আর তিনি চলে যাওযার সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় লোকেরা একজন প্রতিনিধির মাধ্যমে বলে পাঠাল, ‘আমরা চাই না য়ে এই লোক আমাদের রাজা হোক্!’ 15 ‘কিন্তু সেই ব্যক্তি রাজপদ নিয়ে বাড়ি ফিরে এলেন; আর য়ে কর্মচারীদের তিনি টাকা দিয়েছিলেন তাদের সকলকে ডেকে পাঠালেন৷ তিনি দেখতে চাইলেন য়ে তারা কে কত লাভ করেছে৷ 16 প্রথম জন এসে বলল, ‘প্রভু, আপনার এক মোহর খাটিয়ে দশ মোহর লাভ হয়েছে৷ 17 তখন মনিব তাকে বললেন, ‘খুব ভাল করেছ, তুমি খুব ভাল কর্মচারী৷ তুমি অল্প বিষয়ে বিশ্বস্ত ছিলে তাই তোমাকে দশটি শহরের শাসক হিসেবে নিযোগ করা হবে৷’ 18 এরপর দ্বিতীয় জন এসে বলল, ‘প্রভু আপনার এক মোহর খাটিয়ে পাঁচ মোহর লাভ হয়েছে৷’ 19 তিনি তাকে বললেন, ‘তোমাকে পাঁচটি শহরের শাসনভার দেওযা হবে৷’ 20 এরপর আর একজন এসে বলল, ‘প্রভু, এই নিন আপনার মোহর, এটা আমি রুমালে বেঁধে আলাদা করে রেখে দিয়েছিলাম৷ 21 আপনার বিষয়ে আমার খুব ভয় ছিল, কারণ আপনি খুব কঠিন লোক৷ আপনি যা জমা করেন নি তাই নিয়ে থাকেন, আর যা বোনেন না তার ফসল কাটেন৷’ 22 তখন তার প্রভু তাকে বললেন, ‘তোমার কথা অনুসারেই আমি তোমার বিচার করব, তুমি একজন দুষ্ট কর্মচারী৷ তুমি জানতে আমি একজন কঠিন লোক, আমি যা জমা করি না তাই পেতে চাই, যা বুনি না তাই কাটি৷ 23 তবে তুমি আমার টাকা কেন মহাজনদের কাছে জমা রাখনি? তাহলে তো আমি টাকার সুদটাও অন্ততঃ পেতাম৷’ 24 আর যাঁরা সেখানে দাঁড়িয়ে ছিল তিনি তাদের বললেন, ‘এর কাছ থেকে ঐ মোহর নিয়ে নাও আর যার দশ মোহর আছে তাকে ওটা দাও৷’ 25 তখন তারা তাকে বলল, ‘প্রভু, ওর তো দশটা মোহর আছে!’ 26 প্রভু বললেন, ‘আমি তোমাদের বলছি, যার আছে তাকে আরো দেওযা হবে আর যার নেই, তার য়েটুকু আছে তাও কেড়ে নেওযা হবে৷ 27 কিন্তু যাঁরা আমার শত্রু, যাঁরা চায় নি য়ে আমি তাদের ওপর রাজত্ব করি, তাদের এখানে নিয়ে এসে আমার সামনেই মেরে ফেল৷” 28 এইসব কথা বলার পর যীশু জেরুশালেমের দিকে এগিয়ে চললেন৷ 29 তিনি জৈতুন পর্বতের কাছে বৈত্ফগী ও বৈথনিযা গ্রামের কাছাকাছি এলে তাঁর দুজন শিষ্যকে বললেন, 30 ‘তোমরা ঐ গ্রামে যাও৷ ঐ গ্রামে ঢোকার মুখেই একটা বাচ্চা গাধা বাঁধা আছে দেখবে, সেটার ওপর এর আগে কেউ কখনও বসেনি, সেটা খুলে এখানে নিয়ে এস৷ 31 কেউ যদি তোমাদের জিজ্ঞেস করে, তোমরা ওটা খুলছ কেন? তোমরা বোল, ‘এটাকে প্রভুর দরকার আছে৷” 32 যাদের পাঠানো হয়েছিল তাঁরা গিয়ে যীশুর কথা মতোই সব কিছু দেখতে পেলেন৷ 33 তাঁরা যখন সেই বাচ্চা গাধাটা খুলছিলেন তখন তার মালিক এসে তাঁদের জিজ্ঞেস করল, ‘আপনারা এটা খুলছেন কেন?’ 34 তাঁরা বললেন, ‘এটাকে প্রভুর দরকার আছে৷’ 35 এরপর তাঁরা গাধাটাকে যীশুর কাছে নিয়ে এসে তার ওপর তাঁদের চাদর বিছিয়ে দিলেন, আর তার পিঠে যীশুকে বসালেন৷ 36 তিনি যখন যাচ্ছিলেন, তখন লোকেরা যাত্রা পথে নিজেদের জামা-চাদর বিছিয়ে দিচ্ছিল৷ 37 তিনি জৈতুন পর্বতমালা থেকে নেমে যাবার রাস্তার মুখে এসে পৌঁছালেন৷ সেই সময় যাঁরা তাঁর পেছনে পেছনে আসছিল, তারা যীশু য়ে সব অলৌকিক কাজ করেছিলেন তা দেখতে পেয়েছিল বলে আনন্দের উচ্ছাসে ঈশ্বরের প্রশংসা করতে করতে বলল, 38 ‘ধন্য! সেই রাজা যিনি প্রভুর নামে আসছেন!’ গীতসংহিতা 118:26 39 সেই ভীড়ের মধ্য থেকে কয়েকজন ফরীশী যীশুকে বলল, ‘গুরু, আপনার অনুগামীদের ধমক্ দিন!’ 40 যীশু বললেন, ‘আমি তোমাদের বলছি, ওরা যদি চুপ করে, তবে পাথরগুলো চেঁচিয়ে উঠবে৷’ 41 তিনি জেরুশালেমের কাছাকাছি এসে শহরটি দেখে কেঁদে ফেললেন৷ 42 তিনি বললেন, ‘হায় কিসে তোমার শাস্তি হবে তা যদি তুমি আজ বুঝতে পারতে! কিন্তু এখন তা তোমার দৃষ্টির অগোচরে রইল৷ 43 সেই দিন আসছে, যখন তোমার শত্রুরা তোমার চারপাশে বেষ্টনী গড়ে তুলবে৷ তারা তোমায় ঘিরে ধরবে, আর চারপাশ থেকে চেপে ধরবে৷ 44 তারা তোমাকে ও তোমার সন্তানদের ধ্বংস করবে৷ তোমার প্রাচীরের একটা পাথরের ওপর আর একটা পাথর থাকতে দেবে না, কারণ তোমার তত্ত্বাবধানের জন্য ঈশ্বর য়ে তোমার কাছে এলেন, এ তুমি বুঝলে না৷’ 45 এরপর যীশু মন্দিরের মধ্যে ঢুকলেন আর সেখানে যাঁরা জিনিসপত্র বিক্রি করছিল তাদের সেখান থেকে তাড়িয়ে দিতে লাগলেন৷ 46 তিনি তাদের বললেন, ‘শাস্ত্রে লেখা আছে, ‘আমার গৃহ হবে প্রার্থনার গৃহ৷’কিন্তু তোমরা এটাকে ডাকাতদের আড্ডাখানায় পরিণত করেছ৷’ 47 তখন থেকে প্রত্যেক দিন তিনি মন্দিরে শিক্ষা দিতে থাকলেন৷ প্রধান যাজকরা, ব্যবস্থার শিক্ষকরা ও ইহুদী নেতারা তাঁকে হত্যা করার উপায় খুঁজতে লাগল৷ 48 কিন্তু তারা কোনভাবেই কোন পথ খুঁজে পেল না, কারণ সব লোকই খুব মন দিয়ে তাঁর কথাগুলি শুনত৷
Luke 20:1 একদিন যীশু যখন মন্দিরে লোকদের শিক্ষা দিচ্ছিলেন ঈশ্বরের সুসমাচার প্রচার করছিলেন, সেই সময় প্রধান যাজকেরা, ব্যবস্থার শিক্ষকেরা ও ইহুদী নেতারা একজোট হয়ে তাঁর কাছে এল৷ 2 তারা তাঁকে প্রশ্ন করল, ‘কোন ক্ষমতায় তুমি এসব করছ তা আমাদের বল! কে তোমাকে এই অধিকার দিয়েছে?’ 3 যীশু তাদের বললেন, ‘আমিও তোমাদের একটা প্রশ্ন করব৷ 4 বলো তো য়োহন বাপ্তিস্ম দেবার অধিকার ঈশ্বরের কাছে থেকে পেয়েছিলেন না মানুষের কাছ থেকে?’ 5 তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করল, ‘আমরা যদি বলি, ‘ঈশ্বরের কাছ থেকে,’ তাহলে ও বলবে তাহলে তোমরা তাঁকে বিশ্বাস করো নি কেন?’ 6 কিন্তু আমরা যদি বলি, ‘মানুষের কাছ থেকে,’ তাহলে লোকেরা আমাদের পাথর ছুঁড়ে মারবে, কারণ তারা য়োহনকে একজন ভাববাদী বলেই বিশ্বাস করে৷’ 7 তাই তারা বলল, ‘আমরা জানি না৷’ 8 তখন যীশু তাদের বললেন, ‘তাহলে আমিও তোমাদের বলব না, কোন্ অধিকারে আমি এসব করছি৷’ 9 যীশু এই দৃষ্টান্তটি লোকদের বললেন, ‘একজন লোক একটা দ্রাক্ষা ক্ষেত করে তা চাষীদের কাছে ইজারা দিয়ে বেশ কিছু দিনের জন্য বিদেশে গেল৷ 10 ফলের সময় হলে সে তার একজন কর্মচারীকে সেই চাষীদের কাছে পাঠাল, য়েন তারা ক্ষেতের ফসলের কিছু ভাগ দেয়; কিন্তু চাষীরা সেই কর্মচারীকে মারধর করে খালি হাতে তাড়িয়ে দিল৷ 11 এরপর সে তার আর একজন কর্মচারীকে পাঠাল; কিন্তু তারা তাকেও মারধর করল৷ সেই কর্মচারীর প্রতি তারা জঘন্য ব্যবহার করে তাকে শূন্য হাতে ফিরিয়ে দিল৷ 12 পরে সে তার তৃতীয় কর্মচারীকে পাঠাল, চাষীরা তাকেও ক্ষতবিক্ষত করে বের করে দিল৷ 13 তখন সেই দ্রাক্ষা ক্ষেতের মালিক বলল, ‘আমি এখন কি করব? আমি আমার প্রিয় পুত্রকে পাঠাব, হয়তো তারা তাকে মান্য করবে৷’ 14 কিন্তু সেই চাষীরা সেই ছেলেকে দেখতে পেয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে বলল, ‘এই হচ্ছে সম্পত্তির উত্তরাধিকারী, এস একে আমরা খতম করি, তাহলে আমরাই হব এই সম্পত্তির মালিক৷’ 15 এই বলে তারা তাকে দ্রাক্ষা ক্ষেতের বাইরে টেনে নিয়ে গিয়ে হত্যা করল৷‘এখন সেই ক্ষেতের মালিক তাদের প্রতি কি করবে? 16 সে এসে ঐ চাষীদের মেরে ফেলবে ও ক্ষেত অন্য চাষীদের হাতে দেবে৷’এই কথা শুনে তারা সবাই বলল, ‘এরকম য়েন না হয়!’ 17 কিন্তু যীশু তাদের দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘তাহলে এই য়ে কথা শাস্ত্রে লেখা আছে এর অর্থ কি,‘রাজমিস্ত্রিরা য়ে পাথরটা বাতিল করে দিল, সেটাই হয়ে উঠল কোণের প্রধান পাথর?’গীতসংহিতা 118:22 18 য়ে কেউ সেই পাথরের ওপর পড়বে, সে ভেঙ্গে টুকরো-টুকরো হয়ে যাবে, আর যার ওপর সেই পাথর পড়বে সে ভেঙ্গে গুঁড়ো হয়ে যাবে৷’ 19 প্রধান যাজকেরা ও ব্যবস্থার শিক্ষকরা সেই সময় থেকেই তাঁকে গ্রেপ্তার করার জন্য উপায় খুঁজতে লাগল; কিন্তু তারা জনসাধারণকে ভয় পাচ্ছিল৷ তারা যীশুকে গ্রেপ্তার করতে চাইছিল কারণ তারা বুঝতে পেরেছিল য়ে যীশু তাদের বিরুদ্ধেই ঐ দৃষ্টান্তটি দিয়েছিলেন৷ 20 তাই তারা তাঁর ওপর নজর রাখতে কয়েকজন লোককে গুপ্তচররূপে তাঁর কাছে পাঠাল, যাঁরা ভাল লোক সেজে তাঁর কাছে গেল য়েন যীশুর কথা ধরে তাঁকে রোমীয় রাজ্যপালের ক্ষমতা ও বিচারের অধীনে তুলে দিতে পারে৷ 21 তাই তারা তাঁকে একটি কথা জিজ্ঞেস করল, ‘গুরু, আমরা জানি, য়ে যা ন্যায় আপনি সেই কথাই বলেন ও সেই শিক্ষাই দেন; আর আমরা এও জানি য়ে আপনি কারোর প্রতি পক্ষপাত করেন না, কিন্তু ঈশ্বরের পথের বিষয়ে সত্য শিক্ষাই দেন৷ 22 আচ্ছা, কৈসরকে কর দেওযা কি আমাদের উচিত?’ 23 যীশু তাদের চালাকি ধরে ফেলেছিলেন, তাই বললেন, 24 ‘আমার একটা রূপোর টাকা দেখছ৷ এতে কার মূর্ত্তি ও কার নাম আছে?’ 25 তারা বলল, ‘কৈসরের!’ তখন তিনি তাদের বললেন, ‘তাহলে কৈসরের যা তা কৈসরকে দাও, আর ঈশ্বরের যা তা ঈশ্বরকে দাও৷’ 26 সমস্ত লোকের সামনে যীশু যা বললেন, তাতে তারা তাঁর কোন ভুল ধরতে পারল না৷ তাঁর দেওযা উত্তরে তারা বিস্ময়ে হতবাক্ হয়ে গেল৷ 27 তখন সদ্দূকী সম্প্রদায়ের কয়েকজন লোক যীশুর কাছে এল৷ এই সদ্দূকীরা বলত, মৃত্যুর পর পুনরুত্থান বলে কিছু নেই৷ তারা এসে যীশুকে প্রশ্ন করল, 28 ‘গুরু, মোশি আমাদের জন্য লিখে রেখে গেছেন য়ে নিঃসন্তান অবস্থায় যদি কোন লোক তার স্ত্রীকে রেখে মারা যায়, তবে তার ভাই সেই স্ত্রীকে বিয়ে করে ভাইয়ের হয়ে তার বংশ রক্ষা করবে৷ 29 এরকম একজন যাঁরা সাত ভাই ছিল, তাদের প্রথম ভাই বিয়ে করার পর নিঃসন্তান অবস্থায় মারা গেল৷ 30 দ্বিতীয় ভাই তখন সেই বিধবাকে বিয়ে করল৷ 31 এরপর তৃতীয় ভাই, এইভাবে সাত ভাই-ই একজন স্ত্রীকে বিয়ে করল আর তারা সকলেই নিঃসন্তান অবস্থায় মারা গেল৷ 32 পরে সেই স্ত্রীও মারা গেল৷ 33 এখন পুনরুত্থানের সময়ে সে কার স্ত্রী হবে, কারণ সাত জনই তো তাকে বিয়ে করেছিল?’ 34 তখন যীশু তাদের বললেন, ‘এই যুগের লোকেরাই বিয়ে করে আর তাদের বিয়ে দেওযা হয়৷ 35 কিন্তু মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হয়ে আগামী যুগের য়োগ্য বলে যাদের গন্য করা হবে, তারা বিয়ে করবে না বা তাদের বিয়ে দেওযাও হবে না৷ 36 তারা আর মরতে পারে না, কারণ তারা স্বর্গদূতদের মতো, মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হয়েছে বলে তারা ঈশ্বরের সন্তান৷ 37 জ্বলন্ত ঝোপেরবিষয়ে য়েখানে লেখা হয়েছে, সেখানে মোশিও দেখিয়েছেন য়ে মৃতেরা পুনরুত্থিত হয়৷ সেখানে মোশি প্রভু ঈশ্বরকে ‘অব্রাহামের ঈশ্বর, ইসহাকের ঈশ্বর, ও যাকোবের ঈশ্বরবলে উল্লেখ করেছেন৷’ 38 ঈশ্বর মৃত লোকদের ঈশ্বর নন, তিনি জীবিত লোকদেরই ঈশ্বর৷ তারা সকলেই যাঁরা আগামী যুগের য়োগ্য লোক ঈশ্বরের চোখে জীবিত থাকে৷’ 39 ব্যবস্থার শিক্ষকদের মধ্যে কয়েকজন বলল, ‘গুরু, আপনি ঠিকই বলেছেন!’ 40 এরপর তাঁকে আর কিছু জিজ্ঞেস করার সাহস কারো হল না৷ 41 কিন্তু তিনি তাদের বললেন, ‘তারা কি করে বলে য়ে খ্রীষ্ট রাজা দাযূদের পুত্র? 42 কারণ গীতসংহিতায় দাযূদ নিজেই বলেছেন,‘প্রভু আমার প্রভুকে বললেন, 43 যতদিন না আমি তোমার শত্রুদের তোমার পাদপীঠে পরিণত করি, তুমি আমার ডানদিকে বস৷’গীতসংহিতা 110:1 44 দাযূদ তো খ্রীষ্টকে এইভাবে ‘প্রভু’ বলে সম্বোধন করলেন, তাহলে খ্রীষ্ট কিভাবে তাঁর সন্তান হলেন?’ 45 সমস্ত লোক যখন এসব কথা শুনছিল, তখন যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, 46 ‘ব্যবস্থার শিক্ষকদের থেকে সাবধান৷ তারা লম্বা লম্বা পোশাক পরে ঘুরে বেড়াতেও হাটে বাজারে লোকদের কাছ থেকে সম্মান পেতে ভালবাসে; আর সমাজগৃহে বিশেষ সম্মানের স্থানে বসতে ও ভোজসভায় সম্মানের আসন দখল করতে ও ভালবাসে৷ 47 তারা একদিকে লোক দেখানো লম্বা লম্বা প্রার্থনা করে, অপরদিকে বিধবাদের সর্বস্ব গ্রাস করে, এদের ভয়ঙ্কর শাস্তি হবে৷’
Luke 21:1 যীশু তাকিয়ে দেখলেন, ধনী লোকেরা মন্দিরের দানের বাক্সে তাদের দান রাখছে৷ 2 এরই মাঝে একজন অতি গরীব বিধবা তাতে খুব ছোট্ট ছোট্ট তামার মুদ্রা রাখল৷ 3 তখন যীশু বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি, এই গরীব বিধবা অন্য আর সকলের থেকে অনেক বেশী দান করল৷ 4 আমি একথা বলছি কারণ অন্য আর সব লোক তাদের সম্পত্তির বাড়তি অংশ ঐ বাক্সে ফেলে গেল, কিন্তু এই বিধবার অভাব থাকা সত্ত্বেও জীবন ধারণের জন্য তার যা সম্বল ছিল, তাই দিয়ে গেল৷’ 5 শিষ্যদের মধ্যে কেউ কেউ সেই মন্দিরের বিষয়ে এই মন্তব্য করলেন য়ে, ‘সুন্দর সুন্দর পাথর দিয়ে ও ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন দানের জিনিস দিয়ে এই মন্দিরকে কেমন সাজানো হয়েছে!’ 6 যীশু তাঁদের বললেন, ‘এই য়ে সব জিনিস তোমরা দেখছ, সময় আসবে যখন এর একটা পাথর আর একটার ওপর থাকবে না, সব ভেঙ্গে ফেলা হবে৷’ 7 শিষ্যরা তখন যীশুকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘গুরু এসব কখন ঘটবে? আর কি চিহ্ন দেখে বোঝা যাবে এসব ঘটবার সময় এসে গেছে?’ 8 যীশু বললেন, ‘সাবধান! কেউ য়েন তোমাদের না ভুলায়, কারণ অনেকেই আমার নাম ধারণ করে আসবে আর বলবে, ‘আমিই তিনি’ আর তারা বলবে, ‘সময় ঘনিয়ে এসেছে৷’ তাদের অনুসারী হযো না! 9 তোমরা যখন যুদ্ধ ও বিদ্রোহের কথা শুনতে পাবে, তাতে ভয় পেও না, কারণ প্রথমে নিশ্চয়ই এসব হবে; কিন্তু তখনও শেষ সময় আসতে বাকি!’ 10 এরপর তিনি তাদের বললেন, ‘এক জাতি আর এক জাতির বিরুদ্ধে, এক রাজ্য আর এক রাজ্যের বিরুদ্ধে উঠবে৷ 11 ‘মহা ভূমিকম্প হবে, বিভিন্ন জায়গায় দুর্ভিক্ষ ও মহামারী দেখা দেবে; আর আকাশের বুকে ভযাবহ ঘটনা ও মহত্ চিহ্ন দেখতে পাবে৷ 12 ‘কিন্তু এসব ঘটনা ঘটার আগে, তারা তোমাদের গ্রেপ্তার করবে, তোমাদের প্রতি নির্য়াতন করবে৷ তারা বিচারের জন্য তোমাদের সমাজ-গৃহে সঁপে দেবে ও তোমাদের কারাগারে ভরবে৷ আমারই কারণে তারা তোমাদের রাজাদের ও রাজ্যপালদের সামনে টেনে নিয়ে যাবে৷ 13 তাতে আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দেবার জন্য তোমরা সুয়োগ পাবে৷ 14 তোমরা মনের দিক থেকে তৈরী থেকো; আত্মপক্ষ সমর্থন করতে তখন কি বলবে, কি জবাবদিহি করবে তার জন্য চিন্তা করো না৷ 15 কারণ সেই সময় আমি তোমাদের বুদ্ধি দেব, তোমাদের মুখে এমন কথা জোগাব য়ে তোমাদের বিপক্ষরা তা অস্বীকার করতে পারবে না আবার তার প্রতিরোধও করতে পারবে না৷ 16 কিন্তু তোমাদের আপন বাবা-মা ভাইও আত্মীয় বন্ধুরাই তোমাদের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করে তোমাদের ধরিয়ে দেবে; এমন কি তোমাদের কাউকে কাউকে মেরেও ফেলবে৷ 17 আমারই কারণে তোমরা সকলের কাছে ঘৃণার পাত্র হবে৷ 18 কিন্তু তোমাদের মাথায় একটা চুলও নষ্ট হবে না৷ 19 তোমরা যদি বিশ্বাসে স্থির থাক, তবেই তোমাদের প্রাণ রক্ষা পাবে৷ 20 ‘তোমরা যখন দেখবে য়ে সৈন্যসামন্তরা জেরুশালেমকে চারপাশ থেকে ঘিরে ধরেছে, তখন বুঝবে য়ে তার ধ্বংসের সময় ঘনিয়ে এসেছে৷ 21 তখন যাঁরা যিহূদিযায় থাকবে তারা য়েন পালিয়ে যায়৷ যাঁরা জেরুশালেমে থাকবে তারা য়েন অবশ্যই নগর ছেড়ে পালায়; আর যাঁরা গ্রামে থাকবে তারা য়েন নগরে না আসে৷ 22 কারণ এই দিনগুলো হচ্ছে শান্তির দিন, যা শাস্ত্রের বাণী অনুসারে পূর্ণ হবে৷ 23 ঐ দিনগুলোতে যাদের প্রসবকাল ঘনিয়ে এসেছে ও যাদের কোলে দুধের বাচ্চা আছে, সেই সব স্ত্রীলোকদের ভয়ঙ্কর দুর্দশা হবে৷ আমি একথা বলছি কারণ দেশে মহাসংকট আসছে ও এই লোকদের ওপর ঈশ্বরের ক্রোধ নেমে আসছে৷ 24 তরবারির আঘাতে তারা মারা পড়বে, আর তাদের বন্দী করে সকল জাতির কাছে নিয়ে যাওযা হবে৷ যতদিন না অইহুদীদের নিরুপিত সময় পূর্ণ হচ্ছে, জেরুশালেম অইহুদীদের দ্বারা অবজ্ঞা ভরে পদদলিত হবে৷ 25 ‘তখন চাঁদে, সূর্য়ে ও তারাগুলিতে অনেক বিস্ময়কর জিনিস দেখা যাবে৷ পৃথিবীতে সমস্ত জাতি হতাশায় ভুগবে৷ তারা সমুদ্র গর্জন ও প্রচণ্ড ঢেউ দেখে বিহ্বল হয়ে পড়বে৷ 26 পৃথিবীতে য়ে ভয়ঙ্কর অবস্থা আসছে তার কথা ভেবে ভয়েতে লোকে অজ্ঞান হয়ে যাবে, কারণ আকাশের সব শক্তিগুলি ওলোট-পালট হয়ে যাবে৷ 27 এর পরই তারা মহাপরাক্রমে ও মহিমামণ্ডিত হয়ে মানবপুত্রকে মেঘে করে আসতে দেখবে৷ 28 এসব ঘটনা ঘটতে দেখলে মাথা তুলে উঠে দাঁড়িও, কারণ জেনো য়ে তখন তোমাদের মুক্তি আসছে!’ 29 এরপর যীশু তাদের একটি দৃষ্টান্ত দিলেন, ‘ডুমুর গাছ ও অন্যান্য গাছের দিকে দেখ৷ 30 য়ে মুহূর্তে তাদের নতুন পাতা বের হয়, তা দেখে তোমরা বুঝতে পার য়ে গ্রীষ্মকাল এসে পড়ল বলে৷ 31 ঠিক সেই রকম এই সব ঘটতে দেখলে তোমরা বুঝবে য়ে ঈশ্বরের রাজ্য এসে পড়েছে৷ 32 ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যতক্ষণ না এসব ঘটছে, এই বংশ লোপ পাবে না৷ 33 আকাশ ও পৃথিবীর লোপ পাবে, কিন্তু আমার বাক্য কখনও লোপ পাবে না৷ 34 ‘তোমরা সতর্ক থেকো৷ উচ্ছৃঙ্খল আমোদ-প্রমোদে, মত্ততায়, জাগতিক ভাবনা চিন্তায় তোমাদের মন য়েন আচ্ছন্ন না হয়ে পড়ে, আর সেই দিন হঠাত্ ফাঁদের মতো তোমাদের ওপর এসে না পড়ে৷ 35 বাস্তবিক, পৃথিবীর সব লোকের জন্যই সেই দিন আসবে৷ 36 তাই সব সময় সজাগ থেকো, আর প্রার্থনা করো য়েন যাই ঘটুক না কেন তা কাটিয়ে উঠবার ও মানবপুত্রের সামনে দাঁড়াবার শক্তি তোমাদের থাকে৷’ 37 তিনি মন্দিরের মধ্যে প্রতিদিন শিক্ষা দিতেন কিন্তু সন্ধ্যা হলে রাতে থাকার জন্য জৈতুন পর্বতে চলে য়েতেন৷ 38 প্রতিদিন খুব ভোরে উঠে লোকেরা তাঁর কথা শোনার জন্য মন্দিরে য়েত৷
Luke 22:1 সেই সময় খামিরবিহীন রুটির পর্ব এগিয়ে এলে, এই পর্বকে নিস্তারপর্ব বলা হত৷ 2 এদিকে প্রধান যাজকরা ও ব্যবস্থার শিক্ষকরা যীশুকে হত্যা করার উপায় খুঁজতে লাগল, কারণ তারা লোকদের ভয় করত৷ 3 এই সময় যিহূদা, য়ে ছিল বারো জন প্রেরিতের মধ্যে একজন, যাকে যিহূদা ঈষ্ক রিযোতীয় বলা হত তার অন্তরে শয়তান ঢুকল৷ 4 যিহূদা কেমন করে যীশুকে ধরিয়ে দেবে সে বিষয়ে পরামর্শ করতে প্রধান যাজকদের ও মন্দিরের রক্ষীবাহিনীর পদস্থ কর্মচারীদের কাছে গেল৷ 5 তারা যিহূদার কথা শুনে খুবই খুশী হয়ে তাকে এর জন্য টাকা দিতে রাজী হল৷ 6 যিহূদাও সম্মত হয়ে যখন লোকের ভীড় থাকবে না সেই সময় যীশুকে ধরিয়ে দেবার সুয়োগ খুঁজতে লাগল৷ 7 এরপর খামিরবিহীন রুটির দিন এল, য়ে দিনে নিস্তারপর্বের মেষ বলি দিতে হত৷ 8 তাই যীশু পিতর ও য়োহনকে বললেন, ‘যাও, আমাদের জন্য নিস্তারপর্বের ভোজ প্রস্তুত কর, য়েন আমরা তা গিয়ে খেতে পারি৷’ 9 তাঁরা যীশুকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আপনি কোথায় চান, আমরা কোথায় তা প্রস্তুত করব?’ 10 যীশু তাঁদের বললেন, ‘শোন! তোমরা শহরে ঢোকার মুখেই দেখতে পাবে একজন লোক এক কলসী জল নিয়ে যাচ্ছে৷ তার পেছনে পেছনে গিয়ে সে য়ে বাড়িতে ঢুকবে, 11 সেই বাড়ির মালিককে বলবে, ‘গুরু, বলেছেন, আপনার সেই অতিথিঘর কোনটা, য়েখানে আমি আমার শিষ্যদের সঙ্গে নিস্তারপর্বের ভোজ খেতে পারি৷’ 12 তখন সেই লোকটি তোমাদের ওপর তলার একটি বড় সাজানো ঘর দেখিয়ে দেবে৷ তোমরা সেখানেই আযোজন কোর৷’ 13 যীশু য়েমন বলেছিলেন, তাঁরা গিয়ে সেরকমই দেখতে পেলেন আর নিস্তারপর্বের ভোজ প্রস্তুত করলেন৷ 14 তারপর সময় হলে যীশু তাঁর প্রেরিতদের সঙ্গে গিয়ে নিস্তারপর্বের ভোজ খেতে এলেন৷ 15 তিনি তাঁদের বললেন, ‘আমার কষ্টভোগের আগে তোমাদের সঙ্গে এই নিস্তারপর্বের ভোজ খেতে আমি খুবই ইচ্ছা করেছি৷ 16 কারণ আমি তোমাদের বলছি, যতদিন না ঈশ্বরের রাজ্যে এর প্রকৃত উদ্দেশ্য পূর্ণ হয় ততদিন পর্যন্ত আমি এই ভোজ আর খাবো না৷’ 17 এরপর তিনি দ্রাক্ষারসের পেযালা হাতে নিয়ে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিয়ে বললেন, ‘এই নাও, নিজেদের মধ্যে এটা ভাগ করে নাও৷ 18 কারণ আমি তোমাদের বলছি, ঈশ্বরের রাজ্য না আসা পর্যন্ত আমি আর দ্রাক্ষারস পান করব না৷’ 19 এরপর তিনি রুটি নিয়ে ধন্যবাদ দিয়ে তা খণ্ড খণ্ড করলেন, আর তা প্রেরিতদের দিয়ে বললেন, ‘এ আমার শরীর, যা তোমাদের জন্য দেওযা হল৷ আমার স্মরনার্থে তোমরা এটা কোর৷’ 20 খাবার পর সেইভাবে দ্রাক্ষারসের পেযালা নিয়ে বললেন, ‘আমার রক্তের মাধ্যমে মানুষের জন্য ঈশ্বরের দেওযা য়ে নতুন নিয়ম শুরু হল, এই পানপাত্রটি তারই চিহ্ন; এই রক্ত তোমাদের সকলের জন্য পাতিত হল৷’ 21 ‘কিন্তু দেখ! য়ে আমাকে ধরিয়ে দেবে তার হাত আমার সঙ্গে এই টেবিলের ওপরেই আছে৷ 22 কারণ য়েমন নির্ধারিত হয়েছে সেই অনুসারেই মানবপুত্রকে মরতে হবে, কিন্তু ধিক্ সেই লোককে য়ে তাঁকে ধরিয়ে দেবে৷’ 23 তাঁরা নিজেদের মধ্যে তখন একে অপরকে জিজ্ঞেস করতে লাগলেন, ‘আমাদের মধ্যে কে এমন লোক হতে পারে, য়ে এই কাজ করবে?’ 24 সেই সময় তাঁদের মধ্যে কাকে সব থেকে বড় বলা হবে, এই নিয়ে তর্ক শুরু হল৷ 25 কিন্তু যীশু তাদের বললেন, ‘অইহুদীদের মধ্যেই রাজারা তাদের প্রজাদের ওপরে কর্তৃত্ত্ব করে, আর যাঁরা তাদের শাসন করে থাকে তাদেরই আবার ‘উপকারক’ বলা হয়৷ 26 কিন্তু তোমাদের মধ্যে এমনটি হওযা উচিত নয়৷ তোমাদের মধ্যে য়ে সব থেকে বড় সে হোক সবার চেয়ে ছোটর মতো আর য়ে নেতা সে হোক দাসের মতো৷ 27 কে প্রধান, য়ে খেতে আসে, না য়ে পরিবেশন করে? য়ে খেতে আসে, সেই নয় কি? কিন্তু আমি তোমাদের মধ্যে দাসের মতো আছি৷ 28 আমার পরীক্ষার সময় তোমরাই তো আমার পাশে দাঁড়িয়েছ৷ 29 তাই আমার পিতা য়েমন আমার রাজত্ব করার ক্ষমতা দিয়েছেন, তেমনি আমিও তোমাদের সেই ক্ষমতা দান করছি৷ 30 য়েন আমার রাজ্যে তোমরা আমার সঙ্গে পান আহার করতে পার, আর তোমরা সিংহাসনে বসে ইস্রায়েলের বারো বংশের বিচার করবে৷ 31 ‘শিমোন, শিমোন, শয়তান গমের মতো চেলে বের করবার জন্য, তোমাদের সকলকে চেয়েছে৷ 32 কিন্তু শিমোন আমি তোমার জন্য প্রার্থনা করছি, য়েন তোমার বিশ্বাসে ভাঙ্গন না ধরে; আর তুমি যখন আবার পথে ফিরে আসবে তখন তোমার ভাইদের বিশ্বাসে শক্তিশালী করে তুলো৷’ 33 কিন্তু পিতর বললেন, ‘প্রভু, আমি আপনার সঙ্গে কারাগারে য়েতে, এমনকি মরতেও প্রস্তুত৷’ 34 যীশু বললেন, ‘পিতর আমি তোমায় বলছি, আজ রাতে মোরগ ডাকার আগেই তুমি তিনবার অস্বীকার করে বলবে য়ে তুমি আমায় চেন না৷’ 35 এরপর যীশু তাঁর প্রেরিতদের বললেন, ‘আমি যখন টাকার থলি, ঝুলি ও জুতো ছাড়াই তোমাদের প্রচারে পাঠিয়েছিলাম তখন কি তোমাদের কোন কিছুর অভাব হয়েছিল?’তাঁরা বললেন, ‘না, কিছুতেই অভাব হয় নি৷’ 36 যীশু তাঁদের বললেন, ‘কিন্তু এখন বলছি, যার টাকার থলি বা ঝুলি আছে সে তা নিয়ে যাক; আর যার কাছে তলোযার নেই সে তার পোশাক বিক্রি করে একটা তলোযার কিনুক৷ 37 কারণ আমি তোমাদের বলছি:‘তিনি রোগীদের একজন বলে গন্য হবেন৷’যিশাইয় 53:12শাস্ত্রের এই য়ে কথা তা অবশ্যই আমাতে পূর্ণ হবে: হ্যাঁ, আমার বিষয়ে এই য়ে কথা লেখা আছে তা পূর্ণ হতে চলেছে৷’ 38 তাঁরা বললেন, ‘প্রভু, দেখুন দুটি তলোযার আছে!’তিনি তাঁদের বললেন, ‘থাক, এই যথেষ্ট৷’ 39 এরপর তিনি তাঁর নিয়ম অনুসারে জৈতুন পর্বতমালায় চলে গেলেন৷ শিষ্যরা তাঁর পেছন পেছনে চললেন৷ সেই জায়গায় পৌঁছে তিনি তাঁদের বললেন, ‘প্রার্থনা কর য়েন তোমরা প্রলোভনে না পড়৷’ 40 41 পরে তিনি শিষ্যদের থেকে কিছুটা দূরে গিয়ে হাঁটু গেড়ে প্রার্থনা করতে লাগলেন৷ 42 তিনি বললেন, পিতা যদি তোমার ইচ্ছা হয় তবে এই পানপাত্র আমার কাছ থেকে সরিয়ে নাও৷ হ্যাঁ, তবুও আমার ইচ্ছা নয়, তোমার ইচ্ছাই পূর্ণ হোক্!’ 43 এরপর স্বর্গ থেকে একজন স্বর্গদূত এসে তাঁকে শক্তি জোগালেন৷ 44 নিদারুণ মানসিক যন্ত্রণার সঙ্গে যীশু আরও আকুলভাবে প্রার্থনা করতে লাগলেন৷ সেই সময় তাঁর গা দিয়ে রক্তের বড় বড় ফোঁটার মতো ঘাম ঝরে পড়ছিল৷ 45 প্রার্থনা থেকে উঠে তিনি শিষ্যদের কাছে এসে দেখলেন, মনের দুঃখে অবসন্ন হয়ে তারা সকলে ঘুমিয়ে পড়েছেন৷ 46 তিনি তাঁদের বললেন, ‘তোমরা ঘুমাচ্ছ কেন? ওঠ, প্রার্থনা কর য়েন প্রলোভনে না পড়৷’ 47 তিনি তখনও কথা বলছেন, সেই সময় যিহূদার নেতৃত্বে একদল লোক সেখানে এসে হাজির হল৷ যিহূদা চুমু দিয়ে অভিবাদন করার জন্য যীশুর দিকে এগিয়ে গেল৷ 48 যীশু তাকে বললেন, ‘যিহূদা তুমি কি চুমু দিয়ে মানবপুত্রকে ধরিয়ে দেবে?’ 49 যীশুর চারপাশে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা তখন বুঝতে পারলেন কি ঘটতে চলেছে৷ তাঁরা বললেন, ‘প্রভু, আমরা কি তলোযার নিয়ে ওদের আক্রমণ করব?’ 50 তাঁদের মধ্যে একজন মহাযাজকের চাকরের ডান কান কেটে ফেললেন৷ 51 এই দেখে যীশু বললেন, ‘থামো! খুব হয়েছে৷’ আর তিনি সেই চাকরের কান স্পর্শ করে তাকে সুস্থ করলেন৷ 52 এরপর যীশু, যাঁরা তাঁকে ধরতে এসেছিল, সেই প্রধান যাজক, মন্দির রক্ষী বাহিনীর পদস্থ কর্মচারীদের ও ইহুদী সমাজপতিদের উদ্দেশ্যে বললেন, ‘ডাকাত ধরতে লোকে য়েমন বের হয় তোমরাও কি সেরকম ছোরা ও লাঠি নিয়ে আমাকে ধরতে এসেছ? 53 প্রত্যেক দিনই তো আমি তোমাদের হাতে মন্দিরেই ছিলাম, তখন তো তোমরা আমায় স্পর্শ কর নি, কিন্তু এই তোমাদের সময়, অন্ধকারের রাজত্বের এই তো সময়৷’ 54 তারা তাঁকে গ্রেপ্তার করে মহাযাজকের বাড়িতে নিয়ে চলল৷ পিতর কিন্তু দূরত্ব বজায় রেখে তাদের পেছনে পেছনে চললেন৷ 55 মহাযাজকের বাড়ির উঠোনের মাঝখানে লোকেরা আগুন জে্বলে তার চারপাশে বসল, পিতরও তাদের সঙ্গে বসলেন৷ 56 একজন চাকরাণী দেখল য়ে পিতর সেই আগুনের ধারে বসেছেন৷ সে পিতরকে খুব ভালভাবে দেখে নিয়ে বলল, ‘আরে, এই লোকটাও তো ওর সঙ্গী ছিল!’ 57 কিন্তু পিতর অস্বীকার করে বললেন, ‘এই মেয়ে, আমি ওঁকে চিনি না৷’ 58 এর কিছুক্ষণ পরে আর একজন পিতরকে দেখে বলল, ‘আরে, তুমিও তো ওদেরই দলের একজন!’কিন্তু পিতর বললেন, ‘না, মশায়, আমি নই৷’ 59 এর প্রায় একঘন্টা পরে আর একজন বেশ জোর দিয়ে বলল, ‘নিঃসন্দেহে এ লোকটা ওরই সঙ্গী ছিল, কারণ এ তো একজন গালীলীয়!’ 60 কিন্তু পিতর বললেন, ‘মশায়, আমি কিছুই বুঝতে পারছি না, আপনি কি বলছেন৷’পিতরের কথা শেষ না হতেই একটা মোরগ ডেকে উঠল৷ 61 তখন প্রভু মুখ ফিরিয়ে পিতরের দিকে তাকালেন, আর প্রভুর কথা পিতরের মনে পড়ে গেল, প্রভু বলেছিলেন, ‘আজ রাতে মোরগ ডাকার আগে, তুমি আমাকে তিনবার অস্বীকার করবে৷’ 62 তখন তিনি বাইরে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন৷ 63 যাঁরা যীশুকে পাহারা দিচ্ছিল, তারা এই সময় তাঁকে বিদ্রূপ করতে ও মারতে শুরু করল৷ তারা যীশুর চোখ বেঁধে দিয়ে তাঁকে জিজ্ঞেস করতে লাগল, ‘ভাববাণী বল দেখি, কে তোকে মারল!’ 64 65 তাঁকে অপমান করার জন্য তারা অনেক কথা বলল৷ 66 দিন শুরু হলে প্রবীন নেতারা, প্রধান যাজরা, ব্যবস্থার শিক্ষকরা সকলে মিলে সভা ডাকল আর সেই সভায় তারা যীশুকে হাজির করল৷ 67 তারা বলল, ‘তুমি যদি খ্রীষ্ট হও, তবে আমাদের বল!’ যীশু তাদের বললেন, ‘আমি যদি বলি, তোমরা আমার কথায় বিশ্বাস করবে না: 68 আর আমি যদি তোমাদের কিছু জিজ্ঞেস করি, তোমরা তার জবাব দেবে না৷ 69 কিন্তু মানবপুত্র এখন থেকে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের ডানদিকে বসে থাকলেন৷’ 70 তখন তারা সকলে বলল, ‘তাহলে তুমি ঈশ্বরের পুত্র?’ তিনি জবাব দিলেন, ‘তোমরা ঠিকই বলেছ য়ে আমি সেই৷’ 71 তারা বলল, ‘আমাদের আর অন্য সাক্ষ্যের কি দরকার? আমরা তো ওর নিজের মুখের কথাই শুনলাম৷’
Luke 23:1 এরপর তারা সকলে উঠে প্রভু যীশুকে নিয়ে পীলাতের কাছে গেল৷ 2 আর তারা তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলল, ‘আমরা দেখেছি, লোকটা আমাদের জাতিকে বিপথে নিয়ে যাচ্ছে৷ এ কৈসরকে কর দিতে বারণ করে আর বলে, সে নিজেই খ্রীষ্ট, একজন রাজা৷’ 3 তখন পীলাত যীশুকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি কি ইহুদীদের রাজা?’ যীশু তাঁকে বললেন, ‘তুমি নিজেই সে কথা বললে৷’ 4 এরপর পীলাত প্রধান যাজক ও লোকদের উদ্দেশ্যে বললেন, ‘এই লোকের বিরুদ্ধে কোন দোষই আমি খুঁজে পাচ্ছি না৷’ 5 কিন্তু তারা জেদ ধরে বলতে লাগল, ‘এই লোকটি যিহূদার সমস্ত জায়গায় শিক্ষা দিয়ে লোকদের ক্ষেপিয়ে তুলছে৷ গালীল থেকে শুরু করে এখন সে এখানে এসেছে৷’ 6 এই কথা শুনে পীলাত জানতে চাইলেন যীশু গালীলের লোক কিনা? 7 তিনি যখন জানতে পারলেন য়ে হেরোদের শাসনাধীনে য়ে অঞ্চল আছে যীশু সেখানকার লোক, তখন তিনি যীশুকে হেরোদের কাছে পাঠিয়ে দিলেন, কারণ হেরোদ তখন জেরুশালেমেই ছিলেন৷ 8 রাজা হেরোদ যীশুকে দেখে খুবই খুশী হলেন, কারণ তিনি অনেকদিন থেকেই তাঁকে দেখতে চাইছিলেন৷ তাঁর বিষয়ে হেরোদ অনেক কথাই শুনেছিলেন এবং আশা করেছিলেন য়ে যীশু কোন অলৌকিক কাজ করে তাঁকে দেখাবেন৷ 9 তিনি যীশুকে অনেক প্রশ্ন করলেন; কিন্তু যীশু তাকে কোন উত্তরই দিলেন না৷ 10 প্রধান যাজকেরা ও ব্যবস্থার শিক্ষকরা সেখানে দাঁড়িয়ে প্রবলভাবে যীশুর বিরুদ্ধে দোষারোপ করতে লাগল৷ 11 হেরোদ তার সৈন্যদের নিয়ে যীশুকে নানাভাবে অপমান ও উপহাস করলেন৷ পরে একটা সুন্দর আলখাল্লা পরিয়ে তাঁকে আবার পীলাতের কাছে পাঠিয়ে দিলেন৷ 12 এর আগে পীলাত ও হেরোদ পরস্পর শত্রু ছিলেন; কিন্তু ঐ দিন তাঁরা পরস্পর আবার বন্ধু হয়ে গেলেন৷ 13 পীলাত প্রধান যাজকদের ও ইহুদী নেতাদের ডেকে বললেন, 14 ‘তোমরা আমার কাছে এই লোকটিকে নিয়ে এসে বলছ য়ে এ লোকদের বিপথে চালিত করছে৷ তোমাদের সামনেই আমি ভালভাবে একে জেরা করে দেখলাম; আর তোমরা এর বিরুদ্ধে য়ে অভিযোগ করছ তার কোন প্রমাণই পেলাম না, সে নির্দোষ৷ 15 এমন কি রাজা হেরোদও পান নি, তাই তিনি একে আবার আমাদের কাছে ফেরত পাঠিয়েছেন৷ আর দেখ, মৃত্যুদণ্ডে র য়োগ্য কোন কাজই এ করে নি৷ 16 তাই একে আমি আচ্ছা করে চাবুক মেরে ছেড়ে দেব৷’ 17 18 কিন্তু তারা সকলে এক সঙ্গে চিত্কার করে বলে উঠল, ‘এই লোকটাকে দূর কর! আমাদের জন্য বারাব্বাকে ছেড়ে দাও!’ 19 শহরের মধ্যে গণ্ডগোল বানানো ও হত্যার অপরাধে বারাব্বাকে কারাবন্দী করা হয়েছিল৷ 20 পীলাত যীশুকে ছেড়ে দিতে চাইলেন, তাই তিনি আবার লোকদের বোঝাতে চেষ্টা করলেন৷ 21 কিন্তু তারা চিত্কার করেই চলল, ‘ওকে ক্রুশে দাও, ক্রুশে দাও৷’ 22 পীলাত তৃতীয় বার তাদের বললেন, ‘কেন? এই লোক কি অপরাধ করেছে? মৃত্যুদণ্ড দেবার মতো কোন দোষই তো এর আমি দেখছি না, তাই একে আমি চাবুক মেরে ছেড়ে দেব৷’ 23 কিন্তু তারা প্রচণ্ড চিত্কার করেই চলল, তাঁকে য়েন ক্রুশে দেওযা হয়, এই দাবিতে তারা অনড় থাকল৷ আর শেষ পর্যন্ত তাদের চিত্কারেরই জয় হল৷ 24 পীলাত তাদের অনুরোধ রক্ষা করবেন বলে ঠিক করলেন৷ 25 যাকে বিদ্রোহ ও খুনের অপরাধে কারাগারে রাখা হয়েছিল তাকেই তিনি মুক্তি দিলেন, আর যীশুকে তাদের হাতে তুলে দিলেন য়েন তাকে নিয়ে তারা যা চায় তা করতে পারে৷ 26 তারা যখন যীশুকে নিয়ে যাচ্ছিল তখন কুরীশীর শহরের শিমোন নামে একজন লোককে সৈন্যরা ধরল, সে তখন মাঠ থেকে আসছিল৷ তারা সেই ক্রুশটা তার ঘাড়ে চাপিয়ে যীশুর পেছনে পেছনে সেটা বয়ে নিয়ে য়েতে তাকে বাধ্য করল৷ 27 এক বিরাট জনতা তার পেছনে পেছনে যাচ্ছিল, তাদের মধ্যে কিছু স্ত্রীলোকও ছিল যাঁরা যীশুর জন্য কান্নাকাটি ও হা-হুতাশ করতে করতে যাচ্ছিল৷ 28 যীশু তাদের দিকে ফিরে বললেন, ‘হে জেরুশালেমের মেয়েরা, তোমরা আমার জন্য কেঁদো না, বরং নিজেদের জন্য ও তোমাদের সন্তানদের জন্য কাঁদ৷ 29 কারণ এমন দিন আসছে যখন লোকে বলবে, ‘বন্ধ্যা স্ত্রীলোকেরাই ধন্য! আর ধন্য সেই সব গর্ভ যা কখনও সন্তান প্রসব করে নি, ধন্য সেই সব স্তন যা কখনও শিশুদেব পান করায় নি৷’ 30 সেই সময় লোকে কে বলবে, ‘আমাদের ওপরে পড়!’তারা ছোট ছোট পাহাড়কে বলবে, ‘আমাদের চাপা দাও!’ 31 কারণ গাছ সবুজ থাকতেই যদি লোকে এরকম করে, তবে গাছ যখন শুকিয়ে যাবে তখন কি করবে?’ 32 দুজন অপরাধীকে তাঁর সঙ্গে মৃত্যুদণ্ড দেওযার জন্য নিয়ে যাওযা হচ্ছিল৷ 33 তারা ‘মাথার খুলি’ নামে একটা জায়গায় এসে পৌঁছাল, সেখানে ঐ দুজন অপরাধীর সঙ্গে তারা যীশুকে ক্রুশে বিদ্ধ করল৷ তারা একজনকে তাঁর বাঁদিকে, আর অন্যজনকে তাঁর ডানদিকে ক্রুশে টাঙিয়ে দিল৷ 34 তখন যীশু বললেন, ‘পিতা, এদের ক্ষমা কর, কারণ এরা য়ে কি করছে তা জানে না৷’তারা পাশার ঘুঁটি চেলে গুলিবাঁট করে নিজেদের মাঝে তাঁর পোশাকগুলি ভাগ করে নিল৷ 35 লোকেরা সেখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এই দৃশ্য দেখছিল, ইহুদী নেতারা ব্যঙ্গ করে তাঁকে বলতে লাগল, ‘ওতো অন্যদের বাঁচাতো ও যদি ঈশ্বরের মনোনীত সেই খ্রীষ্ট হয় তবে এখন নিজেকে বাঁচাক দেখি!’ 36 সৈন্যরা তাঁর কাছে এগিয়ে এসে তাঁকে উপহাস করতে লাগল৷ তারা পান করার সিরকা এগিয়ে দিয়ে যীশুকে বলল, 37 ‘তুই যদি ইহুদীদের রাজা, তবে নিজেকে বাঁচা দেখি!’ 38 তারা একটা ফলকে ‘এ ইহুদীদের রাজা’ লিখে যীশুর ক্রুশের ওপর তা লটকে দিল৷ 39 তাঁর দুপাশে যাঁরা ক্রুশের ওপর ঝুলছিল, তাদের মধ্যে একজন তাঁকে বিদ্রূপ করে বলল, ‘তুমি না খ্রীষ্ট? আমাদেরকে ও নিজেকে বাঁচাও দেখি!’ 40 কিন্তু অন্য জন তাকে ধমক দিয়ে বলল, ‘তুমি কি ঈশ্বরকে ভয় কর না? তুমি তো একই রকম শাস্তি পাচ্ছ৷ 41 আমরা য়ে শাস্তি পাচ্ছি তা ন্যায়, কারণ আমরা যা করেছি তার য়োগ্য শাস্তিই পাচ্ছি; কিন্তু ইনি তো কোন অন্যায় করেন নি৷’ 42 এরপর সে বলল, ‘যীশু আপনি যখন আপনার রাজ্যে আসবেন তখন আমার কথা মনে রাখবেন৷’ 43 যীশু তাকে বললেন, ‘আমি তোমায় সত্যি বলছি, তুমি আজকেই আমার সঙ্গে পরমদেশে উপস্থিত হবে৷’ 44 তখন বেলা প্রায় বারোটা; আর সেই সময় থেকে তিনটা পর্যন্ত সমস্ত দেশ অন্ধকারে ছেয়ে গেল৷ 45 সেই সময় সূর্যের আলো দেখা গেল না; আর মন্দিরের মধ্যে ভারী পর্দাটা মাঝখানে থেকে চিরে দুভাগ হয়ে গেল৷ 46 যীশু চিত্কার করে বললেন, ‘পিতা আমি তোমার হাতে আমার আত্মাকে সঁপে দিচ্ছি৷’ এই কথা বলে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ফেললেন৷ 47 সেখানে উপস্থিত শতপতি এইসব ঘটনা দেখে ঈশ্বরের প্রশংসা করে বলে উঠলেন, ‘ইনি সত্যিই নির্দোষ ছিলেন!’ 48 য়ে লোকেরা সেখানে জড়ো হয়েছিল, তারা এইসব ঘটনা দেখে বুক চাপড়াতে চাপড়াতে সেখান থেকে চলে গেল৷ 49 কিন্তু যাঁরা যীশুর খুবই পরিচিত ছিলেন, তাঁরা শেষ পর্যন্ত কি ঘটে দেখার জন্য দূরে দাঁড়িয়ে রইলেন৷ য়ে সব স্ত্রীলোক গালীল থেকে যীশুর সঙ্গে এসেছিলেন, তাঁরাও এদের মধ্যে ছিলেন৷ 50 সেখানে য়োষেফ নামে একজন লোক ছিলেন, তিনি ছিলেন ইহুদী মহাসভার সভ্য়, ভাল ও দযালু ব্যক্তি৷ তিনি পরিষদের সিদ্ধান্ত ও কার্য়কলাপের সঙ্গে একমত হননি৷ যিহূদার আরিমাথিযার শহর থেকে তিনি এসেছিলেন এবং ঈশ্বরের রাজ্যের আগমণের প্রতীক্ষায় ছিলেন৷ 51 52 য়োষেফ পীলাতের কাছে গিয়ে যীশুর মৃতদেহটি চাইলেন৷ 53 পরে যীশুর দেহটি ক্রুশের ওপর থেকে নামিয়ে নিয়ে একটি মসলিন কাপড়ে তা জড়ালেন৷ এরপর পাহাড়ের গা কেটে গর্ত করা একটি সমাধিগুহার মধ্যে দেহটি শুইয়ে রাখলেন৷ এই সমাধি সম্পূর্ণ নতুন ছিল, এর আগে কাউকে কখনও এখনে কবর দেওযা হয় নি৷ 54 সেই দিনটা ছিল বিশ্রামবারের আযোজনের দিন, আর বিশ্রামবার প্রায় শুরু হয়ে গিয়েছিল৷ 55 য়ে স্ত্রীলোকেরা যীশুর সঙ্গে সঙ্গে গালীল থেকে এসেছিলেন, তাঁরা য়োষেফের সঙ্গে গেলেন, আর সেই সমাধিটি ও তার মধ্যে কিভাবে যীশুর দেহ শাযিত রাখা হল তা দেখলেন৷ 56 এরপর তাঁরা বাড়ি ফিরে গিয়ে বিশেষ এক ধরণের সুগন্ধি তেল ও মশলা তৈরী করলেন৷ বিশ্রামবারে তাঁরা বিধি-ব্যবস্থা অনুসারে কাজকর্ম বন্ধ রাখলেন৷
Luke 24:1 সপ্তাহের প্রথম দিন, সেই স্ত্রীলোকেরা খুব ভোরে ঐ সমাধিস্থলে এলেন৷ তাঁরা য়ে গন্ধদ্রব্য ও মশলা তৈরী করেছিলেন তা সঙ্গে আনলেন৷ 2 তাঁরা দেখলেন সমাধিগুহার মুখ থেকে পাথরখানা একপাশে গড়িয়ে দেওযা আছে; 3 কিন্তু ভেতরে ঢুকে সেখানে প্রভু যীশুর দেহ দেখতে পেলেন না৷ 4 তাঁরা যখন অবাক বিস্ময়ে সেই কথা ভাবছেন, সেই সময় উজ্জ্বল পোশাক পরে দুজন ব্যক্তি হঠাত্ এসে তাঁদের পাশে দাঁড়ালেন৷ 5 ভয়ে তাঁরা মুখ নীচু করে নতজানু হয়ে রইলেন৷ ঐ দুজন তাঁদের বললেন, ‘যিনি জীবিত, তোমরা তাঁকে মৃতদের মাঝে খুঁজছ কেন? 6 তিনি এখানে নেই, তিনি পুনরুত্থিত হয়েছন৷ তিনি যখন গালীলে ছিলেন তখন তোমাদের কি বলেছিলেন মনে করে দেখ৷ 7 তিনি বলেছিলেন, মানবপুত্রকে অবশ্যই পাপী মানুষদের হাতে ধরিয়ে দেওযা হবে, তাঁকে ক্রুশবিদ্ধ হতে হবে; আর তিন দিনের দিন তিনি আবার মৃত্যুর মধ্য থেকে জীবিত হয়ে উঠবেন৷’ 8 তখন যীশুর সব কথা তাঁদের মনে পড়ে গেল৷ 9 তারপর তাঁরা সমাধিগুহা থেকে ফিরে এসে সেই এগারো জন প্রেরিতকে ও তাঁর অনুগামীদের এই ঘটনার কথা জানালেন৷ 10 এই স্ত্রীলোকেরা হলেন মরিয়ম মগ্দলীনী, য়োহানা আর যাকোবের মা মরিয়ম৷ তাঁদের সঙ্গে আরো কয়েকজন এই সব ঘটনা প্রেরিতদের জানালেন৷ 11 কিন্তু প্রেরিতদের কাছে সে সব প্রলাপ বলে মনে হল, তাঁরা সেই স্ত্রীলোকদের কথা বিশ্বাস করলেন না৷ 12 কিন্তু পিতর উঠে দৌড়ে সমাধিগুহার কাছে গেলেন৷ তিনি নীচু হয়ে ঝুঁকে পড়ে দেখলেন, কেবল যীশুর দেহে জড়ানো কাপড়গুলো সেখানে পড়ে আছে; আর যা ঘটেছে তাতে আশ্চর্য হয়ে ঘরে ফিরে গেলেন৷ 13 ঐ দিনই দুজন অনুগামী জেরুশালেম থেকে সাত মাইল দূরে ইম্মাযু নামে একটি গ্রামে যাচ্ছিলেন৷ 14 এই য়ে সব ঘটনাগুলি ঘটে গেল, য়েতে য়েতে তাঁরা সে বিষয়েই পরস্পর আলোচনা করছিলেন৷ 15 তাঁরা যখন এইসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করছেন, এমন সময় যীশু নিজে এসে তাঁদের সঙ্গে সঙ্গে চলতে লাগলেন৷ 16 ঘটনাটি এমনভাবেই ঘটল যাতে তাঁরা যীশুকে চিনতে না পারেন৷ 17 যীশু তাঁদের বললেন, ‘তোমরা য়েতে য়েতে পরস্পর কি নিয়ে আলোচনা করছ?’তাঁরা থমকে দাঁড়ালেন, তাঁদের খুবই বিপন্ন দেখাচ্ছিল৷ 18 তাঁদের মধ্যে ক্লিয়পা নামে একজন তাঁকে বললেন, ‘জেরুশালেমের অধিবাসীদের মধ্যে আমাদের মনে হয় আপনিই একমাত্র লোক, যিনি জানেন না গত কদিনে সেখানে কি কাণ্ডটাই না ঘটে গেছে৷’ 19 যীশু তাঁদের বললেন, ‘কি ঘটেছে, তোমরা কিসের কথা বলছ?’ তাঁরা যীশুকে বললেন, ‘নাসরতীয় যীশুর বিষয়ে বলছি৷ তিনি ছিলেন এমন একজন মানুষ, যিনি তাঁর কথা ও কাজের শক্তিতে ঈশ্বর ও সমস্ত মানুষের চোখে নিজেকে এক মহান ভাববাদীরূপে প্রমাণ করেছেন৷ 20 কিন্তু আমাদের প্রধান যাজকরা ও নেতারা তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেবার জন্য ধরিয়ে দিল, তারা তাঁকে ক্রুশবিদ্ধ করে মারল৷ 21 আমরা আশা করেছিলাম য়ে তিনিই সেই যিনি ইস্রায়েলকে মুক্ত করবেন৷ কেবল তাই নয়, আজ তিন দিন হল এসব ঘটে গেছে৷ 22 আবার আমাদের মধ্যে কয়েকজন স্ত্রীলোক আমাদের অবাক করে দিলেন৷ তাঁরা আজ খুব ভোরে সমাধির কাছে গিয়েছিলেন; 23 কিন্তু সেখানে তাঁরা যীশুর দেহ দেখতে পান নি৷ সেখান থেকে ফিরে এসে তাঁরা আমাদের বললেন য়ে তাঁরা স্বর্গদূতদের দর্শন পেয়েছেন, আর সেই স্বর্গদূতেরা তাঁদের বলেছেন য়ে যীশু জীবিত৷ 24 এরপর আমাদের সঙ্গে যাঁরা ছিলেন তাদের মধ্যে কয়েকজন সেই সমাধির কাছে গিয়েছিলেন; আর তাঁরা দেখলেন স্ত্রীলোকেরা যা বলেছেন তা সত্য৷ কিন্তু তাঁরা যীশুকে সেখানে দেখতে পান নি৷’ 25 তখন যীশু তাঁদের বললেন, ‘তোমরা সত্যি কিছু বোঝ না, তোমাদের মন বড়ই অসাড়, তাই ভাববাদীরা যা কিছু বলে গেছেন তোমরা তা বিশ্বাস করতে পার না৷ 26 খ্রীষ্টের মহিমায় প্রবেশ লাভের পূর্বে কি তাঁর এইসব কষ্টভোগ করার একান্ত প্রযোজন ছিল না?’ 27 আর তিনি মোশির পুস্তক থেকে শুরু করে ভাববাদীদের পুস্তকে তাঁর বিষয়ে যা যা লেখা আছে, শাস্ত্রের সে সব কথা তাঁদের বুঝিয়ে দিলেন৷ 28 তাঁরা য়ে গ্রামে যাচ্ছিলেন তার কাছাকাছি এলে পর যীশু আরো দূরে যাবার ভাব দেখালেন৷ 29 তখন তাঁরা যীশুকে খুব অনুরোধ করে বললেন, ‘দেখুন, বেলা পড়ে গেছে, এখন সন্ধ্যা হয়ে এল, আপনি আমাদের এখানে থেকে যান৷’ তাই তিনি তাঁদের সঙ্গে থাকবার জন্য ভেতরে গেলেন৷ 30 তিনি যখন তাঁদের সঙ্গে খেতে বসলেন, তখন রুটি নিয়ে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিলেন৷ পরে সেই রুটি টুকরো টুকরো করে তাঁদের দিলেন৷ 31 সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের চোখ খুলে গেল, তাঁরা যীশুকে চিনতে পারলেন, আর তিনি সেখান থেকে অদৃশ্য হয়ে গেলেন৷ 32 তখন তাঁরা পরস্পর বলাবলি করলেন, ‘তিনি যখন রাস্তায় আমাদের সঙ্গে কথা বলছিলেন ও শাস্ত্র থেকে আমাদের বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন, তখন আমাদের অন্তর কি আবেগে উদ্দীপ্ত হয়ে ওঠে নি?’ 33 তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে উঠে জেরুশালেমে গেলেন৷ সেখানে তাঁরা সেই এগারোজন প্রেরিত ও তাদের সঙ্গে আরো অনেককে দেখতে পেলেন৷ 34 প্রেরিত ও অন্যান্য যাঁরা সেখানে ছিলেন তাঁরা বললেন, ‘প্রভু, সত্যি জীবিত হয়ে উঠেছেন৷ তিনি শিমোনকে দেখা দিয়েছেন৷’ 35 তখন সেই দুজন অনুগামীও রাস্তায় যা ঘটেছিল তা তাঁদের কাছে ব্যক্ত করলেন৷ আর যীশু যখন রুটি টুকরো টুকরো করছিলেন তখন কিভাবে তাঁরা তাঁকে চিনতে পারলেন তাও জানালেন৷ 36 তাঁরা যখন এসব কথা তাদের বলছেন, এমন সময় যীশু তাঁদের মাঝে এসে দাঁড়ালেন আর বললেন, ‘তোমাদের শান্তি হোক্!’ 37 কিন্তু তাঁরা ভয়ে চমকে উঠলেন৷ তাঁরা মনে করলেন বোধ হয় কোন ভূত দেখছেন৷ 38 কিন্তু যীশু তাঁদের বললেন, ‘তোমরা এত অস্থির হচ্ছ কেন? আর তোমাদের মনে সন্দেহই বা জাগছে কেন? 39 আমার হাত ও পা দেখ, আমার স্পর্শ করে দেখ, আত্মার এইরূপ হাড় মাংস থাকে না, কিন্তু তোমরা দেখতে পাচ্ছ আমার আছে৷’ 40 এই কথা বলে তিনি তাঁদের হাত ও পা দেখালেন৷ 41 তাঁদের এতই আনন্দ হয়েছিল ও য়ে তাঁরা বিশ্বাস করতে পারছিলেন না৷ তাঁরা বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে গিয়েছিলেন৷ যীশু তাঁদের বললেন, ‘তোমাদের কাছে কিছু খাবার আছে কি? 42 তাঁরা তাঁকে এক টুকরো ভাজা মাছ দিলেন৷ 43 তিনি সেটি নিয়ে তাঁদের সামনে গেলেন৷ 44 তিনি তাঁদের বললেন, ‘আমি যখন তোমাদের সঙ্গে ছিলাম, তখনই তোমাদের এসব কথা বলেছিলাম, আমার সম্বন্ধে মোশির বিধি-ব্যবস্থায়, ভাববাদীদের পুস্তকে ও গীতসংহিতায় যা কিছু লেখা হয়েছে তা পূর্ণ হতেই হবে৷’ 45 এরপর তিনি তাঁদের বুদ্ধি খুলে দিলেন, য়েন তাঁরা শাস্ত্রের কথা বুঝতে পারেন৷ 46 যীশু তাঁদের বললেন, ‘একথা লেখা আছে খ্রীষ্টকে অবশ্যই কষ্ট ভোগ করতে হবে, আর তিনি মৃত্যুর তিন দিনের দিন মৃতদের মধ্য থেকে জীবিত হয়ে উঠবেন৷’ 47 এবং পাপের জন্য অনুশোচনা ও পাপের ক্ষমার কথা অবশ্যই সমস্ত জাতির কাছে ঘোষণা করা হবে, জেরুশালেম থেকেই একাজ শুরু হবে আর তোমরাই এসবের সাক্ষী৷ 48 49 আমার পিতা যা দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা আমি তোমাদের কাছে পাঠিয়ে দেব; কিন্তু তোমরা য়ে পর্যন্ত না উর্দ্ধ থেকে আসা শক্তি পরিধান করছ, সেই পর্যন্ত এই শহরেই থাক৷ 50 এরপর যীশু তাঁদের বৈথনিযা পর্যন্ত নিয়ে গেলেন এবং হাত তুলে তাদের আশীর্বাদ করলেন৷ 51 তিনি আশীর্বাদ করতে করতে তাঁদের ছেড়ে আকাশে উঠে য়েতে লাগলেন আর স্বর্গে উন্নীত হলেন৷ 52 শিষ্যরা যীশুকে প্রণাম জানিয়ে মহানন্দের সঙ্গে জেরুশালেমে ফিরে গেলেন৷ 53 আর সর্বক্ষণ মন্দিরে উপস্থিত থেকে ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগলেন৷
John 1:1 আদিতে বাক্যছিলেন, বাক্য ঈশ্বরের সঙ্গে ছিলেন আর সেই বাক্যই ঈশ্বর ছিলেন৷ 2 সেই বাক্য আদিতে ঈশ্বরের সঙ্গে ছিলেন৷ 3 তাঁর মাধ্যমেই সব কিছুর সৃষ্টি হয়েছিল এবং এর মধ্যে তাঁকে ছাড়া কোন কিছুরই সৃষ্টি হয় নি৷ 4 তাঁর মধ্যে জীবন ছিল; আর সেই জীবন জগতের মানুষের কাছে আলো নিয়ে এল৷ 5 সেই আলো অন্ধকারের মাঝে উজ্জ্বল হয়ে উঠল; আর অন্ধকার সেই আলোকে জয় করতে পারে নি৷ 6 একজন লোক এলেন তাঁর নাম য়োহন; ঈশ্বর তাঁকে পাঠিয়েছিলেন৷ 7 তিনি সেই আলোর বিষয়ে সাক্ষ্য দেবার জন্য সাক্ষী রূপে এলেন; যাতে তাঁর মাধ্যমে সকল লোক সেই আলোর কথা শুনে বিশ্বাস করতে পারে৷ 8 য়োহন নিজে সেই আলো ছিলেন না; কিন্তু তিনি এসেছিলেন যাতে লোকদের কাছে সেই আলোর বিষয়ে সাক্ষ্য দিতে পারেন৷ 9 প্রকৃত য়ে আলো, তা সকল মানুষকে আলোকিত করতে পৃথিবীতে আসছিলেন৷ 10 সেই বাক্য জগতে ছিল এবং এই জগত তাঁর দ্বারাই সৃষ্ট হয়েছিল; কিন্তু জগত তাঁকে চিনতে পারে নি৷ 11 য়ে জগত তাঁর নিজস্ব সেখানে তিনি এলেন, কিন্তু তাঁর নিজের লোকেরাই তাঁকে গ্রহণ করল না৷ 12 কিন্তু কিছু লোক তাঁকে গ্রহণ করল এবং তাঁকে বিশ্বাস করল৷ যাঁরা বিশ্বাস করল তাদের সকলকে তিনি ঈশ্বরের সন্তান হবার অধিকার দান করলেন৷ 13 ঈশ্বরের এই সন্তানরা প্রাকৃতিক নিয়ম অনুসারে কোন শিশুর মতো জন্ম গ্রহণ করে নি৷ মা-বাবার দৈহিক কামনা-বাসনা অনুসারেও নয়, ঈশ্বরের কাছ থেকেই তাদের এই জন্ম৷ 14 বাক্য মানুষের রূপ ধারণ করলেন এবং আমাদের মধ্যে বসবাস করতে লাগলেন৷ পিতা ঈশ্বরের একমাত্র পুত্র হিসাবে তাঁর য়ে মহিমা, সেই মহিমা আমরা দেখেছি৷ সে বাক্য অনুগ্রহ ও সত্যে পরিপূর্ণ ছিলেন৷ 15 য়োহন তাঁর সম্পর্কে মানুষকে বললেন, ‘ইনিই তিনি য়াঁর সম্বন্ধে আমি বলেছি৷ ‘যিনি আমার পরে আসছেন, তিনি আমার থেকে মহান, কারণ তিনি আমার অনেক আগে থেকেই আছেন৷” 16 সেই বাক্য অনুগ্রহ ও সত্যে পূর্ণ ছিলেন৷ আমরা সকলে তাঁর থেকে অনুগ্রহের ওপর অনুগ্রহ পেয়েছি৷ 17 কারণ মোশির মাধ্যমে বিধি-ব্যবস্থা দেওযা হয়েছিল, কিন্তু অনুগ্রহ ও সত্যের পথ যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে এসেছে৷ 18 ঈশ্বরকে কেউ কখনও দেখেনি; কিন্তু একমাত্র পুত্র, যিনি পিতার কাছে থাকেন, তিনিই তাঁকে প্রকাশ করেছেন৷ 19 জেরুশালেমের ইহুদীরা কয়েকজন যাজক ও লেবীয়কে য়োহনের কাছে পাঠালেন৷ তাঁরা এসে য়োহনকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আপনি কে?’ 20 য়োহন একথার জবাব খোলাখুলিভাবেই দিলেন; তিনি উত্তর দিতে অস্বীকার করলেন না৷ তিনি স্পষ্টভাবে স্বীকার করলেন, ‘আমি সেই খ্রীষ্ট নই৷’ 21 তখন তাঁরা তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তাহলে আপনি কে? আপনি কি এলিয়?’য়োহন বললেন, ‘না, আমি এলিয় নই৷’ইহুদীরা জিজ্ঞেস করলেন, ‘তবে আপনি কি সেই ভাববাদী?’য়োহন এর জবাবে বললেন, ‘না৷’ 22 তখন তাঁরা বললেন, ‘তাহলে আপনি কে? আমাদের বলুন যাতে যাঁরা আমাদের পাঠিয়েছে তাদের জবাব দিতে পারি৷ আপনার নিজের বিষয়ে আপনি কি বলেন?’ 23 ভাববাদী যিশাইয় যা বলেছিলেন তা উল্লেখ করে য়োহন বললেন,‘আমি তাঁর রব, যিনি মরু প্রান্তরে চিত্কার করে বলছেন, ‘তোমার প্রভুর জন্য পথ সোজা কর!” যিশাইয় 40:3 24 যাদের পাঠানো হয়েছিল তাদের মধ্যে কিছু ফরীশী সম্প্রদায়ের লোক ছিল৷ 25 তাঁরা য়োহনকে বললেন, ‘আপনি যদি সেই খ্রীষ্ট নন, এলিয় নন, ভাববাদীও নন, তাহলে আপনি বাপ্তাইজ করছেন কেন?’ 26 এর উত্তরে য়োহন বললেন, ‘আমি জলে বাপ্তাইজ করছি৷ তোমাদের মধ্যে একজন দাঁড়িয়ে আছেন যাঁকে তোমরা চেন না৷ 27 তিনিই সেই লোক যিনি আমার পরে আসছেন৷ আমি তাঁর পায়ের চটির ফিতে খোলবার য়োগ্য নই৷’ 28 যর্দন নদীর অপর পারে বৈথনিযাতে য়েখানে য়োহন লোকেদের বাপ্তাইজ করছিলেন, সেইখানে এইসব ঘটেছিল৷ 29 পরের দিন য়োহন যীশুকে তাঁর দিকে আসতে দেখে বললেন, ‘ঐ দেখ, ঈশ্বরের মেষশাবক, যিনি জগতের পাপরাশি বহন করে নিয়ে যান! 30 ইনিই সেই লোক, য়াঁর বিষয়ে আমি বলেছিলাম, ‘আমার পরে একজন আসছেন, কিন্তু তিনি আমার থেকে মহান, কারণ তিনি আমার অনেক আগে থেকেই আছেন৷’ 31 এমনকি আমিও তাঁকে চিনতাম না, কিন্তু ইস্রায়েলীয়রা য়েন তাঁকে খ্রীষ্ট বলে চিনতে পারে এইজন্য আমি এসে তাদের জলে বাপ্তাইজ করছি৷’ 32 এরপর য়োহন তাঁর সাক্ষ্যে বললেন, ‘আমি নিজেও খ্রীষ্ট কে তা জানতাম না৷ কিন্তু লোকদের জলে বাপ্তাইজ করতে ঈশ্বর আমাকে পাঠালেন৷ ঈশ্বর আমাকে বললেন, ‘তুমি দেখতে পাবে এক ব্যক্তির উপর পবিত্র আত্মা এসে অধিষ্ঠান করছেন৷ আর তিনিই সেই ব্যক্তি যিনি পবিত্র আত্মাতে বাপ্তাইজ করবেন৷” য়োহন বললেন, ‘আমি পবিত্র আত্মাকে স্বর্গ থেকে নেমে আসতে দেখেছি৷ সেই আত্মা কপোতের আকারে এসে যীশুর উপর বসলেন৷ 33 34 আমি তা দেখেছি আর তাই আমি লোকেদের বলি, ‘য়ে তিনিই ঈশ্বরের পুত্র৷” 35 পরদিন য়োহন তাঁর দুজন শিষ্য়ের সঙ্গে আবার সেখানে এলেন৷ 36 যীশুকে সেখান দিয়ে য়েতে দেখে তিনি বললেন, ‘ঐ দেখ, ঈশ্বরের মেষশাবক!’ 37 তাঁর সেই দুজন শিষ্য য়োহনের কথা শুনে যীশুর অনুসরণ করতে লাগলেন৷ 38 যীশু পিছন ফিরে সেই দুজনকে অনুসরণ করতে দেখে, তাঁদের জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমরা কি চাও?’তাঁরা যীশুকে বললেন, ‘রব্বি, আপনি কোথায় থাকেন?’ (‘রব্বি’ কথাটির অর্থ ‘গুরু৷’) 39 যীশু তাঁদের বললেন, ‘এস দেখবে৷’ তখন তাঁরা গিয়ে দেখলেন তিনি কোথায় থাকেন৷ আর সেই দিনের বাকি সময়টা তাঁরা যীশুর কাছে কাটালেন৷ তখন সময় ছিল প্রায় বিকাল চারটে৷ 40 য়োহনের কথা শুনে য়ে দুজন লোক যীশুর পিছনে পিছনে গিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে একজন হচ্ছেন শিমোন পিতরের ভাই আন্দরিয়৷ 41 আন্দরিয় সঙ্গে সঙ্গে তাঁর ভাই শিমোনের দেখা পেয়ে তাকে বললেন, ‘আমরা মশীহের দেখা পেয়েছি৷’ ‘মশীহ’ কথাটির অর্থ ‘খ্রীষ্ট৷’ 42 আন্দরিয়, শিমোন পিতরকে যীশুর কাছে নিয়ে এলেন৷ যীশু তাঁর দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘তুমি য়োহনের ছেলে শিমোন, তোমাকে কৈফা বলে ডাকা হবে৷’ ‘কৈফা’ কথাটির অর্থ ‘পিতর৷’ 43 পরের দিন যীশু গালীলে যাবেন বলে ঠিক করলেন৷ সেখানে তিনি ফিলিপের দেখা পেয়ে তাঁকে বললেন, ‘আমার অনুসরণ কর৷’ 44 আন্দরিয় ও পিতর য়ে অঞ্চলে থাকতেন ফিলিপ ছিলেন, সেই বৈত্সৈদার লোক৷ 45 ফিলিপ এবার নথনেলকে দেখতে পেয়ে বললেন, ‘আমরা এমন একজনের দেখা পেয়েছি যার কথা মোশি ও ভাববাদীরা বিধি-ব্যবস্থায় লিখে রেখে গেছেন৷ তিনি নাসরত্ নিবাসী য়োষেফের ছেলে যীশু৷’ 46 নথনেল তাঁকে বললেন, ‘নাসরত্! নাসরত্ থেকে কি ভাল কিছু আসতে পারে?’ফিলিপ বললেন, ‘এস দেখে যাও৷’ 47 যীশু দেখলেন নথনেল তাঁর দিকে আসছেন৷ তখন তিনি তাঁর বিষয়ে বললেন, ‘এই দেখ একজন প্রকৃত ইস্রায়েলীয়, যার মধ্যে কোন ছলনা নেই৷’ 48 নথনেল তাঁকে বললেন, ‘আপনি কেমন করে আমাকে চিনলেন?’এর উত্তরে যীশু বললেন, ‘ফিলিপ আমার সম্পর্কে তোমায় বলার আগে তুমি যখন ডুমুর গাছের তলায় বসেছিলে, আমি তখনই তোমায় দেখেছিলাম৷’ 49 নথনেল বললেন, ‘রব্বি (গুরু), আপনিই ঈশ্বরের পুত্র, আপনিই ইস্রায়েলের রাজা৷’ 50 যীশু উত্তরে বললেন, ‘আমি তোমাকে ডুমুর গাছের তলায় দেখেছিলাম বলেই কি তুমি আমাকে বিশ্বাস করলে? এর চেয়েও আরো অনেক মহত্ জিনিস তুমি দেখতে পাবে!’ 51 পরে যীশু তাঁকে আরও বললেন, ‘সত্যি, সত্যিই আমি তোমাদের বলছি৷ তোমরা একদিন দেখবে স্বর্গ খুলে গেছে, আর ‘ঈশ্বরের দূতরা’ মানবপুত্রের ওপর দিয়ে উঠে যাচ্ছেন আর নেমে আসছেন৷’ 52
John 2:1 তৃতীয় দিনে গালীলের কান্না নগরে একটা বিয়ে হচ্ছিল এবং যীশুর মা সেখানে ছিলেন৷ 2 সেই বিয়ে বাড়িতে যীশু ও তাঁর শিষ্যদের নিমন্ত্রণ করা হয়েছিল৷ 3 যখন সমস্ত দ্রাক্ষারস ফুরিয়ে গেল, তখন যীশুর মা তাঁর কাছে এসে বললেন, ‘এদের আর দ্রাক্ষারস নেই৷’ 4 যীশু বললেন, ‘হে নারী, তুমি আমায় কেন বলছ কি করা উচিত? আমার সময় এখনও আসেনি৷’ 5 তাঁর মা চাকরদের বললেন, ‘ইনি তোমাদের যা কিছু করতে বলেন তোমরা তাই কর৷’ 6 ইহুদী ধর্মের রীতি অনুসারে আনুষ্ঠানিকভাবে হাত পা ধোযার জন্য সেই জায়গায় পাথরের ছটা জলের জালা বসানো ছিল৷ এই জালাগুলির প্রতিটিতে আশি থেকে একশ লিটার জল ধরত৷ 7 যীশু সেই চাকরদের বললেন, ‘এই জালাগুলিতে জল ভরে আন৷’ তখন তারা জালাগুলি কানায় কানায় ভরে দিল৷ 8 তারপর যীশু তাদের বললেন, ‘এর থেকে কিছুটা নিয়ে ভোজের কর্তার কাছে নিয়ে যাও৷’ তখন তারা তাই করল৷ 9 জল যা দ্রাক্ষারসে পরিণত হয়েছিল, ভোজের কর্তা তা আস্বাদ করলেন৷ সেই দ্রাক্ষারস কোথা থেকে এল তা তিনি জানতেন না; কিন্তু য়ে চাকরেরা জল এনেছিল তারা তা জানত৷ তারপর তিনি বরকে ডাকলেন৷ 10 তিনি বললেন, ‘সাধারণতঃ প্রথমে লোকে ভাল দ্রাক্ষারস পরিবেশন করে আর অতিথিরা যখন মাতাল হয়ে ওঠে তখন তাদের নিম্নমানের দ্রাক্ষারস পরিবেশন করা হয়, অথচ আমি দেখছি তোমরা ভাল দ্রাক্ষারস এখনও রেখে দিয়েছ৷’ 11 এই প্রথম অলৌকিক চিহ্ন করে গালীলের কান্না নগরে যীশু তাঁর মহিমা প্রকাশ করলেন; আর তাঁর শিষ্যেরা তাঁর ওপর বিশ্বাস করল৷ 12 পরে তিনি তাঁর মা, ভাইদের ও শিষ্যদের সঙ্গে কফরনাহূম শহরে গেলেন৷ সেখানে তাঁরা অল্প কিছু দিন থাকলেন৷লূক 19:45-46) 13 ইহুদীদের নিস্তারপর্ব পালনের সময় এগিয়ে এলে যীশু জেরুশালেমে গেলেন৷ 14 তিনি দেখলেন মন্দিরের মধ্যে লোকেরা গরু, ভেড়া ও পায়রা বিক্রি করছে; আর পোদ্দাররা বসে আছে, এরা লোকের টাকা নিয়ে বদল ও ব্যবসা করত৷ 15 তখন তিনি কিছু দড়ি দিয়ে একটা চাবুক তৈরী করে তা দিয়ে গরু, ভেড়া সমেত এই সব লোকদের মন্দির চত্বর থেকে বের করে দিলেন; আর পোদ্দারদের টাকা পয়সা সব ছড়িয়ে টেবিল উল্টিয়ে দিলেন৷ 16 যাঁরা পায়রা বিক্রি করছিল তাদের বললেন, ‘এখান থেকে এসব নিয়ে যাও! আমার পিতার এই গৃহকে বাজারে পরিণত কোরো না!’ 17 তাঁর শিষ্যদের মনে পড়ল শাস্ত্রে লেখা আছে:’তোমার গৃহের প্রতি আমার উত্সাহ আমাকে গ্রাস করবে৷’গীতসংহিতা 69:9 18 ইহুদীরা তখন এর জবাবে তাঁকে বলল, ‘তোমার য়ে এসব করার অধিকার আছে তার প্রমাণ স্বরূপ কি কোন অলৌকিক চিহ্ন আমাদের দেখাতে পার? 19 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, ‘তোমরা এই মন্দির ভেঙ্গে ফেল, আমি তিন দিনের মধ্যে একে আবার গড়ে তুলব৷’ 20 তখন ইহুদীরা বলল, ‘এই মন্দির নির্মাণ করতে ছেচল্লিশ বছর লেগেছিল; আর তুমি কিনা তিন দিনের মধ্যে এটা গড়ে তুলবে?’ 21 কিন্তু য়ে মন্দিরের কথা তিনি বলছিলেন তা হচ্ছে তাঁর দেহ৷ 22 যখন তিনি মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত হলেন, তখন তাঁর শিষ্যদের মনে পড়ল য়ে তিনি এই কথাই বলেছিলেন, তখন তাঁরা যীশুর বিষয়ে শাস্ত্রের কথা ও যীশুর বাক্য়ে বিশ্বাস করলেন৷ 23 নিস্তারপর্বের জন্য যীশু যখন জেরুশালেমে ছিলেন, তখন বহুলোক তাঁর ওপর বিশ্বাস করল, কারণ যীশু সেখানে য়েসব অলৌকিক চিহ্নকার্য় করছিলেন তা তারা দেখল৷ 24 কিন্তু যীশু নিজে তাদের ওপর কোন আস্থা রাখেন নি, কারণ তিনি এই সব লোকদের ভালভাবেই জানতেন৷ 25 কোন লোকের কাছ থেকে মানুষের সম্বন্ধে কিছু জানার তাঁর প্রযোজন ছিল না, কারণ মানুষের অন্তরে কি আছে তিনি তা জানতেন৷
John 3:1 ফরীশীদের মধ্যে নীকদীম নামে একজন লোক ছিলেন৷ তিনি ইহুদী সমাজের এক গুরুত্বপূর্ণ নেতা৷ 2 একদিন রাতে তিনি যীশুর কাছে এসে বললেন, ‘রব্বি (গুরু), আমরা জানি আপনি একজন শিক্ষক, ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছেন৷ ঈশ্বর সহায় না হলে কেউ কি ঐরূপ অলৌকিক কাজ করতে পারে, যা আপনি করছেন?’ 3 এর উত্তরে যীশু তাঁকে বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি, নতুন জন্ম না হলে কোন ব্যক্তি ঈশ্বরের রাজ্য দেখতে পাবে না৷’ 4 নীকদীম তাঁকে বললেন, ‘মানুষ বৃদ্ধ হয়ে গেলে কেমন করে তার আবার নতুন জন্ম হতে পারে? সে নিশ্চয়ই দ্বিতীয় বার মায়ের গর্ভে প্রবেশ করে আবার জন্মাতে পারে না!’ 5 যীশু তাঁকে বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যদি কোন লোক জল ও আত্মা থেকে না জন্মায়, তবে সে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করতে পারে না৷ 6 শরীর থেকেই শরীরের জন্ম হয় আর আত্মা থেকে জন্ম হয় আধ্যাত্মিকতার৷ 7 আমি তোমাকে যা বললাম, তাতে আশ্চর্য হযো না, ‘তোমাদের নতুন জন্ম হওযা অবশ্যই দরকার৷’ 8 বাতাস য়েদিকে ইচ্ছা সেদিকে বয় আর তুমি তার শব্দ শুনতে পাও; কিন্তু কোথা থেকে আসে আর কোথায় বা তা বয়ে যায় তুমি তা জানো না৷ আত্মা থেকে যাদের জন্ম হয় তাদের সকলের বেলাও সেইরকম হয়৷ 9 এর উত্তরে নীকদীম তাঁকে বললেন, ‘এটা কেমন করে হতে পারে?’ 10 তখন যীশু তাঁকে বললেন, ‘তুমি ইস্রায়েলীয়দের একজন গুরুত্বপূর্ণ গুরু; আর তুমি এটা জানো না? 11 যা সত্য আমি তোমাকে তাই বলছি, আমরা যা জানি তাই বলি, আমরা যা দেখেছি সেই বিষয়েই সাক্ষ্য দিই: কিন্তু আমরা যাই বলি না কেন তোমরা তা গ্রহণ করো না৷ 12 আমি তোমাদের কাছে পার্থিব বিষয়ের কথা বললে তোমরা যদি বিশ্বাস না করো, তবে আমি স্বর্গীয় বিষয়ে কোন কথা বললে তোমরা তা কেমন করে বিশ্বাস করবে? 13 যিনি স্বর্গ থেকে নেমে এসেছেন সেই মানবপুত্র ছাড়া কেউ কখনও স্বর্গে ওঠেনি৷ 14 ‘মরুভূমির মধ্যে মোশি য়েমন সাপকে উঁচুতে তুলেছিলেন, তেমনি মানবপুত্রকে অবশ্যই উঁচুতে ওঠানো হবে৷ 15 সুতরাং য়ে কেউ মানবপুত্রকে বিশ্বাস করে সেই অনন্ত জীবন পায়৷’ 16 কারণ ঈশ্বর এই জগতকে এতোই ভালবাসেন য়ে তিনি তাঁর একমাত্র পুত্রকে দিলেন, য়েন সেই পুত্রের ওপর য়ে কেউ বিশ্বাস করে সে বিনষ্ট না হয় বরং অনন্ত জীবন লাভ করে৷ 17 ঈশ্বর জগতকে দোষী সাব্যস্ত করার জন্য তাঁর পুত্রকে এ জগতে পাঠান নি, বরং জগত য়েন তাঁর মধ্য দিয়ে মুক্তি পায় এইজন্য ঈশ্বর তাঁর পুত্রকে পাঠিয়েছেন৷ 18 য়ে কেউ তাঁকে বিশ্বাস করে তার বিচার হয় না৷ কিন্তু য়ে কেউ তাঁকে বিশ্বাস করেনা, সে দোষী সাব্যস্ত হয়, কারণ সে ঈশ্বরের একমাত্র পুত্রের ওপর বিশ্বাস করে নি৷ 19 আর এটাই বিচারের ভিত্তি৷ জগতে আলো এসেছে, কিন্তু মানুষ আলোর চেয়ে অন্ধকারকে বেশী ভালবেসেছে, কারণ তারা মন্দ কাজ করেছে৷ 20 য়ে কেউ মন্দ কাজ করে সে আলোকে ঘৃণা করে, আর সে আলোর কাছে আসে না, পাছে তার কাজের স্বরূপ প্রকাশ হয়ে পড়ে৷ 21 কিন্তু য়ে কেউ সত্যের অনুসারী হয় সে আলোর কাছে আসে, যাতে সেই আলোতে স্পষ্ট বোঝা যায় য়ে তার সমস্ত কাজ ঈশ্বরের মাধ্যমে হয়েছে৷ 22 এরপর যীশু তাঁর শিষ্যদের সঙ্গে যিহূদিযা প্রদেশে এলেন৷ তিনি সেখানে তাঁদের সঙ্গে থাকতে লাগলেন ও বাপ্তাইজ করতে লাগলেন৷ 23 য়োহনও শালীমের নিকট ঐনোন নামক স্থানে বাপ্তাইজ করছিলেন, কারণ সেখানে প্রচুর জল ছিল; আর লোকেরা তাঁর কাছে এসে বাপ্তিস্ম নিচ্ছিল৷ 24 য়োহন তখনও কারাগারে বন্দী হন নি৷ 25 সেই সময় ইহুদী রীতি অনুসারে শুচি হওযার বিষয়ে য়োহনের শিষ্যদের সঙ্গে একজন ইহুদীর তর্ক বাধে৷ 26 পরে তারা য়োহনের কাছে এসে বলল, ‘রব্বি (গুরু), তাঁকে মনে পড়ে যিনি যর্দন নদীর ওপারে আপনার সঙ্গে ছিলেন এবং য়াঁর বিষয়ে আপনি সাক্ষ্য দিয়েছিলেন? তিনি লোকেদের বাপ্তাইজ করছেন আর সবাই তাঁর কাছে যাচ্ছে৷’ 27 এর উত্তরে য়োহন বললেন, ‘স্বর্গ থেকে দেওযা না হলে কেউই কোন কিছু লাভ করতে পারে না৷ 28 তোমরা নিজেরাই শুনেছ য়ে আমি বলেছিলাম, ‘আমি খ্রীষ্ট নই; কিন্তু আমাকে তাঁর আগেই পাঠানো হয়েছে৷’ 29 কনে বরেরই জন্য, কিন্তু বরের বন্ধু পাশে দাঁড়িয়ে থাকে বরের কথা শোনার জন্য৷ আর সে যখন বরের গলা শুনতে পায় তখন খুবই আনন্দিত হয়৷ তাই আজ আমার সেই আনন্দ পূর্ণ হল৷ 30 তিনি উত্তরোত্তর বড় হবেন, আর আমি অবশ্যই নগন্য হয়ে যাব৷ 31 ‘একজন যিনি উর্দ্ধ থেকে আসেন তিনি সবার উর্দ্ধে৷ য়ে এই জগতের মধ্য থেকে আসে সে জগতের, তাই সে যা কিছু বলে তা জগতের বিষয়েই বলে৷ যিনি স্বর্গ থেকে আসেন তিনি সবার উপরে৷ 32 তিনি যা দেখেছেন আর শুনেছেন তারই সাক্ষ্য দেন; কিন্তু কেউই তাঁর সাক্ষ্য মেনে নিতে রাজী নয়৷ 33 য়ে তাঁর সাক্ষ্য গ্রহণ করে সে তার দ্বারা প্রমাণ করে য়ে ঈশ্বরই সত্য, 34 কারণ ঈশ্বর যাঁকে পাঠিয়েছেন তিনি ঈশ্বরের কথাই বলেন৷ ঈশ্বর তাঁকে পবিত্র আত্মায় পূর্ণ করেছেন৷ 35 পিতা তাঁর পুত্রকে ভালবাসেন, আর তিনি তাঁর হাতেই সব কিছু সঁপে দিয়েছেন৷ 36 য়ে কেউ পুত্রের ওপর বিশ্বাস করে সে অনন্ত জীবনের অধিকারী হয়; কিন্তু য়ে পুত্রকে অমান্য করে সে সেই জীবন কখনও লাভ করে না, বরং তার ওপরে ঈশ্বরের ক্রোধ থাকে৷’
John 4:1 ফরীশীরা জানতে পারল য়ে যীশু য়োহনের চেয়ে বেশী শিষ্য করেছেন ও বাপ্তাইজ করছেন৷ 2 যদিও যীশু নিজে বাপ্তাইজ করছিলেন না, বরং তাঁর শিষ্যরাই তা করছিলেন৷ 3 তারপর তিনি যিহূদিযা ছেড়ে চলে গেলেন এবং গালীলেই ফিরে গেলেন৷ 4 গালীলে যাবার সময় তাঁকে শমরিযার মধ্য দিয়ে য়েতে হল৷ 5 যাকোব তাঁর ছেলে য়োষেফকে য়ে ভূমি দিয়েছিলেন তারই কাছে শমরীযার শুখর নামে এক শহরে যীশু গেলেন৷ 6 এখানেই যাকোবের কুযাটি ছিল, যীশু সেই কুযার ধারে এসে বসলেন কারণ তিনি হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন, তখন বেলা প্রায় দুপুর৷ 7 একজন শমরীযা স্ত্রীলোক সেখানে জল তুলতে এল৷ যীশু তাকে বললেন, ‘আমায় একটু জল খেতে দাও তো৷’ 8 সেই সময় শিষ্যরা শহরে কিছু খাবার কিনতে গিয়েছিল৷ 9 সেই শমরীয় স্ত্রীলোকটি তাঁকে বলল, ‘একি আপনি একজন ইহুদী হয়ে আমার কাছ থেকে খাবার জন্য জল চাইছেন! আমি একজন শমরীয় স্ত্রীলোক!’ ইহুদীরা শমরীয়দের সঙ্গে কোনরকম মেলামেশা করত না৷ 10 এর উত্তরে যীশু তাকে বললেন, ‘তুমি যদি জানতে য়ে ঈশ্বরের দান কি আর কে তোমার কাছ থেকে খাবার জন্য জল চাইছেন৷ তাহলে তুমিই আমার কাছে জল চাইতে আর আমি তোমাকে জীবন্ত জল দিতাম৷’ 11 স্ত্রীলোকটি তাঁকে বলল, ‘মহাশয়, আপনি কোথা থেকে সেই জীবন্ত জল পাবেন? এই কুযাটি যথেষ্ট গভীর৷ জল তোলার কোন পাত্রও আপনার কাছে নেই৷ 12 আপনি কি আমাদের পিতৃপুরুষ যাকোবের চেয়ে মহান? তিনি আমাদের এই কুযাটি দিয়ে গেছেন৷ তিনি নিজেই এই কুযার জল খেতেন এবং তাঁর সন্তানেরা ও তাঁর পশুপালও এর থেকেই জল পান করত৷’ 13 যীশু তাকে বললেন, ‘য়ে কেউ এই জল পান করবে তার আবার তেষ্টা পাবে৷ 14 কিন্তু আমি য়ে জল দিই তা য়ে পান করবে তার আর কখনও পিপাসা পাবে না৷ সেই জল তার অন্তরে এক প্রস্রবনে পরিণত হয়ে বইতে থাকবে, যা সেই ব্যক্তিকে অনন্ত জীবন দেবে৷’ 15 স্ত্রীলোকটি তাঁকে বলল, ‘মশায়, আমাকে সেই জল দিন, য়েন আমার আর কখনও পিপাসা না পায় আর জল তুলতে আমায় এখানে আসতে না হয়৷’ 16 তিনি তাকে বললেন, ‘যাও, তোমার স্বামীকে এখানে ডেকে নিয়ে এস৷’ 17 তখন সেই স্ত্রীলোকটি বলল, ‘আমার স্বামী নেই৷’যীশু তাকে বললেন, ‘তুমি ঠিকই বলেছ য়ে তোমার স্বামী নেই৷ 18 তোমার পাঁচ জন স্বামী হয়ে গেছে; আর এখন য়ে লোকের সঙ্গে তুমি আছ সে তোমার স্বামী নয়, তাই তুমি যা বললে তা সত্যি৷’ 19 সেই স্ত্রীলোকটি তখন তাঁকে বলল, ‘মহাশয়, আমি দেখতে পাচ্ছি য়ে আপনি একজন ভাববাদী৷ 20 আমাদের পিতৃপুরুষেরা এই পর্বতের ওপর উপাসনা করতেন৷ কিন্তু আপনারা ইহুদীরা বলেন য়ে জেরুশালেমই সেই জায়গা য়েখানে লোকেদের উপাসনা করতে হবে৷’ 21 যীশু তাকে বললেন, ‘হে নারী, আমার কথায় বিশ্বাস কর! সময় আসছে যখন তোমরা পিতা ঈশ্বরের উপাসনা এই পাহাড়ে করবে না, জেরুশালেমেও নয়৷ 22 তোমরা শমরীয়রা কি উপাসনা কর তোমরা তা জানো না৷ আমরা ইহুদীরা কি উপাসনা করি আমরা তা জানি, কারণ ইহুদীদের মধ্য থেকেই পরিত্রাণ আসছে৷ 23 সময় আসছে, বলতে কি তা এসে গেছে, যখন প্রকৃত উপাসনাকারীরা আত্মায় ও সত্যে পিতা ঈশ্বরের উপাসনা করবে৷ পিতা ঈশ্বরও এইরকম উপাসনাকারীদেরই চান৷ 24 ঈশ্বর আত্মা, যাঁরা তাঁর উপাসনা করে তাদেরকে আত্মায় ও সত্যে উপাসনা করতে হবে৷’ 25 তখন সেই স্ত্রীলোকটি তাঁকে বলল, ‘আমি জানি, মশীহ আসছেন৷ মশীহকে তারা খ্রীষ্ট বলে৷ যখন তিনি আসবেন, তখন আমাদের সব কিছু জানাবেন৷’ 26 যীশু তাকে বললেন, ‘তোমার সঙ্গে য়ে কথা বলছে আমিই সেই মশীহ৷’ 27 সেই সময় তাঁর শিষ্যরা ফিরে এলেন৷ একজন স্ত্রীলোকের সঙ্গে যীশুকে কথা বলতে দেখে তাঁরা আশ্চর্য হয়ে গেলেন৷ তবু কেউ তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন না, ‘আপনি কি চাইছেন?’ বা ‘আপনি কি জন্য ওর সঙ্গে কথা বলছেন?’ 28 সেই স্ত্রীলোকটি তখন তার কলসী ফেলে রেখে গ্রামে গেল, আর লোকদের বলল, 29 ‘তোমরা এস, একজন লোককে দেখ, আমি যা কিছু করেছি, তিনি আমাকে সে সব বলে দিলেন৷ তিনিই কি সেই মশীহ নন?’ 30 তখন লোকেরা শহর থেকে বের হয়ে যীশুর কাছে আসতে লাগল৷ 31 এরই মাঝে তার শিষ্যরা তাঁকে অনুরোধ করে বললেন, ‘রব্বি (গুরু), আপনি কিছু খেয়ে নিন!’ 32 কিন্তু তিনি তাঁদের বললেন, ‘আমার কাছে এমন খাবার আছে যার কথা তোমরা কিছুই জান না৷’ 33 তখন তাঁর শিষ্যরা পরস্পর বলাবলি করতে লাগল, ‘তাহলে কি কেউ তাঁকে কিছু খাবার এনে দিয়েছে?’ 34 তখন যীশু তাঁদের বললেন, ‘যিনি আমায় পাঠিয়েছেন, তাঁর ইচ্ছা পালন করা ও তাঁর য়ে কাজ তিনি আমায় করতে দিয়েছেন তা সম্পন্ন করাই হল আমার খাবার৷ 35 তোমরা প্রায়ই বলে থাক, ‘আর চার মাস বাকী আছে, তারপরই ফসল কাটার সময় হবে৷’ কিন্তু তোমরা চোখ মেলে একবার ক্ষেতের দিকে তাকিয়ে দেখ, ফসল কাটবার মতো সময় হয়েছে৷ 36 য়ে ফসল কাটছে সে এখনই তার মজুরী পাচ্ছে, আর সে তা করছে অনন্ত জীবন লাভের জন্য৷ তার ফলে বীজ য়ে বোনে আর ফসল য়ে কাটে উভয়েই একই সঙ্গে আনন্দিত হয়৷ 37 এই প্রবাদ বাক্যটি সত্য য়ে, ‘একজন বীজ বোনে আর অন্যজন কাটে৷’ 38 আমি তোমাদের এমন ফসল কাটতে পাঠিয়েছি, যার জন্য তোমরা কোন পরিশ্রম করনি৷ তার জন্য অন্যরা খেটেছে আর তোমরা তাদের কাজের ফসল তুলছ৷’ 39 সেই শহরের অনেক শমরীয় তাঁর ওপর বিশ্বাস করল, কারণ সেই স্ত্রীলোকটি সাক্ষ্য দিচ্ছিল, ‘আমি যা যা করেছি সবই তিনি আমাকে বলে দিয়েছেন৷’ 40 শমরীয়রা তাঁর কাছে এসে যীশুকে তাদের সঙ্গে থাকতে অনুরোধ করল৷ তখন তিনি দুদিন সেখানে থাকলেন৷ 41 আরও অনেক লোক তাঁর কথা শুনে তাঁর ওপর বিশ্বাস করল৷ 42 তারা সেই স্ত্রীলোকটিকে বলল, ‘প্রথমে তোমার কথা শুনে আমরা বিশ্বাস করেছিলাম, কিন্তু এখন আমরা নিজেরা তাঁর কথা শুনে বিশ্বাস করেছি ও বুঝতে পেরেছি য়ে ইনি সত্যিই জগতের উদ্ধারকর্তা৷’ 43 দুদিন পর তিনি সেখান থেকে গালীলে চলে গেলেন৷ 44 কারণ যীশু নিজেই বলেছিলেন য়ে একজন ভাববাদী কখনও তাঁর নিজের দেশে সম্মান পান না৷ 45 তাই তিনি যখন গালীলে এলেন, গালীলের লোকেরা তাঁকে সাদরে গ্রহণ করল৷ জেরুশালেমে নিস্তারপর্বের সময় তিনি যা যা করেছিলেন তা তারা দেখেছিল, কারণ তারাও সেই পর্বের সময় সেখানে গিয়েছিল৷ 46 পরে যীশু আবার গালীলের কান্না নগরে গেলেন৷ এখানেই তিনি জলকে দ্রাক্ষারসে পরিণত করেছিলেন৷ কফরনাহূম শহরে একজন রাজ-কর্মচারীর ছেলে খুবই অসুস্থ ছিল৷ 47 তিনি যখন শুনলেন য়ে যীশু যিহূদিযা থেকে গালীলে এসেছেন, তখন যীশুর কাছে গিয়ে তাঁকে মিনতি করে বললেন, তিনি য়েন কফরনাহূমে গিয়ে তার ছেলেকে সুস্থ করেন, কারণ তার ছেলে তখন মৃত্যুশয়্য়ায় ছিল৷ 48 যীশু তাকে বললেন, ‘তোমরা কেউই কোন অলৌকিক চিহ্ন ও বিস্ময়কর কাজের নিদর্শন না পেলে আমার উপর বিশ্বাস করবে না৷’ 49 সেই রাজ-কর্মচারী তাঁকে বললেন, ‘মহাশয়, আমার ছেলেটি মারা যাবার আগে অনুগ্রহ করে আসুন!’ 50 যীশু তাঁকে বললেন, ‘বাড়ি যাও, তোমার ছেলে বাঁচল৷’ যীশু তাঁকে য়ে কথা বললেন, সে কথা তিনি বিশ্বাস করে বাড়ি চলে গেলেন৷ 51 তিনি যখন বাড়ি ফিরে যাচ্ছিলেন তখন পথে তাঁর চাকরেরা তাঁর সঙ্গে দেখা করে বলল, ‘আপনার ছেলে ভাল হয়ে গেছে৷’ 52 তিনি তাদের জিজ্ঞেস করলেন, ‘সে কখন ভাল হয়েছে?’তারা বলল, ‘গতকাল দুপুর একটার সময় তার জ্বর ছেড়েছে৷’ 53 ছেলেটির বাবা বুঝতে পারলেন য়ে ঠিক সেই সময়ই যীশু তাকে বলেছিলেন, ‘তোমার ছেলে বাঁচল৷’ তখন সেই রাজ-কর্মচারী ও তাঁর পরিবারের সকলে যীশুর ওপর বিশ্বাস করলেন৷ 54 যিহূদিযা থেকে গালীলে আসার পর যীশু এই দ্বিতীয় বার অলৌকিক কাজ করলেন৷
John 5:1 এরপর ইহুদীদের এক বিশেষ পর্বের সময় এলে যীশু জেরুশালেমে গেলেন৷ 2 জেরুশালেমে মেষ ফটকের কাছে একটা পুকুর ছিল৷ ইব্রীয়তে সেই পুকুরটিকে ‘বৈথেসদা’ বলত৷ এই পুকুরটির পাঁচটি চাঁদনী ঘাট ছিল; 3 ঘাটের সেইসব চাতালে অনেক অসুস্থ লোক শুয়ে থাকত; তাদের মধ্যে কেউ কেউ অন্ধ, কেউ কেউ খোঁড়া এমনকি পঙ্গু রোগীও থাকত৷ 4 5 সেখানে একজন লোক ছিল য়ে আটত্রিশ বছর ধরে রোগে ভুগছিল৷ 6 যীশু তাকে সেখানে পড়ে থাকতে দেখলেন৷ তিনি জানতেন য়ে সে দীর্ঘদিন ধরে রোগে ভুগছে৷ তাই তাকে বললেন, ‘তুমি কি সুস্থ হতে চাও?’ 7 সেই অসুস্থ লোকটি বলল, ‘মহাশয় আমার এমন কোন লোক নেই, জল কেঁপে ওঠার সময় য়ে আমাকে পুকুরে নামিয়ে দেবে৷ আমি ওখানে পৌঁছানোর আগেই কেউ না কেউ আমার আগে পুকুরে নেমে পড়ে৷’ 8 যীশু তাকে বললেন, ‘ওঠ! তোমার বিছানা গুটিয়ে নাও, হেঁটে বেড়াও৷’ 9 লোকটি সঙ্গে সঙ্গে ভাল হয়ে গেল, আর তার বিছানা তুলে নিয়ে হাঁটতে থাকল৷এ ঘটনা বিশ্রামবারে ঘটল, 10 তাই য়ে লোকটি আরোগ্য লাভ করেছিল তাকে ইহুদীরা বলল, ‘আজ বিশ্রামবার, এভাবে তোমার বিছানা বয়ে বেড়ানো বিধি-ব্যবস্থা বিরুদ্ধ কাজ হচ্ছে৷’ 11 সে তখন তাদের বলল, ‘যিনি আমাকে সারিয়ে তুলেছেন তিনি বলেছিলেন, ‘তোমার বিছানা তুলে নিয়ে হেঁটে বেড়াও৷” 12 তারা সেই লোকটিকে জিজ্ঞেস করল, ‘কে তোমাকে বলেছে য়ে তোমার বিছানা গুটিয়ে নিয়ে হেঁটে বেড়াও?’ 13 কিন্তু য়ে লোকটি আরোগ্যলাভ করেছিল সে জানত না, তিনি কে৷ কারণ সেই জায়গায় অনেক লোক ভীড় করেছিল এবং যীশু সেখান থেকে চলে গিয়েছিলেন৷ 14 পরে যীশু মন্দিরের মধ্যে সেই লোকটিকে দেখতে পেয়ে তাকে বললেন, ‘দেখ, তুমি এখন সুস্থ হয়ে গেছ; আর পাপ কোরো না, যাতে তোমার আরও খারাপ কিছু না হয়!’ 15 এরপর সেই লোকটি ইহুদীদের কাছে গিয়ে বলল য়ে, যীশুই তাকে আরোগ্য দান করেছেন৷ 16 আর এই কারণেই ইহুদীরা যীশুকে নির্য়াতন করতে শুরু করল; কারণ তিনি বিশ্রামবারে এইসব কাজ করছিলেন৷ 17 তখন যীশু তাদের বললেন, ‘আমার পিতা সব সময় কাজ করে চলেছেন, তাই আমিও কাজ করি৷’ 18 তখন ইহুদীরা যীশুকে হত্যা করার জন্য আরো দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হয়ে উঠল৷ তারা বলল, ‘তিনি য়ে কেবল বিশ্রামবারে বিধি-ব্যবস্থার বিরুদ্ধ কাজ করছিলেন তাই নয়, তিনি ঈশ্বরকে তাঁর পিতা বলে সম্বোধন করেছিলেন৷ আর এইভাবে তিনি নিজেকে ঈশ্বরের সমান জাহির করছিলেন৷ 19 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি; পুত্র নিজে থেকে কিছু করতে পারেন না৷ পিতাকে যা করতে দেখেন কেবল তাই করতে পারেন৷ পিতা যা কিছু করেন পুত্রও তাই করেন৷ 20 পিতা পুত্রকে ভালবাসেন, আর পিতা যা কিছু করেন তা পুত্রকে দেখান আর এর থেকে আরো মহান মহান কাজ পুত্রকে তিনি দেখাবেন, তখন তোমরা আশ্চর্য হয়ে যাবে৷ 21 পিতা মৃতদের জীবন দান করেন, তেমনি পুত্রও যাকে ইচ্ছা করেন তাকে জীবন দেন৷ 22 পিতা কারও বিচার করেন না, কিন্তু সমস্ত বিচারের ভার তিনি পুত্রকে দিয়েছেন৷ 23 যাতে পিতাকে য়েমন সমস্ত লোক সম্মান করে তেমনি পুত্রকেও সম্মান করে৷ য়ে পুত্রকে সম্মান করে না, সে পিতাকেও সম্মান করে না, কারণ পিতাই সেইজন যিনি পুত্রকে পাঠিয়েছেন৷ 24 ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি; য়ে কেউ আমার কথা শোনে, আর যিনি আমায় পাঠিয়েছেন তাঁর ওপর বিশ্বাস করে সে অনন্ত জীবন লাভ করে এবং সে অপরাধী বলে বিবেচিত হবে না৷ সে মৃত্যু থেকে জীবনে উত্তীর্ণ হয়ে গেছে৷ 25 আমি তোমাদের সত্যি বলছি সময় আসছে; বলতে কি এসে গেছে, যখন মৃতেরা ঈশ্বরের পুত্রের রব শুনবে, আর যাঁরা শুনবে তারা বাঁচবে৷ 26 পিতার নিজের য়েমন জীবন দান করার ক্ষমতা রয়েছে ঠিক তেমনই তিনি তাঁর পুত্রকেও জীবন দান করার ক্ষমতা দিয়েছেন৷ 27 এবং পিতা সেই পুত্রের হাতেই সমস্ত বিচারের অধিকার দিয়েছেন, কারণ এই পুত্রই মানবপুত্র৷ 28 এই কথা শুনে তোমরা অবাক হযো না, কারণ সময় আসছে, যাঁরা কবরের মধ্যে আছে তারা সবাই মানবপুত্রের রব শুনবে৷ 29 তারপর তারা তাদের কবর থেকে বাইরে আসবে৷ যাঁরা সত্ কর্ম করেছে তারা উত্থিত হবে ও অনন্ত জীবন লাভ করবে৷ আর যাঁরা মন্দ কাজ করেছিল তারা পুনরুত্থিত হবে এবং দোষী বলে বিবেচিত হবে৷ 30 ‘আমি নিজের থেকে কিছুই করতে পারি না৷ আমি (ঈশ্বরের কাছ থেকে) য়েমন শুনি তেমনি বিচার করি; আর আমি যা বিচার করি তা ন্যায়, কারণ আমি আমার ইচ্ছামতো কাজ করি না, বরং যিনি (ঈশ্বর) আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁরই ইচ্ছাপূরণ করার চেষ্টা করি৷ 31 ‘আমি যদি আমার নিজের পক্ষে সাক্ষ্য দিই তবে আমার সেই সাক্ষ্য সত্য বলে গৃহীত হবে না৷ 32 অন্য একজন আছেন যিনি আমার পক্ষে সাক্ষ্য দেন এবং আমি জানি য়ে সাক্ষ্যই তিনি দেন না কেন তা সত্য৷ 33 ‘তোমরা সকলেই য়োহনের কাছে লোক পাঠিয়েছ আর তিনি সত্যের পক্ষে সাক্ষ্য দিয়েছেন৷ 34 কিন্তু আমি কোন মানুষের সাক্ষ্যের ওপর নির্ভর করি না৷ তবু আমি এসব কথা বলছি, যাতে তোমরা উদ্ধার পেতে পার৷ 35 য়োহন ছিলেন সেই প্রদীপের মতো যা জ্বলে এবং আলো দেয়; আর তোমরা কিছু সময়ের জন্য তার সেই আলো উপভোগ করে আনন্দিত হয়েছিল৷ 36 ‘কিন্তু য়োহনের সাক্ষ্য থেকে আরো বড় সাক্ষ্য আমার আছে; কারণ পিতা য়ে সব কাজ আমায় করতে দিয়েছেন, সে সব কাজ আমিই করছি, আর সেই সব কাজই প্রমাণ করছে য়ে পিতা আমায় পাঠিয়েছেন৷ 37 পিতা, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন এমনকি আমার পক্ষে সাক্ষ্য দিয়ে গেছেন, তোমরা কেউই কখনও তাঁর রব শোননি, তাঁর আকারও দেখনি৷ 38 আর তাঁর শিক্ষাও তোমাদের অন্তরে নেই, কারণ ঈশ্বর যাঁকে পাঠিয়েছেন, তোমরা তাঁকে বিশ্বাস করো না৷ 39 তোমরা সকলেই খুব মনোয়োগ সহকারে শাস্ত্রগুলি পড়, কারণ তোমরা মনে করো সেগুলির মধ্য দিয়েই তোমরা অনন্ত জীবন লাভ করবে আর সেই শাস্ত্রগুলিই আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দিচ্ছে৷ 40 তবু তোমরা সেই জীবন লাভ করতে আমার কাছে আসতে চাও না৷ 41 ‘মানুষের প্রশংসা আমি গ্রহণ করি না৷ 42 আমি তোমাদের সকলকেই জানি আর এও জানি য়ে তোমরা ঈশ্বরকে ভালোবাসো না৷ 43 আমি আমার পিতার নামে এসেছি, তবু তোমরা আমায় গ্রহণ করো না; কিন্তু অন্য কেউ যদি তার নিজের নামে আসে তাকে তোমরা গ্রহণ করবে৷ 44 তোমরা কিভাবে বিশ্বাস করতে পারো? তোমরা তো একজন অন্য জনের কাছ থেকে প্রশংসা পেতে চাও৷ আর য়ে প্রশংসা একমাত্র ঈশ্বরের কাছে থেকে আসে আর খোঁজ তোমরা করো না৷ 45 মনে করো না য়ে আমিই সেই ব্যক্তি য়ে পিতার কাছে তোমাদের ওপর দোষারোপ করব৷ তোমাদের সাহায্য করবেন বলে য়ে মোশির উপর তোমরা আশা রাখো তিনিই তোমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করবেন৷ 46 তোমরা যদি মোশিকে বিশ্বাস করতে তবে আমাকেও বিশ্বাস করতে, কারণ মোশি তা আমার বিষয়েই লিখেছেন৷ 47 তোমরা যখন মোশির লেখায় বিশ্বাস করো না, তখন আমি যা বলি তা কেমন করে বিশ্বাস করবে?’
John 6:1 এরপর যীশু গালীল হ্রদের অপর পারে গেলেন, এই হ্রদকে তিবিরিযাও বলে৷ 2 বহু লোক তাঁর পেছনে পেছনে চলতে লাগল, কারণ রোগীদের সুস্থ করতে তিনি য়ে সব অলৌকিক চিহ্ন করতেন তা তারা দেখেছিল৷ 3 যীশু এবং তাঁর শিষ্যরা পাহাড়ের উপরে গিয়ে সেখানে বসলেন৷ 4 সেই সময় ইহুদীদের নিস্তারপর্ব এগিয়ে আসছিল৷ 5 যীশু যখন দেখলেন বহু লোক তাঁর কাছে আসছে তখন তিনি ফিলিপকে বললেন, ‘এই লোকেদের খেতে দেবার জন্য আমরা কোথায় রুটি কিনতে পাব?’ 6 যীশু তাঁকে পরীক্ষা করবার জন্যই একথা বললেন, কারণ যীশু কি করবেন তা তিনি আগেই জানতেন৷ 7 ফিলিপ যীশুকে বললেন, ‘প্রত্যেকের হাতে এক টুকরো করে রুটি দিতে গেলে সারা মাসের রোজগারে রুটি কিনলেও তা যথেষ্ট হবে না৷’ 8 যীশুর শিষ্যদের মধ্যে আর একজন, যার নাম আন্দরিয়, ইনি শিমোন পিতরের ভাই, তিনি যীশুকে বললেন, 9 ‘এখানে একটা ছোট ছেলে আছে, যার কাছে যবের পাঁচটা রুটি আর ছোট দুটো মাছ আছে, কিন্তু এত লোকের জন্য নিশ্চয়ই সেগুলি যথেষ্ট হবে না৷’ 10 যীশু বললেন, ‘লোকদের বসিয়ে দাও৷’ সেই জায়গায় অনেক ঘাস ছিল৷ তখন সব লোকেরা বসে গেল৷ সেখানে প্রায় পাঁচ হাজার পুরুষ ছিল৷ 11 এরপর যীশু সেই রুটি কখানা নিয়ে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিলেন এবং যাঁরা সেখানে বসেছিল তাদের সেগুলি ভাগ করে দিলেন৷ আর তিনি মাছও ভাগ করে দিলেন৷ য়ে যত চাইল তত পেল৷ 12 তারা পরিতৃপ্ত হলে, যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, ‘য়ে সব টুকরো টাকরা পড়ে আছে তা জড়ো কর, য়েন কোন কিছু নষ্ট না হয়৷ 13 তখন তাঁরা সে সব জড়ো করলেন, লোকেরা খাবার পরে যবের সেই পাঁচ খানা রুটির টুকরো-টাকরা যা পড়ে ছিল শিষ্যেরা তা জড়ো করলে বারো টুকরী ভর্তি হয়ে গেল৷ 14 লোকেরা যীশুকে এই অলৌকিক চিহ্ন করতে দেখে বলতে লাগল, ‘জগতে য়াঁর আগমনের কথা আছে ইনি নিশ্চয়ই সেই ভাববাদী৷’ 15 এতে যীশু বুঝলেন লোকেরা তাঁকে রাজা করবার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে৷ তাই তিনি তাদের ছেড়ে একাই সেই পাহাড়ে উঠে গেলেন৷ 16 সন্ধ্যা হলে যীশুর শিষ্যরা হ্রদের ধারে নেমে গেলেন৷ 17 তাঁরা একটা নৌকায় উঠে হ্রদের অপর পারে কফরনাহূমের দিকে য়েতে থাকলেন৷ তখন অন্ধকার হয়ে গিয়েছিল, আর যীশু তখনও তাদের কাছে আসেন নি৷ 18 আর খুব জোরে ঝোড়ো বাতাস বইছিল, ফলে ্ব্রদে বড় বড় ঢেউ উঠছিল৷ 19 এরই মধ্যে তিন চার মাইল নৌকা বেয়ে যাবার পর যীশুর শিষ্যরা দেখলেন, যীশু জলের ওপর দিয়ে হেঁটে আসছেন৷ তিনি যখন নৌকার কাছাকাছি এলেন, তখন শিষ্যরা খুব ভয় পেয়ে গেলেন৷ 20 কিন্তু তিনি তাঁদের বললেন, ‘এই য়ে আমি; ভয় পেও না৷’ 21 তখন তাঁরা খুশী হয়ে যীশুকে নৌকাতে তুলে নিলেন৷ আর তাঁরা য়েখানে যাচ্ছিলেন নৌকা তখনই সেখানে পৌঁছে গেল৷ 22 হ্রদের অপর পারে য়ে জনতা ছিল, পরের দিন তারা বুঝতে পারল য়ে কেবলমাত্র একটা নৌকাই সেখানে ছিল আর যীশু তাঁর শিষ্যদের নিয়ে তাতে ওঠেন নি৷ তাঁর শিষ্যরা নিজেরাই চলে গিয়েছিলেন৷ 23 কিন্তু য়েখানে প্রভুকে ধন্যবাদ দেওযার পর লোকেরা রুটি খেয়েছিল, সেইখানে তখন তিবিরিযা থেকে কয়েকটা নৌকা এল৷ 24 কিন্তু যখন লোকেরা দেখল য়ে যীশু বা তাঁর শিষ্যরা কেউই সেখানে নেই, তখন তারা নৌকায় চড়ে যীশুর খোঁজে কফরনাহূমে চলে গেল৷ 25 তারা হ্রদের অপর পারে যীশুকে দেখতে পেয়ে বলল, ‘গুরু, আপনি এখানে কখন এসেছেন?’ 26 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমরা অলৌকিক চিহ্ন দেখেছ বলে য়ে আমার খোঁজ করছ তা নয়; কিন্তু তোমরা ়রুটি খেয়ে তৃপ্ত হয়েছিলে বলেই আমার খোঁজ করছ৷ 27 খাদ্যের মতো নশ্বর বস্তুর জন্য কাজ কোরো না; কিন্তু য়ে খাদ্য প্রকৃতই স্থাযী ও যা অনন্ত জীবন দান করে, তার জন্য কাজ কর; যা মানবপুত্র তোমাদের দেবেন৷ কারণ পিতা ঈশ্বর তোমাদের দেখিয়েছেন য়ে তিনি মানবপুত্রের সঙ্গেই আছেন৷’ 28 তারা তাঁকে বলল, ‘ঈশ্বরের কাজ করার জন্য আমাদের কি করতে হবে?’ 29 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, ‘ঈশ্বর যাঁকে পাঠিয়েছেন তোমরা য়েন তাঁকে বিশ্বাস কর৷ এই হল ঈশ্বরের কাজ৷’ 30 তারা তাঁকে বলল, ‘আপনি কি এমন অলৌকিক কাজ করছেন, যা দেখে আমরা জানতে পারব য়ে আপনিই সেই ব্যক্তি যাঁকে ঈশ্বর পাঠিয়েছেন ও আপনার ওপর বিশ্বাস করব? 31 আমাদের পিতৃপুরুষেরা মরুপ্রান্তরে মান্না খেয়েছিল৷ য়েমন শাস্ত্রে লেখা আছে: ‘তিনি তাদের খাবার জন্য স্বর্গ থেকে রুটি দিলেন৷” 32 তখন যীশু তাদের বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি; মোশি স্বর্গ থেকে সেই রুটি তোমাদের দেন নি, কিন্তু আমার পিতাই স্বর্গ থেকে সত্যিকারের রুটি তোমাদের দেন৷ 33 স্বর্গ থেকে নেমে এসে যিনি জগত সংসার জীবন দান করেন তিনিই ঈশ্বরের দেওযা ়রুটি৷’ 34 তারা তাঁকে বলল, ‘মহাশয়, সেই রুটি সব সময় আমাদের দিন৷’ 35 যীশু তাদের বললেন, ‘আমিই সেই রুটি যা জীবন দান করে৷ য়ে কেউ আমার কাছে আসে সে কখনও ক্ষুধার্ত হবে না, কখনও তার পিপাসা পাবে না৷ 36 কিন্তু আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমরা আমায় দেখেছ অথচ আমায় বিশ্বাস কর না৷ 37 পিতা আমাকে যাদের দেন, তারা প্রত্যেকেই আমার কাছে আসবে৷ আর যাঁরা আমার কাছে আসে, আমি তাদের কখনই ফিরিয়ে দেব না৷ 38 কারণ আমি আমার খুশী মত কাজ করতে স্বর্গ থেকে নেমে আসি নি, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁর ইচ্ছা পূর্ণ করতে এসেছি৷ 39 যিনি আমায় পাঠিয়েছেন তাঁর ইচ্ছা এই য়ে যাদের তিনি আমায় দিয়েছেন তাদের একজনকেও য়েন আমি না হারাই; বরং শেষ দিনে য়েন তাদের সকলকে আমি উত্থিত করি৷ 40 আমার পিতা এই চান, য়ে কেউ তাঁর পুত্রকে দেখে ও তাতে বিশ্বাস করে, সে য়েন অনন্ত জীবন লাভ করে; আর আমিই তাকে শেষ দিনে ওঠাব৷’ 41 তখন ইহুদীরা যীশুর সম্পর্কে গুঞ্জন শুরু করল, কারণ তিনি বলেছিলেন, ‘আমিই সেই রুটি যা স্বর্গ থেকে নেমে এসেছে৷’ 42 তারা বলল, ‘তিনি কি য়োষেফের ছেলে নন? আমরা কি এর বাবা মাকে চিনি না? তাহলে এখন কেমন করে তিনি বলছেন, ‘আমি স্বর্গ থেকে নেমে এসেছি?’ 43 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, ‘নিজেদের মধ্যে ওসব বচসা বন্ধ কর৷ 44 যিনি আমায় পাঠিয়েছেন সেই পিতা না আনলে কেউই আমার কাছে আসতে পারে না; আর আমিই তাকে শেষ দিনে জীবিত করে তুলব৷ 45 ভাববাদীদের পুস্তকে লেখা আছে: ‘তারা সকলেই ঈশ্বরের কাছে শিক্ষা লাভ করবে৷’য়ে কেউ পিতার কাছে শুনে শিক্ষা পেয়েছে সেই আমার কাছে আসে৷ 46 আমি বলছি না য়ে, কেউ পিতাকে দেখেছেন৷ কেবলমাত্র যিনি পিতার কাছ থেকে এসেছেন তিনিই পিতাকে দেখেছেন৷ 47 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, য়ে কেউ বিশ্বাস করেছে সেই অনন্ত জীবন পেয়েছে৷ 48 আমিই সেই রুটি যা জীবন দেয়৷ 49 তোমাদের পিতৃপুরুষেরা মরুপ্রান্তরে মান্না খেয়েছিল, কিন্তু তবু তারা মারা গিয়েছিল৷ 50 এ সেই রুটি যা স্বর্গ থেকে নেমে আসে, আর কেউ যদি তা খায়, তবে সে মরবে না৷ 51 আমিই সেই জীবন্ত রুটি যা স্বর্গ থেকে নেমে এসেছে৷ কেউ যদি এই রুটি খায় তবে সে চিরজীবি হবে৷ য়ে রুটি আমি দেব তা হল আমার দেহের মাংস৷ তা আমি দিই যাতে জগত জীবন পায়৷’ 52 এই কথা শুনে ইহুদীদের মধ্যে তর্ক বেধে গেল৷ তারা বলতে লাগল, ‘এই লোকটা কেমন করে তার দেহের মাংস আমাদের খেতে দিতে পারে?’ 53 যীশু তাদের বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যিই বলছি; তোমরা যদি মানবপুত্রের মাংস না খাও ও তাঁর রক্ত পান না কর, তাহলে তোমাদের মধ্যে জীবন নেই৷ 54 য়ে কেউ আমার মাংস খায় ও আমার রক্ত পান করে সে অনন্ত জীবন পায়, আর শেষ দিনে আমি তাকে ওঠাবো৷ 55 আমার মাংসই প্রকৃত খাদ্য় ও আমার রক্তই প্রকৃত পানীয়৷ 56 য়ে আমার মাংস খায় ও আমার রক্ত পান করে সে আমার মধ্যে থাকে, আর আমিও তার মধ্যে থাকি৷ 57 য়েমন জীবন্ত পিতা আমাকে পাঠিয়েছেন, আর পিতার জন্য আমি জীবিত আছি, ঠিক সেরকম য়ে আমাকে খায় সে আমার দরুন জীবিত থাকবে৷ 58 এ সেই রুটি যা স্বর্গ থেকে নেমে এসেছিল৷ এটা তেমন রুটি নয় যা তোমাদের পিতৃপুরুষেরা খেয়েছিল এবং তা সত্ত্বেও পরে তারা সকলে মারা গিয়েছিল৷ এই রুটি য়ে খায় সে চিরজীবি হবে৷’ 59 কফরনাহূমের সমাজ-গৃহে শিক্ষা দেবার সময় যীশু এই সব কথা বললেন৷ 60 যীশুর শিষ্যদের মধ্যে অনেকে তাঁর এই কথা শুনে বলল, ‘এ বড়ই কঠিন কথা; কে এ গ্রহণ করতে পারে?’ 61 যীশু অন্তরে টের পেলেন য়ে তাঁর শিষ্যরা এই বিষয় নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করছে৷ তাই তিনি তাদের বললেন, ‘এই শিক্ষায় কি তোমরা ধাক্কা পেয়েছ? 62 তবে মানবপুত্র আগে য়েখানে ছিলেন উর্দ্ধে সেখানে তাঁকে ফিরে য়েতে দেখলে তোমরা কি বলবে? 63 আত্মাই জীবন দান করে, রক্ত মাংসের শরীর কোন উপকারে আসে না৷ আমি তোমাদের সকলকে য়ে সব কথা বলেছি তা হল আধ্যাত্মিক আর তাই জীবন দান করে৷ 64 কিন্তু তোমাদের মধ্যে এমন কিছু লোক আছে যাঁরা বিশ্বাস করে না৷’ কারণ যীশু শুরু থেকেই জানতেন কে কে তাঁকে বিশ্বাস করে না, আর কেই বা তাঁকে শত্রুর হাতে ধরিয়ে দেবে৷ 65 তাই তিনি বললেন, ‘এজন্য আমি তোমাদের বলেছি, ‘পিতা ইচ্ছা না করলে কেউই আমার কাছে আসতে পারে না৷” 66 এই কারণেই তাঁর শিষ্যদের মধ্যে অনেকে পিছিয়ে গেল, তাঁর সঙ্গে চলাফেরা বন্ধ করে দিল৷ 67 তখন যীশু সেই বারোজন প্রেরিতকে বললেন, ‘তোমরাও কি চলে য়েতে চাইছ?’ 68 শিমোন পিতর বললেন, ‘প্রভু, আমরা কার কাছে যাব? আপনার কাছে সেই বাণী আছে যা অনন্ত জীবন দান করে৷ 69 আমরা বিশ্বাস করি ও জানি য়ে আপনিই সেই পবিত্র একজন, যিনি ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছেন৷’ 70 এর উত্তরে যীশু তাঁদের বললেন, ‘আমি কি তোমাদের বারোজনকে মনোনীত করি নি? তবু তোমাদের মধ্যে একজন দিযাবল আছে৷’ 71 তিনি শিমোন ঈষ্করিযোতের ছেলে যিহূদার বিষয়ে বলছিলেন, কারণ যিহূদা সেই বারো জনের মধ্যে একজন হলেও পরে যীশুকে শত্রুর হাতে তুলে দেবে৷
John 7:1 এরপর যীশু গালীলের চারদিকে ভ্রমণ করছিলেন৷ তিনি যিহূদিযায় ভ্রমণ করতে চাইলেন না, কারণ ইহুদীরা তাঁকে খুন করবার সুয়োগ খুঁজছিল৷ 2 এই সময় ইহুদীদের কুটিরবাস পর্বএগিয়ে আসছিল৷ 3 তখন তাঁর ভাইরা তাঁকে বলল, ‘তুমি এই জায়গা ছেড়ে যিহূদিযাতে ঐ উত্সবে যাও; যাতে তুমি য়ে সব অলৌকিক কাজ করছ তা তোমার শিষ্যরাও দেখতে পায়৷ 4 কারণ কেউ যদি প্রকাশ্যে নিজেকে তুলে ধরতে চায় তবে সে নিশ্চয়ই তার কাজ গোপন করবে না৷ তুমি যখন এত সব মহত্ কাজ করছ তখন নিজেকে জগতের কাছে প্রকাশ কর৷ য়েন সবাই তা দেখতে পায়৷’ 5 তাঁর ভাইরাও তাঁর ওপর বিশ্বাস করত না৷ 6 যীশু তাঁর ভাইদের বললেন, ‘আমার নিরূপিত সময় এখনও আসে নি; কিন্তু তোমাদের যাওযার জন্য য়ে কোন সময় সঠিক; এখনই তোমরা য়েতে পার৷ 7 জগত সংসার তোমাদের ঘৃণা করতে পারে না, কিন্তু আমাকে ঘৃণা করে৷ কারণ পৃথিবীর লোকেরা, যাঁরা মন্দ কাজ করে, সেই সব লোকেদের বিরুদ্ধে আমি সাক্ষ্য দিই৷ 8 তোমরা পর্বে যাও, আমি এখন এই উত্সবে যাচ্ছি না, কারণ আমার নিরূপিত সময় এখনও আসে নি৷’ 9 এই কথা বলার পর তিনি গালীলেই রয়ে গেলেন৷ 10 তাঁর ভাইরা উত্সবে চলে গেল, পরে তিনিও সেখানে গেলেন; কিন্তু তিনি প্রকাশ্যে সেই পর্বে না গিয়ে গোপনে সেখানে গেলেন৷ 11 ইহুদী নেতারা উত্সবে এসে তাঁর খোঁজ করতে লাগল৷ তারা বলাবলি করতে লাগল, ‘সেই লোকটা গেল কোথায়?’ 12 আর জনতার মধ্যে তাঁকে নিয়ে নানা রকম গুজব ছড়াতে লাগল৷ কেউ কেউ বলল, ‘আরে তিনি খুব ভালো লোক৷’ কিন্তু আবার অন্যরা বলল, ‘না, না, ও লোকদের ঠকাচ্ছে৷’ 13 কিন্তু ইহুদী নেতাদের ভয়ে তাঁর বিষয়ে প্রকাশ্যে কেউ কিছু বলতে চাইল না৷ 14 পর্বের আধা-আধি সময়ে যীশু মন্দিরে গিয়ে লোকদের মাঝে শিক্ষা দিতে লাগলেন৷ 15 ইহুদীরা এতে খুব আশ্চর্য হয়ে বলল, ‘এই লোক কোন কিছু অধ্যয়ন না করেই কি ভাবে এত সব জ্ঞান লাভ করল?’ 16 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, ‘আমি যা শিক্ষা দিই তা আমার নিজস্ব নয়৷ যিনি আমায় পাঠিয়েছেন এসব সেই ঈশ্বরের কাছ থেকে পাওযা৷ 17 যদি কেউ ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করতে চায় তাহলে সে জানবে আমি যা শিক্ষা দিই তা ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছে, না আমি নিজের থেকে এসব কথা বলছি৷ 18 যদি কেউ নিজের ভাবনার কথা নিজে বলে, তাহলে সে নিজেই নিজেকে সম্মানিত করতে চায়; কিন্তু য়ে তার প্রেরণ কর্তার গৌরব চায়, সেই লোক সত্যবাদী, তার মধ্যে কোন অসাধুতা নেই৷ 19 মোশি কি তোমাদের কাছে বিধি-ব্যবস্থা দেন নি? কিন্তু তোমরা কেউই সেই বিধি-ব্যবস্থা পালন কর না৷ তোমরা কেন আমাকে হত্যা করতে চাইছ?’ 20 জনতা উত্তর দিল, ‘তোমাকে ভূতে পেয়েছে, কে তোমাকে হত্যা করতে চাইছে?’ 21 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, ‘আমি একটা অলৌকিক কাজ করেছি, আর তোমরা সকলে আশ্চর্য হয়ে গেছ৷ 22 মোশিও তোমাদের সুন্নতের বিধি-ব্যবস্থা দিয়েছিলেন৷ যদিও মুলতঃ সেই বিধি-ব্যবস্থা মোশির নয় কিন্তু এই বিধি-ব্যবস্থা প্রাচীন পিতৃপুরুষদের কাছ থেকে এসেছে৷ আর তোমরা এমনকি বিশ্রামবারেও শিশুদের সুন্নত করে থাকো৷ 23 মোশির বিধি-ব্যবস্থা য়েন লঙঘন করা না হয়, এই যুক্তিতে বিশ্রামবারেও যদি কোন মানুষের সুন্নত করা চলে, তাহলে আমি বিশ্রামবারে একটা মানুষকে সম্পূর্ণ সুস্থ করেছি বলে তোমরা আমার ওপর এত ক্রুদ্ধ হয়েছ কেন? 24 বাহ্যিকভাবে কোন কিছু দেখেই তার বিচার করো না৷ যা সঠিক সেই হিসাবেই ন্যায় বিচার কর৷’ 25 তখন জেরুশালেমের লোকেদের মধ্যে কেউ কেউ বলল, ‘এই লোককেই না ইহুদী নেতারা হত্যা করতে চাইছে? 26 কিন্তু দেখ! এ তো প্রকাশ্যেই শিক্ষা দিচ্ছে; কিন্তু তারা তো এঁকে কিছুই বলছে না৷ এটা কি হতে পারে য়ে নেতারা সত্যিই জানে য়ে, ইনি সেই খ্রীষ্ট? 27 আমরা জানি ইনি কোথা থেকে এসেছেন; কিন্তু মশীহ যখন আসবেন তখন কেউ জানবে না তিনি কোথা থেকে এসেছেন৷’ 28 তখন যীশু মন্দিরে শিক্ষা দিতে দিতে বেশ চেঁচিয়ে বললেন, ‘তোমরা আমায় জান, আর আমি কোথা থেকে এসেছি তাও তোমরা জান৷ তবু বলছি, আমি নিজের থেকে আসি নি, তবে যিনি আমায় পাঠিয়েছেন তিনি সত্য; আর তোমরা তাঁকে জান না৷ 29 কিন্তু আমি তাঁকে জানি, কারণ তিনি আমায় পাঠিয়েছেন৷ আমি তাঁরই কাছ থেকে এসেছি৷’ 30 তখন তারা তাঁকে গ্রেপ্তার করার জন্য চেষ্টা করতে লাগল৷ তবু কেউ তাঁর গায়ে হাত দিতে সাহস করল না, কারণ তখনও তাঁর সময় আসে নি৷ 31 কিন্তু সেই জনতার মধ্যে থেকে অনেকেই তাঁর ওপর বিশ্বাস করল; আর বলল, ‘মশীহ এসে কি তাঁর চেয়েও বেশী অলৌকিক চিহ্ন করবেন?’ 32 ফরীশীরা শুনল য়ে সাধারণ লোক যীশুর বিষয়ে চুপি চুপি এই সব আলোচনা করছে৷ তখন প্রধান যাজকেরা ও ফরীশীরা যীশুকে ধরে আনবার জন্য মন্দিরের কয়েকজন পদাতিককে পাঠাল৷ 33 তখন যীশু বললেন, ‘আমি আর অল্প কিছুকাল তোমাদের সঙ্গে আছি; তারপর যিনি আমায় পাঠিয়েছেন তাঁর কাছে ফিরে যাব৷ 34 তোমরা আমার খোঁজ করবে, কিন্তু আমার খোঁজ পাবে না, কারণ আমি য়েখানে থাকব তোমরা সেখানে আসতে পারো না৷’ 35 ইহুদী নেতারা তখন পরস্পর বলাবলি করতে লাগল, ‘সে এখন কোথায় যাবে য়ে আমরা ওকে খুঁজলেও পাব না? গ্রীকদের শহরে য়ে সব ইহুদীরা বসবাস করছে, ও কি তাদের কাছে যাবে আর সেখানে গিয়ে গ্রীকদেব কাছে শিক্ষা দেবে? নিশ্চয়ই নয়৷ 36 ও য়ে কথা বলল তার মানে কি য়ে, ‘তোমরা আমার খোঁজ করবে কিন্তু আমায় পাবে না৷’ আর ‘আমি য়েখানে যাব, তোমরা সেখানে আসতে পার না?’ 37 পর্বের শেষ দিন, য়ে দিনটি বিশেষ দিন, সেই দিন যীশু উঠে দাঁড়িয়ে চেঁচিয়ে বললেন, ‘কারোর যদি পিপাসা পেয়ে থাকে তবে সে আমার কাছে এসে পান করুক৷ 38 শাস্ত্রে এ কথা বলে, য়ে আমার ওপর বিশ্বাস করে তার অন্তর থেকে জীবন্ত জলের নদী বইবে৷’ 39 যীশু পবিত্র আত্মা সম্পর্কে এই কথা বললেন, ‘সেই পবিত্র আত্মা তখনও দেওযা হয় নি, কারণ যীশু তখনও মহিমান্বিত হন নি; কিন্তু পরে যাঁরা যীশুকে বিশ্বাস করে তারা সেই আত্মা পাবে৷’ 40 সমবেত জনতা যখন এই কথা শুনল তখন তাদের মধ্যে কেউ কেউ বলল, ‘ইনি সত্যিই সেই ভাববাদী৷’ 41 অন্যরা বলল, ‘ইনি মশীহ (খ্রীষ্ট)৷’এ সত্ত্বেও কেউ কেউ বলল, ‘খ্রীষ্ট গালীলী থেকে আসবেন না৷ 42 শাস্ত্রে কি একথা লেখা নেই য়ে খ্রীষ্টকে দাযূদের বংশধর হতে হবে; আর দাযূদ য়ে বৈত্লেহম শহরে থাকতেন, তিনি সেখান থেকে আসবেন?’ 43 তাঁর জন্য এইভাবে লোকদের মধ্যে মতভেদের সৃষ্টি হল৷ 44 কেউ কেউ তাঁকে গ্রেপ্তার করতে চাইল; কিন্তু কেউ তাঁর গায়ে হাত দিতে সাহস করল না৷ 45 তখন মন্দিরের সেই পদাতিকরা, প্রধান যাজক ও ফরীশীদের কাছে ফিরে গেল৷ তাঁরা মন্দিরের সেই পদাতিককে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমরা তাঁকে ধরে আনলে না কেন?’ 46 পদাতিকরা বলল, ‘উনি য়ে সব কথা বলছিলেন কোন মানুষ কখনও সেই ধরণের কথা বলেনি!’ 47 তখন ফরীশীরা বললেন, ‘তাহলে তোমরাও কি ঠকে গেলে? 48 ফরীশী বা নেতাদের মধ্যে এমন কেউ কি ছিলেন যিনি তাঁর ওপর বিশ্বাস করেছেন? 49 কিন্তু এইসব লোকেরা বিধি-ব্যবস্থার কিছুই জানে না৷ তারা অভিশপ্ত এবং ঈশ্বরের কৃপা থেকে বঞ্চিত৷’ 50 তখন এই নেতাদের একজন, নীকদীম তাঁদের বললেন, এই নীকদীম ফরীশীদেরই মধ্যে একজন, ইনি আগে একবার যীশুর কাছে গিয়েছিলেন৷ 51 ‘কোন ব্যক্তির কথা না শুনে আমরা আমাদের বিধি-ব্যবস্থায় তার বিচার করতে পারি না৷ সে কি করেছে তা না জেনে আমরা তার বিচার করতে পারি না৷’ 52 এর উত্তরে তারা তাকে বলল, ‘তুমি নিশ্চয়ই গালীলী থেকে আসো নি৷ তাই না? শাস্ত্র পড়ে দেখো তাহলে জানবে য়ে গালীলী থেকে কোন ভাববাদীর আবির্ভাব হয় নি৷’ 53 এরপর ইহুদী নেতারা সেখান থেকে য়ে যার বাড়ি চলে গেলেন৷
John 8:1 এরপর যীশু সেখান থেকে জৈতুন পর্বতমালায় চলে গেলেন৷ 2 খুব ভোরে তিনি আবার মন্দিরে ফিরে গেলে লোকেরা আবার তাঁর কাছে এসে জড়ো হল, তখন তিনি সেখানে বসে তাদের কাছে শিক্ষা দিতে শুরু করলেন৷ 3 সেই সময় ব্যবস্থার শিক্ষকরা ও ফরীশীরা, ব্যভিচার করতে গিয়ে ধরা পড়েছে এমন একজন স্ত্রীলোককে তাঁর কাছে নিয়ে এল৷ তারা সেই স্ত্রীলোককে তাদের মাঝখানে দাঁড় করিয়ে যীশুকে বলল, 4 ‘গুরু, এই স্ত্রীলোকটি ব্যভিচার করার সময় হাতে নাতেই ধরা পড়েছে৷ 5 বিধি-ব্যবস্থার মধ্যে মোশি আমাদের বলছেন, এই ধরণের স্ত্রীলোককে য়েন আমরা পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলি৷ এখন আপনি এবিষয়ে কি বলবেন?’ 6 তাঁকে পরীক্ষা করার ছলেই তারা একথা বলছিল, যাতে তাঁর বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ তারা খুঁজে পায়৷ কিন্তু যীশু হেঁট হয়ে মাটিতে আঙ্গুল দিয়ে লিখতে লাগলেন৷ 7 ইহুদী নেতারা যখন বার বার তাঁকে জিজ্ঞেস করতে লাগল, তখন তিনি সোজা হয়ে বসলেন এবং বললেন, ‘তোমাদের মধ্যে য়ে নিস্পাপ সেই প্রথম একে পাথর মারুক৷’ 8 এরপর তিনি আবার হেঁট হয়ে আঙ্গুল দিয়ে মাটিতে লিখতে লাগলেন৷ 9 তারা ঐ কথা শোনার পর বুড়ো লোক থেকে শুরু করে সকলে এক এক করে সেখান থেকে চলে গেল৷ কেবল যীশু সেখানে একা থাকলেন আর সেই স্ত্রীলোকটি মাঝখানে দাঁড়িয়ে ছিল৷ 10 তখন যীশু মাথা তুলে সেই স্ত্রীলোকটিকে বললেন, ‘হে নারী, তারা সব কোথায়? কেউ কি তোমায় দোষী সাব্যস্ত করল না?’ 11 স্ত্রীলোকটি উত্তর দিল, ‘কেউ করে নি, মহাশয়৷’ তখন যীশু বললেন, ‘আমিও তোমায় দোষী করছি না, যাও এখন থেকে আর পাপ কোরো না৷’ 12 এরপর যীশু আবার লোকদের সাথে কথা বলতে শুরু করলেন এবং বললেন, ‘আমিই জগতের আলো৷ য়ে কেউ আমার অনুসারী হয় সে কখনও অন্ধকারে থাকবে না; কিন্তু সেই আলো পাবে যা জীবন দেয়৷’ 13 তখন ফরীশীরা তাঁকে বলল, ‘তুমি নিজেই নিজের বিষয়ে সাক্ষ্য দিচ্ছ৷ তোমার সাক্ষ্য গ্রাহ্য হবে না৷’ 14 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, ‘আমি যদি নিজের পক্ষে সাক্ষ্য দিই, তবু আমার সাক্ষ্য সত্য, কারণ আমি জানি আমি কোথা থেকে এসেছি, আর কোথায় বা যাচ্ছি; কিন্তু আমি কোথা থেকে এসেছি বা কোথায় যাচ্ছি তা তোমরা জানো না৷ 15 মানুষের বিচারবোধের মাপকাঠিতে তোমরা আমার বিচার করছ৷ আমি কারো বিচার করি না৷ 16 কিন্তু আমি যদি বিচার করি, তবে আমার বিচার সত্য, কারণ আমি একা নই৷ পিতা, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তিনি আমার সঙ্গেই আছেন৷ 17 তোমাদের নিয়মে লেখা আছে, যখন দুই ব্যক্তি একই সাক্ষ্য দেয় তখন তা সত্যি৷ 18 আমি নিজেই নিজের বিষয়ে সাক্ষ্য দিই৷ আর পিতা, যিনি আমায় পাঠিয়েছেন তিনিও আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দেন৷’ 19 তখন তারা তাঁকে জিজ্ঞেস করল, ‘তোমার পিতা কোথায়?’যীশু বললেন, ‘তোমরা না জানো আমাকে, না জানো আমার পিতাকে৷ তোমরা যদি আমাকে জানতে, তবে আমার পিতাকেও জানতে৷’ 20 মন্দিরের দানের বাক্সের কাছে দাঁড়িয়ে শিক্ষা দেবার সময় যীশু এইসব কথা বললেন৷ কিন্তু কেউ তাঁকে গ্রেপ্তার করল না, কারণ তখনও তাঁর নিরূপিত সময় আসে নি৷ 21 তিনি তাদের আর একবার বললেন, ‘আমি যাচ্ছি, আর তোমরা আমার খোঁজ করবে; কিন্তু তোমরা তোমাদের পাপেই মরবে৷ আমি য়েখানে যাচ্ছি তোমরা সেখানে আসতে পারবে না৷’ 22 তখন ইহুদীরা বলছিল, ‘তিনি কি আত্মহত্যা করতে যাচ্ছেন? কেন তিনি বললেন, ‘আমি য়েখানে যাচ্ছি তোমরা সেখানে আসতে পারবে না?” 23 যীশু তাদের বললেন, ‘তোমরা এই নিম্নলোকের আর আমি উর্দ্ধলোকের৷ তোমরা এজগতের, আমি এ জগতের নই৷ 24 তাই আমি তোমাদের বলছি, তোমরা তোমাদের পাপেই মরবে৷ তোমরা যদি বিশ্বাস না কর য়ে আমিই তিনি, তবে তোমরা তোমাদের পাপের জন্যই মরবে৷’ 25 তখন তারা জিজ্ঞেস করল, ‘তুমি কে?’যীশু তাদের বললেন, ‘আমি যা, তা তো শুরু থেকেই তোমাদের বলে আসছি৷ 26 তোমাদের বিষয়ে বলার ও বিচার করার অনেক কিছুই আমার আছে৷ যা হোক যিনি আমায় পাঠিয়েছেন তিনি সত্য৷ আর আমি তাঁর কাছ থেকে যা কিছু শুনি, পৃথিবীর মানুষের কাছে তাই বলি৷’ 27 তারা বুঝতে পারে নি য়ে, তিনি তাদের কাছে পিতার বিষয়ে বলছেন৷ 28 তখন যীশু তাদের বললেন, ‘যখন তোমরা মানবপুত্রকে উঁচুতে তুলবে, তখন জানবে য়ে আমিই তিনি এবং আমি নিজের থেকে কিছুই করি না৷ পিতা য়েমন আমায় শিখিয়েছেন, আমি সেরকমই বলছি৷ 29 আর যিনি আমায় পাঠিয়েছেন, তিনি আমার সঙ্গে আছেন৷ তিনি আমাকে একা ফেলে রাখেন নি, কারণ আমি সব সময় সন্তোষজনক কাজই করি৷’ 30 যীশু যখন এইসব কথা বললেন তখন অনেকেরই তাঁর ওপর বিশ্বাস হল৷ 31 ইহুদীদের মধ্যে যাঁরা তাঁর ওপর বিশ্বাস করল, তাদের উদ্দেশ্যে যীশু বললেন, ‘তোমরা যদি সকলে আমার শিক্ষা মান্য করে চল তবে তোমরা সকলেই আমার প্রকৃত শিষ্য৷ 32 তোমরা সত্যকে জানবে, আর সেই সত্য তোমাদের স্বাধীন করবে৷’ 33 তারা তাঁকে বলল, ‘আমরা অব্রাহামের বংশধর৷ আর আমরা কখনও কারোর দাসে পরিণত হই নি৷ আপনি কিভাবে বলছেন য়ে আমাদের স্বাধীন করা হবে?’ 34 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি-য়ে ক্রমাগত পাপ করে চলে, সে পাপের দাস৷ 35 কোন দাস পরিবারের স্থাযী সদস্য হয়ে থাকতে পারে না; কিন্তু পুত্র পরিবারে চিরকাল থাকে৷ 36 তাই পুত্র যদি তোমাদের স্বাধীন করে, তবে তোমরা প্রকৃতই স্বাধীন হবে৷ 37 আমি জানি তোমরা অব্রাহামের বংশধর; কিন্তু তোমরা আমাকে হত্যা করার চেষ্টা করছ, কারণ তোমরা আমার শিক্ষাগ্রহণ করো না৷ 38 আমি আমার পিতার কাছে যা দেখেছি সেই বিষয়েই বলে থাকি, আর তোমরা তোমাদের পিতার কাছ থেকে যা যা শুনেছ তাই তো করে থাক৷’ 39 এর জবাবে তারা তাঁকে বলল, ‘আমাদের পিতা অব্রাহাম৷’যীশু তাদের বললেন, ‘তোমরা যদি অব্রাহামের সন্তান হতে, তাহলে অব্রাহাম যা করেছেন তোমরাও তাই করতে; 40 কিন্তু এখন তোমরা আমায় হত্যা করতে চাইছ৷ আমি সেই লোক য়ে ঈশ্বরের কাছ থেকে সত্য শুনেছি এবং তোমাদের তা বলেছি৷ অব্রাহাম তো এরকম কাজ করেন নি৷ 41 তোমাদের পিতা য়ে কাজ করে, তোমরা তাই করো৷’তখন তারা তাঁকে বলল, ‘আমরা জারজ সন্তান নই৷ ঈশ্বর হচ্ছেন আমাদের একমাত্র পিতা৷’ 42 যীশু তাদের বললেন, ‘ঈশ্বর যদি তোমাদের পিতা হতেন, তাহলে তোমরা আমায় ভালবাসতে, কারণ আমি ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছি আর এখন তোমাদের মাঝে এখানে আছি৷ আমি নিজে থেকে আসিনি, ঈশ্বর আমায় পাঠিয়েছেন৷ 43 আমি যা বলি, তোমরা তা বুঝতে পারো না? কারণ তোমরা আমার কথা গ্রহণ করো না৷ 44 দিযাবল তোমাদের পিতা এবং তোমরা তার পুত্র৷ তোমরা তোমাদের পিতার ইচ্ছাই পূর্ণ করতে চাও৷ দিযাবল শুরু থেকেই খুনী; আর সত্যের পক্ষে সে কখনও দাঁড়ায় নি, কারণ তার মধ্যে তো সত্যের লেশমাত্র নেই৷ সে যখন মিথ্যা কথা বলে, তখন স্বাভাবিকভাবেই তার মধ্য থেকে তা বের হয়, কারণ সে মিথ্যাবাদী ও মিথ্যার পিতা৷ 45 আমি সত্য বলি বলে তোমরা আমায় বিশ্বাস করো না৷ 46 তোমাদের মধ্যে কে আমাকে পাপী বলে দোষী করতে পারে? আমি যখন সত্য বলছি তখন তোমরা কেন বিশ্বাস করছ না? 47 য়ে ঈশ্বরের লোক, সে ঈশ্বরের কথা শোনে৷ আর এই কারণেই তোমরা শুনতে চাও না, কারণ তোমরা ঈশ্বরের নও৷’ 48 এর উত্তরে ইহুদীরা বলল, ‘আমরা কি ঠিক বলিনি য়ে তুমি একজন শমরীয়, আর তোমার মধ্যে এক ভূত রয়েছে?’ 49 যীশু জবাব দিলেন, ‘দেখ, আমায় ভূতে গ্রাস করে নি, বরং আমি আমার পিতাকে সম্মান করি৷ কিন্তু তোমরা আমার অসম্মান করেছ৷ 50 আমি নিজের জন্য সম্মান চাইছি না৷ একজন আছেন যিনি আমার জন্য সম্মান চান, তিনিই বিচার করেন৷ 51 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, কেউ যদি আমার শিক্ষা অনুসারে চলে, সে কখনও মরবে না৷’ 52 ইহুদীরা তাঁকে বলল, ‘এখন আমরা বুঝেছি য়ে তোমায় ভূতে গ্রাস করেছে৷ অব্রাহাম ও ভাববাদীরা মারা গেছে আর তুমি বলছ, ‘যদি কেউ আমার শিক্ষা অনুসারে চলে, তবে সে মৃত্যুর আস্বাদ পাবে না৷’ 53 তুমি কি মনে কর য়ে তুমি আমাদের পূর্বপুরুষ অব্রাহামের চেয়ে মহান? অব্রাহাম মারা গেছেন, আর ভাববাদীরাও মারা গেছেন৷ তুমি নিজেকে কি মনে করছ?’ 54 এর উত্তরে যীশু বললেন, ‘আমি যদি নিজেকে সম্মানিত করি তবে সেই সম্মানের কোন মূল্য নেই৷ যিনি আমায় সম্মানিত করেন তিনি আমাদের পিতা, য়াঁর সম্পর্কে তোমরা বল, তিনি আমাদের ঈশ্বর৷’ 55 আর তোমরা তাঁকে জানো না, কিন্তু আমি তাঁকে জানি৷ আমি যদি বলি য়ে আমি তাঁকে জানি না, তাহলে আমি তোমাদেরই মতো মিথ্যাবাদী হয়ে যাবো৷ কিন্তু আমি তাঁকে অবশ্যই জানি, আর তিনি যা কিছু বলেন আমি সে সকল পালন করি৷ 56 তোমাদের পিতৃপুরুষ অব্রাহাম আমার আগমনের দিন দেখতে পাবেন বলে খুশী হয়েছিলেন৷ তিনি সেই দিন দেখে খুশী হয়েছিলেন৷’ 57 তখন ইহুদীরা তাঁকে বলল, ‘তোমার বয়স এখনও পঞ্চাশ বছর হয়নি আর তুমি বলছ য়ে তুমি অব্রাহামকে দেখেছ!’ 58 যীশু তাদের বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি৷ অব্রাহামের জন্মের আগে থেকেই আমি আছি৷’ 59 তখন তারা তাঁকে পাথর ছুঁড়ে মারবার জন্য পাথর তুলে নিল; কিন্তু যীশু নিজেকে লুকিয়ে ফেললেন ও মন্দির চত্বর ছেড়ে চলে গেলেন৷
John 9:1 যীশু পথে হাঁটছিলেন, সেই সময় তিনি একজন লোককে দেখতে পেলেন য়ে জন্ম থেকেই অন্ধ৷ 2 যীশুর অনুগামীরা তাঁকে জিজ্ঞেস করল, ‘গুরু, কার পাপে এ অন্ধ হয়ে জন্মেছে? এর পাপে অথবা এর বাবা-মার পাপে?’ 3 যীশু বললেন, ‘এই লোকটির বা এর বাবা-মার পাপের জন্য য়ে এ অন্ধ হয়ে জন্মেছে তা নয়, বরং এই ব্যক্তি অন্ধ হয়ে জন্মেছে যাতে আমি যখন তাকে সুস্থ করি, তখন লোকে ঈশ্বরের শক্তির প্রকাশ দেখতে পায়৷ 4 যতক্ষণ দিন আছে ততক্ষণ যিনি আমায় পাঠিয়েছেন তাঁর কাজ আমাদের করে য়েতে হবে৷ যখন রাত আসবে তখন আর কেউ কাজ করতে পারবে না৷ 5 আমি যতক্ষণ এই জগতে আছি, আমিই এই জগতের আলো৷’ 6 এই কথা বলার পর তিনি মাটিতে থুতু ফেললেন৷ আর মুখের সেই লালা দিয়ে মণ্ড তৈরী করে, তা অন্ধ লোকটির চোখে লাগিয়ে দিলেন৷ 7 এরপর যীশু সেই অন্ধ লোকটিকে বললেন, ‘শীলোহ সরোবরে গিয়ে ধুয়ে ফেল৷ (‘শীলোহ’ অনুবাদ করলে এই নামের অর্থ ‘প্রেরিত’৷)’ তখন সে গিয়ে ধুয়ে ফেলল আর দৃষ্টিশক্তি লাভ করে ফিরে এল৷ 8 তখন সেই লোকটির প্রতিবেশীরা ও যাঁরা তাকে ভিক্ষা করতে দেখত তারা বলল, ‘এ কি সেই লোক নয় য়ে বসে বসে ভিক্ষা করত?’ 9 কেউ কেউ বলল, ‘হ্যাঁ, সেই তো৷’ আবার অন্যরা বলল, ‘না, এই লোকটা তারই মতো দেখতে৷’ কিন্তু সে বলল, ‘আমি সেই একই লোক৷’ 10 তখন তারা তাকে বলল, ‘তুমি কি করে দৃষ্টিশক্তি লাভ করলে?’ 11 সে এর উত্তরে বলল, ‘যীশু নামের লোকটি মণ্ড তৈরী করে, আমার চোখে তা লাগিয়ে দিলেন, আর বললেন, ‘শীলোহ সরোবরে যাও ও তোমার চোখ ধুয়ে ফেল৷’ তখন আমি গেলাম ও ধুয়ে ফেললাম আর তখনই দৃষ্টিশক্তি লাভ করলাম৷” 12 তারা তাকে বলল, ‘সেই যীশু কোথায়?’সে বলল, ‘আমি জানি না৷’ 13 য়ে লোকটি আগে অন্ধ ছিল তাকে তারা ফরীশীদের কাছে নিয়ে গেল৷ 14 য়ে দিন যীশু মণ্ড তৈরী করে ঐ লোকটির চোখে লাগিয়ে তাকে দৃষ্টিশক্তি দান করেন, সে দিনটি ছিল বিশ্রামবার৷ 15 তাই ফরীশীরা আবার তাকে জিজ্ঞেস করল, ‘তুমি কিভাবে তোমার দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেলে?’লোকটি উত্তর দিল, ‘তিনি মণ্ড তৈরী করে আমার চোখে লাগিয়ে দিলেন, আমি চোখ ধুয়ে ফেলবার পর দেখতে পেলাম৷’ 16 ফরীশীদের মধ্যে কেউ কেউ বলল, ‘এই লোক ঈশ্বরের কাছ থেকে আসে নি, কারণ এ বিশ্রামবারের নিয়ম মানে না৷’আবার অন্যরা বলল, ‘একজন পাপী কিভাবে এই সব অলৌকিক কাজ করতে পারে?’ তাই এই নিয়ে তাদের মধ্যে মতভেদ দেখা দিল৷ 17 এরপর ইহুদী নেতারা অন্ধ লোকটিকে আবার জিজ্ঞেস করল, ‘য়ে লোকটি তোমার দৃষ্টিশক্তি দিয়েছে, তার বিষয়ে তুমি কি বল?’লোকটি বলল, ‘তিনি একজন ভাববাদী৷’ 18 লোকটির বাবা-মাকে না ডাকা পর্যন্ত ইহুদীরা বিশ্বাস করতে চাইল না য়ে, সে অন্ধ ছিল আর এখন দৃষ্টিশক্তি লাভ করেছে৷ 19 তারা তার বাবা-মাকে জিজ্ঞেস করল, ‘এই কি তোমাদের সেই ছেলে যার বিষয়ে তোমরা বলে থাক য়ে, সে অন্ধ হয়ে জন্মেছে? তাহলে এ কিভাবে এখন দেখতে পাচ্ছে?’ 20 এর উত্তরে তার বাবা-মা বলল, ‘আমরা জানি এ আমাদের ছেলে, আর এ অন্ধই জন্মেছিল৷ 21 কিন্তু এখন কিভাবে দেখতে পাচ্ছে আমরা জানি না, আর এও জানি না য়ে কে একে দৃষ্টিশক্তি দিয়েছেন৷ একেই জিজ্ঞেস করুন! এর যথেষ্ট বয়স হয়েছে, নিজের বিষয় নিজে ভালোই বলতে পারবে৷’ 22 ইহুদী নেতাদের ভয়ে, তার বাবা-মা এই কথা বলল৷ কারণ ইহুদী নেতারা আগেই স্থির করেছিল য়ে কেউ যদি যীশুকে মশীহ বলে স্বীকার করে, তবে সে প্রার্থনা সভা থেকে বিতাড়িত হবে৷ 23 এ জন্যই তার বাবা-মা বলেছিল, ‘এর যথেষ্ট বয়স হয়েছে, আপনারা একেই জিজ্ঞেস করুন৷’ 24 তাই য়ে অন্ধ ছিল, ইহুদী নেতারা তাকে দ্বিতীয় বার ডেকে বলল, ‘ঈশ্বরকে মহিমা প্রদান কর৷ সত্য বল আমরা জানি ঐ লোকটা পাপী৷’ 25 তখন য়ে অন্ধ ছিল সে বলল, ‘তিনি পাপী কি না তা আমি জানি না৷ আমি কেবল একটা বিষয় জানি, য়ে আমি অন্ধ ছিলাম, কিন্তু এখন দেখতে পাচ্ছি৷’ 26 তখন ইহুদী নেতারা তাকে বলল, ‘সে তোমাকে কি করেছিল? সে কিভাবে তোমাকে দৃষ্টিশক্তি দিল?’ 27 সে তাদের বলল, ‘আমি আগেই তোমাদের বলেছি, কিন্তু তোমরা আমার কথা শোন নি৷ তবে আবার কেন শুনতে চাইছ? তোমরাও কি তাঁর শিষ্য হতে চাও?’ 28 তখন তারা তাকে তাচ্ছিল্য় করে বলল, ‘তুই তার শিষ্য, কিন্তু আমরা মোশির শিষ্য৷ 29 আমরা জানি ঈশ্বর মোশির সঙ্গে কথা বলেছিলেন, কিন্তু এই লোকটা কোথা থেকে এসেছে তা আমরা জানি না৷’ 30 এর জবাবে লোকটি তাদের বলল, ‘কি আশ্চর্যের বিষয় য়ে, তিনি কোথা থেকে এসেছেন তা আপনারা জানেন না অথচ তিনি আমায় দৃষ্টিশক্তি দান করলেন৷ 31 আমরা জানি য়ে ঈশ্বর পাপীদের কথা শোনেন না৷ কিন্তু ঈশ্বর তাঁর কথা শোনেন, য়ে ঈশ্বরের উপাসনা করে এবং ঈশ্বর যা চান তাই করে৷ 32 একজন জন্মান্ধকে কেউ য়ে দৃষ্টিশক্তি দান করেছে, একথা কেউ কোন দিন শোনে নি৷ 33 ঐ মানুষটি যদি ঈশ্বরের কাছ থেকে না আসতেন তবে তিনি কিছুই করতে পারতেন না৷’ 34 এর উত্তরে তারা তাকে বলল, ‘তুই তো পাপেই জন্মেছিস! আর তুই কিনা আমাদের শিক্ষা দিতে চাইছিস?’ তারপর তারা তাকে তাড়িয়ে দিল৷ 35 যীশু শুনতে পেলেন য়ে ইহুদী নেতারা তাকে সমাজ-গৃহ থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে৷ তখন যীশু তার দেখা পেয়ে তাকে বললেন, ‘তুমি কি মানবপুত্রের ওপর বিশ্বাস কর?’ 36 সে উত্তর দিল, ‘মহাশয়, তিনি কে? আমায় বলুন, আমি য়েন তাঁকে বিশ্বাস করতে পারি৷’ 37 যীশু তাকে বললেন, ‘তুমি তাঁকে দেখেছ আর তিনিই এখন তোমার সঙ্গে কথা বলছেন৷’ 38 তখন সে বলল, ‘প্রভু, আমি বিশ্বাস করছি৷’ এবং সে তাঁর সামনে নতজানু হয়ে উপাসনা করল৷ 39 যীশু বললেন, ‘বিচার করতে আমি এ জগতে এসেছি৷ আমি এসেছি যাতে যাঁরা দেখতে পায় না তারা দেখতে পায়, আর যাঁরা দেখতে পায় তারা য়েন অন্ধে পরিণত হয়৷’ 40 ফরীশীদের মধ্যে কয়েকজন যাঁরা যীশুর সঙ্গে ছিল, তারা একথা শুনে তাঁকে বলল, ‘নিশ্চয়ই আপনি বলতে চান নি য়ে আমরাও অন্ধ?’ 41 যীশু তাদের বললেন, ‘তোমরা যদি অন্ধ হতে তাহলে তোমাদের কোন পাপই হত না৷ কিন্তু তোমরা এখন বলছ আমরা দেখতে পাচ্ছি, তাই তোমাদের পাপ রয়ে গেছে৷’
John 10:1 যীশু বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি; যদি কেউ সদর দরজা দিয়ে মেষ খোঁযাড়ে না ঢোকে এবং তার পরিবর্তে অন্য কোন ভাবে টপকে ঢোকে, তবে সে একজন চোর বা ডাকাত; 2 কিন্তু য়ে ব্যক্তি দরজা দিয়ে ঢোকে সে মেষপালক৷ 3 দারোযান তাকে দরজা খুলে দেয়, আর মেষরা তার কন্ঠস্বর শোনে৷ সে তার নিজের মেষগুলিকে নাম ধরে ডাকে আর তাদের বাইরে নিয়ে যায়৷ 4 সে যখন তার নিজের সব মেষদের বের করে নেয়, তখন সে তাদের আগে আগে চলে, আর মেষরা তার পেছনে পেছনে চলতে থাকে, কারণ তারা তার কন্ঠস্বর চেনে৷ 5 কিন্তু মেষরা যাকে জানে না এমন লোকের পেছনে যাবে না, বরং তারা তার থেকে দূরে পালিয়ে যাবে, কারণ তারা অচেনা লোকের কন্ঠস্বর চেনে না৷’ 6 যীশু তাদের এই দৃষ্টান্তটি বললেন; কিন্তু তিনি য়ে কি বলতে চাইছেন তা তারা বুঝতে পারল না৷ 7 তখন যীশু আবার তাদের বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি; আমি মেষদের জন্য খোঁযাড়ের দরজা স্বরূপ৷ 8 যাঁরা আমার আগে এসেছে তারা সব চোর ডাকাত, কিন্তু মেষরা তাদের ডাক শোনে নি৷ 9 আমিই দরজা৷ যদি কেউ আমার মধ্য দিয়ে ঢোকে তবে সে রক্ষা পাবে৷ সে ভেতরে আসবে এবং বাইরে গেলে তার চারণভূমি পাবে৷ 10 চোর কেবল চুরি, খুন ও ধ্বংস করতে আসে৷ আমি এসেছি, যাতে লোকেরা জীবন লাভ করে, আর য়েন তা পরিপূর্ণ ভাবেই লাভ করে৷’ 11 ‘আমিই উত্তম মেষপালক৷ উত্তম পালক মেষদের জন্য তার জীবন সমর্পণ করে৷ 12 কোন বেতনভূক কর্মচারী প্রকৃত মেষপালক নয়৷ মেষরা তার নিজের নয়, তাই সে যখন নেকড়ে বাঘ আসতে দেখে তখন মেষদের ফেলে রেখে পালায়৷ আর নেকড়ে বাঘ তাদের আক্রমণ করে এবং তারা ছড়িয়ে পড়ে৷ 13 বেতনভূক কর্মচারী পালায়, কারণ বেতনের বিনিময়ে সে কাজ করে, মেষদের জন্য তার কোন চিন্তাই নেই৷ 14 ‘আমিই উত্তম পালক৷ আমি আমার মেষদের জানি আর আমার মেষরা আমায় জানে৷ ঠিক য়েমন আমার পিতা আমাকে জানেন, আমিও আমার পিতাকে জানি; আর আমি মেষদের জন্য আমার জীবন সঁপে দিই৷ 15 16 আমার এমন আরো অনেক মেষ আছে যাঁরা এই খোঁযাড়ের নয়৷ আমি অবশ্যই তাদেরও আনব, তারাও আমার কথা শুনবে আর তারা তখন সকলে এক পাল হবে আর তাদের পালকও হবেন একজন৷ 17 এই কারণেই পিতা আমায় ভালবাসেন, কারণ আমি আমার প্রাণ দান করি য়েন আবার তা পেতে পারি৷ 18 কেউ আমার কাছ থেকে তা হরণ করে নিতে পারবে না, বরং আমি তা স্ব-ইচ্ছাতেই করছি৷ এটা দান করার অধিকার আমার আছে এবং আবার তা ফিরে পাওযার অধিকারও আমার আছে৷ আমার পিতার কাছ থেকেই আমি এই সব শুনেছি৷’ 19 এইসব কথার কারণে জনগণের মধ্যে এ নিয়ে মতবিরোধ হল৷ 20 তাদের মধ্যে অনেকে বলল, ‘ওকে ভূতে পেয়েছে, ও পাগল৷ ওর কথা কেন শুনছ?’ 21 আবার অন্যরা বলল, ‘যাদের ভূতে পায় তারা তো এমন কথা বলে না৷ ভূত নিশ্চয়ই অন্ধকে দৃষ্টিশক্তি দান করতে পারে না, পারে কি?’ 22 এরপর জেরুশালেমে প্রতিষ্ঠার পর্বএল, তখন ছিল শীতকাল৷ 23 যীশু মন্দির চত্বরে শলোমনের বারান্দাতে পায়চারি করছিলেন৷ 24 কিছু ইহুদী তাঁর চারপাশে জড়ো হয়ে তাঁকে বলল, ‘তুমি আর কতকাল আমাদের অনিশ্চয়তার মধ্যে রাখবে? তুমি যদি মশীহ হও তাহলে আমাদের স্পষ্ট করে বল৷’ 25 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, ‘আমি তোমাদের ইতিমধ্যেই বলেছি, আর তোমরা তা বিশ্বাস করছ না৷ আমি আমার পিতার নামে য়ে সব অলৌকিক কাজ করি সেগুলিই আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দিচ্ছে৷ 26 কিন্তু তোমরা বিশ্বাস করো না, কারণ তোমরা আমার পালের মেষ নও৷ 27 আমার মেষরা আমার কন্ঠস্বর শোনে৷ আমি তাদের জানি, আর তারা আমার অনুসরণ করে৷ 28 আমি তাদের অনন্ত জীবন দিই, আর তারা কখনও বিনষ্ট হয় না, আমার হাত থেকে কেউ তাদের কেড়ে নিতেও পারবে না৷ 29 আমার পিতা, যিনি তাদেরকে আমায় দিয়েছেন, তিনি সবার ও সবকিছু থেকে মহান, আর কেউ পিতার হাত থেকে কিছুই কেড়ে নিতে পারবে না৷ 30 আমি ও পিতা, আমরা এক৷’ 31 ইহুদীরা তাঁকে মারবার জন্য আবার পাথর তুলল৷ 32 যীশু তাদের বললেন, ‘পিতার শক্তিতে আমি অনেক ভাল কাজ করেছি, তার মধ্যে কোন্ কাজটার জন্য তোমরা পাথর মারতে চাইছ?’ 33 ইহুদীরা এর উত্তরে তাঁকে বলল, ‘তুমি য়ে সব ভাল কাজ করেছ, তার জন্য আমরা তোমায় পাথর মারতে চাইছি না৷ কিন্তু আমরা তোমাকে পাথর মারতে চাইছি এই জন্য য়ে, তুমি ঈশ্বর নিন্দা করেছ৷ তুমি একজন মানুষ, অথচ নিজেকে ঈশ্বর বলে দাবী করছ৷’ 34 যীশু তাদের বললেন, ‘তোমাদের বিধি-ব্যবস্থায় কি একথা লেখা নেই য়ে, ‘আমি বলেছি তোমরা ঈশ্বর৷’ 35 শাস্ত্রে তাদেরই ঈশ্বর বলেছিল যাদের কাছে ঈশ্বরের বাণী এসেছিল; আর শাস্ত্র সব সময়ই সত্য৷ 36 আমিই সেই ব্যক্তি, পিতা যাঁকে মনোনীত করে জগতে পাঠালেন৷ আমি বলেছি য়ে, ‘আমি ঈশ্বরের পুত্র৷’ তবে তোমরা কেন বলছ য়ে আমি ঈশ্বর নিন্দা করছি? 37 আমি যদি আমার পিতার কাজ না করি, তাহলে আমায় বিশ্বাস করো না৷ 38 কিন্তু আমি যখন সেইসব কাজ করছি তখনও যদি তোমরা আমাকে বিশ্বাস না করো, তাহলে সেই সব কাজকে বিশ্বাস কর৷ তাহলে তোমরা জানতে পারবে ও বুঝতে পারবে য়ে পিতা আমাতে আছেন আর আমি পিতার মধ্যে আছি৷’ 39 এরপর তারা আবার তাঁকে গ্রেপ্তার করতে চেষ্টা করল, কিন্তু তিনি তাদের হাত এড়িয়ে চলে গেলেন৷ 40 যর্দনের অপর পারে য়েখানে য়োহন বাপ্তাইজ করছিলেন, যীশু সেখানে আবার গেলেন ও সেখানে থাকলেন৷ 41 বহুলোক তাঁর কাছে আসতে থাকল, আর তারা বলাবলি করতে লাগল, ‘য়োহন কোন অলৌকিক কাজ করেন নি বটে; কিন্তু এই মানুষটির বিষয়ে য়োহন যা বলেছেন, সে সবই সত্য৷’ 42 আর সেখানে অনেকেই যীশুর ওপর বিশ্বাস করল৷
John 11:1 লাসার নামে একটি লোক অসুস্থ ছিলেন; তিনি বৈথনিযা গ্রামে থাকতেন৷ সেই গ্রামেই মরিয়ম ও তাঁর বোন মার্থাও থাকতেন৷ 2 এই মরিয়মই বহুমূল্য সুগন্ধি আতর যীশুর উপরে ঢেলে নিজের চুল দিয়ে তাঁর পা মুছিয়ে দিয়েছিলেন৷ লাসার ছিলেন এই মরিয়মেরই ভাই৷ 3 তাই লাসারের বোনেরা একটি লোক পাঠিয়ে যীশুকে বলে পাঠালেন, ‘প্রভু, আপনার প্রিয় বন্ধু লাসার অসুস্থ৷’ 4 যীশু একথা শুনে বললেন, ‘এই রোগে তার মৃত্যু হবে না; কিন্তু তা ঈশ্বরের মহিমার জন্যই হয়েছে, য়েন ঈশ্বরের পুত্র মহিমান্বিত হন৷’ 5 যীশু মার্থা, তার বোনও লাসারকে ভালবাসতেন৷ 6 তাই তিনি যখন শুনলেন য়ে লাসার অসুস্থ, তখন য়েখানে ছিলেন সেই জায়গায় আরো দুদিন রয়ে গেলেন৷ 7 এরপর তিনি শিষ্যদের বললেন, ‘চল, আমরা আবার যিহূদিযাতে যাই৷’ 8 তাঁর শিষ্যরা তাঁকে বললেন, ‘গুরু, সম্প্রতি সেখানকার লোকেরা আপনাকে পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলতে চাইছিল৷ তবে কেন আপনি আবার সেখানে য়েতে চাইছেন?’ 9 এর উত্তরে যীশু বললেন, ‘দিনে বারো ঘন্টা আলো থাকে৷ কেউ যদি দিনের আলোতে চলে তবে সে হোঁচট খেয়ে পড়ে যায় না, কারণ সে জগতের আলো দেখতে পায়৷ 10 কিন্তু কেউ যদি রাতের আঁধারে চলে তবে সে হোঁচট খায়, কারণ তার সামনে কোন আলো নেই৷’ 11 তিনি একথা বলার পর তাদের আবার বললেন, ‘আমাদের বন্ধু লাসার ঘুমিয়ে পড়েছে; কিন্তু আমি তাকে জাগাতে যাচ্ছি৷ 12 তখন তাঁর শিষ্যরা তাঁকে বললেন, ‘প্রভু, সে যদি ঘুমিয়ে থাকে তবে সে ভাল হয়ে যাবে৷’ 13 যীশু লাসারের মৃত্যুর বিষয়ে বলছিলেন, কিন্তু তাঁরা মনে করলেন তিনি তাঁর স্বাভাবিক ঘুমের কথা বলছেন৷ 14 তাই যীশু তখন তাদের স্পষ্ট করে বললেন, ‘লাসার মারা গেছে৷ 15 আর তোমাদের কথা ভেবে আমি আনন্দিত য়ে আমি সেখানে ছিলাম না, কারণ এখন তোমরা আমাকে বিশ্বাস করবে৷ চল, এখন আমরা তার কাছে যাই৷’ 16 তখন থোমা (যাঁকে দিদুমঃ বলে) অন্য শিষ্যদের উদ্দেশ্য করে বললেন, ‘চল, আমরাও যাবো, আমরাও যীশুর সঙ্গে মরব৷’ 17 যীশু বৈথনিযাতে এসে জানতে পারলেন য়ে গত চারদিন ধরে লাসার কবরে আছেন৷ 18 বৈথনিযা থেকে জেরুশালেমের দূরত্ব ছিল প্রায় দুই মাইল৷ 19 তাই ইহুদীদের অনেকেই মার্থা ও মরিয়মকে তাঁদের ভাইয়ের মৃত্যুর পর সান্ত্বনা দিতে এসেছিল৷ 20 মার্থা যখন শুনলেন য়ে যীশু এসেছেন, তখন তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গেলেন, কিন্তু মরিয়ম ঘরেই থাকলেন৷ 21 মার্থা যীশুকে বললেন, ‘প্রভু, আপনি যদি এখানে থাকতেন তাহলে আমার ভাই মরত না৷ 22 কিন্তু এখনও আমি জানি য়ে, আপনি ঈশ্বরের কাছে যা কিছু চাইবেন, ঈশ্বর আপনাকে তাই দেবেন৷’ 23 যীশু তাঁকে বললেন, ‘তোমার ভাই আবার উঠবে৷’ 24 মার্থা তাঁকে বললেন, ‘আমি জানি শেষ দিনে পুনরুত্থানের সময় সে আবার উঠবে৷’ 25 যীশু মার্থাকে বললেন, ‘আমিই পুনরুত্থান, আমিই জীবন৷ য়ে কেউ আমাকে বিশ্বাস করে, সে মরবার পর জীবন ফিরে পাবে৷ 26 য়ে কেউ জীবিত আছে ও আমায় বিশ্বাস করে, সে কখনও মরবে না৷ তুমি কি একথা বিশ্বাস কর?’ 27 মার্থা তাঁকে বললেন, ‘হ্যাঁ, প্রভু! আমি বিশ্বাস করি য়ে জগতে যাঁর আসার কথা আছে আপনিই সেই খ্রীষ্ট, ঈশ্বরের পুত্র৷’ 28 এই কথা বলার পর মার্থা সেখান থেকে চলে গেলেন ও তার বোন মরিয়মকে একান্তে ডেকে বললেন, ‘গুরু এসেছেন, আর তিনি তোমায় ডাকছেন৷’ 29 মরিয়ম একথা শুনে তাড়াতাড়ি করে যীশুর কাছে গেলেন৷ 30 যীশু তখনও গ্রামের মধ্যে ঢোকেন নি৷ মার্থা য়েখানে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন তিনি সেখানেই ছিলেন৷ 31 য়ে ইহুদীরা মরিয়মের সঙ্গে বাড়িতে ছিল ও তাঁকে সান্ত্বনা দিচ্ছিল, তারা যখন দেখল য়ে মরিয়ম তাড়াতাড়ি করে উঠে বাইরে যাচ্ছেন, তখন তারাও তার পিছনে পিছনে চলল, তারা মনে করল য়ে তিনি হয়তো লাসারের কবরের কাছে যাচ্ছেন ও সেখানে গিয়ে কাঁদবেন৷ 32 যীশু য়েখানে ছিলেন, মরিয়ম সেখানে এসে তাঁকে দেখে তাঁর পায়ের ওপর পড়ে বললেন, ‘প্রভু, আপনি যদি এখানে থাকতেন, আমার ভাই মরত না৷’ 33 যীশু যখন দেখলেন য়ে মরিয়ম কাঁদছেন আর তার সঙ্গে য়ে সব ইহুদীরা এসেছিল তারাও কাঁদছে, তখন তিনি দুঃখিত হয়ে উঠলেন এবং অন্তরে গভীরভাবে বিচলিত হলেন৷ 34 তখন তিনি বললেন, ‘তোমরা তাকে কোথায় রেখেছ?’ তারা বললেন, ‘প্রভু, আসুন, এসে দেখুন৷’ 35 যীশু কেঁদে ফেললেন৷ 36 তখন সেই ইহুদীরা সকলে বলতে লাগল, ‘দেখ! উনি লাসারকে কত ভালোবাসতেন৷’ 37 কিন্তু তাদের মধ্যে আবার কেউ কেউ বলল, ‘যীশু তো অন্ধকে দৃষ্টিশক্তি দিয়েছেন; কেন তিনি লাসারকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচালেন না?’ 38 এরপর যীশু আবার অন্তরে বিচলিত হয়ে উঠলেন৷ লাসারকে য়েখানে রাখা হয়েছিল, যীশু সেই কবরের কাছে গেলেন৷ কবরটি ছিল একটা গুহা, যার প্রবেশ পথ একটা পাথর দিয়ে ঢাকা ছিল৷ 39 যীশু বললেন, ‘ঐ পাথরটা সরিয়ে ফেল৷’সেই মৃত ব্যক্তির বোন মার্থা বললেন, ‘প্রভু চারদিন আগে লাসারের মৃত্যু হয়েছে৷ এখন পাথর সরালে এর মধ্য থেকে দুর্গন্ধ বের হবে৷’ 40 যীশু তাঁকে বললেন, ‘আমি কি তোমায় বলিনি, যদি বিশ্বাস কর তবে ঈশ্বরের মহিমা দেখতে পাবে?’ 41 এরপর তারা সেই পাথরখানা সরিয়ে দিল, আর যীশু উর্দ্ধ দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘পিতা, আমি তোমায় ধন্যবাদ দিই, কারণ তুমি আমার কথা শুনেছ৷ 42 আমি জানি তুমি সব সময়ই আমার কথা শুনে থাক৷ কিন্তু আমার চারপাশে যাঁরা দাঁড়িয়ে আছে তাদের জন্য আমি একথা বলছি, য়েন তারা বিশ্বাস করে য়ে তুমি আমায় পাঠিয়েছ৷’ 43 এই কথা বলার পর যীশু জোর গলায় ডাকলেন, ‘লাসার বেরিয়ে এস!’ 44 মৃত লাসার সেই কবর থেকে বাইরে এল৷ তার হাতপা টুকরো কাপড় দিয়ে তখনও বাঁধা ছিল আর তার মুখের ওপর একখানা কাপড় জড়ানো ছিল৷যীশু তখন তাদের বললেন, ‘বাঁধন খুলে দাও এবং ওকে য়েতে দাও৷’ 45 তখন মরিয়মের কাছে যাঁরা এসেছিল, সেই সব ইহুদীদের মধ্যে অনেকে যীশু যা করলেন তা দেখে যীশুর ওপর বিশ্বাস করল৷ 46 কিন্তু তাদের মধ্যে কয়েকজন ফরীশীদের কাছে গিয়ে যীশু যা করেছিলেন তা তাদের জানালো৷ 47 এরপর প্রধান যাজক ও ফরীশীরা পরিষদের এক মহাসভা ডেকে সেখানে নিজেদের মধ্যে বলাবলি করল, ‘আমরা এখন কি করব? এই লোকটা তো অনেক অলৌকিক চিহ্নকার্য় করছে৷ 48 আমরা যদি ওকে এই ভাবেই চলতে দিই তাহলে তো সকলেই এর ওপর বিশ্বাস করবে৷ তখন রোমীয়েরা এসে আমাদের এই মন্দির ও আমাদের জাতিকে ধ্বংস করবে৷’ 49 কিন্তু তাদের মধ্যে একজন, য়াঁর নাম কাযাফা, যিনি সেই বছরের জন্য মহাযাজকের পদ পেয়েছিলেন, তাদের বললেন, ‘তোমরা কিছুই জানো না৷ 50 আর তোমরা এও বোঝ না য়ে গোটা জাতি ধ্বংস হওযার পরিবর্তে সেই মানুষের মৃত্যু হওযা তোমাদের পক্ষে মঙ্গলজনক হবে৷’ 51 একথা কাযাফা য়ে নিজের থেকে বললেন তা নয়, কিন্তু সেই বছরের জন্য মহাযাজক হওযাতে তিনি এই ভাববাণী করলেন, য়ে সমগ্র জাতির জন্য যীশু মৃত্যুবরণ করতে যাচ্ছেন৷ 52 যীশু য়ে কেবল ইহুদী জাতির জন্য মৃত্যুবরণ করবেন তা নয়, সারা জগতে য়ে সমস্ত ঈশ্বরের সন্তানরা চারদিকে ছড়িয়ে আছে, তাদের সকলকে একত্রিত করার জন্য যীশু মৃত্যুবরণ করবেন৷ 53 তাই সেই দিন থেকে তারা যীশুকে হত্যা করার জন্য চক্রান্ত করতে লাগল৷ 54 যীশু তখন প্রকাশ্যে ইহুদীদের মধ্যে চলাফেরা বন্ধ করে দিলেন৷ তিনি সেখান থেকে মরুপ্রান্তরের কাছে ইফ্রযিম নামে এক শহরে চলে গেলেন এবং সেখানে তিনি তাঁর শিষ্যদের সঙ্গে থাকলেন৷ 55 ইহুদীদের নিস্তারপর্ব এগিয়ে আসছিল, আর অনেক লোক নিজেদের শুচি করবার জন্য নিস্তারপর্বের আগেই দেশ থেকে জেরুশালেমে গেল৷ 56 তারা সেখানে যীশুর খোঁজ করতে লাগল৷ তারা মন্দির চত্বরে দাঁড়িয়ে পরস্পর বলাবলি করতে লাগল,. ‘তোমরা কি মনে কর? তিনি কি এই পর্বে আসবেন?’ 57 প্রধান যাজকরা ও ফরীশীরা এই আদেশ দিল য়ে, যীশু কোথায় আছেন তা যদি কেউ জানে তবে তাদের য়েন জানানো হয় যাতে তারা তাঁকে গ্রেপ্তার করতে পারে৷
John 12:1 নিস্তারপর্বের ছদিন আগে যীশু বৈথনিযাতে গেলেন য়েখানে লাসার বাস করতেন৷ এই মৃত লাসারকে যীশু বাঁচিয়েছিলেন৷ 2 সেখানে তারা যীশুর জন্য এক ভোজের আযোজন করছিলেন৷ মার্থা খাবার পরিবেশন করছিলেন৷ যীশুর সঙ্গে যাঁরা খেতে বসেছিল তাদের মধ্যে লাসারও ছিলেন৷ 3 তখন মরিয়ম বিশুদ্ধ জটামাংসীথেকে তৈরী করা প্রায় আধ সের মতো দামী আতর নিয়ে এসে যীশুর পায়ে তা ঢেলে দিলেন, আর নিজের মাথার চুল দিয়ে তাঁর পা দুখানি মুছিয়ে দিলেন তখন সমস্ত ঘর আতরের সুগন্ধে ভরে গেল৷ 4 যিহূদা ঈষ্করিযোত সেখানে ছিল, সে যীশুর শিষ্যদের মধ্যে একজন, য়ে তাঁকে পরে শত্রুর হাতে ধরিয়ে দেবে৷ মরিয়মের সেই কাজ যিহূদার ভাল লাগে নি৷ যিহূদা ঈষ্করিযোত বলল, 5 ‘এই আতর তিনশো রৌপ্য় মুদ্রায়বিক্রি করে সেই অর্থ কেন দরিদ্রদের দেওযা হোল না?’ 6 গরীবদের জন্য চিন্তা করতো বলে য়ে সে একথা বলেছিল তা নয়, সে ছিল চোর৷ তার কাছে টাকার থলি থাকত আর সে তার থেকে প্রায়ই টাকা চুরি করতো৷ 7 তখন যীশু বললেন, ‘ওকে থামিয়ে দিও না৷ আমাকে সমাধি দিনের জন্য প্রস্তুত করতে তাকে এই আতর রাখতে হয়েছে৷ 8 তোমাদের মধ্যে গরীবরা সব সময়ই থাকবে, কিন্তু তোমরা সবসময় আমাকে পাবে না৷’ 9 বহু ইহুদী জানতে পারল য়ে যীশু বৈথনিযাতে আছেন৷ তারা সেখানে য়ে কেবল যীশুর জন্য গেল তাই নয়, য়ে লাসারকে যীশু মৃত্যু থেকে জীবিত করে তুলেছেন তাকে দেখবার জন্যও তারা সেখানে গেল৷ 10 তাই প্রধান যাজকেরা লাসারকে হত্যা করার চক্রান্ত করতে লাগলেন৷ 11 কারণ তারই জন্য বহু ইহুদী তাদের ছেড়ে যীশুর ওপর বিশ্বাস করতে লাগল৷ 12 য়ে বিপুল জনতা নিস্তারপর্বের জন্য এসেছিল, পরের দিন তারা শুনল য়ে যীশু জেরুশালেমে আসছেন৷ 13 তখন তারা খেজুর পাতা নিয়ে তাঁকে স্বাগত জানাতে বেরিয়ে পড়ল৷ তারা চিত্কার করে বলতে লাগল,‘তাঁর প্রশংসা কর, তাঁকে স্বাগত জানাও! যিনি প্রভুর নামে আসছেন, ঈশ্বর তাঁকে আশীর্বাদ করুন৷ ইস্রায়েলের রাজাকে ঈশ্বর আশীর্বাদ করুন!’গীতসংহিতা 118:25-26 14 যীশু একটা গাধাকে দেখতে পেয়ে তার ওপর বসলেন, য়েমন শাস্ত্রে লেখা আছে: 15 ‘সিযোন নগরী,ভয় পেও না! দেখ, তোমাদের রাজা আসছেন৷ দেখ, তোমাদের রাজা বাচ্চা গাধায় চড়ে আসছেন৷’সখরিয় 9:9 16 এসবের অর্থ তাঁর শিষ্যরা প্রথমে বুঝতে পারেন নি৷ কিন্তু যীশু যখন মহিমায় উত্তোলিত হলেন, তখন তাঁদের মনে পড়ল য়ে শাস্ত্রে এগুলিই তাঁর সম্পর্কে লেখা হয়েছে এবং লোকেরা এসব তাঁর জন্য করেছিল৷ 17 যীশু যখন লাসারকে কবর থেকে বেরিয়ে আসতে বলেন, আর তাকে মৃতদের মধ্য থেকে জীবিত করে তোলেন, তখন য়ে সব লোক সেখানে তাঁর সঙ্গে ছিল তার সে বিষয়ে সকলকে বলতে লাগল৷ 18 এই কারণেই লোকেরা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এল, কারণ তারা শুনেছিল, য়ে তিনিই ঐ অলৌকিক চিহ্নকার্য় করেছেন৷ 19 তখন ফরীশীরা পরস্পর বলাবলি করতে লাগল, ‘তোমরা দেখলে, আমাদের সব চেষ্টাই ব্যর্থ হল৷ দেখ, আজ সারা জগত্ তাঁরই পেছনে ছুটছে৷’ 20 নিস্তারপর্ব উপলক্ষে উপাসনা করার জন্য যাঁরা জেরুশালেমে এসেছিল, তাদের মধ্যে কয়েকজন গ্রীকও ছিল৷ 21 তারা গালীলের বৈত্সৈদা থেকে য়ে ফিলিপ এসেছিলেন, তাঁর কাছে গেল, আর তাঁকে অনুরোধের সুরে বলল, ‘মহাশয় আমরা যীশুর সঙ্গে সাক্ষাত্ করতে চাই৷’ 22 ফিলিপ এসে একথা আন্দরিয়কে জানালেন৷ তখন আন্দরিয় ও ফিলিপ এসে যীশুকে তা বললেন৷ 23 যীশু তখন তাদের বললেন, ‘মানবপুত্রের মহিমান্বিত হওযার সময় হয়েছে৷ 24 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, গমের একটি দানা যদি মাটিতে পড়ে মরে না যায়, তবে তা একটি দানাই থেকে যায়৷ কিন্তু তা যদি মাটিতে পড়ে মরে যায়, তবে তার থেকে আরো অনেক দানা উত্পন্ন হয়৷ 25 য়ে ব্যক্তি নিজের জীবনকে ভালবাসে সে তা হারাবে; কিন্তু য়ে এই জগতে তার জীবনকে তুচ্ছ জ্ঞান করে, সে তা রাখবে৷ সে অনন্ত জীবন পাবে৷ 26 কেউ যদি আমার সেব করে তবে অবশ্যই সে আমাকে অনুসরণ করবে৷ আর আমি য়েখানে থাকি আমার সেবকও সেখানে থাকবে৷ কেউ যদি আমার সেবা করে তবে পিতা তাকে সম্মানিত করবেন৷ 27 ‘এখন আমার অন্তর খুব বিচলিত৷ আমি কি বলব, ‘পিতা? এই কষ্ট ভোগের মুহূর্ত থেকে আমায় রক্ষা কর?’ না, কারণ সেই সময় এসেছে এবং কষ্ট ভোগ করার উদ্দেশ্যেই আমি এসেছি৷ 28 পিতা, তোমার নামকে মহিমান্বিত কর!’তখন স্বর্গ থেকে এক রব ভেসে এল, ‘আমি এঁকে মহিমান্বিত করেছি, আর আমি আবার তাঁকে মহিমান্বিত করব৷’ 29 য়ে লোকেরা সেখানে ভীড় করেছিল, তারা সেই রব শুনে বলতে লাগল, এটা তো মেঘ গর্জন হোল৷আবার কেউ কেউ বলল, ‘একজন স্বর্গদূত ওঁর সঙ্গে কথা বললেন৷’ 30 এর উত্তরে যীশু বললেন, ‘আমার জন্য নয়, তোমাদের জন্যই ঐ রব৷ 31 এখন জগতের বিচারের সময়৷ এই জগতের শাসককে দূরে নিক্ষেপ করা হবে৷ 32 আর যখন আমাকে মাটি থেকে উঁচুতে তোলা হবে, তখন আমি আমার কাছে সকলকেই টেনে আনব৷’ 33 যীশুর কিভাবে মৃত্যু হতে যাচ্ছে, তাই জানাতে যীশু এই কথা বললেন৷ 34 এর উত্তরে লোকেরা তাঁকে বলল, ‘আমরা মোশির দেওযা বিধি-ব্যবস্থা থেকে শুনেছি য়ে খ্রীষ্ট চিরকাল বাঁচবেন৷ তাহলে আপনি কিভাবে বলছেন য়ে, ‘মানবপুত্রকে উঁচুতে তোলা হবে? এই ‘মানবপুত্র’ তবে কে?’ 35 তখন যীশু তাদের বললেন, ‘আর সামান্য কিছু সময়ের জন্য তোমাদের মধ্যে আলো থাকবে৷ যতক্ষণ তোমরা আলো পাচ্ছ, তারই মধ্য দিয়ে চল৷ তাহলে অন্ধকার তোমাদের আচ্ছন্ন করবে না৷ য়ে লোক অন্ধকারে চলে সে কোথায় যাচ্ছে তা জানে না৷ 36 যতক্ষণ তোমাদের কাছে আলো আছে, সেই আলোতে বিশ্বাস কর, তাতে তোমরা আলোর সন্তান হবে৷’ এই কথা বলে যীশু সেখান থেকে চলে গেলেন ও তাদের কাছ থেকে নিজেকে গোপন রাখলেন৷ 37 যদিও যীশু তাদের চোখের সামনেই প্রচুর অলৌকিক চিহ্নকার্য় করলেন, তবু তারা তাঁকে বিশ্বাস করল না৷ 38 ভাববাদী যিশাইয় বলেছিলেন:‘প্রভু, আমাদের এই বার্তা কে বিশ্বাস করেছে? আর কার কাছেই বা প্রভুর পরাক্রম প্রকাশ পেয়েছে?’যিশাইয় 53:1 39 এই কারণেই তারা বিশ্বাস করতে পারে নি, কারণ যিশাইয় আবার বলেছেন, 40 ‘ঈশ্বর তাদের চোখ অন্ধ করে দিয়েছেন৷ ঈশ্বর তাদের অন্তর কঠিন করেছেন যাতে তারা চোখ দিয়ে দেখতে না পায়, অন্তর দিয়ে বুঝতে না পারে এবং ভাল হবার জন্য আমার কাছে না আসে৷’যিশাইয় 6:10 41 যিশাইয় একথা বলেছিলেন, কারণ তিনি যীশুর মহিমা দেখেছিলেন আর তিনি তাঁর বিষয়েই বলেছিলেন৷ 42 অনেকে, এমন কি ইহুদী নেতাদের মধ্যেও অনেকে, তাঁর ওপর বিশ্বাস স্থাপন করল; কিন্তু তারা ফরীশীদের ভয়ে প্রকাশ্যে তা স্বীকার করল না, পাছে তারা ইহুদীদের সমাজ-গৃহ থেকে বহিষ্কৃত হয়৷ 43 কারণ তারা ঈশ্বরের কাছ থেকে পাওযা প্রশংসা অপেক্ষা মানুষের কাছ থেকে পাওযা প্রশংসা বেশী ভালবাসত৷ 44 যীশু চিত্কার করে বললেন, ‘য়ে আমাকে বিশ্বাস করে সে, প্রকৃতপক্ষে যিনি আমায় পাঠিয়েছেন, তাঁকেই বিশ্বাস করে৷ 45 আর য়ে আমায় দেখে সে, যিনি আমায় পাঠিয়েছেন, তাঁকেই দেখতে পায়৷ 46 আমি এ জগতে আলো রূপে এসেছি যাতে য়ে আমায় বিশ্বাস করে তাকে য়েন অন্ধকারে থাকতে না হয়৷ 47 ‘আর য়ে কেউ আমার কথা শোনে অথচ তা মেনে চলে না, তার বিচার করতে আমি চাই না, কারণ আমি জগতের বিচার করতে আসিনি, এসেছি জগতকে রক্ষা করতে৷ 48 য়ে কেউ আমাকে অগ্রাহ্য় করে ও আমার কথা গ্রহণ না করে, তার বিচার করার জন্য একজন বিচারক আছেন৷ আমি য়ে বার্তা দিয়েছি শেষ দিনে সেই বার্তাই তার বিচার করবে৷ 49 কারণ আমি নিজে থেকে একথা বলছি না, বরং পিতা যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তিনি আমাকে কি বলতে হবে বা কি শিক্ষা দিতে হবে তা আদেশ করেছেন৷ 50 আমি জানি য়ে তাঁর আদেশ থেকেই অনন্ত জীবন আসে৷ আমি সেই সকল কথা বলি যা পিতা আমায় বলেছেন৷’
John 13:1 ইহুদীদের নিস্তারপর্বের ঠিক পূর্বে যীশু বুঝতে পারলেন, য়ে এই জগত ছেড়ে পিতার কাছে তাঁর যাবার সময় হয়ে এসেছে৷ যীশু পৃথিবীতে তাঁর আপনজনদের সব সময় ভালবেসেছেন৷ এবার তিনি তাদের প্রতি তাঁর ভালবাসার চূড়ান্ত প্রমাণ দিলেন৷ 2 যীশু ও তাঁর শিষ্যরা সান্ধ্য় আহার করছিলেন৷ দিযাবল ইতিমধ্যে শিমোন ঈষ্করিযোতের ছেলে যিহূদাকে প্ররোচিত করেছে যীশুকে শত্রুর হাতে তুলে দেওযার জন্য৷ 3 যীশু বুঝলেন য়ে পিতা তাঁকে সব কিছুর ওপর ক্ষমতা দিয়েছেন, তিনি ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছেন, আর ঈশ্বরের কাছে ফিরে যাচ্ছেন৷ 4 তখন তিনি ভোজের আসর থেকে উঠে দাঁড়ালেন, তাঁর উপরের জামাটা খুলে রেখে একটি গামছা কোমরে জড়ালেন৷ 5 তারপর গামলায় জল ঢেলে শিষ্যদের পা ধুইয়ে দিতে লাগলেন, আর য়ে গামছাটি কোমরে জড়িয়ে ছিলেন সেটি দিয়ে তাঁদের পা মুছিয়ে দিতে লাগলেন৷ 6 এইভাবে তিনি শিমোন পিতরের কাছে এলে পিতর যীশুকে বললেন, ‘প্রভু, আপনি কেন আমার পা ধুইয়ে দেবেন?’ 7 এর উত্তরে যীশু তাঁকে বললেন, ‘আমি যা করছি, তুমি এখন তা বুঝতে পারছ না, কিন্তু পরে বুঝবে৷’ 8 পিতর তাঁকে বললেন, ‘আপনি কখনও আমার পা ধুইয়ে দেবেন না৷’যীশু তাঁকে বললেন, ‘আমি যদি তোমার পা না ধুইয়ে দিই, তাহলে আমার সঙ্গে তোমার কোন সম্পর্ক থাকবে না৷’ 9 শিমোন পিতর তাঁকে বললেন, ‘প্রভু, আপনি কেবল আমার পা নয়, হাত ও মাথা ধুইয়ে দিন!’ 10 যীশু তাঁকে বললেন, ‘য়ে স্নান করেছে তার পা ধোযা ছাড়া আর কিছু দরকার নেই, আর তো সর্বাঙ্গ পরিষ্কার হয়েছে৷ তোমরাও পরিষ্কার হয়েছ, কিন্তু সকলে নও৷’ 11 যীশু জানতেন য়ে একজন তাঁকে ধরিয়ে দেবে, সেই কারণেই তিনি বললেন, ‘তোমরা সকলে পরিষ্কার নও৷’ 12 তাদের পা ধোযানো শেষ করে তিনি আবার তাঁর উপরের জামাটি পরলেন ও টেবিলে তাঁর জায়গায় ফিরে এসে তাদের বললেন, ‘আমি তোমাদের প্রতি কি করলাম তা বুঝতে পারলে? 13 তোমরা আমায় ‘গুরু’ ও ‘প্রভু’ বলে থাকো; আর তোমরা তা ঠিকই বল, কারণ আমি তা-ই৷ 14 তাই আমি প্রভু ও গুরু হয়ে যদি তোমাদের পা ধুইয়ে দিই, তাহলে তোমাদেরও উচিত পরস্পরের পা ধোযানো৷ 15 আমি তোমাদের কাছে এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলাম, য়েন আমি তোমাদের প্রতি য়েমন করলাম, তোমরাও তেমনি কর৷ 16 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, চাকর তার মনিবের থেকে বড় নয়, আর দূত তার প্রেরণকর্তার থেকে বড় নয়৷ 17 য়েহেতু তোমরা এসব জান, এইগুলি পালন কর, তাহলে তোমরা সুখী হবে৷ 18 ‘আমি তোমাদের সকলের বিষয়ে বলছি না৷ আমি জানি, কাদের আমি মনোনীত করেছি৷ কিন্তু শাস্ত্রে য়ে কথা লেখা হয়েছে তা অবশ্যই পূর্ণ হবে, ‘য়ে আমার সঙ্গে আহার করল, সেই আমার বিরুদ্ধে গেল৷’ 19 এসব ঘটবার আগেই আমি তোমাদের এসব বলছি, যাতে যখন এসব ঘটবে, তোমরা বিশ্বাস করবে য়ে আমিই তিনি৷ 20 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, আমি যাকে পাঠাবো তাকে য়ে গ্রহণ করবে, সে আমাকেই গ্রহণ করবে৷ আর য়ে আমাকে গ্রহণ করে, আমায় যিনি পাঠিয়েছেন, সে তাঁকেও গ্রহণ করে৷’ 21 এই কথা বলার পর যীশু খুবই উদ্বিগ্ন হলেন, আর খোলাখুলিই বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমাদের মধ্যে একজন আমাকে ধরিয়ে দেবে৷’ 22 শিষ্যরা পরস্পরের দিকে তাকাতে লাগলেন, আদৌ বুঝতে পারলেন না কার বিষয়ে তিনি বলছেন৷ 23 যীশুর শিষ্যদের মধ্যে একজন ছিলেন যাকে যীশু খুবই ভালবাসতেন, তিনি যীশুর গায়ের ওপর হেলান দিয়ে ছিলেন৷ 24 শিমোন পিতর এই শিষ্যকে ইশারা করলেন এবং যীশুকে জিজ্ঞেস করতে বললেন য়ে উনি কার সম্পর্কে বলছেন৷ 25 তখন তিনি যীশুর বুকের উপর ঝুঁকে পড়ে তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘প্রভু, সে কে?’ 26 যীশু বললেন, ‘আমি রুটির টুকরোটি বাটিতে ডুবিয়ে যাকে দেব সে-ই সেই লোক৷’ এরপর তিনি রুটির টুকরো ডুবিয়ে শিমোন ঈষ্করিযোতের ছেলে যিহূদাকে দিলেন৷ 27 যিহূদা রুটির টুকরোটি নেওযার পর শয়তান তার মধ্যে ঢুকে পড়ল৷ এরপর যীশু তাকে বললেন, ‘তুমি যা করতে যাচ্ছ তা তাড়াতাড়ি করোগে যাও৷’ 28 কিন্তু যাঁরা তাঁর সঙ্গে খাবার টেবিলে খেতে বসেছিলেন, তাঁদের মধ্যে কেউই বুঝতে পারলেন না তিনি কেন তাকে একথা বললেন৷ 29 কেউ কেউ মনে করলেন, যিহূদার কাছে টাকার থলি আছে, তাই হয়তো যীশু তাকে বললেন, পর্বের জন্য যা যা প্রযোজন তা কিনে আনতে যাও; অথবা হয়তো গরীবদের ওর থেকে কিছু দান করতে বলেছেন৷ 30 যিহূদা রুটির টুকরোটি গ্রহণ করে সঙ্গে সঙ্গে বাইরে চলে গেল৷ তখন রাত হয়ে গেছে৷ 31 যিহূদা সেখান থেকে চলে যাবার পর যীশু বললেন, ‘মানবপুত্র এখন মহিমান্বিত হলেন, আর ঈশ্বরও তাঁর মাধ্যমে মহিমান্বিত হলেন৷ 32 ঈশ্বর যদি তাঁর মাধ্যমে মহিমান্বিত হন, তবে ঈশ্বরও মানবপুত্রকে নিজের মাধ্যমে মহিমান্বিত করবেন, তিনি খুব শিগ্গিরই তা করবেন৷’ 33 ‘আমার প্রিয় সন্তানরা, আমি আর কিছু সময় তোমাদের সঙ্গে থাকব৷ তোমরা আমায় খুঁজবে, আর আমি য়েমন ইহুদী নেতাদের বলেছিলাম, আমি য়েখানে যাচ্ছি তোমরা সেখানে য়েতে পার না, সেই কথাই এখন তোমাদেরও বলছি৷ 34 আমি তোমাদের এক নতুন আদেশ দিচ্ছি, তোমরা পরস্পরকে ভালবেসো৷ আমি য়েমন তোমাদের ভালবাসি, তোমরাও তেমনি পরস্পরকে ভালবেসো৷ 35 তোমাদের পরস্পরের মধ্যে যদি ভালবাসা থাকে তবে এর দ্বারাই সকলে জানবে য়ে তোমরা আমার শিষ্য৷’ 36 শিমোন পিতর যীশুকে বললেন, ‘প্রভু, আপনি কোথায় যাচ্ছেন?’যীশু বললেন, ‘য়েখানে এখন আমি যাচ্ছি, তুমি আমার পেছনে সেখানে আসতে পারবে না; কিন্তু পরে তুমি আমায় অনুসরণ করবে৷’ 37 পিতর তাঁকে বললেন, ‘প্রভু, এখন কেন আমি আপনার সঙ্গে য়েতে পারি না? আমি আপনার জন্য নিজের জীবন পর্যন্ত দিয়ে দেব৷’ 38 যীশু তাকে বললেন, ‘তুমি কি সত্যি আমার জন্য প্রাণ দেবে? আমি তোমাকে সত্যি বলছি; কাল ভোরে মোরগ ডাকার আগেই তুমি আমাকে তিনবার অস্বীকার করবে৷
John 14:1 ‘তোমাদের হৃদয় বিচলিত না হোক্৷ ঈশ্বরের উপর বিশ্বাস রাখো, আর আমার প্রতিও আস্থা রাখো৷ 2 আমার পিতার বাড়িতে অনেক ঘর আছে, যদি না থাকতো আমি তোমাদের বলতাম৷ আমি তোমাদের থাকবার একটা জায়গা ঠিক করতে যাচ্ছি৷ 3 সেখানে গিয়ে জায়গা ঠিক করার পর আমি আবার আসব ও তোমাদের আমার কাছে নিয়ে যাব, যাতে আমি য়েখানে থাকি তোমরাও সেখানে থাকতে পার৷ 4 আমি য়েখানে যাচ্ছি তোমরা সকলেই সে জায়গার পথ চেন৷’ 5 থোমা তাঁকে বললেন, ‘প্রভু, আপনি কোথায় যাচ্ছেন তা আমরা জানি না! আমরা সেখানে যাবার পথ কিভাবে জানবো?’ 6 যীশু তাঁকে বললেন, ‘আমিই পথ, আমিই সত্য ও জীবন৷ পিতার কাছে যাবার আমিই একমাত্র পথ৷ 7 তোমরা যদি সত্যি আমাকে জেনেছ, তবে পিতাকেও জানতে পেরেছ৷ আর এখন থেকে তোমরা তাঁকে জেনেছ ও তাঁকে দেখেছ৷’ 8 ফিলিপ যীশুকে বললেন, ‘প্রভু, আপনি পিতাকে আমাদের দেখান, তাহলেই যথেষ্ট হবে৷’ 9 যীশু তাঁকে বললেন, ‘আমি তোমাদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে রয়েছি; আর ফিলিপ, তোমরা এখনও আমায় চিনলে না? য়ে কেউ আমায় দেখেছে সে পিতাকে দেখেছে৷ তোমরা কি করে বলছ, ‘পিতাকে আমাদের দেখান? 10 তুমি কি বিশ্বাস কর না য়ে আমি পিতার মধ্যে আছি আর পিতাও আমার মধ্যে আছেন? আমি তোমাদের য়ে সকল কথা বলি তা নিজের থেকে বলি না৷ আমার মধ্যে যিনি আছেন সেই পিতা তাঁর নিজের কাজ করেন৷ 11 যখন আমি বলি য়ে আমি পিতার মধ্যে আছি আর পিতাও আমার মধ্যে আছেন, তখন আমাকে বিশ্বাস কর৷ যদি তা না কর, তবে আমার দ্বারা কৃত সব অলৌকিক কাজের কারণেই বিশ্বাস কর৷ 12 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, য়ে আমার ওপর বিশ্বাস রাখে, আমি য়ে কাজই করি না কেন, সেও তা করবে, বলতে কি সে এর থেকেও মহান মহান কাজ করবে, কারণ আমি পিতার কাছে যাচ্ছি৷ 13 আর তোমরা আমার নামে যা কিছু চাইবে, আমি তা পূর্ণ করব, য়েন পিতা পুত্রের দ্বারা মহিমান্বিত হন৷ 14 তোমরা যদি আমার নামে আমার কাছে কিছু চাও, আমি তা পূর্ণ করব৷ 15 ‘তোমরা যদি আমায় ভালবাস তবে তোমরা আমার সমস্ত আদেশ পালন করবে৷ 16 আমি পিতার কাছে চাইব, আর তিনি তোমাদের আর একজন সাহায্যকারীদেবেন, য়েন তিনি চিরকাল তোমাদের সঙ্গে থাকেন৷ 17 তিনি সত্যের আত্মা,যাঁকে এই জগত সংসার মেনে নিতে পারে না, কারণ জগত তাঁকে দেখে না বা তাঁকে জানে না৷ তোমরা তাঁকে জান, কারণ তিনি তোমাদের সঙ্গে সঙ্গেই থাকেন, আর তিনি তোমাদের মধ্যেই থাকবেন৷ 18 ‘আমি তোমাদের অনাথ রেখে যাবো না৷ আমি তোমাদের কাছে আসব৷ 19 আর কিছুক্ষণ পর এই জগত সংসার আর আমায় দেখতে পাবে না, কিন্তু তোমরা আমায় দেখতে পাবে৷ কারণ আমি বেঁচে আছি বলেই তোমরাও বেঁচে থাকবে৷ 20 সেই দিন তোমরা জানবে য়ে আমি পিতার মধ্যে আছি, তোমরা আমার মধ্যে আছ, আর আমি তোমাদের মধ্যে আছি৷ 21 য়ে আমার নির্দেশ জানে এবং সেগুলি সব পালন করে, সেই আমায় প্রকৃত ভালবাসে৷ য়ে আমায় ভালবাসে, পিতাও তাঁকে ভালবাসেন৷ য়ে আমায় ভালবাসে, পিতাও তাকে ভালবাসেন আর আমিও তাকে ভালবাসি৷ আমি নিজেকে তার কাছে প্রকাশ করব৷’ 22 যিহূদা (যিহূদা ঈষ্করিযোত নয়) তাঁকে বলল, ‘প্রভু কেন আপনি জগতের কাছে নিজেকে প্রকাশ না করে আমাদের কাছেই নিজেকে প্রকাশ করবেন?’ 23 এর উত্তরে যীশু তাঁকে বললেন, ‘যদি কেউ আমায় ভালবাসে তবে সে আমার শিক্ষা অনুসারে চলবে, আর আমার পিতা তাকে ভালবাসবেন, আর আমরা তার কাছে আসব ও তার সঙ্গে বাস করব৷ 24 য়ে আমায় ভালবাসে না, সে আমার শিক্ষা পালন করে না৷ আর তোমরা আমার য়ে শিক্ষা শুনছ তা আমার নয়, কিন্তু যিনি আমায় পাঠিয়েছেন এই শিক্ষা সেই পিতার৷ 25 ‘আমি তোমাদের সঙ্গে থাকতে থাকতেই এইসব কথা বললাম, 26 কিন্তু সেই সাহায্যকারী পবিত্র আত্মা, যাঁকে পিতা আমার নামে পাঠিয়ে দেবেন, তিনি তোমাদের সব কিছু শিক্ষা দেবেন, আর আমি তোমাদের যা যা বলেছি, সে সকল বিষয় তিনি তোমাদের স্মরণ করিয়ে দেবেন৷ 27 ‘শান্তি আমি তোমাদের কাছে রেখে যাচ্ছি৷ আমার নিজের শান্তি আমি তোমাদের দিচ্ছি৷ জগত সংসার য়েভাবে শান্তি দেয় আমি সেইভাবে তা দিচ্ছি না৷ তোমাদের অন্তর উদ্বিগ্ন অথবা শঙ্কিত না হোক৷ 28 তোমরা শুনেছ য়ে, আমি তোমাদের বলেছি য়ে আমি যাচ্ছি আর আমি আবার তোমাদের কাছে আসব৷ তোমরা যদি আমায় ভালবাস তবে এটা জেনে খুশী হবে য়ে আমি পিতার কাছে যাচ্ছি, কারণ পিতা আমার থেকে মহান৷ 29 তাই এসকল ঘটার আগেই আমি এসব তোমাদের এখন বললাম, যাতে ঘটলে পর তোমরা বিশ্বাস কর৷ 30 আমি তোমাদের সঙ্গে আর বেশীক্ষণ কথা বলব না, কারণ এই জগতের অধিপতি আসছে৷ আমার ওপর তার কোন দাবী নেই৷ 31 জগত সংসার যাতে জানতে পারে য়ে আমি পিতাকে ভালবাসি, তাই পিতা আমায় য়েমন আদেশ করেন আমি সেরকমই করি৷‘এখন এস! আমরা এখান থেকে যাই৷’
John 15:1 যীশু বললেন, ‘আমিই প্রকৃত আঙ্গুর লতা, আর আমার পিতা আঙ্গুর ক্ষেতের প্রকৃত কৃষক৷ 2 আমার য়ে শাখাতে ফল ধরে না, তিনি তা কেটে ফেলেন৷ আর য়ে শাখাতে ফল ধরে তাতে আরও বেশী করে ফল ধরার জন্য তিনি তা ছেঁটে পরিষ্কার করে দেন৷ 3 আমি তোমাদের য়ে শিক্ষা দিয়েছি তার ফলে তোমরা এখন শুচি হয়েছ৷ 4 তোমরা আমার সঙ্গে সংযুক্ত থাক, আর আমিও তোমাদের সঙ্গে সংযুক্ত থাকব৷ শাখা য়েমন আঙ্গুর লতার সঙ্গে সংযুক্ত না থাকলে ফল ধরতে পারে না, তেমনি তোমরাও আমার সঙ্গে সংযুক্ত না থাকলে ফলবন্ত হতে পারবে না৷ 5 ‘আমিই আঙ্গুরলতা, আর তোমরা শাখা৷ য়ে আমাতে সংযুক্ত থাকে সে প্রচুর ফলে ফলবান হয়, কারণ আমাকে ছাড়া তোমরা কিছুই করতে পার না৷ 6 যদি কেউ আমাতে না থাকে, তবে তাকে শুকিয়ে যাওযা শাখার মতো ছুঁড়ে ফেলা হয়৷ তারপর সেই সব শুকনো শাখাকে জড়ো করে তা আগুনে ছুঁড়ে পুড়িয়ে দেওযা হয়৷ 7 ‘যদি তোমরা আমাতে থাক, আর আমার শিক্ষা যদি তোমাদের মধ্যে থাকে, তাহলে তোমরা যা ইচ্ছা কর, তা পাবে৷ 8 তোমরা প্রচুর ফলে ফলবান হয়ে প্রমাণ কর য়ে, তোমরা আমার প্রকৃত শিষ্য; আর তাতেই আমার পিতা মহিমান্বিত হবেন৷ 9 পিতা য়েমন আমায় ভালবাসেন, আমিও তোমাদের তেমনি ভালবাসি৷ তোমরা আমার ভালবাসার মধ্যে থাকো৷ 10 আমি আমার পিতার আদেশ পালন করেছি ও তাঁর ভালবাসায় আছি৷ একইভাবে তোমরা যদি আমার আদেশ পালন কর তবে তোমরাও আমার ভালবাসায় থাকবে৷ 11 আমি এসব কথা তোমাদের বললাম, য়েন আমার য়ে আনন্দ আছে তা তোমাদের মধ্যেও থাকে; আর এইভাবে তোমাদের আনন্দ য়েন সম্পূর্ণ হয়৷ 12 আমার আদেশ এই, আমি য়েমন তোমাদের ভালোবেসেছি, তোমরাও তেমনি একে অপরকে ভালবাস৷ 13 বন্ধুদের জন্য প্রাণ দেওযার থেকে একজনের পক্ষে শ্রেষ্ঠ ভালবাসা আর কিছু নেই৷ 14 আমি তোমাদের যা যা আদেশ করছি তোমরা যদি তা পালন কর তাহলে তোমরা আমার বন্ধু৷ 15 আমি তোমাদের আর দাস বলছি না, কারণ মনিব কি করে, তা দাস জানে না৷ কিন্তু আমি তোমাদের বন্ধু বলছি, কারণ আমি পিতার কাছ থেকে যা যা শুনেছি সে সবই তোমাদের জানিয়েছি৷ 16 তোমরা আমায় মনোনীত করনি, বরং আমিই তোমাদের মনোনীত করেছি৷ আমি তোমাদের নিযোগ করেছি য়েন তোমরা যাও ও ফলবন্ত হও, আর তোমাদের ফল য়েন স্থাযী হয় এই আমার ইচ্ছা৷ তোমরা আমার নামে যা কিছু চাও, পিতা তা তোমাদের দেবেন৷ 17 আমি তোমাদের এই আদেশ দিচ্ছি য়ে তোমরা একে অপরকে ভালবাস৷ 18 ‘জগত সংসার যদি তোমাদের ঘৃণা করে, তবে একথা মনে রেখো য়ে, সে প্রথমে আমায় ঘৃণা করল৷ 19 তোমরা যদি এই জগতের হও, তবে জগত য়েমন তার আপনজনদের ভালবাসে, তেমনি তোমাদেরও ভালবাসবে৷ কিন্তু তোমরা এ জগতের নও৷ আমি এই জগত থেকে তোমাদের মনোনীত করেছি, এই কারণেই জগত সংসার তোমাদের ঘৃণা করে৷ 20 য়ে শিক্ষার কথা আমি তোমাদের বললাম তা স্মরণে রেখো, একজন দাস তার মনিবের থেকে বড় নয়৷ তারা যদি আমার ওপর নির্য়াতন করে থাকে তবে তারা তোমাদেরও নির্য়াতন করবে৷ যদি তারা আমার শিক্ষা পালন করে থাকে তবে তোমাদের শিক্ষা পালন করবে৷ 21 তারা আমার জন্যই তোমাদের প্রতি এগুলি করবে, কারণ যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁকে তারা জানে না৷ 22 আমি যদি না আসতাম ও তাদের সঙ্গে কথা না বলতাম, তাহলে তাদের পাপ হত না৷ কিন্তু আমি এসেছি, তাদের সঙ্গে কথা বলেছি তাই তাদের এখন পাপ ঢাকবার কোন উপায় নেই৷ 23 য়ে আমায় ঘৃণা করে, সে আমার পিতাকেও ঘৃণা করে৷ 24 য়ে কাজ আর কেউ কখনও করে নি, সেরূপ কাজ যদি আমি তাদের মধ্যে না করতাম, তবে তাদের পাপের জন্য তারা দোষী হত না৷ কিন্তু এখন তারা আমার কাজ দেখেছে, আর তা সত্ত্বেও তারা আমাকে ও পিতাকে উভয়কেই ঘৃণা করেছে৷ 25 শাস্ত্রের এই বাক্য পূর্ণ হওযার জন্যই এসব ঘটল: ‘তারা অকারণে আমায় ঘৃণা করেছে৷’ 26 ‘আমি পিতার কাছ থেকে একজন সাহায্যকারী পাঠাবো, তিনি সত্যের আত্মা৷ তিনি যখন পিতার কাছ থেকে আসবেন, তিনি আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দেবেন৷ 27 তোমরাও লোকদের কাছে অবশ্যই আমার কথা বলবে, কারণ তোমরা শুরু থেকে আমার সঙ্গে সঙ্গে আছ৷
John 16:1 ‘আমি তোমাদের এসব বলছি যাতে তোমরা তোমাদের বিশ্বাস ত্যাগ না কর৷ 2 তারা তোমাদের সমাজ-গৃহ থেকে বহিষ্কৃত করবে৷ বলতে কি এমন সময় আসছে, যখন তারা তোমাদের হত্যা করে মনে করবে য়ে তারা ঈশ্বরের সেবা করছে৷ 3 তারা এরূপ কাজ করবে কারণ তারা না জানে আমাকে, না জানে পিতাকে৷ 4 কিন্তু আমি তোমাদের এসব কথা বললাম, য়েন এসব ঘটবার সময় আসলে তোমরা মনে করতে পার য়ে, আমি তোমাদের এসব বিষয়ে আগেই সতর্ক করে দিয়েছিলাম৷‘শুরুতেই আমি তোমাদের এসব কথা বলিনি, কারণ আমি তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে ছিলাম৷ 5 কিন্তু যিনি আমায় পাঠিয়েছেন এখন আমি তাঁর কাছে ফিরে যাচ্ছি, আর তোমাদের কেউ জিজ্ঞেস করছ না, ‘আপনি কোথায় যাচ্ছেন?’ 6 এখন আমি তোমাদের এসব কথা বললাম, তাই তোমাদের অন্তর দুঃখে ভরে গেছে৷ 7 কিন্তু আমি তোমাদের সত্যি বলছি; আমার যাওযা তোমাদের পক্ষে ভাল, কারণ আমি যদি না যাই তাহলে সেই সাহায্যকারী তোমাদের কাছে আসবেন না৷ কিন্তু আমি যদি যাই তাহলে আমি তাঁকে তোমাদের কাছে পাঠিয়ে দেব৷ 8 যখন সেই সাহায্যকারী আসবেন তখন তিনি পাপ, ন্যায়পরায়ণতা ও বিচার সম্পর্কে জগতের মানুষকে চেতনা দেবেন৷ 9 তিনি পাপ সম্পর্কে চেতনা দেবেন কারণ তারা আমাতে বিশ্বাস করে না৷ 10 ন্যায়পরায়ণতা সম্পর্কে বোঝাবেন কারণ এখন আমি পিতার কাছে যাচ্ছি, আর তোমরা আমায় দেখতে পাবে না৷ 11 বিচার সম্বন্ধে চেতনা দেবেন কারণ এই জগতের য়ে শাসক তার বিচার হয়ে গেছে৷ 12 ‘তোমাদের বলবার মতো আমার এখনও অনেক কথা আছে; কিন্তু সেগুলো তোমাদের গ্রহণ করার পক্ষে এখন অতিরিক্ত হয়ে যাবে৷ 13 সত্যের আত্মা যখন আসবেন, তখন তিনি সকল সত্যের মধ্যে তোমাদের পরিচালিত করবেন৷ তিনি নিজে থেকে কিছু বলেন না, কিন্তু তিনি যা শোনেন তাই বলেন, আর আগামী দিনে কি ঘটতে চলেছে তা তিনি তোমাদের কাছে বলবেন৷ 14 তিনি আমাকে মহিমান্বিত করবেন, কারণ আমি যা বলি তাই তিনি গ্রহণ করবেন এবং তোমাদের তা বলবেন৷ 15 যা কিছু পিতার, তা আমার৷ এই কারণেই আমি বলেছি য়ে সত্যের আত্মা আমার নিকট থেকে সবই গ্রহণ করবেন এবং তোমাদের তা বলবেন৷ 16 ‘আর একটু পরে তোমরা আমাকে আর দেখতে পাবে না৷ অল্প একটু পরে আবার আমাকে দেখতে পাবে৷’ 17 তখন তাঁর শিষ্যদের মধ্যে কয়েকজন পরস্পরকে বলল, ‘উনি আমাদের কি বলতে চাইছেন, ‘কিছু পরে তোমরা আমায় দেখতে পাবে না, কিছু পরে তোমরা আবার আমায় দেখতে পাবে৷’ এ কথারই বা অর্থ কি, ‘কারণ আমি পিতার কাছে যাচ্ছি’?’ 18 তাঁরা আরও বললেন, ‘তিনি ‘অল্প কিছুকাল পরে’ বলতে কি বোঝাতে চাইছেন? তিনি কি বলছেন, আমরা কিছুই বুঝতে পারছি না৷’ 19 তারা তাঁকে কি জিজ্ঞেস করতে চান তা যীশু বুঝতে পারলেন৷ তাই তিনি তাঁদের বললেন, ‘যখন আমি বললাম, ‘অল্প কিছু পরে তোমরা আমায় দেখতে পাবে না, আবার অল্প কিছু পরে আবার আমায় দেখতে পাবে,’ এর দ্বারা আমি কি বোঝাতে চাইছি এই নিয়েই কি পরস্পরের মধ্যে আলোচনা করছ? 20 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমরা কাঁদবে, ব্যথিত হবে, কিন্তু জগত সংসার তাতে আনন্দিত হবে৷ তোমরা দুঃখে ভারাক্রান্ত হবে, কিন্তু তোমাদের দুঃখ আনন্দে পরিণত হবে৷ 21 স্ত্রীলোক সন্তান প্রসবের সময় কষ্ট পায়, কারণ তখন তার প্রসব বেদনার সময়; কিন্তু যখন সে সন্তান প্রসব করে, তখন সে তার কষ্টের কথা ভুলে যায়, জগতে একজন জন্মগ্রহণ করল জেনে সে আনন্দিত হয়৷ 22 ঠিক সেই রকম, তোমরাও এখন দুঃখ পাচ্ছ, কিন্তু আমি তোমাদের আবার দেখা দেব, আর তোমাদের হৃদয় তখন আনন্দে ভরে যাবে৷ তোমাদের সেই আনন্দ কেউ তোমাদের কাছ থেকে কেড়ে নিতে পারবে না৷ 23 সেদিন তোমরা আমার কাছে কিছু চাইবে না৷ আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমরা আমার নামে যদি পিতার কাছে কিছু চাও, তিনি তোমাদের তা দেবেন৷ 24 এ পর্যন্ত তোমরা আমার নামে কিছু চাও নি৷ তোমরা চাও, তাহলে তোমরা পাবে৷ তোমাদের আনন্দ তখন পূর্ণতায় ভরে যাবে৷ 25 ‘আমি হেঁযালি করে তোমাদের এসব বলেছিলাম৷ সময় আসছে যখন আমি আর হেঁযালি করে তোমাদের কিছু বলব না, বরং পিতার বিষয় সরল ভাষায় তোমাদের কাছে ব্যক্ত করব৷ 26 সেই দিন যা চাইবার তা তোমরা আমার নামেই চাইবে, আর আমি তোমাদের বলছি না য়ে আমি তোমাদের হয়ে পিতার কাছে চাইব৷ 27 না, পিতা নিজেই তোমাদের ভালবাসেন, কারণ তোমরা আমায় ভালবেসেছ এবং তোমরা বিশ্বাস কর য়ে আমি ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছি৷ 28 আমি পিতার কাছ থেকে এই জগতে এসেছি, এখন আমি এ জগত ছেড়ে আবার পিতার কাছে ফিরে যাচ্ছি৷’ 29 তাঁর শিষ্যরা বললেন, ‘দেখুন, এখন আপনি স্পষ্টভাবে বলছেন, কোনরকম হেঁযালি করে বলছেন না৷ 30 এখন আমরা বুঝলাম য়ে আপনি সব কিছুই জানেন৷ কোন ব্যক্তি প্রশ্ন করার আগেই আপনি তার উত্তর দিতে পারেন৷ এজন্যই আমরা বিশ্বাস করি য়ে আপনি ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছেন৷’ 31 যীশু তাঁদের বললেন, ‘তাহলে তোমরা এখন বিশ্বাস করছ? 32 শোন, সময় আসছে, বলতে কি এসে পড়েছে, যখন তোমরা বিচ্ছিন্ন হয়ে য়ে যার নিজের জায়গায় চলে যাবে, আর আমায় একা ফেলে পালাবে, তবু আমি একা নই, কারণ পিতা আমার সঙ্গে আছেন৷ 33 ‘আমি তোমাদের এসব কথা বললাম যাতে তোমরা আমার মধ্যে শান্তি পাও৷ জগতে তোমরা কষ্ট পাবে, কিন্তু সাহসী হও! আমিই জগতকে জয় করেছি!’
John 17:1 এইসব কথা বলার পর যীশু স্বর্গের দিকে তাকিয়ে এই কথা বললেন, ‘পিতা, এখন সময় হয়েছে; তোমার পুত্রকে মহিমান্বিত কর, য়েন তোমার পুত্রও তোমাকে মহিমান্বিত করতে পারেন৷ 2 সমস্ত মানুষের উপর পুত্রকে তুমি অধিকার দিয়েছ যাতে তিনি তাদের সকলকে অনন্ত জীবন দিতে পারেন৷ 3 এই হল অনন্ত জীবন; তারা তোমাকে জানে য়ে তুমি একমাত্র সত্য ঈশ্বর ও তুমি যাঁকে পাঠিয়েছ সেই যীশু খ্রীষ্টকে জানে৷ 4 তুমি য়ে কাজ করার দাযিত্ব আমায় দিয়েছিলে, তা আমি শেষ করেছি ও পৃথিবীতে তোমাকে মহিমান্বিত করেছি৷ 5 তাই এখন তোমার সান্নিধ্যে আমায় মহিমান্বিত কর৷ হে পিতা, জগত সৃষ্টির পূর্বে তোমার কাছে আমার য়ে মহিমা ছিল, তুমি সেই মহিমায় এখন আমায় মহিমান্বিত কর৷ 6 ‘এই জগতের মধ্যে থেকে তুমি য়ে সব লোকদের আমায় দিয়েছ, আমি তাদের কাছে তোমার পরিচয় দিয়েছি৷ তারা তোমারই ছিল এবং তুমি তাদেরকে আমায় দিয়েছ, আর তারা তোমার শিক্ষানুসারে চলেছে৷ 7 এখন তারা বুঝেছে য়ে তুমি যা কিছু আমায় দিয়েছ তা তোমার কাছ থেকেই এসেছে৷ 8 তুমি আমায় য়ে শিক্ষা দিয়েছ তা আমি তাদের দিয়েছি, আর তা তারা গ্রহণও করেছে৷ তারা সত্যিই বুঝেছে য়ে আমি তোমারই কাছ থেকে এসেছি, আর তারা বিশ্বাস করে য়ে তুমি আমায় পাঠিয়েছ৷ 9 আমি তাদের জন্য এখন প্রার্থনা করছি৷ আমি সারা জগতের জন্য প্রার্থনা করছি না, কেবল সেই সকল লোকদের জন্য প্রার্থনা করছি যাদের তুমি দিয়েছ, কারণ তারা তোমার৷ 10 আমার যা কিছু তা তোমার, আর তোমার যা তা আমার৷ আর এদের মাধ্যমে আমি মহিমান্বিত হয়েছি৷ 11 ‘আমি আর এই জগতে থাকছি না, কিন্তু তারা এই জগতে থাকছে, আমি তোমারই কাছে যাচ্ছি৷ পবিত্র পিতা, য়ে নাম তুমি আমায় দিয়েছ, তোমার সেই নামের শক্তিতে তুমি তাদের রক্ষা কর৷ আমরা য়েমন এক, তেমনি তারা য়েন সকলে এক হতে পারে৷ 12 আমি যখন তাদের সঙ্গে ছিলাম, আমি তাদের নিরাপদে রেখেছিলাম৷ তুমি আমায় য়ে নাম দিয়েছ সেই নামের শক্তিতে তখন আমি তাদের রক্ষা করেছিলাম৷ আমি তাদের সাবধানে রক্ষা করেছি৷ তাদের মধ্যে কেউ বিনষ্ট হয় নি, একমাত্র ব্যতিক্রম সেই লোকটি, ধ্বংস হওযাই যার পরিণতি৷ শাস্ত্রের কথা সফল করার জন্যেই এই পরিণতি৷ 13 ‘এখন আমি তোমার কাছে আসছি, কিন্তু এই জগতে থাকতে থাকতে আমি এসব কথা বলছি, য়েন তারা আমার য়ে আনন্দ তা পরিপূর্ণরূপে পায়৷ 14 আমি তাদের তোমার শিক্ষা জানিয়েছি, কিন্তু জগত সংসার তাদের ঘৃণা করে, কারণ তারা এই জগতের নয়, য়েমন আমিও এই জগতের নই৷ 15 তাদের এই জগত থেকে নিয়ে যাবার জন্য আমি তোমার কাছে প্রার্থনা করছি না, কিন্তু তাদের মন্দ শক্তির হাত থেকে রক্ষা কর৷ 16 তারা এই জগতের নয়, য়েমন আমিও এ জগতের নই৷ 17 ‘সত্যের দ্বারা তোমার সেবার জন্য তুমি তাদের পবিত্র কর৷ তোমার বাক্যই সত্যস্বরূপ৷ 18 তুমি য়েমন এ জগতে আমাকে পাঠিয়েছ, আমিও তাদের তেমনি জগতের মাঝে পাঠিয়েছি৷ 19 তাদের জন্য আমি তোমার সেবায় নিজেকে নিযুক্ত করেছি, য়েন তারাও সত্যের মাধ্যমে তোমার সেবায় নিজেদের নিযুক্ত করতে পারে৷ 20 ‘আমি কেবল এদের জন্যই প্রার্থনা করছি না, এদের শিক্ষার মধ্য দিয়ে যাঁরা আমায় বিশ্বাস করবে তাদের জন্যও করছি৷ 21 পিতা, য়েমন তুমি আমাতে রয়েছ, আর আমি তোমাতে রয়েছি, তেমনি তারাও য়েন এক হয়৷ তারা য়েন আমাদের মধ্যে থাকে যাতে জগত সংসার বিশ্বাস করে য়ে তুমি আমাকে পাঠিয়েছ৷ 22 আর তুমি আমায় য়ে মহিমা দিয়েছ তা আমি তাদের দিয়েছি, যাতে আমরা য়েমন এক, তারাও তেমনি এক হতে পারে৷ 23 আমি তাদের মধ্যে, আর তুমি আমার মধ্যে থাকবে, এইভাবে তারা য়েন সম্পূর্ণভাবে এক হয়৷ জগত যাতে জানে য়ে তুমি আমায় পাঠিয়েছ৷ আর তুমি য়েমন আমায় ভালবেসেছ, তেমনি তুমি তাদেরও ভালবেসেছ৷ 24 ‘পিতা, আমি চাই, আমি য়েখানে আছি, তুমি যাদের আমায় দিয়েছ, তারাও য়েন আমার সঙ্গে সেখানে থাকে৷ আর তুমি আমায় য়ে মহিমা দিয়েছ তারা আমার সেই মহিমা য়েন দেখতে পায়, কারণ জগত সৃষ্টির আগেই তুমি আমায় ভালবেসেছ৷ 25 ন্যায়বান পিতা, জগত তোমায় জানে না, কিন্তু আমি তোমায় জানি৷ আর আমার এই শিষ্যরা জানে য়ে তুমি আমায় পাঠিয়েছ৷ 26 তুমি কে আমি তাদের কাছে তা প্রকাশ করেছি, আর এরপরেও আমি তাদের কাছে তা করতেই থাকব৷ তাহলে তুমি আমায় য়েমন ভালবেসেছ, তারা একইভাবে অন্যদের ভালবাসবে আর আমি তাদের মধ্যেই থাকব৷’
John 18:1 এই প্রার্থনার পর যীশু তাঁর শিষ্যদের নিয়ে কিদ্রোণ উপত্যকার ওপারে চলে গেলেন৷ সেখানে একটি বাগান ছিল৷ যীশু তাঁর শিষ্যদের নিয়ে সেই বাগানের মধ্যে ঢুকলেন৷ 2 যীশু তাঁর শিষ্যদের নিয়ে প্রায়ই সেখানে আসতেন৷ এইজন্য যিহূদা সেই স্থানটি জানত৷ এই যিহূদা যীশুর সঙ্গে প্রতারণা করেছিল৷ 3 সে ফরীশীদের ও প্রধান যাজকদের কাছ থেকে একদল সৈনিক ও কিছু রক্ষী নিয়ে সেখানে এল৷ তাদের হাতে ছিল মশাল, লন্ঠন ও নানা অস্ত্র৷ 4 তখন যীশু, তাঁর প্রতি কি ঘটতে চলেছে সে সবই তাঁর জানা থাকার ফলে এগিয়ে গিয়ে বললেন, ‘তোমরা কাকে খুঁজছ?’ 5 তারা তাঁকে বলল, ‘নাসরতীয় যীশুকে৷’যীশু বললেন, ‘আমিই তিনি৷’ য়ে যিহূদা যীশুর বিরুদ্ধে গিয়েছিল সেও তাদেরই সঙ্গে সেখানে দাঁড়িয়ে ছিল৷ 6 তিনি যখন তাদের বললেন, ‘আমিই তিনি৷’ তখন তারা পিছু হটে গিয়ে মাটিতে পড়ে গেল৷ 7 তাই আবার একবার তিনি তাদের জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমরা কাকে খুঁজছ?’তারা বলল, ‘নাসরতীয় যীশুকে৷’ 8 এর উত্তরে যীশু বললেন, ‘আমি তো তোমাদের আগেই বলেছি, ‘আমিই তিনি৷’ সুতরাং যদি তোমরা আমাকেই খুঁজছ, তাহলে এদের য়েতে দাও৷’ 9 এটা ঘটল যাতে তাঁর আগের বক্তব্য যথার্থ প্রতিপন্ন হয়, ‘তুমি আমায় যাদের দিয়েছ তাদের কাউকে আমি হারাই নি৷’ 10 তখন শিমোন পিতরের কাছে একটা তরোয়াল থাকায় তিনি সেটা টেনে বের করে মহাযাজকের চাকরকে আঘাত করে তার ডান কান কেটে ফেললেন৷ সেই চাকরের নাম মল্ক৷ 11 তখন যীশু পিতরকে বললেন, ‘তোমার তরোযাল খাপে ভরো, য়ে পানপাত্র পিতা আমায় দিয়েছেন, আমাকে তা পান করতেই হবে৷’ 12 এরপর সৈন্যরা ও তাদের সেনাপতি এবং ইহুদী রক্ষীরা যীশুকে গ্রেপ্তার করে বেঁধে প্রথমে হাননের কাছে নিয়ে গেল৷ 13 সেই বছর যিনি মহাযাজক ছিলেন৷ সেই কায়াফার শ্বশুর এই হানন৷ 14 এই কাযাফা ইহুদী নেতাদের পরামর্শ দিয়েছিলেন য়ে, জনস্বার্থে এক জনের মরণ হওযা ভালো৷ 15 শিমোন পিতর ও আর একজন শিষ্য যীশুর পেছনে পেছনে গেলেন৷ এই শিষ্যর সঙ্গে মহাযাজকের চেনা পরিচয় ছিল, তাই তিনি যীশুর সঙ্গে মহাযাজকের বাড়ির উঠোনে ঢুকলেন; কিন্তু পিতর ফটকের বাইরে দাঁড়িয়ে রইলেন৷ 16 তখন মহাযাজকের পরিচিত শিষ্য বাইরে এসে য়ে বালিকাটি ফটক পাহারায় ছিল তাকে বলে পিতরকে ভেতরে নিয়ে গেলেন৷ 17 তখন দ্বাররক্ষীরা পিতরকে বলল, ‘তুমিও সেই লোকটার শিষ্যদের মধ্যে একজন নও কি?’পিতর বললেন, ‘না, আমি নই!’ 18 চাকররা ও মন্দিরের রক্ষীরা শীতের জন্য কাঠ কয়লার আগুন তৈরী করে তার চারপাশে দাঁড়িয়ে আগুন পোযাচ্ছিল৷ পিতরও তাদের সঙ্গে সেখানে দাঁড়িয়ে আগুন পোযাচ্ছিলেন৷ 19 এরপর মহাযাজক যীশুকে তাঁর শিষ্যদের বিষয়ে ও তাঁর শিক্ষার বিষয়ে প্রশ্ন করতে লাগলেন৷ 20 যীশু এর উত্তরে তাঁকে বললেন, ‘আমি সর্বদাই সকলের কাছে প্রকাশ্যে কথা বলেছি৷ আমি মন্দিরের মধ্যে ও সমাজ-গৃহেতে য়েখানে ইহুদীরা একসঙ্গে সমবেত হয় সেখানে সব সময় শিক্ষা দিয়েছি৷ আর আমি কখনও কোন কিছু গোপনে বলিনি৷ 21 তোমরা আমায় কেন সে বিষয়ে প্রশ্ন করছ? যাঁরা আমার কথা শুনেছে তাদেরই জিজ্ঞেস কর আমি তাদের কি বলেছি৷ আমি কি বলেছি তারা নিশ্চয়ই জানবে!’ 22 তিনি যখন একথা বলছেন, তখন সেই মন্দির রক্ষীবাহিনীর একজন য়ে সেখানে দাঁড়িয়েছিল সে যীশুকে এক চড় মেরে বলল, ‘তোর কি সাহস, তুই মহাযাজককে এরকম জবাব দিলি!’ 23 এর উত্তরে যীশু তাকে বললেন, ‘আমি যদি অন্যায় কিছু বলে থাকি, তবে সকলকে বল কি অন্যায় বলেছি; কিন্তু আমি যদি সত্যি কথা বলে থাকি তাহলে তোমরা আমায় মারছ কেন?’ 24 এরপর হানন, যীশুকে মহাযাজক কায়াফার কাছে পাঠিয়ে দিলেন৷ যীশু তখনও বাঁধা অবস্থায় ছিলেন৷ 25 এদিকে শিমোন পিতর সেখানে দাঁড়িয়ে আগুন পোযাচ্ছিলেন, লোকেরা তাঁকে জিজ্ঞেস করল, ‘তুমিও কি ওর শিষ্যদের মধ্যে একজন?’ কিন্তু তিনি একথা অস্বীকার করে বললেন, ‘না, আমি নই৷’ 26 মহাযাজকের একজন চাকর, পিতর যার কান কেটে ফেলেছিলেন তার এক আত্মীয় বলল, ‘আমি ওর সঙ্গে তোমাকে সেই বাগানের মধ্যে দেখেছি, ঠিক বলেছি না?’ 27 তখন পিতর আবার একবার অস্বীকার করলেন; আর তখনই মোরগ ডেকে উঠল৷ 28 এরপর তারা যীশুকে কায়াফার বাড়ি থেকে রাজ্যপালের প্রাসাদে নিয়ে গেল৷ তখন ভোর হয়ে গিয়েছিল৷ তারা নিজেরা রাজ্যপালের প্রাসাদের ভেতরে য়েতে চাইল না, পাছে অশুচিহয়ে পড়ে, কারণ তারা নিস্তারপর্বের ভোজ খেতে চাইছিল৷ 29 তারপর রাজ্যপাল পীলাত তাদের সামনে বেরিয়ে এসে বললেন, ‘তোমরা এই লোকটার বিরুদ্ধে কি অভিযোগ এনেছ?’ 30 এর উত্তরে তারা পীলাতকে বলল, ‘এই লোক যদি দোষী না হত, তাহলে আমরা তোমার হাতে একে তুলে দিতাম না৷’ 31 তখন পীলাত তাদের বললেন, ‘একে নিয়ে যাও এবং তোমাদের বিধি-ব্যবস্থা অনুসারে এর বিচার কর৷’ ইহুদীর তাকে বলল, ‘আমরা কাউকে মৃত্যুদণ্ড দিতে পারি না৷’ 32 কিভাবে তাঁর মৃত্যু হবে সে বিষয়ে যীশু যা ইঙ্গিত করেছিলেন তা পূরণ করতেই এই ঘটনাগুলি ঘটল৷ 33 তখন পীলাত আবার প্রাসাদের মধ্যে গিয়ে যীশুকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি কি ইহুদীদের রাজা?’ 34 যীশু বললেন, ‘তুমি কি নিজে থেকে একথা বলছ, অথবা অন্য কেউ আমার বিষয়ে তোমাকে বলেছে?’ 35 পীলাত বললেন, ‘আমি কি ইহুদী? তোমার নিজের লোকেরা ও প্রধান যাজকেরা তোমাকে আমার হাতে সঁপে দিয়েছে৷ তুমি কি করেছ?’ 36 যীশু বললেন, ‘আমার রাজ্য এই জগতের নয়৷ যদি আমার রাজ্য এই জগতের হত তাহলে আমার লোকেরা ইহুদীদের হাত থেকে আমাকে রক্ষা করার জন্য লড়াই করত; কিন্তু না, আমার রাজ্য এখানকার নয়৷’ 37 তখন পীলাত তাঁকে বললেন, ‘তাহলে তুমি একজন রাজা?’যীশু এর উত্তরে বললেন, ‘আপনি বলছেন য়ে আমি রাজা৷ আমি এই জন্যই জন্মেছিলাম, আর এই উদ্দেশ্যেই আমি জগতে এসেছি, য়েন সত্যের পক্ষে সাক্ষ্য দিই৷ য়ে কেউ সত্যের পক্ষে আছে, সে আমার কথা শোনে৷’ 38 পীলাত তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘সত্য কি?’ এই কথা জিজ্ঞেস করে তিনি পুনরায় ইহুদীদের কাছে গেলেন, আর তাদের বললেন, ‘আমি তো এই লোকটির মধ্যে কোন দোষ দেখতে পাচ্ছি না?’ 39 কিন্তু তোমাদের এমন এক রীতি আছে, সেই অনুসারে নিস্তারপর্বের সময়ে একজন বন্দীকে মুক্তি দিয়ে থাকি৷ বেশ তোমাদের কি ইচ্ছা, আমি তোমাদের জন্য ‘ইহুদীদের রাজাকে’ ছেড়ে দেব?’ 40 তারা আবার চিত্কার করে বলল, ‘একে নয়! বারাব্বাকে!’ এই বারাব্বা ছিল একজন বিদ্রোহী৷
John 19:1 তখন পীলাত আদেশ দিলেন য়ে যীশুকে চাবুক মারার জন্য নিয়ে যাওযা হোক৷ 2 সেনারা কাঁটালতা দিয়ে একটা মুকুট তৈরী করে সেটা যীশুর মাথায় পরিয়ে দিল৷ তারা যীশুকে বেগুনে রঙের পোশাক পরাল, 3 এরপর তাঁর কাছে এগিয়ে এসে বলতে লাগল, ‘ইহুদীদের রাজা দীর্ঘজীবি হোক!’ এই বলে তারা তাঁর গালে চড় মারতে লাগল৷ 4 পীলাত আর একবার বাইরে বেরিয়ে এসে তাদের বললেন, ‘শোন, আমি যীশুকে তোমাদের সামনে নিয়ে আসছি৷ আমি চাই য়ে, তোমরা বুঝবে আমি এর কোনই দোষ খুঁজে পাচ্ছি না৷’ 5 এরপর যীশু বাইরে এলেন, তখন তাঁর মাথায় কাঁটার মুকুট ও পরণে বেগুনে পোশাক ছিল৷ পীলাত তাদের বললেন, ‘এই দেখ, সেই মানুষ!’ 6 প্রধান যাজকরা ও মন্দিরের রক্ষীরা যীশুকে দেখে চিত্কার করে বলল, ‘ওকে ক্রুশে দাও, ক্রুশে দিয়ে ওকে মেরে ফেল!’পীলাত তাদের বললেন, ‘তোমরা নিজেরাই একে নিয়ে গিয়ে ক্রুশে দাও, কারণ আমি এর কোন দোষ দেখতে পাচ্ছি না৷’ 7 ইহুদীরা তাঁকে বলল, ‘আমাদের য়ে বিধি-ব্যবস্থা আছে, সেই ব্যবস্থানুসারে ওর প্রাণদণ্ড হওযা উচিত, কারণ ও নিজেকে ঈশ্বরের পুত্র বলে দাবী করে৷’ 8 এই কথা শুনে পীলাত ভীষণ ভয় পেয়ে গেলেন৷ 9 তিনি আবার প্রাসাদের মধ্যে গেলেন৷ পীলাত যীশুকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি কোথা থেকে এসেছ?’ কিন্তু যীশু এর কোন উত্তর দিলেন না৷ 10 তখন পীলাত যীশুকে বললেন, ‘তুমি কি আমার সঙ্গে কথা বলতে চাও না? তুমি কি জান না য়ে তোমাকে মুক্তি দেওযার বা ক্রুশে বিদ্ধ করে মারবার ক্ষমতা আমার আছে?’ 11 এর উত্তরে যীশু তাঁকে বললেন, ‘ঈশ্বর না দিলে আমার ওপর আপনার কোন ক্ষমতা থাকত না৷ তাই য়ে লোক আমাকে আপনার হাতে তুলে দিয়েছে সে আরও বড় পাপে পাপী৷’ 12 একথা শুনে পীলাত তাঁকে ছেড়ে দেবার জন্য চেষ্টা করলেন, কিন্তু ইহুদীরা চিত্কার করল, ‘যদি তুমি ওকে ছেড়ে দাও, তাহলে তুমি কৈসরের বন্ধু নও৷ য়ে কেউ নিজেকে রাজা বলবে, বুঝতে হবে সে কৈসরের বিরোধিতা করছে৷’ 13 এই কথা শোনার পর পীলাত যীশুকে আবার বাইরে নিয়ে এলেন ও বিচারালয়ে বসলেন৷ এই বিচারাসন ছিল ‘পাথরে বাঁধানো’ নামে জায়গাতে৷ ইহুদীদের ভাষায় একে ‘গব্বথা’ বলে৷ 14 সেই দিনটা ছিল নিস্তারপর্ব আযোজনের দিন৷তখন প্রায় বেলা বারোটা, পীলাত ইহুদীদের বললেন, ‘এই দেখ, তোমাদের রাজা৷’ 15 তখন তারা চিত্কার করতে লাগল, ‘ওকে দূর কর! দূর কর! ওকে ক্রুশে দিয়ে মার!’পীলাত তাদের বললেন, ‘আমি কি তোমাদের রাজাকে ক্রুশে দেব?’প্রধান যাজকেরা জবাব দিলেন, ‘কৈসর ছাড়া আমাদের আর কোন রাজা নেই৷’ 16 তখন পীলাত যীশুকে ক্রুশে বিদ্ধ করে মারবার জন্য তাদের হাতে তুলে দিলেন৷শেষ পর্যন্ত তারা যীশুকে হাতে পেল৷ 17 যীশু তাঁর নিজের ক্রুশ বইতে বইতে ‘মাথার খুলি’ নামে এক জায়গায় গেলেন৷ ইহুদীদের ভাষায় যাকে বলা হোত ‘গলগথা৷’ 18 সেখানে তারা যীশুকে ক্রুশে বিদ্ধ করল৷ তাঁর সঙ্গে তাঁর দুপাশে আরও দুজনকে ক্রুশে দিল, যীশু ছিলেন তাদের মাঝখানে৷ 19 পীলাত যীশুর মাথার দিকে ক্রুশের ওপর একটি ফলক টাঙ্গিয়ে দিলেন৷ সেই ফলকে লেখা ছিল, ‘নাসরতীয় যীশু, ইহুদীদের রাজা৷’ 20 তখন অনেক ইহুদী সেই ফলকটি পড়ল, কারণ যীশুকে য়েখানে ক্রুশে দেওযা হয়েছিল তা নগরের কাছেই ছিল, আর সেই ফলকের লেখাটি ইহুদীদের ভাষা, গ্রীক ও ল্য়াটিন ভাষায় ছিল৷ 21 ইহুদীদের প্রধান যাজকেরা পীলাতকে বললেন, ‘ইহুদীদের রাজা’ লিখো না, তার পরিবর্তে লেখো, ‘এই লোক বলেছিল, আমি ইহুদীদের রাজা৷” 22 পীলাত বললেন, ‘আমি যা লিখেছি তা লিখেছি৷’ 23 যীশুকে ক্রুশে দিয়ে সেনারা যীশুর সমস্ত পোশাক নিয়ে চারভাগে ভাগ করে প্রত্যেকে এক এক ভাগ নিল৷ আর তাঁর উপরের লম্বা পোশাকটিও নিল, এটিতে কোন সেলাই ছিল না, ওপর থেকে নীচে পর্যন্ত সমস্তটাই বোনা৷ 24 তাই তারা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করল, ‘এটাকে আর ছিঁড়ব না৷ আমরা বরং ঘুঁটি চেলে দেখি কে ওটা পায়৷’ শাস্ত্রের এই বাণী এইভাবে ফলে গেল:‘তারা নিজেদের মধ্যে আমার পোশাক ভাগ করে নিল, আর আমার পোশাকের জন্য ঘুঁটি চালল৷’গীতসংহিতা 22:18সৈনিকরা তাই করল৷ 25 যীশুর ক্রুশের কাছে তাঁর মা, মাসীমা ক্লোপার স্ত্রী মরিয়ম ও মরিয়ম মগ্দলিনী দাঁড়িয়েছিলেন৷ 26 যীশু তাঁর মাকে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলেন আর য়ে শিষ্যকে তিনি ভালোবাসতেন, দেখলেন তিনিও সেখানে দাঁড়িয়ে আছেন৷ তখন তিনি তাঁর মাকে বললেন, ‘হে নারী, ঐ দেখ তোমার ছেলে৷’ 27 পরে তিনি তাঁর সেই শিষ্যকে বললেন, ‘ঐ দেখ, তোমার মা৷’ আর তখন থেকে তাঁর মাকে সেই শিষ্য নিজের বাড়িতে রাখার জন্য নিয়ে গেলেন৷ 28 এরপর যীশু বুঝলেন য়ে সবকিছু এখন সম্পন্ন হয়েছে৷ শাস্ত্রের সকল বাণী য়েন সফল হয় তাই তিনি বললেন, ‘আমার পিপাসা পেয়েছে৷’ 29 সেখানে একটা পাত্রে সিরকা ছিল, তাই সৈন্যরা একটা স্পঞ্জ সেই সিরকায় ডুবিয়ে এসোব নলে করে তা যীশুর মুখের কাছে ধরল৷ 30 যীশু সেই সিরকার স্বাদ নেবার পর বললেন, ‘সমাপ্ত হল!’ এরপর তিনি মাথা নীচু করে প্রাণ ত্যাগ করলেন৷ 31 ঐ দিনটা ছিল আযোজনের দিন৷ য়েহেতু বিশ্রামবার একটি বিশেষ দিন, ইহুদীরা চাইছিল না য়ে দেহগুলি ক্রুশের ওপরে থাকে৷ তাই ইহুদীরা পীলাতের কাছে গিয়ে তাঁকে আদেশ দিতে অনুরোধ করল, য়েন ক্রুশবিদ্ধ লোকদের পা ভেঙ্গে দেওযা হয় যাতে তাড়াতাড়ি তাদের মৃত্যু হয় এবং মৃতদেহগুলি ঐ দিনই ক্রুশ থেকে নামিয়ে ফেলা যায়৷ 32 সুতরাং সেনারা এসে প্রথম লোকটির পা ভাঙ্গল, আর তার সঙ্গে যাকে ক্রুশে দেওযা হয়েছিল তারও পা ভাঙ্গল৷ 33 কিন্তু তারা যীশুর কাছে এসে দেখল য়ে তিনি মারা গেছেন, তখন তাঁর পা ভাঙ্গল না৷ 34 কিন্তু একজন সৈনিক যীশুর পাঁজরের নীচে বর্শা দিয়ে বিদ্ধ করল, আর সঙ্গে সঙ্গে সেখান দিয়ে রক্ত ও জল বেরিয়ে এল৷ 35 এই ঘটনা য়ে দেখল সে এবিষয়ে সাক্ষ্য দিল তা আপনারা সকলেই বিশ্বাস করতে পারেন, আর তার সাক্ষ্য সত্য৷ আর সে জানে য়ে সে যা বলছে তা সত্য৷ 36 এই সকল ঘটনা ঘটল যাতে শাস্ত্রের এই কথা পূর্ণ হয়: ‘তাঁর একটি অস্থিও ভাঙ্গবে না৷’ 37 আবার শাস্ত্রে আর এক জায়গায় আছে, ‘তারা যাঁকে বিদ্ধ করেছে তাঁরই দিকে দৃষ্টিপাত করবে৷’ 38 এরপর অরিমাথিযার য়োষেফ যিনি যীশুর শিষ্য ছিলেন, কিন্তু ইহুদীদের ভয়ে তা গোপনে রাখতেন, তিনি যীশুর দেহটি নিয়ে যাবার জন্য পীলাতের কাছে অনুমতি চাইলেন৷ পীলাত তাঁকে অনুমতি দিলে তিনি এসে যীশুর দেহটি নামিয়ে নিয়ে গেলেন৷ 39 নীকদীমও এসেছিলেন (য়োষেফের সঙ্গে)৷ এই সেই ব্যক্তি যিনি যীশুর কাছে আগে একরাতের অন্ধকারে দেখা করতে এসেছিলেন৷ নীকদীম আনুমানিক ত্রিশ কিলোগ্রাম গন্ধ-নির্যাস মেশানো অগুরুর প্রলেপ নিয়ে এলেন৷ 40 এরপর ইহুদীদের কবর দেওযার রীতি অনুসারে যীশুর দেহে সেই প্রলেপ মাখিয়ে তাঁরা তা মসীনার কাপড় দিয়ে জড়ালেন৷ 41 যীশু সেখানে ক্রুশ বিদ্ধ হয়েছিলেন, তার কাছে একটি বাগান ছিল, সেই বাগানে একটি নতুন কবর ছিল সেখানে আগে কাউকে কখনও কবর দেওযা হয় নি৷ 42 এই কবরটি নিকটেই ছিল, যীশুর দেহ তাঁরা সেই কবরেব মধ্যে রাখলেন, কারণ ইহুদীদের বিশ্রামের দিনটি শুরু হতে চলেছিল৷
John 20:1 রবিবার দিন সকাল সকাল মরিয়ম মগ্দলিনী সেই সমাধির কাছে গেলেন, য়েখানে যীশুর দেহ রাখা ছিল৷ তখনও অন্ধকার ছিল৷ তিনি দেখলেন য়ে সমাধি গুহার মুখে য়ে বড় পাথরখানি ছিল তা সরিয়ে ফেলা হয়েছে৷ 2 তখন তিনি শিমোন পিতর ও যীশুর সেই শিষ্য যাকে যীশু ভালোবাসতেন তাঁদেব কাছে ছুটে গেলেন৷ মরিয়ম বললেন, ‘তারা প্রভুকে সমাধি থেকে তুলে নিয়ে গেছে৷ আমরা কেউ জানি না, তারা কোথায় তাঁকে রেখেছে!’ 3 তখন পিতর ও সেই অন্য শিষ্য সেখান থেকে বেরিয়ে সমাধির কাছে গেলেন৷ 4 তাঁরা দুজনে এক সঙ্গে দৌড়াতে লাগলেন, কিন্তু সেই অন্য শিষ্য পিতরের থেকে আগে দৌড়ে সেই সমাধির কাছে প্রথমে পৌঁছালেন৷ 5 তিনি ঝুঁকে পড়ে দেখলেন, সেখানে সেই মসীনার কাপড়গুলি পড়ে আছে, তবু ভেতরে গেলেন না৷ 6 শিমোন পিতর যিনি তাঁর পেছনে পেছনে আসছিলেন তিনিও এসে পৌঁছালেন আর সমাধি গুহার মধ্যে ঢুকলেন৷ তিনি দেখলেন, মসীনার সেই কাপড়গুলি সেখানে পড়ে আছে৷ 7 আর কবর দেবার য়ে কাপড়টি দিয়ে যীশুর মুখ ও মাথা ঢাকা ছিল, সেটি ঐ মসীনার কাপড়ের সঙ্গে নেই, তা গোটানো অবস্থায় এক পাশে পড়ে আছে৷ 8 এরপর সেই শিষ্য যিনি প্রথমে সমাধির কাছে গিয়েছিলেন তিনিও ভেতরে ঢুকলেন এবং সবকিছু দেখে বিশ্বাস করলেন৷ 9 কারণ শাস্ত্রে একথা বলা হয়েছে য়ে মৃতদের মধ্য থেকে তাঁকে অবশ্যই পুনরুত্থিত হতে হবে৷ সেটি তাঁরা তখনও বোঝেন নি৷ 10 এরপর সেই শিষ্যরা নিজেদের জায়গায় ফিরে গেলেন৷ 11 মরিয়ম কিন্তু সমাধির বাইরে দাঁড়িয়ে কাঁদছিলেন৷ তিনি কাঁদতে কাঁদতে ঝুঁকে পড়ে সমাধির ভেতরটা লক্ষ্য করলেন৷ 12 আর দেখলেন শুভ্র পোশাক পরে দুজন স্বর্গদূত যীশুর দেহ য়েখানে শোযানো ছিল সেখানে বসে আছেন৷ একজন তাঁর মাথার দিকে, আর একজন তাঁর পায়ের দিকে৷ 13 তাঁরা মরিয়মকে বললেন, ‘নারী, তুমি কাঁদছ কেন?’মরিয়ম তাঁদের বললেন, ‘তারা আমার প্রভুকে নিয়ে গেছে, আর আমি জানি না তাঁকে কোথায় রেখেছে৷’ 14 একথা বলতে বলতে তিনি যীশুকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলেন কিন্তু চিনতে পারলেন না য়ে উনি যীশু৷ 15 যীশু তাঁকে বললেন, ‘নারী, তুমি কাঁদছ কেন? তুমি কাকে খুঁজছ?’মরিয়ম তাঁকে বাগানের মালী মনে করে বললেন, ‘মহাশয়, আপনি যদি তাঁকে নিয়ে গিয়ে থাকেন তবে আমায় বলুন তাঁকে কোথায় রেখেছেন, আমি তাঁকে নিয়ে যাব৷’ 16 যীশু তাঁকে বললেন, ‘মরিয়ম৷’তিনি ফিরে তাকালেন, আর তাঁকে ইহুদীদের ভাষায় বললেন, ‘রব্বি’ যার অর্থ ‘গুরু’৷ 17 যীশু তাঁকে বললেন, ‘আমাকে ধরো না, কারণ আমি উর্দ্ধে পিতার কাছে এখনও যাইনি৷ কিন্তু তুমি আমার ভাইদের কাছে যাও, আর তাদের বল, ‘যিনি আমার পিতা ও তোমাদের পিতা আর আমার ঈশ্বর ও তোমাদের ঈশ্বর, উর্দ্ধে আমি তাঁর কাছে যাচ্ছি৷” 18 তখন মরিয়ম মগ্দলিনী শিষ্যদের কাছে গিয়ে এই খবর জানিয়ে বললেন, ‘আমি প্রভুকে দেখেছি!’ আর জানালেন য়ে প্রভু তাঁকে এই কথা বলেছেন৷ 19 দিনটা ছিল রবিবার, সেদিন সন্ধ্যায় শিষ্যরা একটি ঘরে জড়ো হলেন৷ ইহুদীদের ভয়ে তাঁরা ঘরের দরজায় চাবি দিয়ে দিলেন৷ এমন সময় যীশু এসে তাঁদের মাঝে দাঁড়ালেন, আর বললেন, ‘তোমাদের শান্তি হোক৷’ 20 একথা বলার পর তিনি তাঁদেরকে তাঁর হাত ও পাঁজরের পাশটা দেখালেন৷ শিষ্যেরা প্রভুকে দেখতে পেয়ে খুবই আনন্দিত হলেন৷ 21 এরপর যীশু আবার তাঁদের বললেন, ‘তোমাদের শান্তি হোক! পিতা য়েমন আমাকে পাঠিয়েছেন, আমিও তেমনি তোমাদের পাঠাচ্ছি৷’ 22 এই বলে তিনি তাঁদের ওপর ফুঁ দিলেন, আর বললেন, ‘তোমরা পবিত্র আত্মা গ্রহণ কর৷ 23 যদি তোমরা কোন লোকের পাপ ক্ষমা কর, তবে তাদের পাপ ক্ষমা পাবে, আর যদি কারো পাপ ক্ষমা না কর তার পাপের ক্ষমা হবে না৷’ 24 কিন্তু যীশু যখন সেখানে এসেছিলেন তখন সেই বারোজন শিষ্য়ের একজন থোমা,যাঁর অপর নাম দিদুমঃ তিনি তাঁদের সঙ্গে ছিলেন না৷ 25 অন্য শিষ্যেরা তাঁকে বললেন, ‘আমরা প্রভুকে দেখেছি!’ কিন্তু তিনি তাঁদের বললেন, ‘আমি যদি তাঁর দুহাতে পেরেকের চিহ্ন না দেখি, আর সেই পেরেক বিদ্ধ জায়গায় আমার আঙ্গুল না দিই, আর তাঁর পাঁজরের নীচে আমার হাত না দিই, তাহলে আমি কিছুতেই বিশ্বাস করব না৷’ 26 এক সপ্তাহ পর তাঁর শিষ্যরা আবার একটি ঘরের মধ্যে ছিলেন, আর সেদিন থোমা তাঁদের সঙ্গে ছিলেন৷ ঘরেব দরজাগুলি তখন চাবি দেওযা ছিল৷ এমন সময়ে যীশু সেখানে এলেন ও তাঁদের মাঝখানে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘তোমাদের শান্তি হোক৷’ 27 এরপর তিনি থোমাকে বললেন, ‘এখানে তোমার আঙ্গুল দাও, আর আমার হাত দুটি দেখ৷ তোমার হাত বাড়িয়ে আমার পাঁজরের নীচে দাও৷ সন্দেহ কোরো না, বিশ্বাস কর৷’ 28 এর উত্তরে থোমা তাঁকে বললেন, ‘প্রভু, আমার, ঈশ্বর আমার৷’ 29 যীশু তাঁকে বললেন, ‘তুমি আমায় দেখেছ তাই বিশ্বাস করেছ৷ ধন্য তারা, যাঁরা আমাকে না দেখেও বিশ্বাস করে৷’ 30 যীশু তাঁর শিষ্যদের সামনে আরো অনেক অলৌকিক চিহ্নকার্য় করেছিলেন, যা এই বইতে সব লেখা হয় নি৷ 31 কিন্তু এসব লেখা হয়েছে যাতে তোমরা বিশ্বাস করতে পার য়ে যীশুই খ্রীষ্ট, ঈশ্বরের পুত্র; আর এই বিশ্বাসের দ্বারা তাঁর নামের মধ্য দিয়ে তোমরা সকলে য়েন শাশ্বত জীবন লাভ করতে পার৷
John 21:1 এরপর তিবিরিযা হ্রদের ধারে যীশু আবার তাঁর শিষ্যদের দেখা দিলেন৷ এইভাবে তিনি দেখা দিয়েছিলেন: 2 শিমোন পিতর, থোমা য়াঁর অপর নাম দিদুমঃ, গালীলের কান্নাবাসী নথনেল, সিবদিয়ের ছেলেরা ও অপর দুজন শিষ্য, এঁরা সকলে এক জায়গায় ছিলেন৷ 3 শিমোন পিতর তাঁদের বললেন, ‘আমি মাছ ধরতে যাচ্ছি৷’অপর শিষ্যরা তাঁকে বললেন, ‘আমরাও তোমার সঙ্গে যাব৷’ তাঁরা সকলে বেরিয়ে গেলেন এবং নৌকায় গিয়ে উঠলেন, কিন্তু সেই রাত্রে তাঁরা কিছুই ধরতে পারলেন না৷ 4 এইভাবে যখন ভোর হয়ে আসছে, এমন সময় যীশু তীরে এসে দাঁড়ালেন; কিন্তু শিষ্যরা তাঁকে চিনতে পারলেন না য়ে তিনি যীশু৷ 5 যীশু তাঁদের বললেন, ‘বাছারা, কিছু মাছ পেলে?’শিষ্যরা বললেন, ‘না৷’ 6 তিনি তাঁদের বললেন, ‘নৌকার ডান দিকে জাল ফেল তাহলে তোমরা কিছু মাছ পাবে৷’ সেইভাবে তাঁরা জাল ফেললে জালে এত মাছ পড়ল য়ে তাঁরা তা টেনে তুলতে পারলেন না৷ 7 তখন য়ে শিষ্যকে যীশু বেশী ভালবাসতেন, তিনি পিতরকে বললেন, ‘উনি প্রভু!’ তাই শিমোন যখন শুনলেন য়ে উনি প্রভু, তখন তিনি গায়ের উপর একটা কাপড় জড়িয়ে নিলেন কারণ তিনি তখন কাজের সুবিধার জন্য খালি গায়ে ছিলেন ও হ্রদের জলে ঝাঁপিয়ে পড়লেন৷ 8 কিন্তু অন্যান্য শিষ্যরা নৌকাতে করে তীরে এলেন৷ তাঁরা মাছ ভর্তি জালটা টেনে আনছিলেন৷ তাঁরা তীর থেকে বেশী দূরে ছিলেন না, প্রায় তিনশো ফুট দূরে ছিলেন৷ 9 ডাঙ্গায় উঠে তাঁরা দেখলেন সেখানে কাঠ কয়লার আগুন জ্বলছে, তার ওপর কিছু মাছ আর রুটিও আছে৷ 10 যীশু তাঁদের বললেন, ‘তোমরা এখন য়ে মাছ ধরলে তার থেকে কিছু নিয়ে এস৷’ 11 শিমোন পিতর উঠে নৌকায় গেলেন এবং জাল টেনে তীরে তুললেন, সেই জালে একশো তিপান্নটা বড় মাছ ছিল, আর এত মাছেতেও সেই জাল ছেঁড়েনি৷ 12 যীশু তাঁদের বললেন, ‘এখানে এসে সকালের জলখাবার খেয়ে নাও৷’ কিন্তু শিষ্যদের মধ্যে কারোর জিজ্ঞাসা করার সাহস হল না, ‘আপনি কে?’ কারণ তাঁরা বুঝেছিলেন য়ে তিনিই প্রভু৷ 13 যীশু গিয়ে সেই রুটি নিয়ে তাঁদের দিলেন, আর সেই মাছ নিয়েও তাঁদের দিলেন৷ 14 মৃত্যু থেকে পুনরুত্থানের পর এই নিয়ে তৃতীয় বার যীশু তাঁর শিষ্যদের দেখা দিলেন৷ 15 তাঁরা খাওযা শেষ করবার পর যীশু শিমোন পিতরকে বললেন, ‘য়োহনের ছেলে শিমোন, এই লোকদের চেয়ে তুমি কি আমায় বেশী ভালবাসো?’পিতর তাঁকে বললেন, ‘হ্যাঁ, প্রভু, আপনি জানেন য়ে আমি আপনাকে ভালবাসি৷’যীশু পিতরকে বললেন, ‘আমার মেষশাবকদেরতত্ত্বাবধান কর৷’ 16 তিনি তাঁকে দ্বিতীয়বার জিজ্ঞেস করলেন, ‘য়োহনের ছেলে শিমোন, তুমি কি আমায় ভালবাসো?’ পিতর তাঁকে বললেন, ‘হ্যাঁ, প্রভু, আপনি জানেন য়ে আমি আপনাকে ভালবাসি৷’যীশু পিতরকে বললেন, ‘আমার মেষদের তত্ত্বাবধান কর৷’ 17 যীশু পিতরকে তৃতীয়বার বললেন, ‘য়োহনের ছেলে শিমোন, তুমি কি আমায় ভালবাসো?’একথা তিনবার শোনায় পিতর দুঃখ পেলেন৷ তাই তিনি যীশুকে বললেন, ‘প্রভু, আপনি সবই জানেন৷ আপনি জানেন য়ে আমি আপনাকে ভালবাসি৷’যীশু তাঁকে বললেন, ‘আমার মেষদের তত্ত্বাবধান কর৷ 18 আমি তোমাকে সত্যি বলছি, যখন তুমি যুবক ছিলে, তখন তুমি তোমার নিজের কোমর বন্ধনী বাঁধতে আর য়েখানে মন চাইত য়েতে; কিন্তু যখন বৃদ্ধ হবে, তখন তুমি তোমার হাত বাড়িয়ে দেবে আর অন্য কেউ তোমার কোমর বন্ধনী পরিয়ে দেবে৷ আর য়েখানে তুমি য়েতে চাইবে না সেখানে নিয়ে যাবে৷’ 19 এই কথা বলে যীশু ইঙ্গিত করলেন, পিতর কি প্রকার মৃত্যু দ্বারা ঈশ্বরের গৌরব করবেন৷ এসব কথা বলার পর তিনি পিতরকে বললেন, ‘আমায় অনুসরণ কর৷’ 20 পিতর ঘুরে দেখলেন, যাঁকে যীশু ভালোবাসতেন সেই শিষ্য তাঁদের পেছনে আসছেন৷ এই শিষ্যই ভোজের সময় যীশুর বুকের ওপর হেলান দিয়েছিলেন, আর বলেছিলেন, ‘প্রভু, কে আপনাকে শত্রুর হাতে তুলে দেবে?’ 21 তাই পিতর তাঁকে দেখতে পেয়ে যীশুকে বললেন, ‘প্রভু, ওর কি হবে?’ 22 যীশু পিতরকে বললেন, ‘আমি যদি চাই য়ে, আমি না আসা পর্যন্ত ও থাকবে, তাতে তোমার কি? তুমি আমায় অনুসরণ কর৷’ 23 তাই ভাইদের মধ্যে একথা ছড়িয়ে গেল য়ে, সেই শিষ্য মরবে না৷ কিন্তু যীশু তাকে বলেন নি য়ে তিনি মরবেন না৷ কেবল বলেছিলেন, ‘আমি যদি চাই য়ে আমি না আসা পর্যন্ত সে এখানে থাকবে, তাতে তোমার কি?’ 24 ইনিই সেই শিষ্য যিনি এইসব বিষয়ে সাক্ষ্য দিয়েছেন, আর তিনিই এইসব লিপিবদ্ধ করেছেন৷ আমরা জানি তাঁর সাক্ষ্য সত্য৷ 25 যীশু আরো অনেক কাজ করেছিলেন৷ সেগুলি যদি এক এক করে লেখা য়েত, তবে আমার ধারণা লিখতে লিখতে এত সংখ্য়ক বই হোত য়ে জগতে তা ধরতো না৷
Acts 1:1 প্রিয় থিয়ফিল, আমার প্রথম বইটিতে যীশু য়ে সব কাজ করেছিলেন ও শিক্ষা দিয়েছিলেন তার বিবরণ ছিল৷ 2 আমি যা লিখেছি, তাতে শুরু থেকে তাঁর স্বর্গারোহণের দিন পর্যন্ত তিনি যা করেছিলেন এবং শিখিয়েছিলেন তার সব বিবরণ আছে৷ স্বর্গারোহণের পূর্বে যীশু তাঁর মনোনীত প্রেরিতদের, পবিত্র আত্মার সাহায্যে তাদের কি করণীয় তা জানিয়েছিলেন৷ 3 মৃত্যুর পর যীশু, তাঁর প্রেরিতদের কাছে দেখালেন য়ে তিনি জীবিত এবং অনেক পরাক্রম কার্য়্য় সাধন করে তিনি এর প্রমাণ দিলেন৷ মৃতদের মধ্য থেকে যীশুর পুনরুত্থানের পর চল্লিশ দিনের মধ্যে প্রেরিতর যীশুকে বহুবার দেখেছিলেন৷ এই সময়ে যীশু তাঁদের ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয়ে নানা কথা বলেছিলেন৷ 4 আর এক সময় যখন তিনি তাঁদের সঙ্গে আহার করছিলেন, তখন আদেশ দিয়েছিলেন, য়েন তারা জেরুশালেম ছেড়ে না যান৷ যীশু বলেছিলেন, ‘পিতা তোমাদের য়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, য়ে বিষয়ে এর আগেও আমি তোমাদের জানিয়েছিলাম, তোমরা সেই প্রতিশ্রুত বিষয় পাবার অপেক্ষায় জেরুশালেমে থেকো৷ 5 কারণ য়োহন জলে বাপ্তাইজ করতেন, কিন্তু কিছু দিনের মধ্যেই তোমরা পবিত্র আত্মায় বাপ্তাইজিত হবে৷’ 6 এরপর প্রেরিতেরা একত্র হয়ে যীশুকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘প্রভু, এই সময় আপনি কি ইস্রায়েলকে তাঁদের রাজ্য ফিরিয়ে দেবেন?’ 7 তিনি তাঁদের বললেন, ‘পিতা নিজেই কেবল সময় ও তারিখগুলি নির্ধারণ করেন, এসব বিষয় তোমরা জানতে পারবে না; 8 কিন্তু যখন পবিত্র আত্মা তোমাদের কাছে আসবেন, তখন তোমরা শক্তি পাবে আর তোমরা আমার সাক্ষী হবে৷ লোকদের কাছে তোমরা আমার কথা বলবে৷ প্রথমে তোমরা জেরুশালেমের লোকদের কাছে সাক্ষ্য দেবে তারপর সমগ্র যিহূদিযা ও শমরিযায় এমনকি জগতের শেষ সীমানা পর্যন্ত তোমরা আমার কথা বলবে৷’ 9 এই কথা বলার পর প্রেরিতদের চোখের সামনে তাঁকে আকাশে তুলে নেওযা হল৷ আর এক খানা মেঘ তাঁকে তাদের দৃষ্টির আড়াল করে দিল৷ 10 যীশু যখন যাচ্ছেন, আর প্রেরিতেরা আকাশের দিকে তাকিয়ে আছেন, ঠিক সেই সময সাদা ধবধবে পোশাক পরা দুই ব্যক্তি তাদের পাশে এসে দাঁড়ালেন৷ 11 সেই দুই ব্যক্তি প্রেরিতদের বললেন, ‘হে গালীলের লোকেরা, তোমরা আকাশের দিকে তাকিয়ে রয়েছ কেন? এই য়ে যীশু,যাকে তোমাদের সামনে থেকে স্বর্গে তুলে নেওযা হল, তাঁকে য়ে ভাবে তোমরা স্বর্গে য়েতে দেখলে, ঠিক সেই ভাবেই তিনি ফিরে আসবেন৷’ 12 এরপর তাঁরা জৈতুন পর্বতমালা থেকে নেমে জেরুশালেমে ফিরে গেলেন৷ জেরুশালেম থেকে পাহাড়টির দূরত্ব ছিল এক বিশ্রামবারের পথ অর্থাত্ প্রায় আধ মাইল৷ 13 এরপর প্রেরিতেরা শহরে প্রবেশ করে তাঁরা য়ে বাড়িতে থাকতেন, তার উপরের তলার কামরায় গেলেন৷ এই প্রেরিতদের নাম ছিল; পিতর, য়োহন, যাকোব, আন্দরিয়, ফিলিপ, থোমা, বর্থলময়, মথি, আলফেয়ের ছেলে যাকোব, শিমোন যাকে দেশভক্ত বলা হত এবং যাকোবের ছেলে যিহূদা৷ 14 প্রেরিতেরা সকলেই একসঙ্গে সেখানে একই উদ্দেশ্যে সর্বদা প্রার্থনা করছিলেন৷ তাঁদের সঙ্গে ছিলেন কয়েকজন স্ত্রীলোক, যীশুর মা মরিয়ম ও তাঁর ভাইয়েরা৷ 15 ঐ দিনগুলিতে যখন খ্রীষ্ট বিশ্বাসীরা একত্রিত হয়ে প্রার্থনা করছিলেন, সেখানে প্রায় এক’শ কুড়ি জন উপস্থিত ছিলেন৷ সেই সময় পিতর উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, 16 ‘ভাইয়েরা যিহূদা সম্পর্কে পবিত্র আত্মা দাযূদের মুখ দিয়ে য়ে কথা বহুপূর্বেই বলেছিলেন, শাস্ত্রের সেই কথা পূর্ণ হওযার প্রযোজন ছিল৷ যিহূদাই সেই ব্যক্তি য়ে যীশুর গ্রেপ্তারকারীদের পরিচালনা দিয়েছিল৷ যিহূদা ছিল আমাদেরই একজন, য়ে আমাদের পরিচর্য়া কাজের সহভাগীও ছিল৷’ 17 18 এই লোক তার এই অন্যায় কাজের দ্বারা অর্থ রোজগার করে তাই দিয়ে এক টুকরো জমি কিনেছিল; কিন্তু সে মাথাটা নিচু করে মাটিতে পড়ল, আর তার পেট ফেটে ভেতরের নাড়ী-ভুঁড়ি সব বেরিয়ে পড়ল৷ 19 যাঁরা জেরুশালেমে বাস করে, তারা সকলেই একথা জানে৷ তাই সেই জমিটিকে তাদের ভাষায় বলে হকলদামা যার অর্থ, ‘রক্তের ভূমি৷’ 20 বাস্তবিক, ‘গীতসংহিতায় লেখা আছে:‘তার গৃহ য়েন পরিত্যক্ত হয়; কেউ য়েন তার মধ্যে বাস না করে৷’ গীতসংহিতা 69:25আরও লেখা আছে: ‘আর অন্য কেউ তার স্থান দখল করুক৷’গীতসংহিতা 109:8 21 তাই য়োহন যখন বাপ্তাইজ করতে শুরু করেন, সেই সময় থেকে প্রভু যীশুর স্বর্গারোহণের সময় পর্যন্ত যতদিন প্রভু যীশু আমাদের সঙ্গে ছিলেন, সেই দিনগুলিতে যাঁরা সব সময় আমাদের সঙ্গে থাকতেন, তাঁদের মধ্যে একজনকে আমাদের মনোনীত করা প্রযোজন৷ য়ে আমাদের দলে য়োগদান করবে, তাঁকে অবশ্যই আমাদের সঙ্গে যীশুর পুনরুত্থানের সাক্ষী হতে হবে৷’ 22 23 তখন প্রেরিতেরা দুজন লোককে উপস্থিত করলেন, য়োষেফ যাকে বার্শব্বা বলে ডাকে যার অপর নাম যুষ্ট আর মত্তথিয়কে৷ 24 এরপর তারা প্রার্থনা সহকারে বললেন, ‘প্রভু, তুমি সকলের অন্তঃকরণ জান৷ এই দুজনের মধ্যে কাকে তুমি মনোনীত করেছ তা আমাদের দেখিয়ে দাও৷ যিহূদা তার নিজের জায়গায় যাবার জন্য প্রেরিতরূপে এই সেবার কাজ ত্যাগ করে গেছে, তার জায়গায় কাকে তুমি মনোনীত করেছ তা আমাদের দেখাও৷’ 25 26 এরপর তাঁরা ঐ দুজনের জন্য ঘুঁটি চাললেন আর মত্তথিয়ের নাম উঠল৷ এইভাবে তিনি এগারো জন প্রেরিতের সঙ্গে প্রেরিত বলে গন্য হলেন৷ 27 28 29 30 31 32
Acts 2:1 এরপর পঞ্চাশত্তমীর দিনটি এল, সেই দিনটিতে প্রেরিতেরা সকলে একই জায়গায় সমবেত ছিলেন৷ 2 সেই সময় হঠাত্ আকাশ থেকে ঝোড়ো হাওযার শব্দের মত প্রচণ্ড একটা শব্দ শোনা গেল, আর য়ে ঘরে তাঁরা বসেছিলেন, সেই ঘরের সর্বত্র তা ছড়িয়ে গেল৷ 3 তাঁরা তাঁদের সামনে আগুনের শিখার মতো কিছু দেখতে পেলেন, সেই শিখাগুলি তাদের উপর ছড়িয়ে পড়ল ও পৃথক পৃথক ভাবে তাঁদের প্রত্যেকের উপর বসল৷ 4 তাঁরা পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হলেন আর ভিন্ন ভাষায় কথা বলতে লাগলেন৷ পবিত্র আত্মাই তাদের এইভাবে কথা বলার শক্তি দিলেন৷ 5 সেই সময় প্রত্যেক জাতির থেকে ধার্মিক ইহুদীরা এসে জেরুশালেমে বাস করছিল৷ 6 সেই শব্দ শুনে বহুলোক সেখানে এসে জড়ো হল৷ তারা সকলে হতবাক হয়ে গেল, কারণ প্রত্যেকে তাদের নিজের নিজের ভাষায় প্রেরিতদের কথা বলতে শুনছিল৷ 7 এতে তারা আশ্চর্য হয়ে পরস্পর বলতে লাগল, ‘দেখ! এই য়ে লোকেরা কথা বলছে, এরা সকলে গালীলের লোক নয় কি! 8 তবে আমরা কেমন করে ওদের প্রত্যেককে আমাদের নিজের নিজের মাতৃভাষায় কথা বলতে শুনছি? 9 এখানে আমরা যাঁরা আছি, আমরা ভিন্ন ভিন্ন দেশের লোক; পার্থীয়, মাদীয়, এলমীয়, মিসপতামিযা, যিহূদিযা, কাপ্পাদকিযা, পন্ত, আশিযা, ফরুগিযা, পাম্ফুলিযা ও মিশর, 10 কুরীমীর লুবিযার কাছে কিছু অঞ্চলের লোক, রোম থেকে এসেছে এমন অনেক লোক এবং ইহুদী বা ইহুদী ধর্মে দীক্ষিত অনেকে৷ 11 ক্রীতীয় ও আরবীয় আমরা সকলেই আমাদের মাতৃভাষায় ঈশ্বরের মহাপরাক্রান্ত কাজের বর্ণনা এদের মুখে শুনেছি৷’ 12 তারা হতবুদ্ধি হয়ে বিস্ময়ের সঙ্গে পরস্পর বলাবলি করতে লাগল, ‘এর অর্থ কি? 13 কিন্তু অন্য লোকেরা বিদ্রূপের ভঙ্গীতে বলতে লাগল, ‘ওরা দ্রাক্ষারস পান করে মাতাল হয়েছে৷’ 14 তখন পিতর ঐ এগারো জন প্রেরিতের সঙ্গে উঠে দাঁড়িয়ে জোর গলায় তাঁদের উদ্দেশ্যে বললেন, ‘হে আমার ইহুদী ভাইয়েরা, আজ জেরুশালেমে যত লোক বাস করেন তাদের সকলের উদ্দেশ্যে বলছি, আপনাদের এর অর্থ জানা দরকার৷ 15 আপনারা যা মনে করছেন তা নয়, এই লোকেরা কেউ মাতাল নয়, কারণ এখন মাত্র সকাল ন’টা৷ 16 কিন্তু ভাববাদী য়োয়েল এবিষয়েই বলেছেন, 17 ‘ঈশ্বর বলছেন:শেষের দিনগুলিতে এরকমই হবে; শেষকালে আমি সকল লোকের উপরে আমার আত্মা ঢেলে দেব, তাতে তোমাদের ছেলেমেয়েরা ভাববাণী বলবে, তোমাদের যুবকেরা দর্শন পাবে, আর তোমাদের বৃদ্ধ লোকেরা স্বপ্ন দেখবে৷ 18 হ্যাঁ, আমি আমার সেবকদের, স্ত্রী ও পুরুষ সকলের উপরে আমার আত্মা ঢেলে দেব, আর তারা ভাববানী বলবে৷ 19 আমি উর্দ্ধে আকাশে বিস্ময়কর সব লক্ষণ দেখাবো ও নীচে পৃথিবীতে নানা অদ্ভুত চিহ্ন, রক্ত, আগুন ও ধোঁযার কুণ্ডলী দেখাবো৷ 20 প্রভুর সেই মহান ও মহিমাময় দিন আসার আগে, সূর্য় কালো ও চাঁদ রক্তের মতো লাল হয়ে যাবে৷ 21 আর য়ে কেউ প্রভুর নামে ডাকবে, সে উদ্ধার পাবে৷’য়োয়েল 2:28-32 22 ‘হে ইহুদী ভাইয়েরা, একথা শুনুন; নাসরতীয় যীশুর দ্বারা ঈশ্বর বহু অলৌকিক ও আশ্চর্য কাজ করে আপনাদের কাছে প্রমাণ দিয়েছেন য়ে তিনি সেই ব্যক্তি যাকে ঈশ্বর পাঠিয়েছেন; আর আপনারা এই ঘটনাগুলি জানেন৷ 23 যীশুকে আপনাদের হাতে সঁপে দেওযা হল, আর আপনারা তাঁকে হত্যা করলেন৷ মন্দ লোকদের দিয়ে আপনারা তাঁকে ক্রুশের উপর পেরেক বিদ্ধ করলেন৷ ঈশ্বর জানতেন য়ে এসব ঘটবে; আর তাই ছিল ঈশ্বরের পরিকল্পনা, যা তিনি বহুপূর্বেই নিরূপণ করেছিলেন৷ 24 যীশু মৃত্যু যন্ত্রণা ভোগ করলেন, কিন্তু ঈশ্বর সেই বিভীষিকা থেকে তাঁকে উদ্ধার করলেন৷ ঈশ্বর যীশুকে মৃতদের মধ্য থেকে তুলে আনলেন৷ মৃত্যু যীশুকে তার কবলে রাখতে সক্ষম হল না৷ 25 কারণ দাযূদ যীশুর বিষয়ে বলেছিলেন:‘আমি প্রভুকে সবসময়ই আমার সামনে দেখেছি; আমাকে স্থির রাখতে তিনি আমার ডানদিকে অবস্থান করছেন৷ 26 এইজন্য আমার অন্তর আনন্দিত, আর আমার জিভ উল্লাস করে৷ আমার এই দেহ ও প্রত্যাশায় জীবিত থাকবে৷ 27 কারণ তুমি আমার প্রাণ মৃত্যুলোকে পরিত্যাগ করবে না৷ তুমি তোমার পবিত্র ব্যক্তিকে ভয় পেতে দেবে না৷ 28 তোমার সান্নিধ্যে আমার জীবন তুমি আনন্দে ভরিয়ে দেবে৷ গীতসংহিতা 16:8-11 29 ‘আমার ভাইয়েরা, আমাদের সেই শ্রদ্ধেয় পূর্বপুরুষ দাযূদের বিষয়ে আমি দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে পারি য়ে, তিনি মারা গেছেন ও তাঁকে কবর দেওযা হয়েছে, আর আজও তাঁর কবর আমাদের মাঝে আছে৷ 30 কিন্তু তিনি একজন ভাববাদী ছিলেন এবং জানতেন ঈশ্বর শপথ করে এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন য়ে, তাঁর বংশের একজনকে তাঁরই মতো রাজা করে সিংহাসনে বসাবেন৷ 31 পরে কি হবে তা আগেই জানতে পেরে দাযূদ যীশুর পুনরুত্থানের বিষয়ে বলেছিলেন:‘তাঁকে মৃত্যুলোকে পরিত্যাগ করা হয় নি বা তাঁর দেহ কবরের মধ্যে ক্ষয় প্রাপ্ত হয় নি৷’ 32 কিন্তু ঈশ্বর মৃত্যুর পর যীশুকেই পুনরুত্থিত করেছেন; আর আমরা সকলে এই ঘটনার সাক্ষী আছি৷ আমরা সকলে তাঁকে দেখেছি৷ 33 যীশুকে স্বর্গে তুলে নেওযা হল; এখন যীশু ঈশ্বরের কাছে তাঁর ডানদিকে অবস্থান করছেন৷ পিতা যীশুকে পবিত্র আত্মা দিয়েছেন, পিতা তাঁকে সেই পবিত্র আত্মা দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন৷ এখন যীশু সেই পবিত্র আত্মাকে ঢেলে দিলেন, তোমরা এখন তাই দেখছ ও শুনছ৷ 34 কারণ দাযূদ স্বর্গারোহন করেন নি, আর তিনি নিজে একথা বলছেন,‘প্রভু ঈশ্বর আমার প্রভুকে বলছেন; 35 য়ে পর্যন্ত না আমি তোমার শত্রুদের তোমার পা রাখার জায়গায় পরিণত করি, তুমি আমার ডানদিকে বস৷’গীতসংহিতা 110:1 36 ‘তাই ইস্রায়েলের সমস্ত পরিবার নিশ্চিতভাবে জানুক য়ে যাকে আপনারা ক্রুশবিদ্ধ করেছিলেন, সেই যীশুকেই ঈশ্বর প্রভু ও খ্রীষ্ট উভয়ই করেছেন৷’ 37 লোকেরা এই কথা শুনে খুবই দুঃখিত হল৷ তারা পিতর ও অন্যান্য প্রেরিতদের বলল, ‘ভাইয়েরা, আমরা কি করব?’ 38 পিতর তাঁদের বললেন, ‘আপনারা মন-ফিরান, আর প্রত্যেকে পাপের ক্ষমার জন্য যীশু খ্রীষ্টের নামে বাপ্তাইজ হোন, তাহলে আপনারা দানরূপে এই পবিত্র আত্মা পাবেন৷ 39 কারণ এই প্রতিশ্রুতি আপনাদের জন্য, আপনাদের সন্তানদের জন্য আর যাঁরা দূরে আছে তাদেরও জন্য৷ আমাদের ঈশ্বর প্রভু তাঁর নিজের কাছে যাদের ডেকেছেন, এই দান তাদের সকলের জন্য৷’ 40 পিতর তাঁদের আরো অনেক কথা বলে সাবধান করে দিলেন; তিনি তাঁদের অনুনয়ের সুরে বললেন, ‘বর্তমান কালের মন্দ লোকদের থেকে নিজেদের বাঁচান!’ 41 যাঁরা পিতরের কথা গ্রহণ করলেন, তাঁরা বাপ্তিস্ম নিলেন৷ এর ফলে সেদিন কম বেশী তিন হাজার লোক খ্রীষ্টবিশ্বাসীবর্গের সঙ্গে যুক্ত হলেন৷ 42 বিশ্বাসীরা প্রায়ই একত্র হয়ে মনোয়োগের সঙ্গে প্রেরিতদের শিক্ষা গ্রহণ করতেন৷ বিশ্বাসীবর্গ নিজেদের মধ্যে সব কিছু ভাগ করে নিতেন এবং একই সঙ্গে আহার ও প্রার্থনা করতেন৷ 43 প্রেরিতেরা অনেক অলৌকিক ও আশ্চর্য কাজ করতে লাগলেন; প্রত্যেকের অন্তরে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে গভীর ভক্তি ছিল৷ 44 বিশ্বাসীরা সকলে একসঙ্গে থাকতেন এবং সবকিছু নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিতেন৷ 45 তাঁরা তাঁদের স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করে, যার য়েমন প্রযোজন সেই অনুসারে ভাগ করে নিতেন৷ 46 তাঁরা প্রতিদিন মন্দির প্রাঙ্গণে গিয়ে একত্রিত হতেন, একই উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে তারা সেখানে য়েতেন৷ তাঁরা তাঁদের বাড়িতে একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করতেন আর ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিয়ে আনন্দের সঙ্গে খাদ্য গ্রহণ করতেন৷ 47 বিশ্বাসীরা ঈশ্বরের প্রশংসা করতেন, আর সকলেই তাঁদের ভালোবাসতেন৷ প্রতিদিন অনেকে উদ্ধার লাভ করছিলেন আর যাঁরা উদ্ধার লাভ করছিলেন তাদেরকে প্রভু বিশ্বাসীবর্গের সঙ্গে যুক্ত করতে থাকলেন৷
Acts 3:1 একদিন পিতর ও য়োহন মন্দিরে গেলেন, তখন বেলা প্রায় তিনটে৷ এই সময়েই মন্দিরে রোজ প্রার্থনা হত৷ 2 যখন তাঁরা মন্দির প্রাঙ্গনে যাচ্ছিলেন, সেখানে একটা লোককে দেখা গেল৷ সে জন্ম থেকেই খোঁড়া, চলতে পারত না৷ তার বন্ধুরা প্রতিদিন তাকে মন্দির চত্বরে বয়ে নিয়ে আসত আর মন্দিরের ‘সুন্দর’ নামে য়ে ফটক আছে সেখানে নিয়ে গিয়ে তাকে বসিয়ে রাখত৷ যাঁরা মন্দিরে ঢুকত, সে তাদের কাছে কিছু অর্থ ভিক্ষা চাইত৷ 3 সেদিন এই লোকটা পিতর ও য়োহনকে মন্দিরে ঢুকতে দেখে তাদের কাছ থেকে ভিক্ষা চাইতে লাগল৷ 4 পিতর ও য়োহন সেই খোঁড়া লোকটির দিকে একদৃষ্টে চেয়ে বললেন, ‘আমাদের দিকে তাকাও!’ 5 সেই লোকটা তখন কিছু অর্থ পাবার আশায় তাঁদের দিকে তাকালো৷ 6 কিন্তু পিতর তাকে বললেন, ‘আমার কাছে সোনা বা রূপো নেই, আমার কাছে যা আছে আমি তোমাকে তাই দিচ্ছি৷ নাসরতীয় যীশুর নামে তুমি উঠে দাঁড়াও ও হেঁটে বেড়াও৷’ 7 এই বলে পিতর তার ডান হাত ধরে তাকে তুললেন, সঙ্গে সঙ্গে সে তার পায়ে ও গোড়ালিতে বল পেল, 8 আর লাফিয়ে উঠে দাঁড়াল ও চলতে লাগল৷ তারপর সে তাদের সঙ্গে মন্দিরের মধ্যে ঢুকে সেখানে হেঁটে লাফিয়ে ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগল৷ 9 লোকেরা দেখল সেই লোকটি হাঁটছে ও ঈশ্বরের প্রশংসা করছে৷ তারা চিনতে পারল মন্দিরের ‘সুন্দর’ নামে ফটকের সামনে বসে ভিক্ষা করত য়ে লোক, সেই লোকই হেঁটে বেড়াচ্ছে ও ঈশ্বরের প্রশংসা করছে৷ ঐ লোকটির জীবনে যা ঘটেছে তা দেখে তারা আশ্চর্য হয়ে গেল, তারা বুঝে উঠতে পারল না এমন বিস্ময়কর ব্যাপার কি করে ঘটল৷ 10 11 লোকটি পিতর ও য়োহনকে ধরে দাঁড়িয়ে ছিল; তাই সকলেই এই লোকটির সুস্থতা দেখে আশ্চর্য হয়ে শলোমনের বারান্দায় পিতর ও য়োহনের কাছে দৌড়ে এল৷ 12 এই দেখে পিতর জনতার উদ্দেশ্যে বললেন, ‘হে আমার ইহুদী ভাইয়েরা, আপনারা এতে আশ্চর্য হচ্ছেন কেন? আপনারা আমাদের দিকে এমনভাবে দেখছেন, য়েন আমরা নিজেদের ক্ষমতার গুণে একে চলবার শক্তি দিয়েছি৷ আপনারা কি মনে করেন য়ে আমরা খুব ধার্মিক, তাই এই কাজ করতে পেরেছি? 13 না! ঈশ্বরই একাজ করেছেন৷ তিনি অব্রাহামের, ইসহাকের ও যাকোবের ঈশ্বর, আমাদের পিতৃপুরুষদের ঈশ্বর, তিনিই তাঁর দাস যীশুকে মহিমান্বিত করেছেন৷ এই যীশুকেই আপনারা মৃত্যুদণ্ডের জন্য শত্রুর হাতে তুলে দিয়েছিলেন৷ সেদিন পীলাত যখন তাঁকে ছেড়ে দেবেন বলে মনস্থ করেছিলেন, তখন আপনারা তাঁকে অগ্রাহ্য করেছিলেন৷ আপনারা বলেছিলেন, যীশুকে আপনারা চান না৷ 14 আপনারা সেই পবিত্র ও নির্দোষ ব্যক্তিকে অগ্রাহ্য করে তাঁর বদলে একজন খুনীকে আপনাদের জন্য ছেড়ে দিতে বলেছিলেন৷ 15 যিনি জীবনদাতা, আপনারা তাঁকে হত্যা করেছিলেন; কিন্তু ঈশ্বর তাঁকে মৃতদের মধ্যে থেকে পুনরুত্থিত করেছেন৷ আমরা এসবের সাক্ষী৷ 16 এই যীশুর পরাক্রমেই এই খোঁড়াটি সুস্থতা লাভ করেছে৷ এসব ঘটেছে কারণ আমরা যীশুর ক্ষমতায় বিশ্বাস করেছি৷ আপনারা এই লোকটিকে দেখেছেন ও তাকে চেনেন৷ যীশুর উপর নির্ভর করায় সে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে গেছে; নিজ চক্ষে আপনারা তা দেখেছেন৷’ 17 ‘এখন আমার ভাইয়েরা, আমি জানি য়ে অজ্ঞতা বশতঃই আপনারা এমন কাজ করেছিলেন, আর আপনাদের নেতারাও তাই করেছিলেন৷ 18 কিন্তু ভাববাদীদের মাধ্যমে ঈশ্বর তাঁর খ্রীষ্টের দুঃখভোগের কথা যা জানিয়েছেন, সে সবই তিনি এইভাবে পূর্ণ করেছেন৷ 19 তাই আপনারা মন-ফিরান এবং ঈশ্বরের কাছে ফিরে আসুন, য়েন আপনাদের পাপ মুছে দেওযা হয়৷ 20 এইভাবে য়েন প্রভুর কাছ থেকে আত্মিক বিশ্রামের সময় আসে; আর তিনি য়েন আপনাদের জন্য আগেই য়ে খ্রীষ্টকে মনোনীত করেছেন সেই যীশুকে পাঠান৷ 21 যতক্ষণ পর্যন্ত না সব কিছু পুনঃস্থাপন হয় যা বহুপূর্বে ঈশ্বর তাঁর পবিত্র ভাববাদীদের মুখ দিয়ে বলেছেন, ততক্ষণ খ্রীষ্টকে অবশ্যই স্বর্গে থাকতে হবে৷ 22 কারণ মোশি বলেছেন, ‘প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের জন্য তোমাদের ভাইদের মধ্য থেকে আমার মত এক ভাববাদীকে উত্পন্ন করবেন৷ তিনি তোমাদের যা যা বলবেন, তোমরা তাঁর সকল কথা শুনবে৷ 23 য়ে কেউ তাঁর কথা না শুনবে, সে লোকদের মধ্য থেকে সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হবে৷’ 24 হ্যাঁ, সমস্ত ভাববাদী এমনকি শমূয়েল ও তার পরে য়ে সকল ভাববাদী এসেছেন তাঁরা সকলে এই দিনের কথা বলে গেছেন৷ 25 আপনারা তো ভাববাদীদের বংশধর, আপনারা ঈশ্বরের সেই চুক্তির উত্তরাধিকারী, য়ে চুক্তি ঈশ্বর আপনাদের পিতৃপুরুষের সাথে করেছিলেন৷ তিনি তো অব্রাহামকে বলেছিলেন, ‘তোমার বংশ দ্বারা পৃথিবীর সকল জাতিই আশীর্বাদ লাভ করবে৷’ 26 ঈশ্বর তাঁর দাসকে পুনরুত্থিত করে প্রথমে তাঁকে আপনাদের কাছেই পাঠাবেন, য়েন আপনাদের প্রত্যেককে মন্দ থেকে ফিরিয়ে এনে আশীর্বাদ করতে পারেন৷ 27 28 29 30 31
Acts 4:1 পিতর ও য়োহন যখন লোকদের সাথে কথা বলছিলেন, তখন মন্দির থেকে ইহুদী যাজকরা, মন্দিরের রক্ষীবাহিনীর সেনাপতি ও সদ্দূকীরা তাঁদের কাছে এসে হাজির হল৷ 2 পিতর ও য়োহন লোকদের শিক্ষা দিচ্ছিলেন ও মৃতদের মধ্য থেকে যীশুর পুনরুত্থানের বিষয়ে লোকদের কাছে বলছিলেন বলে ঐ লোকেরা বিরক্ত হয়েছিল৷ 3 তারা পিতর ও য়োহনকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেল ও পরের দিন পর্যন্ত তাদের কারাগারে রাখল; কারণ তখন সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল৷ 4 কিন্তু অনেকে যাঁরা পিতর ও য়োহনের মুখ থেকে সেই শিক্ষা শুনেছিল, তাদের মধ্যে অনেকেই যীশুর উপর বিশ্বাস করল৷ যাঁরা বিশ্বাস করল, সেই বিশ্বাসীদের মধ্যে পুরুষ মানুষই ছিল প্রায় পাঁচ হাজার৷ 5 পরের দিন তাদের ইহুদী নেতারা, সমাজপতি ও ব্যবস্থার শিক্ষকরা সকলে জেরুশালেমে জড়ো হলেন৷ 6 সেখানে হানন মহাযাজক, কাযাফা, য়োহন, আলেকসান্দার ও মহাযাজকের পরিবারের সব লোক ছিলেন৷ 7 পিতর ও য়োহনকে তাদের সামনে দাঁড় করিয়ে ইহুদী নেতারা প্রশ্ন করলেন, ‘তোমরা কোন্ শক্তিতে বা অধিকারে এসব কাজ করছ?’ 8 তখন পিতর পবিত্র আত্মায় পরিপূর্ণ হয়ে তাঁদের বললেন, ‘মাননীয় জন-নেতৃবৃন্দ ও সমাজপতিরা: 9 একজন খোঁড়া লোকের উপকার করার জন্য যদি আজ আমাদের প্রশ্ন করা হয় য়ে সে কিভাবে সুস্থ হল, 10 তাহলে আপনারা সকলে ও ইস্রায়েলের সকল লোক একথা জানুক, য়ে এটা সেই নাসরতীয় যীশু খ্রীষ্টের শক্তিতে হল! যাকে আপনারা ক্রুশে বিদ্ধ করে হত্যা করেছিলেন, ঈশ্বর তাকে মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত করেছেন৷ হ্যাঁ, তাঁরই মাধ্যমে এই লোক আজ সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে আপনাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছে৷ 11 যীশু হলেন‘সেই পাথর যাকে রাজমিস্ত্রিরা অর্থাত্ আপনারা অগ্রাহ্য় করে সরিয়ে দিয়েছিলেন৷ তিনিই এখন কোণের প্রধান পাথর হয়ে উঠেছেন৷’ গীতসংহিতা 118:22 12 যীশুই একমাত্র ব্যক্তি, যিনি মানুষকে উদ্ধার করতে পারেন৷ জগতে তাঁর নামই একমাত্র শক্তি যা মানুষকে উদ্ধার করতে পারে৷’ 13 পিতর ও য়োহনের নির্ভীকতা দেখে ও তাঁরা য়ে লেখাপড়া না জানা সাধারণ মানুষ তা বুঝতে পেরে পর্ষদ আশ্চর্য হয়ে গেল৷ তখন তারা বুঝতে পারল য়ে পিতর ও য়োহন যীশুর সঙ্গে ছিলেন৷ 14 য়ে লোকটি সুস্থ হয়েছিল, সে পিতর ও য়োহনের সঙ্গে আছে দেখে পর্ষদ কিছুই বলতে পারল না৷ 15 তারা পিতর ও য়োহনকে সভাকক্ষ থেকে বাইরে য়েতে বলল৷ তাঁরা বাইরে গেলে নেতৃবর্গ নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে বলল, 16 ‘এই লোকদের নিয়ে কি করা যায়? কারণ এটা ঠিক য়ে ওরা য়ে উল্লেখয়োগ্য অলৌকিক কাজ করেছে তা জেরুশালেমের সকল লোক জেনে গেছে; আর আমরাও একথা অস্বীকার করতে পারি না৷ 17 কিন্তু একথা য়েন লোকদের মধ্যে আর না ছড়ায়, তাই এস আমরা এদের ভয় দেখিয়ে সাবধান করে দিই, য়েন এই লোকের নামের বিষয় উল্লেখ করে তারা কোন কথা না বলে৷’ 18 তাই তারা পিতর ও য়োহনকে আবার ভেতরে ডাকল; আর যীশুর নামে কোন কিছু বলতে বা শিক্ষা দিতে নিষেধ করল৷ 19 কিন্তু পিতর ও য়োহন এর উত্তরে তাদের বললেন, ‘আপনারাই বিচার করুন, ঈশ্বরের বাক্যকে অমান্য করা বা আপনাদের বাধ্য থাকা কোনটি ঈশ্বরের দৃষ্টিতে সঠিক হবে? 20 কারণ আমরা যা দেখেছি ও শুনেছি তা না বলে থাকতে পারব না৷’ 21 এরপর তারা পিতর ও য়োহনকে আরো কিছুক্ষণ শাসিয়ে ছেড়ে দিল৷ তারা ওদের শাস্তি দেবার মতো কোন কিছুই পেল না, কারণ যা ঘটেছিল তা দেখে সব লোক ঈশ্বরের প্রশংসা করছিল৷ আর য়ে লোকটির ওপর আরোগ্যদানের এই অলৌকিক কাজ হয়েছিল, তার বয়স চল্লিশের ওপর ছিল৷ 22 23 পিতর ও য়োহন ছাড়া পেয়ে নিজের লোকদের কাছে ফিরে গেলেন; আর প্রধান যাজকগণ ও ইহুদী নেতারা তাদের যা যা বলেছিলেন, সে সব কথা তাঁদের বললেন৷ 24 একথা শুনে বিশ্বাসীরা সকলে সমবেত কণ্ঠে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে এই প্রার্থনা জানাল, ‘প্রভু, আকাশমণ্ডল, পৃথিবী, সমুদ্র আর এসবের মধ্যে যা কিছু আছে সে সব কিছুর সৃষ্টিকর্তা, তুমিই৷ 25 তুমি তোমার দাস আমাদের পিতৃপুরুষ দাযূদের মুখ দিয়ে পবিত্র আত্মার দ্বারা বলেছ:‘জাতিবৃন্দ কেন ক্রুদ্ধ হল? কেনই বা লোকেরা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে অসার পরিকল্পনা করল? 26 জগতের রাজারা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হল, আর শাসকেরা প্রভু ঈশ্বরের বিরুদ্ধে ও তাঁর খ্রীষ্টের বিরুদ্ধে এক হল৷’গীতসংহিতা 2:1-2 27 হ্যাঁ, এই শহরেই তোমার পবিত্র দাস যীশুর বিরুদ্ধে, যাকে তুমি অভিষিক্ত করেছ তাঁর বিরুদ্ধে হেরোদ, পন্তীয়, পীলাত, ইহুদীরা ও অইহুদীরা এক হয়েছিল৷ 28 তোমার শক্তিতে ও তোমার ইচ্ছায় পূর্বেই যা ঘটবে বলে তুমি ঠিক করেছিলে, সেই কাজ করতেই তারা একত্র হয়েছিল৷ 29 আর এখন, হে প্রভু, তাদের এই শাসানি তুমি শোন৷ প্রভু আমরা তোমার দাস; তোমার এই দাসদের সাহসের সঙ্গে তোমার কথা বলবার ক্ষমতা দাও৷ 30 লোককে সুস্থতা দেবার জন্য তোমার হাত তুমি বাড়িয়ে দাও; তোমার পবিত্র দাস যীশুর নামে য়েন অলৌকিক ও আশ্চর্য সব কাজ সম্পন্ন হয়৷’ 31 সেই বিশ্বাসীরা প্রার্থনা শেষ করলে, তাঁরা য়েখানে একত্রিত হয়েছিলেন সেই জায়গা কেঁপে উঠল৷ তাঁরা সকলে পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হলেন আর অসীম সাহসে ঈশ্বরের কথা বলতে লাগলেন৷ 32 বিশ্বাসীদের সকলের হৃদয় ও মন এক ছিল৷ একজনও নিজের সম্পত্তির কোন কিছুই নিজের বলে মনে করতেন না, কিন্তু তাঁদের সকল জিনিস তাঁরা পরস্পর ভাগ করে দিতেন৷ 33 প্রেরিতের মহাশক্তিতে মৃতদের মধ্য থেকে প্রভু যীশুর পুনরুত্থানের বিষয়ে সাক্ষ্য দিতেন; আর তাঁদের সকলের ওপর মহাআশীর্বাদ ছিল৷ 34 তাঁদের দলের মধ্যে কারোর কোন কিছুর অভাব ছিল না, কারণ যাদেব জমি-জমা বা বাড়ি ছিল তাঁরা তা বিক্রি করে সেই সম্পত্তির মূল্য নিয়ে এসে প্রেরিতদের দিতেন৷ 35 পরে যার য়েমন প্রযোজন, প্রেরিতরা তাকে তেমনি দিতেন৷ 36 বিশ্বাসীবর্গের একজনের নাম ছিল য়োষেফ; প্রেরিতেরা তাঁকে বার্ণবা বলে ডাকতেন; এই নামের অর্থ ‘উত্সাহদাতা’৷ ইনি ছিলেন লেবীয়, কুপ্রীয়ে তাঁর জন্ম হয়৷ 37 য়োষেফের একটি জমি ছিল, তিনি তা বিক্রি করে সেই টাকা নিয়ে এসে প্রেরিতদের কাছে দিলেন৷
Acts 5:1 অননিয় নামে একজন লোক ছিল, তার স্ত্রীর নাম সাফীরা৷ অননিয় তার একটি জমি বিক্রি করে 2 সেই টাকার কিছু অংশ প্রেরিতদের কাছে জমা দিল; কিন্তু গোপনে টাকার কিছু অংশ নিজের কাছে রাখল৷ তার স্ত্রী এবিষয় জানত ও একমত ছিল৷ 3 তখন পিতর বললেন, ‘অননিয় তুমি কেন শয়তানকে তোমার অন্তরে কাজ করতে দিলে? তুমি পবিত্র আত্মার কাছে কেন মিথ্যা বললে ও জমি বিক্রির টাকা থেকে কিছুটা নিজেদের জন্য রেখে দিলে? 4 সেই জমি বিক্রি করার আগে কি তা তোমারই ছিল না? আর তা বিক্রি করার পর সেই টাকা কি তোমার অধিকারেই ছিল না? তোমরা এই ধারণা কোথা থেকে পেলে? মানুষের কাছে নয় কিন্তু তুমি ঈশ্বরের কাছে মিথ্যা বললে৷’ 5 এই কথা শোনার সঙ্গে সঙ্গে অননিয় মাটিতে পড়ে মারা গেল; আর যাঁরা একথা শুনল, তারা সকলে অত্যন্ত ভয় পেয়ে গেল৷ পরে যুবকেরা উঠে তাকে কাপড়ে জড়িয়ে বাইরে নিয়ে গিয়ে কবর দিল৷ 6 7 এই ঘটনার পর প্রায় তিন ঘন্টা কেটে গেল, এমন সময় অননিয়ের স্ত্রী সাফীরা সেখানে এল, তার স্বামীর কি হয়েছে সে তার কিছুই জানত না৷ 8 পিতর তাকে বললেন, ‘আমায় বলতো তোমার সেই জমি কি এত টাকায় বিক্রি করেছিলে?’সে বলল, ‘হ্যাঁ, ঐ টাকায় বিক্রি করেছি৷’ 9 তখন পিতর তাকে বললেন, ‘তোমরা দুজনে প্রভুর আত্মাকে পরীক্ষা করার জন্য কেন একচিত্ত হলে? শোন! যাঁরা তোমার স্বামীকে কবর দিতে গিয়েছিল, তারা দরজায় এসে দাঁড়িয়েছে; তারা তোমাকেও নিয়ে যাবে৷’ 10 সঙ্গে সঙ্গে সেও তার পায়ের কাছে পড়ে মারা গেল৷ ঐ যুবকেরা ভেতরে এসে তাকে মৃত দেখল এবং বাইরে নিয়ে গিয়ে তার স্বামীর পাশে তাকে কবর দিল৷ 11 তখন সমস্ত মণ্ডলী ও যাঁরা তা শুনল, তাদের সকলের মধ্যে মহাভয়ের সঞ্চার হল৷ 12 প্রেরিতদের মাধ্যমে লোকদের মধ্যে নানান অলৌকিক কাজ হতে লাগল৷ প্রেরিতেরা শলোমনের বারান্দায় একত্রিত হতেন৷ তাঁদের সকলের উদ্দেশ্য একই ছিল৷ 13 অন্যেরা তাদের সঙ্গে য়োগ দিতে সাহস করত না; কিন্তু সকলে তাদের প্রশংসা করত৷ 14 আর দলে দলে অনেক পুরুষ ও স্ত্রীলোক যীশুতে বিশ্বাসী হয়ে খ্রীষ্ট বিশ্বাসীবর্গের সঙ্গে যুক্ত হতে থাকল৷ 15 লোকেরা, এমন কি তাদের অসুস্থ রোগীদের নিয়ে এসে রাস্তার মাঝে তাদের বিছানায় বা খাটিযাতে শুইয়ে রাখত, য়েন পিতর যখন সেখান দিয়ে যাবেন তখন অন্ততঃ তাঁর ছাযাও তাদের উপর পড়ে; আর তাতেই তারা সুস্থ হয়ে য়েত৷ 16 জেরুশালেমের চারপাশের বিভিন্ন নগর থেকে অনেক লোক অসুস্থ ও অশুচি আত্মায় ভর করা লোকদের নিয়ে এসে ভীড় করত; আর তারা সকলেই সুস্থ হত৷ 17 এরপর মহাযাজক এবং তাঁর সঙ্গীরা অর্থাত্ সদ্দূকী দলের লোকেরা ঈর্ষায় জ্বলে উঠল৷ 18 তারা প্রেরিতদের গ্রেপ্তার করে কারাগারে আটকে দিল; 19 কিন্তু রাতের বেলায় প্রভুর এক দূত সেই কারাগারের দরজা খুলে দিলেন৷ তিনি তাদের পথ দেখিয়ে কারাগারের বাইরে নিয়ে গিয়ে বললেন, 20 ‘যাও মন্দিরের মধ্যে দাঁড়িয়ে তোমরা লোকদের এই নতুন জীবনের সকল বার্তা শোনাও৷’ 21 প্রেরিতেরা আজ্ঞা অনুসারে ভোর বেলায় মন্দিরে গিয়ে শিক্ষা প্রচার করতে লাগলেন৷এদিকে মহাযাজক ও তার সঙ্গীরা, ইহুদী সমাজের গন্যমান্য লোকদের এক মহাসভা ডাকল; আর প্রেরিতদের সেখানে নিয়ে আসার জন্য কারাগারে লোক পাঠালো৷ 22 কিন্তু সেই লোকেরা কারাগারে এসে কারাগারের মধ্যে প্রেরিতদের দেখতে পেল না৷ তাই তারা ফিরে গিয়ে বলল, 23 ‘আমরা দেখলাম কারাগারের তালা বেশ ভালভাবেই বন্ধ আছে, দরজায় দরজায় পাহারাদাররা দাঁড়িয়ে আছে, কিন্তু দরজা খুলে ভেতরে গিয়ে আমরা কাউকে দেখতে পেলাম না, দেখলাম কারাগার খালি পড়ে আছে৷’ 24 মন্দির রক্ষীবাহিনীর প্রধান ও প্রধান যাজকেরা এই কথা শুনে হতবুদ্ধি হয়ে ভাবতে লাগল, ‘এর পরিণতি কি হবে?’ 25 সেই সময় একজন এসে তাদের বলল, ‘শুনুন! য়ে লোকদের আপনারা কারাগারে রেখেছিলেন, দেখলাম তাঁরা মন্দিরের মধ্যে দাঁড়িয়ে লোকদের শিক্ষা দিচ্ছেন৷’ 26 তখন রক্ষীবাহিনীর প্রধান তার লোকদের নিয়ে সেখানে গেল ও প্রেরিতদের নিয়ে এল৷ তারা কোনরকম জোর করল না, কারণ তারা লোকদের ভয় করতে লাগল, পাছে তারা পাথর ছুঁড়ে তাদের মেরে ফেলে৷ 27 তারা প্রেরিতদের নিয়ে এসে ইহুদী নেতাদের সামনে দাঁড় করালে মহাযাজক প্রেরিতদের জিজ্ঞাসাবাদ করলেন৷ 28 তিনি বললেন, ‘ঐ মানুষটির বিষয়ে কোন শিক্ষা দিতে আমরা তোমাদের দৃঢ়ভাবে নিষেধ করেছিলাম৷ ভেবে দেখ তোমরা কি করেছ? তোমরা তোমাদের শিক্ষায় জেরুশালেম মাতিয়ে তুলেছ, আর সেই লোকের মৃত্যুর জন্য সব দোষ আমাদের ওপর চাপাতে চাইছ৷’ 29 তখন পিতর ও অন্য প্রেরিতেরা এর উত্তরে বললেন, ‘মানুষের হুকুম মানার চেয়ে বরং ঈশ্বরের আদেশ আমাদের অবশ্যই পালন করতে হবে৷ 30 আপনারা যীশুকে হত্যা করেছিলেন, তাঁকে বিদ্ধ করে ক্রুশে টাঙ্গিয়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু ঈশ্বর আমাদের সেই পিতৃপুরুষদের ঈশ্বর যীশুকে মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত করেছেন৷ 31 সেই যীশুকে ঈশ্বর নেতা ও ত্রাণকর্তারূপে উন্নত করে নিজের ডান দিকে স্থাপন করেছেন, যাতে ইহুদীরা তাদের মন ফিরায় ও তিনি তাদের পাপের ক্ষমা দিতে পারেন৷ 32 আর আমরা এসব ঘটতে দেখেছি, বলতে পারি য়ে এসব সত্য৷ পবিত্র আত্মাও দেখাচ্ছেন য়ে এসব সত্য৷ যাঁরা তাঁর বাধ্য তাদের তিনি পবিত্র আত্মা দান করেছেন৷’ 33 মহাসভার সভ্যরা এসব কথা শুনে প্রচণ্ড রেগে উঠল, আর তারা প্রেরিতদের হত্যা করতে চাইল৷ 34 কিন্তু সেই মহাসভার একজন সভ্য, গমলীয়েল ইনি ব্যবস্থার শিক্ষক, যাকে সকলে মান্য করত, তিনি উঠে দাঁড়িয়ে ঐ প্রেরিতদের কিছু সময়ের জন্য সভা থেকে বাইরে নিয়ে য়েতে বললেন৷ 35 পরে তিনি তাদের বললেন, ‘হে ইস্রায়েলীরা, এই লোকদের নিয়ে তোমরা যা করতে যাচ্ছ সে বিষয়ে সাবধান৷ 36 কারণ এর কিছু আগে থুদা নামে একজন লোক নিজেকে মহান বলে দাবী করেছিল৷ প্রায় চারশো লোক তার অনুসারী হয়েছিল; আর সে নিহত হলে তার অনুগামীরা সব য়ে যার পালিয়ে গেল, তার কোন চিহ্নই রইল না৷ 37 থুদার পরে আদমসুমারীর সময় গালীলীয় যিহূদার উদয় হয়, সেও বেশ কিছু লোককে তার দলে টানে; পরে সেও নিহত হয়, আর তার অনুগামীরাও ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়৷ 38 তাই বর্তমানে এই অবস্থা দেখে আমি তোমাদের বলছি: এই লোকেদের থেকে দূরে থাক, তাদের ছেড়ে দাও, কারণ তাদের এই পরিকল্পনা অথবা এই কাজ যদি মানুষের থেকে হয় তবে তা ব্যর্থ হবে৷ 39 কিন্তু যদি ঈশ্বরের কাছ থেকে হয়ে থাকে, তাহলে তোমরা তা বন্ধ করতে পারবে না৷ হয়তো দেখবে য়ে তোমরা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছ৷’ তখন তারা এই পরামর্শ গ্রহণ করল৷ 40 তারা প্রেরিতদের ভেতরে ডেকে এনে চাবুক মারল, যীশুর নামে একটি কথাও বলতে নিষেধ করে তাদের ছেড়ে দিল৷ 41 প্রেরিতেরা মহাসভার সভাস্থল থেকে বেরিয়ে চলে গেলেন, আর যীশুর নামের জন্য তাঁরা য়ে নির্য়াতন ও অপমান সহ্য করার য়োগ্য বলে বিবেচিত হয়েছেন, এই কথা ভেবে আনন্দ করতে লাগলেন৷ 42 এবং দমে না গিয়ে প্রতিদিন মন্দিরের মধ্যে ও বিভিন্ন বাড়িতে যীশুর বিষয়ে শিক্ষা ও সুসমাচারের প্রচার করে দেখালেন য়ে যীশুই হলেন খ্রীষ্ট৷
Acts 6:1 বহুলোক দলে দলে খ্রীষ্টের অনুগামী হতে লাগল৷ সেই সময় গ্রীক ভাষাভাষী বিশ্বাসীরা অপর ইহুদী বিশ্বাসীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করল, য়ে দৈনিক প্রযোজনীয় সামগ্রী বিতরণের সময়ে তাদের বিধবাদের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করা হচ্ছে৷ 2 তখন সেই বারোজন প্রেরিত সমস্ত অনুগামীদের ডেকে বললেন, ‘লোকদের খাদ্য পরিবেশন করার জন্যে ঈশ্বরের বাক্য প্রচারের কাজ বন্ধ করা ঠিক নয়৷ 3 তাই আমার ভাইয়েরা, তোমরা নিজেদের মধ্য থেকে সাতজন বিজ্ঞ, পবিত্র আত্মায় পূর্ণ ও সুনাম সম্পন্ন লোককে বেছে নাও৷ আমরা তাদের ওপর এই কাজের ভার দেব৷ 4 এর ফলে আমরা প্রার্থনা ও ঈশ্বরের বাক্য প্রচারের কাজে আরো বেশী সময় দিতে পারব৷’ 5 তাদের এই প্রস্তাব সকল বিশ্বাসীকে খুশী করল, তাই তারা এদের মনোনীত করলেন; স্তিফান ইনি ঈশ্বরে বিশ্বাসী ও পবিত্র আত্মায় পূর্ণ ছিলেন৷ ফিলিপ, প্রখর, নীকানর, তীমোন, পার্মিনা ও নিকলায় ইনি ছিলেন আন্তিয়খিযার লোক, যিনি ইহুদী ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন৷ 6 তারা এদের সকলকে প্রেরিতদের সামনে হাজির করল; আর প্রেরিতেরা প্রার্থনা করে তাঁদের ওপর হাত রাখলেন৷ 7 ঈশ্বরের বাক্যের বহুল প্রচার হল, ফলে জেরুশালেমে অনুগামীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকল, এমনকি যাজক সম্প্রদায়ের মধ্যেও একটা বড় দল খ্রীষ্টে বিশ্বাস করে আনুগত্য স্বীকার করল৷ 8 স্তিফান ঈশ্বরের শক্তি ও অনুগ্রহে পরিপূর্ণ ছিলেন; তিনি জনসাধারণের মধ্যে নানান অলৌকিক ও পরাক্রম কাজ করতে লাগলেন৷ 9 কিন্তু ইহুদীদের মধ্যে কিছু লোক এসে স্তিফানেব সঙ্গে তর্ক শুরু করল৷ তাদের মধ্যে কেউ কেউ সমাজ-গৃহ থেকে এসেছিল যাদের নাম ছিল লিবর্ত্তীনদের সমাজ-গৃহ, আলেকসান্দ্রীয় ও কুরীনীয় কিছু ইহুদীরা এই সমাজ-গৃহে য়েত৷ অন্য ইহুদীরা কিলিকিযা ও এশিযা থেকে এসেছিল৷ 10 তাদের সঙ্গে বিজ্ঞতায় কথা বলতে পবিত্র আত্মা স্তিফানকে সাহায্য করেছিলেন৷ তাঁর কথা এতো শক্তিশালী ছিল য়ে তারা কেউ তাঁর সামনে দাঁড়াতে পারল না৷ 11 তখন তারা কয়েকজন লোককে ঘুষ দিয়ে মিথ্যে বলাল; যাঁরা বলল, ‘আমরা শুনেছি য়ে স্তিফান মোশি ও ঈশ্বরের বিরুদ্ধে নিন্দা করছে৷’ 12 এইভাবে তারা জনসাধারণ, ইহুদী নেতাদের ও ব্যবস্থার শিক্ষকদের উত্তেজিত করে তুলত৷ তারা এসে স্তিফানকে ধরে নিয়ে মহাসভার সামনে হাজির করল৷ 13 এরপর তারা মিথ্যা সাক্ষী দাঁড় করাল, যাঁরা বলল, ‘এই লোক পবিত্র মন্দিরের বিরুদ্ধে ও বিধি-ব্যবস্থার বিরুদ্ধে কথা বলতে কখনও নিবৃত্ত হয় না৷ 14 আমরা একে বলতে শুনেছি য়ে এই নাসরতীয় যীশু এই স্থান ধ্বংস করবে আর মোশির দেওযা প্রথা বদলে দেবে৷’ 15 তখন মহাসভায় যাঁরা বসেছিল তারা সকলে স্তিফানের দিকে একদৃষ্টে চেয়ে দেখল, স্তিফানের মুখ স্বর্গদূতের মুখের মত উজ্জ্বল৷ 16 17 18 19 20 21 22 23
Acts 7:1 এরপর যাজক স্তিফানকে বললেন, ‘এসব কথা কি সত্যি?’ 2 এর উত্তরে স্তিফান বললেন, ‘ভাইয়েরা ও এই জাতির পিতাগণ, আমার কথা শুনুন৷ আমাদের পিতৃপুরুষ অব্রাহাম হারণে বসবাস করার আগে য়ে সময় মিসপতামিযাতে ছিলেন, সেই সময় মহিমার ঈশ্বর তাঁর সামনে আবির্ভূত হয়েছিলেন৷ 3 আর তাঁকে বলেছিলেন, ‘তুমি তোমার স্বদেশ ও স্বজনের মধ্য থেকে চলে এস, আর আমি য়ে দেশ দেখাব সেই দেশে যাও৷’ 4 অব্রাহাম তখন কলদীয়ের দেশ ছেড়ে হারণে এসে বসবাস করেন৷ তাঁর বাবার মৃত্যুর পর ঈশ্বর তাঁকে সেখান থেকে এই দেশে আনলেন, য়ে দেশে এখন আপনারা বাস করছেন৷ 5 এখানে ঈশ্বর তাঁকে কোন ভূসম্পত্তি দিলেন না, এমন কি এক ছটাক জমিও না; কিন্তু প্রতিশ্রুতি দিলেন য়ে শেষ পর্যন্ত এই দেশটা তাঁকে ও তাঁর বংশধরদের দেবেন৷ যদিও অব্রাহামের তখনও কোন সন্তান ছিল না৷ 6 ঈশ্বর তাঁকে এই কথা বললেন, ‘তোমার বংশধরেরা বিদেশে প্রবাসী জীবন কাটাবে, তারা দাসত্ব-শৃঙ্খলে বদ্ধ হবে, আর সে দেশের লোকেরা তাদের প্রতি চারশো বছর ধরে অত্যাচার করবে৷ 7 তারা য়ে জাতির দাসত্ব করবে, আমি তাদের দণ্ড দেব৷’ঈশ্বর আরো বললেন, ‘এরপর তারা সেই দেশ থেকে বেরিয়ে এসে এখানে আমার উপাসনা করবে৷’ 8 এরপর অব্রাহামের সঙ্গে ঈশ্বর এক চুক্তি করলেন৷ এই চুক্তির চিহ্ন হল সুন্নত সংস্কার৷ এরপর অব্রাহামের একটি পুত্র সন্তান হল৷ আট দিনের দিন তিনি তার সুন্নত করালেন; সেই পুত্রের নাম ইসহাক৷ ইসহাকের পুত্র যাকোবেরও তারা সুন্নত করলেন৷ যাকোবের পুত্ররা বারোজন গোষ্ঠীর পিতা হলেন৷ 9 ‘তাদের সেই পিতাগণ য়োষেফের প্রতি ঈর্ষান্বিত হলেন৷ য়োষেফকে দাস ব্যবসাযীদের কাছে বিক্রি করা হলে তাকে মিশরে নিয়ে আসা হল, কিন্তু ঈশ্বর তাঁর সহবর্তী ছিলেন৷ 10 য়োষেফ সেখানে অনেক কষ্ট পেয়েছিলেন; কিন্তু ঈশ্বর তাকে তাঁর সমস্ত কষ্টের হাত থেকে উদ্ধার করলেন৷ ফরৌণ তখন মিশরের রাজা, য়োষেফের মধ্যে ঈশ্বরদত্ত বিজ্ঞতা দেখতে পেয়ে ফরৌণ তাঁকে পছন্দ করলেন৷ ফরৌণ য়োষেফকে মিশরের অধ্যক্ষরূপে নিযুক্ত করলেন, এমনকি ফরৌণের গৃহের সমস্ত পরিজনের উপরে তাকে কর্তা করলেন৷ 11 এরপর সারা মিশরে ও কনান দেশে প্রচণ্ড খরা হল৷ এমন খরা যাতে কোন ফসল উত্পন্ন হল না, এতে লোকেরা মহাকষ্টে পড়ল৷ আমাদের পিতৃপুরুষদের খাদ্যবস্তুর অভাব হল৷ 12 কিন্তু যাকোব শুনতে পেলেন য়ে মিশরে শস্য মজুত আছে, তখন তিনি আমাদের পিতৃপুরুষদের মিশরে পাঠালেন৷ 13 তাঁদের সেই ছিল প্রথমবার মিশরে যাওযা৷ তাঁরা যখন দ্বিতীয়বার সেখানে গেলেন, তখন য়োষেফ নিজে থেকে তাঁর ভাইদের কাছে আত্মপরিচয় দিলেন৷ য়োষেফের পরে পরিজনদের সংবাদ ফরৌণ শুনতে পেলেন৷ 14 পরে কিছু লোক পাঠিয়ে য়োষেফ তাঁর পিতা যাকোব ও তাঁর সব আত্মীয় পরিজনদের ডেকে পাঠালেন, তাঁরা মোট পঁচাত্তর জন ছিলেন৷ 15 এইভাবে যাকোব মিশরে গেলেন, পরে তাঁর ও আমাদের পিতৃপুরুষদের সেখানে মৃত্যু হল৷ 16 তাঁদের মৃতদেহ শিখিমে নিয়ে যাওযা হয়েছিল, আর সেখানে তাঁদেরকে কবরে রাখা হয়৷ এই কবরস্থান অব্রাহাম শিখিম শহরে হমোরের ছেলেদের কাছ থেকে কিছু টাকা দিয়ে কিনেছিলেন৷ 17 ‘মিশরে ইহুদীরা বৃদ্ধি পেয়ে বহুসংখ্যক হয়ে উঠল৷ ঈশ্বর অব্রাহামের কাছে য়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা পূর্ণ হওযার সময় হল৷ 18 মিশরে তখন অন্য একজন রাজা হয়েছেন৷ তিনি য়োষেফের সম্পর্কে জানতেন না৷ 19 এই রাজা আমাদের লোকদের সঙ্গে চাতুরী করলেন৷ তিনি আমাদের পিতৃপুরুষদের প্রতি দুর্য়্ববহার করতে লাগলেন৷ তাদের নবজাত শিশুদের জোর করে বাইরে ফেলে দিতে হুকুম দিলেন, য়েন তারা মারা যায়৷ 20 সেই সময় মোশির জন্ম হয়, তিনি ঈশ্বরের দৃষ্টিতে সুন্দর ছিলেন, তিন মাস পর্যন্ত তিনি তাঁর পিতার গৃহেই লালিত-পালিত হন৷ 21 পরে তাঁকে বাইরে রেখে দেওযা হলে ফরৌণের কন্যা তাঁকে কুড়িয়ে এনে তাঁর নিজের ছেলের মত মানুষ করেন৷ 22 মোশি মিশরীয়দের সমস্ত জ্ঞানে শিক্ষিত হয়ে উঠলেন, আর কথায় ও কাজে মহাক্ষমতাশালী হয়ে উঠলেন৷ 23 ‘মোশির বয়স যখন চল্লিশ বছর তখন তাঁর ইস্রায়েলী ভাইদের সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা হল৷ 24 মোশি দেখলেন য়ে একজন মিশরীয় একজন ইস্রায়েলীয়র প্রতি দুর্য়্ববহার করছে, তিনি তখন ইস্রায়েলী লোকটির পক্ষ সমর্থন করলেন৷ ইস্রায়েলী লোকটিকে আঘাত করার জন্য মোশি সেই মিশরীয়কে শাস্তি দিলেন এবং তাকে এমন মার দিলেন য়ে সে মরেই গেল৷ 25 তিনি মনে করলেন য়ে তাঁর স্বজাতীয় ভাইরা হয়তো বুঝবে য়ে তাদের উদ্ধার করতে ঈশ্বরই তাকে পাঠিয়েছেন, কিন্তু তারা তা বুঝল না৷ 26 পরদিন, দুজন ইস্রায়েলী যখন নিজেদের মধ্যে মারামারি করছে, সেই সময় তিনি তাদের কাছে এসে তাদের মধ্যে মিলন করে দেবার জন্য বললেন, ‘দেখ, তোমরা পরস্পর ভাই৷ তবে কেন একে অপরের প্রতি দুর্য়্ববহার করছ?’ 27 কিন্তু অন্যায়কারী লোকটি মোশিকে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দিয়ে বলল, ‘আমাদের বিচার করতে কে তোমাকে অধিকার দিয়েছে? 28 গতকাল তুমি য়েমন সেই মিশরীয়কে খুন করেছিলে, তেমনি কি আমাকেও খুন করতে চাও?’ 29 একথা শুনে মোশি মিশর থেকে পালিয়ে গেলেন; আর মিদিয়নে বিদেশীরূপে বাস করতে লাগলেন৷ সেখানে তিনি অপরিচিত আগন্তুকের মতো ছিলেন৷ সেখানে থাকার সময় মোশির দুই ছেলের জন্ম হয়৷ 30 ‘এর চল্লিশ বছর পরে তিনি যখন সীনয় পর্বতের কাছে মরুপ্রান্তরে ছিলেন, সেখানে এক জ্বলন্ত ঝোপের আগুনের শিখার মধ্যে এক স্বর্গদূত তাঁকে দেখা দিলেন৷ 31 এই দেখে মোশি আশ্চর্য হয়ে আরো ভাল করে দেখবার জন্য যখন কাছে গেলেন, তখন প্রভুর এই রব শুনলেন, 32 ‘আমি তোমার পিতৃপুরুষদের ঈশ্বর, অব্রাহামের, ইসহাকের ও যাকোবের ঈশ্বর৷’মোশি ভয়ে কাঁপতে লাগলেন, ভালভাবে তাকাতেও সাহস করলেন না৷ 33 এরপর প্রভু তাঁকে বললেন, ‘তোমার পা থেকে চটি (জুতো) খুলে ফেল, কারণ য়েখানে তুমি দাঁড়িয়ে আছ, সেই জায়গা পবিত্র৷ 34 মিশরে আমি আমার লোকদের দুরবস্থা ভাল করেই দেখেছি, তাদের আর্তনাদ শুনেছি, তাই আমি তাদের উদ্ধার করার জন্য নেমে এসেছি৷ মোশি, তুমি এস, এখন আমি তোমাকে মিশরে পাঠাব৷’ 35 ‘এই মোশিকেই ইস্রায়েলীয়রা চায় নি বলে বলেছিল, ‘কে তোমাকে আমাদের শাসক ও বিচারক বানিয়েছে?’ মোশিই সেই ব্যক্তি যাকে ঈশ্বর স্বর্গদূতের মাধ্যমে শাসনকর্তা ও ত্রাণকর্তারূপে পাঠিয়েছিলেন৷ সেই স্বর্গদূতকেই মোশি জ্বলন্ত ঝোপের মধ্যে রেখেছিলেন৷ 36 এরপর মোশি লোকদের মিশর থেকে বের করে আনলেন৷ তিনি মিশরে, লোহিত সাগরে আর প্রান্তরে চল্লিশ বছর ধরে বহু অলৌকিক ও পরাক্রমের কাজ করেন৷ 37 মোশিই তাঁর ইহুদী ভাইদের বলেছিলেন, ‘ঈশ্বর তোমাদের মধ্য থেকে এক ভাববাদী ঠিক করবেন, তিনি হবেন আমারই মতো৷’ 38 এই মোশিই প্রান্তরে ইহুদীদের সমাবেশে ছিলেন৷ য়ে স্বর্গদূত সীনয় পর্বতে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছিলেন, তিনি তাঁর সঙ্গে ও আমাদের পিতৃপুরুষদের সঙ্গে ছিলেন৷ মোশি ঈশ্বরের কাছ থেকে জীবনদাযী আদেশ লাভ করে তাঁর আজ্ঞা সকল আমাদের দিয়েছিলেন৷ 39 ‘কিন্তু আমাদের পিতৃপুরুষেরা তাঁর কথা পালন করতে চান নি, তার পরিবর্তে তাঁরা তাঁকে অগ্রাহ্য় করে মিশরে ফিরে য়েতে চেয়েছিলেন৷ 40 আমাদের পিতৃপুরুষরা হারোণকে বললেন, ‘মোশি আমাদের মিশর থেকে বের করে এনেছেন, কিন্তু তার কি হল আমরা কিছুই বুঝতে পারছি না৷ তাই কিছু দেবতাদের গড়ে তোল, যাঁরা আমাদেব আগে আগে যাবে ও পরিচালিত করবে৷’ 41 তাই লোকেরা বাছুরের এক প্রতিমা গড়ল আর সেই প্রতিমার সামনে বলিদান উত্সর্গ করল৷ তারা তাদের হাতে গড়া সেই দেবতাকে নিয়ে আনন্দ করতে লাগল৷ 42 কিন্তু ঈশ্বর তাদের প্রতি বিমুখ হলেন, তিনি তাদের আকাশের সেনা অর্থাত্ অলীক দেবতাদের পূজায় বাধা দিলেন না৷ ভাববাদীদের পুস্তকে একথা লেখা আছে:‘হে ইস্রায়েলের গোষ্ঠী, প্রান্তরে চল্লিশ বছর ধরে তোমরা তো আমার উদ্দেশ্যে পশুবলি ও নৈবেদ্য উত্সর্গ কর নি; 43 তোমরা মোলক দেবতার পূজার তাঁবু, রিফান দেবতার নক্ষত্রের প্রতিমূর্তি বহন করেছিলে৷ পূজা করবার জন্যই তোমরা ঐসব দেবতার মূর্তি গড়েছিলে৷ তাই আমি তোমাদের বাবিলের ওপারে নির্বাসনে পাঠাব৷’ আমোষ 5:25-27 44 ‘মরু এলাকায় আমাদের সেই পিতৃপুরুষদের কাছেই সেই সাক্ষ্য তাঁবু ছিল৷ এই পবিত্র তাঁবু তৈরী হয়েছিল সেই ধারায়, য়েভাবে নমুনা দেখিয়ে ঈশ্বর মোশিকে তা করতে বলেছিলেন৷ 45 পরবর্তীকালে যিহোশূয় আমাদের পিতৃপুরুষদের পরিচালিত করলে তাঁরা ভিন্ন জাতির দেশ দখল করলেন৷ আমাদের লোকেরা সেই দেশে প্রবেশ করলে ঈশ্বর সেখানকার লোকদের সেই দেশ ছেড়ে চলে য়েতে বাধ্য করলেন৷ আমাদের লোকেরা এই নতুন দেশে গেলে ঐ তাঁবুও সঙ্গে নিয়ে এলেন৷ পিতৃপুরুষদের কাছ থেকে তাঁরা এই তাঁবু পেয়েছিলেন৷ সেই তাঁবু রাজা দাযূদের সময় পর্যন্ত তাঁদের কাছে ছিল৷ 46 দাযূদ ঈশ্বরের দৃষ্টিতে বিশেষ অনুগ্রহ লাভ করলেন আর যাকোবের ঈশ্বরের জন্য এক গৃহ নির্মাণ করার অনুমতি চাইলেন৷ 47 কিন্তু দাযূদের ছেলে শলোমন তাঁর জন্য মন্দির নির্মাণ করলেন৷ 48 ‘কিন্তু যিনি পরমেশ্বর তিনি কখনও মানুষের হাতে তৈরী গৃহে বাস করেন না৷ এ বিষয়ে ভাববাদী বলেছেন:‘প্রভু বলেন, 49 স্বর্গ আমার সিংহাসন৷ পৃথিবী আমার পা রাখার জায়গা৷ তুমি আমার জন্য কিরূপ গৃহ নির্মাণ করবে? আমার বিশ্রামের স্থান কোথায়! 50 আমার হাতই কি এই বস্তুগুলি নির্মাণ করে নি!’যিশাইয় 66:1-2 51 ‘আপনারা একগুঁয়ে লোক! ঈশ্বরকে আপনারা নিজ নিজ হৃদয় সঁপে দেন নি! আপনারা তাঁর কথা শুনতে চান নি! আপনারা সব সময় পবিত্র আত্মা যা বলতে চাইছেন তা প্রতিরোধ করে আসছেন৷ আপনাদের পিতৃপুরুষরা য়েমন করেছিলেন, আপনারাও তাদের মতোই করছেন৷ 52 এমন কোন ভাববাদী ছিলেন কি যাকে আপনাদের পিতৃপুরুষেরা নির্য়াতন করেন নি? সেই ধার্মিক ব্যক্তির আগমণের কথা যাঁরা বহুপূর্বে ঘোষণা করেছিলেন আপনাদের পিতৃপুরুষরা তাদেরকে খুন করেছেন; আর এখন আপনারা সেই ধার্মিককে শত্রুর হাতে সঁপে দিয়ে হত্যা করছেন৷ 53 আপনারা মোশির বিধি-ব্যবস্থা পেয়েছিলেন, ঈশ্বরই তাঁর স্বর্গদূতদের মাধ্যমে তা দিয়েছিলেন, কিন্তু আপনারা তা পালন করেন নি!’ 54 ইহুদী নেতারা স্তিফানের এইসব কথা শুনে প্রচণ্ড রেগে গেল৷ স্তিফানের প্রতি তারা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে দাঁতে দাঁত ঘষতে লাগল৷ 55 স্তিফান পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হয়ে স্বর্গের দিকে তাকালেন আর দেখলেন ঈশ্বরের মহিমা, দেখলেন যীশু ঈশ্বরের ডানদিকে দাঁড়িয়ে আছেন৷ 56 তিনি বললেন, ‘দেখ! আমি দেখছি স্বর্গ খোলা রয়েছে; আর মানবপুত্র ঈশ্বরের ডানদিকে দাঁড়িয়ে আছেন!’ 57 তখন ইহুদী নেতারা জোরে চিত্কার করে উঠল, আর নিজেদের কানে হাত চাপা দিল৷ এরপর সবাই মিলে এক সঙ্গে তাঁর দিকে ছুটে গেল৷ 58 তারা স্তিফানকে মেরে ফেলার জন্য তাঁকে টানতে টানতে শহর থেকে বাইরে নিয়ে গিয়ে পাথর মারতে লাগল৷ যাঁরা স্তিফানের বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে এসেছিল, তারা শৌল নামে এক যুবকের পায়ের কাছে তাদের আলখাল্লা খুলে জমা রাখল৷ 59 তারা যখন স্তিফানকে পাথর মেরে চলেছে তখন তিনি প্রার্থনা করে বললেন, ‘প্রভু যীশু আমার আত্মাকে গ্রহণ কর!’ 60 এরপর তিনি হাঁটু গেড়ে বসে চিত্কার করে বললেন, ‘প্রভু, এঁদের বিরুদ্ধে এই পাপ গন্য করো না!’ এই বলে তিনি মৃত্যুতে ঢলে পড়লেন৷
Acts 8:1 আর শৌল স্তিফানের হত্যার অনুমোদন করেছিলেন৷ 2 কয়েকজন ধার্মিক লোক এসে স্তিফানকে কবর দিলেন; আর স্তিফানের জন্য গভীর শোক প্রকাশ করলেন৷ সেইদিন থেকে জেরুশালেমের মণ্ডলীর উপর ভীষণ নির্য়াতন শুরু হল৷ প্রেরিতগণ ছাড়া সবাই যিহূদিযা ও শমরিযা প্রদেশের সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়লেন৷ এদিকে শৌল বিশ্বাসী সমাবেশকে ধ্বংস করার জন্য উঠে পড়ে লাগলেন৷ বাড়ি বাড়ি ঢুকে তিনি স্ত্রী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলকে টানতে টানতে নিয়ে এসে কারাগারে ভরলেন৷ 3 4 বিশ্বাসীরা চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেল; আর তারা য়েখানেই গেল সেখানেই সুসমাচার প্রচার করতে লাগল৷ 5 ফিলিপ শমরিয়া শহরে গিয়ে সেখানে তিনি খ্রীষ্টের সুসমাচার প্রচার করলেন৷ 6 লোকেরা যখন ফিলিপের কথা শুনল এবং তিনি য়ে সব অলৌকিক কাজ করছিলেন তা দেখল, তখন তাঁর কথায় আরো মন দিল৷ 7 অশুচি আত্মায় পাওয়া লোকদের মধ্য থেকে চিত্কার করতে করতে সেইসব অশুচি আত্মা বের হয়ে এল৷ অনেক পক্ষাঘাতগ্রস্ত লোক ও খোঁড়া লোক সুস্থ হল৷ 8 এর ফলে সেই শহরে মহা আনন্দের সাড়া জাগল৷ 9 সেই শহরে শিমোন নামে একজন লোক ছিল৷ ফিলিপ সেই শহরে আসার আগে শিমোন বহুদিন ধরে সেই শহরে যাদুখেলা করত৷ এইভাবে সে শমরিয়ার লোকদের অবাক করে দিত৷ সে নিজেকে একজন মহাপুরুষ বলে জাহির করত৷ 10 ছোট বড় সকলেই তার কথা মন দিয়ে শুনত৷ তারা বলত, ‘এই লোকের মধ্যে ঈশ্বরের সেই শক্তি আছে যাকে ‘মহাপরাক্রম’ ও বলা চলে৷’ 11 লোকেরা তার কথা শুনত কারণ দীর্ঘ দিন ধরে সে লোকদের যাদুমন্ত্রের চমকে মুগ্ধ করে রেখেছিল৷ 12 কিন্তু ফিলিপ যখন তাদেরকে ঈশ্বরের সুসমাচার, তাঁর রাজ্য ও যীশু খ্রীষ্টের নামের বিষয় জানালেন, তখন স্ত্রী-পুরুষ সকলে ফিলিপকে বিশ্বাস করে বাপ্তিস্ম নিল৷ 13 আর শিমোন নিজেও বিশ্বাস করল ও বাপ্তিস্ম নিল৷ বাপ্তাইজ হওয়ার পর সে ফিলিপের কাছে কাছে থাকতে লাগল, আর ফিলিপের দ্বারা অনেক অলৌকিক কাজ ও নানা পরাক্রম কাজ হচ্ছে দেখে আশ্চর্য হয়ে গেল৷ 14 প্রেরিতেরা তখনও জেরুশালেমে ছিলেন, তাঁরা শুনতে পেলেন য়ে শমরিয়ায় লোকেরা ঈশ্বরের বাক্য গ্রহণ করেছে, তখন তাঁরা পিতর ও য়োহনকে সেখানে পাঠালেন৷ 15 পিতর ও য়োহন এসে শমরিয়ায় খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদের জন্য প্রার্থনা করলেন য়েন তারা পবিত্র আত্মা লাভ করে; 16 কারণ এই লোকেরা প্রভু যীশু খ্রীষ্টের নামে বাপ্তাইজ হলেও তখনও পর্যন্ত তাদের কারোর ওপর পবিত্র আত্মা অবতরণ করেন নি৷ 17 এইজন্য পিতর ও য়োহন প্রার্থনা করলেন; আর সেই দুই প্রেরিত, লোকদের মাথায় হাত রাখলে তারা পবিত্র আত্মা লাভ করল৷ 18 শিমোন যখন দেখল য়ে, প্রেরিতদের হাত রাখার মাধ্যমে পবিত্র আত্মা লাভ হচ্ছে, তখন সে টাকা এনে তাদের বলল, 19 ‘আমাকেও এই ক্ষমতা দিন য়েন আমি যার ওপর আমার দুহাত রাখব, সে এই পবিত্র আত্মা পায়৷’ 20 পিতর শিমোনকে বললেন, ‘তুমি ও তোমার টাকা চিরকালের মত ধ্বংস হয়ে যাক্! কারণ ঈশ্বরের দান তুমি টাকা দিয়ে কিনবে বলে ভেবেছ৷ 21 এই বিষয়ে আমাদের সঙ্গে তোমার কোন অধিকার বা অংশ নেই, কারণ ঈশ্বরের দৃষ্টিতে তোমার অন্তর মোটেই সরল নয়৷ 22 তাই তুমি এই মন্দতা থেকে তোমার মন-ফিরাও! আর প্রভুর কাছে প্রার্থনা কর, হয়তো তোমার মনের এই মন্দচিন্তার জন্য ক্ষমা পেলেও পেতে পার৷ 23 কারণ আমি দেখছি তোমার মধ্যে খুব ঈর্ষা আছে আর তুমি পাপের কাছে বন্দী৷’ 24 তখন শিমোন বলল, ‘আপনারাই আমার জন্য প্রভুর কাছে প্রার্থনা করুন, য়েন আপনারা যা বললেন তার কিছুই আমার প্রতি না ঘটে!’ 25 প্রেরিতেরা যীশুর বিষয়ে যা জানতেন, সে সম্বন্ধে সাক্ষ্য দিয়ে ও প্রভুর বার্তা প্রচার করে জেরুশালেমে ফিরে চললেন, যাবার পথে তাঁরা শমরিয়ার বিভিন্ন গ্রামে সুসমাচার প্রচার করলেন৷ 26 প্রভুর এক দূত ফিলিপকে বললেন, ‘প্রস্তুত হও, দক্ষিণে য়ে পথ জেরুশালেম থেকে ঘসার দিকে নেমে গেছে, সেই পথ ধরে নেমে যাও৷’ 27 তখন ফিলিপ প্রস্তুত হয়ে সেই পথ ধরে রওনা দিলেন এবং সেই পথে একজন ইথিওপিয়ানকে দেখতে পেলেন, তিনি নপুংসক৷ তিনি ইথিওপিয়ার কান্দাকি রাণীর কোষাধ্যক্ষ ছিলেন৷ ইনি জেরুশালেমে উপাসনা করতে গিয়েছিলেন৷ 28 ফেরার পথে তিনি তাঁর রথে বসে ভাববাদী যিশাইয়র পুস্তক থেকে পড়ছিলেন৷ 29 তখন পবিত্র আত্মা ফিলিপকে বললেন, ‘ঐ রথের কাছে যাও, তাঁর সঙ্গ ধর!’ 30 ফিলিপ দৌড়ে রথের কাছে গিয়ে শুনলেন, সেই কোষাধ্যক্ষ ভাববাদী যিশাইয়র পুস্তক থেকে পড়ছেন৷ ফিলিপ জিজ্ঞেস করলেন, ‘আপনি যা পড়ছেন তা কি বুঝতে পারছেন?’ 31 তিনি বললেন, ‘কি করে বুঝব? যদি বুঝিয়ে দেওয়ার কেউ না থাকে?’ আর তিনি ফিলিপকে রথে উঠে এসে তার কাছে বসতে বললেন৷ 32 শাস্ত্রের য়ে অংশটি তিনি পাঠ করছিলেন তা হল:‘হত হবার জন্য মেষের মতো তাঁকে নিয়ে যাওয়া হল৷ লোম ছাঁটাইকারীদের সামনে ভেড়া য়েমন মুখ বুজে থাকে, তেমনি তিনি মুখ খোলেন নি৷ 33 তাঁর হীন অবস্থায়, তাঁর ন্যায় অধিকার থেকে তাঁকে বঞ্চিত করা হল৷ কেউ আর কখনও তাঁর বংশধরদের কথা বলবে না, কারণ পৃথিবীতে তাঁর জীবন সমাপ্ত হল৷’যিশাইয় 53:7-8 34 সেই কোষাধ্যক্ষ ফিলিপকে বললেন, ‘অনুগ্রহ করে বলুন, ভাববাদী কার বিষয়ে এই কথা বলছেন? তিনি কি তাঁর নিজের বিষয়ে বলছেন, অথবা অন্য কারো বিষয়ে?’ 35 তখন ফিলিপ শাস্ত্রের সেই অংশ থেকে শুরু করে যীশুর বিষয়ে সুসমাচার তাঁকে জানালেন৷ 36 তাঁরা রাস্তা দিয়ে য়েতে য়েতে জলাশয়ের কাছে এসে হাজির হলে সেই নপুংসক বললেন, ‘দেখুন! এখানে জল আছে! বাপ্তাইজ হতে আমার বাধা কোথায়?’ 37 38 তিনি রথ থামাতে হুকুম করলেন, আর ফিলিপ ও নপুংসক উভয়ে জলে নামলেন৷ ফিলিপ তাঁকে বাপ্তিস্ম দিলেন৷ 39 তাঁরা যখন জলের মধ্য থেকে উঠলেন, তখন প্রভুর আত্মা ফিলিপকে সরিয়ে নিয়ে গেলেন, সেই কোষাধ্যক্ষ তাকে আর দেখতে পেলেন না; কিন্তু আনন্দ করতে করতে তাঁর পথে এগিয়ে চললেন৷ 40 ফিলিপ নিজেকে অস্দোদে দেখতে পেলেন, আর তিনি কৈসরিয়ার পথে রওনা হয়ে যাত্রা পথে সব নগরে সুসমাচার প্রচার করলেন৷
Acts 9:1 এদিকে শৌল জেরুশালেমে যীশুর অনুগামীদের তখনও হত্যার হুমকি দিচ্ছিলেন৷ তিনি মহাযাজকের কাছে গেলেন৷ 2 দম্মেশকস্থ সমাজ-গৃহে ইহুদীদের দেবার জন্য মহাযাজকের কাছে চিঠিগুলি চাইলেন, য়েন স্ত্রী হোক বা পুরুষ হোক, খ্রীষ্টের অনুগামী এমন কোন লোককে পেলেই গ্রেপ্তার করে জেরুশালেমে নিয়ে আসতে পারেন৷ 3 তাই শৌল দম্মেশকে রওনা হয়ে গেলেন৷ য়েতে য়েতে তিনি যখন দম্মেশকের কাছাকাছি এলেন, সেই সময় হঠাত্ আকাশ থেকে এক উজ্জ্বল আলো তাঁর চারিদিকে চমকে উঠল৷ 4 তিনি মাটিতে পড়ে গেলেন এবং এক রব শুনতে পেলেন, সেই রব তাঁকে বলছে; ‘শৌল, শৌল! কেন তুমি আমাকে এত কষ্ট দিচ্ছ?’ 5 শৌল বললেন, ‘প্রভু আপনি কে?’তিনি বললেন, ‘আমি যীশু; তুমি যার ক্ষতি করার চেষ্টা করছ৷ 6 ওঠ, ঐ শহরে যাও আর তোমায় কি করতে হবে তা তোমায় বলা হবে৷’ 7 য়ে সব পুরুষ তাঁর সঙ্গে যাচ্ছিল তারা নির্বাক হয়ে দাঁড়িয়ে রইল৷ তারা সেই রব শুনতে পেল, কিন্তু কাউকে দেখতে পেল না৷ 8 শৌল মাটি থেকে উঠলেন, কিন্তু তিনি যখন চোখ খুললেন তখন কিছুই দেখতে পেলেন না৷ তাই তারা তাকে হাত ধরে দম্মেশকে নিয়ে গেল৷ 9 তিন দিন তিনি সম্পূর্ণ অন্ধ অবস্থায় রইলেন, সেই সময় তিনি অন্ন জল কিছুই মুখে তুললেন না৷ 10 দম্মেশকে অননিয় নামে একজন খ্রীষ্টের অনুগামী ছিলেন৷ এক দর্শনের মাধ্যমে প্রভু তাঁকে বললেন, ‘অননিয়!’তিনি বললেন, ‘প্রভু, এই তো আমি৷’ 11 প্রভু তাকে বললেন, ‘ওঠ, আর ‘সরল’ নামে রাস্তায় যাও৷ সেখানে যিহূদার বাড়ীর খোঁজ কর৷ সেখানে তার্ষ থেকে এসেছে শৌল বলে একজন লোক, তার খোঁজ কর, কারণ সে প্রার্থনা করছে৷ 12 তার এই দর্শনলাভ হয়েছে য়ে অননিয় নামে একজন লোক এসে তার ওপর হাত রাখাতে সে আবার তার দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেয়েছে৷’ 13 অননিয় বললেন, ‘প্রভু, আমি অনেক লোকের কাছে এই লোকের বিষয়ে শুনেছি৷ 14 আর এখানে যত লোক আপনাকে বিশ্বাস করে,তাদের গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাবার জন্য সে প্রধান যাজকদের কাছ থেকে বিশেষ পরোয়ানা নিয়ে এসেছে৷’ 15 কিন্তু প্রভু তাকে বললেন, ‘তুমি যাও, কারণ অইহুদীদের কাছে, রাজাদের ও ইস্রায়েলীয়দের কাছে আমার নাম নিয়ে যাবার জন্য আমি তাকে মনোনীত করেছি৷ 16 আমার নামের জন্য তাকে কত দুঃখভোগ করতে হবে, আমি নিজে তাকে তা দেখিয়ে দেব৷’ 17 তখন অননিয় যিহূদার বাড়িতে গেলেন৷ তিনি শৌলের ওপর দুহাত রেখে বললেন, ‘ভাই শৌল, প্রভু যীশু আমাকে তোমার কাছে পাঠিয়েছেন৷ এখানে আসার পথে তোমায় তিনি দর্শন দিয়েছিলেন৷ যীশু তোমার কাছে আমাকে পাঠালেন, য়েন তুমি আবার দেখতে পাও আর পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হতে পার৷’ 18 সঙ্গে সঙ্গে তাঁর চোখ থেকে মাছের আঁশের মত একটা কিছু খসে পড়ল, আর শৌল আবার দেখতে পেলেন৷ পরে তিনি উঠে গিয়ে বাপ্তিস্ম নিলেন৷ 19 এরপর কিছু খাওয়া-দাওয়া করে সবল হলেন৷তিনি কিছুদিন দম্মেশেকে অনুগামীদের সঙ্গে থাকলেন৷ 20 এরপর তিনি সরাসরি সমাজ-গৃহে গিয়ে যীশুর কথা প্রচার করতে লাগলেন৷ তিনি বললেন, ‘এই যীশুই হচ্ছেন ঈশ্বরের পুত্র৷’ 21 তার কথা শুনে সকলে আশ্চর্য হয়ে গেল৷ তারা বলল, ‘একি., সেই লোক নয় য়ে জেরুশালেমে যাঁরা যীশুর নামে বিশ্বাস করত তাদের ধ্বংস করত? আর এখানে সে যীশুর অনুগামীদের গ্রেপ্তার করে প্রধান যাজকের কাছে নিয়ে যাবার জন্য কি আসে নি?’ 22 কিন্তু শৌল ক্রমাগত শক্তিশালী হয়ে উঠলেন, আর দম্মেশকে য়ে সব ইহুদী বাস করত, শৌল তর্কে তাদেরকে নীরব করে দিলেন, তিনি প্রমাণ দিতে থাকলেন য়ে যীশুই খ্রীষ্ট৷ 23 বেশ কিছু দিন পর ইহুদীরা শৌলকে হত্যা করার চক্রান্ত করতে লাগল৷ 24 কিন্তু শৌল তাদের চক্রান্ত জানতে পারলেন৷ ইহুদীরা তাকে হত্যা করার জন্য শহরের প্রধান ফটকগুলির ওপর দিন রাত নজর রাখতে লাগল৷ 25 কিন্তু যাঁরা শৌলের কাছ থেকে শিক্ষা পেয়েছিল, তারা শৌলকে শহর ত্যাগে সাহায্য করল৷ তারা শৌলকে একটা ঝুড়িতে রেখে শহরের প্রাচীরের এক গর্ত দিয়ে ঝুড়িশুদ্ধ শৌলকে বাইরে নামিয়ে দিল৷ 26 এরপর শৌল জেরুশালেমে গেলেন৷ সেখানে তিনি যীশুর অনুগামীদের সঙ্গে য়োগ দিতে চেষ্টা করলেন; কিন্তু তাঁরা সকলে তাঁকে ভয় করলেন৷ তাঁরা বিশ্বাস করতে চাইলেন না য়ে তিনি সত্যিকার যীশুর অনুগামী হয়েছেন৷ 27 কিন্তু বার্ণবা শৌলকে গ্রহণ করে তাঁকে নিয়ে প্রেরিতদের কাছে গেলেন৷ দম্মেশকের পথে শৌল কিভাবে যীশুর দেখা পেয়েছেন ও প্রভু যীশু য়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আর কিভাবে তিনি দম্মেশকে সাহসের সঙ্গে যীশুর নাম প্রচার করেছেন, সেসব কথা তাদের সবিস্তারে জানালেন৷ 28 শৌল খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদের সঙ্গে জেরুশালেমে থাকতেন, তিনি সেখানে সব জায়গায় গিয়ে সাহসের সঙ্গে প্রভুর নাম প্রচার করতেন৷ 29 তিনি গ্রীকভাষী ইহুদীদের সঙ্গে তর্ক করেছিলেন বলে তারা তাঁকে হত্যা করার চেষ্টা করতে লাগল৷ 30 ভাইয়েরা সে কথা জানতে পেরে তাঁকে কৈসরিয়াতে নিয়ে গেলেন ও সেখান থেকে তার্ষে পাঠিয়ে দিলেন৷ 31 সেই সময় যিহূদিয়া, গালীল ও শমরিয়ায় বিশ্বাসী মণ্ডলীগুলিতে শান্তি বিরাজ করছিল৷ বিশ্বাসীরা প্রভুর ভয়ে জীবনযাপন করত ও পবিত্র আত্মায় উত্সাহিত হত; এর ফলে দলটি শক্তিশালী হয়ে উঠল এবং ক্রমে ক্রমে সংখ্যায় বৃদ্ধিলাভ করতে লাগল৷ 32 পিতর জেরুশালেমের আশে পাশে বিভিন্ন শহরে ভ্রমণ করতে করতে লুদ্দার খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদের কাছে এলেন৷ 33 লুদ্দায় তিনি ঐনিয় নামে একজন পঙ্গু লোকের দেখা পান; সে আট বছর ধরে পক্ষাঘাতে শয়্য়াশাযী ছিল৷ 34 পিতর তাকে বললেন, ‘ঐনিয় যীশু তোমায় সুস্থ করেছেন, তুমি ওঠ, বিছানা গুটিয়ে নাও৷ তুমি নিজেই তা পারবে৷’ সঙ্গে সঙ্গে ঐনিয় উঠে দাঁড়াল৷ 35 তখন লুদ্দা ও শারোণের সব লোক তাকে দেখে প্রভুর প্রতি ফিরল ও বিশ্বাসী হল৷ 36 যাফোতে টাবিথা বা দর্কা (যার অর্থ ‘হরিণী’) নামে এক শিষ্য ছিলেন৷ তিনি সব সময় লোকের উপকার করতেন, বিশেষ করে গরীবদের সাহায্য করতেন৷ 37 পিতর যখন লুদ্দায় ছিলেন টাবিথা অসুস্থ হয়ে মারা যান; তাই তারা তার দেহ স্নান করিয়ে ওপরের ঘরে শুইয়ে রাখল৷ 38 লুদ্দা যাফোর কাছাকাছি ছিল৷ অনুগামীরা যখন শুনলেন য়ে পিতর লুদ্দায় আছেন, তখন তারা দুজন লোককে সেখানে পাঠিয়ে অনুরোধ করল, ‘য়েন পিতর তাড়াতাড়ি করে একবার তাদের ওখানে আসেন!’ 39 তখন পিতর প্রস্তুত হয়ে তাদের সঙ্গে চললেন৷ তিনি সেখানে হাজির হলে তারা তাঁকে ওপরের সেই ঘরে নিয়ে গেল; আর বিধবারা সকলে তাঁর চারদিকে দাঁড়িয়ে কাঁদতে লাগল, দর্কা জীবিত অবস্থায় তাদের সঙ্গে থাকবার সময়ে য়েসব পোশাকগুলি তৈরী করেছিলেন তা দেখাতে লাগল৷ 40 পিতর সকলকে ঘরের বাইরে বের করে দিয়ে হাঁটু গেড়ে প্রার্থনা করলেন৷ তারপর সেই দেহের দিকে ফিরে তিনি বললেন, ‘টাবিথা, ওঠ!’ তাতে তিনি চোখ খুললেন ও পিতরকে দেখে উঠে বসলেন৷ 41 তখন পিতর হাত বাড়িয়ে তাঁকে উঠে দাঁড়াতে সাহায্য করলেন৷ এরপর তিনি বিশ্বাসীদের ও সেই বিধবাদের ডেকে তাঁকে জীবিত দেখালেন৷ 42 এই কথা যাফোর সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ল আর অনেক লোক প্রভুর ওপর বিশ্বাস করল৷ 43 পিতর যাফোতে শিমোন নামে এক চামড়া ব্যবসাযীর ঘরে অনেক দিন রইলেন৷
Acts 10:1 কৈসরিয়ায় কর্ণীলিয়া নামে একজন লোক ছিলেন; ইনি ছিলেন ‘ইতালীয়’ বাহিনীর একজন সেনাপতি৷ 2 তিনি ছিলেন ঈশ্বর ভক্ত, তাঁর গৃহস্থ সমস্ত পরিজন সত্যময় ঈশ্বরের উপাসনা করত৷ তিনি ইহুদীদের মধ্যে গরীব দুঃখীদের অর্থ দিতেন আর সবসময়ই ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা জানাতেন৷ 3 একদিন প্রায় তিনটের সময় এক দর্শনের মাধ্যমে তিনি স্পষ্ট দেখতে পেলেন য়ে ঈশ্বরের এক দূত তাঁর কাছে এসে বলছেন, ‘কর্ণীলিয়!’ 4 কর্ণীলিয় স্বর্গদূতের দিকে চেয়ে ভয় পেয়ে বললেন, ‘মহাশয়, আপনি কি চান?’সেই স্বর্গদূত তাঁকে বললেন, ‘কর্ণীলিয় তোমার প্রার্থনা ঈশ্বর শুনেছেন; গরীবদের তুমি য়ে সাহায্য কর, তা তিনি দেখেছেন৷ ঈশ্বর তোমায় স্মরণ করেছেন৷ 5 তুমি যাফো শহরে লোকদের পাঠাও, সেখানে শিমোন নামে একজন লোক আছে, যার অপর নাম পিতর, তোমার লোকেরা সেখানে গিয়ে তাকে এখানে নিয়ে আসুক৷ 6 সে চামড়ার ব্যবসাযী শিমোনের বাড়িতে আছে, সেই বাড়ি সমুদ্রের ধারে৷’ 7 স্বর্গদূত কথা বলে চলে গেলে পরে কর্ণীলিয় দুজন কর্মচারীকে ও একজন সৈনিককে ডেকে পাঠালেন৷ ঈশ্বরভক্ত এই সৈনিকটি কাজে সাহায্য করার ব্যাপারে সব সময়ই কর্ণীলিয়র কাছে কাছে থাকত৷ 8 এই তিন ব্যক্তির কাছে কর্ণীলিয় সব কিছু বুঝিয়ে তাদের যাফোতে পাঠালেন৷ 9 পরের দিন তারা যখন যাফোর কাছাকাছি পৌঁছলো৷ সেই সময়ে পিতর প্রার্থনা করার জন্য ছাদের উপর উঠে ছিলেন৷ বেলা তখন ভর দুপুর৷ 10 পিতরের খিদে পেল এবং তিনি খেতে চাইলেন৷ নীচে লোকেরা তখন পিতরের জন্য খাবার প্রস্তুত করছে, এমন সময় তিনি আবিষ্ট হলেন৷ 11 তিনি দেখলেন আকাশ মুক্ত হয়েছে আর একটা কিছু নেমে আসছে৷ সেটা দেখতে একটা বড় চাদরের মত, তার চারটে খুঁট ধরে কেউ য়েন তা মাটিতে নামিয়ে দিচ্ছে৷ 12 তার মধ্যে পৃথিবীর সব রকমের পশু ও সরীসৃপ এবং আকাশের নানা রকমের পক্ষী রয়েছে৷ 13 এরপর সেই রব পিতরকে বলল, ‘পিতর ওঠ, মার ও খাও৷’ 14 পিতর বললেন, ‘প্রভু কখনই না! কারণ আমি কখনও কোন অশুদ্ধ বা অপবিত্র কিছু খাই নি৷’ 15 তখন আবার এই রব শোনা গেল, ‘ঈশ্বর যা শুদ্ধ করেছেন তা তুমি ‘অশুদ্ধ’ বোলো না!’ 16 এইভাবে তিন বার ঘটে যাবার পর সেই চাদরটি আকাশে তুলে নেওয়া হল৷ 17 পিতর য়ে দর্শন পেয়েছিলেন তার অর্থ কি হতে পারে তা যখন তিনি মনে মনে চিন্তা করছেন, সেই সময় কর্ণীলিয়াসের পাঠানো ঐ লোকেরা শিমোনের বাড়ির খোঁজ করতে করতে বাড়ির ফটকে এসে হাজির হল৷ 18 তারা জিজ্ঞেস করল, ‘শিমোন যাকে পিতর বলে তিনি কি এ বাড়িতে রয়েছেন?’ 19 পিতর তখনও সেই দর্শনের বিষয়ে চিন্তা করছেন, তখন আত্মা তাঁকে বললেন, ‘দেখ! তিন জন লোক তোমার খোঁজ করছে৷ 20 তুমি উঠে নীচে যাও, বিনা দ্বিধায় তাদের সঙ্গে যাও, কারণ আমিই তাদের পাঠিয়েছি৷’ 21 তখন পিতর নীচে গিয়ে সেই লোকদের বললেন, ‘দেখুন, আপনারা যাকে খুঁজছেন, আমিই সেই লোক৷ আপনারা এখানে কেন এসেছেন?’ 22 তারা বলল, ‘আমরা সেনাপতি কর্ণীলিয়াসের কাছ থেকে এসেছি৷ তিনি একজন ধার্মিক লোক, তিনি ঈশ্বরের উপাসনা করেন৷ ইহুদীদের কাছেও তিনি শ্রদ্ধার পাত্র৷ স্বর্গদূত কর্ণীলিয়াসকে নির্দেশ দিয়েছেন য়েন আপনাকে তাঁর বাড়ীতে আসতে আমন্ত্রণ দেওয়া হয়৷ আপনি কি বলবেন তা য়েন তিনি শুনতে পান৷’ 23 তখন পিতর তাদের ভেতরে নিয়ে গিয়ে রাতটা তাঁর ওখানে থাকার ব্যবস্থা করলেন৷পর দিন পিতর প্রস্তুত হয়ে সেই লোকদের সঙ্গে রওনা হয়ে গেলেন৷ যাফো থেকে কয়েকজন বিশ্বাসী ভাইও পিতরের সঙ্গে গেলেন৷ 24 পরের দিন তাঁরা কৈসরিয়া শহরে এলেন৷ কর্ণীলিয়া তাঁদের জন্য অপেক্ষা করছিলেন, তিনি তাঁর আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের তাঁর বাড়িতে ডেকেছিলেন৷ 25 পিতর যখন ভেতরে গেলেন তখন কর্ণীলিয় এসে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাত্ করলেন; আর উপুড় হয়ে পড়ে পিতরকে প্রণাম জানালেন৷ 26 কিন্তু পিতর তাঁকে বললেন, ‘আহা, কি করছেন, উঠুন! আমি তো একজন সামান্য মানুষ মাত্র৷’ 27 পিতর তাঁর সঙ্গে কথা বলতে বলতে ভেতরে গিয়ে দেখলেন, সেখানে বহুলোক এসে জড়ো হয়েছে৷ 28 পিতর তাঁদের বললেন, ‘আপনারা জানেন, অন্য জাতের লোকের সঙ্গে মেলামেশা করা বা তাদের বাড়ি যাওয়া ইহুদীদের জন্য বিধি-সম্মত কাজ নয়; কিন্তু ঈশ্বর আমাকে দেখিয়ে দিয়েছেন য়ে, কোন মানুষকে ‘অশুচি’ বা ‘অপবিত্র’ বলা ঠিক নয়৷ 29 তাই আমাকে ডেকে পাঠান হল, আর আমি বিনা আপত্তিতে চলে এলাম৷ এখন আমি জানতে চাই আপনারা কি কারণে আমায় ডেকে পাঠিয়েছেন৷’ 30 কর্ণীলিয় বললেন, ‘চারদিন আগে এই সময় আমি আমার ঘরে বসে প্রার্থনা করছিলাম, বেলা তখন প্রায় তিনটে, সেই সময় হঠাত্ এক ব্যক্তি আমার সামনে এসে দাঁড়ালেন, তাঁর গায়ে ছিল উজ্জ্বল পোশাক৷ 31 তিনি বললেন, ‘কর্ণীলিয় তোমার প্রার্থনা গ্রাহ্য হয়েছে, আর তুমি গরীব দুঃখীদের য়ে সাহায্য কর তা-ও ঈশ্বর দেখেছেন৷ ঈশ্বর তোমাকে স্মরণ করেছেন; 32 তাই তুমি যাফোয় কিছু লোক পাঠাও এবং শিমোন যাকে পিতর বলে তাকে এখানে নিয়ে এস৷ সমুদ্রের ধারে শিমোন নামে য়ে চামড়ার ব্যবসাযী আছে, সে তার বাড়িতে আছে৷’ 33 তাই আমি সঙ্গে সঙ্গে আপনার কাছে লোক পাঠালাম; আর আপনি বড় অনুগ্রহ করে এখানে এসেছেন৷ এখন আমরা সকলে এখানে ঈশ্বরের সামনে আছি; প্রভু আপনাকে য়ে সব কথা বলতে আদেশ করেছেন আমরা সকলে তা শুনব৷’ 34 তখন পিতর বলতে শুরু করলেন, ‘এখন আমি সত্যি সত্যিই বুঝতে পেরেছি য়ে ঈশ্বর কারও প্রতি পক্ষপাতিত্ব করেন না৷ 35 প্রত্যেক জাতির মধ্যে য়ে কেউ ঈশ্বরের উপাসনা করে ও ন্যায় কাজ করে, ঈশ্বর এমন লোকদের গ্রহণ করেন৷ 36 তিনি ইস্রায়েলের লোকদের কাছে তাঁর সুসমাচার পাঠিয়েছিলেন৷ তিনি সেই সুসমাচারে জানালেন য়ে যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমেই শান্তি লাভ হয়৷ তিনি সকলেরই প্রভু! 37 সমগ্র যিহূদাতে কি ঘটেছিল সে সব কথা আপনারা শুনেছেন৷ য়োহন বাপ্তাইজক লোকেদের কাছে বাপ্তিস্মের কথা প্রচার করার পর গালীলে এই ঘটনাগুলি শুরু হয়৷ 38 আপনারা সেই নাসরতীয় যীশুর বিষয়ে শুনেছেন, শুনেছেন ঈশ্বর কিভাবে তাঁকে পবিত্র আত্মায় ও পরাক্রমের সঙ্গে অভিষেক করেছিলেন৷ যীশু সর্বত্র মানুষের মঙ্গল করে বেড়াতেন, আর যাঁরা দিয়াবলের কবলে পড়েছিল তাদের তিনি মুক্ত করতেন, কারণ ঈশ্বর তাঁর সঙ্গে ছিলেন৷ 39 যিহূদা ও জেরুশালেমে যীশু যা কিছু করেছেন, আমরা তা স্বচক্ষে দেখেছি, আমরা তার সাক্ষী৷ তারা তাঁকে কাঠের তৈরী এক ক্রুশে ঝুলিয়ে হত্যা করেছে; 40 কিন্তু ঈশ্বর তাঁকে মৃত্যুর তিন দিনের মাথায় জীবিত করেছেন৷ ঈশ্বর লোকদের কাছে যীশুকে জীবিতরূপে দেখালেন৷ 41 কিন্তু তিনি সবাইকে দেখা দেন নি৷ ঈশ্বর পূর্বেই সাক্ষীরূপে যাদের মনোনীত করেছিলেন, কেবল তারাই তাঁকে দেখতে পেয়েছিলেন, আমরাই সেইসব সাক্ষী! মৃতদের মধ্য থেকে জীবিত হবার পর আমরা যীশুর সঙ্গে পান-আহার করেছি; 42 আর তিনি আমাদের আদেশ দিলেন, য়েন আমরা লোকদের মাঝে প্রচার করি আর সাক্ষ্য দিই য়ে তিনিই সেই ব্যক্তি, যাকে ঈশ্বর সমস্ত জীবিত ও মৃত সকলের বিচারকর্তা করে মনোনীত করেছেন৷ 43 য়ে কেউ যীশুকে বিশ্বাস করবে, সে পাপের ক্ষমা পাবে৷ যীশুর নামে ঈশ্বর সেইসব লোকেদের পাপ ক্ষমা করবেন৷ সমস্ত ভাববাদী বলে গেছেন য়ে এ সত্য৷’ 44 পিতর যখন এইসব কথা বলছিলেন, তখন যাঁরা সেখানে সেইসব কথা শুনছিল, তাদের সকলের ওপর পবিত্র আত্মা নেমে এলেন৷ 45 ইহুদী সম্প্রদায় থেকে য়ে খ্রীষ্ট বিশ্বাসীরা পিতরের সঙ্গে সেখানে এসেছিলেন তাঁরা সকলে আশ্চর্য হয়ে গেলেন, কারণ অইহুদীদের ওপরও পবিত্র আত্মার দান নেমে এল৷ 46 কারণ তাঁরা ওদেরকে নানা ভাষায় কথা বলতে ও ঈশ্বরের প্রশংসা করতে শুনলেন৷ 47 তখন পিতর বললেন, ‘কেউ কি এই লোকদের জলে বাপ্তাইজ করতে অস্বীকার করতে পারে? আমরা য়েমন পবিত্র আত্মা পেয়েছি তারাও তো তেমনি পেয়েছে!’ 48 তখন তিনি যীশু খ্রীষ্টের নামে কর্ণীলিয়, তার পরিবারের লোকদের ও তাদের বন্ধুদের জলে বাপ্তিস্ম গ্রহণ করতে আদেশ করলেন৷ এরপর তাঁরা পিতরকে তাঁদের সঙ্গে কিছু দিন থাকতে অনুরোধ করলেন৷
Acts 11:1 যিহূদিয়ার প্রেরিতেরা এবং বিশ্বাসী ভাইয়েরা শুনতে পেলেন য়ে অইহুদীরাও ঈশ্বরের শিক্ষা গ্রহণ করেছে৷ 2 পিতর যখন জেরুশালেমে এলেন, তখন কিছু ইহুদী সম্প্রদায়ের খ্রীষ্ট বিশ্বাসী তাঁর সমালোচনা করতে লাগল৷ 3 তারা বলল, ‘দেখ, তুমি যাঁরা ইহুদী নয় এবং যাদের সুন্নত হয় নি তাদের ঘরে গিয়েছিলে, এমনকি সেখানে খাওয়া-দাওয়া করেছিলে!’ 4 তখন পিতর তাদেরকে আগের সব ঘটনা বিস্তারিতভাবে জানিয়ে বললেন, 5 ‘আমি যাফো শহরে প্রার্থনা করছিলাম, সেই সময় ভাবাবিষ্ট অবস্থায় এক দর্শন পেলাম৷ আমি দেখলাম, একটা বড় চাদরের মত কিছু, তার চারটি খুঁট ধরে আকাশ থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ তা আমার কাছে এলে 6 আমি ভালোভাবে লক্ষ্য করে দেখলাম তার মধ্যে ভূচর গৃহপালিত পশু, সকল হিংস্র বন্য জন্তু, সরীসৃপ ও আকাশের পাখিরা আছে৷ 7 তখন আমি এক রব শুনতে পেলাম যা আমায় বলছে, ‘পিতর ওঠ, এদের মেরে খাও!’ 8 কিন্তু আমি বললাম, ‘না, প্রভু এ হতে পারে না! কারণ অপবিত্র অশুদ্ধ কোন কিছু কখনও আমি খাই না!’ 9 আকাশ থেকে সেই রব দ্বিতীয় বার ভেসে এল, ‘ঈশ্বর যা শুদ্ধ করেছেন তুমি তা অপবিত্র বলো না৷’ 10 এইভাবে তিনবার সেই রব শোনা গেল, পরে সে সব আবার আকাশে টেনে তুলে নেওয়া হল, 11 আর আমি য়েখানে ছিলাম সেই বাড়িতে তখনই তিন জন লোক এল৷ তাদের কৈসরিয়া থেকে আমার কাছে পাঠানো হয়েছিল; 12 আর আত্মা আমায় বললেন, ‘কোনরকম দ্বিধা না করে তুমি ওদের সঙ্গে যাও৷ এই দুজন ভাইও আমার সঙ্গে গিয়েছিলেন; আর আমরা কর্ণীলিয়র বাড়িতে গেলাম৷ 13 তিনি কিভাবে একজন স্বর্গদূতকে তাঁর বাড়িতে দাঁড়াতে দেখেছিলেন তা আমাদের জানালেন৷ সেই স্বর্গদূত তাঁকে বললেন, ‘যাফোতে লোকদের পাঠাও; সেখান থেকে শিমোন, যাকে পিতর বলে, তাকে আমন্ত্রণ দিয়ে আনাও৷ 14 তিনি এসে য়ে সব কথা বলবেন তারই দ্বারা তুমি ও তোমার গৃহের সকলে উদ্ধার লাভ করবে৷’ 15 আমি যখন কথা বলতে শুরু করলাম, পবিত্র আত্মা তখন তাদের ওপর নেমে এলেন, য়েমন শুরুতে আমাদের ওপর এসেছিলেন৷ 16 এরপর প্রভু যা বলেছিলেন তা আমার মনে পড়ল৷ প্রভু যীশু বলেছিলেন, ‘য়োহন জলে বাপ্তাইজ করছেন, কিন্তু তোমরা পবিত্র আত্মায় বাপ্তাইজিত হবে৷’ 17 আমরা প্রভু যীশু খ্রীষ্টকে বিশ্বাস করলে ঈশ্বর আমাদের য়ে দান দিয়েছিলেন, তেমনি তারা বিশ্বাসী হলে ঈশ্বর তাদেরকে সমান বরদান করলেন, সেক্ষেত্রে আমি কি ঈশ্বরের কাজে বাধাদান করতে পারি? না!’ 18 ইহুদী বিশ্বাসীরা যখন এই সব কথা শুনল, তারা তর্ক থামিয়ে দিয়ে ঈশ্বরের প্রশংসা করতে করতে বলল, ‘তাহলে আমাদেরই মত অইহুদীদেরও ঈশ্বর জীবন লাভ করার জন্য মন-ফিরানোর সুয়োগ দিলেন!’ 19 স্তিফানের হত্যার পর নির্য়াতন শুরু হয়েছিল, ফলে বিশ্বাসীরা বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে গিয়েছিলেন৷ তাঁদের মধ্যে অনেকে বহুদূর অর্থাত্ ফৈনীকিয়া, কুপ্র ও আন্তিয়খিয়ায় পালিয়ে গিয়ে কেবলমাত্র ইহুদীদের কাছেই সুসমাচার প্রচার করেছিলেন৷ 20 তাঁদের মধ্যে কয়েকজন বিশ্বাসী কুপ্রীয় ও কুরিণীয় দেশের লোক ছিলেন, যাঁরা আন্তিয়খিয়ায় এসে গ্রীক ভাষাবাদী ইহুদীদের কাছে প্রভু যীশুর সুসমাচার প্রচার করেছিলেন৷ 21 প্রভুর পরাক্রম তাঁদের সাথে ছিল, ফলে বহুলোক প্রভু যীশুর ওপর বিশ্বাস করে তাঁর অনুগামী হল৷ 22 জেরুশালেমের বিশ্বাসী মণ্ডলী যখন সেই সংবাদ শুনলেন, তাঁরা বার্ণাবাকে আন্তিয়খিয়ায় পাঠালেন৷ 23 বার্ণবা একজন ভালো লোক ছিলেন; তিনি পবিত্র আত্মায় ও বিশ্বাসে পরিপূর্ণ ছিলেন৷ আন্তিয়খিয়ায় গিয়ে বার্ণবা দেখলেন য়ে ঈশ্বর সেখানকার লোকদের আরো কত আশীর্বাদ করেছেন৷ এতে তিনি খুবই সন্তুষ্ট হয়ে, তাদের হৃদয় দিয়ে প্রভুর প্রতি সদাই বিশ্বস্ত থাকতে উত্সাহ দিলেন; আর বহুসংখ্যক লোক প্রভুর সঙ্গে যুক্ত হলেন৷ 24 25 বার্ণবা শৌলের খোঁজে তার্ষে গেলেন৷ 26 সেখানে শৌলের দেখা পেয়ে তিনি তাঁকে আন্তিয়খিয়াতে নিয়ে এলেন৷ তাঁরা সম্পূর্ণ এক বছর বিশ্বাসী সমাবেশে থেকে বহু লোককে শিক্ষা দিলেন৷ আন্তিয়খিয়াতেই অনুগামীরা প্রথম ‘খ্রীষ্টীয়ান’ নামে অভিহিত হলেন৷ 27 এই সময কয়েকজন ভাববাদী জেরুশালেম থেকে আন্তিয়খিয়াতে এলেন৷ 28 তাঁদের মধ্যে আগাব নামে এক ভাববাদী উঠে দাঁড়িয়ে পবিত্র আত্মার প্রেরণায় ভাববাণী করলেন য়ে, ‘সারা জগতে এক মহা দুর্ভিক্ষ আসছে৷ লোকদের খাদ্যের অভাব হবে৷’ সম্রাট ক্লৌদিয়ের সময় এই দুর্ভিক্ষ হয়েছিল৷ 29 প্রত্যেক শিষ্য তাঁদের নিজ-নিজ সামর্থ্য অনুসারে যিহূদার বিশ্বাসী ভাইদের সাহায্য পাঠাবার জন্য মনস্থির করলেন৷ 30 তাই তাঁরা বার্ণবা ও শৌলের মাধ্যমে তাঁদের সংগৃহীত অর্থ পাঠিয়ে এই কাজ করলেন৷ 31 32 33 34 35 36
Acts 12:1 সেই সময় রাজা হেরোদ বিশ্বাসী মণ্ডলীর কিছু লোকের ওপর নির্য়াতন শুরু করলেন৷ 2 য়োহনের ভাই যাকোবকে হেরোদ তরবারির আঘাতে হত্যা করার নির্দেশ দিলেন৷ 3 তিনি যখন দেখলেন এতে ইহুদীরা খুব খুশী হল, তখন তিনি পিতরকে গ্রেপ্তার করলেন৷ তখন ছিল ইহুদীদের নিস্তারপর্বেরসময়৷ 4 পিতরকে গ্রেপ্তার করে হেরোদ তাঁকে কারাগারে রাখলেন৷ তাঁকে পাহারা দেবার জন্য চারজন করে ষোল জন সৈনিককে নিযোগ করলেন৷ তিনি মনে করলেন নিস্তারপর্বের পরে পিতরকে জনসাধারণের কাছে বিচারের জন্য হাজির করবেন৷ 5 তাই পিতরকে কারাগারে বন্দী করে রাখা হল, কিন্তু বিশ্বাসী মণ্ডলী তাঁর জন্য ঈশ্বরের কাছে একাগ্রভাবে প্রার্থনা করতে থাকলেন৷ 6 সেই রাতে পিতর দুজন প্রহরারত সৈনিকের মাঝখানে শুয়ে ঘুমাচ্ছিলেন, দুটি শেকল দিয়ে তাঁকে বেঁধে রাখা হয়েছিল এবং সৈনিকরা ফটকে পাহারা দিচ্ছিল৷ হেরোদ ঠিক করেছিলেন য়ে পরদিন সকালে বিচারের জন্য পিতরকে কারাগারের বাইরে আনবেন৷ 7 হঠাত্ প্রভুর এক দূত সেখানে এসে দাঁড়ালেন; আর কারাগারের মধ্যে একটা আলো ঝলসে উঠল৷ স্বর্গদূত পিতরের গায়ে মৃদু আঘাত দিয়ে তাঁকে জাগিয়ে বললেন, ‘শিগগির ওঠ!’ তখন তাঁর দুহাতের শেকল খসে পড়ল৷ 8 এরপর সেই স্বর্গদূত পিতরকে বললেন, ‘পোশাক পর, আর পায়ে জুতো দাও৷’ পিতর সেই মত কাজ করলেন৷ তখন স্বর্গদূত পিতরকে বললেন, ‘তোমার আলখাল্লাটি গায়ে দিয়ে আমাকে অনুসরণ কর৷’ 9 স্বর্গদূত বের হলেন আর পিতর তাঁর পিছু পিছু বাইরে বেরিয়ে গেলেন; কিন্তু স্বর্গদূত যা করলেন তা য়ে বাস্তবে সত্য তা তিনি বুঝে উঠতে পারছিলেন না৷ তিনি মনে করলেন হয়তো কোন দর্শন দেখছেন৷ 10 তাঁরা প্রথম ও দ্বিতীয় পাহারাদারদের পেছনে ফেলে এগিয়ে গেলেন, আর য়েখান দিয়ে শহরে যাওয়া যায়, লোহার সেই বিরাট ফটকের কাছে এলেন৷ সেই ফটক তাঁদের জন্য নিজে থেকে খুলে গেল; আর তাঁরা সেখান দিয়ে বাইরে বেরিয়ে গেলেন৷ তাঁরা দুজনে একটা রাস্তার শেষ পর্যন্ত গেলেন, অমনি সেই স্বর্গদূত পিতরের কাছ থেকে হঠাত্ কোথায় মিলিয়ে গেলেন৷ 11 তখন পিতর বুঝলেন কি ঘটেছে এবং বলে উঠলেন, ‘আমি নিশ্চয় জানলাম য়ে এসবই বাস্তব৷ প্রভু তাঁর দূতকে পাঠিয়েছিলেন; আর তিনিই হেরোদের ও য়ে ইহুদীরা নির্য়াতন দেখবে ভেবেছিল তাদের হাত থেকে আমায় উদ্ধার করেছেন৷’ 12 এই কথা বুঝতে পেরে তিনি মরিয়মের বাড়ির দিকে রওনা দিলেন৷ এই মরিয়ম হলেন য়োহনের মা৷ এই য়োহনকে আবার মার্কও বলে৷ এদের বাড়িতে অনেকে জড়ো হয়ে প্রার্থনা করছিলেন৷ 13 পিতর এসে বাইরের দরজায় ঘা দিলে রোদা নামে একজন চাকরানী এসে দরজায় কে তা জিজ্ঞেস করল৷ 14 পিতরের কন্ঠস্বর চিনতে পেরে তার এত আনন্দ হল য়ে সে দরজা খুলতে ভুলে গেল, আর দৌড়ে ভেতরে গিয়ে এই খবর জানাল৷ সে বলল, ‘পিতর দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন!’ 15 তাঁরা তাকে বললেন, ‘তোমার মাথা খারাপ হয়েছে!’ কিন্তু সে যখন বারবার বলতে লাগল, তার কথাই ঠিক, তখন তাঁরা বললেন, ‘তবে ও নিশ্চয়ই স্বর্গদূত৷’ 16 কিন্তু পিতর দরজায় আঘাত করেই চললেন, আর তাঁরা দরজা খুলে তাঁকে দেখতে পেয়ে আশ্চর্য হয়ে গেলেন৷ 17 তিনি হাত দিয়ে ইঙ্গিতে তাদেরকে চুপ করতে বললেন এবং প্রভু কিভাবে সেই কারাগার থেকে তাঁকে উদ্ধার করে এনেছেন, সে কথা জানালেন৷ তিনি বললেন, ‘তোমরা যাকোবকে ও অন্যান্য ভাইদের এই ঘটনার কথা জানাও৷’ পরে তিনি সেখান থেকে অন্য জায়গায় চলে গেলেন৷ 18 সকাল হলে প্রহরারত সৈনিকদের মধ্যে একটা হৈচৈ পড়ে গেল৷ পিতরের কি হল, এই ভেবে তারা আশ্চর্য হয়ে গেল৷ 19 এরপর হেরোদ পিতরকে অনেক খোঁজাখুঁজি করলেন, কিন্তু তাঁকে না পেয়ে প্রহরীদের নানাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে তিনি সেই প্রহরীদের প্রাণদণ্ডের আদেশ দিলেন৷এরপর হেরোদ যিহূদা ছেড়ে কৈসরিয়া শহরে গিয়ে কিছুকাল সেখানে থাকলেন৷ 20 হেরোদ সোরীয় ও সীদোনীয়ের লোকদের ওপর খুবই ক্রুদ্ধ ছিলেন৷ তারা দল বেঁধে হেরোদের সঙ্গে দেখা করতে এল৷ রাজার একান্ত সচিব ব্লান্তকে নিজেদের দলে টেনে তারা হেরোদকে শাস্তির জন্য অনুরোধ করল, কারণ তাদের দেশ রাজার দেশের ওপর খাদ্য়ের জন্য নির্ভরশীল ছিল৷ 21 এক নিরূপিত দিনে, হেরোদ রাজকীয় পোশাক পরে সিংহাসনে এসে বসলেন এবং লোকদের কাছে ভাষণ দিতে লাগলেন৷ 22 লোকেরা চিত্কার করতে লাগল, ‘এতো মানুষের কন্ঠস্বর নয়, এ য়ে ঈশ্বরের কন্ঠস্বর!’ 23 হেরোদ এই প্রশংসা কুড়ালেন, ঈশ্বরকে তাঁর প্রাপ্য় গৌরব দিলেন না৷ হঠাত্ প্রভুর এক দূত এসে হেরোদকে আঘাত করলে তিনি অসুস্থ হলেন৷ তাঁর শরীর কীটে খেয়ে ফেলল, ফলে তিনি মারা গেলেন৷ 24 এদিকে ঈশ্বরের বার্তা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ল আর বহু লোক তাতে বিশ্বাস করল৷ 25 বার্ণবা ও শৌল জেরুশালেমে তাঁদের কাজ সেরে আন্তিয়খিয়ায় ফিরে গেলেন৷ তাঁরা য়োহন, যাকে মার্ক বলে, তাঁকে সঙ্গে নিয়ে গেলেন৷
Acts 13:1 সেই সময় আন্তিয়খিয়ার মণ্ডলীতে কয়েকজন ভাববাদী ও শিক্ষক ছিলেন৷ তাঁরা হলেন; বার্ণবা, শিমোন যাকে নীগের বলা হত, কুরীনীয় শহরের লুকিয়, মনহেম ইনি শাসনকর্তা হেরোদের সঙ্গে মানুষ হয়েছিলেন ও শৌল৷ 2 তাঁরা প্রভুর সেবায় রত ছিলেন ও উপবাস করছিলেন৷ সেই সময় একদিন পবিত্র আত্মা বললেন, ‘বার্ণবা ও শৌলকে আমার জন্য পৃথক করে দাও; কারণ একটি বিশেষ কাজের জন্য আমি তাদের মনোনীত করেছি৷’ 3 তখন তাঁরা উপবাস ও প্রার্থনার পর বার্ণবা ও শৌলের ওপর হাত রেখে তাঁদের বিদায় দিলেন৷ 4 এইভাবে পবিত্র আত্মার প্রেরণায় চালিত হয়ে তাঁরা সিলুকিয়া শহরে গেলেন ও সেখান থেকে জাহাজে করে কুপ্র দ্বীপে রওনা দিলেন৷ 5 তাঁরা সালামী শহরে পৌঁছে ইহুদীদের সমাজ-গৃহগুলিতে গিয়ে ঈশ্বরের বার্তা প্রচার করলেন৷ য়োহন মার্ক তাঁদের সহকারীরূপে কাজ করছিলেন৷ 6 তাঁরা সেই দ্বীপের মধ্য দিয়ে য়েতে য়েতে পরে পাফোসে এসে উঠলেন৷ সেখানে তাঁরা বর যীশু নামে এক ইহুদী যাদুকর ও ভণ্ড ভাববাদীর দেখা পেলেন৷ 7 সে সেই রাজ্যের রাজ্যপাল সের্গীয় পৌলের উপদেষ্টা ছিল৷ সের্গীয় পৌল ছিলেন একজন বুদ্ধিমান লোক৷ তিনি বার্ণবা ও শৌলকে ডেকে পাঠিয়ে তাঁদের কাছ থেকে ঈশ্বরের বার্তা শুনতে চাইলেন৷ 8 কিন্তু সেই যাদুকর ইলুমা৷ এই ছিল বর যীশুর গ্রীক নাম বার্ণবা ও পৌলের বিরুদ্ধাচরণ করে রাজ্যপালকে খ্রীষ্টে বিশ্বাস থেকে সরিয়ে নিয়ে যাবার চেষ্টা করতে লাগল৷ 9 তখন শৌল যাকে পৌলও বলে, তিনি পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হয়ে ইলুমার দিকে সোজাসুজি তাকালেন৷ 10 বললেন, ‘তুই ছল-চাতুরীতে ভরা লোক! তুই দিয়াবলের ছেলে! যা কিছু ঠিক, তুই তার শত্রু! তুই কি প্রভুর সত্য পথকে বিকৃত করতে ক্ষান্ত হবি না? 11 দেখ, প্রভুর হাত এখন তোর ওপর৷ তুই অন্ধ হয়ে যাবি, আর কিছু দিন সূর্যের আলো আর দেখতে পাবি না৷’সঙ্গে সঙ্গে এক গভীর অন্ধকার তার ওপর নেমে এল, আর সে চারদিকে হাতড়াতে লাগল, তাকে হাত ধরে সেখান থেকে নিয়ে যাবার জন্য লোকদের অনুরোধ করতে লাগল৷ 12 তখন সেই ঘটনা দেখে রাজ্যপাল বিশ্বাস করলেন, কারণ তিনি প্রভুর বিষয়ে শিক্ষার কথা শুনে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন৷ 13 পৌল ও তাঁর সঙ্গীরা পাফঃ থেকে জলপথে রওনা দিয়ে পাম্ফুলিয়ার পর্গাতে এলেন; কিন্তু য়োহন তাঁদের ছেড়ে জেরুশালেমে ফিরে গেলেন৷ 14 তাঁরা পর্গা থেকে আবার যাত্রা শুরু করে পিষিদিয়ার আন্তিয়খিয়ায় এসে উপস্থিত হলেন৷ এক বিশ্রামবারে পৌল ও বার্ণবা ইহুদীদের এক সমাজ-গৃহে গিয়ে বসলেন৷ 15 মোশির বিধি-ব্যবস্থা এবং ভাববাদীদের গ্রন্থ থেকে পাঠ করা হলে পরে সমাজ-গৃহের অধ্যক্ষ তাদের বলে পাঠালেন, ‘ভাইয়েরা, লোকদের কাছে শিক্ষা দেবার ও উত্সাহ য়োগাবার মত যদি আপনাদের কিছু থাকে তবে এগিয়ে এসে তা বলুন৷’ 16 তখন পৌল উঠে দাঁড়িয়ে হাত নেড়ে বলতে থাকলেন, ‘হে ইস্রায়েলী লোকেরা ও অইহুদীরা, আপনারা যাঁরা সত্য ঈশ্বরের উপাসনা করেন তারা আমার কথা শুনুন৷ 17 এই ইস্রায়েলীয়দের ঈশ্বর আমাদের পিতৃপুরুষদের মনোনীত করেছিলেন, আর মিশর দেশে প্রবাসীরূপে থাকার সময় তিনি আমাদের লোকদের উন্নত করেছিলেন৷ সেই দেশ থেকে ঈশ্বর মহাপরাক্রমে তাদের বের করে আনলেন৷ 18 প্রায় চল্লিশ বছর ধরে প্রান্তরের মধ্যে ঈশ্বর তাদের সব রকমের ব্যবহার সহ্য করলেন৷ 19 তিনি কনানের সাতটি জাতিকে উচ্ছেদ করে সেইসব জাতির দেশ ইস্রায়েলীয়দের দিলেন৷ 20 এইভাবে প্রায় চারশো পঞ্চাশ বছর কেটে গেল৷‘এরপর ভাববাদী শমূয়েলের সময় পর্যন্ত ঈশ্বর কয়েকজন বিচারক দিলেন; 21 তারপর তারা একজন রাজা চাইলে বিন্যামীন গোষ্ঠীর কীশের ছেলে শৌলকে ঈশ্বর দিলেন,. য়ে চল্লিশ বছর ধরে তাদের ওপর রাজত্ব করল৷ 22 পরে তিনি তাকে সরিয়ে, দাযূদকে তাদের রাজা করলেন৷ ঈশ্বর তাঁর বিষয়ে সাক্ষ্য দিয়ে বললেন, ‘আমি যিশয়ের ছেলে দাযূদকে পেয়েছি, সে আমার মনের মত লোক৷ আমি তাকে যা করতে বলব সে তা করবে৷’ 23 দাযূদের বংশে ঈশ্বর তাঁর প্রতিশ্রুতি অনুসারে ইস্রায়েলের জন্য এক ত্রাণকর্তা আনলেন, তিনি যীশু৷ 24 তাঁর আসার আগে য়োহন সমস্ত ইস্রায়েল জাতির কাছে মন-ফিরানোর এক বাপ্তিস্ম ঘোষণা করলেন৷ 25 য়োহন তাঁর কাজের শেষের দিকে বলতেন, ‘আমি কে, তোমরা কি মনে কর? আমি সেই খ্রীষ্ট নই৷ আমার পর যিনি আসছেন, তাঁর জুতোর ফিতে খোলার য়োগ্যতাও আমার নেই৷ 26 ‘ভাইয়েরা, অব্রাহামের বংশধরেরা, আর অইহুদীদের মধ্যে যাঁরা ঈশ্বরের উপাসনা করেন, আপনারা সকলে জানুন য়ে আমাদেরই কাছে পরিত্রাণের এই বার্তা পাঠানো হয়েছে৷ 27 জেরুশালেমের অধিবাসীরা ও তাদের নেতারা যীশুকে ত্রাণকর্তা হিসেবে চিনতে পারে নি, যদিও ভাববাদীদের বাক্য যা প্রভু যীশুর সম্বন্ধে বলে তা তাদের কাছেই প্রতি বিশ্রামবারে পাঠ করা হত৷ যিহূদিরাই তাকে দোষী সাব্যস্ত করল, আর এইভাবে তারা ভাববাদীদের বাক্য সফল করেছে৷ 28 মৃত্যুদণ্ড দেবার মতো তাঁর কোন দোষ না পেলেও তারা পীলাতের কাছে তাঁকে হত্যা করার জন্য দাবী জানায়৷ 29 যীশুর বিষয়ে যা কিছু শাস্ত্রে লেখা হয়েছে তার সবকিছু সম্পন্ন করবার পর, তারা তাঁর মৃতদেহ সেই ক্রুশ থেকে নামিয়ে এক কবরে রেখেছিল৷ 30 কিন্তু ঈশ্বর যীশুকে পুনর্জীবিত করলেন৷ 31 যাঁরা তাঁর সঙ্গে গালীল থেকে জেরুশালেমে এসেছিলেন, তাদেরকে তিনি অনেক দিন পর্যন্ত দেখা দিয়েছিলেন৷ তারাই এখন লোকদের কাছে সর্বসমক্ষে তাঁর সাক্ষী৷ 32 আমরা আপনাদের কাছে এই সুসমাচার জানাচ্ছি, যা ঈশ্বর আমাদের পিতৃপুরুষের কাছে প্রতিশ্রুতি স্বরূপ দিয়েছিলেন; 33 যীশুকে মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত করে ঈশ্বর আমাদের কাছে অর্থাত্ তাঁর সন্তানদের জন্যে সেই প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করেছেন৷ য়েমন দ্বিতীয় গীতে এ লেখা আছে:‘তুমি আমার পুত্র, আজই আমি তোমার পিতা হয়েছি৷’ গীতসংহিতা 2:7 34 ঈশ্বর যীশুকে মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত করেছেন৷ যীশু আর কখনও ক্ষয় পাবেন না৷ এই বিষয়ে ঈশ্বর বলেছেন:‘আমি দাযূদেব কাছে য়ে পবিত্র ও সত্য প্রতিশ্রুতিগুলি দিয়েছিলাম, তা তোমাকে দেব৷’ যিশাইয় 55:3 35 আবার আর এক জায়গায় ঈশ্বর বলেছেন:‘তুমি তোমার পবিত্রতমকে ক্ষয় দেখতে দেবে না৷’ গীতসংহিতা 16:10 36 দাযূদ তাঁর সময়ে ঈশ্বরের ইচ্ছা অনুযাযী কাজ করার পর মারা গেলে পিতৃপুরুষের কবরের মধ্যে তাঁকেও কবর দেওয়া হল ও তার দেহও ক্ষয় পেল৷ 37 কিন্তু ঈশ্বর যাকে (যীশুকে) মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত করেছেন, তিনি ক্ষয় দেখেন নি৷ 38 তাই ভাইয়েরা, আমি চাই আপনারা জানুন য়ে, এই যীশুর মাধ্যমেই পাপের ক্ষমা লাভের কথা আপনাদের কাছে ঘোষণা করে হচ্ছে৷ মোশির বিধি-ব্যবস্থায় আপনারা পাপ থেকে মুক্ত হতে পারতেন না; কিন্তু প্রত্যেক ব্যক্তি য়ে যীশুর ওপর বিশ্বাস করে, সে পাপ থেকে মুক্ত হতে পারে৷ 39 40 তাই সাবধান! ভাববাদীরা যা বলে গেছেন, তা য়েন আপনাদের জীবনে ফলে না যায়৷ ভাববাদীরা বললেন, 41 ‘শোন, তোমরা যাঁরা উপহাস কর! তোমরা দেখ, অবাক হও ও ধ্বংস হয়ে যাও, কারণ আমি তোমাদের সময়ে এমন কাজ করেছি, য়ে কাজের কথা তোমাদের বলা হলেও তোমরা বিশ্বাস করবে না৷’হবক্কূক 1:5 42 পৌল ও বার্ণবা যখন সমাজ-গৃহ থেকে চলে যাচ্ছেন, তখন লোকেরা অনুরোধ করল য়েন পরের বিশ্রামবারে তারা আরো বিস্তারিতভাবে ঐসব কথা তাদের জানান৷ 43 সমাজ-গৃহের সভা শেষ হলে, অনেক ইহুদী ও ইহুদী ধর্মাবলম্বী ভক্ত লোকেরা পৌল ও বার্ণবার পিছনে পিছনে গেল৷ পৌল ও বার্ণবা ঐসব লোকদের সঙ্গে কথা বললেন ও ঈশ্বরের অনুগ্রহে আস্থা রেখে চলার পরামর্শ দিলেন৷ 44 পরের বিশ্রামবারে সেই শহরের প্রায় সমস্ত লোক প্রভুর কথা শোনার জন্য সমবেত হল; 45 কিন্তু ইহুদীরা অতো লোকের সমাগম দেখে ঈর্ষাতে পূর্ণ হল৷ তারা পৌলের কথার প্রতিবাদ করে তাদের অপমানও করতে লাগল৷ 46 কিন্তু পৌল ও বার্ণবা নির্ভীকভাবে বলতে থাকলেন, ‘প্রথমে তোমরা যাঁরা ইহুদী তোমাদেরই কাছে ঈশ্বরের বার্তা প্রচার করার প্রযোজন ছিল; কিন্তু তোমরা যখন তা অগ্রাহ্য় করে নিজেদেরকে অনন্ত জীবনের অয়োগ্য মনে করছ, তখন আমরা অইহুদীদের কাছেই যাব৷ 47 কারণ প্রভু আমাদের এমনই আদেশ করেছেন:‘আমি তোমাদের অইহুদীদের কাছে দীপ্তিস্বরূপ করেছি, য়েন তোমরা জগতের সমস্ত লোকের কাছে পরিত্রাণের পথ জ্ঞাত কর৷’যিশাইয় 49:6 48 অইহুদীরা পৌলের এই কথা শুনে আনন্দিত হল ও প্রভুর বার্তার সম্মান করল৷ আর যাঁরা অনন্ত জীবনের জন্য মনোনীত হয়েছিল, তারা বিশ্বাস করল৷ 49 প্রভুর এই বার্তা সেই অঞ্চলের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ল৷ 50 এদিকে কিছু ইহুদীরা ভক্তিমতি ও সম্মানীয় মহিলাদের ও শহরের নেতাদের উত্তেজিত করে পৌল ও বার্ণবার প্রতি নির্য়াতন শুরু করল, আর নিজেদের অঞ্চল থেকে তাঁদের তাড়িয়ে দিল৷ 51 তখন তাঁরা তাদের বিরুদ্ধে পায়ের ধুলো ঝেড়ে ফেলে ইকনিয়ে চলে গেলেন৷ 52 এদিকে আন্তিয়কে অনুগামীরা আনন্দে ও পবিত্র আত্মায় পরিপূর্ণ হতে থাকলেন৷
Acts 14:1 এরপর পৌল ও বার্ণবা ইকনিয়ে গেলেন৷ সেখানে তাঁরা তাঁদের কাজের পদ্ধতি অনুযাযী সেই একইভাবে ইহুদীদের সমাজ-গৃহে প্রবেশ করলেন৷ সেখানকার লোকদের কাছে পৌল ও বার্ণবা এতো সুন্দরভাবে কথা বললেন, য়ে অনেক ইহুদী ও গ্রীক তাঁদের কথায় বিশ্বাস করল৷ 2 কিন্তু কিছু ইহুদীরা বিশ্বাস করল না এবং তারা ভাইদের বিরুদ্ধে অইহুদীদের ক্ষেপিয়ে তুলল৷ 3 পৌল ও বার্ণবা ইকনিয়ে অনেক দিন থেকে গেলেন, আর তাঁরা নির্ভীকভাবে প্রভুর কথা বলে য়েতে লাগলেন৷ তাঁরা প্রভুর অনুগ্রহের কথা প্রচার করতেন; আর প্রভুও তাঁদের মাধ্যমে নানা অলৌকিক কাজ করে সেই প্রচারের পক্ষে সাক্ষ্য দিতেন৷ 4 সেই শহরের লোকেরা দুদলে ভাগ হয়ে গেল, একদল ইহুদীদের পক্ষে আর অন্য দল প্রেরিতদের পক্ষ নিল৷ 5 তখন অইহুদীরা ও ইহুদীরা তাদের সমাজপতিদের সঙ্গে এক হয়ে পৌল ও বার্ণবাকে অপমান করে পাথর মেরে হত্যা করার পরিকল্পনা করল৷ 6 শৌল ও বার্ণবা তা জানতে পেরে সেই শহর ছেড়ে গেলেন৷ তাঁরা লুকায়নিয়ার লুস্ত্রা ও দর্বী শহরে ও তার চারপাশের অঞ্চলে চলে গেলেন; 7 আর সেখানেও তাঁরা সুসমাচার প্রচারের কাজ চালিয়ে গেলেন৷ 8 লুস্ত্রায় একজন লোক বসে থাকত, সে তার পা ব্যবহার করতে পারত না৷ সে জন্ম থেকেই খোঁড়া ছিল, কখনও হাঁটা চলা করে নি৷ 9 সেই লোকটি বসে বসে পৌলের কথা শুনছিল৷ পৌল তার দিকে চেয়ে দেখলেন সুস্থ হবার জন্য লোকটির ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস আছে৷ 10 পৌল তখন তাকে ডেকে বললেন, ‘তোমার দু পায়ে ভর দিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়াও!’ আর সে লাফ দিয়ে উঠে হেঁটে বেড়াতে লাগল৷ 11 পৌল যা করলেন তা দেখে লোকেরা লুকায়নীয় ভাষায় বলে উঠল, ‘দেবতারা মানুষ রূপ ধারণ করে আমাদের মধ্যে অবতীর্ণ হয়েছেন!’ 12 তারা বার্ণবাকে বলল, ‘দ্যুপিতর’আর পৌলকে বলল, ‘মর্কুরিয়,’কারণ পৌল ছিলেন প্রধান বক্তা৷ 13 শহরের ঠিক সামনেই দ্যুপিতের য়ে মন্দির ছিল, তার যাজক কয়েকটা ষাঁড় ও মালা নিয়ে শহরের ফটকে এল ও লোকদের সঙ্গে সেখানে তা বলিদান করে পৌল ও বার্ণবার কাছে উত্সর্গ করতে চাইল৷ 14 কিন্তু প্রেরিত বার্ণবা ও পৌল যখন একথা বুঝলেন, তখন তাঁরা নিজেদের পোশাক ছিঁড়ে দৌড়ে বাইরে গিয়ে লোকদের উদ্দেশ্যে চিত্কার করে বললেন, 15 ‘আহা, তোমরা এ করছ কি? আমরাও তোমাদের মতো সাধারণ মানুষ! আমরা তোমাদের সুসমাচার শোনাতে এসেছি৷ এইসব অসারতার মধ্য থেকে জীবন্ত ঈশ্বরের দিকে ফিরতে হবে৷ ঈশ্বরই আকাশ, পৃথিবী, সমুদ্র ও সেই সকলের মধ্যে যা কিছু আছে সে সমস্তই সৃষ্টি করেছেন৷ 16 তিনিই অতীতে সমস্ত জাতিকে নিজেদের খুশী মতো পথে চলতে দিয়েছেন৷ 17 তথাপি ঈশ্বর য়ে আছেন এর প্রমাণের জন্য তিনি অনেক কিছু করেছিলেন৷ তিনি সকলের মঙ্গল করেছেন৷ আকাশ থেকে বৃষ্টি ও বিভিন্ন ঋতুতে শস্য দিচ্ছেন৷ তিনি তোমাদের খাদ্য য়োগাচ্ছেন ও তোমাদের অন্তর আনন্দে পূর্ণ করছেন৷’ 18 এইসব কথা পৌল ও বার্ণবা অনেক করে বোঝালেও তাঁদের উদ্দেশ্যে বলিদান করা থেকে কোনভাবেই এই লোকদের রুখতে পারলেন না৷ 19 এই ঘটনার পর ইকনিয় ও আন্তিয়খিয়া থেকে কয়েকজন ইহুদী এসে লোকদের পৌলের বিরুদ্ধে প্ররোচিত করল৷ তারা পৌলের ওপর পাথর ছুঁড়ল, তাঁকে টেনে এনে শহরের বাইরে নিয়ে গেল৷ তারা মনে করল পৌল বুঝি মারাই গেছেন৷ 20 কিন্তু যীশুর অনুগামীরা এসে তাঁর চারপাশে দাঁড়ালে তিনি উঠে তাদের সঙ্গে শহরে গেলেন৷ পরদিন তিনি বার্ণবার সঙ্গে দর্বীতে চলে গেলেন৷ 21 সেই শহরে তাঁরা সুসমাচার প্রচার করলেন, আর বহুলোক যীশুর অনুগামী হোল৷ এরপর তাঁরা লুস্ত্রা হয়ে ইকনিয় ও পরে আন্তিয়খিয়ায় ফিরে এলেন৷ 22 তাঁরা ঐসব শহরে শিষ্যদের শক্তি জোগালেন৷ সমস্ত নির্য়াতনের মধ্যেও বিশ্বাসে অটল থাকতে তাঁদের সাহস দিয়ে বললেন, ‘অনেক দুঃখভোগের মধ্য দিয়ে আমাদের ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করতে হবে৷’ 23 তাঁরা প্রত্যেকটি বিশ্বাসী মণ্ডলীর জন্য প্রাচীনদের নিযোগ করলেন৷ এই প্রাচীনেরা, যাঁরা প্রভুর ওপর বিশ্বাস স্থাপন করেছিলেন, প্রার্থনা ও উপবাসের সঙ্গে তাঁদের প্রত্যেককে তাঁরা প্রভুর হাতে সঁপে দিলেন৷ 24 এরপর তাঁরা পিষিদিয়ার মধ্য দিয়ে পাম্ফুলিয়ায় গেলেন৷ 25 তারপর পর্গায় আবার সুসমাচার প্রচার করলেন ও সেখান থেকে অত্তালিয়ায় চলে গেলেন৷ 26 সেখান থেকে তাঁরা জাহাজে করে আন্তিয়খিয়ায় গেলেন৷ য়ে কাজ তাঁরা এখন শেষ করলেন, সেই কাজের জন্যই এই শহর থেকে বিশ্বাসীরা পৌল ও বার্ণবাকে প্রভুর কাছে সমর্পণ করেছিলেন৷ 27 পৌল বার্ণবা ফিরে এসে মণ্ডলীর বিশ্বাসীদের একত্র করলেন; আর ঈশ্বর তাঁদের সঙ্গে থেকে য়ে সব কাজ করেছিলেন ও অইহুদীদের জন্য বিশ্বাসের য়ে দ্বার উন্মুক্ত করে দিয়েছিলেন, সে সব কথা তাঁদের জানালেন৷ 28 পরে তাঁরা অনুগামীদের সঙ্গে সেখানে দীর্ঘ সময় থাকলেন৷
Acts 15:1 যিহূদা থেকে কয়েকজন লোক এসে শিক্ষা দিতে লাগল৷ তারা অইহুদী ভাইদের শিক্ষা দিয়ে বলল, ‘মোশির বিধান অনুসারে সুন্নত সংস্কার না করলে তোমরা উদ্ধার পাবে না৷’ 2 পৌল ও বার্ণবা এই শিক্ষার বিরোধিতা করলেন৷ সেই লোকদের সঙ্গে পৌল ও বার্ণবার তর্ক হল৷ ঠিক হল এই তর্কের মীমাংসার জন্য পৌল, বার্ণবা ও আরও কয়েকজনকে জেরুশালেমে প্রেরিতদের ও প্রাচীনদের কাছে পাঠানো হবে৷ 3 তখন মণ্ডলী তাঁদের যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিলেন৷ এই বিশ্বাসীরা যাত্রা পথে ফৈনীকিয়া ও শমরিয়া হয়ে গেলেন ও অইহুদীরা য়ে খ্রীষ্ট বিশ্বাসী হয়েছে তা জানালেন, এতে বিশ্বাসীদের মধ্যে খুবই আনন্দ হল৷ 4 পৌল, বার্ণবা ও অন্যান্যরা জেরুশালেমে পৌঁছালেন৷ বিশ্বাসী মণ্ডলীর প্রেরিতেরা ও প্রাচীনেরা তাঁদের স্বাগত জানালেন৷ ঈশ্বর তাদের সঙ্গে যা করেছেন, পৌল ও বার্ণবা সে সব কথা জানালেন৷ 5 কিন্তু ফরীশীদের মধ্যে যাঁরা বিশ্বাসী হয়েছেন তাদের মধ্যে কয়েকজন উঠে দাঁড়িয়ে বলতে লাগল, ‘অইহুদীদের মধ্যে যাঁরা বিশ্বাসী হয়েছে, তাদের সুন্নত করা ও মোশির দেওয়া বিধি-ব্যবস্থা পালনে বাধ্য করা হবে৷’ 6 এরপর প্রেরিতেরা ও প্রাচীনেরা এই প্রশ্নের বিষয়ে আলোচনা করার জন্য সমবেত হলেন৷ 7 দীর্ঘক্ষণ ধরে নানা কথা কাটাকাটির পর পিতর উঠে দাঁড়িয়ে তাদের বললেন, ‘ভাইয়েরা আপনারা জানেন, পূর্বের দিনগুলিতে ঈশ্বর আপনাদের মধ্য থেকে আমাকে মনোনীত করেছিলেন, য়েন অইহুদীদের কাছে আমি সুসমাচার প্রচার করি৷ তারা আমার মুখে সুসমাচার শুনে বিশ্বাস করেছিল৷ 8 ঈশ্বর, যিনি আমাদের অন্তর সকল জানেন তিনি অইহুদীদের তাঁর রাজ্যে গ্রহণ করলেন এবং এর সাক্ষ্যস্বরূপ তাদের পবিত্র আত্মা দিলেন, য়েমন আমাদের দিয়েছিলেন৷ 9 তাদের ও আমাদের মধ্যে ঈশ্বর কোন প্রভেদ রাখেন নি, বরং বিশ্বাস করলে পর ঈশ্বর তাদের অন্তরও শুদ্ধ করলেন৷ 10 এখন এই অইহুদী ভাইদের কাঁধে কেন আপনারা ভারী য়োয়াল চাপিয়ে দিতে চাইছেন? ঈশ্বরকে কি আপনারা ক্রুদ্ধ করতে চান? আমরা ও আমাদের পিতৃপুরুষদের এমন শক্তি ছিল না য়ে সেই ভারী য়োয়াল বহন করি৷ 11 কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি য়ে এই অইহুদী বিশ্বাসীরা আমাদের মত প্রভু যীশুর অনুগ্রহেই উদ্ধার লাভ করবে!’ 12 তখন সমস্ত লোক নীরব হয়ে গেল; আর বার্ণবা ও পৌলের মাধ্যমে অইহুদীদের মধ্যে ঈশ্বর কি কি অলৌকিক কাজ করেছেন, তাদের কাছ থেকে সে সব ঘটনার কথা শুনল৷ 13 তাদের কথা বলা শেষ হলে যাকোব বলতে শুরু করলেন, ‘ভায়েরা, আমার কথা শুনুন৷ 14 অইহুদীদের প্রতি ঈশ্বরের ভালোবাসার কথা আপনারা ভাই শিমোনের মুখে শুনেছেন৷ এই প্রথম যখন ঈশ্বর অইহুদীদের গ্রহণ করলেন ও তাদেরকে তাঁর প্রজা করে নিলেন৷ 15 ভাববাদীদের কথাও এর সাথে মেলে য়েমন শাস্ত্রে লেখা আছে: 16 ‘এরপর আমি ফিরে আসব, আর দাযূদের য়ে ঘর ভেঙ্গে গেছে, তা পুনরায় গাঁথব৷ আমি তার ধ্বংস স্থান আবার গেঁথে তুলব, তা নতুন করে স্থাপন করব৷ 17 য়েন মানবজাতির বাকি অংশ প্রভুর অন্বেষণ করে, আর সমস্ত অইহুদীদের যাদেরকে আমার নামে আহ্বান করা হয়েছে, তারাও সকলে প্রভুর অন্বেষণ করে৷ ঈশ্বর একথা বলেন এবং তিনিই এসব করেছেন৷ 18 ঈশ্বর বহুপূর্বেই এই বিষয়গুলি জানিয়েছেন৷ আমোষ 9:11-12 19 ‘তাই আমার বিচার এই য়ে অইহুদীদের মধ্য থেকে যাঁরা ঈশ্বরের দিকে ফিরেছে আমরা তাদের কষ্ট দেব না৷ 20 এর পরিবর্তে আমরা তাদের পত্র লিখে এই কথা জানাবো৷তারা য়েন প্রতিমা সংক্রান্ত কোন অশুচি খাদ্য না খায়, য়ৌন পাপ কার্য় থেকে বিরত থাকে, গলা টিপে মারা কোন প্রাণীর মাংস না খায় বা রক্ত আস্বাদন না করে৷ 21 তাদের এবিষয়ে নিবৃত্ত হওয়া প্রযোজন, কারণ সেই আদিকাল থেকেই প্রতিটি শহরে ইহুদীদের সমাজ-গৃহে এখনও মোশির এমন লোক আছে, যাঁরা তাঁকে অর্থাত্ তাঁর বিধি-ব্যবস্থার কথা প্রচার করে৷ তাছাড়া প্রতি বিশ্রামবারে ইহুদীদের সমাজ-গৃহে মোশির বিধি-ব্যবস্থা পাঠ করা হয়৷’ 22 তখন প্রেরিতেরা ও প্রাচীনেরা মণ্ডলীর বিশ্বাসীবর্গের সঙ্গে একয়োগে তাঁদের মধ্য থেকে কয়েকজনকে মনোনীত করে পৌল ও বার্ণবার সঙ্গে আন্তিয়খিয়ায় পাঠাবার বিষয়ে ঠিক করলেন৷ তাঁরা যিহূদা, বার্ণবা ও সীলকে মনোনীত করলেন, এরা ভাইদের মধ্যে নেতৃস্থানীয় ছিলেন৷ 23 তাদের সঙ্গে তারা এইরকম এক পত্র লিখে পাঠালেন: আন্তিয়খিয়ায়, সুরিয়া ও কিলিকিয়ার অইহুদী সমবিশ্বাসী ভাইদের কাছে প্রেরিতদের ও মণ্ডলীর প্রাচীনদের শুভেচ্ছা৷প্রিয় ভাইয়েরা, 24 আমরা শুনতে পেয়েছি য়ে আমাদের নির্দেশ ছাড়াই এমন কয়েকজন লোক এখান থেকে গিয়ে নানা কথা বলে তোমাদের মন অস্থির করে তুলেছে ও তোমাদের নানা সমস্যার মধ্যে ফেলেছে! 25 আমরা সকলে একমত হয়েছি য়ে কয়েকজন মনোনীত করে আমাদের প্রিয় ভাই বার্ণবা ও পৌলের সঙ্গে তোমাদের কাছে পাঠান৷ 26 এই লোকেরা আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের নামে নিজেদের জীবন উত্সর্গ করেছেন৷ 27 তাই এদের সঙ্গে আমরা যিহূদা ও শীলকে পাঠাচ্ছি, এঁরা তোমাদের একই কথা বলবেন৷ 28 কারণ পবিত্র আত্মার কাছে এবং আমাদের কাছেও এটাই ভাল মনে হল য়ে এই প্রযোজনীয় বিষয়গুলি ছাড়া অতিরিক্ত কোন কিছুই তোমাদের ওপর ভারস্বরূপ চাপিয়ে দেব না৷ 29 তোমরা প্রতিমার সামনে উত্সর্গ করা কোন খাদ্যবস্তু খাবে না, রক্ত এবং গলা টিপে মারা কোন প্রাণীর মাংস খাবে না, আর য়ৌন পাপ কর্ম থেকে দূরে থাকবে৷তোমরা যদি নিজেদের এর থেকে দূরে রাখ তাহলে তোমাদের মঙ্গল হবে৷ তোমাদের সকলের জন্য আমাদের শুভেচ্ছা রইল৷ 30 তাই পৌল, বার্ণবা, যিহূদা ও সীল জেরুশালেম থেকে রওনা হয়ে আন্তিয়খিয়ায় এলেন৷ তাঁরা লোকদের সমবেত করে সেই চিঠিটি দিলেন৷ 31 চিঠিটি পড়ার পর তারা সবাই সেই উত্সাহোদ্দীপক চিঠির জন্য আনন্দ করতে থাকলেন৷ 32 যিহূদা ও সীল উভয়ে ভাববাদী হওয়াতে ভাইদের সঙ্গে অনেকক্ষণ ধরে কথা বলে তাদের উত্সাহ দিলেন ও শক্তি জোগালেন৷ 33 যিহূদা ও সীল কিছুদিন সেখানে থাকার পর যাঁরা তাদের পাঠিয়েছিলেন, তাদের কাছে অর্থাত্ জেরুশালেমে ফিরে যাবার জন্য ভাইদের কাছ থেকে শান্তিতে বিদায় পেলেন৷ 34 35 কিন্তু পৌল ও বার্ণবা আন্তিয়খিয়াতে কিছু সময় কাটালেন৷ তারা অন্যান্য আরো অনেকের সঙ্গে প্রভুর বার্তা শিক্ষা দিতেন ও সুসমাচার প্রচার করতেন৷ 36 কিছু সময় পর পৌল বার্ণবাকে বললেন, ‘চল আমরা ফিরে যাই, প্রতিটি শহরে য়েখানে আমরা প্রভুর বার্তা প্রচার করেছিলাম, সেইসব জায়গায় গিয়ে দেখি ভাইরা কেমন আছে৷’ 37 বার্ণবা চাইলেন য়েন য়োহন অর্থাত্ মার্কও তাঁদের সঙ্গে যান৷ 38 কিন্তু পৌল ভাবলেন, একবার য়ে পাম্ফুলিয়াতে তাঁদের ছেড়ে চলে গিয়েছিল, তাকে সঙ্গে না নেওয়াই ভাল৷ 39 এর ফলে তাঁদেব মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিল, শেষ পর্যন্ত তাঁরা পরস্পর আলাদা হয়ে গেলেন৷ বার্ণবা মার্ককে সঙ্গে নিয়ে জাহাজে করে কুপ্রের দিকে রওনা দিলেন৷ 40 পৌল সীলকে সঙ্গে নিলেন৷ ভাইরা আন্তিয়খিয়াকে প্রভুর সেবার ভার পৌলকে দিলেন৷ 41 পৌল ও সীল সুরিয়া ও কিলিকিয়ার মধ্য দিয়ে য়েতে য়েতে বিভিন্ন মণ্ডলীকে আরও সুদৃঢ় করলেন৷
Acts 16:1 পৌল, দর্বী ও লুস্ত্রার শহরে গেলেন; সেখানে তীমথিয় নামে একজন খ্রীষ্টানুসারী ছিলেন৷ তীমথিয়র মা ছিলেন ইহুদী খ্রীষ্টীয়ান, তাঁর বাবা ছিলেন গ্রীক৷ 2 লুস্ত্রা ও ইকনীয়ের সকল ভাইয়েরা তীমথিয়কে শ্রদ্ধা করত ও তাঁর বিষয়ে সুখ্যাতি করত৷ 3 পৌল চাইলেন সুসমাচার প্রচারের জন্য য়েন তীমথিয় তাঁর সঙ্গে যান৷ তাই তিনি ঐসব জায়গায় ইহুদীদের সন্তুষ্ট করতে তীমথিয়কে সুন্নত করালেন, কারণ তাঁর বাবা য়ে গ্রীক একথা সকলে জানত৷ 4 পরে পৌল ও তাঁর সঙ্গীরা বিভিন্ন শহরের মধ্য দিয়ে য়েতে য়েতে, সেখানকার বিশ্বাসী ভাইদের কাছে জেরুশালেমের প্রেরিতদের ও প্রাচীনদের নির্ধারিত নির্দেশ জানালেন৷ 5 এইভাবে মণ্ডলীগুলি বিশ্বাসে দৃঢ় হতে থাকল ও প্রতিদিন সংখ্যায় বৃদ্ধি পেতে থাকল৷ 6 পৌল ও তাঁর সঙ্গীরা ফরুগিয়া ও গালাতিয়ায় গেলেন, কারণ এশিয়ায় সুসমাচার প্রচার করার বিষয়ে পবিত্র আত্মা তাঁদের অনুমতি দিলেন না৷ 7 তাঁরা মুশিয়ার সীমান্তে এলেন এবং বিথুনিয়ায় য়েতে চেষ্টা করলেন, কিন্তু যীশুর আত্মা তাদের সেখানেও য়েতে দিলেন না৷ 8 তাই তাঁরা মুশিয়ার মধ্য দিয়ে ত্রোয়াতে গিয়ে পৌঁছালেন৷ 9 সেই রাত্রে পৌল এক দর্শন পেলেন, তিনি দেখলেন একজন মাকিদনিয়ান লোক দাঁড়িয়ে অনুনয় করে বলছে, ‘মাকিদনিয়ায় আসুন! আমাদের সাহায্য করুন৷’ 10 পৌলের এই দর্শন পাওয়ার পর আমরা সঙ্গে সঙ্গে মাকিদনিয়ায় যাওয়ার স্থির করলাম, আমরা বুঝতে পারলাম য়ে সেখানে সুসমাচার প্রচার করার জন্য ঈশ্বর আমাদের ডাকছেন৷ 11 আমরা ত্রোয়া ছেড়ে জলপথে সোজা সামথ্রাকীতের দিকে রওনা দিলাম, আর পরদিন নিয়াপলিতে পৌঁছালাম৷ 12 সেখান থেকে আমরা ফিলিপীতে গেলাম৷ ফিলিপী হল মাকিদনিয়ার এ অংশের এক উল্লেখয়োগ্য শহর, এক রোমান উপনিবেশ, আমরা সেখানে কিছুদিন থাকলাম৷ 13 বিশ্রামবারে আমরা শহরের ফটকের বাইরে নদীর ধারে গেলাম, মনে করলাম সেখানে নিশ্চয়ই কোন প্রার্থনার জায়গা আছে৷ আর সেখানে য়ে সব স্ত্রীলোক সমবেত হয়েছিলেন, আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করলাম৷ 14 সেখানে লুদিয়া নামে এক মহিলা ছিলেন, তাঁর বেগুনে রঙের কাপড়ের ব্যবসা ছিল৷ থুয়াতীরা শহর থেকে আগত এই মহিলা সত্য ঈশ্বরের উপাসনা করতেন৷ তিনি আমাদের কথা শুনছিলেন, আর ঈশ্বর তাঁর হৃদয় খুলে দিলে তিনি পৌলের কথা মন দিয়ে শুনে বিশ্বাস করলেন৷ 15 তিনি ও তাঁর পরিবারের সকলে বাপ্তাইজ হলে পর, তিনি অনুরোধের সুরে আমাদের বললেন, ‘আপনারা যদি আমাকে প্রভুর প্রকৃত বিশ্বাসী মনে করে থাকেন, তবে আমার বাড়িতে এসে থাকুন৷’ আর তাঁর বাড়িতে থাকবার জন্য আমাদের অনেক পীরাপীড়ি করলেন৷ 16 একদিন আমরা যখন প্রার্থনা করার জন্য যাচ্ছিলাম, তখন একজন ক্রীতদাসী আমাদের সামনে এল৷ তার উপর এমন এক বিশেষ মন্দ আত্মা ভর করে ছিল যার প্রভাবে সে মানুষের ভবিষ্যত্ বলে দিতে পারত৷ এই করে সে তার মনিবদেব বেশ রোজগারের রাস্তা করে দিয়েছিল৷ 17 সে আমাদেরও পৌলের পিছু ধরল আর চিত্কার করে বলতে লাগল, ‘এই লোকেরা পরাত্পর ঈশ্বরের দাস৷ তাঁরা বলছেন কিভাবে তোমরা উদ্ধার পেতে পারো৷’ 18 এভাবে সে অনেকদিন ধরে বলতে লাগল৷ শেষে পৌল এতে বিরক্ত হয়ে ঘুরে দাঁড়িয়ে সেই আত্মাকে বললেন ‘যীশু খ্রীষ্টের নামে আমি তোকে আদেশ করছি য়ে তুই এর থেকে বেরিয়ে যা৷’ তাতে সেই মন্দ আত্মা সঙ্গে সঙ্গে বের হয়ে গেল৷ 19 সেই ক্রীতদাসীর মনিবরা তা দেখল, আর সেই ক্রীতদাসীকে কাজে লাগিয়ে তাদের অর্থ উপার্জনের পথ বন্ধ হল বুঝতে পেরে তারা পৌল ও সীলকে ধরে টানতে টানতে বাজারে কর্ত্তৃপক্ষের কাছে নিয়ে গেল৷ 20 তারা নগরের কর্ত্তৃপক্ষের সামনে পৌল ঔ সীলকে নিয়ে এসে বলল, ‘এরা ইহুদী, আর এরা আমাদের শহরে গণ্ডগোলের সৃষ্টি করছে! 21 এরা এমন সব রীতি নীতি পালনের কথা বলছে যা পালন করা আমাদের পক্ষে নীতিবিরুদ্ধ কাজ, কারণ আমরা রোমান নাগরিক৷ আমরা ঐসব পালন করতে পারি না৷’ 22 তখন সেই জনতা তাঁদের ওপর মারমুখী হয়ে উঠল৷ নগররক্ষকগণ পৌল ও সীলের পোশাক ছিঁড়ে ফেলে তাঁদের বেত মারার জন্য হুকুম দিলেন৷ 23 পৌল ও সীলকে জনতা খুব মারধোর করার পর নেতারা তাঁদের কারাগারে পুরে দিল এবং কারারক্ষককে কড়া পাহারা দিতে বলল৷ 24 কারারক্ষক এই নির্দেশ পেয়ে পৌল ও সীলকে কারাগারের ভেতরের কক্ষে নিয়ে গিয়ে দেওয়ালে বসানো কাঠের বেড়িগুলির মধ্যে তাঁদের পা আটকে দিল৷ 25 মাঝরাতে পৌল ও সীল ঈশ্বরের স্তবগান ও প্রার্থনা করছিলেন, অন্য বন্দীরা তা শুনছিল৷ 26 হঠাত্ প্রচণ্ড ভূমিকম্পে কারাগারের ভিত কেঁপে উঠল আর সঙ্গে সঙ্গে কারাগারের সব দরজা খুলে গেল, বন্দীদের শেকল খসে পড়ল৷ 27 কারারক্ষক জেগে উঠে যখন দেখলেন য়ে কারাগারের সব দরজা খোলা তখন তিনি তাঁর তরবারি কোষ থেকে বের করে আত্মহত্যা করতে চাইলেন, কারণ তিনি ভাবলেন বন্দীরা সব পালিয়েছে৷ 28 কিন্তু পৌল চিত্কার করে বলে উঠলেন, ‘নিজের ক্ষতি করবেন না, আমরা সকলেই এখানে আছি৷’ 29 তখন কারারক্ষক কাউকে আলো আনতে বলে ভেতরে দৌড়ে গেলেন, আর ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে পৌল ও সীলের সামনে উপুড় হয়ে পড়লেন৷ 30 পরে তাঁদের বাইরে নিয়ে এসে বললেন, ‘মহাশয়েরা, উদ্ধার পেতে হলে আমায় কি করতে হবে?’ 31 তাঁরা বললেন, ‘প্রভু যীশুর ওপর বিশ্বাস করুন, তাহলে আপনি ও আপনার গৃহের সকলেই উদ্ধার লাভ করবেন৷’ 32 এরপর তাঁরা সেই কারারক্ষক ও তাঁর বাড়ির লোকের কাছে প্রভুর বার্তা প্রচার করলেন৷ 33 বেশ রাত হয়ে গিয়েছিল কিন্তু কারারক্ষক সেই রাতেই পৌল ঔ সীলের সমস্ত ক্ষত ধুয়ে দিলেন এবং সপরিবারে বাপ্তিস্ম গ্রহণ করলেন৷ 34 এরপর কারারক্ষক পৌল ও সীলকে নিজের গৃহে নিয়ে গিয়ে তাঁদের আহারের ব্যবস্থা করলেন৷ ঈশ্বরে বিশ্বাসী হওয়ায় তিনি ও তাঁর পরিবারের সকলে খুব আনন্দিত হলেন৷ 35 পরদিন সকাল হলে শাসকগণ রক্ষীবাহিনীদের দিয়ে কারারক্ষককে বলে পাঠালেন, ‘ঐ লোকদের ছেড়ে দাও!’ 36 তখন কারারক্ষক সেকথা পৌলকে জানালেন, ‘নগর অধ্যক্ষেরা আপনাদের ছেড়ে দেবার জন্য বলে পাঠিয়েছেন, তাই এখন আপনারা শান্তিতে এখান থেকে চলে যান৷’ 37 কিন্তু পৌল তাদের বললেন, ‘আমরা রোমান নাগরিক হওয়া সত্ত্বেও তারা আমাদের বিচার না করেই সকলের সামনে বেত মেরেছেন৷ শেষে আমাদের কারাগারে বন্দী করেছিলেন৷ এখন তারা চুপি-চুপি আমাদের ছেড়ে দিতে চাইছেন? এ হতে পারে না! কিন্তু তাদের এখানে আসতে হবে আর এসে আমাদের কারাগারের বাইরে নিয়ে য়েতে হবে৷’ 38 সেই রক্ষীবাহিনীর লোকেরা বিচারকদের জানাল য়ে পৌল ও সীল রোমান নাগরিক, তখন তারা ভয় পেয়ে গেল৷ 39 তাই তারা এসে ক্ষমা চাইল, আর তাঁদের কারাগারের বাইরে নিয়ে গিয়ে সেই শহর ছেড়ে চলে যাবার জন্য অনুরোধ করল৷ 40 পৌল ও সীল কারাগার থেকে বের হয়ে লুদিয়ার বাড়ি গেলেন৷ সেখানে বিশ্বাসীদের সঙ্গে দেখা হলে তাদের সকলকে উত্সাহ দিলেন৷ এরপর পৌল ও সীল শহর ছেড়ে চলে গেলেন৷
Acts 17:1 এরপর তারা আম্ফিপলি ও অপল্লোনিয়ার ভেতর দিয়ে থিসলনীকীতে এলেন৷ এখানে ইহুদীদের একটি সমাজ-গৃহ ছিল৷ 2 পৌল তাঁর রীতি অনুযায়ী ইহুদীদের দেখার জন্য একটি সমাজ-গৃহে গেলেন৷ তিনটি বিশ্রামবারে তিনি তাদের সঙ্গে শাস্ত্র নিয়ে আলোচনা করলেন৷ 3 ইহুদীদের কাছে শাস্ত্র ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে দিলেন য়ে খ্রীষ্টের দুঃখভোগ করা ও মৃত্যু থেকে পুনরুত্থানের প্রযোজন ছিল৷ পৌল বললেন, ‘এই য়ে যীশুকে আমি তোমাদের কাছে প্রচার করছি, ইনিই খ্রীষ্ট৷’ 4 তাদের মধ্যে কেউ কেউ এতে সম্মতি জানাল এবং পৌল ও সীলের সঙ্গে য়োগ দিল৷ এদের মধ্যে অনেক ঈশ্বরভক্ত গ্রীক ছিল যাঁরা সত্য ঈশ্বরের উপাসনা করত, ও কিছু গন্য-মান্য মহিলাও ছিলেন৷ 5 কিন্তু ইহুদীদের মনে ঈর্ষা জাগল৷ তারা কিছু দুষ্ট প্রকৃতির লোককে বাজার থেকে জোগাড় করল; আর এইভাবে একটা দল তৈরী করে শহরে গণ্ডগোল বাধিয়ে দিল৷ তারা লোকসমক্ষে পৌল ও সীলকে দাঁড় করানোর জন্য যাসোনের বাড়িতে চড়াও হয়ে সেখানে তাঁদের খুঁজতে লাগল৷ 6 কিন্তু সেখানে তাঁদের না পেয়ে তারা যাসোন ও অন্য কয়েকজন ভাইকে ধরে টানতে টানতে শহরের শাসনকর্তাদের কাছে নিয়ে গেল৷ তারপর তারা চিত্কার করে বলল, ‘এই য়ে লোকেরা সারা জগতে গোলমাল পাকিয়ে বেড়াচ্ছে; এরা এখন এখানে এসেছে! 7 আর যাসোন কিনা তাদের নিজের বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছে৷ এরা সকলে কৈসরের আইনের বিরোধিতা করে, এরা বলে বেড়াচ্ছে য়ে যীশু বলে আর একজন রাজা আছে৷’ 8 এই কথা শুনে সমবেত জনতা ও কর্ত্তৃপক্ষ উদ্বিগ্ন হল৷ 9 তারা যাসোন ও বাকী আর সকলের জরিমানা নিয়ে তাদের ছেড়ে দিল৷ 10 সেই রাতেই ভাইয়েরা পৌল ও সীলকে বিরয়াতে পাঠিয়ে দিল৷ সেখানে পৌঁছে তাঁরা ইহুদীদের সমাজ-গৃহে গেলেন৷ 11 থিষলনীকীয় লোকদের থেকে এই লোকেরা আরো উদার মনোভাবাপন্ন ছিল৷ এরা আগ্রহের সঙ্গে ঈশ্বরের বাক্য শুনল৷ পৌল সীলের বক্তব্যের বিষয় সত্য কিনা তা মিলিয়ে দেখার জন্য তারা প্রতিদিন শাস্ত্রের মধ্যে অনুসন্ধান করতে লাগল৷ 12 এর ফলে ইহুদীদের মধ্যে অনেকে বিশ্বাস করল, এদের মধ্যে কয়েকজন সম্ভ্রান্ত গ্রীক মহিলা ও বহু পুরুষও ছিল৷ 13 থিষলনীকীয় ইহুদীরা যখন শুনতে পেল য়ে পৌল বিরয়াতে ঈশ্বরের বাক্য প্রচার করছেন, তখন তারা সেখানে এসে লোকদের ক্ষেপিয়ে তুলল৷ 14 তখন সেখানকার ভাইরা তাড়াতাড়ি করে পৌলকে সমুদ্রতীরে পাঠিয়ে দিলেন, কিন্তু সীল ও তীমথিয় বিরয়াতে রয়ে গেলেন৷ 15 পৌলকে সঙ্গে নিয়ে যাঁরা গিয়েছিলেন তাঁরা আথীনী পর্যন্ত গেলেন৷ সীল ও তীমথিয়র উদ্দেশ্যে এক বার্তা নিয়ে ভাইরা বিরয়াতে ফিরে এলেন৷ বার্তাতে বলা ছিল, ‘যত শিগ্গির সন্ভব তোমরা আমার কাছে চলে এস৷’ 16 তীমথীয় ও সীলের জন্য পৌল যখন আথীনীতে অপেক্ষা করছিলেন, তখন সেই শহরের সব জায়গায় নানা দেব-দেবীর মূর্তি দেখে অন্তর আত্মায় তিনি খুবই ব্যথিত হয়ে উঠলেন৷ 17 তাই তিনি সমাজ-গৃহে গিয়ে ইহুদী ও ভক্ত গ্রীকদের সঙ্গে ও হাটে বাজারে লোকদের কাছে প্রতিদিন ধর্মালোচনা করতেন৷ 18 ইপিকূরের ও স্তোযিকীর দার্শনিক সম্প্রদায়ের মধ্যে কয়েকজন তাঁর সঙ্গে তর্কবিতর্ক করতে লাগল৷কেউ কেউ বলল, ‘এই সবজান্তা কি বলতে চায়?’ আবার কেউ কেউ বলল, ‘এ দেখছি বিদেশী দেবতাদের বিষয়ে প্রচার করছে৷’ কারণ পৌল সুসমাচার এবং যীশু ও তাঁর পুনরুত্থানের বিষয় বলছিলেন৷ 19 তারা পৌলকে আরেয়পাগের সভায় নিয়ে গিয়ে বলল, ‘আপনি এই য়ে নতুন বিষয় শিক্ষা দিচ্ছেন, এটা কি? আমরা কি তা জানতে পারি? 20 আপনি কিছু অদ্ভুত কথা শোনাচ্ছেন, তাই আমাদের জানতে ইচ্ছা হয়, এসবের অর্থ কি?’ 21 আথীনীয় লোকেরা ও সেখানে বসবাসকারী বিদেশীরা সব সময় কেবল নিত্য-নতুন বিষয় নিয়ে আলোচনা করে সময় কাটাত৷ 22 তখন পৌল আরেয়পাগের সভার সামনে দাঁড়িয়ে বলতে থাকলেন, ‘হে আথীনীয় লোকেরা, আপনারা দেখছি সমস্ত ব্যাপারেই খুব ধর্মপ্রবণ৷ 23 কারণ আমি বেড়াতে বেড়াতে আপনারা যাদের উপাসনা করেন সেগুলি লক্ষ্য করতে করতে একটা বেদী দেখলাম, যার গায়ে লেখা আছে, ‘অজানা দেবতার উদ্দেশ্যে!’ তাই য়ে অজানা দেবতার আপনারা উপাসনা করছেন তাঁকেই আমি আপনাদের কাছে উপস্থিত করছি৷ 24 ঈশ্বর, যিনি এই জগত ও তার মধ্যেকার সমস্ত কিছুর নির্মাণকর্তা, তিনিই স্বর্গ ও পৃথিবীর প্রভু, তিনি মানুষের হাতে তৈরী মন্দিরে বাস করেন না৷ 25 মানুষের হাতের সেবা কার্য়ের প্রযোজন তাঁর নেই৷ তাঁর তো কোন কিছুরই অভাব নেই৷ তিনিই সকলকে জীবন, শ্বাস ও যা কিছু প্রযোজন তা দিচ্ছেন৷ 26 শুরুতে ঈশ্বর একটি মানুষকে সৃষ্টি করে সেই একজন মানুষ থেকেই মানবজাতির সৃষ্টি করেছেন, আর গোটা পৃথিবীটা তাদের বসবাসের জন্য দিয়েছেন৷ তিনি নির্ধারণ করে রেখেছেন কোথায় ও কখন তারা থাকবে৷ 27 ঈশ্বর চেয়েছিলেন য়েন মানুষ তাঁর অন্বেষণ করে৷ তাঁর খোঁজ করতে করতে তারা য়েন শেষ পর্যন্ত তাঁর নাগাল পায়৷ অথচ তিনি আমাদের কারো কাছ থেকে তো দূরে নন, 28 ‘কারণ তাঁর মধ্যেই আমাদের জীবন, গতি ও সত্ত্বা৷’আবার আপনাদের কোন কোন কবিও একথা বলেছেন: ‘কারণ আমরা তাঁর সন্তান৷’ 29 তাহলে আমরা যখন ঈশ্বরের সন্তান, তখন ঈশ্বরকে মানুষের শিল্পকলা যা কল্পনা অনুসারে সোনা, রূপো বা পাথরের তৈরী কোন মূর্তির সঙ্গে তুলনা করা আমাদের উচিত নয়৷ 30 মানুষের এই অজ্ঞতার সময়কে ঈশ্বর ক্ষমার চোখে দেখেছেন, কিন্তু এখন সব জায়গায় সকল মানুষকে তিনি এর জন্য মন-ফেরাতে বলছেন৷ 31 কারণ তিনি একটি দিন স্থির করেছেন, য়ে দিনে তিনি তাঁর নিরূপিত একজনকে দিয়ে সারা জগত সংসারের বিচার করবেন৷ এই বিষয়ে সকলে য়েন বিশ্বাস করতে পারে এমন প্রমাণও তিনি দিয়েছেন: এই প্রমাণস্বরূপ তিনি মৃতদের মধ্য থেকে তাঁকে পুনরত্থিত করেছেন!’ 32 মৃত্যু থেকে পুনরুত্থানের কথা শুনে তাদের মধ্যে কয়েকজন উপহাস করতে লাগল, কিন্তু অন্যরা বলল, ‘আমরা এ বিষয়ে আর একদিন আপনার কাছ থেকে শুনব!’ 33 এরপর পৌল তাদের কাছ থেকে চলে গেলেন৷ 34 তাদের মধ্যে কয়েকজন বিশ্বাস করল ও পৌলের সঙ্গ নিল৷ এদের মধ্যে আরেয়পাগীয়েরসভ্য দিয়নুষিয়, দামারী নামে এক মহিলা ও আরো কয়েকজন ছিলেন৷
Acts 18:1 এরপর পৌল আথীনী ছেড়ে করিন্থে এলেন৷ 2 সেখানে আক্কিলা নামে এক ইহুদীর সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়, তিনি ছিলেন পন্ত দেশের লোক৷ সম্প্রতি তিনি তাঁর স্ত্রী প্রিষ্কিল্লাকে নিয়ে ইতালী থেকে এসেছিলেন, কারণ ক্লৌদিয় সমস্ত ইহুদীকে রোম ছেড়ে যাবার নির্দেশ দিয়েছিলেন৷ পৌল তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন৷ 3 তাঁরা তাঁবু নির্মাণ করতেন য়েমন পৌলও করতেন৷ এইজন্য তিনি তাঁদের সঙ্গে কাজ করতে লাগলেন৷ 4 প্রতি বিশ্রামবারে পৌল সমাজ-গৃহে ইহুদী ও গ্রীকদের সঙ্গে কথা বলতেন৷ পৌল চেষ্টা করতেন য়েন এইসব লোকেরা যীশুতে বিশ্বাসী হয়৷ 5 সীল ও তীমথিয় যখন মাকিদনিয়া থেকে করিন্থে এলেন, তখন পৌল সুসমাচার প্রচারের জন্য তাঁর সমস্ত সময় দিলেন৷ যীশুই য়ে ঈশ্বরের খ্রীষ্ট এই প্রমাণ তিনি ইহুদীদের দিচ্ছিলেন৷ 6 কিন্তু ইহুদীরা পৌলের শিক্ষার বিরোধিতা করে তাঁকে গালাগাল দিতে লাগল৷ তখন তিনি তাঁর পোশাকের ধুলো ঝেড়ে তাদের বললেন, ‘তোমাদের যদি উদ্ধার না হয় তার জন্য তোমরা দাযী৷ আমি দায়মুক্ত! এরপর আমি অইহুদীদের কাছে যাব!’ 7 পৌল সেখান থেকে চলে গিয়ে সমাজ-গৃহের পাশে তিতিয় যুষ্ট নামে এক ঈশ্বরভক্ত অইহুদীর বাড়িতে উঠলেন; ইনি সত্য ঈশ্বরের উপাসনা করতেন৷ 8 সমাজ-গৃহের পরিচালক ক্রীষ্প ও তাঁর পরিবারের সকলে প্রভু যীশুতে বিশ্বাসী হল৷ করিন্থের আরো অনেকে পৌলের কথা শুনল, বিশ্বাস করল ও বাপ্তিস্ম নিল৷ 9 এক রাতে এক দর্শনে প্রভু পৌলকে বললেন, ‘ভয় পেযো না! কিন্তু কথা বলে যাও, চুপ করে থেকো না! 10 আমি তোমার সঙ্গে আছি; কেউ তোমার ক্ষতি করতে পারবে না, কারণ এই শহরে আমার লোকেরা আছে৷’ 11 তাই পৌল সেখানে থেকে দেড় বছর ধরে তাদের ঈশ্বরের বাণী শিক্ষা দিলেন৷ 12 গাল্লিযো যখন আখায়ার রাজ্যপাল ছিলেন, তখন ইহুদীদের কিছু লোক জোট পাকিয়ে পৌলের বিরুদ্ধে দাঁড়াল৷ তারা পৌলকে বিচারালয়ে নিয়ে হাজির করল৷ 13 এই ইহুদীরা গাল্লিযোকে বলল, ‘এই লোকটি আমাদের বিধি-ব্যবস্থার বিরুদ্ধে অন্য এক পদ্ধতিতে ঈশ্বরের উপাসনা করতে শিক্ষা দিচ্ছে!’ 14 পৌল সেই সময় যখন কিছু বলতে যাচ্ছেন, তখন গাল্লিযো ইহুদীদের উদ্দেশ্যে বললেন, ‘হে ইহুদীরা শোন! এ যদি কোন অপরাধ বা মারাত্মক রকম অন্যায় কোন কাজ করত তবে তোমাদের কথা শোনা আমার পক্ষে যুক্তিযুক্ত হত৷ 15 কিন্তু তোমরা যখন কোন ব্যক্তির নাম, তার বাণী বা তোমাদের বিধি-ব্যবস্থার বিষয়ে বিচারের প্রশ্ন তুলছ, তখন তোমরাই এর বিচার কর, আমি ওসব বিষয়ের বিচারকর্তা হতে চাই না!’ 16 এই বলে তিনি তাদের সকলকে বিচারালয় থেকে য়েতে বললেন৷ 17 তখন তারা সমাজ-গৃহে পরিচালক সোস্থিনীকে ধরে বিচারালয়ের সামনে প্রচণ্ড মারল; কিন্তু গাল্লিযো সে বিষয়ে ভ্রুক্ষেপ করলেন না৷ 18 পৌল সেই শহরে আরো কিছুদিন থাকার পর ভাইদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে সমুদ্র পথে সুরিয়ার দিকে রওনা দিলেন৷ তাঁর সঙ্গে আক্কিলা ও প্রিষ্কিল্লাও ছিল৷ এক মানত পুরণ করতে পৌল কিংক্রিয়াতে এসে মাথা কামিয়ে ফেললেন৷ 19 সেখান থেকে তাঁরা ইফিষে পৌঁছালেন, প্রিষ্কিল্লা ও আক্কিলাকে সেখানে রেখে পৌল সমাজ-গৃহে গেলেন; আর ইহুদীদের সঙ্গে শাস্ত্র আলোচনা করতে লাগলেন৷ 20 তারা সেখানে তাঁকে আরো কিছুদিন থাকার জন্য অনুরোধ করল বটে কিন্তু তিনি তাতে রাজী হলেন না৷ 21 সেখান থেকে যাবার সময় তিনি তাদের বললেন, ‘ঈশ্বরের ইচ্ছা হলে আমি আবার তোমাদের কাছে আসব৷’ এরপর তিনি ইফিষ থেকে সমুদ্র যাত্রা করলেন৷ 22 তিনি কৈসরিয়া শহরে পৌঁছলেন৷ এরপর জেরুশালেমে সকলের সঙ্গে সাক্ষাত্ করে শুভেচ্ছা জানাবার পর পৌল সেখান থেকে আন্তিয়খিয়া শহরে গেলেন৷ 23 আন্তিয়খিয়ায় পৌল কিছু সময় থাকলেন, তারপর আন্তিয়খিয়া ছেড়ে গালাতিয়া ও ফরুগিয়া অঞ্চলের বিভিন্ন শহরে ভ্রমণ করে সেইসব স্থানের অনুগামীদের নতুন শক্তি জাগিয়ে তুললেন৷ 24 আপল্লো নামে একজন ইহুদী ইফিষে এলেন, ইনি আলেকসান্দ্রীয় নগরে জন্মেছিলেন৷ তিনি শিক্ষিত মানুষ ছিলেন এবং শাস্ত্র খুব ভাল করে জানতেন৷ 25 আপল্লো প্রভুর পথের বিষয়ে শিক্ষা পেয়েছিলেন৷ তিনি আত্মার আবেগে কথা বলতেন এবং যীশুর বিষয়ে নির্ভুলভাবে শিক্ষা দিতেন, কিন্তু তিনি কেবল য়োহনের বাপ্তিস্মের বিষয়েই জানতেন৷ 26 আপল্লো যখন সমাজ-গৃহে নির্ভীকভাবে প্রচার করছিলেন, সেই সময় প্রিষ্কিল্লা ও আক্কিলা তাঁর কথা শুনে তাঁকে একান্তে ডেকে নিয়ে গিয়ে ঈশ্বরের পথের বিষয়ে আরো নিখুঁতভাবে বুঝিয়ে দিলেন৷ 27 আপল্লো আখায়াতে য়েতে চাইলে খ্রীষ্ট বিশ্বাসী ভাইরা তাঁকে সে বিষয়ে উত্সাহ দিলেন৷ তাঁরা আখায়ার খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদের চিঠি লিখে দিলেন য়েন তাঁরা আপল্লোকে সাদরে গ্রহণ করেন৷ তিনি সেখানে পৌঁছালে যাঁরা অনুগ্রহের মাধ্যমে বিশ্বাসী হয়েছিল, আপল্লো তাদের অনেককে সাহায্য করলেন৷ 28 তিনি প্রকাশ্য বিতর্ক সভায় দৃঢ়তার সঙ্গে ইহুদীদের হারিয়ে দিলেন এবং শাস্ত্র থেকে প্রমাণ করলেন য়ে, যীশুই হলেন সেই খ্রীষ্ট৷
Acts 19:1 আপল্লো যখন করিন্থে ছিলেন তখন পৌল সেই অঞ্চলের মধ্য দিয়ে য়েতে য়েতে ইফিষে এসে পৌঁছলেন৷ সেখানে তিনি য়োহন বাপ্তাইজকের কয়েকজন অনুগামীর দেখা পেলেন৷ 2 তিনি তাদের বললেন, ‘তোমরা যখন বিশ্বাসী হও, তখন কি পবিত্র আত্মা পেয়েছিলে?’তারা তাঁকে বলল, ‘কই? পবিত্র আত্মা বলে য়ে কিছু আছে এমন কথা তো আমরা কখনও শুনি নি!’ 3 তিনি তাদের বললেন, ‘তবে তোমাদের কি ধরণের বাপ্তিস্ম হয়েছিল?’তারা বলল, ‘য়োহন য়ে ধরণের বাপ্তিস্ম দিতেন৷’ 4 পৌল বললেন, ‘য়োহন মন-ফেরানোর জন্য লোকদের বাপ্তাইজ করতেন৷ তিনি তাদের বলতেন, তাঁর পরে যিনি আসছেন, তাঁর ওপর অর্থাত যীশুর ওপর বিশ্বাস কর৷’ 5 তারা একথা শুনে প্রভু যীশুর নামে বাপ্তাইজ হল৷ 6 এরপর পৌল তাদের ওপর হাত রাখলে, তাদের ওপর পবিত্র আত্মা নেমে এলেন৷ তারা নানা ভাষায় কথা বলতে ও ভাববাণী বলতে শুরু করল৷ 7 তারা মোট বারো জন পুরুষ ছিল৷ 8 এরপর পৌল সমাজ-গৃহে গেলেন, আর সেখানে তিন মাস ধরে নির্ভীকভাবে কথা বললেন এবং যুক্তিসহ ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয়ে বুঝিয়ে দিলেন৷ 9 কিন্তু তাদের মধ্যে কয়েকজন তাঁর কথা মানতে চাইল না৷ তারা প্রকাশ্যে খ্রীষ্টের পথের বিরুদ্ধে নিন্দা করতে লাগল৷ তখন পৌল তাদের ছেড়ে চলে গেলেন, যীশুর অনুগামীদের সঙ্গে নিয়ে গেলেন৷ পরে প্রতিদিন তুরাণের ভাষণ কক্ষে পৌল তাদের নিয়ে শাস্ত্র আলোচনা করতে লাগলেন৷ 10 এইভাবে দুবছর কেটে গেল, এর ফলে এশিয়ায় যাঁরা বাস করত, কি ইহুদী, কি গ্রীক সকলেই প্রভুর বাক্য শুনলেন৷ 11 ঈশ্বর পৌলের হাত দিয়ে অনেক অলৌকিক ঘটনা সম্পন্ন করালেন৷ 12 এমন কি তাঁর স্পর্শ করা গামছা অসুস্থ লোকদের গায়ে ছোঁয়ালে তাদের রোগ ভাল হয়ে য়েত, আর অশুচি আত্মারাও তাদের মধ্য থেকে বের হয়ে য়েত৷ 13 সেই সময়ে কয়েকজন ইহুদী ওঝা ঘুরে বেড়াত, যাঁরা অশুচি আত্মায় পাওয়া লোকদের ছাড়াতো৷ ইহুদী মহাযাজক শীভার সাত ছেলেও এই কাজ করছিল৷ এই ইহুদীরা লোকদের মধ্য থেকে অশুচি আত্মা তাড়াতে প্রভু যীশুর নাম ব্যবহার করত৷ তারা বলত, ‘য়ে যীশুর কথা পৌল প্রচার করছেন, সেই যীশুর নামে আমি আদেশ করছি এর মধ্য থেকে বের হয়ে যাও!’ 14 15 কিন্তু একবার অশুচি আত্মা সেই ইহুদীদের বলল, ‘আমি যীশুকে জানি, পৌলকেও জানি, কিন্তু তোরা আবার কে?’ 16 এরপর যার মধ্যে দিয়াবলের অশুচি আত্মা বাস করছিল, সে ঝাঁপিয়ে পড়ে সেই শীভার ছেলেদের সবাইকে ধরাশাযী করল৷ এর ফলে সেই ইহুদীরা আহত ও উলঙ্গ অবস্থায় বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেল৷ 17 ইহুদী ও গ্রীক যাঁরা ইফিষে থাকত, তারা সবাই এই ঘটনার কথা জানতে পারল৷ এর ফলে তাদের সকলের মধ্যে ত্রাসের সঞ্চার হল; আর প্রভুর নাম সমাদৃত হল৷ লোকেরা যীশুর নামকে আরও উচ্চ সম্মান দিতে লাগল৷ 18 অনেকে যাঁরা বিশ্বাসী হল তারা নিজের নিজের অপকর্মের কথা প্রকাশ্যে স্বীকার করল৷ 19 আবার অনেকে যাঁরা যাদুক্রিয়া করত, তারা তাদের বইপত্র ও সাজসরঞ্জাম এনে প্রকাশ্যে আগুনে পুড়িয়ে দিল, গণনা করে দেখা গেল তার দাম ছিল পঞ্চাশ হাজার রৌপ্য মুদ্রা৷ 20 এইভাবে প্রবলভাবে প্রভুর বাক্য প্রসার লাভ করল এবং শক্তিশালী হতে লাগল; আর বহুলোক বিশ্বাস করল৷ 21 এই ঘটনার পর পৌল ঠিক করলেন য়ে তিনি মাকিদনিয়া ও আখায়া হয়ে জেরুশালেমে যাবেন৷ তিনি বললেন, ‘সেখানে গিয়ে পরে আমি রোমেও যাব৷’ 22 তিনি তাঁর দুজন সহকারীকে অর্থাত্ তীমথিয় ও ইরাস্তকে মাকিদনিযায় পাঠালেন আর নিজে কিছু দিন এশিয়ায় রয়ে গেলেন৷ 23 সেই সময় ইফিষে মহা গণ্ডগোলের সৃষ্টি হল৷ ঈশ্বরের পথের বিষয়ই ছিল এই গণ্ডগোলের কারণ৷ ঘটনাটা এইভাবে হল; 24 দীমীত্রিয় নামে একজন স্বর্ণকার দেবী দীয়ানার রূপোর মন্দির তৈরী করত আর কারিগরদের অনেক কাজ জুগিয়ে দিত৷ 25 সে তার ব্যবসায়ের সঙ্গে যুক্ত অন্য সব কারিগরদের একত্র করে সভায় বলল, ‘ভাইসব তোমরা জান এই কাজের দ্বারা আমরা সকলে ভালই রোজগার করি৷ 26 এও তো দেখতে ও শুনতে পাচ্ছ কেবল এই ইফিষে নয়, প্রায় সমস্ত এশিয়ায় এই পৌল বহু লোককে প্রভাবিত করেছে ও এই বলে ফিরিয়েছে য়ে, মানুষের হাতে গড়া দেবতারা নাকি দেবতাই নয়৷ 27 এতে আমাদের এই বৃত্তির য়ে কেবল দুর্নাম হবে তাই নয়, মহাদেবী দীয়ানার মন্দিরও লোকসমক্ষে তুচ্ছ হবে৷ আবার যাকে সমস্ত এশিয়া এমন কি সারা জগত সংসার উপাসনা করে, তিনিও তাঁর বিপুল গরিমা হারাবেন৷’ 28 এই কথা শুনে লোকেরা প্রচণ্ড রেগে গেল৷ তারা চিত্কার করে বলতে লাগল, ‘ইফিষের দীয়ানাই মহান!’ 29 এতে সমস্ত শহরে বিশৃঙ্খলা দেখা দিল৷ সকলে একসঙ্গে রঙ্গভূমির দিকে ছুটল, তারা তাদের সঙ্গে টানতে টানতে নিয়ে চলল গায় ও আরিষ্টার্খ নামে দুজন মাকিদনিয়ান লোককে, যাঁরা পৌলের সঙ্গী ছিলেন৷ 30 তখন পৌল লোকদের কাছে য়েতে চাইলে অনুগামীরা তাঁকে বাধা দিল, য়েতে দিল না৷ 31 সেই প্রদেশের কয়েকজন নেতা যাঁরা তাঁর বন্ধু ছিলেন, তাঁরা পৌলের কাছে লোক পাঠিয়ে অনুরোধ করলেন য়েন তিনি রঙ্গভূমিতে গিয়ে নিজের বিপদ ডেকে না আনেন৷ 32 এদিকে নানা লোকে নানা কথা বলে চিত্কার করছিল, কারণ সভার মধ্যে বিশৃঙ্খলা শুরু হয়ে গিয়েছিল, অধিকাংশ লোক জানতই না কেন তারা সেখানে এসেছে৷ 33 কয়েকজন ইহুদী আলেকসান্দারকে সামনে ঠেলে দিল, একেই জনতার কয়েকজন পরামর্শ দিচ্ছিল৷ তিনি সকলকে ইশারায় চুপ করতে বললেন, ও তাদের কাছে কিছু বলতে চাইলেন৷ 34 কিন্তু তারা যখন বুঝতে পারল য়ে তিনি একজন ইহুদী তখন জোরে চিত্কার করতে লাগল৷ দুঘন্টা ধরে তারা শুধু এই বলে চেঁচিয়েই চলল, ‘ইফিষের দীয়ানাই মহান!’ 35 শেষ পর্যন্ত শহরের করণিক জনতাকে শান্ত করে বললেন, ‘হে ইফিষীয়রা, বল দেখি, ইফিষীয়দের শহর য়ে মহাদেবী দীয়ানার মন্দিরের তত্ত্বাবধান করে এবং সেই মন্দিরের পবিত্র পাথর য়ে আকাশ থেকে পড়েছিল তা কে না জানে? 36 তাই এই কথা যখন কেউ অস্বীকার করতে পারবে না, তখন তোমাদের শান্ত হওয়া উচিত এবং অসংযত কোন কাজ করা উচিত নয়৷ 37 কারণ এই য়ে লোকদের তোমরা এখানে এনেছ, এরা তো মন্দির লুঠও করে নি বা আমাদের দেবীর অপমানও করে নি৷ 38 তাই যদি কারো বিরুদ্ধে দীমীত্রিয় ও তার সম-ব্যবসাযীদের কোন অভিযোগ থাকে, তবে আদালত খোলা আছে, বিচারকেরাও আছেন, তারা সেখানে গিয়ে তাদেব বিরুদ্ধে মামলা করুক! 39 আর যদি অন্য কোন বিষয় অনুসন্ধানের থাকে তবে তার বিচার আইনানুগ বিচার সভায় করা য়েতে পারে৷ 40 কারণ এই ভয় আছে য়ে, আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসতে পারে য়ে এই গণ্ডগোলের কারণ আমরাই, এই সভা ডাকার কোন যুক্তিসঙ্গত কারণ আমরা দেখাতে পারব না৷’ 41 এই বলে তিনি সভা ভঙ্গ করলেন৷
Acts 20:1 সেই হাঙ্গামা থেমে যাবার পর পৌল যীশুর অনুগামীদের ডেকে পাঠালেন, আর তাদের সকলকে উত্সাহ দান করে ও শুভেচ্ছা জানিয়ে মাকিদনিয়ার অঞ্চলগুলিতে যাবার জন্য রওনা দিলেন৷ 2 তিনি সেই অঞ্চল দিয়ে মাকিদনিয়ায় য়েতে য়েতে বিভিন্ন জায়গায় খ্রীষ্টানুসারীদের অনেক কথা বলে উত্সাহ দিলেন, শেষে গ্রীসে এসে পৌঁছলেন৷ 3 সেখানে তিনি তিন মাস থাকলেন৷ তিনি যখন সমুদ্রপথে সুরিয়া যাবার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলেন তখন ইহুদীরা তাঁর বিরুদ্ধে এক চক্রান্ত করছে এই কথা জানতে পেরে তিনি মাকিদনিয়া হয়ে সুরিয়া যাবেন বলে ঠিক করলেন৷ 4 কিছু কিছু লোক তাঁর সঙ্গে যাচ্ছিল, এরা হল বিরয়ার পুর্হের ছেলে সোপাত্র, থিষলনীকিয় থেকে আগত আরিষ্টার্খ ও সিকুন্দ, দর্বীর গায় ও তীমথিয় আর এশিয়ার তুখিক ও ত্রফিম৷ 5 এরা পৌলের আগেই রওনা হয়ে ত্রোয়াতে গিয়ে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিল৷ 6 খামিরবিহীন রুটির পর্বের পর আমরা ফিলিপী থেকে সমুদ্রপথে রওনা হয়ে পাঁচ দিন পর ত্রোয়াতে তাদের সঙ্গে য়োগ দিলাম৷ সেখানে আমরা সাত দিন থাকলাম৷ 7 রবিবার আমরা যখন আবার প্রভুর ভোজ গ্রহণ করতে একত্রিত হলাম তখন পৌল পরের দিন সেখান থেকে চলে যাবেন বলে মধ্যরাত্রি পর্যন্ত তাদের সাথে কথা বলতে থাকলেন৷ 8 আমরা ওপরের য়ে ঘরে সমবেত হয়েছিলাম সেখানে অনেক প্রদীপ ছিল৷ 9 উতুখ নামে এক যুবক সেই ঘরের জানালায় বসেছিল৷ পৌলের দীর্ঘ বক্তৃতার সময় সে গভীরভাবে ঘুমিয়ে গেল৷ তারপর ঘুমের ঘোরে সে তিনতলা থেকে নীচে পড়ে গেল৷ লোকেরা গিয়ে যখন তাকে তুলল, দেখা গেল সে মারা গেছে৷ 10 পৌল নিজেই নীচে নেমে গেলেন৷ তিনি তার দেহের ওপরে নিজেকে রেখে তাকে বুকে জড়িয়ে ধরে বললেন, ‘তোমরা বিচলিত হযো না, কারণ দেখ এর মধ্যে এখনও প্রাণ আছে৷’ 11 এরপর পৌল ওপরের ঘরে গিয়ে রুটি ভাঙ্গলেন ও কিছু খাওয়া-দাওয়া করে ভোর পর্যন্ত তাদের সঙ্গে কথাবার্তা বললেন, তারপর তিনি তাদের কাছ থেকে রওনা হলেন৷ 12 বিশ্বাসীরা সেই যুবককে জীবিত অবস্থায় তার বাড়ি নিয়ে য়েতে পেরে খুবই আশ্বস্ত হল৷ 13 আমরা সমুদ্রপথে আঃসে রওনা দিয়ে পৌলের আগেই সেখানে পৌঁছালাম৷ ঠিক ছিল য়ে পৌল আঃসে হাঁটা পথে যাবেন আর সেখানে আমরা তাঁকে জাহাজে তুলে দেব৷ 14 পরে আঃসে পৌলের সঙ্গে আমাদের দেখা হল, আর তিনি জাহাজে আমাদের কাছে এলেন৷ আমরা সকলে মিতুলীনী শহরে গেলাম৷ 15 সেখান থেকে পরের দিন জাহাজে করে খীয়ের দ্বীপের কাছে পৌঁছালাম৷ দ্বিতীয় দিনে আমরা সামঃ দ্বীপ পার হয়ে তার পরদিন মিলীতে গেলাম, 16 কারণ পৌল আগেই ঠিক করেছিলেন য়ে তিনি ইফিষে নামবেন না৷ তিনি এশিয়াতে বেশী সময় থাকতে চাইলেন না, কারণ পঞ্চাশত্তমীর আগেই জেরুশালেমে পৌঁছবার জন্য তিনি ব্যগ্র হয়ে উঠেছিলেন৷ 17 মিলীতে এসে তিনি ইফিষের মণ্ডলীর প্রাচীনদের তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য ডেকে পাঠালেন৷ 18 তাঁরা এলে পর তিনি তাঁদের বললেন, ‘তোমরা জান আমি এশিয়াতে থাকাকালীন প্রথম দিন থেকেই তোমাদের সঙ্গে কিভাবে সমস্ত সময় কাটিয়েছি৷ 19 ইহুদীরা আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করেছিল, আমাকে বড় সঙ্কটের মধ্য দিয়ে য়েতে হয়েছিল, কিন্তু তোমরা জান য়ে এসত্ত্বেও আমি নম্রভাবে চোখের জলে সর্বদাই প্রভুর সেবা করে গেছি৷ 20 তোমাদের জন্য যা মঙ্গলজনক, ইতস্তত না করে সর্বদা তোমাদের কাছে বলেছি৷ এমন কি বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিক্ষা দিয়েছি ও সুসমাচার প্রচার করেছি৷ 21 ইহুদী কি অইহুদী গ্রীক সকলের কাছেই বলেছি য়েন তারা মন-ফেরায়, ঈশ্বরের দিকে ফেরে ও প্রভু যীশুকে বিশ্বাস করে৷ 22 কিন্তু এখন আমাকে পবিত্র আত্মার নির্দেশ মানতে হবে, তাই আমি জেরুশালেমে যাচ্ছি৷ সেখানে আমার কি হবে তা আমি জানি না৷ 23 তবে পবিত্র আত্মার সতর্কবাণীর মধ্য দিয়ে একথা জানি য়ে জেরুশালেমের প্রত্যেকটি শহরে আমার জন্য দুঃখ-কষ্ট ও কারাবরণ অপেক্ষা করছে৷ 24 আমি মনে করি আমার কাছে আমার জীবনের কোন মূল্য নেই৷ আমি মনে করি আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল প্রভু যীশুর কাছ থেকে য়ে কাজের ভার পেয়েছি তাতে লক্ষ্য স্থির রেখে য়েন শেষ পর্যন্ত দৌড়াতে পারি; সেই কাজ হল সকলের কাছে ঈশ্বরের অনুগ্রহের বার্তা ও সুসমাচার নিয়ে যাওয়া৷ 25 ‘এখন আমি যা বলছি মন দিয়ে শোন; তোমাদের মধ্যে যাদের কাছে ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার জানিয়েছি তাদের কেউই আমার মুখ আর দেখতে পাবে না৷ 26 তাই আজ আমি তোমাদের কাছে একথা জোর দিয়ে বলছি য়ে এসত্ত্বেও তোমাদের মধ্যে যাঁরা উদ্ধার পাবে না, ঈশ্বর তাদের বিষয়ে আমাকে দোষী করবেন না৷ 27 আমি এসব কথা বলতে পারি য়ে ঈশ্বর তোমাদের যা কিছু জানাতে চেয়েছিলেন, সে সবই আমি তোমাদের জানিয়েছি৷ 28 নিজেদের ব্যাপারে সাবধান থেকো আর পবিত্র আত্মা তোমাদেরকে য়ে পালের দেখাশোনার ভার দিয়েছেন, ঈশ্বরের সেই মণ্ডলীর তত্ত্বাবধান কর, কারণ এই মণ্ডলী তিনি তাঁর রক্ত দিয়ে কিনেছেন৷ 29 আমি জানি, আমি চলে গেলে ভয়ঙ্কর নেকড়ের তোমাদের মধ্যে আসবে, তারা ঈশ্বরের এই পালকে ধ্বংস করতে চাইবে৷ 30 এমনকি তোমাদের মধ্য থেকে এমন সব লোক উঠবে যাঁরা খ্রীষ্টানুসারীদের নিজেদের অনুসারী করার জন্য উল্টোপাল্টা কথা বলবে৷ কিছু কিছু খ্রীষ্টানুসারীদের তারা সত্য থেকে সরিয়ে দেবে৷ 31 সাবধান ও সতর্ক থেকো! মনে রেখো, তোমাদের সঙ্গে আমি য়ে তিন বছর ছিলাম, সেই সময় তোমাদের জন্য চোখের জল ফেলে রাত দিন সতর্ক করে অনেক চেতনা দিয়েছি৷ 32 ‘এখন আমি তোমাদের ঈশ্বরের হাতে ও তাঁর অনুগ্রহের বার্তাতে তোমাদের সঁপে দিলাম, তা তোমাদের গড়ে তুলতে সমর্থ৷ ঈশ্বর তাঁর সমস্ত পবিত্র লোকদের য়ে আশীর্বাদ দিয়ে থাকেন, এই বার্তা তোমাদের সেই আশীর্বাদ দেবেন৷ 33 আমি যখন তোমাদের মধ্যে ছিলাম, তখন আমি কারোর কাছে অর্থ বা জামা কাপড় চাই নি৷ 34 তোমরা ভালভাবেই জান য়ে আমার নিজের ও সঙ্গীদের অভাব দূর করতে আমি এই দুহাতে কাজ করেছি৷ 35 আমি তোমাদের দেখিয়েছি কিভাবে কঠোর পরিশ্রম করে অভাবীদের সাহায্য করতে হয়৷ প্রভু যীশুর কথা স্মরণ করাও উচিত, কারণ তিনি বলেছেন, ‘গ্রহণ করার থেকে দান করা বেশী পুণ্যের৷” 36 এই কথা বলার পর তিনি তাদের সকলের সঙ্গে হাঁটু গেড়ে প্রার্থনা করলেন৷ 37 এরপর সকলে খুব কান্নাকাটি করলেন ও পৌলের গলা জড়িয়ে ধরে তাঁকে চুমু দিলেন৷ তাঁরা তাঁকে আর দেখতে পাবেন না, একথা শুনে বিশেষ দুঃখ করলেন৷ পরে জাহাজ পর্যন্ত তাঁকে পৌঁছে দিতে গেলেন৷ 38
Acts 21:1 ইফিষের মণ্ডলীর প্রাচীনদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আমরা সমুদ্র পথে সোজা কো দ্বীপে এলাম৷ পরদিন আমরা রোদঃ দ্বীপে গেলাম৷ রোদঃ থেকে পাতারায় চলে গেলাম৷ 2 পাতারায় এমন একটি জাহাজ পেলাম যা পার হয়ে ফৈনীকিয়া অঞ্চলে যাবে৷ আমরা সেই জাহাজে চড়ে যাত্রা করলাম৷ 3 পরে আমরা যাবার পথে কুপ্র দ্বীপের কাছে এলাম৷ আমাদের উত্তরদিকে দ্বীপটিকে দেখতে পাচ্ছিলাম; কিন্তু সেখানে আমরা জাহাজ ভেড়ালাম না৷ 4 আমর সুরিয়ার দিকে এগিয়ে গেলাম, সোর শহরে জাহাজ থামানো হল, কারণ সেখানে জাহাজ থেকে কিছু মাল নামানোর ছিল৷ আমরা সেখানে কিছু খ্রীষ্টানুসারীর দেখা পেয়ে তাঁদের সঙ্গে সাতদিন কাটালাম৷ পবিত্র আত্মার মাধ্যমে তাঁরা পৌলকে জেরুশালেম য়েতে নিষেধ করলেন৷ 5 কিন্তু সেখানে থাকার সময় শেষ হলে আমরা রওনা দিলাম এবং যাত্রাপথে এগিয়ে চললাম৷ সেখানকার খ্রীষ্টানুসারীরা সকলে নিজেদের পরিবার ও ছেলে-মেয়েদের সাথে করে নিয়ে এসে আমাদের বিদায় জানাতে শহরের বাইরে এলেন৷ সেখানে সমুদ্রতীরে আমরা হাঁটু গেড়ে বসে প্রার্থনা করে পরস্পরের কাছ থেকে বিদায় নিলাম৷ 6 এরপর আমরা জাহাজে উঠলাম আর তাঁরা বাড়ি ফিরে গেলেন৷ 7 সোর থেকে যাত্রা করে আমরা তলিমায়িতে পৌঁছালাম৷ আর সেখানকার খ্রীষ্ট বিশ্বাসী ভাইদের শুভেচ্ছা জানিয়ে তাদের সঙ্গে একদিন থাকলাম৷ 8 পরের দিন আমরা তলিমায়ি থেকে রওনা হয়ে কৈসরিয়ায় এলাম৷ সেখানে সুসমাচার প্রচারক ফিলিপের বাড়িতে উঠলাম৷ ইনি সেই সাতজন মনোনীত লোকদের মধ্যে একজন৷ আমরা সেখানে তাঁর সঙ্গে থাকলাম৷ 9 এই ফিলিপের চারটি কুমারী কন্যা ছিলেন, এরা ভাববাণী বলতে পারতেন৷ 10 সেখানে বেশ কিছুদিন থাকার পর যিহূদিয়া থেকে আগাব নামে একজন ভাববাদী এসে আমাদের সঙ্গে দেখা করলেন৷ 11 তিনি আমাদের কাছে এসে পৌলের কোমর বন্ধনীটি নিয়ে নিজের হাত পা বেঁধে বললেন, ‘পবিত্র আত্মা এই কথা বলছেন, ‘এই কোমর বন্ধনীটি যার তাকে জেরুশালেমের ইহুদীরা এইভাবে বেঁধে অইহুদীদের হাতে তুলে দেবে৷’ 12 সেই কথা শুনে আমরা ও যীশুর অন্য অনুগামীরা পৌলকে অনুরোধ করলাম য়েন তিনি জেরুশালেমে না যান৷ 13 পৌল এর জবাবে বললেন, ‘তোমরা এ কি করছ? তোমরা এভাবে কান্নাকাটি করে আমার হৃদয় কি ভেঙে দিচ্ছ না? খ্রীষ্টের নামের জন্য আমি জেরুশালেমে কেবল শৃঙ্খলাবদ্ধ হবার জন্য যাব তাই নয়, আমি এমন কি মরতেও প্রস্তুত!’ 14 তাঁকে যখন আমরা জেরুশালেমে যাওয়া থেকে বিরত করতে পারলাম না, তখন আর অনুরোধ না করে চুপ করে গেলাম আর বললাম, ‘প্রভুর ইচ্ছাই পূর্ণ হোক্৷’ 15 এরপর আমরা প্রস্তুত হয়ে জেরুশালেমে রওনা হলাম৷ 16 কৈসরিয়া থেকে কয়েকজন অনুগামী (খ্রীষ্টানুসারী) আমাদের সঙ্গে চললেন৷ তারা ম্লাসোন নামে একজন লোকের বাড়িতে আমাদের তুললেন৷ ইনি ছিলেন কুপ্রের লোক, গোড়ায় যাঁরা খ্রীষ্টানুসারী হয়েছিলেন, ইনি তাদের অন্যতম৷ তাঁর বাড়ীতে আমাদের নিয়ে যাওয়া হল, য়েন আমরা সেখানে থাকতে পারি৷ 17 জেরুশালেমের বিশ্বাসীরা আমাদের দেখে বড়ই খুশী হলেন৷ 18 পরদিন পৌল আমাদের নিয়ে যাকোবের সঙ্গে সাক্ষাত্ করতে গেলেন৷ মণ্ডলীর প্রাচীনেরা সেখানে ছিলেন৷ 19 সেখানে পরস্পর শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর পৌল তাঁর কাজের মাধ্যমে অইহুদীদের মধ্যে ঈশ্বর য়েসব কাজ করেছেন, তা বিস্তারিতভাবে জানালেন৷ 20 এই কথা শুনে তাঁরা ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগলেন৷ তাঁরা পৌলকে বললেন, ‘ভাই, আপনি তো জানেন, হাজার হাজার ইহুদী আজ খ্রীষ্টবিশ্বাসী হয়েছে৷ কিন্তু তারা তাদের মোশির বিধি-ব্যবস্থা পালন করতে বড়ই উত্সাহী৷ 21 তারা আপনার বিষয়ে এই কথা শুনেছে য়ে অইহুদীদের মধ্যে বাসকারী প্রবাসী ইহুদীদের আপনি নাকি মোশির বিধি-ব্যবস্থা অনুসারে চলতে বারণ করেন৷ আপনি তাদের ছেলেদের সুন্নত করা বা ইহুদী রীতিনীতি মেনে চলা নাকি নিষেধ করেন! 22 আমরা কি করব? তারা নিশ্চয় শুনবে য়ে আপনি এখানে আছেন৷ 23 তাই আমরা যা বলি আপনি তাই করুন৷ আমাদের মধ্যে চারজন লোকের একটা মানত আছে৷ 24 আপনি তাদের সঙ্গে নিয়ে শুচিকরণের অনুষ্ঠানে য়োগ দিন, এজন্য তাদের যা খরচ পড়ে আপনি তা দিয়ে দিন৷ আর তারা য়েন তাদের মাথা নেড়া করে৷ তাহলে সকলে জানবে য়ে আপনার বিষয়ে য়ে সব কথা ওরা শুনেছে সে সব সত্য নয়, বরং আপনি নিজে মোশির বিধি-ব্যবস্থা যথারীতি পালন করেন৷ 25 অইহুদীদের মধ্য থেকে যাঁরা খ্রীষ্টবিশ্বাসী হয়েছে, তাদের উদ্দেশ্যে আমরা লিখেছি য়ে:‘তারা য়েন প্রতিমার প্রসাদ, রক্ত, গলাটিপে মারা প্রাণীর মাংস না খায় ও য়ৌন পাপ থেকে দুরে থাকে৷” 26 তখন পৌল সেই কয়েকজনকে নিয়ে তাদের সঙ্গে নিজেকে শুচি করলেন৷ তারপর মন্দিরে গিয়ে শুচিকরণ অনুষ্ঠান কত দিনে সম্পূর্ণ হবে ও তাদের প্রত্যেকের জন্য কবে নৈবেদ্য উত্সর্গ করা হবে তাও জানালেন৷ 27 সাতদিন প্রায় শেষ হয়ে এসেছে, এমন সময় এশিয়া দেশের কয়েকজন ইহুদী মন্দিরের মধ্যে পৌলকে দেখতে পেয়ে তাঁর বিরুদ্ধে নানা কথা বলে লোকদের উত্তেজিত করে তুলল, আর পৌলকে ধরে চিত্কার করে বলতে লাগল, 28 ‘হে ইস্রায়েলীয়রা, এদিকে এগিয়ে এসে সাহায্য কর! এ সেই লোক, এই লোকই আমাদের জাতির বিরুদ্ধে বলে বেড়াচ্ছে, আমাদের বিধি-ব্যবস্থার বিপরীত শিক্ষা দিচ্ছে আর এই মন্দিরের বিরুদ্ধেও কথা বলছে৷ এই হল সেই লোক য়ে সর্বত্র এই শিক্ষা দিয়ে বেড়াচ্ছে৷ দেখ মন্দিরের চত্বরে সে গ্রীকদের ঢুকিয়ে এই মন্দির অপবিত্র করেছে!’ 29 কারণ তারা এর আগে পৌলের সঙ্গে ইফিষের ত্রফিমকে শহরের মধ্যে দেখেছিল, মনে করেছিল পৌল তাঁকে মন্দিরের মধ্যে এনেছেন৷ ত্রফিম ছিলেন জাতিতে গ্রীক এবং ইফিমের লোক৷ 30 সমগ্র জেরুশালেমে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ছিল আর লোকেরা একসঙ্গে ছুটল৷ তারা পৌলকে ধরে টানতে টানতে মন্দির থেকে বের করে দিল৷ সঙ্গে সঙ্গে মন্দিরের দরজা বন্ধ হয়ে গেল৷ 31 লোকেরা পৌলকে হত্যা করার চেষ্টা করছিল৷ রোমান সেনাপতির কাছে খবর পৌঁছলো য়ে সারা জেরুশালেম শহরে প্রচণ্ড গোলমাল শুরু হয়েছে৷ 32 তিনি তখনই সৈন্যদের ও তাদের কর্মকর্তাদের নিয়ে সেখানে ছুটে এলেন৷ ইহুদীরা যখন সেনাপতিকে ও তার সঙ্গে সৈন্যদের দেখল, তখন পৌলকে প্রহার করা বন্ধ করল৷ 33 তখন সেনাপতি কাছে এসে পৌলকে গ্রেপ্তার করে ও তাঁকে দুটো শেকলে বাঁধতে হুকুম করলেন৷ এরপর সেনাপতি জিজ্ঞেস করলেন, ‘এ কে, এ কি দোষ করেছে?’ 34 তখন সেই ভীড়ের মধ্যে কেউ কেউ একরকম কথা বলল, আবার কেউ কেউ অন্য রকম কথা বলল৷ এই চেঁচামেচিতে তিনি কিছুই ঠিক করতে না পেরে পৌলকে দুর্গের মধ্যে দিয়ে যাবার হুকুম করলেন৷ 35 সমস্ত লোকেরা তাদের অনুসরণ করছিল৷ পৌল যখন সিঁড়ির কাছে এসেছেন, তখন জনতা এতই হিংস্র হয়ে উঠল য়ে সেনারা পৌলকে কাঁধে করে বয়ে নিয়ে য়েতে লাগল৷ 36 কারণ জনতা চিত্কার করে বলছিল, ‘ওকে শেষ করে ফেলো!’ 37 তারা পৌলকে দুর্গের ভেতর দিয়ে নিয়ে য়েতে চাইলে পৌল সেনাপতিকে বললেন, ‘আমি আপনাকে কি কিছু বলতে পারি?’সেনাপতি বললেন, ‘তুমি দেখছি গ্রীক বলতে পার? 38 তাহলে তুমি সেই মিশরীয় নও য়ে কিছু সময় পূর্বে বিদ্রোহী হয়েছিল ও চার হাজার সন্ত্রাসবাদীকে নিয়ে মরুপ্রান্তরে পালিয়েছিল?’ 39 তখন পৌল বললেন, ‘না, আমি একজন ইহুদী, কিলিকিয়ার তার্ষ নামে এক প্রসিদ্ধ শহরের বাসিন্দা৷ আমি আপনাকে অনুরোধ করছি, এই লোকদের কাছে আমায় কিছু বলতে দিন৷’ 40 সেনাপতি অনুমতি দিলে পৌল সিঁড়ির ওপর দাঁড়িয়ে লোকদের শান্ত হবার জন্য হাত নেড়ে ইঙ্গিত করলেন৷ সবাই যখন চুপ করল তখন তিনি ইব্রীয় ভাষায় বলতে শুরু করলেন৷
Acts 22:1 পৌল বললেন, ‘ভায়েরা ও পিতৃতুল্য ব্যক্তিরা, এখন শুনুন আমি আপনাদের সামনে আত্মপক্ষ সমর্থন করছি!’ 2 ইহুদীরা যখন পৌলকে ইহুদীদের প্রচলিত ইব্রীয় ভাষায় কথা বলতে শুনল, তারা শান্ত হল৷ তখন তিনি বললেন, 3 ‘আমি একজন ইহুদী, আমি কিলিকিয়ার তার্ষের শহরে জন্মেছি; কিন্তু এই শহরে আমি বড় হয়ে উঠেছি৷ গমলীয়েলেরচরণে বসে আমি আমাদের পিতৃপুরুষদের দেওয়া বিধি-ব্যবস্থা শিক্ষালাভ করেছি৷ আজ আপনারা সকলে য়েমন, তেমনি আমিও ঈশ্বরের সেবার জন্য উদ্যোগী ছিলাম৷ 4 খ্রীষ্টের পথে যাঁরা চলত তাদের আমি নির্যাতন করতাম, এমনকি কারো কারো মৃত্যু ঘটিয়েছিলাম৷ স্ত্রী, পুরুষ সকলকেই আমি গ্রেপ্তার করে কারাগারে রাখতাম৷ 5 মহাযাজক ও ইহুদী সমাজপতিরা সকলে এই কথার সত্যতা প্রমাণ দিতে পারেন৷ তাদের কাছ থেকে চিঠি নিয়ে ইহুদী ভাইদের কাছে যাবার জন্য আমি দম্মেশকের পথে রওনা দিয়েছিলাম৷ যীশুর অনুগামী যাঁরা সেখানে ছিল তাদের গ্রেপ্তার করে জেরুশালেমে আনবার জন্য গিয়েছিলাম, য়েন তাদের শাস্তি দেওয়া হয়৷ 6 ‘আর এইরকম ঘটল, আমি চলতে চলতে দম্মেশকের কাছাকাছি এলে, দুপুর বেলা হঠাত্ আকাশ থেকে তীব্র আলোর ছটা আমার চারদিকে ছেয়ে গেল৷ 7 আমি মাটিতে পড়ে গেলাম আর এক রব শুনলাম, ‘পৌল, পৌল তুমি কেন আমায় নির্য়াতন করছ?’ 8 আমি বললাম, ‘প্রভু, আপনি কে?’ তিনি আমায় বললেন, ‘যাকে তুমি নির্য়াতন করছ, আমি সেই নাসরতীয় যীশু৷’ 9 যাঁরা আমার সঙ্গে ছিল তারা সেই আলো দেখতে পেয়েছিল, কিন্তু যিনি আমার সঙ্গে কথা বলছিলেন, তাঁর রব তারা শুনতে পায় নি৷ 10 আমি বললাম, ‘প্রভু আমায় কি করতে হবে?’ প্রভু আমায় বললেন, ‘ওঠ, দম্মেশকে যাও৷ য়ে কাজের জন্য তোমাকে মনোনীত করা হয়েছে তা সেখানেই তোমাকে বলা হবে৷’ 11 সেই তীব্র আলোর ঝলকে আমি অন্ধ হয়ে গেছিলাম৷ তাই আমার সঙ্গীরা আমার হাত ধরে দম্মেশকে নিয়ে গেল৷ 12 ‘সেখানে অননিয় নামে একজন ধার্মিক ব্যক্তি ছিলেন৷ তিনি মোশির বিধি-ব্যবস্থা পালন করতেন৷ সেখানকার ইহুদীদের মধ্যে তাঁর সুনাম ছিল৷ 13 তিনি আমার কাছে এসে আমার পাশে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘ভাই শৌল, তুমি দৃষ্টিশক্তি লাভ কর৷’ আর সেই মুহূর্তে আমি তাঁকে দেখতে পেলাম৷ 14 তিনি বললেন, ‘আমাদের পিতৃপুরুষদের ঈশ্বর তোমায় বহুপূর্বেই মনোনীত করেছেন, য়েন তুমি তাঁর পরিকল্পনা জানতে পার এবং সেই ধার্মিকজনকে দেখতে পাও ও তাঁর রব শুনতে পাও৷ 15 তুমি যা দেখলে ও শুনলে সকল লোকের কাছে সে বিষয়ে সাক্ষ্য দেবে৷ 16 এখন আর দেরী না করে ওঠ, বাপ্তিস্ম নাও আর তোমার পাপ ধুয়ে ফেল৷ উদ্ধার লাভের জন্য যীশুতে বিশ্বাস কর৷’ 17 ‘পরে আমি জেরুশালেমে ফিরে এসে যখন মন্দিরের চত্বরে প্রার্থনা করছিলাম, সেই সময় এক দর্শন পেলাম৷ 18 দর্শনে দেখলাম যীশু আমায় বলছেন, ‘শিগ্গির ওঠ! এখুনি জেরুশালেম থেকে চলে যাও! কারণ আমার বিষয়ে তুমি য়ে সাক্ষ্য দিচ্ছ, তারা তা গ্রহণ করবে না৷’ 19 আমি বললাম, ‘প্রভু, তারা তো ভাল করেই জানে য়ে যাঁরা তোমায় বিশ্বাস করে, তাদের গ্রেপ্তার করে মারধর করার জন্য আমি সমাজ-গৃহগুলিতে য়েতাম৷ 20 যখন তোমার সাক্ষী স্তিফানের রক্তপাত হচ্ছিল, তখন আমি সেখানে দাঁড়িয়ে থেকে তার অনুমোদন করেছিলাম, আর যাঁরা তাকে মারছিল তাদের পোশাক আগলাচ্ছিলাম৷’ 21 তখন যীশু আমায় বললেন, ‘এখন যাও! আমি তোমাকে বহুদূরে অইহুদীদের কাছে পাঠাচ্ছি৷” 22 পৌল অইহুদীদের কাছে যাওয়ার কথা বললে লোকেরা তা আর শুনতে চাইল না৷ ইহুদীরা সকলে জোরে চিত্কার করে উঠল, ‘মার বেটাকে! একে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দাও! এ বেঁচে থাকার অয়োগ্য!’ 23 তারা যখন এভাবে চিত্কার করছে ও তাদের পোশাক খুলে ছুঁড়ে ফেলে বাতাসে ধুলো ওড়াচ্ছে, 24 তখন সেই সেনাপতি পৌলকে দুর্গের মধ্যে নিয়ে য়েতে হুকুম দিয়ে বললেন, ‘একে চাবুক মেরে দেখ এ কি বলে, লোকেরা কেন এর বিরুদ্ধে এমনি করে চিত্কার করছে!’ 25 সৈনিকরা যখন পৌলকে চাবুক মারার জন্য বাঁধছে তখন য়ে সেনাপতি সেখানে দাঁড়িয়েছিল পৌল তাকে বললেন, ‘একজন রোমান নাগরিকের বিচার না করে তার কোন দোষ না পেলেও তাকে চাবুক মারা কি আইনসম্মত কাজ হবে?’ 26 এই কথা শুনে সেই সেনাপতি তার ওপরওয়ালার কাছে গিয়ে বলল, ‘আপনি জানেন আপনি কি করতে যাচ্ছেন? এ লোকটা তো একজন রোমান৷’ 27 তখন সেই সেনাপতি পৌলের কাছে এসে বলল, ‘আমায় বল দেখি, তুমি কি রোমীয়?’পৌল বললেন, ‘হ্যাঁ৷’ 28 তখন সেই সেনাপতি বলল, ‘এই নাগরিকত্ব লাভ করতে আমার অনেক টাকা খরচ হয়েছে৷’পৌল বললেন, ‘কিন্তু আমি জন্মসূত্রেই রোমীয়৷’ 29 যাঁরা তাকে প্রশ্ন করার জন্য প্রস্তুত হয়েছিল তারা এই কথা শুনে পিছিয়ে গেল৷ সেনাপতিও ভয় পেয়ে গেল যখন বুঝতে পারল য়ে পৌল একজন রোমান নাগরিক, আর সে তাঁকে বেঁধেছে৷ 30 পরদিন ইহুদীরা কেন পৌলের ওপর দোষ দিচ্ছে তা জানবার জন্য রোমান সেনাপতি ইহুদীদের প্রধান যাজকদের ও মহাসভার সকল সভ্যকে জড়ো হতে হুকুম দিল; আর পৌলকে সেখানে তাদের মাঝে মুক্ত অবস্থায় হাজির করল৷
Acts 23:1 পৌল মহাসভার দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলতে শুরু করলেন, ‘ভাইয়েরা, ঈশ্বরের দৃষ্টিতে আমি আজ পর্যন্ত শুদ্ধ বিবেক অনুযাযী জীবনযাপন করছি৷’ 2 তখন মহাযাজক অননিয়, পৌলের কাছাকাছি যাঁরা দাঁড়িয়েছিল তাদের হুকুম দিলেন পৌলের মুখে চড় মেরে তার মুখ বন্ধ করে দিতে৷ 3 তখন পৌল অননিয়কে বললেন, ‘হে চুনকাম করা প্রাচীর! স্বয়ং ঈশ্বর তোমায় আঘাত করবেন৷ আইনসঙ্গত ভাবে আমার বিচার করার জন্য তুমি এখানে বসেছ; আর আমাকে আঘাত করার হুকুম দিয়ে তুমি মোশির বিধি-ব্যবস্থার বিরুদ্ধে যাচ্ছ৷’ 4 যাঁরা পৌলের আশেপাশে দাঁড়িয়েছিল তারা তাঁকে বলল, ‘ঈশ্বরের মহাযাজকের সঙ্গে তুমি এইভাবে কথা বলতে পারো না৷ তুমি তাঁকে অপমান করছ!’ 5 পৌল বললেন, ‘ভাইরা, আমি বুঝতে পারি নি য়ে উনি মহাযাজক; কারণ এরকম লেখা আছে, ‘তুমি সমাজের কোন নেতার বিরুদ্ধে কটু কথা বলো না৷’ 6 পৌল যখন বুঝতে পারলেন য়ে তাদের মধ্যে কিছু সভ্য সদ্দূকী ও কিছু সভ্য ফরীশী, তখন তিনি মহাসভার উদ্দেশ্যে চিত্কার করে বলে উঠলেন, ‘ভাইরা আমি একজন ফরীশী! আর ফরীশীদেরই সন্তান৷ মৃতদের পুনরুত্থান হবে বলে আমার য়ে প্রত্যাশা আছে, তার জন্যই আমার এই বিচার হচ্ছে!’ 7 পৌলের কথা শুনে ফরীশী ও সদ্দূকীদের মধ্যে বিরোধ বেধে গেল৷ আর সভা দুটো দলে ভাগ হয়ে গেল৷ 8 কারণ সদ্দূকীরা বলত পুনরুত্থান বলে কিছু নেই, স্বর্গদূত বা আত্মা বলেও কিছু নেই; কিন্তু ফরীশীরা উভয়ই বিশ্বাস করত৷ 9 চারদিকে বিরাট কোলাহল শুরু হয়ে গেল৷ ফরীশীদের মধ্যে থেকে কয়েকজন ব্যবস্থার শিক্ষক উঠে দাঁড়িয়ে খুব জোরালো তর্ক জুড়ে দিল, তারা বলল, ‘আমরা এঁর কোন দোষই দেখতে পাচ্ছি না! হয়তো কোন আত্মা বা স্বর্গদূত দম্মেশকের পথে সত্যসত্যই তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন!’ 10 এইভাবে গণ্ডগোল বাড়তে বাড়তে লড়াইয়ে পরিণত হল৷ সেনাপতি ভয় পেয়ে গেলেন, য়ে তারা হয়তো পৌলকে টেনে-হিঁচড়ে টুকরো টুকরো করে ফেলবে; তাই তিনি হুকুম দিলেন য়েন সৈন্যরা নেমে গিয়ে ইহুদীদের মধ্য থেকে পৌলকে স্বর্গে নিয়ে যায়৷ 11 পরদিন রাতে প্রভু যীশু পৌলের কাছে এসে দাঁড়ালেন৷ তিনি বললেন, ‘সাহস কর! কারণ তুমি আমার বিষয়ে য়েমন জেরুশালেমে সাক্ষ্য দিয়েছ, তেমনি রোমেও আমার কথা তোমাকে বলতে হবে!’ 12 পরের দিন সকালে ইহুদীরা জোট বেঁধে দিব্যি করে বলল, ‘পৌলকে হত্যা না করা পর্যন্ত তারা অন্ন জল মুখে তুলবে না৷ 13 যাঁরা এই চক্রান্ত করেছিল তারা সংখ্যায় প্রায় চল্লিশ জনের কিছু বেশী ছিল৷ 14 সেই ইহুদীরা প্রধান যাজক ও সমাজপতিদের কাছে গিয়ে বলল, ‘আমরা শপথ করেছি য়ে পৌলকে হত্যা না করা পর্যন্ত আমরা অন্ন জল মুখে তুলব না৷ 15 এখন আপনারা মহাসভার সভ্যদের সঙ্গে সেনাপতির কাছে আবেদন করুন, য়েন তিনি আপনাদের কাছে পৌলকে নামিয়ে আনেন, বলুন য়ে আপনারা তার কাছে আরো কিছু প্রশ্ন করতে চান৷ সে এখানে আসার আগেই আমরা তাকে হত্যা করার জন্য তৈরী রইলাম৷’ 16 কিন্তু পৌলের এক ভাগ্নে এই চক্রান্তের কথা জানতে পেরে দুর্গের মধ্যে ঢুকে পৌলকে সব কথা জানিয়ে দিল৷ 17 পৌল তখন শতপতিদের একজনকে কাছে ডেকে বললেন, ‘আপনি এই যুবককে সেনাপতির কাছে নিয়ে যান, কারণ তাকে এর কিছু বলার আছে৷’ 18 তাতে তিনি সেই যুবককে সেনাপতির কাছে নিয়ে গিয়ে বললেন, ‘বন্দী পৌল আমার এই যুবককে আপনার কাছে নিয়ে আসতে বললেন, কারণ এ আপনাকে কিছু বলতে চায়৷’ 19 তখন সেনাপতি যুবকটির হাত ধরে এক পাশে নিয়ে গিয়ে একান্তে তাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি আমায় কি বলতে চাও বল৷’ 20 সেই যুবক বলল, ‘ইহুদীরা পরামর্শ করে ঠিক করেছে য়ে তারা পৌলকে আরও বিশদভাবে প্রশ্ন করার মিথ্যা অজুহাত নিয়ে আপনার কাছে এসে অনুরোধ করবে য়েন আপনি পৌলকে কাল মহাসভার সামনে হাজির করেন৷ 21 কিন্তু আপনি তাদের কথায় বিশ্বাস করবেন না, কারণ তাদের মধ্যে চল্লিশ জনেরও বেশী লোক পৌলকে হত্যা করার জন্য লুকিয়ে অপেক্ষা করে আছে৷ তারা নিজেদের মধ্যে শপথ করেছে য়ে, পৌলকে না মারা পর্যন্ত তারা অন্ন জল মুখে তুলবে না৷ তারা কেবল আপনার সম্মতির অপেক্ষায় আছে৷’ 22 তখন সেনাপতি ঐ যুবককে এই বলে বিদায় দিলেন য়ে, ‘সে য়ে তার সঙ্গে দেখা করেছে তা য়েন কেউ না জানতে পারে৷’ 23 পরে তিনি দুজন সেনাপতিকে কাছে ডেকে বললেন, ‘দুশো সৈনিককে রাত নটায় কৈসরিয়া যাবার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলো, এদের সঙ্গে দুশো বর্শাধারী ও সত্তর জন অশ্বারোহী সৈন্য দিও৷ 24 পৌলের জন্যও অশ্ব প্রস্তুত রেখো, তাতে করে তাকে রাজ্যপাল ফীলিক্সের কাছে পৌঁছে দিও৷ 25 আর তিনি এরূপ একটি পত্র লিখে সঙ্গে দিলেন: 26 মহামহিম রাজ্যপাল ফীলিক্স সমীপেষু, ক্লৌদিয় লুদিয়ের অভিবাদন গ্রহণ করুন৷ 27 পৌল নামের লৌকটিকে ইহুদীরা ধরে হত্যা করতে উদ্য়ত হয়েছিল; কিন্তু আমি যখন জানতে পারলাম য়ে সে রোমান নাগরিক তখন আমার সৈন্যদের নিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে আনলাম৷ 28 এর বিরুদ্ধে য়ে কি অভিযোগ আছে তা জানার জন্য আমি একে ইহুদীদের মহাসভার সামনে আনি৷ 29 সেখানে আমি বুঝতে পারলাম য়ে ইহুদীদের বিধি-ব্যবস্থা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ওর উপর দোষারোপ করা হচ্ছে, কিন্তু মৃত্যুদণ্ড দেওয়া বা কারাগারে দেওয়ার মত এর কোন দোষ আমি পাই নি৷ 30 এই লোকের বিরুদ্ধে হত্যার চক্রান্ত করা হচ্ছে, একথা যখন আমাকে জানানো হল, তখন তাড়াতাড়ি একে আমি আপনার কাছে পাঠালাম৷ যাঁরা এর উপর দোষারোপ করছে তাদেরও বলেছি, তারা আপনার কাছে গিয়ে এর বিরুদ্ধে যা বলবার বলবে৷ 31 তখন সেনাপতির সেই আদেশ অনুসারে সেনারা পৌলকে নিয়ে সেই রাতেই আন্তিপাতিতে গেল৷ 32 পরদিন তাঁর সঙ্গে কেবল অশ্বারোহী সৈন্যদের যাবার ব্যবস্থা করে বাকী সৈন্যরা দুর্গে ফিরে এল৷ 33 তারা কৈসরিয়ায় পৌঁছে সেই পত্রখানি রাজ্যপালের হাতে দিয়ে পৌলকে তাঁর কাছে হাজির করল৷ 34 রাজ্যপাল পত্রখানি পড়ে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তার নিজের প্রদেশ কোনটি৷’ তিনি জানতে পারলেন য়ে পৌল কিলিকিয়ার লোক, 35 তখন বললেন, ‘তোমার অভিযোগকারীরা এসে পৌঁছালে আমি তোমার কথা শুনব৷’ এই কথা বলে তিনি পৌলকে হেরোদের প্রাসাদে পাহারা দিয়ে রাখতে বললেন৷
Acts 24:1 পাঁচদিন পর মহাযাজক অননিয় ইহুদী সমাজের কয়েকজন বৃদ্ধ নেতা ও উকিল তর্তুল্লকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে গেলেন; আর তারা পৌলের বিরুদ্ধে রাজ্যপালের কাছে অভিযোগ দায়ের করলেন৷ 2 পৌলকে ডেকে পাঠানো হল, তখন ফীলিক্সের সামনে তর্তুল্ল সওয়াল শুরু করলেন, ‘মহামান্য ফীলিক্স! আপনার জন্যই আমরা মহাশান্তিতে আছি; আপনার দূরদৃষ্টির জন্য এই জাতির অনেক সংস্কার সাধন হয়েছে৷ 3 একথা আমরা সকলে সর্বত্র সম্পূর্ণ কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্বীকার করছি৷ 4 কিন্তু বেশী কথা বলে আমি আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট করতে চাই না৷ এইজন্য আপনাকে অনুরোধ করছি, আপনি অনুগ্রহ করে আমাদের এই সামান্য আবেদন শুনুন৷ দয়া করে ধৈর্য্য ধরুন৷ 5 কারণ আমরা দেখছি, ঐ লোকটাই হচ্ছে যত নষ্টের মূল৷ জগতে য়েখানে যত ইহুদী আছে এ তাদের মধ্যে গণ্ডগোল পাকাচ্ছে, এ নাসরতীয় দলের একজন নেতা৷ 6 আর এ আমাদের মন্দিরও অশুচি করতে চেয়েছিল, তাই আমরা একে ধরে এনেছি৷আমরা কি বিষয়ে এর প্রতি দোষারোপ করছি তা আপনি নিজে একে জিজ্ঞেস করলেই সব জানতে পারবেন৷’ 7 8 9 সমবেত ইহুদীরাও এতে সায় দিয়ে বলল, ‘এ সবই সত্য৷’ 10 রাজ্যপাল যখন পৌলকে বলার জন্য ইশারা করলেন, তখন পৌল বলতে শুরু করলেন, ‘রাজ্যপাল ফীলিক্স, আপনি অনেক বছর ধরে এই জাতির বিচার করছেন জেনে আমি আনন্দের সঙ্গে আত্মপক্ষ সমর্থন করছি৷ 11 আপনি অনুসন্ধান করলে দেখবেন, আজ বারো দিনের বেশী হয় নি আমি উপাসনা করার জন্য জেরুশালেমে গিয়েছিলাম৷ 12 আর এই ইহুদীরা মন্দিরের মধ্যে আমাকে কারোর সঙ্গে ঝগড়া করতে বা সমাজ-গৃহে জনতাকে উত্তেজিত করতে দেখে নি৷ 13 এরা আমার বিরুদ্ধে য়ে দোষারোপ করছে তার কোন প্রমাণ আপনাকে দিতে পারবে না৷ 14 কিন্তু আপনার কাছে আমি একথা স্বীকার করছি, আমি যীশুর পথের অনুসারী হয়ে আমার পিতৃপুরুষদের ঈশ্বরের উপাসনা করি৷ আমার দোষারোপকারীরা বলছে য়ে সেই পথ ঠিক নয়৷ মোশির বিধি-ব্যবস্থায় যা কিছু লেখা আছে এবং ভাববাদীদের গ্রন্থে যা লেখা আছে আমি সে সবে বিশ্বাস করি৷ 15 এদের মতো আমারও ঈশ্বরের ওপর প্রত্যাশা আছে য়ে ধার্মিক ও অধার্মিক উভয়েরই পুনরুত্থান হবে৷ 16 এইজন্য আমিও সর্বদা সেইভাবে চলি যাতে ঈশ্বর ও মানুষের সামনে নিজের বিবেককে শুদ্ধ রাখতে পারি৷ 17 ‘অনেক বছর পর আমি আমার জাতির লোকদের জন্য ত্রাণসামগ্রী নিয়ে এসেছিলাম এবং মন্দিরে নৈবেদ্য উত্সর্গ করতে গিয়েছিলাম৷ 18 সেই সময় তারা আমাকে মন্দিরের মধ্যে শুচিশুদ্ধ অবস্থাতেই দেখেছিল৷ সেখানে তখন কোন ভীড় বা গণ্ডগোলহয় নি৷ 19 এশিয়া থেকে কিছু ইহুদী সেখানে এসেছিল৷ আমার বিরুদ্ধে তাদের কিছু বলার থাকলে আপনার কাছে এসে তারা আমার প্রতি দোষারোপ করতে পারত৷ 20 অথবা যাঁরা এখানে উপস্থিত আছে তারাই বলুক আমি যখন মহাসভার সামনে ছিলাম, তারা কি আমার কোন দোষ দেখতে পেয়েছে? 21 না কেবল তাদের মধ্যে দাঁড়িয়ে মৃতদের পুনরুত্থানের বিষয়ে আমার বিশ্বাস ঘোষণা করেছি বলে আজ আপনাদের সামনে আমার বিচার হচ্ছে৷’ 22 ফীলিক্স সেই পথের বিষয় ভালভাবেই জানতেন, তাই তিনি বিচার স্থগিত রাখলেন, আর বললেন, ‘প্রধান সেনাপতি লুষিয় এলে আমি এর বিচার নিষ্পত্তি করব৷’ 23 তিনি সেনাপতিকে হুকুম দিলেন, য়েন পৌলকে প্রহরারত অবস্থায় রাখা হয়, কিন্তু কিছু স্বাধীনতাও তাকে দিলেন, ‘এর কোন বন্ধু যদি এর দেখাশোনা করতে আসে তবে বারণ করো না৷’ 24 এর কয়েকদিন পর ফীলিক্স তাঁর ইহুদী স্ত্রী দ্রুষিল্লাকে নিয়ে সেখানে এলে পৌলকে ডেকে পাঠালেন৷ ফীলিক্স পৌলের মুখে খ্রীষ্ট যীশুতে বিশ্বাসের কথা শুনলেন৷ 25 কিন্তু পৌল যখন তাকে ন্যায়পরায়ণতা, আত্মসংযম ও ভবিষ্যতের মহাবিচারের কথা শোনাচ্ছিলেন, তখন ফীলিক্স বেশ ভয় পেয়ে গেলেন, আর বললেন, ‘তুমি এখন যাও আমার আবার সুয়োগ হলে তোমায় ডেকে পাঠাবো৷’ 26 এই সময় তিনি আশা করছিলেন য়ে পৌল তাকে টাকা দেবেন, তাই তিনি বার বার পৌলকে ডেকে পাঠিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলতেন৷ 27 দুবছর কেটে যাবার পর পর্কিয় ফীষ্ট ফীলিক্সের পদে নিযুক্ত হলেন৷ আর ফীলিক্স ইহুদীদের সন্তুষ্ট রাখার জন্য পৌলকে বন্দী রেখে গেলেন৷
Acts 25:1 ফীষ্ট সেই প্রদেশে এলেন, এর তিনদিন পর তিনি কৈসরিয়া থেকে জেরুশালেমে গেলেন৷ 2 সেখানে প্রধান যাজকরা ও ইহুদী সমাজপতিরা তাঁর কাছে এসে পৌলের বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগ জানাল৷ 3 ফীষ্টের কাছে তারা এই আবেদন জানাল য়েন তিনি পৌলকে জেরুশালেমে পাঠাবার ব্যবস্থা করেন৷ তারা এই অনুগ্রহ দেখানোর অনুরোধ করেছিল কারণ তারা পথেই পৌলকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেছিল৷ 4 কিন্তু ফীষ্ট বললেন, ‘না, পৌল কৈসরিয়ায় বন্দী হয়ে আছে এবং আমি শিগ্গির কৈসরিয়ায় যাব৷ 5 তাই তোমাদের মধ্যে যাঁরা ক্ষমতায় আছে, তারা আমার সঙ্গে সেখানে চলুন৷ এই লোকটি যদি কিছু ভুল করে থাকে তবে তা সেখানেই পেশ করুক৷’ 6 ফীষ্ট জেরুশালেমে প্রায় আট দশদিন থাকার পর কৈসরিয়ায় চলে গেলেন৷ পরের দিন তিনি বিচারালয়ে নিজের আসনে বসে পৌলকে সেখানে হাজির করতে হুকুম করলেন৷ 7 পৌল সেখানে এলে জেরুশালেম থেকে য়েসব ইহুদীরা এসেছিল তারা চারপাশে ঘিরে দাঁড়িয়ে তাঁর বিরুদ্ধে এমন সব জঘন্য অপরাধের কথা বলতে লাগল, যার কোন প্রমাণ তারা নিজেরাই দিতে পারল না৷ 8 পৌল আত্মপক্ষ সমর্থন করে বললেন, ‘আমি ইহুদীদের বিধি-ব্যবস্থা বা মন্দির কিংবা কৈসরের বিরুদ্ধে কোন অপরাধ করি নি৷’ 9 কিন্তু ইহুদীদের কাছে সুনাম পাবার আশায় খ্রীষ্ট পৌলকে বললেন, ‘তুমি কি জেরুশালেমে গিয়ে সেখানে আমার সামনে এসব বিষয়ে তোমার বিচার হয় তা চাও?’ 10 পৌল বললেন, ‘আমি কৈসরের বিচারালয়ে দাঁড়িয়ে আছি, এখানেই আমার বিচার হওয়া উচিত৷ আমি ইহুদীদের বিরুদ্ধে কিছুই করি নি, একথা আপনি ভালোভাবেই জানেন৷ 11 আমি যদি কোন অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হই ও মৃত্যুদণ্ড পাবার য়োগ্য হই, তবে আমি মৃত্যু থেকে রক্ষা পাবার জন্য বলব না৷ কিন্তু এরা আমার বিরুদ্ধে য়েসব অভিযোগ করছে, এসব যদি সত্য না হয় তবে এদের হাতে কেউ আমাকে তুলে দিতে পারবে না, কারণ আমি কৈসরের কাছে আপীল করছি!’ 12 তখন খ্রীষ্ট তাঁর পরামর্শদাতাদের সঙ্গে কথা বললেন, পরে ফীষ্ট পৌলকে বললেন, ‘তুমি কৈসরের কাছে আপীল করেছ, তোমাকে কৈসরের কাছে পাঠানো হবে৷’ 13 এর কিছু দিন পর রাজা আগ্রিপ্প ও বর্ণীকী কৈসরিয়ায় এসে খ্রীষ্টের সঙ্গে দেখা করলেন৷ 14 তাঁরা সেখানে বেশ কিছু দিন থাকলেন৷ রাজার কাছে ফীষ্ট পৌলের বিষয় এইভাবে বললেন, ‘ফীলিক্স কোন একজন লোককে এখানে বন্দী করে রেখেছেন৷ 15 আমি যখন জেরুশালেমে ছিলাম, সেই সময় ইহুদীদের প্রধান যাজকরা ও সমাজপতিরা তার বিরুদ্ধে আবেদন করে বিচার ও শাস্তি চেয়েছিল৷ 16 আমি তাদের বলেছিলাম য়ে, ‘যার নামে অভিযোগ দায়ের করা হচ্ছে, সে যতক্ষণ পর্যন্ত না অভিযোগকারীদের সামনে আত্মপক্ষ সমর্থন করতে পাচ্ছে, ততক্ষণ কোন লোককে তাদের হাতে তুলে দেওয়া রোমাণদের নিয়ম নয়৷ 17 আর তারা আমার সঙ্গে এখানে এলে, আমি আর দেরী না করে, পরদিনই সেই বন্দীকে বিচারের জন্য আমার বিচারালয়ে আনাই৷ 18 যখন তারা দাঁড়িয়ে তাকে দোষী সাব্যস্ত করতে গেল তখন তাঁর বিরুদ্ধে য়ে রকম দোষের কথা আমি অনুমান করেছিলাম, তার অভিযোগকারীরা সেই রকম কোন দোষই দেখাতে পারল না৷ 19 তার সাথে তাদের ধর্ম সম্বন্ধে এবং যীশু নামে এক ব্যক্তিযিনি মারা গিয়েছিলেন কিন্তু যাকে পৌল জীবিত বলে প্রচার করত সে সম্বন্ধে কিছু মতপার্থক্য ছিল৷ 20 আমি বুঝে উঠতে পারলাম না য়ে এই ধরণের প্রশ্নগুলির উত্তর কিভাবে অনুসন্ধান করা হবে, তাই তাকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘তুমি কি জেরুশালেমে গিয়ে সেখানে এই বিষয়ের বিচার হোক তাই চাও?’ 21 কিন্তু পৌল কৈসরের কাছে বিচার চেয়ে কারাগারে থাকার জন্য আপীল করায়, যতদিন না আমি তাকে কৈসরের কাছে পাঠাতে পারছি ততদিন কারাগারে রাখার নির্দেশ দিয়েছি৷’ 22 আগ্রিপ্প বললেন, ‘হ্যাঁ, আমিও নিজে তার কথা শুনতে চেয়েছিলাম৷’ফীষ্ট বললেন, ‘বেশ, কালই শুনবেন৷’ 23 পরদিন রাজা আগ্রিপ্প ও বর্নীকী খুব জাঁকজমকের সাথে এসে সভা ঘরে ঢুকলেন, তাঁদের সঙ্গে সেনাপতিরা ও শহরের গন্যমান্য লোকেরাও ছিলেন৷ ফীষ্টের হুকুমে পৌলকে সেখানে নিয়ে আসা হল৷ 24 তখন ফীষ্ট বললেন, ‘হে রাজা আগ্রিপ্প ও আমাদের সঙ্গে যাঁরা উপস্থিত আছেন তারা এই লোককে দেখছেন, যার বিরুদ্ধে এখানকার ও জেরুশালেমের সমস্ত ইহুদী সমাজ আমার কাছে চিত্কার করছে য়ে এই লোকের আর বেঁচে থাকা উচিত্ নয়৷ 25 কিন্তু এর মৃত্যুদণ্ডের য়োগ্য কোন অপরাধই আমি পাই নি৷ এ যখন নিজে সম্রাটের কাছে আপীল করেছে, তখন আমি সেখানে একে পাঠাব বলে স্থির করেছি৷ 26 কিন্তু সম্রাটের কাছে এর বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কি বলব তা জানি না৷ সেইজন্য আমি আপনাদের সামনে, বিশেষ করে রাজা আগ্রিপ্পর সামনে একে হাজির করেছি৷ য়েন একে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর আমি কিছু পাই য়ে সম্বন্ধে লিখতে পারি৷ 27 কারণ বন্দীকে পাঠাবার সময় তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিবরণ না দেওয়া আমি যুক্তিযুক্ত বলে মনে করি না৷’
Acts 26:1 আগ্রিপ্প পৌলকে বললেন, ‘এখন আত্ম সমর্থন করতে তোমার যা বলার আছে তা তোমাকে বলতে অনুমতি দেওয়া হল৷’তখন পৌল হাত প্রসারিত করে আত্মপক্ষ সমর্থন করতে থাকলেন৷ 2 তিনি বললেন, ‘হে রাজা আগ্রিপ্প, ইহুদীরা আমার বিরুদ্ধে য়ে সব অভিযোগ এনেছে, সে বিষয়ে আজ আপনার সামনে আমি আত্মপক্ষ সমর্থন করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি৷ 3 বিশেষ করে ইহুদীদের রীতি-নীতি ও নানা প্রশ্নের বিষয়ে আপনি অভিজ্ঞ, এইজন্য আপনার কাছে কথা বলার সুয়োগ পেয়ে আমি বড়ই আনন্দিত৷ তাই আপনাকে অনুরোধ করছি আপনি ধৈর্য্য ধরে আমার কথা শুনুন৷ 4 ‘তারা জানে য়ে শুরু থেকেই আমি এই জেরুশালেমে আমার স্বজাতির মধ্যেই জীবন কাটিয়েছি এবং আমি কিভাবে জীবন-যাপন করেছি৷ 5 এই ইহুদীরা দীর্ঘদিন ধরে আমায় চেনে; আর তারা যদি ইচ্ছা করে তবে এ সাক্ষ্য দিতে পারে য়ে আমি একজন ফরীশীর মতোই জীবন-যাপন করেছি৷ ফরীশীরাই ইহুদী ধর্মের বিধি-ব্যবস্থা অন্যান্য দলের চাইতে সূক্ষ্মভাবে পালন করে৷ 6 আমাদের পিতৃপুরুষদের কাছে ঈশ্বর য়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সে সব পূর্ণ হবার প্রত্যাশায় আছি বলেই আজ আমার বিচার হচ্ছে৷ 7 আমাদের বারো বংশ দিনরাত একাগ্রভাবে উপাসনা করতে করতে সেই প্রতিশ্রুতির ফল পাবার প্রত্যাশা করছে৷ আর হে রাজা আগ্রিপ্প, ঈশ্বর আমাদের পূর্বপুরুষদের য়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তাতে প্রত্যাশা করার জন্যই ইহুদীরা আমার ওপর দোষারোপ করছে৷ 8 ঈশ্বর মৃতদের পুনরুত্থিত করেন একথা কেন আপনাদের কাছে অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে? 9 আমিও তো মনে করতাম য়ে নাসরতীয় যীশুর নামের বিরুদ্ধে যা কিছু করা সন্ভব তা করাই আমার অবশ্য কর্তব্য; 10 আর জেরুশালেমে আমি তাই করতাম৷ আমি প্রধান যাজকদের কাছ থেকে কর্তৃত্ত্বের অধিকার নিয়ে বহু বিশ্বাসীকে কারাগারে পুরেছি আর তাদের মৃত্যুদণ্ডের সময় আমি আমার পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছি৷ 11 সমস্ত সমাজ-গৃহে আমি প্রায়ই তাদের শাস্তি দিয়ে জোর করে যীশুর নিন্দা করাবার চেষ্টা করতাম৷ তাদের বিরুদ্ধে আমার ক্ষোভ এতই প্রচণ্ড হয়ে উঠেছিল য়ে বিদেশের শহরগুলিতে গিয়েও আমি তাদের নির্য়াতন করতাম৷ 12 ‘এই কারণেই একবার আমি প্রধান যাজকদের কাছ থেকে ক্ষমতা ও হুকুমনামা নিয়ে দম্মেশকে যাচ্ছিলাম৷ 13 পথে একদিন দুপুরবেলায়, হে মহারাজ আমি দেখলাম সূর্যের চেয়েও এক উজ্জ্বল আলো আকাশ থেকে আমার ও আমার সহযাত্রীদের চারদিকে ছড়িয়ে পড়ল৷ 14 আমরা মাটিতে পড়ে গেলাম, আর এক রব শুনতে পেলাম যা ইব্রীয় ভাষায় আমায় বলছে, ‘শৌল, শৌল, আমায় নির্য়াতন করছ কেন? আমার বিরুদ্ধে গিয়ে তুমি নিজেরই ক্ষতি করছ৷’ 15 তখন আমি বললাম, ‘প্রভু, আপনি কে? প্রভু বললেন, ‘আমি যীশু, যাকে তুমি নির্য়াতন করছ৷ 16 তুমি নিজের পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়াও! আমার সেবক হবার জন্যই আমি তোমাকে মনোনীত করেছি৷ তুমি অন্য়ের কাছে আমার সাক্ষী হবে৷ তুমি য়ে য়ে বিষয় আজ দেখলে ও ভবিষ্যতে যা যা আমি তোমায় দেখাব, সে সব সকল লোকের কাছে সাক্ষী দাও৷ এইজন্যই তোমার কাছে আজ আমি নিজে দেখা দিয়েছি৷ 17 তোমার আপন লোক ইহুদীদের হাত থেকে তোমায় আমি রক্ষা করব৷ আর আমি তোমাকে অইহুদীদের কাছে পাঠাচ্ছি৷ 18 তুমি তাদের চোখ খুলে দেবে য়েন তারা সত্য দেখে ও অন্ধকার থেকে আলোতে ফিরে আসে; আর শয়তানের কর্ত্তৃত্ব থেকে মুক্ত হয়ে ঈশ্বরের প্রতি ফিরলে তাদের সব পাপ ক্ষমা হবে৷ আমার উপর বিশ্বাস করে যাঁরা পবিত্র হয়েছে, তারা তাদের সহভাগী হবে৷” 19 পৌল বলতে থাকলেন, ‘হে মহারাজ আগ্রিপ্প, আমি সেই স্বর্গীয় দর্শনের অবাধ্য হই নি৷ 20 আমি লোকদের বলতে শুরু করলাম য়েন তারা মন-ফেরায় ও ঈশ্বরের দিকে ফেরে৷ আমি তাদের বললাম তারা য়েন ভাল কাজ করে প্রমাণ দেয় য়ে সত্যি করে মন ফিরিয়েছে৷ প্রথমে আমি এসব কথা দম্মেশকের লোকদের কাছে প্রচার করলাম৷ পরে আমি এগুলি জেরুশালেমে ও যিহূদিয়ার সর্বত্র এবং অইহুদীদের কাছেও বললাম৷ 21 এই জন্যই যখন আমি মন্দিরে ছিলাম, ইহুদীরা সেখান থেকে আমাকে ধরে এনে হত্যা করতে চেয়েছিল৷ 22 কিন্তু আজ পর্যন্ত আমি ঈশ্বরের সাহায্য পেয়েছি৷ তাই এখানে ছোট ও বড় সকলের সামনে দাঁড়িয়ে আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি৷ মোশি ও ভাববাদীরা যা ঘটবে বলে গেছেন, সেটা ছাড়া আমি আর অন্য কোন কথা বলছি না৷ 23 তাঁরা বলে গেছেন, খ্রীষ্টকে মৃত্যুভোগ করতে হবে ও মৃতদের মধ্য থেকে তিনিই হবেন প্রথম পুনরুত্থিত, ইহুদী কি অইহুদী সবার কাছে বিশিষ্ট জ্যোতির বার্তা নিয়ে আসবেন৷’ 24 পৌল যখন এভাবে আত্মপক্ষ সমর্থন করছেন তখন ফীষ্ট চিত্কার করে বলে উঠলেন, ‘পৌল তুমি পাগল! অত্যধিক অধ্যয়নের ফলে তোমার মাথা খারাপ হয়ে গেছে!’ 25 পৌল বললেন, ‘হে মহামান্য ফীষ্ট, আমি পাগল নই বরং আমি যা বলছি তা সত্য ও বোধগম্য৷ 26 রাজা আগ্রিপ্প এবিষয়ে সবই জানেন৷ তার সামনে আমি সাহসের সঙ্গে একথা বলছি৷ আমি সুনিশ্চিত য়ে, এসব বিষয় তিনি শুনেছেন, কারণ এসব এমন প্রকাশ্য স্থানে ঘটেছে য়েন তা সকলে দেখতে পায়৷ 27 আগ্রিপ্প, আপনি কি ভাববাদীরা যা লিখে গেছেন তা বিশ্বাস করেন? আমি জানি আপনি তা করেন৷’ 28 তখন আগ্রিপ্প পৌলকে বললেন, ‘তুমি কি মনে করছ, আমাকে এত অল্প সময়ের মধ্যে খ্রীষ্টীয়ান করতে পারবে?’ 29 পৌল বললেন, ‘ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি অল্প সময়ের মধ্যে হোক কি অধিক সময়ের মধ্যে হোক, সেটা বড় কথা নয়, কেবল আপনি নন, আজ যত লোক আমার কথা শুনছেন তারা সকলেই য়েন আমারই মত হন; কেবল বন্দীত্বের শেকল ছাড়া!’ 30 তখন রাজা, রাজ্যপাল ও বর্ণীকী আর তাঁদের সঙ্গে যাঁরা বসেছিলেন সকলে উঠে পড়লেন৷ 31 আর অন্য জায়গায় গিয়ে পরস্পর আলোচনা করে বললেন, ‘প্রাণদণ্ড বা কারাগারে দেবার মতো কোন অপরাধই এই লোকটা করে নি৷’ 32 আগ্রিপ্প ফীষ্টকে বললেন, ‘এ যদি কৈসরের কাছে আপীল না করত, তবে একে আমরা মুক্তি দিতে পারতাম৷’
Acts 27:1 যখন ঠিক হল য়ে আমরা জাহাজে করে ইতালিতে যাব, তখন পৌল ও অন্য কিছু বন্দীকে রাজকীয় রক্ষীবাহিনীর সেনাপতি যুলিয়র হাতে তুলে দেওয়া হল৷ 2 আমরা আদ্রামুত্তীয় থেকে আসা একটি জাহাজে উঠলাম; এই জাহাজটির এশিয়া উপকূলের বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার কথা ছিল৷ থিষলনীকীয় থেকে আরিষ্টার্খ নামে একজন মাকিদনিযান আমাদের সঙ্গে ছিলেন৷ 3 পরের দিন আমাদের জাহাজ সীদোনে পৌঁছল৷ যুলিয় পৌলের সঙ্গে বেশ ভাল ব্যবহার করলেন৷ তিনি পৌলকে তাঁর বন্ধুদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাত্ করতে যাবার অনুমতি দিলেন৷ সেই বন্ধুরা পৌলের প্রযোজনীয় সামগ্রী য়োগাতেন৷ 4 সেখান থেকে আমরা জাহাজ খুলে সীদোন শহর ছেড়ে চললাম৷ প্রতিকূল বাতাসের জন্য কূপ্র দ্বীপের কাছাকাছি অঞ্চল দিয়ে চললাম; 5 আর কিলিকিয়ার ও পাম্ফুলিয়ার প্রদেশ ছেড়ে সমুদ্রপথে লুকিয়া প্রদেশের মুরা বন্দরে এলাম৷ 6 সেখানে সেনাপতি ইতালিতে যাবার জন্য আলেকসান্দ্রীয়ায় এক জাহাজ দেখতে পেয়ে আমাদের সেই জাহাজে তুলে দিলেন৷ 7 বহুদিন ধরে আমরা খুব আস্তে আস্তে চললাম এবং বহুকষ্টে ক্লীদে এসে পৌঁছালাম৷ বাতাসের কারণে আমরা আর এগোতে পারলাম না, তাই সলমোনী বন্দরের উল্টো দিকে ক্রীতি দ্বীপের ধার ঘেঁসে চললাম৷ 8 পরে বহুকষ্টে উপকূলের ধার ঘেঁসে চলতে চলতে লাসেয়া শহরের কাছে ‘সুন্দর’ পোতাশ্রয়ে এসে পৌঁছালাম৷ 9 এইভাবে বহু সময় নষ্ট হল, আর জলযাত্রা তখন খুবই বিপজ্জনক হয়ে উঠেছিল, এদিকে উপবাস পর্বের সময়ও চলে গেল৷ তাই পৌল তাদের সাবধান করে দিয়ে বললেন, 10 ‘মহাশয়রা, আমি দেখছি, এই যাত্রায় অনিষ্ট ও অনেক ক্ষতি হবে, তা য়ে কেবল মালের বা জাহাজের হবে তাই নয়, এমন কি আমাদের জীবনেরও ক্ষতি হবে৷’ 11 কিন্তু সেনাপতি পৌলের কথার চেয়ে জাহাজের কাপ্তেন ও তার মালিকের কথার গুরুত্ব দিলেন৷ 12 সেই বন্দরটি শীতকাল কাটাবার পক্ষে উপযুক্ত না হওয়াতে জাহাজের অধিকাংশ লোক একমত হলেন য়েন জাহাজ খুলে যাত্রা শুরু করা হয় যাতে কোন রকমে ফৈনীকায় পৌঁছে সেখানে তারা শীতকালটা কাটাতে পারে৷ সেই স্থানটি ছিল দক্ষিণ পশ্চিম ও উত্তর পশ্চিম অভিমুখী ক্রীত দ্বীপের একটি বন্দর৷ 13 আর যখন অনুকূল দক্ষিণা বাতাস বইতে শুরু করল তখন তাদের মনে হল তারা যা চাইছিল তা পেয়েছে; তাই তারা নোঙ্গর তুলে ক্রীতের ধার ঘেঁসে চলতে শুরু করল৷ 14 কিন্তু এর কিছু পরেই দ্বীপের ভেতর থেকে প্রচণ্ড এক ঘূর্ণি ঝড় উঠল, এই ঝড়কে ‘ঈশান বাযু’ বলে৷ 15 আমাদের জাহাজ সেই ঝড়ের মধ্যে পড়ল, ঝড় কাটিয়ে য়েতে পারল না৷ তাই আমরা আমাদের জাহাজকে ভেসে য়েতে দিলাম৷ 16 কৌদা নামে এক ছোট দ্বীপের আড়ালে চলার সময় জাহাজের সঙ্গে য়ে ছোট ডিঙ্গিটা ছিল তা আমরা বহু কষ্টে টেনে তুলে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচালাম৷ 17 এটা তোলার পর লোকেরা জাহাজটাকে মোটা দড়ি দিয়ে ভাল করে বাঁধল৷ তারা ভয় করছিল য়ে জাহাজটি হয়তো সুর্ত্তীর চোরা বালিতে গিয়ে পড়তে পারে, তাই তারা পাল নামিয়ে নিয়ে জাহাজটাকে বাতাসের টানে চলতে দিল৷ 18 ঝড়ের প্রকোপ বাড়তে থাকায়, পর দিন খালাসীরা জাহাজের খোল থেকে ভারী ভারী মাল জলে ফেলে দিতে লাগল৷ 19 তৃতীয় দিনে তারা নিজেরাই হাতে করে জাহাজের কিছু সাজ-সরঞ্জাম জলে ফেলে দিল৷ 20 অনেক দিন যাবত্ যখন সূর্য় কি নক্ষত্রগণের মুখ দেখা গেল না, আর ঝড়ও প্রচণ্ড উত্তাল হতে থাকল, তখন শেষ পর্যন্ত আমাদের বাঁচার আশা রইল না৷ 21 অনেক দিন ধরেই সকলে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করেছিল৷ তখন পৌল তাদের মাঝে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘মহাশয়েরা, আমার কথা শুনে ক্রীতি থেকে জাহাজ না ছাড়া আপনাদের উচিত ছিল, তাহলে আজকের এই ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে পারতেন৷ 22 কিন্তু এখনও আমি বলছি, সাহস করুন, একথা জানবেন আপনাদের কারোর প্রাণহানি হবে না, শুধু জাহাজটি হারাতে হবে৷ 23 কারণ আমি য়ে ঈশ্বরের উপাসনা করি সেই ঈশ্বরের এক স্বর্গদূত গত রাত্রে আমার পাশে দাঁড়িয়ে বললেন, 24 ‘পৌল ভয় পেও না! তোমাকে কৈসরের সামনে অবশ্যই দাঁড়াতে হবে৷ ঈশ্বর তোমার জন্য এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন য়ে তিনি তোমার সহযাত্রীদের প্রাণ রক্ষা করবেন৷’ 25 তাই মহাশয়রা, আপনারা সাহস করুন, কারণ ঈশ্বরের ওপর আমার বিশ্বাস আছে য়ে আমাকে যা বলা হয়েছে ঠিক সেরকমই ঘটবে৷ 26 কিন্তু কোন দ্বীপে গিয়ে আমাদের আছড়ে পড়তে হবে৷’ 27 এইভাবে ঝড়ের মধ্যে চৌদ্দ রাত আদ্রিয়া সমুদ্রে ইতস্ততঃ ভাসমান অবস্থায় থাকার পর মাঝ রাতে নাবিকদের মনে হল য়ে জাহাজটি কোন ডাঙ্গার দিকে এগিয়ে চলেছে৷ 28 সেখানে তারা জলের গভীরতা মাপলে দেখা গেল তা একশো কুড়ি ফুট৷ এর কিছু পরে আবার জল মাপলে জলের গভীরতা নব্বুই ফুটে দাঁড়াল৷ 29 তারা ভয় করতে লাগল য়ে জাহাজটি হয়তো কিনারে পাথরের গায়ে ধাক্কা খাবে৷ তাই নাবিকেরা জাহাজের পেছন দিক থেকে চারটি নোঙ্গর নামিয়ে দিল, প্রার্থনা করল য়েন শীঘ্র ভোর হয়৷ 30 নাবিকদের মধ্যে কেউ কেউ জাহাজ ছেড়ে পালাবার মতলব করল, তাই নোঙ্গর ফেলার আছিলায় জাহাজের মধ্য থেকে ডিঙ্গিখানি নীচে নামিয়ে দিল৷ 31 কিন্তু পৌল সেনাপতি ও সৈন্যদের উদ্দেশ্যে বললেন, ‘এই লোকেরা যদি জাহাজে না থাকে তবে আপনারা রক্ষা পাবেন না৷’ 32 তখন সৈন্যরা ডিঙ্গির দড়ি কেটে দিল, আর তা জলে গিয়ে পড়ল৷ 33 এরপর ভোর হয়ে এলে পৌল সকলকে কিছু খেয়ে নেবার জন্য অনুরোধ করে বললেন, ‘আজ চৌদ্দ দিন হল আপনারা অপেক্ষা করে আছেন, কিছু না খেয়ে উপোস করে আছেন৷ 34 আমি আপনাদের অনুরোধ করছি কিছু খেয়ে নিন, বেঁচে থাকার জন্য এর প্রযোজন আছে, কারণ আপনাদের কারোর একগাছি চুলেরও ক্ষতি হবে না৷’ 35 এই কথা বলে পৌল রুটি নিয়ে তাদের সকলের সামনে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিলেন, আর তা ভেঙ্গে খেতে শুরু করলেন৷ 36 তখন সকলে উত্সাহ পেয়ে খেতে শুরু করল৷ 37 আমরা মোট দুশ ছিয়াত্তর জন লোক জাহাজে ছিলাম৷ 38 সকলে পরিতৃপ্তির সঙ্গে খাবার পর বাকী শস্য সমুদ্রে ফেলে দিয়ে জাহাজটি হাল্কা করা হল৷ 39 দিন হলে পর তারা সেই জায়গাটা চিনতে পারল না; কিন্তু এমন এক খাড়ি দেখতে পেলযার বড় বালুতট ছিল৷ তারা ঠিক করল যদি সন্ভব হয় তবে ঐ বালুতটের ওপরে জাহাজটা তুলে দেবে৷ 40 এই আশায় তারা নোঙ্গর কেটে দিল আর তা সমুদ্রেই পড়ে রইল৷ এরপর হালের বাঁধন খুলে দিয়ে বাতাসের সামনে পাল তুলে সেই বেলাভূমি লক্ষ্য করে এগিয়ে চলল৷ 41 কিন্তু একটু এগোতেই তারা বালিয়াড়িতে ধাক্কা পেল, জাহাজের সামনের দিকটা বালিতে বসে গিয়ে অচল হয়ে পড়ল, ফলে ঢেউয়ের আঘাতে পিছনের দিকটা ভেঙ্গে য়েতে লাগল৷ 42 তখন সৈন্যরা বন্দীদের হত্যা করার জন্য ঠিক করল, পাছে তাদের কেউ সাঁতার কেটে পালায়৷ 43 কিন্তু সেনাপতি পৌলকে বাঁচাবার আশায় তাদের এই কাজ করতে নিষেধ করলেন, হুকুম দিলেন য়েন যাঁরা সাঁতার জানে তারা ঝাঁপ দিয়ে আগে ডাঙ্গায় ওঠে৷ 44 বাকী সকলে য়েন জাহাজের ভাঙ্গা তক্তা বা কোন কিছু ধরে কিনারে য়েতে চেষ্টা করে৷ এইভাবে সকলেই নিরাপদে তীরে এসে পৌঁছলো৷
Acts 28:1 এইভাবে সকলে নিরাপদে তীরে পৌঁছে জানতে পারলাম য়ে আমরা মিলিতা দ্বীপে উঠেছি৷ 2 সেখানকার লোকেরা আমাদের সঙ্গে খুব ভাল ব্যবহার করল৷ বৃষ্টি পড়ার দরুন খুব ঠাণ্ডা হওয়ায় তারা আগুন জে্বলে আমাদের সকলকে স্বাগত জানাল৷ 3 পৌল এক বোঝা শুকনো কাঠ য়োগাড় করে এনে আগুনের ওপর ফেলে দিলে আগুনের হল্কায় একটা বিষধর সাপ বেরিয়ে এসে পৌলের হাতে জড়িয়ে ধরল৷ 4 তখন সেই দ্বীপের লোকেরা তার হাতে সাপটাকে ঝুলতে দেখে বলাবলি করতে লাগল, ‘এ লোকটা নিশ্চয় খুনী, সমুদ্রের ঝড়ের হাত থেকে বাঁচলেও ন্যায় একে বাঁচতে দিল না৷’ 5 কিন্তু পৌল হাত ঝেড়ে সেই সাপটাকে আগুনের মধ্যে ফেলে দিলেন, তাঁর কোন ক্ষতি হল না৷ 6 এই ব্যাপার দেখে তারা মনে করল হয় পৌলের শরীর ফুলে উঠবে, নয়তো তিনি হঠাত্ মারা যাবেন৷ অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পরও তাঁর কিছুই ক্ষতি হল না দেখে তারা পৌল সম্বন্ধে তাদের মত বদল করে পরস্পর বলাবলি করতে লাগল, “ইনি নিশ্চয়ই দেবতা৷’ 7 সেই জায়গার কাছেই দ্বীপের প্রধান কর্মকর্তা জমিদার পুব্লিয় থাকতেন৷ তিনি তাঁর বাড়িতে আমাদের সাদরে নিয়ে গেলেন৷ তিনি আমাদের প্রতি খুব ভাল ব্যবহার করলেন আর তিন দিন ধরে আমাদের আতিথ্য করলেন৷ 8 সেই সময় পুব্লিয়ের বাবা খুব অসুস্থ ছিলেন৷ তিনি জ্বর ও আমাশা রোগে শয্যাশায়ী ছিলেন৷ পৌল তাঁকে দেখার জন্য ভেতরে গেলেন৷ এরপর তিনি প্রার্থনা করে তাঁর ওপর দুহাত রাখলে তিনি সুস্থ হয়ে গেলেন৷ 9 এই ঘটনার পর ঐ দ্বীপে অন্য যত রোগী ছিল তারা পৌলের কাছে এসে রোগ মুক্ত হল৷ 10 ঐ দ্বীপের লোকেরা আমাদের অনেক উপহার দিয়ে সম্মান দেখাল, আমরা সেখানে তিন মাস থাকলাম আর আমাদের যাত্রা পথের জন্য যা যা প্রযোজন সে সব জিনিস এনে তারা জাহাজে তুলে দিল৷তিন মাস পর আমরা আলেকসান্দ্রীয় এক জাহাজে উঠে যাত্রা করলাম, সেই দ্বীপে শীতকাল এসে পড়ায় ঐ জাহাজটি নোঙ্গর করে রাখা ছিল৷ জাহাজটিতে ‘যমজ দেবের মূর্তি’ খোদাই করা ছিল৷ 11 12 আমরা প্রথমে সুরাকুষে এলাম, সেখানে তিন দিন থাকলাম৷ 13 সেখান থেকে যাত্রা করে আমরা রীগিয়ে পৌঁছলাম৷ পরদিন দক্ষিণা বাতাস বইতে শুরু করলে আমরা জাহাজ ছাড়তে পারলাম, এবং দ্বিতীয় দিনে পূতিয়লীতে পৌঁছলাম৷ 14 সেখানে আমরা কয়েকজন ভাইয়ের দেখা পেলাম৷ তাঁরা সেখানে সাতদিন থাকার জন্য আমাদের অনুরোধ করলেন৷ এইভাবে আমরা রোমে এসে পৌঁছলাম৷ 15 রোমের ভাইয়েরা আমাদের কথা জানতে পেরে আপ্পিয়ের বাজার ও তিন সরাই পর্যন্ত এগিয়ে এসে আমাদের সঙ্গে দেখা করলেন৷ তাঁদের দেখে পৌল ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিলেন ও উত্সাহ বোধ করতে লাগলেন৷ 16 রোমে পৌল একা থাকার অনুমতি পেলেন; কিন্তু একজন সৈনিককে তাঁর প্রহরায় রাখা হল৷ 17 তিন দিন পর তিনি ইহুদীদের প্রধান প্রধান লোকদের এক সভায় আহ্বান করলেন৷ তারা সমবেত হলে, তিনি তাদের বললেন, ‘আমার ইহুদী ভাইয়েরা, যদিও আমি আমার নিজের লোকদের বিরুদ্ধে বা আমাদের পিতৃপুরুষদের দেওয়া রীতি-নীতির বিরুদ্ধে কিছুই করি নি, তবু জেরুশালেমের এক বন্দী হিসাবে আমাকে রোমানদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল৷ 18 তারা আমার বিচার করে, আর মৃত্যুদণ্ডের য়োগ্য কোন দোষ আমার মধ্যে না পেয়ে আমাকে মুক্তি দিতে চেয়েছিল৷ 19 কিন্তু স্থানীয় ইহুদীরা তার বিরোধিতা করায় আমি কৈসরের কাছে আপীল করতে বাধ্য হলাম৷ আমি একথা বলছি না য়ে আমার স্বজাতির লোকরা কোন অন্যায় করেছে৷ 20 এই শৃঙ্খলে বন্দী আছি বলে আমি আপনাদের সঙ্গে সাক্ষাত্ করতে ও আপনাদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলাম, কারণ আমি ইস্রায়েলের প্রত্যাশাতে বিশ্বাসী৷’ 21 ইহুদী নেতারা পৌলকে বললেন, ‘যিহূদিয়া থেকে আমরা আপনার বিষয়ে কোন চিঠি পাই নি৷ ভাইদের মধ্যে থেকেও কেউ এখানে এসে আপনার বিষয়ে খারাপ কোন খবর দেয় নি বা কথাও বলে নি৷ 22 কিন্তু আপনার মত কি তা আপনার মুখ থেকেই আমরা শুনতে চাই, কারণ এই দলের বিষয়ে আমরা জানি য়ে লোকেরা সর্বত্র এর বিরুদ্ধে বলে থাকে৷’ 23 পরে তাঁরা একটা দিন স্থির করে সেই দিনে অনেকে তাঁর বাসায় এলেন৷ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনি তাদের কাছে ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয়ে বললেন, বোঝালেন ও সাক্ষ্য দিলেন৷ মোশির বিধি-ব্যবস্থা ও ভাববাদীদের গ্রন্থগুলি থেকে তিনি যীশুর বিষয় তাঁদের বোঝাতে চেষ্টা করলেন৷ 24 তাঁর কথায় বেশ কিছু ইহুদী বিশ্বাস করল আবার অনেকে তা বিশ্বাস করল না৷ 25 এইভাবে তাদের মধ্যে মতের মিল না হওয়ায় তারা য়ে যার মত চলে য়েতে শুরু করল৷ তাদের যাবার আগে পৌল তাদের এই কথাটি বলেছিলেন: ‘পবিত্র আত্মা ভাববাদী যিশাইয়র মাধ্যমে আপনাদের পিতৃপুরুষদের উদ্দেশ্যে ভালই বলেছিলেন৷ য়েমন: 26 ‘এই লোকদের কাছে যাও, আর তাদের বল, তোমরা শুনবে আর শুনবে, কিন্তু তোমরা বুঝবে না৷ তোমরা কেবল তাকিয়ে থাকবে কিন্তু দেখতে পাবে না৷ 27 কারণ এই লোকেদের অন্তঃকরণ অসাড় হয়ে গেছে, তাদের কান আছে বটে কিন্তু তারা শুনতে পায় না৷ এই লোকেরা সত্যের প্রতি চোখ বুজে রয়েছে৷ এইসব ঘটেছে য়েন লোকেরা তাদের চোখ দিয়ে দেখতে না পায়, তাদের কান দিয়ে শুনতে না পায় ও হৃদয় দিয়ে উপলধ্ধি না করে৷ এইসব ঘটেছে য়েন তারা আমার কাছে ফিরে না আসে, পাছে আমি তাদের আরোগ্য দান করি৷’ যিশাইয় 6:9-10 28 ‘তাই ইহুদী ভাইয়েরা আপনারা জেনে রাখুন, ঈশ্বরের দেওয়া এই পরিত্রাণ অইহুদীদের কাছেও পাঠানো হল, আর তারা তা শুনবে!’ 29 30 পৌল তাঁর নিজের ভাড়া বাড়িতে পুরো দুই বছর থাকলেন, যতলোক তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসত, তিনি তাদের সকলকে সাদরে গ্রহণ করতেন৷ 31 তিনি সম্পূর্ণ সাহসের সাথে ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয়ে প্রচার করতেন৷ তিনি প্রভু যীশু খ্রীষ্টের বিষয়ে শিক্ষা দিতেন এবং কেউ তাঁকে প্রচারে বাধা দিত না৷
Romans 1:1 যীশু খ্রীষ্টের দাস পৌলের কাছ থেকে ঈশ্বর আমাকে প্রেরিত হবার জন্য আহ্বান করেছেন৷ সমস্ত মানুষের কাছে ঈশ্বরের সুসমাচার প্রচারের জন্য আমাকে মনোনীত করা হয়েছিল৷ 2 ঈশ্বর বহুপূর্বেই মানুষের কাছে এই সুসমাচার পৌঁছে দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন৷ এই প্রতিশ্রুতি দিতে ঈশ্বর তাঁর ভাববাদীদের ব্যবহার করেছিলেন৷ পবিত্র শাস্ত্রে এই প্রতিশ্রুতির কথা লেখা ছিল৷ 3 ঈশ্বরের পুত্র আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের বিষয়ই হল এই সুসমাচার৷ মানবরূপে তিনি দাযূদের বংশে জন্মেছিলেন; কিন্তু যীশু খ্রীষ্ট য়ে ঈশ্বরের পুত্র তা পবিত্র আত্মার মাধ্যমে দেখানো হল৷ মৃতদের মধ্য হতে মহাপরাক্রমে তাঁর পুনরুত্থানও প্রমাণ করে য়ে তিনি ঈশ্বরের পুত্র৷ 4 5 খ্রীষ্টের মাধ্যমে ঈশ্বর আমাকে প্রেরিতের এই বিশেষ কাজ দিয়েছেন, য়েন সর্বজাতির লোকদের আমি বিশ্বাস ও বাধ্যতার পথে নিয়ে যাই৷ একাজ আমি খ্রীষ্টের জন্যই করেছি৷ 6 রোমানবাসীরা, তোমরাও তাদের মধ্যে যীশু খ্রীষ্টের আহুত লোক হিসাবে আছ৷ 7 হে রোমনিবাসীগণ, তোমরা যাঁরা ঈশ্বরের পবিত্র লোক হবার জন্য আহুত তাদের সকলকে এই চিঠি লিখছি৷ তোমরা তাঁর ভালবাসার পাত্র৷আমাদের ঈশ্বর পিতা ও প্রভু যীশু খ্রীষ্ট হতে তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ ও শান্তি নেমে আসুক৷ 8 প্রথমেই আমি তোমাদের সকলের জন্য যীশু খ্রীষ্টের মধ্য দিয়ে আমার ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি৷ আমি ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই কারণ তাঁর প্রতি তোমাদের এই মহাবিশ্বাসের কথা জগতের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে৷ 9 আমার প্রার্থনার সময় প্রতিবারই আমি তোমাদের মনে করি৷ ঈশ্বর জানেন য়ে একথা সত্য৷ আমি তাঁর পুত্র বিষয়ক সুসমাচার লোকদের কাছে প্রচার দ্বারা আত্মাতে ঈশ্বরের উপাসনা করি৷ আমি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছি য়েন তোমাদের সবার কাছে যাবার অনুমতি পাই; আর ঈশ্বর যদি ইচ্ছা করেন তবেই তা সন্ভব হবে৷ 10 11 আমি তোমাদের দেখার জন্য বড়ই উত্সুক৷ তোমাদের শক্তিশালী করে তোলার জন্য আমি সকলকে কিছু আত্মিক বর দিতে চাই৷ 12 আমি বলতে চাই আমাদের য়ে বিশ্বাস রয়েছে, তার দ্বারা য়েন পরস্পর উদ্ধুদ্ধ হই৷ 13 ভাই ও বোনেরা, আমি চাই য়ে তোমরা জান আমি বহুবার তোমাদের কাছে য়েতে চেষ্টা করেছি, কিন্তু বাধা পেয়েছি৷ আমি তোমাদের কাছে য়েতে চেয়েছি যাতে তোমাদের আত্মিকভাবে বৃদ্ধি পেতে সাহায্য করতে পারি৷ অন্যান্য অইহুদী লোকদের আমি য়েমন সাহায্য করেছি, তেমনি আমি তোমাদেরও সাহায্য করতে চাই৷ 14 আমার উচিত সকলের সেবা করা, তা সে গ্রীক হোক বা না হোক, বিজ্ঞ বা মূর্খ হোক্৷ 15 এই কারণেই রোমে তোমাদের কাছে সুসমাচার প্রচার করবার জন্য আমি এত আগ্রহী৷ 16 সুসমাচারের জন্য আমি গর্ববোধ করি৷ সুসমাচারই হল সেই শক্তি, য়ে শক্তির দ্বারা ঈশ্বর তাঁর বিশ্বাসীদের উদ্ধার করেন, প্রথমে ইহুদীদের পরে অইহুদীদের৷ 17 ঈশ্বর কি করে মানুষকে নির্দোষ বলে গ্রহণ করেন, তা এই সুসমাচারের মধ্য দিয়েই দেখানো হয়েছে৷ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিশ্বাস দ্বারাই মানুষ ঈশ্বরের সামনে নির্দোষ বলে গন্য হয়৷ শাস্ত্র য়েমন বলে, ‘বিশ্বাসের দ্বারা য়ে ব্যক্তি ঈশ্বরের সামনে ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়েছে সে অনন্ত জীবনের অধিকারী হবে৷’ 18 মানুষ নিজের অধর্ম দিয়ে ঈশ্বরের সত্যকে চেপে রাখে, তাই মানুষের কৃত সকল মন্দ এবং অন্যান্য কাজের জন্য স্বর্গ থেকে মানুষের উপর ঈশ্বরের ক্রোধ প্রকাশ পায়৷ ঈশ্বর সম্পর্কে যা জানা য়েতে পারে তা পরিষ্কারভাবে তারা জেনেছে৷ 19 তাছাড়া মানুষের পক্ষে ঈশ্বরকে যতখানি জানা সন্ভব, তা তো তিনি পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছেন৷ 20 ঈশ্বর সম্পর্কে এমন এমন বিষয় আছে যা মানুষ চোখে দেখতে পায় না, য়েমন তাঁর অনন্ত পরাক্রম ও সেই সমস্ত বিষয়, যার কারণে তিনি ঈশ্বর৷ জগত্ সৃষ্টির শুরু থেকে ঈশ্বরের নানা কাজে সে সব প্রকাশিত হয়েছে৷ ঈশ্বরের সৃষ্ট বস্তুর মধ্যে ঐসব পরিষ্কারভাবেই বোঝা যাচ্ছে৷ তাই মানুষ য়ে মন্দ কাজ করছে তার জন্য উত্তর দেবার পথ তার নেই৷ 21 লোকেরা ঈশ্বরকে জানত, কিন্তু তারা ঈশ্বরের গৌরব গান করে নি এবং তাঁকে ধন্যবাদও দেয় নি৷ লোকদের চিন্তাধারা অসার হয়ে গেছে এবং তাদের নির্বোধ মন অন্ধকারে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে৷ 22 তারা নিজেদের বিজ্ঞ বলে পরিচয় দিলেও তারা মূর্খ৷ 23 তারা চিরজীবি ঈশ্বরের গৌরব করার পরিবর্তে, নশ্বর মানুষ, পাখি, চতুষ্পদের ও সরীসৃপের মূর্ত্তিগুলির উপাসনা করে সেই গৌরব তাদের দিয়েছে৷ 24 তারা ঈশ্বরকে প্রত্যাখ্যান করেছে বলে ঈশ্বর তাদের খুশি মতো পাপের পথে চলতে দিলেন এবং তাদের অন্তরের কামনা বাসনা অনুসারে মন্দ কাজ করতে ছেড়ে দিলেন৷ ফলে তারা তাদের দেহকে পরস্পরের সঙ্গে অসঙ্গত সংসর্গে ব্যবহার করে য়ৌনপাপে পূর্ণ হয়েছে৷ 25 ঈশ্বরের সত্যকে ফেলে তারা মিথ্যা গ্রহণ করেছে; আর সৃষ্টিকর্তাকে ছেড়ে দিয়ে তারা তাঁর সৃষ্ট বস্তুকে উপাসনা করেছে৷ চিরকাল ঈশ্বরের প্রশংসা করা উচিত৷ আমেন৷ 26 লোকেরা ঐসব মন্দ কাজে লিপ্ত ছিল বলে ঈশ্বর তাদের ছেড়ে দিলেন ও তাদের লজ্জাজনক অভিলাষের পথে চলতে দিলেন৷ নারীরা পুরুষের সঙ্গে স্বাভাবিক সংসর্গ ত্যাগ করে নিজেদের মধ্যে য়ৌন সংসর্গে লিপ্ত হয়েছে৷ 27 ঠিক একইভাবে পুরুষরাও স্ত্রীদের সঙ্গে স্বাভাবিক সংসর্গ ছেড়ে দিয়ে অপর পুরুষের জন্য লালাযিত হয়ে লজ্জাকর কাজ করেছে; আর এই পাপ কাজের শাস্তি তারা তাদের শরীরেই পেয়েছে৷ 28 তারা ঈশ্বরের সম্বন্ধে সত্য জ্ঞান থাকা নিতান্ত গুরুত্বপুর্ণ বলে মনে করে নি৷ তাই ঈশ্বর তাদের ছেড়ে দিয়েছেন যাতে তারা নিজেদের অসার চিন্তায় ডুবে থাকে এবং য়েসব কাজ তাদের করা উচিত নয় তা করে৷ 29 সেই লোকদের জীবন সব রকমের পাপ, মন্দ, স্বার্থপরতা ও হিংসায় ভরা৷ তাদের জীবন দ্বেষ, হত্যা, বিবাদ, মিথ্যা ছল ও দুর্বুদ্ধিতে পূর্ণ৷ 30 তারা ঈশ্বর ঘৃণাকারী, দুর্বিনীত, উদ্ধত, আত্মশ্লাঘী, মন্দ বিষয়ের উত্পাদক, পিতামাতার অনাজ্ঞাবহ৷ 31 তারা নির্বোধ, প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারী, স্নেহরহিত ও নির্দয়৷ 32 তারা ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থা জানে৷ তারা জানে য়ে বিধি-ব্যবস্থা বলে, যাঁরা এমন আচরণ করে তারা মৃত্যুর য়োগ্য৷ কিন্তু তা জেনেও তারা সেই সব মন্দ কাজ করে চলে৷ তাদের ধারণা, যাঁরা ঐসব মন্দ কাজ করে তারা সবাই ঠিকই করেছে৷
Romans 2:1 যদি মনে কর য়ে তুমি ঐ লোকদের বিচার করতে পার, তাহলে ভুল করছ, কারণ তুমিও দোষী৷ তুমি অপরের বিচার কর; কিন্তু তুমিও সেই একইরকম মন্দ কাজ কর৷ কাজেই তুমি যখন অন্যের বিচার কর তখন নিজেকেই দোষী সাব্যস্ত কর৷ 2 যাঁরা মন্দ কাজ করে ঈশ্বর তাদের বিচার করেন; আর তাঁর বিচার ন্যায়সম্মত৷ 3 তুমি তাদের বিচার করে থাক; কিন্তু তুমি নিজেও তাদের মত সেই সব মন্দ কাজ কর৷ তাই এ কথা তুমি নিশ্চয়ই বুঝতে পারছ য়ে ঈশ্বর তোমার বিচার করবেন৷ তুমি তার বিচার এড়াতে পারবে না৷ 4 ঈশ্বর তোমার প্রতি দয়া করেছেন ও সহিষ্ণু হয়েছেন৷ ঈশ্বর অপেক্ষা করছেন য়েন তোমার পরিবর্তন হয়; কিন্তু তুমি তাঁর দয়াকে তুচ্ছ জ্ঞান করছ৷ তুমি হয়তো বুঝতে পারছ না য়ে তোমাদের প্রতি ঈশ্বরের এত দয়ার উদ্দেশ্য হল যাতে তোমরা পাপ থেকে মন-ফিরাও৷ 5 কিন্তু তুমি কঠিনমনা লোক ও অবাধ্য৷ তুমি পরিবর্তিত হতে চাও না, তাই তুমিই তোমার দণ্ডকে ঘোরতর করে তুলছ৷ ঈশ্বরের ক্রোধ প্রকাশের দিনে তুমি সেই দণ্ড পাবে, য়ে দিন লোকে ঈশ্বরের ন্যায়বিচার দেখতে পাবে৷ 6 ঈশ্বর প্রত্যেক মানুষকে তার কার্য় অনুসারে ফল দেবেন৷ 7 যাঁরা অবিরাম তাদের সত্ক্রিয়া দ্বারা মহিমা, সম্মান এবং অমরত্বের অন্বেষণ করে, ঈশ্বর তাদের অনন্ত জীবনের অধিকারী করবেন৷ 8 কিন্তু যাঁরা স্বার্থপর, সত্যের অবজ্ঞাকারী এবং মন্দ পথেই চলে, ঈশ্বর তাদের উপর তাঁর ক্রোধ ও শান্তি ঢেলে দেবেন৷ 9 যাঁরা মন্দ কাজ করে তাদের প্রত্যেকের জীবনে ঈশ্বরের কাছ থেকে ক্লেশ ও পীড়া আসবে৷ প্রথমে ইহুদীদের ও পরে অইহুদীদের উপরে৷ 10 কিন্তু যাঁরা সত্কাজ করে তাদের তিনি মহিমা, সম্মান ও শান্তি দেবেন, প্রথমে ইহুদীদের ও পরে অইহুদীদের৷ 11 ঈশ্বর সকল মানুষকে একইভাবে বিচার করেন৷ 12 যাঁরা বিধি-ব্যবস্থা জানে আর যাঁরা তা কখনই শোনে নি, পাপ করলে তারা সকলে একই পর্য়ায়ে পড়ে৷ বিধি-ব্যবস্থা না জেনে যত লোক পাপ করেছে, তারা সকলেই বিধি-ব্যবস্থা ছাড়াই বিনষ্ট হবে৷ একইভাবে যাদের কাছে বিধি-ব্যবস্থা আছে তবু পাপ করে, তাদের বিধি-ব্যবস্থা দ্বারাই বিচার হবে৷ 13 বিধি-ব্যবস্থার কথা শোনার দ্বারা ঈশ্বরের সামনে ধার্মিক প্রতিপন্ন হওয়া যায় না বরং বিধি-ব্যবস্থা যা বলে তা সর্বদা পালন করলেই ঈশ্বরের সামনে ধার্মিক হওয়া যায়৷ 14 অইহুদীরা কোন বিধি-ব্যবস্থা পায় নি, অথচ তারা যখন স্বভাবতঃ বিধি-ব্যবস্থা অনুযাযী কাজ করে তখন তারা নিজেরাই নিজেদের বিধি-ব্যবস্থা৷ যদিও তাদের অধিকারে কোন বিধি-ব্যবস্থা নেই তবুও এটাই সত্য৷ 15 তারা দেখায় য়ে, বিধি-ব্যবস্থার নির্দেশ কোনটা ভাল কোনটা মন্দ, তা তারা তাদের হৃদয় দিয়েই জানে৷ তাদের বিবেকও এ ব্যাপারে সাক্ষ্য দেয়৷ অনেক সময় তাদের চিন্তাধারাই ব্যক্ত করে য়ে তারা অন্যায় কাজ করছে আর তাতে তারা দোষী হয়৷ কোন কোন সময় তাদের চিন্তাধারা ব্যক্ত করে য়ে তারা ঠিকই করছে, আর তাই তারা দোষী হয় না৷ 16 এসব তখনই ঘটবে যখন ঈশ্বর, যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে মানুষের সকল গুপ্ত বিষয়ের বিচার করবেন৷ য়ে সুসমাচার আমি লোকদের কাছে প্রচার করি তা এই কথাই বলছে৷ 17 তোমার অবস্থা কেমন? তুমি নিজেকে ইহুদী বলে পরিচয় দাও এবং বিধি-ব্যবস্থার উপর নির্ভর কর ও গর্ব কর য়ে তুমি ঈশ্বরের কাছাকাছি রয়েছ৷ 18 তুমি জান য়ে ঈশ্বর তোমার কাছ থেকে কোন্ কাজ আশা করেন; আর কোন্টা গুরুত্বপূর্ণ তাও তুমি জান, কারণ তুমি বিধি-ব্যবস্থা শিক্ষা করেছ৷ 19 যাঁরা ঠিক পথ চেনে না তুমি মনে কর এমন লোকদের তুমি একজন পথ প্রদর্শক৷ তুমি মনে কর যাঁরা অন্ধকারে আছে তুমি তাদের কাছে জ্যোতিস্বরূপ৷ 20 তুমি মনে কর য়ে, যাদের মৌলিক শিক্ষার প্রযোজন তুমি তাদের শিক্ষক হতে পার৷ তোমার কাছে বিধি-ব্যবস্থা আছে তাই তুমি মনে কর য়ে তুমি সবই জান ও সব সত্য তোমার কাছেই রয়েছে৷ 21 তুমি অপরকে শিক্ষা দিয়ে থাক; কিন্তু তুমি কি নিজেকেও শিক্ষা দাও? চুরি করো না বলে তুমি অপরকে শিক্ষা দাও৷ কিন্তু তুমি নিজে চুরি কর৷ 22 তুমি বল লোকে য়েন য়ৌন পাপে লিপ্ত না হয়; কিন্তু তুমি নিজে সেই পাপে পাপী৷ তুমি প্রতিমা ঘৃণা কর; কিন্তু মন্দির থেকে চুরি কর৷ 23 তুমি ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থা নিয়ে গর্ব কর আবার সেই একই বিধি-ব্যবস্থা লঙঘন করে ঈশ্বরেরই অবমাননা কর৷ 24 শাস্ত্রে য়েমন লেখা আছে: ‘ইহুদীরা, তোমাদের জন্যই অইহুদীরা ঈশ্বরের নিন্দা করে৷’ 25 সুন্নতের মূল্য আছে যদি তুমি বিধি-ব্যবস্থা মান; কিন্তু যদি বিধি-ব্যবস্থা লঙঘন কর তাহলে তা সুন্নত না হওয়ার সমান৷ 26 অইহুদীরা সুন্নত করায় না; কিন্তু সুন্নত ছাড়াই যদি তারা বিধি-ব্যবস্থার নির্দেশ মেনে চলে তাহলে কি তারা সুন্নতের মতই হবে না? 27 ইহুদীরা, তোমাদের লিখিত বিধি-ব্যবস্থা ও সুন্নত প্রথা আছে; কিন্তু তোমরা বিধি-ব্যবস্থা লঙঘন কর৷ তাই যাদের দৈহিকভাবে সুন্নত হয়নি অথচ বিধি-ব্যবস্থা মেনে চলে, তারা দেখিয়ে দেবে য়ে তোমরা ইহুদীরা দোষী৷ 28 বাহ্যিকভাবে ইহুদী হলেই প্রকৃত ইহুদী হওয়া যায় না, এবং পূর্ণ অর্থে বাহ্যিক সুন্নত প্রকৃত সুন্নত নয়৷ 29 য়ে অন্তরে ইহুদী সেই প্রকৃত ইহুদী৷ প্রকৃত সুন্নত সম্পন্ন হয় অন্তরে; বিধি-ব্যবস্থায় লিখিত অক্ষরের মাধ্যমে তা হয় না কিন্তু অন্তরে আত্মা দ্বারা সাধিত হয়৷ আত্মার দ্বারা য়ে ব্যক্তির হৃদয়ের সুন্নত হয় সে মানুষের প্রশংসা নয়, ঈশ্বরের প্রশংসা পায়৷
Romans 3:1 তাহলে ইহুদীদের এমন কি সুবিধা আছে যা অন্য লোকদের নেই? সুন্নতেরই বা মূল্য কি? 2 হ্যাঁ, সব দিক দিয়েই ইহুদীদের অনেক সুবিধা আছে৷ তাদের মধ্যে থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এই; ঈশ্বর তাঁর শিক্ষা প্রথমে ইহুদীদেরই দিয়েছিলেন৷ 3 একথা ঠিক য়ে কিছু কিছু ইহুদী ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বস্ত ছিল না, কিন্তু তাতে কি? তারা অবিশ্বস্ত হয়েছে বলে কি ঈশ্বরও অবিশ্বস্ত হবেন? 4 না, নিশ্চয়ই নয়! সব মানুষ মিথ্যাবাদী হলেও, ঈশ্বর সবসময়ই সত্য৷ শাস্ত্রে য়েমন বলে:‘তুমি তোমার বাক্যেই ন্যায়পরায়ণ প্রতিপন্ন হবে আর বিচারের সময় তোমার জয় হবেই৷’গীতসংহিতা 51:4 5 আমরা যখন অন্যায় করি তখন আরো স্পষ্টভাবে জানা যায় য়ে ঈশ্বর ন্যায়পরায়ণ৷ তবে আমরা কি বলব য়ে ঈশ্বর যখন আমাদের শাস্তি দেন তখন অন্যায় করেন? কারো কারো মনে য়েমন চিন্তা থাকে আমি সেই রকম বলছি৷ 6 ঈশ্বর যদি ন্যায়পরায়ণ না হতেন, তবে জগতের বিচার করা তাঁর দ্বারা সন্ভব হত না৷ 7 কেউ আবার বলতে পারেন, ‘যদি আমার মিথ্যার মধ্য দিয়ে ঈশ্বরের মহিমা প্রকাশ পায় তবে পাপী হিসেবে আমার বিচার কেন হয়?’ 8 তাহলে একথা দাঁড়ায় য়ে, ‘এস আমরা মন্দ কিছু করি যাতে তার থেকে ভাল কিছু পাওয়া যায়৷’ অনেকে আমাদের সমালোচনা করে বলে য়ে আমরা নাকি এমনি শিক্ষা দিই৷ যাঁরা এমন কথা বলে তারা ভুল করছে এবং তারা বিচারে দোষী সাব্যস্ত হবেই৷ 9 তাহলে কি আমরা ইহুদীরা অন্যদের থেকে ভাল? না কখনই না, কারণ আমরা এর আগেই বলেছি য়ে ইহুদী বা অইহুদী সকলেই সমান৷ তারা সকলেই পাপের শক্তির অধীন৷ 10 শাস্ত্রে য়েমন বলে:‘এমন কেউ নেই য়ে ধার্মিক; এমনকি একজনও নেই৷ 11 এমন কেউ নেই য়ে বোঝে৷ এমন কেউ নেই য়ে ঈশ্বরকে পাবার চেষ্টা করে৷ 12 সকলেই ঈশ্বর হতে দূরে সরে গেছে, সকলেই অপদার্থ, কেউই ভাল কাজ করে না, একজনও না!’গীতসংহিতা 14:1-3 13 ‘তাদের মুখ এক উন্মুক্ত কবর; জিভ দিয়ে তারা ছলনার কথা বলে৷’ গীতসংহিতা 5:9‘তাদের বাক্য়ে সাপের বিষ ঢালা৷’গীতসংহিতা 140:3 14 ‘সবসময়ই তাদের মুখে শুধু অভিশাপ ও কটু কথা৷’গীতসংহিতা 10:7 15 ‘রক্ত ঝরানোর কাজে তারা ব্যস্ত; 16 তাদের চরণ য়ে পথেই যায়, সে পথেই রেখে যায় বিনাশ ও বিষাদ৷ 17 শান্তির পথ তারা কখনও চেনে নি৷’যিশাইয় 59:7-8 18 ‘ঈশ্বরের জন্যে তাদের শ্রদ্ধা নেই৷’গীতসংহিতা 36:1 19 তাহলে আমরা দেখতে পাচ্ছি য়ে বিধি-ব্যবস্থা যা কিছু বলে তা বিধি-ব্যবস্থার অধীন লোকদেরই বলে; তাই মানুষের আর অজুহাত দেখাবার কিছু নেই, তাদের মুখ বন্ধ৷ সমস্ত জগত, ইহুদী কি অইহুদী, ঈশ্বরের সামনে দোষী৷ 20 কারণ বিধি-ব্যবস্থা পালন করলেই য়ে ঈশ্বরের সামনে ধার্মিক প্রতিপন্ন হওয়া যায় তা নয়, বিধি-ব্যবস্থা কেবল পাপকে চিহ্নিত করে৷ 21 কিন্তু এখন বিধি-ব্যবস্থা ছাড়াই ঈশ্বর লোকদের তাঁর সম্মুখে ধার্মিক প্রতিপন্ন করার য়ে কাজ করেছেন তা প্রমাণিত হয়েছে৷ বিধি-ব্যবস্থা ও ভাববাদীরা এই নতুন পথের কথাই বলে গেছেন৷ 22 যীশু খ্রীষ্টের ওপর বিশ্বাস দ্বারাই মানুষ ঈশ্বরের সামনে ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়৷ যাঁরাই খ্রীষ্টে বিশ্বাস স্থাপন করে তাদের সবার জন্যই এই কাজ ঈশ্বর করেন, কারণ তাদের মধ্যে কোন প্রভেদ নেই৷ 23 সকলেই পাপ করেছে এবং ঈশ্বরের মহিমা থেকে বঞ্চিত হয়েছে৷ 24 কিন্তু তারা ঈশ্বরের অনুগ্রহে বিনামূল্যে যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে পাপ থেকে মুক্তিলাভ করে ঈশ্বরের কাছে ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়েছে৷ 25 ঈশ্বর যীশুকে উত্সর্গীকৃত বলিরূপে আমাদের কাছে দিলেন য়েন যাঁরা তাঁকে বিশ্বাস করে, বিশ্বাসের মাধ্যমেই তাদের পাপ সকল ক্ষমা হয়৷ ঈশ্বর এই কাজের মাধ্যমে দেখান য়ে তিনি সর্বদাই যা ন্যায় তাই করেন৷ অতীতেও তিনি সহিষ্ণুতা দেখিয়েছিলেন এবং লোকদের পাপ অনুযাযী শাস্তি দেন নি; 26 তাঁর পুত্র যীশুকে দান করে আজও তিনি দেখান য়ে তিনি ন্যায়বান৷ ঈশ্বর এই কাজ করেছেন যাতে তিনি বিচারে ন্যায়পরায়ণ থাকেন ও য়ে কেউ যীশুতে বিশ্বাস করে সেও ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়৷ 27 সেজন্য গর্ব করার মত আমাদের কিছুই রইল না, কারণ বিধি-ব্যবস্থা পালনের দ্বারা নয়, বিশ্বাসের ব্যবস্থা দ্বারা গর্ব করার পথ রুদ্ধ হল৷ 28 সুতরাং আমরা বিশ্বাস করি মানুষ বিধি-ব্যবস্থা পালনের জন্য যা করে তার দ্বারা নয়, কিন্তু বিশ্বাসেই সে ঈশ্বরের সাক্ষাতে ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়৷ 29 ঈশ্বর কেবল ইহুদীদের ঈশ্বর নন, তিনি অইহুদীদেরও ঈশ্বর৷ 30 ঈশ্বর এক এবং একই উপায়ে সকলকে উদ্ধার করেন৷ তিনি ইহুদীদের বিশ্বাসের মাধ্যমে ধার্মিক প্রতিপন্ন করেন৷ আবার তিনি অইহুদীদের তাদের বিশ্বাসের মাধ্যমে ধার্মিক প্রতিপন্ন করেন৷ 31 তবে বিশ্বাসের পথে চলে কি আমরা বিধি-ব্যবস্থাকে বাতিল করে দিচ্ছি? কখনই না৷ বরং বিশ্বাসের পথে চলে আমরা বিধি-ব্যবস্থার যথার্থ উদ্দেশ্য তুলে ধরি৷
Romans 4:1 তাহলে আমাদের পার্থিব পিতৃপুরুষ অব্রাহামসম্বন্ধে আমরা কি বলব? বিশ্বাস সম্পর্কে তিনি কি শিখেছিলেন? 2 যদি নিজের কাজের জন্য তিনি ধার্মিক প্রতিপন্ন হতেন, তবে গর্ব করার মতো তার কিছু থাকত; কিন্তু ঈশ্বরের সাক্ষাতে তিনি গর্ব করতে পারেন নি৷ 3 শাস্ত্রএ ব্যাপারে বলে, ‘অব্রাহাম ঈশ্বরে বিশ্বাস করলেন; আর সেই বিশ্বাসের দ্বারাই তিনি ধার্মিক প্রতিপন্ন হলেন৷’ 4 য়ে লোক কাজ করে তার মজুরি তো নিছক দান বলে নয় কিন্তু তার ন্যায় পাওনা বলে গন্য হয়৷ 5 কিন্তু য়ে মানুষ কাজ করার বদলে ঈশ্বরের ওপর বিশ্বাস করে সেক্ষেত্রে তার বিশ্বাসই তাকে ধার্মিক প্রতিপন্ন করে৷ 6 দায়ুদদও সেই একইভাবে বলেছেন ধন্য সেই ব্যক্তি যাকে ঈশ্বর তার কাজের দ্বারা নয় বরং তার বিশ্বাসের দরুন ধার্মিক প্রতিপন্ন করেন৷ 7 ‘ধন্য তারা, যাদের অন্যায় ক্ষমা করা হয়েছে, যাদের পাপ ঢেকে রাখা হয়েছে৷ 8 ধন্য সেই ব্যক্তি, প্রভু যার পাপ গন্য করেন না৷’ গীতসংহিতা 32:1-2 9 এখন এই সৌভাগ্য কি শুধু যাঁরা সুন্নত হয়েছে তাদের জন্য? অসুন্নতদের জন্যে কি নয়? কারণ আমরা বলি, ‘বিশ্বাস দ্বারাই অব্রাহাম ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়েছিলেন৷’ 10 কিন্তু অব্রাহামের কোন অবস্থায়, তাঁর সুন্নত হবার আগে, না পরে? আসলে অসুন্নত অবস্থায়ই তিনি ধার্মিক প্রতিপন্ন হন৷ 11 অসুন্নত অবস্থায় তিনি বিশ্বাসের দ্বারা ধার্মিক প্রতিপন্ন হন এবং তার চিহ্ন হিসাবে তিনি সুন্নত হয়েছিলেন৷ তাই অসুন্নত হলেও যাঁরা বিশ্বাস করে, অব্রাহাম তাদেরও পিতা; তারাও ঈশ্বরের সাক্ষাতে ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়৷ 12 যাঁরা সুন্নত হয়েছে অব্রাহাম তাদেরও পিতা৷ তাদের সুন্নত হওয়ার সুবাদে য়ে তারা অব্রাহামের সন্তান হয়েছে তা নয়৷ কিন্তু সুন্নত হবার পূর্বে অব্রাহামের য়ে বিশ্বাস ছিল, ঐ লোকেরা যদি অব্রাহামের সেই বিশ্বাসের পথ অনুসরণ করে থাকে তবেই তারা অব্রাহামের সন্তান৷ 13 জগতের উত্তরাধিকারী হবার য়ে প্রতিজ্ঞা ঈশ্বর অব্রাহাম ও তার বংশধরদের কাছে করেছিলেন, তা বিধি-ব্যবস্থার মাধ্যমে আসেনি কিন্তু বিশ্বাসের দ্বারা য়ে ধার্মিকতা লাভ হয় তার মধ্য দিয়েই সেই প্রতিজ্ঞা করা হয়েছিল৷ 14 কারণ যদি বিধি-ব্যবস্থায় নির্ভর কেউ জগতের উত্তরাধিকারী হয় তবে বিশ্বাসের কোন অর্থ হয় না এবং সেক্ষেত্রে প্রতিজ্ঞাও মূল্যহীন৷ 15 কারণ বিধি-ব্যবস্থা মেনে চলা না হলে তা শুধুই ঈশ্বরের ক্রোধ নিয়ে আসে৷ বিধি-ব্যবস্থা য়েখানে নেই, সেখানে তার লঙঘন নেই৷ 16 তাই ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতির পূর্ণতা বিশ্বাসের ফলেই লাভ হয়, য়েন তা অনুগ্রহের দান হিসাবে গ্রহণ করা হয়৷ এইভাবে অব্রাহামের সব বংশধরদের জন্য সেই প্রতিজ্ঞা দৃঢ়ভাবে রয়েছে৷ যাদের বিধি-ব্যবস্থা দেওয়া হয়েছে কেবল তাদের জন্যই সেই প্রতিজ্ঞা রয়েছে, তা নয়, কিন্তু তাদের জন্যেও সেই প্রতিজ্ঞা রয়েছে, যাদের অব্রাহামের মতো বিশ্বাস রয়েছে৷ এই প্রতিশ্রুতি তাদেরই জন্য যাঁরা অব্রাহামের মত বিশ্বাসে চলে৷ অব্রাহাম আমাদের সকলেরই পিতা৷ 17 শাস্ত্রে লেখা আছে, ‘আমি তোমাকে বহু জাতির পিতা করলাম৷’ঈশ্বরের দৃষ্টিতে অব্রাহাম আমাদের পিতা৷ তিনি সেই ঈশ্বরে বিশ্বাস করতেন, যিনি মৃতকে জীবন দেন ও যার অস্তিত্ব নেই তাকে অস্তিত্বে আনেন৷ 18 অব্রাহামের সন্তান হবার কোন আশা ছিল না; কিন্তু অব্রাহাম ঈশ্বরের ওপরে বিশ্বাসে স্থির ছিলেন৷ আশা না থাকলেও আশা করে যাচ্ছিলেন; আর এই জন্যই তিনি বহুজাতির পিতা হতে পেরেছিলেন৷ ঠিক ঈশ্বর য়েমন বলেছিলেন, ‘তোমার বংশধররা আকাশের তারার মত অসংখ্য হবে৷’ 19 অব্রাহামের বয়স তখন একশ বছর, কাজেই সন্তান লাভের জন্য তাঁর দৈহিক ক্ষমতা শেষ হয়ে গিয়েছিল৷ তাঁর স্ত্রী সারার সন্তান ধারণ করার ক্ষমতা ছিল না৷ অব্রাহাম এসব কথা চিন্তা করেছিলেন, কিন্তু ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাসে তিনি দুর্বল হয়ে পড়েন নি৷ 20 ঈশ্বর য়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তার পূর্ণতার বিষয়ে অব্রাহামের কোন সন্দেহ ছিল না৷ অব্রাহাম অবিশ্বাস করলেন না বরং তিনি বিশ্বাসে বলবান হয়ে উঠলেন এবং ঈশ্বরের প্রশংসা করলেন৷ 21 ঈশ্বর য়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা য়ে তিনি সফল করতে পারবেন, সেই সম্বন্ধে অব্রাহাম সুনিশ্চিত ছিলেন৷ 22 আর তাই, ‘এই বিশ্বাস তাকে ঈশ্বরের সম্মুখে ধার্মিক প্রতিপন্ন করেছিল৷’ 23 শাস্ত্রে এই কথা শুধু য়ে তাঁর জন্যই লেখা হয়েছিল তা নয়, 24 ঐ কথাগুলি আমাদের জন্যও লেখা হয়েছে৷ আমাদের বিশ্বাসকেও ঈশ্বর আমাদের পক্ষে ধার্মিকতা হিসাবে প্রতিপন্ন করলেন৷ কারণ যিনি প্রভু যীশুকে মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত করেছেন, সেই ঈশ্বরে আমরা বিশ্বাস করি৷ 25 আমাদের পাপের জন্য সেই যীশুকে মৃত্যুর হাতে সমর্পণ করা হল এবং আমাদের ঈশ্বরের সাক্ষাতে ধার্মিক প্রতিপন্ন করার জন্য যীশু মৃতদের মধ্য থেকে জীবিত হয়ে উঠলেন৷
Romans 5:1 বিশ্বাসের জন্য আমরা ঈশ্বরের সামনে ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়েছি বলে, প্রভু যীশু খ্রীষ্টের মধ্য দিয়ে ঈশ্বরের সঙ্গে আমাদের শান্তি চুক্তি হয়েছে৷ 2 খ্রীষ্টের জন্যই আমরা আমাদের বিশ্বাসের দ্বারা ঈশ্বরের অনুগ্রহে প্রবেশ করেছি এবং দাঁড়িয়ে আছি৷ আমরা আনন্দ করি য়ে এই প্রত্যাশা নিয়ে আমরা একদিন ঈশ্বরের মহিমার অংশীদার হব৷ 3 এমন কি সমস্ত দুঃখ কষ্টের মধ্যে আমরা আনন্দ করি, কারণ আমরা জানি য়ে এইসব দুঃখ কষ্ট আমাদের ধৈর্য্যের পথে এগিয়ে নিয়ে যায়৷ 4 ধৈর্য্য আমাদের স্বভাবকে খাঁটি করে তোলে এবং এই খাঁটি স্বভাবের ফলে জীবনে আশার উত্পত্তি হয়৷ 5 এই প্রত্যাশা কখনই আমাদের নিরাশ করে না, কারণ পবিত্র আত্মার মাধ্যমে ঈশ্বরের ভালবাসা আমাদের অন্তরে ঢেলে দেওয়া হয়েছে৷ সেই পবিত্র আত্মাকে আমরা ঈশ্বরের দানরূপে পেয়েছি৷ 6 আমরা যখন শক্তিহীন ছিলাম তখন খ্রীষ্ট আমাদের জন্য প্রাণ দিলেন, উপযুক্ত সময়ে খ্রীষ্ট আমাদের মত দুষ্ট লোকদের জন্য প্রাণ দিলেন৷ 7 কোন সত্ লোকের জন্য কেউ নিজের প্রাণ দেয় না বললেই চলে৷ যিনি অন্য়ের উপকার করেছেন এমন লোকের জন্য হয়তো বা কেউ সাহস করে প্রাণ দিলেও দিতে পারে৷ 8 কিন্তু আমরা যখন পাপী ছিলাম খ্রীষ্ট তখনও আমাদের জন্য প্রাণ দিলেন; আর এইভাবে ঈশ্বর দেখালেন য়ে তিনি আমাদের ভালবাসেন৷ 9 ঈশ্বর খ্রীষ্টের রক্তের মাধ্যমে আমাদের ধার্মিক প্রতিপন্ন করেছেন; তবে এই সত্যটি আরও কত সুনিশ্চিত য়ে খ্রীষ্টের মাধ্যমে আমরা ঈশ্বরের ক্রোধ থেকে রক্ষা পাব৷ 10 আমরা যখন তাঁর শত্রু ছিলাম তখন যদি ঈশ্বর তাঁর পুত্রের মৃত্যুর মাধ্যমে তাঁর সঙ্গে আমাদের মিলন করিয়ে নিলেন, তাহলে মিলনের পরে এটা আরও কত নিশ্চিত য়ে আমরা এখন তাঁর পুত্রের জীবনের মাধ্যমে উদ্ধার পাব৷ 11 শুধু য়ে উদ্ধার পাব তা নয়, এখন আমরা ঈশ্বরে আনন্দ করি৷ আমরা আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে সেই আনন্দ পেয়েছি, য়াঁর মাধ্যমে আমরা এখন ঈশ্বরের মিত্রে পরিণত হয়েছি৷ 12 একজনের মধ্য দিয়ে য়েমন পৃথিবীতে পাপ এসেছিল, তেমনি পাপের সাথে এসেছে মৃত্যু৷ সকল মানুষ পাপ করেছে আর পাপ করার জন্যই সকলের কাছে মৃত্যু এল৷ 13 মোশির বিধি-ব্যবস্থা আসার আগে জগতে পাপ ছিল, অবশ্য তখন বিধি-ব্যবস্থা ছিল না বলে ঈশ্বর লোকদের পাপ গন্য করতেন না; 14 কিন্তু আদমের সময় থেকে মোশির সময় পর্যন্ত মৃত্যু সমানে রাজত্ব করছিল৷ ঈশ্বরের আদেশ অমান্য করার দরুন আদম পাপ করেছিলেন৷ কিন্তু যাঁরা আদমকে দেওয়া ঐসব আদেশ লঙঘন করে পাপ করে নি, মৃত্যু তাদের ওপরেও রাজত্ব করছিল৷আসলে যিনি আসছিলেন, আদম ছিলেন তাঁর প্রতিরূপ৷ 15 কিন্তু আদমের অপরাধ য়েরকম ঈশ্বরের অনুগ্রহ দান সেই রকমের নয়, কারণ ঐ একটি লোকের পাপের দরুন অনেকের মৃত্যু হল, সেইরকমভাবেই একজন ব্যক্তি যীশু খ্রীষ্টের মধ্য দিয়ে বহুলোক ঈশ্বরের অনুগ্রহদানে জীবন লাভ করল৷ 16 আর ঈশ্বরের অনুগ্রহদানের মধ্য দিয়ে যা এল তা আদমের একটি পাপের ফল থেকে ভিন্ন, কারণ একটি পাপের জন্য নেমে এসেছিল বিচার ও পরে দণ্ডাজ্ঞা; কিন্তু বহুলোকের পাপের পর এল ঈশ্বরের বিনামূল্যের দান৷ 17 একজন পাপ করল, আর সেই এক ব্যক্তির অপরাধের জন্য সকলের ওপর মৃত্যু রাজত্ব করল; কিন্তু এখন যাঁরা ঈশ্বরের কাছ থেকে অনুগ্রহ লাভ করে ও ধার্মিক গন্য হবার অধিকার দান হিসেবে পায়, তারা নিশ্চয়ই সেই এক ব্যক্তি অর্থাত্ যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে জীবনের পরিপূর্ণতা নিয়ে রাজত্ব করবে৷ 18 তাই আদমের একটি পাপ য়েমন সকলের উপরে মৃত্যুদণ্ড নিয়ে এল, সেই একইভাবে খ্রীষ্টের একটি ন্যায় কাজের মধ্য দিয়ে তাঁর দ্বারা সকলেই ঈশ্বরের সাক্ষাতে ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়েছে আর তার ফলে তারা প্রকৃত জীবনের অধিকারী হয়েছে৷ 19 সুতরাং য়েমন একজনের অবাধ্যতার ফলে সব লোক পাপী বলে গন্য হল, সেইরকমভাবে সেই একজনের বাধ্যতার ফলে অনেকে ধার্মিক প্রতিপন্ন হবে৷ 20 বিধি-ব্যবস্থা দেওয়া হয়েছিল যাতে পাপ বৃদ্ধি পায়৷ কিন্তু য়েখানে পাপের বাহুল্য হল সেখানে ঈশ্বরের অনুগ্রহ আরো উপচে পড়ল৷ 21 এক সময় য়েমন পাপ মৃত্যুর মাধ্যমে আমাদের ওপর রাজত্ব করেছিল, সেইরকম ঈশ্বর লোকদের ওপর তাঁর মহা অনুগ্রহ দান করলেন যাতে সেই অনুগ্রহ তাদের ঈশ্বরের সাক্ষাতে ধার্মিক প্রতিপন্ন করে তোলে, আর এরই ফলে আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের দ্বারা মানুষ অনন্ত জীবন লাভ করে৷
Romans 6:1 তাই তোমরা কি মনে কর য়ে আমরা পাপ করতেই থাকব য়েন ঈশ্বরের অনুগ্রহ বৃদ্ধি পায়? 2 মোটেই না৷ আমাদের পুরানো পাপ জীবনের যখন মৃত্যু হয়েছে তখন আমরা কিভাবে আবার পাপেই জীবন যাপন করতে পারি? 3 তোমরা কি ভুলে গেলে য়ে আমরা বাপ্তাইজ হওয়ার সময় খ্রীষ্ট যীশুর দেহের অংশতে পরিণত হয়েছিলাম? 4 বাপ্তাইজ হওয়াতে আমরা খ্রীষ্টের সঙ্গে তাঁর মৃত্যুতে সমাহিত হয়েছিলাম, যাতে খ্রীষ্ট য়েমন ঈশ্বরের মহাশক্তিতে মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত হয়েছিলেন, তেমনি আমরাও তাঁর সঙ্গে পুনরুত্থিত হয়ে এক নতুন জীবনের পথে চলতে পারি৷ 5 খ্রীষ্ট মৃত্যুভোগ করলেন আর আমরা তাঁর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে তাঁর সঙ্গে যখন যুক্ত হলাম, সুতরাং খ্রীষ্ট মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত হয়েছেন বলে, আমরাও তাঁর পুনরুত্থানের অংশীদার হব৷ 6 আমরা জানি য়ে আমাদের পুরানো জীবন খ্রীষ্টের সঙ্গে ক্রুশবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে, যাতে আমাদের পুরানো পাপের জীবন ধ্বংস হয়৷ তাহলে আমরা আর পাপের দাস হয়ে থাকব না, 7 কারণ যার মৃত্যু হয়েছে সে পাপের শক্তি থেকেও মুক্তি পেয়েছে৷ 8 যদি আমরা খ্রীষ্টের সঙ্গে মরে থাকি, আমরা জানি য়ে আমরা তাঁর সঙ্গেই জীবিত হব৷ 9 আমরা জানি য়ে খ্রীষ্ট মৃতদের মধ্য থেকে জীবিত হয়ে উঠেছেন, তিনি আর মরতে পারেন না৷ এখন তাঁর ওপর মৃত্যুর কোন কর্ত্তৃত্ব নেই৷ 10 খ্রীষ্ট মৃত্যুভোগ করেছিলেন পাপের শক্তিকে চিরতরে পরাভূত করার জন্যে৷ এখন তাঁর য়ে জীবন, সেই জীবন তিনি ঈশ্বরের জন্য যাপন করেন৷ 11 ঠিক সেইভাবে তোমরাও নিজেদের পাপ সম্বন্ধীয় বিষয়ে মৃত মনে কর এবং নিজেদের দেখ য়ে তোমরা খ্রীষ্ট যীশুতে সংযুক্ত থেকে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে জীবিত আছ৷ 12 তাই তোমাদের ইহজীবনে পাপকে কর্ত্তৃত্ব করতে দিও না৷ যদি দাও তবে তোমাদের দেহের মন্দ অভিলাষের অধীনেই তোমরা চলতে থাকবে৷ 13 তাই তোমাদের দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অধর্মের হাতিয়ার করে পাপের কাছে তুলে দিও না৷ মন্দ কাজে তোমাদের দেহকে ব্যবহার করো না৷ ঈশ্বরের হাতে নিজেদের তুলে দাও৷ সেই লোকদের মতো হও যাঁরা পাপের সম্বন্ধে মরেছিলেন এবং মৃতদের মধ্য হতে পুনরুত্থিত হয়ে এখন ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে জীবিত আছেন৷ নিজেদের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ ধার্মিকতার হাতিয়ার করে ঈশ্বরের সেবায় নিবেদন কর৷ 14 পাপ আর তোমাদের ওপর প্রভুত্ব করবে না, কারণ তোমাদের জীবন আর বিধি-ব্যবস্থার অধীন নয় কিন্তু ঈশ্বরের অনুগ্রহের অধীন৷ 15 তাহলে আমরা কি করব? আমরা বিধি-ব্যবস্থার অধীন নই; ঈশ্বরের অনুগ্রহের অধীন,তাই আমরা কি পাপ করতেই থাকব? না৷ 16 তোমরা নিশ্চয় জান য়ে তোমরা যখন কারো অনুগত হবে বলে তারই হাতে নিজেদের দাসরূপে তুলে দাও, তখন যার অনুগত হলে, তোমরা তারই দাস৷ তোমরা পাপের দাস হতে পার বা ঈশ্বরের অনুগত হতে পার৷ পাপ আত্মিক মৃত্যু আনে; কিন্তু ঈশ্বরের অনুগত থাকলে তোমরা ধার্মিক প্রতিপন্ন হবে৷ 17 অতীতে তোমরা পাপের দাস ছিলে, পাপ তোমাদের উপর কর্ত্তৃত্ব করত৷ কিন্তু ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই কারণ তোমাদের কাছে য়ে শিক্ষা সমর্পিত হয়েছিল তা পূর্ণরূপে পালন করছ৷ 18 তোমরা পাপের দাসত্ব থেকে মুক্তি পেতে এখন ধার্মিকতারই দাস হয়েছ৷ 19 তোমাদের বুঝতে কষ্ট হয় বলে এই বিষয়টি দৈনন্দিন জীবনের এই দৃষ্টান্ত দ্বারা বোঝাতে চাইছি৷ তোমরা তোমাদের শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পাপের দাসত্বে ও মন্দের মধ্যে সঁপে দিয়েছিলে, ফলে তোমরা কেবল মন্দ উদ্দেশ্যেই জীবন যাপন করতে৷ সেইভাবে এখন তোমরা তোমাদের শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ ধার্মিকতার দাসরূপে সঁপে দাও; তাহলে তোমরা ঈশ্বরে সমর্পিত পবিত্র জীবন যাপন করবে৷ 20 অতীতে তোমরা যখন পাপের দাস ছিলে, তখন ধার্মিকতার সম্বন্ধে স্বাধীন ছিলে৷ 21 সেই মন্দ কাজ থেকে কি ফসল তুলেছ? তার জন্য এখন তোমরা লজ্জা বোধ করছ, কারণ এই সব কাজের ফল মৃত্যু৷ 22 কিন্তু এখন তোমরা সেই পাপ থেকে মুক্ত হয়ে ঈশ্বরের দাস হয়েছ; তাই এখন য়ে ফসল তোমরা পাচ্ছ তা পবিত্রতার জন্য এবং তার পরিণাম অনন্ত জীবন৷ 23 কারণ পাপ য়ে মজুরি দেয়, সেই মজুরি হল মৃত্যু৷ কিন্তু ঈশ্বর অনুগ্রহ করে যা দান করেন সেই দান হল আমাদের প্রভু খ্রীষ্ট যীশুতে অনন্ত জীবন৷
Romans 7:1 ভাই ও বোনেরা, তোমরা যখন মোশির বিধি ব্যবস্থা জান, তখন তোমরা নিশ্চয়ই জান য়ে মানুষ যতদিন বেঁচে থাকে ততদিনই সে বিধি-ব্যবস্থার অধীনে থাকে৷ 2 তোমাদের কাছে একটা দৃষ্টান্ত দিই৷ একজন স্ত্রীলোক নিয়ম মত , যতদিন তার স্বামী বেঁচে থাকে ততদিন তার প্রতি দায়বদ্ধ থাকে৷ স্বামী মারা গেলে সে বিয়ের বিধি-ব্যবস্থা থেকে মুক্তি পায়৷ 3 কিন্তু সেই স্ত্রীলোক, তার স্বামী বেঁচে থাকতে যদি অপর পুরুষকে বিবাহ করে, সে ব্যভিচার করে৷ তার স্বামী যদি মারা যায়, তাহলে সে বিয়ের বিধি-ব্যবস্থা থেকে মুক্ত হয়ে যায়; আর তখন সে যদি অন্য পুরুষকে বিয়ে করে তাহলে সে ব্যভিচারের দোষে দোষী হয় না৷ 4 অতএব আমার ভাই ও বোনেরা, খ্রীষ্টের দেহের মাধ্যমে সেইভাবেই তোমাদের পুরানো সত্ত্বার মৃত্যু হয়েছে ও তোমরা বিধি-ব্যবস্থার বন্ধন থেকে মুক্ত হয়েছ৷ মৃত্যু থেকে যিনি বেঁচে উঠেছেন এখন তোমরা তাঁরই হয়েছ৷ আমরা খ্রীষ্টের হয়েছি, য়েন ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে ফল উত্পন্ন করতে পারি৷ 5 অতীতে আমরা মানবিক পাপ প্রকৃতি অনুসারে জীবনযাপন করছিলাম৷ বিধি-ব্যবস্থা পাপের য়েসব প্রবৃত্তি জাগিয়ে তোলে সেগুলি আমাদের দেহে প্রবল ছিল৷ যার ফলে আমরা যা করতাম তা আমাদের কাছে আত্মিক মৃত্যু নিয়ে আসত৷ 6 অতীতে বিধি-ব্যবস্থা আমাদের বন্দী করে রেখেছিল, কিন্তু এখন আমাদের পুরানো সত্ত্বার মৃত্যু হয়েছে এবং আমরা বিধি-ব্যবস্থার বন্ধন থেকে মুক্ত হয়েছি৷ এখন আমরা নুতন ধারায় ঈশ্বরের সেবা করি, পুরানো লিখিত বিধি-ব্যবস্থার নির্দেশ অনুসারে নয় কিন্তু পবিত্র আত্মার নির্দেশে৷ 7 তোমরা হয়তো ভাবছ য়ে আমি বলছি বিধি-ব্যবস্থা এবং পাপ একই বস্তু; না নিশ্চয়ই নয়৷ একমাত্র বিধি-ব্যবস্থার দ্বারাই পাপ কি তা আমি বুঝতে পারলাম৷ আমি কখনই বুঝতে পারতাম না য়ে লোভ করা অন্যায়; যদি বিধি-ব্যবস্থায় লেখা না থাকত, ‘অপরের জিনিসে লোভ করা পাপ৷’ 8 কারণ পাপ ঐ নিষেধাজ্ঞার সুয়োগ নিয়ে আমার অন্তরে তখন লোভের আকর্ষণ জাগিয়ে তুলতে শুরু করল৷ তাই ঐ আদেশের সুয়োগ নিয়ে আমার জীবনে পাপ প্রবেশ করল৷ ব্যবস্থা না থাকলে পাপের কোন শক্তি থাকে না৷ 9 এক সময় আমি বিধি-ব্যবস্থা ছাড়াই বেঁচে ছিলাম; কিন্তু যখন বিধি-ব্যবস্থা এল তখন আমার মধ্যে পাপ বাস করতে শুরু করল৷ 10 তখন আমি আত্মিকভাবে মৃত্যু বরণ করলাম৷ য়ে আদেশের ফলে জীবন পাবার কথা সেই আদেশ আমাকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিল৷ 11 ঈশ্বরের সেই আজ্ঞা দিয়েই পাপ আমাকে ঠকাবার সুয়োগ পেল এবং তাই দিয়েই আমাকে আত্মিকভাবে মেরে ফেলল৷ 12 তাহলে দেখা যাচ্ছে য়ে বিধি-ব্যবস্থা পবিত্র আর তাঁর আজ্ঞাও পবিত্র, ন্যায় ও উত্তম৷ 13 তাহলে যা উত্তম, তাই কি আমার কাছে মৃত্যু নিয়ে এল? নিশ্চয়ই না৷ উত্তম বিষয়ের মধ্য দিয়ে পাপ আমার কাছে মৃত্যু নিয়ে এল৷ যাতে পাপকে পাপ বলে চেনা যায়৷ আজ্ঞাকে ব্যবহার করে পাপকে অতীব পাপপূর্ণ বলে চেনা গেল৷ 14 আমরা জানি য়ে বিধি-ব্যবস্থা আত্মিক; কিন্তু আমি আত্মিক নই৷ ক্রীতদাসের মতো পাপ আমার ওপর কর্ত্তৃত্ব করে৷ 15 কি করছি তাই আমি জানি না কারণ আমি যা করতে চাই তা করি না বরং য়ে মন্দ জিনিস আমি ঘৃণা করি তাই করি৷ 16 আর আমি য়ে সব মন্দ কাজ করতে চাই না যদি তাই করি তাহলে বুঝতে হবে বিধি-ব্যবস্থা য়ে উত্তম তা আমি মেনে নিয়েছি৷ 17 আমি য়েসব মন্দ কাজ করছি তা আমি নিজে য়ে করছি তা নয়, করছে সেই পাপ যা আমার মধ্যে বাসা বেঁধে আছে৷ 18 হ্যাঁ, আমি জানি যা ভাল তা আমার মধ্যে বাস করে না, অর্থাত্ আমার অনাত্মিক মানবিক প্রকৃতির মধ্যে তা নেই৷ কারণ যা ভাল তা করবার ইচ্ছা আমার মধ্যে আছে কিন্তু তা আমি করতে পারি না৷ 19 কারণ যা ভাল আমি করতে চাই তা করি না; কিন্তু য়ে অন্যায় আমি করতে চাই না কাজে তাই তো করি৷ 20 যা আমি করতে চাই না যদি আমি তাই করি তাহলে য়ে পাপ আমার মধ্যে আছে তা এই মন্দ কাজ করায়৷ 21 কাজেই আমার মধ্যে এই নিয়মটি আমি লক্ষ্য করছি য়ে, যখন আমি সত্কার্য় করতে ইচ্ছা করি তখনও মন্দ আমার মধ্যে থাকে৷ 22 আমার অন্তর ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থা ভালবাসে৷ 23 কিন্তু আমি দেখছি য়ে আমার দেহের মধ্যে আর একটা বিধি-ব্যবস্থা কাজ করছে, যা সেই বিধি-ব্যবস্থার সঙ্গে লড়াই করে চলে, যা আমার মন গ্রহণ করেছে৷ আমার দেহে য়ে বিধি-ব্যবস্থা কাজ করছে তা হল পাপের বিধি-ব্যবস্থা এবং এর হাতে আমি বন্দী৷ 24 কি হতভাগ্য মানুষ আমি! কে আমাকে এই মরদেহ থেকে উদ্ধার করবে? 25 ঈশ্বর আমাকে উদ্ধার করবেন! আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে পরিত্রাণের দ্বারা ঈশ্বর আমাকে উদ্ধার করবেন৷এইজন্য আমি তাঁকে ধন্যবাদ জানাই৷ তাহলে দেখছি য়ে আমি মনে ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থার দাস; কিন্তু আমার পাপ প্রকৃতির দিক থেকে আমি পাপ ব্যবস্থারই দাস৷ 26
Romans 8:1 তাই যাঁরা খ্রীষ্ট যীশুতে আছে তারা বিচারে দোষী সাব্যস্ত হবে না৷ 2 কারণ খ্রীষ্ট যীশুতে আত্মার য়ে বিধি-ব্যবস্থা জীবন আনে, তা আমাকে মুক্ত করেছে সেই পাপের ব্যবস্থা থেকে যা মৃত্যুর কারণ হয়৷ 3 মোশির বিধি-ব্যবস্থা যা পারে নি তা ঈশ্বর সাধন করলেন; কারণ আমাদের স্বভাবজাত দুর্বলতার জন্য মোশির বিধি-ব্যবস্থা শক্তিহীন ছিল৷ তাই তিনি তাঁর নিজের পুত্রকে আমাদের মত মনুষ্যদেহে পাঠালেন, য়েন তিনি মানুষের পাপের জন্য বলি হন৷ ঈশ্বর এইভাবে সেই মানবীয় দেহে পাপকে মণ্ডিত করলেন৷ 4 য়েন দেহের বশে নয় কিন্তু আত্মার বশে চলার দরুন আমাদের মধ্যে বিধি-ব্যবস্থার দাবী দাওয়াগুলি পূর্ণ হয়৷ 5 যাঁরা পাপ প্রবৃত্তির বশে চলে তাদের মন পাপ চিন্তাই করে৷ কিন্তু যাঁরা পবিত্র আত্মার বশে চলে, তারা পবিত্র আত্মা যা চান সেই অনুসারে চিন্তা করে৷ 6 আমাদের চিন্তা যদি দেহ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় তবে তার ফল হয় মৃত্যু৷ কিন্তু যদি পবিত্র আত্মা দ্বারা পরিচালিত হয় তবে তার ফল হয় জীবন ও শান্তি৷ 7 তাই য়ে মন মানুষের পাপ স্বভাব দ্বারা পরিচালিত সে ঈশ্বর বিরোধী কারণ সে নিজেকে ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থার অধীনে রাখে না৷ বাস্তবে সেই ব্যক্তি ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থা পালনে অসমর্থ৷ 8 যাঁরা তাদের দৈহিক প্রবৃত্তির দ্বারা চালিত হয় তারা ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করতে পারে না৷ 9 কিন্তু তোমরা তোমাদের দৈহিক প্রবৃত্তির দ্বারা চালিত নও বরং আত্মা দ্বারা চালিত; অবশ্য যদি ঈশ্বরের আত্মা তোমাদের অন্তরে বিরাজ করেন তাহলে তুমি আত্মার দ্বারা চালিত হবে; কিন্তু যার মধ্যে খ্রীষ্টের আত্মা নেই সে খ্রীষ্টের নয়৷ 10 পাপের ফলে তোমাদের দেহ মৃত্যুর অধীন, কিন্তু খ্রীষ্ট যদি তোমাদের অন্তরে থাকেন, তবে পবিত্র আত্মা তোমাদের জীবন দান করেন, কারণ খ্রীষ্ট তোমাদের ঈশ্বরের সাক্ষাতে ধার্মিক প্রতিপন্ন করেছেন৷ 11 ঈশ্বর যীশুকে মৃতদের মধ্য থেকে জীবিত করেছেন, আর ঈশ্বরের আত্মা যদি তোমাদের মধ্যে বাস করেন তবে তিনি তোমাদের মরণশীল দেহকে জীবনময় করবেন৷ ঈশ্বরই যীশুকে মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত করেছেন, তাঁর য়ে আত্মা তোমাদের মধ্যে আছে তিনি সেই আত্মার দ্বারা তোমাদের দেহকে সঞ্জীবিত করবেন৷ 12 তাই ভাই ও বোনেরা, আমরা ঋণী কিন্তু সেই ঋণ আমাদের দৈহিক প্রবৃত্তির কাছে নয়, আমরা অবশ্যই আর দৈহিক প্রবৃত্তির দ্বারা জীবন পরিচালিত করব না৷ 13 কারণ যদি তোমরা দৈহিক প্রবৃত্তির দ্বারা চল তবে মরবে৷ কিন্তু পবিত্র আত্মার সাহায্যে যদি দেহের মন্দ কাজগুলি থেকে বিরত থাক তবে জীবন পাবে৷ 14 ঈশ্বরের প্রকৃত সন্তানরা ঈশ্বরের আত্মার দ্বারা পরিচালিত হয়৷ 15 তোমরা য়ে আত্মাকে পেয়েছ তা তো দাসত্বের আত্মা নয় য়ে পুনরায় ভয়ে থাকবে, বরং তোমরা য়ে আত্মাকে পেয়েছ তার দ্বারা পুত্রত্ব পেয়েছ; আর সেই আত্মাতে আমরা ডাকি, ‘আব্বা,’ ‘পিতা৷’ 16 পবিত্র আত্মা নিজেও আমাদের আত্মার সঙ্গে সাক্ষ্য দিয়ে বলছেন য়ে আমরা ঈশ্বরের সন্তান; 17 আর যদি সন্তান হই, তবে আমরা তাঁর উত্তরাধিকারী এবং খ্রীষ্টের সাথে উত্তরাধিকারী৷ যদি অবশ্য খ্রীষ্ট য়েমন দুঃখভোগ করেছিলেন, তেমনি আমরা তাঁর সঙ্গে দুঃখভোগ করি, আর তা করলে আমরা খ্রীষ্টের সঙ্গে মহিমান্বিত হব৷ 18 এখন আমরা দুঃখ ভোগ করছি; কিন্তু আমাদের জন্য য়ে মহিমা প্রকাশিত হবে তার সঙ্গে বর্তমান কালের এই দুঃখভোগ তুলনার য়োগ্যই নয়৷ 19 বিশ্বসৃষ্টি ব্যাকুল প্রতীক্ষায় রয়েছে ঈশ্বর কবে তাঁর পুত্রদের প্রকাশ করবেন৷ সমগ্র বিশ্ব এর জন্য আকুল প্রতীক্ষায় রয়েছে৷ 20 বিশ্ব সৃষ্টিকে তো ব্যর্থতার বন্ধনে বেঁধে রাখা হয়েছে যদিও তা তার নিজের ইচ্ছায় নয় কিন্তু ঈশ্বরের ইচ্ছায়, যিনি সৃষ্টিকে নিয়ন্ত্রিত অবস্থায় রেখেছেন৷ 21 তবুও বিশ্বসৃষ্টির এই আশা রয়েছে য়ে সেও একদিন এই অবক্ষয়ের দাসত্ব থেকে মুক্ত হবে আর ঈশ্বরের সন্তানদের মহিমাময় স্বাধীনতার অংশীদার হবে৷ 22 আমরা জানি য়ে এখন পর্যন্ত ঈশ্বরের সমস্ত সৃষ্টি ব্যথায় আর্তনাদ করছে য়েমন করে নারী সন্তান প্রসবের ব্যথা ভোগ করে৷ 23 কেবল গোটা বিশ্ব নয়, আমরাও যাঁরা পবিত্র আত্মাকে উদ্ধারের জন্য প্রথম ফলরূপে পেয়েছি, আমাদের দেহের মুক্তিলাভের প্রতীক্ষায় অন্তরে আর্তনাদ করছি৷ 24 আমরা উদ্ধার পেয়েছি তাই আমাদের অন্তরে এই প্রত্যাশা রয়েছে৷ প্রত্যাশার বিষয় প্রত্যক্ষ হলে তা প্রত্যাশা নয়৷ যা পাওয়া হয়ে গেছে তার জন্য কে প্রত্যাশা করে? 25 আমরা যা এখনও পাই নি তারই জন্য প্রত্যাশা করছি, ধৈর্য্যের সঙ্গেই তার জন্য প্রতীক্ষা করছি৷ 26 একইভাবে আমাদের দুর্বলতায় পবিত্র আত্মাও আমাদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন, কারণ আমরা কিসের জন্য প্রার্থনা করব জানি না, তাই স্বয়ং পবিত্র আত্মা আমাদের হয়ে অব্যক্ত আর্তস্বরে আবেদন জানিয়ে থাকেন৷ 27 মানুষের অন্তরে কি আছে ঈশ্বর তা দেখতে পান; আর ঈশ্বর পবিত্র আত্মার বাসনা কি তা জানেন; কারণ পবিত্র আত্মা ভক্তদের হয়ে ঈশ্বরের ইচ্ছানুসারে সেই আবেদন করেন৷ 28 আমরা জানি য়ে সব কিছুতে তিনি তাদের মঙ্গলের জন্য কাজ করেন যাঁরা ঈশ্বরকে ভালবাসে, যাঁরা তাঁর সংকল্প অনুসারে আহুত৷ 29 জগত্ সৃষ্টির পূর্বে ঈশ্বর যাদের জানতেন, তাদের তিনি তাঁর পুত্রের মত করবেন বলে মনস্থ করলেন৷ এইভাবে যীশু হবেন অনেক ভাইদের মধ্যে প্রথমজাত৷ 30 আগে থেকে তিনি যাদের বেছে রেখেছিলেন তাদের আহ্বান করলেন; যাদের তিনি আহ্বান করলেন তাদের ধার্মিক গন্য করলেন এবং যাদের তিনি ধার্মিক গন্য করলেন তাদের মহিমান্বিত করলেন৷ 31 এই সব দেখে আমরা কি বলব? ঈশ্বর যখন আমাদেরই পক্ষে তখন আমাদের বিপক্ষে কে যাবে? 32 যিনি তাঁর নিজ পুত্রকেই নিষ্কৃতি দেন নি, এমন কি আমাদের সকলের জন্যে তাঁকে মৃত্যুর হাতে সঁপে দিলেন, তখন তিনি তাঁর পুত্রদানের সঙ্গে সবকিছুই কি আমাদের দান করবেন না? 33 ঈশ্বর নিজের বলে যাদের মনোনীত করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ কে আনবে? ঈশ্বরই তাদের ধার্মিক করেছেন৷ 34 খ্রীষ্ট যীশু যিনি মারা গেলেন ও মৃতদের মধ্য থেকে জীবিত হয়ে উঠলেন, তিনি ঈশ্বরের ডানদিকে বসে আছেন আর আমাদের জন্যে ঈশ্বরের কাছে মিনতি করছেন৷ 35 খ্রীষ্টের ভালবাসা থেকে কোন কিছুই কি আমাদের বিচ্ছিন্ন করতে পারে? দুঃখ, দুর্দশা, ক্লেশ, সঙ্কট, তাড়না, দুর্ভিক্ষ, নগ্নতা বা প্রাণসংশয় কি তরবারির মৃত্যু? 36 য়েমন শাস্ত্রে লেখা আছে:‘তোমার জন্য আমরা সমস্ত দিন মৃত্যুবরণ করছি৷ লোকচক্ষে আমরা বলির মেষের মতো৷’ গীতসংহিতা 44:22 37 কিন্তু ঈশ্বর, যিনি আমাদের ভালবাসেন তাঁর দ্বারা আমরা ঐ সবকিছুতে পূর্ণ বিজয়লাভ করি৷ 38 কারণ আমি নিশ্চিতভাবে জানি য়ে কোন কিছুই প্রভু যীশু খ্রীষ্টের নিহিত ঐশ্বরিক ভালবাসা থেকে আমাদের বিচ্ছিন্ন করতে পারবে না, মৃত্যু বা জীবন, কোন স্বর্গদূত বা প্রভুত্বকারী আত্মা, বর্তমান বা ভবিষ্যতের কোন কিছু, উর্দ্ধের বা নিম্নের কোন প্রভাব কিংবা সৃষ্ট কোন কিছুই আমাদের সেই ভালবাসা থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারবে না৷ 39
Romans 9:1 আমি খ্রীষ্টেতে আছি এবং সত্যি বলছি৷ পবিত্র আত্মা দ্বারা পরিচালিত আমার বিবেকও বলছে য়ে আমি মিথ্যা বলছি না৷ 2 আমি ইহুদী সমাজের জন্য অন্তরে সবসময় গভীর দুঃখ ও বেদনা অনুভব করছি৷ 3 তারা আমার ভাই ও বোন, আমার স্বজাতি৷ তাদের যদি সাহায্য করতে পারতাম! এমন কি আমার এমন ইচ্ছাও জাগে য়ে তাদের বদলে আমি য়েন অভিশপ্ত এবং খ্রীষ্ট থেকে বিচ্ছিন্ন হই৷ 4 তারা ইস্রায়েল বংশেরই মানুষ৷ ঈশ্বর তাদের পুত্র হবার অধিকার দিয়েছেন, নিজের মহিমা দেখিয়েছেন, ধর্ম নিয়ম দিয়েছেন৷ ঈশ্বর তাদেরই মোশির দেওয়া বিধি-ব্যবস্থা, সঠিক উপাসনা পদ্ধতি এবং তাঁর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন৷ 5 ঐ লোকেরাই আমাদের মহান পিতৃপুরুষদের বংশধর এবং খ্রীষ্ট এই জাতির মধ্য দিয়েই পার্থিব জগতে এসেছিলেন৷ ঈশ্বর, যিনি সবার ওপর কর্ত্তৃত্ব করেন, যুগে যুগে তিনি প্রশংসিত হোন্! আমেন! 6 আমি একথা বলছি না য়ে ঈশ্বরের য়ে প্রতিশ্রুতি তাদের জন্য ছিল তা তিনি পূর্ণ করেন নি৷ কিন্তু ইস্রায়েলের সমস্ত মানুষই সত্যিকার ইস্রায়েলের লোক নয়৷ 7 এমনও নয় য়ে অব্রাহামের বংশের বলেই তারা সত্যিকারের সন্তান; কিন্তু ঈশ্বর বলেছিলেন, ‘কেবল ইসহাক্ই তোমার বৈধ পুত্র হবে৷’ 8 এর অর্থ হোল এই য়ে দৈহিকভাবে জন্মপ্রাপ্ত অব্রাহামের সন্তানরা সকলেই ঈশ্বরের সন্তান নয়৷ অব্রাহামের প্রকৃত বংশধর তারাই যাঁরা অব্রাহামের কাছে ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতি অনুসারে জন্মলাভ করেছে৷ 9 তিনি অব্রাহামকে এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন: ‘নিরুপিত সময়ে আমি পুনর্বার আসব তখন সারার এক পুত্র হবে৷’ 10 শুধু তাই নয়, রিবিকাও একজন মানুষের কাছ থেকেই সন্তান পেয়েছিলেন, তিনি আমাদের পূর্বপুরুষ ইসহাক৷ 11 সেই সন্তান দুটির জন্ম হবার পূর্বে ঈশ্বর রিবিকাকে বলেছিলেন: ‘তোমার সন্তানদের মধ্যে জ্যেষ্ঠ কনিষ্ঠের দাস হবে৷’তাদের জন্মের পূর্বেই ঈশ্বর এই কথা জানিয়েছিলেন কারণ ঈশ্বরের সংকল্প অনুসারে তারা মনোনীত হয়েছিল৷ সেই সন্তান মনোনীত হল তার কৃত কোন কর্মের জন্য নয় বরং এই জন্যে য়ে ঈশ্বর তাকেই আব্বান করেছিলেন৷ 12 13 আর শাস্ত্রে য়েমন বলে: ‘আমি যাকোবকে ভালোবেসেছি, কিন্তু এষৌকে ঘৃণা করেছি৷’ 14 তাহলে আমরা কি বলব? ঈশ্বরে কি অন্যায় আছে? আমরা তা বলতে পারি না৷ 15 ঈশ্বর, মোশিকে বলেছিলেন, ‘আমি যাকে দয়া করতে চাই, তাকেই দয়া করব৷ যাকে করুণা করতে চাই, তাকেই করুণা করব৷’ 16 তাই ঈশ্বর তাকেই মনোনীত করেন যাকে করুণা করবেন বলে ঠিক করেছেন৷ তাই মানুষের চেষ্টা বা তার ইচ্ছার ওপর তাঁর মনোনয়ন নির্ভর করে না৷ 17 শাস্ত্রে আছে ঈশ্বর ফরৌণকে উদ্দেশ্য করে বললেন, ‘তুমি আমার জন্য এই কাজ করবে, এই জন্যই আমি তোমাকে রাজা করেছি, য়েন তোমার মধ্য দিয়ে আমি আমার ক্ষমতা প্রকাশ করতে পারি ও সারা জগতে আমার নাম ঘোষিত হয়৷’ 18 সেজন্য ঈশ্বর যাকে দয়া করতে চান, তাকেই দয়া করেন আর যার অন্তর ঈশ্বর কঠোর করতে চান, তার অন্তর কঠোর করে তোলেন৷ 19 তাহলে তোমরা হয়তো আমাকে বলতে পার: ‘তবে ঈশ্বর কেন পাপের জন্য মানুষদের দোষী করেন? কারণ ঈশ্বরের ইচ্ছা কে প্রতিরোধ করতে পারে? 20 তা সত্য, কিন্তু তুমি কে? ঈশ্বরকে প্রশ্ন করার কোন অধিকার তোমার নেই৷ মাটির পাত্র কি নির্মাণকর্তাকে প্রশ্ন করতে পারে? মাটির পাত্র কখনও নির্মাতাকে বলে না, ‘তুমি কেন আমাকে এমন করে গড়লে?’ 21 কাদামাটির ওপরে কুমোরের কি কোন অধিকার নেই, সে কি একই মাটির তাল থেকে তার ইচ্ছামত দুরকম পাত্র তৈরী করতে পারে না? একটি বিশেষ ব্যবহারের জন্য আর অন্যটি সাধারণ ব্যবহারের জন্য? 22 ঈশ্বর যদিও চেয়েছিলেন, য়ে লোকেদের বিনাশের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে তাদের ওপর তিনি তাঁর ক্রোধ প্রকাশ করবেন ও তাঁর ক্ষমতার স্পষ্ট প্রমাণ দেবেন, তবু ঈশ্বর তাঁর ক্রোধের পাত্রদের প্রতি অসীম ধৈর্য্য দেখিয়েছেন৷ 23 যাতে সেই দয়ার পাত্রদের, যাদের তিনি মহিমা প্রাপ্তির য়োগ্য করে তৈরী করেছিলেন, তাদের কাছে তাঁর মহিমার ঐশ্বর্য সম্বন্ধে পরিচয় করাতে পারেন৷ 24 আমরাই সেই লোক, ঈশ্বর যাদের আহ্বান করেছেন৷ ইহুদী বা অইহুদীর মধ্য থেকে ঈশ্বর আমাদের আহ্বান করেছেন৷ 25 এবিষয়ে হোশেয়ের পুস্তকে লেখা আছে:‘যাঁরা আমার লোক নয়, তাদের আমি নিজের লোক বলব, য়ে প্রিয়তমা ছিল না তাকে আমার প্রিয়তমা বলব৷’ হোশেয় 2:23 26 ‘আর য়েখানে ঈশ্বর বলেছিলেন তোমরা আমার লোক নও, সেখানেই তাদের বলা যাবে জীবন্ত ঈশ্বরের সন্তান৷’ হোশেয় 1:10 27 যিশাইয় ইস্রায়েল সম্বন্ধে উচ্চকণ্ঠে বলেছিলেন: ‘যদি ইস্রায়েলীদের সংখ্যা সমুদ্র তীরের বালুকণার মত অগনিত হয়, তবুও তাদের মধ্য থেকে অবশিষ্ট কিছু মানুষ শেষ পর্যন্ত উদ্ধার পাবে৷ 28 বিচারের ব্যাপারে প্রভু এই পৃথিবীতে যা করবেন বলেছেন, তিনি তা পূর্ণ করবেন, শিগ্গিরই তা শেষ করবেন৷’ 29 এই রকম কথা যিশাইয় আগেই বলেছিলেন: ‘সর্বশক্তিমান প্রভু যদি আমাদের জন্য কিছু বংশধর রেখে না দিতেন তবে এতদিনে আমরা সদোমের তুল্য হতাম, আমরা এতদিনে ঘমোরার তুল্য হতাম৷’ 30 তাহলে এসবের অর্থ কি? অর্থ এই, যাঁরা অইহুদী তারা ঈশ্বরের সাক্ষাতে ধার্মিক প্রতিপন্ন হবার কোন চেষ্টা করে নি; তাদেরই ঈশ্বর ধার্মিক প্রতিপন্ন করলেন৷ তাদের বিশ্বাসের জন্য তারা ধার্মিক প্রতিপন্ন হল৷ 31 আর ইস্রায়েলীরা বিধি-ব্যবস্থা পালন করার মধ্য দিয়ে ধার্মিক প্রতিপন্ন হবার চেষ্টা করেও কৃতকার্য় হয় নি৷ 32 কারণ তারা তাদের কৃতকার্য়ের দ্বারা ধার্মিক প্রতিপন্ন হবার চেষ্টা করেছে৷ ধার্মিক প্রতিপন্ন হবার জন্য তারা ঈশ্বরের ওপর বিশ্বাস করে নি, তারা ব্যাঘাতজনক পাথরে ধাক্কা পেয়ে হোঁচট খেয়েছে৷ 33 শাস্ত্রে য়েমন লেখা আছে:‘দেখ, আমি সিযোনে একটি পাথর রাখছি যাতে মানুষ হোঁচট খেয়ে পড়ে যাবে; কিন্তু যাঁরা তাঁর ওপর বিশ্বাস করবে তারা কখনও লজ্জায় পড়বে না৷’যিশাইয় 8:14; 28:16
Romans 10:1 ভাই ও বোনেরা, আমার হৃদয়ের একান্ত কামনা এই, য়েন সমস্ত ইহুদী উদ্ধার পায়৷ ঈশ্বরের কাছে এই আমার কাতর মিনতি৷ 2 আমি ইহুদীদের বিষয়ে একথা বলতে পারি য়ে ঈশ্বরের বিষয়ে তাদের উত্সাহ আছে; কিন্তু এটা তাদের জ্ঞানের ওপর ভিত্তি করে নেই৷ 3 য়ে পথে ঈশ্বর মানুষকে ধার্মিক প্রতিপন্ন করেন তারা সেই পথ জানে না৷ তারা নিজেদের প্রচেষ্টায় ঈশ্বরের সাক্ষাতে ধার্মিক প্রতিপন্ন হতে চায়৷ তাই য়ে পথে ঈশ্বর মানুষকে ধার্মিক প্রতিপন্ন করেন, তা তারা গ্রহণ করে নি৷ 4 খ্রীষ্টের আগমনে বিধি-ব্যবস্থার যুগ শেষ হয়েছে৷ এখন যাঁরা তাঁকে বিশ্বাস করে তারাই ঈশ্বরের সাক্ষাতে ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়৷ 5 বিধি-ব্যবস্থা পালন করে ধার্মিক প্রতিপন্ন হওয়া সম্পর্কে মোশি বলে গেছেন, ‘য়ে ব্যক্তি এইসব বিধি-ব্যবস্থা পালন করবে সে তার মধ্য দিয়েই জীবন পাবে৷’ 6 য়ে ধার্মিকতা ঈশ্বরে বিশ্বাস থেকে জন্মায় সে সম্বন্ধে শাস্ত্রে বলেছে: ‘মনে মনে কখনও বলো না, ‘ওপরে স্বর্গে কে যাবে?’’ এর অর্থ, ‘খ্রীষ্টকে কে পৃথিবীতে নামিয়ে আনবে?’ 7 বা নীচে পাতালে কে যাবে?’’ এর অর্থ, মৃতদের মধ্য থেকে কে খ্রীষ্টকে উর্দ্ধে আনবে?’ 8 এ ব্যাপারে শাস্ত্র বলছে: ‘সেই শিক্ষা তোমার কাছেই তোমার মুখে ও হৃদয়ে আছে৷’সে শিক্ষা হল বিশ্বাসের শিক্ষা যা আমরা লোকদের কাছে বলি৷ 9 তুমি যদি নিজ মুখে যীশুকে প্রভু বলে স্বীকার কর, এবং অন্তরে বিশ্বাস কর য়ে ঈশ্বরই তাঁকে মৃতদের মধ্য থেকে জীবিত করেছেন তাহলে উদ্ধার পাবে৷ 10 কারণ মানুষ অন্তরে বিশ্বাস করে ধার্মিকতা লাভ করার জন্য আর মুখে বিশ্বাসের কথা স্বীকার করে উদ্ধার পাবার জন্য৷ 11 শাস্ত্র এই কথাই বলে যে: ‘য়ে খ্রীষ্টে বিশ্বাস করে সে কখনও লজ্জায় পড়বে না৷’ 12 এক্ষেত্রে ইহুদী ও অইহুদীদের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই, একই প্রভু সকলের প্রভু৷ যত লোক তাঁকে ডাকে সেই সকলের ওপর তিনি প্রচুর আশীর্বাদ ঢেলে দেন৷ 13 হ্যাঁ, শাস্ত্র বলে, ‘য়ে কেউ তাঁকে বিশ্বাস করে ডাকবে সে উদ্ধার পাবে৷’ 14 কিন্তু য়াঁকে তারা বিশ্বাস করে না তাঁকে ডাকবে কি কবে? আর যাঁরা তাঁর কথা শোনেনি তাঁকে বিশ্বাসই বা কি করে করবে? কেউ প্রচার না করলে তারা শুনবেই বা কি করে? 15 যাঁরা প্রচার করতে যাবে তারা প্রেরিত না হলে কি করে প্রচার করবে? হ্যাঁ, শাস্ত্রে কিন্তু লেখা আছে: ‘সুসমাচার নিয়ে যাঁরা আসেন তাদের চরণযুগল কি সুন্দর৷’ 16 কিন্তু ইহুদীদের মধ্যে সকলেই সেই সুসমাচার গ্রহণ করেনি৷ যিশাইয় ঠিকই বলেছেন, ‘প্রভু আমরা যা বলেছি তা ক’জনেই বিশ্বাস করেছে৷’ 17 সুতরাং সুসমাচার শোনার ভেতর দিয়েই বিশ্বাস উত্পন্ন হয় আর কেউ খ্রীষ্টের সুসমাচার শোনালে তখনই লোকেরা সুসমাচার শুনতে পায়৷ 18 তাহলে আমিই জিজ্ঞাসা করি, ‘লোকেরা কি তাঁর সুসমাচার শুনতে পায় নি?’ হ্যাঁ, তারা নিশ্চয়ই শুনেছে এবিষয়ে শাস্ত্র বলছে:‘তাঁদের রব পৃথিবীর কোণে কোণে পৌঁচেছে, তাঁদের বাক্য পৃথিবীর সর্বত্র পৌঁছে গেছে৷’গীতসংহিতা 19:4 19 আবার আমি বলি, ‘ইস্রায়েলীয়রা কি বুঝতে পারে নি?’ হ্যাঁ, তারা বুঝতে পেরেছিল৷ ঈশ্বরের হয়ে প্রথমে মোশি এই কথা বলেছেন:‘যাঁরা জাতি বলেই গন্য নয়, এমন লোকদের মাধ্যমে আমি তোমাদের ঈর্ষান্বিত করব৷ অজ্ঞ জাতির দ্বারা তোমাদের ক্রুদ্ধ করব৷’দ্বিতীয় বিবরণ 32:21 20 এরপর ঈশ্বরের মুখপাত্র হয়ে যিশাইয় যথেষ্ট সাহসের সঙ্গে বললেন:‘যাঁরা আমায় খোঁজে নি তারাই কিন্তু আমাকে পেয়েছে; আর যাঁরা আমাকে চায় নি তাদের কাছেই আমি নিজেকে প্রকাশ করেছি৷’যিশাইয় 65:1 21 কিন্তু ইহুদীদের সম্বন্ধে ঈশ্বর বলেন, ‘সমস্ত দিন ধরে দুহাত বাড়িয়ে আমি তাদের জন্য অপেক্ষা করছি৷ কিন্তু তারা আমার অবাধ্য এবং তারা আমার বিরোধিতা করেই চলেছে৷’
Romans 11:1 তাহলে আমি জিজ্ঞাসা করি, ‘ঈশ্বর কি তাঁর লোকদের দূরে সরিয়ে দিয়েছেন?’ নিশ্চয়ই না, কারণ আমিও অব্রাহামের বংশধর, বিন্যামীন গোষ্ঠীর একজন ইস্রায়েলী৷ 2 পূর্বেই ঈশ্বর যাদের তাঁর নিজের লোক বলে মনোনীত করেছিলেন তাদের তিনি দূরে সরিয়ে দেন নি৷ শাস্ত্রে এলিয় সম্বন্ধে কি বলে তোমরা কি জান না? এলিয় যখন ইস্রায়েলীদের বিরুদ্ধে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছিলেন, 3 তখন তিনি বললেন, ‘প্রভু তারা তোমার ভাববাদীদের হত্যা করেছে, তোমার সমস্ত যজ্ঞবেদী ধ্বংস করেছে৷ আমিই একমাত্র ভাববাদী এখনও জীবিত আছি আর লোকরা আমার প্রাণনাশের চেষ্টা করছে৷’ 4 কিন্তু ঈশ্বর তখন এলিয়কে কি উত্তর দিয়েছিলেন? ঈশ্বর বললেন, ‘এখনও আমার সাত হাজার লোককে বাঁচিয়ে রেখেছি, যাঁরা আমার উপাসনা করে৷ এই সাত হাজার লোক বালের সামনে জানুপাত করে নি৷’ 5 ঠিক সেই ভাবেই এখনও কিছু লোক আছে, ঈশ্বর যাদেরকে নিজ অনুগ্রহে মনোনীত করেছেন৷ 6 ঈশ্বর যদি তাঁর লোকদের অনুগ্রহে মনোনীত করেছেন, তবে তাদের কৃতকর্মের ফলে তারা ঈশ্বরের লোক বলে গন্য হয় নি, কারণ তাই যদি হত তবে ঈশ্বরের অনুগ্রহ আর অনুগ্রহ হত না৷ 7 তবে ব্যাপারটি দাঁড়াল এই: ইস্রায়েলীয়রা ঈশ্বরের সাক্ষাতে ধার্মিক প্রতিপন্ন হতে চাইলেও সফলকাম হয় নি৷ কিন্তু ঈশ্বর যাদের মনোনীত করলেন, তারাই ঈশ্বরের সাক্ষাতে ধার্মিক প্রতিপন্ন হল৷ বাকি ইস্রায়েলীয়রা তাদের অন্তঃকরণ কঠোর করে তুলল ও ঈশ্বরের কথা অমান্য করল৷ 8 শাস্ত্রে তাই লেখা আছে: ‘ঈশ্বর তাদের এক জড়তার আত্মা দিয়েছেন৷’যিশাইয় 29:10‘ঈশ্বর তাদের চক্ষু রুদ্ধ করেছেন, তাই তারা চোখে সত্য দেখতে পায় না৷ ঈশ্বর তাদের কান বন্ধ করে দিয়েছেন, তাই তারা কানে সত্য শুনতে পায় না, এ কথা আজও সত্যি৷’দ্বিতীয় বিবরণ 29:4 9 দাযূদ এ সম্বন্ধে বলেছেন:‘তাদের ভোজ হোক ফাঁদের মতো, জালের মতো যা তাদের ধরে৷ তাদের পতন হোক্ ও তারা দণ্ড ভোগ করুক্৷ 10 তাদের চোখ রুদ্ধ হয়ে যাক্ যাতে তারা দেখতে না পায় আর তারা কষ্টের ভারে সর্বদা নুয়ে থাকুক৷’গীতসংহিতা 69:22-23 11 আমি বলি ইহুদীরা হোঁচট খেয়েছিল৷ সেই হোঁচট খেয়ে তারা কি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল? না৷ বরং তাদের ভুলের জন্যই অইহুদীরা পরিত্রাণ পেয়েছে৷ এটা ইহুদীদের ঈর্ষাতুর করে তোলার জন্য ঘটেছিল৷ 12 ইহুদীদের সেই ভুল, জগতের জন্য মহা আশীর্বাদ নিয়ে এসেছে৷ ইহুদীরা যা হারাল তাদের সেই ক্ষতি অইহুদীদের সমৃদ্ধ করল৷ তবে একথা নিশ্চিত য়ে পর্য়াপ্ত সংখ্য়ক ইহুদীরা যদি ঈশ্বরের দিকে মন দেয় তবে জগত কত না আশীর্বাদ পূর্ণ হবে৷ 13 এখন আমি অইহুদীদের বলছি, আমি অইহুদীদের জন্য একজন প্রেরিত, আর আমি এই কাজ সাধ্যমত করব৷ 14 আমি আশা রাখি য়ে আমার স্বজাতীয় ইহুদীদের এতে অন্তর্জ্বালা হবে আর হয়তো সেইভাবে কিছু লোককে আমি সাহায্য করতে পারব, য়েন তারা উদ্ধার পায়৷ 15 ঈশ্বর ইহুদীদের থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে জগতের অন্য লোকদের মিত্র করে নিলেন৷ তাই ঈশ্বর ইহুদীদেরআবার যখন গ্রহণ করবেন তার ফল কি হতে পারে? সে কি মৃতের জীবন পাওয়ার মত অবস্থা হবে না? 16 ময়দার তালের থেকে তৈরী প্রথম রুটি যদি ঈশ্বরকে নিবেদিত করা হয় তাহলে পুরো তালটাই পবিত্র; আর একটি গাছের শিকড় পবিত্র হলে তার সব শাখাই পবিত্র হবে৷ 17 সেই জলপাই গাছের কয়েকটি শাখা ভেঙ্গে গেলে সেই জায়গায় তোমার মত বুনো জলপাইয়ের এক শাখা, ঐ গাছে কলম করে জুড়ে দেওয়া হয়েছে৷ এখন তুমি আসল জলপাই গাছের বাকী শাখা প্রশাখার সঙ্গে শেকড়ের রস ও জীবনী শক্তি টেনে নিচ্ছ৷ 18 সুতরাং,তুমি সেই ভাঙ্গা শাখাগুলির চেয়ে নিজেকে উন্নত ভেবে গর্ব করো না; কিন্তু যদি কর তাহলে মনে রেখো য়ে শেকড়কে তুমি ধারণ করছ না বরং শেকড়ই তোমাকে ধারণ করে আছে৷ 19 তাহলে তুমি বলতেই পার য়ে তোমাকে কলম লাগাবার জন্যেই শাখাগুলো ভাঙা হয়েছিল৷ 20 হ্যাঁ, ঠিক৷ ঈশ্বরে বিশ্বাস ছিল না বলেই তাদের ভাঙ্গা হয়েছিল, আর তোমার বিশ্বাস ছিল বলেই তুমি সেই গাছের অংশরূপে আছ, এর জন্য গর্ব না করে বরং ভয় কর৷ 21 ঈশ্বর যখন সেই প্রকৃত শাখাগুলিই কেটে ফেলেছিলেন তখন বিশ্বাস না থাকলে তিনি তোমাকেও রেহাই দেবেন না৷ 22 তাহলে ঈশ্বরের দয়ার ভাব ও কঠোরভাব দেখ৷ যাঁরা আর ঈশ্বরের অনুগামী হয় না তাদের তিনি দণ্ড দেন৷ কিন্তু ঈশ্বর তোমার প্রতি দয়াবান হন যদি তুমি তাঁর দয়ায় অবস্থান করতে থাক৷ যদি না থাক তাহলে তোমাকে সেই প্রকৃত গাছ থেকে কেটে ফেলা হবে; 23 আর ইহুদীরা যদি ঈশ্বরের কাছে ফিরে আসে, তাঁকে বিশ্বাস করে তবে ঈশ্বর ইহুদীদের আবার গ্রহণ করবেন৷ তারা য়েখানে ছিল ঈশ্বর তাদের সেখানে আবার জুড়ে দেবেন৷ 24 বুনো জলপাই গাছের শাখা স্বাভাবিকভাবে উত্তম জলপাই গাছে লাগানো হয় না; কিন্তু তোমরা অইহুদীরা বুনো জলপাই গাছের শাখার মত হলেও তোমাদের সকলকে উত্তম জলপাই গাছের সঙ্গে যুক্ত করা হল৷ সুতরাং ইহুদীরা উত্তম জলপাই গাছের শাখা-প্রশাখা বলে তাদের ভেঙ্গে ফেলা হলেও তাদের নিজস্ব উত্তম গাছের সঙ্গে আবার কত সহজেই না যুক্ত করা যাবে৷ 25 ভাই ও বোনেরা, আমি চাই য়ে তোমরা নিগূঢ় সত্য বোঝ যাতে নিজের চোখে নিজেকে জ্ঞানী না মনে কর৷ এই হল সত্য য়ে ইস্রায়েলীয়দের কিছু অংশ শক্তগ্রীব হয়েছে৷ অইহুদীদের সংখ্যা পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত ইহুদীদের সেই মনোভাব বদলাবে না৷ 26 এইভাবে সমগ্র ইস্রায়েলের উদ্ধার হবে৷ শাস্ত্রে লেখা আছে:‘সিযোন থেকে ত্রাণকর্তা আসবেন৷ তিনি যাকোবের বংশ থেকে সব অধর্ম দূর করবেন৷ 27 আর তখন এই লোকদের সব পাপ হরণ করে আমি তাদের সঙ্গে আমার চুক্তি স্থাপন করব৷’যিশাইয় 59:20-21; 27:9 28 সুসমাচার গ্রহণ করতে অস্বীকার করে ইহুদীরা ঈশ্বরের শত্রু হয়েছে৷ তোমরা যাঁরা অইহুদী তোমাদের সাহায্য করতেই এমন হয়েছে; কিন্তু বেছে নেবার দিক থেকে ইহুদীরা এখনও ঈশ্বরের মনোনীত লোক৷ তাদের পিতৃপুরুষদের কাছে ঈশ্বর য়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সেই সুবাদে তিনি তাদের ভালবাসেন৷ 29 ঈশ্বর কাউকে আহ্বান জানিয়ে ও দান করে অনুশোচনা করেন না৷ 30 একসময় তোমরা ঈশ্বরের অবাধ্য ছিলে, কিন্তু এখন ইহুদীদের অবাধ্যতার জন্য তোমরা তাঁর করুণা পেয়েছ৷ 31 ঠিক তেমনই তোমরা করুণা পেয়েছ বলে ইহুদীরা ঈশ্বরের অবাধ্য হয়েছে য়েন ইহুদীরা ঈশ্বরের করুণা পেতে পারে৷ 32 ঈশ্বর তাদের সকলকেই অবাধ্যতায় বন্দী করে রেখেছেন যাতে তিনি সকলের প্রতি দয়া করতে পারেন৷ 33 হ্যাঁ, ঈশ্বর তাঁর করুণায় কতো ধনবান, তাঁর জ্ঞান ও প্রজ্ঞা কতো গভীর৷ তার বিচারের ব্যাখ্যা কেউ করতে পারে না৷ তাঁর পথ কেউ বুঝতে পারে না৷ 34 শাস্ত্রে য়েমন বলে,‘প্রভুর মন কে জেনেছে? কেই বা তাঁর মন্ত্রণাদাতা হয়েছে?’যিশাইয় 40:13 35 ‘আর কে-ই বা প্রথমে ঈশ্বরকে কিছু দান করেছে? এমন কে আছে যার কাছে ঈশ্বর ঋণী?’ইযোব 41:11 36 কারণ ঈশ্বরই সবকিছু নির্মাণ করেছেন; সবকিছু তাঁর মধ্য দিয়েই অস্তিত্বে আছে এবং তাঁর জন্যেই রয়েছে৷ চিরকাল ঈশ্বরের মহিমা অটুট থাকুক! আমেন৷
Romans 12:1 ভাই ও বোনেরা আমার মিনতি এই, ঈশ্বর আমাদের প্রতি দয়া করেছেন বলে তোমাদের জীবন ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে জীবিত বলিরূপে উত্সর্গ কর, তা তাঁর কাছে পবিত্র প্রীতিজনক হোক৷ ঈশ্বরের উপাসনা করার জন্য তোমাদের কাছে এ এক আত্মিক উপায়৷ 2 এই জগতের লোকদের মতো নিজেদের চলতে দিও না, বরং নতুন চিন্তাধারায় নিজেদের পরিবর্তন কর; য়েন বুঝতে পার ঈশ্বর কি চান, কোনটা ভাল,কোনটা তাঁকে খুশী করে ও কোনটা সিদ্ধ৷ 3 ঈশ্বর আমাকে একটি বিশেষ বর দান করেছেন, তাই তোমাদের মধ্যে প্রত্যেককে আমার কিছু বলার আছে৷ নিজের সম্বন্ধে য়েমন ধারণা থাকা উচিত তার থেকে উঁচু ধারণা পোষণ কোরো না; কিন্তু ঈশ্বর যাকে য়ে পরিমাণ বিশ্বাস দিয়েছেন তোমরা সেইমতো নিজেদের সম্বন্ধে ধারণা পোষণ কর৷ 4 আমাদের সকলের দেহ আছে আর সেই দেহে অনেক অঙ্গ প্রত্যঙ্গ আছে, এই অঙ্গ প্রত্যঙ্গগুলি একই কাজ করে না৷ 5 ঠিক তেমনই আমরা অনেকে মিলে খ্রীষ্টেতে দেহ গঠন করি৷ আমরা সেই দেহের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ, একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত৷ 6 আর ঈশ্বরের অনুগ্রহ অনুসারেই আমরা ভিন্ন ভিন্ন বরদান পেয়েছি৷ কেউ যদি ভাববাণী বলার বরদান পেয়ে থাকে তবে সে তার বিশ্বাসের পরিমাণ অনুসারে ভাববাণী বলুক৷ 7 যার সেবা করবার বরদান আছে সে তা সেবা কর্মেই প্রযোগ করুক৷ য়ে শিক্ষক, সে শিক্ষার দ্বারা লোকদের উত্সাহ দিক৷ 8 য়ে উপদেষ্টা, সে উপদেশ দানের কাজ করুক৷ যার অপরকে সাহায্যদানের ক্ষমতা আছে, সে উদারভাবেই সাহায্য করুক৷ কর্ত্তৃত্ব যার হাতে সে সযত্নেই কর্ত্তৃত্ব করুক৷ য়ে দযা করে, সে আনন্দের সঙ্গেই তা করুক৷ 9 তোমার ভালবাসা অকৃত্রিম হোক্৷ যা মন্দ তা ঘৃণা কর আর যা ভাল তাতে আসক্ত থাক৷ 10 ভাই বোনের মধ্যে য়ে পবিত্র ভালোবাসা থাকে সেই ভালোবাসায় তোমরা পরস্পরকে ভালবাস৷ অপর ভাই বোনেদের নিজের থেকেও বেশী সম্মানের য়োগ্য বলে মনে কর৷ 11 প্রভুর কাজে শিথিল হযো না৷ আত্মায় উদ্দীপ্ত হয়েই তোমরা প্রভুর সেবা কর৷ 12 আনন্দ কর, কারণ তোমাদের প্রত্যাশা আছে৷ তোমরা দুঃখকষ্টে সহিষ্ণু হও; নিরন্তর প্রার্থনা কর৷ 13 তোমাদের যা আছে তা অভাবী ঈশ্বরের লোকদের সঙ্গে ভাগ করে নাও৷ তোমাদের গৃহে অতিথিদের স্বাগত জানাও৷ 14 তোমাদের যাঁরা নির্য়াতন করে তাদের জন্য প্রার্থনা করো, য়েন ঈশ্বর তাদের আশীর্বাদ করেন৷ তাদের মঙ্গল কামনা কর, অভিশাপ দিও না৷ 15 তোমরা অপরের সুখে সুখী হও, যাঁরা দুঃখে কাঁদছে তাদের সঙ্গে কাঁদো৷ 16 তোমরা পরস্পর একপ্রাণ হয়ে শান্তিতে থাক, অহঙ্কারী হযো না৷ যাঁরা দীনহীন মানুষ তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চল৷ নিজেকে জ্ঞানী মনে করে গর্ব করো না৷ 17 কেউ অপরাধ করলে অপকার করে প্রতিশোধ নিও না৷ সকলের চোখে যা ভাল তোমরা তা করতেই চেষ্টা কর৷ 18 যতদূর পার সকলের সঙ্গে শান্তিতে থাকার চেষ্টা করে যাও৷ 19 আমার বন্ধুরা, কেউ তোমাদের বিরুদ্ধে অন্যায় করলে তাকে শাস্তি দিতে য়েও না, বরং ঈশ্বরকেই শাস্তি দিতে দাও৷ শাস্ত্রে প্রভু বলছেন, ‘প্রতিশোধ নেওয়া আমার কাজ, প্রতিদান যা দেবার আমিই দেব৷’ 20 কিন্তু তোমরা এই কাজ কর, ‘তোমাদের শত্রুরা ক্ষুধার্ত হলে তাকে খেতে দাও, তোমাদের শত্রু তৃষ্ণার্ত হলে তাকে জল পান করাও৷ এই রকম করলে তোমরা তাকে লজ্জায় ফেলে দেবে৷’আর তা হবে তার মাথায় একরাশি জ্বলন্ত কয়লা রাখার মতো৷ 21 মন্দের কাছে পরাস্ত হযো না, বরং উত্তমের দ্বারা মন্দকে পরাস্ত করো৷
Romans 13:1 প্রত্যেক মানুষের উচিত দেশের শাসকদের অনুগত থাকা, কারণ দেশ শাসনের জন্য ঈশ্বরই তাদের ক্ষমতা দিয়েছেন৷ যাঁরা এমন শাসন কার্য় নিযুক্ত, ঈশ্বরই তাদের সেই কাজের ক্ষমতা দিয়েছেন৷ 2 তাই তো কর্ত্তৃপক্ষের বিরোধিতা য়ে করে, সে ঈশ্বর যা স্থির করেছেন তারই বিরোধিতা করে৷ তেমন বিরোধিতা যাঁরা করে তারা নিজেরাই নিজেদের শাস্তি ডেকে আনবে৷ 3 তোমরা ভাল কাজ করো, শাসকবৃন্দ তোমাদের প্রশংসা করবে৷ ভয় পাবার কারণ থাকে তাদেরই যাঁরা মন্দ কাজ করে; যদি তোমরা কর্ত্তৃপক্ষের কাছ থেকে ভয় পেতে না চাও, তবে যা ভাল তাই কর৷ 4 শাসনকর্তারা আসলে তোমাদের ভালোর জন্য ঈশ্বর নিযোজিত দাস; কিন্তু তোমরা যদি অন্যায় কর তাহলে ভীত হবার কারণ নিশ্চয় থাকে৷ শাস্তি দেবার মতো ক্ষমতা শাসকের ওপর ন্যস্ত আছে, তিনি তো ঈশ্বরের দাস; তাই যাঁরা অন্যায় করে, তাদের তিনি ঈশ্বরের হয়ে শাস্তি দেন৷ 5 তাই তোমরা শাসনকর্তাদের অনুগত থেকো৷ ঈশ্বরের ক্রোধের ভয়েই য়ে কেবল তাদের অধীনতা স্বীকার করবে তা নয়; কিন্তু তোমাদের বিবেক পরিষ্কার রাখার জন্যও করবে৷ 6 এই জন্য পরস্পরকে তোমরা প্রাপ্য় কর দাও, কারণ শাসনকার্য় পরিচালনা করার জন্যই তারা ঈশ্বর দ্বারা নিযুক্ত আছেন; আর সেই কার্য়্য়ে তাঁরা ব্যস্তভাবে সময় ব্যয় করেন৷ 7 তোমাদের কাছে যার যা প্রাপ্য় তাকে তা দিয়ে দাও৷ য়ে কর আদায় করে তাকে কর দাও; যাদের শ্রদ্ধা করা উচিত তাদের শ্রদ্ধা কর; যাদের সম্মান পাওয়া উচিত তাদের সম্মান কর৷ 8 শুধু পরস্পরের প্রতি ভালবাসার ঋণ ছাড়া কারো কাছে ঋণী থেকো না, কারণ যাঁরা প্রতিবেশীকে ভালবাসে, তারাই ঠিকভাবে বিধি-ব্যবস্থা মেনে চলছে৷ 9 আমি একথা বলছি কারণ ঈশ্বরের এই আজ্ঞাগুলি অর্থাত্, ‘ব্যভিচার করবে না, নরহত্যা করবে না, চুরি করবে না, অপরের জিনিস আত্মসাত্ করবে না৷’আর অন্য যা কিছু আদেশ তিনি দিয়েছেন সে সবগুলি সংক্ষেপে এই একটি আদেশের মধ্যেই চলে আসে, ‘নিজের মতো তোমার প্রতিবেশীকে ভালবাসো৷’ 10 ভালবাসা কখনও কারোর ক্ষতি করে না, তাই দেখা যাচ্ছে ভালবাসাতেই বিধি-ব্যবস্থা পালন করা হয়৷ 11 এখন কোন্ সময় তা তো তোমাদের জানাই আছে৷ হ্যাঁ, এখন তো ঘুম থেকে জেগে ওঠার সময়, কারণ যখন আমরা খ্রীষ্টে প্রথম বিশ্বাস করেছিলাম তখন অপেক্ষা এখন পরিত্রাণ আমাদের আরো সন্নিকট৷ 12 ‘দিন’ শুরু হতে আর দেরী নেই৷ ‘রাত’ প্রায় শেষ হল তাই জীবন থেকে অন্ধকারের ক্রিয়াসকল পরিত্যাগ করে এস এখন পরিধান করি আলোকের রণসজ্জা৷ 13 লোকরা দিনের আলোয় য়েমন চলে আসে আমরাও তাদের মত সত্ পথে চলি৷ আমরা য়েন হৈ-হল্লা পূর্ণ ভোজে য়োগ না দিই, মাতলামি না করি, য়ৌন দুরাচার উচ্ছৃঙ্খলতা থেকে দূরে থাকি; বিবাদ, ঈর্ষা ও তর্কের মধ্যে না যাই৷ 14 কিন্তু য়েন নব বেশে প্রভু যীশু খ্রীষ্টকে পরিধান করি ও দৈহিক কামনা বাসনা চরিতার্থ করার চিন্তায় আর মন না দিই৷
Romans 14:1 বিশ্বাসে য়ে দুর্বল, এমন কোন ভাইকে তোমাদের মধ্যে গ্রহণ করতে অস্বীকার করো না৷ তার ভিন্ন ধারণা নিয়ে তার সঙ্গে তর্ক করো না৷ 2 এক এক জন বিশ্বাস করে য়ে তার যা ইচ্ছা হয় এমন সব কিছুই সে খেতে পারে; কিন্তু য়ে বিশ্বাসে দুর্বল সে মনে করে য়ে সে কেবল শাকসব্জী খেতে পারে৷ 3 য়ে ব্যক্তি সব খাবারই খায় সে য়েন য়ে কেবল সব্জীই খায়, তাকে হেয় জ্ঞান না করে৷ আর য়ে মানুষ কেবল সব্জী খায়, তারও উচিত সব খাবার খায় এমন লোককে ঘৃণা না করা, কারণ ঈশ্বর তাকেও গ্রহণ করেছেন৷ 4 তুমি অন্য়ের ভৃত্যের দোষ ধরবে না৷ সে ঠিক করছে না ভুল করছে তা তার মনিবই ঠিক করবেন; বরং প্রভুর দাস নির্দোষই হবে কারণ প্রভু তাকে ধার্মিক প্রতিপন্ন করতে পারেন৷ 5 কেউ হয়তো মনে করে এই দিনটি ঐ দিনটির থেকে ভাল, আবার কেউ মনে করে সব দিনই সমান ভাল৷ প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ নিজ মনে তার বিশ্বাস সম্বন্ধে স্থির নিশ্চয় হোক্৷ 6 য়ে কোন দিনকে বিশেষ মর্য়াদা দিয়ে থাকে সে প্রভুর উদ্দেশ্যেই তা করে৷ তেমনি য়ে মানুষ সবরকম খাবারই খায়, সেও প্রভুর উদ্দেশ্যেই তা করে কারণ সে ওই খাবারের জন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানায়৷ এদিকে য়ে ব্যক্তি কিছু খাদ্য় গ্রহণে বিরত থাকে সেও তো প্রভুর উদ্দেশ্যেই তা করে৷ 7 হ্যাঁ, আমরা সকলেই প্রভুর জন্য বেঁচে থাকি৷ আমরা কেউ নিজের জন্য বেঁচে থাকি না, কেউ নিজের জন্য মরেও যাই না৷ 8 আমাদের বেঁচে থাকা তো প্রভুরই উদ্দেশ্যে বেঁচে থাকা, আমরা যদি মরি তবে তো প্রভুর জন্যই মরি৷ তাই আমরা বাঁচি বা মরি, য়ে ভাবেই থাকি না কেন, আমরা প্রভুরই৷ 9 এইজন্যই খ্রীষ্ট মৃত্যু বরণ করলেন ও পুনরায় বেঁচে উঠলেন, যাতে তিনি মৃত ও জীবিত সকলেরই প্রভু হতে পারেন৷ 10 তাহলে তোমরা কেন খ্রীষ্টেতে তোমার এক ভাইয়ের দোষ ধর? তোমার ভাইয়ের থেকে তুমি ভাল, এমন কথাই বা ভাব কি করে? আমাদের সকলকেই ঈশ্বরের বিচারাসনের সামনে দাঁড়াতে হবে৷ আর ঈশ্বর আমাদের বিচার করবেন৷ 11 হ্যাঁ, শাস্ত্রে লেখা আছে:‘প্রত্যেক ব্যক্তি আমার সাক্ষাতে নতজানু হবে৷ প্রত্যেক ওষ্ঠাধর স্বীকার করবে য়ে আমি ঈশ্বর, প্রভু বলেন, আমার জীবনের দিব্য, এসব হবেই৷’যিশাইয় 45:23 12 আমাদের সকলকেই ঈশ্বরের কাছে আমাদের জীবনের হিসাব দিতে হবে৷ 13 তাই এস, আমরা অন্য়ের বিচার করা থেকে বিরত হই, বরং আমরা সিদ্ধান্ত নেব য়ে আমরা এমন কিছু করব না যাতে আমাদের কোন ভাই বা বোন হোঁচট খায় ও প্রলোভনে পড়ে পাপ করে৷ 14 আমি প্রভু যীশুতে নিশ্চিতভাবে বুঝেছি য়ে কোন খাবার আসলে অশুচি নয়, তা খাওয়া অন্যায় নয়৷ তবে কেউ যদি সেই খাবার অশুচি ভাবে, তাহলে তার কাছে তা অশুচি৷ 15 তোমার খাদ্য়ে যদি তোমার ভাই আত্মিকভাবে আহত হয় তাহলে বুঝতে হবে য়ে তুমি আর ভালোবাসার পথে চলছ না৷ তুমি এমন কিছু খেও না যা অন্য়ের কাছে গ্রহণয়োগ্য নয়৷ এতে তার বিশ্বাস আঘাত পেতে পারে, কারণ খ্রীষ্ট সেই ব্যক্তির জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন৷ 16 তাহলে তোমার কাছে যা ভাল, তা য়েন অপরের কাছে নিন্দিত না হয়৷ 17 ঈশ্বরের রাজ্য খাদ্য পানীয় নয়, কিন্তু তা ধার্মিকতা, শান্তি ও পবিত্র আত্মাতে আনন্দ৷ 18 য়ে এ বিষয়ে খ্রীষ্টের দাসত্ব করে, সে ঈশ্বরের প্রীতিপাত্র এবং মানুষের কাছেও পরীক্ষাসিদ্ধ৷ 19 তাই সেই সব কাজ যা শান্তির পথ প্রশস্ত করে এবং পরস্পরকে শক্তিশালী করে, এস, আমরা তাই করি৷ 20 নিছক খাদ্য়বস্তু নিয়ে ঈশ্বরের কাজ পণ্ড করো না, কারণ সব খাদ্য়ই শুচি ও খাওয়া যায়, কিন্তু কারো কিছু খাওয়া নিয়ে যদি অন্য়ের পতন ঘটে তাহলে তেমন কিছু খাওয়া অবশ্যই অন্যায়৷ 21 তোমার ভাই যদি হোঁচট খায় ও পাপে পতিত হয়, তাহলে মাংস আহার বা দ্রাক্ষারস পান না করাই শ্রেয়৷ তেমন কোন কাজও না করা ভাল যার ফলে তোমার কোন ভাই বা বোনের পতন ঘটতে পারে ও সে পাপ করে৷ 22 তোমরা যা ভাল বলে বিশ্বাস কর তা তুমি ও তোমার ঈশ্বরের মধ্যেই রাখ; কারণ কেউ যখন ভাল মনে করে কোন কাজ করে এবং সে যা করছে সেই ব্যাপারে যদি তার বিবেক তাকে দোষী না করে, তবে সেই ব্যক্তি ধন্য৷ 23 কিন্তু কোন কিছু খাবার ব্যাপারে যার অন্তরে দ্বিধা থাকে সে যদি তবুও তা খায় তাহলে সে অবশ্যই দোষী, কারণ সে তো নিজের বিবেকের বিরুদ্ধে কাজ করল৷ কেউ যদি বিশ্বাস করতে না পারে য়ে এটা ঠিক তবে সেই কাজ করা পাপ৷
Romans 15:1 আমাদের মধ্যে যাঁরা বিশ্বাসে বলিষ্ঠ হয়েছি তাদের কর্তব্য য়েন যাঁরা বিশ্বাসে সবল তাদের দুর্বলতায় সাহায্য করি, য়েন নিজেদের খুশী করার চেষ্টা না করি৷ 2 আমরা প্রত্যেকে বরং অপরকে খুশী করার চেষ্টা করব, তা করলে তাদের সাহায্য করা হবে৷ তারা য়েন বিশ্বাসে বলবান হয়ে উঠতে পারে, সে চেষ্টা আমাদের অবশ্যই করা উচিত৷ 3 খ্রীষ্টও নিজেকে সন্তুষ্ট করার কথা ভাবেন নি, বরং শাস্ত্র য়েমন বলে: ‘যাঁরা তোমাদের অপমান করেছে, সেই সব অপমান আমার ওপরই এসেছে৷’ 4 শাস্ত্রে বহু আগেই য়ে সব কথা লেখা হয়েছে তা আমাদের শিক্ষা দেবার জন্যই লেখা হয়েছে৷ তা লেখা হয়েছে য়েন তার থেকে ধৈর্য্য ও শক্তি আসে এবং অন্তরে প্রত্যাশা জন্মায়৷ 5 আমি প্রার্থনা করি ঈশ্বর, যিনি সকল ধৈর্য্য ও উত্সাহের উত্স, তিনি য়েন তোমাদের খ্রীষ্টের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে একমনা হতে সাহায্য করেন৷ 6 এইভাবে তোমরা য়েন সকলে মিলিত কন্ঠে যিনি আমাদের প্রভু যীশুর পিতা, সেই ঈশ্বরের মহিমা কীর্তন করতে পার৷ 7 খ্রীষ্ট তোমাদের গ্রহণ করেছেন, তাই তোমরাও পরস্পরকে গ্রহণ করে কাছে টেনে নাও, এতে ঈশ্বর মহিমান্বিত হবেন৷ 8 মনে রেখো ঈশ্বর ইহুদীদের পিতৃপুরুষদের কাছে য়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা পূর্ণ করার জন্যই খ্রীষ্ট ইহুদীদের দাস হয়েছিলেন, য়েন ঈশ্বর য়ে বিশ্বস্ত তা প্রমাণ হয়৷ 9 খ্রীষ্ট এই কার্য়্য় সাধন করলেন য়েন ‘অইহুদীরা তাঁর দয়া পেয়েছে বলে তাঁর গৌরব করে৷ শাস্ত্রে য়েমন লেখা আছে:‘এই জন্যই অইহুদীদের মধ্যে আমি তোমার গৌরব করব; তোমার নামের প্রশংসা গান করব৷’ গীতসংহিতা 18:49 10 আবার শাস্ত্র বলে,‘অইহুদীরা, তোমরা ঈশ্বরের মনোনীত লোকদের সঙ্গে আনন্দ কর৷’দ্বিতীয় বিবরণ 32:43 11 শাস্ত্র আরো বলে,‘সমস্ত অইহুদীরা প্রভুর প্রশংসা কর; সমস্ত লোক তাঁর প্রশংসা করুক৷’গীতসংহিতা 117:1 12 আবার যিশাইয় বলছেন,‘যিশয়ের একজন বংশধর আসবেন যিনি সমস্ত অইহুদীদের উপর কর্ত্তৃত্ব করবেন; আর অইহুদী জাতিবৃন্দ তাঁর উপরেই আশা রাখবে৷’ যিশাইয় 11:10 13 ঈশ্বর, যিনি তোমাদের মধ্যে আশার সঞ্চার করেন, তাঁর ওপর প্রত্যাশা তোমাদের সকলকে আনন্দ ও শান্তিতে ভরপুর করুক৷ তাহলে পবিত্র আত্মার শক্তিতে তোমাদের আশা আরো উপচে পড়বে৷ 14 আমার ভাই ও বোনেরা, আমি সুনিশ্চিত য়ে তোমরা সবাই উত্তমতায় পূর্ণ৷ আমি জানি য়ে তোমরা সব রকম জ্ঞান সঞ্চয় করেছ, যাতে পরস্পরকে নির্দেশ দিতে পার৷ 15 কিন্তু আমি কতকগুলি ব্যাপার মনে করিয়ে দেবার জন্য সাহসভরে তোমাদের সবাইকে লিখছি, কারণ ঈশ্বর আমাকে এই বিশেষ বরদান করেছেন৷ 16 আমি অইহুদীদের মধ্যে কাজ করার জন্য খ্রীষ্ট যীশুর সেবক হয়েছি৷ আমি যাজকের মত তাদের মাঝে ঈশ্বরের সুসমাচার প্রচার করি, যাতে পবিত্র আত্মা দ্বারা পবিত্রিকৃত অইহুদীরা ঈশ্বরের গ্রহণয়োগ্য উপহার রূপে গ্রাহ্য় হয়৷ 17 তাই যীশু খ্রীষ্টে আছে এমন একজন হিসাবে ঈশ্বরের কাজ করতে আমি গর্ববোধ করি৷ 18 আমি য়ে নিজে কিছু করেছি, এমন কথা বলি না৷ আমার বাক্য ও কার্য় দ্বারা অইহুদীদের ঈশ্বরের বাধ্য করার জন্য খ্রীষ্ট আমার মাধ্যমে যা করেছেন শুধু তা বলার সাহস আমার আছে৷ 19 তিনি নানা অলৌকিক চিহ্ন ও আশ্চর্য কাজের দ্বারা এবং পবিত্র আত্মার পরাক্রমে আমার দ্বারা তা পূর্ণ করেছেন৷ তার ফলে আমি জেরুশালেম থেকে শুরু করে ইল্লুরিকা পর্যন্ত সমস্ত জায়গায় খ্রীষ্ট বিষয়ক সুসমাচার প্রচারের কাজ শেষ করেছি৷ 20 য়েখানে খ্রীষ্টের নাম কখনও বলা হয় নি, সেখানে খ্রীষ্টের সুসমাচার প্রচার করাই আমার জীবনের লক্ষ্য৷ অন্য়ের গাঁথা ভিতের ওপর আমি গড়ে তুলতে চাই না৷ 21 এ ব্যাপারে শাস্ত্র বলে:‘যাদের কাছে তাঁর সম্বন্ধে কিছুই বলা হয় নি তারা দেখতে পাবে; আর যাঁরা শোনেনি তারা বুঝতে পারবে৷’যিশাইয় 52:15 22 এই জন্যই বহুবার তোমাদের কাছে য়েতে চেয়েও বাধা পেয়েছি৷ 23 কিন্তু এখন এসব এলাকায় আমার কাজ শেষ হয়েছে৷ বহুবছর ধরে তোমাদের সকলের কাছে যাবার ইচ্ছা আমার ছিল৷ 24 তাই স্পেন দেশে যাবার পথে তোমাদের সঙ্গে দেখা করব; ঐ পথ দিয়ে যাবার সময় তোমাদের সঙ্গে দেখা করে কিছু সময় আনন্দে কাটাতে পারব; আশা করি সেই সময়ে তোমরা আমায় সাহায্য করতে পারবে৷ 25 এখন আমি জেরুশালেমে যাচ্ছি য়েন ঈশ্বরের লোকদের সাহায্য করতে পারি৷ 26 জেরুশালেমে ঈশ্বরের লোকদের মধ্যে য়ে গরীব মানুষরা আছেন তাদের হাতে দেবার জন্য মাকিদনিয়া ও আখায়ার খ্রীষ্ট বিশ্বাসীরা কিছু চাঁদা তুলেছেন৷ 27 ওদের সাহায্য করা উচিত মনে করেই মাকিদনিয়া ও আখায়া মণ্ডলীরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ তাদের সাহায্য করা উচিত, কারণ তারা অইহুদী হলেও ইহুদীদের কাছ থেকে আত্মিক আশীর্বাদের সহভাগীতা পেয়েছে৷ এ বিষয়ে তারা ইহুদীদের কাছে ঋণী৷ 28 আমার এই কাজ শেষ হলে আমি যখন জানব য়ে সেই চাঁদা ঠিকমতো পৌঁচেছে তখন তোমাদের কাছে কিছুক্ষণ থেকে আমি স্পেনে যাব৷ 29 আমি জানি যখন তোমাদের সবার কাছে যাব, তখন খ্রীষ্টের পূর্ণ আশীর্বাদ নিয়েই যাব৷ 30 ভাই ও বোনেরা, তোমাদের কাছে আমার একান্ত মিনতি তোমরা ঈশ্বরের কাছে আমার জন্য প্রার্থনা কর৷ আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের দোহাই দিয়ে বলছি, পবিত্র আত্মার ভালোবাসায় প্রণোদিত হয়ে তোমরা আমার জন্য ঈশ্বরের কাছে মিনতি কর৷ 31 প্রার্থনা কর, য়েন যিহূদিয়ায় অবিশ্বাসীদের হাত থেকে আমি রক্ষা পাই৷ প্রার্থনা কর য়েন জেরুশালেমের জন্য আমার সেবা সেখানকার পবিত্র ব্যক্তিরা গ্রহণ করেন৷ 32 তখন ঈশ্বরের ইচ্ছা হলে আমি খুশি মনেই তোমাদের কাছে যাব এবং তোমাদের সঙ্গে কিছুকাল থেকে বিশ্রাম পাব৷ 33 শান্তিদাতা ঈশ্বর তোমাদের সকলের সঙ্গে সঙ্গে থাকুন৷ আমেন৷
Romans 16:1 এখন আমি খ্রীষ্টেতে আমাদের বোন ফৈবীর জন্য বলছি৷ কিংক্রিয়াস্থ মণ্ডলীতে তিনি একজন বিশেষ সেবিকা৷ 2 আমি অনুরোধ করি তোমরা প্রভুতে তাঁকে গ্রহণ করো৷ ঈশ্বরের লোকরা য়েভাবে অপরকে গ্রহণ করে সেইভাবেই তাঁকে গ্রহণ করো৷ কোন ব্যাপারে যদি তিনি তোমাদের সাহায্য চান তবে তাঁকে সাহায্য করো৷ তিনি অনেক লোককে, এমনকি আমাকেও খুব সাহায্য করেছেন৷ 3 যীশু খ্রীষ্টের সেবায় আমার সহকর্মী প্রিষ্কা ও আক্কিলাকে শুভেচ্ছা জানিও৷ 4 তারা তাদের জীবন বিপন্ন করে আমার জীবন বাঁচিয়েছিল৷ কেবল আমিই য়ে তাদের কাছে কৃতজ্ঞ তা নয়, সমগ্র অইহুদী মণ্ডলীও তাদের কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে৷ 5 তাদের গৃহে য়ে মণ্ডলী সমবেত হন, তাদেরও শুভেচ্ছা জানিও৷ আমার প্রিয় বন্ধু ইপেনিতকেও শুভেচ্ছা জানাও, এশিয়ার মধ্যে সেই প্রথম ধর্মান্তরিত হয়ে খ্রীষ্ট ধর্ম গ্রহণ করে৷ 6 মরিয়মকে শুভেচ্ছা জানিও কারণ সে তোমাদের সকলের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছে৷ 7 আন্দ্রনীক ও যূনিয়কে শুভেচ্ছা জানিও, তাঁরা আমার স্বজাতি, আমার সঙ্গে তাঁরা কারাগারে বন্দী ছিলেন৷ তাঁরা প্রেরিতদের মধ্যে বিশিষ্ট ব্যক্তি৷ আমার আগেই তাঁরা খ্রীষ্টে ছিলেন৷ 8 প্রভুতে আমার প্রিয় বন্ধু আমপ্লিয়াতকে শুভেচ্ছা জানিও৷ 9 উর্ব্বানকে শুভেচ্ছা জানিও, তিনি খ্রীষ্টতে আমাদের সহকর্মী৷ আমার প্রিয় বন্ধু স্তাখুকে শুভেচ্ছা জানিও৷ 10 আপিল্লিকে শুভেচ্ছা জানিও, তিনি একজন পরীক্ষা সিদ্ধ খ্রীষ্টীয়ান৷ আরিষ্টবুলের পরিবারের সকলকে আমার শুভেচ্ছা জানিও৷ 11 হেরোদিয়ান যিনি আমার মতোই একজন ইহুদী, তাঁকে শুভেচ্ছা জানিও; নার্কিসের পরিবারের মধ্যে যাঁরা প্রভুর, তাদের সকলকে আমার শুভেচ্ছা জানিও৷ 12 ত্রুফেণা এবং ক্রুফোষাকে শুভেচ্ছা জানিও, এই মহিলারা প্রভুর জন্য খুবই পরিশ্রম করেন৷ আমার সেই প্রিয় বান্ধবী পর্ষীকে শুভেচ্ছা জানিও, যিনি প্রভুর জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছেন৷ 13 রূফকে শুভেচ্ছা জানিও৷ সে প্রভুতে এক বিশেষ ব্যক্তি, তার মাকে শুভেচ্ছা জানিও৷ তিনিও আমার মায়ের মতো; 14 আর অনুংক্রিত, ফ্রিগোন, হর্ম্মিপাত্রোবা, র্হম্মা ও তাদের সঙ্গে সমবিশ্বাসী ভাইদেরও আমার শুভেচ্ছা জানিও৷ 15 ফিললগ, থুলিয়া, নীরিয় ও তার বোন ওলুম্প ও তাঁদের সঙ্গে য়ে সব ঈশ্বরের ভক্তরা আছেন তাঁদেরও আমার শুভেচ্ছা জানিও৷ 16 পবিত্র চুম্বন দিয়ে পরস্পরকে শুভেচ্ছা জানিও৷ এখানকার সব খ্রীষ্টমণ্ডলী তোমাদের সবাইকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে৷ 17 ভাই ও বোনেরা, আমি তোমাদের বিশেষভাবে অনুরোধ করছি,যারা দলাদলি সৃষ্টি করে ও পাপকে প্ররোচিত করে তাদের প্রতি লক্ষ্য রাখতে৷ তোমরা য়ে সত্য শিক্ষা পেয়েছ তারা তার বিরোধী৷ এমন লোকদের থেকে দূরে থেকো৷ 18 এমন লোকরা আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের সেবা করে না৷ তারা নিজেদের খুশী করতেই কাজ করে চলেছে৷ তারা মোলায়েম ও মিষ্টি-মিষ্টি কথা বলে সেই লোকদের ভুলিয়ে থাকে, যাঁরা মন্দ জানে না৷ 19 তোমাদের বাধ্যতার কথা সবাই শুনেছে আর সেইজন্য আমি তোমাদের ওপরে খুশী হয়েছি৷ আমি চাই তোমরা সবাই যা ভাল তা চিনে গ্রহণ কর এবং মন্দ থেকে দূরে থাক৷ 20 শান্তির ঈশ্বর শীঘ্রই তোমাদের পায়ের নীচে শয়তানকে পিষে ফেলবেন৷ আমাদের প্রভু যীশুর অনুগ্রহ তোমাদের সবার সঙ্গে থাকুক৷ 21 আমার সহকর্মী তীমথি তোমাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন; আর আমার মত জাতিতে ইহুদী লুকিয়, যাসোন ও সোষিপাত্র তোমাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছে৷ 22 আমি তর্ত্তিয়, পৌলের হয়ে এই চিঠিটি লিখছি, আমিও প্রভুর নামে তোমাদের শুভেচ্ছা জানাই৷ 23 আমি য়াঁর আতিথ্য় গ্রহণ করেছি, য়াঁর বাড়িতে গোটা মণ্ডলী সমবেত হয় সেই গাইয়াসও তোমাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন৷ ইরাস্ত, যিনি এই শহরের কোষাধ্যক্ষ ও আমাদের ভাই কার্ত্ত তাঁরাও তোমাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন৷ 24 25 যীশু খ্রীষ্টের বিষয়ে য়ে সুসমাচার আমি প্রচার করি, সেই সুসমাচারের মধ্য দিয়ে তোমাদের স্থির রাখবার ক্ষমতা ঈশ্বরের আছে৷ অনেক যুগ ধরে ঈশ্বর তাঁর গোপন উদ্দেশ্যের বিষয় কারোর কাছে জ্ঞাত করেন নি; কিন্তু এখন সুসমাচারের মাধ্যমে তা প্রকাশ পেয়েছে; আর আমি সেইমত তা প্রচার করেছি৷ 26 অনন্ত ঈশ্বরের আদেশ মতো ভাববাদীদের বাণীর মধ্য দিয়ে সব জাতির লোকদের কাছে তা জানানো হয়েছে য়েন তারা খ্রীষ্টের ওপর বিশ্বাস করে ঈশ্বরের বাধ্য হতে পারে৷ 27 যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে চিরকাল একমাত্র প্রজ্ঞাবান ঈশ্বরের মহিমা হোক৷ আমেন৷করিন্থীয়দের প্রতি প্রথম পত্র
1 Corinthians 1:1 পৌল, যিনি ঈশ্বরের ইচ্ছা অনুযাযী খ্রীষ্ট যীশুর প্রেরিতরূপে আহুত তাঁর কাছ থেকে ও আমাদের ভাই সোস্থিনির কাছ থেকে এই পত্র৷ 2 করিন্থের ঈশ্বরের মণ্ডলী ও যারা খ্রীষ্ট যীশুতে পবিত্র বলে গন্য হয়েছে, তাদের উদ্দেশ্যে এই পত্র৷ তোমরা ঈশ্বরের পবিত্র লোক হবার জন্য আহুত হয়েছ৷ সব জায়গায় য়ে সব লোকেরা প্রভু যীশু খ্রীষ্টের নামে ডাকে তাদের সঙ্গে তোমরাও আহুত৷ তিনি তাদেরও এবং আমাদের ও প্রভু৷ 3 আমাদের পিতা ঈশ্বর ও প্রভু যীশু খ্রীষ্টের কাছ থেকে অনুগ্রহ ও শান্তি য়েন তোমাদের প্রতি বর্তায়৷ 4 খ্রীষ্ট যীশুর মাধ্যমে ঈশ্বর য়ে অনুগ্রহ তোমাদের দিয়েছেন, তার জন্য আমি সবসময় ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি৷ 5 খ্রীষ্ট যীশুর আশীর্বাদে তোমরা সব কিছুতে, সমস্ত রকম বলবার ক্ষমতায় ও জ্ঞানে উপচে পড়ছ৷ 6 এইভাবে খ্রীষ্ট সম্পর্কে সত্য তোমাদের মধ্যে প্রমাণিত হয়েছে৷ 7 এর ফলে ঈশ্বরের কাছ থেকে পাওয়া বরদানের কোন অভাব তোমাদের নেই৷ তোমরা প্রভু যীশু খ্রীষ্টের অপেক্ষায় আছ; 8 তিনি তোমাদের শেষ পর্যন্ত স্থির রাখবেন, য়েন আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের ফিরে আসার দিন পর্যন্ত তোমরা নির্দোষ থাক৷ 9 ঈশ্বর বিশ্বস্ত; তিনিই সেইজন য়াঁর দ্বারা তোমরা তাঁর পুত্র আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের সহভাগীতা লাভের জন্য আহুত হয়েছ৷ 10 কিন্তু আমার ভাই ও বোনেরা, আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের নামে আমি তোমাদের কাছে অনুরোধ করছি, তোমাদের পরস্পরের মধ্যে য়েন মতৈক্য থাকে, দলাদলি না থাকে৷ তোমরা সকলে য়েন এক মন-প্রাণ হও ও সকলের উদ্দেশ্য একই হয়৷ 11 আমার ভাই ও বোনেরা, আমি ক্লোযীর বাড়ির লোকদের কাছে শুনেছি য়ে তোমাদের মধ্যে নানা বাক্-বিতণ্ডা লেগেই আছে৷ 12 আমি যা বলতে চাই তা হল এই: তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ বলে, ‘আমি আপল্লোর,’ আর কেউ কেউ বলে, ‘আমি খ্রীষ্টের অনুগামী৷’ 13 খ্রীষ্টকে কি ভাগ করা যায়? পৌল কি তোমাদের জন্য ক্রুশবিদ্ধ হয়েছিলেন? তোমরা কি পৌলের নামে বাপ্তিস্ম নিয়েছিলে? 14 আমি ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিই য়ে, আমি ক্রীষ্প ও গাযঃ ছাড়া তোমাদের আর কাউকে বাপ্তিস্ম দিই নি৷ 15 যাতে কেউ বলতে না পারে য়ে তোমরা আমার নামে বাপ্তিস্ম নিয়েছ৷ 16 তবে হ্যাঁ, আমি স্তিফানের পরিবারকেও বাপ্তিস্ম দিয়েছি৷ এছাড়া আর কাউকে বাপ্তিস্ম দিয়েছি বলে আমার জানা নেই৷ 17 কারণ খ্রীষ্ট আমাকে বাপ্তিস্ম দেবার জন্য নয় কিন্তু সুসমাচার প্রচারের জন্য পাঠিয়েছেন৷ তিনি আমাকে সেই সুসমাচার জাগতিক জ্ঞানের ভাষায় প্রচার করতে পাঠান নি, যাতে খ্রীষ্টের ক্রুশের পরাক্রম বিফল না হয়৷ 18 যারা ধ্বংসের পথে চলেছে তাদের কাছে ক্রুশের এই শিক্ষা মুর্খতা; কিন্তু আমরা যারা উদ্ধার লাভ করছি আমাদের কাছে এ ঈশ্বরের পরাক্রমস্বরূপ৷ 19 কারণ শাস্ত্রে লেখা আছে:‘আমি জ্ঞানীদের জ্ঞান নষ্ট করব আর বুদ্ধিমানদের বুদ্ধি ব্যর্থ করব৷’ যিশাইয় 29:14 20 জ্ঞানী লোক কোথায়? শিক্ষিত লোকই বা কোথায়? এ যুগের দার্শনিকই বা কোথায়? ঈশ্বর কি জগতের এই সব জ্ঞানকে মূর্খতায় পরিণত করেন নি? 21 তাই ঈশ্বর তাঁর প্রজ্ঞায় যখন বুঝলেন য়ে জগত তার নিজের জ্ঞান অনুসারে ঈশ্বরকে পেল না, তখন ঈশ্বর স্থির করলেন য়ে প্রচারিত বার্তার মূর্খতায় যারা বিশ্বাস করে তাদের তিনি উদ্ধার করবেন৷ 22 কারণ ইহুদীরা অলৌকিক চিহ্ন চায়, আর গ্রীকরা প্রজ্ঞার অন্বেষণ করে৷ 23 কিন্তু আমরা সেই খ্রীষ্ট, যিনি ক্রুশে প্রাণ দিয়েছিলেন, তাঁর সম্বন্ধে প্রচার করি৷ ইহুদীদের কাছে তা প্রবল বাধাস্বরূপ আর অইহুদীদের কাছে তা মূর্খতাস্বরূপ৷ 24 কিন্তু ইহুদী ও অইহুদী, ঈশ্বর যাদের আহ্বান করেছেন তাদের সকলের কাছে খ্রীষ্টই ঈশ্বরের পরাক্রম ও প্রজ্ঞাস্বরূপ৷ 25 কারণ ঈশ্বরের য়ে মূর্খতা তা মানুষের জ্ঞানের থেকে অনেক বেশী জ্ঞানসম্পন্ন; আর ঈশ্বরের য়ে দুর্বলতা তা মানুষের শক্তি থেকে অনেক শক্তিশালী৷ 26 আমার ভাই ও বোনেরা, ঈশ্বর তোমাদের আহ্বান করেছেন৷ একটু ভেবে দেখো তো! জগতের বিচারে তোমরা অনেকে য়ে জ্ঞানী ছিলে তা নয়, ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তি ছিলে তাও নয় বা অনেকে য়ে অভিজাত বংশে জন্মেছিলে তা নয়; 27 কিন্তু ঈশ্বর জগতের মূর্খ বিষয় সকল মনোনীত করলেন যাতে সেগুলি জ্ঞানীদের লজ্জা দেয়৷ ঈশ্বর জগতের দুর্বল বিষয় সকল মনোনীত করলেন যাতে ঐগুলি বলবানদের লজ্জা দেয়৷ 28 জগতের কাছে যা তুচ্ছ ও ঘৃণিত, যার কোন মূল্যই নেই, সেই সব ঈশ্বর মনোনীত করলেন, যাতে যা কিছু জগতের ধারণায় মূল্যবান সেই সমস্তকে তিনি ধ্বংস করতে পারেন৷ 29 ঈশ্বর এই কাজ করলেন যাতে কেউ তাঁর সামনে গর্ব করতে না পারে৷ 30 ঈশ্বরই তোমাদের খ্রীষ্ট যীশুর সাথে যুক্ত করেছেন৷ খ্রীষ্টই আমাদের কাছে ঈশ্বরের দেওয়া জ্ঞান, তিনিই আমাদের ধার্মিকতা, পবিত্রতা ও যুক্তি৷ 31 শাস্ত্রে য়েমন লেখা আছে, ‘য়ে কেউ গর্ব করে সে প্রভুতেই গর্ব করুক৷’
1 Corinthians 2:1 আমার ভাই ও বোনেরা, যখন আমি তোমাদের কাছে গিয়ে ঈশ্বরের সত্য প্রচার করেছিলাম, তখন আমি তা অলঙ্কারযুক্ত ও বুদ্ধিদীপ্ত ভাষায় প্রচার করি নি৷ 2 কারণ আমি স্থির করেছিলাম য়ে কেবল যীশু খ্রীষ্ট এবং ক্রুশের ওপর তাঁর মৃত্যুর কথাই তোমাদের জানাবো৷ 3 আমি তোমাদের কাছে দুর্বলের মতো হয়ে কাঁপতে কাঁপতে গিয়েছিলাম৷ 4 তাই আমার শিক্ষা ও আমার প্রচার প্ররোচনামূলক জ্ঞানের কথায় ভরা ছিল না, বরং আমার শিক্ষাগুলিতে আত্মার শক্তির প্রমাণ ছিল, 5 যাতে তোমাদের বিশ্বাস য়েন মানুষের জ্ঞানের ওপর নির্ভর না করে ঈশ্বরের শক্তির উপর নির্ভর করে৷ 6 কিন্তু তবু আমরা পরিপক্কদের কাছে জ্ঞানের কথা বলি, সেই জ্ঞান পার্থিব জ্ঞানের মতো নয়, তা এই যুগের শাসকদের জ্ঞানের মতো নয়, সেই শাসকরা তো শক্তিহীন হয়ে পড়েছে৷ 7 কিন্তু আমরা নিগূঢ়তত্ত্বে ঈশ্বরের জ্ঞানের কথা বলি৷ সেই জ্ঞান গুপ্ত ছিল এবং ঈশ্বর আমাদের মহিমান্বিত করবেন বলে এবিষয় সৃষ্টির পূর্বেই স্থির করে রেখেছিলেন৷ 8 এই যুগের শাসকদের মধ্যে কেউ তো বোঝেনি, যদি বুঝত তবে তারা কখনও মহিমাপূর্ণ প্রভুকে ক্রুশে বিদ্ধ করত না৷ 9 কিন্তু শাস্ত্রে য়েমন লেখা আছে:‘ঈশ্বরকে যারা ভালবাসে, তাদের জন্য তিনি যা প্রস্তুত করেছেন, কোন মানুষ তা কখনও চোখে দেখে নি, কানে শোনে নি, এমন কি কল্পনাও করে নি৷’যিশাইয় 64:4 10 কিন্তু আমাদের কাছে ঈশ্বর তাঁর আত্মার দ্বারা তা প্রকাশ করেছেন৷ কারণ আত্মা সব কিছুর অনুসন্ধান করেন, এমন কি ঈশ্বরের নিগূঢ় তত্ত্বের অনুসন্ধান করেন৷ 11 বিষয়টি এই রকম: কোন মানুষ অপরে কি চিন্তা করছে তা জানে না৷ কেবল সেই ব্যক্তির আত্মা, য়ে তার অন্তরে থাকে সেই জানে৷ তেমনি ঈশ্বর কি চিন্তা করেন তা কেউ জানে না, কেবল ঈশ্বরের আত্মা জানেন৷ 12 আমরা জগতের আত্মাকে গ্রহণ করি নি কিন্তু ঈশ্বরের কাছ থেকে য়ে আত্মা এসেছেন তাঁকেই আমরা পেয়েছি, য়েন ঈশ্বর অনুগ্রহ করে আমাদের যা যা দান করেছেন তা জানতে পারি৷ 13 সেই সব বিষয়ে বলতে গিয়ে আমরা মানবিক জ্ঞানের শিক্ষানুরূপ কথায় নয়, কিন্তু পবিত্র আত্মার শিক্ষানুসারে বলেছি, আত্মিক বিষয় বোঝাতে আত্মিক কথাই ব্যবহার করছি৷ 14 যার মধ্যে ঈশ্বরের আত্মা নেই সে, আত্মা থেকে য়ে বিষয়গুলি আসে তা গ্রহণ করতে পারে না, কারণ তার কাছে সে সব মূর্খতা৷ য়ে ব্যক্তির মধ্যে পবিত্র আত্মা নেই সে আত্মিক কথা বুঝতে পারে না, কারণ সেই বিষয়গুলি কেবল, আত্মিকভাবেই বিচার করা যায়৷ 15 কিন্তু আত্মিক ব্যক্তি সকল বিষয়ে বিচার করতে পারে৷ অন্য কেউ তার সম্বন্ধে বিচার করতে পারে না৷ কারণ শাস্ত্র বলছে: 16 ‘কে প্রভুর মন জেনেছে য়ে, তাঁকে নির্দেশ দিতে পারে?’ যিশাইয় 40:13কিন্তু খ্রীষ্টের মন আমাদের আছে৷
1 Corinthians 3:1 আমার ভাই ও বোনেরা, আমি তোমাদের সঙ্গে আত্মিক লোকদের মতো কথা বলতে পারি নি৷ খ্রীষ্টীয় জীবনে তোমরা শিশু বলে তোমাদের কাছে জাগতিক ভাবাপন্ন লোকদের মতো কথা বলছি৷ 2 আমি তোমাদের শক্ত কোন খাদ্য না দিয়ে তোমাদের দুধ পান করিয়েছি, কারণ তখনও তোমরা শক্ত খাদ্য গ্রহণ করতে প্রস্তুত ছিলে না; আর এমন কি তোমরা এখনও প্রস্তুত হও নি৷ 3 তোমরা এখনও আত্মিক লোক হয়ে ওঠো নি৷ তোমরা আজও জাগতিক ভাবাপন্ন, কারণ তোমাদের মধ্যে ঈর্ষা ও বিবাদ রয়েছে, আর তাতেই জানা যায় য়ে তোমরা আত্মিক লোক নও; তোমরা জাগতিক লোকদের মতোই চলছ৷ 4 কারণ তোমাদের মধ্যে যখন কেউ বলে, ‘আমি পৌলের লোক,’ আবার কেউ বলে, ‘আমি আপল্লোর লোক’ তখন কি তোমরা জাগতিক লোকদের মতোই ব্যবহার করছ না? 5 আপল্লো কে? আর পৌলই বা কে? আমরা ঈশ্বরের দাস মাত্র, যাদের দ্বারা তোমরা বিশ্বাসী হয়েছ৷ প্রভু আমাদের এক এক জনকে য়েমন কাজ দিয়েছেন আমরা তেমন করেছি৷ 6 আমি বীজ বুনেছি, আপল্লো জল দিয়েছেন; কিন্তু ঈশ্বরই বৃদ্ধি দান করেছেন৷ 7 তাই য়ে বীজ বোনে বা য়ে জল দেয় সে কিছু নয়, কিন্তু ঈশ্বর, যিনি বৃদ্ধি দান করেন তিনিই সব৷ 8 য়ে বীজ বোনে ও য়ে জল দেয় তাদের উদ্দেশ্য এক; তারা প্রত্যেকে নিজের নিজের কর্ম অনুসারে ফল পাবে৷ 9 কারণ আমরা পরস্পর ঈশ্বরেরই সহকর্মী৷ তোমরা এক শস্যক্ষেত্রের মতো, যার মালিক স্বয়ং ঈশ্বর৷ তোমরা ঈশ্বরের গৃহ৷ 10 ঈশ্বর আমায় য়ে ক্ষমতা দিয়েছেন সেই অনুসারে আমি অভিজ্ঞ স্থপতির মতো ভীত গেঁথেছি৷ কিন্তু অন্যেরা তার ওপর গাঁথছে, তবে প্রত্যেকে য়েন লক্ষ্য রাখে কিভাবে তারা তার ওপর গাঁথে৷ 11 য়ে ভীত গাঁথা হয়েছে তা ছাড়া অন্য ভিত্তিমূল কেউ স্থাপন করতে পারে না, সেই ভীত হচ্ছেন যীশু খ্রীষ্ট৷ 12 এই ভীতের ওপরে কেউ যদি সোনা, রূপো, মূল্যবান পাথর, কাঠ, খড় বা বিছালি দিয়ে গাঁথে 13 তবে প্রত্যেক লোকের নিজস্ব কাজ স্পষ্টরূপে প্রকাশ পাবেই৷ সেই বিচারের দিনতা প্রকাশ করে দেবে, কারণ সেই দিনটি আসবে আগুন নিয়ে আর সেই আগুনই প্রত্যেকের কাজ কি রকম তা যাচাই করবে৷ 14 য়ে যা গেঁথেছে তা যদি টিকে থাকে তবে সে পুরস্কার পাবে, 15 আর যদি কারোর কাজ পুড়ে যায় তবে তাকে ক্ষতি স্বীকার করতে হবে৷ সে নিজে রক্ষা পাবে; কিন্তু তার অবস্থা আগুনের মধ্য দিয়ে পার হয়ে আসা লোকের মতো হবে৷ 16 তোমরা কি জান না য়ে তোমরা ঈশ্বরের মন্দির; আর ঈশ্বরের আত্মা তোমাদের মধ্যে বাস করেন? 17 যদি কেউ ঈশ্বরের মন্দির ধ্বংস করে তবে ঈশ্বর তাকে ধ্বংস করবেন, কারণ ঈশ্বরের মন্দির পবিত্র আর সেই মন্দির তোমারই৷ 18 তোমরা নিজেদের ফাঁকি দিও না৷ তোমাদের মধ্যে কেউ যদি নিজেকে এই জগতের দিক দিয়ে জ্ঞানী মনে করে, তবে সে মূর্খ হলেও য়েন প্রকৃত জ্ঞানী হতে পারে৷ 19 কারণ ঈশ্বরের দৃষ্টিতে এই জগতের জ্ঞান মূর্খতা স্বরূপ৷ শাস্ত্রে লেখা আছে: ‘তিনি (ঈশ্বর) জ্ঞানীদের তাদের ধূর্ততায় ধরে ফেলেন৷’ 20 আবার লেখা আছে, ‘জ্ঞানীদের সমস্ত চিন্তাই য়ে অসার তা প্রভু জানেন৷’ 21 তাই কেউ য়েন মানুষকে নিয়ে গর্ব না করে, কারণ সবই তো তোমাদের; 22 তা সে পৌল, আপল্লো, কৈফা (পিতর) হোক বা এই জগত্ জীবন বা মৃত্যুই হোক৷ বর্তমান বা ভবিষ্যত যা কিছু বল সব কিছু তোমাদের, 23 আর তোমরা খ্রীষ্টের ও খ্রীষ্ট ঈশ্বরের৷
1 Corinthians 4:1 লোকদের কাছে আমাদের পরিচয় এই হোক য়ে, আমরা খ্রীষ্টের সেবক এবং আমরা ঈশ্বরের নিগূঢ়তত্ত্বরূপ সম্পদের ভারপ্রাপ্ত মানুষ৷ 2 যারা এই সম্পদের ভারপ্রাপ্ত মানুষ তারা এই কাজে বিশ্বস্ত কিনা তা দেখতে হবে৷ 3 তোমরা বা কোন মানুষের বিচার সভা আমার বিচার করুক তাতে আমার কিছু যায় আসে না, এমন কি আমি আমার নিজেরও বিচার করি না৷ 4 আমার বিবেক পরিষ্কার, তবুও এতে আমি নির্দোষ প্রতিপন্ন হই না৷ প্রভুই আমার বিচার করেন৷ 5 তাই যথার্থ সময়ের আগে অর্থাত্ প্রভু আসার আগে, তোমরা কোন কিছুর বিচার করো না৷ আজ যা কিছু অন্ধকারে লুকানো আছে তিনি তা আলোতে প্রকাশ করবেন; আর তিনি মানুষের মনের গুপ্ত বিষয় জানিয়ে দেবেন৷ 6 ভাই ও বোনেরা, তোমরা য়েন বুঝতে পার তাই আপল্লো ও আমার উদাহরণ দিয়ে এইসব কথা বললাম, ‘য়েন তোমরা শেখা য়ে শাস্ত্রে যা লেখা আছে তার বাইরে য়েতে নেই৷’ তাহলে তোমরা একজনের বিরুদ্ধে অন্য জনকে নিয়ে গর্ব করবে না৷ 7 তুমি য়ে অন্যদের থেকে ভাল তা কে বলেছে? আর তুমি যা ঈশ্বরের কাছ থেকে দান হিসাবে পাও নি, এমনই বা কি তোমার আছে? আর যখন তুমি সব কিছু দান হিসেবে পেয়েছ, তখন দান হিসেবে পাও নি, কেন এমন গর্ব করছ? 8 তোমরা মনে করছ, তোমাদের যা কিছু প্রযোজন তোমরা এখনই সে সব পেয়ে গিয়েছ৷ তোমরা মনে কর তোমরা এখন ধনী হয়ে গিয়েছ; আর আমাদের ছাড়াই তোমরা রাজা হয়ে গিয়েছ৷ অবশ্য সত্যি সত্যিই তোমরা রাজা হয়ে গেলে ভালোই হত! তাহলে আমরাও তোমাদের সঙ্গে রাজা হতে পারতাম৷ 9 হত্যা করা হবে বলে যাদের মিছিলের শেষে প্রদর্শনীর জন্য রাখা হয়, আমার মনে হয় ঈশ্বর আমাদের অর্থাত্ প্রেরিতদের ঠিক তেমনি সকলের শেষে রেখেছেন৷ আমরা সারা জগতের কাছে অর্থাত্ স্বর্গদূতদের ও মানুষের কাছে য়েন দেখার সামগ্রী হয়েছি৷ 10 আমরা খ্রীষ্টের জন্য মূর্খ হয়েছি, আর তোমরা খ্রীষ্টেতে বুদ্ধিমান হয়েছ৷ আমরা দুর্বল, কিন্তু তোমরা বলবান৷ তোমরা সম্মান লাভ করেছ, কিন্তু আমরা অসম্মানিত৷ 11 এই মুহূর্ত পর্যন্ত আমরা ক্ষুধা ও তৃষ্ণায় কষ্ট পাচ্ছি৷ আমাদের পরণে জীর্ণ বস্ত্র, আমাদের চপেটাঘাত করা হচ্ছে, আমাদের বাসস্থান বলতে কোন কিছু নেই৷ 12 জীবিকার জন্য আমরা নিজের হাতে কঠিন পরিশ্রম করছি৷ লোকে আমাদের নিন্দা করলে আমরা তাদের আশীর্বাদ করি, যখন নির্য়াতন করে তখন আমরা তা সহ্য করি৷ 13 কেউ অপবাদ দিলে তার সঙ্গে ভাল কথা বলি৷ আজ পর্যন্ত আমরা য়েন জগতের আবর্জনা ও দুনিয়ার জঞ্জাল হয়ে রয়েছি৷ 14 তোমাদের লজ্জা দেবার জন্য আমি এসব কথা লিখছি না বরং আমার প্রিয় সন্তান হিসাবে সাবধান করার জন্যই লিখছি৷ 15 কারণ তোমাদের খ্রীষ্টে দশ হাজার গুরু থাকতে পারে, কিন্তু তোমাদের পিতা অনেক নেই৷ আমি খ্রীষ্ট যীশুতে সুসমাচার প্রচারের মাধ্যমে তোমাদের আত্মিক পিতা হয়েছি৷ 16 তাই আমি তোমাদের বিনতি করছি, তোমরা আমার অনুগামী হও৷ 17 এই জন্যই আমি প্রভুতে আমার প্রিয় ও বিশ্বস্ত সন্তান হিসাবে তীমথিয়কে তোমাদের কাছে পাঠিয়েছি৷ খ্রীষ্ট যীশুতে আমি য়ে সব পথে চলি তা সে তোমাদের মনে করিয়ে দেবে৷ প্রত্যেক জায়গায় প্রত্যেক মণ্ডলীতে আমি সেই পথের বিষয় শিক্ষা দিয়েছি৷ 18 তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ এই মনে করে খুব গর্ব করে বেড়াচ্ছে য়ে আমি তোমাদের কাছে আসছি না৷ 19 যাই হোক যদি প্রভুর ইচ্ছা হয় তবে খুব শিগ্গিরই আমি তোমাদের কাছে আসব এবং এই দান্ভিক লোকদের কথা শুনতে নয়, তাদের ক্ষমতা কি তা জানব৷ 20 কারণ ঈশ্বরের রাজ্য কেবল কথার ব্যাপার নয়, তা পরাক্রমেরও৷ 21 তোমরা কি চাও?তোমরা কি চাও য়ে শাস্তি দিতে আমি তোমাদের কাছে বেত নিয়ে আসি, অথবা ভালবাসা ও শান্ত মনোভাবে আসি?
1 Corinthians 5:1 একথা সত্যি শোনা যাচ্ছে য়ে তোমাদের মধ্যে য়ৌন পাপ রয়েছে৷ এমন য়ৌন পাপ যা বিধর্মীদের মধ্যেও দেখা যায় না; একজন নাকি তার সত্মার সঙ্গে অবৈধ জীবনযাপন করছে৷ 2 তোমরা তবুও নিজেদের বিষয়ে গর্ব করছ৷ এর পরিবর্তে তোমাদের কি মর্মাহত হওয়া উচিত ছিল না? এমন পাপ কাজ য়ে করেছে তাকে তোমাদের সহভাগীতা থেকে বের করে দেওয়া উচিত ছিল৷ 3 দৈহিকভাবে আমি উপস্থিত না থাকলেও আত্মাতে আমি তোমাদের সঙ্গেই আছি৷ য়ে এই রকম অন্যায় কাজ করেছে, তোমাদের মধ্যে উপস্থিত থেকেই আমি তার বিচার করেছি৷ 4 প্রভু যীশুর নামে তোমরা একত্রিত হও৷ সে সভায় আমি আত্মাতে উপস্থিত থাকব, আর প্রভু যীশুর পরাক্রম তোমাদের মধ্যে বিরাজ করবে৷ 5 তখন সেই লোককে শাস্তির জন্য শয়তানের হাতে সঁপে দিও য়েন তার পাপময় দেহ ধ্বংস হয়; কিন্তু য়েন প্রভু যীশুর দিনে তার আত্মা উদ্ধার লাভ করে৷ 6 তোমাদের গর্ব করা শোভা পায় না, তোমরা তো এ কথা জান য়ে, ‘একটুখানি খামির ময়দার সমস্ত তালটাকে ফাঁপিয়ে তোলে৷’ 7 তোমাদের মধ্য থেকে পুরানো খামির বের করে ফেল, য়েন তোমরা এক নতুন তাল হতে পার৷ খ্রীষ্টীয়ান হিসাবে তোমরা তো খামিরবিহীন রুটির মতোই, কারণ খ্রীষ্ট, যিনি আমাদের নিস্তারপর্বীয় মেষশাবক, তিনি আমাদের জন্য বলি হয়েছেন৷ 8 তাই এস, আমরা নিস্তারপর্বের ভোজ সেই রুটি দিয়ে পালন করি যার মধ্যে সেই পুরানো খামির নেই৷ সেই পুরানো খামির হল পাপ ও দুষ্টতা; কিন্তু এস আমরা সেই রুটি গ্রহণ করি যার মধ্যে খামির নেই, এ হল আন্তরিকতা ও সত্যের রুটি৷ 9 আমার আগের চিঠিতে আমি তোমাদের লিখেছিলাম, য়েন তোমরা য়ৌন পাপে লিপ্ত লোকেদের সঙ্গে মেলামেশা না কর৷ 10 তবে হ্যাঁ, এই জগতের যারা নষ্ট চরিত্রের লোক, লোভী, ঠগবাজ বা প্রতিমাপূজক তাদের কথা অবশ্য বলিনি, কারণ তাহলে তো তোমাদের জগতের বাইরে চলে য়েতে হবে৷ 11 তবে আমি এখন লিখছি য়ে, য়ে কেউ নিজেকে বিশ্বাসী বলে পরিচয় দেয়, অথচ নষ্ট চরিত্রের লোক, লোভী, প্রতিমাপূজক, নিন্দুক, মাতাল বা ঠগবাজ এরকম লোকের সঙ্গে মেলামেশা করো না৷ এমন কি তার সঙ্গে খাওয়া দাওয়া করো না৷ 12 বাইরের লোকদের বিচার করার আমার কি দরকার? কিন্তু মণ্ডলীর ভেতরের লোকদের বিচার করা কি তোমাদের উচিত নয়? যারা মণ্ডলীর বাইরের লোক তাদের বিচার ঈশ্বর করবেন৷ শাস্ত্র বলছে, ‘তোমাদের মধ্য থেকে দুষ্ট লোককে বের করে দাও৷’ 13
1 Corinthians 6:1 তোমাদের মধ্যে কারো যদি অপরের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ থাকে তবে সে কোন সাহসে ঈশ্বরের পবিত্র লোকদের কাছে না গিয়ে আদালতে বিচারকদের অর্থাত্ অধার্মিকদের কাছে যায়? 2 তোমরা নিশ্চয় জান য়ে ঈশ্বরের লোকরা জগতের বিচার করবে৷ তোমাদের দ্বারাই যখন জগতের বিচার হবে, তখন তোমরা কি এই সামান্য বিষয়ের বিচার করার অযোগ্য? 3 তোমরা কি জান না য়ে আমরা স্বর্গদূতদেরও বিচার করব? তাই যদি হয় তবে তো এই জীবনের বিষয়গুলি সম্পর্কেও আমরা নিশ্চিতভাবে বিচার করতে পারি৷ 4 তাই তোমাদের নিজেদের মধ্যে যদি কোন নালিশ থাকে, তবে যারা মণ্ডলীর লোক নয় তাদেরই কি তোমরা বিচার করার জন্য ঠিক করবে? 5 তোমাদের লজ্জা দেবার জন্য আমি এই কথা বলছি: এটা খুব খারাপ, তোমাদের মধ্যে সত্যিই কি এমন কোন জ্ঞানী লোক নেই য়ে ভাইদের মধ্যে বিবাদ বাধলে তার মীমাংসা করে দিতে পাবে? 6 কিন্তু এক ভাই অন্য ভাইয়ের বিরুদ্ধে আদালতে যাচ্ছে, তাও আবার অবিশ্বাসীদের সামনে! 7 তোমরা য়ে একে অপরের বিরুদ্ধে মামলা করছ এতে প্রমাণ হচ্ছে য়ে তোমরা পরাস্ত হয়েছ৷ তার চেয়ে ভাল হয় যদি তুমি কাউকে তোমার বিরুদ্ধে অন্যায় করতে দাও৷ 8 কিন্তু তোমরা নিজেরাই অন্যায় করছ, তোমরাই বঞ্চনা করছ! আর তা তোমাদের বিশ্বাসী খ্রীষ্টীয়ান ভাইদের প্রতিই করছ! 9 তোমরা নিশ্চয় জান য়ে ঈশ্বরের রাজ্যে অধার্মিক লোকদের কোন স্থান নেই? নিজেদের ঠকিও না! যারা ব্যভিচারী, অনৈতিক য়ৌনচারী, যারা প্রতিমার পূজা করে, যারা পুংশ্চলী ও পুংসমকারী, ঈশ্বরের রাজ্যে এদের কোন অধিকার নেই৷ সেই রকম যারা চোর, লোভী, মাতাল, যারা পরনিন্দা করে ও যারা প্রতারক তারা ঈশ্বরের রাজ্যের অধিকারী হবে না৷ 10 11 তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ এই ধরণের লোক ছিলে, কিন্তু তোমরা প্রভু যীশু খ্রীষ্টের নামে ও ঈশ্বরের আত্মায় নিজেদের ধৌত করেছ, পবিত্র হয়েছ, তোমরা ঈশ্বরের কাছে ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়েছ৷ 12 ‘সব কিছু করার অধিকার আমার আছে,’ কিন্তু সব কিছু করা য়ে হিতকর তা নয়৷ হ্যাঁ, ‘সব কিছু করার অধিকার আমার আছে,’ কিন্তু আমি কোন কিছুর দাস হব না৷ 13 খাবার তো পেটের জন্য, আর পেট তো খাবারের জন্য, কিন্তু ঈশ্বর এদের উভয়েরই লোপ করবেন৷’ আমাদের দেহ য়ৌন পাপ কার্য়ের জন্য নয়, প্রভুরই জন্য আর প্রভুও এই দেহের জন্য৷ 14 ঈশ্বর আপন পরাক্রমের দ্বারা প্রভু যীশুকে মৃতদের মধ্য থেকে উঠিয়েছেন, তিনি আমাদেরও ওঠাবেন৷ 15 তোমরা কি জান না য়ে তোমাদের দেহ খ্রীষ্টের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ স্বরূপ? তাহলে কি তোমরা খ্রীষ্টের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ নিয়ে বেশ্যার দেহের সঙ্গে যুক্ত করবে? 16 না, কখনই না৷ তোমরা কি জান না, য়ে বেশ্য়ার সঙ্গে যুক্ত হয় সে তার সঙ্গে এক দেহ হয়? কারণ শাস্ত্র বলছে, ‘তারা দুজন এক দেহ হবে৷’ 17 কিন্তু য়ে প্রভুর সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করে, সে তাঁর সঙ্গে আত্মায় এক হয়৷ 18 য়ৌন পাপ থেকে দূরে থাক৷ য়ে ব্যক্তি পাপকার্য় করে তা তার দেহের বাইরে করে, কিন্তু য়ে য়ৌন পাপ করে সে তার দেহের বিরুদ্ধেই পাপ করে৷ 19 তোমরা কি জান না, তোমাদের দেহ পবিত্র আত্মার মন্দির, তিনি তোমাদের মধ্যে বাস করেন, য়াঁকে তোমরা ঈশ্বরের কাছ থেকে পেয়েছ? তোমরা তো আর নিজেদের নও৷ 20 কারণ তোমাদের মূল্য দিয়ে কেনা হয়েছে; তাই তোমাদের দেহের দ্বারা ঈশ্বরের গৌরব কর৷
1 Corinthians 7:1 তোমরা য়ে সব বিষয়ে লিখেছ সে সম্বন্ধে এখন আলোচনা করব৷ একজন পুরুষের বিয়ে না করাই ভাল৷ 2 কোন পুরুষের কোন স্ত্রীলোকের সঙ্গে য়ৌন সম্পর্ক না থাকাই ভাল৷ কিন্তু য়ৌন পাপের বিপদ আছে, তাই প্রত্যেক পুরুষের নিজ স্ত্রী থাকাই উচিত, আবার প্রত্যেক স্ত্রীলোকের নিজ স্বামী থাকা উচিত৷ 3 স্ত্রী হিসাবে তার যা যা বাসনা স্বামী য়েন অবশ্যই তাকে তা দেয়; ঠিক তেমনি স্বামীর সব বাসনাও য়েন স্ত্রী পূর্ণ করে৷ 4 স্ত্রী নিজ দেহের ওপর দাবী করতে পারে না, কিন্তু তার স্বামী পারে৷ ঠিক সেই রকম স্বামীরও নিজ দেহের ওপর দাবী নেই, কিন্তু তার স্ত্রীর আছে৷ 5 স্বামী, স্ত্রী তোমরা একে অপরের সঙ্গে মিলিত হতে আপত্তি করো না, কেবল প্রার্থনা করার জন্য উভয়ে পরামর্শ করে অল্প সময়ের জন্য আলাদা থাকতে পার, পরে আবার একসঙ্গে মিলিত হযো য়েন তোমাদের অসংযমতার জন্য শয়তান তোমাদের প্রলোভনে ফেলতে না পারে৷ 6 আমি এসব কথা হুকুম করার ভাব নিয়ে বলছি না, কিন্তু অনুমতি দিচ্ছি৷ 7 আমার ইচ্ছা সবাই য়েন আমার মতো হয়, কিন্তু প্রত্যেকে ঈশ্বরের কাছ থেকে ভিন্ন ভিন্ন বরদান পেয়েছে, একজন এক রকম, আবার অন্যজন অন্য রকম৷ 8 অবিবাহিত আর বিধবাদের সম্পর্কে আমার বক্তব্য, ‘তারা যদি আমার মতো অবিবাহিত থাকতে পারে তবে তাদের পক্ষে তা মঙ্গল৷ 9 কিন্তু যদি তারা নিজেদের সংযত রাখতে না পারে তবে বিয়ে করুক, কারণ কামের জ্বালায় জ্বলে পুড়ে মরার চেয়ে বরং বিয়ে করা অনেক ভাল৷’ 10 এখন যারা বিবাহিত তাদের আমি এই আদেশ দিচ্ছি৷ অবশ্য আমি দিচ্ছি না, এ আদেশ প্রভুরই - কোন স্ত্রী য়েন তার স্বামীকে পরিত্যাগ না করে৷ 11 যদি সে স্বামীকে ছেড়ে যায় তবে তার একা থাকা উচিত অথবা সে য়েন তার স্বামীর কাছে ফিরে যায়৷ স্বামীর উচিত নয় স্ত্রীকে পরিত্যাগ করা৷ 12 এখন আমি অন্য সমস্ত লোকদের বলি, আমি বলছি, প্রভু নয়৷ যদি কোন খ্রীষ্টানুসারী ভাইয়ের অবিশ্বাসী স্ত্রী থাকে আর সেই স্ত্রী তার সঙ্গে থাকতে রাজী থাকে, তবে সেই স্বামী য়েন তাকে পরিত্যাগ না করে৷ 13 আবার যদি কোন খ্রীষ্টানুসারী স্ত্রীলোকের অবিশ্বাসী স্বামী থাকে আর সেই স্বামী তার সঙ্গে থাকতে রাজী থাকে তবে সেই স্ত্রী য়েন তার স্বামীকে ত্যাগ না করে৷ 14 কারণ বিশ্বাসী স্ত্রীর মধ্য দিয়ে সেই অবিশ্বাসী স্বামী আর বিশ্বাসী স্বামীর মধ্য দিয়ে সেই অবিশ্বাসী স্ত্রী পবিত্রতা লাভ করে৷ তা না হলে তোমাদের ছেলে মেয়েরা অশুচি হত, কিন্তু এখন তারা পবিত্র৷ 15 যাই হোক যদি অবিশ্বাসী বিশ্বাসীকে ছেড়ে য়েতে চায় তবে তাকে তা করতে দাও৷ তখন ভাই বা বোন বাধ্যবাধকতার জন্য আটকে থাকবে না৷ ঈশ্বর আমাদের শান্তিময় জীবনযাপনের জন্যই আহ্বান করেছেন৷ 16 বিশ্বাসী স্ত্রী, তুমি হয়তো তোমার স্বামীকে উদ্ধারের পথ করে দেবে এবং বিশ্বাসী স্বামী তুমি এইবাবে হয়তো তোমার স্ত্রীর উদ্ধারের কারণ হয়ে উঠবে৷ 17 প্রভু যাকে য়ে দাযিত্ব দিয়েছেন, আর ঈশ্বর যাকে য়েমন আহ্বান করেছেন, সে সেইভাবে জীবনযাপন করুক৷ এই আদেশ আমি সব মণ্ডলীতে দিচ্ছি৷ 18 কাউকে কি সুন্নত হওয়া অবস্থায় আহ্বান করা হয়েছে? সে য়েন সুন্নতকে বাতিল না করে৷ কাউকে কি অসুন্নত অবস্থায় আহ্বান করা হয়েছে? তার সুন্নত হওয়ার প্রযোজন নেই৷ 19 সুন্নত হোক বা না হোক, তা গুরুত্বপূর্ণ নয়, ঈশ্বরের আদেশ পালনই হল গুরুত্বপূর্ণ বিষয়৷ 20 ঈশ্বর যাকে য়ে অবস্থায় আহ্বান করেছেন, সে সেই অবস্থাতেই থাকুক৷ 21 যখন তোমাকে আহ্বান করা হয়েছিল, তখন কি তুমি দাস ছিলে? এই অবস্থায় তোমার য়েন দুঃখ না হয়; কিন্তু তুমি যদি স্বাধীন হতে পার, তবে তার সুয়োগ গ্রহণ কর৷ 22 দাস অবস্থায় প্রভু যাকে আহ্বান করেছেন, সে প্রভুর স্বাধীন লোক৷ য়ে স্বাধীন অবস্থায় খ্রীষ্টের ডাক শুনেছে, সে প্রভুর দাসে পরিণত হয়েছে৷ 23 মূল্য দিয়ে তোমাদের কেনা হয়েছে৷ তোমরা সামান্য মানুষের দাসত্ব করো না৷ 24 ভাই ও বোনেরা, ঈশ্বরের কাছ থেকে নতুন জীবন পাবার সময় তোমরা য়ে য়েমন অবস্থায় ছিলে এখন সেই অবস্থাতেই ঈশ্বরের সঙ্গে থাক৷ 25 এখন কুমারী মেয়েদের প্রসঙ্গে আসি৷ তাদের সম্বন্ধে প্রভুর কাছ থেকে আমি কোন আদেশ পাই নি৷ তবে এ বিষয়ে আমার নিজস্ব মত প্রকাশ করছি৷ ঈশ্বরের কাছে আমি দয়া পেয়েছি, এই জন্য তোমরা আমার ওপর নির্ভর করতে পার৷ 26 আমি মনে করি, বর্তমানে এই সঙ্কটময় সময়ে কোন ব্যক্তির পক্ষে সে য়েমন আছে তেমনি থাকাই ভাল৷ 27 তুমি কি কোন স্ত্রীলোকের সঙ্গে বিবাহিত? তবে তাকে ত্যাগ করার চেষ্টা করো না৷ তুমি কি কোন স্ত্রীলোক থেকে মুক্ত আছ? তাহলে স্ত্রী পেতে চেযো না৷ 28 কিন্তু তুমি যদি বিয়ে কর তাতে তোমার কোন পাপ হয় না; আর কোন কুমারী যদি বিয়ে করে তাহলে সে পাপ করে না৷ কিন্তু এমন লোকদের জীবনে সমস্যার মধ্যে পড়তে হবে৷ এই কষ্ট এড়াতে আমি তোমাদের সাহায্য করতে চাই৷ 29 ভাই ও বোনেরা, আমি তোমাদের য়ে কথা বলতে চাইছি, সময় খুব বেশী নেই তাই যাদের স্ত্রী আছে প্রভুর সেবার জন্য এখন থেকে তারা এমনভাবে চলুক য়েন তাদের স্ত্রী নেই; 30 আর যারা দুঃখ করছে, তারা এমনভাবে চলুক য়েন দুঃখ করছে না, যারা আনন্দিত তারা এমনভাবে চলুক য়েন আনন্দ করছে না৷ যারা কেনাকাটা করছে, তারা এমনভাবে করুক য়েন যা কিনেছে তা তাদের নিজেদের নয়৷ 31 যারা সংসারে বিষয় বস্তু ব্যবহার করে, তারা য়েন পুর্নমাত্রায় তাতে আসক্ত না হয়, কারণ এই সংসারের বর্তমান কাঠামো লুপ্ত হচ্ছে৷ 32 আমি চাই য়েন তোমরা দুর্ভাবনা থেকে মুক্ত হও৷ একজন অবিবাহিত লোক প্রভুর কাজের বিষয়ে বেশী করে চিন্তা করতে পারে, কিভাবে সে প্রভুকে সন্তুষ্ট করবে সেটাই তার চিন্তা হয়৷ 33 কিন্তু য়ে বিবাহিত সে এই সংসারের বিষয় চিন্তা করে, কিভাবে সে তার স্ত্রীকে সন্তুষ্ট করবে, সেই হয় তার চিন্তা৷ 34 সে প্রভুকে সন্তুষ্ট করতে চায় আবার সেই সঙ্গে তার স্ত্রীকে খুশী করতে চায়, এইভাবে দুই দিকেই তার চিন্তা হয়৷ একজন অবিবাহিতা বা কুমারী মেয়ে প্রভুর বিষয় চিন্তা করে, য়েন সে দেহে ও আত্মায় পবিত্র হয়৷ কিন্তু বিবাহিতা স্ত্রীলোক তার সংসারের প্রতি বেশী চিন্তা করে, আর তার চিন্তা থাকে কিভাবে সে তার স্বামীকে সন্তুষ্ট করবে৷ 35 আমি তোমাদের ভালোর জন্যই একথা বলছি, তোমাদের ওপর কোন বিধি-নিষেধ চাপিয়ে দেবার জন্য নয়, বরং তোমরা যাতে ঠিক পথে চল আর যাতে তোমরা নানা বিষয়ে জড়িয়ে না পড়ো এবং সম্পূর্ণ সমর্পণ দ্বারা প্রভুর উদ্দেশ্যে নিজেদের উত্সর্গ কর সেইজন্যই বলছি৷ 36 কেউ যদি মনে করে য়ে সে তার কুমারী বাগদত্তার প্রতি সঙ্গত আচরণ করছে না, তার বিয়ের বয়স পার হয়ে যাচ্ছে, সে যদি মনে করে য়ে বিষয়টা শিগ্গির হওয়াই ভাল তবে সে যা চায় তাই করুক৷ এতে সে পাপ করছে না, তার বিয়ে হোক৷ 37 কিন্তু য়ে তার নিজের মনে দৃঢ়, যার কোন চাপ নেই, য়ে তার ইচ্ছাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে আর তার মনে ঠিক করে য়ে সে তার বাগদত্তাকে বিয়ে না করেই নিজেকে রক্ষা করতে সক্ষম, তবে সে ভালই করবে৷ 38 তাই তার বাগদত্তা বন্ধুকে বিয়ে করে সে ঠিক কাজই করে; আর য়ে তাকে বিয়ে না করে সে আরো ভালো করে৷ 39 স্বামী যতদিন বেঁচে থাকে স্ত্রী ততদিনই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ থাকে, কিন্তু স্বামী মারা গেলে সে মুক্ত, সে তখন যাকে ইচ্ছা আবার বিয়ে করতে পারে, অবশ্য সেই লোক য়েন প্রভুর হয়৷ 40 তবে আমার মতে সে যদি আর বিয়ে না করে তবে আরো সুখী হবে৷ এই আমার মত আর আমি মনে করি আমারও ঈশ্বরের আত্মা আছে৷
1 Corinthians 8:1 এখন প্রতিমার সামনে উত্সর্গ করা খাবারের বিষয়ে বলছি: আমরা জানি য়ে, ‘আমাদের সবার জ্ঞান আছে৷’ ‘জ্ঞান’ মানুষকে আত্মগর্বে ফাঁপিয়ে তোলে; কিন্তু ভালোবাসা অপরকে গড়ে তোলে৷ 2 যদি কেউ মনে করে সে কিছু জানে, তবে তার যা জানা উচিত ছিল এখনও সে তা জানে না৷ 3 কিন্তু কেউ যদি ঈশ্বরকে ভালবাসে, তবে ঈশ্বর তাকে জানেন৷ 4 প্রতিমার কাছে উত্সর্গ করা খাদ্যবস্তুর বিষয়ে বলি, আমরা জানি এই জগতে প্রতিমা আসলে কিছুই নয়, এবং ঈশ্বর মাত্র একজনই৷ 5 স্বর্গে হোক্ বা পৃথিবীতে হোক্, লোকে যাদের দেবতা বলে সেইরকম বহু ‘দেবতারা’ বহু ‘প্রভুরা’ থাকলেও 6 কিন্তু আমাদের জন্য একমাত্র ঈশ্বর আছেন; তিনি আমাদের পিতা, তাঁর থেকেই সব কিছু সৃষ্টি হয়েছে, আমরা তাঁর জন্যই বেঁচে আছি৷ একমাত্র প্রভু আছেন, তিনি যীশু খ্রীষ্ট, তাঁর মাধ্যমেই সব কিছু সৃষ্ট, তাঁর মাধ্যমেই আমরা বেঁচে আছি৷ 7 কিন্তু সকলের এ জ্ঞান নেই৷ কিছু লোক এখনও প্রতিমার সংশ্রবে থাকায় প্রতিমার কাছে উত্সর্গ করা খাদ্য বস্তুকে প্রসাদ জ্ঞানে খায়, আর তাদের বিবেক দুর্বল হওয়াতে দোষী প্রতিপন্ন হয়৷ 8 কিন্তু খাদ্যবস্তু আমাদের ঈশ্বরের কাছে নিয়ে আসে না৷ ঐ সব যদি আমরা না খাই তাহলে আমাদের কোন ক্ষতি হয় না; আর যদি খাই তাহলেও কোন লাভ হয় না৷ 9 কিন্তু সাবধান, তোমাদের এই স্বাধীনতা য়েন দুর্বল এমন লোকদের পাপের কারণ না হয়৷ 10 তুমি জান য়ে প্রতিমা কিছুই নয়, বেশ; কিন্তু দুর্বল চিত্তের কেউ যদি তোমাকে মন্দিরে বসে খেতে দেখে তবে সে দুর্বল চিত্তের বলে তার বিবেক কি তাকে প্রতিমার কাছে উত্সর্গ করা বলির মাংস খেতে সাহস য়োগাবে না? যদিও সে বিশ্বাস করে এটা ঠিক নয়৷ 11 এইভাবে তোমার এই জ্ঞানের দ্বারা সেই দুর্বল চিত্তের ভাই, যার জন্য খ্রীষ্ট মরেছেন, সে ধ্বংস হয়৷ 12 তাই এইভাবে বিশ্বাসী ভাইদের বিরুদ্ধে পাপ করলে ও তাদের দুর্বল বিবেকে আঘাত করলে, তোমরা খ্রীষ্টের বিরুদ্ধেই পাপ কর৷ 13 সেইজন্য কোন খাদ্য খাওয়াতে যদি আমার ভাই পাপে পড়ে, তবে আমি কখনও তা খাব না৷ আমি মাংস খাওয়া ছেড়ে দেব য়েন আমি আমার ভাইয়ের পাপের কারণ না হই৷
1 Corinthians 9:1 আমি কি স্বাধীন মানুষ নই? আমি কি একজন প্রেরিত নই? আমাদের প্রভু যীশুকে কি আমি দেখিনি? তোমরাই কি প্রভুতে আমার কাজের বল নও? 2 অন্যরা আমাকে যদি প্রেরিত বলে গ্রহণ নাও করে, তবূ তোমরা নিশ্চয় আমাকে প্রেরিত বলে মেনে নেবে৷ প্রভুতে আমি য়ে প্রেরিত তোমরাই তো তার প্রমাণ৷ 3 কিছু লোক যারা আমার দোষগুণ বিচার করে, তাদের কাছে আমার উত্তর এই; 4 আমাদের কি ভোজন পান করার অধিকার নেই? 5 অন্যান্য প্রেরিতেরা, প্রভুর আপন ভাইয়েরা ও কৈফা য়েমন করেন তেমনভাবে আমাদের কি কোন বিশ্বাসীকে স্ত্রী হিসাবে সঙ্গে নিয়ে যাবার অধিকার নেই? 6 বার্ণবা ও আমাকেই কি কেবল জীবিকা নির্বাহের জন্য কাজ করতে হবে? 7 কোন সৈনিক কি তার নিজের খরচে সৈন্যদলে থাকে? য়ে দ্রাক্ষা ক্ষেত প্রস্তুত করে সে কি তার ফল খায় না? য়ে মেষপাল চরায় সে কি মেষদের দুধ পান করে না? 8 আমি এসব মানুষের বিচার বুদ্ধির ওপর নির্ভর করে বলছি না৷ ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থায় কি একই কথা বলে না? 9 কারণ মোশির বিধি-ব্যবস্থায় আছে, ‘য়ে বলদ শস্য মাড়ে তার মুখে জালতি বেঁধো না৷’ঈশ্বর কি কেবল বলদের কথা ভেবেই একথা বলেছেন? 10 তা নয়, কিন্তু আমাদের কথা চিন্তা করেই তিনি এসব কথা বলেছেন, শাস্ত্রে আমাদের জন্যই এসব লেখা হয়েছে, কারণ য়ে চাষ করে, সে ফসল পাবার প্রত্যাশাতেই তা করে; আর য়ে শস্য মাড়াই করে, সে মাড়াই করা শস্য থেকে কিছু পাবার প্রত্যাশাতেই তা করে৷ 11 আমরা তোমাদের মাঝে আত্মিক বীজ বুনেছি, য়েন এখন ফসল হিসাবে যদি তোমাদের কাছ থেকে পার্থিব কোন কিছু পাই, তবে তা কি খুব বেশী কিছু পাওয়া হবে? 12 এই ব্যাপারে তোমাদের কাছ থেকে অন্যেরা যখন দাবী করে, তখন তা পাবার জন্য আমাদের নিশ্চয় আরও বেশী অধিকার আছে৷ আমরা তোমাদের ওপর এই অধিকার খাটাই না৷ আমরা বরং সকলই সহ্য করছি, পাছে খ্রীষ্টের সুসমাচার গ্রহণের পথে কোন বাধার সৃষ্টি হয়৷ 13 তোমরা তো জান, যারা মন্দিরে কাজ করে, তারা মন্দির থেকেই তাদের খাবার পায়৷ যারা যজ্ঞবেদীর ওপর নিয়মিত নৈবেদ্য উত্সর্গ করে, তারা তারই অংশ পায়৷ 14 তেমনি প্রভুও সুসমাচার প্রচারকদের জন্য এই বিধান দিয়েছেন, য়েন সুসমাচার প্রচারের মাধ্যমেই তাদের জীবিকা নির্বাহ হয়৷ 15 কিন্তু আমি এই অধিকার কখনও প্রযোগ করিনি৷ আমি তোমাদের কাছ থেকে ঐরকম সাহায্য নেবার জন্যও লিখছি না৷ এ বিষয়ে আমার য়ে গর্ব আছে, তা যদি কেউ কেড়ে নেয় তবে তার থেকে আমার মরণ ভাল৷ 16 তবে আমি সুসমাচার প্রচার করি বলে গর্ব করছি না৷ সুসমাচার প্রচার করা আমার কর্তব্য, এটি আমার অবশ্য করণীয়৷ আমি যদি সুসমাচার প্রচার না করি তবে তা আমার পক্ষে কত দুর্ভাগ্যের বিষয় হবে! 17 যদি নিজের ইচ্ছায় সুসমাচার প্রচার করতাম তবে আমি পুরস্কার পাবার য়োগ্য হতাম৷ কিন্তু দাযিত্ব হিসাবে আমার ওপর এই কাজ ন্যস্ত হয়েছে, 18 সেখানে আমি কি পুরস্কার পাব? এই আমার পুরস্কার; যখন আমি সুসমাচার প্রচার করি, তা বিনামূল্যে করি৷ এইভাবে সুসমাচার প্রচার করা কালীন আমার বেতন পাবার য়ে অধিকার আছে, তা আমি ব্যবহার করি না৷ 19 আমি স্বাধীন! আমি কারোর অধীনে নেই, তবু আমি সকলের দাস হলাম, যাতে অনেককে আমি খ্রীষ্টের জন্য লাভ করতে পারি৷ 20 ইহুদীদের জয় করার জন্য আমি ইহুদীদের কাছে ইহুদীদের মতো হলাম৷ যারা বিধি-ব্যবস্থার অধীনে জীবন কাটাচ্ছে, তাদের লাভ করার জন্য আমি নিজে বিধি-ব্যবস্থার অধীন না হলেও আমি তাদের মত হলাম৷ 21 আবার যারা বিধি-ব্যবস্থার অধীনে নেই তাদেরকে জয় করার জন্য আমি তাদের মতো হলাম৷ অবশ্য এর মানে এই নয় য়ে আমি বিধি-ব্যবস্থা মানি না, আমি তো খ্রীষ্টের বিধি-ব্যবস্থার অধীনে জীবনযাপন করছি৷ 22 যারা দুর্বল, তাদের কাছে আমি দুর্বল হলাম, য়েন তাদেরকে জয় করতে পারি৷ আমি সকলের কাছে তাদের মনের মত হলাম, যাতে সন্ভাব্য সকল উপায়ে তাদের বাঁচাতে পারি৷ 23 আমি এসব সুসমাচারের জন্যই করি, য়েন এর আশীর্বাদের সহভাগী হই৷ 24 তোমরা কি জান না, যখন দৌড় প্রতিয়োগিতা হয় তখন অনেকেই দৌড়ায়; কিন্তু কেবল একজনই বিজযী হয়ে পুরস্কার পায়৷ তাই এমনভাবে দৌড়োও য়েন পুরস্কার পাও! 25 আবার দেখ, য়ে সব প্রতিয়োগী খেলায় অংশগ্রহণ করে, তারা কঠিন নিয়ম পালন করে৷ তারা অস্থাযী বিজয় মুকুট পাবার জন্য তা করে; কিন্তু আমরা অক্ষয় মুকুটে ভূষিত হবার জন্য করি৷ 26 তাই সেইভাবে একটা লক্ষ্য নিয়ে আমি দৌড়োচ্ছি৷ শূন্যে মুষ্টাঘাত করছে, এমন লোকের মত আমি লড়াই করি না৷ 27 বরং আমি আমার দেহকে কঠোরতা ও সংযমের মধ্যে রেখেছি, য়েন অন্য লোকদের কাছে সুসমাচার প্রচার করার পর নিজে কোনভাবে ঈশ্বরের দৃষ্টিতে অয়োগ্য বলে বিবেচিত না হই৷
1 Corinthians 10:1 আমার ভাই ও বোনেরা, আমি চাই য়ে তোমরা একথা জান য়ে আমাদের পিতৃপুরুষরা যখন মোশিকে অনুসরণ করেছিলেন তখন তাঁদের কি হয়েছিল৷ তাঁরা সকলে মেঘের নীচে ছিলেন, সকলেই সাগর পার হয়েছিলেন৷ 2 তাঁরা সকলে মোশির অনুগামী হয়ে মেঘে ও সমুদ্রে বাপ্তাইজ হয়েছিলেন৷ 3 তাঁরা সকলে একই ধরণের আত্মিক খাদ্য পেয়েছিলেন; 4 আর একই আত্মিক পানীয় পান করেছিলেন৷ তাঁরা এক আত্মিক শৈল থেকে সেই পানীয় পান করতেন যা তাঁদের সঙ্গে সঙ্গে যাচ্ছিল, সেই শৈলই হচ্ছেন খ্রীষ্ট৷ 5 কিন্তু তাঁদের মধ্যে অধিকাংশ লোকের প্রতিই ঈশ্বর সন্তুষ্ট ছিলেন না, আর তারা পথে প্রান্তরের মধ্যে মারা পড়ল৷ 6 এসব ঘটনা আমাদের জন্য দৃষ্টান্তস্বরূপ ঘটল, যাতে তারা য়েমন মন্দ বিষয়ে অভিলাষ করেছিল আমরা তা না করি৷ 7 তাদের মধ্যে কিছু লোক য়েমন প্রতিমা পূজা শুরু করেছিল তেমন তোমরা প্রতিমা পূজা শুরু করো না৷ কারণ শাস্ত্রে লেখা আছে: ‘লোকেরা ভোজন পান করতে বসল আর উঠে দাঁড়িয়ে নাচতে শুরু করল৷’ 8 তাদের মধ্যে য়েমন কতক লোক য়ৌন পাপে পাপী হয়েছিল আর একদিনে তেইশ হাজার লোক তাদের পাপের জন্য মারা পড়েছিল, আমরা য়েন তেমনি য়ৌন পাপ না করি৷ 9 তাদের মধ্যে য়েমন কিছু লোক প্রভুর পরীক্ষা করে সাপের কামড়ে মারা পড়েছিল, আমরা য়েন তেমন পরীক্ষা না করি৷ 10 আবার তাদের মধ্যে কিছু লোক য়েমন অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল আর ধ্বংসকারী স্বর্গদূতের কবলে পড়ে ধ্বংস হয়েছিল, তোমরা তেমনি অসন্তোষ প্রকাশ করো না৷ 11 তাদের প্রতি যা কিছু ঘটেছিল তা দৃষ্টান্তস্বরূপ রয়ে গেছে৷ আমাদের সাবধান করে দেবার জন্য এসব কথা লেখা হয়েছে, কারণ আমরা শেষ যুগে এসে পৌঁছেছি৷ 12 তাই য়ে মনে করে য়েন শক্তভাবে দাঁড়িয়ে আছে, সে সাবধান হোক, পাছে পড়ে মারা যায়৷ 13 য়ে প্রলোভনগুলি স্বাভাবিকভাবে লোকদের কাছে আসে তার থেকে বেশী কিছু তোমাদের কাছে আসেনি৷ তোমরা ঈশ্বরে বিশ্বস্ত থাক, য়ে সব প্রলোভন প্রতিরোধ করার ক্ষমতা তোমাদের নেই, তিনি তা তোমাদের জীবনে আসতে দেবেন না; কিন্তু প্রলোভনের সাথে সাথে তার থেকে উদ্ধারের পথ তিনিই করে দেবেন, য়েন তোমরা সহ্য করতে পার৷ 14 আমার প্রিয় বন্ধুরা, সব রকম প্রতিমা পূজা থেকে দূরে থাক৷ 15 আমি তোমাদের বুদ্ধিমান জেনে একথা বলছি৷ আমি যা বলি তা তোমরা নিজেরাই বিচার করে দেখ৷ 16 আশীর্বাদের পানপাত্র, যা নিয়ে আমরা ধন্যবাদ দিই তা কি খ্রীষ্টের রক্তের সহভাগীতা নয়? য়ে রুটি ভেঙে টুকরো টুকরো করে খাওয়া হয়, তা কি খ্রীষ্টের দেহের সহভাগীতা নয়? 17 রুটি একটাই কিন্তু আমরা সকলেই সেই একটা রুটি থেকেই অংশ গ্রহণ করি৷ তাই আমরা অনেক হলেও আসলে আমরা এক দেহ৷ 18 ইস্রায়েল জাতির কথা চিন্তা কর৷ যারা বলির মাংস খায় তারা কি সেই যজ্ঞবেদীর নৈবেদ্যর সহভাগী হয় না? 19 তাহলে আমার কথার অর্থ কি হল? আমি কি এই কথা বলছি, য়ে প্রতিমার কাছে য়েসব ভোগ উত্সর্গ করা হয় তার কোন তাত্পর্য় আছে অথবা প্রতিমার কোন বাস্তবতা আছে? 20 কিন্তু আমার কথার অর্থ এই লোকেরা যা কিছু প্রতিমার উদ্দেশ্যে বলিদান করে, তারা তা ভূতদের উদ্দেশ্যেই করে, ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে নয়; আর আমি চাই না য়ে তোমাদের কোনভাবে ভুতদের সঙ্গে সংয়োগ থাকে৷ 21 তোমরা প্রভুর পানপাত্র ও ভুতদের পানপাত্র, উভয় থেকে পান করতে পার না৷ আবার তোমরা প্রভুর টেবিল ও ভুতদের টেবিল উভয় টেবিলে অংশ নিতে পার না৷ 22 তোমরা কি প্রভুকে ঈর্ষান্বিত করতে চাইছ? আমরা কি তাঁর থেকে শক্তিশালী? কখনই না৷ 23 ‘আমাদের সব কিছু করার স্বাধীনতা আছে৷’ তবে সব কিছুই য়ে মঙ্গলজনক তা নয়৷ ‘হ্যাঁ, য়ে কোন কিছু করার স্বাধীনতা আমাদের দেওয়া আছে৷’ তবে সব কিছুই য়ে গড়ে তোলে তা নয়৷ 24 কেউ য়েন স্বার্থ সিদ্ধির চেষ্টা না করে; বরং প্রত্যেকে য়েন অপরের মঙ্গল চায়৷ 25 বিবেকের প্রশ্ন না তুলে য়ে কোন মাংস বাজারে বিক্রি হয় তা খাও৷ 26 কারণ শাস্ত্রে য়েমন লেখা আছে: ‘পৃথিবী ও তার মধ্যেকার সব কিছুই প্রভুর৷’ 27 যদি কোন অবিশ্বাসী ভাই তোমাকে নিমন্ত্রণ করে; আর যদি তুমি নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে চাও, তবে নিজের বিবেকের কাছে কোন কিছু জিজ্ঞাসা না করে য়ে কোন খাদ্যদ্রব্য পরিবেশন করে সামনে রাখা হয়, তা খেও৷ 28 কিন্তু কেউ যদি বলে য়ে, ‘এ হল প্রতিমার প্রসাদ’ তবে য়ে জানালো, তার কথা চিন্তা করে ও বিবেকের কথা মনে রেখে, তা খেও না৷ 29 আমি কোন ব্যক্তির নিজের বিবেকের নয়, কিন্তু অপর ব্যক্তির বিবেকের বিষয় বলছি৷ আমার স্বাধীনতা কেন অপরের বিবেকের দ্বারা বিচারিত হবে? 30 যদি আমি ধন্যবাদ জানিয়ে খাই, তাহলে য়ে বিষয়ের জন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিয়েছি সে বিষয়ে আমার সমালোচনা হবে এ আমি চাই না৷ 31 তাই তোমরা আহার কর, কি পান কর বা যা কিছু কর, সব কিছুই ঈশ্বরের মহিমার জন্য কর৷ 32 কি ইহুদী, কি গ্রীক, কি ঈশ্বরের মণ্ডলী, কারো বিঘ্নের কারণ হযো না৷ 33 য়েমন আমি নিজের ভাল চাই না কিন্তু অপরের ভাল চাই, য়েন তারা উদ্ধার লাভ করে৷
1 Corinthians 11:1 আমি য়েমন খ্রীষ্টের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করি, তোমরাও তেমনি আমার দৃষ্টান্ত অনুসরণ কর৷ 2 আমি তোমাদের প্রশংসা করছি, কারণ তোমরা সব সময় আমার কথা স্মরণ করে থাক, আর তোমাদের আমি য়ে শিক্ষা দিয়েছি তা তোমরা বেশ ভালভাবে পালন করছ৷ 3 কিন্তু আমি চাই একথা তোমরা বোঝ য়ে প্রত্যেক পুরুষের মস্তক হচ্ছেন খ্রীষ্ট৷ স্ত্রীর মস্তক তার স্বামী, আর খ্রীষ্টের মস্তক হলেন ঈশ্বর৷ 4 যদি কোন পুরুষ তার মাথা ঢেকে রেখে প্রার্থনা করে অথবা ভাববাণী বলে তবে সে তার মাথার অসম্মান করে৷ 5 কিন্তু য়ে স্ত্রীলোক মাথা না ঢেকে প্রার্থনা করে বা ভাববানী বলে, সে তার নিজের মাথার অপমান করে, সে মাথা মোড়ানো স্ত্রীলোকের মত হয়ে পড়ে৷ 6 স্ত্রীলোক যদি তার মাথা না ঢাকে তবে তার চুল কেটে ফেলাই উচিত৷ কিন্তু চুল কেটে ফেলা বা মাথা নেড়া করা যদি স্ত্রীলোকের পক্ষে লজ্জার বিষয় হয়, তবে সে তার মাথা ঢেকে রাখুক৷ 7 আবার পুরুষ মানুষের মাথা ঢেকে রাখা উচিত নয়, কারণ সে ঈশ্বরের স্বরূপ ও মহিমা প্রতিফলন করে৷ কিন্তু স্ত্রীলোক হল পুরুষের মহিমা৷ 8 কারণ স্ত্রীলোক থেকে পুরুষের সৃষ্টি হয় নি; কিন্তু পুরুষ থেকেই স্ত্রীলোক এসেছে৷ 9 স্ত্রীলোকের জন্য পুরুষের সৃষ্টি হয় নি, কিন্তু পুরুষের জন্য স্ত্রীলোকের সৃষ্টি হয়েছিল৷ 10 এই কারণে এবং স্বর্গদূতগণের জন্য অধীনতার চিহ্ন হিসাবে একজন স্ত্রীলোক তার মাথা ঢেকে রাখবে৷ 11 যাই হোক্ প্রভুতে স্ত্রীলোক ছাড়া পুরুষ নয়, এবং পুরুষ ছাড়া স্ত্রীলোক নয়৷ 12 য়েমন পুরুষ থেকে স্ত্রীলোকের সৃষ্টি হল, তেমন আবার পুরুষের জন্ম স্ত্রীলোক থেকে হল, বাস্তবে এ সবকিছুই ঈশ্বর থেকে হয়৷ 13 তোমরা নিজেরাই বিচার করে দেখ, মাথা না ঢেকে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করা কি স্ত্রীলোকের শোভা পায়? 14 স্বাভাবিক বিবেচনাও বলে য়ে পুরুষ মানুষ যদি লম্বা চুল রাখে তবে তার সম্মান থাকে না৷ 15 কিন্তু স্ত্রীলোকের লম্বা চুল তার গৌরবের বিষয় কারণ সেই লম্বা চুল তার মাথা ঢেকে রাখার জন্য তাকে দেওয়া হয়েছে৷ 16 কেউ কেউ হয়তো এ নিয়ে তর্ক করতে চাইবে, কিন্তু আমরা ও ঈশ্বরের সকল মণ্ডলী, এই প্রথা মেনে চলি না৷ 17 কিন্তু এখন আমি য়ে বিষয়ে তোমাদের নির্দেশ দিচ্ছি সেই বিষয়ে আমি তোমাদের প্রশংসা করতে পারি না, কারণ তোমরা যখন একত্রিত হও তাতে ভাল না হয়ে শুনছি তোমাদের ক্ষতি হচ্ছে৷ 18 প্রথমতঃ আমি শুনেছি য়ে তোমরা যখন মণ্ডলীতে সমবেত হও, তখন তোমাদের মধ্যে অনেক দল থাকে, আর আমি এই ব্যাপারে কিছুটা বিশ্বাস করি৷ 19 তোমাদের মধ্যে ভিন্নতা অবশ্যই থাকবে, যাতে তোমাদের মধ্যে যারা যথার্থ খাঁটি তারা স্পষ্ট হয়৷ 20 তাই যখন তোমরা সমবেত হও, তখন তোমরা প্রকৃতপক্ষে প্রভুর ভোজ খাও না৷ 21 কারণ খাবার সময় প্রত্যেকে নিজের নিজের খাবার আগে খেয়ে নেয়, তাতে কেউ বা ক্ষুধার্ত থাকে; আর কেউ কেউ অতিরিক্ত পানাহার করে বেহুঁস হয়ে যায়৷ 22 পানাহার করার জন্য তোমাদের কি নিজেদের বাড়ীঘর নেই? তোমরা কি ঈশ্বরের মণ্ডলীকে তুচ্ছ জ্ঞান কর; আর যাদের কিছু নেই তাদের কি লজ্জায় ফেলতে চাও? আমি তোমাদের কি বলব? এমন কাজ করার জন্য আমি কি তোমাদের প্রশংসা করব? এবিষয়ে আমি তোমাদের প্রশংসা করব না৷ 23 আমি প্রভুর কাছ থেকে য়ে শিক্ষা পেয়েছি তোমাদের তা দিয়েছি৷ য়ে রাত্রে প্রভু যীশুকে হত্যার জন্য শত্রুর হাতে সঁপে দেওয়া হয়, সেই রাত্রে তিনি একটি রুটি নিয়ে, 24 ধন্যবাদ দিলেন ও তা ভেঙ্গে বললেন, ‘এ আমার দেহ; এ তোমাদের জন্য, আমার স্মরণে এটি করো৷’ 25 খাওয়া শেষ হলে, সেইভাবে তিনি পানপাত্র তুলে নিয়ে বললেন, ‘এই পানপাত্র হল আমার রক্তে স্থাপিত নতুন চুক্তি৷ তোমরা যতবার এই পানপাত্র থেকে পান করবে আমার স্মরণে তো করো৷’ 26 কারণ তোমরা যতবার এই রুটি খাবে ও এই পানপাত্রে পান করবে, ততবার তোমরা প্রভুর মৃত্যুর কথাই প্রচার করতে থাকবে, যতদিন পর্যন্ত না তিনি ফিরে আসেন৷ 27 তাই য়ে কেউ অয়োগ্যভাবে প্রভুর এই রুটি খায় ও পানপাত্রে পান করে, সে প্রভুর দেহের ও রক্তের জন্য দাযী হবে৷ 28 এই রুটি খাওয়ার ও সেই পানপাত্রে পান করার আগে প্রত্যেকের উচিত নিজের হৃদয় পরীক্ষা করা৷ 29 কারণ য়ে অয়োগ্যভাবে এই রুটি খায় ও পানপাত্রে পান করে, সে যদি দেহের অর্থ কি তা না বোঝে তবে সেই খাদ্য পানীয় ঈশ্বরের বিচারদণ্ডেই পরিণত হয়৷ 30 সেই জন্য তোমাদের মধ্যে অনেকে আজ দুর্বল ও অসুস্থ, অনেকে মারাও পড়েছে৷ 31 কিন্তু যদি নিজেদের ঠিক মতো পরীক্ষা করতাম, তাহলে ঈশ্বরকে আমাদের বিচার করতে হত না৷ 32 কিন্তু যখন প্রভু আমাদের বিচার করেন, তিনি আমাদের শাসনও করেন, যাতে আমরা জগতের জন্য লোকদের সঙ্গে বিচারপ্রাপ্ত না হই৷ 33 তাই, আমার ভাই ও বোনেরা, তোমরা যখন খাওয়া-দাওয়া করার জন্য সমবেত হও, তখন একজন অন্য জনের জন্য অপেক্ষা করো৷ 34 যদি কারোর খিদে পায়, তবে সে তার বাড়িতে খেয়ে নিক্৷ এইভাবে চল য়েন তোমরা একত্রিত হলে তোমাদের ওপর ঈশ্বরের দণ্ডাজ্ঞা না আসে; আর আমি যখন যাব তখন অন্য বিষয়গুলির সমাধান করব৷
1 Corinthians 12:1 আমার ভাই ও বোনেরা, আমি চাই য়ে তোমরা সঠিকভাবে এগুলি বুঝে নাও৷ 2 তোমরা জান, যখন তোমরা অবিশ্বাসী ছিলে, তখন তোমরা বোবা প্রতিমাগুলির দিকেই পরিচালিত হতে৷ 3 তাই আমি তোমাদের বলছি য়ে, ঈশ্বরের আত্মার প্রেরণায় কেউ কথা বললে সে কখনও, ‘যীশু অভিশপ্ত’ একথা বলতে পারে না৷ আবার পবিত্র আত্মার প্রেরণা ছাড়া কেউ বলতে পারে না য়ে, ‘যীশুই প্রভু৷’ 4 আবার নানা প্রকার আত্মিক বরদান আছে, কিন্তু সেই একমাত্র পবিত্র আত্মাই এইসব বরদান দিয়ে থাকেন৷ 5 নানা প্রকার সেবার কাজও আছে, কিন্তু আমরা সকলে একই প্রভুর সেবা করি৷ 6 কর্ম সাধনের বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে, কিন্তু সেই একই ঈশ্বর সব রকম কাজ সকল মানুষের মধ্যে করান৷ 7 মঙ্গলের জন্য প্রত্যেকের কাছে আত্মার দান প্রকাশ করা হয়েছে৷ 8 সেই আত্মার দ্বারা একজনকে প্রজ্ঞার বাণী বলার ক্ষমতা দেওয়া হয়, অন্যজনকে জ্ঞানের বাণী বলার ক্ষমতা দেওয়া হয়৷ 9 আবার একজনকে সেই একই আত্মার দ্বারা বিশ্বাস দেওয়া হয়, অন্যজনকে রোগীদের সুস্থ করার ক্ষমতা দেওয়া হয়৷ 10 আবার কাউকে অলৌকিক কাজ করার পরাক্রম, ভাববানী বলার ক্ষমতা, বিভিন্ন আত্মাকে চিনে নেবার ক্ষমতা, বিভিন্ন ভাষায় কথা বলার ক্ষমতা বা সেই সব ভাষার তর্জমা করার ক্ষমতা দেওয়া হয়৷ 11 কিন্তু এইসব কাজ সেই এক আত্মাই সম্পন্ন করেন এবং কাকে কি ক্ষমতা দেবেন তা তিনিই স্থির করেন৷ 12 আমাদের প্রত্যেকের দেহ নানা অঙ্গ প্রত্যঙ্গ নিয়ে গঠিত৷ যদিও অনেক অঙ্গ প্রত্যঙ্গ তবু তারা মিলে হয় একটি দেহ; খ্রীষ্টও ঠিক সেই রকম৷ 13 আমাদের মধ্যে কেউ ইহুদী, কেউ অইহুদী, কেউ দাস, আবার কেউ স্বাধীন, কিন্তু আমরা সকলেই দেহেতে এক হওয়ার জন্য এক আত্মার দ্বারা বাপ্তাইজ হয়েছি৷ আর আমাদের সকলকেই পান করার জন্য একই আত্মা দেওয়া হয়েছে৷ 14 একজনের দেহের মধ্যে একের অধিক অঙ্গ আছে৷ 15 পা যদি বলে, ‘আমি তো হাত নই; তাই আমি দেহের অঙ্গ নই,’ তবে কি তা দেহের অঙ্গ হবে না? 16 কান যদি বলে, ‘আমি তো চোখ নই, তাই আমি দেহের অঙ্গ নই,’ তবে কি তা দেহের অঙ্গ হবে না? 17 সমস্ত দেহটাই যদি চোখ হত তবে কান কোথায় থাকত? আর সমস্ত দেহটাই যদি কান হত তবে নাক কোথায় থাকত? 18 কিন্তু ঈশ্বর য়েমনটি চেয়েছেন সেইভাবে দেহের সমস্ত অংশগুলিকে সাজিয়েছেন৷ তা না হয়ে সব অঙ্গগুলি যদি একরকম হত তবে দেহ বলে কি কিছু থাকত? 19 20 কিন্তু এখন অঙ্গ অনেক বটে, কিন্তু দেহ এক৷ 21 চোখ কখনও হাতকে বলতে পারে না য়ে, ‘তোমাকে আমার কোন দরকার নেই৷’ আবার মাথাও পা দুটিকে বলতে পারে না য়ে, ‘তোমাদের আমার কোন প্রযোজন নেই৷’ 22 বরং দেহের সেই অংশগুলি, যাদের দুর্বল মনে হয় তাদের প্রযোজন খুবই বেশী৷ 23 য়ে অঙ্গগুলির প্রতি আমরা যত্নবান নই, তাদের বেশী যত্ন নিতে হবে৷ আমাদের য়ে সব অঙ্গ প্রদর্শনের অয়োগ্য সেগুলিকেই বেশী করে শালীনতায় ভূষিত করা হয়৷ 24 আমাদের য়ে সব অঙ্গ সুশ্রী, সেগুলির জন্য বিশেষ ব্যবস্থার প্রযোজন হয় না৷ ঈশ্বর দেহকে এমনভাবে গঠন করেছেন য়েন য়ে অঙ্গের মর্য়াদা নেই সে অধিক মর্য়াদা পায়, 25 য়েন দেহের মধ্যে কোন বিভেদ সৃষ্টি না হয়, কিন্তু দেহের প্রতিটি অঙ্গই য়েন পরস্পরের জন্য সমানভাবে চিন্তা করে৷ 26 দেহের কোন একটি অঙ্গ যদি কষ্ট পায়, তবে তার সাথে সবাই কষ্ট করে আর একটি অঙ্গ যদি মর্য়াদা পায়, তাহলে তার সঙ্গে অপর সকল অঙ্গ ও খুশী হয়৷ 27 ঠিক সেই রকম, তোমরাও খ্রীষ্টের দেহ, আর এক এক জন এক একটি অঙ্গ৷ 28 ঈশ্বর মণ্ডলীতে প্রথমতঃ প্রেরিতদের, দ্বিতীয়তঃ ভাববাদীদের, তৃতীয়তঃ শিক্ষকদের রেখেছেন৷ এরপর নানা প্রকার অলৌকিক কাজ করার ক্ষমতা, রোগীদের আরোগ্য দান করার ক্ষমতা, উপকার করার ক্ষমতা, নেতৃত্ব দেবার ক্ষমতা ও বিভিন্ন ভাষায় কথা বলার ক্ষমতা দিয়েছেন৷ 29 সকলেই কি প্রেরিত? সকলেই কি ভাববাদী? সকলেই কি শিক্ষক? সকলেই কি অলৌকিক কাজ করার ক্ষমতা পেয়েছে? 30 সকলেই কি রোগীকে আরোগ্য দান করার ক্ষমতা পেয়েছে? না৷ সকলেই কি বিভিন্ন ভাষায় কথা বলার ক্ষমতা পেয়েছে? বা সকলেই কি বিভিন্ন ভাষায় তর্জমা করার ক্ষমতা পেয়েছে? না৷ 31 কিন্তু তোমরা আত্মার শ্রেষ্ঠ বরদানগুলি পাবার জন্য বাসনা কর৷
1 Corinthians 13:1 আর এখন আমি তোমাদের এসবের থেকে আরো উত্কৃষ্ট একটা পথ দেখাব৷ আমি যদি বিভিন্ন মানুষের ভাষা এমনকি স্বর্গদূতদের ভাষাও বলি কিন্তু আমার মধ্যে যদি ভালবাসা না থাকে, তবে আমি জোরে বাজানো ঘন্টা বা ঝনঝন করা করতালের আওয়াজের মতো৷ 2 আমি যদি ভাববাণী বলার ক্ষমতা পাই, ঈশ্বরের সব নিগূঢ়তত্ত্ব ভালভাবে বুঝি এবং সব ঐশ্বরিক জ্ঞান লাভ করি, আমার যদি এমন বড় বিশ্বাস থাকে যার শক্তিতে আমি পাহাড় পর্যন্ত টলাতে পারি, অথচ আমার মধ্যে যদি ভালবাসা না থাকে তবে এসব থাকা সত্ত্বেও আমি কিছুই নয়৷ 3 আমি যদি আমার যথা সর্বস্ব দিয়ে দরিদ্রদের মুখে অন্ন য়োগাই, যদি আমার দেহকে আহুতি দেবার জন্য আগুনে সঁপে দিই, 4 কিন্তু যদি আমার মধ্যে ভালবাসা না থাকে, তাহলে আমার কিছুই লাভ নেই৷ ভালবাসা ধৈর্য় ধরে, ভালবাসা দয়া করে, ভালবাসা ঈর্ষা করে না, অহঙ্কার বা গর্ব করে না৷ 5 ভালবাসা কোন অভদ্র আচরণ করে না৷ ভালবাসা স্বার্থ-সিদ্ধির চেষ্টা করে না, কখনও রেগে ওঠে না, অপরের অন্যায় আচরণ মনে রাখে না৷ 6 ভালবাসা কোন মন্দ বিষয় নিয়ে আনন্দ করে না, কিন্তু সত্যে আনন্দ করে৷ 7 ভালবাসা সব কিছুই সহ্য করে, সব কিছু বিশ্বাস করে, সব কিছুতেই প্রত্যাশা রাখে, সবই ধৈর্য়ের সঙ্গে গ্রহণ করে৷ 8 ভালবাসার কোন শেষ নেই৷ কিন্তু ভাববাণী বলার ক্ষমতা যদি থাকে তো লোপ পাবে৷ যদি অপরের ভাষায় কথা বলার ক্ষমতা থাকে, তবে তাও একদিন শেষ হবে৷ যদি জ্ঞান থাকে, তবে তাও একদিন লোপ পাবে৷ 9 এসব কিছুর পরিসমাপ্তি ঘটবে কারণ আমাদের য়ে জ্ঞান ও ভাববাণী বলার ক্ষমতা তা অসম্পূর্ণ৷ 10 কিন্তু যখন সম্পূর্ণ সিদ্ধ বিষয় আসবে, তখন যা অসম্পূর্ণ ও সীমিত সে সব লোপ পেয়ে যাবে৷ 11 আমি যখন শিশু ছিলাম, তখন শিশুর মতো কথা বলতাম, শিশুর মতোই চিন্তা করতাম, ও শিশুর মতোই বিচার করতাম৷ এখন আমি পরিণত মানুষ হয়েছি, তাই শৈশবের বিষয়গুলি ত্যাগ করেছি৷ 12 এখন আমরা আয়নায় আবছা দেখছি; কিন্তু সেই সময় সরাসরি পরিষ্কার দেখব৷ এখন আমার জ্ঞান সীমিত, কিন্তু তখন আমি সম্পূর্ণভাবে জানতে পারব, ঠিক য়েমন ঈশ্বর এখন আমাকে সম্পূর্ণভাবে জানেন৷ 13 এখন এই তিনটি বিষয় আছে: বিশ্বাস, প্রত্যাশা ও ভালবাসা; আর এদের মধ্যে ভালবাসাই শ্রেষ্ঠ৷
1 Corinthians 14:1 তোমরা ভালবাসার জন্য চেষ্টা কর এবং অন্য আত্মিক বরদানগুলি লাভ করার জন্য একান্তভাবে চেষ্টা কর৷ বিশেষ করে য়ে বরদান পাবার জন্য তোমাদের চেষ্টা করা উচিত, তো হল ভাববাণী বলতে পারা৷ 2 য়ে ব্যক্তি বিশেষ ভাষায় কথা বলার ক্ষমতা পেয়েছে, সে কোন মানুষের সঙ্গে নয় ঈশ্বরের সঙ্গেই কথা বলে, কারণ সে কি বলে তা কেউ বুঝতে পারে না, বরং সে আত্মার মাধ্যমে নিগূঢ় তত্ত্বের বিষয় বলে৷ 3 কিন্তু য়ে ভাববাণী বলে, সে মানুষকে গড়ে তোলে, উত্সাহ ও সান্ত্বনা দেয়৷ 4 যার বিশেষ ভাষায় কথা বলার ক্ষমতা আছে সে নিজেকেই গড়ে তোলে; কিন্তু য়ে ভাববাণী বলার ক্ষমতা পেয়েছে সে মণ্ডলীকে গড়ে তোলে৷ 5 আমার ইচ্ছা য়ে তোমরা সকলে বিশেষ বিশেষ ভাষায় কথা বলার ক্ষমতা পাও; কিন্তু আমার আরো বেশী ইচ্ছা এই তোমরা য়েন ভাববাণী বলতে পার৷ য়ে ব্যক্তি বিশেষ ভাষায় কথা বলে কিন্তু মণ্ডলীকে গড়ে তোলার জন্য তার অর্থ বুঝিয়ে দেয় না, তার থেকে য়ে ভাববাণী বলে সেই বরং বড়৷ 6 আমার ভাই ও বোনেরা, আমি যদি তোমাদের কাছে এসে কোন প্রকাশিত সত্য জ্ঞান, ভাববাণী বা কোন শিক্ষার বিষয়ে না বলে নানা ভাষায় কথা বলি, তাতে তোমাদের কোন লাভ হবে না৷ 7 বাঁশী বা বীণার মতো জড় বস্তু, যা সুন্দর সুর সৃষ্টি করে তা যদি স্পষ্ট ধ্বনিতে না বাজে তবে বাঁশীতে বা বীণাতে কি সুর বাজছে তা কিভাবে বোঝা যাবে? 8 আর তূরীর আওয়াজ যদি অস্পষ্ট হয়, তবে যুদ্ধে যাবার জন্য কে প্রস্তুত হবে? 9 ঠিক তেমনি, তোমাদের জিভ যদি বোধগম্য কথা না বলে, তবে তোমরা কি বললে তা কে জানবে? কারণ এ ধরণের কথা বলার অর্থ বাতাসের সঙ্গে কথা বলা৷ 10 নিঃসন্দেহে বলা যায় য়ে, জগতে অনেক রকম ভাষা আছে, আর সেগুলির প্রত্যেকটারই অর্থ আছে৷ 11 তাই, সেই সব ভাষার অর্থ যদি আমি না বুঝতে পারি, তবে য়ে সেই ভাষায় কথা বলছে তার কাছে আমি একজন বিদেশীর মতো হব; আর সেও আমার কাছে বিদেশীর মতো হবে৷ 12 তোমাদের ক্ষেত্রেও ঠিক সেরকমই; যখন তোমরা আত্মিক বরদান লাভ করার জন্য উদগ্রীব, তখন যা মণ্ডলীকে গড়ে তোলে সে বিষয়ে উত্কৃষ্ট হবার চেষ্টা কর৷ 13 তাই, য়ে লোক বিশেষ ভাষায় কথা বলে, সে প্রার্থনা করুক য়েন তার অর্থ সে বুঝিয়ে দিতে পারে৷ 14 কারণ আমি যদি কোন বিশেষ ভাষায় প্রার্থনা করি, তবে আমার আত্মা প্রার্থনা করছে, কিন্তু আমার বুদ্ধির কোন উপকার হয় না৷ 15 তাহলে আমার কি করা উচিত? আমি আত্মায় প্রার্থনা করব, আবার আমার মন দিয়েও প্রার্থনা করব৷ আমি আত্মাতে স্তব গীত করব আবার মন দিয়েও স্তব গীত করব৷ 16 কারণ তুমি হয়তো তোমার আত্মাতে ঈশ্বরের প্রশংসা করছ, কিন্তু য়ে লোক কেবল শ্রোতা হিসাবে সেখানে আছে সে না বুঝে কেমন করে তোমার ধন্যবাদে ‘আমেন’ বলবে? কারণ তুমি কি বলছ, তা তো সে বুঝতে পারছে না৷ 17 তুমি হয়তো খুব সুন্দরভাবে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিচ্ছ, কিন্তু এর দ্বারা অপরকে আত্মিকভাবে গড়ে তোলা হচ্ছে না৷ 18 আমি তোমাদের সকলের থেকে অনেক বেশী বিশেষ ভাষায় কথা বলতে পারি বলে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিই৷ 19 কিন্তু মণ্ডলীর মধ্যে, বিশেষ ভাষায় দশ হাজার শব্দ বলার থেকে, বরং আমি বুদ্ধিপূর্বক পাঁচটি কথা বলতে চাই, য়েন এর দ্বারা অপরে শিক্ষালাভ করে৷ 20 আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা, তোমরা বালকদের মতো চিন্তা করো না, বরং মন্দ বিষয়ে শিশুদের মতো হও, কিন্তু তোমাদের চিন্তায় পরিণত বুদ্ধি হও৷ 21 বিধি-ব্যবস্থায় (শাস্ত্রে) বলে:‘অন্য ভাষার লোকদের দ্বারা ও অন্য দেশীয়দের মুখ দিয়ে আমি এই জাতির সঙ্গে কথা বলব; কিন্তু সেই লোকরা আমার কথা শুনবে না৷’যিশাইয় 28:11-12প্রভু এই কথা বলেন৷ 22 তাই বিশেষ বিশেষ ভাষায় কথা বলার ক্ষমতা, এই চিহ্ন বিশ্বাসীদের জন্য নয় বরং তা অবিশ্বাসীদের জন্যই৷ কিন্তু ভাববাণী অবিশ্বাসীদের জন্য নয়, তা বিশ্বাসীদের জন্যই৷ 23 সেই জন্য যখন সমগ্র মণ্ডলী সমবেত হয়, তখন যদি প্রত্যেকে বিশেষ বিশেষ ভাষায় কথা বলতে থাকে; আর সেখানে যদি কোন অবিশ্বাসী বা অন্য কোন বাইরের লোক প্রবেশ করে, তবে তারা কি বলবে না য়ে তোমরা পাগল? 24 কিন্তু যদি সকলে ভাববাণী বলে, সেই সময় যদি কোন অবিশ্বাসী লোক বা অন্য কোন সাধারণ লোক সেখানে আসে, তবে সেই ভাববাণী শুনে সে তার পাপের বিষয়ে সচেতন এবং সেই ভাববাণীর দ্বারাই বিচারপ্রাপ্ত হয়৷ 25 এইভাবে তার অন্তরের গোপন চিন্তা সকল প্রকাশ পায়৷ সে তখন মাটিতে উপুড় হয়ে পড়ে ঈশ্বরের উপাসনা করবে আর বলবে, ‘বাস্তবিকই, তোমাদের মধ্যে ঈশ্বর আছেন৷ 26 আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা, তাহলে তোমরা কি করবে? তোমরা যখন উপাসনার জন্য এক জায়গায় সমবেত হও, তখন কেউ স্তব গীত করবে, কেউ শিক্ষা দেবে, কেউ যদি কোন সত্য প্রকাশ করে, তবে সে তা বলবে, কেউ বিশেষ ভাষায় কথা বলবে, আবার কেউ বা তার ব্যাখ্যা করে দেবে; কিন্তু সব কিছুই য়েন মণ্ডলী গঠনের জন্য হয়৷ 27 দুজন কিংবা তিনজনের বেশী য়েন কেউ অজানা ভাষায় কথা না বলে৷ প্রত্যেকে য়েন পালা করে বলে, আর একজন য়েন তার অর্থ বুঝিয়ে দেয়৷ 28 অর্থ বুঝিয়ে দেবার লোক যদি না থাকে, তাহলে সেই ধরণের বক্তা য়েন মণ্ডলীতে নীরব থাকে৷ সে য়েন কেবল নিজের সঙ্গে ও ঈশ্বরের সঙ্গে কথা বলে৷ 29 কেবলমাত্র দুই বা তিনজন ভাববাদী কথা বলুক এবং অন্যেরা তা বিচার করুক৷ 30 সেখানে বসে আছে এমন কারো কাছে যদি ঈশ্বরের কোন বার্তা আসে তবে প্রথমে য়ে ভাববাণী বলছিল সে চুপ করুক, 31 যাতে একের পর এক সকলে ভাববাণী বলতে পারে ও সকলে শিক্ষালাভ করে ও উত্সাহিত হয় এবং 32 ভাববাদীদের আত্মা ও ভাববাদীদের নিয়ন্ত্রণে থাকে৷ 33 কারণ ঈশ্বর কখনও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন না, তিনি শান্তির ঈশ্বর, যা ঈশ্বরের পবিত্র লোকদের মণ্ডলীগুলিতে সত্য৷ 34 মণ্ডলীতে স্ত্রীলোকেরা নীরব থাকুক৷ ঈশ্বরের লোকদের সমস্ত মণ্ডলীতে এই রীতি প্রচলিত আছে৷ স্ত্রীলোকদের কথা বলার অনুমোদন নেই৷ মোশির বিধি-ব্যবস্থা য়েমন বলে সেইমত তারা বাধ্য হয়ে থাকুক৷ 35 স্ত্রীলোকেরা যদি কিছু শিখতে চায় তবে তারা ঘরে নিজেদের স্বামীদের কাছে তা জিজ্ঞেস করুক, কারণ সমাবেশে কথা বলা স্ত্রীলোকের পক্ষে লজ্জার বিষয়৷ 36 তোমাদের মধ্য থেকেই কি ঈশ্বরের শিক্ষা প্রসারিত হয়েছিল? অথবা কেবল তোমাদের কাছেই কি তা এসেছিল? 37 যদি কেউ নিজেকে ভাববাদী বলে বা আত্মিক বরদান লাভ করেছে বলে মনে করে, তবে সে স্বীকার করুক য়ে আমি তোমাদের কাছে যা লিখছি সে সব প্রভুরই আদেশ; 38 আর যদি কেউ তা অবজ্ঞা করে তবে সে অবজ্ঞার শিকার হবে৷ 39 অতএব, আমার ভাই ও বোনেরা, তোমরা ভাববাণী বলার জন্য আগ্রহী হও এবং বিশেষ ভাষায় কথা বলতে লোকদের নিষেধ করো না, 40 কিন্তু সবকিছু য়েন যথাযথভাবে করা হয়৷
1 Corinthians 15:1 আমার ভাই ও বোনেরা, তোমাদের কাছে আমি য়ে সুসমাচার প্রচার করেছি, এখন আমি সে কথা তোমাদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি৷ তোমরা এই বার্তা গ্রহণ করেছ ও সবল আছ৷ 2 এই বার্তার মাধ্যমে তোমরা উদ্ধার পেয়েছ, অবশ্য তোমরা যদি তা ধরে রাখ এবং তাতে পূর্ণরূপে বিশ্বাস রাখ৷ তা না করলে তোমাদের বিশ্বাস বৃথা হয়ে যাবে৷ 3 আমি য়ে বার্তা পেয়েছি তা গুরুত্বপূর্ণ মনে করে তোমাদের কাছে পৌঁছে দিয়েছি৷ সেগুলি এইরকম: শাস্ত্রের কথা মতো খ্রীষ্ট আমাদের পাপের জন্য মরলেন, 4 এবং তাঁকে কবর দেওয়া হয়েছিল৷ আবার শাস্ত্রের কথা মতো মৃত্যুর তিন দিন পর তাঁকে মৃতদের মধ্যে থেকে জীবিত করা হল৷ 5 আর তিনি পিতরকে দেখা দিলেন এবং পরে সেই বারোজন প্রেরিতকে দেখা দিলেন৷ 6 এরপর তিনি একসঙ্গে সংখ্যায় পাঁচশোর বেশী বিশ্বাসী ভাইদের দেখা দিলেন৷ তাদের মধ্যে বেশীর ভাগ লোক এখনও জীবিত আছেন, কিছু লোক হয়তো এতদিনে মারা গেছেন৷ 7 এরপর তিনি যাকোবকে দেখা দিলেন এবং পরে প্রেরিতদের সকলকে দেখা দিলেন৷ 8 সব শেষে অসময়ে জন্মেছি য়ে আমি সেই আমাকেও দেখা দিলেন৷ 9 প্রেরিতরা আমার থেকে মহান, কারণ ঈশ্বরের মণ্ডলীকে আমি নির্য়াতন করতাম, প্রেরিত নামে পরিচিত হবার য়োগ্যও আমি নই৷ 10 কিন্তু এখন আমি যা হয়েছি, তা ঈশ্বরের অনুগ্রহের গুনেই হয়েছে৷ আমার প্রতি তাঁর য়ে অনুগ্রহ তা নিষ্ফল হয় নি, বরং আমি তাদের সকলের থেকে অধিক পরিশ্রম করেছি৷ তবে আমি য়ে এই কাজ করেছিলাম তা নয়; কিন্তু আমার মধ্যে ঈশ্বরের য়ে অনুগ্রহ ছিল তাতেই তা সন্ভব হয়েছে৷ 11 সুতরাং আমি বা অন্যরা যারাই তোমাদের কাছে প্রচার করে থাকি না কেন, সকলে একই সুসমাচার প্রচার করেছিলাম, যা তোমরা বিশ্বাস করেছ৷ 12 কিন্তু আমরা যদি প্রচার করে থাকি য়ে খ্রীষ্ট মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত হয়েছেন, তখন তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ কি করে বলছে য়ে মৃতদের পুনরুত্থান নেই? 13 মৃতদের যদি পুনরুত্থান না হয়, তাহলে খ্রীষ্টও তো উত্থাপিত হন নি, 14 আর খ্রীষ্ট যদি পুনরুত্থিত না হয়ে থাকেন তাহলে তো আমাদের সেই সুসমাচার ভিত্তিহীন, আর তোমাদের বিশ্বাসও ভিত্তিহীন৷ 15 আবার আমরা য়ে ঈশ্বরের বিষয়ে মিথ্যা সাক্ষী দিচ্ছি, সেই দোষে আমরা দোষী সাব্যস্ত হব, কারণ আমরা ঈশ্বরের বিষয়ে প্রচার করতে গিয়ে একথা বলেছি য়ে তিনি খ্রীষ্টকে মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত করেছেন৷ 16 মৃতদের পুনরুত্থান যদি না হয়, তবে খ্রীষ্টও মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হন নি; 17 আর খ্রীষ্ট যদি পুনরুত্থিত না হয়ে থাকেন, তাহলে তোমাদের বিশ্বাসের কোন মূল্য নেই, তোমরা এখনও তোমাদের পাপের মধ্যেই আছ৷ 18 হ্যাঁ, আর খ্রীষ্টানুসারী যারা মারা গেছে তারা সকলেই বিনষ্ট হয়েছে৷ 19 খ্রীষ্টের প্রতি প্রত্যাশা যদি শুধু এই জীবনের জন্যই হয়, তবে অন্য লোকদের চেয়ে আমাদের দশা শোচনীয় হবে৷ 20 কিন্তু সত্যিই খ্রীষ্ট মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত হয়েছেন, আর য়েসব ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে তিনি তাদের মধ্যে প্রথম ফসল৷ 21 কারণ একজন মানুষের মধ্য দিয়ে য়েমন মৃত্যু এসেছে, মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থানও তেমনিভাবেই একজন মানুষের দ্বারা এসেছে৷ 22 কারণ আদমে য়েমন সকলের মৃত্যু হয়, ঠিক সেভাবে খ্রীষ্টে সকলেই জীবন লাভ করবে৷ 23 কিন্তু প্রত্যেকে তার পালাক্রমে জীবিত হবে; খ্রীষ্ট, যিনি অগ্রনী, তিনি প্রথমে মৃতদের মধ্য থেকে জীবিত হলেন, আর এরপর যারা খ্রীষ্টের লোক তারা তাঁর পুনরুত্থানের সময়ে জীবিত হয়ে উঠবে৷ 24 এরপর খ্রীষ্ট যখন প্রত্যেক শাসনকর্তার কর্ত্তৃত্ব ও পরাক্রমকে পরাস্ত করে পিতা ঈশ্বরের হাতে রাজ্য সঁপে দেবেন তখন সমাপ্তি আসবে৷ 25 কারণ যতদিন না ঈশ্বর তাঁর সমস্ত শত্রুকে খ্রীষ্টের পদানত করছেন, ততদিন খ্রীষ্টকে রাজত্ব করতে হবে৷ 26 শেষ শত্রু হিসেবে মৃত্যুও ধ্বংস হবে৷ 27 কারণ, ‘ঈশ্বর সব কিছুই তাঁর অধীনস্থ করে তাঁর পায়ের তলায় রাখবেন৷’ যখন বলা হচ্ছে য়ে, ‘সব কিছু’ তাঁর অধীনস্থ করা হয়েছে, তখন এটি স্পষ্ট য়ে ঈশ্বর নিজেকে বাদ দিয়ে সব কিছু খ্রীষ্টের অধীনস্থ করেছেন৷ 28 সব কিছু খ্রীষ্টের অধীনস্থ হলে পুত্র ঈশ্বরের অধীনস্থ হবেন৷ য়েন ঈশ্বর, যিনি তাঁকে সব কিছুর ওপর কর্ত্তৃত্ব করতে দিয়েছেন, তিনিই সর্বেসর্বা হন৷ 29 কিন্তু যারা মৃত লোকদের উদ্দেশ্যে বাপ্তিস্ম গ্রহণ করে তাদের কি হবে? মৃতেরা যদি কখনও পুনরুত্থিত না হয়, তাহলে তাদের জন্য এই লোকেরা কেন বাপ্তাইজ হয়? 30 আমরাই বা কেন প্রতি মুহূর্তে বিপদের সম্মুখীন হই? 31 আমি প্রতিদিন মরছি৷ খ্রীষ্ট যীশুতে তোমাদের জন্য আমার য়ে গর্ব আছে তারই দোহাই দিয়ে আমি বলছি, একথা সত্য৷ 32 যদি শুধু মানবিক স্তরে ইফিষের সেই হিংস্র পশুদের সঙ্গে যুদ্ধ করে থাকি তাহলে আমার কি লাভ হয়েছে? কিছুই না৷ মৃতদের যদি পুনরুত্থান নেই তবে, ‘এস ভোজন পান করি কারণ কাল তো আমরা মরবই৷’ 33 ভ্রান্ত হযো না, ‘অসত্ সঙ্গ সচ্চরিত্র নষ্ট করে৷’ 34 চেতনায় ফিরে এস, পাপ কাজ বন্ধ কর, কারণ তোমাদের মধ্যে কিছু লোক আছে যারা ঈশ্বর সম্বন্ধে সম্পূর্ণ অজ্ঞ৷ তোমাদের লজ্জা দেবার জন্যই আমি একথা বলছি৷ 35 কিন্তু কেউ কেউ জিজ্ঞাসা করবে, ‘মৃতেরা কি করে পুনরুত্থিত হয়? তাদের কি রকম দেহই বা হবে?’ 36 কি নির্বোধের মত প্রশ্ন! তোমরা য়ে বীজ বোনো, তা না মরা পর্যন্ত জীবন পায় না৷ 37 তুমি যা বোনো, য়ে ‘দেহ’ উত্পন্ন হবে তুমি তা বোনো না, তার বীজ মাত্র বোনো, সে গমের বা অন্য কিছুর হোক৷ 38 তারপর ঈশ্বরের ইচ্ছানুসারে তিনি তার জন্য একটা দেহ দেন৷ প্রতিটি বীজের জন্য তাদের নিজের নিজের দেহ দেন৷ 39 সকল প্রাণীর মাংস এক রকমের নয়; কিন্তু মানুষদের এক রকমের মাংস, পশুদের আর এক ধরণের মাংস, পক্ষীদের আবার অন্য রকমের মাংস৷ 40 সেই রকম স্বর্গীয় দেহগুলি য়েমন আছে, তেমনি পার্থিব দেহগুলিও আছে৷ স্বর্গীয় দেহগুলির এক প্রকার ঔজ্জ্বল্য, আবার পার্থিব দেহগুলির অন্যরকম৷ 41 সূর্যের এক প্রকারের ঔজ্জ্বল্য, চাঁদের আর এক ধরণের, আবার নক্ষত্রদের অন্য ধরণের৷ একটা নক্ষত্র থেকে অন্য নক্ষত্রের ঔজ্জ্বল্য ভিন্ন৷ 42 মৃতদের পুনরুত্থানও সেই রকম৷ য়ে দেহ কবর দেওয়া হয় তা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়, য়ে দেহ পুনরুত্থিত হয় তা অক্ষয়৷ 43 য়ে দেহ মাটিতে কবর দেওয়া হয়, তার কোন কদর থাকে না, য়ে দেহ পুনরুত্থিত হয় তা গৌরবজনক৷ য়ে দেহ মাটিতে কবরস্থ হয়, তা দুর্বল, য়ে দেহ পুনরুত্থিত হয় তা শক্তিশালী৷ 44 য়ে দেহ মাটিতে কবরস্থ হয় তা জৈবিক দেহ; আর য়ে দেহ পুনরুত্থিত হয় তা আত্মিক দেহ৷যখন জৈবিক দেহ আছে, তখন আত্মিক দেহও আছে৷ 45 শাস্ত্রে এই কথাও বলছে: ‘প্রথম মানুষ (আদম) সজীব প্রাণী হল;আর শেষ আদম (খ্রীষ্ট) জীবনদায়ক আত্মা হলেন৷ 46 যা আত্মিক তা প্রথম নয় বরং যা জৈবিক তাই প্রথম; যা আত্মিক তা এর পরে আসে৷ 47 প্রথম মানুষ আদম এলেন পৃথিবীর ধূলো থেকে, দ্বিতীয় মানুষ (খ্রীষ্ট) এলেন স্বর্গ থেকে৷ 48 মৃত্তিকার মানুষটি য়েমন ছিল, পৃথিবীর অন্যান্য মানুষও তেমন; আর স্বর্গীয় মানুষরা সেই স্বর্গীয় মানুষ খ্রীষ্টের মত৷ 49 আমরা য়েমন মৃত্তিকার সেই মানুষদের মতো গড়া, তেমন আবার আমরা সেই স্বর্গীয় মানুষ খ্রীষ্টের মত হব৷ 50 আমার ভাই ও বোনেরা, তোমাদের বলছি: আমাদের রক্ত মাংস ঈশ্বরের রাজ্যের অধিকারী হতে পারে না৷ যা কিছু ক্ষয়শীল তা অক্ষয়তার অধিকারী হতে পারে না৷ 51 শোন, আমি তোমাদের এক নিগূঢ়তত্ত্ব বলি৷ আমরা সকলে মরব এমন নয়, কিন্তু আমাদের সকলেরই রূপান্তর ঘটবে৷ 52 এক মুহূর্তের মধ্যে যখন শেষ তূরী বাজবে তখন চোখের পলকে তা ঘটবে৷ হ্যাঁ, তূরী বাজবে, তাতে মৃতেরা সকলে অক্ষয় হয়ে উঠবে, আর আমরা সকলে রূপান্তরিত হব৷ 53 কারণ এই ক্ষয়শীল দেহকে অক্ষয়তার পোশাক পরতে হবে; আর এই পার্থিব নশ্বর দেহ অবিনশ্বরতায় ভুষিত হবে৷ 54 এই ক্ষয়শীল দেহ যখন অক্ষয়তার পোশাক পরবে আর এই পার্থিব দেহ যখন অবিনশ্বরতায় ভূষিত হবে তখন শাস্ত্রে য়ে কথা লেখা আছে তা সত্য হবে:‘মৃত্যু জয়ে কবলিত হল৷’যিশাইয় 25:8 55 ‘মৃত্যু তোমার জয় কোথায়? মৃত্যু তোমার হুল কোথায়?’হোশেয় 13:14 56 মৃত্যুর হুল পাপ আর পাপের শক্তি আসে বিধি-ব্যবস্থা থেকে৷ 57 কিন্তু ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিই৷ তিনিই আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে আমাদের বিজযী করেন৷ 58 তাই আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা, সুস্থির ও সুদৃঢ় হও৷ প্রভুর কাজে নিজেকে সব সময় সম্পূর্ণভাবে সঁপে দাও, কারণ তোমরা জান, প্রভুর জন্য তোমাদের পরিশ্রম নিষ্ফল হবে না৷
1 Corinthians 16:1 এখন ঈশ্বরের লোকদের দেবার জন্য অর্থ সংগ্রহের বিষয় বলছি: গালাতীয়ার মণ্ডলীকে আমি য়েমন বলেছিলাম তোমরাও তেমন করবে; 2 সপ্তাহের প্রথম দিন রবিবার তোমরা তোমাদের উপার্জন থেকে সঙ্গতী অনুসারে যতটা সন্ভব বাঁচিয়ে সেই অর্থ গৃহে বিশেষ কোন স্থানে আলাদা করে জমাবে৷ তাহলে আমি যখন আসব তখন অর্থ সংগ্রহ করার প্রযোজন হবে না৷ 3 আমি যখন পৌঁছব, তখন তোমরা যাদের য়োগ্য বলে মনে কর তাদের হাত দিয়ে সেই অর্থ জেরুশালেমে পাঠাবে৷ আমার লেখা চিঠি পরিচয়পত্র হিসাবে তারা নিয়ে যাবে; 4 আর আমার যাওয়া যদি ঠিক বলে মনে হয় তবে তারা আমার সঙ্গেই যাবে৷ 5 আমি মাকিদনিয়া হয়ে যাবার পরিকল্পনা করছি৷ মাকিদনিয়ার মধ্য দিয়ে যাবার পথে তোমাদের ওখানে যাব৷ 6 সন্ভব হলে হয়তো কিছুদিন তোমাদের ওখানে থেকে যাব৷ শীতকালটা হয়তো তোমাদের ওখানেই কাটাব৷ এরপর তোমাদের কাছ থেকে আমি য়েখানে যাব, আমার সেখানে যাবার ব্যবস্থায় তোমরা সাহায্য করতে পারবে৷ 7 এখন যাত্রাপথে তোমাদের সঙ্গে দেখা করতে চাই না৷ প্রভুর ইচ্ছা হলে তোমাদের সঙ্গে অনেকটা সময় কাটাবার ইচ্ছা আছে৷ 8 পঞ্চাশত্তমীর দিন পর্যন্ত আমি ইফিষে থাকব৷ 9 কারণ এখানে য়ে কাজে ফল পাওয়া যায় সেই রকম কাজের জন্য একটা মস্ত বড় সুয়োগ আমার সামনে এসেছে, যদিও এখানে অনেকে বিরোধিতা করছে৷ 10 তীমথিয় তোমাদের কাছে য়েতে পারেন, তাঁকে আদর যত্ন করো৷ তোমাদের সঙ্গে তিনি য়েন নির্ভয়ে থাকতে পারেন৷ তিনিও আমার মতো প্রভুর কাজ করছেন, কেউ য়েন তাঁকে তাচ্ছিল্য না করে৷ 11 তাঁকে তোমরা তাঁর যাত্রা পথে শান্তিতে এগিয়ে দিও, য়েন তিনি আমার কাছে আসতে পারেন৷ ভাইদের সঙ্গে নিয়ে তিনি আমার কাছে আসবেন এই প্রত্যাশায় আছি৷ 12 এখন আমি তোমাদের ভাই আপল্লোর বিষয়ে বলি: আমি তাঁকে অনেক ভাবে উত্সাহিত করেছি য়েন তিনি অন্যান্য ভাইদের সঙ্গে তোমাদের কাছে যান৷ কিন্তু এটা পরিষ্কার য়ে তোমাদের কাছে যাবার ইচ্ছা তাঁর এখন নেই৷ তিনি সুয়োগ পেলেই তোমাদের কাছে যাবেন৷ 13 তোমরা সতর্ক থেকো, বিশ্বাসে স্থির থেকো, সাহস য়োগাও, বলবান হও৷ 14 তোমরা যা কিছু কর তা ভালবাসার সঙ্গে কর৷ 15 আমার ভাইয়েরা, আমি তোমাদের কাছে একটা অনুরোধ করছি, তোমরা স্তিফান ও তাঁর পরিবারের বিষয়ে জান৷ আখায়াতে (গ্রীসে) তাঁরাই প্রথম খ্রীষ্টানুসারী হন৷ এখন তাঁরা খ্রীষ্টানুসারীদের সেবায় নিজেদের নিযোগ করেছেন৷ ভাইয়েরা, তোমাদের কাছে আমার অনুরোধ, 16 তোমরা এইরকম লোকদের, যারা প্রভুর সেবায় নিযুক্ত আছেন, তাঁদের নেতৃত্ব মেনে নাও৷ 17 আমি খুব খুশী কারণ স্তিফান, ফর্তুনাত আর আখায়া এখানে এসে তোমাদের না থাকার অভাব পূর্ণ করে দিয়েছেন৷ 18 তাঁরা তোমাদের মতো আমার আত্মাকে তৃপ্ত করেছেন৷ তাই তোমরা এরূপ লোকদের চিনতে ভুল করো না৷ 19 এশিয়ার সমস্ত মণ্ডলী তোমাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছে৷ আক্কিলা ও প্রিষ্কা আর তাঁদের বাড়িতে যারা উপাসনার জন্য সমবেত হন তাঁরা সকলে তোমাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন৷ 20 তোমরা পরস্পর একে অপরকে পবিত্র চুম্বনে শুভেচ্ছা জানিও৷ 21 আমি পৌল, আমি নিজের হাতে এই শুভেচ্ছা বাণী লিখে পাঠালাম৷ 22 প্রভুকে য়ে ভালবাসে না তার ওপর অভিশাপ নেমে আসুক৷ আমাদের প্রভু আসুন৷ 23 প্রভু যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহ তোমাদের সঙ্গে থাকুক৷ 24 খ্রীষ্ট যীশুতে তোমাদের সকলের জন্য আমার ভালবাসা রইল৷
2 Corinthians 1:1 আমি পৌল, ঈশ্বরের ইচ্ছায় খ্রীষ্ট যীশুর একজন প্রেরিত হয়েছি৷ আমি এবং আমাদের বিশ্বাসী ভাই তীমথিয়, করিন্থ শহরের ঈশ্বরের খ্রীষ্ট মণ্ডলী ও সমগ্র আখায়া প্রদেশে ঈশ্বরের সব লোকদের উদ্দেশ্যে এই চিঠি লিখছি: 2 আমাদের পিতা ঈশ্বর ও প্রভু যীশু খ্রীষ্ট তোমাদের সকলকে অনুগ্রহ ও শান্তি দান করুন৷ 3 ধন্য আমাদের ঈশ্বর ও প্রভু যীশু খ্রীষ্টের পিতা৷ তিনি করুণাময় পিতা ও সকল সান্ত্বনার ঈশ্বর৷ 4 তিনি আমাদের সমস্ত দুঃখ কষ্টের মধ্যে সান্ত্বনা দেন, য়েন অপরে যখন দুঃখ কষ্টের মধ্যে পড়ে তখন ঈশ্বরের কাছ থেকে আমরা য়ে সান্ত্বনা লাভ করেছি তাদের সেই সান্ত্বনা দিতে পারি৷ 5 কারণ আমরা যতই খ্রীষ্টের দুঃখ কষ্টের সহভাগী হব, ততই তাঁর মধ্য দিয়ে সান্ত্বনাও পাব৷ 6 আমরা যদি কষ্ট পাই তবে তা তোমাদের সান্ত্বনার ও পরিত্রাণের জন্য; আর যদি সান্ত্বনা পাই তবে তা তোমাদের সান্ত্বনার উদ্দেশ্যেই পাই৷ এই সান্ত্বনা আমাদের মত তোমাদেরও একই দুঃখ সহ্য করার শক্তি ও ধৈর্য্য য়োগায়৷ 7 তোমাদের বিষয়ে আমরা সুনিশ্চিত, কারণ আমরা জানি তোমরা য়েমন আমাদের দুঃখ কষ্টের সহভাগী, সেই রকম আমাদের সান্ত্বনার সহভাগী৷ 8 ভাই ও বোনেরা, এশিয়াতে থাকার সময় আমাদের য়ে কষ্ট হয়েছিল তা তোমাদের জানাতে চাইছি৷ সেই দুঃখ কষ্টের চাপ আমাদের সহ্যের অতিরিক্ত হয়ে উঠেছিল৷ আমরা বাঁচার সব আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম৷ 9 আমরা নিজেদের অন্তরে অনুভব করেছিলাম য়ে আমাদের মৃত্যু অনিবার্য়; কিন্তু এটা এইজন্য ঘটেছিল যাতে আমরা নিজেদের ওপর নির্ভর না করে, ঈশ্বর যিনি মৃতকে জীবিত করে তোলেন তাঁর ওপর সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করি৷ 10 তিনিই আমাদের এত ভয়ঙ্কর মৃত্যু থেকে উদ্ধার করলেন৷ আমরা তাঁর ওপর প্রত্যাশা রাখি য়ে তিনি ভবিষ্যতেও আমাদের উদ্ধার করবেন; 11 তোমরা প্রার্থনা করে আমাদের সাহায্য করতে পার৷ তাহলে অনেকের প্রার্থনার উত্তরে ঈশ্বর আমাদের য়ে আশীর্বাদ করবেন, তার দরুন আমাদের জন্য অনেকেই ধন্যবাদ দেবে৷ 12 একটি বিষয়ে আমরা গর্বিত এবং আমাদের বিবেকও এই সাক্ষী দিচ্ছে য়ে আমরা ঈশ্বরের দেওয়া আন্তরিকতা ও সরলতায় জগতের মানুষের প্রতি, বিশেষ করে তোমাদের প্রতি আচরণ করে এসেছি৷ সংসারের জ্ঞান বুদ্ধি ব্যবহার করে নয়, ঈশ্বরের অনুগ্রহে আমরা তা করেছি৷ 13 হ্যাঁ, তোমরা যা পড়তে বা বুঝতে পারবে না এমন কোন কিছু আমি তোমাদের লিখছি না৷ আশা করি তোমরা সম্পূর্ণভাবে বুঝতে পারবে৷ 14 য়েমন তোমরা আমাদের সম্বন্ধে কিছুটা বুঝেছ৷ আমাদের প্রভু যীশুর পুনরাবির্ভাবের দিনে তোমরা য়েমন আমাদের গর্বের বিষয় হবে, তেমনি আমরাও তোমাদের গর্বের বিষয় হব৷ 15 আমার মনে এই বিষয়ে এতটা আত্মবিশ্বাস ছিল য়ে আমি প্রথমেই তোমাদের কাছে যাব বলে ঠিক করেছিলাম, যাতে তোমরা দ্বিতীয়বার উপকৃত হও৷ 16 আমি ঠিক করেছিলাম মাকিদনিয়ায় যাওয়ার পথে তোমাদের ওখানে যাব; আবার মাকিদনিয়া থেকে ফেরার পথেও তোমাদের কাছেই যাব৷ তাহলে তোমরা সকলে প্রযোজনীয় সব জিনিস সমেত আমার যিহূদিয়ায় যাওয়ার সব ব্যবস্থা করে দেবে৷ 17 এই পরিকল্পনা করার সময় কি আমি মনস্থির করি নি? আমি কি জগতের সেই লোকদের মত যাঁরা একই সঙ্গে ‘হ্যাঁ-হ্যাঁ,’ আবার ‘না-না’ বলে, তেমনি করে কি আমি কিছু ঠিক করি? 18 ঈশ্বর বিশ্বস্ত, একথা য়েমন সত্যি তেমনি এটাও সত্যি য়ে তোমাদের কাছে আমাদের কথা একই সঙ্গে’হ্যাঁ’ এবং ‘না’ দুই হয় না৷ 19 ঈশ্বরের পুত্র য়ে যীশু খ্রীষ্টের কথা আমি, তীমথিয় এবং শীল তোমাদের কাছে প্রচার করেছিলাম, সেই যীশু একই সময়ে ‘হ্যাঁ’ এবং ‘না’ নন৷ তিনি সব সময়েই ‘হ্যাঁ’৷ 20 ঈশ্বরের সমস্ত প্রতিশ্রুতি তাঁর মধ্য দিয়ে ‘হ্যাঁ’ হয়ে ওঠে৷ সেইজন্য ঈশ্বরের গৌরব করতে আমরা খ্রীষ্টের মধ্য দিয়ে ‘আমেন’ বলি৷ 21 ঈশ্বরই একজন, যিনি তোমাদের ও আমাদের খ্রীষ্টের সঙ্গে যুক্ত করে সুদৃঢ় করে তোলেন৷ 22 আমরা য়ে তাঁর নিজস্ব এই কথা নিশ্চিতভাবে বুঝতে তিনি আমাদের ওপর তাঁর ছাপ দিয়েছেন; এবং তাঁর সব প্রতিশ্রুতির জামিন হিসাবে পবিত্র আত্মাকে আমাদের অন্তরে দিয়েছেন৷ 23 কিন্তু আমি ঈশ্বরকে সাক্ষী রেখে বলছি, তোমাদের শাস্তি থেকে রেহাই দেবার জন্যই আমি এখন পর্যন্ত করিন্থে ফিরে যাই নি৷ 24 তোমাদের বিশ্বাসের বিষয়ে আমরা যা বলে দেব তাই-ই তোমাদের মেনে চলতে হবে, এমনটা আমরা চাই না, বরং তোমরা য়েন আনন্দ পাও তাই তোমাদের সহকর্মী হয়ে কাজ করতে চাই, কারণ তোমরা বিশ্বাসে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে আছ৷
2 Corinthians 2:1 তাই আমি স্থির করেছিলাম য়ে আবার তোমাদের দুঃখ দেওয়ার জন্য তোমাদের কাছে যাব না৷ 2 কারণ তোমাদের যদি আমি দুঃখ দিই তবে আমাকে সুখী করবে কে? একমাত্র তোমরাই যাঁরা আমার কাছে দুঃখ পেয়েছ৷ 3 এইজন্য সেই সব কথা লিখেছিলাম, যাতে যখন আমি আসব তখন যাদের কাছ থেকে আমার আনন্দ পাওয়া উচিত, তাদের কাছ থেকে আমায় য়েন দুঃখ পেতে না হয়৷ কারণ তোমাদের সকলের বিষয়ে আমার দৃঢ় বিশ্বাস এই য়ে আমার আনন্দে তোমাদের সকলেরই আনন্দ৷ 4 অনেক কষ্ট, মনো বেদনা ও চোখের জলের মধ্যে দিয়ে সেই চিঠি তোমাদের লিখেছিলাম৷ আমি তোমাদের ব্যথা দিতে চাই নি; কিন্তু বোঝাতে চেয়েছিলাম য়ে আমি তোমাদের কতো ভালবাসি৷ 5 কিন্তু কেউ যদি ব্যথা দিয়ে থাকে তবে সে য়ে শুধু আমাকে ব্যথা দিয়েছে তা নয়, বেশী বাড়িয়ে না বলে এটুকু বলছি য়ে, তোমাদের সকলকেই সে কিছু পরিমাণ ব্যাথা দিয়েছে৷ 6 তোমাদের মধ্যে বেশীর ভাগ লোক মিলে এই ধরণের লোককে য়ে শাস্তি দিয়েছ সেটাই তার পক্ষে যথেষ্ট৷ 7 কিন্তু এখন তোমাদের বরং তাকে ক্ষমা করা ও সান্ত্বনা দেওয়া উচিত৷ তা না হলে সে হয়তো অত্যধিক মনোবেদনায় হতাশ হয়ে পড়বে৷ 8 আমি তোমাদের অনুরোধ করছি, তোমরা য়ে তাকে এখনও ভালবাস এটা তাকে বুঝতে দাও৷ 9 তোমরা সমস্ত বিষয়ে আমার বাধ্য হও কিনা তা পরীক্ষা করে দেখতে আমি তোমাদের কাছে সেই চিঠিটা লিখেছিলাম৷ 10 যদি তোমরা কাউকে ক্ষমা কর, আমিও তাকে ক্ষমা করি৷ যদি ক্ষমা করার মত কিছু থেকেই থাকে তবে আমি যা ক্ষমা করেছি তা খ্রীষ্টের সামনে তোমাদের ভালোর জন্যেই করেছি৷ 11 য়েন আমরা শয়তানের চতুরতার দ্বারা প্রতারিত না হই, কারণ আমরা তার ষড়যন্ত্র সম্বন্ধে অজ্ঞ নই৷ 12 আমি যখন ত্রোয়াতে খ্রীষ্ট সম্বন্ধে সুসমাচার প্রচার করতে এসেছিলাম, তখন দেখলাম প্রভু কাজের জন্য নতুন দরজা খুলে দিয়েছেন৷ 13 কিন্তু আমি খুব উদ্বেগে ছিলাম, কারণ সেখানে আমি আমার ভাই তীতকে পাই নি; তাই আমি তাদের বিদায় জানিয়েছিলাম এবং মাকিদনিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলাম৷ 14 কিন্তু ঈশ্বর ধন্য, কারণ তিনি খ্রীষ্টের মধ্য দিয়ে সর্বদাই আমাদের জয়লাভের পথ দেখান এবং আমাদের মধ্য দিয়ে সর্বত্র তাঁর সম্বন্ধে জ্ঞান সৌরভের মত ছড়িয়ে দেন৷ 15 যাঁরা উদ্ধার পাচ্ছে এবং যাঁরা বিনাশ হচ্ছে তাদের সামনে আমরা ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে খ্রীষ্টের সুগন্ধযুক্ত ধূপ৷ 16 যাঁরা হারিয়ে যাচ্ছে তাদের কাছে আমরা মৃত্যুমূলক মৃত্যুজনক গন্ধ; কিন্তু যাঁরা পরিত্রাণ পাচ্ছে তাদের কাছে আমরা জীবনমূলক জীবনদায়ক গন্ধ, সুতরাং কে এইরকম কাজ করার উপযুক্ত? 17 অনেকে য়েমন করে সেরকম আমরা ঈশ্বরের বাক্য নিয়ে লাভ করার জন্য ফেরিওয়ালার মত ফেরি করে বেড়াই না বরং খ্রীষ্টেতে আমরা আন্তরিকতার সঙ্গে ঈশ্বর হতে আগত লোক হিসাবে ঈশ্বরের সামনে কথা বলি৷
2 Corinthians 3:1 আমরা এসব বলে কি আবার নিজেদের বিষয়ে প্রশংসা করতে শুরু করেছি? অথবা কোন কোন লোক য়েমন করে থাকে তেমনি তোমাদের কাছে আমাদেরও কি কোন পরিচয় পত্র নিয়ে য়েতে হবে, বা তোমাদের সুপারিশের কি আমাদের কোন প্রযোজন আছে? 2 তোমরাই আমাদের পরিচয় পত্র, যা আমাদের হৃদয়ে লেখা আছে, যা সমস্ত মানুষ জানতে ও পড়তে পারে৷ 3 তোমরা য়ে খ্রীষ্টের লেখা পত্র এবং আমরাই তা পৌঁছে দিয়েছি তা তো দেখতেই পাওয়া যাচ্ছে৷ তা কালি দিয়ে লেখা নয়, কিন্তু জীবন্ত ঈশ্বরের আত্মা দিয়ে লেখা; পাথরের ফলকে লেখা নয়, মানুষের হৃদয়ের ফলকের ওপরই লেখা৷ 4 খ্রীষ্টের মাধ্যমে ঈশ্বরের ওপর আমাদের এই রকম দৃঢ় বিশ্বাস হয়েছে৷ 5 কিন্তু তার অর্থ এই নয় য়ে আমরা নিজেরা নিজেদের য়োগ্যতায় একাজ করতে পারি, তা করার শক্তি ঈশ্বরই দিয়ে থাকেন৷ 6 তিনিই আমাদের নতুন চুক্তির সেবক করেছেন৷ এই নতুন চুক্তি কোন লিখিত বিধি-ব্যবস্থা নয় কিন্তু আত্মিক ব্যবস্থা, কারণ লিখিত য়ে বিধি-ব্যবস্থা তা মৃত্যু নিয়ে আসে কিন্তু আত্মা জীবন দান করে৷ 7 যদি পাথরের ফলকেরওপর লেখা ব্যবস্থা, যার পরিণতি মৃত্যু, তা দেবার সময় এমন ঔজ্জ্বল্যের সাথে এসেছিল য়ে ইস্রায়েলের লোকেরা ঔজ্জ্বল্যের জন্য মোশির মুখের দিকে সোজা তাকাতে পারছিল না, যদিও সেই উজ্জ্বলতা ম্লান হয়ে যাচ্ছিল, 8 তবে আত্মার কাজ কি অনেক বেশী মহিমামণ্ডিত হবে না? 9 য়ে বিধি-ব্যবস্থায় মানুষ দোষী প্রতিপন্ন হচ্ছিল তা যদি মহিমামণ্ডিত হয়ে থাকে, তবে য়ে বিধি-ব্যবস্থা মানুষকে ঈশ্বরের কাছে ধার্মিক প্রতিপন্ন করে তার মহিমা আরও কত না বেশী হবে৷ 10 বাস্তবিক তুলনায় নতুন বিধি-ব্যবস্থার মহিমার উজ্জ্বলতার কাছে পুরানো বিধি-ব্যবস্থার মহিমা ম্লান হয়ে যায়৷ 11 য়ে বিধি-ব্যবস্থা অল্প দিনের মধ্যে লোপ পেয়ে গেল তার মহিমা যদি এত উজ্জ্বল হয়ে থাকে, তবে য়ে বিধি-ব্যবস্থা চিরস্থাযী তার মহিমা আরও কত না বেশী উজ্জ্বল হবে! 12 অতএব আমাদের এই ধরণের প্রত্যাশা থাকাতে আমরা খুব নির্ভীক হতে পারি৷ 13 আমরা মোশির মত নই৷ মোশি তো নিজের মুখ ঢেকে রাখতেন যাতে ইস্রায়েলীয়রা সেই উজ্জ্বলতা দেখতে না পায়, কারণ সেই মহিমা কমতে কমতে মিলিয়ে যাচ্ছিল৷ 14 তাদের মন কঠোর হয়ে গিয়েছিল, কারণ যখন শাস্ত্র পড়া হয় তখন মনে হয় আজও তাদের সেই আবরণ রয়েই গেছে৷ সেই আবরণ এখনও সরে নি, একমাত্র খ্রীষ্টের মাধ্যমেই সেই আবরণ সরিয়ে দেওয়া সন্ভব৷ 15 হ্যাঁ, আজও মোশির বিধি-ব্যবস্থার পুস্তক পড়ার সময় তাদের হৃদয়ের ওপরে আবরণ থাকে৷ 16 কিন্তু যখনই কেউ প্রভুর দিকে ফেরে তখন সেই আবরণ সরে যায়৷ 17 এই প্রভু হলেন আত্মা, আর প্রভুর আত্মা য়েখানে সেখানেই স্বাধীনতা৷ 18 তাই, যখন আমরা অনাদৃত মুখে আয়নায় দেখা ছবির মত করে প্রভুর মহিমা দেখতে থাকি, তখন তা দেখতে দেখতে আমরা সকলেই তাঁর সেই (মহিমাময়) রূপে রূপান্তরিত হতে থাকি৷ সেই রূপান্তর আমাদের মহিমা থেকে উজ্জ্বলতর মহিমার মধ্যে নিয়ে যায়৷ এই মহিমা আমরা প্রভু, যিনি আজ্ঞা করেন তাঁর কাছ থেকে লাভ করি৷
2 Corinthians 4:1 ঈশ্বরের দয়ায় আমরা এই কাজের ভার পেয়েছি, তাই আমরা কখনও নিরাশ হই না; 2 বরং আমরা লজ্জাজনক গোপন কাজ একেবারেই করি না৷ আমরা কোন চাতুরী করি না, ঈশ্বরের শিক্ষাকে বিকৃত করি না; বরং যা সত্য তা স্পষ্টভাবে বলে ঈশ্বরের সামনে ও প্রতিটি মানুষের বিবেকের কাছে আমাদের সততা প্রকাশ করি৷ 3 কিন্তু আমরা য়ে সুসমাচার প্রচার করি তা যদি ঢাকা থাকে, তবে যাঁরা ধ্বংসের পথে চলেছে তাদের কাছেই ঢাকা থেকে যায়৷ 4 এই যুগের দেবতা অবিশ্বাসীদের মন অন্ধ করেছে, যাতে ঈশ্বরের প্রতিমূর্ত্তি য়ে খ্রীষ্ট, তাঁর মহিমার সুসমাচারের আলো তারা দেখতে না পায়৷ 5 আমরা নিজেদের কথা প্রচার করি না, বরং যীশু খ্রীষ্টকে প্রভু বলে প্রচার করছি এবং আমরা যীশুর অনুসারী বলেই নিজেদের যীশুর সেবক বলে দেখিয়ে থাকি৷ 6 কারণ য়ে ঈশ্বর বলেছিলেন, ‘অন্ধকারের মধ্যে থেকে আলোর উদয় হবে!’, সেই তিনিই আমাদের অন্তরে ঈশ্বরের জ্ঞানের আলোর মহিমা প্রজ্জ্বলিত করেছিলেন, য়ে আলো খ্রীষ্টের মুখমণ্ডলেই প্রকাশিত রয়েছে৷ 7 কিন্তু এই সম্পদ আমরা মাটির পাত্রে অর্থাত্ এই মরণশীল দেহে ধারণ করছি, যাতে বুঝতে পারা যায় য়ে এই মহাপরাক্রম ঈশ্বরের কাছ থেকেই এসেছে, আমাদের নিজেদের কাছ থেকে আসে নি৷ 8 আমরা সবদিক দিয়েই নানা কষ্টদায়ক চাপের মধ্যে রয়েছি, কিন্তু ভেঙ্গে পড়ি নি৷ আমরা জানি না কি করব, অথচ হাল ছেড়ে দিই না৷ 9 আমরা অত্যাচারিত হলেও ঈশ্বর কখনও আমাদের ছেড়ে দেন না৷ আমাদের মেরে ধরাশাযী করে দিলেও আমরা ধ্বংস হচ্ছি না৷ 10 আমরা সবসময় যীশুর মতোই এই দেহে মৃত্যুর মুখোমুখি হচ্ছি, যাতে যীশুর জীবনও আমাদের মর্ত্য দেহে প্রকাশ পায়৷ 11 আমরা যারা বেঁচে আছি আমাদের সবসময় যীশুর জন্য মৃত্যুর হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে, য়েন আমাদের মর্ত্য দেহে যীশুর জীবনও প্রকাশ পায়৷ 12 এইভাবে আমাদের মধ্যে মৃত্যু এবং তোমাদের মধ্যে জীবন কাজ করে চলেছে৷ 13 কিন্তু সেই বিশ্বাসের একই আত্মা আমাদের মধ্যে আছে৷ শাস্ত্রে য়েমন লেখা আছে, ‘আমি বিশ্বাস করেছি বলেই কথা বলেছি৷’তেমনি আমরা বিশ্বাস করেছি বলেই কথা বলছি৷ 14 কারণ আমরা জানি, ঈশ্বর প্রভু, যিনি যীশুকে পুনরুত্থিত করেছেন, তিনি যীশুর সঙ্গে আমাদেরও জীবিত করে তুলবেন এবং তোমাদের সঙ্গে আমাদের (খ্রীষ্টের কাছে) উপস্থিত করবেন৷ 15 সব কিছুই তোমাদের জন্য ঘটেছে এর ফলে অনেকে ঈশ্বরের অনুগ্রহ পাবে যাতে অনেকে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দেয় যাতে তিনি গৌরবান্বিত হন৷ 16 এইজন্য আমরা হতাশ হই না, কারণ যদিও আমাদের এই দেহ বিনাশপ্রাপ্ত হতে থাকছে তবু আমাদের অন্তরাত্মা দিনে দিনে নতুন হয়ে উঠছে৷ 17 বস্তুত আমাদের এই দুঃখ কষ্ট সামযিক মাত্র৷ সামযিক এই কষ্টভোগ আমাদের জীবনে নিয়ে আসবে শ্রেষ্ঠ শাশ্বত মহিমা যা আমাদের দুঃখ কষ্টের সঙ্গে তুলনার য়োগ্য নয়৷ 18 তাই যা দেখা যায় তার দিকে লক্ষ্য না করে বরং যা যা দৃশ্যের অতীত তার ওপরই আমরা দৃষ্টি নিবদ্ধ করি৷ যা যা দৃশ্যমান তা তো অল্পকালস্থাযী: কিন্তু যা যা দৃশ্যাতীত তা চিরস্থাযী৷
2 Corinthians 5:1 আমরা জানি পৃথিবীতে আমরা তাঁবুর মত য়ে বাড়িতে বাস করি তা যদি নষ্ট হয়ে যায় তবে আমাদের একটি ঈশ্বরদত্ত বাড়ি আছে, য়ে বাড়ি মানুষের তৈরী নয়, স্বর্গে সে বাড়ি চিরকাল ধরেই আছে৷ 2 বাস্তবিক আমরা এই তাঁবুতে থাকতে থাকতে কাতরভাবে আর্তনাদ করছি৷ আমরা মনেপ্রাণে কামনা করছি য়ে আমাদের স্বর্গীয় আবাস দিয়ে আমাদের ঢেকে দেওয়া হোক৷ 3 কারণ আমরা বিশ্বাস করি য়ে এই পোশাক পরবার পর দেখা যাবে য়ে আমরা উলঙ্গ নই৷ 4 বাস্তবে আমরা এই দেহের মধ্যে থেকে ভারাক্রান্ত হওয়াতে আর্তনাদ করছি৷ আমাদের বর্তমান (দেহরূপ) পোশাকটি ত্যাগ করার ইচ্ছা আমাদের নেই; বরং আমরা চাই য়ে নতুন (স্বর্গীয় দেহরূপ) পোশাকটি পুরাতনের ওপর পরি যাতে নশ্বর জীবন আবৃত হয়ে যায়৷ 5 আর এর জন্য ঈশ্বর আমাদের প্রস্তুত করেছেন৷ এইজন্য তিনি পবিত্র আত্মাকে আমাদের কাছে জামিনস্বরূপ পাঠিয়েছেন৷ 6 আমাদের মনে সর্বদা ভরসা আছে, আমরা জানি যতদিন এই দেহের ঘরে বাস করব ততদিন আমরা প্রভুর কাছ থেকে দূরে থাকব৷ 7 আমরা বিশ্বাসের দ্বারা চলি, বাইরের দৃশ্যের দ্বারা নয়৷ 8 তাই আমি বলি য়ে আমাদের নিশ্চিত ভরসা আছে এবং বাস্তবিক আমরা এই দেহ ত্যাগ করে, আমাদের প্রকৃত আবাস প্রভুর কাছে থাকাই ভাল মনে করি৷ 9 আমাদের লক্ষ্য এই য়ে আমরা এই দেহের ঘরে বাস করি বা না করি, আমরা য়েন ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করে চলি৷ 10 কারণ আমাদের সকলকে খ্রীষ্টের বিচারাসনের সামনে দাঁড়াতে হবে; আর এই নশ্বর দেহে বাস করার সময় আমরা ভাল বা মন্দ যা কিছু করেছি তার উপযুক্ত প্রতিদান আমাদের প্রত্যেককে দেওয়া হবে৷ 11 তাই প্রভুর ভয় কি, তা জানাতে পেরে আমরা প্রত্যেক মানুষকে বোঝাচ্ছি য়েন তারা আমাদের কথায় বিশ্বাস করে৷ ঈশ্বর আমাদের অন্তরের কথা সুস্পষ্টভাবে জানেন; আর আমি আশাকরি তোমরাও আমাদের অন্তরের কথা জান৷ 12 আমরা আবার তোমাদের কাছে নিজেদেরকে য়োগ্য পাত্র বলে প্রমাণ দিতে চাইছি না, কিন্তু আমাদের জন্য গর্ব করার সুয়োগ তোমাদের দিচ্ছি; উদ্দেশ্য এইযাঁরা কোন ব্যক্তির হৃদয়ের কথা বিবেচনা না করে দৃশ্যমান বিষয়গুলি নিয়ে গর্ব করে, এইসব লোকদের য়েন তোমরা উচিত জবাব দিতে পার৷ 13 যদি আমরা হতবুদ্ধি হয়ে থাকি তবে তা ঈশ্বরের জন্য এবং যদি আমাদের বিচার বুদ্ধি ঠিক থাকে তবে তা তোমাদের জন্য৷ 14 খ্রীষ্টের ভালবাসা আমাদের নিয়ন্ত্রিত করে, কারণ আমরা নিশ্চিতভাবে বুঝেছি তিনি (খ্রীষ্ট) সকলের জন্য মৃত্যুবরণ করলেন, তাতে সকলেরই মৃত্যু হল৷ 15 খ্রীষ্ট সকলের জন্য মৃত্যুবরণ করলেন৷ তাই যাঁরা জীবন পেল, তারা আর নিজেদের উদ্দেশ্যে নয়, বরং যিনি তাদের জন্য মৃত্যুবরণ করেছিলেন ও পুনরুত্থিত হয়েছেন, তাঁরই উদ্দেশ্যে য়েন জীবনযাপন করে৷ 16 তাই এখন থেকে আমরা আর কাউকেই জাগতিক দৃষ্টিভঙ্গী দিয়ে বিচার করি না৷ যদিও আগে খ্রীষ্টকে আমরা জাগতিক দৃষ্টিভঙ্গী দিয়েই বিচার করেছি তবু এখন আর তা করি না৷ 17 সুতরাং কেউ যদি খ্রীষ্টের সঙ্গে মিলিত হয়, তবে সে এক নতুন সৃষ্টি হয়ে ওঠে., তার জীবনের পুরানো বিষয়গুলি অতীত হয়ে যায়; দেখ, তার সবই এখন নতুন হয়ে উঠেছে৷ 18 সমস্ত কিছুই ঈশ্বর থেকে এসেছে, যিনি খ্রীষ্টের মাধ্যমে নিজের সাথে আমাদের পুর্নমিলিত করেছেন এবং অন্যদের তাঁর সঙ্গে আবার মিলন করিয়ে দেওয়ার কাজ আমাদের দিয়েছেন৷ 19 য়েমন বলা হয়ে থাকে: ঈশ্বর খ্রীষ্টের মাধ্যমে জগতকে পুনরায় তাঁর নিজের সঙ্গে মিলিত করার কাজ করছিলেন৷ তিনি খ্রীষ্টে মানুষের সকল পাপকে পাপ বলে গন্য না করে মিলনের বার্তা জানাবার ভার আমাদের দিয়েছেন৷ 20 খ্রীষ্টের হয়েই আমরা কথা বলেছি৷ খ্রীষ্টের হয়ে কথা বলতে আমাদের পাঠানো হয়েছে, এইভাবে আমাদের মাধ্যমে ঈশ্বর লোকদের ডাকছেন৷ আমরা খ্রীষ্টের হয়ে তোমাদের অনুরোধ করছি, তোমরা ঈশ্বরের সাথে মিলিত হও৷ 21 খ্রীষ্ট কোন পাপ করেন নি; কিন্তু ঈশ্বর খ্রীষ্টের ওপর আমাদের পাপের সব দোষ চাপিয়ে দিয়েছেন, য়েন খ্রীষ্টের মধ্যে ঈশ্বরের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক স্থাপিত হয়৷
2 Corinthians 6:1 ঈশ্বরের সহকর্মী হিসাবে আমরা তোমাদের অনুরোধ করছি, তোমরা ঈশ্বরের য়ে অনুগ্রহ লাভ করেছ তা নিষ্ফল হতে দিও না৷ 2 কারণ ঈশ্বর বলেন,‘আমি উপযুক্ত সময়ে তোমাদের প্রার্থনা শুনলাম এবং পরিত্রাণের দিনে আমি তোমাদের সাহায্য করলাম৷’যিশাইয় 49:8আমি যা বলছি শোন, এখনই সেই ‘উপযুক্ত সময়৷’ আজই ‘পরিত্রাণের দিন৷’ 3 আমরা চেষ্টা করি য়েন আমাদের কোন কাজের দ্বারা কেউ বিঘ্নিত না হয়৷ য়েন আমাদের কাজের কোন রকম নিন্দা কেউ করতে না পারে৷ 4 আমরা সব বিষয়ে নিজেদেরকে ঈশ্বরের সেবক বলে প্রমাণ করি৷ আমরা ধৈর্য়ের সঙ্গে দুঃখভোগ করে সবসময় কষ্ট ও নির্য়াতন সহ্য করেছি৷ 5 আমাদের মারধোর করা হয়েছে, কারাগারে দেওয়া হয়েছে, মারমুখী জনতার সামনে আমাদের দাঁড়াতে হয়েছে৷ কাজ করতে করতে অবসন্ন হয়েছি, কত রাত না ঘুমিয়ে কাটিয়েছি, এমনকি অনাহারেও কতদিন কেটেছে৷ 6 এসব সত্ত্বেও আমরা আমাদের জীবনের পবিত্রতা, জ্ঞান, ধৈর্য্য, স্নেহমমতা, পবিত্র আত্মা, প্রকৃত ভালবাসা ও সত্যের প্রচার দ্বারা এবং ঈশ্বরের পরাক্রমের দ্বারা, কি আক্রমণে কি আত্মরক্ষায় উভয় ক্ষেত্রেই সদাচারের অস্ত্র ব্যবহার করে প্রমাণ দিয়েছি য়ে আমরা ঈশ্বরের সেবক৷ 7 8 আমরা সম্মানিত হয়েছি, আবার অসম্মানিত ও হয়েছি৷ আমরা অপমানিত হয়েছি, আবার প্রশংসিত ও হয়েছি৷ আমাদের মিথ্যাবাদী হিসেবে ধরা হয়েছে যদিও আমরা সত্য বলি৷ 9 কিছু লোক আমাদের প্রেরিত বলে স্বীকার করে না; কিন্তু তবুও আমরা স্বীকৃত৷ মনে হচ্ছিল আমরা মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছি, কিন্তু দেখ আমরা মরিনি৷ আমাদের শাস্তি দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু মেরে ফেলা হচ্ছে না৷ 10 একদিকে মনে হয় আমরা দুঃখ পাচ্ছি কিন্তু আমরা সদাই আনন্দ করছি৷ মনে হয় আমরা নিঃস্ব, তবু সবকিছুই আমাদের আছে৷ ধরে নেওয়া হয় আমরা দরিদ্র কিন্তু আমরা অপরকে ধনবান করি৷ 11 হে করিন্থীয়গণ, খোলাখুলিভাবেই আমরা তোমাদের সঙ্গে কথা বলেছি৷ 12 তোমাদের প্রতি আমাদের ভালবাসা অটুট আছে; কিন্তু তোমরা তোমাদের ভালবাসা থেকে আমাদের দূরে রেখেছ৷ 13 আমি তোমাদের সন্তান মনে করে বলছি, আমরা য়েমন তোমাদের ভালবেসেছি তোমরাও য়েন তেমনি মনপ্রাণ খুলে আমাদের ভালবাস৷ 14 তোমরা অবিশ্বাসীদের থেকে আলাদা, তাই তাদের সঙ্গে নিজেদের যুক্ত করো না; কারণ ন্যায় ও অন্যায়ের মধ্যে কোন য়োগ থাকতে পারে না৷ অন্ধকারের সাথে আলোর কি কোন য়োগায়োগ থাকতে পারে? 15 খ্রীষ্ট এবং দিয়াবলের মধ্যে কি কোন সম্পর্ক থাকতে পারে? অবিশ্বাসীর সাথে বিশ্বাসীরই বা কি সম্পর্ক? 16 ঈশ্বরের মন্দিরের সাথে প্রতিমারই বা কি সম্পর্ক? কারণ আমরাই তো জীবন্ত ঈশ্বরের মন্দির; য়েমন ঈশ্বর বলেছেন:‘আমি তাদের মধ্যে বাস করব এবং তাদের মধ্যে যাতায়াত করব; আমি তাদের ঈশ্বর হবো ও তারা আমার লোক হবে৷’লেবীয় পুস্তক 26:11-12 17 প্রভু বলেন, ‘তোমরা তাদের মধ্য থেকে বেরিয়ে এস, তাদের থেকে পৃথক হও এবং অশুচি জিনিস স্পর্শ করো না, তাহলে আমি তোমাদের গ্রহণ করব৷’যিশাইয় 52:11 18 ‘আমি তোমাদের পিতা হব ও তোমরা আমার পুত্র কন্যা হবে৷’ একথা সর্বশক্তিমান প্রভু বলেন৷2 শমুয়েল7:8, 14
2 Corinthians 7:1 প্রিয় বন্ধুগণ, এই সমস্ত প্রতিশ্রুতি যখন আমাদের রয়েছে তখন এস, যা কিছু আমাদের দেহ বা আত্মাকে অশুচি করে তার থেকে মুক্ত হয়ে নিজেদের শুচি করি৷ ঈশ্বরের সম্মান করে নিজেদের পূর্ণরূপে পবিত্র করি৷ 2 তোমাদের হৃদয়ে আমাদের স্থান দিও৷ আমরা কারও ক্ষতি করি নি; কাউকে সর্বনাশের পথে নিয়ে যাই নি, কাউকে ঠকাই নি৷ 3 আমি তোমাদের দোষী করতে একথা বলছি তা নয়; আমরা তোমাদের এত ভালবাসি য়ে আমরা মরি তো একসঙ্গে মরব, বাঁচি তো একসঙ্গেই বাঁচব৷ 4 তোমাদের ওপর আমার বড় আস্থা আছে আর তোমাদের নিয়ে আমার খুবই গর্ব৷ আমাদের সমস্ত কষ্টের মধ্যে তোমাদের কাছ থেকে আমি যথেষ্ট উত্সাহ পেয়েছি, তাই আমার মনে বড় আনন্দ৷ 5 যখন আমরা মাকিদনিয়াতে এসেছিলাম, তখনও আমাদের দৈহিকভাবে বিন্দুমাত্র বিশ্রাম হয় নি৷ কারণ আমরা সব দিক থেকে কষ্ট পেয়েছিলাম, বাইরে ছিল ঝগড়াঝাটি ও মনে ছিল ভয়৷ 6 তবুও ঈশ্বর যিনি নিরাশ প্রাণে সান্ত্বনা দেন, তিনি তীতকে নিয়ে এসে আমাদের সান্ত্বনা দিলেন৷ 7 কেবল তীতের আসার জন্য নয়, তোমরা তাকে য়ে সান্ত্বনা দিয়েছ তার জন্যও৷ তিনি আমাদের জানিয়েছেন আমাদের দেখার জন্য তোমাদের কত গভীর আগ্রহ রয়েছে৷ তোমরা যা করেছ তার জন্য তোমরা কি পরিমাণ দুঃখিত এবং আমার জন্য তোমাদের আগ্রহের কথাও তীত আমাদের জানিয়েছেন৷ এর ফলে আমি আরও আনন্দিত হয়েছি৷ 8 যদিও আমার চিঠি তোমাদের কিছু সময়ের জন্য দুঃখ দিয়েছে তবু অনুশোচনা করি না, কারণ প্রথমে অনুশোচনা করলেও আমি দেখছি য়ে সেই চিঠি তোমাদের মনে মাত্র কিছুকালের জন্য ব্যথা দিয়েছে৷ 9 এখন আমি আনন্দ করছি, তোমরা মনে ব্যথা পেয়েছিলে বলে নয়; কিন্তু তোমাদের সেই দুঃখ ও ব্যথা তোমাদের জীবনকে পরিবর্তিত করেছে বলে৷ ঈশ্বরের ইচ্ছানুসারেই তোমরা দুঃখ পেয়েছিলে, তাই আমাদের দ্বারা তোমাদের কোনরকম ক্ষতি হয় নি; 10 কারণ ঈশ্বরের ইচ্ছানুসারে দুঃখ মানুষের হৃদয়ে ও জীবনে অনুতাপ আনে আর তা মুক্তির দিকে নিয়ে যায় এবং তাতে আমাদের দুঃখ করার কিছু নেই৷ কিন্তু এই জগতের দেওযা দুঃখ মানুষকে অনন্ত মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়৷ 11 দেখ, ঈশ্বরের ইচ্ছানুসারে য়ে দুঃখ তোমাদের হয়েছে, তা তোমাদের কত মঙ্গল করেছে, তোমাদের কত আন্তরিক করে তুলেছে৷ নিজেদের নির্দোষ বলে প্রমাণ করার জন্য তোমাদের কত ইচ্ছা হয়েছিল, তোমাদের মনে কত ক্রোধ ও ভয় জেগেছিল, তোমাদের মনে কত দরদ এসেছিল, অন্যায়ের শাস্তি দেবার জন্য তোমাদের কত ইচ্ছা হয়েছিল৷ সবকিছুতেই তোমরা প্রমাণ করেছ য়ে সে বিষয়ে তোমরা নির্দোষ৷ 12 আমি তোমাদের কাছে চিঠি লিখেছিলাম বটে, কিন্তু য়ে অন্যায় করেছে বা যার ওপর অন্যায় করা হয়েছে তাদের জন্য নয়, বরং তোমাদের লিখেছিলাম যাতে ঈশ্বরের সামনে আমাদের প্রতি তোমাদের য়ে এই আনুগত্য আছে তা উপলদ্ধি করতে পার৷ 13 এইসবের জন্য আমরা উত্সাহিত হয়েছি৷ আমাদের সেই উত্সাহের ওপরে তীতের আনন্দ আমাদের আরও আনন্দিত করেছে৷ তোমাদের সকলের কাছ থেকে তিনি অন্তরে নতুন শক্তি লাভ করেছেন৷ 14 তাঁর কাছে আমি কোন বিষয়ে যদি তোমাদের জন্য গর্ব করে থাকি, তাতে লজ্জিত হই নি; কিন্তু আমরা য়েমন তোমাদের কাছে সবকিছুই সত্যভাবে ব্যক্ত করেছি, তেমনি তীতের কাছে আমাদের সেই গর্বও সত্য বলে প্রমাণ হল৷ 15 তোমরা সকলে তাঁকে কেমন মান্য করেছিলে, কেমন ভয় ও সম্মানের সঙ্গে তাঁকে গ্রহণ করেছিলে, সে সব স্মরণ করে তোমাদের প্রতি তাঁর ভালবাসা আরও বেড়ে গেছে৷ 16 এই জন্য আমি খুশী কারণ আমি তোমাদের ওপর সম্পূর্ণ নির্ভর করতে পারি৷
2 Corinthians 8:1 এখন ভাই ও বোনেরা, মাকিদনিয়ার খ্রীষ্ট মণ্ডলীগুলির মধ্যে ঈশ্বরের অনুগ্রহ য়ে কাজ করেছে তা আমরা তোমাদের জানাচ্ছি৷ 2 যদিও দুঃখ কষ্ট ভোগ করার মধ্য দিয়ে তাদের পরীক্ষা করা হয়েছে এবং যদিও তারা অতি দরিদ্র, তবু তাদের মনে এতই আনন্দ য়ে তারা অন্যকে খোলা হাতে দান করেছে৷ 3 আমি সাক্ষী দিচ্ছি য়ে তারা নিজের ইচ্ছায় যতদূর সাধ্য এমনকি সাধ্যের অতিরিক্ত দান করেছিল৷ 4 তারা আমাদের ঐকান্তিক অনুরোধ জানিয়ে বলেছিল, ঈশ্বরের লোকদের এই সেবার কাজে অংশগ্রহণ করার সুয়োগ য়েন তাদের দেওয়া হয়৷ 5 তারা এমনভাবে দান করেছিল যা আমরা আশাই করি নি৷ তারা ঈশ্বরের ইচ্ছামতো প্রথমে নিজেদের প্রভুর কাছে এবং পরে আমাদের দিয়ে দিল৷ 6 সেইজন্য আমরা তীতকে অনুরোধ করলাম যাতে তিনি এর আগে য়ে কাজ করতে শুরু করেছিলেন, সেই অনুগ্রহের কাজ শেষ করেন৷ 7 সবকিছু য়েমন তোমাদের প্রচুর পরিমাণে আছে; বিশ্বাস, বলার ক্ষমতা, জ্ঞান, সববিষয়ের প্রতি তোমাদের আগ্রহ এবং আমাদের প্রতি ভালবাসা, ঠিক এইভাবে দান করার গুণটিও য়েন তোমাদের প্রচুর পরিমাণে থাকে৷ 8 আমি আদেশ করে বলছি না; কিন্তু অন্য়ের আগ্রহের উদাহরণ দিয়ে তোমাদের ভালবাসা যথার্থ কিনা পরীক্ষা করছি৷ 9 কারণ তোমরা আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহের কথা জান, তিনি ধনী হয়েও তোমাদের জন্য দরিদ্র হলেন, যাতে তোমরা তাঁর দরিদ্রতায় ধনবান হয়ে উঠতে পার৷ 10 এবিষয়ে আমি আমার পরামর্শ তোমাদের দিচ্ছি কারণ তোমাদের পক্ষে এটা মঙ্গলজনক৷ য়েহেতু গত বছর তোমরাই প্রথম কাজ করতে আরন্ভ করেছিলে, শুধু তাই নয় সেই কাজ করার ইচ্ছাও তোমরাই প্রথমে প্রকাশ করেছিলে৷ 11 তোমরা আগ্রহের সাথে য়ে দেওয়ার কাজ শুরু করেছিলে, এখন তা সেই একই আগ্রহের সঙ্গে তোমাদের সাধ্যমত শেষ কর৷ 12 কারণ দেবার মতো ইচ্ছা থাকলে তবেই তোমাদের দান গ্রাহ্য় হবে, তোমাদের যা আছে সেই ভিত্তিতে দিলেই তোমাদের দান গ্রাহ্য় হবে; তোমাদের যা নেই সেই অনুযাযী নয়৷ 13 কারণ আমাদের উদ্দেশ্য এই নয় য়ে, অন্য সকলে আরাম করবে আর তোমরা কষ্টে পড়বে, বরং সব কিছুতে য়েন সমতা থাকে৷ 14 বর্তমানে তোমাদের যথেষ্ট রয়েছে, তার থেকে দিয়ে তাদের প্রযোজন মেটাতে পারবে, আবার প্রযোজনে তাদের যা বেশী হবে তা দিতে তোমাদের অভাব মিটবে৷ এইভাবে য়েন সর্বত্র সমতা বজায় থাকে৷ 15 শাস্ত্রে য়েমন লেখা আছে,‘য়ে বেশী কুড়োলো, তার বাড়তি থাকল না; য়ে অল্প কুড়োলো, তার অভাব হল না৷’ যাত্রাপুস্তক 16:18 16 তোমাদের জন্য আমার য়ে আগ্রহ আছে, ঠিক সেই রকম আগ্রহ ঈশ্বর তীতের অন্তরে দিয়েছেন বলে আমি ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিই৷ 17 তীত য়ে আমাদের অনুরোধ রেখেছেন তাই নয়, তিনি এতই আগ্রহী ছিলেন য়ে নিজের ইচ্ছায় তোমাদের কাছে যাচ্ছেন৷ 18 আমরা তীতের সঙ্গে সেই ভাইকে পাঠাচ্ছি, যিনি সুসমাচার প্রচারের জন্য সমস্ত মণ্ডলীতে প্রশংসিত৷ 19 কেবল তাই নয়, আমাদের সহযাত্রী হিসেবে প্রভুর মহিমার জন্য এই দান নিয়ে যাবার দরুন ও আমাদের সাহায্য করার ইচ্ছাকে প্রমাণ করতে বাস্তবিক মণ্ডলীগুলি তাকে মনোনীত করেছিল৷ 20 আমরা এই দাযিত্ব সম্পর্কে সতর্ক যাতে এই বিপুল অর্থ বিতরণ সম্পর্কে কেউ য়েন আমাদের সমালোচনা না করে৷ 21 কারণ কেবল প্রভুর সামনে নয়, কিন্তু মানুষের দৃষ্টিতে যা ভাল, তাও আমরা লক্ষ্য রাখি৷ 22 আর ওদের সাথে আমাদের ভাইকে পাঠালাম, যাকে আমরা অনেকবার অনেক বিষয়ে পরীক্ষা করে এইসব কাজে উদ্যোগী দেখেছি এবং তোমাদের প্রতি তাঁর এই দৃঢ় বিশ্বাসের জন্য এবার আরও আগ্রহী দেখছি৷ 23 তীতের কথা যদি বলতে হয়, তবে তিনি আমার সহকর্মী ও তোমাদের সাহায্যের কাজে আমার সহকারী৷ আমাদের ভাইদের বিষয় যদি বলতে হয়, তবে বলি তাঁরা মণ্ডলীগুলির প্রতিনিধিত্ব করেন এবং খ্রীষ্টের পক্ষে গৌরব আনেন৷ 24 অতএব তোমাদের ভালবাসার প্রমাণ এবং তোমাদের ওপর আমাদের গর্বের কারণ, এই দুই বিষয়ের প্রমাণ তাদের দেখাও, যাতে সমস্ত মণ্ডলী তা দেখতে পায়৷
2 Corinthians 9:1 এখন বুঝতে পারছি য়ে ঈশ্বরের লোকদের সাহায্যের ব্যাপারে তোমাদের কিছু লেখার প্রযোজন নেই৷ 2 কারণ আমি তোমাদের আগ্রহ জানি এবং তোমাদের বিষয়ে মাকিদনিয়ানদের কাছে এই গর্ব করে থাকি য়ে গত বছর থেকে আখায়ার লোকরা অর্থাত্ তোমরা তৈরী হয়ে রয়েছ; আর এই ঘটনা তাদের বেশীর ভাগ লোককে দানের বিষয়ে উত্সাহিত করে তুলেছে, তারাও দিতে চাইছে৷ 3 কিন্তু আমি সেই ভাইদের পাঠাচ্ছি যাতে তোমাদের সম্বন্ধে আমাদের য়ে গর্ব তা বিফল না হয়, য়েন আমি য়েমন তাদের বলেছি সেইমতো তোমরা প্রস্তুত হয়ে থাকো৷ 4 তা না হলে মাকিদনিয়ার কিছু লোক যদি আমার সাথে আসে এবং তোমাদের প্রস্তুত না দেখে, তাহলে এই নিশ্চয়তা বোধ আমাদের ও তোমাদের উভয়ের পক্ষেই লজ্জার বিষয় হবে৷ 5 সেইজন্য আমি ভাইদের এই অনুরোধ করা প্রযোজন মনে করলাম, যাতে তারা আগে তোমাদের কাছে যান এবং দান হিসাবে য়ে অর্থ তোমরা দেবে বলেছিলে, সেই দান সংগ্রহ করে প্রস্তুত থাকতে পারেন৷ সেই দান য়েন স্বেচ্ছাদান হয়, জোর করে আদায় করা চাঁদার টাকা না হয়৷ 6 মনে রেখো, য়ে অল্প পরিমাণে বীজ বোনে, সে অল্প পরিমাণ ফসল কাটবে এবং য়ে যথেষ্ট পরিমাণ বীজ বোনে সে প্রচুর ফসল কাটবে৷ 7 প্রত্যেকে নিজের নিজের অন্তরে য়েমন স্থির করেছে, সেই মতোই দান করুক, মনে দুঃখ পেয়ে অথবা জোর করা হয়েছে বলে নয়, কারণ খুশী মনে যাঁরা দেয়, ঈশ্বর তাদের ভালবাসেন৷ 8 ঈশ্বর তোমাদের সর্বপ্রকার আশীর্বাদ প্রচুর পরিমাণে দিয়ে থাকেন, য়েন সব সময় তোমাদের সব কিছুই বেশী পরিমাণে থাকে এবং য়েন সব রকম ভাল কাজ করার জন্য সর্ব সময়ে তোমাদের ইচ্ছা ও প্রযোজনের অতিরিক্ত সবই থাকে৷ 9 য়েমন শাস্ত্রে লেখা আছে:‘ধার্মিক দরিদ্রকে মুক্ত হস্তে দান করে, তার সেই সত্কাজ চিরস্থাযী৷’গীতসংহিতা 112:9 10 যিনি কৃষককে বোনার জন্য বীজ ও আহারের জন্য খাদ্য় জুগিয়ে থাকেন, তিনি তোমাদের বোনার জন্য আত্মিক বীজ জোগাবেন এবং তার বৃদ্ধিসাধন করবেন৷ তোমাদের দানশীলতা প্রচুর ফসল উত্পন্ন করবে৷ 11 ঈশ্বর তোমাদের সব বিষয়ে সমৃদ্ধ করবেন য়েন তোমরা সব সময়ে মহত্ হও৷ আমাদের মাধ্যমে তোমাদের দাস, যখন অভাবীদের হাতে দেব, তখন তারা আনন্দে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাবে৷ 12 তোমাদের এই দানের ফলে ঈশ্বরের লোকদের শুধু য়ে অভাব মিটবে তা না, বরং এই দান ঈশ্বরের প্রতি অনেক ধন্যবাদের দ্বারা উপচে পড়বে৷ 13 তোমাদের এই কাজ য়ে আনুগত্যের প্রমাণ দেয় তার জন্যে তারা ঈশ্বরের প্রশংসা করবে, এই আনুগত্য তোমাদের খ্রীষ্টের সুসমাচারের ওপর বিশ্বাস থেকে আসে৷ খোলা হাতে তোমরা য়ে দান তাদের ও অপরের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছ তার জন্য তারা ঈশ্বরের প্রশংসা করবে৷ 14 তারা যখন তোমাদের জন্য প্রার্থনা করে তখন তোমাদের সাথী হবার ইচ্ছা করবে৷ তোমাদের ওপরে য়ে মহা-অনুগ্রহ ঈশ্বর দিয়েছন, তার কথা মনে করেই তারা এমন ইচ্ছা করবে৷ 15 ঈশ্বরের অপূর্ব অবর্ণনীয় দানের জন্য তাঁকে ধন্যবাদ৷
2 Corinthians 10:1 আমি পৌল নিজের খ্রীষ্টের বিনয় ও সৌজন্যের দোহাই দিয়ে তোমাদের অনুনয় করছি৷ আমি নাকি তোমাদের সামনে বিনম্র কিন্তু পেছনে চিঠিতে তোমাদের কড়া কড়া কথা বলি৷ 2 কিছু কিছু লোক মনে করে য়ে আমরা জাগতিক ভাবে চলি৷ আমি মিনতি করি যখন আমি আসব তখন য়েন আমাকে সেই দৃঢ় সাহস দেখাতে না হয়, য়ে সাহস আমি সেইসব লোকদের প্রতি দেখানো আবশ্যক মনে করি৷ 3 আমরা জগতেই বাস করি কিন্তু জগত্ য়েভাবে যুদ্ধ করে আমরা সেইভাবে করি না৷ 4 জগত্ য়ে যুদ্ধের অস্ত্র ব্যবহার করে, আমরা তার থেকে স্বতন্ত্র যুদ্ধাস্ত্র ব্যবহার করি৷ আমাদের যুদ্ধের অস্ত্র ঈশ্বরের পরাক্রম; এই যুদ্ধাস্ত্র শত্রুর সুদৃঢ় ঘাঁটি ধ্বংস করতে পারে৷ লোকদের বাজে বিতর্ক আমরা বিফল করতে পারি৷ 5 য়ে সমস্ত গর্বজনক বিষয় ঈশ্বর বিষয়ক জ্ঞানের বিরুদ্ধে ওঠে, আমরা তাদের প্রত্যেককে ধ্বংস করি এবং সমস্ত চিন্তাকে বশীভূত করে খ্রীষ্টের অনুগত করি৷ 6 যখন তোমরা সম্পূর্ণভাবে আমাদের অনুগত হবে, তখনই আমরা অবাধ্যতার প্রতিটি কাজকে শাস্তি দিতে প্রস্তুত হব৷ 7 তোমাদের সামনের বিষয়গুলির দিকে দেখ, কেউ যদি নিজেদের ওপরে বিশ্বাস রেখে বলে, আমি খ্রীষ্টের লোক, তবে তার আবার একথাও বোঝা উচিত য়ে তার মত আমরাও খ্রীষ্টের লোক৷ 8 একথা ঠিক য়ে প্রভু য়ে কর্ত্তৃত্ব আমাদের দিয়েছেন তাই নিয়ে আমরা বেশ গর্ব করি৷ তোমাদের ব্যথা দিতে নয়, কিন্তু তোমাদের শক্তিশালী করে তুলতেই তিনি আমাদের এই অধিকার দিয়েছেন, আর তা নিয়ে আমরা লজ্জা পাচ্ছি না৷ 9 আমি চিঠিগুলি দিয়ে য়ে তোমাদের ভয় দেখাচ্ছি এরকম মনে করো না৷ 10 কেউ কেউ বলে, ‘তার চিঠিগুলো মনে রেখাপাত করে এবং শক্তিশালী, কিন্তু লোক হিসাবে তিনি দুর্বল এবং তাঁর কথা বলার ধরণ একেবারেই হৃদয়গ্রাহী নয়৷’ 11 এই ধরণের লোক বুঝুক য়ে অনুপস্থিত থাকাকালীন আমাদের চিঠির মধ্যে য়ে শক্তি প্রকাশ পেয়েছে, আমরা যখন তোমাদের সামনে উপস্থিত হব তখন আমাদের কাজেও সেই একই শক্তি দেখতে পাবে৷ 12 কারণ এমন কোন লোকের সাথে আমরা নিজেদের গণনা বা তুলনা করতে সাহস করি না, যাঁরা নিজেরাই নিজেদের উচ্চ প্রশংসা করে থাকে৷ তারা পরস্পরের মধ্যে নিজেদের পরিমাপ করে এবং নিজেদের সাথে নিজেদের তুলনা করে৷ 13 নিজেদের বিষয়ে এতটুকু গর্ব করার অধিকার আমাদের আছে, আমরা তার বেশী করব না, বরং ঈশ্বর আমাদের কর্মক্ষেত্রে য়ে সীমা নিরূপণ করেছেন সেই সীমার মধ্যে থাকব৷ সেই সীমার মধ্যে তোমরা আছো৷ 14 তোমাদের কাছে গিয়েছিলাম বলে তোমাদের নিয়ে আমরা যখন গর্ব করি, তখন সীমার বাইরে কিছু বলি না, কারণ খ্রীষ্টের সুসমাচার নিয়ে আমরাই তোমাদের কাছে প্রথম পৌঁছেছিলাম৷ 15 আমাদের কাজ নিয়ে গর্ব করার য়ে সীমা তা আমরা ছাড়িয়ে যাব না, অন্য়েরা কি করছে তা আমাদের গর্বের বিষয় নয়, পরিবর্তে আমরা আশা করি য়ে তোমাদের বিশ্বাস বাড়বার সাথে সাথে আমরা তোমাদের মধ্যে আরও কাজ করতে পারব৷ 16 তখন আমরা তোমাদের নগর ছাড়িয়েও জায়গায় জায়গায় সুসমাচার প্রচার করতে পারব৷ অপরের এলাকার করা কাজের জন্য আমরা গর্ব করব না৷ 17 তবে, ‘য়ে গর্ব করতে চায় সে প্রভুকে নিয়েই গর্ব করুক৷’ 18 কারণ য়ে মানুষ নিজের সম্পর্কে উচ্চ ধারণা পোষন করে সে নয়, কিন্তু প্রভু যার সম্পর্কে উচ্চ ধারণা পোষন করেন সেই ভাল বলে প্রমাণিত হয়৷
2 Corinthians 11:1 যখন তোমরা আমার নির্বুদ্ধিতা দেখতে পাও তখন একটু ধৈর্য়্ ধরে আমাকে সহ্য করবে এই আমি চাই৷ দয়া করে আমার প্রতি সহিষ্ণু হও৷ 2 আমি অন্তরে তোমাদের জন্য জ্বালা অনুভব করছি৷ এই অন্তর্জ্বালা স্বয়ং ঈশ্বরের অন্তর থেকে আসে৷ আমি তোমাদেরকে এক বরের সঙ্গে বিয়ে দিতে প্রতিজ্ঞা করেছি, য়েন সতী কন্যা রূপে তোমাদের খ্রীষ্টের কাছে উপহার দিতে পারি৷ 3 কিন্তু আমার ভয় হচ্ছে দুষ্ট সাপ য়েমন নিজের চাতুরীতে হবাকে ভুলিয়েছিল, সেইরকম তোমাদের মন য়েন কলুষিত না করে এবং খ্রীষ্টের প্রতি তোমাদের য়ে পূর্ণ ও বিশুদ্ধ অনুরাগ আছে তা থেকে তোমাদের য়েন দূরে সরিয়ে নিয়ে না যায়৷ 4 কোন আগন্তুক যদি এমন আর এক যীশুকে প্রচার করে, যাকে আমরা প্রচার করি নি, অথবা আগেই গ্রহণ করেছ এমন আত্মা ছাড়া যদি তোমরা অন্য কোন আত্মা পাও, বা আগে গ্রহণ কর নি এমন কোন অন্য রকমের সুসমাচার পাও তবে তা ভালভাবে সহ্য করো৷ 5 কারণ আমার মনে হয় না য়ে আমি তথাকথিত সেই ‘মহান প্রেরিতদের’ থেকে কোন অংশে পিছিয়ে পড়ে আছি৷ 6 কিন্তু যদিও আমি খুব ভাল বক্তা নই, তবুও আমার জ্ঞান সীমিত নয় এবং তা সবরকমেই পরিষ্কারভাবেই তোমাদের দেখিয়ে দিয়েছি৷ 7 তোমরা য়েন উন্নত হতে পার তাই নিজেকে নত করে আমি কি পাপ করেছি? তোমাদের মধ্যে বিনা পারিশ্রমিকে ঈশ্বরের সুসমাচার প্রচার করে কি ভুল করেছি? 8 তোমাদের মধ্যে সেবার জন্য অন্য মণ্ডলী থেকে টাকা নিয়ে আমি তাদের লুঠ করেছি; 9 এবং যখন তোমাদের কাছে ছিলাম তখন আমার অভাব হলেও আমি কাউকে ভারগ্রস্ত করি নি, কারণ মাকিদনিয়া থেকে ভাইরা এসে আমার প্রযোজন মেটালেন৷ হ্যাঁ, আমি যাতে কোন বিষয়ে তোমাদের কাছে হাত না পাতি, নিজেকে সেইভাবে রক্ষা করেছি এবং করব৷ 10 সত্যই খ্রীষ্টের সততা যখন নিশ্চিতভাবে আমার মধ্যে আছে, তখন আখায়ার কোন অঞ্চলে কেউ এই গর্ব করা থেকে আমায় বিরত করবে না৷ আমি তোমাদের বোঝা হতে চাই না৷ 11 তার মানে কি এই য়ে আমি তোমাদের ভালবাসি না? ঈশ্বর জানেন আমি তোমাদের ভালবাসি৷ 12 কিন্তু এখন আমি যা করছি, সেই কাজ আরও করব যাতে যাঁরা গর্ব করার সুয়োগ খোঁজে, তাদের বিরত করতে পারি৷ যাঁরা গর্ব করে তাদের য়েন তোমরা আমাদের সমান ভাব; 13 কারণ তারা ভণ্ড প্রেরিত, তারা মিথ্যা বলে৷ তারা প্রবঞ্চক কর্মী, তারা প্রেরিতের ছদ্মবেশ ধরেছে৷ তারা এমনভাব দেখায় যাতে লোকে মনে করে য়ে তারা খ্রীষ্টের প্রেরিত৷ 14 এটা আশ্চর্য নয়, কারণ শয়তান নিজেও নিজেকে দীপ্তিময় স্বর্গদূত হিসাবে দেখাবার জন্য বদলে ফেলে৷ 15 অতএব তার সেবকরাও য়ে ধার্মিকতার সেবকদের বেশ ধারণ করে, এতে আশ্চর্য হবার কিছুই নেই, পরিণামে তাদের কাজের জন্য তারা শাস্তিভোগ করবে৷ 16 আমি আবার বলছি, কেউ আমাকে মূর্খ মনে না করুক, কিন্তু যদি তোমরা মনে কর, তবে আমাকে মূর্খ বলেই গ্রহণ কর; তাতে আমিও একটু গর্ব করতে পারব৷ 17 আমি নিজেকে জানি তাই আমি গর্ব করি৷ এখন আমি যা বলছি তা প্রভুর আদেশ মত বলছি না কিন্তু এক নির্বোধের মতোই এই গর্ব করছি৷ 18 য়েহেতু অনেকেই জাগতিক বিষয়ে গর্ব করে, তাই আমিও গর্ব করব৷ 19 কারণ তোমরা যাঁরা বুদ্ধিমান তারা নির্বোধ লোকদের প্রতি আনন্দের সাথে সহিষ্ণুতা দেখিয়ে থাক৷ 20 আমি জানি তোমরা সহিষ্ণু, এমন কি তাদের প্রতিও যাঁরা তোমাদের আদেশ করে, শোষণ করে, ফাঁদে ফেলে, নিজেদেরকে তোমাদের থেকে ভাল বলে মনে করে অথবা তোমাদের গালে চড় মারে৷ 21 একথা বলতে আমার লজ্জা বোধ হয় য়ে আমরা তোমাদের প্রতি নিতান্ত ‘দুর্বল’ বলেই দুরকম ব্যবহার করি নি!কিন্তু গর্ব করার মতো যথেষ্ট সাহস যদি কারো থাকে, তবে আমি সাহসী হব ও গর্ব করব৷ আমি মূর্খের মতো কথা বলছি৷ 22 তারা কি ইব্রীয়? আমিও তাই৷ তারা কি ইস্রায়েলী? আমিও তাই৷ তারা কি অব্রাহামের বংশধর? আমিও তাই? 23 তারা কি খ্রীষ্টের সেবক? এমন গর্ব করা পাগলের মত শোনালেও আমি তাদের থেকে অনেক বেশী খ্রীষ্টের সেবা করছি৷ আমি তাদের থেকে অনেক বেশী কঠোর পরিশ্রম করেছি, তাদের থেকে বহুবার বেশী কারাদণ্ড ভোগ করেছি, অনেকবার চাবুকের মার সহ্য করেছি, অনেকবার মৃত্যুমুখে পড়েছি৷ 24 ইহুদীদের কাছ থেকে পাঁচবার উনচল্লিশটি করে চাবুকের মার খেতে হয়েছে৷ 25 তিনবার আমাকে লাঠিপেটা করেছে, একবার আমার ওপর পাথর ছোঁড়া হয়েছে, তিনবার ঝড়ে জাহাজ ডুবিতে আমি কষ্ট পেয়েছি এবং সারা দিনরাত অগাধ জলের মধ্যে কাটিয়েছি৷ 26 স্থলপথে যাত্রাকালে বহুবার বিপদে পড়েছি, নদী থেকে বিপদ এসেছে, কতবার ডাকাতের হাতে, কতবার আমার আপনজন ইহুদী ও অইহুদীদের দ্বারা বিপদগ্রস্ত হয়েছি৷ শহরের মধ্যে মহা বিপদে পড়তে হয়েছে, কখনও গ্রামাঞ্চলে, কখনও বিপদ সঙ্কুল সমুদ্রের মধ্যে এবং ভণ্ড খ্রীষ্টীয়ানদের কাছ থেকে৷ 27 অনেকবার অনাহারে দিন কাটিয়েছি, যথেষ্ট পোশাকের অভাবে প্রচণ্ড শীতে কষ্ট পেয়েছি৷ 28 আর সব সমস্যা যাক, একটি সমস্যা প্রতিদিন আমার ওপরে চেপে রয়েছে, তা হল সমস্ত মণ্ডলীর চিন্তা৷ 29 কেউ দুর্বল হলে আমি কি সেই দুর্বলতার সহভাগী হই না? কেউ বাধা পেয়ে পাপের পথে নেমে গেলে আমি কি রাগে জ্বলে উঠি না? 30 যদি গর্ব করতে হয়, তবে আমার নানা দুর্বলতার বিষয়ে গর্ব করব৷ 31 প্রভু যীশু খ্রীষ্টের ঈশ্বর ও পিতা, যিনি যুগে যুগে প্রশংসিত তিনি জানেন য়ে আমি মিথ্যা বলছি না৷ 32 যখন আমি দম্মেশকে ছিলাম, তখন রাজা আরিতার অধীনস্থ রাজ্যপাল আমাকে বন্দী করার জন্য দম্মেশকীয়দের সেই শহরের চারপাশে পাহারা বসিয়েছিলেন৷ 33 কিন্তু আমার বন্ধুরা শহরের পাঁচিলের একটা ফাঁক দিয়ে একটা ঝুড়িতে করে আমাকে নামিয়ে দিয়েছিলেন, এইভাবে সেই রাজ্যপালের হাত থেকে পালিয়েছিলাম৷
2 Corinthians 12:1 গর্ব করা আমার প্রযোজন, যদিও এর দ্বারা কোন লাভই হয় না; কিন্তু প্রভুর দেওয়া নানা দর্শন ও প্রকাশের সম্পর্কে আমাকে বলতে হবে৷ 2 আমি খ্রীষ্টে আশ্রিত একটি লোককে জানি, চোদ্দ বছর আগে যাকে তৃতীয় স্বর্গে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সশরীরে না অশরীরে তা জানি না, ঈশ্বর জানেন৷ 3 এই লোকটির ব্যাপার আমি জানি, সশরীরে কি অশরীরে, তা আমি জানি না, ঈশ্বর জানেন৷ সে স্বর্গোদ্যানে থাকায় এমন সব বিস্ময়কর কথা শুনেছিল, যা নিয়ে মানুষের কথা বলা উচিত নয়৷ 4 5 এমন লোকের জন্য গর্ব করব; কিন্তু নিজের জন্য গর্ব করব না৷ কেবল নানা দুর্বলতার জন্য গর্ব করব৷ 6 যদি আমি নিজের বিষয়ে গর্ব করি তাতেও মূর্খতার পরিচয় দেব না, কারণ আমি সত্যি কথাই বলব৷ তবুও নিজের বিষয়ে দেখছে এবং আমার কথা য়েমন শুনছে, আমাকে য়েন তার থেকে মহান বলে মনে না করে৷ 7 ঐসব অসাধারণ প্রকাশের অভিজ্ঞতার জন্য আমি য়েন গর্ব না করি, সেইজন্য আমার দেহে একটা কাঁটা (কষ্টদায়ক সমস্যা) দেওয়া হল, য়েন শয়তানের এক দূত আমাকে আঘাত করে, যাতে আমি অতি মাত্রায় গর্ব না করি৷ 8 এই ব্যাপারে আমি প্রভুর কাছে তিনবার প্রার্থনা করেছিলাম, যাতে ওর থেকে আমি মুক্তি পাই৷ 9 কিন্তু তিনি আমাকে বললেন, ‘আমার অনুগ্রহ তোমার জন্য যথেষ্ট; কারণ দুর্বলতার মধ্যে আমার শক্তি সম্পূর্ণতা লাভ করে৷’ এজন্য আমি বরং অত্যধিক আনন্দের সঙ্গে নানা দুর্বলতার গর্ব করব, যাতে খ্রীষ্টের পরাক্রম আমার ওপরে অবস্থান করে৷ 10 যখন কোন সঙ্কটের মধ্য দিয়ে যাই তখনও আমি আনন্দ পাই৷ যখন অন্যরা আমায় নির্য়াতন করে তাতে আমি আনন্দ পাই; যখন আমার সমস্যা থাকে তখনও আমি আনন্দ পাই৷ এইসব আমি খ্রীষ্টের জন্য সহ্য করি, কারণ যখন আমি দুর্বল, তখনই আমি বলবান৷ 11 আমি বোকার মতো কথা বলছি, তোমরাই আমাকে জোর করে বোকা বানালে৷ কারণ আমার প্রশংসা করা তোমাদের উচিত ছিল, যদিও আমি কিছু নই, তবু সেই ‘মহান প্রেরিতদের’ থেকে কোন অংশে ছোট নই৷ 12 আমি য়ে একজন প্রেরিত তার সমস্ত প্রমাণ আমি তোমাদের দিয়েছি এবং প্রকৃত প্রেরিতদের মত ধৈর্য়ের সঙ্গে নানা অলৌকিক চিহ্ন ও আশ্চর্য কাজ সম্পন্ন করেছি৷ 13 অন্য সমস্ত মণ্ডলী যা পেয়েছে তোমরাও সেই একই জিনিস পেয়েছ৷ তবে তোমরা কোন্ বিষয়ে অন্য মণ্ডলীর থেকে ছোট হলে? কেবল একটি বিষয়ে তোমরা ভিন্ন৷ আমি তোমাদের গলগ্রহ হই নি, এ যদি অন্যায় হয়ে থাকে তবে আমাকে সেই ভুলের জন্য ক্ষমা করো৷ 14 দেখ, এই তৃতীয়বার আমি তোমাদের কাছে য়েতে প্রস্তুত হয়েছি৷ আমি তোমাদের বোঝা হব না, কারণ আমি তোমাদের কাছ থেকে কোন কিছু চাই না, আমি কেবল তোমাদেরই চাই৷ কারণ বাবা-মায়ের জন্য অর্থ সঞ্চয় করা ছেলেমেয়েদের কর্তব্য নয়, বরং ছেলেমেয়েদের জন্য বাবা-মায়েরই সঞ্চয় করা কর্তব্য৷ 15 আমার যা কিছু আছে সে সবই তোমাদের অতি আনন্দের সঙ্গে দেব, এমন কি তোমাদের জন্য আমি নিজেকেও ব্যয় করব৷ তোমাদের জন্য আমার ভালবাসা যখন বেড়েই চলেছে, তখন আমার প্রতি তোমাদের ভালবাসা কি কমে যাবে? 16 যাই হোক, একথা ঠিক য়ে আমি তোমাদের উপর খরচের বোঝা হয়ে দাঁড়াই নি; কিন্তু তোমরা বলো আমি চালাক বলে নাকি ছলেবলে তোমাদের ধরেছি৷ 17 আমি যাদের তোমাদের কাছে পাঠিয়েছিলাম, তাদের মধ্য দিয়ে আমি কি তোমাদের ঠকিয়েছি? তোমরা জান য়ে আমি তা করি নি৷ 18 আমি তীতকে অনুরোধ করেছিলাম এবং তাঁর সাথে অপর এক ভাইকে পাঠিয়েছিলাম৷ তীত কি তোমাদের ঠকিয়েছেন? তোমরা জান য়ে তীত ও আমি, আমরা একই মনোভাব নিয়ে কাজ করি, এবং একই রকম আচরণ করি৷ 19 তোমরা কি মনে কর য়ে, আমরা নিজেদের রক্ষা করতে তোমাদের কাছে এতদিন ধরে এইসব কথা বলেছি৷ না, খ্রীষ্টের অনুগামী হিসেবে আমরা এইসব কথা ঈশ্বরের সামনে থেকেই বলেছি৷ প্রিয় বন্ধুরা, তোমাদের আত্মিকভাবে সবল করার জন্য আমরা এইসব কাজ করেছি৷ 20 কারণ আমার ভয় হয়, পরে আমি তোমাদেরকে য়েরকম দেখতে চাই, গিয়ে সেরকম দেখতে না পাই, এবং তোমরা আমাকে য়েরকম দেখতে চাও না পাছে সেরকম দেখ৷ আমার ভয় হয় য়ে আমি গিয়ে হয়তো তোমাদের মধ্যে ঝগড়া, হিংসা, ক্রোধ, শত্রুতা, গালাগালি, জল্পনা, অহংকার ও বিশৃঙ্খলা দেখতে পাব৷ 21 আমার ভয় হচ্ছে পাছে আমি আবার তোমাদের ওখানে গেলে আমার ঈশ্বর তোমাদের সামনে আমার মাথা নীচু করে দেন৷ যাঁরা আগে পাপ করেছিল, এবং নিজেদের দুষ্টতা, অশুচিতা, য়ৌন পাপ ও অশোভন কাজের বিষয়ে যাদের মনে কোন অনুতাপ নেই, এদের সকলের জন্য আমাকে হয়তো অনেক দুঃখ ও ব্যথা বহন করতে হবে৷
2 Corinthians 13:1 এই তৃতীয়বার আমি তোমাদের কাছে যাচ্ছি৷ ‘দুই বা তিন জন সাক্ষীর প্রমাণ দ্বারা প্রত্যেক মামলার নিষ্পত্তি হওয়া উচিত৷’ 2 দ্বিতীয় বার আমি যখন তোমাদের ওখানে গিয়েছিলাম, তখন যাঁরা পাপ জীবনযাপন করছিল তাদের আমি তখনই সতর্ক করে দিয়েছিলাম৷ এখন যখন আমি দূরে তখন আবার তোমাদের সাবধান করছি৷ যখন আমি পুনরায় তোমাদের দেখতে আসব, তখন সেইসব পাপীদের অথবা অন্য য়ে কেউ পাপ করে তাকে রেহাই দেব না৷ 3 কারণ খ্রীষ্ট যিনি আমার মাধ্যমে কথা বলেন, তোমরা তো তাঁরই প্রমাণ চাও৷ তিনি তোমাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে দুর্বল নন, বরং তিনি তোমাদের মধ্যে শক্তিমান৷ 4 কারণ এটা সত্য য়ে তিনি তাঁর দুর্বলতার জন্য ক্রুশের ওপর পেরেক বিদ্ধ হয়েছিলেন; কিন্তু ঈশ্বরের পরাক্রমে তিনি এখন জীবিত৷ এও সত্য য়ে আমরাও তাঁতে (খ্রীষ্টে) দুর্বল, কিন্তু তোমাদের জন্য আমরা ঈশ্বরের পরাক্রম দ্বারা তাঁর সাথে বাস করব৷ 5 নিজেদের পরীক্ষা করে দেখ, তোমাদের বিশ্বাস আছে কি না; প্রমাণের জন্য নিজেদের যাচাই কর৷ তোমরা কি জান না য়ে খ্রীষ্ট যীশু তোমাদের মধ্যে আছেন? কিন্তু এ বিষয়ে যদি তোমাদের অন্তরে সেই প্রমাণ না পাও, তবে খ্রীষ্ট তোমাদের মধ্যে নেই৷ 6 আশাকরি তোমরা একথা স্বীকার করবে য়ে আমরা সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছি৷ 7 আমরা ঈশ্বরের কাছে এই প্রার্থনা করি, য়েন তোমরা কোন অন্যায় না কর৷ এর অর্থ এই নয় আমরা য়ে এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছি সেটা স্পষ্ট হোক বরং আমরা ব্যর্থ হয়েছি মনে হলেও য়েন যা ন্যায় তোমরা তাই কর৷ 8 কারণ আমরা সত্যের বিপক্ষে কিছুই করতে পারি না, কেবল সত্যের সপক্ষে করতে পারি৷ 9 তোমরা শক্তিশালী হলে আমরা দুর্বল হলেও আনন্দ করি৷ আমরা প্রার্থনাও করি, য়েন তোমাদের খ্রীষ্টীয় জীবন উত্তরোত্তর শক্তিশালী হয়ে ওঠে৷ 10 এই কারণে যখন আমি তোমাদের থেকে দূরে তখন আমি এই সমস্ত লিখছি; যাতে আমি যখন তোমাদের সাথে থাকব, তখন আমাকে য়েন তোমাদের শাস্তি দিতে বা তিরস্কার করতে না হয়৷ সেই ক্ষমতা তোমাদের ভেঙ্গে ফেলবার জন্য নয়, কিন্তু তোমাদের আত্মিক জীবন গড়ে তোলবার জন্যই প্রভু আমাকে দিয়েছেন৷ 11 আমার ভাই ও বোনেরা, সব শেষে বলি, বিদায়৷ সিদ্ধি লাভের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা কর, আমি যা বলেছি সেই অনুসারে কাজ কর, একমনা হও, মিলে মিশে শান্তিতে থাক, তাতে প্রেমের ও শান্তির ঈশ্বর তোমাদের সঙ্গে থাকবেন৷ 12 পবিত্র চুম্বন দিয়ে পরস্পরকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিও৷ 13 ঈশ্বরের পবিত্র লোকেরা তোমাদের প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন৷ 14 প্রভু যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহ, ঈশ্বরের প্রেম এবং পবিত্র আত্মার সহভাগীতা তোমাদের সকলের সহবর্তী হোক্৷
Galatians 1:1 প্রেরিত পৌলের কাছ থেকে শুভেচ্ছা; প্রেরিতহবার জন্য কোন মানুষ বা মানুষের মাধ্যমে আমাকে মনোনীত করা হয় নি, বরং যীশু খ্রীষ্ট ও পিতা ঈশ্বর যিনি যীশুকে মৃতদের মধ্য থেকে উত্থাপিত করেছেন তাঁর মাধ্যমেই আমি প্রেরিত পদে মনোনীত হয়েছি৷ 2 আমি পৌল এবং অন্য ভাইরা যাঁরা আমার সাথে আছেন, তাঁরা গালাতীয়ারমণ্ডলীদের উদ্দেশ্যে এই চিঠি লিখছে৷ 3 আমাদের পিতা ঈশ্বর ও প্রভু যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহ, দয়া ও শান্তি তোমাদের প্রতি বর্তুক৷ 4 যীশু আমাদের পাপের জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন, যাতে য়ে মন্দ জগতে আমরা বাস করি তার থেকে য়েন তিনি আমাদের রক্ষা করতে পারেন৷ আমাদের পিতা ঈশ্বর তাই চেয়েছিলেন৷ 5 যুগে যুগে ঈশ্বরের মহিমা হোক্৷ আমেন৷ 6 আমি তোমাদের দেখে আশ্চর্য হচ্ছি য়ে, যিনি খ্রীষ্টের অনুগ্রহের মাধ্যমে তোমাদের আহ্বান করেছিলেন তোমরা সেই ঈশ্বরের কাছ থেকে কত শীঘ্র সরে গিয়ে এক ভিন্ন সুসমাচারে বিশ্বাস করছ৷ 7 এটা সুসমাচারের কোন ভাষান্তর নয় কিন্তু কিছু লোক তোমাদের বিভ্রান্ত করছে৷ তারা খ্রীষ্টের সুসমাচারকে বিকৃত করতে চাইছে৷ 8 আমরা তোমাদের কাছে য়ে সত্য সুসমাচার প্রচার করেছি তার থেকে ভিন্ন কোন সুসমাচার যদি আমাদের কেউ বা কোন স্বর্গদূত এসেও প্রচার করে, তবে সে অভিশপ্ত হোক্৷ 9 এর আগেও আমরা একথা বলেছি; সেই একই কথা আবার বলছি; তোমরা য়ে সুসমাচার গ্রহণ করেছিলে তদ্ভিন্ন অন্য কোন সুসমাচার যদি কেউ তোমাদের কাছে প্রচার করে তবে এমন ব্যক্তি অভিশপ্ত হোক্৷ 10 তোমাদের কি মনে হয় আমাকে গ্রহণ করার জন্য আমি লোকদের কাছে চেষ্টা চালাচ্ছি? তা নয় বরং একমাত্র ঈশ্বরকেই আমি সন্তুষ্ট করতে চাইছি৷ আমি কি মানুষকে খুশী করতে চাইছি? আমি যদি মানুষকে খুশী করতে চাইতাম তাহলে খ্রীষ্টের দাস হতাম না৷ 11 ভাইরা, আমি চাই তোমরা জান য়ে, য়ে সুসমাচার আমি তোমাদের কাছে প্রচার করেছি তা কোন মানুষের মতানুযাযী নয়৷ 12 কারণ সেই বার্তা আমি কোন মানুষের কাছ থেকে পাই নি; কোন মানুষ আমাকে তা শেখায় নি, বরং যীশু খ্রীষ্টই আমার কাছে তা প্রকাশ করেছেন৷ 13 তোমরা তো শুনেছ আমি আগে কেমন জীবনযাপন করতাম৷ আমি ইহুদী ধর্মমতাবলম্বী ছিলাম৷ আমি নির্মমভাবে ঈশ্বরের মণ্ডলীকে নির্য়াতন করে তা ধ্বংস করতে চেষ্টা করেছিলাম৷ 14 ইহুদী ধর্মচর্চায় সমসামযিক ও আমার সমবয়সী অন্যান্য ইহুদীদের থেকে আমি অনেক এগিয়েছিলাম, কারণ পূর্বপুরুষদের পরম্পরাগত রীতিনীতি পালনে আমার যথেষ্ট উদ্যোগ ছিল৷ 15 আমার জন্মাবার আগে থেকেই ঈশ্বর আমাকে বেছে নেন এবং নিজ অনুগ্রহে তাঁর সেবা করার জন্য আমাকে ডাকেন৷ 16 আমি য়েন অইহুদীদের কাছে তাঁর পুত্রের বিষয় সুসমাচার প্রচার করি সেইজন্য ঈশ্বর তাঁর পুত্রের বিষয়ে আমার কাছে প্রকাশ করতে মনস্থ করলেন৷ ঈশ্বর যখন আমাকে ডাকলেন তখন আমি কোন মানুষের সঙ্গে পরামর্শ করি নি, 17 এমন কি আমার আগে যাঁরা প্রেরিত হয়েছিলেন তাদের সঙ্গে দেখা করতে আমি জেরুশালেমে যাই নি; কিন্তু কাল বিলম্ব না করে আমি আরব দেশে চলে গেলাম৷ পরে দম্মেশক শহরে ফিরে গেলাম৷ 18 তারপর তিন বছর বাদে পিতরের সঙ্গে পরিচিত হতে জেরুশালেমে যাই ও পিতরের সঙ্গে আমি পনেরো দিন থাকি৷ 19 সেখানে আমি প্রভুর ভাই যাকোব ছাড়া আর কোন প্রেরিতকে দেখি নি৷ 20 ঈশ্বর জানেন য়ে, য়েসব কথা আমি লিখছি সেগুলি মিথ্যা নয়৷ 21 তারপর আমি সুরিয়ার ও কিলিকিয়ার অঞ্চলগুলিতে চলে যাই৷ 22 এর পূর্বে যিহূদার কোন খ্রীষ্ট মণ্ডলী আমায় ব্যক্তিগতভাবে চিনত না৷ 23 তারা শুধু আমার সম্বন্ধে শুনেছিল, ‘য়ে লোকটি আগে আমাদের নির্য়াতন করত, সে এখন সেই বিশ্বাসের বাণী প্রচার করছে, যা সে পূর্বে ধ্বংস করতে চেয়েছিল৷’ 24 আর তারা আমার কারণে ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগল৷
Galatians 2:1 তারপর চৌদ্দ বছর পর আমি আবার জেরুশালেমে গেলাম৷ আমি বার্ণবার সঙ্গে গেলাম আর তীতকেও সঙ্গে নিলাম৷ 2 ঈশ্বরের কাছ থেকে প্রাপ্ত আদেশ অনুসারে আমি সেখানে গেলাম৷ সেখানকার বিশ্বাসীদের নেতৃবর্গের কাছে এক গোপন সভায় অইহুদীদের কাছে য়ে সুসমাচার প্রচার করে থাকি তার ব্যাখ্যা করলাম৷ আমি চেয়েছিলাম য়ে তারা য়েন বুঝতে পারে আমি কি কাজ করছি, য়েন অতীতে য়ে কাজ করেছিলাম ও বর্তমানে আমি যা করছি তা বৃথা না হয়ে থাকে৷ 3 এর ফলস্বরূপ তীত যিনি আমার সঙ্গে ছিলেন, তিনি একজন গ্রীক হওয়া সত্ত্বেও এই নেতৃবর্গ তীতকে সুন্নত করার জন্য জোর করলেন না৷ এইসব সমস্যা নিয়ে কথা বলার দরকার ছিল, কারণ কিছু ভণ্ড বিশ্বাসী গোপনে গুপ্তচরের মতো আমাদের দলে ঢুকে পড়েছিল এবং খ্রীষ্ট যীশুতে আমাদের কতটা স্বাধীনতা আছে তা জানবার চেষ্টা করছিল, যাতে আমাদের তাদের দাস করতে পারে৷ 4 5 সেই ভণ্ড বিশ্বাসী ভাইরা যা চেয়েছিল তার কোন কিছুতেই আমরা মত দিই নি, যাতে সুসমাচার দ্বারা য়ে সত্য প্রকাশিত হয়েছিল তা তোমাদের সাথে থাকে৷ 6 মণ্ডলীতে যাদের খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হচ্ছিল তাদের কাছ থেকেও আমি নতুন কোন কিছু জানতে পারি নি৷ তারা য়েই হোন না কেন তাতে আমার কিছু এসে যায় না৷ ঈশ্বরের কাছে সবাই সমান আর তিনি কারও মুখাপেক্ষী নন৷ 7 অপরপক্ষে এই গুরুত্বপূর্ণ নেতারা যখন দেখলেন য়ে ঈশ্বর আমাকে অইহুদীদের কাছে সুসমাচার প্রচারের বিশেষ ভার দিয়েছেন, য়েমন পিতরকে ইহুদীদের কাছে সুসমাচার প্রচার করার ভার দিয়েছেন৷ 8 ইহুদীদের জন্য প্রেরিতের কাজ করতে য়ে ঈশ্বর পিতরকে ক্ষমতা দিয়েছেন, তিনিই আবার আমাকে অইহুদীদের জন্য প্রেরিত করেছেন৷ 9 তাই যাকোব, পিতর ও য়োহন যাদের নেতা হিসাবে খ্যাতি ছিল, তাঁরা বুঝতে পারলেন য়ে ঈশ্বর আমাকে এই বিশেষ অনুগ্রহ দান করেছেন, তাই চিহ্ন হিসাবে বার্ণবা এবং আমার সঙ্গে করমর্দন করে আমাদের সহভাগী হিসেবে গ্রহণ করলেন৷ তাঁরা এই ব্যবস্থায় সম্মত হলেন য়ে, ‘আমরা অর্থাত্ পৌল এবং বার্ণবা অইহুদীদের কাছে প্রচারে যাব; আর তাঁরা অর্থাত্ যাকোব, পিতর ও য়োহন ইহুদীদের কাছে যাবেন৷’ 10 তাঁরা কেবলমাত্র একটি বিষয়ে আমাদের অনুরোধ করলেন, য়েন যাঁরা দরিদ্র তাদের মনে রাখি৷ এ কাজটি করতে আমিও খুব উদগ্রীব ছিলাম৷ 11 কিন্তু যখন পিতর আন্তিয়খিয়ায় এলেন, আমি সরাসরি তাঁর বিরোধিতা করলাম, কারণ তিনি স্পষ্টতই ভুল দিকে ছিলেন৷ 12 আন্তিয়খিয়ায় আসার পর প্রথমে তিনি অইহুদীদের সঙ্গে পানাহার ও মেলামেশা করতেন; কিন্তু যাকোবের কাছে থেকে কিছু ইহুদী সেখানে এলে পিতর অইহুদীদের সঙ্গে পানাহার বন্ধ করে দিলেন৷ তিনি অইহুদীদের সঙ্গে মেলামেশা বন্ধ করে নিজেকে পৃথক রাখলেন৷ তিনি সেই সমস্ত ইহুদীদের কথা মনে করে ভয় পাচ্ছিলেন, যাঁরা মনে করত য়ে সব অইহুদী লোকদের সুন্নত হওয়া দরকার৷ 13 এরপর অন্যান্য অইহুদীরা পিতরের সঙ্গে এই ভণ্ডামিতে এমন মাত্রায় য়োগ দিলেন য়ে এমনকি বার্ণবাও এদের ভণ্ডামির দ্বারা প্রভাবিত হলেন৷ 14 আমি যখন দেখলাম য়ে তাঁরা সুসমাচারের সত্য অনুসারে সোজা পথে চলছেন না, তখন আমি পিতরকে সম্বোধন করে সবার সামনে বললাম: ‘আপনি একজন ইহুদী হয়ে যদি ইহুদীদের রীতিনীতি পালন না করেন, তবে যাঁরা অইহুদী তাদের ইহুদীদের মতো সব কিছু পালন করতে জোর করছেন কেন?’ 15 আমরা জন্মসূত্রে ইহুদী, অইহুদী পাপী নই৷ 16 তবু আমরা জানি য়ে মানুষ ঈশ্বরের সামনে বিধি-ব্যবস্থা পালনের দ্বারা নয় বরং যীশু খ্রীষ্টে বিশ্বাস দ্বারা ঈশ্বরের সাক্ষাতে নির্দোষ গণিত হয়, তাই আমরা যীশু খ্রীষ্টে বিশ্বাস করেছি, যাতে আমরা ঈশ্বরের সামনে বিধি-ব্যবস্থা পালনের দ্বারা নয় বরং খ্রীষ্টে বিশ্বাসী বলেই নির্দোষ গণিত হই৷ কারণ কেউই বিধি-ব্যবস্থা পালনের দ্বারা ঈশ্বরের সামনে নির্দোষ গণিত হয় না৷ 17 কিন্তু আমরা ইহুদীরা খ্রীষ্টে নির্দোষ গণিত হতে গিয়ে যদি আমাদের অইহুদীদের মত পাপী দেখাই, তবে তার অর্থ কি এই, য়ে খ্রীষ্ট পাপকে উত্সাহিত করেন? কখনই না৷ 18 কারণ যা আমি ভেঙ্গে ফেলেছি তা যদি আবার গঠন করি, তাহলে আমি নিজেকে নিয়ম ভঙ্গকারী হিসাবে প্রমাণ করি৷ 19 বিধি-ব্যবস্থার দিক থেকে আমি মৃত এবং বিধি-ব্যবস্থা হল আমার মৃত্যুর কারণ৷ এটা হয়েছে যাতে আমি ঈশ্বরের জন্য বাঁচি৷ আমি খ্রীষ্টের সঙ্গে ক্রুশবিদ্ধ হয়েছি৷ 20 সুতরাং আমি আর জীবিত নই, কিন্তু খ্রীষ্টই আমার মধ্যে জীবিত আছেন; আমার দেহের মধ্যে য়ে জীবন আমি এখন যাপন করি, এ কেবল ঈশ্বরের পুত্রের ওপর বিশ্বাসের দ্বারাই করি, যিনি আমাকে ভালবেসেছেন এবং আমার জন্য নিজেকে উত্সর্গ করেছেন৷ 21 ঈশ্বরের অনুগ্রহ আমি প্রত্যাখান করি না, কারণ যদি বিধি-ব্যবস্থার দ্বারা ঈশ্বরের সামনে নির্দোষ গণিত হওয়া যায়, তবে খ্রীষ্ট মিথ্যাই প্রাণ দিয়েছিলেন৷
Galatians 3:1 ওহে অবুঝ গালাতীয়ের লোকেরা! তোমাদের কে যাদু করেছে? ক্রুশের ওপর যীশু খ্রীষ্টের মৃত্যুর কথা তোমাদের তো স্পষ্ট করেই বোঝানো হয়েছিল৷ 2 কেবল আমার এই কথাটির জবাব দাও: তোমরা কিভাবে পবিত্র আত্মা পেয়েছিলে? বিধি-ব্যবস্থা পালনের দ্বারা কি পেয়েছিলে? না সুসমাচার শুনে ও তাতে বিশ্বাস করাতেই পবিত্র আত্মা পেয়েছিল? 3 তোমরা কি এতই অবোধ য়ে, পবিত্র আত্মায় খ্রীষ্টীয় জীবন শুরু করে এখন তা স্থুল দৈহিক শক্তির ওপর নির্ভর করে শেষ করতে চাও? 4 তোমরা কি বৃথাই এত রকম অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে গেছ? আমি আশা করি তা বৃথা হবে না৷ 5 তোমরা বিধি-ব্যবস্থা পালন করেছিলে বলেই কি ঈশ্বর তোমাদের পবিত্র আত্মা দিয়েছিলেন এবং তোমাদের মধ্যে অলৌকিক কাজ করেছিলেন, না তোমরা সুসমাচার শুনে বিশ্বাস করেছিলে বলে? 6 অব্রাহামের সম্পর্কে শাস্ত্র য়েমন বলে: ‘অব্রাহাম ঈশ্বরের ওপর বিশ্বাস করেছিলেন এবং ঈশ্বর তাঁর বিশ্বাসকে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন; তার ফলে ঈশ্বরের সাক্ষাতে অব্রাহাম ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়েছিলেন৷’ 7 তোমাদের জানা ভাল, য়ে যাঁরা বিশ্বাসের পথে চলে তারাই অব্রাহামের প্রকৃত সন্তান৷ 8 পবিত্র শাস্ত্রে এবিষয়ে আগেই লেখা ছিল য়ে, অইহুদী লোকদের ঈশ্বর তাদের বিশ্বাসের দ্বারা ধার্মিক প্রতিপন্ন করবেন৷ আগে থেকেই এই সুসমাচার অব্রাহামকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল! ‘অব্রাহাম সমস্ত জাতি তোমার মাধ্যমে আশীর্বাদ পাবে৷’ 9 অব্রাহাম বিশ্বাস করে য়েমন আশীর্বাদ পেয়েছেন তেমনি য়ে সমস্ত লোক এখন বিশ্বাস করছে তারাও সেই আশীর্বাদ লাভ করছে৷ 10 যাঁরা ঈশ্বরের সামনে ধার্মিক প্রতিপন্ন হতে বিধি-ব্যবস্থা পালনের ওপর নির্ভর করে, তাদের ওপর অভিশাপ থাকে৷ কারণ শাস্ত্র বলে: ‘বিধি-ব্যবস্থায় য়ে সকল লেখা আছে তার সব কটি য়ে পালন না করে সে শাপগ্রস্ত!’ 11 এখন এটা পরিষ্কার য়ে বিধি-ব্যবস্থার দ্বারা ঈশ্বরের কাছে ধার্মিক প্রতিপন্ন হওয়া যায় না৷ কারণ শাস্ত্র বলে: ‘ধার্মিক ব্যক্তি বিশ্বাসের জন্যই বাঁচবে৷’ 12 কিন্তু বিধি-ব্যবস্থার সঙ্গে বিশ্বাসের কোন সম্পর্ক নেই, বরং শাস্ত্র বলে, ‘য়ে বিধি-ব্যবস্থা পালন করে, সে তার মধ্য দিয়েই জীবন পাবে৷’ 13 বিধি-ব্যবস্থা আমাদের ওপর য়ে অভিশাপ চাপিয়ে দিয়েছে তার থেকে খ্রীষ্ট আমাদের উদ্ধার করেছেন৷ খ্রীষ্ট আমাদের স্থানে দাঁড়িয়ে নিজের ওপর সেই অভিশাপ গ্রহণ করলেন৷ কারণ শাস্ত্র বলছে: ‘যার দেহ গাছে টাঙ্গানো হয় সে শাপগ্রস্ত৷’ 14 খ্রীষ্ট এই কাজ সম্পন্ন করলেন যাতে য়ে আশীর্বাদ অব্রাহাম লাভ করেছিলেন তা খ্রীষ্টের মাধ্যমে অইহুদীরাও লাভ করে, এবং য়েন বিশ্বাসের দ্বারা আমরা সেই প্রতিশ্রুত আত্মাকে পাই৷ 15 আমার ভাই ও বোনেরা, আমি তোমাদের কাছে সাধারণ একটি উদাহরণ দিচ্ছি: দুজনের মধ্যে একটা চুক্তির কথা চিন্তা কর৷ সেই চুক্তি একবার বৈধ হয়ে গেলে কেউ তা বাতিল করতে পারে না বা তাতে কোন কিছু য়োগ করতে পারে না৷ 16 ঈশ্বর, অব্রাহাম ও তাঁর বংশধরকে আশীর্বাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন৷ লক্ষ্য কর য়ে এখানে ‘বংশধর’ বলা হয়েছে, ‘বংশধরদের’ নয়, য়েন অনেককে নয় বরং একজনকে অর্থাত্ খ্রীষ্টকে নির্দেশ করা হয়৷ 17 আমি এটাই বলতে চাই য়ে: ঈশ্বর অব্রাহামের সঙ্গেচুক্তি করেছিলেন, আর তার চারশো তিরিশ বছর পরে বিধি-ব্যবস্থা এসেছিল৷ তাই বিধি-ব্যবস্থা এসে পূর্বেই য়ে চুক্তি ঈশ্বরের সাথে অব্রাহামের হয়েছিল তা বাতিল করতে পারে না৷ 18 যদি উত্তরাধিকার বিধি-ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করত তাহলে তা আর প্রতিশ্রুতির ওপর নির্ভরশীল হত না; কিন্তু ঈশ্বর মুক্ত হস্তে এই উত্তরাধিকার অব্রাহামকে তাঁর প্রতিশ্রুতির মধ্যে দিয়েছিলেন৷ 19 তাহলে বিধি-ব্যবস্থা কিসের জন্য? অপরাধ কি এটা বোঝাবার জন্য বিধি-ব্যবস্থা সেই বংশধর (অব্রাহামের) আসা পর্যন্ত য়োগ করা হল, যাকে সেই প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল৷ মানুষের কাছে সেই বিধি-ব্যবস্থা পৌঁছে দিতে স্বর্গদূতরা মোশিকে মধ্যস্তরূপে ব্যবহার করেছিলেন৷ 20 কিন্তু কেবলমাত্র একজন থাকলে কোন মধ্যস্থের দরকার হয় না; আর ঈশ্বর এক৷ 21 তাহলে কি বিধি-ব্যবস্থা ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতির বিরুদ্ধে? নিশ্চয়ই নয়! যদি এমন বিধি-ব্যবস্থা থাকত যা মানুষকে জীবন দান করতে পারে, তবে বিধি-ব্যবস্থা পালন করেই আমরা ধার্মিক হতে পারতাম৷ 22 কিন্তু এ সত্য নয়, কারণ শাস্ত্র দেখাচ্ছে য়ে সকলে পাপের কাছে বন্দী; য়েন লোকেরা বিশ্বাসের মাধ্যমেই সেই প্রতিশ্রুত আশীর্বাদ পেতে পারে৷ যাঁরা যীশু খ্রীষ্টে বিশ্বাস করবে, তাদের উদ্দেশ্যেই এই প্রতিশ্রুতি দেওয়া রয়েছে৷ 23 এই বিশ্বাস আসার আগে আমরা বিধি-ব্যবস্থার অধীনে বন্দী ছিলাম; আমাদের কোন স্বাধীনতা ছিল না, য়ে পর্যন্ত না ঈশ্বর আমাদের কাছে বিশ্বাসের সেই কথা জানালেন৷ 24 খ্রীষ্টের কাছে আসার জন্য বিধি-ব্যবস্থাই ছিল আমাদের কঠোর অভিভাবক, য়েন বিশ্বাসের মাধ্যমে আমরা ঈশ্বরের সাক্ষাতে ধার্মিক বলে গণিত হই৷ 25 এখন যখন বিশ্বাস আমাদের মধ্যে এসেছে, তখন আমরা আর বিধি-ব্যবস্থার অধীন নই৷ 26 কারণ তোমাদের মধ্যে যাদের খ্রীষ্টে বাপ্তিস্ম হয়েছে, তাদের সবাই খ্রীষ্টকে পরিধান করেছে৷ খ্রীষ্ট যীশুর মাধ্যমে বিশ্বাস দ্বারা তোমরা সকলেই ঈশ্বরের সন্তান৷ 27 28 এখন খ্রীষ্ট যীশুতে যাঁরা আছে তাদের মধ্যে পুরুষ বা স্ত্রীতে কোন ভেদাভেদ নেই, ইহুদী কি গ্রীক, স্বাধীন কি দাসের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই৷ কারণ খ্রীষ্ট যীশুতে তোমরা এক৷ 29 তোমরা খ্রীষ্টের, তাই তোমরা অব্রাহামের বংশধর; সুতরাং অব্রাহামের কাছে ঈশ্বর য়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তোমরাও তার উত্তরাধিকারী হবে৷
Galatians 4:1 আমি তোমাদের একথা বলতে চাইছি, - উত্তরাধিকারী যতদিন শিশু থাকে ততদিন তার সঙ্গে একজন দাসের কোন তফাত্ থাকে না; যদিও সেই শিশু সব কিছুর মালিক৷ 2 কারণ সে যত দিন শিশু অবস্থায় থাকে তাকে অভিভাবক এবং সংসার পরিচালকের কথা অনুযাযী চলতে হয়৷ সাবালক হবার জন্য য়ে বয়স তার পিতা নির্ধারণ করে দেন, সেই বয়সে পৌঁছলে সে স্বাধীন হয়৷ 3 একথা আমাদের পক্ষে একইভাবে প্রয়োজ্য৷ আমরা যখন শিশুদের পর্য়ায়ে ছিলাম, তখন আমরা এই জগতের কতকগুলি প্রাথমিক নিয়ম কানুনের অধীনে ছিলাম, 4 কিন্তু নিরুপিত সময়ে ঈশ্বর তাঁর পুত্রকে পাঠালেন৷ ঈশ্বরের পুত্র একজন স্ত্রীলোকের গর্ভজাত হলেন এবং বিধি-ব্যবস্থার অধীনে জীবন কাটালেন, 5 যাতে তিনি বিধি-ব্যবস্থার অধীন সমস্ত লোকদের স্বাধীন করতে পারেন এবং য়েন আমরা সকলে তাঁর পুত্ররূপে স্বীকৃতি পাই৷ 6 তোমরা সকলেই ঈশ্বরের সন্তান, সেইজন্যই তাঁর পুত্রের আত্মাকে তিনি তোমাদের অন্তরে পাঠিয়েছেন৷ সেই আত্মা ডেকে ওঠে, ‘পিতা, পিতা’ বলে৷ 7 তাই তোমরা আগের মতো আর দাস নও কিন্তু ঈশ্বরের পুত্র; আর য়েহেতু তোমরা পুত্র তাই ঈশ্বর তাঁর প্রতিশ্রুত বিষয়গুলি তোমাদের দেবেন৷ 8 অতীতে যখন তোমরা ঈশ্বরকে জানতে না, তখন তোমরা য়ে সমস্ত দেবতার সেবা করতে, তারা ঈশ্বর নয়৷ 9 কিন্তু তোমরা এখন সত্য ঈশ্বরকে জেনেছ অথবা এটা বলা ভাল য়ে ঈশ্বরই তোমাদের জেনেছেন৷ তাই পূর্বে য়ে সব নিরর্থক ও দুর্বল নিয়ম-কানুন ছিল সেদিকে আবার কেন ফিরছ? তোমরা কি আবার ঐ সকলের দাস হতে চাও? 10 তোমরা কেবল বিশেষ বিশেষ দিন, মাস, ঋতু ও বছর পালন করছ৷ 11 তোমাদের দেখে আমার ভয় হয় য়ে, তোমাদের মধ্যে হয়তো আমি বৃথাই পরিশ্রম করেছি৷ 12 আমার ভাই ও বোনেরা, আমি তোমাদের মতো ছিলাম, তাই মিনতি করি তোমরা আমার মতো হও৷ তোমরা আমার সঙ্গে কোন খারাপ ব্যবহার কর নি৷ 13 তোমরা তো জান, আমি অসুস্থ ছিলাম বলে প্রথমেই তোমাদের কাছে সুসমাচার প্রচার করি৷ 14 যদিও আমার অসুস্থতা তোমাদের সবার কাছে এক পরীক্ষাস্বরূপ হয়েছিল, তবু তোমরা এমনভাবে আমাকে গ্রহণ করেছিলে য়েন আমি ঈশ্বর হতে আগত স্বর্গদূত, য়েন স্বয়ং যীশু খ্রীষ্ট৷ 15 এখন তোমাদের সেই আনন্দ কোথায়? আমি তোমাদের সম্বন্ধে এই সাক্ষ্য দিতে পারি য়ে তখন সন্ভব হলে তোমরা আমার জন্য নিজের নিজের চোখ উপড়ে আমাকে দিতে দ্বিধা করতে না৷ 16 এখন তোমাদের কাছে সত্য বলছি বলে কি আমি তোমাদের শত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছি? 17 সেই লোকরা তোমাদের প্রতি আগ্রহী হয়েছে, কিন্তু তা কোন ভাল উদ্দেশ্যে নয়৷ তারা তোমাদের কাছ থেকে আমাদের আলাদা করতে চায়, য়েন তোমরা তাদের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ কর৷ 18 অবশ্য আগ্রহ দেখানো ভাল কেবল যদি সত্ উদ্দেশ্যে তা করা হয়৷ আমি যখন তোমাদের মধ্যে উপস্থিত থাকি কেবল তখনই নয় বরং সবসময়েই তা থাকা ভাল৷ 19 হে আমার প্রিয় সন্তানরা, তোমাদের জন্য আমি আর একবার প্রসব যন্ত্রণা ভোগ করছি৷ তোমাদের নিয়ে আমাকে এই যন্ত্রণা ভোগ করতেই হবে যতদিন পর্যন্ত না তোমরা খ্রীষ্টের মতো হয়ে ওঠো৷ 20 এখন তোমাদের কাছে য়েতে আমার খুব ইচ্ছা করছে, তাহলে ভিন্নভাবে এসব নিয়ে আলোচনা করতে পারতাম৷ আমি জানি না তোমাদের নিয়ে আমি কি করব৷ 21 আমাকে বলতো, তোমাদের মধ্যে কে মোশির বিধি-ব্যবস্থার অধীন থাকতে চায়? তোমরা কি জান না বিধি-ব্যবস্থা কি বলে? 22 শাস্ত্র বলছে য়ে অব্রাহামের দুটি পুত্র ছিল, একটি পুত্রের মা ছিল দাসী স্ত্রী, অপর পুত্রের মা ছিল স্বাধীন স্ত্রী৷ 23 দাসী স্ত্রীর গর্ভে অব্রাহামের য়ে সন্তান জন্মেছিল তার জন্ম স্বাভাবিকভাবেই হয়েছিল, কিন্তু স্বাধীন স্ত্রীর গর্ভে অব্রাহামের য়ে সন্তান জন্মেছিল, সে অব্রাহামের কাছে ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতির ফলেই জন্মেছিল৷ 24 এই বিষয়গুলি রূপকের মতো ব্যাখ্যা করা যায়৷ এই দুই মহিলা দুটি চুক্তির প্রতিনিধিত্ব করে, একটি চুক্তি য়েটা সীনয় পর্বত থেকে এসেছিল, সেটা একদল লোকের জন্ম দিয়েছিল দাসত্বের জন্যে৷ য়ে মাতার নাম হাগার, সে এই চুক্তির সঙ্গে তুলনীয়৷ 25 হাগার হলেন আরবের সীনয় পর্বতের মতো৷ তিনি বর্তমান ইহুদীদের জেরুশালেমের প্রতিরূপ, কারণ সেই জেরুশালেম তার লোকদের সাথে দাসত্বের বন্ধনে বদ্ধ৷ 26 কিন্তু স্বর্গীয় জেরুশালেম স্বাধীন মহিলা স্বরূপ৷ সেই জেরুশালেম আমাদের মাতৃসম৷ 27 কারণ শাস্ত্রে লেখা আছে:‘হে বন্ধ্যা নারী, তোমরা যাঁরা সন্তানের জন্ম দাও নি! তোমরা আনন্দ কর, উল্লসিত হও! তোমরা যাঁরা কখনই প্রসব যন্ত্রণা ভোগ কর নি; তোমরা উল্লাস কর, কারণ স্বামীর সহিত বসবাসকারী স্ত্রীর চাইতে নিঃসঙ্গ স্ত্রীর অনেক বেশী সন্তান হবে৷’যিশাইয় 54:1 28 আমার ভাই ও বোনেরা, তোমরাও সেই ইসহাকের মতো প্রতিশ্রুতির সন্তান৷ কিন্তু ঠিক এখনকার মতোই তখনও য়ে পুত্র স্বাভাবিকভাবে জন্মেছিল, সে অন্য পুত্রকে অর্থাত্ পবিত্র আত্মার শক্তিতে যার জন্ম হয়েছিল তাকে নির্য়াতন করত৷ 29 30 কিন্তু শাস্ত্র কি বলে? ‘দাসী স্ত্রী ও তার পুত্রকে তাড়িয়ে দাও!কারণ দাসীর পুত্র স্বাধীন স্ত্রীর পুত্রের সাথে কিছুরই উত্তরাধিকারী হবে না৷’ 31 তাই বলি আমার ভাই ও বোনেরা, আমরা সেই দাসীর সন্তান নই, আমরা স্বাধীন স্ত্রীর সন্তান৷
Galatians 5:1 খ্রীষ্ট আমাদের স্বাধীন করেছেন, য়েন আমরা স্বাধীনভাবে থাকতে পারি; তাই শক্ত হয়ে দাঁড়াও, দাসত্বে ফিরে য়েও না৷ 2 শোন! আমি পৌল বলছি৷ যদি তোমরা সুন্নতের মাধ্যমে আবার বিধি-ব্যবস্থায় ফিরে যাও, তবে তোমরা খ্রীষ্টেতে লাভবান হবে না৷ 3 আবার আমি প্রত্যেক মানুষকে সতর্ক করে দিচ্ছি৷ তোমরা যদি সুন্নত করাতে চাও, তবে বিধি-ব্যবস্থার সবটাই তোমাদের পালন করতে হবে৷ 4 তোমরা যাঁরা বিধি-ব্যবস্থার দ্বারা ঈশ্বরের সাক্ষাতে নির্দোষ গণিত হতে চেষ্টা করছ, তারা খ্রীষ্টের কাছ থেকে নিজেদের আলাদা করেছ এবং ঈশ্বরের অনুগ্রহ থেকে বঞ্চিত হয়েছ৷ 5 কিন্তু আমরা বিশ্বাসের দ্বারা ঈশ্বরের সাক্ষাতে নির্দোষ বলে গণিত হবার জন্য অধীর আগ্রহে আত্মায় অপেক্ষা করছি৷ 6 কারণ খ্রীষ্ট যীশুতে যুক্ত থাকলে সুন্নত হওয়া বা না হওয়া এ প্রশ্ন মূল্যহীন; কিন্তু দরকারি বিষয় হল বিশ্বাস, য়ে বিশ্বাস ভালবাসার মধ্য দিয়ে কাজ করে৷ 7 তোমরা বেশ ভালই দৌড়োচ্ছিলে, তাহলে সত্যের বাধ্য হয়ে চলতে কে তোমাদের বাধা দিল? 8 যিনি তোমাদের আহ্বান করেছেন, সেই ঈশ্বরের কাছ থেকে এই ধরণের প্ররোচনা আসে নি৷ 9 সাবধান হও! ‘সামান্য একটু খামির গোটা ময়দার তালকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে তোলে!’ 10 তোমাদের জন্য প্রভুতে আমার পূর্ণ বিশ্বাস আছে য়ে তোমরা আমার শিক্ষা ছাড়া ভিন্ন কোন শিক্ষার দিকে ফিরবে না; কিন্তু য়ে লোক তোমাদের বিরক্ত করছে, সে য়েই হোক না কেন, শাস্তি সে পাবেই৷ 11 আমার ভাই ও বোনেরা, যদি আমি এখনও সুন্নতের প্রযোজন সম্বন্ধে শিক্ষা নিই, তবে আমি এখনও এতো নির্য়াতন ভোগ করছি কেন? এবং আমি সুন্নতের প্রযোজন সম্বন্ধে যদি এখনও বলি তাহলে ক্রুশের কথা বলতে কোন সমস্যাই হত না৷ 12 যাঁরা তোমাদের অস্থির করে তুলছে, আমি চাই তারা য়েন নিজেদের ছিন্নাঙ্গও করে৷ 13 আমার ভাই ও বোনেরা, স্বাধীন মানুষ হবার জন্যই ঈশ্বর তোমাদের আহ্বান করেছেন, কেবল দেখ তোমাদের পাপ প্রবৃত্তিকে তৃপ্তি দিয়ে সেই স্বাধীনতার সুয়োগ নিও না, বরং প্রেমে একে অপরের দাস হও৷ 14 য়েহেতু সমস্ত বিধি-ব্যবস্থাকে এক করলে এটাই দাঁড়ায়: ‘তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মত করে ভালবাস৷’ 15 কিন্তু তোমরা যদি নিজেদের মধ্যে কামড়া-কামড়ি, ছেঁড়াছেড়ি কর, তবে সাবধান! য়েন তোমরা একে অপরের দ্বারা ধ্বংস না হও৷ 16 তাই আমি বলি য়ে, তোমরা সেই আত্মার পরিচালনায় চল, তাহলে তোমরা আর তোমাদের পাপ প্রকৃতির ইচ্ছা পূর্ণ করবে না৷ 17 কারণ আমাদের পাপ প্রকৃতি যা চায়, তা আত্মার বিরুদ্ধে এবং আত্মা যা চায় তা পাপ প্রকৃতির ইচ্ছার বিরুদ্ধে৷ এরা পরস্পরের বিরোধী, ফলে তোমরা যা চাও তা করতে পার না৷ 18 কিন্তু তোমরা যদি আত্মা দ্বারা পরিচালিত হও তবে তোমরা বিধি-ব্যবস্থার অধীনে নও৷ 19 পাপ প্রবৃত্তির কাজগুলি স্পষ্ট; সেগুলি হল ব্যভিচার, অশুচিতা, স্বেচ্ছাচারিতা, 20 প্রতিমা পূজা, ডাইনি বিদ্যা, ঘৃণা, স্বার্থপরতা, হিংসা, ক্রোধ, নিজেদের মধ্যে বিতর্ক, মতভেদ, দলাদলি, ঈর্ষা, 21 মাতলামি, লাম্পট্য আর একই ধরণের অন্য অপরাধ৷ এর বিরুদ্ধে তোমাদের সাবধান করে দিচ্ছি য়েমন এর আগেও করেছি, যাঁরা এইসব কুকাজ করবে তাদের ঈশ্বরের রাজ্যে জায়গা হবে না৷ 22 কিন্তু আত্মার ফল হল ভালবাসা, আনন্দ, শান্তি, ধৈর্য্য, দয়া, মঙ্গলভাব, বিশ্বস্ততা, মৃদুতা ও আত্মসংযম৷ 23 এই সবের বিরুদ্ধে কোন বিধি-ব্যবস্থা নেই৷ 24 যাঁরা যীশু খ্রীষ্টে রয়েছে, তারা তাদের পাপ প্রকৃতিকে কামনা বাসনা সমেত ক্রুশে বিদ্ধ করেছে, অর্থাত্ তাদের পুরানো জীবনের সব মন্দ লালসা ও প্রবৃত্তি ত্যাগ করেছে৷ 25 সুতরাং আত্মাই যখন আমাদের নতুন জীবনের উত্স তখন এস আমরা আত্মার অধীনে চলি৷ 26 এস আমরা য়েন অযথা অহঙ্কার না করি, পরস্পরকে জ্বালাতন ও হিংসা না করি৷
Galatians 6:1 আমার ভাই ও বোনেরা, তোমাদের মধ্যে কেউ যদি হঠাত্ পাপে পড়ে তবে তোমরা যাঁরা আত্মিক ভাবাপন্ন তারা অবশ্যই তাকে ঠিক পথে আনতে সাহায্য করবে৷ একাজ অত্যন্ত নম্রভাবে করতে হবে; কিন্তু তোমরা নিজেরাও সাবধানে থেকো, পাছে তোমরাও পরীক্ষায় পড়৷ 2 তোমরা একে অপরের ভার বহন কর, এই রকম করলে বাস্তবে খ্রীষ্টের বিধি-ব্যবস্থাই পালন করবে৷ 3 কোন ব্যক্তি যদি প্রকৃতপক্ষে ভাল না হয়েও নিজেকে অন্যদের থেকে ভাল মনে করে তাহলে সে নিজেকে প্রতারণা করছে৷ 4 অপর লোকের সঙ্গে নিজের তুলনা না করে প্রত্যেকের উচিত নিজের কাজ যাচাই করে দেখা, তবে সে যা করছে তাই নিয়ে গর্ব করতে পারবে৷ 5 কারণ প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার নিজের দাযিত্ব নিতে হবে৷ 6 য়ে ব্যক্তি শিক্ষকের কাছ থেকে ঈশ্বরের বার্তার বিষয়ে শিক্ষা লাভ করে, তার উচিত সেই শিক্ষককে তার সমস্ত উত্তম বিষয়ের সহভাগী করে প্রতিদান দেওয়া৷কারণ প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার নিজের দাযিত্ব নিতে হবে৷ 7 তোমরা নিজেদের বোকা বানিও না৷ ঈশ্বরকে ঠকানো যায় না৷ য়েমন বুনবে, তেমন কাটবে৷ 8 য়ে নিজ পাপ প্রকৃতির বীজ রোপন করে সে তার থেকে সংগ্রহ করবে৷ কিন্তু য়ে পবিত্র আত্মার বীজ বুনবে সে পবিত্র আত্মার কাছ থেকে অনন্ত জীবন পাবে৷ 9 ভাল কাজ করতে করতে আমরা য়েন ক্লান্ত না হয়ে পড়ি, কারণ নিরুপিত সময়ে আমরা ফসল রূপে অনন্ত জীবন পাব৷ হাল ছাড়লে চলবে না৷ 10 সুয়োগ পেলে আমাদের সব লোকের প্রতি ভাল কাজ করা উচিত, বিশেষ করে বিশ্বাসীর গৃহের পরিজনদের প্রতি৷ 11 দেখ কত বড় বড় অক্ষরে নিজের হাতে আমি এই চূড়ান্ত কথাগুলি লিখছি৷ 12 যাঁরা তোমাদের সুন্নত করার চেষ্টায় আছে, তাদের উদ্দেশ্য অন্যদের কাছে নাম কেনার৷ তারা এটা করে যাতে খ্রীষ্টের ক্রুশের জন্য তারা অত্যাচারিত না হয়৷ 13 যাঁরা সুন্নত করেছে তারা নিজেরাও বিধি-ব্যবস্থা ঠিক মতো পালন করে না অথচ তারাই তোমাদের সুন্নত করাতে চাইছে; উদ্দেশ্য, তোমাদের সুন্নত করানোর মাধ্যমে বশ করতে পারলে এই কাজ নিয়ে তারা গর্ব করার সুয়োগ পাবে৷ 14 শুধু আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের ক্রুশ ছাড়া আমার গর্ব করার মতো কিছুই নেই৷ যীশুর ক্রুশীয় মৃত্যুর দ্বারা আমি জগতের কাছে ক্রুশবিদ্ধ আর জগত আমার কাছে ক্রুশবিদ্ধ৷ 15 কারো সুন্নত করা হল কি হল না সেটা বড় বিষয় নয় কিন্তু এটা জরুরী য়ে এক নতুন সৃষ্টি হোক৷ 16 ঈশ্বরের লোকেরা যাঁরাই এই নিয়ম মানে তাদের ওপর শান্তি ও দয়া বর্ষিত হোক্৷ 17 চিঠি লেখা শেষ করার আগে আমার অনুরোধ, য়েন কেউ আর আমাকে কষ্ট না দেয়, কারণ ইতিমধ্যেই আমি আমার দেহে খ্রীষ্টের ক্ষত চিহ্ন বহন করছি৷ 18 আমার ভাই ও বোনেরা, আমি প্রার্থনা করি য়ে প্রভু যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহ তোমাদের আত্মার মধ্যে বিরাজ করুক৷ আমেন৷
Ephesians 1:1 2 আমাদের পিতা ঈশ্বর ও প্রভু যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহ ও শান্তি তোমাদের সহবর্তী হোক৷ 3 আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের ঈশ্বর ও পিতার প্রশংসা হোক্৷ তিনি খ্রীষ্টে আমাদের স্বর্গীয় স্থানে সমস্ত আত্মিক আশীর্বাদে পূর্ণ করেছেন৷ 4 জগত্ সৃষ্টির পূর্বে ঈশ্বর তাঁর পবিত্র, নির্দোষ এবং প্রেমময় লোক হবার জন্য আমাদের খ্রীষ্টের মধ্য দিয়ে বেছে নিলেন৷ 5 জগত্ সৃষ্টির পূর্বেই ঈশ্বর ঠিক করেছিলেন য়ে আমরা খ্রীষ্টের মাধ্যমে তাঁর সন্তান হব৷ এ কাজ ঈশ্বর নিজেই সম্পন্ন করতে চেয়েছিলেন, আর তাতেই তিনি খুশী হলেন৷ 6 ঈশ্বরের এই মহান অনুগ্রহ তাঁর প্রশংসার কারণ হয়ে উঠেছে; আর এই অনুগ্রহ ঈশ্বর আমাদের মুক্তহস্তে দান করেছেন৷ তিনি যাকে ভালবাসেন সেই খ্রীষ্টের মাধ্যমেই এই অনুগ্রহ ঈশ্বর আমাদের মুক্তহস্তে দান করেছেন৷ 7 খ্রীষ্টের রক্তের দ্বারা আমরা মুক্ত হয়েছি৷ ঈশ্বরের মহানুগ্রহের ফলে আমাদের পাপসমূহ ক্ষমা পেয়েছে৷ 8 সেই অনুগ্রহ ঈশ্বর আমাদের পর্য়াপ্ত পরিমাণে দিয়েছেন৷ সমস্ত দান ও অন্তর্দৃষ্টির সাথে, 9 নিজেই তাঁর গোপন পরিকল্পনা আমাদের কাছে প্রকাশ করেছেন, আর এই ছিল ঈশ্বরের ইচ্ছা এবং তিনি তা খ্রীষ্টের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে পরিকল্পনা করলেন৷ 10 তাঁর নিরূপিত সময়ে ঈশ্বর এই পরিকল্পনা করেছিলেন য়ে স্বর্গ ও মর্ত্যের সব কিছুই খ্রীষ্টের সঙ্গে সংযুক্ত হবে; আর খ্রীষ্ট হবেন সবার মস্তক৷ 11 ঈশ্বরের লোক হবার জন্য আমরা খ্রীষ্টে মনোনীত হয়েছিলাম৷ ঈশ্বর পূর্বেই স্থির করেছিলেন য়ে আমরা তাঁর আপনজন হব, তাই ছিল ঈশ্বরের অভিপ্রায়৷ ঈশ্বর যা চান বা যা করার সিদ্ধান্ত নেন, তাঁর ইচ্ছানুসারে তা সম্পন্ন করেন৷ 12 খ্রীষ্টের ওপর যাঁরা প্রত্যাশা করেছে তাদের মধ্যে আমরা অগ্রণী৷ আমাদের মনোনীত করা হয়েছে য়েন আমরা ঈশ্বরের মহিমার প্রশংসা করি৷ 13 খ্রীষ্টেতে তোমরা তোমাদের পরিত্রাণের জন্য সেই সুসমাচারের সত্য বার্তা শুনেছিলে এবং তোমরা খ্রীষ্টে বিশ্বাস করেছিলে; আর তোমাদের পবিত্র আত্মা দান করে ঈশ্বর তোমাদের ওপর তাঁর নিজের মালিকানার ছাপ দিয়েছেন৷ 14 ঈশ্বর তাঁর নিজস্ব লোকদের যা কিছু দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, সেই পবিত্র আত্মা হল তার জামিনস্বরূপ, আর যাঁরা ঈশ্বরের লোক তারা এর মাধ্যমে পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করবে৷ এ সবকিছুর একমাত্র লক্ষ্য হল তাঁর মহিমায় প্রশংসা য়োগ করা৷ 15 এইজন্য আমি আমার প্রার্থনায় তোমাদের সর্বদা স্মরণ করি ও তোমাদের জন্য সর্বদা ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই৷ আমি প্রভু যীশুর ওপর তোমাদের বিশ্বাসের কথাও সমস্ত ঈশ্বরের লোকদের প্রতি তোমাদের ভালবাসার কথা শুনেছি৷ 16 17 আমি ঈশ্বরের কাছে তোমাদের জন্য নিরন্তর প্রার্থনা করছি য়েন, আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের মহিমাময় পিতা তোমাদের সেই আত্মা দেন, যা তোমাদের বিজ্ঞ করবে এবং ঈশ্বরকে তোমাদের কাছে প্রকাশ করবে যাতে তোমরা তাঁকে ভালভাবে জানতে পার৷ 18 আমি প্রার্থনা করছি য়েন তোমরা আপন আপন হৃদয়ে ঐশ্বরিক জ্ঞান লাভ করতে পার, তাহলে ভবিষ্যতে কি প্রত্যাশার জন্য ঈশ্বর তোমাদের আহ্বান করেছেন তা তোমরা জানতে পারবে৷ য়ে আশীর্বাদ ঈশ্বর তাঁর পবিত্র লোকদের দেবার জন্য স্থির করেছেন তা কত সম্পদশালী ও প্রতাপযুক্ত তা তোমরা বুঝতে পারবে৷ 19 আমরা যাঁরা বিশ্বাসী, আমাদের মধ্যে ঈশ্বরের য়ে মহাশক্তি কাজ করছে তাও তোমরা জানতে পারবে৷ 20 সেই মহাশক্তি দ্বারা ঈশ্বর খ্রীষ্টকে মৃতদের মধ্য থেকে জীবিত করেছেন ও তাঁর ডানপাশে স্বর্গীয় স্থানে বসিয়েছেন৷ 21 ঈশ্বর খ্রীষ্টকে সমস্ত রাজা, মহারাজা, শাসনকর্তা ও মহান নেতাদের থেকে এবং প্রত্যেক শীর্ষ স্থানীয় শক্তির উর্দ্ধে খ্রীষ্টকে স্থাপন করেছেন, কেবল এই কালে নয় আগামীকালেও৷ 22 ঈশ্বর সবকিছুই খ্রীষ্টের চরণের নীচে স্থাপন করেছেন৷ তাঁকেই সকলের ওপরে মস্তক স্বরূপ করে মণ্ডলীকে দান করেছেন৷ 23 মণ্ডলী হল খ্রীষ্টের দেহ; আর তাঁর পরিপূর্ণতা সব কিছুই সমস্ত দিকে দিয়ে পূর্ণ করে৷
Ephesians 2:1 অতীতে পাপের দরুন ও ঈশ্বরের বিরুদ্ধে অপরাধের দরুন তোমাদের আত্মিক জীবন মৃত ছিল৷ 2 হ্যাঁ, অতীতে ঐসব পাপ নিয়ে তোমরা জীবনযাপন করতে৷ জগত্ য়েভাবে চলে তোমরা সেভাবেই চলতে৷ তোমরা আকাশের মন্দ শক্তির অধিপতির অনুসরণকারী ছিলে৷ সেই একই আত্মা এখনও যাঁরা ঈশ্বরের অবাধ্য তাদের মধ্যে ক্রিয়াশীল৷ 3 অতীতে আমরা সকলে ঐ লোকদের মত চলতাম৷ আমাদের কুপ্রকৃতির লালসাকে চরিতার্থ করতে চেষ্টা করতাম৷ আমরা আমাদের দেহ ও মনের অভিলাষ অনুযাযী চলতাম৷ আমাদের য়ে অবস্থা ছিল তার দরুন ঐশ্বরিক ক্রোধ আমাদের ওপর নেমে আসতে পারত, কারণ আমরা অন্য আর পাঁচজনের মতোই ছিলাম৷ 4 কিন্তু ঈশ্বরের করুণা অসীম৷ তিনি তাঁর মহান ভালবাসায় আমাদের কতো ভালবাসেন৷ 5 ঈশ্বরের বিরুদ্ধে য়েসব অন্যায় কাজ করেছিলাম তার ফলেই আমরা আত্মিকভাবে মৃত ছিলাম; কিন্তু ঈশ্বর খ্রীষ্ট যীশুর সাথে আমাদের নতুন জীবন দিলেন৷ তোমরা ঈশ্বরের অনুগ্রহেই উদ্ধার পেয়েছ৷ 6 ঈশ্বর যীশু খ্রীষ্টের সঙ্গে আমাদের জীবিত করে স্বর্গীয়স্থানে তাঁর পাশে বসতে আসন দিয়েছেন৷ 7 ঈশ্বর এই কাজ করলেন য়েন আগামী যুগপর্য়ায়ে তাঁর অতুলনীয় মহানুগ্রহ সকলের প্রতি দেখাতে পারেন৷ খ্রীষ্ট যীশুতে আমাদের প্রতি দয়াপরবশ হয়ে এই অনুগ্রহ তিনি প্রকাশ করেছেন৷ 8 কারণ ঈশ্বরের অনুগ্রহের দ্বারা বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে তোমরা উদ্ধার পেয়েছ৷ বিশ্বাস করাতেই তোমরা সেই অনুগ্রহ পেয়েছ৷ তোমরা নিজেরা নিজেদের উদ্ধার কর নি; কিন্তু তা ঈশ্বরের দানরূপে পেয়েছ৷ 9 তোমাদের নিজেদের কর্মের ফল হিসেবে তোমরা উদ্ধার পাও নি, তাই কেউই গর্ব করে বলতে পারে না য়ে সে তার নিজের দ্বারা উদ্ধার পেয়েছে৷ 10 কারণ ঈশ্বরই আমাদের নির্মাণ করেছেন৷ খ্রীষ্ট যীশুতে ঈশ্বর আমাদের নতুন সৃষ্টি করেছেন য়েন আমরা সর্বপ্রকার সত্ কাজ করি৷ এইসব সত্ কর্ম ঈশ্বর পূর্বেই আমাদের জন্য তৈরী করে রেখেছিলেন যাতে আমরা সেই সত্ কাজ করে জীবন কাটাতে পারি৷ 11 তোমরা অইহুদী, পরজাতিরূপে জন্মেছিলে৷ তোমরাই সেই লোক যাদের সুন্নত ইহুদীরা বলে ‘অসুন্নত’৷ তাদের সুন্নত হওয়া কেবল এক প্রক্রিয়া, যা দেহের ওপর মানুষের হাত দ্বারা করা হয়৷ 12 মনে রেখো অতীতে সেই সময় তোমরা খ্রীষ্ট থেকে দূরে ছিলে৷ তোমরা ইস্রায়েলের নাগরিক ছিলে না৷ ঈশ্বর তাঁর প্রজাদের সঙ্গে য়ে চুক্তিগুলি করেছিলেন, তোমরা সেইসব প্রতিশ্রুতিযুক্ত চুক্তিগুলির বাইরে ছিলে৷ তোমাদের প্রত্যাশা ছিল না আর তোমরা ঈশ্বরকে জানতে না৷ 13 এক সময় তোমরা ঈশ্বর থেকে বহুদূরে ছিলে; কিন্তু এখন খ্রীষ্ট যীশুতে তোমরা নিকটবর্তী হয়েছ৷ 14 খ্রীষ্টই আমাদের শান্তির উত্স৷ ইহুদী ও অইহুদীদের মধ্যে য়ে শত্রুভাব প্রাচীরের মত ব্যবধান সৃষ্টি করেছিল, খ্রীষ্ট নিজ দেহ উত্সর্গ করে ঘৃণা ও ব্যবধানের সেই প্রাচীর ভেঙ্গে দিয়েছেন৷ 15 ইহুদীদের বিধি-ব্যবস্থায় অনেক আদেশ নিয়মকানুন ছিল; কিন্তু খ্রীষ্ট সেই বিধি-ব্যবস্থা লোপ করেছেন৷ খ্রীষ্টের উদ্দেশ্য ছিল ঐ দুই দলের মধ্যে শান্তি স্থাপন করা এবং নিজের মধ্যে দিয়ে ঐ দুই দল থেকে এক নতুন মানুষ সৃষ্টি করা, 16 এবং ক্রুশের ওপর তাঁর মৃত্যুর মাধ্যমে দুই জনগোষ্ঠীকে ঈশ্বরের সাথে একই দেহে পুনর্মিলিত করা৷ এর ফলে দুই দলের মধ্যে য়ে শত্রুভাব ছিল, তার অবসান ঘটল৷ 17 তাই খ্রীষ্টে এসে তোমরা যাঁরা ঈশ্বর থেকে দূরে ছিলে, তোমাদের কাছে শান্তির বাণী প্রচার করলেন; আর যাঁরা ঈশ্বরের কাছের লোক তাদের কাছে শান্তি নিয়ে এলেন৷ 18 হ্যাঁ, খ্রীষ্টের মাধ্যমে আমরা সকলে একই আত্মার দ্বারা পিতার কাছে আসতে পারি৷ 19 তাই, হে অইহুদীরা, এখন তোমরা আর আগন্তুক বা বিদেশী নও৷ এখন ঈশ্বরের পবিত্র লোকদের সঙ্গে তোমরাও নাগরিক৷ তোমরা ঈশ্বরের পরিবারের সদস্য৷ 20 প্রেরিতরা ও ভাববাদীরা য়ে ভিত গেঁথেছিলেন তার ওপর তোমাদের গেঁথে তোলা হচ্ছে৷ খ্রীষ্ট স্বয়ং হচ্ছেন সেই দালানের গাঁথনীর প্রধান পাথর, 21 যা গোটা দালানটিকে ধরে রেখেছে৷ খ্রীষ্ট এই দালানটি গড়ে তোলেন য়েন তা প্রভুতে এক পবিত্র মন্দিরে পরিণত হতে পারে৷ 22 খ্রীষ্টে তোমাদের অন্য মানুষদের সঙ্গে একই সাথে গেঁথে তোলা হচ্ছে৷ তোমাদের এমন এক স্থান হিসেবে গঠন করা হয়েছে য়েখানে ঈশ্বর আত্মার মাধ্যমে বাস করেন৷
Ephesians 3:1 এই জন্য আমি (পৌল) তোমাদের অর্থাত্ অইহুদীদের জন্য খ্রীষ্ট যীশুর বন্দী৷ 2 তোমরা নিশ্চয়ই জান য়ে, ঈশ্বর তোমাদের সাহায্য করার জন্য তাঁর নিজ অনুগ্রহে এই কাজ আমায় দিয়েছেন৷ 3 ঈশ্বর তাঁর নিগূঢ়তত্ত্ব আমায় জানতে দিয়েছেন৷ তিনি নিজে য়েসব বিষয় আমায় দেখিয়েছেন, সে সকল বিষয়ের কিছু কিছু আমি ইতিমধ্যেই লিখেছি৷ 4 সেসব পাঠ করলে তোমরা বুঝতে পারবে য়ে আমি ঠিক ভাবেই খ্রীষ্ট সম্বন্ধে জেনেছি৷ 5 এর আগে যাঁরা পৃথিবীতে ছিলেন, তাঁদের কাছে এই নিগূঢ়তত্ত্ব জানানো হয় নি৷ কিন্তু এখন সেই নিগূঢ়তত্ত্ব তিনি তাঁর পবিত্র প্রেরিত ও ভাববাদীদের কাছে আত্মার মাধ্যমে ব্যক্ত করেছেন৷ 6 এই হল নিগূঢ়তত্ত্ব - যাঁরা অইহুদী তারা ইহুদীদের সঙ্গে সমানভাবে সব আশীর্বাদ পাবে৷ ইহুদী ও অইহুদী উভয়েই এক সঙ্গে একই দেহের সদস্য৷ খ্রীষ্টের মাধ্যমে ঈশ্বর য়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তা তারা একসঙ্গে ভোগ করবে৷ অইহুদীরা সুসমাচারের মধ্য দিয়ে এই সব কিছু পাবে৷ 7 ঈশ্বরের বিশেষ অনুগ্রহ দানের ফলে সেই সুসমাচার প্রচার করার জন্য আমি দাস হলাম; ঈশ্বর তাঁর নিজ পরাক্রমে আমাকে সেই অনুগ্রহ দিয়েছেন৷ 8 ঈশ্বরের সমস্ত লোকের মধ্যে আমি নিতান্ত নগন্য; কিন্তু ঈশ্বর আমাকে এক বরদান করেছেন য়েন আমি অইহুদীদের কাছে খ্রীষ্টেতে য়ে ধারণাতীত সম্পদ আছে তা সুসমাচারের মাধ্যমে তাদের জানাই৷ সেই সম্পদ এত অগাধ য়ে সম্পূর্ণভাবে তা বুঝতে পারা যায় না৷ 9 ঈশ্বরের নিগূঢ় পরিকল্পনার কথা সকলকে জানাবার ভার ঈশ্বর আমায় দিয়েছেন৷ 10 সৃষ্টির শুরু থেকে ঈশ্বরের এই নিগূঢ় পরিকল্পনা তাঁর মধ্যেই গুপ্ত ছিল৷ ঈশ্বর, স্বয়ং সমস্ত কিছুর সৃষ্টিকর্তা৷ ঈশ্বর চেয়েছিলেন য়েন স্বর্গীয়স্থানে সমস্ত আধিপত্য ও কর্তৃত্ত্বের কাছে নানাবিধ উপায়ে তাঁর প্রজ্ঞা প্রতিফলিত করেন এবং মণ্ডলীর মাধ্যমেই তারা এসব জানতে পায়৷ 11 পূর্বকালে ঈশ্বর য়ে সব পরিকল্পনা ঠিক করে রেখেছিলেন, এ সবই তার সঙ্গে মিলে যায়৷ তিনি আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে তাঁর পরিকল্পনা অনুসারে কাজ করেছেন৷ 12 এখন খ্রীষ্টে আমরা ঈশ্বরের সম্মুখে সাহস ও আত্মবিশ্বাসের সাথে আসতে পারি৷ খ্রীষ্টে বিশ্বাসের মাধ্যমেই এটা করতে পারি৷ 13 আমি তোমাদের বলি, তোমাদের জন্য আমায় য়ে কষ্টভোগ করতে হয়েছিল তার জন্যে তোমরা হতাশ ও নিরাশ হযো না৷ আমার কষ্ট তোমাদের সম্মানিত করুক৷ 14 এই কারণে আমি পিতার কাছে নতজানু হই৷ 15 তাঁর কাছ থেকেই স্বর্গের বা মর্ত্যের প্রত্যেক পরিবার প্রকৃত নাম পায়৷ 16 আমি পিতার কাছে প্রার্থনা করি য়েন তাঁর মহান প্রতাপে তিনি তোমাদের সেই শক্তি দেন যার ফলে তোমাদের অন্তরাত্মা বলিষ্ঠ হয়ে ওঠে৷ তাঁর আত্মার দ্বারা তিনি তোমাদের সেই শক্তি দেবেন৷ 17 আমি প্রার্থনা করি য়েন বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে খ্রীষ্ট তোমাদের হৃদয়ের মধ্যে বাস করেন৷ য়েন তোমাদের জীবন প্রেমে সুদৃঢ় হয় ও প্রেমরূপ ভিতের উপর গড়ে উঠতে পারে৷ 18 আমি প্রার্থনা করি,য়েন তোমরা ও ঈশ্বরের সমস্ত পবিত্র লোকরা য়েন খ্রীষ্টের প্রেমের মহত্ব বুঝতে সক্ষম হও৷ তোমরা য়েন সেই প্রেমের গভীরতা, উচ্চতা, দৈর্ঘ্য ও বিস্তার জানতে পার৷ 19 খ্রীষ্টের প্রেম এতো মহান য়ে কোন মানুষের পক্ষে সত্যি করে তা জানা সন্ভব নয়৷ আমি প্রার্থনা করছি য়েন তোমরা সেই প্রেম উপলধ্ধি করতে পার; আর তাতেই তোমরা সম্পূর্ণভাবে ঈশ্বরের প্রকৃতিতে পূর্ণ হবে৷ 20 ঈশ্বরের য়ে শক্তি আমাদের মধ্যে সক্রিয় রয়েছে, সেই শক্তির দ্বারা ঈশ্বর আমরা যা চাই তা চিন্তা করি তার থেকেও অনেক বেশী কাজ করতে পারেন৷ 21 মণ্ডলীতে ও খ্রীষ্ট যীশুতে যুগ পর্য়ায়ে যুগে যুগে তাঁরই মহিমা হোক্৷ আমেন৷
Ephesians 4:1 আমি প্রভুর বলে কারাগারে বন্দী৷ ঈশ্বর তোমাদের মনোনীত করেছেন য়েন তোমরা তাঁর লোক হতে পার৷ আমি তোমাদের সেইরকম জীবনযাপন করতে অনুরোধ করি, য়েভাবে ঈশ্বরের লোকদের জীবনযাপন করা উচিত৷ 2 তোমরা সর্বদাই নতনম্র থাক, সহিষ্ণু হও, ভালবেসে একে অপরকে গ্রহণ কর৷ 3 পবিত্র আত্মা তোমাদের যুক্ত করেছিলেন৷ সেই একতা রক্ষা করার জন্য সর্বোত্তমভাবে চেষ্টা কর৷ শান্তি তোমাদের একসঙ্গে ধরে থাকুক৷ 4 দেহ এক ও আত্মা এক, ঠিক সেইরকমই ঈশ্বর তোমাদের সকলকে এক প্রত্যাশার জন্য আহ্বান করেছেন৷ 5 কেবল একই প্রভু, এক বিশ্বাস ও এক বাপ্তিস্ম রয়েছে; 6 আর আছেন এক ঈশ্বর যিনি সকলের পিতা৷ যিনি সকলের ওপরে কর্তৃত্ত্ব করেন৷ তিনি সর্বত্র আছেন ও সবকিছুতে আছেন৷ 7 খ্রীষ্ট আমাদের প্রত্যেককে বিশেষ বিশেষ বরদান দিয়েছেন৷ যাকে যা দিতে ইচ্ছা করেছেন তাকে তা দিয়েছেন৷ 8 তাই শাস্ত্র বলছে: ‘তিনি উর্দ্ধে আকাশে গেলেন, সঙ্গে বন্দীদের নিয়ে গেলেন, আর মানুষের হাতে তুলে দিয়ে গেলেন নানা বরদান৷’ গীতসংহিতা 68:18 9 যখন বলা হয়েছে, ‘তিনি উর্দ্ধে উঠে গেলেন,’ তার অর্থ কি? তার অর্থ এই য়ে প্রথমে তিনি নিম্নে পৃথিবীতে নেমেছিলেন৷ 10 সেই জন যিনি নেমে এসেছিলেন (খ্রীষ্ট) তিনি সেই একই ব্যক্তি যিনি আকাশের থেকেও উচ্চে উঠেছিলেন, যাতে সব কিছুই তাঁর দ্বারা পূর্ণ করতে পারেন৷ 11 সেই খ্রীষ্ট লোকদের বরদান করলেন, তাদের কয়েকজনকে প্রেরিত করলেন, আবার কয়েকজনকে ভাববাদী, কয়েকজনকে সুসমাচার প্রচারক, কয়েকজনকে শিক্ষক ও পালক হবার ক্ষমতা দিলেন৷ 12 ঈশ্বরের লোকদেরকে প্রস্তুত করার জন্য ও সেবার কাজ সম্পন্ন করার উদ্দেশ্যে খ্রীষ্ট এইসব বরদান করেছেন৷ খ্রীষ্টের দেহরূপে মণ্ডলীকে গঠন করার জন্য তিনি সেইসব বর দিয়েছেন৷ 13 য়ে পর্যন্ত না আমরা ঈশ্বরের পুত্রের বিষয়ে একই বিশ্বাস ও তত্ত্বজ্ঞানে সুষ্ঠভাবে যুক্ত হব, সেই পর্যন্ত এই কাজ চলতে থাকবে৷ আমাদের পরিণত মানুষের মতো হতে হবে৷ আমরা ততদিন বৃদ্ধি পেতে থাকব য়ে পর্যন্ত না খ্রীষ্টের মত হই ও তাঁর মত সম্পূর্ণ সিদ্ধ হই৷ 14 তখন আমরা আর শিশুর মত থাকব না৷ জাহাজ য়েমন তরঙ্গের দাপটে এদিক ওদিক চালিত হয়, তেমনি আমরা কোন নতুন শিক্ষা দ্বারা আর স্থানচ্যুত হব না; ঠগবাজ লোকের নতুন শিক্ষা দ্বারা আমরা প্রভাবিত হব না৷ এরা তাদের পরিকল্পনা ও চালবাজি দ্বারা মানুষকে ঠকিয়ে ভুল পথে নিয়ে যায়৷ 15 আমরা বরং প্রেমের সঙ্গে সত্য কথাই বলব, এইভাবে খ্রীষ্টের মতো সব বিষয়ে আমরা বৃদ্ধিলাভ করব৷ খ্রীষ্ট হলেন মস্তক, আমরা তাঁর দেহ৷ 16 সমস্ত দেহটা খ্রীষ্টের ওপর নির্ভরশীল৷ দেহের সমস্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গ পরস্পরের সঙ্গে একত্রে যুক্ত রয়েছে৷ দেহের বিভিন্ন অঙ্গ যখন তাদের করণীয় কাজ করে, তখন সমস্ত দেহ বৃদ্ধিলাভ করে প্রেমে শক্ত ও দৃঢ় হয়৷ 17 প্রভুর হয়ে আমি তোমাদের সতর্ক করে দিচ্ছি, - যাঁরা বিশ্বাস করে না এমন লোকদের মতো জীবনযাপন করো না৷ এমন লোকের চিন্তাধারা মূল্যহীন৷ 18 তাদের জ্ঞান বুদ্ধি নেই৷ তারা কিছুই জানে না কারণ শুনতে চায় না৷ তাই য়ে জীবন ঈশ্বর তাদের দিতে চান তা থেকে তারা বঞ্চিত থাকে৷ 19 তাদের মনে লজ্জা বলে কোন অনুভূতিই নেই, তারা মন্দ পথে নিজেদের গা ভাসিয়ে দিয়েছে৷ বিনা দ্বিধায় তারা সব রকম খারাপ কাজ করে চলে৷ 20 কিন্তু খ্রীষ্টের কাছ থেকে তোমরা তো এমন মন্দ শিক্ষা পাও নি৷ 21 আমি জানি তাঁর অনুগামী হিসাবে সেই সত্য অনুসারে তোমাদের শিক্ষা দেওয়া হয়েছিল, য়ে সত্য খ্রীষ্ট যীশুতে রয়েছে৷ 22 তোমাদের পুরানো প্রবৃত্তিকে ত্যাগ করতে শিক্ষা দেওয়া হয়েছে৷ আগে য়েভাবে মন্দ জীবনযাপন করতে তা ছাড়তে বলা হয়েছে৷ সেই পুরানো সত্ত্বা দিন দিন মন্দ থেকে মন্দতর হয়, কারণ লোকরা তাদের মন্দ চিন্তা দ্বারা প্রবঞ্চিত হয়৷ 23 কিন্তু তোমাদের শেখানো শিক্ষা অনুসারে তোমরা আপন হৃদয়ে পুনরায় নতুন হয়ে ওঠ, 24 এবং সেই নতুন সত্ত্বাকে অবশ্যই পরিধান কর৷ সেই নতুন সত্ত্বা ঈশ্বরের মত হবার জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে, যা সত্যই ভাল এবং পবিত্র৷ 25 তাই একে অপরের কাছে মিথ্যা বলা বন্ধ কর, কারণ আমরা পরস্পর এক দেহেরই অঙ্গ প্রত্যঙ্গ৷ 26 রেগে গেলে তার প্রভাবে য়েন পাপ করো না এবং সারাদিন রাগ করে থেকো না৷ 27 তোমাকে পরাস্ত করতে দিয়াবলকে কোন রকম সুয়োগ নিতে দিও না৷ 28 য়ে এক সময় চুরি করত সে য়েন আর কখনও চুরি না করে, বরং ভাল কিছু কাজ করতে নিজ হাতে পরিশ্রম করে৷ সে য়েন সবরকম ভাল কাজ করে, তাহলে অভাবী লোকদের সঙ্গে ভাগ করে দেবার জন্যেও তার কিছু থাকবে৷ 29 অপরের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করার সময় কোন খারাপ কথা বলো না৷ লোকেদের প্রযোজনীয় আত্মিক শক্তি দেবার জন্য যা ভাল কেবল তাই-ই বল৷ এমনভাবে কথা বল য়েন তোমার কথায় অপরের উপকার হয়৷ 30 তোমরা ঈশ্বরের পবিত্র আত্মাকে বিষন্ন করো না৷ আত্মা ঈশ্বরের কাছে প্রমাণ করে য়ে তোমরা ঈশ্বরের অধিকারভুক্ত৷ ঈশ্বরের নিরূপিত সময়ে ঈশ্বর য়ে তোমাদের যুক্ত করবেন তার প্রমাণস্বরূপ ঈশ্বর সেই আত্মাকে তোমাদের মধ্যে দিয়েছেন৷ 31 সব রকমের তিক্ততা, রোষ, ক্রোধ, চেঁচামেচি, নিন্দা ও সব রকমের বিদ্বেষভাব তোমাদের থেকে দূরে রাখ৷ 32 পরস্পরের প্রতি স্নেহশীল হও, পরস্পরকে একইভাবে ক্ষমা কর, য়েভাবে ঈশ্বরও খ্রীষ্টে তোমাদের ক্ষমা করেছেন৷
Ephesians 5:1 তোমরা ঈশ্বরের সন্তান, তিনি তোমাদেরভালবাসেন; তাই ঈশ্বরের মতো হও৷ 2 ভালবাসাপূর্ণ জীবনযাপন কর৷ খ্রীষ্ট আমাদের য়েমন ভালবেসেছেন তেমনি করে অপরকে ভালবাস৷ খ্রীষ্ট আমাদের জন্য নিজেকে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে সৌরভযুক্ত বলিরূপে উত্সর্গ করলেন৷ 3 তোমাদের মধ্যে য়েন ব্যভিচার না থাকে৷ তোমাদের মধ্যে কোনরকম নৈতিক অশুদ্ধতা ও লোভ য়েন না থাকে৷ কারণ ঈশ্বরের পবিত্র লোকদের মধ্যে এসব থাকা ঠিক নয়৷ 4 লজ্জাজনক কোন কথাবার্তা তোমাদের মধ্যে য়েন না হয়৷ বোকার মতো কথা বলো না, নোংরা রসিকতা করো না, এইসব তোমাদের উপযুক্ত নয়৷ তোমাদের উচিত ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দেওয়া৷ 5 একথা তোমাদের নিশ্চিতরূপে জানা ভাল; যাঁরা য়ৌন পাপে লিপ্ত অথবা অপবিত্র জীবনযাপন করে অথবা লোভী, তারা খ্রীষ্টের ও ঈশ্বরের রাজ্যে কোন স্থান পাবে না, কারণ য়ে লোভী সে তো মূর্ত্তি পূজারী৷ 6 দেখো, কেউ য়েন অসার কথাবার্তা বলে তোমাদের প্রতারিত না করে৷ যাঁরা অবাধ্য তাদের ওপর ঈশ্বরের ক্রোধ নেমে আসবে৷ 7 তাই এইসব লোকদের সঙ্গে সম্পর্ক রেখো না৷ 8 আমি তোমাদের এসব কথা বলছি, কারণ এক সময় তোমরা অন্ধকারে জীবনযাপন করতে; কিন্তু এখন প্রভুর অনুসারী হয়ে তোমরা আলোয় এসেছ, তাই তোমরা এখন জ্যোতির সন্তানদের মতো জীবনযাপন করো৷ 9 সবরকমের মঙ্গলভাব, নীতিপরায়ণতা ও সততা জ্যোতির দ্বারা উত্পন্ন হয়৷ 10 প্রভু কিসে সন্তুষ্ট হন তোমাদের তা শেখা উচিত৷ 11 যাঁরা অন্ধকারে চলে তাদের মন্দ কাজের অংশীদার হযো না৷ ঐসব কাজে কোন সুফল পাওয়া যায় না৷ সত্ কাজে লিপ্ত থাকো; অন্ধকারে যা করা হয় তা য়ে মন্দ তা দেখিয়ে দাও৷ 12 লোকরা অন্ধকারে গোপনে য়েসব কাজ করে তা উচ্চারণ করাও লজ্জার বিষয়৷ 13 ঐসব বিষয় য়ে কত মন্দ যখন তা আমরা দেখিয়ে দিই তখন সেই আলোই সব কিছু প্রকাশ করে৷ 14 যখন সব কিছু সহজেই দেখা যায় তখন সে সব আলোর মতো স্পষ্ট হয়ে যায়৷ এই জন্যই বলা হয়েছে: ‘হে নিদ্রিত লোক, জাগো! আর মৃতদের মধ্যে থেকে ওঠ, তাতে খ্রীষ্ট তোমার ওপর আলো বর্ষণ করবেন৷’ 15 তাই তোমরা কিরকম জীবনযাপন করছ, সেদিকে বিশেষ সতর্ক দৃষ্টি রেখো৷ র্নির্বোধ লোকদের মত চলো না, কিন্তু জ্ঞানবানের মতো চল৷ 16 সময় বড় খারাপ, এইজন্য ভাল কিছু করার সুয়োগ পেলে তার সদ্বব্যবহার করো৷ 17 তাই নিজেদের জীবন নিয়ে অবোধের মতো চলো না৷ বুঝতে চেষ্টা কর য়ে প্রভু তোমাকে দিয়ে কি কাজ করাতে চান৷ 18 দ্রাক্ষারস পান করে মাতাল হযো না, তাতে আত্মিক জীবন ধ্বংস হয়ে যাবে; তার পরিবর্তে পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হও৷ 19 গীতসংহিতার স্তোত্র ও আত্মিক সংকীর্তনে তোমরা একে অপরের সাথে আলাপ কর৷ গাও আর অন্তরে প্রভুর উদ্দেশ্যে সুরেলা সঙ্গীত রচনা কর৷ 20 আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের নামে সব সময় সব কিছুর জন্য আমাদের ঈশ্বর ও পিতাকে সর্বদা ধন্যবাদ দাও৷ 21 স্বেচ্ছায় তোমরা একে অপরের কাছে নত থাক৷ খ্রীষ্টের প্রতি তোমাদের শ্রদ্ধার জন্যে তা কর৷ 22 বিবাহিতা নারীরা, তোমরা য়েমন প্রভুর অনুগত তেমনি তোমাদের স্বামীদের অনুগত থাক৷ 23 কারণ স্বামী তার স্ত্রীর মস্তকস্বরূপ য়েমন খ্রীষ্ট তাঁর মণ্ডলীর মস্তক, তিনি তো তাঁর দেহেরও ত্রাণকর্তা৷ 24 তাই মণ্ডলী য়েমন খ্রীষ্টের অনুগত, তেমনি স্ত্রীরা, তোমরা সব বিষয়ে স্বামীর অনুগত থেকো৷ 25 স্বামীরা, তোমরাও তোমাদের স্ত্রীদের অনুরূপ ভালবাসো, য়েমন খ্রীষ্ট তাঁর মণ্ডলীকে ভালবেসেছেন ও তার জন্য নিজের প্রাণ উত্সর্গ করেছেন৷ 26 মণ্ডলীকে পবিত্র করার জন্য খ্রীষ্ট মৃত্যুভোগ করলেন৷ সুসমাচারের বাক্যরূপ জলে ধুয়ে তাকে পরিষ্কার করলেন, যাতে তিনি তা নিজেকে উপহার দিতে পারেন৷ 27 খ্রীষ্ট তাকে পরিষ্কার করলেন যাতে সে নিজেকে একজন জ্যোতির্মযী বধূ হিসাবে পবিত্র ও অনিন্দনীয়ভাবে উপহার দিতে পারে, যাতে তার কোন কলঙ্ক বা কুজন বা কোন অসম্পূর্ণতা না থাকে৷ 28 স্বামীরা য়েমন নিজেদের দেহকে ভালবাসে তেমনি তারা য়েন তাদের স্ত্রীকে ভালবাসে৷ য়ে কেউ তার স্ত্রীকে ভালবাসে, সে নিজেকেই ভালবাসে৷ 29 কারণ কেউ তার নিজের দেহকে ঘৃণা করে না, বরং নিজের দেহকে খাদ্য ইত্যাদি দিয়ে পুষ্ট করে তোলে এবং ভাল করে তার যত্ন নেয়৷ অনুরূপভাবে খ্রীষ্ট মণ্ডলীকে আহার দেন ও তার যত্ন করেন, 30 কারণ আমরা তাঁর দেহেরই অঙ্গ প্রত্যঙ্গ৷ 31 শাস্ত্রে য়েমন বলছে: ‘এইজন্য মানুষ তার বাবা-মাকে ছেড়ে তার স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হবে ও তারা উভয়ে এক দেহ হবে৷’ 32 এই নিগূঢ় সত্য মহান; আর আমি বলি এটা খ্রীষ্ট ও তাঁর মণ্ডলীর উদ্দেশ্যে প্রয়োজ্য৷ 33 যাইহোক, তোমরা প্রত্যেকে নিজেদেরস্ত্রীকে ভালবাসবে য়েমন তোমরা নিজেদের ভালবাস; আর স্ত্রীরও উচিত তার স্বামীকে শ্রদ্ধা করা৷
Ephesians 6:1 ছেলেমেয়েরা, প্রভু য়েভাবে চান সেইভাবে তোমাদের বাবা মাকে মেনে চলো; তোমাদের উচিত তাদের বাধ্য হওয়া৷ 2 আজ্ঞায় আছে, ‘তোমাদের মা-বাবাকে সম্মান করো৷’এটাই হল প্রতিশ্রুতিযুক্ত প্রথম আজ্ঞা৷ 3 সেই প্রতিশ্রুতি হচ্ছে: ‘তাহলে সবদিক দিয়ে তোমার মঙ্গল হবে ও তুমি র্ময়্তে দীর্ঘাযু হবে৷’ 4 তোমরা যাঁরা সন্তানের বাবা, আমি তোমাদের বলছি, তোমরা তোমাদের সন্তানদের ক্রুদ্ধ করো না, বরং প্রভু য়েমন চান সেইরূপ শাসন করে ও শিক্ষা দিয়ে তাদের মানুষ করে তোল৷ 5 ক্রীতদাসরা, তোমরা তোমাদের এই জগতের মনিবদের ভয় ও শ্রদ্ধার সঙ্গে মান্য করো৷ তোমরা য়েমন খ্রীষ্টের বাধ্য তেমনি আন্তরিকভাবে ও সত্য হৃদয়ে তাদেরও বাধ্য হও৷ 6 মানুষের অনুমোদনের জন্য কেবল তাদের চোখের সামনে য়ে তাদের সেবা করবে তা নয়, বরং খ্রীষ্টের ক্রীতদাসের মতো কাজ করো য়ে ক্রীতদাসরা ঈশ্বরের ইচ্ছা আন্তরিকভাবে পালন করছে৷ 7 ক্রীতদাস হিসেবে সমস্ত অন্তর দিয়ে এমনভাবে কাজ কর য়েন তুমি মানুষকে নয়, ঈশ্বরকে সেবা করছ৷ 8 মনে রেখো, তুমি ক্রীতদাস বা স্বাধীন যাই হও না কেন, তোমার সমস্তভাল কাজের জন্য প্রভু তোমায় পুরষ্কার দেবেন৷ 9 ক্রীতদাসের মনিবরা, তোমাদের বলি, তোমাদের দাসদের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করো৷ তাদের কড়া কথা বলো না৷ মনে রেখো, তাদের ও তোমাদের প্রভু স্বর্গে আছেন; আর সেই প্রভু সকলকেই সমানভাবে বিচার করেন৷ 10 চিঠি শেষ করার আগে তোমাদের এই কথাই বলি, তোমরা প্রভুতে বলবান হও, তাঁরই মহাশক্তিতে শক্তিমান হও৷ 11 তোমরা ঈশ্বরের দেওয়া সমগ্র যুদ্ধসাজ পরে নাও, য়েন দিয়াবলের সমস্ত কৌশলের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পার৷ 12 রক্তমাংসের দেহধারী মানুষের সঙ্গে আমাদের সংগ্রাম নয়৷ শাসকগণ, কর্তৃত্ত্বের অধিকারীসকল, এই অন্ধকার যুগের মহাজাগতিক ক্ষমতার সঙ্গে এবং স্বর্গরাজ্যের মন্দ শক্তি সমূহের সঙ্গে আমাদের সংগ্রাম৷ 13 এইজন্যই ঈশ্বরের প্রতিটি যুদ্ধসাজ তোমাদের পরে নেওয়া দরকার, তাহলে শয়তানের আক্রমণের সামনে তোমরা স্থির হয়ে দাঁড়াতে পারবে, এবং যুদ্ধের শেষেও তোমরা দাঁড়িয়ে থাকবে৷ 14 সুতরাং শক্ত হয়ে দাঁড়াও, কোমর বেঁধে নাও; আর ন্যায়পরায়ণতার ঢালও নাও৷ 15 দৃঢ়ভাবে দাঁড়াতে সুসমাচারের শান্তির পাদুকা তোমাদের পায়ে পরে নাও৷ 16 এর দ্বারা তোমরা সেই মন্দ শক্তির সমস্ত রকমের অগ্নিবাণ নিভিয়ে দিতে পারবে; 17 আর পরিত্রাণরূপ শিরস্ত্রাণ ও পবিত্র আত্মার তলোয়ার, অর্থাত্ ঈশ্বরের শিক্ষা সঙ্গে নিও৷ 18 সবসময় পবিত্র আত্মাতে প্রার্থনা কর৷ সব রকম প্রার্থনায় প্রার্থনা করে তোমাদের যা প্রযোজন সে সবই জানাও৷ এর জন্য সব সময় সজাগ থেকো, কখনও হাল ছেড়ে দিও না৷ ঈশ্বরের সমস্ত লোকদের জন্য প্রার্থনা কর৷ 19 আমার জন্য প্রার্থনা কর, য়েন সুসমাচার প্রচারের সময় ঈশ্বর আমার মুখে উপযুক্ত কথা য়োগান; আর আমি সাহসের সঙ্গে সুসমাচারের গোপন সত্য বলতে পারি৷ 20 সেই সুসমাচারের পক্ষে আমি কথা বলে চলেছি৷ এই কারাগারের মধ্যেও আমি সেই কাজ করে যাচ্ছি৷ প্রার্থনা কর, য়েমন উচিত আমি য়েন তেমনি নির্ভীকভাবে এই সুসমাচার প্রচার করে যাই৷ 21 আমাদের প্রিয় ভাই তুখিক, যিনি প্রভুর কাজে একজন বিশ্বস্ত সেবক, তিনিই তোমাদের বলবেন, আমি কেমন আছি এবং কি করছি৷ 22 তাঁকে আমি তোমাদের কাছে এই জন্য পাঠালাম য়েন তোমরা আমাদের সব খবর জানতে পার ও তা জেনে উত্সাহ পাও৷ 23 ভাইরা, পিতা ঈশ্বর ও প্রভু যীশু খ্রীষ্টের কাছ থেকে বিশ্বাস সহ ভালবাসা ও শান্তি তোমাদের সহবর্তী হোক্৷ 24 যাঁরা আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টকে অশেষ ভালবাসায় ভালবাসে, ঈশ্বরের অনুগ্রহ তাদের সকলের সঙ্গে থাকুক৷ .
Philippians 1:1 আমরা খ্রীষ্ট যীশুর দাস পৌল ও তীমথিয়, ফিলিপীতে খ্রীষ্ট যীশুতে যত ঈশ্বরের পবিত্র লোকরা আছেন তাঁদের কাছে এবং পালকবৃন্দ ও পরিচারকদের কাছে আমরা এই পত্র লিখছি৷ 2 আমাদের পিতা ঈশ্বর ও প্রভু যীশু খ্রীষ্ট তোমাদের অনুগ্রহ ও শান্তি দান করুন৷ 3 আমি যখনই তোমাদের কথা স্মরণ করি, তখনই ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিই৷ 4 আমি তোমাদের সকলের জন্য সব সময় আনন্দের সঙ্গে প্রার্থনা করে থাকি৷ 5 কারণ সুসমাচার প্রচারের কাজে তোমরা প্রথম দিন থেকে এ পর্যন্ত আমাকে সাহায্য করে আসছ৷ 6 আমি এবিষয়ে নিশ্চিত য়ে ঈশ্বর তোমাদের অন্তরে শুদ্ধকাজ শুরু করেছেন৷ সেই শুদ্ধকাজ ঈশ্বর এখনও করে চলেছেন; এবং খ্রীষ্টের আগমনের দিনে তা সম্পন্ন করবেন৷ 7 তোমাদের সকলের বিষয়ে আমার এমন চিন্তা করাই উপযুক্ত, কারণ তোমরা সর্বদা আমার অন্তরে আছ৷ তোমাদের কাছে থাকার এই অনুভূতি আমার জাগে কারণ আমি কারাগারে থাকি, বা সুসমাচারের পক্ষে কথা বলে তা দৃঢ়তার সঙ্গে প্রমাণ করি, তার দ্বারা তোমরা সকলে আমার সেই অনুগ্রহের ভাগী হও৷ 8 ঈশ্বর জানেন য়ে আমি তোমাদের দেখতে কত আকাঙ্খা করি৷ খ্রীষ্ট যীশুর ভালবাসায় আমি তোমাদের সকলকে ভালবাসি৷ 9 তোমাদের জন্য আমার প্রার্থনা এই:য়েন তোমাদের ভালবাসা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পায়; এবং সেই ভালবাসার সঙ্গে জ্ঞান ও বিচার বুদ্ধি লাভ কর৷ 10 তোমরা য়েন ভাল ও মন্দের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পার আর যা ভাল তা বেছে নাও৷এইভাবে চল য়েন যীশু খ্রীষ্টের আগমনের দিন পর্যন্ত তোমরা শুদ্ধ ও নির্দোষ থাক৷ 11 খ্রীষ্টের মাধ্যমে তোমরা বিবিধ সত্ গুণাবলীতে পূর্ণ হও, যার দ্বারা ঈশ্বরের প্রশংসা ও মহিমা হয়৷ 12 ভাই ও বোনেরা, আমি তোমাদের একথা জানাতে চাই য়ে, আমার প্রতি যা ঘটেছে, তা বরং সুসমাচার প্রচারে সাহায্য করেছে৷ 13 এর ফলে সকল রক্ষীবাহিনী ও প্রত্যেকের কাছে এটি পরিষ্কার হয়ে গেছে য়ে আমি খ্রীষ্টে বিশ্বাসী বলে কারাগারে রয়েছি৷ 14 এছাড়াও প্রভুতে বিশ্বাসী আমার অনেক ভাই ভয় না পেয়ে অপরকে আরো বেশী খ্রীষ্টের বার্তা বলতে সাহসী হয়েছে৷ 15 তাদের মধ্যে কেউ কেউ ঈর্ষা ও বিবাদের মনোভাব নিয়ে সুসমাচার প্রচার করে, আবার অন্যরা যথার্থ সত্ ইচ্ছায় তা প্রচার করে৷ 16 শেষের দলটি ভালবেসেই একাজ করছে, কারণ এরা জানে য়ে সুসমাচারের পক্ষ সমর্থন করার জন্যই ঈশ্বর আমাকে এখানে নিযুক্ত করেছেন৷ 17 কিন্তু অন্যরা সত্ উদ্দেশ্য নয়, বরং নিজ নিজ স্বার্থ সিদ্ধির উদ্দেশ্যে খ্রীষ্টকে প্রচার করছে৷ এখানে আমার বন্দী অবস্থায় তারা তাদের প্রচার দেখিয়ে আমার মনে দুঃখ দিতে চায়৷ 18 কিন্তু তাতে আমার কি এসে যায়? আসল বিষয়টি হল সত্ বা অসত্ উদ্দেশ্য নিয়ে য়ে ভাবেই হোক্ না কেন তারা লোকদের কাছে খ্রীষ্টেরই কথা বলছে৷ আমি চাই য়ে তারা লোকদের কাছে খ্রীষ্টের কথা বলে৷ ঠিক উদ্দেশ্য সামনে রেখেই তাদের একাজ করা উচিত৷ যদিও তারা একটা মিথ্যা ও ভুল উদ্দেশ্য নিয়ে তা করছে তবুও আমি খুশী কারণ তারা লোকদের কাছে খ্রীষ্টের কথা বলছে, আর আমি খুশীই থাকব৷ 19 তোমরা আমার জন্য প্রার্থনা করছ আর যীশু খ্রীষ্টের আত্মা আমায় সাহায্য করছেন, তাই আমি জানি য়ে এই সঙ্কট আমায় পরিত্রাণ এনে দেবে৷ 20 আমার আশা আকাঙ্খা এই য়ে আমি কোন বিষয়ে হতাশ হব না; কিন্তু সব সময়ের মত এখনও সেই সাহস করি য়ে আমি বেঁচে থাকি বা মরে যাই খ্রীষ্ট আমার দেহে মহিমান্বিত হবেন৷ 21 কারণ আমার কাছে আমার জীবন মানেই খ্রীষ্ট; আর মরণ হল লাভ৷ 22 এই দেহ নিয়ে যদি আমায় বেঁচে থাকতে হয় তবে আমি প্রভুর জন্য একাজ করার সুয়োগ পাব৷ আমি কোন্টা বেছে নেব, জীবন না মরণ? আমি জানি না৷ 23 আমি এই দোটানায় পড়েছি৷ আমি তো এখনই এ দেহ ত্যাগ করে খ্রীষ্টের সঙ্গে থাকতে চাই, কারণ এই তো শ্রেয়৷ 24 কিন্তু এই মরদেহে বেঁচে থাকা তোমাদের জন্য খুবই প্রযোজন৷ 25 আমি জানি য়ে আমাকে তোমাদের প্রযোজন আছে; তাই আমি জানি য়ে আমি বেঁচে থাকব, তোমাদের সকলের কাছেই থাকব৷ আমি তোমাদের বৃদ্ধি পেতে ও তোমাদের বিশ্বাসে আনন্দ পেতে সাহায্য করব; 26 এর ফলে যখন আমি আবার তোমাদের কাছে যাব তখন খ্রীষ্ট যীশুতে আমার সম্বন্ধে তোমাদের গর্ব করার আরো কারণ থাকবে৷ 27 কিন্তু যাইহোক না কেন, তোমরা খ্রীষ্টের সুসমাচারের য়োগ্যরূপে আচরণ কর৷ আমি এসে তোমাদের দেখি বা তোমাদের থেকে দূরে থাকি, আমি য়েন তোমাদের বিষয়ে শুনতে পাই য়ে, তোমরা এক আত্মার সুসমাচারের মধ্যে য়ে বিশ্বাস আছে তার পক্ষে কঠোর সংগ্রাম করছ; 28 আর যাঁরা তোমাদের বিরোধিতা করছে তাদের ভয় পাচ্ছ না! এর দ্বারাই প্রমাণ হবে য়ে তাদের বিনাশ হচ্ছে; কিন্তু পরিত্রাণ দ্বারা তোমরা উদ্ধার লাভ করছ, আর এই উদ্ধার ঈশ্বরের কাছ থেকেই আসে৷ 29 তোমরা য়ে খ্রীষ্ট যীশুর ওপর বিশ্বাস স্থাপন করতে পেরেছ, এই সম্মান ও সুয়োগ ঈশ্বর তোমাদের দিয়েছেন৷ শুধু তাই নয়, কিন্তু খ্রীষ্টের জন্য দুঃখভোগ করার সম্মানও তোমাদের দিয়েছেন৷ 30 আমি যখন তোমাদের ওখানে ছিলাম তখন সুসমাচার বিরোধী লোকদের সঙ্গে আমাকে কি রকম সংগ্রাম করতে হয়েছিল তা তোমরা জান এবং এখনও কঠোর সংগ্রাম চলছে আর তোমরাও সেই একই রকম সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যাচ্ছ৷
Philippians 2:1 তোমাদের মধ্যে কি খ্রীষ্টে উত্সাহ আছে? তোমাদের মধ্যে কি ভালবাসা থেকে উদ্ভুত সান্ত্বনা পাওয়া যায়? তোমাদের মধ্যে কি কোন করুণা ও দয়া আছে? 2 যদি এগুলি তোমাদের মধ্যে সত্যিই থাকে তবে তা আমায় অতিশয় আনন্দিত করবে, আমি চাই তোমরা একই বিশ্বাসে একমনা হও, পরস্পরের প্রতি ভালবাসায় সংযুক্ত থাকো, একই বিষয়ে বিশ্বাসী হয়ে সকলে একই আত্মায় সংযুক্ত থাকো এবং একই লক্ষ্য রেখে জীবনযাপন কর৷ 3 তোমাদের মধ্যে য়েন স্বার্থপরতা না থাকে বরং নম্রভাবে প্রত্যেকে নিজের থেকে অপরকে শ্রেষ্ঠ ভাবো৷ 4 প্রত্যেকে কেবল নিজের বিষয়ে নয়, কিন্তু অপরের মঙ্গল কিসে হয় সে বিষয়েও লক্ষ্য রাখুক৷ 5 খ্রীষ্ট যীশুর মধ্যে য়ে ভাব ছিল, তোমাদের মধ্যেও সেই মনোভাব থাকুক৷ 6 যদিও সমস্ত দিক দিয়ে খ্রীষ্ট ছিলেন ঈশ্বরের মতো৷ তিনি ঈশ্বরের সমান ছিলেন; কিন্তু ঈশ্বরের সঙ্গে সমান থাকাটা তিনি আঁকড়ে ধরে থাকার মত এমন কিছু বলে মনে করেন নি৷ তিনি ঈশ্বরের স্তর থেকে নামলেন, 7 নিজের উচ্চস্থান ছেড়ে দিলেন এবং একজন ক্রীতদাসের মতো হলেন৷ তিনি মানুষের মত হয়ে জন্ম নিলেন ও একজন দাসের মতো হলেন৷ 8 তিনি যখন মানব জীবনযাপন করলেন, তখন তিনি সম্পূর্ণভাবে ঈশ্বরের বাধ্যতা স্বীকার করলেন৷ সেই বাধ্যতার দরুণ তাঁর মৃত্যু হল, আর ক্রুশের ওপর তাঁকে প্রাণ দিতে হল৷ 9 খ্রীষ্ট ঈশ্বরের বাধ্য হলেন তাই ঈশ্বর তাঁকে পুনরুত্থিত করে সব কিছুর ওপরে উন্নত করলেন এবং সেই ঈশ্বর খ্রীষ্টের নামকে সবথেকে শ্রেষ্ঠ করলেন৷ 10 য়েন যাঁরা স্বর্গে আছে, যাঁরা মর্ত্যের লোক আর যাঁরা পাতালের তারা সকলেই সেই যীশু নামের কাছে নতজানু হয়, 11 আর প্রত্যেকে য়েন মুখে স্বীকার করে, ‘য়ে যীশু খ্রীষ্টই প্রভু৷’ এতেই পিতা ঈশ্বর মহিমান্বিত হবেন৷ 12 হে আমার প্রিয় বন্ধুরা, তোমরা সবসময় বাধ্যতা সহকারে চলেছ৷ আমি যখন তোমাদের মধ্যে ছিলাম তখন তোমরা ঈশ্বরের বাধ্য ছিলে, এখন আরো বেশী প্রযোজন য়ে তোমরা বাধ্য হও কারণ এখন আমি তোমাদের সবার থেকে দূরে৷ তোমাদের পরিত্রাণ সম্পূর্ণ করার জন্য পরম শ্রদ্ধা ও ঈশ্বরে ভীতির সাথে কাজ করে যাও৷ 13 হ্যাঁ, ঈশ্বর তোমাদের মধ্যে কাজ করছেন; ঈশ্বরের শক্তির সাহায্যে তোমরা সেইসব কাজ কর, যা ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করে৷ 14 তোমরা অভিযোগ ও তর্ক-বিতর্ক না করে সব কাজ কর, 15 য়েন নির্দোষ ও খাঁটি লোক হও, এ যুগের কুটিল ও বিপথগামী লোকদের মাঝে ঈশ্বরের নিষ্কলঙ্ক সন্তানরূপে থাক৷ তাদের মাঝে এমনভাবে থাক য়েন অন্ধকার জগতে তোমরা উজ্জ্বল নক্ষত্র৷ 16 তোমরা তাদের কাছে সেই শিক্ষা দাও যা জীবন আনে, তাহলে খ্রীষ্ট যখন ফিরে আসবেন তখন আমার আনন্দ করার মত কিছু থাকবে৷ আমার পরিশ্রম য়ে বৃথা হয় নি এবং আমি য়ে বৃথা দৌড়োই নি এই জন্য আমি আনন্দ করতে পারব৷ 17 ঈশ্বরের সেবার জন্য তোমাদের জীবন বলিরূপে উত্সর্গ করতে তোমাদের বিশ্বাস প্রেরণা য়োগায়৷ হয়তো তোমাদের উত্সর্গের সঙ্গে আমার নিজের রক্তও উত্সর্গ করতে হবে; আর তাই যদি করতে হয় তবে আমি পরম সুখী হব ও তোমাদের জন্য আমি আনন্দে ভরপুর হব৷ 18 আমার সঙ্গে তোমাদেরও আনন্দ ও উল্লাস করা উচিত৷ 19 আমি আশা করছি, প্রভু যীশুর সাহায্যে শিগ্গির তোমাদের কাছে তীমথিয়কে পাঠাব, য়েন তোমাদের খবরা-খবর জেনে আমি আশ্বস্ত হই৷ 20 আমার কাছে তীমথিয় ছাড়া আর কেউ নেই য়ে আমার সঙ্গে একাত্ম ও তোমাদের জন্যে সত্যি সত্যিই চিন্তা করে৷ 21 কারণ অন্য সকলেই খ্রীষ্ট যীশুর বিষয় নয়, কিন্তু কেবল নিজেদের বিষয়েই চিন্তা করছে৷ 22 আর তোমরা তীমথিয়র চরিত্র জান৷ ছেলে য়েমন তার বাবার সঙ্গে কাজ করে, ইনিও তেমনি আমার সঙ্গে সুসমাচার প্রচারের সেবা কাজ করে চলেছেন৷ 23 খুব শিগ্গিরই আমি তাঁকে তোমাদের কাছে পাঠাতে চাইছি৷ আমার কি হবে তা জানতে পারলেই আমি তাঁকে তোমাদের কাছে পাঠিয়ে দেব; 24 আর আমি বিশ্বাস করি য়ে প্রভুর কৃপায় আমি নিজেও শীঘ্রই তোমাদের কাছে যাব৷ 25 ইপাফ্রদীত খ্রীষ্টেতে আমার ভাই, খ্রীষ্টের সেনাদলে তিনি আমার এক সহকর্মী ও সেবক৷ আমার প্রযোজনের সময় তোমরা তাঁকে প্রতিনিধি হিসেবে পাঠিয়েছিলে৷ আমি এখন ভাবছি য়ে তাঁকে তোমাদের কাছে ফেরত্ পাঠানোর প্রযোজন৷ 26 আমি তাঁকে পাঠাচ্ছি এই জন্য য়ে তিনি তোমাদের সকলকে দেখতে চান, আর তোমরা তাঁর অসুস্থতার কথা শুনেছ বলে তিনি খুবই চিন্তিত৷ 27 সত্যিই তিনি খুবই অসুস্থ হয়েছিলেন৷ মরণাপন্ন অবস্থা হয়েছিল, কিন্তু ঈশ্বর তাঁর প্রতি করুণা করেছেন, কেবল তাঁর প্রতি নয় কিন্তু আমার ওপরও দয়া করেছেন য়েন দুঃখের উপর আরো দুঃখ আমার না হয়৷ 28 তাই এত আগ্রহের সঙ্গে আমি তোমাদের কাছে তাঁকে পাঠাচ্ছি য়েন তোমরা তাঁকে দেখে আবার আনন্দ পাও; আর তোমাদের বিষয়ে আমাকে আর চিন্তা করতে না হয়৷ 29 তোমরা তাঁকে প্রভুতে সানন্দে গ্রহণ করো৷ এই ধরণের লোকদের সম্মান করো৷ 30 তাঁকে সম্মান দেখানো উচিত কারণ খ্রীষ্টের কাজের জন্য তিনি প্রায় মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছিলেন৷ আমাকে সাহায্য করতে গিয়ে তিনি নিজের প্রাণের ঝুঁকি নিয়েছিলেন; এ এমন সাহায্য ছিল যা তোমরা করতে পারতে না৷
Philippians 3:1 আমার ভাই ও বোনেরা, তোমরা প্রভুতে আনন্দ কর৷ এই একই কথা আবার লিখতে আমার কোন কষ্ট হচ্ছে না; আর এটি তোমাদের নিরাপত্তার জন্য৷ 2 ‘কুকুরদের’ থেকে সাবধান! যাঁরা মন্দ কাজ করে ও যাঁরা দেহকে ছিন্নভিন্ন করতে চায় তাদের থেকে সাবধান! 3 কারণ আমরাই তো প্রকৃত সুন্নত হওয়া লোক; আমরা ঈশ্বরের আত্মায় উপাসনা করি, আর খ্রীষ্ট যীশুতে গর্ব বোধ করি৷ আমরা নিজেদের ওপর বা বাহ্যিক কোন কিছু করার ওপর আস্থা রাখি না৷ 4 যদিও আমি নিজের ওপর আস্থা রাখতে পারতাম, তবুও আমি তা করি না৷ যদি কোন লোকের মনে হয় য়ে সে নিজের ওপর আস্থা রাখতে পারে তবে তার জানা ভাল য়ে নিজের ওপর আস্থা রাখার জন্য আরো বড় কারণ আমার আছে৷ 5 জন্মের পর যখন আমার বয়স আট দিন তখন আমার সুন্নত হয়েছে; আমি ইস্রায়েলীয়, বিন্যামীন গোষ্ঠীর লোক৷ আমি একজন ইব্রীয়, আমার বাবা-মা ইব্রীয়৷ মোশির বিধি-ব্যবস্থা পালনে গোঁড়া হওয়ায় আমি ফরীশী হয়েছিলাম৷ 6 আমার নিজের ইহুদী ধর্মের বিষয়ে আমি এতই উত্সাহী ছিলাম য়ে আমি খ্রীষ্ট মণ্ডলীর প্রতি নির্য়াতন করতাম৷ আমি এমন নিখুঁতভাবে মোশির বিধি-ব্যবস্থা পালন করতাম য়ে তার মধ্যে কোন ত্রুটি ছিল না৷ 7 এক সময়ে ঐসব বিষয় আমার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল; কিন্তু আমি খ্রীষ্টকে পেয়েছি, তাই ঐসব বিষয়ের মূল্য আর আমার কাছে রইল না৷ 8 কেবল ঐসব বিষয় নয়, বরং সমস্ত কিছুই আমার প্রভু যীশু খ্রীষ্টের জ্ঞানের শ্রেষ্ঠতার কাছে নিতান্তই নগন্য বলে মনে করলাম৷ তাঁর জন্য আমি সবই বর্জন করেছি৷ এখন আমি ঐ সবকিছু আবর্জনার মতোই মনে করি, আর খ্রীষ্টকে আরো বেশী করে পেতে এ আমায় সাহায্য করে, 9 এবং তাঁর সঙ্গে সংযুক্ত রাখে৷ খ্রীষ্টেতে আমি ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়েছি৷ এই ধার্মিক প্রতিপন্ন হওয়া আমার বিধি-ব্যবস্থা পালনের মধ্য দিয়ে আসে নি৷ ঈশ্বরের কাছ থেকে দানরূপে এ আমি পেয়েছি৷ খ্রীষ্টে আমার সে বিশ্বাস আছে, এই বিশ্বাসের মাধ্যমে ঈশ্বর আমাকে ধার্মিক প্রতিপন্ন করেন৷ 10 আমি চাই খ্রীষ্টকে ও মৃতদের মধ্য থেকে তাঁর পুনরুত্থানের শক্তিকে জানতে৷ আমি খ্রীষ্টের দুঃখভোগের সহভাগীতা লাভ করতে চাই৷ এইভাবে য়েন তাঁর মৃত্যুতে তাঁর সমরূপ হই৷ 11 আমি যদি এসবের সহভাগী হই, তবে আমি প্রত্যাশা করতে পারি য়ে আমিও মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত হতে পারব৷ 12 একথা বলছি না য়ে আমি লক্ষ্যে পৌঁছে গেছি বা পূর্ণতা পেয়েছি৷ আমি সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে চেষ্টা করছি এবং য়ে উদ্দেশ্যে খ্রীষ্ট আমাকে ধরেছিলেন তাঁর সেই উদ্দেশ্য পর্যন্ত আমি পৌঁছতে চাই৷ 13 ভাই ও বোনেরা, আমি জানি য়ে আমি সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে পারি নি৷ 14 কিন্তু একটি বিষয়ে আমি চেষ্টা করে চলেছি; অতীতের সবকিছু ভুলে সামনের লক্ষ্যে পৌঁছতে প্রাণপণ চেষ্টা করছি যাতে পুরস্কার লাভ করি৷ উর্ধস্থ জীবনের জন্য খ্রীষ্ট যীশুতে ঈশ্বরের আহ্বানস্বরূপ এই পুরস্কারের প্রতিশ্রুতি আমাকে দেওয়া হয়েছে৷ 15 আমরা যাঁরা আত্মিকভাবে পরিপক্ক, আমাদের উচিত এইভাবে চিন্তা করা; আর যদি কোন বিষয়ে তোমাদের অন্যরকম মনোভাব থাকে তবে ঈশ্বর সে বিষয়ে তোমাদের কাছে পরিষ্কার করে দেবেন৷ 16 এস আমরা ইতিমধ্যে য়ে সত্যে পৌঁছেছি, সেই সত্য অনুসরণ করি৷ 17 ভাই ও বোনেরা, তোমরা আমার মতো জীবনযাপন করো৷ তোমাদের য়েমন দেখানো হয়েছে সেইভাবে যাঁরা চলে, তাদের অনুকরণ করো৷ 18 অনেকে আছে যাঁরা খ্রীষ্টের ক্রুশের শত্রুর মত আচরণ করে৷ আগে বহুবার আমি তাদের কথা তোমাদের বলেছি, এখন চোখের জল ফেলতে ফেলতে আমি তাদের কথা আবার তোমাদের বলছি৷ 19 য়েভাবে তারা চলছে তার পরিণাম বিনাশ৷ তারা ঈশ্বরের সেবা করে না, কেবল নিজেদের তুষ্টির জন্যই বাঁচে৷ তারা লজ্জাকর কাজ করে আর তাই নিয়ে তারা গর্ব বোধ করে৷ তারা কেবল পার্থিব বিষয়েই ভাবে৷ 20 আমাদের যথার্থ রাজ্য স্বর্গে৷ সেই স্বর্গ থেকে আমাদের ত্রাণকর্তার আগমণের জন্য আমরা অপেক্ষা করছি৷ আমাদের ত্রাণকর্তা হলেন প্রভু যীশু খ্রীষ্ট৷ 21 তিনি এসে আমাদের এই দীনতার দেহকে বদলে তাঁর নিজের মহিমান্বিত দেহের সমরূপ করবেন৷ খ্রীষ্ট তাঁর নিজ পরাক্রমে এই কাজ করতে পারেন এবং তাঁর সেই পরাক্রমে খ্রীষ্ট সমস্ত বিষয়ের উপরে কর্তৃত্ত্ব করতে সমর্থ৷
Philippians 4:1 আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা, আমি তোমাদের ভালবাসি আর তোমাদের দেখতে চাই৷ তোমরা আমার আনন্দ ও গর্বের বিষয়৷ আমি য়েমন বলেছি, তেমনভাবেই সর্বদা প্রভুর বাধ্য থেকো৷ 2 এখন আমি ইবদিয়াকে আর সুন্তুখীকে অনুরোধ করছি, তোমরা প্রভুতে বোন হিসাবে পরস্পর একমত হও৷ 3 তোমরা যাঁরা আমার বিশ্বস্ত সহকর্মী, তোমাদের এই মহিলাদের সাহায্য করতে বলছি৷ এরা সুসমাচার প্রচারের কাজে আমার সঙ্গে সংগ্রাম করছেন৷ ক্লীমেন্ত ও আমার অন্যান্য সহকর্মীবৃন্দের সঙ্গে এঁরা কাজ করেছেন, এঁদের নাম জীবন-পুস্তকে লেখা আছে৷ 4 সবসময় প্রভুতে আনন্দ কর, আমি আবার বলছি আনন্দ কর৷ 5 তোমাদের শান্ত সংযত আচরণ দ্বারা য়েন তোমরা সকলের প্রীতির পাত্র হয়ে ওঠো৷ প্রভু শিগ্গির আসছেন৷ 6 কোন কিছুতে উদ্বিগ্ন হযো না; বরং সকল বিষয়েই প্রার্থনার মাধ্যমে তোমাদের যা কিছু প্রযোজন তা একমাত্র ঈশ্বরকে জানাও এবং তাঁকে ধন্যবাদ দাও৷ 7 তাতে সমস্ত চিন্তার অতীত য়ে ঈশ্বরের শান্তি, তা তোমাদের হৃদয় ও মনকে খ্রীষ্ট যীশুতে রক্ষা করবে৷ 8 সবশেষে আমার ভাই ও বোনেরা, আমি একথাই বলব, যা কিছু সত্য, যা কিছু সম্মানীয়, যা কিছু ন্যায়, যা কিছু পবিত্র, যা কিছু প্রীতিজনক, যা কিছু ভদ্র, য়ে কোন সদগুণ ও য়ে কোন সুখ্যাতিযুক্ত বিষয় দিয়ে তোমাদের মন পূর্ণ রেখো৷ 9 তোমরা আমার কাছে থেকে যা শিখেছ, শুনেছ ও পেয়েছ আর তোমরা আমাকে যা করতে দেখেছ, তাই কর৷ তাহলে যিনি শান্তির ঈশ্বর তিনি তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে থাকবেন৷ 10 আমি প্রভুতে খুব আনন্দ পেয়েছি, কারণ এতদিন পর এখন তোমরা আবার আমার জন্য চিন্তা করতে নতুন উদ্দীপনা পেয়েছ৷ তোমরা সব সময়ই আমার বিষয়ে চিন্তা কর, কিন্তু তা দেখাবার সুয়োগ পাও নি৷ 11 আমার প্রযোজনের জন্য য়ে আমি তোমাদের একথা বলছি তা নয়, কারণ য়ে কোন অবস্থাতেই তৃপ্ত থাকতে আমি শিখেছি৷ 12 অভাবের সময় কিভাবে জীবনযাপন করতে হয় তা আমি জানি৷ আবার প্রাচুর্য়ের সময় কিভাবে চলতে হয় তাও আমি জানি৷ য়ে কোন অবস্থায় পরিতৃপ্ত বা ক্ষুধিত থাকতে, উপচয় কি অভাব ভোগ করতে য়ে কোন অবস্থায় জীবনযাপনের গূঢ়তত্ত্ব আমি শিখেছি৷ 13 যিনি আমাকে শক্তি দেন, সেই খ্রীষ্টের শক্তিতে আমি সকল অবস্থাতেই বলবান৷ 14 যাইহোক, আমার প্রযোজনের সময় তোমরা আমায় সাহায্য করতে এগিয়ে এসে ভালোই করেছ৷ 15 তোমরা ফিলিপীয়েরা ভাল করেই জান, সেই শুরুতে আমি সেখানে যখন সুসমাচার প্রচার করেছিলাম, আমি যখন মাকিদনিয়া ছেড়ে যাই সেই সময় একমাত্র তোমাদের মণ্ডলীই আমাকে সাহায্য করেছিল৷ 16 আমি যখন থিসলনীকীতেও ছিলাম সেখানেও তোমরা বেশ কয়েকবার আমায় সাহায্য পাঠিয়েছিলে৷ 17 আসলে তোমাদের কাছ থেকে কিছু সাহায্য পাব এই আশায় য়ে আমি একথা বলছি তা নয়, বরং আমি চাই য়েন দানের মাধ্যমে তোমাদের মঙ্গল হয়৷ 18 আমার যা প্রযোজন সে সব কিছুই আমার আছে, বলতে কি প্রযোজনের অতিরিক্ত আছে৷ তোমরা ইপাফ্রদীতের মারফত্ য়ে উপহার আমাকে পাঠিয়েছ, তাতে আমার সব অভাব মিটেছে৷ তোমাদের সেই উপহার ঈশ্বরের কাছে প্রীতিজনক ও গ্রহণয়োগ্য সুরক্ষিত অর্য়্ঘের মত৷ 19 আমার ঈশ্বর তোমাদের সব অভাব মিটিয়ে দেবেন, খ্রীষ্ট যীশুতে ঈশ্বরের য়ে মহিমার ভাণ্ডার আছে তার থেকে তিনি তোমাদের সব অভাব মোচন করবেন৷ 20 আমাদের ঈশ্বর ও পিতার মহিমা যুগে যুগে বিরাজ করুক, আমেন৷ 21 যীশু খ্রীষ্টের সঙ্গে সংযুক্ত ঈশ্বরের লোকদের প্রত্যেক জনকে আমার শুভেচ্ছা জানিও৷ আমার সঙ্গে য়ে সব ভাইরা আছেন তাঁরা তোমাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন৷ 22 ঈশ্বরের সকল লোকরা যাঁরা এখানে আছেন, বিশেষতঃ কৈসরের রাজপ্রাসাদের লোকরাও তোমাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন৷ 23 আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহ তোমাদের সকলের সঙ্গে সর্বদা থাকুক৷
Colossians 1:1 আমি পৌল, ঈশ্বরের ইচ্ছানুসারে খ্রীষ্ট যীশুর প্রেরিত ও আমাদের ভাই তীমথিয়, 2 কলসীতে ঈশ্বরের য়ে সকল পবিত্র ও বিশ্বস্ত ভাই ও বোনেরা খ্রীষ্টেতে আছে, তাদের আমরা এই চিঠি লিখছি৷ আমাদের পিতা ঈশ্বরের কাছ থেকে অনুগ্রহ ও শান্তি তোমাদের ওপরে য়েন বর্তায়৷ 3 আমরা প্রার্থনা করার সময় সব সময়ই তোমাদের হয়ে প্রভু যীশু খ্রীষ্টের পিতা ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই৷ 4 আমরা ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই কারণ খ্রীষ্টের ওপর তোমাদের বিশ্বাস, আর ঈশ্বরের সমস্ত লোকদের জন্য তোমাদের ভালবাসার কথা আমরা শুনেছি৷ 5 এই বিশ্বাস ও ভালবাসার কারণ তোমাদের অন্তরের সেই প্রত্যাশা৷ তোমরা জান য়ে তোমরা যা কিছু প্রত্যাশা করছ, সে সব স্বর্গে তোমাদের জন্য সঞ্চিত রয়েছে৷ যখন সত্য শিক্ষা ও সুসমাচার তোমাদের কাছে বলা হয়েছিল, তখনই প্রথম সেই প্রত্যাশার বৃত্তান্ত তোমরা শুনেছিলে৷ 6 সেই সুসমাচার সমস্ত জগতে প্রচারিত হচ্ছে আর তা ফলদাযী হচ্ছে ও বৃদ্ধি লাভ করছে৷ তোমরা যখন সুসমাচার শুনে ঈশ্বরের অনুগ্রহের কথা জেনেছিলে তখন থেকে তোমাদের মধ্যেও তা সেই একইভাবে কাজ করছে৷ 7 ইপাফ্রার কাছ থেকে তোমরা ঈশ্বরের অনুগ্রহের কথা জেনেছ, ইপাফ্রা আমাদের সহদাস, আমরা তাকে ভালবাসি৷ আমাদের জন্য তিনি খ্রীষ্টের এক বিশ্বস্ত সেবক৷ 8 পবিত্র আত্মা তোমাদের অন্তরে য়ে গভীর ভালবাসা দিয়েছেন সে কথাও তিনি আমাদের জানিয়েছেন৷ 9 এইজন্য য়ে দিন থেকে আমরা তোমাদের বিষয়ে এই সব কথা জানতে পেরেছি, সেইদিন থেকেই আমরা তোমাদের জন্য ঈশ্বরের কাছে অবিরত প্রার্থনা করছি৷ যাতে ঈশ্বর তোমাদের জীবনে কি করতে চান তা পূর্ণরূপে জানতে পার; এবং যাতে তোমরা সকল আত্মিক বিষয়ে প্রজ্ঞা ও বোধশক্তি লাভ কর৷ 10 তার ফলে তোমরা এমন জীবনযাপন কর যাতে তাঁর গৌরব হয় ও প্রভু সমস্ত দিক দিয়ে খুশী হন৷ আমি প্রার্থনা করি য়েন তোমরা সব রকমের সত্ কাজ করে ফলবান হও এবং ঈশ্বরের জ্ঞানে বৃদ্ধিলাভ কর৷ 11 য়েন ঈশ্বর তাঁর মহাশক্তিতে তোমাদের শক্তিমান করেন ও তাঁর পরাক্রমে তোমাদের বলিষ্ঠ করেন; য়েন দুঃখ কষ্ট এলে তোমরা সহ্য করতে ও ধৈর্য্য ধরতে পার৷ 12 তাহলে তোমরা আনন্দ সহকারে পিতাকে ধন্যবাদ দিতে পারবে, যিনি তাঁর আলোয় সন্তানদের উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত অংশ ভোগ করার য়োগ্যতা তোমাদের দিয়েছেন৷ 13 তিনিই অন্ধকারের কর্তৃত্ত্ব থেকে আমাদের উদ্ধার করে তাঁর প্রিয় পুত্রের রাজত্বে স্থান দিয়েছেন৷ 14 তাঁর মাধ্যমেই আমরা মুক্ত হই ও আমাদের সব পাপের ক্ষমা হয়৷ 15 কেউই ঈশ্বরকে দেখতে পায় না; কিন্তু যীশুই অদৃশ্য ঈশ্বরের প্রতিমূর্তি এবং সমস্ত সৃষ্টির প্রথমজাত৷ 16 তাঁর পরাক্রমে সবকিছুই সৃষ্টি হয়েছে৷ স্বর্গে ও র্ময়্তে, দৃশ্য ও অদৃশ্য যা কিছু আছে, সমস্ত আত্মিক শক্তি, প্রভুবৃন্দ, শাসনকারী কর্তৃত্ত্ব, সকলই তাঁর দ্বারা ও তাঁর নিমিত্ত সৃষ্ট হয়েছে৷ 17 সবকিছুর পূর্বেই খ্রীষ্টের অস্তিত্ব ছিল; তাঁর শক্তিতেই সব কিছু স্থিতিশীল আছে৷ 18 খ্রীষ্ট হলেন দেহের মস্তক সেই দেহ হচ্ছে মণ্ডলী৷ সব কিছুর আদি তিনি, মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিতদের মধ্যে তিনি প্রথম, তাই সব কিছুতেই প্রথমে তাঁর স্থান৷ 19 তাই ঈশ্বর তাঁর সমস্ত পূর্ণতায় খ্রীষ্টে বাস করে খুশী হয়েছিলেন, 20 আর খ্রীষ্টের ক্রুশের ওপর পতিত রক্তের দ্বারা শান্তি স্থাপন করে কি স্বর্গের, কি র্ময়্তের সব কিছু খ্রীষ্টের মাধ্যমে তাঁর কাছে পুনরায় ফিরিয়ে এনেছিলেন৷ 21 এক সময় তোমরা ঈশ্বর থেকে আলাদা ছিলে৷ তোমরা তোমাদের চিন্তায় ও তোমাদের কুকর্মের জন্য ঘোর ঈশ্বর বিরোধী ছিলে৷ 22 এখন খ্রীষ্টের পার্থিব দেহের দ্বারা ঈশ্বর তোমাদের তাঁর সঙ্গে পুনর্মিলিত করেছেন, যাতে তিনি তোমাদের ঈশ্বরের সাক্ষাতে পবিত্র, নির্দোষ ও নিষ্কলঙ্করূপে উপস্থিত করতে পারেন৷ 23 তোমরা য়ে সুসমাচার শুনেছ যদি তা বিশ্বাস করে স্থির থাক এবং সুসমাচার থেকে য়ে প্রত্যাশা তোমরা পেয়েছ তা থেকে যদি সরে না যাও তবে খ্রীষ্ট এসব সম্পন্ন করবেন৷ জগতের সর্বত্র সমস্ত লোকের কাছে সেই একই সুসমাচার প্রচারিত হয়েছে৷ আমি পৌল সেই সুসমাচারের দাস হয়েছি৷ 24 এখন তোমাদের জন্য আমায় য়ে কষ্টভোগ করতে হয় তার জন্য আমি আনন্দিত৷ খ্রীষ্টের দুঃখভোগের য়ে অংশ অপূর্ণ রয়ে গেছে তা আমি তাঁর দেহরূপ মণ্ডলীর হয়ে আমার দেহে দুঃখভোগ করে পূর্ণ করছি৷ 25 আমি মণ্ডলীর সেবকরূপে কাজ করছি, কারণ ঈশ্বর আমাকে এই বিশেষ কাজের জন্য নিযোগ করেছেন৷ এই প্রচারে তোমাদের উপকার হচ্ছে; আমার কাজ হল ঈশ্বরের সত্য বাক্য সম্পূর্ণরূপে প্রচার করা৷ 26 এই সত্য বাক্যের নিগূঢ়তত্ত্ব সৃষ্টির শুরু থেকে গুপ্ত ছিল এবং তা সমস্ত মানুষের কাছে গুপ্ত ছিল; কিন্তু এখন ঈশ্বরের পবিত্র লোকদের কাছে তা প্রকাশিত হয়েছে৷ 27 ঈশ্বর তাঁর আপন লোকদের কাছে তাঁর মূল্যবান মহিমাময় গুপ্ত সত্য প্রকাশ করতে মনস্থ করলেন; সেই মহান সত্য সব মানুষের জন্য৷ সেই গুপ্ত সত্য খ্রীষ্ট স্বয়ং যিনি তোমাদের মধ্যে আছেন এবং ঈশ্বরের গৌরবের ভাগী হবার জন্য তিনিই কেবল আমাদের ভরসা৷ 28 তাই সমস্ত প্রজ্ঞায় প্রত্যেককে বিশদভাবে উপদেশ দিয়ে এবং সতর্ক করে আমরা খ্রীষ্টকে প্রচার করি, যাতে প্রত্যেককে ঈশ্বরের কাছে খ্রীষ্টে পরিপক্ক মানুষ হিসেবে উপস্থিত করতে পারি৷ 29 এই উদ্দেশ্যে আমার মধ্যে মহাপরাক্রমে ক্রিয়াশীল খ্রীষ্টের শক্তি ব্যবহার করে আমি পরিশ্রম ও সংগ্রাম করছি৷
Colossians 2:1 আমি চাই, তোমরা জান য়ে তোমাদের সাহায্য করার জন্য আমি কতো কঠোর পরিশ্রম করছি৷ লায়দিকেয়ার লোকদের ও আরো অনেকের জন্যও পরিশ্রম করছি, যাদের সঙ্গে আমার সাক্ষাত্ বা পরিচয় হয় নি৷ 2 আমি চাই তারা ও তোমরা য়েন শক্তিশালী হয়ে ওঠো! এবং য়েন পরস্পর ভালবাসার বন্ধনে বাঁধা থাকো; আর সুবিবেচনার মধ্য দিয়ে য়ে দৃঢ় বিশ্বাস আসে তাতে সমৃদ্ধ হও৷ আমি চাই তোমরা ঈশ্বরের নিগূঢ় সত্য পূর্ণরূপে জানো৷ ঈশ্বর যা প্রকাশ করেছেন সেই গুপ্ত সত্য খ্রীষ্ট নিজে৷ 3 খ্রীষ্টের মধ্যেই নিশ্চিতরূপে সমস্ত বিজ্ঞতা ও জ্ঞানের ঐশ্বর্য নিহিত আছে৷ 4 আমি এসব কথা বলছি, য়েন কেউ তোমাদের বড় বড় মতবাদ দিয়ে বিপথগামী না করে; যা মনে হয় ভাল কিন্তু আসলে নিছক মিথ্যা৷ 5 দৈহিকভাবে আমি তোমাদের কাছ থেকে দূরে থাকলেও আত্মিকভাবে আমি তোমাদের সঙ্গেই আছি৷ তোমাদের সুশৃঙ্খল জীবন দেখে ও খ্রীষ্টে তোমাদের সুদৃঢ় বিশ্বাস দেখে আমি আনন্দিত৷ 6 খ্রীষ্ট যীশুকে তোমরা য়েমনভাবে প্রভু বলে গ্রহণ করেছ তেমনভাবেই যীশুতে জীবনযাপন করতে থাক৷ 7 খ্রীষ্টের মধ্যে গভীরভাবে গেঁথে গিয়ে তাঁরই ওপরে তোমরা গড়ে ওঠো এবং য়েমন তোমাদের শেখানো হয়েছে সেইভাবেই বিশ্বাসে দৃঢ় হও; আর সর্বদা কৃতজ্ঞতা সহকারে ধন্যবাদ দাও৷ 8 সাবধান থেকো, কেউ য়েন দর্শন বিদ্য়া ও ফাঁকির ছলনা দ্বারা তোমাদের বিশ্বাস থেকে সরিয়ে না নিয়ে যায়৷ ঐসব মতবাদ খ্রীষ্ট হতে আসে নি, এসেছে মানুষের পরম্পরাগত শিক্ষা ও জগতের লোকদের প্রাথমিক ধারণার মধ্য দিয়ে৷ 9 কারণ ঈশ্বরের সম্পূর্ণতা খ্রীষ্টের দেহের মধ্যে বাস করেছে; 10 আর তোমরা খ্রীষ্টেতেই পূর্ণতা লাভ করেছ, তোমাদের আর কিছুরই প্রযোজন নেই৷ খ্রীষ্ট সমস্ত শাসক ও আধিপত্যের কর্তা৷ 11 খ্রীষ্টে তোমাদের ভিন্ন রকমের সুন্নত হয়েছে৷ সেই সুন্নত মানুষের হাত দিয়ে হয় নি, এই সুন্নত হচ্ছে তোমাদের পাপময় প্রকৃতি থেকে মুক্তিলাভ; আর এই রকমের সুন্নত খ্রীষ্টেই সম্পন্ন হয়েছে৷ 12 তোমাদের বাপ্তিস্মের সময় তোমাদের পুরানো সত্ত্বা মরে গিয়েছিল, তোমরা খ্রীষ্টের সঙ্গে সমাধিস্থ হয়েছিলে, সেই বাপ্তিস্মে তোমরা খ্রীষ্টের সঙ্গে পুনরুত্থিত হয়েছিলে কারণ ঈশ্বরের পরাক্রমে তোমাদের বিশ্বাস ছিল৷ খ্রীষ্টকে মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত করতে ঈশ্বরের সেই পরাক্রম প্রকাশিত হয়েছিল৷ 13 তোমাদের পাপের কারণে এবং তোমাদের পাপময় প্রকৃতির কবল থেকে উদ্ধার লাভ বা সুন্নত হয় নি বলে তোমরা আত্মিকভাবে মৃত ছিলে৷ কিন্তু খ্রীষ্টের সঙ্গে ঈশ্বর তোমাদের জীবিত করলেন, আর ঈশ্বর তোমাদের সব পাপ ক্ষমা করলেন৷ 14 ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থা লঙঘন করার ফলে আমরা দায়বদ্ধ ছিলাম, সেই দায় এর মধ্যে আমাদের ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থা পালনের ব্যর্থতার কথা লিখিত ছিল; কিন্তু ঈশ্বর আমাদের সেই দায় মকুব করলেন৷ ঈশ্বর সেই দায় এর তালিকা নিয়ে ক্রুশের উপর পেরেক দিয়ে ঝুলিয়ে দিলেন; 15 আর এইভাবে সমস্ত (আত্মিক) শাসক ও আধিপত্যকে পরাস্ত করলেন৷ ঈশ্বর জগতকে দেখালেন য়ে তারা শক্তিহীন৷ 16 এই জন্য খাদ্য় কি পানীয় নিয়ে বা কোন পর্ব পালন, অমাবস্যা, কি বিশ্রামবারের বিশেষ দিনগুলি পালন নিয়ে কেউ য়েন তোমাদের বিচার না করে৷ 17 অতীতে ঐ সবকিছু ছিল ভবিষ্যতে যা হবে তার ছায়ার মতো, কিন্তু নতুন যা কিছু আসছিল তা খ্রীষ্টের৷ 18 যাঁরা বিনম্রতার ভান করে এবং স্বর্গদূতদের উপাসনা করে আমোদ পায় তাদের কেউ য়েন তোমাদের পুরস্কার প্রাপ্তির অয়োগ্যতা প্রমাণ না করে৷ এইরূপ ব্যক্তি সবসময়েই নিজের দেখা দর্শনের কথা বলে এবং অনাত্মিক চিন্তার দ্বারা বিনা কারণে বিনাশরূপ অহঙ্কারে ফুলে ওঠে৷ 19 এরূপ লোকেরা খ্রীষ্টকে ধরে থাকে না, যিনি দেহের মস্তক স্বরূপ৷ সমস্ত দেহটাই খ্রীষ্টের উপর নির্ভরশীল এবং খ্রীষ্টের জন্যই দেহের সমস্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গগুলি পরস্পরকে যত্ন করে ও পরস্পরের জন্য চিন্তা করে৷ এতেই দেহ শক্তিশালী হয় এবং দেহকে একসাথে ধরে রাখে, আর এইভাবে ঈশ্বরের ইচ্ছানুসারে দেহ বৃদ্ধিলাভ করে৷ 20 খ্রীষ্টের সঙ্গে তোমাদের মৃত্যু হয়েছে বলে তোমরা জগতের প্রাথমিক শিক্ষার অধীন নও৷ তবু এমনভাবে চলছ য়েন মনে হচ্ছে তোমরা এখনও জগতের লোক৷ তোমরা জগতের এইসব নিয়ম কানুন এখনও মেনে চলছ য়েমন: 21 ‘ওটা খাওয়া ঠিক নয়,’ ‘ওটা চোখে দেখবে না,’ ‘ওটা ছুঁযো না’ ইত্যাদি৷ 22 এসব নিয়ম কানুনের অন্তর্গত বস্তু (বিষয়) ব্যবহারে ভয় পায় এবং এগুলি গড়ে উঠেছে মানুষের আদেশ ও শিক্ষার উপর ভিত্তি করে৷ 23 ঈশ্বরের নির্দেশ নয়, এসব নিয়ম কানুন হল মানুষের গড়া ধর্মের অংশ ও জ্ঞানপূর্ণ বলে বিবেচিত হয় এবং যাতে বিনয়ের ভান ও কৃচ্ছসাধন করার কথা থাকে৷ কিন্তু এইসব নিয়ম কানুন মানুষের মধ্যে য়ে পাপ প্রবৃত্তিগুলি থাকে সেগুলিকে বশে আনতে পারে না৷
Colossians 3:1 খ্রীষ্টের সঙ্গে তোমরা মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত হয়েছ; তাই স্বর্গীয় বিষয়গুলির জন্য চেষ্টা কর, য়েখানে খ্রীষ্ট ঈশ্বরের দক্ষিণ পাশে বসে আছেন৷ 2 সেই স্বর্গীয় বিষয়সকলের কথা ভাব, য়ে সকল বিষয়বস্তু জগতে আছে সেগুলির বিষয় নয়৷ 3 কারণ তোমাদের পুরানো সত্ত্বার মৃত্যু হয়েছে; আর তোমাদের নতুন জীবন খ্রীষ্টের সঙ্গে ঈশ্বরের মধ্যে নিহিত আছে৷ 4 খ্রীষ্ট যখন ফিরে আসবেন, তখন তোমরাও তাঁর সঙ্গে মহিমামণ্ডিত হয়ে প্রকাশিত হবে৷ 5 তাই তোমাদের জাগতিক স্বভাব থেকে সব মন্দ বিষয় দূর করে দাও৷ য়েমন: য়ৌনপাপ, অপবিত্রতা, অশুচি চিন্তার বশবর্তী হওয়া, মন্দ বিষয়ের লালসা করা এবং লোভ৷ লোভ এক প্রকার প্রতিমা পূজা৷ 6 এইসবের জন্য ঈশ্বরের ক্রোধ হচ্ছে৷ 7 তোমাদের অতীতের পাপময় জীবনে তোমরা সেইসব মন্দ কাজে লিপ্ত ছিলে৷ 8 কিন্তু এখন তোমাদের জীবন থেকে রাগ, ক্রোধ, ঘৃণাপূর্ণ অনুভূতি, অপমানসূচক আচরণ এবং লজ্জাজনক আলাপ সব দূর করে দাও৷ 9 পরস্পরের কাছে মিথ্যা বোলো না, কারণ তোমরা তোমাদের পুরানো পাপময় সত্ত্বাকে তার সমস্ত মন্দ কর্ম সমেত ত্যাগ করেছ৷ 10 তোমরা নতুন সত্ত্বাকে পরিধান করেছ; এই নতুন জীবনে তোমাদের নতুন করে তৈরী করা হচ্ছে৷ তোমাদের যিনি সৃষ্টি করেছেন তোমরা তাঁর মতো হয়ে উঠছ, এই নতুন জীবনের মাধ্যমে তোমরা ঈশ্বরের সত্য পরিচয় পাচ্ছ৷ 11 এই নতুন জীবনে ইহুদী কি গ্রীক এর মধ্যে কোন পার্থক্য নেই৷ যাদের সুন্নত হয়েছে আর যাদের সুন্নত হয় নি, অথবা কোন বিদেশী বা বর্বর এদের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই৷ ক্রীতদাস বা স্বাধীনের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই৷ খ্রীষ্ট ঐসব বিশ্বাসীদের মধ্যে বাস করেন৷ একমাত্র খ্রীষ্টই হলেন প্রযোজনীয় বিষয়৷ 12 ঈশ্বর তোমাদের মনোনীত করেছেন ও তোমাদের তাঁর পবিত্র লোক বলে নিরূপণ করেছেন৷ তিনি তোমাদের ভালবাসেন, তাই এইসব ভাল গুণগুলি পরিধান করে সহানুভূতিপূর্ণ, দয়ালু, নম্র, ভদ্র এবং ধৈর্য্যবান হও৷ 13 পরস্পরের প্রতি ক্রুদ্ধ ভাব রেখো না কিন্তু একে অপরকে ক্ষমা কর৷ কেউ যদি তোমার বিরুদ্ধে কোন অন্যায় করে, তবে একে অপরকে ক্ষমা করো৷ অপরকে ক্ষমা করো, কারণ প্রভু তোমাদের ক্ষমা করেছেন৷ 14 এসব তো করবেই কিন্তু সবার ওপরে পরস্পরের প্রতি ভালবাসা রেখো, সেইভালোবাসা তোমাদের একসূত্রে গাঁথে আর পরিপূর্ণতা দেয়৷ 15 প্রভু খ্রীষ্ট য়ে শান্তি দেন তা তোমাদের অন্তরের সমস্তচিন্তাকে সংযত রাখুক৷ তোমরা তো সেই কারণেই শান্তি পেতে একদেহে আহূত হয়েছ৷ তোমরা সব সময় কৃতজ্ঞ থাক৷ 16 খ্রীষ্টের শিক্ষা তোমাদের অন্তরে প্রচুর পরিমাণে থাকুক৷ সকল বিজ্ঞতা ব্যবহার করে পরস্পরকে বলিষ্ঠ কর এবং শিক্ষা দাও৷ কৃতজ্ঞচিত্তে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে গীতসংহিতার গীত, প্রশংসার গীত এবং আত্মিক গীত গাও৷ 17 কথায় বা কাজে যা কিছু করো, সবই প্রভুর নামে কর এবং পিতা ঈশ্বরকে যীশুর মাধ্যমে ধন্যবাদ দাও৷ 18 স্ত্রীরা, তোমরা তোমাদের স্বামীর অনুগতা থাক, এটাই হবে প্রভুর অনুসারীদের উপযুক্ত কাজ৷ 19 স্বামীরা, তোমরা তোমাদের স্ত্রীকে ভালবাস, তাদের সঙ্গে মধুর ব্যবহার করো৷ 20 সন্তানরা, তোমরা সব বিষয়ে তোমাদের বাবা-মার বাধ্য হযো; এতে প্রভু সন্তুষ্ট হন৷ 21 পিতারা তোমরা তোমাদের সন্তানদের বিরক্ত করো না, তাদের খুশী মতো চলতে না পারলে তারা উত্সাহ হারাবে৷ 22 ক্রীতদাসরা, তোমাদের মনিবদের সব বিষয়ে মান্য করবে৷ তাঁরা দেখুন বা না দেখুন তোমরা সব সময় তাঁদের বাধ্য থেকো এতে তোমরা মানুষকে খুশী করতে নয় কিন্তু প্রভুকেই খুশী করতে চেষ্টা করছ, সুতরাং সততার সঙ্গে মনিবদের মান্য করো, কারণ তোমরা প্রভুকে সম্মান করো৷ 23 তোমরা সমস্ত কাজ আন্তরিকতার সঙ্গে করো৷ মানুষের জন্য য়ে করছ তা নয়, কিন্তু প্রভুর কাজ মনে করেই কাজ করে যাও৷ 24 মনে রেখো, প্রভুর কাছ থেকেই তোমরা তার পুরস্কার পাবে. ঈশ্বর তাঁর আপনজনদের দেবেন বলে য়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তোমরা তার অংশীদার হবে৷ তোমরা প্রভু যীশু খ্রীষ্টেরই সেবা করছ৷ 25 মনে রেখো, কেউ যদি অন্যায় কাজ করে, সেই ব্যক্তিকে তার অন্যায় কাজের জন্য শাস্তি পেতে হবে৷ প্রভু সকলকেই সমভাবে বিচার করেন৷
Colossians 4:1 মনিবেরা, তোমরা তোমাদের ক্রীতদাসদের প্রতি ন্যায় ও সত্ ব্যবহার করো৷ মনে রেখো, স্বর্গে তোমাদেরও এক প্রভু আছেন৷ 2 তোমরা প্রার্থনায় নিবিষ্ট থাক; সর্বদা সজাগ থেকো এবং প্রার্থনার সময়ে প্রথমে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানিও৷ 3 এই সঙ্গে আমাদের জন্যও প্রার্থনা করো, প্রার্থনা করো য়েন ঈশ্বর আমাদের জন্য অপরের কাছে সুসমাচার প্রচারের সুয়োগ করে দেন, প্রার্থনা করো আমরা য়েন সেই নিগূঢ়তত্ত্ব, যা ঈশ্বর খ্রীষ্টের সম্বন্ধে প্রকাশ করেছেন, তাও লোকদের জানাতে পারি৷ এই সত্য প্রচারের জন্যই আমি আজ কারাগারে আছি৷ 4 প্রার্থনা করো য়েন পরিষ্কার করে সেই সত্য লোকদের কাছে আমি তুলে ধরতে পারি, এটাই আমার কর্তব্য৷ 5 যাঁরা খ্রীষ্টেবিশ্বাসী নয় তাদের সঙ্গে বুদ্ধিপূর্বক ব্যবহার করো; আর সমস্ত সুয়োগের সদ্বব্যবহার করো৷ 6 তোমাদের কথাবার্তা সব সময় য়েন বিজ্ঞতা ও মাধুর্য়পূর্ণ হয়, তাহলে প্রত্যেক মানুষকে তোমরা যথাযথভাবে উত্তর দিতে পারবে৷ 7 তুখিক খ্রীষ্টেতে আমার স্নেহের ভাই, তিনি প্রভুতে একজন বিশ্বস্ত সেবক ও আমার সহকর্মী৷ তিনি গিয়ে আমার প্রতি কি ঘটছে তার সব তোমাদের জানাবেন৷ 8 আমি তোমাদের কাছে তাকে এই উদ্দেশ্যেই পাঠালাম৷ আমি চাই য়েন তোমরা জানতে পার আমরা সকলে কেমন আছি৷ আমি তাকে পাঠালাম, য়েন তিনি গিয়ে তোমাদের মনে ভরসা দেন৷ 9 আমি ওনীষিমাসের সঙ্গে তাকে পাঠালাম৷ ওনীষিমাস হলেন খ্রীষ্টেতে একজন বিশ্বস্ত ও প্রিয় ভাই৷ তিনি তো তোমাদের দলেরই একজন৷ তুখিক ওনীষিমাস গিয়ে এখানকার সব সমাচার তোমাদের দেবেন৷ 10 আরিষ্টার্খ তোমাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন, তিনি আমার এখানে কারাগারের মধ্যে আছেন আর বার্ণবার খুড়তুতো ভাই মার্কও তোমাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন৷ মার্কের ব্যাপারে এর আগেই তোমাদের জানিয়ে ছিলাম৷ তিনি ওখানে গেলে তাঁকে সাদরে গ্রহণ করো৷ 11 যুষ্ট (যাকে যীশু বলেও ডাকা হয়) তিনিও তোমাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন৷ ইহুদীদের মধ্য থেকে যাঁরা খ্রীষ্টবিশ্বাসী হয়েছেন, তাদের মধ্যে কেবল এঁরাই আমার সঙ্গে ঈশ্বরের রাজ্য বিস্তারের জন্য কাজ করছেন৷ এঁরা আমার মনে আনন্দ দিয়েছেন৷ 12 ইপাফ্রাও তোমাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন; তিনি তো তোমাদেরই লোক, তিনি খ্রীষ্ট যীশুর একজন সেবক৷ তিনি সব সময় তোমাদের জন্য ব্যাকুলভাবে প্রার্থনা করেন য়েন তোমরা ঈশ্বরের ইচ্ছায় আত্মিকভাবে বৃদ্ধিলাভ কর, সিদ্ধ হও ও ঈশ্বরের অভিপ্রেত সব কিছুতে তোমরা পূর্ণ হও৷ 13 আমি তাঁর বিষয়ে এই সাক্ষ্য দিচ্ছি য়ে তিনি তোমাদের জন্য ও লায়দিকেয়া এবং হিয়রাপলির খ্রীষ্ট-বিশ্বাসীদের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছেন৷ 14 আমাদের প্রিয় চিকিত্সক লূক ও দীমা তোমাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন৷ 15 তোমরা লায়দিকেযা সমবিশ্বাসী ভাই ও বোনেদের এবং নুম্ফাকে ও তার গৃহে য়ে মণ্ডলী সমবেত হন তাঁদের সকলকে আমার শুভেচ্ছা জানিও৷ 16 এই চিঠি পড়ার পর তোমরা এই চিঠিটি লায়দিকেয়ার মণ্ডলীতে পাঠিয়ে দিও এবং নিশ্চিতভাবে দেখো যাতে ঐ মণ্ডলীকে তা পড়ে শোনানো হয়৷ আমি লায়দিকেয়ার মণ্ডলীকে য়ে চিঠি লিখছি তা তোমরাও পাঠ করো৷ 17 আর্খিপ্পকে বোলো, ‘প্রভু তোমাকে য়ে কাজ দিয়েছেন তা নিশ্চয় করে শেষ করো৷’ 18 আমি পৌল, নিজে হাতে লিখে তোমাদের আমার শুভেচ্ছা জানাচ্ছি৷ আমাকে স্মরণে রেখো, আমি কারাগারে বন্দী অবস্থায় আছি৷ ঈশ্বরের অনুগ্রহ তোমাদের সহবর্তী হোক্৷
1 Thessalonians 1:1 পিতা ঈশ্বর ও প্রভু যীশু খ্রীষ্টের সঙ্গে থিষলনীকীয়ার য়ে মণ্ডলী যুক্ত, তাদের কাছে পৌল, সীল ও তীমথিয় আমরা এই চিঠি লিখছি৷ ঈশ্বরের অনুগ্রহ ও শান্তি তোমাদের ওপর বিরাজ করুক৷ 2 আমরা সর্বদা প্রার্থনার সময় তোমাদের স্মরণ করে থাকি এবং তোমাদের সকলের জন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিই৷ 3 বিশ্বাসের দরুন ও প্রেমের বশবর্তী হয়ে য়ে সব কাজ তোমরা করেছ এবং খ্রীষ্ট যীশুতে য়ে প্রত্যাশা রয়েছে তাতে উত্সাহিত হয়ে তোমরা য়ে ধৈর্য্য ধরছ, সে সব কথা স্মরণ করে আমরা ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই৷ 4 ঈশ্বর প্রেমে আশ্রিত ভাই ও বোনেরা, আমরা জানি তিনি তোমাদের আপন করে নেবার জন্য মনোনীত করেছেন৷ 5 আমাদের দ্বারা প্রচারিত সুসমাচার কেবলমাত্র কথার মাধ্যমে তোমাদের কাছে আসে নি, কিন্তু তা পরাক্রম, পবিত্র আত্মা ও গভীর বিশ্বাসের মাধ্যমে এসেছিল৷ তোমরা তা জান, য়ে আমরা তোমাদের মধ্যে কি ধরণের জীবনযাপন করেছিলাম৷ তোমাদের মঙ্গলের জন্যই আমরা ঐভাবে চলেছিলাম; 6 আর তোমরা আমাদের ও প্রভুর অনুকরণ করেছিলে৷ তোমরা অনেক নির্য়াতন ভোগের মধ্যেও সেই শিক্ষা আনন্দের সঙ্গে গ্রহণ করেছিলে৷ পবিত্র আত্মাই সেই আনন্দ তোমাদের দিয়েছিলেন; 7 এর ফলস্বরূপ তোমরা মাকিদনিয়া ও আখায়ার সমস্ত বিশ্বাসী লোকের কাছে আদর্শ স্বরূপ হয়েছ৷ 8 কেবলমাত্র মাকিদনিয়া ও আখায়াতে তোমাদের কাছ থেকে প্রভুর বাক্য ছড়িয়ে পড়েছে তা নয়; ঈশ্বরের প্রতি তোমাদের বিশ্বাসের কথা সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে৷ এই জন্য তোমাদের বিশ্বাসের সম্পর্কে আমাদের কিছু বলার প্রযোজন নেই; 9 কারণ সব জায়গার মানুষ আমাদের জানাচ্ছে কিভাবে তোমরা আমাদের অভ্য়র্থনা জানিয়েছিলে এবং কিভাবে তোমরা মূর্তি পূজা ছেড়ে জীবন্ত সত্য ঈশ্বরের সেবার দিকে মন দিয়েছিলে, 10 আর ঈশ্বর তাঁর য়ে পুত্রকে মৃতদের মধ্য থেকে উত্থাপিত করেছেন তাঁর ফিরে আসার অপেক্ষায় আছ৷ যীশুই আমাদের ঈশ্বরের আসন্ন ক্রোধ থেকে রক্ষা করবেন৷
1 Thessalonians 2:1 প্রিয় ভাই ও বোনেরা, তোমরা নিজেরাই জান, তোমাদের কাছে আমাদের যাওয়া ব্যর্থ হয় নি৷ 2 তোমরা একথাও জান য়ে, তোমাদের ওখানে যাবার পূর্বে ফিলীপিতে আমাদের দুঃখভোগ করতে হয়েছিল, কারণ সেখানকার লোকরা আমাদের চরম অপমান করেছিল; কিন্তু সেখানে চরম বিরোধিতার মধ্যেও আমাদের ঈশ্বর সাহসে বুক বাঁধতে এবং খ্রীষ্টের সুসমাচার তোমাদের কাছে ঘোষণা করতে সাহায্য করেছিলেন৷ 3 আমরা আমাদের বার্তা গ্রহণ করতে লোকেদের কাছে য়ে আবেদন রেখেছিলাম, তার মধ্যে কোন ফাঁকি বা ছলনা ছিল না৷ আমরা লোকেদের ঠকাতে চাই নি এবং তার পেছনে কোন রকম অপবিত্র উদ্দেশ্যও আমাদের ছিল না৷ 4 বরং আমরা সুসমাচার প্রচার করি কারণ ঈশ্বর এই বার্তা প্রচার করার জন্য আমাদের পরীক্ষা করে প্রমাণসিদ্ধ বলে মনে করেছেন৷ তাই আমরা যখন প্রচার করি তখন মানুষকে সন্তষ্ট করতে নয়, বরং ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করতেই চেষ্টা করি, যিনি আমাদের কাজের উদ্দেশ্য পরীক্ষা করেন৷ 5 তোমরা ভাল করে জান য়ে আমরা তোমাদের কাছে তোষামোদজনক কোন বাক্য বলি নি; আর লোভকে ঢেকে রাখবার ছলনা য়ে আমরা করেছি তাও নয়; ঈশ্বরই এবিষয়ে সাক্ষী আছেন৷ 6 আমরা লোকদের কাছ থেকে কোন প্রশংসা পেতে চাই নি৷ তোমাদের বা অন্য কারোর কাছ থেকেও আমরা প্রশংসা পেতে চাই নি৷ 7 আমরা খ্রীষ্টের প্রেরিত, তাই আমরা যখন তোমাদের ওখানে ছিলাম তখন কর্ত্তৃত্ব খাটিয়ে তোমাদের কাছে অনেক বড় কিছু চাইতে পারতাম; কিন্তু আমরা তোমাদের কাছে বিনযী ছিলাম৷ আমরা তোমাদের কাছে সেবিকার মতো ছিলাম য়ে তার শিশুদের যত্ন নেয়৷ 8 তোমাদের ওপর গভীর মায়া মমতা থাকাতে তোমাদের কেবল য়ে ঈশ্বরের সুসমাচারের অংশীদার করতে চেয়েছিলাম তা নয়, আমরা নিজেদের জীবনও তোমাদের জন্য উত্সর্গ করতে চেয়েছিলাম, কারণ তোমরা আমাদের খুব প্রিয় ছিলে৷ 9 প্রিয় ভাই ও বোনেরা, তোমাদের নিশ্চয় মনে আছে য়ে আমরা কতো কঠোর পরিশ্রম করেছি৷ আমরা দিনরাত কাজ করে চলেছিলাম য়েন তোমাদের কাছে ঈশ্বরের সুসমাচার প্রচারের সময় আমরা অর্থের ব্যাপারে তোমাদের কাছে বোঝাস্বরূপ না হই৷ 10 তোমাদের মত বিশ্বাসীদের মধ্যে আমাদের জীবন কত পবিত্র, ন্যায়পরায়ণ ও নির্দোষ ছিল তা তোমরা জান; আর ঈশ্বরও জানেন তা সত্য৷ 11 তোমরা জান, পিতা য়েমন তাঁর সন্তানদের সঙ্গে ব্যবহার করেন, আমরাও তেমনি তোমাদের সঙ্গে ব্যবহার করেছি৷ 12 আমরা তোমাদের উত্সাহ যুগিয়েছি, তোমাদের আশ্বাস দিয়েছি এবং ঈশ্বরের জন্য য়োগ্য জীবনযাপন করতে অনুপ্রাণিত করেছি, য়ে ঈশ্বর তোমাদেরকে তাঁর রাজ্যে ও মহিমায় প্রবেশ করতে আহ্বান করেছেন৷ 13 আমরা সব সময় ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিই, কারণ তোমরা ঈশ্বরের য়ে বার্তা আমাদের কাছ থেকে পেয়েছিলে তা মানুষের বার্তা বলে নয় বরং ঈশ্বরের বাক্য বলে গ্রহণ করেছিলে৷ সেই বাক্য সত্য-সত্যই ঈশ্বরের বাক্য ছিল এবং ঐ বার্তায় যাঁরা বিশ্বাসী তাদের সবার মধ্যে তা কাজ করছে৷ 14 প্রিয় ভাই ও বোনেরা, যিহূদিয়ায় খ্রীষ্ট যীশুতে বিশ্বাসী ঈশ্বরের য়ে সমস্ত মণ্ডলী আছে, তোমাদের অবস্থা তাদেরই মতো৷ যিহূদিয়ার সেই ঈশ্বরের লোকেরা অন্য ইহুদীদের কাছ থেকে য়ে রকম নির্য়াতন ভোগ করেছে, তোমরাও তোমাদের নিজেদের দেশের লোকের কাছ থেকে সেই ধরণের নির্য়াতন ভোগ করেছ৷ 15 ইহুদীরা প্রভু যীশুকে এবং ভাববাদীদের হত্যা করেছিল৷ সেই ইহুদীরা আমাদেরও নির্য়াতন করেছে৷ ঈশ্বর তাদের প্রতি খুশী নন, তারা সবারই বিপক্ষে৷ 16 আমরা অইহুদীদের শিক্ষা দিই য়েন তারা উদ্ধার পেতে পারে; কিন্তু তারা আমাদের অইহুদীদের সত্য শিক্ষা দিতে বারণ করেছে৷ সেই ইহুদীরা পূর্বে য়ে পাপ করেছে, তার ওপর আরও পাপ য়োগ করছে; আর তাই ঈশ্বরের ক্রোধ পরিপূর্ণরূপে এবং চূড়ান্তভাবে তাদের ওপর নেমে এসেছে৷ 17 ভাই ও বোনেরা, যদিও অল্প কিছুদিন হল আমরা তোমাদের থেকে আলাদা হয়েছি তবুও আমাদের মন তোমাদের দিকে পড়েছিল৷ তোমাদের আর একবার দেখার জন্য আমরা খুব উত্সুক ছিলাম৷ তাই তোমাদের কাছে আসার জন্য কঠোরভাবে চেষ্টা করেছি৷ 18 তোমাদের কাছে য়েতে আমরা সত্যিই অনেকবার চেষ্টা করেছি, কিন্তু শয়তান আমাদের বাধা দিল৷ 19 তোমরাই আমাদের প্রত্যাশা, আনন্দ ও গৌরবের মুকুট৷ আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের আগমনের দিনে এই হবে আমাদের গর্ব৷ 20 সত্য সত্য তোমরাই আমাদের মহিমা ও আনন্দ৷
1 Thessalonians 3:1 যখন আমরা আর ধৈর্য্য ধরতে পারলাম না তখন আমরা আথীনীতে একাই থেকে য়েতে মনস্থ করলাম৷ 2 তাই আমরা তীমথিয়কে তোমাদের কাছে পাঠালাম৷ তীমথিয় আমাদের ভাই, খ্রীষ্ট সম্পর্কে সুসমাচার প্রচারে সে আমাদের সাহায্য করে৷ আমরা তাকে পাঠিয়েছিলাম যাতে সে তোমাদের বিশ্বাসকে দৃঢ় করতে ও তোমাদের উত্সাহ দিতে পারে, 3 যাতে তোমাদের য়ে সব শারীরিক ও মানসিক ক্লেশের মধ্য দিয়ে য়েতে হচ্ছে তাতে তোমরা হতাশ না হও৷ তোমরা নিজেরাই জান য়ে এসব শারীরিক ও মানসিক দুঃখকষ্ট আমাদের জীবনে ভোগ করতেই হবে৷ 4 আমরা যখন তোমাদের ওখানে ছিলাম, তখন তোমাদের বলেছিলাম য়ে আমাদের সকলকে দুঃখ কষ্টের মধ্য দিয়ে য়েতে হবে৷ তোমরা জান য়ে আমরা য়েমন বলেছিলাম তেমনিই হয়েছে৷ 5 আর এইজন্য আর ধৈর্য্য ধরতে না পারাতে আমি তীমথিয়কে তোমাদের কাছে পাঠিয়ে জানতে চেয়েছিলাম য়ে তোমরা বিশ্বাসে স্থির আছ কি না৷ আমার মনে ভয় ছিল য়ে শয়তান মানুষকে নানা প্রলোভনে ফেলে, সে তোমাদের পরাজিত করেছে; তা করলে আমাদের সমস্ত পরিশ্রম পণ্ড হয়ে য়েত৷ 6 তীমথিয় তোমাদের কাছ থেকে ফিরে এসে তোমাদের বিশ্বাস ও ভালবাসার শুভ সংবাদ আমাদের দিয়েছে৷ তীমথিয় জানিয়েছে য়ে তোমরা সব সময় আনন্দের সঙ্গে আমাদের মনে রেখেছ এবং আমাদের দেখবার জন্য তোমরা বড়ই ব্যগ্র৷ ঐ একই কথা আমরাও বলতে চাই - তোমাদের দেখবার জন্য আমরাও উত্সুক৷ 7 তাই ভাই ও বোনেরা, তোমরা বিশ্বাসে প্রভুতে স্থির আছ জেনে শত দুর্দশা ও কষ্টের মধ্যেও আমরা সান্ত্বনা পেয়েছি৷ 8 তোমরা প্রভুতে সুস্থির আছ জেনে আমরা হাঁপ ছেড়ে বাঁচলাম৷ 9 তোমাদের জন্য ঈশ্বরের সামনে আমাদের আনন্দের শেষ নেই, তাই আমরা ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই; কিন্তু আমরা য়ে পরিমাণে আনন্দ পাই তার জন্য ঈশ্বরকে যথেষ্ট ধন্যবাদ দিতে পারি না৷ 10 আমরা তোমাদের জন্য দিনরাত খুব প্রার্থনা করে চলেছি৷ আমরা প্রার্থনা করি য়েন আমরা তোমাদের ওখানে য়েতে পারি ও তোমাদের বিশ্বাসকে সুদৃঢ় করার জন্য তোমাদের সব ত্রুটি দূর করতে পারি৷ 11 আমরা প্রার্থনা করছি য়েন আমাদের ঈশ্বর ও পিতা স্বয়ং এবং আমাদের প্রভু যীশু তোমাদের কাছে যাবার জন্য আমাদের পথ সুগম করেন৷ 12 আমরা প্রার্থনা করছি য়েন প্রভু তোমাদের প্রেম বৃদ্ধি করেন৷ য়েন তোমাদের পরস্পরের মধ্যে ভালবাসা উপচে পড়ে এবং আমরা য়েমন তোমাদের ভালবাসি তোমরাও তেমনি সমস্ত লোকদের ভালবাস৷ 13 আমরা প্রার্থনা করছি য়েন তোমাদের হৃদয় সবল হয়৷ তাহলে আমাদের প্রভু যীশু যখন তাঁর পবিত্র দূতদের সঙ্গে নিয়ে ফিরে আসবেন, তখন তোমরা তাঁর সামনে পবিত্র ও নির্দোষ অবস্থায় দাঁড়াতে পারবে৷
1 Thessalonians 4:1 প্রিয় ভাই ও বোনেরা, তোমাদের কাছে আমার আরও কিছু বলার আছে৷ কি করে ঈশ্বরকে সন্তষ্ট করে জীবনযাপন করতে হয়, এ বিষয়ে তোমরা আমাদের কাছে শিক্ষা পেয়েছ; আর সেইভাবেই তোমরা চলেছ৷ বেশ, এখন চাইছি ও তোমাদের উত্সাহ দিয়ে বলছি য়ে তোমরা আরো বেশী করে সেইভাবে চলো৷ 2 তোমরা শুনেছ এবং জান তোমাদের কি করণীয়; প্রভু যীশুর কাছ থেকে অধিকার পেয়ে সেই শিক্ষা তোমাদের দিয়েছিলাম৷ 3 ঈশ্বর চান য়ে তোমরা পবিত্র হও ও সবরকম য়ৌন পাপ থেকে দূরে থাক৷ 4 ঈশ্বর চান তোমরা পুরুষরা প্রত্যেকে জানো কিভাবে পবিত্র ও সম্মানজনকভাবে নিজের স্ত্রীর সাথে বাস করতে হয়৷ 5 বিজাতীয়রা যাঁরা ঈশ্বরকে জানে না তারা য়েভাবে কামনা বাসনা দ্বারা চালিত হয়, সেইভাবে চলো না৷ 6 এই ব্যাপারে কেউ য়েন তার বিশ্বাসী ভাইকে না ঠকায়, কারণ যাঁরা ঐভাবে চলে প্রভু তাদের দণ্ড দেবেন৷ এই বিষয়ে এর আগেই তোমাদের জানিয়েছি ও তোমাদের সাবধান করে দিয়েছি৷ 7 কারণ ঈশ্বর আমাদের অশুচিভাবে চলার জন্য নয় কিন্তু পবিত্র হবার উদ্দেশ্যেই আহ্বান করেছেন৷ 8 তাই, য়ে এই শিক্ষা অনুসারে চলতে অস্বীকার করে সে মানুষকে নয় কিন্তু ঈশ্বরকেই অমান্য করে, য়ে ঈশ্বর আমাদের পবিত্র আত্মা দান করেন৷ 9 খ্রীষ্টেতে তোমাদের য়ে বিশ্বাসী ভাই ও বোনেরা আছে তাদের য়ে ভালবাসায় ভালবাসতে হবে, সে বিষয়ে তোমাদের কাছে লেখার দরকার নেই৷ কারণ পরস্পরকে ভালবাসার শিক্ষা তো তোমরা ঈশ্বরের কাছ থেকেই পেয়েছ৷ 10 বাস্তবিক তোমরা মাকিদনিয়ার সমস্ত ভাই ও বোনেদের ভালবাস৷ প্রিয় ভাই ও বোনেরা, এখন আমরা তোমাদের উত্সাহ দিয়ে বলছি য়ে তোমরা আরো গভীরভাবে পরস্পরকে ভালবাসবে৷ 11 শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন করতে আপ্রাণ চেষ্টা কর৷ এবিষয়ে য়েমন তোমাদের বলেছি তেমনিভাবে নিজের নিজের কাজ যত্ন সহকারে কর, নিজের হাতে কাজ করে যাও৷ 12 এর ফলে মণ্ডলীর বাইরের মানুষ তোমাদের জীবন ধারা দেখে তোমাদের সম্মান করবে এবং কারো ওপর তোমাদের নির্ভর করতে হবে না৷ 13 প্রিয় ভাই ও বোনেরা, যাঁরা মারা গিয়েছে তাদের সম্পর্কে তোমাদের জানাতে চাই৷ যাদের কোন প্রত্যাশা নেই, তাদের মতো তোমরা শোকার্ত হও এ আমরা চাই না৷ 14 আমরা বিশ্বাস করি য়ে যীশু মারা গিয়েছিলেন এবং যীশু বেঁচে উঠেছেন৷ যীশু যখন ফিরে আসবেন তখন য়ে সব খ্রীষ্ট বিশ্বাসীর মৃত্যু হয়েছে, ঈশ্বর খ্রীষ্টের মাধ্যমে তাদেরও উত্থাপিত করে খ্রীষ্টের সঙ্গে ফিরিয়ে আনবেন৷ 15 আমরা যা বলছি তা আমরা প্রভুর কাছ থেকে তাঁর বাণীরূপে জানতে পেরে বলছি৷ আমরা যাঁরা এখন জীবিত আছি তারা প্রভুর আগমনের সময়েও জীবিত থাকব, আর প্রভুর কাছে চলে যাব, কিন্তু কোনভাবেই সেই মৃতদের আগে যাব না৷ 16 কারণ যখন প্রধান স্বর্গদূতের গন্ভীর আদেশ ও ঈশ্বরের তূরীধ্বনি হবে, প্রভু নিজে স্বর্গ থেকে নেমে আসবেন৷ তখন য়ে সব খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদের মৃত্যু হয়েছে তারা প্রথমে জেগে উঠবে৷ 17 তারপর আমরা যাঁরা তখনও পৃথিবীতে জীবিত থাকব, প্রভুর সঙ্গে আকাশে সাক্ষাত্ করতে তাদের সাথে আমাদেরও মেঘের মধ্যে তুলে নেওয়া হবে; আর আমরা প্রভুর সঙ্গে চিরকাল থাকব৷ 18 সুতরাং এইসব কথার দ্বারা তোমরা পরস্পরকে সান্ত্বনা দিও৷
1 Thessalonians 5:1 আমার ভাই ও বোনেরা, বিশেষ কোন কাল ও সময়ের বিষয়ে তোমাদের কিছু লেখার প্রযোজন নেই৷ 2 তোমরা নিজেরাই ভালো করে জানো, রাতে য়েমন চোর চুপিচুপি আসে, তেমনি প্রভুর দিন হঠাত্ আসবে৷ 3 লোকে যখন বলে, ‘আমাদের শান্তি আছে এবং আমরা নিরাপদে আছি;’ ঠিক এমন সময় তাদের ওপর হঠাত্ চরম বিনাশ নেমে আসবে৷ সন্তান প্রসবের আগে য়েমন নারীর হঠাত্ প্রসব বেদনা শুরু হয়, তেমনি হঠাত্ তাদের উপর বিনাশ এসে পড়বে; আর তারা কোনভাবেই পালিয়ে য়েতে পারবে না৷ 4 কিন্তু ভাই ও বোনেরা, তোমরা তো আর অন্ধকারে বাস করছ না য়ে, সেই দিন চোরের মতো তোমাদের ওপর এসে পড়বে৷ 5 তোমরা তো সকলে মঙ্গলালোকের ও দিনের সন্তান৷ আমরা রাতেরও নই, অন্ধকারেরও নই৷ 6 তাই অন্য লোকদের মতো আমাদের হওয়া উচিত নয়৷ আমরা জেগে থাকব ও আত্মসংযম রক্ষা করব৷ 7 কারণ যাঁরা ঘুমোয়, তারা রাতেই ঘুমোয়; যাঁরা মদ্যপায়ী, তারা রাতেই মাতাল হয়৷ 8 কিন্তু আমরা দিনের লোক তাই এস আমরা নিজেদের দমনে রাখি, আমাদের বুকটা য়েন বিশ্বাস ও প্রেমের ঢালে ঢাকা থাকে; আর মাথায় য়েন পরিত্রাণের আশারূপী শিরস্ত্রাণ থাকে৷ 9 কারণ ঈশ্বর আমাদের তাঁর ক্রোধের পাত্ররূপে মনোনীত করেন নি, প্রভু যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে পরিত্রাণ করার জন্যই আমাদের মনোনীত করেছেন৷ 10 যীশু আমাদের জন্য প্রাণ দিলেন য়েন আমরা বেঁচে থাকি বা মৃত অবস্থায় থাকি, আমরা তাঁর সঙ্গেই জীবিত থাকি৷ 11 এইজন্য তোমরা এখন য়েমন করে চলেছ তেমনই পরস্পরকে সান্ত্বনা দাও ও পরস্পরকে গড়ে তোল৷ 12 আমার ভাই ও বোনেরা, আমরা তোমাদের বলছি, যাঁরা তোমাদের মধ্যে পরিশ্রম করে, যাঁরা তোমাদের প্রভুতে পরিচালনা করে, যাঁরা তোমাদের শিক্ষা দেয়, তাদের তোমরা সম্মান করো৷ 13 তাদের কাজের জন্য তাদের সম্মান করো সমস্ত অন্তর দিয়ে তাদের ভালবেসো এবং পরস্পরের মধ্যে শান্তি বজায় রেখো৷ 14 আমার ভাই ও বোনেরা, আমরা তোমাদের অনুরোধ করছি, যাঁরা অলস তাদের সাবধান করে দাও৷ যাঁরা ভয়ে ভীত তাদের সাহস দাও, যাঁরা দুর্বল তাদের সাহায্য কর, আর সকলের প্রতি সহিষ্ণু হও৷ 15 দেখ, য়েন অপকারের প্রতিশোধ নিতে কেউ কারোর অপকার না করে৷ তোমরা পরস্পরের মঙ্গল করতে চেষ্টা কর এবং বাকী সকলের ভাল করতে চেষ্টা কর৷ 16 সব সময় আনন্দ কর৷ 17 অবিরত প্রার্থনা কর৷ 18 সব বিষয়ে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দাও; কারণ তোমরা যাঁরা খ্রীষ্টের সঙ্গে যুক্ত তাদের বিষয়ে এটাই ঈশ্বরের ইচ্ছা৷ 19 পবিত্র আত্মাকে নির্বাণ করো না৷ 20 ভাববাণী অবজ্ঞা করো না৷ 21 সব কিছু পরীক্ষা কর, যা ভাল তা ধরে রাখ৷ 22 সব রকম মন্দ থেকে দূরে থাক৷ 23 শান্তির ঈশ্বর সম্পূর্ণভাবে তোমাদের শুদ্ধ আর পবিত্র রাখুন এবং তোমাদের সম্পূর্ণ সত্ত্বা আত্মা, প্রাণ ও দেহকে প্রভু যীশু খ্রীষ্টের আগমনের দিন পর্যন্ত তিনি নিষ্ক লঙ্ক রাখুন৷ 24 যিনি তোমাদের আহ্বান করেন, তিনি তাঁর প্রতিশ্রুতি অনুসারে তোমাদের জন্য তা করবেন, কারণ তিনি বিশ্বস্ত৷ 25 আমার ভাই ও বোনেরা, আমাদের জন্য প্রার্থনা করো৷ 26 সব ভাইকে পবিত্র চুম্বনের মাধ্যমে আমার শুভেচ্ছা জানিও৷ 27 প্রভুর নামে এই শপথ কর য়ে সমস্ত খ্রীষ্টান ভাইয়ের কাছে এই চিঠি পড়ে শোনানো হবে৷ 28 আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহ তোমাদের সকলের সঙ্গে থাকুক৷
2 Thessalonians 1:1 থিষলনীকীয় মণ্ডলীর উদ্দেশ্যে আমি পৌল, সীল ও তীমথিয় এই চিঠি লিখছি৷ তোমরা আমাদের ঈশ্বর পিতা ও প্রভু যীশু খ্রীষ্টের সঙ্গে যুক্ত৷ 2 পিতা ঈশ্বর ও প্রভু যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহ ও শান্তি তোমাদের সহবর্তী হোক্৷ 3 ভাই ও বোনেরা, তোমাদের জন্য আমরা সব সময় ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিয়ে থাকি আর আমাদের তাই-ই করা উচিত৷ কারণ তোমাদের বিশ্বাস আশ্চর্যজনক ভাবে বৃদ্ধিলাভ করেছে ও পরস্পরের প্রতি তোমাদের য়ে ভালবাসা তা দ্রুত বৃদ্ধিলাভ করছে৷ 4 বিভিন্ন ঈশ্বরের মণ্ডলীতে তোমাদের বিষয়ে আমরা গর্ব প্রকাশ করি; কিভাবে তোমরা বিশ্বাসে বলিষ্ঠ হয়ে উঠেছ ও বিশ্বাসে স্থির আছ এসব কথা আমরা তাদের বলি৷ তোমরা অনেক নির্য়াতন সয়ে যাচ্ছো ও কষ্ট ভোগ করছ, তবুও তোমরা ধৈর্য্যে ও বিশ্বাসে স্থির আছ৷ 5 এইসব বিষয় ঈশ্বরের ন্যায়বিচারের স্পষ্ট প্রমাণ৷ ঈশ্বর চান তোমরা তাঁর রাজ্যের য়োগ্য বলে গন্য হবে; আর সেই জন্যেই তোমরা এত কষ্টভোগ করছ৷ 6 বাস্তবে ঈশ্বরের দৃষ্টিতে এটাই ন্যায়৷ যাঁরা তোমাদের কষ্ট দেয়, তিনি তাদেরও প্রতিফলস্বরূপ কষ্ট দেবেন৷ 7 তোমরা যাঁরা এখন কষ্ট পাচ্ছ, ঈশ্বর আমাদের সঙ্গে তোমাদেরও বিশ্রাম দেবেন৷ যখন যীশু প্রকাশিত হবেন ও পরাক্রমশালী স্বর্গদূতদের সঙ্গে নিয়ে স্বর্গ থেকে নেমে আসবেন, তখন এইসব ঘটবে৷ 8 যাঁরা ঈশ্বরকে জানে না এমন লোকদের শাস্তি দিতে তিনি স্বর্গ থেকে জ্বলন্ত অগ্নিসহ নেমে আসবেন৷ আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের সুসমাচারের নির্দেশ যাঁরা পালন করে না, তিনি তাদেরও শাস্তি দেবেন৷ 9 তারা অনন্তকাল বিনাশরূপ শাস্তি ভোগ করবে৷ তারা প্রভুর সঙ্গে থাকতে পারবে না এবং তাঁর মহাপরাক্রমের মহিমা থেকে তাদের দূরে রাখা হবে৷ 10 সেইদিন যীশু তাঁর পবিত্র লোকদের দ্বারা মহিমান্বিত হতে আসবেন, আর যাঁরা যীশুতে বিশ্বাস করেছে তারা সবাই যীশুতে চমত্কৃত হবে৷ বিশ্বাসী ভাই ও বোনেরা, তোমরাও সেই বিশ্বাসীবর্গের মধ্যে থাকবে, কারণ আমরা য়ে বাণী তোমাদের বলছি তাতে তোমরা বিশ্বাস করেছ৷ 11 আর এই জন্যই আমরা তোমাদের জন্য সর্বদা প্রার্থনা করে চলেছি, য়েন ঈশ্বর য়ে পবিত্র জীবনযাপন করার উদ্দেশ্যে তোমাদের আহ্বান করেছেন তার য়োগ্য বলে বিবেচিত হও৷ আরো প্রার্থনা করি য়েন তাঁর শক্তি দ্বারা তিনি তোমাদের সদিচ্ছায় পূর্ণ সমস্ত বাসনা পূর্ণ করেন ও তোমাদের বিশ্বাস হতে উত্পন্ন প্রত্যেক কাজকে আশীর্বাদ করেন; 12 য়েন আমাদের ঈশ্বর ও প্রভু যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহ অনুসারে আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের নাম তোমাদের মাধ্যমে মহিমান্বিত হয় আর তোমরাও তাতে মহিমান্বিত হও৷ সেই মহিমা আমাদের ঈশ্বর ও প্রভু যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহ থেকে লাভ হয়৷
2 Thessalonians 2:1 আমার ভাই ও বোনেরা, আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের আগমন সম্পর্কে আমি তোমাদের কিছু বলতে চাই৷ আমরা যখন একসঙ্গে তাঁর সাক্ষাতে মিলিত হতে যাব সেই সময়টা সম্পর্কে তোমাদের কিছু জানাতে চাই৷ 2 আমি অনুরোধ করি প্রভুর দিন এসে গেছে শুনে তোমাদের বিবেচনা বোধ হারিও না, বা বিচলিত হযো না৷ কেউ কেউ হয়তো ভাববাণী করে বা বিশেষ বার্তার মাধ্যমে তা বলতে পারে৷ আমাদের কাছ থেকে পাওয়া এ সম্পর্কে কোন চিঠি কেউ পড়তে পারে৷ 3 দেখ কেউ য়েন এ বিষয়ে তোমাদের কোনভাবে প্রতারিত করতে না পারে৷ সেই দিন আসার আগে পৃথিবীতে ঈশ্বরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ দেখা যাবে৷ সেই পাপ পুরুষ ধ্বংস হওয়ায় যার ভাগ্য়ে লেখা আছে, সে প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত সেই দিন আসবে না৷ 4 যা কিছু ঈশ্বর নামে আখ্যাত ও উপাসনার য়োগ্য সে তার বিরোধিতা করবে ও সবার উপরে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবে৷ সেই পাপ পুরুষ এমনকি ঈশ্বরের মন্দিরে গিয়ে সেখানে আসন করে নেবে এবং ঘোষণা করবে য়ে সে ঈশ্বর৷ 5 তোমাদের কি মনে পড়ে না, এমন য়ে ঘটবে তার বিবরণ আমি তোমাদের কাছে থাকার সময় জানিয়েছিলাম! 6 তোমরা জান, কোন শক্তি ঐ পাপ পুরুষকে বাধা দিয়ে রাখছে যাতে সে নিরূপিত সময়ে প্রকাশ পায়৷ 7 আমি এসব বলছি কারণ মন্দতার সেই গোপন শক্তি এখনই জগতে কাজ করে চলেছে৷ কিন্তু একজন রয়েছেন যিনি এই শক্তিকে প্রতিরোধ করে আসছেন, তিনি তা করতেই থাকবেন যতক্ষণ না তা দূর হয়৷ 8 তারপর সেই পাপপুরুষ প্রকাশিত হবে; আর প্রভু তাঁর মুখের তেজোময় নিঃশ্বাস এবং আবির্ভাবের মহিমা দ্বারা সেই পাপ পুরুষকে ধ্বংস করবেন৷ 9 শয়তানের শক্তিতে সেই পাপ পুরুষ আসবে৷ সে মহাপরাক্রমের সাহায্যে নানা ছলনামযী অলৌকিক কাজ, অদ্ভুত লক্ষণ ও চিহ্ন দেখাবে৷ 10 যাঁরা বিনাশপথের যাত্রী তাদের ভ্রান্তিজনক বিষয়ে সে ভোলাবে৷ পরিত্রাণ পাবার জন্য য়ে সত্য রয়েছে তা ভালবাসতে যাঁরা অস্বীকার করছে, তারাই সেই বিনাশপথের যাত্রী৷ 11 তাই ঈশ্বর ওদের মধ্যে এমন এক শক্তি পাঠিয়েছেন, যাতে ওরা ভুল কাজ করে৷ 12 তাই যাঁরা সত্যে বিশ্বাস করল না, ও মন্দ বিষয়ে আনন্দ করল তারা বিচারে দোষী সাব্যস্ত হবে৷ 13 প্রভুর প্রিয় ভাই ও বোনেরা, তোমাদের জন্য আমাদের সর্বদা ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দেওয়া উচিত৷ এইজন্য ঈশ্বর প্রথম থেকেই তোমাদের মনোনীত করেছিলেন যাতে আত্মায় পবিত্র হয়ে এবং সত্যকে বিশ্বাস সহকারে গ্রহণ করার মাধ্যমে তোমরা পরিত্রাণ পাও৷ 14 য়ে সুসমাচার আমরা প্রচার করেছিলাম তার মাধ্যমে ঈশ্বর তোমাদের আহ্বান করেছিলেন, যাতে তোমরা আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের মহিমার সহভাগী হতে পার৷ 15 তাই ভাই ও বোনেরা, শক্ত হয়ে দাঁড়াও, আর আমরা তোমাদের য়ে শিক্ষা দিয়েছি সে বিষয়েও বিশ্বাসে স্থির থাক৷ মৌখিকভাবে ও পত্রের দ্বারা এইসব বিষয়ে আমরা তোমাদের শিক্ষা দিয়েছিলাম৷ 16 আমরা প্রার্থনা করি য়ে স্বয়ং প্রভু যীশু খ্রীষ্ট ও ঈশ্বর পিতা তোমাদের সান্ত্বনাদান করুন ও যা কিছু সত্ কাজ তোমরা কর ও বল তার জন্য শক্তি দান করুন৷ ঈশ্বর আমাদের ভালোবেসেছিলেন এবং তাঁর অনুগ্রহে আমাদের এক আশা ও সান্ত্বনা দিয়েছিলেন, যা চিরকাল বিরাজ করবে৷ 17
2 Thessalonians 3:1 সবশেষে এই কথা বলছি, আমার ভাই ও বোনেরা, আমাদের জন্য প্রার্থনা করো৷ প্রার্থনা করো য়েন প্রভুর শিক্ষা দ্রুত গতিতে বিস্তার লাভ করে, প্রার্থনা করো য়েন লোকে সেই শিক্ষার সম্মান করে, য়েমন সম্মান তোমরা করেছিলে৷ 2 প্রার্থনা করো য়েন আমরা মন্দ ও খারাপ লোকদের হাত থেকে রক্ষা পাই৷ সবাই তো আর প্রভুকে বিশ্বাস করে না৷ 3 কিন্তু প্রভু বিশ্বস্ত, তিনিই তোমাদের শক্তি দেবেন ও মন্দ শক্তির (শয়তানের) হাত থেকে রক্ষা করবেন৷ 4 তোমাদের সম্বন্ধে প্রভুতে আমাদের এই দৃঢ় বিশ্বাস আছে য়ে, আমরা যা যা আদেশ করেছি সেই সমস্ত তোমরা পালন করছ ও আমরা জানি এর পরেও তা করবে৷ 5 আমরা প্রার্থনা করছি য়েন প্রভু তোমাদের হৃদয়কে ঈশ্বরের ভালবাসার পথে ও খ্রীষ্টের ধৈর্য্যের পথে চালনা করেন৷ 6 আমার ভাই ও বোনেরা, আমরা আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের নামে তোমাদের এই আদেশ দিচ্ছি য়ে, কোন ভাই যদি অলসভাবে দিন কাটায় এবং তোমরা আমাদের কাছ থেকে য়ে শিক্ষা পেয়েছ, সেই মত না চলে তবে তার কাছ থেকে দূরে থাক৷ 7 তোমরা নিজেরা জান য়ে আমরা য়েমন চলি, তোমাদের তেমনি চলা উচিত৷ আমরা যখন তোমাদের ওখানে ছিলাম, আমরা অলস ছিলাম না৷ 8 কারো কাছ থেকে খাবার খেলে, আমরা তা মূল্য দিয়েই খেয়েছি৷ আমরা কাজ করতাম য়েন কারো বোঝাস্বরূপ না হই৷ দিনে বা রাতে আমরা পরিশ্রম করেছি৷ 9 তোমাদের কাছ থেকে সাহায্য পাবার অধিকার আমাদের ছিল; কিন্তু আমরা নিজের হাতে কাজ করেছি, য়েন আমরা আমাদের সংস্থান নিজেরা করে নিতে পারি; আর তোমাদের কাছে নিজেদের আদর্শরূপে দেখাতে চেয়েছিলাম যাতে তোমরা আমাদের অনুসরণ করতে পার৷ 10 কারণ আমরা যখন তোমাদের কাছে ছিলাম তখন তোমাদের এই আদেশ দিতাম য়ে, যদি কেউ কাজ করতে না চায়, তবে সে য়েন না খায়৷ 11 তবু আমরা শুনতে পেয়েছি, তোমাদের মধ্যে কেউ কাজ করতে অস্বীকার করছে৷ তারা কিছুই করে না, কিন্তু তারা অন্যদের ব্যাপারে নাক গলায়৷ 12 এইরকম লোকদের আমরা প্রভু যীশু খ্রীষ্টের নামে আদেশ ও উপদেশ দিচ্ছি য়েন শান্তভাবে পরিশ্রম করে নিজেদের অন্ন নিজেরাই য়োগাড় করে৷ প্রভু যীশুর নামে আমরা বিশেষভাবে তাদের বলছি তারা য়েন এইভাবে চলে৷ 13 ভাই ও বোনেরা, সত্ কাজ করতে কখনও ক্লান্ত হযো না৷ 14 যদি কেউ এই চিঠিতে আমরা যা লিখেছি, তা না মানতে চায়, তবে তাকে চিনে রাখো, আর তার কাছ থেকে দূরে থাক, য়েন সে লজ্জা পায়৷ 15 অথচ তার সঙ্গে শত্রুর মত আচরণ করো না, বরং তাকে ভাই বলে চেতনা দাও৷ 16 আমরা প্রার্থনা করি য়ে, শান্তির প্রভু নিজে সব সময় সব অবস্থায় তোমাদের শান্তি দান করুন৷ প্রভু তোমাদের সকলের সাথে থাকুন৷ 17 এই শুভেচ্ছা আমি পৌল নিজে হাতে লিখলাম; প্রত্যেক চিঠিতে এটাই চিহ্ন, আমি এইরকম লিখে থাকি৷ 18 আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহ তোমাদের সকলের সঙ্গে থাকুক৷
1 Timothy 1:1 আমি পৌল, খ্রীষ্ট যীশুর একজন প্রেরিত৷ আমাদের ত্রাণকর্তা ঈশ্বর ও প্রত্যাশাস্থল খ্রীষ্ট যীশুর অনুমতিক্রমে আমি এই পদে নিযুক্ত৷ 2 আমি তীমথিয়ের কাছে এই চিঠি লিখছি; তুমি আমার প্রকৃত পুত্রের মতো কারণ তুমি বিশ্বাসী৷ পিতা ঈশ্বর ও আমাদের প্রভু খ্রীষ্ট যীশু তোমার প্রতি অনুগ্রহ, দয়া ও শান্তি প্রদান করুন৷ 3 আমি চাই তুমি ইফিষে থাকো; মাকিদনিয়া যাবার সময় আমি তোমাকে এই অনুরোধ করেছিলাম৷ ইফিষের কিছু লোক ভ্রান্ত শিক্ষা দিচ্ছে৷ তুমি ইফিষে থেকে সেই লোকদের সাবধান করে দাও, য়েন তারা ভ্রান্ত শিক্ষা না দেয়৷ 4 তাদের বলো তারা য়েন ধর্মীয় উপকথা নিয়ে, বংশের অন্তহীন তালিকা নিয়ে সময় না কাটায়৷ ওসবে তর্কের সৃষ্টি হয়, ঈশ্বরের কাজে ওসব সাহায্য করে না৷ ঈশ্বরের কাজ বিশ্বাসের মাধ্যমে হয়৷ 5 এই আদেশের আসল উদ্দেশ্য হল সেই ভালবাসা জাগিয়ে তোলা৷ সেই ভালবাসার জন্য প্রযোজন শুচি হৃদয়, সত্ বিবেক ও অকপট বিশ্বাস৷ 6 কিছু লোক আছে যাঁরা এসব থেকে দূরে সরে গেছে আর তারা এমন সব কথা বলে যা মূল্যহীন৷ 7 তারা বিধি-ব্যবস্থার শিক্ষক হতেচায়, অথচ তারা য়ে কি বলে তার অর্থ নিজেরাই জানে না৷ এমন কি, য়ে বিষয় আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জোর দিয়ে বলে তারা নিজেরাই সেই বিষয় সম্বন্ধে বোঝে না৷ 8 কিন্তু আমরা জানি য়ে, বিধি-ব্যবস্থা উত্তম, যদি কেউ তা ঠিক মতো ব্যবহার করে৷ 9 আমরা আরো জানি য়ে বিধি-ব্যবস্থা ধার্মিক লোকদের জন্য নয়; কিন্তু যাঁরা ঈশ্বর বিরোধী, বিধি-ব্যবস্থা ভঙ্গকারী, পাপী, অপবিত্র, অধার্মিক, যাঁরা মা-বাবাকে হত্যা করে, যাঁরা খুন করে, 10 যাঁরা য়ৌন পাপে পাপী, সমকামী, যাঁরা দাস বিক্রির ব্যবসা করে, যাঁরা মিথ্যা বলে, যাঁরা মিথ্যা শপথ করে, দোষারোপ করে ও যাঁরা কোন না কোনভাবে ঈশ্বরের সত্য শিক্ষার বিরোধিতা করে, বিধি-ব্যবস্থা তাদের জন্য দেওয়া হয়েছে৷ 11 সেই শিক্ষা পরম ধন্য ঈশ্বরের মহিমাময় সুসমাচারের অংশ যা তিনি আমায় বলতে দিয়েছেন৷ 12 আমি আমাদের প্রভু খ্রীষ্ট যীশুকে ধন্যবাদ জানাই, কারণ তিনি আমাকে বিশ্বস্তমনে করে তাঁর সেবা করার কাজে নিযুক্ত করেছেন৷ 13 অতীতে আমি খ্রীষ্টের নামে নিন্দা করতাম, তাঁকে নির্য়াতন করতাম ও তাঁর প্রতি খারাপ ব্যবহার করতাম৷ কিন্তু ঈশ্বর আমার প্রতি দয়া করলেন, কারণ অবিশ্বাসী অবস্থায় আমি ঐসব কাজ করেছিলাম এবং কি করছিলাম তা জানতাম না৷ 14 কিন্তু আমাদের প্রভুর অনুগ্রহ পরিপূর্ণরূপে আমাকে দেওয়া হল৷ সেই অনুগ্রহের সঙ্গে এল খ্রীষ্ট যীশুতে বিশ্বাস ও ভালবাসা৷ 15 এখন আমি যা বলছি তা সত্য, তা সম্পূর্ণভাবে তোমাদের গ্রহণ করা উচিত৷ খ্রীষ্ট যীশু পাপীদের উদ্ধার করার জন্য জগতে এসেছেন৷ তাদের মধ্যে আমিই তো সবচেয়ে বড় পাপী৷ 16 কিন্তু এই কারণেই আমার প্রতি দয়া করা হয়েছে৷ পাপীদের মধ্যে আমি অগ্রগন্য হলেও খ্রীষ্ট যীশু আমার প্রতি তাঁর পূর্ণ ধৈর্য্য দেখালেন৷ যাঁরা পরে তাঁর ওপর বিশ্বাস করবে ও অনন্ত জীবন পাবে তাদের সামনে আমাকে এক দৃষ্টান্তস্বরূপ রাখলেন৷ 17 যিনি যুগপর্য়ায়ের রাজা, অক্ষয়, অদৃশ্য ও একমাত্র ঈশ্বর; যুগপর্য়ায়ে যুগে যুগে তাঁরই সম্মান ও মহিমা হোক্৷ আমেন৷ 18 তীমথিয়, তুমি আমার পুত্রের মত৷ আমি তোমাকে একটি আদেশ দিচ্ছি৷ অতীতে তোমার সম্পর্কে য়ে ভাববাণী ছিল তার সঙ্গে মিল রেখে এই আদেশ দিচ্ছি৷ এসব কথা আমি তোমাকে জানাচ্ছি য়েন তুমি সেই ভাববাণী অনুসারে চলতে পার ও বিশ্বাসের উত্তম যুদ্ধে প্রাণপণ করতে পার৷ 19 তুমি বিশ্বাস ও সত্ বিবেক রক্ষা করে এই সংগ্রাম চালিয়ে যাও৷ কিছু কিছু লোক তাদের সত্ বিবেক পরিত্যাগ করেছে; আর ফলস্বরূপ তারা তাদের বিশ্বাস ধ্বংস করেছে৷ 20 তাদের মধ্যে হুমিনায় ও আলেকসান্দর রয়েছে, আমি তাদের শয়তানের হাতে তুলে দিয়েছি যাতে তারা উচিত শিক্ষা পায় এবং ঈশ্বর নিন্দা আর কখনও না করে৷
1 Timothy 2:1 আমার প্রথম অনুরোধ এই য়ে তোমরা সকল মানুষের জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা কর৷ সকল মানুষের জন্যই ঈশ্বরের সঙ্গে কথা বল৷ তাদের যা কিছু প্রযোজন তা ঈশ্বরের কাছে চাও ও তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ হও৷ 2 বিশেষ করে রাজাদের ও আধিকারিক সকলের জন্য প্রার্থনা করা উচিত য়েন আমরা নীরবে ও শান্তিতে জীবনযাপন করতে পারি, য়ে জীবন হবে ঈশ্বরভক্তি ও ঈশ্বরের উপাসনায় পূর্ণ৷ 3 এরকম করা ভাল, এতে আমাদের ত্রাণকর্তা সন্তষ্ট হন৷ 4 তাঁর ইচ্ছা এই যেন সমস্ত মানুষ উদ্ধার পায় ও সত্য জানতে পারে৷ 5 কারণ একমাত্র ঈশ্বর আছেন আর ঈশ্বরের ও মানুষের মধ্যে কেবল একমাত্র পথ আছে, যার মাধ্যমে মানুষ ঈশ্বরের কাছে পৌঁছতে পারে৷ সেই পথ যীশু খ্রীষ্ট, যিনি নিজেও একজন মানুষ ছিলেন৷ 6 সমস্ত লোকদের পাপমুক্ত করতে যীশু নিজেকে উত্সর্গ করেছিলেন৷ যীশুর এই কাজ সঠিক সময়ে প্রমাণ করল য়ে ঈশ্বর চান য়েন সব লোক উদ্ধার পায়৷ 7 এই জন্যই অইহুদীদের কাছে আমাকে সুসমাচার প্রচারক ও প্রেরিতরূপে এবং বিশ্বাসের ও সত্যের শিক্ষক হিসাবে মনোনীত করা হল৷ আমি সত্যি বলছি, মিথ্যা বলছি না৷ 8 আমার ইচ্ছা এই য়ে, সমস্ত জায়গায় পুরুষেরা প্রার্থনা করুক৷ যাঁরা প্রার্থনার জন্য ঈশ্বরের দিকে হাত তুলবে তাদের পবিত্র হওয়া চাই৷ তারা মনে ক্রোধ না রেখে ও তর্কাতর্কি না করে প্রার্থনা করুক৷ 9 অনুরূপভাবে আমি চাই নারীরা য়েন ভদ্রভাবে ও যুক্তিযুক্তভাবে উপযুক্ত পোশাক পরে তাদের সজ্জিত করে৷ তারা নিজেদের য়েন শৌখিন খোঁপা করা চুলে বা সোনা মুক্তোর গহনায় বা দামী পোশাকে না সাজায়৷ 10 কিন্তু সত্ কাজের অলঙ্কারে তাদের সেজে থাকা উচিত৷ য়ে নারী নিজেকে ঈশ্বরভক্ত বলে পরিচয় দেয়, তার এইভাবেই সাজা উচিত৷ 11 নারীরা সম্পূর্ণ বশ্যতাপূর্বক নীরবে নতনম্র হয়ে শিক্ষা গ্রহণ করুক৷ 12 আমি কোন নারীকে শিক্ষা দিতে অথবা কোন পুরুষের ওপরে কর্তৃত্ত্ব করতে দিই না; বরং নারী নীরব থাকুক৷ 13 কারণ প্রথমে আদমকে এবং পরে হবাকে সৃষ্টি করা হয়েছিল৷ 14 আদমকে দিয়াবল বোকা বানাতে পারে নি; কিন্তু নারীকেই দিয়াবল সম্পূর্ণভাবে বোকা বানিয়ে পাপে ফেলেছিল৷ 15 তবু যদি আত্মসংযমের সাথে বিশ্বাসে, প্রেমে ও পবিত্রতায় তারা জীবনযাপন করতে থাকে, তবে নারী মাতৃত্বের দাযিত্ব পালন করে উদ্ধার পাবে৷
1 Timothy 3:1 একথা সত্য: যদি কেউ মণ্ডলীর তত্ত্বাবধায়কের কাজে আগ্রহী হন, তবে তিনি এক উত্তম কাজ আশা করেন৷ 2 তত্ত্বাবধায়ককে অতি অবশ্যই সমালোচনার উর্দ্ধে থাকতে হবে৷ তিনি এক স্ত্রীর স্বামী হবেন৷ তাঁকে হতে হবে আত্মসংযমী, ভদ্র, সম্মানীয়, অতিথিসেবক এবং শিক্ষাদানে পারদর্শী মানুষ৷ 3 প্রচুর দ্রাক্ষারস পান করা তাঁর উচিত হবে না৷ তিনি উগ্রপ্রকৃতির মানুষও হবেন না৷ তিনি হবেন ভদ্র ও শান্তিপ্রিয়৷ স্বর্গের প্রতি তাঁর লোভ থাকবে না৷ 4 তাঁকে এমনই মানুষ হতে হবে যিনি নিজের ঘর সংসার সুষ্ঠভাবে চালাতে পারেন, নিজের ছেলেমেয়েদের সুশাসনে রাখতে পারেন যাতে তিনি তাদের ভক্তি শ্রদ্ধা পান৷ 5 কেউ যদি নিজের সংসার চালনা করতে না জানে, তবে সে কেমন করে ঈশ্বরের মণ্ডলীর তত্ত্বাবধান করবে? 6 কোন নবদীক্ষিত শিষ্য য়েন মণ্ডলীর তত্ত্বাবধায়ক না হয়৷ এতো শিগ্গির তাকে এই কাজে নিযুক্ত করা হয়েছে ভেবে সে হয়তো অহঙ্কারী হয়ে উঠবে৷ তখন দিয়াবলের মতো তার পর্বের জন্য তাকে শাস্তি ভোগ করতে হবে; 7 আর বাইরের লোকদের কাছেও তার সুনাম থাকা দরকার, যাতে সে কোনভাবে অপদস্থ না হয় এবং শয়তানের ফাঁদে না পড়ে৷ 8 সেইরকম পরিচারকদের সকলের শ্রদ্ধা পাবার য়োগ্য মানুষ হতে হবে৷ তারা য়েন এক কথার মানুষ হয়, মাত্রা ছাড়িয়ে দ্রাক্ষারস পান না করে, অপরকে ঠকিয়ে ধনী হবার চেষ্টা না করে৷ 9 তারা য়েন নির্মল বিবেক হয় এবং খ্রীষ্টীয় ধর্ম বিশ্বাসের প্রকাশিত গভীর সত্যগুলি নিয়ে আঁকড়ে থাকে৷ 10 প্রথমে তাদের যাচাই করা হোক৷ যদি তাদের মধ্যে নিন্দনীয় কিছু না থাকে, তাহলেই তারা পরিচারকরূপে সেবা করতে পারবে৷ 11 সেইভাবে মণ্ডলীতে মহিলাদেরও সকলের শ্রদ্ধেয়া হতে হবে৷ তাঁরা য়েন অপরের নামে কুত্সা না রটায়, য়েন মিতাচারী ও সব ব্যাপারে নির্ভরয়োগ্য হন৷ 12 মণ্ডলীর পরিচারকদের য়েন একটি মাত্র স্ত্রী থাকে, তারা য়েন ভালভাবে তাদের সন্তানদের পালন করতে ও সংসার পরিচালনা করতে পারে৷ 13 কারণ য়ে পরিচারকরা ভালভাবে কাজ করে, তারা সুনাম অর্জন করে এবং খ্রীষ্ট যীশুতে তাদের বিশ্বাসে সাহসী হয়ে ওঠে৷ 14 যদিও আমি আশা করছি শিগ্গির তোমার কাছে যাব তবু তোমাকে এসব লিখলাম৷ 15 কারণ যদি আমার দেরী হয়, তাহলে য়েন তুমি জানতে পার য়ে ঈশ্বরের পরিবারের মধ্যে কেমন আচার আচরণ করতে হয়, যা জীবন্ত ঈশ্বরের মণ্ডলী - এই মণ্ডলী হল সত্যের স্তন্ভ ও দৃঢ় ভিত৷ 16 একথা কেউই অস্বীকার করতে পারে না য়ে আমাদের ধর্মের নিগূঢ় সত্য অতি মহান:খ্রীষ্ট মনুষ্য দেহে প্রকাশিত হলেন, পবিত্র আত্মার শক্তিতে যথার্থ প্রতিপন্ন হলেন, স্বর্গদূতরা তাঁর দর্শন পেলেন৷ সর্বজাতির মধ্যে তাঁর সুসমাচার প্রচারিত হল, জগতের মানুষ তাঁর প্রতি বিশ্বাসী হয়ে উঠল, পরে স্বমহিমায় তিনি স্বর্গে উন্নীত হলেন৷
1 Timothy 4:1 পবিত্র আত্মা স্পষ্টই বলছেন, শেষের দিকে কিছু লোক বিশ্বাস থেকে সরে পড়বে৷ য়ে মন্দ আত্মা মিথ্যা বলে, তারা সেই মন্দ আত্মাকে আনুগত্য দেখাবে এবং ভূতদের শিক্ষায় মন দেবে৷ 2 যাঁরা মিথ্যা বলে ও লোকদের প্রতারণা করে, এসব ভ্রান্ত শিক্ষা তাদের কাছ থেকেই আসে৷ তারা ভাল ও মন্দের মধ্যে বিচার করতে পারে না৷ 3 এরাই মানুষকে বিবাহ করতে নিষেধ করে ও কোন কোন খাদ্য় খেতে নিষেধ করে৷ কিন্তু সেই খাদ্য় সামগ্রী ঈশ্বর সৃষ্টি করেছেন এবং যাঁরা বিশ্বাসী ও যাঁরা সত্যকে জানে তারা ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিয়ে এই খাবার খেতে পারে৷ 4 বাস্তবিক ঈশ্বরের সৃষ্ট সমস্ত বস্তুই ভাল, ধন্যবাদের সঙ্গে গ্রহণ করলে কিছুই অগ্রাহ্য় নয়৷ 5 কারণ ঈশ্বরের বাক্য অনুসারে ও প্রার্থনা দ্বারা তা শুচিশুদ্ধ হয়৷ 6 এইসব কথা ওখানকার ভাই ও বোনেদের মনে করিয়ে দিলে তুমি খ্রীষ্ট যীশুর উত্তম সেবকরূপে গন্য হবে৷ বিশ্বাসের বাক্য ও উত্তম শিক্ষা অনুসরণ করে তুমি য়ে শক্তিশালী হয়েছ তার প্রমাণ দেখাতে পারবে৷ 7 ঈশ্বরবিহীন অর্থহীন গল্পের সাথে তোমাদের কোন সম্পর্ক রেখো না৷ ঈশ্বরের এক ভক্তিমান সেবক হয়ে নিজেকে শিক্ষিত কর৷ 8 শরীর চর্চায় কিছু উপকার হয় বটে; কিন্তু ঈশ্বরের সেবা সব দিক দিয়েই কল্য়াণ করে, কারণ তা বর্তমান ও ভবিষ্যত্ জীবনে লাভের প্রতিশ্রুতি প্রদান করে৷ 9 যা আমি বলি তা সত্য ও সম্পূর্ণ গ্রহণয়োগ্য৷ 10 এই জন্য আমরা প্রাণপন পরিশ্রম ও সংগ্রাম করছি, কারণ আমরা সেই জীবন্ত ঈশ্বরের ওপর প্রত্যাশা রেখেছি, যিনি সমস্ত মানুষের ত্রাণকর্তা, বিশেষ করে তাদের যাঁরা তাঁর ওপর বিশ্বাস রাখে৷ 11 তুমি এই সব বিষয় পালনের জন্য আদেশ কর ও শিক্ষা দাও৷ 12 তুমি যুবক বলে কেউ য়েন তোমায় তুচ্ছ না করে৷ কিন্তু তোমার কথা, স্বভাব, ভালোবাসা, বিশ্বাস ও পবিত্রতার দ্বারা বিশ্বাসীদের সামনে দৃষ্টান্ত রাখ৷ 13 লোকদের কাছে শাস্ত্র পাঠ করে যাও, তাদের শক্তিশালী কর ও শিক্ষা দাও৷ আমি যতদিন না আসি তুমি এইসব কাজ করবে৷ 14 তোমার মধ্যে য়ে আত্মিক বরদান রয়েছে তা ব্যবহার করতে ভুলো না৷ এক সময় মণ্ডলীর প্রাচীনরা তোমার ওপর হস্তার্পণ করেছিলেন, সেই সময় ভাববাদীর দ্বারা সেই দান তোমাতে অর্পিত হয়েছিল৷ 15 ঐসব কাজ করে যাও৷ ঐ কাজের উদ্দেশ্যে তোমার জীবন উত্সর্গ কর৷ তাতে সব লোক দেখতে পাবে তোমার কাজ কেমন এগোচ্ছে৷ 16 নিজের জীবন ও তুমি যা শিক্ষা দাও সে সম্বন্ধে সাবধান থেকো৷ তোমার ঐ সব দাযিত্ব তুমি পালন করেই চল; কারণ তা করলে তুমি নিজেকে ও যাঁরা তোমার কথা শোনে, তাদেরও উদ্ধার করতে পারবে৷
1 Timothy 5:1 তোমার চেয়ে বযোবৃদ্ধ কাউকে কখনও কঠোরভাবে তিরস্কার করবে না; তাকে পিতার মত মনে করে তার কাছে আবেদন কর৷ তোমার চেয়ে যাঁরা কমবয়সী তাদের সাথে তোমার ভাইয়ের মত ব্যবহার করো৷ 2 বয়স্কা মহিলাদের মায়ের মতো দেখো৷ যুবতীদের সঙ্গে পূর্ণ বিশুদ্ধতার সাথে বোনের মত ব্যবহার করো৷ 3 প্রকৃত বিধবারা যাঁরা সত্যি একাকী ও বঞ্চিত তাদের সম্মান করো; 4 কিন্তু কোন বিধবার যদি ছেলেমেয়ে ও নাতি-নাতনী থাকে তাহলে তারা আগে ঘরের মানুষেরই প্রতি তাদের দাযিত্ব পালন করতে শিখুক৷ তা করলে তারা তাদের পিতামাতা ও পিতামহ, মাতামহের স্নেহের ঋণ শোধ করতে পারবে৷ এই কাজ ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করে৷ 5 প্রকৃত বিধবা য়ে পৃথিবীতে সহায় সম্বলহীনা সে তো ঈশ্বরের ওপর ভরসা রেখে চলে৷ সে তো দিনরাত ঈশ্বরের কাছে সাহায্য লাভের জন্য প্রার্থনা জানায়৷ 6 য়ে বিধবা বিলাস ব্যসনেই দিন কাটায় তার কথা আলাদা, বলতে গেলে সে জীবিত থেকেও মৃত৷ 7 এইসব নির্দেশ তুমি বিশ্বাসীদের মনে করিয়ে দাও, যাতে কারো কোন বদনাম না হয়৷ 8 কোন লোক যদি তার আত্মীয় স্বজন আর বিশেষ করে তার পরিবারের লোকদের ভরণপোষন না করে, তার মানে সে বিশ্বাসীদের পথ থেকে সরে গেছে, সে তো অবিশ্বাসীর চেয়েও অধম৷ 9 বিধবাদের তালিকায় এমন বিধবাদের নাম লেখা চলে যার বয়স কমপক্ষে ষাট বছর এবং যার একটিমাত্র স্বামী ছিল৷ 10 যার নানা সত্ কাজের জন্য সুনাম আছে অর্থাত্ যদি সে ছেলেমেয়েদের মানুষ করে থাকে, যদি বিদেশীদের সেবা করে থাকে, যদি ঈশ্বরের লোকদের পা ধুইয়ে থাকে, যদি কষ্টে লোকদের সাহায্য করে থাকে, যদি সমস্ত সত্ কাজের অনুসরণ করে থাকে৷ 11 কোন তরুণী বিধবার নাম তুমি কিন্তু সেই তালিকায় তুলতে অস্বীকার করো৷ কারণ তাদের দৈহিক বাসনা খ্রীষ্ট ভক্তির চেয়ে প্রবল হয়ে উঠলে তারা আবার বিয়ে করতে চাইবে৷ 12 তা করলে তাদের প্রথম শপথ ভঙ্গের দায়ে তারা নিজেদের ওপর শাস্তি ডেকে আনে৷ 13 এ ছাড়া তারা বাড়ি বাড়ি ঘুরে বেড়িয়ে অলস হতে শেখে, কেবল অলসও নয়, বরং বাচাল এবং অনধিকার চর্চা করতে ও য়ে কথা বলা উচিত নয় সেই কথা বলতে শেখে৷ 14 অতএব আমার ইচ্ছা তারা আমাদের শত্রুদের নিন্দা করবার কোন সুয়োগ না দিয়ে বরং যুবতী বিধবা আবার বিয়ে করুক, সন্তানের মা হোক, ঘর সংসার করুক৷ 15 কারণ কয়েকজন বিধবা তো ইতিমধ্যেই ধর্মের পথ ছেড়ে শয়তানের পথে চলেছে৷ 16 যদি কোন বিশ্বাসী মহিলার পরিবারে বিধবারা থাকে, তবে মণ্ডলীকে বোঝাগ্রস্ত না করে তিনিই তাদের উপকার করুন, তাদের সাহায্য করুন, তার ফলে মণ্ডলী সেই সব বিধবাদের সাহায্য করতে পারবে যাঁরা সত্যি নিরুপায়৷ 17 য়ে সমস্ত প্রাচীনেরা মণ্ডলী পরিচালনা করেন তাঁরা দ্বিগুণ সম্মানের য়োগ্য, বিশেষ করে যাঁরা বাক্য প্রচার ও শিক্ষাদান করেন৷ 18 কারণ শাস্ত্র বলছে, ‘য়ে বলদ শস্য মাড়ে তার মুখ বন্ধ করো না৷’‘আর য়ে কাজ করে সে তো তার পারিশ্রমিক লাভের য়োগ্য৷’ 19 কোন প্রাচীনের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ গ্রাহ্য় করো না, যদি না দুই বা তিনজন সাক্ষী সেই অভিযোগ সমর্থন করে৷ 20 য়ে প্রাচীনরা পাপ করেই চলে তাদের মণ্ডলীতে সকলের সামনে তিরস্কার কর, যাতে অন্যরা চেতনা লাভ করে৷ 21 আমি ঈশ্বরের, খ্রীষ্ট যীশুর মনোনীত স্বর্গদূতদের সামনে তোমাকে এই কাজ করতে দৃঢ় আদেশ দিচ্ছি, কিন্তু সত্য না জেনে তুমি কারো বিচার করো না এবং এটা সকলের ক্ষেত্রে সমানভাবে কর৷ 22 মণ্ডলীর সেবার জন্য কাউকে নিযুক্ত করতে ও তার ওপর হস্তার্পন করতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিও না৷ অপরের পাপের ভাগী হযো না৷ নিজেকে শুদ্ধভাবে রক্ষা কর৷ 23 তীমথিয় শুধু জল খেও না, তার বদলে তুমি একটু দ্রাক্ষারস পান করো, কারণ তা তোমার পেটের জন্যে ভাল হবে ও তোমার বার বার অসুখ হবে না৷ 24 কোন কোন লোকের পাপ সহজেই দেখা যায়, আর তাদের পাপ এই প্রমাণ করে য়ে তাদের বিচার হবে, আবার কোন কোন লোকের পাপ পরে স্পষ্টভাবে দেখা যায়৷ 25 অনুরূপভাবে মানুষের সত্ কাজও সহজে প্রকাশ পায়৷ এমনকি তাদের স্পষ্টভাবে দেখা না গেলেও তাদের চিরদিন ঢেকে রাখা যায় না৷
1 Timothy 6:1 যাঁরা দাস, তারা নিজের নিজের মনিবদের যথায়োগ্য সম্মান করুক৷ তা করলে ঈশ্বরের দান এবং আমাদের শিক্ষার নিন্দা হবে না৷ 2 য়ে সব দাসের মনিব বিশ্বাসী, তারা পরস্পর ভাই৷ তাই বলে দাসেরা সম্মানের দিক দিয়ে মনিব ভাইদের কোনভাবে তুচ্ছ না করুক, এবং সেইসব দাসেরা তাদের মনিবদের আরো ভাল করে সেবা করুক, কারণ যাঁরা উপকার পাচ্ছে তারাও বিশ্বাসী৷তুমি লোকদের এইসব অবশ্য শেখাবে ও সেই অনুসারে কাজ করতে উত্সাহ দেবে৷ 3 কিছু লোক আছে যাঁরা অন্যরকম শিক্ষা দেয়; তারা আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের সত্য শিক্ষার সঙ্গে একমত নয়, এবং য়ে শিক্ষা প্রকৃতপক্ষে ঈশ্বরের সেবার জন্য পথ দেখায় তা তারা গ্রহণ করে না৷ 4 য়ে ব্যক্তির শিক্ষা ভ্রান্ত, সে গর্বে পরিপূর্ণ ও অজ্ঞ৷ সে নিছক কথা নিয়ে রাগ ও তর্কাতর্কি করতে ভালবাসে৷ এটাই তার অসুস্থতা, যার ফলশ্রুতি হল ঈর্ষা, ঝগড়া, পরনিন্দা ও কুসন্দেহ৷ 5 এইসব লোকদের কাছ থেকে শুধু ঝগড়া শোনা যায়, এরা দুর্নীতিগ্রস্ত মনের মানুষ এবং সত্যকে হারিয়েছে৷ তারা মনে করে য়ে ঈশ্বরের সেবা করা ধনী হবার এক উপায়৷ 6 একথা সত্যি য়ে ঈশ্বরের সেবার ফলে মানুষ মহাধনী হতে পারে, যদি তার কাছে যা আছে তাতেই সে সন্তষ্ট থাকে৷ 7 কারণ আমরা জগতে কিছুই সঙ্গে করে নিয়ে আসি নি; আর কোন কিছুই সঙ্গে করে নিয়ে য়েতেও পারি না৷ 8 তাই অন্ন বস্ত্রের সংস্থান পেলে আমরা তাতেই সন্তষ্ট থাকব৷ 9 কিন্তুযাদের ধনী হবার ইচ্ছা, তারা প্রলোভনে এবং ফাঁদে পড়ে নানারকম মূর্খামির কাজে ও ক্ষতিকর বাসনায় পড়ে যা তাদের ধ্বংস ও বিনাশের পথে ঠেলে দেয়৷ 10 কারণ সকল মন্দের মূলে আছে অর্থের প্রতি আসক্তি৷ সেই অর্থের লালসায় কত লোক বিশ্বাস থেকে দূরে সরে গেছে; আর তার ফলে তারা নিজেদের জীবনে অনেক অনেক দুঃখ ব্যথা ডেকে এনেছে৷ 11 কিন্তু তুমি ঈশ্বরের লোক, তাই এই সব থেকে তুমি দূরে থেকো৷ সত্য পথে চলতে চেষ্টা কর, ঈশ্বরের সেবা কর, বিশ্বাস, ভালবাসা, ধৈর্য্য ও নম্রতা এইসবের জন্য চেষ্টা কর৷ 12 বিশ্বাস রক্ষা করার দৌড়ে জয়লাভ করতে প্রাণপন চেষ্টা কর৷ য়ে জীবন চিরায়ত তা পাবার বিষয়ে সুনিশ্চিত হও৷ তুমি সেই জীবন গ্রহণ করার জন্য আহুত৷ 13 অনেক সাক্ষীর সামনে এবং সেই যীশু খ্রীষ্টের সামনে আমি তোমাকে এই আদেশ করছি, পন্তীয় পীলাতের সামনে যীশুও সেই মহান সত্যের পক্ষে নির্ভীক স্বীকারোক্তি দিয়েছিলেন৷ 14 যা তোমাকে আদেশ করা হয়েছে, তা পালন কর, য়েন এখন থেকে প্রভু যীশু পুনরায় না আসা পর্যন্ত অনিন্দনীয় আচরণে তোমার দাযিত্ব পালন করে চল৷ 15 নিরুপিত সময়ে ঈশ্বর এসমস্ত সম্পন্ন করবেন; তিনি সেই পরম ধন্য ঈশ্বর, বিশ্বের একমাত্র শাসনকর্তা যিনি রাজার রাজা ও প্রভুর প্রভু৷ 16 যিনি অমরতার একমাত্র অধিকারী এবং অগম্য জ্যোতির মধ্যে বাস করেন, য়াঁকে কেউ কোন দিন দেখতে পায় নি, পাবেও না৷ সম্মান ও অনন্ত পরাক্রম ও কর্তৃত্ত্ব যুগে যুগে তাঁরই হোক্৷ আমেন৷ 17 যাঁরা এই যুগে ধনী, তাদের এই আদেশ দাও, য়েন তারা গর্ব না করে৷ সেই ধনীদের বলো তারা য়েন অনিশ্চিত সম্পদের ওপর আস্থা না রাখে৷ কিন্তু ঈশ্বরের ওপর নির্ভর করুক, যিনি আমাদের উদার হাতে সব কিছু ভোগ করতে দিয়েছেন৷ ধনীদের বল তারা য়েন সত্ কর্ম করে৷ 18 তারা য়েন সত্ কাজ রূপ ধনে ধনী হয়ে ওঠে, তাদের উদার হতে ও সম্পদ ভাগ করে নিতে প্রস্তুত হতেবল৷ 19 এইকাজের দ্বারা তারা স্বর্গে সম্পদ গড়ে তুলবে; সম্পদের ভিতে গড়ে উঠবে তাদের ভবিষ্যত, তখন তারা প্রকৃত জীবনের অধিকারী হতে পারবে৷ 20 শোন তীমথিয়, তোমার ওপর ঈশ্বর য়ে ভার দিয়েছেন তা সযত্নে রক্ষা কর৷ যা তথাকথিত পাণ্ডিত্য নামে পরিচিত, সেই মূর্খ অসার কথা- বার্তার ও তর্কের মধ্যে য়েও না৷ 21 কেউ কেউ জীবনে ঐ জ্ঞানের দাবি করে৷ ঐসব লোক বিশ্বাস থেকে দূরে সরে গেছে৷ঈশ্বরের অনুগ্রহ তোমাদের ওপর থাকুক৷
2 Timothy 1:1 আমি পৌল, খ্রীষ্ট যীশুর একজন প্রেরিত৷ আমি একজন প্রেরিত কারণ ঈশ্বর তাই চেয়েছিলেন৷ লোকদের কাছে ঈশ্বর আমাকে পাঠালেন যাতে খ্রীষ্ট যীশুতে জীবন লাভের য়ে প্রতিশ্রুতি রয়েছে, সেই কথা আমি তাদের বলি৷ 2 তীমথিয়ের কাছে লিখছি৷ তুমি আমার প্রিয় পুত্রের মত৷ পিতা ঈশ্বর ও আমাদের প্রভু খ্রীষ্ট যীশুর কাছ থেকে তোমাদের ওপর অনুগ্রহ, দযা ও শান্তি বর্তুক৷ 3 দিনে বা রাতে প্রার্থনার সময় আমি তোমাকে স্মরণ করে থাকি৷ প্রার্থনার সময় তোমার জন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই৷ আমার পিতৃপুরুষরা য়াঁর সেবা করতেন তিনি সেই ঈশ্বর৷ শুদ্ধ বিবেকে আমি সর্বদাই তাঁর সেবা করে আসছি৷ 4 তুমি য়ে আমার জন্যে চোখের জল ফেলেছিলে সে কথা আমার মনে আছে৷ আমি তোমাকে দেখতে খুবই আকাঙ্খা করছি যাতে আমার অন্তরটা আনন্দে ভরে ওঠে৷ 5 তোমার আন্তরিক বিশ্বাসের কথাও আমার মনে আছে৷ ঐ ধর্ম বিশ্বাস প্রথমে ছিল তোমার দিদিমা লোযীর ও তোমার মা উনীকীর৷ আমি জানি য়ে সেই একই বিশ্বাস তোমার অন্তরে অটুট রয়েছে৷ 6 সেই জন্য আমি তোমাকে মনে করিয়ে দিচ্ছি য়ে, তোমার মধ্যে ঈশ্বরের দেওয়া বিশেষ দান রয়েছে৷ আমি যখন তোমার ওপর হস্তার্পন করেছিলাম তখন সেই দান ঈশ্বর তোমাকে দিয়েছিলেন৷ এখন আমি চাই য়ে সেই দান তুমি কাজে লাগাও এবং তাকে দিন দিন আরো বাড়তে দাও; য়েমন করে সামান্য অগ্নি শিখা এক প্রলয় অগ্নি সৃষ্টি করে৷ 7 ঈশ্বর আমাদের ভীরুতার আত্মা দেন নি৷ ঈশ্বর আমাদের পরাক্রম, প্রেম ও আত্মসংযমের আত্মা দিয়েছেন৷ 8 তাই আমাদের প্রভু যীশুর কথা লোকদের কাছে বলতে লজ্জা পেও না৷ আমার বিষয়েও লজ্জা বোধ করো না৷ আমি তো প্রভুর জন্য কারাগারে আছি৷ কিন্তু সুসমাচারের জন্য তুমি আমার সঙ্গে দুঃখভোগ কর৷ ঐ কাজ করার জন্য শক্তি ঈশ্বরই আমাদের দেন৷ 9 ঈশ্বর আমাদের পরিত্রাণ করেছেন এবং তাঁর পবিত্র প্রজা করেছেন, আমাদের কাজের কারণে নয়, কিন্তু তাঁর নিজ অনুগ্রহ এবং সংকল্প অনুসারে করেছেন৷ সৃষ্টির বহু পূর্বে ঈশ্বর, খ্রীষ্ট যীশুতে সেই অনুগ্রহ আমাদের দেন; 10 কিন্তু সেই অনুগ্রহ আমাদের ত্রাণকর্তা খ্রীষ্ট যীশু না আসা পর্যন্ত প্রকাশিত হয় নি৷ যীশু এসে সেই মৃত্যুকে শক্তিহীন করলেন ও তাঁর সুসমাচারের মাধ্যমে জীবনের ও অমরতার পথ দেখালেন৷ 11 সেই সুসমাচার প্রচার করার জন্য আমাকে মনোনীত করা হল; আমাকে প্রেরিতরূপে ও সেই সুসমাচারের শিক্ষকরূপে মনোনীত করা হল৷ 12 সেই সুসমাচার প্রচার করি বলে আমি কষ্টভোগ করছি; কিন্তু তাতে আমি লজ্জা বোধ করি না৷ য়াঁকে আমি বিশ্বাস করেছি তাঁকে আমি জানি৷ তিনি যা কিছুর ভার আমার ওপর তুলে দিয়েছেন, তা য়ে তিনি সেই মহাদিনটি পর্যন্ত রক্ষা করতে পারেন এই বিষয়ে আমার কোন সন্দেহ নেই৷ 13 তুমি য়ে সত্য শিক্ষা আমার কাছে পেয়েছ সেই অনুসারে চল৷ খ্রীষ্ট যীশুতে য়ে ভালবাসা ও বিশ্বাস তুমি পেয়েছ তা দৃঢ়ভাবে ধরে থাক৷ ঐসব শিক্ষা তোমার সামনে দৃষ্টান্ত স্বরূপ হয়ে থাকবে, সে অনুসারে তোমাকে শিক্ষা দিতে হবে৷ 14 য়ে মূল্যবান সত্য তোমার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে তা তুমি আমাদের অন্তরে বাসকারী পবিত্র আত্মার সাহায্যে রক্ষা কর৷ 15 তুমি তো জান, এশিয়াতে যাঁরা আছে, তারা সকলে আমায় ছেড়েচলে গেছে, তাদের মধ্যে ফুগিল্ল ও র্হম্মগিনিও আছে৷ 16 প্রভু অনীষিফরের পরিবারকে দয়া করুন, কারণ অনীষিফর বহুবার আমায় সুস্থির হতে সাহায্য করেছিলেন৷ আমি কারাগারে রয়েছি বলে তিনি কোনদিনই লজ্জাবোধ করেন নি, 17 বরং তিনি রোমে এসে আমাকে তন্ন তন্ন করে খুঁজে বের করে আমার সঙ্গে দেখা করেছিলেন৷ 18 প্রভু তাঁকে এই বর দিন য়েন সেই দিন তিনি প্রভুর কাছে দয়া পান; আর ইফিষে তিনি কিভাবে আমায় সাহায্য করেছিলেন, তা তুমি ভাল করেই জান৷
2 Timothy 2:1 তীমথিয় তুমি আমার সন্তানের মতো, খ্রীষ্ট যীশুতে আমাদের য়ে অনুগ্রহ আছে তার দ্বারা তুমি শক্তিমান হয়ে ওঠ৷ 2 তুমি ও অন্যান্য অনেকে আমি য়ে বিষয় শিক্ষা দিয়েছি তা শুনেছ; সেইসব এমন বিশ্বস্ত লোকদের শেখাও যাঁরা অন্য লোকদের শিক্ষা দিতে সক্ষম হবে৷ 3 খ্রীষ্ট যীশুর বিশ্বস্ত সৈনিকের মত আমাদের সাথে কষ্টভোগ কর৷ 4 সৈনিক, যুদ্ধ করার সময় তার সেনাপতিকে সন্তুষ্ট করবার কথা মনে রাখে, জনসাধারণের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকে না৷ 5 আবার কোন ব্যক্তি যদি ক্রীড়া প্রতিয়োগিতায় অংশ গ্রহণ করে, তবে তাকে প্রতিয়োগিতার সমস্ত নিয়ম মেনে চলতে হয় য়েন সে বিজযী হতে পারে৷ 6 য়ে কৃষক কঠোর পরিশ্রম করে, সেই প্রথমে ফসলের ভাগ পায়৷ 7 আমি যা বলি, তা ভেবে দেখ, কারণ এসব বিষয় বুঝতে প্রভু তোমাকে বুদ্ধি দেবেন৷ 8 যীশু খ্রীষ্টের কথা মনে কর, তিনি দাযূদের বংশে জন্মেছিলেন, যীশু মৃত্যুর পর মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত হয়েছিলেন৷ এই তোসেই সুসমাচার যা লোকদের কাছে আমি প্রচার করি৷ 9 সুসমাচার প্রচার করেছি বলে আমি কষ্টভোগ করছি, একজন অপরাধীর মত আমাকে শেকলে বেঁধে বন্দী করে রাখা হয়েছে৷ কিন্তু ঈশ্বরের বার্তাকে শেকল দিয়ে বাঁধা যায় না৷ 10 তাই ধৈর্য্যের সঙ্গে ঈশ্বর যাদের মনোনীত করেছেন তাদের জন্য আমি সব কিছু সহ্য করি, যাতে তারাও খ্রীষ্ট যীশুতে অনন্ত মহিমার সাথে য়ে পরিত্রাণ ও অনন্ত জীবন আছে তা লাভ করে৷ 11 এই কথা বিশ্বাসয়োগ্য:কারণ আমরা যদি তাঁর সঙ্গে মৃত্যুবরণ করে থাকি, তবে তাঁর সঙ্গে জীবিতও থাকব৷ 12 এখন যদি কষ্ট সহ্য করি তবে তাঁর সাথে রাজত্বও করব৷ যদি তাঁকে অস্বীকার করি, তিনিও আমাদের অস্বীকার করবেন৷ 13 আমরা যদি অবিশ্বস্ত হই, তিনি কিন্তু বিশ্বস্ত থাকেন; কারণ তিনি নিজেকে অস্বীকার করতে পারেন না৷ 14 তুমি লোকদের এইসব কথা মনে করিয়ে দিও, ঈশ্বরের সামনে তাদের সতর্ক করে দাও য়েন লোকেরা বাক্য নিয়ে তর্ক বিতর্ক না করে, কারণ তাতে কোন লাভ হয় না, বরং যাঁরা শোনে তাদের সর্বনাশ হয়৷ 15 য়ে কর্মী সঠিকভাবে সত্য শিক্ষাকে ব্যবহার করে এবং নিজের কাজকর্ম সম্বন্ধে লজ্জিত নয় এমন একজন কর্মী হিসেবে ঈশ্বরের অনুমোদন পাবার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা কর৷ 16 কিন্তু বাজে জাগতিক আলোচনা, যার মধ্যে ঈশ্বরের কোন প্রেরণা নেই তার থেকে দূরে থাকো৷ ঐ ধরণের কথাবার্তা মানুষকে ক্রমে ক্রমে ঈশ্বর থেকে দূরে নিয়ে যায়৷ 17 যাঁরা এই ধরণের আলোচনা করে তাদের শিক্ষা কর্কট রোগের মতো ছড়িয়ে পড়ে৷ হুমিনায় ও কিলীত হল এই ধরণের লোক৷ 18 এরা সত্য শিক্ষা থেকে সরে গেছে৷ তারা বলছে, মৃতদের পুনরুত্থান হয়ে গেছে৷ এই দুজন লোক কিছু কিছু লোকের বিশ্বাস নষ্ট করেছে৷ 19 ঈশ্বর তাঁর মণ্ডলীর জন্য য়ে শক্ত ভিত স্থাপন করেছেন তা হেলানো যাবে না, সেই ভিতের ওপর এও লেখা আছে, ‘ঈশ্বর তাঁর মণ্ডলীর জন্য য়ে শক্ত ভিত স্থাপন করেছেন তা হেলানো যাবে না, সেই ভিতের ওপর এও লেখা আছে, ‘ঈশ্বর সেই সব লোকদের জানেন যাঁরা তাঁর’ এবং ‘য়ে কেউ নিজেকে ঈশ্বরের লোক বলে সে মন্দ কাজ হতে অবশ্যই দূরে থাকুক৷’ 20 কিন্তু কোন বড় বাড়িতে কেবল সোনার ও রূপোর বাসন নয়, কাঠের ও মাটির পাত্রও থাকে, তাদের মধ্যে কিছু বাসন থাকে বিশেষ ব্যবহারের জন্য, আবার কিছু বাসন থাকে সাধারণ ব্যবহারের জন্য৷ 21 সুতরাং যদি কেউ নিজেকে এইসব মন্দ বিষয় হতে পরিষ্কার করে তবে সে বিশেষ ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত বাসনই হয়ে উঠবে, সেই ব্যক্তি পবিত্র হয়ে উঠবে আর তার কর্তা তাকে ব্যবহার করতে পারবে৷ সেই ব্যক্তি য়ে কোন সত্ কাজ করবার জন্য প্রস্তুত থাকবে৷ 22 তুমি য়ৌবনের সমস্ত কামনা বাসনা থেকে পালাও এবং যাদের অন্তঃকরণ বিশুদ্ধ, যাঁরা তাদের প্রভুতে ভরসা রাখে, সেই সমস্ত লোকের সাথে বিশ্বাস, ভালবাসা ও শান্তির সাথে সঠিক জীবনযাপনের জন্য আগ্রহী হও৷ 23 কিন্তু মূর্খতাপূর্ণ ও জ্ঞানহীন তর্কের মধ্যে জড়িয়ে পড়ো না, তুমি জান য়ে ঐসব শূন্যগর্ভ তর্কবিতর্ক থেকে লড়াইয়ের সৃষ্টি হয়৷ 24 য়ে মানুষ প্রভুর সেবক তার কোন বিবাদে জড়িয়ে পড়া ঠিক নয়, সে হবে সকলের প্রতি দয়ালু৷ প্রভুর সেবককে একজন উত্তম শিক্ষক হতে হবে, তাকে সহিষ্ণু হতে হবে৷ 25 যাঁরা তার বিরুদ্ধে কথা বলে বিনীতভাবেই তাদের ভুল দেখিয়ে দিতে হবে৷ হয়তো ঈশ্বর তাদের হৃদয়ের পরিবর্তন করবেন যাতে তারা সত্যকে গ্রহণ করতে পারে৷ 26 দিয়াবল ঐ লোকদের ফাঁদে ফেলেছে ও তার ইচ্ছা পালন করার জন্য দাসে পরিণত করেছে৷ কিন্তু এমন হতে পারে য়ে তারা চেতনা পেয়ে জেগে উঠতে ও বুঝতে পারবে য়ে শয়তান তাদের নিয়ে খেলছে আর দিয়াবলের ফাঁদ থেকে তারা নিজেদের মুক্ত করতে পারবে৷
2 Timothy 3:1 একথা মনে রেখো য়ে শেষকালে ভয়ঙ্কর সময় আসছে৷ 2 কারণ লোকে তখন স্বার্থপর, ও অর্থপ্রেমী হয়ে উঠবে৷ তারা গর্ব করবে, সবাইকে তুচ্ছ করবে ও পরনিন্দা করবে৷ লোকে তাদের মা-বাবার অবাধ্য হবে৷ তারা অকৃতজ্ঞ, অধার্মিক হবে; 3 অপর লোকদের জন্য তাদের স্নেহভালবাসা থাকবে না৷ তারা অপরকে ক্ষমা করতে চাইবে না বরং তারা অন্য়ের বিষয়ে নানা মন্দ কথা বলে বেড়াবে৷ লোকেরা আত্মসংযমী হবে না, হবে হিংস্র৷ তারা ভাল কিছু সইতে পারবে না৷ 4 শেষের দিনগুলিতে লোকেরা বিশ্বাসঘাতকতা করবে৷ বিবেচনা না করেই তারা হঠকারীর মতো কিছু করে বসবে৷ তারা আত্মগর্বে স্ফীত হবে৷ ঈশ্বরের চেয়ে বরং তারা ভোগবিলাসকেই ভালবাসবে৷ 5 তারা ধর্মের ঠাট বজায় রাখবে, কিন্তু ঈশ্বরের শক্তি প্রত্যাখ্যান করবে৷ তীমথিয়, এমন লোকদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চল৷ 6 এদের মধ্যে এমন লোক আছে, যাঁরা চালাকি করে লোকের বাড়ি বাড়ি যায় এবং সেখানে তারা এমনসব নির্বোধ স্ত্রীলোকদের উপর প্রভুত্ব করে যাঁরা পাপের দোষে পূর্ণ এবং সব রকমের ইচ্ছা দ্বারা চালিত৷ 7 সেই স্ত্রীলোকেরা সতত নতুন শিক্ষা শিখতে চেষ্টা করে; কিন্তু সেই সত্যকে পুরোপুরি হৃদয়ঙ্গম করতে সক্ষম হয় না৷ 8 আর যাম্নি ও যাম্বির কথা মনে কর, তারা মোশির বিরোধিতা করেছিল৷ সেইভাবে এই লোকেরাও সত্যের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়, এদের মন জঘন্য এবং এরা প্রকৃত বিশ্বাসের অনুসারী হতে পারে নি; 9 কিন্তু এরা তাদের কাজে কৃতকার্য় হতে পারবে না৷ সবাই দেখতে পাবে য়ে তারা কতো নির্বোধ৷ যাম্নি ও যাম্বির বেলায়ও তাই হয়েছিল৷ 10 কিন্তু তুমি আমার সব কথাই জান৷ যা আমি শেখাই, য়েভাবে আমি চলি সবই তুমি জান৷ আমার জীবনের কি লক্ষ্য তাও তুমি জান৷ তুমি আমার বিশ্বাস, ধৈর্য়, ভালোবাসা ও সহিষ্ণুতার কথা জান৷ 11 আমার জীবনে নির্য়াতন ও কষ্টভোগের কথাও তুমি জান৷ আন্তিয়খিয়া, ইকনিয় ও লুস্ত্রায় যখন আমি গিয়েছিলাম, সে সব জায়গায় আমার কি অবস্থা হয়েছিল, কত কষ্টের মধ্যে আমাকে পড়তে হয়েছিল তা তুমি জান; কিন্তু সেই সময় দুঃখ কষ্ট থেকে প্রভু আমাকে উদ্ধার করেছেন৷ 12 খ্রীষ্ট যীশুতে যত লোক ঈশ্বরের ইচ্ছানুসারে চলতে চাইবে তাদের সকলকে নির্যাতিত হতে হবেই৷ 13 কিন্তু দুষ্ট লোকেদের এবং ঠগবাজদের ক্রমশঃই অধঃপতন ঘটবে৷ তারা পরকে ঠকাবে, নিজেরাও ঠকবে৷ 14 কিন্তু তুমি যা শিখেছ তাতেই স্থির থাক, এবং দৃঢ়ভাবে তা বিশ্বাস কর কারণ তুমি জান কাদের কাছ থেকে তুমি সেই শিক্ষা পেয়েছ৷ 15 বাল্যকাল থেকে পবিত্র শাস্ত্রের সঙ্গে তোমার পরিচয় হয়েছে৷ শাস্ত্রগুলিই তোমাকে সেই প্রজ্ঞা দেবে যা খ্রীষ্ট যীশুতে বিশ্বাসের মাধ্যমে পরিত্রাণের পথে নিয়ে যায়৷ 16 সমস্ত শাস্ত্রই ঈশ্বর দিয়েছেন এবং অনুয়োগ, সংশোধন ও ন্যায়পরায়ণ জীবনযাপনের জন্য প্রতিটি বাক্যই সঠিক নির্দেশ দিতে পারে৷ 17 য়েন তার দ্বারা ঈশ্বরের লোক পরিপক্ক ও সমস্ত সত্ কর্মের জন্য সুসজ্জিত হয়৷
2 Timothy 4:1 ঈশ্বরকে ও যীশু খ্রীষ্টকে সামনে রেখে আমি তোমাকে এক আদেশ দিচ্ছি৷ খ্রীষ্ট যীশু, যিনি জীবিত ও মৃতদের বিচার করবেন, তাঁর এক রাজ্য আছে আর তিনি আবার ফিরে আসছেন, তাই আমি তোমাকে এই আদেশ দিচ্ছি; 2 লোকদের কাছে সুসমাচার প্রচার কর৷ ভাল কি মন্দ সব সময়ের জন্য তুমি সর্বদাই প্রস্তুতে থেকো৷ তাদের ভুল কাজ সম্বন্ধে বোধ জাগাও৷ তারা ভুল পথে গেলে তাদের থামতে বলো, সত্ কার্য়ে তাদের উত্সাহিত করো৷ সম্পূর্ণ ধৈর্য্যের সঙ্গে ও উচিত শিক্ষার মাধ্যমে এইসব কাজ কর৷ 3 কারণ এমন সময় আসবে, য়ে সময় লোকেরা সত্য শিক্ষা গ্রহণ করতে চাইবে না; কিন্তু নিজেদের মনোমত কথা শোনার জন্য নিজের নিজের পছন্দ মতো বহু গুরু মরবে৷ 4 লোকেরা সত্য থেকে কান ফিরিয়ে নিয়ে মনগড়া কাহিনীর দিকে মন দেবে৷ 5 কিন্তু তুমি সব সময়ে সংযত থেকো, ধৈর্য়ের সঙ্গে সব কষ্ট সহ্য কর এবং সুসমাচার প্রচার কর৷ ঈশ্বরের সুসমাচার প্রচারক হিসাবে তোমার কর্তব্য পালন করে চল৷ 6 ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে আমার জীবন এর মধ্যেই পেয় অর্য়্ঘের মতো ঢালা হয়েছে৷ আমার যাবার সময় হয়ে এসেছে৷ 7 আমি ভালভাবেই লড়াই করেছি৷ নির্দিষ্ট দৌড় শেষ করেছি৷ অটুট রেখেছি আমার খ্রীষ্ট বিশ্বাস৷ 8 এখন অবধি সঠিক জীবনযাপন করার জন্য আমার জন্য এক বিজয় মুকুট তোলা আছে, সেই ন্যায়পরায়ণ বিচারক প্রভু সেই মহাদিনে আমাকে তা দেবেন৷ হ্যাঁ, সেই মুকুট তিনি আমায় দেবেন৷ কেবল আমাকে নয়, বরং যত লোক তাঁর পুনরাগমণের জন্য ভালোবাসার সাথে অধীরভাবে প্রতীক্ষা করেছে, এ মুকুট তাদের সকলকে দেবেন৷ 9 তুমি যত শিগ্গির পার আমার কাছে চলে এস, 10 কারণ দীমা এই জগতকে ভালবেসে আমাকে ছেড়ে থিষলনীকীতে চলে গিয়েছে৷ ক্রীষ্কেন্ত গালাতীয়ায় আর তীত দাল্মাতিয়াতে গেছে৷ 11 একা লূক কেবল আমার সঙ্গে আছেন৷ তুমি যখন আসবে মার্ককে সঙ্গে করে এস, এখানকার কাজে সে আমায় সাহায্য করতে পারবে৷ 12 তুখিককে আমি ইফিষে পাঠিয়েছি৷ 13 ত্রোয়াতে কার্পের কাছে য়ে শালখানি রেখে এসেছি, তুমি আসার সময় সেটি এবং পুস্তকগুলি, বিশেষ করে চামড়ার ওপর লেখা পুস্তকগুলি সঙ্গে করে এনো; ওগুলি আমার চাই৷ 14 আলেকসান্দর য়ে পিতল ও তামার কাজ করে সে আমার অনেক ক্ষতি করেছে৷ প্রভু তার কাজের সমুচিত প্রতিফল তাকে দেবেন৷ 15 তুমিও সেই লোক থেকে সাবধান থেকো; কারণ আমরা যা কিছু প্রচার করেছি, সে ভীষণভাবে তার বিরোধিতা করেছে৷ 16 আমাকে যখন প্রথমবার বিচারকের সামনে দাঁড় করানো হয়েছিল, তখন আমায় সাহায্য করতে কেউ আমার পাশে ছিল না; সকলে পালিয়ে গেল৷ আমি প্রার্থনা করি তাদের এই অপরাধ য়েন গন্য না হয়৷ 17 কিন্তু প্রভু আমার পাশে দাঁড়ালেন এবং আমাকেশক্তিশালী করলেন, যাতে আমি সেই বার্তা সম্পূর্ণভাবে প্রচার করতে পারি এবং য়েন সমস্ত অইহুদী জনগণ সেই সুসমাচার শুনতে পায়, আর আমি সিংহের মুখ থেকে রক্ষা পেলাম৷ 18 কেউ আমার ক্ষতি করতে চাইলে প্রভু আমাকে রক্ষা করবেন৷ প্রভু তাঁর স্বর্গীয় রাজ্যে আমাকে নিশ্চয়ই নিরাপদে নিয়ে যাবেন৷ যুগে যুগে ঈশ্বরের মহিমা হোক্৷ আমেন৷ 19 প্রিষ্কাকে ও আকিল্লাকে এবং অনীষিফরের পরিবারকে আমার শুভেচ্ছা জানিও৷ 20 ইরাস্ত করিন্থে থেকে গেছেন, এবং এফিম অসুস্থ হয়ে পড়ায় আমি তাকে সিলীতে রেখে এসেছি৷ 21 তুমি শীতকালের আগে অবশ্যই আসার চেষ্টা করো৷ উবুল, পুদেন্ত, লীন, ক্লৌদিয়া ও এখানকার সমস্ত ভাই ও বোনেরা তোমায় শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন৷ 22 প্রভু তোমার আত্মায় বিরাজ করুন৷ ঈশ্বরের অনুগ্রহ তোমার সহবর্তী হোক্৷
Titus 1:1 ঈশ্বরের দাস এবং যীশু খ্রীষ্টের প্রেরিত দূত পৌলের কাছ থেকে ঈশ্বর যাদের মনোনীত করেছেন তাদের খ্রীষ্ট বিশ্বাসের পথে এগিয়ে আনতে ও ঐশ্বরিক সত্য শিক্ষা দিতে আমাকে দূত হিসাবে পাঠানো হয়েছে; আর সেই সত্যই আমাদের জ্ঞাত করে কিভাবে ঈশ্বরের সেবা করতে হয়৷ 2 অনন্ত জীবনের প্রত্যাশা থেকেই আমাদের সেই বিশ্বাস ও জ্ঞান লাভ হয়৷ সময় শুরুর পূর্বেই ঈশ্বর সেই জীবনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আর ঈশ্বর মিথ্যা বলেন না৷ 3 ঠিকসময়ে ঈশ্বর তাঁর বার্তা জগতের কাছে প্রচারের মাধ্যমেই তা প্রকাশ করেছেন৷ ঈশ্বর সেই কাজের ভার আমার হাতে তুলে দিয়েছেন৷ আমাদের ত্রাণকর্তা ঈশ্বরের আদেশ অনুসারে আমি সেই বার্তা প্রচার করেছি৷ 4 এই চিঠি তীতের প্রতি লেখা হয়েছে৷ একই বিশ্বাসের ভাগীদার হওয়ায় তুমি আমার প্রকৃত সন্তান৷ পিতা ঈশ্বর ও আমাদের ত্রাণকর্তা যীশু খ্রীষ্ট তোমায় অনুগ্রহ ও শান্তি দিন৷ 5 আমি তোমাকে ক্রীতী দ্বীপে রেখে এলাম, যাতে বাকি কাজগুলি তুমি শেষ করতে পার, এবং আমার নির্দেশ অনুসারে প্রতিটি শহরের মণ্ডলীতে প্রাচীনদের নিযোগ করতে পার৷ 6 প্রাচীনরূপে গন্য হবে সেই ব্যক্তি, য়ে কোন দোষে দোষী নয়, য়ে কেবল একজন স্ত্রীর স্বামী, যার ছেলেমেয়েরা খ্রীষ্টবিশ্বাসী এবং বেয়াড়া বা অবাধ্য বলে পরিচিত নয়৷ 7 একজন প্রাচীনের কাজ হল ঈশ্বরের কাজে তত্ত্বাবধান করা সুতরাং তাকে নির্দোষ, নম্র, উদারচিত্ত এবং ক্রোধে ধীর হতে হবে, মাতাল মারকুটে ও লোক ঠকিয়ে ধনী হবার চেষ্টা সে করবে না৷ 8 একজন প্রাচীন বরং লোকেদের সাহায্য করার জন্য তার গৃহে তাদের আতিথ্য দিতে প্রস্তুত থাকবে, যা ভাল তাই ভালবাসবে; সে বিচক্ষণ, ন্যায়পরায়ণ, পবিত্র ও জিতেন্দরিয় হবে৷ 9 আমরা য়ে সত্য প্রচার করি তা সে বিশ্বস্তভাবে অনুসরণ করবে; লোকেদের সঠিকভাবে শিক্ষা দিতে পারবে এবং যাঁরা সত্যের বিরোধী তাদের ভুল দেখিয়ে দিতে পারবে৷ 10 কারণ অনেকে আছে যাঁরা অবাধ্য স্বভাবের মানুষ৷ যাঁরা অসার কথাবার্তা বলে বেড়ায় ও অনেককে ভ্রান্ত পথে নিয়ে যায়৷ বিশেষ করে আমি সেই লোকদের কথা বলছি, যাঁরা বলছে য়ে সব অইহুদী খ্রীষ্টীয়ানদের সুন্নত হওয়া চাই৷ 11 একজন প্রাচীন নিশ্চয়ই দেখিয়ে দিতে পারবেন য়ে এইসব লোকেদের চিন্তা ভুল ও তাদের কথাবার্তা অসার, অবশ্যই তাদের মুখ বন্ধ করে দিতে পারবেন, কারণ তারা তাদের য়ে বিষয়ে শিক্ষা দেওয়া উচিত নয় তা শিক্ষা দিয়ে তারা বহু পরিবারের সবাইকে বিপর্য়স্ত করেছে৷ তারা অসত্ উপায়ে অর্থ লাভের জন্য এইরকম করে বেড়ায়৷ 12 তাদেরই একজন ক্রীতীয় ভাববাদী বলছেন, ‘ক্রীতীয়েরা সর্বদাই মিথ্যাবাদী, বন্য জন্তু এবং অলস পেটুক,’ 13 আর একথা সত্যি, এইজন্য তুমি ঐ লোকদের বল য়ে তারা ভুল করছে, তুমি তাদের প্রতি কড়া হও যাতে তাদের বিশ্বাস দৃঢ় হয়, 14 তখন তারা ইহুদীদের মিথ্যা গল্প গ্রহণ করবে না এবং যাঁরা সত্য থেকে সরে গেছে এরকম লোকদের আজ্ঞা মানবে না৷ 15 অন্তরে যাঁরা শুচি তাদের কাছে সব কিছুই শুচি; কিন্তু যাদের অন্তর কলুষিত ও যাঁরা অবিশ্বাসী তাদের কাছে কিছুই শুচি নয়, বাস্তবে তাদের মন ও বিবেক কলুষিত হয়ে পড়েছে৷ 16 তারা স্বীকার করে য়ে ঈশ্বরকে মানে, কিন্তু কাজকর্মে তাঁকে অস্বীকার করে৷ তারা অতিশয় ঘৃন্য, তারা অবাধ্য এবং কোন ভাল কাজ করার ব্যাপারে সম্পূর্ণ অয়োগ্য৷
Titus 2:1 সত্য শিক্ষা অনুসরণের জন্য তুমি অবশ্যই লোকেদের এইসব কাজ করতে বলবে৷ 2 বৃদ্ধদের বল, য়েন তাঁরা আত্মসংযমী, গন্ভীর ও বিজ্ঞ হন৷ তাঁরা য়েন বিশ্বাসে, ভালোবাসায় ধৈর্য়ে দৃঢ় হন৷ 3 সেইভাবে বৃদ্ধদের বল তাঁরা য়েন আচরণে পবিত্র হন৷ তাঁরা য়েন অপরের সম্বন্ধে মিথ্যা অপবাদ রটিয়ে না বেড়ান ও দ্রাক্ষারসপানে আসক্ত না হন৷ কিন্তু তাঁরা য়েন সত্ শিক্ষা দিয়ে বেড়ান৷ 4 এবং যুবতীদের শিক্ষা দেন য়েন তারা তাদের স্বামীদের ও সন্তানদের ভালবাসে৷ 5 তারা য়েন বিচক্ষণ, পরিশুদ্ধ, গৃহকার্য়ে নিষ্ঠাবতী, দয়ামযী ও স্বামীর প্রতি অনুগত হয় তাহলে কেউ ঈশ্বরের বার্তা সম্বন্ধে বিরূপ মন্তব্য করতে পারবে না৷ 6 সেইভাবে যুবকদের বল য়েন তারা সব কিছুতেই আত্মসংযম বজায় রাখে; 7 আর তুমি নিজে সব বিষয়ে তাদের সামনে সত্ কাজের আদর্শ হও৷ তুমি যখন শিক্ষা দেবে তখন সততা ও গাম্ভীর্য়ের সঙ্গে তা দিও৷ 8 যখন কথা বলবে তখন সত্য বলো য়েন যা তুমি বলছ কেউ তার সমালোচনা করতে না পারে৷ এর ফলে তোমার বিপক্ষরা লজ্জায় পড়বে, কারণ তোমার সম্পর্কে সে খারাপ কিছুই বলতে পারবে না৷ 9 দাসদের তুমি এই শিক্ষা দাও; তারা য়েন সবসময় নিজেদের মনিবদের আজ্ঞা পালন করে, তাদের সন্তুষ্ট রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করে, এবং মনিবদের কথার প্রতিবাদ না করে৷ 10 তারা য়েন মনিবদের কিছু চুরি না করে এবং তাদের মনিবদের বিশ্বাসভাজন হয়৷ এইভাবে তাদের সমস্ত, আচরণে প্রকাশ পাবে য়ে আমাদের ত্রাণকর্তা ঈশ্বরের শিক্ষা উত্তম৷ 11 ঐভাবেই আমাদের চলা উচিত কারণ ঈশ্বরের অনুগ্রহ প্রকাশিত হয়েছে৷ সে অনুগ্রহ প্রত্যেক মানুষকে রক্ষা করতে পারে, সেই অনুগ্রহ আমাদের দেওয়া হয়েছে৷ 12 সেই অনুগ্রহ আমাদের শিক্ষা দেয়, য়েন আমরা ঈশ্বরবিহীন জীবনযাপন না করি ও জগতের কামনা বাসনা অগ্রাহ্য় করে এই বর্তমান জগতে আত্মনিয়ন্ত্রিত,ন্যায়পরায়ণ এবং ধার্মিকভাবে জীবনযাপন করি৷ 13 আমাদের মহান ঈশ্বর এবং ত্রাণকর্তা যীশু খ্রীষ্টের মহিমার আবির্ভাবের জন্য যখন অপেক্ষা করছি, তখন য়েন আমরা সবাই এইভাবেই চলি৷ তিনিই আমাদের মহান প্রত্যাশা, যিনি মহিমা নিয়ে আসবেন৷ 14 খ্রীষ্ট আমাদের জন্যে নিজেকে দিলেন, যাতে সমস্ত মন্দ থেকে আমাদের উদ্ধার করতে পারেন, যাতে আমরা সত্ কর্মে আগ্রহী ও পরিশুদ্ধ মানুষ হিসেবে কেবল তাঁর হই৷ 15 এসব কথা বল এবং পূর্ণ কর্তৃত্ত্বের সঙ্গে তাদের উত্সাহিত কর ও তিরস্কার কর৷ কেউ য়েন তোমাকে তুচ্ছ করতে না পারে৷
Titus 3:1 তুমি লোকদের মনে করিয়ে দিও, য়েন তারা দেশের সরকার ও কর্তৃপক্ষের অনুগত হয়৷ তাদের কথামতো চলে য়ে কোন সত্ কাজ করতে য়েন প্রস্তত থাকে৷ 2 বিশ্বাসীদের বল তারা য়েন কারও বিষয়ে মন্দ না বলে, লোকের সঙ্গে ঝগড়া না করে, সমস্ত মানুষের সাথে য়েন অমাযিক ও ভদ্র ব্যবহার করে৷ 3 কারণ একসময়ে আমরাও নির্বোধ ও অবাধ্য ছিলাম৷ অন্য়ের দ্বারা বিপথে চালিত হয়ে নানা রকমের মন্দ ইচ্ছা ও কুত্সিত আনন্দের দাস ছিলাম৷ আমাদের জীবন অশুদ্ধ কামনা ও ঈর্ষায় পূর্ণ ছিল৷ অন্যরা আমাদের ঘৃণা করত আর আমরাও পরস্পরকে ঘৃণা করতাম৷ 4 কিন্তু যখন আমাদের ত্রাণকর্তা ঈশ্বরের দয়া ও মনুষ্যপ্রীতি প্রকাশিত হল, 5 তখন তিনি তাঁর দয়ার গুণে আমাদের রক্ষা করলেন৷ ঈশ্বরের কাছে য়োগ্য বলে বিবেচিত হওয়ার জন্য, ভাল কাজ করেছিলাম বলে নয়৷ তিনি আমাদের পরিষ্কার করে পরিত্রাণপ্রাপ্ত নতুন মানুষ করলেন এবং পবিত্র আত্মার মাধ্যমে আমরা নতুন হলাম৷ 6 সেই পবিত্র আত্মাকে ঈশ্বর আমাদের ত্রাণকর্তা যীশু খ্রীষ্টের দ্বারা আমাদের ওপরে বিপুল পরিমাণে বর্ষণ করলেন৷ 7 তাঁর অনুগ্রহে আমরা ঈশ্বরের সাক্ষাতে ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়েছি এবং ঈশ্বর তাঁর আত্মাকে আমাদের দিয়েছেন য়েন আমরা অনন্ত জীবন পেতে পারি৷ এটাই তো আমাদের প্রত্যাশা৷ 8 আর এই শিক্ষা সত্য৷ আমি চাই য়ে তুমি নিশ্চিতভাবে জানতে পার য়ে লোকেরা এসব বুঝতে পারছে, তাহলে যাঁরা ঈশ্বরে বিশ্বাসী তারা নিজেদের জীবন মঙ্গলকর্মে উত্সর্গ করার জন্য উত্সুক থাকবে৷ এসবই উত্তম বিষয় এতে সবার সাহায্য হবে৷ 9 অর্থহীন বাক্বিতণ্ডা, বংশতালিকা নিয়ে আলোচনা, মোশির বিধি-ব্যবস্থার শিক্ষা নিয়ে ঝগড়া এবং লড়াই করে এমন লোকদের এড়িয়ে চলবে, কারণ এগুলো অপ্রযোজনীয় ও নিরর্থক৷ 10 য়ে ব্যক্তি তর্কবিতর্ক করতে চায় তাকে প্রথম ও দ্বিতীয়বার সাবধান করার পরও যদি সে না শোনে তখন তাকে এড়িয়ে চলবে; 11 কারণ তুমি জেনো, এধরণের লোকরা মন্দ পথে ও পাপে পূর্ণ জীবনযাপন করে৷ তার পাপই প্রমাণ করে য়ে সে ভুল পথে যাচ্ছে৷ 12 আমি তোমার কাছে আর্ত্তিমাকে ও তুখিককে পাঠাবো; আমার সঙ্গে নিকপলিতে দেখা করতে আপ্রাণ চেষ্টা করো, কারণ শীতকালটা আমি ওখানেই কাটাবো ঠিক করেছি৷ 13 আইনজীবি সীনা ও আপল্লো ওখান থেকে রওনা হবেন৷ তাঁদের যাত্রাপথে যতদূর পারো সাহায্য করো৷ ভাল করে দেখো তাঁদের যা কিছু প্রযোজন সবই য়েন তাঁরা পান৷ 14 আমাদের লোকরা য়েন সত্কর্মে উদ্য়োগী হয়, এইভাবে যার যা প্রযোজন তা মেটাতে তাদের সাহায্য করে৷ যদি তারা এটা করে তবে তাদের জীবন নিষ্ফল হবে না৷ 15 আমার সঙ্গীরা সকলে তোমাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন৷ আমাদের বিশ্বাসের দরুন যাঁরা আমাদের ভালবাসেন তাদের শুভেচ্ছা জানিও৷ ঈশ্বরের অনুগ্রহ তোমাদের সকলের সহবর্তী হোক্৷
Philemon 1:1 পৌল, যীশু খ্রীষ্টের বন্দী এবং আমাদের ভাই তীমথিয়, 2 আমাদের প্রিয় বন্ধু ও সহকর্মী ফিলীমন ও বোন আপ্পিয়া এবং আমাদের সহসেনা আর্খিপ্পা; এবং য়ে মণ্ডলী ফিলীমনের ঘরে উপাসনার জন্য সমবেত হন তাদের সকলের উদ্দেশ্যে এই চিঠি লিখছি৷ 3 আমাদের পিতা ঈশ্বর এবং প্রভু যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহ ও শান্তি, তোমাদের সহবর্তী হোক্৷ 4 আমি যখন প্রার্থনার সময় তোমাকে মনে করি, তখন তোমার জন্য সর্বদা আমার ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিই৷ 5 প্রভু যীশুর প্রতি তোমার বিশ্বাস ও ঈশ্বরের সমস্ত পবিত্র লোকের প্রতি তোমার ভালবাসার কথা আমি শুনতে পাই ও ঈশ্বরের কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই৷ 6 আমি প্রার্থনা করি আমরা য়ে বিশ্বাসের অংশীদার তা য়েন তোমাকে খ্রীষ্টের মহত্ গুণগুলি বুঝতে সাহায্য করে৷ 7 ভাই, ঈশ্বরের লোকদের প্রতি তুমি য়ে ভালবাসা দেখিয়েছ তা তাদের নতুন শক্তির য়োগান দিয়েছে, আর এতে আমি গভীর আনন্দ ও শান্তি পেয়েছি৷ 8 তাই আমি খ্রীষ্টের নামে সাহসী হয়ে যা সঠিক তা করার জন্য তোমাকে আদেশ করতে পারি৷ 9 কিন্তু আমি তোমাকে বরং তোমার ভালবাসার জন্য এটা করতে অনুরোধ করবো৷ আমি পৌল, এখন বৃদ্ধ হয়েছি, খ্রীষ্ট যীশুর জন্য আমি বন্দী৷ 10 কারাগারে থাকাকালীন য়ে ওনীসিমাসকে পুত্ররূপে পেয়েছি তার হয়ে তোমাকে আমার অনুরোধ জানাই৷ 11 সে আগে তোমার উপয়োগী ছিল না কিন্তু এখন তোমার ও আমার উভয়েরই উপয়োগী৷ 12 তাকেই আমি তোমার কাছে ফেরত্ পাঠাচ্ছি, তার সঙ্গে য়েন আমার নিজের প্রাণই পাঠাচ্ছি৷ 13 আমি তাকে আমার কাছে রাখতে চেয়েছিলাম যাতে সুসমাচারের জন্য আমি কারাগারে থাকাকালীন সে তোমার হয়ে আমার সেবা করতে পারে৷ 14 তোমার অনুমতি না নিয়ে আমি কিছু করতে চাই নি৷ আমি চাই তুমি য়েন বাধ্য হয়ে নয় বরং নিজের ইচ্ছানুসারেই আমার এই উপকারটুকু করতে পার৷ 15 কারণ হয়তো এই জন্যই ওনীসিমাস কিছু কালের জন্য আলাদা হয়েছিল, য়েন তুমি চিরকালের জন্য তাকে পেতে পার৷ 16 এখন তাকে আর কেবলমাত্র তোমার দাসরূপে নয়, দাসের থেকে শ্রেয়, স্নেহের ভাইয়ের মতো ফিরে পেতে পারো৷ সে আমার প্রিয়, কিন্তু তোমার কাছে প্রভুর ভাই ও মানুষ হিসাবে সে আরো প্রিয় হবে৷ 17 যদি আমাকে তোমার বন্ধু বলে মানো তবে ওনীসিমাস আবার গ্রহণ করো৷ তোমরা আমাকে য়েভাবে অভ্য়র্থনা জানাও ওনীসিমাসকে সেইভাবে অভ্য়র্থনা জানিও৷ 18 ওনীসিমাস যদি তোমার কোন ক্ষতি করে থাকে, বা তোমার কিছু ধারে তবে তা আমার দেনা হিসাবে ধরো৷ 19 আমি পৌল, নিজের হাতে এটা লিখলাম, আমিই শোধ করব৷ তুমি তোমার নিজের জীবনের জন্য য়ে আমার কাছে ঋণী, সে বিষয়ে আমি কিছুই বলব না৷ 20 হ্যাঁ ভাই, তোমার কাছে থেকে আমি প্রভুর প্রতিনিধি হিসাবে কিছু পেতে চাই৷ আমার হৃদয়কে খ্রীষ্টে উত্সাহিত কর৷ 21 তুমি আমার অনুরোধ মানবে এই বিশ্বাসে আমি তোমাকে এই চিঠি লিখছি৷ তাছাড়া আমি জানি য়ে আমি যা বলছি তুমি তার থেকেও বেশী করবে৷ 22 আবার বলি আমার থাকার জন্য ঘরও ঠিক করে রেখো; কারণ আশা করছি, ঈশ্বর তোমাদের প্রার্থনার উত্তর দেবেন এবং শিগ্গির আমি তোমাদের কাছে য়েতে পারব৷ 23 খ্রীষ্ট যীশুতে আমার সহবন্দী ইপাফ্রা তোমাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে৷ 24 মার্ক, আরিষ্টার্খ, দীমা এবং লূক আমার এই সহকর্মীরাও তোমাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে৷ 25 প্রভু যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহ তোমাদের আত্মার সহায় হোক্৷
Hebrews 1:1 অতীতে ঈশ্বর ভাববাদীদের মাধ্যমে বহুবার নানাভাবে আমাদের পিতৃপুরুষদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন৷ 2 এখন এই শেষের দিনগুলোতে ঈশ্বর আমাদের সঙ্গে আবার কথা বললেন৷ ঈশ্বর তাঁর পুত্রের দ্বারাই সমগ্র জগত সৃষ্টি করেছেন৷ তাঁর পুত্রকেই সবকিছুর উত্তরাধিকারী করেছেন৷ 3 একমাত্র ঈশ্বরের পুত্রই ঈশ্বরের মহিমার ও তাঁর প্রকৃতির মূর্ত প্রকাশ৷ ঈশ্বরের পুত্র তাঁর পরাক্রান্ত বাক্যের দ্বারা সবকিছু ধরে রেখেছেন৷ সেই পুত্র মানুষকে সমস্ত পাপ থেকে শুচিশুদ্ধ করেছেন৷ তারপর স্বর্গে ঈশ্বরের মহিমার ডানপাশের আসনে বসেছেন৷ 4 ঈশ্বর তাঁর পুত্রকে এমন এক নাম দিয়েছেন যা স্বর্গদূতদের নাম থেকে শ্রেষ্ঠ; আর স্বর্গদূতদের তুলনায় তিনি হয়ে উঠেছেন আরো মহান৷ 5 কারণ ঈশ্বর ঐ স্বর্গদূতদের মধ্যে কাকে কখন বলেছিলেন,‘তুমি আমার পুত্র; আজ আমি তোমার পিতা হয়েছি৷’গীতসংহিতা 2:7আবার ঈশ্বর কখনই বা স্বর্গদূতদের বলেছেন,‘আমি তার পিতা হব আর সে আমার পুত্র হবে৷’2 শমূয়েল 7:14 6 আবার তাঁর প্রথম পুত্রকে যখন তিনি জগতে নিয়ে এলেন তখন ঈশ্বর বললেন,‘ঈশ্বরের সমস্ত স্বর্গদূতরা তাঁর উপাসনা করুক৷’দ্বিতীয় বিবরণ 32:43 7 স্বর্গদূতদের বিষয়ে ঈশ্বর বলেন:‘আমার স্বর্গদূতদের আমি তৈরী করি বাযুর মতো করে আর আমার সেবকদের আগুনের শিখার মতো করে৷’গীতসংহিতা 104:4 8 কিন্তু তাঁর পুত্রের বিষয়ে ঈশ্বর বলেন:‘হে ঈশ্বর, তোমার সিংহাসন হবে চিরস্থাযী; আর ন্যায় বিচারের মাধ্যমে তুমি তোমার রাজ্য শাসন করবে৷ 9 তুমি ন্যায়কে ভালবাস এবং অন্যায়কে ঘৃণা কর৷ এই কারণে তোমার ঈশ্বর তোমাকে পরম আনন্দ দিয়েছেন; তোমার সঙ্গীদের থেকে তোমায় অধিক পরিমাণে দিয়েছেন৷’ গীতসংহিতা 45:6-7 10 ঈশ্বর একথাও বলেছেন:‘হে প্রভু, আদিতে তুমিই পৃথিবীর ভিত্তিমূল স্থাপন করেছ; স্বর্গ তোমারই হাতের সৃষ্টি৷ 11 সেসব একদিন অদৃশ্য হয়ে যাবে; কিন্তু তুমিই নিত্যস্থাযী৷ সেসব পোশাকের মতো পুরানো হয়ে যাবে৷ 12 তুমি সেসব পোশাকের মতো গুটিয়ে রাখবে; আর পোশাকের মতো সেগুলির পরিবর্তন হবে৷ কিন্তু তোমার কোন পরিবর্তন হবে না, তোমার অনুগ্রহ শেষ হবে না৷’গীতসংহিতা 102:25-27 13 কিন্তু ঈশ্বর স্বর্গদূতদের মধ্যে কাউকে কখনও বলেন নি:‘আমি তোমার শত্রুদের যতক্ষণ না তোমার পদানত করি, তুমি আমার ডানপাশে বস৷’গীতসংহিতা 110:1 14 ঐ স্বর্গদূতরা কি পরিচর্য়াকারী আত্মা নয়? আর যাঁরা পরিত্রাণ লাভ করেছে তাদের পরিচর্য়া করার জন্যই কি এদের পাঠানো হয় নি?
Hebrews 2:1 এই জন্য য়ে বাণী আমরা শুনেছি, তাতে আরো ভালভাবে মন দেওয়া আমাদের উচিত, য়েন আমরা তার প্রকৃত পথ থেকে বিচ্যুত না হই৷ 2 য়ে শিক্ষা স্বর্গদূতদের মুখ দিয়ে ঈশ্বর জানিয়েছিলেন ও যা সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছিল, সেই শিক্ষা যখনই ইহুদীরা অমান্য করে অবাধ্যতা দেখিয়েছে - তাদের শাস্তি হয়েছে, 3 তখন এমন মহত্ এই পরিত্রাণ যা আমাদেরই জন্য এসেছে তা অগ্রাহ্য় করলে আমরা কিভাবে রক্ষা পাব? এই পরিত্রাণের কথা প্রভু স্বয়ং ঘোষণা করেছিলেন; আর যাঁরা তাঁর কাছ থেকে এই বাণী শুনেছিল, তারাই আমাদের কাছে এই পরিত্রাণের সত্যতা প্রমাণ করল৷ 4 ঈশ্বরও নানা সঙ্কেত, আশ্চর্যজনক কাজ, অলৌকিক ঘটনা ও মানুষকে দেওয়া পবিত্র আত্মার নানা বরদানের মাধ্যমে তাঁর ইচ্ছানুয়াযী এবিষয়ে সাক্ষ্য রেখেছেন৷ 5 বাস্তবিক য়ে জগতের বিষয়ে আমরা বলছি, ঈশ্বর সেই ভাবী জগতকে তাঁর স্বর্গদূতদের কর্তৃত্ত্বাধীন রাখেন নি৷ 6 এটা শাস্ত্রের কোন এক জায়গায় লেখা আছে:‘হে ঈশ্বর, মানুষ এমন কি য়ে তার বিষয়ে তুমি চিন্তা কর? অথবা মানবসন্তানই বা কে য়ে তুমি তার কথা ভাব? 7 তুমি তাকে অল্প সময়ের জন্যই স্বর্গদূতদের থেকে নীচুতে রেখেছিলে; কিন্তু তুমি তাকেই পরালে সম্মান ও মহিমার মুকুট৷ 8 আর সব কিছুই তুমি রাখলে তার পদতলে৷’ গীতসংহিতা 8:4-6সবকিছু তার অধীনে করাতে কোন কিছুই তার কর্তৃত্বের বাইরে রইল না, যদিও এখন আমরা অবশ্য সব কিছু তার অধীনে দেখছি না৷ 9 কিন্তু আমরা যীশুকে দেখেছি, য়াঁকে অল্পক্ষণের জন্য স্বর্গদূতদের থেকে নীচে স্থান দেওয়া হয়েছিল৷ সেই যীশুকেই এখন সম্মান আর মহিমার মুকুট পরানো হয়েছে৷ কারণ তিনি মৃত্যু যন্ত্রণা ভোগ করেছেন এবং ঈশ্বরের অনুগ্রহে সকল মানুষের জন্য মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছেন৷ 10 কেবল ঈশ্বরই সেই জন য়াঁর দ্বারা সবকিছু সৃষ্টি হয়েছে এবং সবকিছুই তাঁর মহিমার জন্য, তাই অনেক সন্তানকে তাঁর মহিমার ভাগীদার করতে ঈশ্বর প্রযোজনীয় কাজটিই করলেন৷ তিনি তাদের পরিত্রাণের প্রবর্তক যীশুকে নির্য়াতন ভোগের মাধ্যমে সিদ্ধ ত্রাণকর্তা করেছেন৷ 11 যিনি পবিত্র করেন আর যাঁরা পবিত্র হয়, তারা সকলে এক পরিবারভুক্ত৷ সেই কারণেই তিনি তাদের ভাই বলে ডাকতে লজ্জিত নন৷ 12 যীশু বলেন,‘হে ঈশ্বর, আমি আমার ভাইযর কাছে তোমার নাম প্রচার করব, মণ্ডলীর মধ্যে তোমার প্রশংসা গান করব৷’ গীতসংহিতা 22:22 13 তিনি আবার বলেছেন, ‘আমি ঈশ্বরের ওপর নির্ভর করব৷’যিশাইয় 8:17তিনি আবার এও বলেছেন, ‘দেখ, এই আমি ও আমার সঙ্গে সেই সন্তানদের, ঈশ্বর আমাকে যাদের দিয়েছেন৷’যিশাইয় 8:18 14 ভাল, সেই সন্তানরা যখন রক্তমাংসের মানুষ, তখন যীশু নিজেও তাদের স্বরূপের অংশীদার হলেন৷ যীশু এইরকম করলেন য়েন মৃত্যুর মাধ্যমে মৃত্যুর অধিপতি দিয়াবলকে ধ্বংস করতে পারেন; 15 আর যাঁরা মৃত্যুর ভয়ে যাবজ্জীবন দাসত্বে কাটাচ্ছে তাদের যুক্ত করেন৷ 16 কারণ এটা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছেয়ে তিনি স্বর্গদূতদের সাহায্য করেন না, কেবল অব্রাহামের বংশধরদেরই সাহায্য করেন৷ 17 সেইজন্য সবদিক থেকে যীশুকে নিজের ভাইয়ের মতো হতে হয়েছে যাতে তিনি মানুষের পাপের ক্ষমার জন্য একজন দয়ালু ও বিশ্বস্ত মহাযাজকরূপে ঈশ্বরের সাক্ষাতে দাঁড়াতে পারেন৷ 18 যীশু নিজে পরীক্ষা ও দুঃখভোগের মধ্য দিয়ে গেছেন বলে যাঁরা পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তাদের যীশু সাহায্য করতে পারেন৷
Hebrews 3:1 তাই তোমরা সকলে যীশুর বিষয়ে চিন্তা কর৷ ঈশ্বর যীশুকে আমাদের কাছে পাঠিয়েছেন৷ তিনি আমাদের ধর্ম বিশ্বাসের মহাযাজক৷ আমার পবিত্র ভাই ও বোনেরা, আমি তোমাদের বলছি তোমরা এক স্বর্গীয় আহ্বান পেয়েছ৷ 2 ঈশ্বর যীশুকে আমাদের কাছে পাঠালেন আর তাঁকে তিনি আমাদের মহাযাজক করলেন৷ মোশির মতন যীশুও ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বস্ত ছিলেন৷ যীশুর কাছে ঈশ্বর যা কিছু চেয়েছিলেন, ঈশ্বরের সেই গৃহরূপ মণ্ডলীতে তিনি সে সবই করলেন৷ 3 কেউ যখন কোন গৃহ নির্মাণ করে তখন গৃহ থেকে গৃহনির্মাতার মর্য়াদা অধিক হয়, যীশুর বেলায়ও ঠিক তাই হয়েছে, সুতরাং মোশির থেকে অধিক সম্মান যীশুরই প্রাপ্য়৷ 4 প্রত্যেক গৃহ কেউ না কেউ নির্মাণ করে, কিন্তু ঈশ্বর সবকিছু নির্মাণ করেছেন৷ 5 মোশি ঈশ্বরের গৃহে সেবকরূপে বিশ্বস্তভাবে কাজ করেছিলেন আর ঈশ্বর ভবিষ্যতে যা বলবেন তা লোকদের কাছে মোশিই বললেন৷ 6 কিন্তু খ্রীষ্ট পুত্র হিসাবে ঈশ্বরের গৃহের কর্তা; আমরা বিশ্বাসীরাই তাঁর গৃহ, আর তাই থাকব যদি আমরা আমাদের সেই মহান প্রত্যাশা সম্পর্কে সাহস ও গর্ব নিয়ে চলি৷ 7 তাই পবিত্র আত্মা য়েমন বলছেন:‘আজ, তোমরা যদি ঈশ্বরের রব শোন, 8 অতীত দিনের মতো হৃদয় কঠিন করো না, য়ে দিন তোমরা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলে; সেদিন তোমরা প্রান্তরে ঈশ্বরের পরীক্ষা করেছিলে৷ 9 সেই প্রান্তরে তোমাদের পিতৃপুরুষরা চল্লিশ বছর ধরে আমার সমস্ত কীর্তি দেখতে পেয়েছিল, তবু তারা আমার ধৈর্য্য পরীক্ষা করল৷ 10 তাই আমি এই জাতির ওপর ক্রুদ্ধ হলাম ও বললাম, ‘এরা সব সময় ভুল চিন্তা করে, এই লোকেরা কখনও আমার পথ বুঝল না৷’ 11 তখন আমি ক্রুদ্ধ হয়ে এই শপথ করলাম:‘তারা কখনই আমার বিশ্রাম স্থানে প্রবেশ করতে পারবে না৷’ গীতসংহিতা 95:7-11 12 আমার ভাই ও বোনেরা, দেখো, তোমরা সতর্ক থেকো, তোমাদের মধ্যে কারো য়েন দুষ্ট ও অবিশ্বাসী হৃদয় না থাকে যা জীবন্ত ঈশ্বর থেকে তোমাদের দূরে সরিয়ে নিয়ে যায়৷ 13 তোমরা দিনের পর দিন একে অপরকে উত্সাহিত কর যতক্ষণ সময় ‘আজ’ আছে৷ পাপের ছলনা য়েন তোমাদের হৃদয়কে নির্মম না করে৷ 14 শুরুতে আমাদের য়ে বিশ্বাস ছিল যদি শেষ পর্যন্ত আমরা সেই বিশ্বাসে স্থির থাকি তাহলে আমরা সকলেই খ্রীষ্টের সহভাগী৷ 15 শাস্ত্র তো এই কথা বলে:‘আজ যদি তোমরা ঈশ্বরের রব শোন, তাহলে তোমাদের অন্তর কঠোর করো না, য়েমন সেই বিদ্রোহের দিনে করেছিলে৷’গীতসংহিতা 95:7-8 16 যাঁরা ঈশ্বরের রব শোনার পরও তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল, প্রশ্ন হল তারা কারা? মোশি যাদের মিশর থেকে বের করে নিয়ে এসেছিলেন তারাই কি নয়? 17 আর কাদের ওপরই বা ঈশ্বর চল্লিশ বছর ধরে ক্রুদ্ধ ছিলেন? সেই লোকদের ওপরে নয় কি যাঁরা পাপ করেছিল ও তার ফলে প্রান্তরে মারা পড়েছিল? 18 তিনি কাদের বিরুদ্ধেই বা শপথ করে বলেছিলেন, ‘এরা আমার বিশ্রামের স্থানে প্রবেশ করতে পারবে না?’ যাঁরা অবাধ্য হয়েছিল তাদের বিরুদ্ধে কি নয়? 19 তাহলে এখন আমরা দেখলাম য়ে, অবিশ্বাসের দরুনই তারা ঈশ্বরের বিশ্রামের স্থানে প্রবেশ করতে পারল না৷
Hebrews 4:1 ঈশ্বর সেই লোকদের য়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা এখনও আমাদের জন্য রয়েছে৷ এই সেই প্রতিশ্রুতি য়ে, আমরা প্রবেশ করতে পারব ও ঈশ্বরের বিশ্রাম পাব৷ তাই আমাদের খুব সতর্ক থাকা দরকার, য়েন তোমাদের মধ্যে কেউ ব্যর্থ না হও৷ 2 পরিত্রাণ লাভের জন্য সুসমাচার য়েমন ওদের কাছে প্রচার করা হয়েছিল তেমনি আমাদের কাছেও প্রচার করা হয়েছে, তবু সেই সুসমাচার শিক্ষা শুনেও তাদের কোন শুভ ফল দেখা গেল না, কারণ তারা তা শুনে বিশ্বাসের সঙ্গে গ্রহণ করে নি৷ 3 আমরা যাঁরা বিশ্বাস করেছি, তারাই সেই বিশ্রামের স্থানে প্রবেশ করতে সক্ষম৷ ঈশ্বর য়েমন বলেছিলেন,‘আমি ক্রুদ্ধ হয়ে শপথ করেছি: ‘এরা কখনও আমার বিশ্রামস্থলে প্রবেশ করতে পারবে না৷’’গীতসংহিতা 95:11একথা ঈশ্বর বলেছেন যদিও ঈশ্বরের সমস্ত কাজ জগত্ সৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গেই সমাপ্ত হয়েছিল৷ 4 শাস্ত্রের কোন কোন জায়গায় ঈশ্বর সপ্তাহের সপ্তম দিনের বিষয়ে বলেছিলেন: ‘সৃষ্টির সমস্ত কাজ শেষ করে সপ্তম দিনে তিনি বিশ্রাম করলেন৷’ 5 আবার শাস্ত্রের অন্য একস্থানে ঈশ্বর বলছেন: ‘আমার বিশ্রামে ঐ মানুষদের কখনই প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না৷’ 6 তবুও একথা এখনও সত্য য়ে কেউ সেই বিশ্রামে প্রবেশ করবে, কিন্তু সেই লোকেরা যাঁরা প্রথমে সুসমাচারের কথা শুনেছিল, অবাধ্য হওয়ার কারণে সেখানে প্রবেশ করে নি৷ 7 তখন ঈশ্বর আবার একটি দিন স্থির করলেন, আর সেই দিনের বিষয়ে তিনি বললেন, ‘আজ’৷ ঈশ্বর এর বহুদিন পর রাজা দাযূদের মাধ্যমে এই দিনটির বিষয়ে বলেছিলেন৷ য়েমন এ বিষয়ে আগেই শাস্ত্রের কথা উল্লেখ করা হয়েছে:‘আজ যদি তোমরা ঈশ্বরের রব শোন, তবে অতীত দিনের মতো তোমাদের হৃদয় কঠোর করো না৷’গীতসংহিতা 95:7-8 8 যিহোশূয় তাদের ঈশ্বরের প্রতিশ্রুত বিশ্রামের মধ্যে নিয়ে য়েতে পারেন নি৷ এবিষয়ে আমরা জানি কারণ ঈশ্বর এরপর আবার বিশ্রামের জন্য আর এক দিনের ‘আজ’ কথা উল্লেখ করেছেন৷ 9 এতে বোঝা যায় য়ে ঈশ্বরের লোকদের জন্য সেই সপ্তম দিনে য়ে বিশ্রাম তা আসছে, 10 কারণ ঈশ্বর তাঁর কাজ শেষ করার পর বিশ্রাম করেছিলেন৷ তেমনি য়ে কেউ ঈশ্বরের বিশ্রামে প্রবেশ করে সেও ঈশ্বরের মত তার কাজ শেষ পর্যন্ত সম্পন্ন করে৷ 11 তাই এস, আমরাও ঈশ্বরের সেই বিশ্রামে প্রবেশ করতে প্রাণপণ চেষ্টা করি, যাতে কেউ অবাধ্যতার পুরানো দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে পতিত না হই৷ 12 ঈশ্বরের বাক্য জীবন্ত ও সক্রিয়৷ তাঁর বাক্য দুপাশে ধারযুক্ত তলোয়ারের ধারের থেকেও তীক্ষ্ন৷ এটা প্রাণ ও আত্মার গভীর সংয়োগস্থল এবং সন্ধি ও অস্থির কেন্দ্র ভেদ করে মনের চিন্তা ও ভাবনার বিচার করে৷ 13 ঈশ্বরের সামনে কোন সৃষ্ট বস্তুই তাঁর অগোচরে থাকতে পারে না, তিনি সব কিছু পরিষ্কারভাবে দেখতে পান৷ তাঁর সাক্ষাতে সমস্ত কিছুই খোলা ও প্রকাশিত রয়েছে, আর তাঁরই কাছে একদিন সব কাজকর্মের হিসেব দিতে হবে৷ 14 আমাদের এক মহাযাজক আছেন, যিনি স্বর্গে ঈশ্বরের সাথে বাস করতে গেছেন৷ তিনি যীশু, ঈশ্বরের পুত্র৷ তাই এসো আমরা বিশ্বাসে অবিচল থাকি৷ 15 আমাদের মহাযাজক যীশু আমাদের দুর্বলতার কথা জানেন৷ যীশু এই পৃথিবীতে সবরকমভাবে প্রলোভিত হয়েছিলেন৷ আমরা য়েভাবে পরীক্ষিত হই যীশু সেইভাবেই পরীক্ষিত হয়েছিলেন, কিন্তু তিনি কখনও পাপ করেন নি৷ 16 সেইজন্যে বিশ্বাসে ভর করে করুণা সিংহাসনের সামনে এসো, যাতে আমাদের প্রযোজনে আমরা দয়া ও অনুগ্রহ পেতে পারি৷
Hebrews 5:1 প্রত্যেক ইহুদী মহাযাজককে মানুষের ভেতর থেকে মনোনীত করা হয়৷ ঈশ্বর বিষয়ে লোকদের যা করণীয় সেই কাজে সাহায্য করার জন্য যাজককে নিযোগ করা হয়৷ সেই যাজক লোকদের পাপের প্রায়শ্চিত্তের জন্য ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে উপহার ও বলি উত্সর্গ করেন৷ 2 অন্যান্য লোকদের মতো মহাযাজকও দুর্বল৷ তিনি অপর মানুষের অজ্ঞতা ও বিচ্য়ুতি থাকলেও তাদের সঙ্গে নরম ব্যবহার করতে সমর্থ য়েহেতু তিনিও অন্যান্য লোকদের মতো নিজের দুর্বলতার দ্বারা বেষ্টিত৷ 3 মহাযাজক মানুষের পাপের জন্য য়ে বলি উত্সর্গ করেন তার সাথে নিজে দুর্বল বলে নিজের পাপের জন্যও তাকে বলি উত্সর্গ করতে হয়৷ 4 মহাযাজক হওয়া সম্মানের বিষয়, আর কেউই নিজের ইচ্ছানুসারে এই মহাযাজকের সম্মানজনক পদ নিতে পারে না৷ হারোণকে য়েমন এই কাজের জন্য ঈশ্বর ডেকেছিলেন, তেমনি প্রত্যেক মহাযাজককে ঈশ্বরই ডাকেন৷ 5 কথাটা খ্রীষ্টের বেলায়ও প্রয়োজ্য৷ খ্রীষ্ট মহাযাজক হয়ে গৌরব দেবার জন্য নিজেকে মনোনীত করেন নি৷ কিন্তু ঈশ্বরই খ্রীষ্টকে মনোনীত করেছেন৷ ঈশ্বর খ্রীষ্টকে বলেছিলেন,‘তুমি আমার পুত্র, আজ আমি তোমার পিতা হলাম৷’ গীতসংহিতা 2:7 6 আর অন্য গীতে ঈশ্বর বললেন, ‘তুমি মল্কীষেদকেরমতো চিরকালের জন্য মহাযাজক হলে৷’গীতসংহিতা 110:4 7 খ্রীষ্ট যখন এ জগতে ছিলেন তখন সাহায্যের জন্য তিনি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছিলেন৷ ঈশ্বরই তাঁকে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করতে সমর্থ আর যীশু ঈশ্বরের নিকট প্রবল আর্তনাদ ও অশ্রুজলের সঙ্গে প্রার্থনা করেছিলেন৷ ঈশ্বরের ইচ্ছার প্রতি তাঁর নম্রতা ও বাধ্যতার জন্য ঈশ্বর যীশুর প্রার্থনার উত্তর দিয়েছিলেন৷ 8 যীশু ঈশ্বরের পুত্র হওয়া সত্ত্বেও দুঃখভোগ করেছিলেন ও দুঃখভোগের মধ্য দিয়ে বাধ্যতা শিখেছিলেন৷ 9 এইভাবে যীশু মহাযাজকরূপে পূর্ণতা লাভ করলেন; আর তাই তাঁর বাধ্য সকলের জন্য তিনি হলেন চিরকালের পরিত্রাণের পথ৷ 10 ঈশ্বর এইজন্যে তাঁকে মল্কীষেদকের মত মহাযাজক বলে ঘোষণা করলেন৷ 11 এই বিষয়ে আমাদের অনেক কিছু বলার আছে; কিন্তু তোমাদের কাছে তার অর্থ ব্যাখ্যা করা কঠিন, কারণ তোমরা তা বুঝতে চেষ্টা করো না৷ 12 এতদিনে তোমাদের শিক্ষক হওয়া উচিত ছিল; কিন্তু এটা বোধ হয় প্রযোজনীয় য়ে তোমাদের ঈশ্বরের বাণীর প্রাথমিক বিষয়গুলি কেউ শেখায়৷ কোন শক্ত খাবার নয়, তোমাদের প্রযোজন দুধের৷ 13 যার দুধের প্রযোজন সে তো শিশু৷ সেই ব্যক্তির ধার্মিকতার বিষয়ে য়ে শিক্ষা আছে সে সম্পর্কে কোন অভিজ্ঞতা নেই৷ 14 কিন্তু শক্ত খাবার তাদেরই জন্য যাঁরা শিশুর মতো আচরণ করে না এবং আত্মায় পরিপক্ক৷ নিজেদের শিক্ষা দিয়ে ও তা অভ্য়াস করে তারা ভাল মন্দের বিচার করতে শিখেছে৷
Hebrews 6:1 এই জন্য খ্রীষ্টের বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা আমাদের শেষ করে ফেলা উচিত৷ যা নিয়ে আমরা শুরু করেছিলাম পুনরায় সেই পুরানো শিক্ষামালার দিকে আর আমাদের ফিরে যাওয়া ঠিক নয়৷ মন্দ বিষয় থেকে সরে আসা, ঈশ্বরে বিশ্বাস করা এইসব করে আমরা খ্রীষ্টেতে জীবন শুরু করেছিলাম৷ 2 সেই সময় বিভিন্ন রকম বাপ্তিস্ম ও হস্তার্পণের বিষয়ে আমাদের শিক্ষা দেওয়া হয়েছিল৷ মৃতদের পুনরুত্থানের বিষয়ে শিক্ষা ও অনন্ত বিচার সম্বন্ধেও শিক্ষা দেওয়া হয়েছিল; কিন্তু এখন আমাদের আরো এগিয়ে যাওয়া ও উন্নত শিক্ষা গ্রহণ করা দরকার৷ 3 ঈশ্বর যদি চান তবে আমরা এই কাজ করব৷ 4 যাঁরা একবার অন্তরে সত্যের আলো পেয়েছে, স্বর্গীয় দানের আস্বাদ পেয়েছে ও পবিত্র আত্মার অংশীদার হয়েছে আর ঈশ্বরের বাক্যের মধ্যে য়ে মঙ্গল নিহিত আছে তার অভিজ্ঞতা লাভ করেছে ও ঈশ্বরের নতুন জগতের পরাক্রমের কথা জানতে পেরেছে অথচ তারপর খ্রীষ্ট থেকে দূরে সরে গেছে, এমন লোকেদের মন পরিবর্তন করে খ্রীষ্টের পথে তাদের ফিরিয়ে আনা আর সন্ভব নয়৷ কারণ তারা ঈশ্বরের পুত্রকে অগ্রাহ্য় করে তাঁকে আবার ক্রুশে দিচ্ছে ও সকলের সামনে তাঁকে উপহাসের পাত্র করছে৷ 5 6 7 য়ে জমি বারবার বৃষ্টি শুষে নেয় ও যাঁরা তা চাষ করে তাদের জন্য ভাল ফসল উত্পন্ন করে, সে জমি য়ে ঈশ্বরের আশীর্বাদে ধন্য তা বোঝা যায়৷ 8 কিন্তু যদি সেই জমি শেয়ালকাঁটা ও কাঁটাঝোপে ভরে যায় তবে তা অর্কম্মন্য জমি, তার ঈশ্বরের অভিশাপে অভিশপ্ত হবার ভয় আছে এবং তা আগুনে পুড়ে ছারখার হয়ে যাবে৷ 9 আমার প্রিয় বন্ধুরা, যদিও আমরা এরূপ বলছি, তবু তোমাদের সম্বন্ধে আমরা এখন দৃঢ় নিশ্চয় য়ে, তোমাদের অবস্থা এর থেকে ভালো হবে আর তোমরা যা কিছু করবে তা তোমাদের পরিত্রাণ লাভেরই পদক্ষেপ বিশেষ৷ 10 ঈশ্বর ন্যায় বিচারক, তোমাদের সব সত্ কর্মের কথা ঈশ্বর মনে রাখেন৷ তাঁর লোকদের তোমরা য়ে সাহায্য করেছ ও এখনও করে থাক, এর দ্বারা তোমরা ঈশ্বরের প্রতি তোমাদের ভালবাসাই প্রকাশ করেছ, এও কি তিনি ভুলতে পারেন? 11 কিন্তু আমরা চাই য়েন তোমাদের প্রত্যেকে তাদের সমস্ত জীবনে একই রকম তত্পরতা দেখায়, যাতে তোমরা সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিত হতে পার য়ে তোমাদের প্রত্যাশা পূর্ণ হবে৷ 12 আমরা চাই না য়ে তোমরা অলস হও; কিন্তু আমরা চাই যাঁরা বিশ্বাস ও ধৈর্য্যের দ্বারা ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতি লাভ করে, তোমরাও তাদের মতো হও৷ 13 ঈশ্বর অব্রাহামের কাছে একটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আর ঈশ্বর থেকে মহান কেউ নেই৷ তাই তাঁর থেকে মহান কোন ব্যক্তির নামে শপথ করতে না পারাতে তিনি নিজের নামে শপথ করলেন৷ 14 তিনি বললেন, ‘আমি অবশ্যই তোমাকে আশীর্বাদ করব ও তোমার বংশ অগনিত করব৷’ 15 এই প্রতিশ্রুতির বিষয়ে অব্রাহাম ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করলেন, পরে ঈশ্বর যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা তিনি লাভ করলেন৷ 16 সাধারণ মানুষ যখন তার থেকে মহান কোন ব্যক্তির নাম নিয়ে শপথ করে, সে তার প্রতিশ্রুতি পালন করবে কিনা সে বিষয়ে এই শপথের দ্বারা সব সংশয়ের অবসান হয়, সব তর্কের নিষ্পত্তি হয়ে যায়৷ 17 ঈশ্বর য়ে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন সেই প্রতিজ্ঞার উত্তরাধিকারীদের তিনি শপথের মাধ্যমে আরও নিশ্চয়তার সঙ্গে বলতে চাইলেন য়ে তাঁর সেই প্রতিজ্ঞা অপরিবর্ত্তনীয়৷ 18 ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতি ও শপথ কখনও বদলায় না৷ ঈশ্বর মিথ্যা কথা বলেন না ও শপথ করার সময়ে ছল করেন না৷ অতএব আমরা যাঁরা নিরাপত্তার জন্যে ঈশ্বরের কাছে ছুটে যাই, তাদের পক্ষে এই বিষয়গুলি বড় সান্ত্বনার৷ ঐ বিষয় দুটি ঈশ্বরের প্রদত্ত আশাতে জীবন অতিবাহিত করার জন্য আমাদের সান্ত্বনা ও শক্তি য়োগাবে৷ 19 আমাদের জীবন সম্পর্কে আমাদের য়ে প্রত্যাশা আছে তা নোঙরের মত দৃঢ় ও অটল৷ তা পর্দার আড়ালে স্বর্গীয় মন্দিরের পবিত্র স্থানে আমাদের প্রবেশ করায়৷ 20 যীশু, যিনি মল্কীষেদকের রীতি অনুযাযী চিরকালের জন্য মহাযাজক হলেন, তিনি আমাদের হয়ে সেখানে প্রবেশ করেছেন এবং আমাদের জন্য পথ খুলে দিয়েছেন৷
Hebrews 7:1 এই মল্কীষেদক শালেমের রাজা ও পরাত্পর ঈশ্বরেরযাজক ছিলেন৷ অব্রাহাম যখন রাজাদের পরাস্ত করে ঘরে ফিরছিলেন তখন এই মল্কীষেদক অব্রাহামের সঙ্গে সাক্ষাত্ করে তাঁকে আশীর্বাদ করেছিলেন৷ 2 অব্রাহাম যুদ্ধ জয় করে যা কিছু পেয়েছিলেন তার দশ ভাগের একভাগ তাঁকে দিয়েছিলেন৷ মল্কীষেদকের নামের অর্থ হল, ‘ন্যায়ের রাজা,’ এরপর তিনি আবার ‘শালেমের রাজা’ অর্থাত্ ‘শান্তিরাজ৷’ 3 মল্কীষেদকের মা, বাবা, বা তার পূর্বপুরুষের কোন বংশতালিক পাওয়া যায় না, তার শুরু বা শেষের কোন নথি নেই৷ ঈশ্বরের পুত্রের মতো তিনি হলেন অনন্তকালীন যাজক৷ 4 তাহলে তোমরা দেখলে, মল্কীষেদক কতো মহান ছিলেন৷ এমন কি আমাদের কুলপিতা অব্রাহাম যুদ্ধ জয় করে লুঠ করা দ্রব্যের দশ ভাগের এক ভাগ তাঁকে দিয়েছিলেন৷ 5 লেবির সন্তানদের মধ্যে যাঁরা যাজক হন তাঁরা তাঁদের ভাই ইস্রায়েলের সন্তানদের কাছ থেকে বিধি-ব্যবস্থা অনুসারে এক দশমাংশ গ্রহণ করার অধিকার লাভ করেন, যদিও তাঁরা উভয়েই অব্রাহামের বংশধর৷ 6 মল্কীষেদক লেবির বংশের ছিলেন না, কিন্তু তিনি অব্রাহামের কাছ থেকে দশমাংশ নিয়েছিলেন; আর ঈশ্বর যাকে আশীর্বাদ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলেন সেই অব্রাহামকে আশীর্বাদ করেছিলেন৷ 7 এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই য়ে ক্ষুদ্রতর ব্যক্তিই সব সময় মহত্তর ব্যক্তির কাছ থেকে আশীর্বাদ লাভ করে৷ 8 ইহুদী যাজকরা মরণশীল হয়েও এক দশমাংশ পেয়েছিলেন৷ কিন্তু মল্কীষেদক যিনি অব্রাহামের কাছ থেকে এক দশমাংশ পেয়েছিলেন তিনি জীবিত, শাস্ত্র এই কথা বলে৷ 9 আবার এও বলা য়েতে পারে য়ে লেবি নিজেও অব্রাহামের মধ্য দিয়ে মল্কীষেদককে দশমাংশ দিয়েছেন৷ 10 মল্কীষেদক যখন অব্রাহামের সঙ্গে সাক্ষাত্ করেন তখন লেবি তাঁর পিতৃকুলপতির (অব্রাহামের) দেহে অবস্থান করছিলেন৷ 11 যাঁরা যাজকের কাজ করতেন সেই লেবির বংশধরদের কাজের উপর ভিত্তি করে ঈশ্বর ইস্রায়েলীয়দের তাঁর বিধি-ব্যবস্থা দিয়েছিলেন৷ সেই যাজকের মাধ্যমে যখন লোকেরা আত্মিকভাবে সিদ্ধি লাভ করতে পারে নি তখন অন্য এক যাজকের আসার প্রযোজন হল৷ অন্য একজন যাজক যিনি হারোণের মতো নন কিন্তু মল্কীষেদকের মতো৷ 12 যখন যাজকত্ব বদলানো হয় তখন বিধি-ব্যবস্থারও পরিবর্তন আবশ্যক হয়ে পড়ে৷ 13 আমরা এসব কথা খ্রীষ্টের বিষয়ে বলছি৷ তিনি তো অন্য বংশভুক্ত৷ সেই বংশের কেউ তো যাজকরূপে যজ্ঞবেদীর পরিচর্য়া কখনও করেন নি৷ 14 কারণ এটা সুস্পষ্ট য়ে আমাদের প্রভু যিহূদা বংশ থেকেই এসেছেন; আর এই বংশের ব্যাপারে মোশি যাজক হওয়ার বিষয়ে কিছুই বলেন নি৷ 15 এই বিষয়গুলি আরও সুস্পষ্ট হয়ে যায় যখন আমরা মল্কীষেদকের মতো আর একজন যাজককে মূর্ত্তমান হতে দেখি৷ 16 তিনি মানুষের রীতি-নীতি এবং বিধি-ব্যবস্থা অনুযাযী যাজক হন নি, কিন্তু তিনি অবিনশ্বর জীবনী শক্তির অধিকারী হয়েই তা হয়েছিলেন৷ 17 কারণ তাঁর বিষয়ে শাস্ত্রে একথা বলা হয়েছে: ‘মল্কীষেদকের মতো তুমি অনন্তকালীন যাজক৷’ 18 পুরানো বিধান বাতিল করা হল, কারণ তা দুর্বল ও অকেজো হয়ে পড়েছিল৷ 19 কারণ মোশির বিধি-ব্যবস্থা কিছুই সিদ্ধ করতে পারে নি৷ এখন আমাদের কাছে মহত্তর আশা রয়েছে, যার মাধ্যমে আমরা ঈশ্বরের কাছে উপস্থিত হতে পারি৷ 20 আরো উল্লেখয়োগ্য বিষয় এই, য়ে ঈশ্বর যখন যীশুকে মহাযাজক করেন তখন ঈশ্বর শপথ করেছিলেন, অন্যরা যাজক হবার সময় ঈশ্বর কোন শপথ করেন নি, 21 কিন্তু তিনি যীশুকে যাজক করার সময় শপথ করলেন৷ ঈশ্বর বললেন:‘প্রভু এক শপথ করলেন, আর তিনি এ বিষয়ে তাঁর মন বদলাবেন না, ‘তুমি অনন্তকালীন যাজক৷’’ গীতসংহিতা 110:4 22 এই শপথের কারণে যীশু ঈশ্বরের সঙ্গে মানুষের উত্কৃষ্টতর এক চুক্তির জামিনদার হয়েছেন৷ 23 অনেকে যাজক হয়েছিলেন, কারণ মৃত্যু কোনও একজন যাজককে অনন্তকালের জন্য থাকতে দেয় নি৷ 24 কিন্তু ইনি (যীশু) চিরজীবি বলে তাঁর এই যাজকত্ব চিরস্থাযী৷ 25 তাই যাঁরা খ্রীষ্টের মাধ্যমে ঈশ্বরের কাছে আসে তাদের তিনি চিরকাল উদ্ধার করতে পারেন, কারণ তাদের জন্য তাঁর কাছে আবেদন করতে তিনি চিরকাল জীবিত আছেন৷ 26 প্রকৃতপক্ষে আমাদের যীশুর মতো এইরকম পবিত্র, নির্দোষ ও নিষ্কলঙ্ক মহাযাজক প্রযোজন ছিল৷ তিনি পাপীদের থেকে স্বতন্ত্র, আর আকাশ মণ্ডলের উর্দ্ধেও তাঁকে উন্নীত করা হয়েছে৷ 27 তিনি অন্যান্য যাজকদের মতো নন৷ অন্যান্য যাজকদের মতো প্রতিদিন আগে নিজের পাপের জন্য ও পরে লোকদের পাপের জন্য বলি উত্সর্গ করার তাঁর কোন প্রযোজন নেই, কারণ তিনি যখন নিজেকে বলিরূপে একবার উত্সর্গ করেন তখনই তিনি সেই কাজ চিরকালের জন্য সম্পন্ন করেছেন৷ 28 বিধি-ব্যবস্থানুসারে য়ে সব মহাযাজক নিযোগ করা হয় তারা দুর্বল মানুষ; কিন্তু পরে ঈশ্বরের শপথ বাক্যের দ্বারা, য়াঁকে মহাযাজকরূপে নিযোগ করা হয়, তিনি ঈশ্বরের পুত্র, যিনি চির সিদ্ধ৷
Hebrews 8:1 এখন আমরা য়ে বিষয় বলছি, তার প্রধান বক্তব্য হচ্ছে: আমাদের এক মহাযাজক আছেন, যিনি স্বর্গে ঈশ্বরের মহিমাময় সিংহাসনের ডানপাশে বসে আছেন৷ 2 তিনি সেই মহাপবিত্রস্থানে সেবা করছেন, যা প্রকৃত উপাসনার স্থান এবং য়ে উপাসনাস্থল মানুষের হাতে গড়া নয় বরং ঈশ্বর স্বয়ং তা নির্মাণ করেছেন৷ 3 প্রত্যেক মহাযাজককে বলি ও উপহার উত্সর্গ করার জন্যই নিযোগ করা হয়৷ তাই আমাদের এই মহাযাজককেও ঈশ্বরকে কিছু উত্সর্গ করতে হয়৷ 4 আমাদের মহাযাজক যদি পৃথিবীতে থাকতেন তবে তিনি কখনও যাজক হতেন না, কারণ পুরানো বিধি-ব্যবস্থা অনুযাযী এখানে যাজকরা ঈশ্বরকে উপহার নিবেদন করার জন্য রয়েছেন৷ 5 যাজকরা য়ে কাজ করেন তা কেবল স্বর্গীয় জিনিসগুলির নকল ছায়ামাত্র৷ মোশি যখন পবিত্র তাঁবু স্থাপন করতে যাচ্ছিলেন, তখন ঈশ্বর তাঁকে সতর্ক করে বলেছিলেন, ‘দেখো, পাহাড়ের ওপরে তোমাকে য়েমন শিবির দেখানো হয়েছিল তুমি ঠিক সেইরকমই করো৷’ 6 কিন্তু এখন যীশুকে য়ে কাজের জন্য নিযোগ করা হয়েছে তা ঐ যাজকদের থেকে অনেক গুণে মহত্৷ সেই একইভাবে যীশু য়ে নতুন চুক্তি ঈশ্বরের কাছ থেকে এনেছেন তা পুরাতন চুক্তিটির থেকে অনেক শ্রেষ্ঠ৷ এই নতুন চুক্তি শ্রেষ্ঠ বিষয়ের প্রতিশ্রুতির ওপর স্থাপিত হয়েছে৷ 7 কারণ ঐ প্রথম চুক্তি যদি নিখুঁত হতো, তাহলে তার জায়গায় দ্বিতীয় চুক্তি স্থাপনের প্রযোজন হতো না৷ 8 কিন্তু ঈশ্বর লোকদের মধ্যে ত্রুটি লক্ষ্য করে বলেছিলেন:‘দেখো, এমন সময় আসছে, যখন আমি ইস্রায়েলের লোকেদের ও যিহূদার লোকেদের সঙ্গে এক নতুন চুক্তি করব৷ 9 সেই চুক্তি অনুসারে নয় যা আমি তাদের পিতৃপুরুষদের সঙ্গে এর আগে করেছিলাম, য়েদিন আমি তাদের হাত ধরে মিশর দেশ থেকে বাইরে বের করে নিয়ে এসেছিলাম৷ আমার সঙ্গে তাদের য়ে চুক্তি হয়েছিল তাতে তাদের বিশ্বাস ছিল না; আর তাই আমি তাদের কাছ থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছিলাম, একথা প্রভু বলেন৷ 10 আমি ইস্রায়েল বংশের সঙ্গে এক নতুন চুক্তি স্থির করব; ভবিষ্যতে আমি এই চুক্তি স্থাপন করব, একথা প্রভু বলেন৷ আমি তাদের মনের মাঝে আমার বিধি-ব্যবস্থা দেবো আর তাদের হৃদয়ে আমার ব্যবস্থা লিখে দেবো৷ আমি তাদের ঈশ্বর হবো ও তারা আমার প্রজা হবে৷ 11 কাউকে আর তাদের সহ নাগরিকদের ও ভাইদের এই বলে শিক্ষা দেবার দরকার হবে না, প্রভুকে জানো, কারণ ছোট থেকে বড় পর্যন্ত সবাই আমাকে জানবে৷ 12 কারণ আমার বিরুদ্ধে তারা যতো অপরাধ করেছে সে সব আমি ক্ষমা করব, তাদের সকল পাপ আর কখনও স্মরণ করব না৷’ যিরমিয় 31:31-34 13 এই চুক্তিকে যখন ঈশ্বর নতুন বলছেন তখন প্রথমের চুক্তিটি পুরানো হয়ে যাচ্ছে৷ যা কিছু পুরানো তা তো জীর্ণ আর তা শিগ্গিরই বিলীন হয়ে যাবে৷
Hebrews 9:1 ঐ প্রথম চুক্তিতে উপাসনা করার নানা বিধিনিয়ম ছিল; আর মানুষের তৈরী এক উপাসনার স্থান ছিল৷ 2 উপাসনার স্থানটি ছিল এক তাঁবুর ভেতরে৷ যার প্রথম অংশকে বলা হতো পবিত্র স্থান, য়েখানে ছিল বাতিদান,টেবিল ও ঈশ্বরকে উত্সর্গীকৃত বিশেষ রুটি৷ 3 দ্বিতীয় পর্দার পেছনে আর একটি অংশ ছিল যাকে মহাপবিত্রস্থান বলা হত৷ 4 এই অংশে ছিল ধূপ জ্বালাবার জন্য সোনার বেদী ও চুক্তির সেই সিন্দুক, যার চারপাশ ছিল সোনার পাতে মোড়া৷ এর মধ্যে ছিল সোনার এক ঘটিতে মান্না ও হারোণের ছড়ি, য়ে ছড়ি মুকুলিত হয়েছিল; আর পাথরের সেই দুই ফলক যার ওপর নিয়ম চুক্তির শর্ত লেখা ছিল৷ 5 সেই সিন্দুকের ওপর ছিল সোনার দুই করূব স্বর্গদূতযা ঈশ্বরের মহিমা প্রকাশ করত৷ তার দয়ার আসনটির ওপর ছায়া ফেলে থাকত৷ বর্তমানে আমরা এর খুঁটিনাটি বর্ণনা দিতে পারি না৷ 6 যখন এইসব জিনিস পূর্বে বর্ণিত ব্যবস্থা অনুসারে প্রস্তুত হল, তখন যাজকরা প্রতিদিন উপাসনা করার জন্য প্রথম কক্ষে প্রবেশ করতেন৷ 7 কিন্তু মহাযাজক দ্বিতীয় কক্ষে কেবল একা বছরে একবার প্রবেশ করতেন; তিনি আবার রক্ত না নিয়ে প্রবেশ করতেন না৷ সেই রক্ত তিনি নিজের জন্য ও লোকদের দোষ-ত্রুটি ও অনিচ্ছাকৃত পাপের মার্জনার জন্য উত্সর্গ করতেন৷ 8 পবিত্র আত্মা এর দ্বারা আমাদের জানাচ্ছেন য়ে, যতদিন পর্যন্ত প্রথম তাঁবু ছিল, ততদিন মহাপবিত্র স্থানে প্রবেশের পথ খুলে দেওয়া হয় নি৷ 9 এটা আজকের জন্য একটা দৃষ্টান্তস্বরূপ৷ সেই দৃষ্টান্ত মতে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে উত্সর্গীকৃত ঐসব বলি ও উপহার উপাসনাকারীকে সম্পূর্ণভাবে শুদ্ধ করতে পারত না এবং উপাসনাকারীর হৃদয়কে সিদ্ধিলাভ করাতো না৷ 10 ঐ উপহারগুলি কেবল খাদ্য়, পানীয় ও নানা প্রকার বাহ্যিক শুচি স্নানের গণ্ডীতে বাঁধা ছিল৷ সে সব বিধি-ব্যবস্থাগুলি ছিল কেবল মানুষের দেহ সম্বন্ধীয়৷ সেগুলি ব্যক্তির হৃদয় সম্বন্ধীয় বিষয় ছিল না৷ নতুন আদেশ না আসা পর্যন্ত ঈশ্বর তাঁর লোকদের এইসব নিয়ম অনুসরণ করতে দিয়েছিলেন৷ 11 কিন্তু এখন মহাযাজকরূপে খ্রীষ্ট এসেছেন৷ আমরা এখন য়ে সব উত্তম বিষয় পেয়েছি, তিনি সেসবের মহাযাজক৷ পূর্বে যাজকরা তাঁবুর মতো কোন স্থানে সেবা করতেন, কিন্তু খ্রীষ্ট তেমনি করেন না৷ সেই তাঁবু থেকেও এক উত্তমস্থানে খ্রীষ্ট মহাযাজকরূপে সেবা করতেন৷ সেই স্থান সিদ্ধ, সেই স্থান মানুষের হাতে গড়া নয়, তা এই জগতের নয়৷ 12 খ্রীষ্ট একবার চিরতরে সেই মহাপবিত্রস্থানে প্রবেশ করেছেন৷ তিনি মহাপবিত্রস্থানে প্রবেশের জন্য ছাগ বা বাছুরের রক্ত ব্যবহার করেন নি, কিন্তু তিনি একবার চিরতরে নিজের রক্ত নিয়ে মহাপবিত্রস্থানে প্রবেশ করেছিলেন৷ খ্রীষ্ট সেখানে প্রবেশ করে আমাদের জন্য অনন্ত মুক্তি অর্জন করেছেন৷ 13 ছাগ বা বৃষের রক্ত ও বাছুরের ভস্ম সেই সব অশুচি মানুষের উপর ছিটিয়ে তাদের দেহকে পবিত্র করা হত, যাঁরা উপাসনা স্থলে প্রবেশের জন্য যথেষ্ট শুচি ছিল না৷ 14 তবে এটা কি ঠিক নয় য়ে খ্রীষ্টের রক্ত আরও কত অধিক কার্য়করী হতে পারে? অনন্তজীবি আত্মার মাধ্যমে খ্রীষ্ট ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে নিজেকে বলিদান করলেন পরিপূর্ণ উত্সর্গরূপে৷ তাই খ্রীষ্টের রক্ত আমাদের সমস্ত হৃদয়কে পাপ থেকে শুদ্ধ ও পবিত্র করবে, যাতে আমরা জীবন্ত ঈশ্বরের উপাসনা করতে পারি৷ 15 তাই খ্রীষ্ট তাঁর লোকদের জন্য ঈশ্বরের কাছে এক নতুন চুক্তি উপস্থিত করেছেন৷ খ্রীষ্ট এই নতুন চুক্তি এনেছেন য়েন ঈশ্বরের আহুত লোকেরা তাঁর প্রতিশ্রুত সব আশীর্বাদ পেতে পারে৷ ঈশ্বরের লোকরা সেই আশীর্বাদ অনন্তকাল ভোগ করবে৷ তারা সেসবের অধিকারী হবে কারণ প্রথম চুক্তির সময়ে তারা য়ে পাপ করেছে সেই পাপ থেকে তাদের উদ্ধার করতে খ্রীষ্ট মৃত্যুবরণ করলেন৷ 16 মানুষ মৃত্যুর পূর্বে একটা নিয়ম পত্রকরে যায়; কিন্তু নিয়মকারী যদি জীবিত থাকে তবে সেই নিয়মপত্র বা চুক্তির কোন অর্থই হয় না৷ 17 কারণ নিয়মকারীর মৃত্যু হলে তবেই নিয়ম পত্র বলবত্ হয়৷ 18 এইজন্য ঐ প্রথম চুক্তি যা ঈশ্বর ও তাঁর লোকদের মধ্যে সম্পন্ন হয়েছিল সেখানেও ঐ কথা প্রয়োজ্য৷ সেই চুক্তি বলবত্ করতে রক্তের প্রযোজন ছিল৷ 19 কারণ লোকদের কাছে মোশি বিধি-ব্যবস্থা থেকে সমস্ত আজ্ঞা পাঠ করে পরে তিনি জল ও রক্তবর্ণ মেষলোম আর একগোছা এসোবের ঘাস ব্যবহার করে গোবত্স ও ছাগদের রক্ত সেই পুস্তকটিতে ও লোকদের গায়ে ছিটিয়ে দিয়েছিলেন৷ 20 মোশি বলেছিলেন, ‘এই সেই রক্ত যা কার্য়কারী করছে সেই চুক্তি যার আজ্ঞাবহ হতে ঈশ্বর তোমাদের বলছেন৷’ 21 আর সেইভাবে মোশি পবিত্র তাঁবু ও উপাসনা সংক্রান্ত সব জিনিসের ওপর রক্ত ছিটিয়ে দিয়েছিলেন৷ 22 কারণ বিধি-ব্যবস্থা বলে য়ে প্রায় সব কিছুই রক্ত ছিটিয়ে শুচি করা প্রযোজন, আর রক্তপাত ব্যতিরেকে পাপের মোচন হয় না৷ 23 এই বিষয়গুলি ছিল আসল স্বর্গীয় বিষয়গুলির দৃষ্টান্ত, সেগুলিকে বলিদানের রক্তে শুচি করার প্রযোজন ছিল৷ কিন্তু যা প্রকৃত স্বর্গীয় বিষয় সেগুলি এর থেকে শ্রেষ্ঠতর বলিদানের দ্বারা শুচি হওয়া প্রযোজন৷ 24 খ্রীষ্ট স্বর্গে মহাপবিত্র স্থানে প্রবেশ করেছেন৷ মানুষের তৈরী কোন মহাপবিত্র স্থানে খ্রীষ্ট প্রবেশ করেন নি৷ পৃথিবীর তাঁবুর মহাপবিত্র স্থানে স্বর্গীয় স্থানের প্রতিচ্ছবি মাত্র; কিন্তু খ্রীষ্ট স্বর্গে প্রবেশ করেছেন, আর এখন আমাদের হয়ে তিনি ঈশ্বরের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন৷ 25 মহাযাজক বছরে একবার বলির য়ে রক্ত নিয়ে মহাপবিত্র স্থানে প্রবেশ করেন তা তার নিজের নয়৷ কিন্তু খ্রীষ্ট স্বর্গে প্রবেশ করেছেন মহাযাজকদের উত্সর্গের মতো বারবার নিজেকে উত্সর্গ করার জন্য নয়৷ 26 খ্রীষ্ট যদি তাই করতেন তবে জগত্ সৃষ্টির সময় থেকে তাঁকে বারবার প্রাণ দিতে হত৷ খ্রীষ্ট এসে একবার নিজেকে উত্সর্গ করেছেন৷ সেই একবারই চিরন্তন কাজের সমাপ্তি হয়েছে৷ জগতের অন্তিম কালেই খ্রীষ্ট নিজেকে বলিরূপে উত্সর্গ করে লোকদের পাপনাশ করতে এলেন৷ 27 মানুষের জন্য একবার মৃত্যু এবং মৃত্যুর পর তাঁর বিচার হয়৷ 28 বহুলোকের পাপের বোঝা তুলে নেবার জন্য খ্রীষ্ট একবার নিজেকে উত্সর্গ করলেন; তিনি দ্বিতীয়বার দর্শন দেবেন, তখন পাপের বোঝা তুলে নেবার জন্য নয়, কিন্তু যাঁরা তাঁর জন্য অপেক্ষা করছে তাদের পরিত্রাণ দিতে তিনি আসবেন৷
Hebrews 10:1 ভবিষ্যতে য়ে সকল উত্কৃষ্ট বিষয় আসবে, বিধি-ব্যবস্থা হচ্ছে তারই অস্পষ্ট ছায়া মাত্র৷ বিধি-ব্যবস্থা ঐসব বিষয়ের বাস্তবরূপ নয়৷ তাই যাঁরা ঈশ্বরের উপাসনা করতে আসে, বছর বছর তারা একই রকম বলিদান বারবার করে, কিন্তু বিধি-ব্যবস্থা সেই লোকদের সিদ্ধি দিতে পারে না৷ 2 বিধি-ব্যবস্থা যদি পারত, তবে ঐ বলিদান কি শেষ হত না? কারণ যাঁরা উপাসনা করে তারা যদি একবার শুচি হয় তবে তাদের পাপের জন্য নিজেকে আর দোষী ভাববার প্রযোজন নেই৷ কিন্তু বিধি-ব্যবস্থা তা করতে সক্ষম নয়৷ 3 ঐসব লোকের বলিদান বছর বছর তাদের পাপের ক্ষমা স্মরণ করিয়ে দেয়, 4 কারণ বৃষের কি ছাগের রক্ত পাপ দূর করতে পারে না৷ 5 সেইজন্যই খ্রীষ্ট এ জগতে আসার সময় বলেছিলেন:‘তুমি বলিদান ও নৈবেদ্য চাও নি, কিন্তু আমার জন্য এক দেহ প্রস্তুত করেছ৷ 6 তুমি হোমে ও পাপার্থক বলিদান উত্সর্গে প্রীত নও৷ 7 এরপর তিনি বললেন, ‘এই আমি! শাস্ত্রে আমার বিষয়ে য়েমন লেখা আছে, হে ঈশ্বর দেখ, আমি তোমার ইচ্ছা পূর্ণ করতেই এসেছি৷’গীতসংহিতা 40:6-8 8 প্রথমে তিনি বললেন, ‘বলিদান, নৈবেদ্য, হোমবলি ও পাপার্থক বলি তুমি চাও নি; আর তাতে তুমি প্রীত হও নি৷’ যদিও সেইসব বিধি-ব্যবস্থা অনুসারে উত্সর্গ করা হয়৷ 9 এরপর তিনি বললেন, ‘দেখো, আমি তোমার ইচ্ছা পালন করবার জন্যই এসেছি৷’ তিনি দ্বিতীয়টি প্রবর্তন করার জন্য প্রথমটিকে বাতিল করতে এসেছেন৷ 10 ঈশ্বরের ইচ্ছানুসারেই তিনি এই কাজ সমাপ্ত করেছেন৷ এইজন্যই খ্রীষ্ট তাঁর দেহ একবারেই চিরকালের জন্য উত্সর্গ করেছেন যাতে আমরা চিরকালের জন্য পবিত্র হই৷ 11 প্রত্যেক যাজক প্রত্যেকদিন দাঁড়িয়ে ঈশ্বরের সেবা করেন তাঁরা বারবার সেই একই বলি উত্সর্গ করেন৷ কিন্তু তাদের বলিদান কখনও পাপ দূর করতে পারে না৷ 12 খ্রীষ্ট পাপের জন্য একটি বলিদান উত্সর্গ করলেন যা সকল সময়ের জন্য যথেষ্ট৷ তারপর তিনি ঈশ্বরের দক্ষিণ পাশে বসলেন৷ 13 তাঁর শত্রুদের মাথা তাঁর পায়ের নীচে অবনত না হওয়া পর্যন্ত এখন তিনি সেখানে অপেক্ষা করছেন৷ 14 তিনি একটি বলিদান উত্সর্গ করে চিরকালের জন্য তাঁর লোকেদের নিখুঁত করেছেন৷ তারাই সেই লোক যাদের পবিত্র করা হয়েছে৷ 15 পবিত্র আত্মাও আমাদের কাছে এ বিষয়ে সাক্ষ্য দিচ্ছেন৷ প্রথমে তিনি বলেন: 16 ‘ঐ সময়ের পর প্রভু বলেছেন, আমি তাদের সঙ্গে এই চুক্তি করব৷ আমি তাদের হৃদয়ে আমার নিয়মগুলো গেঁথে দেব, আর তাদের মনে আমি তা লিখে দেব৷’যিরমিয় 31:33 17 এরপর তিনি বলেন: ‘আমি তাদের সব পাপ ও অধর্ম আর কখনও মনে রাখবো না৷’ যিরমিয় 31:34 18 তাই একবার যখন সেইসব পাপ ক্ষমা করা হল, তখন পাপের জন্য বলিদান উত্সর্গ করার আর কোন প্রযোজন নেই৷ 19 তাই আমার ভাই ও বোনেরা, মহাপবিত্র স্থানে প্রবেশ করার সম্পূর্ণ স্বাধীনতা আমাদের আছে৷ যীশুর রক্তের গুণে আমরা নির্ভীকতার সঙ্গে সেখানে প্রবেশ করতে পারি৷ 20 খ্রীষ্ট এই নতুন পথ একটি পর্দার মধ্য দিয়ে অর্থাত্ তাঁর দেহের মধ্য দিয়ে আমাদের জন্য খুলে দিয়েছেন৷ এ এক জীবন্ত পথ৷ এই নতুন পথে আমরা পর্দার মধ্য দিয়ে অর্থাত্ খ্রীষ্টের দেহের মধ্য দিয়ে ঈশ্বরের সামনে উপস্থিত হতে পারি৷ 21 তাই আমাদের এক মহান যাজক রয়েছেন যিনি ঈশ্বরের গৃহের ওপর কর্তৃত্ত্ব করেন৷ 22 আমাদের শুচি করা হয়েছে ও দোষী বিবেকের হাত থেকে মুক্ত করা হয়েছে৷ আমাদের দেহকে শুচিশুদ্ধ জলে ধৌত করা হয়েছে৷ তাই এস, আমরা শুদ্ধ হৃদয়ে বিশ্বাসের কৃত নিশ্চয়তায় ঈশ্বরের সামনে হাজির হই৷ 23 তাই এস, আমরা আমাদের প্রত্যাশাকে দৃঢ়ভাবে অবলম্বন করে থাকি এবং অপরের কাছে তাকে জানাতে ব্যর্থ না হই৷ আমরা ঈশ্বরের ওপর নির্ভর করতে পারি য়ে, তিনি যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা তিনি পূরণ করবেন৷ 24 আমাদের উচিত একে অপরের বিষয়ে চিন্তা করা, য়েন ভালবাসতে ও সত্ কাজ করতে পরস্পরকে উত্সাহ দান করতে পারি৷ 25 আমরা য়েন একত্র সমবেত হওয়ার অভ্যাস ত্যাগ না করি, য়েমন কেউ কেউ সেইরকম করছে৷ কিন্তু এস, আমরা পরস্পরকে উত্সাহ ও চেতনা দিই৷ তোমরা যতই সেই দিন এগিয়ে আসতে দেখছ, ততই এ বিষয়ে আরো বেশী করে উদ্যোগী হও৷ 26 সত্যের জ্ঞানলাভের পর যদি আমরা ইচ্ছাকৃতভাবে পাপ করে চলি, তবে সেই পাপের জন্য বলিদান উত্সর্গ করার মতো আর কিছু অবশিষ্ট থাকে না৷ 27 আমরা যদি পাপ করেই চলি তবে বিচারের জন্য সেই ভয়ঙ্কর প্রতীক্ষা আর প্রচণ্ড ক্রোধাগ্নি সমস্ত ঈশ্বর বিরোধীকে গ্রাস করবে৷ 28 কেউ যদি মোশির দেওয়া বিধি-ব্যবস্থা লঙঘন করতো তবে দুজন কিংবা তিনজন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণে নিষ্ঠুরভাবে তাকে হত্যা করা হত, তাকে ক্ষমা করা হত না৷ 29 ভেবে দেখো, য়ে লোক ঈশ্বরের পুত্রকে ঘৃণা করেছে, চুক্তির য়ে রক্তের মাধ্যমে সে শুচি হয়েছিল তা তুচ্ছ করেছে, আর যিনি অনুগ্রহ করেন সেই অনুগ্রহের আত্মাকে অপমান করেছে - হ্যাঁ, নতুন চুক্তির রক্তকে য়ে অবমাননা করেছে সেই ব্যক্তির কতোই না ঘোরতর শাস্তি হওয়া উচিত৷ 30 আমরা জানি, ঈশ্বর বলেন, ‘যাঁরা মন্দ কাজ করে, তাদের আমি শাস্তি দেব; তাদের প্রতিফল দেব৷’ঈশ্বর আবার বলেছেন, ‘প্রভু তাঁর লোকদের বিচার করবেন৷’ 31 জীবন্ত ঈশ্বরের হাতে গড়া পাপী মানুষের পক্ষে কি ভয়ঙ্কর বিষয়৷ 32 সেই আগের দিনগুলির কথা মনে করে দেখ, প্রথমে যখন তোমরা সত্য গ্রহণ করলে, তখন তোমাদের অনেক কষ্ট ও দুঃখভোগ করতে হয়েছিল, কিন্তু তা সত্ত্বেও তোমরা বেশ অটল ছিলে৷ 33 কখনও কখনও লোকেরা প্রকাশ্যে তোমাদের বিদ্রূপ করেছে ও অনেক লোকের সামনে তোমাদের নির্যাতিত হতে হয়েছে৷ কখনও অন্যের ওপর তোমাদের মতো নির্য়াতিত হচ্ছে দেখে তোমরা তাদের প্রতি সহানুভূতি দেখিয়েছ৷ 34 যাঁরা কারাগারে বন্দী ছিল, তোমরা তাদের সাহায্য করেছ ও তাদের দুঃখভোগের অংশ নিয়েছ৷ তোমাদের সম্পত্তি লুঠ করে নিলেও তোমরা আনন্দ করেছ, কারণ তোমরা জানতে য়ে এসব থেকে উত্কৃষ্ট ও চিরস্থাযী এক সম্পদ তোমাদের জন্য আছে৷ 35 তাই অতীতে তোমাদের য়ে সাহস ছিল তা হারিও না, কারণ সেই সাহস তোমাদের জন্য মহাপুরস্কার নিয়ে আসবে৷ 36 তোমাদের ধৈর্য্য ধরতে হবে, ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করার পর তোমরা তাঁর প্রতিশ্রুতি অনুসারে ফল লাভ করবে৷ 37 কারণ এখন থেকে অল্প সময়ের মধ্যে,‘য়াঁর আসবার কথা আছে তিনি আসবেন, তিনি দেরী করবেন না৷ 38 আমার দৃষ্টিতে যাদের ধার্মিক প্রতিপন্ন করেছি তারা বিশ্বাসের ফলেই বেঁচে থাকবে, কিন্তু সে যদি ভয়ে বিশ্বাস থেকে সরে যায় তবে আমি তার প্রতি সন্তুষ্ট হব না৷’হববকূক 2:3-4 39 কিন্তু আমরা এমন লোক নই যাঁরা বিশ্বাস থেকে সরে গিয়ে ধ্বংস হয়ে যায়, বরং আমরা সেই রকম লোক যাঁরা বিশ্বাসে রক্ষা পায়৷
Hebrews 11:1 বিশ্বাসের অর্থ হল আমরা যা প্রত্যাশা করি তা য়ে আমরা পাবই সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার ও বাস্তবে যা কিছু আমরা চোখে দেখতে পাই না তার অস্তিত্ব সম্বন্ধে প্রমাণ পাওয়া৷ 2 অতীতে ঈশ্বরের লোকেরা তাঁদের বিশ্বাসের দরুণই সুখ্যাতি লাভ করেছিলেন৷ 3 বিশ্বাসে আমরা বুঝতে পারি য়ে বিশ্ব ভুমণ্ডল ঈশ্বরের মুখের কথাতেই সৃষ্ট হয়েছিল, তাই চোখে যা দেখা যায় সেই দৃশ্য কোন কিছু প্রত্যক্ষ বস্তু থেকে উত্পন্ন হয় নি৷ 4 কযিন ও হেবল উভয়েই ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে বলিদান উত্সর্গ করেছিলেন; কিন্তু হেবল উত্তম বলে ঈশ্বরের কাছে গ্রাহ্য় হয়েছিলেন কারণ হেবলের বলিদান বিশ্বাসযুক্ত ছিল৷ ঈশ্বর বলেছিলেন য়ে হেবল যা উপহার দিয়েছিল তাতে তিনি প্রীত হয়েছিলেন৷ ঈশ্বর হেবলকে একজন ধার্মিক লোক বললেন, কারণ তার বিশ্বাস ছিল৷ যদিও হেবল মৃত; কিন্তু তাঁর বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে তিনি এখনও কথা বলছেন৷ 5 হনোককে পৃথিবী থেকে তুলে নেওয়া হয়েছিল, তিনি মরেন নি৷ এই পৃথিবী থেকে হনোককে তুলে নেবার পূর্বে হনোক এই সাক্ষী রেখে যান য়ে তিনি ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করেছিলেন৷ পরে লোকেরা হনোকের খোঁজ আর পেলেন না, কারণ ঈশ্বর তাঁকে কাছে রাখার জন্য নিজেই হনোককে তুলে নিয়েছিলেন৷ হনোকের জীবনে বিশ্বাস ছিল বলেই এমনটি সন্ভব হয়েছিল৷ 6 বিনা বিশ্বাসে ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করা যায় না, য়ে কেউ ঈশ্বরের কাছে আসে তাকে অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে য়ে ঈশ্বর আছেন; আর যাঁরা তাঁর অন্বেষণ করে, তাদের তিনি পুরস্কার দিয়ে থাকেন৷ 7 বিশ্বাসেই নোহ, যা যা কখনও দেখা যায় নি এমন সব বিষয়ে তাকে সতর্ক করে দেওয়া হলে তিনি তা গুরুত্ব সহকারে নিলেন এবং নোহ তাঁর পরিবারের রক্ষার জন্য এক জাহাজ নির্মাণ করলেন৷ এর দ্বারা তিনি (অবিশ্বাসী) জগতকে দোষী প্রতিপন্ন করলেন, আর বিশ্বাসের মাধ্যমে য়ে ধার্মিকতা লাভ হয় তার অধিকারী হলেন৷ 8 ঈশ্বরে বিশ্বাস ছিল বলেই ঈশ্বর যখন অব্রাহামকে আহ্বান করলেন, তিনি তাঁর বাধ্য হলেন, আর তাঁকে য়ে দেশ দেবেন বলে ঈশ্বর বলেছিলেন তা অধিকার করতে চললেন৷ তিনি কোথায় চলেছেন তা না জানলেও তিনি রওনা দিলেন৷ 9 তাঁর বিশ্বাসের বলেই তিনি ঈশ্বরের প্রতিশ্রুত সেই দেশে আগন্তুকের মতো জীবনযাপন করলেন৷ তাঁর বিশ্বাস ছিল বলেই তিনি তা করতে পেরেছিলেন৷ সেই প্রতিশ্রুত দেশে ইসহাক ও যাকোবের সাথে তিনি তাঁবুতে বাস করেছিলেন, যাঁরা তাঁর মতোই (একই প্রতিশ্রুতির) উত্তরাধিকারী ছিলেন৷ 10 কারণ অব্রাহাম সেই দৃঢ় ভিত্তিযুক্ত নগরের প্রতীক্ষায় ছিলেন স্বয়ং ঈশ্বর যার স্থপতি ও নির্মাতা৷ 11 অব্রাহাম বযোবৃদ্ধ হয়েছিলেন তাই তাঁর সন্তান হওয়ার সন্ভব ছিল না৷ তাঁর স্ত্রী সারা বন্ধ্যা ছিলেন৷ কিন্তু ঈশ্বরের ওপর অব্রাহামের বিশ্বাস ছিল, তাই ঈশ্বর শক্তি দিলেন য়েন তাঁদের সন্তানলাভ হয়৷ ঈশ্বর যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা য়ে তিনি পূর্ণ করতে পারেন এ বিশ্বাস অব্রাহামের ছিল৷ তিনি প্রায় মৃতকল্প ছিলেন; কিন্তু এই একটি লোকের মধ্য দিয়ে জন্ম নিয়েছিল আকাশের তারার মতো অজস্র বংশধর৷ 12 সেই এক ব্যক্তি থেকে সমুদ্র সৈকতে বালুকণার মতো অগনিত বংশধররা এলো৷ 13 এইসব মহান ব্যক্তিরা বিশ্বাস নিয়েই মারা গেলেন৷ ঈশ্বর যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তাঁরা কেউই বাস্তবে তা পান নি, কিন্তু দূর থেকে তা দেখেছিলেন ও তাকে স্বাগত জানিয়েছিলেন৷ তাঁরা খোলাখুলি স্বীকার করেছিলেন য়ে এই পৃথিবীতে তাঁরা প্রবাসী ও বিদেশী৷ 14 কারণ য়ে সব লোক এরকম কথা বলেন, তাঁরা য়ে নিজের দেশে ফেরার আশায় আছেন তা স্পষ্ট করেই ব্যক্ত করেন৷ 15 য়ে দেশ থেকে তাঁরা বাইরে বেরিয়ে এসেছিলেন, সেই দেশের কথা যদি মনে রাখতেন, তবে ইচ্ছা করলে সেখানে ফিরে য়েতে পারতেন৷ 16 কিন্তু এখন তাঁরা তার থেকে আরো ভাল দেশে, সেই স্বর্গীয় দেশে, যাবার আকাঙ্খা করছিলেন৷ এইজন্য ঈশ্বর নিজেকে তাঁদের ঈশ্বর বলে পরিচয় দিতে লজ্জা পান না, কারণ তিনি তাঁদের জন্য এক নগর প্রস্তুত করেছেন৷ 17 ঈশ্বর যখন অব্রাহামের বিশ্বাসের পরীক্ষা করছিলেন, অব্রাহাম তার কিছু পূর্বেই ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতি পান তবু তিনি তাঁর পুত্র ইসহাককে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে উত্সর্গ করতে নিয়ে গিয়েছিলেন৷ অব্রাহাম ঈশ্বরের নির্দেশ পালন করেছিলেন কারণ তাঁর বিশ্বাস ছিল৷ ঈশ্বর অব্রাহামকে পূর্বেই বলে রেখেছিলেন, ‘ইসহাকের মাধ্যমেই তোমার বংশধররা দেখা দেবে৷’ 18 19 অব্রাহাম বিশ্বাস করলেন য়ে ঈশ্বর মৃত্যুর মধ্য হতেও মানুষকে উত্থাপন করতে সমর্থ৷ বাস্তবে তাই হল, ঈশ্বর অব্রাহামকে তাঁর পুত্রকে বলি দেওয়া থেকে বিরত করলেন ফলে অব্রাহাম ইসহাককে য়েন মৃত্যুর মধ্য থেকেই ফিরে পেলেন৷ 20 সেই বিশ্বাসের বলেই ইসহাক ভবিষ্যতের বিষয় চিন্তা করে এষৌ ও যাকোবকে আশীর্বাদ করলেন কারণ তাঁর বিশ্বাস ছিল৷ 21 যাকোব বৃদ্ধ বয়সে মারা যাবার সময় বিশ্বাসের শক্তিতে য়োষেফের ছেলেদের প্রত্যেককে আশীর্বাদ করেছিলেন৷ তিনি লাঠির উপর ভর দিয়ে উঠে ঈশ্বরের উপাসনা করেছিলেন৷ যাকোবের বিশ্বাস ছিল বলেই তিনি এই সব করেছিলেন৷ 22 বিশ্বাসের বলেই য়োষেফ মৃত্যুশয়্য়ায় বলেছিলেন য়ে, ইস্রায়েলীয়রা মিশর দেশ ছেড়ে একদিন চলে যাবে৷ তাই তিনি তাঁর দেহাবশেষ নিয়ে কি করতে হবে তার নির্দেশ দিতে পেরেছিলেন৷ য়োষেফের বিশ্বাস ছিল বলেই তিনি ঐ কথা বলে গিয়েছিলেন৷ 23 মোশির জন্মের পর তাঁর মা-বাবা তিনমাস পর্যন্ত তাকে লুকিয়ে রেখেছিলেন৷ তাঁদের বিশ্বাস ছিল বলেই তাঁরা তা করেছিলেন৷ তাঁরা দেখলেন মোশি খুব সুন্দর এক শিশু, আর তাঁরা রাজার আদেশ অমান্য করতে ভয় পেলেন না৷ 24 মোশি বড় হয়ে উঠলেন ও পূর্ণ বয়স্ক মানুষে পরিণত হলেন৷ মোশি ফরৌণের মেয়ের পুত্র বলে পরিচিত হতে চাইলেন না৷ মোশি পাপের সুখভোগ করতে চাইলেন না, কারণ সে সব সুখভোগ ছিল ক্ষণিকের৷ 25 কিন্তু মোশি ঈশ্বরের লোকদের সঙ্গে দুঃখভোগ করাকেই বেছে নিলেন৷ মোশি তা করতে পেরেছিলেন কারণ তাঁর বিশ্বাস ছিল৷ 26 মিশরের সমস্ত ঐশ্বর্য অপেক্ষা খ্রীষ্টের জন্য বিদ্রূপ সহ্য করাকেই শ্রেয় মনে করলেন৷ ঈশ্বরের কাছ থেকে পুরস্কার লাভের আশায় মোশি তা করতে পেরেছিলেন৷ 27 মোশির বিশ্বাস ছিল তাই তিনি মিশর ত্যাগ করলেন৷ তিনি রাজার ক্রোধকে ভয় করলেন না৷ মোশি সুস্থির থাকলেন কারণ তিনি সেই ঈশ্বরের দিকে দৃষ্টি রাখলেন য়াঁকে কেউ দেখতে পায় না৷ 28 মোশি নিস্তারপর্ব পালন করে গৃহের দরজায় রক্ত লেপে দিলেন৷ দরজায় এইভাবে রক্ত লেপন করা হল য়েন সংহারকর্তা ইস্রায়েলীয়দের প্রথম পুত্র সন্তানদের স্পর্শ করতে না পারে৷ মোশির বিশ্বাস ছিল তাই তিনি এসব করতে পেরেছিলেন৷ 29 য়ে লোকদের মোশি নিয়ে চলেছিলেন তারা শুকনো জমির ওপর দিয়ে যাওয়ার মতো লোহিত সাগর হেঁটে পার হয়ে গেল৷ তাদের বিশ্বাস ছিল বলেই তারা তা করতে পেরেছিল৷ মিশরীয়রাও লোহিত সাগরের মধ্যে দিয়ে হেঁটে য়েতে চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তারা সবাই মারা পড়ল৷ 30 ঈশ্বরের লোকদের বিশ্বাসের জন্যই যিরীহোর প্রাচীর ভেঙ্গে পড়ল৷ লোকেরা প্রাচীরের চারপাশে সাতদিন ধরে ঘুরলো আর তার পরেই সেই প্রাচীর ভেঙ্গে পড়ল৷ 31 বিশ্বাসে বেশ্য়া রাহব, ইস্রায়েলীয় গুপ্তচরদের সাদরে গ্রহণ করে তাদের সঙ্গে বন্ধুর মতো ব্যবহার করায় নগর ধ্বংস হবার সময় ঈশ্বরের অবাধ্য লোকদের সঙ্গে সে বিনষ্ট হল না৷ 32 তোমাদের কাছে কি আমি আরো দৃষ্টান্ত তুলে ধরব? আমার যথেষ্ট সময় নেই য়ে আমি তোমাদের কাছে গিদিযোন, বারক, শিম্শোন, যিপ্তহ, দাযূদ, শমূয়েল ও ভাববাদীদের সব কথা বলি; ওঁদের প্রচণ্ড বিশ্বাস ছিল৷ 33 তাঁরা বিশ্বাসের দ্বারা রাজ্যসকল জয় করেছিলেন৷ তাঁরা যা ন্যায় তাই করলেন এবং ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতিগুলি পেলেন৷ তাঁরা সিংহদের মুখ বন্ধ করেছিলেন৷ 34 কেউ কেউ আগুনের তেজ নিস্প্রভ করলেন, তরবারির আঘাতে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেলেন৷ এঁদের বিশ্বাস ছিল তাই এঁরা এসব করতে পেরেছিলেন৷ বিশ্বাসের বলেই দুর্বল লোকেরা বলশালী লোকে রূপান্তরিত হয়েছিলেন; তাঁরা যুদ্ধের সময় মহাবিক্রমী হয়ে শত্রু সৈন্যদের পরাস্ত করেছিলেন৷ 35 কোন কোন লোক মৃতদের মধ্য থেকে পুনর্জীবিত হলেন আর পরিবারের নারীরা তাঁদের স্বামীদের ফিরে পেলেন৷ আবার অনেকে ভয়ঙ্কর পীড়ন সহ্য করলেন তবু তার থেকে নিষ্কৃতি চাইলেন না৷ তাঁরা বিশ্বাসে এসব সহ্য করলেন য়েন মহত্তর পুনরুত্থানের ভাগী হন৷ 36 কেউ কেউ বিদ্রূপ ও চাবুকের মার সহ্য করলেন, আবার অনেকে বেড়ি বাঁধা অবস্থায় কারাবাস করলেন৷ 37 কেউ বা মরলেন পাথরের আঘাতে, কাউকে বা করাত দিয়ে দুখণ্ড করা হল, কাউকে তরবারির আঘাতে মেরে ফেলা হল৷ কেউ কেউ নিঃস্ব অবস্থায় মেষ ও ছাগের চামড়া পরে ঘুরে বেড়াতেন, নির্যাতিত হতেন এবং খারাপ ব্যবহার পেতেন৷ 38 জগতটা এই ধরণের লোকের য়োগ্য ছিল না৷ এঁরা গুহায় ও মাটির গর্তে আশ্রয় নিয়ে মরুভূমি ও পর্বতে ঘুরে বেড়াতেন৷ 39 বিশ্বাসের জন্য এঁদের সুখ্যাতি করা হল, কিন্তু তাঁরা কেউ ঈশ্বরের সেই মহান প্রতিশ্রুতি পান নি৷ 40 ঈশ্বর আমাদের জন্য মহত্তর কিছু করতে চেয়েছিলেন, যাতে তাঁরা আমাদের সাথে মিলিত হয়ে পরিপূর্ণ হতে পারেন৷
Hebrews 12:1 আমাদের চারপাশে ঈশ্বর বিশ্বাসী ঐসব মানুষরা রয়েছেন৷ তাদের জীবন ব্যক্ত করছে বিশ্বাসের প্রকৃতরূপ, তাই আমাদের উচিত তাদের অনুসরণ করা৷ আমাদেরও উচিত সেই দৌড়ে য়োগ দেওয়া যা আমাদের জন্য নির্দিষ্ট আছে, কখনই থেমে যাওয়া উচিত নয়৷ জীবনে যা বাধার সৃষ্টি করতে পারে এমন সব কিছু আমরা য়েন দূরে ফেলে দিই৷ য়ে পাপ সহজে জড়িয়ে ধরে তা য়েন দূরে ঠেলে দিই৷ 2 আমাদের সর্বদাই যীশুর আদর্শ অনুযাযী চলা উচিত৷ বিশ্বাসের পথে যীশুই আমাদের নেতা; তিনি আমাদের বিশ্বাসকে পূর্ণতা দেন৷ তিনি ক্রুশের উপর মৃত্যুভোগ করলেন; ক্রুশের মৃত্যুর অপমান তুচ্ছ জ্ঞান করে তা সহ্য করলেন৷ তাঁর সম্মুখে ঈশ্বর য়ে আনন্দ রেখেছিলেন সেই দিকে দৃষ্টি রেখেই যীশু তা করতে পেরেছিলেন৷ এখন তিনি ঈশ্বরের সিংহাসনের ডানপাশে বসে আছেন৷ 3 যীশুর কথা ভাবো, যখন পাপীরা তাঁর বিরোধিতা করে অনেক নিন্দা মন্দ করেছিল, তখন তিনি এই সমস্ত বিরোধিতা সহ্য করেছিলেন৷ যীশু তা করেছিলেন যাতে তোমরাও তাঁর মতো সহিষ্ণু হও এবং চেষ্টা করা থেকে বিরত না হও৷ 4 পাপের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তোমরা এখনও মৃত্যুর মুখোমুখি হও নি৷ তোমরা ঈশ্বরের সন্তান, তিনি তোমাদের সান্ত্বনার কথা বলেন৷ 5 তোমরা সন্ভবতঃ সেই উত্সাহব্যঞ্জক কথা ভুলে গেছ৷ তিনি বলেছেন:‘হে আমার পুত্র, প্রভু যখন তোমায় শাসন করেন, মনে করো না য়ে তার কোন মূল্য নেই৷ তিনি যখন তোমায় সংশোধন করেন তখন নিরুত্সাহ হযো না৷ 6 কারণ প্রভু যাকে ভালবাসেন তাকেই শাসন করেন, সমস্ত পুত্রই পিতা কর্ত্তৃক শাসিত হয়৷’হিতোপদেশ 3:11-12 7 এখন যা কিছু কষ্ট পাচ্ছ তা পিতার কাছ থেকে শাসন বলে মেনে নাও৷ পিতা য়েমন তাঁর সন্তানকে শাসন করেন, তেমনি করেই ঈশ্বর তোমাদের জীবনে এইসব আসতে দিয়েছেন৷ সব সন্তানই পিতার অনুশাসনের অধীন৷ 8 তোমরা যদি কখনই শাসিত না হও (পুত্র মাত্রেই শাসিত হয়) তবে তোমরা তো তাঁর প্রকৃত সন্তান নও, যথার্থ পুত্র নও৷ 9 এই পৃথিবীতে আমাদের সবার পিতাই আমাদের মার্জিত ও সংশোধিত করেন এবং আমরা তাঁদের সম্মান করি৷ যিনি আমাদের আত্মিক পিতা তাঁর অনুশাসনের কাছে আমাদের সত্যিকারের জীবনের জন্য আমরা কি আরো বেশী মাথা নোয়াবো না? 10 পৃথিবীতে আমাদের পিতারা অল্প সময়ের জন্য শাস্তি দেন৷ কিন্তু ঈশ্বর আমাদের সাহায্য করার জন্য শাস্তি দেন য়েন আমরা তাঁর মত পবিত্র হই৷ 11 কোনও ধরণের শাসনই শাসনের মুহূর্তে আমাদের আনন্দ দেয় না, বরং আমরা তাতে দুঃখ পাই; কিন্তু এটা যাদের জীবনকে প্রভাবিত করেছে, পরে তাদের জীবনে ধার্মিকতা ও শান্তি রাজত্ব করে৷ 12 তাই তোমাদের শিথিল হাত দুটোকে শক্ত করো, অবশ হাঁটু দুটোকে সবল করে তোল৷ 13 তোমাদের চলার পথ সরল কর, খোঁড়া পা য়েন গাঁট থেকে খুলে না যায়, বরং তা য়েন সুস্থ হয়৷ 14 সবার সঙ্গে শান্তিতে জীবনযাপন করতে চেষ্টা কর, কারণ এই ধরণের জীবন ছাড়া কেউ প্রভুর দর্শন লাভ করে না৷ 15 দেখো, কেউ য়েন ঈশ্বরের অনুগ্রহ থেকে বঞ্চিত না হও৷ দেখো তোমাদের মধ্যে য়েন তিক্ততার শেকড় না গজিয়ে ওঠে৷ তোমাদের মধ্যে এমন লোক থাকলে গোটা দলকে কলুষিত করতে পারে৷ 16 সাবধান, কেউ য়েন য়ৌন পাপে না পড়ে অথবা এষৌর মতো ঈশ্বর ভক্তি জলাঞ্জলি না দেয়৷ এষৌ ছিল জ্যেষ্ঠ পুত্র, সে তার পিতার সমস্ত কিছুর উত্তরাধিকারী ছিল; কিন্তু এক বেলার খাবারের জন্য সে নিজের জন্মাধিকার বিকিয়ে দিয়েছিল৷ 17 তোমরা তো জানো, পরে সে বাবার আশীর্বাদ পাওয়ার চেষ্টা করেও বিফল হল৷ তাঁর বাবা তাকে সেই আশীর্বাদ দিতে অস্বীকার করলেন, কারণ এষৌ তার ভুল শোধরাবার কোন পথ খুঁজে পেল না৷ 18 তোমরা এক নতুন স্থানে এসেছ; ইস্রায়েলীয়রা য়েমন এক পাহাড়ের সামনে এসেছিল এ স্থান তেমন নয়৷ তোমরা সেই পাহাড়ের কাছে আসো নি যা স্পর্শ করা য়েত না, যা আগুনে জ্বলছিলো, তোমরা এমন স্থানে আসোনি যা কিনা অন্ধকারময়, বিষাদময়, ঝঞ্ঝা বিক্ষুদ্ধ৷ 19 তারা য়েমন শুনেছিল তেমন তূরীধ্বনি অথবা সেই কন্ঠস্বর তোমরা শুনতে পাচ্ছ না, যা শুনে তারা মিনতি করেছিল য়েন আর কোন বাক্য তাদের কখনও শোনানো না হয়৷ 20 কারণ য়ে আদেশ তাদের দেওয়া হয়েছিল তা তারা সহ্য করতে পারল না৷ তাদের বলা হল, ‘যদি কোন কিছু, এমন কি কোন পশু পর্যন্ত পর্বত স্পর্শ করে, তাকে পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলতে হবে৷’ 21 সেই দৃশ্য এমন ভয়ঙ্কর ছিল য়ে মোশি বললেন, ‘আমি অত্যন্ত ভয় পেয়েছি আর কাঁপছি৷’ 22 কিন্তু তোমরা সেরকম কোন স্থানে আসো নি৷ য়ে নতুন স্থানে তোমরা এসেছ তা হল সিযোন পর্বত৷ তোমরা জীবন্ত ঈশ্বরের নগরী স্বর্গীয় জেরুশালেমে এসেছ৷ তোমরা সেই জায়গায় এসেছ য়েখানে হাজার হাজার স্বর্গদূতরা পরমানন্দে একত্রিত হয়৷ 23 তোমরা এসেছ ঈশ্বরের প্রথম জাতদের সভাস্থলে, যাদের নাম স্বর্গে লিখিত রয়েছে৷ যিনি সকলের বিচারকর্তা সেই ঈশ্বরের কাছে এসেছ৷ সিদ্ধিপ্রাপ্ত আত্মার সমাবেশে এসেছ৷ 24 তোমরা যীশুর কাছে এসেছ যিনি ঈশ্বরের কাছ থেকে তাঁর লোকদের জন্য নতুন চুক্তি এনেছেন৷ সেই ছেটানো রক্তের কাছে এসেছ যা হেবলের রক্ত থেকে উত্তম কথা বলে৷ 25 সাবধান, ঈশ্বর যখন কথা বলেন তা শুনতে অসম্মত হযো না৷ তিনি পৃথিবীতে যখন সতর্কবাণী উচ্চারণ করলেন যাঁরা তাঁর কথা শুনতে অসম্মত হল তারা রক্ষা পেল না৷ এখন ঈশ্বর স্বর্গ থেকে বলছেন, তাঁর কথা না শুনলে তোমাদের অবস্থা ঐ লোকদের থেকেও ভয়াবহ হবে একথা সুনিশ্চিত জেনো৷ 26 সেই সময় তাঁর কথায় পৃথিবী কেঁপে উঠেছিল৷ কিন্তু এখন তিনি প্রতিজ্ঞা করেছেন, ‘আমি আর একবার পৃথিবীকে কাঁপিয়ে তুলব৷ এমনকি স্বর্গকেও কাঁপিয়ে তুলব৷’ 27 ‘আর একবার’ এর অর্থ হল সমস্ত সৃষ্ট বস্তু যাদের নাড়ানো যায় তাদের তিনি দূর করে দেবেন, সুতরাং যা কিছু অনড় তা হবে চিরস্থাযী৷ 28 আমাদের কৃতজ্ঞ হওয়া উচিত কারণ আমরা একটা জগতকে পেয়েছি যাকে নাড়ানো যায় না৷ আমরা কৃতজ্ঞ চিত্তে ঈশ্বরের উপাসনা করব যাতে তিনি প্রীত হন৷ আমরা তাঁর উপাসনা করবো শ্রদ্ধা ও ভীতির সঙ্গে৷ 29 কারণ আমাদের ঈশ্বর সর্বগ্রাসী অগ্নিস্বরূপ৷
Hebrews 13:1 তোমরা পরস্পরকে সাথী খ্রীষ্টীয়ান হিসেবে ভালবেসে য়েও৷ 2 অতিথি সেবা করতে ভুলো না৷ অতিথি সেবা করতে গিয়ে কেউ কেউ না জেনে স্বর্গদূতদের আতিথ্য করেছেন৷ 3 যাঁরা বন্দী অবস্থায় কারাগারে আছেন তাঁদের সঙ্গে তোমরা নিজেরাও য়েন বন্দী এ কথা মনে করে তাঁদের কথা ভুলো না৷ যাঁরা যন্ত্রণা পাচ্ছে তাদের ভুলো না; মনে রেখো তোমরাও তাদের সঙ্গে সঙ্গে যন্ত্রণা পাচ্ছো৷ 4 বিবাহ বন্ধনকে তোমরা সবাই অবশ্য মর্য়াদা দেবে, যাতে দুটি মানুষের মধ্যে পবিত্র সম্পর্ক রক্ষিত হয়, কারণ যাঁরা ব্যভিচারী ও লম্পট, ঈশ্বর তাদের বিচার করবেন৷ 5 তোমাদের আচার ব্যবহার ধনাসক্তিবিহীন হোক৷ তোমাদের যা আছে তাতেই সন্তুষ্ট থাক কারণ তিনি বলেছেন,‘আমি তোমাকে কখনও ত্যাগ করবো না; আমি কখনও তোমাকে ছাড়বো না৷’দ্বিতীয় বিবরণ 31:6 6 তাই আমরা সাহসের সঙ্গে বলতে পারি,‘প্রভুই আমার সহায়; আমি ভয় করবো না; মানুষ আমার কি করতে পারে৷’গীতসংহিতা 118:6 7 তোমাদের নেতাদের কথা স্মরণ কর, যাঁরা তোমাদের কাছে ঈশ্বরের বাণী প্রচার করে গেছেন৷ তাঁদের জীবনের আদর্শ ও উত্তম বিষয়গুলির চিন্তা কর, ও তাঁদের য়ে বিশ্বাস ছিল তার অনুসারী হও৷ 8 যীশু খ্রীষ্ট কাল, আজ আর চিরকাল একই আছেন৷ 9 নানাপ্রকার অদ্ভুত সব শিক্ষার দ্বারা বিপথে চলে য়েও না৷ হৃদয়কে ঈশ্বরের অনুগ্রহে শক্তিমান করো তবে খাওয়ার নিয়মকানুন পালনের দ্বারা নয় কারণ যাঁরা খাদ্য়াভ্যাসের খুঁটিনাটি মেনে চলেছে তার কোনও সুফলই তারা পায় নি৷ 10 আমাদের এক নৈবেদ্য আছে৷ য়ে যাজকরা পবিত্র তাঁবুতে উপাসনা করেন তাঁদের সেই নৈবেদ্য ভোজন করার কোন অধিকার নেই৷ 11 মহাযাজক পশুদের রক্ত নিয়ে মন্দিরের মহাপবিত্রস্থানে য়েতেন পাপের বলি হিসেবে; কিন্তু পশুদের দেহগুলি শিবিরের বাইরে পুড়িয়ে ফেলা হত৷ 12 ঠিক সেই মতোই যীশু নগরের বাইরে দুঃখভোগ করলেন৷ যীশু বলি হলেন য়েন তাঁর নিজের রক্তে তাঁর লোকদের পবিত্র করতে পারেন৷ 13 তাই আমাদেরও ঐ শিবিরের বাইরে যীশুর কাছে যাওয়া উচিত৷ যীশু য়েমন লজ্জা, অপমান সহ্য করেছিলেন, আমাদের উচিত্ সেই লজ্জা, অপমান বহন করা, 14 কারণ এখানে আমাদের এমন কোন নগর নেই যা চিরস্থাযী; কিন্তু য়ে নগর ভবিষ্যতে আসছে আমরা তারই প্রত্যাশায় রয়েছি৷ 15 তাই যীশুর মাধ্যমে আমরা ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে স্তবস্তুতি উতসর্গ করতে য়েন বিরত না হই৷ সেই বলিদান হল স্তব স্তুতি, যা আমরা তাঁর নাম স্বীকারকারী ওষ্ঠাধরে করে থাকি৷ 16 অপরের উপকার করতে ভুলো না৷ যা তোমার নিজের আছে তা অপরের সঙ্গে ভাগ করে নিতে ভুলো না, কারণ এই ধরণের বলিদান উত্সর্গে ঈশ্বর প্রীত হন৷ 17 তোমাদের নেতাদের আদেশ মেনে চলো, তাঁদের কর্তৃত্ত্বের অধীন হও, কারণ তোমাদের আত্মাকে নিরাপদে রাখার জন্য তাঁরা সতর্ক দৃষ্টি রাখছেন৷ তাঁদের কথা মেনে চলো কারণ তাঁদের এব্যাপারে হিসেব নিকেশ করতে হবে, যাতে তাঁরা আনন্দে এই কাজ করতে পারেন, যন্ত্রণা ও দুঃখ নিয়ে নয়৷ তাঁদের কাজকে কঠিন করে তুললে তোমাদের লাভ হবে না৷ 18 আমাদের জন্য প্রার্থনা করো৷ আমরা নিশ্চয় করে বলতে পারি য়ে, আমাদের শুদ্ধ বিবেক আছে; আর জীবনে যা কিছু করি তা শ্রেষ্ঠ উদ্দেশ্য নিয়ে করি৷ 19 আমি তোমাদের বিশেষভাবে এই প্রার্থনা করতে বলছি য়ে, আমি য়েন শিগ্গির তোমাদের কাছে ফিরে য়েতে পারি৷ এটাই আমি অন্য সব কিছু থেকে বেশী করে চাইছি৷ 20 শান্তির ঈশ্বর যিনি মৃতদের মধ্য থেকে আমাদের প্রভু যীশুকে ফিরিয়ে এনেছেন, রক্তের মাধ্যমে শাশ্বত চুক্তি অনুযাযী যিনি মহান মেষপালক, প্রার্থনা করি সেই ঈশ্বর য়েন তোমাদের প্রযোজনীয় সব উত্তম বিষয়গুলি দেন যাতে তোমরা তাঁর ইচ্ছা পালন করতে পার৷ আমি নিবেদন করি য়েন যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমেই তিনি তা সাধন করেন৷ যুগে যুগে যীশুর মহিমা অক্ষয় হোক৷ 21 22 প্রিয় ভাই ও বোনেরা, এই চিঠিতে আমি সংক্ষেপে য়ে উত্সাহজনক কথা তুলে ধরলাম তা ধৈর্য্য ধরে শুনবে৷ 23 তোমাদের জানাচ্ছি আমাদের ভাই তীমথিয় জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন৷ তিনি যদি শিগ্গির আসেন তবে আমি তাঁকে নিয়ে তোমাদের সঙ্গে দেখা করতে যাব৷ 24 তোমাদের নেতাদের ও ঈশ্বরের সকল লোককে আমাদের শুভেচ্ছা জানিও৷ যাঁরা ইতালী থেকে এখানে এসেছেন তাঁরা সকলে তোমাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন৷ 25 ঈশ্বরের অনুগ্রহ তোমাদের সকলের সহবর্তী হোক৷
James 1:1 আমি যাকোব, ঈশ্বর ও প্রভু যীশু খ্রীষ্টের দাস, নানা দেশে ছড়িয়ে থাকা ঈশ্বরের বারো গোষ্ঠীর লোকদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি৷ 2 আমার ভাই ও বোনেরা, তোমরা যখন নানারকম প্রলোভনের মধ্যে পড়, তখন তা মহা আনন্দের বিষয় বলে মনে কর৷ 3 একথা জেনো, এই সকল বিষয় তোমাদের বিশ্বাসের পরীক্ষা করে ও তোমাদের ধৈর্য্যগুণ বাড়িয়ে দেয়৷ 4 সেই ধৈর্য্যগুণকে তোমাদের জীবনে পুরোপুরিভাবে কাজ করতে দাও৷ এর ফলে তোমরা নিখুঁত ও সম্পূর্ণ হয়ে উঠবে এবং কোন বিষয়ে তোমাদের কোন অভাব থাকবে না৷ 5 তোমাদের কারোর যদি প্রজ্ঞার অভাব হয়, তবে সে তার জন্যে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করুক৷ ঈশ্বর দয়াবান; তিনি সকলকে উদারভাবে এবং আনন্দের সঙ্গে দেন৷ অতএব ঈশ্বর তোমাদের প্রজ্ঞা প্রদান করবেন৷ 6 কিন্তু ঈশ্বরের কাছে চাইতে হলে কোনরকম সন্দেহ না রেখে সম্পূর্ণ বিশ্বাসের সঙ্গেই তা চাইতে হবে, কারণ য়ে সন্দেহ করে, সে ঝোড়ো হাওয়ায় আলোড়িত উত্তাল সমুদ্র তরঙ্গের মতো৷ 7 এই প্রকার লোক দুই মনের মানুষ, প্রত্যেকটি কাজেই চঞ্চল ও অস্থির৷ এমন লোকের মনে করা উচিত নয় য়ে প্রভুর কাছে সে কিছু পাবে৷ 8 9 য়ে বিশ্বাসী ভাই গরীব, সে গর্ব অনুভব করুক, কারণ ঈশ্বর তাকে আত্মিকভাবে উন্নত করেছেন৷ 10 য়ে বিশ্বাসী ভাই ধনী, সে গর্ব বোধ করুক, কারণ ঈশ্বর তাকে দেখিয়েছেন য়ে সে আত্মিকভাবে দরিদ্র৷ ধনী ব্যক্তি একদিন বুনো ফুলের মতো ঝরে যাবে৷ 11 সূর্য় ওঠার পর তার তাপ ক্রমশঃ বেড়েই যায়, তাপে তৃণ ঝলসে যায় ও ফুল ঝরে যায়৷ ফুল সুন্দর হলেও তার রূপের বাহার বিলীন হয়ে যায়, তেমনি ঘটে ধনী ব্যক্তির জীবনে৷ তার কাজের পরিকল্পনাকালেই সে হঠাত্ মৃত্যুমুখে পড়ে৷ 12 পরীক্ষার সময়ে য়ে ধৈর্য্য ধরে ও স্থির থাকে সে ধন্য, কারণ বিশ্বাসের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে ঈশ্বর তাকে পুরস্কার স্বরূপ অনন্ত জীবন দেবেন৷ ঈশ্বরকে যাঁরা ভালবাসে তাদের তিনি এই জীবন দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন৷ 13 কেউ যখন প্রলুদ্ধ হয় তখন য়েন সে না বলে, ‘ঈশ্বর আমাকে প্রলুদ্ধ করেছেন৷’ মন্দ ঈশ্বরকে প্রলোভিত করতে পারে না এবং ঈশ্বরও নিজে কাউকে প্রলোভনে ফেলেন না৷ 14 প্রত্যেক মানুষ তার নিজের মন্দ অভিলাষের দ্বারা প্রলোভিত হয়৷ তার মন্দ ইচ্ছা তাকে পাপের দিকে টেনে নিয়ে যায় এবং ফাঁদে ফেলে৷ 15 এই মন্দ ইচ্ছা গর্ভবতী হয়ে পাপের জন্ম দেয় এবং পাপ পূর্ণতা লাভ করে মৃত্যুর জন্ম দেয়৷ 16 আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা, এ ব্যাপারে তোমরা প্রতারিত হযো না৷ 17 সমস্ত ভাল ও নিখুঁত দান স্বর্গ থেকে আসে, কারণ পিতা ঈশ্বর যিনি স্বর্গীয় আলো সৃষ্টি করেছিলেন তিনি সর্বদা একই আছেন; তাঁর কোনও পরিবর্তন হয় না৷ 18 ঈশ্বর তাঁর নিজের ইচ্ছায় সত্যের বাক্য়ের মধ্য দিয়ে আমাদের জীবন দিয়েছেন৷ তিনি চান য়েন তাঁর সমস্ত সৃষ্টির মধ্যে আমরা অগ্রগন্য হই৷ 19 আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা, তোমরা শ্রবণে সত্বর কিন্তু কথনে ধীর হও৷ চট করে রেগে য়েও না৷ 20 ক্রোধ কখনই ঈশ্বরের প্রত্যাশা অনুযাযী সত্ জীবন যাপনের সহায়ক হতে পারে না৷ 21 তাই তোমাদের জীবন থেকে সব রকমের অপবিত্রতা ও যা কিছু মন্দ যা তোমাদের চারপাশে রয়েছে তাকে দূরে সরিয়ে দাও; আর নম্রভাবে ঈশ্বরের শিক্ষা গ্রহণ কর যা তিনি তোমাদের হৃদয়ে বপন করেছেন৷ 22 ঈশ্বরের বাক্য অনুসারে কাজ কর, শুনে কিছু না করে বসে থাকলে চলবে না৷ শুধুমাত্র ঈশ্বরের বাক্যের শ্রোতা হয়ে নিজেকে ঠকিও না৷ 23 যদি কেউ শুধুমাত্র ঈশ্বরের বাক্য়ের শ্রোতাই হয় আর সেই মতো কাজ না করে, তবে সে এমন একজন লোকের মতো য়ে আয়নার দিকে তাকায়, 24 নিজেকে দেখে এবং চলে যাবার সঙ্গে সঙ্গে সে নিজে কেমন দেখতে তা ভুলে যায়৷ 25 কিন্তু সেই ব্যক্তি প্রকৃত সুখী য়ে ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থা, যা মানুষের কাছে মুক্তি নিয়ে আসে তা ভালভাবে অধ্যয়ন করতে থাকে ও তা পালন করে এবং যা শ্রবন করে তা ভুলে যায় না, এই বাধ্যতা তাকে সুখী করে তোলে৷ 26 যদি কোন ব্যক্তি নিজেকে ধার্মিক মনে করে, অথচ নিজের মুখ না সামলায় তবে, সে নিজেকে ঠকায়, তার ‘ধার্মিকতা’ মূল্যহীন৷ 27 য়ে ধার্মিকতা ঈশ্বর বিশুদ্ধ ও খাঁটি হিসেবে অনুমোদন করেন তা হল অনাথ ও বিধবাদের দুঃখ কষ্টে দেখাশোনা করা এবং নিজেকে পৃথিবীর মন্দ প্রভাব থেকে দূরে রাখা৷
James 2:1 আমার ভাই ও বোনেরা, তোমরা আমাদের মহিমাময় প্রভু যীশু খ্রীষ্টেতে বিশ্বাসী, সুতরাং তোমরা পক্ষপাতিত্ব করো না৷ 2 মনে কর কোন ব্যক্তি হাতে সোনার আংটি ও পরনে দামী পোশাক পরে তোমাদের সভায় এল৷ সেই সময় একজন গরীব লোকও ময়লা পোশাক পরে সেখানে এল, 3 যদি তোমরা সেই দামী পোশাক পরা মানুষটির দিকে বিশেষ নজর দিয়ে বল, ‘এই ভাল চেয়ারে বসুন;’ কিন্তু সেই গবীর লোকটিকে বল, ‘তুমি ওখানে দাঁড়াও!’ কিংবা ‘তুমি আমার এই পায়ের কাছে মাটিতে বস!’ 4 তাহলে তোমরা কি করছ? এক ব্যক্তি থেকে আরেকজনকে কি বেশী সম্মানের পাত্র বলে বিচার করছ না? তোমরা কি মন্দ মাপকাঠিতে লোকের বিচার করছ না? 5 আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা শোন, সংসারে যাঁরা গরীব, ঈশ্বর কি তাদের বিশ্বাসে ধনী হবার জন্য মনোনীত করেন নি? যাঁরা ঈশ্বরকে ভালবাসে তাদের য়ে রাজ্য দেবেন বলে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সেই রাজ্যের অধিকারী হবার জন্য এই গরীব লোকদের কি তিনি বেছে নেন নি? 6 কিন্তু তোমরা সেই গরীব লোকটিকে কোন সম্মান দিলে না৷ ধনীরাই কি তোমাদের দাবিয়ে রাখে না? তারাই কি তোমাদের আদালতে টেনে নিয়ে যায় না? 7 য়ে উত্তম নাম (যীশু) তোমাদের ওপর কীর্ত্তিত হয়েছে, তোমরা য়াঁর আপনজন, ধনীরাই কি সেই সম্মানিত নামের নিন্দা করে না? 8 সমস্ত বিধি-ব্যবস্থার উর্দ্ধে একটি বিধি আছে৷ এই রাজকীয় ব্যবস্থাটি শাস্ত্রে রয়েছে: ‘তোমরা প্রতিবেশীকে নিজের মতো ভালবাসবে৷’তোমরা যদি সেই বিধি-ব্যবস্থা পালন কর তবে ভালই করছ৷ 9 কিন্তু তোমরা যদি কারোর প্রতি পক্ষপাতিত্ব কর তবে তোমরা পাপ করছ; আর এই রাজকীয় ব্যবস্থা তোমাদের ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থা ভঙ্গকারী হিসেবে দোষী সাব্যস্ত করবে৷ 10 কেউ যদি সমস্ত ব্যবস্থা পালন করে ও তার মধ্যে কেবল যদি একটি ব্যবস্থা পালন করতে ব্যর্থ হয়, তবে সে সমস্ত ব্যবস্থা লঙঘন করার দোষে দোষী সাব্যস্ত হয়৷ 11 ঈশ্বর বলেছেন, ‘ব্যভিচার করো না৷’আবার তিনিই বলেছেন, ‘নরহত্যা করো না৷’এবার তুমি যদি ব্যভিচার না করে নরহত্যা কর, তাহলেও তুমি একজন ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থা ভঙ্গকারী৷ 12 য়ে ব্যবস্থা তোমাদের স্বাধীন করেছে তারই দ্বারা তোমাদের বিচার হবে, সুতরাং তোমরা য়ে কোন কাজ করার আগে ও কথা বলার পূর্বে এই সব স্মরণ কর৷ 13 তোমাদের উচিত অপরের প্রতি দয়া করা, য়ে কারও প্রতি দয়া করে নি, ঈশ্বরের কাছ থেকে সে বিচারের সময় দয়া পাবে না৷ কিন্তু য়ে দয়া করেছে সে বিচারের সময় নির্ভয়ে দাঁড়াতে পারবে৷ 14 আমার ভাই ও বোনেরা, যদি কেউ বলে আমার বিশ্বাস আছে, অথচ সেই অনুসারে কোন কাজ না করে, তা হলে তার বিশ্বাসের কোন মূল্য নেই৷ সেই বিশ্বাস কি তাকে রক্ষা করতে পারবে? কখনই না৷ 15 ধর, কোন খ্রীষ্ট বিশ্বাসী ভাই বা বোনের অন্ন বস্ত্রের অভাব আছে, 16 এই অবস্থায় তাকে কোন সাহায্য না করে তোমরা যদি মুখে বল, ‘ঈশ্বর তোমার সহায় হোন, খেয়ে পরে থাক৷’ কিন্তু তার উপকার করতে ঐ প্রযোজনীয় দ্রব্য না দাও তবে ঐসব কথার কি মূল্য আছে? 17 ঠিক সেইভাবে বিশ্বাস অনুযাযী যদি কোন কাজ না হয় তবে সে বিশ্বাস মৃত বলেই গন্য হয়৷ সেই বিশ্বাস শুধু বিশ্বাসই, তার বেশী কিছু নয়৷ 18 কিন্তু কেউ হয়তো বলবে, ‘তোমার বিশ্বাস আছে, আর আমার কাজ আছে৷ কাজ বাদ দিয়ে তোমার বিশ্বাস আমাকে দেখাও আর আমি আমার কাজের মধ্যে আমার বিশ্বাস তোমাকে দেখাব৷’ 19 তুমি কি বিশ্বাস কর য়ে এক ঈশ্বর রয়েছেন? এমনকি ভূতরাও তা বিশ্বাস করে ও ভয়ে কাঁপে৷ 20 ওহে মুর্খ মানুষ! কর্মবিহীন বিশ্বাস য়ে কোন কাজের নয়, তুমি কি চাও আমি তা প্রমাণ করি? 21 অব্রাহাম আমাদের পিতৃপুরুষ ছিলেন৷ যখন তিনি তাঁর পুত্র ইসহাককে যজ্ঞ বেদীর ওপর উত্সর্গ করেন, তখন তাঁর কাজের জন্য তিনি ঈশ্বরের কাছে স্বীকৃতি পান৷ 22 কাজেই লক্ষ্য কর অব্রাহামের বিশ্বাস ও কর্ম একসাথে কাজ করেছিল এবং তাঁর বিশ্বাস কর্মের মধ্যে সম্পূর্ণ হয়েছিল৷ 23 এইভাবে শাস্ত্রের সেই বাক্য পূর্ণ হল৷ য়েখানে বলা হয়েছে, ‘অব্রাহাম ঈশ্বরে বিশ্বাস রাখলেন৷ ঈশ্বরের কাছে সেই বিশ্বাস গ্রহণয়োগ্য হল এবং সেই বিশ্বাস অব্রাহাম ঈশ্বরের কাছে নির্দোষ গণিত হলেন;’ আর তাঁকে ‘ঈশ্বরের বন্ধু’ বলা হল৷ 24 তাহলে তোমরা দেখলে য়ে মানুষ তার কাজের মাধ্যমেই ঈশ্বরের কাছে নির্দোষ বলে গণিত হয়, কেবলমাত্র তার বিশ্বাসের দ্বারা নয়৷ 25 আর একটি দৃষ্টান্ত হিসাবে রাহবের কথা বলা য়েতে পারে৷ বেশ্য়া রাহব কি তার কাজের মাধ্যমেই ঈশ্বরের চোখে নির্দোষ গণিত হয় নি? সে গুপ্তচরদের (ঈশ্বরের লোক) লুকিয়ে রেখে পরে তাদের অন্য পথ দিয়ে নিরাপদে চলে য়েতে সাহায্য করেছিল৷ 26 দেহের মধ্যে প্রাণ যখন থাকে না, তখন সেই দেহ য়েমন মৃত, তেমনি কর্মবিহীন বিশ্বাসও মৃত৷
James 3:1 আমার ভাই ও বোনেরা, তোমাদের মধ্যে বেশী লোকের শিক্ষক হওয়ার জন্য চেষ্টা করার দরকার নেই, কারণ তোমরা জান য়ে আমরা শিক্ষক বলে অন্যদের থেকে আমাদের বিচার কঠোর হবে৷ 2 কারণ আমরা সকলেই নানাভাবে অন্যায় করে থাকি৷ যদি কেউ তার কথাবার্তায় অসংযত না হয়, তবে সে একজন খাঁটি লোক, সে সব বিষয়ে নিজের দেহকে সংযত রাখতে পারে৷ 3 ঘোড়াদের বশে রাখার জন্য, আমরা তাদের মুখে বলগা দিই এবং তার ফলে তাদের সমস্ত দেহকে আমরা আমাদের পছন্দমত য়ে কোনও দিকে পরিচালিত করতে পারি৷ 4 আবার জাহাজের কথা ভাব, তারা কত প্রকাণ্ড, প্রচণ্ড বাতাসের মধ্যে দিয়ে চলে, অথচ ছোট্ট একটা হালের সাহায্যে নাবিক সেটাকে য়েদিকে ইচ্ছা সেদিকে নিয়ে যায়৷ 5 তেমনি জিভও দেহের একটা ছোট অঙ্গ, তবু তা বড় বড় কথা বলে৷দেখ আগুনের একটা ছোট ফুলকি কেমন করে এক বিরাট বনকে পুড়িয়ে ছারখার করে দেয়৷ 6 জিভও তেমনি আগুনের ফুলকির মতো৷ আমাদের দেহের অঙ্গগুলির মধ্যে জিভ হল অধর্মের এক জগত, কারণ জিভ থেকেই নানা মন্দ আমাদের সমস্ত দেহে ছড়িয়ে পড়ে৷ নরকের আগুনে জিভ জ্বলে উঠে গোটা জীবনকে প্রভাবিত করে৷ 7 মানুষ সব রকমের পশু-পাখী, সরীসৃপ ও সমুদ্রের প্রাণীকে দমন করে রাখতে পারে আর তাদের বশে রাখতে পারে; 8 কিন্তু কোন মানুষ জিভকে বশে রাখতে পারে না, এই জিভ সব সময়ই অস্থির, মন্দ ও মারাত্মক বিষে ভরা৷ 9 এই জিভ দিয়েই আমরা কখনও আমাদের প্রভু ও পিতার প্রশংসা করি, আবার কখনও বা ঈশ্বরের সাদৃশ্যে সৃষ্ট মানুষকে অভিশাপ দিই৷ 10 একই মুখ থেকে প্রশংসা ও অভিশাপ নির্গত হয়৷ ভাই ও বোনেরা, এমন হওযা উচিত নয়৷ 11 একই উত্স থেকে কি কখনও মিষ্টি ও তেতো দুরকম জল নিঃসৃত হয়? 12 আমার ভাই ও বোনেরা, দ্রাক্ষা লতায় কি ডুমুর ফল ধরে? তেমনি নোনা জলের উত্স থেকে কি মিষ্টি জল পাওয়া যায়? 13 তোমাদের মধ্যে জ্ঞানী ও বুদ্ধিমান কে? সে সত্ জীবনযাপন করে ও নম্রতার সাথে ভাল কাজ করে গর্বহীনভাবে তার বিজ্ঞতা প্রকাশ করুক৷ 14 তোমাদের মনে যদি তিক্ততা, ঈর্ষা ও স্বার্থপরতা থাকে তাহলে তোমাদের জ্ঞানের বড়াই করো না; করলে তোমাদের গর্ব হবে আর এক মিথ্যা, যা সত্যকে ঢেকে রাখে৷ 15 এই ধরণের ‘জ্ঞান’ যা ঈশ্বর থেকে লাভ হয় না তা পার্থিব, আত্মিক নয়, তা দিয়াবলের কাছ থেকে আসে৷ 16 য়েখানে ঈর্ষা ও স্বার্থপরতা রয়েছে সেখানেই বিশৃঙ্খলা ও সব রকমের নোংরামি থাকে৷ 17 কিন্তু য়ে জ্ঞান ঈশ্বর থেকে আসে তা প্রথমতঃ শুচিশুদ্ধ পরে শান্তিপ্রিয়, সুবিবেচক, বাধ্যতা, দয়া ও সত্ কাজে পূর্ণ, পক্ষপাত শূন্য ও আন্তরিক৷ 18 যাঁরা শান্তির জন্য শান্তির পথে কাজ করে চলে, তারা উত্তম জিনিস লাভ করে যা যথার্থ জীবনযাপনের মধ্য দিয়ে আসে৷
James 4:1 তোমাদের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ কোথা থেকে আসে তা কি তোমরা জান? তোমাদের দেহের মধ্যে য়ে সব স্বার্থপর লালসা যুদ্ধ করছে, সেই সবের মধ্য থেকেই আসে৷ 2 তোমরা কিছু চাও কিন্তু তা পাও না, তখন খুন কর ও অপরকে হিংসা কর৷ কিন্তু তবুও তা পেতে পারো না, তাই তোমরা ঝগড়া কর, মারামারি কর৷ তোমরা যা চাও, তা পাও না, কারণ তোমরা ঈশ্বরের কাছে চাও না৷ 3 অথবা চাইলেও পাও না কারণ তোমরা অসত্ উদ্দেশ্য নিয়ে চাও৷ তোমরা কেবল নিজেদের ভোগ বিলাসে ব্যবহারের জন্য জিনিস চাও৷ 4 সুতরাং তোমরা ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বস্ত নও৷ তোমাদের জানা উচিত য়ে জাগতিক বস্তুগুলিকে ভালবাসার অর্থ হল ঈশ্বরকে ঘৃণা করা৷ তাই য়ে কেউ জগতের বন্ধু হতে চায় সে ঈশ্বরের শত্রু হয়ে ওঠে৷ 5 তোমরা কি মনে কর য়ে শাস্ত্রের এইসব কথা অর্থহীন? শাস্ত্র বলে, ‘ঈশ্বর য়ে আত্মাকে আমাদের অন্তরে বাস করতে দিয়েছেন, তা চায় য়েন আমরা শুধু তাঁরই হই৷’ 6 কিন্তু ঈশ্বরের অনুগ্রহদান তার থেকেও বড় বিষয়৷ তাই শাস্ত্রে লেখা আছে: ‘ঈশ্বর অহঙ্কারীদের প্রতিরোধ করেন, কিন্তু যাঁরা নম্র তিনি তাদের অনুগ্রহ প্রদান করেন৷’ 7 তাই তোমরা নিজেদের ঈশ্বরের কাছে সঁপে দাও৷ দিয়াবলের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াও, তাহলে সে তোমাদের ছেড়ে পালিয়ে যাবে৷ 8 তোমরা ঈশ্বরের নিকটবর্তী হও, তাতে তিনিও তোমাদের নিকটবর্তী হবেন৷ পাপীরা, তোমাদের জীবন থেকে পাপ দূর করো৷ তোমরা একই সাথে ঈশ্বরের ও জগতের সেবা করতে চেষ্টা করছ৷ তোমাদের অন্তঃকরণ পবিত্র কর৷ 9 তোমরা শোক কর, দুঃখে ভেঙ্গে পড় ও কাঁদ, তোমাদের হাসি কান্নায় পরিণত হোক্, আর আনন্দ, বিষাদে পরিণত হোক্৷ 10 তোমরা প্রভুর সামনে নত হও, তাহলে তিনি তোমাদের উন্নীত করবেন৷ 11 ভাই ও বোনেরা, তোমরা পরস্পরের বিরুদ্ধে নিন্দা করা বন্ধ কর৷ যদি কেউ তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে কথা বলে অথবা তার ভাইয়ের বিচার করে, সে বিধি-ব্যবস্থার বিরুদ্ধেই কথা বলে এবং ব্যবস্থার বিচার করে৷ যদি তুমি বিধি-ব্যবস্থার বিচার কর, তাহলে তুমি আর তার পালনকারী হলে না বরং বিধি-ব্যবস্থার বিচারক হলে৷ 12 একমাত্র ঈশ্বরই বিধি-ব্যবস্থা দিতে পারেন ও বিচার করতে পারেন৷ একমাত্র তিনিই বিচারকর্তা, কেবল তিনিই আমাদের রক্ষা করতে বা বিনষ্ট করতে পারেন৷ তাই অন্য কারুরই বিচার করা তোমার অধিকারে নেই৷ 13 তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ বলে, ‘আজ বা কাল আমরা এমন শহরে যাব, য়েখানে গিয়ে এক বছর থাকব আর ব্যবসা করে লাভ করব৷’ 14 একটু ভেবে দেখ, কাল কি হবে তা তুমি জান না৷ তোমাদের প্রাণ তো কুয়াশার মতো, ক্ষণকালের জন্য তা দৃষ্টিগোচর হয়, তারপর উবে যায়৷ 15 তাই তোমাদের বলা উচিত, ‘প্রভুর ইচ্ছা হলে, আমরা বেঁচে থাকব আর এটা ওটা করব৷’ 16 কিন্তু এখন তোমরা নিজেদের বিষয়ে নিজেরাই অহঙ্কার ও দর্প করছ; আর এই প্রকারের সব অহঙ্কার অন্যায়৷ 17 মনে রেখো, য়ে সত্ কর্ম করতে জানে অথচ তা না করে, সে পাপ করে৷
James 5:1 ধনী ব্যক্তিরা শোন, তোমাদের জীবনে য়ে ঘোর দুর্দশা আসছে, তার জন্য তোমরা কাঁদ ও হাহাকার কর৷ 2 তোমাদের ধন পচে যাবে, তার কোন মূল্যই থাকবে না৷ তোমাদের পোশাক পোকায় কাটবে, তোমাদের সোনা ও রূপোয় মরচে ধরবে৷ সেই মরচে প্রমাণ করবে য়ে তোমরা অন্যায় করেছ৷ 3 আর সেই মরচে আগুনের মতো তোমাদের দেহের মাংস খেয়ে ফেলবে৷ তোমরা শেষের দিনের জন্য সম্পদ জমা করেছ৷ 4 দেখ! য়ে মজুররা তোমাদের ক্ষেতে কাজ করেছিল তাদের তোমরা মজুরি দাও নি৷ তার জন্য তারা তোমাদের বিরুদ্ধে চিত্কার করছে৷ তারা তোমাদের ক্ষেতের ফসল কেটেছে, এখন তাদের সেই আর্তনাদ স্বর্গীয় বাহিনীর প্রভু ঈশ্বরের কানে পৌঁছেছে৷ 5 এই পৃথিবীতে তোমরা ভোগ বিলাসে দিন কাটিয়ে প্রাণের লালসা মিটিয়েছ৷ বলি হবার দিনের জন্য তোমরা নিজেদের পশুর মতো মোটা করছ৷ 6 ভাল লোকদের প্রতি তোমরা কোন দয়া দেখাও নি৷ তোমরা নির্দোষ লোকদের দোষী সাব্যস্ত করেছ এবং বধ করেছ, যদিও তারা তোমাদের বিরোধিতা করে নি৷ 7 ভাই ও বোনেরা ধৈর্য্য ধর৷ প্রভু যীশু খ্রীষ্ট ফিরে আসবেন, তাঁর না আসা পর্যন্ত ধৈর্য্য ধর৷ মনে রেখো একজন চাযী তার ক্ষেতের মূল্যবান ফসলের জন্য অপেক্ষা করে; আর যতদিন তা প্রথম ও শেষ বর্ষণ না পায়, ততদিন সে ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করে৷ 8 তোমাদের ধৈর্য্য ধরা দরকার, আশা ছেড়ে দিও না৷ প্রভু যীশু শীঘ্রই আসছেন৷ 9 ভাই ও বোনেরা, তোমরা একে অপরের বিরুদ্ধে নালিশ করো না৷ তোমরা যদি নালিশ করা থেকে বিরত না হও, তাহলে তোমরা দোষী সাব্যস্ত হবে৷ দেখ, বিচারক দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে আছেন৷ 10 ভাই ও বোনেরা, দুঃখ ও কষ্টে কিভাবে ধৈর্য্য ধরতে হয় তার দৃষ্টান্তস্বরূপ সেই ভাববাদীদের অনুসরণ কর যাঁরা প্রভুর পক্ষে কথা বলেছিলেন৷ 11 আমরা বলি যাঁরা জীবনে দুঃখ কষ্ট সহিষ্ণুতার সঙ্গে মেনে নেয় তারা ধন্য৷ তোমরা ইযোবের সহিষ্ণুতার কথা শুনেছ৷ তোমরা জান য়ে ইযোবের সমস্ত দুঃখ কষ্টের পর প্রভু তাঁকে সাহায্য করেছিলেন৷ এতে জানা যায় য়ে প্রভু করুণা ও দয়ায় পরিপূর্ণ৷ 12 আমার ভাই ও বোনেরা, বিশেষ করে মনে রেখো, কোন প্রতিশ্রুতি করার সময়ে স্বর্গ, পৃথিবী বা অন্য কোন নাম ব্যবহার করে তোমার কথার সত্যতা প্রমাণ করতে দিব্যি করো না৷ তোমাদের ‘হাঁ,’ য়েন হাঁ-ই হয় আর ‘না’ য়েন ‘না’ থাকে৷ এটা কর যাতে তোমাদের বিচারের দায়ে পড়তে না হয়৷ 13 তোমাদের মধ্যে কেউ কি কষ্ট পাচ্ছে? তবে সে প্রার্থনা করুক৷ কেউ কি সুখী? তবে সে ঈশ্বরের গুণকীর্তন করুক৷ 14 তোমাদের মধ্যে কেউ কি অসুস্থ হয়েছে? তবে সে মণ্ডলীর প্রাচীনদের ডাকুক৷ তারা প্রভুর নামে তার মাথায় একটু তেল দিয়ে তার জন্য প্রার্থনা করুক৷ 15 বিশ্বাসপূর্ণ প্রার্থনা সেই অসুস্থ ব্যক্তিকে সুস্থ করবে, প্রভুই তাকে সুস্থতা দেবেন; আর সে যদি পাপ করে থাকে তবে প্রভু তাকে ক্ষমা করবেন৷ 16 তাই তোমরা পরস্পরের কাছে পাপ স্বীকার কর, পরস্পরের জন্য প্রার্থনা কর, য়েন সুস্থতা লাভ কর, কারণ ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তির প্রার্থনা খুবই শক্তিশালী ও কার্য়করী৷ 17 এলীয় আমাদের মতোই সাধারণ মানুষ ছিলেন৷ তিনি প্রার্থনা করলেন য়েন বৃষ্টি না হয়, আর সাড়ে তিন বছর ধরে দেশে বৃষ্টি হল না৷ 18 পরে তিনি আবার প্রার্থনা করলেন; আর আকাশ থেকে বৃষ্টি নামল এবং ক্ষেতে ফসল হল৷ 19 আমার ভাই ও বোনেরা, তোমাদের মধ্যে কেউ যদি সত্য থেকে দূরে সরে যায় আর যদি কেউ তাকে সত্যে ফিরে আসতে সাহায্য করে তবে 20 একথা মনে রেখো, য়ে পাপীকে মন্দ থেকে ফিরিয়ে আনে সে সেই ব্যক্তিকে অনন্ত মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করবে এবং এই কাজের দ্বারা তার অনেক পাপ ক্ষমা হয়ে যাবে৷
1 Peter 1:1 আমি পিতর, প্রভু যীশু খ্রীষ্টের প্রেরিত - পন্ত, গালাতীয়া, কাপ্পাদকিয়া, এশিয়া ও বিথুনিয়াতে ঈশ্বরের য়েসব মনোনীত লোকরা নির্বাসনে ছড়িয়ে আছে তাদের উদ্দেশ্যে এই চিঠি লিখছি৷ 2 বহুপূর্বেই পিতা ঈশ্বর তাঁর পরিকল্পনা অনুসারে তোমাদের মনোনীত করেছেন, যাতে তোমরা তাঁর পবিত্র লোকসমষ্টি হও৷ পবিত্র আত্মা তোমাদের পবিত্র করেছেন, ঈশ্বর চেয়েছিলেন, য়ে তোমরা তাঁর বাধ্য হবে ও প্রভু যীশু খ্রীষ্টের রক্তে শুচি হবে৷ ঈশ্বরের অনুগ্রহ ও শান্তি য়েন তোমাদের ওপর প্রচুর পরিমানে বর্ষিত হয়৷ 3 প্রশংসিত হোন ঈশ্বর ও আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের পিতা৷ ঈশ্বরের মহাদয়ায় তিনি আমাদের নতুন জীবন দিয়েছেন৷ খ্রীষ্টের পুনরুত্থান দ্বারা এই নতুন জীবন এনেছে এক নতুন প্রত্যাশা৷ 4 আমরা এখন ঈশ্বরের আশীর্বাদ প্রত্যাশা করব যা তিনি সন্তানদের জন্য স্বর্গে সঞ্চিত রেখেছেন, যা কখনও ধ্বংস বা বিনষ্ট বা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না৷ 5 বিশ্বাসের মাধ্যমে ঈশ্বরের শক্তি তোমাদের রক্ষা করছে এবং য়ে পর্যন্ত না তোমরা পরিত্রাণ পাও সেই পর্যন্ত নিরাপদে রাখছে৷ সেই পরিত্রাণের আযোজন করা আছে যাতে তা শেষকালে তোমরা পাও৷ 6 আপাততঃ বিভিন্ন দুঃখ কষ্ট তোমাদের ব্যথিত করলেও ঐ কথা ভেবে তোমরা আনন্দ কর৷ 7 এসব দুঃখ কষ্ট আসে কেন? এরা আসে যাতে তোমাদের বিশ্বাস খাঁটি বলে প্রমাণিত হয়৷ য়ে সোনা ক্ষয় পায় তাকেও আগুনে পুড়িয়ে খাঁটি করা হয়, আর তোমাদের খাঁটি বিশ্বাস তো সেই সোনার চাইতেও মূল্যবান৷ বিশ্বাসের পরীক্ষায় যদি দেখা যায় য়ে তোমাদের বিশ্বাস অটল আছে, তবে যীশু খ্রীষ্টের পুনরাগমনের সময়ে তোমরা কত না প্রশংসা, গৌরব ও সম্মান পাবে৷ 8 তাঁকে না দেখেও তোমরা তাঁকে ভালবাস৷ তোমরা তাঁকে না দেখতে পেয়েও বিশ্বাস করছ বলে তোমরা এক অনির্বচনীয় গৌরবময় মহা আনন্দে পরিপূর্ণ হচ্ছ৷ 9 তোমাদের বিশ্বাসের এক লক্ষ্য আছে, আর সেই লক্ষ্য হল তোমাদের আত্মার পরিত্রাণ যা তোমরা লাভ করছ৷ 10 ঈশ্বরের অনুগ্রহ য়ে তোমরা লাভ করবে সে বিষয়ে ভাববাদীরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন৷ তাঁরা এই যুক্তির বিষয়েও সযত্নে অনুসন্ধান করেছেন৷ 11 খ্রীষ্টের আত্মা ঐসব ভাববাদীদের মধ্যে ছিলেন এবং সেই আত্মা তাঁদের জানিয়েছিলেন খ্রীষ্টের প্রতি কি কি দুঃখভোগ ঘটবে এবং সেই দুঃখভোগের পর কত মহিমা আসবে৷ তাঁরা এও জানতে চেষ্টা করেছিলেন য়ে সেই আত্মা তাঁদের কি নির্দেশ করছেন, কখন সেই সব ঘটবে এবং তা ঘটার সময় জগত্ কেমন থাকবে৷ 12 ঐ ভাববাদীদের জানানো হয়েছিল য়ে ঐ সব সেবা কাজ তাঁদের জন্য নয়, বরং ভাববাদীরা তোমাদেরই সেবা করেছিলেন৷ স্বর্গ থেকে পাঠানো পবিত্র আত্মায় পরিচালিত হয়ে যাঁরা তোমাদের কাছে সুসমাচার প্রচার করেছিলেন, তাঁদের কাছ থেকে তোমরা সেই সব কথা শুনেছ৷ তোমরা য়ে সব বিষয় শুনেছ, সে সব বিষয় এমনকি স্বর্গদূতরাও শুনতে আগ্রহী৷ 13 সেবার উপয়োগী করে তোমাদের মনকে প্রস্তুত রেখো, আর আত্মসংযমী হও৷ যীশু খ্রীষ্টের আগমনের সময় য়ে অনুগ্রহ তোমাদের দেওয়া হবে তার ওপর সম্পূর্ণ প্রত্যাশা রাখ৷ 14 অতীতে তোমরা এটা বুঝতে না তাই তোমাদের অভিলাষ অনুসারে মন্দ পথে চলতে; এখন তোমরা ঈশ্বরের বাধ্য সন্তান, তাই অতীতে তোমরা য়েভাবে চলতে সেভাবে চলো না৷ 15 কিন্তু য়ে ঈশ্বর তোমাদের আহ্বান করেছেন সেই ঈশ্বর য়েমন পবিত্র তেমনি তোমরাও তোমাদের সকল কাজে পবিত্র থাক৷ 16 শাস্ত্রে লেখা আছে, ‘আমি পবিত্র বলে তোমরা পবিত্র হও৷’ 17 ঈশ্বর কারও মুখাপেক্ষী না হয়ে প্রত্যেক লোকের কাজ অনুসারে তার বিচার করেন; সেই ঈশ্বরকে যখন তোমরা পিতা বলে সম্বোধন কর তখন তোমাদের উচিত পৃথিবীতে প্রবাসীর মতো ঈশ্বর- ভয়ে জীবনযাপন করা৷ 18 তোমরা তো জান য়ে অতীতে তোমরা উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন করতে, যা তোমরা তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে পেয়েছিলে, কিন্তু এখন সেই রকম জীবনযাপন করা থেকে তোমরা মুক্তি পেয়েছ৷ ঈশ্বর নশ্বর সোনা বা রূপোর বিনিময়ে তোমাদের মুক্তি ক্রয় করেন নি৷ 19 কিন্তু নির্দোষ ও নিখুঁত মেষশাবক, খ্রীষ্টের বহুমূল্য রক্ত দিয়ে তোমাদের ক্রয় করেছেন৷ 20 জগত সৃষ্টির আগেই খ্রীষ্টকে মনোনীত করা হয়েছিল; কিন্তু এই শেষ সময়ে তোমাদের জন্য তিনি প্রকাশিত হলেন৷ 21 খ্রীষ্টের মাধ্যমেই তোমরা ঈশ্বরে বিশ্বাসী হয়েছ৷ ঈশ্বর মৃতদের মধ্য থেকে খ্রীষ্টকে পুনরুত্থিত করে তাঁকে মহিমান্বিত করেছেন৷ সে জন্যই ঈশ্বরের প্রতি তোমাদের বিশ্বাস ও প্রত্যাশা আছে৷ 22 সত্যের অনুগামী হয়ে তোমরা নিজেদের শুদ্ধ করেছ, তাই তোমাদের অন্তরে বিশ্বাসী ভাই ও বোনেদের জন্য প্রকৃত ভালবাসা রয়েছে৷ সুতরাং এখন তোমরা তোমাদের সমস্ত অন্তঃকরণ দিয়ে একে অপরকে ভালবাসো৷ 23 কোন নশ্বর বীজ থেকে তোমাদের এই নতুন জন্ম হয় নি৷ এই জীবন সন্ভব হয়েছে এক অবিনশ্বর বীজ থেকে৷ ঈশ্বরের সেই জীবন্ত ও চিরস্থাযী বাক্য দ্বারাই তোমাদের নতুন জন্ম হয়েছে৷ 24 তাই শাস্ত্র বলে:‘মানুষ মাত্রেই ঘাসের মতো আর ঘাসের ফুলের মতোই তাদের মহিমা৷ ঘাস শুকিয়ে যায়, ফুল ঝরে পড়ে; 25 কিন্তু ঈশ্বরের বাক্য চিরকাল থাকে৷’যিশাইয় 40:6-8বাক্য হচ্ছে সেই সুসমাচার যা তোমাদের কাছে প্রচার করা হয়েছে৷
1 Peter 2:1 তাই তোমরা এমন কিছু করো না যাতে অপরেব্যথা পায়৷ মিথ্যা বলো না, ছলনা করো না, 2 হিংসা করো না, কারো সম্পর্কে নিন্দাবাদ করো না৷ এসব মন্দ বিষয়গুলি তোমাদের অন্তর থেকে দূর করে দাও৷ 3 নবজাত শিশুর মতো হও, খাঁটি আধ্যাত্মিক দুধের জন্য আকাঙ্খা রাখ, যা পান করে তোমরা বৃদ্ধিলাভ করবে ও তোমাদের পরিত্রাণ হবে৷ তোমরা এর মধ্যেই প্রভুর সেই দয়ার আস্বাদ পেয়েছ৷ 4 প্রভু যীশু হলেন জীবন্ত প্রস্তর৷ জগতের লোক সেই প্রস্তর অগ্রাহ্য় করল; কিন্তু তিনিই সেই ‘প্রস্তর’ য়াঁকে ঈশ্বর মনোনীত করেছেন৷ ঈশ্বরের চোখে তিনি মহামূল্য, তাই তোমরা তাঁর কাছে এস৷ 5 তোমরাও এক একটি জীবন্ত প্রস্তর সুতরাং সেই আত্মিক ধর্মধাম গড়বার জন্য তোমাদের ব্যবহার করতে দাও, যাতে পবিত্র যাজক হিসাবে তোমরা আত্মিক বলি উত্সর্গ করতে পার, যা খ্রীষ্টের মাধ্যমে ঈশ্বরের কাছে গ্রহণীয় হবে৷ 6 আর শাস্ত্রেও একথা আছে:‘দেখ, আমি সিযোনে একটি প্রস্তর স্থাপন করছি, যা মনোনীত মহামূল্য কোণের প্রধান প্রস্তর৷ তার ওপর য়ে মানুষ বিশ্বাস রাখবে তাকে কখনই লজ্জায় পড়তে হবে না৷’যিশাইয় 28:16 7 যাঁরা তাঁকে বিশ্বাস করে তাদের কাছে সেই প্রস্তর (যীশু) মহামূল্যবান; কিন্তু যাঁরা তাঁকে অবজ্ঞা করে তাদের কাছে তিনি হলেন সেই প্রস্তর:‘রাজমিস্ত্রিরা য়ে প্রস্তর বাতিল করে দিয়েছিল, সেটাই হয়ে উঠল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তর৷’গীতসংহিতা 118:22 8 শাস্ত্র আবার এই কথাও বলে যাঁরা বিশ্বাস করে না তাদের পক্ষে;‘এটা এমনই এক প্রস্তর যাতে মানুষ হোঁচট খায়, আর সেই প্রস্তরের দরুণ অনেক লোক হোঁচট খেয়ে পড়ে যাবে৷’ যিশাইয় 8:14তারা ঈশ্বরের বাক্য অমান্য করে বলেই হোঁচট খায় আর এটাই তো তাদের বিধি নির্দিষ্ট পরিণাম৷ 9 কিন্তু তোমরা সেরকম নও, তোমরা মনোনীত মানবগোষ্ঠী, রাজকীয় যাজককুল, এক পবিত্র জাতি৷ তোমরা ঈশ্বরের আপন জনগোষ্ঠী, তাই তোমরা ঈশ্বরের আশ্চর্য কর্মকাণ্ডের কথা বলতে পারো৷ যিনি তোমাদের অন্ধকার থেকে তাঁর অপূর্ব আলোয় নিয়ে এসেছেন, তোমরা তাঁরই গুণগান কর৷ 10 আগে তোমরা তাঁর প্রজা ছিলে না কিন্তু এখন তোমরা ঈশ্বরের আপন প্রজাবৃন্দ; একসময় তোমরা ঈশ্বরের দয়া পাও নি কিন্তু এখন তা পেয়েছ৷ 11 প্রিয় বন্ধুরা, তোমরা এই পৃথিবীতে বিদেশী ও আগন্তুক৷ এই জন্য আমি তোমাদের অনুরোধ করছি, দৈহিক কামনা বাসনা থেকে নিজেদের দূরে রাখ, কারণ এসব তোমাদের আত্মার বিরুদ্ধে লড়াই করে; 12 তোমরা এমন লোকদের মধ্যে বসবাস করছ যাঁরা সত্য ঈশ্বরে বিশ্বাস করে না, তারা বলতে পারে য়ে তোমরা ভুল কাজ করছ৷ তাই সত্ এবং ভাল জীবনযাপন কর, তাহলে তোমাদের সত্ কাজ ও স্বচক্ষে দেখে প্রভুর প্রত্যাগমনের দিন তারা ঈশ্বরকে মহিমান্বিত করবে৷ 13 জগতের শাসনকর্তাদের বাধ্য হও; প্রভুর জন্যই তা কর৷ 14 রাজ্যের সর্বময় কর্তা হিসাবে রাজার বাধ্য হও৷ অন্যায়কারীদের শাস্তি দিতে এবং যাঁরা সত্ কাজ করে তাদের প্রশংসা করতে রাজা কর্ত্তৃক য়ে নেতারা নিযুক্ত, তাদের বাধ্য হও৷ 15 এইভাবে তোমরা ভালো ভালো কাজ করে, সেই সব মূর্খ লোকদের তোমাদের সম্পর্কে মূর্খের মত কথা বলা থেকে বিরত কর; ঈশ্বরও তাই চান৷ 16 স্বাধীন লোক হিসাবে বাস কর; কিন্তু এই স্বাধীনতাকে অন্যায় কাজ করার ছুতো হিসেবে ব্যবহার করো না, বরং ঈশ্বরের লোক হিসাবে জীবনযাপন কর৷ 17 সকল লোককে যথোচিত সম্মান দিও৷ সব জায়গায় সকল বিশ্বাসী ভাইদের ভালবাস৷ ঈশ্বরকে ভয় কর আর রাজাকে সম্মান দিও৷ 18 দাসেরা, তোমরা অবশ্যই তোমাদের মনিবদের সম্মান করবে এবং তাদের অনুগত থাকবে৷ কেবল দয়ালু ও ভাল মনিবদের নয়, নিষ্ঠুর প্রকৃতির মনিবদেরও বাধ্য হও৷ 19 কারণ যদি ঈশ্বর সম্বন্ধে সচেতন এমন কেউ অন্যায়ভাবে পাওয়া কষ্টের ব্যথা সহ্য করে, তাতে ঈশ্বর সন্তুষ্ট হন৷ 20 বাস্তবে যখন অন্যায় কাজ করার জন্য তোমরা মার খাও এবং তা সহ্য কর তাতে প্রশংসার কিছু আছে কি? কিন্তু ভাল কাজ করে যদি কষ্টভোগ সহ্য কর তবে ঈশ্বরের চোখে তা প্রশংসার য়োগ্য৷ 21 ঈশ্বর এই জন্যই তোমাদের আহ্বান করেছেন৷ খ্রীষ্টও তোমাদের জন্য কষ্টভোগ করেছেন, আর এইভাবে তিনি তোমাদের কাছে এক আদর্শ রেখে গেছেন, য়েন তোমরা তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ কর৷ 22 ‘তিনি কখনও কোন পাপ করেন নি, এবং তাঁর মুখে কখনও কোন ছলনার কথা শোনা যায় নি৷’যিশাইয় 53:9 23 তাঁকে অপমান করলে, তিনি তার জবাবে কাউকে অপমান করেন নি৷ তাঁর কষ্টভোগের সময় তিনি প্রতিশোধ নেবার ভয় দেখান নি৷ কিন্তু যিনি ন্যায় বিচার করেন, তাঁরই ওপর বিচারের ভার দিয়েছিলেন৷ 24 ক্রুশের ওপরে তিনি নিজ দেহে আমাদের সমস্ত পাপের বোঝা বইলেন, য়েন আমরা আমাদের পাপের দিক থেকে মৃত হয়ে ধার্মিকতার জন্য জীবনযাপন করি৷ তাঁর দেহের ক্ষত দ্বারা তোমরা সুস্থতা লাভ করেছ৷ 25 তোমরা ভুল পথে যাওয়া মেষের মত ঘুরে বেড়াচ্ছিলে, কিন্তু এখন তোমরা তোমাদের প্রাণের পালক ও রক্ষকের কাছে ফিরে এসেছ৷
1 Peter 3:1 ঠিক সেইরকম স্ত্রীরা, তোমরা অবশ্যই তোমাদের স্বামীর বশ্যতা স্বীকার করো যাতে যাঁরা ঈশ্বরের শিক্ষাকে অনুসরণ করে না এমন স্বামীরা তোমাদের ব্যবহারের দ্বারা খ্রীষ্টের দিকে আকৃষ্ট হয়৷ 2 তাদের কিছু বলার প্রযোজন নেই, তারা নিজেদের স্ত্রীদের শুদ্ধ ও সম্মানজনক আচার ব্যবহার দেখে আকৃষ্ট হবে৷ 3 চুলের খোঁপা, সোনার অলঙ্কার অথবা সূক্ষ্ম জামা কাপড় এইসব নশ্বর ভুষণ দ্বারা নয়, 4 বরং তোমাদের ভুষণ হওয়া উচিত তোমাদের অন্তরের মধ্যে লুকোনো সত্তা নম্রতা ও শান্ত স্বভাব, যা ঈশ্বরের চোখে মহামূল্যবান৷ 5 এইভাবেই সেই পবিত্র মহিলারা যাঁরা অতীতে ঈশ্বরে ভরসা রাখত তারা স্বামীদের প্রতি তাদের সমীহপূর্ণ ব্যবহারের মধ্যে দিয়ে নিজেদের সুন্দরী করে তুলতো৷ 6 য়েমন সারা অব্রাহামের অনুরক্তা ছিলেন এবং তাকে ‘মহাশয়’ বলে ডাকতেন৷ মহিলারা, তোমরা যদি ভীত না হয়ে যা ঠিক তাই কর তবে তা প্রমাণ করবে য়ে তোমরা সারার য়োগ্য সন্ততি৷ 7 সেইভাবে তোমরা স্বামীরাও জ্ঞানপূর্বক তোমাদের স্ত্রীদের সাথে বাস কর৷ তাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন কর৷ কারণ তারা তোমাদের থেকে দুর্বল হলেও ঈশ্বর তাদেরও সমানভাবে আশীর্বাদ করেন, য়ে আশীর্বাদ অনুগ্রহের, যা সত্য জীবন দান করে৷ তাদের সঙ্গে য়েরূপ ব্যবহার করা তোমাদের উচিত তা যদি না কর তবে তোমাদের প্রার্থনায় বাধা সৃষ্টি হতে পারে৷ 8 তোমরা সকলে শান্তিতে বাস কর, পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল হও, ভাই ও বোনের প্রতি প্রেমময়, সমব্যথী এবং নম্র হও৷ 9 মন্দের পরিবর্তে মন্দ করো না, অথবা অপমান করলে অপমান ফিরিয়ে দিও না, বরং ঈশ্বরের কাছে তার জন্য প্রার্থনা কর য়েন তিনি তাকে আশীর্বাদ করেন, কারণ এই করতেই তোমরা আহূত, যাতে তোমরা ঈশ্বরের আশীর্বাদ পেতে পারো৷ 10 শাস্ত্রে বলছে:‘য়ে জীবন উপভোগ করতে চায় ও শুভ দিন দেখতে চায়, সে মন্দ কথা থেকে তার জিভকে য়েন সংযত রাখে; আর মিথ্যা কথা বলা থেকে ঠোঁটকে য়েন সামলে রাখে৷’ 11 পাপের পথে না গিয়ে সে সত্ কর্ম করুক; শান্তির চেষ্টা করে সেই মতো চলুক৷ 12 কারণ যাঁরা ধার্মিক তাদের প্রতি প্রভুর সজাগ দৃষ্টি আছে এবং তাদের প্রার্থনা শোনবার জন্য তাঁর কান খোলা আছে৷ কিন্তু যাঁরা মন্দ পথে চলে প্রভু তাদের দিক থেকে তাঁর মুখ ফিরিয়ে নেন৷’গীতসংহিতা 34:12-16 13 তোমরা যদি সব সময় ভাল কাজই করতে চাও তবে কে তোমাদের ক্ষতি করবে? 14 কিন্তু যদি ন্যায় পথে চলার জন্য নির্যাতিত হও, তাহলে তোমরা ধন্য আর, ‘তোমরা ঐ লোকদের ভয় করো না বা তাদের বিষয়ে উদ্বিগ্ন হযো না৷’ 15 বরং অন্তরে খ্রীষ্টকে পবিত্র প্রভু বলে মেনে নাও৷ তোমাদের সবার য়ে প্রত্যাশা আছে সেই বিষয়ে তোমাদের যখন কেউ জিজ্ঞাসা করে তখন তার যথাযথ জবাব দিতে তোমরা সব সময় প্রস্তুত থেকো৷ 16 কিন্তু এই জবাব বিনয় ও শ্রদ্ধার সঙ্গে দেবে৷ তোমাদের বিবেক শুদ্ধ রেখো, যাতে তোমরা সমালোচিত না হও, তাহলে যাঁরা তোমাদের খ্রীষ্টীয় সত্ জীবনযাপনের প্রতি অপমান প্রদর্শন করে তারা লজ্জিত হবে৷ 17 কারণ অন্যায় করে দুঃখভোগ করার চেয়ে বরং ঈশ্বরের যদি এমন ইচ্ছা হয়, ভাল কাজ করে দুঃখভোগ করা অনেক ভাল৷ 18 কারণ খ্রীষ্ট নিজে পাপের জন্য একবার চিরকালের জন্য সবার হয়ে কষ্টভোগ করেছিলেন৷ সেই ন্যায়পরায়ণ মানুষ অন্যায়কারী মানুষের জন্য মৃত্যুবরণ করেছিলেন৷ এই কাজ তিনি করেছিলেন ঈশ্বরের কাছে তোমাদের পৌঁছে দেওয়ার জন্য৷ দৈহিকভাবে তাঁকে মারা হয়েছিল, কিন্তু আত্মায় তিনি জীবিত হলেন৷ 19 সেই অবস্থায় তিনি কারারুদ্ধ আত্মাদের কাছে গিয়ে প্রচার করলেন৷ 20 সেই কারারুদ্ধ আত্মারা বহুকাল আগে নোহের সময়ে ঈশ্বরের অবাধ্য হয়েছিল৷ নোহের জাহাজ তৈরীর সময় ঈশ্বর তাদের জন্য ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করছিলেন৷ সেই জাহাজে কেবল অল্প কিছু লোক (আট জন) জলের দ্বারা রক্ষা পেল৷ 21 সেই জল বাপ্তিস্মের মত যা এখন তোমাদের রক্ষা করে৷ শরীরের ময়লা সেই বাপ্তিস্মের দ্বারা ধুয়ে যায় না; কিন্তু তা ঈশ্বরের কাছে সত্ বিবেক বজায় রাখার জন্য এক আবেদন৷ যীশু খ্রীষ্টের পুনরুত্থানের কারণে এটা তোমাদের রক্ষা করে৷ 22 যীশু স্বর্গারোহণ করে পিতা ঈশ্বরের ডানপাশে আছেন, আর স্বর্গদূতরা, ক্ষমতায় অধিষ্ঠিতগণ এবং শক্তিধররা এখন তাঁর অধীনে৷
1 Peter 4:1 তাই বলছি, খ্রীষ্ট নিজেই যখন তাঁর মরদেহে দুঃখভোগ করলেন, তখন তোমরাও সেই একই মনোভাব নিয়ে নিজেদের মনটাকে দৃঢ় কর, কারণ দেহে যার দুঃখভোগ হয়েছে, সে পাপ করা থেকে নিবৃত্ত হয়েছে৷ 2 নিজেদের শক্তিশালী করে তোলো যাতে মানবিক বাসনার অনুগামী না হয়ে তোমরা বাকি জীবন ঈশ্বর তোমার কাছে যা চান তা করে কাটাতে পার৷ 3 কারণ অতীতে অবিশ্বাসীরা য়েমন চলেছিল তেমনি চলে তোমরা অনেক সময় নষ্ট করেছ৷ তোমরা য়ৌন পাপে ও কামোচ্ছাসে লিপ্ত ছিলে এবং হুল্লোড়পূর্ণ মাতলামিতে ভরা ভোজসভায় য়োগ দিয়ে ও ঘৃন্য মূর্তিপূজা করেই তো দিন কাটিয়েছ৷ 4 কিন্তু এখন অবিশ্বাসী লোকেরাই দেখে আশ্চর্য হয় য়ে তোমরা আর সেই জংলী বেপরোয়া জীবনযাপনে য়োগ দাও না; আর সেই জন্য তারা তোমাদের গালাগালি ও অপবাদ দেয়৷ 5 কিন্তু তাদের এই রকম আচরণের জন্য তাঁর (খ্রীষ্টের) কাছে কৈফিয়ত্ দিতে হবে, যিনি জীবিত ও মৃতদের বিচার করবেন৷ 6 এই কারণেই এই সুসমাচার সেই সমস্ত বিশ্বাসীদের কাছে প্রচার করা হয়েছিল যাঁরা আজকে মৃত; য়েন দৈহিকভাবে মানুষের মত তাঁদের মৃত্যুর বিধান দেওয়া হলেও ঈশ্বরের মত তাঁরা আত্মার দ্বারা অনন্তকাল বাস করেন৷ 7 সেই সময় ঘনিয়ে আসছে যখন সবকিছুই শেষ হবে, সুতরাং মন স্থির রাখ ও আত্মসংযমী হও৷ এটা তোমাদের প্রার্থনা করতে সাহায্য করবে৷ 8 সব থেকে বড় কথা এই য়ে তোমরা পরস্পরকে একাগ্রভাবে ভালবাস, কারণ ভালবাসা অনেক অনেক পাপ ঢেকে দেয়৷ 9 কোনরকম অভিযোগ না করে পরস্পরের প্রতি অতিথিপরায়ণ হও৷ 10 তোমরা ঈশ্বরের কাছ থেকে য়ে য়েমন আত্মিক উপহার পেয়েছ, সেই অনুসারে উপযুক্ত অধ্যক্ষের মত একে অপরকে সাহায্য কর৷ 11 যদি কেউ প্রচার করে, তবে সে এমনভাবে তা করুক, য়েন ঈশ্বরের বাক্য বলছে৷ যদি কেউ সেবা করে, সে ঈশ্বরের দেওয়া শক্তি অনুসারেই তা করুক, যাতে সব বিষয়ে যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে ঈশ্বর প্রশংসিত হন৷ গৌরব ও পরাক্রম যুগে যুগে তাঁরই হোক্৷ আমেন৷ 12 প্রিয় বন্ধুরা, তোমাদের যাচাই করার জন্য য়ে কষ্টের আগুন তোমাদের মধ্যে জ্বলছে, তাতে তোমরা আশ্চর্য হযো না৷ কোন অদ্ভুত কিছু তোমাদের প্রতি ঘটছে বলে মনে করো না৷ 13 বরং তোমরা আনন্দ করো য়ে খ্রীষ্টের দুঃখভোগের ভাগীদার হতে পেরেছ৷ এরপর তাঁর মহিমা যখন প্রকাশ পাবে তখন তোমরা মহা আনন্দ লাভ করবে৷ 14 তোমরা খ্রীষ্টানুসারী হয়েছ বলে কেউ যদি তোমাদের অপমান করে, তবে তোমরা ধন্য, কারণ ঈশ্বরের মহিমার আত্মা তোমাদের মধ্যে বিরাজ করছে৷ 15 তোমাদের মধ্যে কেউ য়েন খুনী, কি চোর, কি দুষ্কর্মকারী রূপে বা অন্যায়ভাবে অন্য়ের ব্যাপারে হাত দিয়ে দুঃখভোগ না করে৷ 16 কিন্তু যদি কেউ খ্রীষ্টীয়ান বলে দুঃখভোগ করে, তবে সে য়েন লজ্জা না পায়, কিন্তু তার সেই নাম (খ্রীষ্টীয়ান) আছে বলে সে ঈশ্বরের প্রশংসা করুক৷ 17 বিচার আরন্ভ হবার সময় হয়েছে এবং তা ঈশ্বরের লোকদের থেকেই শুরু করা হবে৷ সেই বিচার যদি আমাদের থেকেই শুরু করা হয় তবে যাঁরা ঈশ্বরের সুসমাচার প্রত্যাখ্যান করে তাদের পরিণাম কি হবে? 18 শাস্ত্র য়েমন বলে, ‘নীতিপরায়ণদের পরিত্রাণ লাভ যদি এমন কঠিন হয় তবে যাঁরা ঈশ্বরবিহীন ও পাপী তাদের কি হবে?’ 19 যাঁরা ঈশ্বরের ইচ্ছানুসারে দুঃখভোগ করছে, তারা সেই বিশ্বস্ত সৃষ্টিকর্তার হাতে নিজেদের (আত্মাকে) সঁপে দিক এবং ভাল কাজ করে যাক্৷
1 Peter 5:1 যাঁরা মণ্ডলীর প্রাচীন তাদের কাছে এখন আমার এই বক্তব্য, আমি নিজেও একজন প্রাচীন হিসেবে খ্রীষ্টের দুঃখভোগের একজন সাক্ষী৷ সেই সঙ্গে ভবিষ্যতে য়ে ঐশীমহিমা প্রকাশিত হবে আমি হব তার একজন অংশীদার৷ আমি তোমাদের অনুরোধ করছি, 2 তোমাদের তত্ত্বাবধানে ঈশ্বরের য়ে পাল আছে তাদের দেখাশোনা কর৷ স্বেচ্ছায় তাদের পরিচর্য়া কর, বাধ্য হয়ে নয় বা কিছু পাবার আশায়ও নয়, বরং স্বেচ্ছায় ও আগ্রহের সঙ্গে, ঈশ্বর য়েমন চান৷ 3 যাদের দাযিত্বভার তোমরা পেয়েছ তাদের ওপর প্রভুত্ব চালিও না; কিন্তু পালের আদর্শ স্বরূপ হও৷ 4 য়েদিন প্রধান পালক (খ্রীষ্ট) দেখা দেবেন সেদিন তোমরা নিশ্চয়ই সেই অম্লান মহিমাময় মুকুট লাভ করবে৷ 5 যুবকরা, তোমরা প্রাচীনদের অনুগত হও, আর নতনম্র হয়ে একে অপরের সেবা কর, কারণ‘ঈশ্বর অহঙ্কারীদের বিরোধিতা করেন; কিন্তু নতনম্রদের অনুগ্রহ করেন৷’হিতোপদেশ 3:34 6 তাই তোমরা ঈশ্বরের পরাক্রান্ত হাতের নীচে অবনত থাক, য়েন ঠিক সময়ে তিনি তোমাদের উন্নীত করেন৷ 7 তোমাদের সমস্ত ভাবনা চিন্তার ভার তাঁকে দাও, কারণ তিনি তোমাদের জন্য চিন্তা করেন৷ 8 তোমরা সংযত ও সতর্ক থাক, তোমাদের মহাশত্রু দিয়াবল গর্জনকারী সিংহের মত কাকে গ্রাস করবে তা খুঁজে বেড়াচ্ছে৷ 9 তোমরা দিয়াবলের প্রতিরোধ কর, বিশ্বাসে বলবান হও৷ তোমরা জান, সারা বিশ্বে তোমাদের বিশ্বাসী ভাইরাও এই রকম দুঃখ কষ্টের মধ্য দিয়েই দিন কাটাচ্ছে৷ 10 হ্যাঁ, তোমাদের দুঃখভোগ অল্পকালের জন্য; কিন্তু তারপর ঈশ্বর সব কিছু ঠিক করে দেবেন ও তোমাদের শক্তিশালী করে তুলবেন৷ তিনি পতন থেকে রক্ষা করার জন্য তোমাদের সাহায্য করবেন৷ তিনিই সেই ঈশ্বর যিনি সবাইকে অনুগ্রহ বিতরণ করেন৷ যীশু খ্রীষ্টে তাঁর অনন্ত মহিমার ভাগীদার হবার জন্য তিনি তোমাদের আহ্বান করেছেন৷ 11 যুগে যুগে তাঁরই পরাক্রম হোক্৷ আমেন৷ 12 সীল, যাকে আমি খ্রীষ্টে বিশ্বস্ত ভাই বলে জানি তার মাধ্যমে তোমাদের কাছে এই সংক্ষিপ্ত চিঠি পাঠাচ্ছি; য়েন তোমরা আশ্বস্ত ও উত্সাহিত হও৷ আমি একথা বলতে চাই, এই হচ্ছে ঈশ্বরের প্রকৃত অনুগ্রহ এবং সেই অনুগ্রহে দৃঢ়ভাবে স্থির থাক৷ 13 বাবিলের মণ্ডলী, যাকে ঈশ্বর তোমাদের সাথে মনোনীত করেছেন, তারা তাদের শুভেচ্ছা তোমাদের পাঠাচ্ছে এবং আমার পুত্র মার্কও শুভেচ্ছা জানাচ্ছে৷ 14 প্রেমচুম্বনে পরস্পর মঙ্গলাবাদ কর৷ তোমরা যাঁরা খ্রীষ্টে আছ তাদের সবার প্রতি শান্তি নেমে আসুক৷
2 Peter 1:1 আমি শিমোন পিতর, যীশু খ্রীষ্টের দাস ও প্রেরিত৷ যাঁরা আমাদের ঈশ্বরের ও ত্রাণকর্তা যীশু খ্রীষ্টের ধার্মিকতার মাধ্যমে আমাদের মতো এক মহামূল্য বিশ্বাস লাভ করেছেন তাঁদের উদ্দেশ্যে এই চিঠি লিখছি৷ যা ন্যায় তিনি তাই করেন৷ 2 অনুগ্রহ ও শান্তি প্রচুর পরিমাণে তোমাদের প্রতি বর্ষিত হোক্৷ তোমরা ঈশ্বর ও আমাদের প্রভু যীশুকে গভীরভাবে জানো বলে এই অনুগ্রহ ও শান্তি ভোগ করবে৷ 3 যীশুর কাছে ঈশ্বরের শক্তি আছে৷ তাঁর শক্তি আমাদের ঈশ্বরের প্রতি ভক্তিপূর্ণ জীবনযাপন করার সমস্ত প্রযোজনীয় বিষয় দান করেছে৷ আমরা এই সমস্ত কিছু পেয়েছি কারণ আমরা তাঁকে জানি৷ যীশু তাঁর মহিমা-গুণে এবং সদগুণে আমাদের ডেকেছেন৷ 4 তাঁর মহিমায় এবং সদগুণে যা তিনি দেবেন বলেছিলেন সেই মূল্যবান এবং মহান প্রতিশ্রুতিগুলি তিনি আমাদের দিয়েছেন, যাতে তোমরা ঐ সব প্রতিশ্রুতিগুলির মধ্য দিয়ে জগতের মন্দ অভিলাষজনিত য়ে সব দুর্নীতি আছে তা থেকে মুক্ত হয়ে স্বর্গীয় জীবনের অংশীদার হতে পার৷ 5 তোমরা এই সব আশীর্বাদ পেয়েছ বলে অতি যত্ন করে তা তোমাদের জীবনে য়োগ করে নিতে প্রাণপণ চেষ্টা কর৷ তোমাদের বিশ্বাসের সঙ্গে সদগুণ য়োগ কর, সদগুণের সঙ্গে জ্ঞান, 6 জ্ঞানের সঙ্গে সংযম, সংযমের সঙ্গে ধৈর্য্য, ধৈর্য্যের সঙ্গে ঈশ্বরভক্তি, ঈশ্বরভক্তির সঙ্গে ভ্রাতৃস্নেহ, ভ্রাতৃস্নেহের সঙ্গে ভালবাসা য়োগ করে নাও৷ 7 ঈশ্বরভক্তির সঙ্গে আসে ভ্রাতৃস্নেহ, আর ভ্রাতৃস্নেহের সঙ্গে তোমার ভালবাসা য়োগ কর৷ 8 তোমাদের মধ্যে এই সব গুণ যদি থাকে আর তা বেড়ে ওঠে, তবে তোমাদের জীবন আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের জ্ঞানে কখনও নিষ্কর্মা বা নিষ্ফল হবে না৷ 9 কিন্তু এইসব গুণগুলি যার নেই সে পরিষ্কারভাবে দেখতে পায় না, সে অন্ধ৷ সে ভুলে গেছে য়ে তার অতীতের সকল পাপ ধুয়ে দেওয়া হয়েছিল৷ 10 তাই আমার ভাই ও বোনেরা, ঈশ্বর তোমাদের ডেকেছেন ও মনোনীত করেছেন৷ সেই সত্যকে দৃঢ় করার জন্য তোমরা আপ্রাণ চেষ্টা করো৷ যদি তোমরা এগুলি কর তবে কখনও হোঁচট খেয়ে পড়বে না; 11 আর আমাদের প্রভু ও ত্রাণকর্তা যীশু খ্রীষ্টের অনন্ত রাজ্যে তোমাদের মহানভাবে ও উদারভাবে স্বাগত জানানো হবে৷ 12 তোমরা তো এসব জানো আর য়ে সত্য তোমাদের দেওয়া হয়েছে তার সঙ্গে তোমরা দৃঢ়ভাবে যুক্ত রয়েছ; কিন্তু এগুলি মনে রাখতে আমি সর্বদা তোমাদের সাহায্য করব৷ 13 যতদিন বেঁচে থাকি, আমি মনে করি, এই বিষয়গুলি তোমাদের মনে করিয়ে দেওয়া আমার কর্তব্য৷ 14 আমি জানি য়ে খুব শিগ্গিরই আমাকে এই দেহত্যাগ করতে হবে৷ আমাদের প্রভু খ্রীষ্ট পরিষ্কারভাবে তা আমাকে জানিয়েছেন৷ 15 আমি আপ্রাণ চেষ্টা করছি, যাতে আমার মৃত্যুর পরেও তোমরা এসব বিষয় মনে রাখতে পার৷ 16 যখন আমরা প্রভু যীশু খ্রীষ্টের মহাপরাক্রমসহ আগমন সম্বন্ধে বলেছিলাম, তখন আমরা কোন বানানো গল্প বলি নি৷ আমরা প্রভু যীশু খ্রীষ্টের পরাক্রম স্বচক্ষে দেখেছি৷ 17 যীশু পিতা ঈশ্বরের কাছ থেকে য়ে সম্মান ও মহিমা লাভ করেছিলেন তা এই বাণীর মধ্য দিয়েই এসেছিল, ‘এই আমার প্রিয় পুত্র, এর প্রতি আমি সন্তুষ্ট৷’ 18 যীশুর সঙ্গে আমরা যখন পবিত্র পর্বতে ছিলাম তখন স্বর্গ থেকে বলা ঐ বাণী আমরা শুনেছিলাম৷ 19 সেইজন্য ভাববাদীরা যা বলেছেন আমরা সে বিষয়ে নিশ্চিত৷ ভাববাদীরা যা বলে গেছেন সে বিষয়ে মনোয়োগ দেওয়া তোমাদের পক্ষে ভাল৷ তাঁরা যা বলেছেন তা য়েন অন্ধকার জায়গায় উজ্জ্বল আলোর মতো৷ তা য়ে পর্যন্ত না দিনের শুরু হয় ও তোমাদের হৃদয়ে প্রভাতী তারার উদয় হয় সেই পর্যন্ত অন্ধকারের মাঝে আলো দেয়৷ 20 এটা তোমাদের বিশেষভাবে জানা দরকার য়ে শাস্ত্রের কোন ভাববাণী বক্তার নিজের ব্যাখ্যার ফল নয়৷ 21 ভাববাণী কখনই মানুষের ইচ্ছাক্রমে আসে নি, কিন্তু পবিত্র আত্মার পরিচালনায় ভাববাদীরা ঈশ্বরের কথা বলেছেন৷
2 Peter 2:1 অতীতে ঈশ্বরের লোকদের মধ্যে ভণ্ড ভাববাদীরা ছিল৷ একইভাবে তোমাদের দলের মধ্যে কিছু কিছু ভণ্ড শিক্ষক প্রবেশ করবে৷ তারা ভুল শিক্ষা দেবে; য়ে শিক্ষা গ্রহণ করলে লোকেদের সর্বনাশ হবে৷ সেই ভণ্ড শিক্ষকরা এমন কৌশলে তোমাদের শিক্ষা দেবে যাতে তারা য়ে ভ্রান্ত শিক্ষা দিচ্ছে এ তোমরা ধরতে পারবে না৷ তারা, এমন কি, প্রভু যিনি মুক্তি এনে দিয়েছেন তাঁকে পর্যন্ত অস্বীকার করবে৷ তাই তাদের নিজেদের ধ্বংস তারা সত্বর ডেকে আনবে৷ 2 তারা য়ে সমস্ত মন্দ বিষয়ে লিপ্ত, বহুলোক সেই বিষয়গুলিতে তাদের অনুসরণ করবে৷ ঐ লোকদের প্ররোচনায় বহুলোক সত্যের পথের বিষয়ে নিন্দা করবে৷ 3 এই ভণ্ড শিক্ষকরা তোমাদের কাছ থেকে কেবল অর্থলাভ করতে চাইবে৷ তাই তারা অসত্য কল্পিত কাহিনী বানিয়ে বলবে৷ অনেকদিন ধরেই ঐ ভণ্ড শিক্ষকদের জন্য শাস্তি অপেক্ষা করছে আর তারা ঈশ্বরের হাত এড়িয়ে য়েতে পারবে না; তিনি তাদের ধ্বংস করবেন৷ 4 যাঁরা পাপ করেছিল সেই স্বর্গদূতদেরও ঈশ্বর ছাড়েন নি; তিনি তাদের নরকে পাঠিয়েছিলেন৷ ঈশ্বর বিচারের দিন পর্যন্ত অন্ধকারময় গ্ব্বরে তাদের ফেলে রাখলেন৷ 5 ঈশ্বর প্রাচীন জগতকে ছেড়ে কথা বলেন নি৷ ঈশ্বরবিরোধী লোকদের জন্য ঈশ্বর জগতে জলপ্লাবন আনলেন৷ তিনি কেবলমাত্র নোহ এবং তার সঙ্গে অন্য সাতজনকে রক্ষা করেছিলেন৷ এই নোহ ঠিক পথে চলবার জন্য মানুষকে শিক্ষা দিয়েছিলেন৷ 6 সদোম ও ঘমোরা নগরকে ঈশ্বর দণ্ডিত করেছিলেন৷ ঈশ্বর সেই দুটি নগরকে ধ্বংস করে যাঁরা তাঁর বিরোধিতা করে তাদের জন্য শেষ ফলের এক উদাহরণ হিসেবে তা স্থাপন করেছিলেন৷ 7 ঐ ধ্বংসপ্রাপ্ত নগরী থেকে ঈশ্বর লোটকে উদ্ধার করেছিলেন৷ লোট ভাল লোক ছিলেন এবং ঐ নগরের দুষ্ট লোকদের অনৈতিক চালচলনে তিনি পীড়িত হতেন৷ 8 সেই নীতিপরায়ণ মানুষ ঐ দুষ্ট লোকদের মধ্যে দিনের পর দিন বাস করতেন৷ তাঁর ধার্মিক আত্মা এই সকল লোকদের বেআইনী কাজকর্ম দেখে এবং এগুলির কথা শুনে যন্ত্রণা ভোগ করতেন৷ 9 হ্যাঁ, ঈশ্বরই এই সকল কার্য় সাধন করলেন৷ তাই প্রভু ঈশ্বর জানেন যাঁরা তাঁর সেবা করে, তাদের কিভাবে উদ্ধার করতে হয়৷ তিনি তাদের সমস্ত কষ্টের সময়ে তাদের উদ্ধার করেন৷ প্রভু এও জানেন কিভাবে দুষ্ট লোকদের সেই বিচারের দিনে শাস্তি দিতে হয়৷ 10 ঐ দণ্ড বিশেষভাবে তাদের জন্য, যাঁরা দুর্নীতিপরায়ণ ও কামাতুর, অধার্মিক স্বভাবের অনুসারী এবং যাঁরা প্রভুর কর্তৃত্ত্বকে সম্মান করে না৷এই সকল ভণ্ড শিক্ষকরা দুঃসাহসী ও একগুঁয়ে এবং মহিমান্বিত স্বর্গদূতের বিরুদ্ধে মন্দ কথা বলতে ভয় পায় না৷ 11 ঐ সব ভণ্ড শিক্ষকদের চেয়ে স্বর্গদূতরা শক্তিতে ও পরাক্রমে বড় হয়েও প্রভুর কাছে তাদের বিষয়ে কুত্সাজনক অভিযোগ আনেন না৷ 12 এই ভণ্ড শিক্ষকরা বিচার বুদ্ধিহীন পশুর মতো, যাঁরা তাদের সহজাত প্রবৃত্তির বশে কাজ করে৷ এরা জন্মেছে ধরা পড়তে ও নিহত হবার জন্য৷ বন্য পশুদের মতোই এই শিক্ষকরা ধ্বংস হয়ে যাবে৷ 13 এই ভণ্ড শিক্ষকরা বহুলোকের ক্ষতি করেছে, তাই তারাও কষ্টভোগ করবে, তাদের কুকাজের জন্য প্রাপ্তিস্বরূপ সেই হবে তাদের বেতন৷ এই ভণ্ড শিক্ষকরা প্রকাশ্যে মন্দ কাজ করতে ভালবাসে যাতে সমস্ত লোক তা দেখতে পায়৷ তারা তোমাদের মধ্যে নোংরা দাগ ও কলঙ্কের মত৷ য়েসব মন্দ কাজ তাদের খুশী করে, সেগুলি করে তারা তা উপভোগ করে৷ যখন তারা তোমাদের সঙ্গে পান ভোজন করে তখন তোমাদের পক্ষে তা লজ্জাজনক হয়৷ 14 কোন নারীকে দেখলে এই শিক্ষকরা তার প্রতি কামাসক্ত হয়৷ এরা এইভাবে পাপ করেই চলেছে৷ যাঁরা বিশ্বাসে দুর্বল তাদের তারা পাপের ফাঁদে ফেলে ফুসলিয়ে নিয়ে যায়৷ তাদের অন্তঃকরণ লোভে অভ্য়স্ত, তারা অভিশপ্ত৷ 15 এই ভণ্ড শিক্ষকরা সোজা পথ ছেড়ে ভুল পথে ভ্রমণ করছে৷ তারা বিযোরের পুত্র বিলিয়মকে অনুসরণ করে, যিনি মন্দ কাজের পারিশ্রমিক পেলে আনন্দ পেতেন৷ 16 কিন্তু একটি গাধা বিলিয়মকে বলেছিল য়ে সে ভুল কাজ করেছে৷ গাধা পশু বলে কথা বলতে পারে না; কিন্তু এই গাধা মানুষের গলায় কথা বলে ভাববাদীকে মুর্খের মত কাজ করতে দেয় নি৷ 17 এই ভণ্ড শিক্ষকরা জলবিহীন ঝরণার মতো৷ ঝোড়ো হাওয়ায় বয়ে যাওয়া মেঘের মতো৷ এক ঘোর অন্ধকার কূপ এই ভণ্ড শিক্ষকদের জন্য সংরক্ষিত আছে৷ 18 এরা শূন্যগর্ভ বড় বড় কথা বলে নিজেদের নিয়ে গর্ব করে৷ যাঁরা সম্প্রতি ভুল পথে চলা লোকদের সংসর্গ থেকে বেরিয়ে এসেছে তাদের দৈহিক আকর্ষণ ও বাসনায় প্রলুদ্ধ করে৷ এইসব লোকদের তারা পাপের ফাঁদে ফেলে৷ 19 এরা তাদের স্বাধীনতার প্রলোভন দেখায়; কিন্তু নিজেরা সেইসব মন্দের দাস য়েগুলি ধ্বংসের পথগামী, কারণ মানুষ তারই দাস যা তাকে চালনা করে৷ 20 যাঁরা আমাদের প্রভু ও ত্রাণকর্তা যীশু খ্রীষ্ট সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করে সংসারের অশুচি বিষয়গুলি থেকে মুক্ত হয়েছিল, তারা যদি তাদের পুরানো পাপের জীবনে ফিরে যায় তবে তাদের পরের অবস্থা আগের অবস্থা থেকে আরো খারাপ হবে৷ 21 য়ে পবিত্র শিক্ষা তারা লাভ করেছিল, তারা যদি সেই পবিত্র শিক্ষা থেকে সরে যায় তবে তাদের পক্ষে সেই সত্য পথ না জানাই ভাল ছিল৷ 22 একটি প্রবাদ আছে যা তাদের ক্ষেত্রে খাটে, ‘কুকুর ফেরে নিজের বমির দিকে,’এবং ‘শুযোরকে স্নান করালেও সে আবার যায় কাদায় গড়াগড়ি দিতে৷’
2 Peter 3:1 বন্ধুরা, তোমাদের কাছে এ আমার দ্বিতীয় পত্র৷ এই দুটি পত্র লিখে, কিছু বিষয় স্মরণ করিয়ে দিয়ে তোমাদের সত্ চিন্তাকে নাড়া দেবার চেষ্টা করছি৷ 2 অতীতে পবিত্র ভাববাদীদের সমস্ত কথা ও প্রভু আমাদের ত্রাণকর্তার আদেশ, যা প্রেরিতদের মাধ্যমে বলা হয়েছে, তা তোমাদের স্মরণে আনতে চাইছি৷ 3 প্রথমতঃ তোমাদের বুঝতে হবে পৃথিবী শেষ হয়ে যাবার আগের দিনগুলিতে কি ঘটবে৷ লোকেরা তোমাদের উপহাস করবে৷ তারা নিজের নিজের খেয়াল খুশি মতো মন্দ পথে চলবে৷ 4 তারা বলবে, ‘তাঁর আগমণ সম্বন্ধে তাঁর প্রতিজ্ঞার কি হল? কারণ আমরা জানি আমাদের পিতৃপুরুষদের মারা যাওয়ার সময় থেকে, এমনকি সৃষ্টির শুরু থেকে আজ পর্যন্ত সব কিছুই তো একই রকম ভাবে ঘটে চলেছে৷’ 5 কিন্তু বহুপূর্বে কি ঘটেছিল তা ঐসব লোকরা স্মরণ করতে চায় না৷ প্রথমে আকাশমণ্ডল ছিল এবং ঈশ্বর জলের মধ্য থেকে ও জলের দ্বারা পৃথিবী সৃষ্টি করলেন আর এসবই ঈশ্বরের মুখের বাক্য়ের দ্বারা সৃষ্টি হয়েছিল৷ 6 সেই সময়কার জগত জলপ্লাবনের দ্বারা ধ্বংস হয়েছিল৷ 7 ঈশ্বরের বাক্য অনুসারে বর্তমান এই পৃথিবী ও আকাশমণ্ডল আগুনের দ্বারা ধ্বংস হবার জন্য বিরাজ করছে৷ এই আকাশমণ্ডল ও পৃথিবী সেই বিচারের দিনের জন্য, অধার্মিক মানুষের ধ্বংসের জন্য রক্ষিত আছে৷ 8 কিন্তু প্রিয় বন্ধুরা, তোমরা এই একটা কথা ভুলে য়েও না য়ে প্রভুর কাছে এক দিন হাজার বছরের সমান ও হাজার বছর একদিনের সমান৷ 9 প্রভু তাঁর প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করতে সত্যি দেরী করছেন না৷ যদিও কেউ কেউ সেরকমই মনে করছে; কিন্তু তিনি তোমাদের জন্য ধৈর্য় ধরে আছেন৷ কেউ য়ে ধ্বংস হয় তা ঈশ্বর চান না, ঈশ্বর চান য়ে প্রত্যেকে মন পরিবর্তন করুক ও পাপের পথ ত্যাগ করুক৷ 10 কিন্তু প্রভুর দিন চোরের মত এসে চমকে দেবে৷ তখন আকাশ বিরাট শব্দ করে অদৃশ্য হবে; আকাশের সব কিছু আগুনে ধ্বংস করা হবে এবং পৃথিবী ও তার মধ্যে যা কিছু আছে তা পুড়িয়ে ফেলা হবে৷ 11 সব কিছু যখন এইভাবে ধ্বংস হতে যাচ্ছে তখন চিন্তা কর কি প্রকার মানুষ হওয়া তোমাদের দরকার৷ তোমাদের পবিত্র জীবনযাপন করা উচিত এবং ঈশ্বরের সেবার্থে কাজ করা উচিত৷ 12 পরম আগ্রহের সঙ্গে ঈশ্বরের সেই দিনের অপেক্ষায় থাকা উচিত, য়ে দিন আকাশমণ্ডল আগুনে পুড়ে ধ্বংস হবে এবং আকাশের সব কিছু উত্তাপে গলে যাবে৷ 13 কিন্তু ঈশ্বর আমাদের এক নতুন আকাশমণ্ডল ও এক নতুন পৃথিবীর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন৷ এই প্রতিশ্রুতির পূর্ণতার জন্য আমরা অপেক্ষা করছি, আর সেখানে কেবল ধার্মিকতা থাকবে৷ 14 তাই প্রিয় বন্ধুরা, তোমরা যখন এইসব ঘটবে বলে অপেক্ষা করছ, তখন পাপ ও দোষমুক্ত হয়ে থাকবার আপ্রাণ চেষ্টা কর, য়েন ঈশ্বরের সঙ্গে শান্তিতে থাকতে পার৷ 15 মনে রেখো, আমাদের প্রভুর ধৈর্য্য তোমাদের মুক্তির সুয়োগ দিয়েছে৷ আমাদের প্রিয় ভাই পৌলও তোমাদের একই বিষয়ে লিখেছেন৷ তাঁকে প্রদত্ত জ্ঞান অনুসারে পৌল এই কথা তাঁর সব চিঠিতে বলেছেন৷ 16 কিছু বিষয় এই পত্রের মধ্যে আছে যা বোঝা শক্ত৷ অজ্ঞ ও বিশ্বাসে দুর্বল লোকরা শাস্ত্রের অন্যান্য কথার য়েমন বিকৃত অর্থ করে, তেমনি পৌলের কথারও বিকৃত অর্থ করে নিজেদের ধ্বংসের পথে নিয়ে যায়৷ 17 তাই প্রিয় বন্ধুরা, তোমরা এসব কথা আগে থেকেই জেনেছ বলে এ বিষয়ে সতর্ক থাক, যাতে তোমরা দুষ্ট লোকদের ভুলের কবলে পড়ে নিজেদের দৃঢ় বিশ্বাস থেকে সরে না যাও৷ 18 আমাদের প্রভু ত্রাণকর্তা যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহ ও জ্ঞানে তোমরা বৃদ্ধি লাভ কর৷ এখন ও অনন্তকালের জন্য তাঁর মহিমা বিরাজ করুক৷ আমেন৷
1 John 1:1 পৃথিবীর শুরু থেকেই যা বর্তমান তেমন একটি বিষয় এখন তোমাদের কাছে বলছি:আমরা তা শুনেছি,তা স্বচক্ষে দেখেছি,তা মনোয়োগ সহকারে নিরীক্ষণ করেছি;আর নিজেদের হাত দিয়ে তা স্পর্শ করেছি৷আমরা সেই বাক্যের বিষয় বলছি যা জীবনদায়ী৷ 2 সেই জীবন আমাদের কাছে প্রকাশিত হয়েছিল, আমরা তা দেখেছি; আর তার বিষয়ে সাক্ষ্য দিতে পারি৷ এখন তোমাদের কাছে সেই জীবনের কথা বলছি; এ হল অনন্ত জীবন যা পিতা ঈশ্বরের কাছে ছিল৷ ঈশ্বর আমাদের কাছে সেই জীবন তুলে ধরলেন৷ 3 আমরা যা দেখেছি ও শুনেছি সে বিষয়েই এখন তোমাদের কাছে বলছি; কারণ আমাদের ইচ্ছা তোমরাও আমাদের সহভাগী হও৷ আমাদের এই সহভাগীতা ঈশ্বর পিতা ও তাঁর পুত্র যীশু খ্রীষ্টের সঙ্গে৷ 4 আমাদের আনন্দ য়েন পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে সেই জন্য আমরা তোমাদের এসব লিখছি৷ 5 এই সেই বার্তা যা আমরা খ্রীষ্টের কাছ থেকে শুনেছি এবং তোমাদের কাছে ঘোষণা করছি- ঈশ্বর জ্যোতি; ঈশ্বরের মধ্যে কোন অন্ধকার নেই৷ 6 তাই আমরা যদি বলি য়ে ঈশ্বরের সঙ্গে আমাদের সহভাগীতা আছে, কিন্তু যদি অন্ধকারে জীবনযাপন করতে থাকি, তাহলে মিথ্যা বলছি ও সত্যের অনুসারী হচ্ছি না৷ 7 ঈশ্বর জ্যোতিতে আছেন, আমরা যদি সেই রকম জ্যোতিতে বাস করি, তবে বলা যায় আমাদের পরস্পরের মধ্যে সহভাগীতা আছে৷ ঈশ্বরের পুত্র যীশুর রক্ত আমাদের সমস্ত পাপ থেকে শুচিশুদ্ধ করে৷ 8 আমরা যদি বলি য়ে আমাদের কোন পাপ নেই, তাহলে আমরা নিজেদেরই ঠকাই এবং তাঁর সত্য আমাদের মধ্যে নেই৷ 9 আমরা যদি নিজেদের পাপ স্বীকার করি, বিশ্বস্ত ও ধার্মিক ঈশ্বর আমাদের সমস্ত পাপ ক্ষমা করবেন ও সকল অধার্মিকতা থেকে আমাদের শুদ্ধ করবেন৷ 10 আর যদি বলি, আমরা পাপ করিনি, তবে আমরা ঈশ্বরকে মিথ্যাবাদী প্রতিপন্ন করি এবং তাঁর বার্তা আমাদের অন্তরে নেই৷
1 John 2:1 আমার প্রিয় সন্তানরা, আমি তোমাদের একথা লিখছি যাতে তোমরা পাপ না কর৷ কিন্তু কেউ যদি পাপ করে ফেলে, তবে পিতার কাছে আমাদের পক্ষে কথা বলার একজন আছেন, তিনি সেই ধার্মিক ব্যক্তি, যীশু খ্রীষ্ট৷ 2 তিনিই সেই প্রায়শ্চিত্ত বলিগুলি, যার ফলে আমাদের সব পাপ দূর হয়৷ কেবল আমাদের সব পাপ নয়, জগতের সমস্ত মানুষেরও পাপ দূর হয়৷ 3 যদি আমরা ঈশ্বরের আদেশ পালন করি, তবেই বুঝতে পারব য়ে আমরা তাঁকে জানি৷ 4 কেউ যদি বলে য়ে, ‘আমি ঈশ্বরকে জানি,’ অথচ ঈশ্বরের আদেশ পালন না করে তবে সে মিথ্যাবাদী, আর তাঁর সত্য তার অন্তরে নেই৷ 5 কিন্তু য়ে তাঁর শিক্ষা পালন করে, ঈশ্বরের ভালবাসা সত্যি তার মধ্যে পূর্ণতালাভ করেছে৷ এইভাবে আমরা সুনিশ্চিত হতে পারি য়ে আমরা তাঁর মধ্যেই অবস্থান করছি৷ 6 কেউ যদি বলে য়ে আমি ঈশ্বরে আছি তাহলে তাকে অবশ্যই তাঁর মতো জীবনযাপন করতে হবে৷ 7 প্রিয় বন্ধুরা, আমি তোমাদের কাছে কোন নতুন আদেশ লিখছি না, এ এমন এক পুরানো আদেশ, যা তোমরা আদি থেকেই পেয়েছ৷ তোমরা য়ে বার্তা শুনেছ তা হল পুরানো আদেশ. 8 কিন্তু আমি এই পুরানো আদেশই তোমাদের কাছে এক নতুন আদেশরূপে লিখছি৷ এই আদেশ সত্য এবং এর সত্যতা তোমরা যীশু খ্রীষ্টে ও তোমাদের জীবনে দেখেছ, কারণ অন্ধকার কেটে যাচ্ছে আর প্রকৃত জ্যোতি ইতিমধ্যেই উজ্জ্বল৷ 9 য়ে বলে আমি জ্যোতিতে আছি কিন্তু তার নিজের ভাইকে ঘৃণা করে, সে এখনও অন্ধকারেই আছে৷ 10 য়ে তার ভাইকে ভালবাসে, সে জ্যোতিতে রয়েছে৷ তার জীবনে এমন কিছুই নেই যা তাকে পাপী করে৷ 11 কিন্তু য়ে তার ভাইকে ঘৃণা করে সে এখনও অন্ধকারেই আছে৷ সে অন্ধকারেই বাস করে আর জানে না সে কোথায় চলেছে, কারণ অন্ধকার তাকে অন্ধ করে দিয়েছে৷ 12 প্রিয় সন্তানগণ, আমি তোমাদের লিখছি কারণ খ্রীষ্টের মাধ্যমে তোমাদের পাপ ক্ষমা করা হয়েছে৷ 13 পিতারা, আমি তোমাদের লিখছি কারণ যিনি শুরু থেকে আছেন তোমরা তাঁকে জান৷ যুবকেরা, আমি তোমাদের লিখছি কারণ তোমরা সেই পাপাত্মার ওপর জয়লাভ করেছ৷ 14 শিশুরা, আমি তোমাদের নিকট লিখছি কারণ যিনি শুরু থেকে আছেন তোমরা তাঁকে জান৷ যুবকরা, আমি তোমাদের লিখছি কারণ তোমরা শক্তিশালী, ঈশ্বরের বার্তা তোমাদের অন্তরে আছে; আর তোমরা সেই পাপাত্মার ওপর জয়লাভ করেছ৷ 15 তোমরা কেউ এই সংসার বা এই সংসারের কোন কিছু ভালবেসো না৷ কেউ যদি এই সংসারটাকে ভালবাসে তবে পিতা ঈশ্বরের ভালবাসা তার অন্তরে নেই৷ 16 কারণ এই সংসারে যা কিছু আছে,যা আমাদের পাপ প্রকৃতি পেতে ইচ্ছা করে,যা আমাদের চক্ষু পেতে ইচ্ছা করে,আর পৃথিবীর যা কিছুতে লোকে গর্ব করে৷সে সবই পিতা ঈশ্বরের কাছ থেকে আসে না, আসে জগত থেকে৷ 17 এই সংসার ও তাঁর অভিলাষ সব বিলীন হতে চলেছে, কিন্তু য়ে ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করে সে চিরজীবি হবে৷ 18 প্রিয় সন্তানরা, জগতের শেষ সময় ঘনিয়ে এসেছে৷ আর তোমরা শুনেছ য়ে খ্রীষ্টারিরা আসছে৷ এখনই সেই খ্রীষ্টারিরা এসে গেছে, এর ফলেই আমরা বুঝতে পারছি য়ে এই শেষ সময়৷ 19 সেই খ্রীষ্টারিরা আমাদের দলের মধ্যেই ছিল৷ তারা আমাদের মধ্য থেকে বাইরে চলে গেছে৷ বাস্তবে তারা কোন দিনই আমাদের লোক ছিল না, কারণ তারা যদি আমাদের দলের লোক হত, তবে আমাদের সঙ্গেই থাকত৷ তারা আমাদের ছেড়ে চলে গেল; এর দ্বারাই প্রমাণ হল য়ে তারা কেউই আদৌ আমাদের নয়৷ 20 তোমরা সেই পবিত্রতমের (খ্রীষ্টের) কাছে অভিষিক্ত হয়েছ, তাই তোমরা সকলে সত্য কি তা জান৷ তবে তোমাদের কাছে কেন আমি লিখি? 21 এটা বলার জন্য আমি লিখছি না য়ে তোমরা সত্য জান না৷ আমি তোমাদের লিখছি কারণ তোমরা সত্য জান; আর এও জান য়ে সত্য থেকে কখনও কোন মিথ্যার উত্পত্তি হতে পারে না৷ 22 তবে সেই মিথ্যাবাদী কে? সে-ই, য়ে ব্যক্তি বলে য়ে যীশুই সেই খ্রীষ্ট নন, সে-ই খ্রীষ্টের শত্রু, য়ে বলে যীশু সেই খ্রীষ্ট নয়, সেই ব্যক্তি পিতাকে বিশ্বাস করে না, বিশ্বাস করে না তাঁর পুত্র খ্রীষ্টকে৷ 23 য়ে পুত্রকে অস্বীকার করে, সে পিতা ঈশ্বরকেও পায় না৷ কিন্তু য়ে পুত্রকে গ্রহণ করে, সে পিতা ঈশ্বরকেও পেয়েছে৷ 24 শুরু থেকে তোমরা যা শুনে আসছ, সেই সব বিষয় অবশ্যই তোমাদের অন্তরে রেখো৷ শুরু থেকে তোমরা যা শুনেছ তা যদি তোমাদের অন্তরে থাকে তবে তোমরা পিতা ঈশ্বর ও তাঁর পুত্রের সাহচর্য়ে থাকবে৷ 25 আর ঈশ্বর এটাই আমাদের দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তা হল অনন্ত জীবন৷ 26 যাঁরা তোমাদের ভুল পথে নিয়ে য়েতে চায় তাদের বিষয়ে তোমাদের এইসব কথা লিখলাম৷ 27 খ্রীষ্ট তোমাদের এক বিশেষ বরদান দিয়েছেন এবং তা তোমাদের মধ্যে রয়েছে৷ তাই তোমাদের অন্য কারোর শিক্ষার দরকার নেই৷ য়ে বরদান তোমরা পেয়েছ তা তোমাদের সব বিষয়ে শিক্ষা দেয়৷ এ বরদান সত্য, এর মধ্যে মিথ্যার লেশমাত্র নেই৷ তাই এই বরদান য়েমন শিক্ষা দিয়েছে, সেইমত তোমরা খ্রীষ্টে থাক৷ 28 এখন আমার স্নেহের সন্তানরা, খ্রীষ্টেতে থাক৷ তা করলে খ্রীষ্ট যখন প্রকাশিত হবেন তখন আমাদের আর ভয়ের কিছু থাকবে না৷ তিনি এলে তাঁর সামনে দাঁড়াতে ভয় বা লজ্জা পেতে হবে না৷ 29 যদি তোমরা জান য়ে খ্রীষ্ট ধার্মিক তাহলে তোমরা এও জান য়ে যাঁরা ধর্মাচরণ কাজ করে তারা ঈশ্বরের সন্তান৷
1 John 3:1 ভেবে দেখ, পিতা ঈশ্বর আমাদের কত ভালোই না বেসেছেন৷ যাতে আমরা ঈশ্বরের সন্তান বলে অভিহিত হই; বাস্তবিক আমরা তাই৷ জগতের লোক আমাদের চেনে না য়ে আমরা ঈশ্বরের সন্তান, কারণ তারা ঈশ্বরকে জানে না৷ 2 প্রিয় বন্ধুরা, এখন তো আমরা ঈশ্বরের সন্তান, আর ভবিষ্যতে আমরা আরো কি হব তা এখনও আমাদের কাছে প্রকাশ করা হয় নি৷ কিন্তু আমরা জানি য়ে যখন খ্রীষ্ট পুনরায় আসবেন তখন আমরা তাঁর সমরূপ হব, কারণ তিনি য়েমন আছেন, তাঁকে তেমনি দেখতে পাব৷ 3 খ্রীষ্ট শুদ্ধ আর তাঁর ওপরে য়ে সমস্ত লোক এই আশা রাখে, তারা খ্রীষ্টের মত নিজেদের শুদ্ধ করে৷ 4 য়ে কেউ পাপ করে, সে বিধি-ব্যবস্থা লঙঘন করে, আর ব্যবস্থা লঙঘন করাই পাপ৷ 5 তোমরা জান, মানুষের পাপ তুলে নেবার জন্যই খ্রীষ্ট প্রকাশিত হলেন; আর খ্রীষ্টের নিজের কোন পাপ নেই৷ 6 য়ে কেউ খ্রীষ্টে থাকে, সে পাপের জীবন-যাপন করে না৷ কেউ যদি পাপে জীবন-যাপন করে তবে সে খ্রীষ্টকে কখনও প্রকৃতভাবে উপলদ্ধি করে নি, এমন কি তাঁকে জানেও নি৷ 7 প্রিয় সন্তানরা, সতর্ক থেকো৷ কেউ য়েন তোমাদের বিপথে না নিয়ে যায়৷ য়ে কেউ যথার্থ কাজ করে সে নীতিপরায়ণ, ঠিক য়েমন খ্রীষ্ট নীতিপরায়ণ৷ 8 দিয়াবল সেই শুরু থেকেই পাপ করে চলেছে৷ য়ে ব্যক্তি পাপ করেই চলে সে দিয়াবলের৷ দিয়াবলের কাজকে ধ্বংস করার জন্যই ঈশ্বরের পুত্র প্রকাশিত হয়েছিলেন৷ 9 য়ে কেউ ঈশ্বরের সন্তান হয়, সে ক্রমাগত পাপ করতে পারে না, কারণ নরজীবনদাযী ঈশ্বরের শক্তি সেই ব্যক্তির মধ্যে থাকে৷ সে ঈশ্বরের সন্তানে পরিণত হয়েছে; তাই সে পাপে জীবন কাটাতে পারে না৷ 10 এভাবেই আমরা দেখতে পারি কারা ঈশ্বরের সন্তান আর কারাই বা দিয়াবলের সন্তান৷ যাঁরা সত্কর্ম করে না তারা ঈশ্বরের সন্তান নয়, আর য়ে তার ভাইকে ভালবাসে নাসে ঈশ্বরের সন্তান নয়৷ 11 তোমরা শুরু থেকে এই বার্তা শুনে আসছ, য়ে আমাদের পরস্পরকে ভালবাসা উচিত৷ 12 তোমরা কয়িনেরমতো হযো না৷ কযিন দিয়াবলের ছিল এবং তার ভাই হেবলকে হত্যা করেছিল৷ কিসের জন্য সে তার ভাইকে হত্যা করেছিল? কারণ কযিনের কাজগুলি ছিল মন্দ; কিন্তু তার ভাইয়ের কাজ ছিল ভাল৷ 13 ভাইরা, এই জগত যদি তোমাদের ঘৃণা করে তবে তাতে আশ্চর্য হযো না৷ 14 আমরা জানি য়ে আমরা মৃত্যু থেকে জীবনে উত্তীর্ণ হয়ে গেছি৷ আমরা এটা জানি কারণ আমরা আমাদের ভাইদের ও বোনদের ভালবাসি৷ য়ে কেউ ভালবাসে না সে মৃত্যুর মধ্যেই থাকে৷ 15 য়ে কেউ তার ভাইকে ঘৃণা করে সে তো একজন খুনী; আর তোমরা জান কোন খুনী অনন্ত জীবনের অধিকারী হয় না৷ 16 তিনি আমাদের জন্য নিজের প্রাণ দিলেন, এর থেকেই আমরা জানতে পারি প্রকৃত ভালবাসা কি৷ সেইজন্য আমাদের ও আমাদের ভাই বোনদের জন্য প্রাণ দেওয়া উচিত৷ 17 যার পার্থিব সম্পদ রয়েছে, সে যদি তার কোন ভাইকে অভাবে পড়তে দেখে তাকে সাহায্য না করে, তবে কি করে বলা য়েতে পারে য়ে তার মধ্যে ঐশ্বরিক ভালবাসা আছে? 18 স্নেহের সন্তানরা, কেবল মুখে ভালবাসা না দেখিয়ে, এসো, আমরা কাজের মধ্য দিয়ে তাদের সত্যিকারের ভালবাসি৷ 19 এর দ্বারা আমরা জানব য়ে আমরা সত্যের৷ আমাদের অন্তর যদি আমাদের দোষী করে, তবুও ঈশ্বরের সামনে আমাদের বিবেক আশ্বস্ত থাকবে৷ কারণ আমাদের বিবেকের থেকে ঈশ্বর মহান, ঈশ্বর তো সবই জানেন৷ 20 21 প্রিয় বন্ধুরা, যদি আমাদের বিবেকগুলি আমাদের দোষের অনুভূতি না দেয় তবে ঈশ্বরের সামনে আমরা নির্ভয়ে দাঁড়াতে পারব৷ 22 আর ঈশ্বরের কাছ থেকে যা কিছু চাই না কেন তা আমরা পাব, কারণ আমরা যা তাঁর সন্তোষজনক তাই করছি৷ 23 তাঁর আদেশ হল আমরা য়েন তাঁর পুত্র যীশু খ্রীষ্টের নামে বিশ্বাস করি ও পরস্পরকে ভালবাসি৷ 24 য়ে ঈশ্বরের আদেশগুলি মান্য করে সে ঈশ্বরে থাকে; আর ঈশ্বর তার অন্তরে থাকেন৷ ঈশ্বর য়ে আমাদের অন্তরে আছেন তা আমরা কি করে জানব? য়ে আত্মাকে ঈশ্বর দিয়েছেন, সেই আত্মাই আমাদের বলছে য়ে ঈশ্বর আমাদের মধ্যে আছেন৷
1 John 4:1 প্রিয় বন্ধুরা, সংসারে অনেক ভণ্ড ভাববাদী দেখা দিয়েছে, তাই তোমরা সব আত্মাকে বিশ্বাস করো না৷ কিন্তু সেই সব আত্মাদের যাচাই করে দেখ য়ে তারা ঈশ্বর হতে এসেছে কিনা৷ 2 এইভাবে তোমরা ঈশ্বরের আত্মাকে চিনতে পারবে৷ য়ে কোন আত্মা যীশু খ্রীষ্ট য়ে রক্ত মাংসের দেহ ধারণ করে এসেছেন বলে স্বীকার করে, সে ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছে৷ 3 কিন্তু য়ে আত্মা, যীশুকে স্বীকার করে না, সে ঈশ্বরের কাছ থেকে আসে নি৷ এ সেই খ্রীষ্টারির আত্মা, খ্রীষ্টের শত্রু য়ে আসছে তা তোমরা শুনেছ, আর এখন সে তো সংসারে এসেই গেছে৷ 4 আমার স্নেহের সন্তানগণ, তোমরা ঈশ্বরের লোক, তাই তোমরা ওদের ওপর জযী হয়েছ; কারণ তোমাদের মধ্যে যিনি (ঈশ্বর) বাস করেন তিনি জগতের মধ্যে বাসকারী দিয়াবলের থেকে অনেক মহান৷ 5 এই ভণ্ড শিক্ষকরা হল জগতের, তাই তারা যা বলে তা সব জাগতিক কথাবার্তা, আর জগত তাদের কথা শোনে৷ 6 কিন্তু আমরা ঈশ্বরের লোক, ঈশ্বরকে য়ে জানে সে আমাদের কথা শোনে, য়ে ঈশ্বরের লোক নয় সে আমাদের কথা শোনে না৷ এইভাবেই আমরা সত্যের আত্মাকে ও ছলনার আত্মাকে চিনতে পারি৷ 7 প্রিয় বন্ধুরা, এস আমরা পরস্পরকে ভালবাসি, কারণ ঈশ্বরই ভালবাসার উত্স আর য়ে কেউ ভালবাসতে জানে সে ঈশ্বরের সন্তান, সে ঈশ্বরকে জানে৷ 8 য়ে ভালবাসতে জানে না, সে ঈশ্বরকে জানে না, কারণ ঈশ্বর স্বয়ং হলেন ভালবাসা৷ 9 ঈশ্বর আমাদের প্রতি তাঁর ভালবাসা এইভাবেই দেখিয়েছেন, তিনি তাঁর একমাত্র পুত্রকে এ জগতে পাঠালেন য়েন তাঁর মাধ্যমে আমরা জীবন লাভ করি৷ 10 ঈশ্বরের প্রতি আমাদের ভালবাসা নয়, বরং আমাদের প্রতি ঈশ্বরের ভালবাসাই হল প্রকৃত ভালবাসা৷ ঈশ্বর আমাদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত বলিরূপে তাঁর পুত্রকে পাঠিয়ে আমাদের প্রতি তাঁর ভালবাসা প্রকাশ করেছেন৷ 11 প্রিয় বন্ধুরা, এইভাবে ঈশ্বর আমাদের ভালবেসেছেন, সুতরাং আমরাও অবশ্যই পরস্পরকে ভালবাসব৷ 12 ঈশ্বরকে কেউ কখনও দেখেনি৷ যদি আমরা পরস্পরকে ভালবাসি, তবে ঈশ্বর আমাদের মধ্যে অবস্থান করেন; আর তাঁর ভালবাসা আমাদের মধ্যে পূর্ণতা লাভ করেছে৷ 13 আমরা জানি য়ে তিনি আমাদের মধ্যে আছেন; আর আমরা তাঁর মধ্যে অবস্থান করছি৷ এ বিষয় আমরা জানি, কারণ ঈশ্বর তাঁর আত্মাকে আমাদের দান করেছেন৷ 14 আমরা দেখেছি পিতা তাঁর পুত্রকে জগতের ত্রাণকর্তারূপে পাঠিয়েছেন৷ সেই বার্তাই আমরা লোকদের কাছে বলছি৷ 15 কেউ যদি স্বীকার করে য়ে, ‘যীশু ঈশ্বরের পুত্র,’ তবে ঈশ্বর তাঁর অন্তরে বাস করেন, আর সে ঈশ্বরেতে থাকে৷ 16 আমাদের জন্য ঈশ্বরের ভালবাসা আছে আমরা তা জানি ও বিশ্বাস করি৷ঈশ্বরই স্বয়ং ভালবাসা, আর য়ে কেউ ভালবাসায় থাকে সে ঈশ্বরের মধ্যে থাকে ও ঈশ্বর তার মধ্যে থাকেন৷ 17 যদি আমাদের ক্ষেত্রে ভালবাসা এই ভাবেই পূর্ণতা পায়, তবে শেষ বিচারের দিনে আমরা নির্ভয়ে দাঁড়াতে পারব, কারণ এ জগতে আমরা খ্রীষ্টেরই মতো৷ 18 য়েখানে ঈশ্বরের ভালবাসা সেখানে ভয় থাকে না, পরিপূর্ণ ভালবাসা ভয়কে দূর করে দেয়, কারণ ভয়ের সঙ্গে শাস্তির চিন্তা জড়িত থাকে৷ য়ে ভয় পায় সে ভালবাসায় পূর্ণতা লাভ করে নি৷ 19 তিনিই (ঈশ্বর) আগে আমাদের ভালবেসেছেন, আর তার ফলে আমরা ভালবাসতে পারি৷ 20 যদি কেউ বলে, ‘সে ঈশ্বরকে ভালবাসে’ অথচ সে তার খ্রীষ্টেতে কোন ভাই ও বোনকে ঘৃণা করে তবে সে মিথ্যাবাদী৷ য়ে ভাইকে দেখতে পাচ্ছে, সে যদি তাকে ঘৃণা করে তবে য়াঁকে সে কোনও দিন চোখে দেখে নি, সেই ঈশ্বরকে সে ভালবাসতে পারে না৷ 21 কারণ ঈশ্বরের কাছ থেকে আমরা এই আদেশ পেয়েছি, ঈশ্বরকে য়ে ভালবাসে সে য়েন তার নিজের ভাইকেও ভালবাসে৷
1 John 5:1 যাঁরা বিশ্বাস করে য়ে যীশুই খ্রীষ্ট, তারা ঈশ্বরের সন্তান৷ য়ে কেউ পিতাকে ভালবাসে, সে তাঁর সন্তানদের ভালবাসে৷ 2 আমরা কি করে জানব য়ে আমরা ঈশ্বরের সন্তানদের ভালবাসি? আমরা জানি য়েহেতু আমরা ঈশ্বরকে ভালবাসি ও তাঁর সব আদেশ পালন করি৷ 3 ঈশ্বরকে ভালবাসার অর্থই হচ্ছে তাঁর আদেশ পালন করা; আর ঈশ্বরের আদেশ ভারী বোঝার মতো নয়৷ 4 কারণ প্রত্যেক ঈশ্বরজাত সন্তান জগতকে জয় করে৷ 5 আমাদের বিশ্বাসই আমাদের জগতজযী করেছে৷ কে জগতের ওপরে বিজযী হতে পারে? য়ে বিশ্বাস করে য়ে, যীশুই ঈশ্বরের পুত্র৷ 6 ইনিই যীশু খ্রীষ্ট, যিনি জগতে জল ও রক্তের মধ্য দিয়ে এসেছিলেন৷ আত্মাই বলছেন এই কথা সত্য, আর সেই আত্মা স্বয়ং সত্য৷ 7 যীশুর বিষয়ে তিনজন সাক্ষ্য দিচ্ছেন৷ 8 আত্মা, জল ও রক্ত আর সেই তিনের এক সাক্ষ্য৷ 9 লোকে যখন সত্য কিছু বলে আমরা তা বিশ্বাস করি, তবে ঈশ্বরের দেওয়া সাক্ষ্য এর থেকে কত না মূল্যবান৷ বস্তুত ঈশ্বর স্বয়ং আমাদের কাছে এই সাক্ষ্য দিয়েছেন, তিনি তাঁর নিজের পুত্রের বিষয়ে সত্য জানিয়েছেন৷ 10 ঈশ্বরের পুত্রকে য়ে বিশ্বাস করে ঐ সত্য তার অন্তরে থাকে৷ ঈশ্বরের কথায় য়ে বিশ্বাস করে না, সে তাঁকে মিথ্যাবাদী করেছে, কারণ ঈশ্বর তাঁর পুত্রের বিষয়ে য়ে কথা বলেছেন সে তাতে বিশ্বাস করে নি৷ 11 সেই সাক্ষ্য হচ্ছে, ঈশ্বর আমাদের অনন্ত জীবন দিয়েছেন এবং এই জীবন তাঁর পুত্রে আছে৷ 12 ঈশ্বরের পুত্রকে য়ে পেয়েছে সেই সত্য জীবন পেয়েছে৷ ঈশ্বরের পুত্রকে য়ে পায় নি সে জীবন পায় নি৷ 13 তোমরা যাঁরা ঈশ্বরের পুত্রের ওপর বিশ্বাস করেছ আমি তোমাদের কাছে এই কথা লিখছি য়েন তোমরা জানতে পার য়ে তোমরা অনন্ত জীবন পেয়েছ৷ 14 আমরা এবিষয়ে সুনিশ্চিত য়ে আমরা যদি তাঁর ইচ্ছানুসারে তাঁর কাছে কিছু চাই তবে তিনি আমাদের প্রার্থনা শুনবেন; 15 আর আমরা যদি সত্যি জানি য়ে তিনি আমাদের প্রার্থনা শুনেছেন তবে জানতে হবে য়ে আমরা তাঁর কাছে যা চেয়েছি তা পেয়ে গিয়েছি৷ 16 যদি কেউ তার খ্রীষ্টান ভাইকে এমন কোন পাপ করতে দেখে যার পরিণতি অনন্ত মৃত্যু নয়, তবে সে তার ভাইয়ের জন্য প্রার্থনা করবে, আর ঈশ্বর তাকে জীবন দান করবেন৷ যাঁরা অনন্ত মৃত্যুজনক পাপ করে না, তিনি কেবল তাদেরই তা দেবেন৷ মৃত্যুজনক পাপ আছে, আর আমি তোমাদের সেরকম পাপ যাঁরা করে তাদের জন্য প্রার্থনা করতে বলছি না৷ 17 সমস্ত রকম অধার্মিকতাই পাপ; কিন্তু এমন পাপ আছে যার ফল অনন্ত মৃত্যু নয়৷ 18 আমরা জানি, ঈশ্বরের সন্তানরা পাপের জীবনযাপন করে না৷ ঈশ্বরের পুত্র তাদের রক্ষা করেনএবং পাপাত্মা তাদের কোনভাবে ক্ষতি করতে পারে না৷ 19 আমরা জানি য়ে আমরা ঈশ্বরের লোক; কিন্তু সমস্ত জগত রয়েছে পাপাত্মা শক্তির কবলে৷ 20 আমরা জানি য়ে ঈশ্বরের পুত্র এসেছেন, আর তিনি আমাদের সেই বোধ বুদ্ধি দিয়েছেন যার দ্বারা আমরা সেই সত্যময় ঈশ্বরকে জানতে পারি৷ এখন আমরা সত্য ঈশ্বরে আছি, কারণ আমরা তাঁর পুত্র যীশু খ্রীষ্টেতে আছি৷ তিনিই সত্য ঈশ্বর ও অনন্ত জীবন৷ 21 তাই স্নেহের সন্তানরা, তোমরা মিথ্যা দেবদেবীর কাছ থেকে দূরে থেকো৷
2 John 1:1 সেই প্রাচীন এই চিঠি ঈশ্বরের মনোনীত মহিলা ও তাঁর সন্তানদের কাছে লিখেছে৷ আমি তোমাদের সকলকে সত্যে ভালবাসি৷ কেবল আমি নই, যাঁরা সত্য কি জানে তারাও তোমাদের ভালবাসে৷ 2 সেই সত্য আমাদের অন্তরে আছে বলেই আমরা তোমাদের ভালবাসি৷ সেই সত্য আমাদের সঙ্গে চিরকাল থাকবে৷ 3 পিতা ঈশ্বর ও তাঁর পুত্র যীশু খ্রীষ্টের কাছ থেকে অনুগ্রহ, দয়া ও শান্তি আমাদের সঙ্গে থাকবে৷ সত্য ও ভালবাসার মধ্য দিয়ে আমরা এই আশীর্বাদের অধিকারী হয়েছি৷ 4 তোমার সন্তানদের মধ্যে কেউ কেউ সত্য পথে চলছে ও পিতা আমাদের য়েমন আদেশ করেছেন সেই অনুসারে জীবনযাপন করছে দেখে আমি অত্যন্ত আনন্দিত হয়েছি৷ 5 প্রিয় ভদ্রমহিলা, তোমার কাছে আমার অনুরোধ আমরা য়েন একে অপরকে ভালবাসি৷ এটা কোন নতুন আদেশ নয়৷ এই আদেশ তো আমরা শুরু থেকেই শুনে আসছি৷ 6 এবং এই ভালবাসার অর্থ হল, ঈশ্বর য়েমন আদেশ করেছেন সেইরকমভাবে জীবনযাপন করা৷ ঈশ্বরের আদেশ হল তোমরা ভালবাসায় ভরা জীবনযাপন কর৷ 7 এই জগতে অনেক ভণ্ড শিক্ষক তৈরী হয়েছে৷ যীশু খ্রীষ্ট য়ে মানব দেহে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন একথা তারা স্বীকার করে না৷ য়ে এইরকম করে, সে শিক্ষক হিসেবে ঠগ ও খ্রীষ্টারি৷ 8 তোমরা নিজেদের সম্পর্কে সাবধান হও! যাতে য়ে পুরস্কারের জন্য তোমরা কাজ করেছ তা থেকে তোমরা বঞ্চিত না হও৷ সতর্ক থেকো য়েন পুরো পুরস্কারটাই পেতে পারো৷ 9 কেবল খ্রীষ্টের শিক্ষারই অনুসরণ করা উচিত, যদি কেউ খ্রীষ্টের শিক্ষাকে পরিবর্তিত করে তবে সে ঈশ্বরকে পায় না; কিন্তু য়ে কেউ সেই শিক্ষানুসারে চলে সে পিতা ও পুত্র উভয়কেই পায়৷ 10 যদি কেউ যীশুর বিষয়ে এই সত্য শিক্ষা না নিয়ে তোমাদের কাছে শিক্ষা দিতে আসে, তবে তাকে বাড়িতে গ্রহণ করো না, কোন রকম শুভেচ্ছাও তাকে জানিও না৷ 11 কারণ য়ে তাকে শুভেচ্ছা জানায় সে তার দুষ্কর্মের ভাগী হয়৷ 12 যদিও তোমাদের কাছে লেখার অনেক বিষয়ই আমার ছিল, কিন্তু আমি কলম ও কালি ব্যবহার করতে চাই না৷ আমি আশা করছি তোমাদের কাছে যাব তাহলে আমরা একসাথে হয়ে অনেক কথা বলতে পারব, য়েন আমাদের আনন্দ সম্পূর্ণ হয়৷ 13 ঈশ্বরের মনোনীত তোমার বোনেরসন্তানেরা তোমাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে৷ 14 15
3 John 1:1 আমার প্রিয় বন্ধু গায়েরকে, যাকে আমি সত্যে ভালবাসি, তার প্রতি এই প্রাচীনের পত্র৷ 2 প্রিয় বন্ধু, আমি জানি তুমি আত্মিকভাবে ভাল আছ; আর তাই আমি প্রার্থনা করি য়েন তোমার সবকিছু ভালভাবে চলে এবং তুমি সুস্থ থাক৷ 3 আমি খুব খুশী হলাম, কারণ আমাদের ভাইদের মধ্যে কয়েকজন এসে, তুমি য়ে সত্য ধরে রয়েছ ও য়ে সত্য পথে চলেছ সে বিষয়ে জানাল৷ 4 আমার সন্তানরা য়ে সত্যের পথে চলছে, এই খবর শুনে আমার য়ে আনন্দ হয়, এর থেকে বেশী আনন্দ আমার আর কিছুতে হয় না৷ 5 প্রিয় বন্ধু, আমাদের ভাইদের, এমন কি যাঁরা অপরিচিত, তাদের সকলকে তুমি য়ে সাহায্য করে থাক এ অতি উত্তম৷ 6 তাঁদের প্রতি তোমার ভালবাসার কথা তাঁরা এখানকার মণ্ডলীর সকলকে বলেছেন৷ তাঁদের যাত্রা পথে সাহায্য করলে তুমি ভালোই করবে৷ এমনভাবে সাহায্য করো য়েন ঈশ্বর খুশী হন, 7 কারণ তাঁরা খ্রীষ্টের পরিচর্য়ার উদ্দেশ্যেই যাত্রা শুরু করেছেন; আর তাঁরা এর জন্য যাঁরা খ্রীষ্ট বিশ্বাসী নয় তাদের কাছ থেকে কিছুই গ্রহণ করেন না৷ 8 তাই এই ধরণের লোকদের সাহায্য করতে আমরা বাধ্য, য়েন আমরা সত্যের পক্ষে সহকর্মীরূপে কাজ করি৷ 9 আমি মণ্ডলীকে চিঠি লিখলাম; কিন্তু সেই দিয়ত্রিফি য়ে তাদের নেতা হতে চায়, সে আমাদের কথা গ্রাহ্য় করে না৷ 10 এই কারণে আমি ওখানে গেলে সে কি করছে তা প্রকাশ করব৷ সে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাভাবে মন্দ কথা বলে, কিন্তু এতেও সে খুশী নয়৷ এছাড়া ভাইদের সে স্বাগত জানাতে অস্বীকার করে৷ এমনকি যাঁরা সেই ভাইদের সাহায্য করতে চায়, দিয়ত্রিফি তাদের সাহায্য করতে দেয় না, বরং তাদের মণ্ডলী থেকে বাইরে বের করে দেয়৷ 11 প্রিয় বন্ধু, যা কিছু মন্দ তার অনুকরণ করো না, কিন্তু যা কিছু ভাল তার অনুকরণ করো৷ য়ে ভাল কাজ করে সে ঈশ্বরের লোক, য়ে মন্দ কাজ করে সে ঈশ্বরকে দেখে নি৷ 12 সকলেই দীমীত্রিয়ের উচ্চ প্রশংসা করে, এমনকি সত্যও তার সাক্ষী, আমরাও সেই একই কথা বলব৷ তুমি জান য়ে আমরা যা বলি তা সত্য৷ 13 তোমাকে লেখবার অনেক কথাই আমার ছিল; কিন্তু কালি কলমে তা লিখতে ইচ্ছা করে না৷ 14 আশা করি শিগ্গিরই তোমাকে দেখব, তখন আমরা সামনা-সামনি কথাবার্তা বলব৷ 15 তোমার শান্তি হোক্৷ তোমার সব বন্ধুরা তোমায় শুভেচ্ছা জানাচ্ছে৷ আমাদের বন্ধুদের প্রত্যেককে শুভেচ্ছা জানিও৷
Jude 1:1 আমি যিহূদা, যীশু খ্রীষ্টের দাস এবং যাকোবের ভাই, এই চিঠি তাদের উদ্দেশ্যে লিখছি যাদের ঈশ্বর আহ্বান করেছেন৷ পিতা ঈশ্বর তোমাদের ভালোবাসেন এবং যীশু খ্রীষ্টের দ্বারা তোমাদের রক্ষা করেন৷ 2 ঈশ্বর তাঁর দয়া, শান্তি এবং প্রেম আরো অধিক পরিমাণে তোমাদের জীবনে দান করুন৷ 3 প্রিয় বন্ধুরা, আমাদের সকলের জন্য য়ে পরিত্রাণের ব্যবস্থা রয়েছে তারই বিষয়ে আমি তোমাদের কিছু লিখতে আগ্রহী ছিলাম৷ কিন্তু তবু একবার য়ে বিশ্বাস তোমরা লাভ করেছ, বা চিরদিনের জন্য উত্তম, যা ঈশ্বর তাঁর পবিত্র লোকদের দিয়েছেন, তার পক্ষে য়েন তোমরা প্রাণপণে যুদ্ধ কর সেই বিষয়ে উত্সাহ দেবার জন্য তোমাদের কাছে লেখা দরকার বলে আমি মনে করলাম৷ 4 কারণ এমন কিছু লোক গোপনে তোমাদের দলে ঢুকে পড়েছে যাদের সম্বন্ধে বহুপূর্বেই শাস্ত্রে দণ্ডাজ্ঞার কথা লেখা হয়েছে৷ এই অধার্মিক লোকেরা ঈশ্বরের অনুগ্রহকে তাদের অনৈতিক কাজকর্মের অজুহাতে পরিণত করেছে; আর যীশু খ্রীষ্ট য়ে আমাদের একমাত্র কর্তা ও প্রভু তা এরা অস্বীকার করে৷ 5 আমি তোমাদের কিছু কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, যদিও তোমরা সকলেই এসব বিষয় জান, তবু বলব প্রভু মিশর দেশ থেকে তাঁর প্রজাদের উদ্ধার করে পরে যাঁরা অবিশ্বাসী তাদের সকলকে ধ্বংস করেছিলেন৷ 6 আমি তোমাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, য়ে সেই স্বর্গদূতরা যাঁরা নিজেদের আধিপত্য রক্ষা না করে নিজ বাসস্থান ত্যাগ করেছিল, তাদের তিনি (ঈশ্বর) ঘোর অন্ধকার কারাগারে অনন্তকালীন শেকলে বেঁধে রেখেছেন আর মহাবিচারের দিনে তাদের বিচার করা হবে৷ 7 সদোম, ঘমোরা ও তাদের আশেপাশের নগরগুলির কথা ভুলে য়েও না৷ এই স্বর্গদূতদের মতো তারাও নীতিহীন য়ৌনতায় প্রবৃত্ত হত এবং অস্বাভাবিক য়ৌনসংসর্গে লিপ্ত হত৷ অনন্ত আগুনে শাস্তি ভোগ করে তারা আমাদের সামনে দৃষ্টান্তস্বরূপ হয়ে রয়েছে৷ 8 একইভাবে এই লোকরা, যাঁরা তোমাদের দলে এসেছে, তারা নিজেদের স্বপ্ন দ্বারা চালিত হয় এবং নিজেদের দেহকে পাপে কলুষিত করে৷ তারা প্রভুর কর্তৃত্ত্ব (নিয়ম) অগ্রাহ্য করে আর যাঁরা সম্মানীয় ব্যক্তি তাদের নিন্দা করে৷ 9 কিন্তু প্রধান স্বর্গদূত মীখায়েলের কথা আমরা জানি, যখন তিনি মোশির দেহ নিয়ে দিয়াবলের সঙ্গে তর্ক করছিলেন তখন তিনি দিয়াবলকে কোন কটু কথা বলতে সাহস করেন নি, তার পরিবর্তে শুধু বলেছিলেন, ‘প্রভু তোমাকে তিরস্কার করুন৷’ 10 কিন্তু এই লোকরা য়ে সব বিষয় বোঝে না তারই নিন্দা করে; আর চিন্তা দ্বারা নয় বরং তাদের স্বাভাবিক অনুভূতির দ্বারা যা বোঝে, যুক্তিবিহীন পশুদের মত তাই করে নিজেদের ধ্বংস ডেকে আনে৷ 11 তাদের ধিক্, কারণ কয়িন য়ে পথে গিয়েছিল তারাও সেই পথ ধরেছে৷ তারা বিলিয়মের মতো টাকার লোভে ভ্রান্ত পথে চলেছে৷ আর কোরহের মতো বিদ্রোহী হয়ে ধ্বংসের পথে চলেছে৷ 12 এইসব লোকরা তোমাদের প্রেমভোজে ময়লা দাগের মতো৷ কোন ভয় না করে তারা তোমাদের সঙ্গে ভোজ খায় এবং কেবল নিজেদের কথাই ভাবে৷ তারা হাওয়ায় ভেসে যাওয়া বৃষ্টিহীন মেঘের মতো, ফলনের ঋতুতে ফলহীন বলে শেকড় সমেত উপড়ে ফেলা গাছের মতো; সুতরাং তারা দুই বার মৃত৷ 13 তাদের লজ্জাজনক কাজ উত্তাল সমুদ্রে তৈরী ছড়িয়ে যাওয়া ফেনার মতো৷ ঐ লোকগুলি আকাশে ইতস্ততঃ ভ্রমণরত তারার মতো৷ ঘনতম অন্ধকারের মধ্যে তাদের জন্য এক অনন্তকালীন স্থান রয়েছে৷ 14 আদমের থেকে সপ্তম পুরুষ য়ে হনোক, তিনিও এই লোকদের সম্বন্ধে ভাববাণী করেছেন: ‘দেখ তাঁর লক্ষ লক্ষ পবিত্র স্বর্গদূতদের সঙ্গে নিয়ে প্রভু আসছেন৷ 15 তিনি সকলের বিচার করার জন্য এবং সকলকে তাদের কৃত সকল অধার্মিক কাজকর্মের জন্য শাস্তি দিতে আসছেন৷ এইসব অধার্মিক পাপী তাঁর বিরুদ্ধে যত সব উদ্ধত কথাবার্তা বলেছে সেই কারণে তাদের দোষী ঘোষণা করার জন্য আসছেন৷’ 16 তারা সব সময় অভিযোগ ও নিন্দা করে, তাদের নিজেদের অভিলাষ অনুসারে চলে৷ নিজেদের বিষয়ে গর্ব করে এবং লাভের আশায় তারা অন্যদের তোষামোদ করে৷ 17 প্রিয় বন্ধুরা, আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের প্রেরিতেরা যা বলে গেছেন তা মনে রেখো৷ 18 তারা তো তোমাদের বলতেন, ‘শেষের সময় এমন সব উপহাসকরা উঠবে যাঁরা নিজেদের ইচ্ছানুযাযী ঈশ্বর-বিরুদ্ধ কাজ করবে৷’ 19 এই লোকরাই তোমাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে৷ তারা তাদের পাপ প্রবৃত্তির দাস৷ তাদের সেই আত্মা নেই৷ 20 কিন্তু প্রিয় বন্ধু, তোমরা নিজেদের পরম পবিত্র বিশ্বাসের ওপর গেঁথে তোল৷ পবিত্র আত্মাতে প্রার্থনা কর৷ 21 নিজেদের ঈশ্বরের প্রেমে রাখ; আর অনন্ত জীবনের জন্য আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের দয়া লাভের অপেক্ষায় থাক৷ 22 যাদের মনে সন্দেহ আছে, এমন লোকদের সাহায্য কর৷ 23 নরকের আগুন থেকে ছিনিয়ে নিয়ে তাদের পরিত্রাণ দ্বারা রক্ষা কর৷ অন্যদের প্রতি সতর্কভাবে করুণা প্রদর্শন কর; কিন্তু পাপের দ্বারা কলঙ্কিত তাদের বস্ত্রকে ঘৃণা কর৷ 24 ঈশ্বর শক্তিশালী, তিনি তোমাদের পড়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করবেন; আর নিজের মহিমার সামনে নির্দোষ অবস্থায় আনন্দের সঙ্গে তোমাদের উপস্থিত করতে তিনি সক্ষম৷ 25 তিনিই একমাত্র ঈশ্বর, আমাদের উদ্ধারকর্তা৷ আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের দ্বারা তাঁরই প্রতাপ, মহিমা, পরাক্রম ও কর্তৃত্ত্ব যুগপর্য়ায়ে যুগে যুগে অবিচল থাকুক্৷ আমেন৷
Revelation 1:1 এই হল যীশু খ্রীষ্টের বাক্য৷ য়েসব ঘটনা খুব শীঘ্রই ঘটবে তা তাঁর দাসদের দেখানোর জন্য ঈশ্বর যীশুকে তা দিয়েছিলেন; আর খ্রীষ্ট তাঁর স্বর্গদূতকে পাঠিয়ে তাঁর দাস য়োহনকে তা জানালেন৷ 2 য়োহন যা যা দেখেছিলেন সে সব বিষয়ে সাক্ষ্য দিয়েছেন৷ এ হল সেই সত্য যা যীশু খ্রীষ্ট তাঁর কাছে বলেছিলেন - যা কেবলমাত্র ঈশ্বরের বার্তা৷ 3 ধন্য সেইজন, য়ে এই বার্তার বাক্যগুলি পাঠ করে এবং যাঁরা তা শোনে ও তাতে লিখিত নির্দেশগুলি পালন করে তারাও ধন্য, কারণ সময় সন্নিকট৷ 4 এশিয়া প্রদেশেরসাতটি খ্রীষ্ট মণ্ডলীর কাছে আমি য়োহন লিখছি৷ঈশ্বর যিনি আছেন, যিনি ছিলেন ও যিনি আসছেন এবং তাঁর সিংহাসনের সম্মুখবর্তী সপ্ত আত্মা 5 ও যীশু খ্রীষ্টের কাছ থেকে অনুগ্রহ ও শান্তি তোমাদের মধ্যে নেমে আসুক৷ বিশ্বস্ত সাক্ষী যীশু, যিনি মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিতদের মধ্যে প্রথম এবং এই পৃথিবীর রাজাদের শাসনকর্তা, তিনি আমাদের ভালবাসেন এবং নিজের রক্ত দিয়ে আমাদের পাপ থেকে মুক্ত করেছেন৷ 6 যীশু আমাদের নিয়ে এক রাজ্য গড়েছেন এবং তাঁর পিতা ঈশ্বরের সেবার জন্য আমাদের যাজক করেছেন৷ যীশুর মহিমা ও পরাক্রম যুগে যুগে স্থাযী হোক্৷ আমেন৷ 7 দেখ, যীশু মেঘ সহকারে আসছেন৷ আর প্রত্যেকে তাঁকে দেখতে পাবে, এমনকি যাঁরা তাঁকে বর্শাদিয়ে বিদ্ধ করেছিল, তারাও দেখতে পাবে৷ তখন পৃথিবীর সকল লোক তাঁর জন্য কান্নায় ভেঙ্গে পড়বে৷ হ্যাঁ, তাই ঘটবে! আমেন৷ 8 প্রভু ঈশ্বর বলেন, ‘আমিই আল্ফা ও ওমিগা;আমিই সেই সর্বশক্তিমান৷ আমিই সেই জন যিনি আছেন, যিনি ছিলেন এবং যিনি আসছেন৷’ 9 আমি য়োহন, খ্রীষ্টেতে তোমাদের ভাই৷ আমরা একসাথে যীশুতে রয়েছি: আমরা কষ্ট, রাজ্য, ও ধৈর্য্য সহ্য করায় সহভাগী৷ আমি পাটম্দ্বীপে ছিলাম কারণ আমি ঈশ্বরের বাক্য এবং যীশুর প্রকাশিত সত্য প্রচার করেছিলাম৷ 10 আমি প্রভুর দিনে আত্মাবিষ্ট হলাম; আর পেছন থেকে এক উচ্চস্বর শুনতে পেলাম৷ মনে হল তূরীধ্বনি হচ্ছে৷ 11 ঘোষিত হল, ‘তুমি যা দেখছ তা একটি পুস্তকে লেখ, আর ইফিষ, স্মুর্ণা, পর্গাম, থুয়াতীরা, সার্দ্দি, ফিলাদিলফিয়া ও লায়দিকেয়া এই সাতটি মণ্ডলীর কাছে তা পাঠিয়ে দাও৷’ 12 আমার সঙ্গে কে কথা বলছেন তা দেখার জন্য আমি পেছন ফিরে তাকালাম এবং দেখলাম, সাতটি সুবর্ণ দীপাধার৷ 13 সেই দীপাধারগুলির মাঝখানে দাঁড়িয়ে, ‘মানবপুত্রের মতন একজন৷’ পরণে তাঁর লম্বা পোশাক, আর বুকে জড়ানো সোনালী কটিবন্ধ৷ 14 তাঁর মাথা ও চুল ছিল পশমের মত - য়ে পশম তুষারের মত শুভ্র; তাঁর চোখ ছিল আগুনের শিখার মতো৷ 15 তাঁর পা য়েন আগুনে পোড়ানো উজ্জ্বল পিতল, বন্যার জল কল্লোলের মতো তাঁর কন্ঠস্বর৷ 16 তাঁর ডান হাতে সাতটি তারা, তাঁর মুখ থেকে নিঃসৃত হচ্ছিল এক তীক্ষ্ণ দ্বিধারযুক্ত তরবারি৷ পূর্ণ তেজে জ্বলন্ত সূর্যের মত তাঁর রূপ৷ 17 তাঁকে দেখে আমি মুর্চ্ছিত হয়ে তাঁর চরণে লুটিয়ে পড়লাম৷ তখন তিনি আমার গায়ে তাঁর ডান হাত রেখে বললেন, ‘ভয় করো না! আমি প্রথম ও শেষ৷ 18 আমি সেই চির জীবন্ত, আমি মরেছিলাম, আর দেখ আমি চিরকাল যুগে যুগে জীবিত আছি৷ মৃত্যু ও পাতালেরচাবিগুলি আমি ধরে আছি৷ 19 তাই তুমি যা যা দেখলে, যা যা এখন ঘটছে আর এরপর যা ঘটবে তা লিখে নাও৷ 20 আমার ডানহাতে য়ে সাতটি তারা ও সাতটি সুবর্ণ দীপাধার দেখলে তাদের গুপ্ত অর্থ হচ্ছে এই-সাতটি তারা ঐ সাতটি মণ্ডলীর স্বর্গদূত আর সেই সাতটি দীপাধারের অর্থ সেই সাতটি মণ্ডলী৷
Revelation 2:1 ‘ইফিষে মণ্ডলীর স্বর্গদূতদের উদ্দেশ্যে লেখ: ‘যিনি তাঁর ডান হাতে সাতটি তারা ধরে থাকেন আর যিনি সাতটি সুবর্ণ দীপাধারের মাঝে যাতায়াত করেন তিনি বলছেন: 2 আমি জানি তুমি কি করেছ৷ তুমি কঠোর পরিশ্রম করেছ, ধৈর্য় সহকারে সহ্য করেছ৷ তুমি য়ে দুষ্ট লোকদের সহ্য করতে পার না তাও আমি জানি৷ যাঁরা প্রেরিত নয় অথচ নিজেদের প্রেরিত বলে দাবী করে তুমি তাদের পরীক্ষা করেছ, আর তারা য়ে মিথ্যাবাদী তা জেনেছ৷ 3 আমি জানি তোমার ধৈর্য্য আছে; আর আমার নামের জন্য দুঃখকষ্ট সহ্য করেছ, ক্লান্ত হয়ে পড়ো নি৷ 4 ‘তবু তোমার বিরুদ্ধে আমার এই অভিযোগ আছে; তোমার য়ে ভালবাসা প্রথমে ছিল তা তুমি হারিয়ে ফেলেছ৷ 5 তাই তুমি চিন্তা করে দেখ কোথা থেকে তোমার পতন হয়েছে৷ অনুতাপ কর, আর শুরুতে য়েসব কাজ করতে তাতে ফিরে যাও৷ তুমি যদি অনুতাপ না কর তবে আমি তোমার কাছে আসব ও তোমার দীপাধারটি তার স্থান থেকে সরিয়ে দেব৷ 6 কিন্তু একটি গুণ তোমার আছে, তুমি নীকলায়তীয়দেরকাজ ঘৃণা কর, তাদের কাজ আমিও ঘৃণা করি৷ 7 যার শোনার মত কান আছে সে শুনুক আত্মা মণ্ডলীগুলিকে কি বলছেন৷ য়ে বিজযী হয় আমি তাকে জীবন বৃক্ষের ফল খাওয়ার অধিকার দেব৷ এই বৃক্ষ রয়েছে ঈশ্বরের বাগানে৷ 8 ‘স্মুর্ণার মণ্ডলীর স্বর্গদূতদের কাছে এই কথা লেখ: ‘যিনি আদি ও অন্ত, যিনি মরেছিলেন এবং পুনরায় জীবিত হলেন, তিনি এই কথা বলছেন৷ 9 আমি তোমার দুঃখভোগ ও দারিদ্র্যের কথা জানি; কিন্তু সত্যি তুমি ধনবান! তোমাদের নামে লোকে য়ে সব মন্দ কথা বলে তা আমি জানি৷ সেই সব লোক নিজেদের ইহুদী বলে কিন্তু সত্যিকারের ইহুদী নয়, বরং শয়তানের দলের লোক৷ 10 তোমাকে য়ে সমস্ত দুঃখভোগ করতে হবে তাতে ভয় পেও না৷ আমি তোমাকে বলছি তোমাদের পরীক্ষা করার জন্য দিয়াবল তোমাদের কাউকে কাউকে কারাগারে পুরবে৷ দশ দিন পর্যন্ত তোমাদের কষ্ট হবে৷ যদি মরতে হয় তবু আমার প্রতি বিশ্বস্ত থেকো৷ যদি তুমি বিশ্বস্ত থাক তাহলে আমি তোমাকে জীবন-মুকুট দেব৷ 11 ‘আত্মা মণ্ডলীগুলিকে কি বলছেন যার শোনার মত কান আছে সে শুনুক৷ য়ে জযী হয়, সে দ্বিতীয় মৃত্যুর দ্বারা আঘাত পাবে না৷ 12 ‘পর্গাম মণ্ডলীর স্বর্গদূতদের কাছে লেখ:‘য়াঁর হাতে তীক্ষ্ন দ্বিধার তরোয়াল তিনি বলেন: 13 আমি জানি তুমি কোথায় বাস করছ৷ তুমি সেইখানে বাস করছ, য়েখানে শয়তানের সিংহাসন রয়েছে৷ কিন্তু আমার প্রতি তুমি বিশ্বস্ত আছ৷ এমনকি আন্তিপাসের সময়ও আমার প্রতি তোমার য়ে বিশ্বাস তা অস্বীকার কর নি৷ আন্তিপাস আমার এক বিশ্বস্ত সাক্ষী, য়ে তোমাদের নগরে নিহত হয়েছিল৷ তোমাদের নগর সেইখানে য়েখানে শয়তান বাস করে৷ 14 ‘তবু তোমাদের বিরুদ্ধে আমার কয়েকটি কথা বলার আছে৷ তোমাদের মধ্যে এমন কিছু লোককে তুমি সহ্য করেছ যাঁরা বিলিয়মের শিক্ষা অনুসারে চলে৷ ইস্রায়েলকে কি করে পাপে ফেলা যায় তা বিলিয়ম শিখিয়েছিল৷ সেই লোকরা প্রতিমার সামনে উত্সর্গ করা খাদ্য় খেয়ে ও ব্যভিচার করে পাপ করেছিল৷ 15 হ্যাঁ, তোমাদের মধ্যেও বেশ কিছু লোক নীকলায়তীয়দের শিক্ষা অনুসারে চলে৷ 16 তাই বলি, তুমি মন ফিরাও না হলে আমি শিগ্গির তোমার কাছে আসব; আর আমার মুখের তরবারি দিয়ে তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করব৷ 17 ‘আত্মা মণ্ডলীগুলিকে কি বলছেন যার শোনার মতো কান আছে সে শুনুক৷‘য়ে জীবনে জযী হয়, তাকে আমি গুপ্ত মান্নার অংশ খেতে দেব এবং আমি তাদের প্রত্যেককে একটি করে সাদা পাথর দেব৷ সেই পাথরের ওপর একটা নতুন নাম লেখা আছে; যা অন্য কেউ জানতে পারবে না, কেবল য়ে তা পাবে সেই জানতে পারবে৷’ 18 ‘থুয়াতীরাস্থ মণ্ডলীর স্বর্গদূতের কাছে এই কথা লেখ:‘যিনি ঈশ্বরের পুত্র; য়াঁর চোখ আগুনের শিখার মতো ও য়াঁর পা উজ্জ্বল পিতলের মতো, তিনি এই কথা বলছেন: 19 আমি তোমার বিশ্বাস, প্রেম, পরিচর্য়া ও ধৈর্য়ের বিষয় জানি৷ প্রথমে তুমি যা করেছিলে তার থেকে এখন য়ে আরও বেশী কাজ করছ তাও আমি জানি৷ 20 তবু তোমার বিরুদ্ধে এই আমার অভিযোগ, - ঈষেবল নামে সেই স্ত্রীলোককে তুমি তার ইচ্ছামতো চলতে দিচ্ছ৷ সে নিজেকে ভাববাদিনী বলে৷ সে আমার লোকদের শিক্ষা দিয়ে ভুল পথে নিয়ে যাচ্ছে৷ ঈষেবল আমার লোকদের ব্যভিচার করতে ও প্রতিমার কাছে উত্সর্গ করা বলির মাংস খেতে প্রলোভিত করছে৷ 21 আমি তাকে মন ফেরাবার জন্য সময় দিয়েছিলাম; কিন্তু সে তার ব্যভিচারের জন্য অনুতাপ করতে চায় না৷ 22 তাই আমি তাকে রোগশয্যায় ফেলব; আর যাঁরা তার সঙ্গে ব্যভিচার করছে, তারা যদি তার সঙ্গে করা পাপ কাজের জন্য অনুতাপ না করে তবে তাদেরও মহাকষ্টের মধ্যে ফেলব৷ 23 আমি তার সন্তানদের ওপর মহামারী এনে তাদের মেরে ফেলব, তাতে সমস্ত মণ্ডলী জানতে পারবে, আমিই একজন য়ে সমস্ত লোকের মন ও হৃদয় সকল জানি৷ তোমরা প্রত্যেকে যা করেছ তার প্রতিফল আমি তোমাদের প্রত্যেককে দেব৷ 24 ‘থুয়াতীরাতে বাকী লোক, তোমরা যাঁরা তার এই ভুল শিক্ষার অনুসারী হও নি, লোকে যাকে শয়তানের নিগূঢ়তত্ত্ব বলে, তা যাঁরা শেখে নি, সেই তোমাদের ওপর অন্য কোন ভার চাপিয়ে দিচ্ছি না৷ কেবল এইটুকু বলি 25 যা তোমাদের আছে, তা আমি ফিরে না আসা পর্যন্ত শক্ত করে ধরে থাক৷ 26 ‘আর য়ে জয় করে ও শেষ পর্যন্ত আমার ইচ্ছা অনুসারে চলে তাকে আমি আমার সমস্ত জাতির ওপরে কর্তৃত্ত্ব করতে অধিকার দেব৷ 27 ‘তাতে সে লৌহদণ্ডের দ্বারা তাদের শাসন করবে৷ মাটির পাত্র ভাঙ্গার মতো সে তাদের ভেঙ্গে চুরমার করবে৷’গীতসংহিতা 2:9 28 পিতার কাছ থেকে আমি তেমন ক্ষমতাই পেয়েছি, আমি তাকে ভোরের তারাও দেব৷ 29 আত্মা মণ্ডলীগুলিকে কি বলছেন, যার শোনার মত কান আছে সে শুনুক৷
Revelation 3:1 ‘সার্দ্দিস্থ মণ্ডলীর স্বর্গদূতদের কাছে এই কথা লেখ: ‘ঈশ্বরের সপ্ত আত্মা ও সপ্ত তারা যার আছে তিনি বলেন: আমি জানি তোমার সব কাজের কথা৷ লোকেরা বলে তুমি নাকি জীবন্ত, কিন্তু বাস্তবে তুমি মৃত! 2 এখন জাগো৷ য়েটুকু বাকি বিষয় মৃতকল্প হল তাকে শক্তিশালী কর; কারণ তোমার কোন কাজ আমার ঈশ্বরের দৃষ্টিতে সিদ্ধ বলে দেখিনি৷ 3 তাই য়ে শিক্ষা তুমি পেয়েছ ও শুনেছ তা মনে রেখো এবং তার বাধ্য হও৷ তোমার মন-ফিরাও! তুমি যদি সচেতন না হও, তবে চোর য়েমন আসে সেইরকম হঠাত্ আমি তোমার কাছে এসে হাজির হব; কোন সময় য়ে আমি আসব তা তুমি জানতেও পারবে না৷ 4 যাই হোক, সার্দ্দিতে তবু এমন কিছু লোক তোমার দলে আছে যাঁরা তাদের বস্ত্র কলুষিত করে নি, তারা শুভ্র বস্ত্র পরে আমার সঙ্গে চলাফেরা করবে, কারণ তারা তার য়োগ্য৷ 5 য়ে জযী হয়, সে ঐরকম শুভ্র পোশাক পরবে; আর আমি কোন মতেই তার নাম জীবন পুস্তক থেকে মুছে ফেলব না, আমি স্বীকার করব য়ে সে আমার৷ আমার পিতার সামনে ও তাঁর স্বর্গদূতদের সামনে আমি একথা বলব৷ 6 আত্মা মণ্ডলীগুলিকে কি বলছেন যার শোনার মতো কান আছে সে শুনুক৷ 7 ‘ফিলাদিল্ফিয়ার মণ্ডলীর স্বর্গদূতদের কাছে লেখ: ‘যিনি পবিত্র ও যিনি সত্য তিনি তোমায় একথা বলছেন৷ তাঁর কাছে দাযূদের চাবি আছে; তিনি খুললে কেউ তা বন্ধ করতে পারে না বা বন্ধ করলে কেউ তা খুলতে পারে না৷ তিনিই একথা বলছেন: 8 আমি তোমার সব কাজের কথা জানি৷ শোন, আমি তোমার সামনে একটি খোলা দরজা রাখছি, এই দরজা কেউ বন্ধ করতে পারে না৷ আমি জানি যদিও তুমি দুর্বল, তবু তুমি আমার শিক্ষা অনুসারে চলেছ, আর তুমি আমার নাম অস্বীকার কর নি৷ 9 শোন! শয়তানের দলের য়ে লোকেরা ইহুদী না হয়েও মিথ্যাভাবে নিজেদের ইহুদী বলে তাদের আমি তোমার পায়ের সামনে নিয়ে এসে প্রণাম করাব৷ আমি তাদের জানাবো য়ে আমি তোমাকে ভালবেসেছি৷ 10 কারণ ধৈর্য় সহকারে সহ্য করবার য়ে আদেশ আমি দিয়েছিলাম তা তুমি পালন করেছ৷ এই পৃথিবীবাসী লোকদের পরীক্ষার্থে সমস্ত জগতের ওপর য়ে মহাকষ্ট ঘনিয়ে আসছে, আমি তোমাকে সেই পরীক্ষার সময় নিরাপদেই রাখব৷ পৃথিবীর লোকদের পরীক্ষার জন্যই এই মহাকষ্ট আসবে৷ 11 ‘আমি শিগ্গির আসছি৷ তোমার যা আছে তা ধরে রাখ, য়েমন চলছ তেমনি চলতে থাক, য়েন কেউ তোমার বিজয়মুকুট কেড়ে নিতে না পারে৷ 12 য়ে বিজযী হয় তাকে আমি আমার ঈশ্বরের মন্দিরে একটি স্তন্ভ করব, আর তাকে কখনও সেই মন্দির থেকে বাইরে য়েতে হবে না৷ তার ওপর আমি আমার ঈশ্বরের নাম আর আমার ঈশ্বরের নগরের নাম লিখব৷ সেই নগর হল নতুন জেরুশালেম৷ সেই নগর ঈশ্বরের কাছ থেকে স্বর্গ হতে নেমে আসছে৷ আমার নতুন নামও আমি তার ওপর লিখে দেব৷ 13 আত্মা মণ্ডলীগুলিকে কি বলছেন যার শোনার মত কান আছে সে শুনুক৷ 14 ‘লায়দিকেয়াস্থ মণ্ডলীর স্বর্গদূতের কাছে এই কথা লেখ:‘যিনি আমেন,যিনি বিশ্বস্ত ও সত্যসাক্ষী, যিনি ঈশ্বরের সৃষ্টির উত্স তিনি বলেন: 15 আমি জানি তুমি কি করছ, তুমি না ঠাণ্ডা না গরম; তুমি হয় ঠাণ্ডা নয় গরম হলেই ভাল হত৷ 16 তোমার অবস্থা ঈষদুষ্ণ, না ঠাণ্ডা না গরম, তাই আমার মুখ থেকে তোমাকে আমি থু থু করে ফেলে দেব৷ 17 তুমি বল, ‘আমি ধনবান, আমি ধনসঞ্চয় করেছি, আমার কিছুরই অভাব নেই,’ কিন্তু জান না য়ে তুমি দুর্দশাগ্রস্থ, করুণার পাত্র, দরিদ্র, অন্ধ ও উলঙ্গ৷ 18 আমি তোমাকে এক পরামর্শ দিই, তুমি আমার কাছ থেকে আগুনে নিখাদ করা খাঁটি সোনা কেনো, য়েন প্রকৃত ধনবান হতে পার৷ আমি তোমাকে বলছি আমার কাছ থেকে সাদা পোশাক কেনো, য়েন তোমার লজ্জাজনক উলঙ্গতা ঢাকা পড়ে৷ আমি তোমাকে চোখে দেখার জন্য মলম কিনতে বলি, তাহলে তুমি ঠিক দেখতে পাবে৷ 19 ‘আমি যত লোককে ভালবাসি তাদের সংশোধন ও শাসন করি৷ তাই উদ্য়োগী হও ও মন-ফেরাও৷ 20 দেখ, দরজাতে দাঁড়িয়ে আমি যা দিই৷ কেউ যদি আমার গলা শুনে দরজা খুলে দেয়, তবে আমি তার ঘরের ভেতরে যাব ও তার সঙ্গে আহারে বসব, আর সেও আমার সঙ্গে আহার করবে৷ 21 আমি জযী হয়ে য়েমন আমার পিতার সঙ্গে তাঁর সিংহাসনে বসেছি, সেইরূপ য়ে জযী হয়, তাকেও আমি আমার সাথে আমার সিংহাসনে বসতে দেব৷ 22 আত্মা মণ্ডলীগুলিকে কি বলছেন, যার শোনার মতো কান আছে সে শুনুক৷’
Revelation 4:1 এরপর আমি একটি দর্শন পেলাম; আর দেখতে পেলাম আমার সামনে স্বর্গে একটা দরজা খোলা রয়েছে৷ এর আগে য়ে কন্ঠস্বর আমার সঙ্গে কথা বলেছিল, সেই একই স্বর আর তূরীর আওয়াজ শুনতে পেলাম, তা আমাকে বলছে, ‘এখানে উঠে এস, এরপর যা কিছু অবশ্যই ঘটবে তা আমি তোমাকে দেখাব৷’ 2 মুহূর্তের মধ্যে আমি আত্মাবিষ্ট হলাম, আমার সামনে স্বর্গে এক সিংহাসন ছিল, সেই সিংহাসনের ওপর একজন বসেছিলেন৷ 3 যিনি সেখানে বসেছিলেন, তাঁর দেহ সূর্য়কান্ত ও সার্দীয় মণির মত অত্য়ুজ্জ্বল৷ সেই সিংহাসনের চারদিকে পান্নার মতো ঝলমলে মেঘধনুক ছিল৷ 4 সেই সিংহাসনের চারদিকে চব্বিশটি সিংহাসন ছিল৷ সেইসব সিংহাসনে চব্বিশ জন প্রাচীনবসেছিলেন, তাঁরা সকলে শুভ্র পোশাক পরেছিলেন; আর তাঁদের মাথায় সোনার মুকুট ছিল৷ 5 সেই সিংহাসন থেকে বিদ্যুতের ঝলকানি, গুরু গুরু শব্দ ও বজ্রধ্বনি নির্গত হচ্ছিল; আর সেই সিংহাসনের সামনে সাতটি মশাল জ্বলছিল৷ সাতটি আগুনের মশাল ঈশ্বরের সেই সপ্ত আত্মার প্রতীক; 6 আর সেই সিংহাসনের সামনে ছিল কাঁচের মতো সমুদ্র, যা স্ফটিকের মতো স্বচ্ছ৷সিংহাসনের সামনে এবং সিংহাসনের চারদিকে চারজন প্রাণী ছিল যাদের সামনে ও পেছনে সর্বাঙ্গ চোখে ভরা ছিল৷ 7 প্রথম প্রাণীটি দেখতে সিংহের মতো, দ্বিতীয় প্রাণীটি ষাঁড়ের মতো, তৃতীয় প্রাণীটির মুখ মানুষের মুখের মতো৷ চতুর্থ প্রাণীটি উড়ন্ত ঈগলের মতো৷ 8 এই চারটি প্রাণীর প্রত্যেকের ছটি করে পাখা ছিল, সেই প্রাণীগুলির সর্বাঙ্গে, ভেতরে ও বাইরে ছিল চোখ, আর তাঁরা দিন-রাত সব সময় বিরত না হয়ে এই কথা বলছিলেন:‘পবিত্র, পবিত্র, পবিত্র প্রভু ঈশ্বর সর্বশক্তিমান, যিনি ছিলেন, যিনি আছেন ও যিনি আসছেন৷’ 9 যিনি সিংহাসনে বসে আছেন সেই জীবন্ত প্রাণীরা তাঁর মহিমা, সম্মান ও ধন্যবাদ কীর্তন করেন৷ ইনি হলেন সেই চিরজীবি৷ আর এইরকম ঘটলে প্রত্যেকবার, 10 যিনি সিংহাসনে বসে আছেন তাঁর সামনে ঐ চব্বিশজন প্রাচীন ভূমিষ্ট হয়ে প্রণাম করেন; আর যিনি চিরজীবি তাঁর উপাসনা করেন আর নিজের নিজের মাথার মুকুট সিংহাসনের সামনে রেখে বলেন: 11 ‘আমাদের প্রভু ও ঈশ্বর! তুমি মহিমা, সম্মান ও পরাক্রম পাবার য়োগ্য, কারণ তুমি সমস্ত কিছু সৃষ্টি করেছ৷ তোমার ইচ্ছাতেই সব কিছু সৃষ্টি হয়েছে ও সব কিছুর অস্তিত্ব আছে৷’
Revelation 5:1 সিংহাসনে যিনি বসেছিলেন তাঁর ডানহাতে আমি একটি পুস্তকদেখলাম যার ভেতরে ও বাইরে উভয়দিকে লেখা ও তা সাতটি মোহর দিয়ে সীলমোহর করে বন্ধ করা ছিল৷ 2 আর আমি এক শক্তিমান স্বর্গদূতকে দেখলাম, যিনি চিত্কার করে বলছেন, ‘এটি খুলতে পারে ও তার সীলমোহরগুলি ভাঙ্গতে পারে কার এমন য়োগ্যতা আছে?’ 3 কিন্তু কি স্বর্গে, কি পৃথিবীতে, কি পৃথিবীর নীচে কেউ পুস্তকটি না পারল খুলতে, না পারল তার ভেতরে কি আছে তা দেখতে৷ 4 সেই পুস্তকটি খোলবার ও তার ভেতরে দেখবার য়োগ্য কাউকে পাওয়া গেল না দেখে আমি অঝোরে কাঁদতে থাকলাম৷ 5 তখন সেই প্রাচীনদের মধ্যে একজন আমাকে বললেন, ‘তুমি কেঁদো না! দেখ, যিনি যিহূদা বংশের সিংহ, দাযূদের বংশধর, তিনি বিজযী হয়েছেন, তিনি সাতটি সীলমোহর ভাঙ্গার ও পুস্তকটি খোলার য়োগ্য হয়েছেন৷’ 6 পরে আমি দেখলাম ঐ সিংহাসনের সামনে চার জন প্রাণীর সঙ্গে এবং প্রাচীনদের সঙ্গে এক মেষশাবক দাঁড়িয়ে আছেন; সেই মেষশাবককে এমন দেখাচ্ছিল য়েন তাকে বধ করা হয়েছে৷ তাঁর সাতটি শৃঙ্গ ও সাতটি চক্ষু, সেই চক্ষুগুলি হল ঈশ্বরের সপ্ত আত্মা যাদের পৃথিবীর সর্বত্র পাঠানো হয়েছে৷ 7 এরপর সেই মেষশাবক এসে যিনি সিংহাসনে বসে আছেন তাঁর হাত থেকে সেই পুস্তকটি নিলেন৷ 8 তিনি যখন পুস্তকটি নিলেন, তখন ঐ চারজন প্রাণী ও চব্বিশজন প্রাচীন মেষশাবকের সামনে ভূমিষ্ট হয়ে প্রণাম করলেন৷ তাঁদের প্রত্যেকের কাছে ছিল একটি করে বীণা ও সোনার বাটিতে সুগন্ধি ধূপ, সেই ধূপ হচ্ছে ঈশ্বরের পবিত্র লোকদের প্রার্থনাস্বরূপ৷ 9 তাঁরা মেষশাবকের জন্য এক নতুন গীত গাইছিলেন:‘তুমি ঐ পুস্তকটি নেবার ও তার সীলমোহর ভাঙ্গার য়োগ্য, কারণ তুমি বলি হয়েছিলে; আর তোমার রক্ত দিয়ে সমস্ত উপজাতি, ভাষা, সম্প্রদায় ও জাতির মধ্য থেকে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে লোকদের কিনেছ৷ 10 তুমি তাদের নিয়ে এক রাজ্য গড়েছ ও আমাদের ঈশ্বরের যাজক করেছ আর তারা সমস্ত পৃথিবীতে রাজত্ব করবে৷’ 11 পরে আমি তাকালাম, আর সেই সিংহাসন, জীবন্ত প্রাণী ও প্রাচীনদের চারদিকে অনেক স্বর্গদূতের কন্ঠস্বর শুনতে পেলাম৷ তারা সংখ্যায় লক্ষ লক্ষ, কোটি কোটি৷ 12 তারা উদাত্ত কন্ঠে বলতে লাগলেন:‘সেই মেষশাবক, যিনি হত হয়েছিলেন, তিনিই পরাক্রম, সম্পদ, বিজ্ঞতা, ক্ষমতা, সম্মান, মহিমা ও প্রশংসা পাবার পরম য়োগ্য৷’ 13 পরে আমি স্বর্গে, পৃথিবীতে, পৃথিবীর নীচে ও সমুদ্রের মধ্যে সমস্ত প্রাণী এবং আর যা কিছু সেইসব জায়গাতে ছিল তাদের এই বাণী শুনলাম:‘যিনি সিংহাসনে বসে আছেন তাঁর ও মেষশাবকের প্রতি প্রশংসা, সম্মান, মহিমা ও পরাক্রম যুগে যুগে বর্ষিত হোক্৷’ 14 সেই চারজন প্রাণী তখন বললেন, ‘আমেন!’ এরপর সেই প্রাচীনরা মাথা নীচু করে প্রণাম ও উপাসনা করলেন৷
Revelation 6:1 মেষশাবক যখন সেই সাতটির মধ্যে প্রথম সীলমোহরটি ভেঙ্গে খুললেন, তখন আমি সেই চারজন প্রাণীর মধ্যে একজনকে দেখলাম ও তার মেঘ গর্জনের মতো কন্ঠস্বর শুনলাম৷ সে বলল, ‘এস!’ 2 এরপর আমি দেখলাম, আমার সামনে একটি সাদা রঙের ঘোড়া৷ তার ওপর যিনি বসে আছেন তাঁর হাতে একটি ধনুক ছিল৷ তাঁকে একটা মুকুট পরিয়ে দেওয়া হলে তিনি যুদ্ধ জয় করতে বিজেতার মত বাইরে এলেন৷ 3 মেষশাবক যখন দ্বিতীয় সীলমোহরটি ভাঙ্গলেন তখন আমি সেই প্রাণীদের মধ্যে দ্বিতীয় জনকে বলতে শুনলাম, ‘এস!’ 4 তখন আর একটি আগুনের মতো লাল রঙের ঘোড়া বের হয়ে এল৷ সেই ঘোড়াটির ওপর য়ে বসে আছে তাকে পৃথিবী থেকে শাস্তি কেড়ে নেবার ক্ষমতা দেওয়া হল; আর দেওয়া হল সেই ক্ষমতা, যার বলে মানুষ পরস্পরকে বধ করবে৷ তাকে একটা বড় তরবারি দেওয়া হল৷ 5 মেষশাবক যখন তৃতীয় সীলমোহরটি ভাঙ্গলেন, আমি শুনলাম, সেই প্রাণীদের মধ্যে তৃতীয় জন বললেন, ‘এস!’ পরে আমি দেখলাম, একটা কালো ঘোড়া আমার সামনে দাঁড়িয়ে, তার ওপর য়ে বসে আছে, তার হাতে একটা দাঁড়িপাল্লা৷ 6 এরপর আমি সেই চারজন প্রাণীর মধ্য থেকে একটা স্বরের মত কোন একটা কিছু শুনতে পেলাম৷ সেই স্বর বলছে, ‘এক সের গম একজন মজুরের দৈনিক মজুরীর সমান; আর তিন সের যব, একজন মজুরের দৈনিক মজুরীর সমান৷ অলিভ তেল ও দ্রাক্ষারস নষ্ট করো না৷’ 7 মেষশাবক যখন চতুর্থ সীলমোহরটি ভাঙ্গলেন, তখন আমি সেই প্রাণীদের মধ্যে চতুর্থ জনকে বলতে শুনলাম, ‘এস!’ 8 পরে আমি দেখলাম, একটা পাণ্ডুবর্ণ ঘোড়া আমার সামনে, তার ওপর য়ে বসে আছে তার নাম ‘মৃত্যু’৷ আর পাতাল তার ঠিক পেছনেই আছে৷ তাকে পৃথিবীর এক চতুর্থাংশ লোকের ওপরে কর্তৃত্ত্ব করবার ক্ষমতা দেওয়া হল, য়েন সে যুদ্ধ, দুর্ভিক্ষ, মহামারী ও হিংস্র পশুদের দিয়ে সকলকে বধ করতে পারে৷ 9 মেষশাবক যখন পঞ্চম সীলমোহরটি ভাঙ্গলেন, তখন আমি যজ্ঞবেদীর নীচে সেইসব আত্মাকে দেখলাম য়াঁদের হত্যা করা হয়েছিল, কারণ তাঁরা ঈশ্বরের বার্তা বিশ্বস্তভাবে প্রচার করেছিলেন এবং তাঁদের সাক্ষ্য দিয়েছিলেন৷ 10 তাঁরা উচ্চকন্ঠে বললেন, ‘পবিত্র ও সত্য প্রভু, যাঁরা আমাদের হত্যা করেছে, পৃথিবীর সেই সমস্ত লোকদের বিচার করতে ও শাস্তি দিতে তুমি আর কতো দেরী করবে?’ 11 তাঁদের প্রত্যেককে শুভ্র রাজ-পোশাক দেওয়া হল এবং আরও কিছুকাল অপেক্ষা করতে বলা হল, কারণ তাঁদের কিছু সহসেবক ভাই ও বোন তখনও ছিলেন যাঁরা তাঁদের মত নিহত হবেন৷ এই সমস্ত নিয়ম শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের অপেক্ষা করতে বলা হল৷ 12 পরে আমি যা দেখলাম, তিনি ষষ্ঠ সীলমোহরটি ভাঙ্গলেন৷ তখন ভীষণ ভূমিকম্প হল৷ সূর্য় কালো শোকবস্ত্রের মত হয়ে গেল, চাঁদ রক্তের মতো লাল হয়ে গেল৷ 13 প্রবল বাতাসে নড়ে গাছ থেকে য়েমন কাঁচা ডুমুর পড়ে যায়, তেমনি আকাশ থেকে নক্ষত্ররা পৃথিবীতে খসে পড়তে লাগল৷ 14 গোটানো পুস্তকের মতো আকাশমণ্ডল অদৃশ্য হল৷ সমস্ত পাহাড় ও দ্বীপকে ঠেলে নিজের জায়গা থেকে সরিয়ে দেওয়া হল৷ 15 পৃথিবীর রাজাগণ, সমস্ত অধিপতি, সেনাবাহিনীর অধিনায়করা, ধনবানেরা, শক্তিশালী লোকরা ও পৃথিবীর সব স্বাধীন লোক এবং সমস্ত দাস গুহার মধ্যেও পাহাড়গুলির পাথরের মধ্যে নিজেদের লুকালো৷ 16 তারা পর্বত এবং পাহাড়গুলোকে বলতে লাগল, ‘আমাদের ওপরে চেপে বসো এবং যিনি সিংহাসনে বসে আছেন তাঁর কাছ থেকে এবং মেষশাবকের ক্রোধের হাত থেকে আমাদের লুকাও৷ 17 কারণ তাদের ক্রোধের মহাদিন এসে পড়ল৷ কার সাধ্য আছে তার সামনে দাঁড়াবার৷
Revelation 7:1 এরপর আমি দেখলাম, পৃথিবীর চার কোনে চারজন স্বর্গদূত দাঁড়িয়ে আছেন৷ তাঁরা পৃথিবীর চারটি বাযুপ্রবাহকে আটকে রেখেছেন, য়েন পৃথিবীর বা সমুদ্রের বা গাছের ওপর দিয়ে বাতাস না বয়৷ 2 এরপর আমি আর এক স্বর্গদূতকে পূর্বদিক থেকে উঠে আসতে দেখলাম৷ তাঁর হাতে ছিল জীবন্ত ঈশ্বরের সীলমোহর৷ ঈশ্বর য়ে চারজন স্বর্গদূতকে পৃথিবী ও সমুদ্রে আঘাত করবার ক্ষমতা দিয়েছিলেন, তাঁদের উদ্দেশ্যে তিনি চিত্কার করে বললেন, 3 ‘দাঁড়াও, আমরা যতক্ষণ না আমাদের ঈশ্বরের দাসদের কপালে মোহর দ্বারা চিহ্ন না দিই, সে পর্যন্ত তোমরা পৃথিবী, সমুদ্র বা গাছের কোন ক্ষতি করো না৷’ 4 এরপর আমি শুনলাম কত লোকের কপালে চিহ্ন দেওয়া হল৷ মোট একলক্ষ চুয়াল্লিশ হাজার লোক৷ তারা ছিল সমস্ত ইস্রায়েল গোষ্ঠীর ও জাতির৷ 5 যিহূদা গোষ্ঠীর 12,000রূবেণ গোষ্ঠীর 12,000গাদ গোষ্ঠীর 12,000 6 আশের গোষ্ঠীর 12,000নপ্তালি গোষ্ঠীর 12,000মনঃশি গোষ্ঠীর 12,000 7 শিমিযোন গোষ্ঠীর 12,000লেবি গোষ্ঠীর 12,000ইষাখর গোষ্ঠীর 12,000 8 সবূলূন গোষ্ঠীর 12,000য়োষেফ গোষ্ঠীর 12,000বিন্যামীন গোষ্ঠীর 12,000 9 এরপর আমি দেখলাম প্রত্যেক জাতির, প্রত্যেক বংশের এবং প্রত্যেক গোষ্ঠীর ও ভাষার অগণিত লোক সেই সিংহাসন ও মেষশাবকের সামনে এসে তারা দাঁড়িয়েছে৷ তাদের পরণে শুভ্র পোশাক এবং হাতে খেজুর পাতা৷ 10 তারা সকলে চিত্কার করে বলছে, ‘যিনি সিংহাসনে বসে আছেন, এই জয় সেই ঈশ্বরের ও মেষশাবকের দান৷’ 11 সমস্ত স্বর্গদূত সিংহাসনের প্রাচীনদের ও চারজন প্রাণীর চারদিক ঘিরে দাঁড়িয়ে ছিলেন৷ তাঁরা সিংহাসনের সামনে মাথা নীচু করে প্রণাম করলেন ও ঈশ্বরের উপাসনা করতে থাকলেন৷ 12 তাঁরা বললেন, ‘আমেন! প্রশংসা, মহিমা, প্রজ্ঞা, ধন্যবাদ, সম্মান, পরাক্রম ও ক্ষমতা যুগপর্য়ায়ের যুগে যুগে আমাদের ঈশ্বরেরই হোক্৷ আমেন!’ 13 এরপর সেই প্রাচীনদের মধ্যে একজন আমায় জিজ্ঞেস করলেন, ‘শুভ্র পোশাক পর! এই লোকরা কে, আর এরা সব কোথা থেকে এসেছে?’ 14 আমি তাঁকে বললাম, ‘মহাশয়, আপনি জানেন৷’তিনি আমায় বললেন, ‘এরা সেই লোক যাঁরা মহানির্য়াতন সহ্য করে এসেছে; আর মেষশাবকের রক্তে নিজের পোশাক ধুয়ে শুচীশুভ্র করেছে৷ 15 এই কারণেই এরা ঈশ্বরের সিংহাসনের সামনে দাঁড়িয়ে আছে; আর দিন রাত তাঁর মন্দিরে তাঁর উপাসনা করে চলেছে৷ যিনি সিংহাসনে বসে আছেন, তিনি এদের রক্ষা করবেন৷ 16 এরা আর কখনও ক্ষুধার্ত, তৃষ্ণার্ত হবে না, এদের গায়ে রোদ বা তার প্রখর তাপও লাগবে না৷ 17 কারণ সিংহাসনের ঠিক সামনে য়ে মেষশাবক আছেন তিনি এদের মেষপালক হবেন, তাদের জীবন জলের প্রস্রবণের কাছে নিয়ে যাবেন আর ঈশ্বর এদের সমস্ত চোখের জল মুছিয়ে দেবেন৷’
Revelation 8:1 তারপর মেষশাবক সপ্তম সীলমোহরটি ভাঙ্গলেন৷ তখন স্বর্গে প্রায় আধ ঘন্টার মতো সব নিস্তধ্ধ হয়ে গেল৷ 2 তারপর আমি দেখলাম, ঈশ্বরের সামনে য়ে সাতজন স্বর্গদূত দাঁড়িয়ে থাকেন তাঁদের হাতে সাতটি তূরী দেওয়া হল৷ 3 পরে আর এক স্বর্গদূত এসে যজ্ঞবেদীর কাছে দাঁড়ালেন, তাঁর হাতে সোনার ধুনুচি৷ তাঁকে প্রচুর ধূপ দেওয়া হল, যাতে তিনি তা স্বর্ণ সিংহাসনের সামনে ঈশ্বরের সমস্ত পবিত্র লোকের প্রার্থনার সঙ্গে নিবেদন করতে পারেন৷ 4 ফলে ঈশ্বরের লোকদের প্রার্থনার সঙ্গে স্বর্গদূতের হাত থেকে সেই ধূপের ধোঁয়া ঈশ্বরের সামনে উঠল৷ 5 পরে ঐ স্বর্গদূত ধুনুচি নিয়ে তাতে যজ্ঞবেদীর আগুন ভরে পৃথিবীতে নিক্ষেপ করলেন৷ এর ফলে মেঘ গর্জন, উচ্চরব, বিদ্য়ুত্ চমক ও ভুমিকম্প হল৷ 6 তখন সেই সাতজন স্বর্গদূত তাদের সাতটি তূরী বাজাবার জন্য প্রস্তুত হলেন৷ 7 প্রথম স্বর্গদূত বাজালেন, তাতে পৃথিবীতে রক্ত মেশানো শিলা ও আগুন বর্ষন হল; ফলে পৃথিবীর এক তৃতীয়াংশে আগুন ধরে গেল, আর এক তৃতীয়াংশে গাছপালা ও সমস্ত সবুজ ঘাস পুড়ে গেল৷ 8 দ্বিতীয় স্বর্গদূত তূরী বাজালেন; আর দেখা গেল য়েন বিরাট এক জ্বলন্ত পাহাড় সমুদ্রে ছুঁড়ে ফেলা হল৷ 9 তাতে সমুদ্রের এক তৃতীয়াংশ জল রক্তাক্ত হয়ে গেল ও সামুদ্রিক জীবের এক তৃতীয়াংশ মারা পড়ল; আর সমুদ্রগামী সমস্ত জাহাজের এক তৃতীয়াংশ ধ্বংস হয়ে গেল৷ 10 পরে তৃতীয় স্বর্গদূত তূরী বাজালেন, তখন আকাশ থেকে জ্বলন্ত মশালের মতো এক বিরাট নক্ষত্র পৃথিবীর এক তৃতীয়াংশ নদী ও জলের উত্সের ওপর খসে পড়ল৷ 11 সেই নক্ষত্রের নাম নাগদানাকারণ তা পৃথিবীর এক তৃতীয়াংশ জল তিক্ত করে দিল৷ এভাবে জল তেতো হওয়ার কারণে অনেক লোক মারা পড়ল৷ 12 এরপর চতুর্থ স্বর্গদূত তূরী বাজালেন আর সূর্যের এক তৃতীয়াংশ, চন্দরের এক তৃতীয়াংশ এবং সমস্ত নক্ষত্রের এক তৃতীয়াংশ এমনভাবে ঘা খেল য়ে তাদের এক তৃতীয়াংশ অন্ধকার হয়ে গেল৷ সেইভাবে দিনেরও এক তৃতীয়াংশ আলোবিহীন হল, আর রাত্রির অবস্থাও একই রকম হল৷ 13 এইসব কিছু দেখতে দেখতে হঠাত্ আমি শুনতে পেলাম আকাশের উঁচু দিয়ে একটা ঈগল পাখি উড়ে য়েতে য়েতে চিত্কার করে এই কথা বলছে, ‘সন্তাপ! সন্তাপ! পৃথিবীবাসীদের সন্তাপ! কারণ বাকী তিনজন স্বর্গদূত যখন তূরী বাজাবে তখন সেই সন্তাপ শুরু হবে৷’
Revelation 9:1 পরে পঞ্চম স্বর্গদূত তূরী বাজালেন, আর আমি দেখলাম স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে একটা তারা খসে পড়ল; আর তারাটাকে অতল কূপ খোলার চাবি দেওয়া হল৷ 2 নক্ষত্রটি অগাধ লোকের কূপটি খুলল৷ তত্ক্ষনাত্ ঐ কূপ থেকে বিরাট অগ্নিকুণ্ডের মধ্য থেকে য়েমন ধোঁয়া বার হয় তেমনি ধোঁয়া নির্গত হল৷ এই ধোঁয়ার জন্য সূর্য় ও বাযুমণ্ডল অন্ধকার হয়ে গেল৷ 3 পরে সেই ধোঁয়া থেকে পঙ্গপালের ঝাঁক বের হয়ে পৃথিবীতে এল; আর পৃথিবীর কাঁকড়া বিছের মধ্যে য়ে ক্ষমতা থাকে তাদের তা দেওয়া হল৷ 4 পঙ্গপালদের বলা হল য়েন তারা ঘাস, চারাগাছ বা পৃথিবীর গাছপালার কোন ক্ষতি না করে, কেবল তাদেরই ক্ষতি করে যাদের কপালে ঈশ্বরের চিহ্ন নেই৷ 5 ঐ লোকদের মেরে ফেলতে তাদের অনুমতি দেওয়া হল না, কেবল পাঁচ মাস পর্যন্ত তাদের যন্ত্রণা দেবার অনুমতি দেওয়া হল৷ তাদের যন্ত্রণা কাঁকড়াবিছে কামড়ালে মানুষের য়েমন যন্ত্রণা হয় তেমনি হবে৷ 6 তখন মানুষ মরতে চাইলেও মরতে পারবে না৷ তারা মৃত্যুর আকাঙ্খা করবে; কিন্তু মৃত্যু তাদের কাছ থেকে পালিয়ে যাবে৷ 7 সেই পঙ্গপালদের দেখতে য়েন যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত ঘোড়ার মতো৷ তাদের মাথায় সোনার মুকুটের মতো মুকুট ছিল৷ তাদের মুখমণ্ডল য়েন মানুষের মুখগুলির মতো৷ 8 স্ত্রীলোকের চুলের মতো তাদের মাথার চুল, আর তাদের দাঁত সিংহের দাঁতের মতো৷ 9 বুকে তাদের বর্ম পরা, তা লোহার বর্মের মতো; আর বহু ঘোড়ায় টানা যুদ্ধের রথ ছুটলে য়েমন আওয়াজ হয় তেমনি তাদের ডানার শব্দ৷ 10 তাদের হুলযুক্ত লেজ ছিল কাঁকড়া বিছের মতো৷ পাঁচ মাস পর্যন্ত তারা মানুষের য়ে ক্ষতি করবে তার ক্ষমতা ঐ লেজের মধ্যে আছে৷ 11 ঐ পঙ্গপালের রাজা হচ্ছে অগাধ লোকের স্বর্গদূত৷ ইব্রীয় ভাষায় তার নাম ‘আবদ্দোন,’গ্রীক ভাষায় ‘আপল্লুযোন’ যার অর্থ বিনাশকারী৷ 12 প্রথম সন্তাপ কাটল, দেখ, এরপর আরও দুটি সন্তাপ আসছে৷ 13 পরে ষষ্ঠ স্বর্গদূত তূরী বাজালে আমি ঈশ্বরের সামনে সোনার যজ্ঞবেদীর য়ে চারটি শিং আছে তার মধ্য থেকে এক বাণী শুনতে পেলাম, 14 সেই কন্ঠস্বর ষষ্ঠ তূরীধারী স্বর্গদূতকে বললেন, ‘ইউফ্রেটিস মহানদীর কাছে য়ে চারজন স্বর্গদূত হাত-পা বাঁধা অবস্থায় আছেন তাদের মুক্ত কর৷’ 15 তখন পৃথিবীর মানুষের এক তৃতীয়াংশ ধ্বংস করার জন্য য়ে চারজন স্বর্গদূতকে সেই বিশেষ মুহূর্ত, দিন, মাস ও বছরের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছিল তাদের মুক্ত করা হল৷ 16 তাদের দলে ছিল বিশ কোটি অশ্বারোহী সৈন্য৷ আমি তাদের সেই সংখ্যা গুনলাম৷ 17 আমি এক দর্শনের মাধ্যমে সেই ঘোড়াগুলিকে ও তাদের ওপর যাঁরা বসেছিল তাদের এইরকম দেখলাম, - তাদের বর্ম ছিল আগুনের মতো লাল, ঘন নীল ও গন্ধকের মতো হলদে রঙের৷ ঘোড়াগুলির মাথা সিংহের মতো৷ 18 তাদের মুখ থেকে তিনটি আঘাতে আগুন, ধোঁয়া, গন্ধক নির্গত হচ্ছিল, তার দ্বারা পৃথিবীর মানুষের এক তৃতীয়াংশ লোক মারা পড়ল৷ 19 সেই ঘোড়াগুলির আঘাত করার শক্তি তাদের মুখে ও লেজে ছিল৷ তাদের লেজ সাপের মতো মাথাওয়ালা, তারা দ্বারা তারা ক্ষতি করতে পারত৷ 20 এই সব আঘাত পাওয়া সত্ত্বেও যাঁরা মরল না বাকি সেই লোকেরা নিজেরা নিজের হাতে গড়া বস্তুর থেকে মন-ফেরালো না৷ তারা ভূতপ্রেত ও সোনা, রূপা, পিতল, পাথর এবং কাঠের তৈরী মূর্ত্তি পূজা করা থেকে বিরত হল না - সেইসব মূর্ত্তি, যাঁরা না দেখতে পায়, না শুনতে বা কথা বলতে পারে৷ 21 তারা নরহত্যা, মোহিনীবিদ্যা, ব্যভিচার এবং চুরির জন্য অনুতপ্ত হল না৷
Revelation 10:1 পরে আমি একজন শক্তিশালী স্বর্গদূতকে স্বর্গ থেকে নেমে আসতে দেখলাম৷ তিনি একখণ্ড মেঘকে পোশাকের মতো করে পরেছিলেন, আর তাঁর মাথার চারদিকে মেঘধনুক ছিল৷ তাঁর মুখ সূর্যের মতো, আর পা আগুনের থামের মতো৷ 2 তাঁর হাতে ছিল একটি খোলা পুস্তক৷ তিনি তাঁর ডান পা-টি সমুদ্রের ওপরে আর বাঁ পাটি স্থলে রাখলেন৷ 3 আর সিংহ গর্জনের মতো হুঙ্কার ছাড়লেন৷ স্বর্গদূতের গর্জনের পর সপ্ত বজ্রধ্বনি হুঙ্কার করে উঠল৷ 4 যখন সপ্ত বজ্রধ্বনি কথা বলল তখন আমি তা লিখতে চাইলাম৷ কিন্তু স্বর্গ থেকে এক স্বর বলল, ‘তুমি লিখো না৷ বজ্র যা বলছে তা গোপন রাখ৷’ 5 পরে সেই স্বর্গদূত যাকে আমি সমুদ্রের ওপরে এবং স্থলের ওপরে পা রেখে দাঁড়াতে দেখেছিলাম, স্বর্গের দিকে তাঁর ডান হাতটি ওঠালেন; 6 আর যিনি যুগে যুগে জীবন্ত, যিনি আকাশ, পৃথিবী ও সমুদ্র ও এই সবের মধ্যে যা কিছু আছে তার সৃষ্টিকর্তা, তাঁর নামে এই শপথ করে বললেন, ‘আর দেরী হবে না৷ 7 যখন সপ্তম স্বর্গদূতের তূরী বাজানোর সময় আসবে তখন ঈশ্বরের সেই নিগৃঢ় পরিকল্পনা পরিপূর্ণ হবে৷ এ সেই সুসমাচারের পরিকল্পনা যা ঈশ্বর তাঁর ভাববাদী ও দাসদের কাছে প্রকাশ করেছিলেন৷’ 8 এরপর স্বর্গ থেকে সেই রব আমি আবার শুনতে পেলাম৷ সেই রব আমাকে বলল, ‘যাও, স্বর্গদূতের হাত থেকে খোলা পুস্তকটি নাও৷’ এই সেই স্বর্গদূত যিনি সমুদ্র ও স্থলের ওপর পা রেখে দাঁড়িয়েছিলেন৷’ 9 তখন আমি সেই স্বর্গদূতের কাছে গিয়ে তাঁকে বললাম, ঐ ছোট্ট পুস্তকখানি আমায় দিন৷ তিনি আমায় বললেন, ‘নাও, খেয়ে ফেল৷ এটা তোমার পেটে গিয়ে তিক্ত হবে৷ কিন্তু মুখে মধুর মতো মিষ্টি লাগবে৷’ 10 তখন আমি স্বর্গদূতের হাত থেকে সেটি নিয়ে খেয়ে ফেললাম, তা মুখে মধুর মতো মিষ্টি লাগল; কিন্তু খাওয়ার পর আমার পাকস্থলী তিক্ততায় ভরে গেল৷ 11 তিনি আমাকে বললেন, ‘অনেক লোক, জাতি, ভাষা এবং রাজাদের সম্বন্ধে তোমাকে আবার ভাববাণী করতে হবে৷’
Revelation 11:1 এরপর আমাকে বেড়ানোর লাঠির মতো একটি মাপকাঠি দেওয়া হল৷ একজন বললেন, ‘ওঠ, ঈশ্বরের মন্দির ও যজ্ঞবেদীর পরিমাপ কর আর তার মধ্যে যাঁরা উপাসনা করছে তাদের সংখ্যা গণনা কর৷ 2 কিন্তু মন্দিরের বাইরের প্রাঙ্গণের কোন মাপ নিও না, কারণ তা অইহুদীদের দেওয়া হয়েছে৷ বিয়াল্লিশ মাস ধরে তারা সেই পবিত্র নগরটি পায়ে দলবে৷ 3 আমি আমার দুজন সাক্ষীকে ক্ষমতা দেব, তাঁরা বারশো ষাট দিন পর্যন্ত ভাববাণী বলবেন৷’ 4 সেই দুজন সাক্ষী হলেন দুটি জলপাই গাছ ও দুটি দীপাধার, যাঁরা পৃথিবীর প্রভুর সামনে দাঁড়িয়ে আছেন৷ 5 যদি কেউ তাঁদের ক্ষতি করতে চায়, তবে ঐ সাক্ষীদের মুখ থেকে আগুন বেরিয়ে এসে তাঁদের শত্রুদের গ্রাস করবে, য়ে কেউ তাঁদের ক্ষতি করতে চাইবে তাদেরও এইভাবে মরতে হবে৷ 6 আকাশ রুদ্ধ করে দেবার ক্ষমতা তাঁদের আছে, য়েন ভাববাণী বলার সময় বৃষ্টি না হয়; আর জল রক্তে পরিণত করবার ও পৃথিবীর বুকে সব রকমের মহামারী যতবার ইচ্ছা ততবার পাঠাবার ক্ষমতা তাঁদের আছে৷ 7 তাঁদের সাক্ষ্যদান শেষ হলে, য়ে পশু পাতালের অতলস্পর্শী কূপ থেকে উঠে আসবে সে তাঁদের সঙ্গে যুদ্ধ করবে, আর যুদ্ধে তাদের হারিয়ে দিয়ে হত্যা করবে৷ 8 তাঁদের মৃত দেহগুলি সেই মহানগরের রাস্তার ওপরে পড়ে থাকবে, এ সেই নগর যাকে আত্মিক অর্থে সদোম ও মিশর বলে; আর এই নগরেই তাঁদের প্রভু ক্রুশে বিদ্ধ হয়েছিলেন৷ 9 লোকরা তাঁদের কবর দিতে অনুমতি দেবে না৷ সমস্ত উপজাতি, সম্প্রদায়, ভাষাভাষী ও জাতির লোকরা জড়ো হয়ে সাড়ে তিন দিন ধরে তাঁদের শব দেখতে থাকবে৷ 10 পৃথিবীর লোকরা আনন্দিত হবে, কারণ ঐ দুজনের মৃত্যু হয়েছে৷ তারা আমোদ-প্রমোদ করবে, পরস্পরকে উপহার পাঠাবে, কারণ এই দুজন ভাববাদী পৃথিবীর লোকদের অতিষ্ঠ করে তুলেছিলেন৷ 11 এরপর সেই সাড়ে তিন দিন শেষ হলে ঈশ্বরের কাছ থেকে জীবনের আত্মা তাঁদের মধ্যে প্রবেশ করল, আর তাঁরা উঠে দাঁড়ালেন৷ যাঁরা তাদের দেখল তাদের মধ্যে প্রচণ্ড ভয়ের সঞ্চার হল৷ 12 সেই দুজন ভাববাদী স্বর্গ থেকে এক রব শুনলেন, ‘এখানে উঠে এস!’ তখন তাঁরা মেঘের মধ্য দিয়ে স্বর্গে উঠে গেলেন; আর তাঁদের শত্রুরা তাদের য়েতে দেখল৷ 13 সেই মুহূর্তে প্রচণ্ড ভূমিকম্প হল, তার ফলে শহরের দশভাগের একভাগ ধ্বংস হয়ে গেল এবং সাত হাজার লোক মারা পড়ল৷ যাঁরা বাকি রইল তারা সকলে প্রচণ্ড ভয় পেল ও স্বর্গের ঈশ্বরের মহিমা কীর্তন করল৷ 14 দ্বিতীয় সন্তাপ কাটল, দেখ, তৃতীয় সন্তাপ শিগ্গির আসছে৷ 15 এরপর সপ্তম স্বর্গদূত তূরী বাজালেন, তখন স্বর্গে কারা য়েন উদাত্ত কন্ঠে বলে উঠল:‘জগতের ওপর শাসন করবার ভার এখন আমাদের প্রভুর ও তাঁর খ্রীষ্টের হল, আর তিনি যুগপর্য়ায়ে যুগে যুগে রাজত্ব করবেন৷’ 16 পরে সেই চব্বিশ জন প্রাচীন, যাঁরা ঈশ্বরের সামনে নিজেদের সিংহাসনে বসে থাকেন, তাঁরা উপুড় হয়ে ঈশ্বরের উপাসনা করলেন৷ 17 তাঁরা বললেন:‘প্রভু ঈশ্বর, সর্বশক্তিমান, যিনি আছেন ও ছিলেন, আমরা তোমাকে ধন্যবাদ জানাই; কারণ তুমি নিজ পরাক্রম ব্যবহার করেছ এবং রাজত্ব করতে শুরু করেছ৷ 18 জগতের জাতিবৃন্দ তোমার ওপর ক্রুদ্ধ ছিল; কিন্তু এখন তোমার ক্রোধ তাদের ওপর উপস্থিত হল৷ মৃত লোকদের বিচারের সময় হয়েছে; আর তোমার ভাববাদী, যাঁরা তোমার দাস, যাঁরা তোমার লোক, ক্ষুদ্র এবং গুরুত্বপূর্ণ সব লোক যাঁরা তোমাকে শ্রদ্ধা করে, তাদের পুরস্কার দেওয়ার সময় হয়েছে৷ যাঁরা পৃথিবীকে ধ্বংস করছে তাদের ধ্বংস করবার সময় হয়েছে৷’ 19 পরে স্বর্গে ঈশ্বরের মন্দিরের দরজা উন্মুক্ত হলে মন্দিরের মধ্যে তাঁর চুক্তির সিন্দুকটি দেখা গেল, বিদ্য়ুত চমকালো, গুরু গুরু শব্দ, বজ্রপাত, ভূমিকম্প ও প্রচণ্ড শিলাবৃষ্টি হল৷
Revelation 12:1 তারপর স্বর্গে এক মহত্ ও বিস্ময়কর সঙ্কেত দেখা গেল৷ একটি স্ত্রীলোককে দেখা গেল, সূর্য় যার বসন, যার পায়ের নীচে ছিল চাঁদ, আর বারোটি নক্ষত্রের এক মুকুট তার মাথায়৷ 2 স্ত্রীলোকটি গর্ভবতী, প্রসব বেদনায় সে চিত্কার করছিল৷ 3 এরপর স্বর্গে আর এক নিদর্শন দেখা দিল, এক প্রকাণ্ড নাগ দেখা গেল, যার রঙ ছিল লাল, তার সাতটি মাথা, দশটি শিং আর সাতটি মাথায় সাতটি মুকুট৷ 4 সে তার লেজ দিয়ে আকাশের এক তৃতীয়াংশ নক্ষত্র টেনে নামিয়ে এনে পৃথিবীর ওপর ফেলল৷ য়ে স্ত্রীলোকটি সন্তান প্রসব করার অপেক্ষায় ছিল, সেই নাগটি তার সামনে দাঁড়াল, য়েন স্ত্রীলোকটি সন্তান প্রসব করার সঙ্গে সঙ্গে সে তার সন্তানকে গ্রাস করতে পারে৷ 5 স্ত্রীলোকটি এক পুত্র সন্তান প্রসব করল, যিনি লৌহ দণ্ড দিয়ে সমস্ত জাতিকে শাসন করবেন৷ তার সন্তানকে ঈশ্বরের সিংহাসনের কাছে নিয়ে যাওয়া হল; 6 আর সেই স্ত্রীলোকটি প্রান্তরে পালিয়ে গেল, সেখানে ঈশ্বর তার জন্য একটি স্থান প্রস্তুত করে রেখেছিলেন, সেখানে সে বারশো ষাট দিন পর্যন্ত প্রতিপালিতা হবে৷ 7 এরপর স্বর্গে এক যুদ্ধ বেধে গেল৷ মীখায়েল ও তার অধীনে অন্যান্য স্বর্গদূতরা সেই নাগের সঙ্গে যুদ্ধ করল৷ সেই নাগও তার অপদূতদের সঙ্গে নিয়ে যুদ্ধ করতে লাগল; 8 কিন্তু সাপ যথেষ্ট শক্তিশালী ছিল না, তাই তারা স্বর্গের স্থান হারালো৷ 9 সেই বিরাট নাগকে স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে ছুঁড়ে ফেলা হল৷ এই বিরাট নাগ হল সেই পুরানো নাগ যাকে দিয়াবল বা শয়তান বলা হয়, সে সমগ্র জগতকে ভ্রান্ত পথে নিয়ে যায়৷ সেই নাগ ও তার সঙ্গী অপদূতদের পৃথিবীতে ছুঁড়ে ফেলা হল৷ 10 তখন আমি স্বর্গে এক উচ্চস্বর শুনতে পেলাম, ‘এখন আমাদের ঈশ্বরের জয়, পরাক্রম, রাজত্ব, ধ্বনি ও তাঁর খ্রীষ্টের কর্তৃত্ত্ব এসে পড়েছে৷ এসবই সন্ভব হয়েছে কারণ আমাদের ভাইদের বিরুদ্ধে য়ে দোষারোপকারী, তাকে নীচে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে৷ সে দিন রাত আমাদের ঈশ্বরের সামনে তাদের নামে দোষারোপ করত৷ 11 তারা মেষশাবকের রক্তে ও নিজের নিজের সাক্ষ্য দ্বারা সেই নাগকে পরাস্ত করেছে৷ তারা নিজের প্রাণ তুচ্ছ করে খ্রীষ্টের জন্য মৃত্যুবরণ করতে প্রস্তুত ছিল৷ 12 তাই স্বর্গ এবং সেখানে বসবাসকারী তোমরা সকলে আনন্দ কর! কিন্তু পৃথিবী ও সমুদ্রের কি দুর্দশাই না হবে, কারণ দিয়াবল তোমাদের কাছে নেমে এসেছে৷ সে রাগে ফুঁসছে, কারণ সে জানে য়ে তার আর বেশী সময় বাকী নেই৷’ 13 পরে ঐ নাগ যখন দেখল য়ে পৃথিবীতে তাকে ছুঁড়ে ফেলা হল, তখন য়ে স্ত্রীলোকটি পুত্র প্রসব করেছিল, সেই স্ত্রীলোকটির পেছনে সে তাড়া করতে ছুটল৷ 14 কিন্তু সেই স্ত্রীলোকটিকে খুব বড় ঈগলের দুটি ডানা দেওয়া হল, য়েন য়ে প্রান্তর তার জন্য নির্দিষ্ট সেই স্থানে সে উড়ে য়েতে পারে; সেখানে সে ঐ নাগের দৃষ্টি থেকে দূরে সাড়ে তিন বছর পর্যন্ত নিরাপদে প্রতিপালিতা হবে৷ 15 তখন সেই নাগ স্ত্রীলোকটিকে লক্ষ্য করে তার মুখ থেকে নদীর জলের মতো জলপ্রবাহ বইয়ে দিল৷ সেই জল বন্যার মতো এমনভাবে ধেয়ে এল য়েন তাকে ভাসিয়ে নিয়ে য়েতে পারে৷ 16 কিন্তু পৃথিবী সেই স্ত্রীলোকটিকে সাহায্য করল; পৃথিবী তার মুখ খুলে নাগের মুখ থেকে নির্গত জল টেনে নিল৷ 17 তখন সেই নাগ স্ত্রীলোকের ওপর রেগে গিয়ে ঈশ্বরের আদেশ পালনকারী ও যীশুর সত্য শিক্ষাসকল ধারণকারী তাঁর বাকি সব সন্তানের সঙ্গে যুদ্ধ করতে গেল; 18 আর সেই নাগ সমুদ্রের তীরে বালুকার ওপর গিয়ে দাঁড়াল৷
Revelation 13:1 এরপর আমি দেখলাম সমুদ্রের মধ্য থেকে একটা পশু উঠে আসছে, তার দশটা শিং ও সাতটা মাথা; আর তার সেই দশটা শিং-এর প্রত্যেকটাতে মুকুট পরানো আছে৷ তার প্রতিটি মাথার ওপর ঈশ্বরের নিন্দাসূচক বিভিন্ন নাম৷ 2 য়ে পশুটিকে আমি দেখলাম, তাকে দেখতে একটা চিতা বাঘের মতো৷ তার পা ভাল্লুকের মতো, তার মুখটা সিংহের মুখের মতো৷ সমুদ্র তীরের সেই নাগ তার নিজের ক্ষমতা, তার নিজের সিংহাসন ও মহাকর্তৃত্ত্ব এই পশুকে দিল৷ 3 আমি লক্ষ্য করলাম য়ে তার একটি মাথায় য়েন এক মৃত্যুজনক ক্ষত রয়েছে; কিন্তু সেই মৃত্যুজনক ক্ষতটিকে সারিয়ে তোলা হল৷ এই দেখে সমস্ত জগতের লোক আশ্চর্য হয়ে গেল; আর তারা সেই পশুর অনুসরণ করল৷ 4 ঐ পশুকে এমন ক্ষমতা দেবার জন্য লোকেরা সেই নাগের আরাধনা করতে লাগল৷ তারা সেই পশুরও আরাধনা করে বলল, ‘এই পশুর মতো আর কে আছে, কেই বা এর সঙ্গে যুদ্ধ করতে সক্ষম? 5 গর্ব করার ও ঈশ্বর নিন্দা করার জন্য সেই পশুটিকে অনুমতি দেওয়া হল৷ বিয়াল্লিশ মাস ধরে এই কাজ করার ক্ষমতা তাকে দেওয়া হল৷ 6 তাতে সে ঈশ্বরের অপমান করতে শুরু করল, ঈশ্বরের নামের, তাঁর বাসস্থানের আর স্বর্গবাসী সকলের নিন্দা করতে লাগল৷ 7 ঈশ্বরের পবিত্র লোকদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে ও তাদের পরাস্ত করবার ক্ষমতা তাকে দেওয়া হল; আর জগতের সমস্ত বংশ, লোকসমাজ, ভাষা ও জাতির ওপর কর্তৃত্ত্ব করার ক্ষমতাও তাকে দেওয়া হল৷ 8 পৃথিবীর সমস্ত মানুষ, যাদের নাম জগত সৃষ্টির আগে থেকে সেই উত্সর্গীকৃত মেষশাবকের জীবন পুস্তকে লেখা হয় নি, তারা সকলে ঐ পশুর ভজনা করবে৷ ইনি সেই মেষশাবক যিনি হত হয়েছিলেন৷ 9 যার কান আছে সে শুনুক: 10 ‘বন্দী হবার জন্য য়ে নিরুপিত তাকে বন্দী হতে হবে, যদি তরবারির আঘাতে হত হওয়া কারও জন্য নির্ধারিত থাকে তবে তাকে তরবারির আঘাতে হত হতে হবে৷এর অর্থ ঈশ্বরের পবিত্র লোকদের ধৈর্য্য ও বিশ্বাস অবশ্যই থাকবে৷ 11 এরপর আমি পৃথিবীর মধ্য থেকে আর একটি পশুকে উঠে আসতে দেখলাম, মেষশাবকের মতো তার দুটি শিং ছিল, কিন্তু সে নাগের মত কথা বলত৷ 12 সে ঐ প্রথম পশুটির সমস্ত কর্তৃত্ত্ব প্রথম পশুর উপস্থিতিতে প্রযোগ করল এবং সেই শক্তিবলে বিশ্বের সকল লোককে প্রথম পশুটির আরাধনা করতে বাধ্য করল, যার মাথার ক্ষত সেরে গিয়েছিল৷ 13 দ্বিতীয় পশুটি মহা অলৌকিক সব কাজ করতে লাগল, এমন কি সকলের চোখের সামনে আকাশ থেকে পৃথিবীতে আগুন নামাল৷ 14 এইভাবে সে প্রথম পশুর সেবার্থে তাকে প্রদত্ত শক্তির বলে অলৌকিক কাজ করে পৃথিবীবাসীদের ঠকাল৷ সে পৃথিবীর লোকদের বলল, ‘য়ে পশু তরবারির আঘাতে আহত হয়েও বেঁচে উঠেছে, তার সম্মানার্থে একঢি মূর্তি গড়৷ 15 একে এমন ক্ষমতা দেওয়া হল যাতে সে প্রথম পশুর প্রতিমার মধ্যে প্রাণ সঞ্চার করতে পারে, য়েন সেই প্রতিমা কথা বলতে পারে ও য়ে সেই পশুর প্রতিমার আরাধনা না করে তাকে হত্যা করার আদেশ দেয়৷ 16 এই পশু কি ক্ষুদ্র, কি মহান, ধনী ও দরিদ্র, স্বাধীন ও ক্রীতদাস, সকলকে তাদের ডানহাতে অথবা কপালে এক বিশেষ চিহ্নের ছাপ দিতে বাধ্য করাল৷ 17 যাদের পশুর নামের ছাপ ও সংখ্যাসূচক ছাপ ছিল না তারা কেনা বেচার অধিকার হারাল৷ 18 য়ে বুদ্ধিমান সে ঐ পশুর সংখ্যা গণনা করুক৷ এরজন্য বিজ্ঞতার প্রযোজন৷ ঐ সংখ্যাটি একটি মানুষের নামের সংখ্যা আর সেই সংখ্যা হচ্ছে
Revelation 14:1 এরপর আমি সিযোন পর্বতের ওপর এক মেষশাবককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলাম৷ তাঁর সঙ্গে দাঁড়িয়ে 1,44,000 জন লোক৷ তাদের প্রত্যেকের কপালে তাঁর নাম ও তাঁর পিতার নাম লিখিত৷ 2 পরে আমি স্বর্গ থেকে শুনতে পেলাম প্রবল জলকল্লোলের মতো, প্রচণ্ড মেঘগর্জনের মতো এক কন্ঠস্বর; য়ে স্বর আমি শুনলাম তাতে মনে হল য়েন একটা বীণাবাদক দল তাঁদের বীণা বাজাচ্ছেন৷ 3 তাঁরা সকলে সিংহাসনের সামনে ও সেই চারজন প্রাণী ও প্রাচীনদের সামনে এক নতুন গীত গাইছিলেন৷ পৃথিবী থেকে যাদের মূল্য দিয়ে কেনা হয়েছিল সেই 1,44,000 জন লোক ছাড়া আর অন্য কেউই সেই গান শিখতে পারল না৷ 4 এই 1,44,000 জন লোক হলেন তাঁরা যাঁরা স্ত্রীলোকদের সংসর্গে নিজেদের কলুষিত করেন নি, কারণ তাঁরা খাঁটি৷ তাঁরা মেষশাবক য়েখানে যান সেখানেই তাঁকে অনুসরণ করেন৷ পৃথিবীর লোকদের মধ্য থেকে এই 1,44,000 জন লোককে মুক্ত করা হয়েছে৷ ঈশ্বর ও মেষশাবকের উদ্দেশ্যে তাঁরা মনুষ্যদের মধ্য থেকে অগ্রিমাংশরূপে গৃহীত হয়েছেন৷ 5 তাঁদের মুখে কোন মিথ্যা কথা পাওয়া যায় নি৷ তাঁরা নির্দোষ৷ 6 পরে আমি আর একজন স্বর্গদূতকে আকাশপথে উড়ে য়েতে দেখলাম৷ পৃথিবীবাসী লোকদের কাছে, পৃথিবীর সকল জাতি, উপজাতি, সকল ভাষাভাষী লোকের কাছে ঘোষণা করার জন্য এই স্বর্গদূতের কাছে ছিল অনন্তকালীন সুসমাচার৷ 7 স্বর্গদূত উদাত্ত কন্ঠে এই কথা বললেন, ‘ঈশ্বরকে ভয় করো ও তাঁর প্রশংসা করো, কারণ সময় হয়েছে, যখন ঈশ্বর সমস্ত লোকদের বিচার করবেন৷ যিনি স্বর্গ, পৃথিবী, সমুদ্র ও সমস্ত জলের উত্স সৃষ্টি করেছেন, সেই ঈশ্বরেরই উপাসনা করো৷’ 8 এরপর প্রথম স্বর্গদূতদের পিছন পিছন দ্বিতীয় স্বর্গদূত উড়ে এসে বললেন, ‘পতন হল! মহানগরী বাবিলের পতন হল! সে সমস্ত জাতিকে ঈশ্বরের ক্রোধের ও তার ব্যভিচারের মদিরা পান করিয়েছে৷’ 9 এরপর ঐ দুজন স্বর্গদূতের পেছনে আর এক স্বর্গদূত এসে চিত্কার করে বললেন, ‘যদি কেউ সেই পশু ও তার প্রতিমার আরাধনা করে আর কপালে অথবা হাতে তার ছাপধারণ করে 10 তবে সেও ঈশ্বরের সেই রোষ মদিরা পান করবে, যা ঈশ্বরের ক্রোধের পাত্রে অমিশ্রিত অবস্থায় ঢালা হচ্ছে৷ পবিত্র স্বর্গদূতদের ও মেষশাবকের সামনে জ্বলন্ত গন্ধকে ও আগুনে পুড়ে তাকে কি নিদারুণ যন্ত্রণাই না পেতে হবে৷ 11 তাদের যন্ত্রণার ধোঁয়া যুগপর্য়ায়ে যুগে যুগে উপরে উঠতে থাকবে৷ যাঁরা সেই পশু ও তাঁর মূর্তির আরাধনা করে অথবা য়ে কেউ তার নামের ছাপ ধারণ করে, তারা দিনে কি রাতে কখনও বিশ্রাম পাবে না৷’ 12 এখানেই ঈশ্বরের পবিত্র লোকদের ধৈর্য্যের প্রযোজন, যাঁরা ঈশ্বরের আজ্ঞা পালন করবে ও যীশুর প্রতি বিশ্বাসে স্থির থাকবে৷ 13 এরপর আমি স্বর্গ থেকে একটা রব শুনলাম, ‘তুমি এই কথা লেখ; এখন থেকে মৃত লোকেরা ধন্য, যাঁরা প্রভুর সঙ্গে যুক্ত থেকে মৃত্যুবরণ করেছে৷’আত্মা একথা বলছেন, ‘হ্যাঁ, এ সত্য৷ তারা তাদের কঠোর পরিশ্রম থেকে বিশ্রাম লাভ করবে, কারণ তাদের সব সত্কর্ম তাদের অনুসরণ করে৷’ 14 পরে আমি তাকিয়ে দেখলাম, আমার সামনে একখণ্ড সাদা মেঘ৷ সেই মেঘের ওপর মানবপুত্রেরমতো একজন বসে আছেন৷ তাঁর মাথায় সোনার মুকুট ও তার হাতে একটা ধারালো কাস্তে৷ 15 এরপর মন্দির থেকে আর একজন স্বর্গদূত বের হয়ে এলেন৷ যিনি মেঘের ওপরে বসে আছেন তাঁকে তিনি বললেন, ‘আপনার কাস্তে লাগান ও শস্য সংগ্রহ করুন, কারণ শস্য সংগ্রহের সময় হয়েছে৷ পৃথিবীর সব শস্য পেকেছে৷’ 16 তাই যিনি সেই মেঘের ওপর বসেছিলেন তিনি পৃথিবীর ওপর কাস্তে চালালেন আর পৃথিবীর ফসল তোলা হল৷ 17 এরপর স্বর্গের মন্দির থেকে আর একজন স্বর্গদূত বেরিয়ে এলেন৷ এই স্বর্গদূতের হাতে এক ধারালো কাস্তে ছিল, 18 আর যজ্ঞবেদী থেকে অন্য এক স্বর্গদূত উঠে এলেন, য়াঁর আগুনের ওপরে কর্তৃত্ত্ব করার ক্ষমতা ছিল৷ তিনি ঐ ধারালো কাস্তে হাতে য়ে স্বর্গদূত ছিলেন তার উদ্দেশ্যে চিত্কার করে এই কথা বললেন, ‘তোমার ধারালো কাস্তে লাগাও, পৃথিবীর সমস্ত আঙ্গুর ক্ষেতের আঙ্গুরের থোকাগুলি কাট, কারণ সমস্ত আঙ্গুর পেকে গেছে৷’ 19 তখন সেই স্বর্গদূত পৃথিবীর ওপর কাস্তে চালিয়ে পৃথিবীর সমস্ত আঙ্গুর সংগ্রহ করে ঈশ্বরের ক্রোধের মাড়াইকলে ঢেলে দিলেন৷ 20 নগরের বাইরে মাড়াইকলে আঙ্গুরগুলি মাড়াই করা হলে পরে সেই মাড়াইকল থেকে রক্ত নিঃসৃত হল৷ সেই রক্ত উচ্চতায় ঘোড়ার এক বলগা পর্যন্ত এবং দুরত্বে 200 মাইল প্রবাহিত হল৷
Revelation 15:1 পরে আমি স্বর্গে আর একটি মহত্ ও বিস্ময়কর চিহ্ন দেখলাম৷ সপ্তম স্বর্গদূতকে সপ্ত আঘাত নিয়ে আসতে দেখলাম৷ এগুলিই শেষতম আঘাত৷ এই আঘাতগুলির দ্বারা ঈশ্বরের মহাক্রোধের অবসান হবে৷ 2 এরপর আমি অগ্নিমিশ্রিত কাঁচের সমুদ্রের মত কিছু একটা দেখলাম৷ যাঁরা সেই পশু, তার মূর্তি ও তার নামের সংখ্যাকে জয় করেছে, তারা ঈশ্বরের দেওয়া বীনা হাতে ধরে সেই কাঁচের সমুদ্রের তীরে দাঁড়িয়ে ছিল৷ 3 তারা ঈশ্বরের দাস মোশির গীত ও মেষশাবকের গীত গাইছিল: ‘হে প্রভু ঈশ্বর ও সর্বশক্তিমান, মহত্ ও আশ্চর্য তোমার ক্রিয়া সকল, হে জাতিবৃন্দের রাজন! ন্যায় ও সত্য তোমার পথ সকল৷ 4 হে প্রভু, কে না তোমার নামের প্রশংসা করবে? কারণ তুমিই একমাত্র পবিত্র৷ সমস্ত জাতি তোমার সামনে এসে তোমার উপাসনা করবে, কারণ তোমার ন্যায়সঙ্গত কাজ প্রকাশিত হয়েছে৷’ 5 এরপর আমি স্বর্গের মন্দির (ঈশ্বরের পবিত্র উপস্থিতির তাঁবু) দেখলাম৷ মন্দিরটি খোলা ছিল৷ 6 সেই সাতজন স্বর্গদূত যাদের ওপর শেষ সাতটি হানবার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল, তাঁরা সেই মন্দির থেকে বাইরে এলেন৷ তাঁরা শুচি শুভ্র মসীনার পোশাক পরিহিত, তাঁদের বুকে সোনার ফিতে বাঁধা৷ 7 পরে সেই চার প্রাণীর মধ্য থেকে একজন ঐ সাতজন স্বর্গদূতদের হাতে একে একে তুলে দিলেন সাতটি সোনার বাটি, সেগুলি যুগপর্য়ায়ে যুগে যুগে জীবন্ত ঈশ্বরের রোষে পরিপূর্ণ৷ 8 তাতে ঈশ্বরের মহিমা ও পরাক্রম হতে উত্পন্ন ধোঁয়ায় মন্দিরটি পরিপূর্ণ হল৷ আর সেই সপ্ত স্বর্গদূতদের সপ্ত আঘাত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কেউ মন্দিরের মধ্যে প্রবেশ করতে পারল না৷
Revelation 16:1 তখন আমি মন্দির থেকে এক উদাত্ত কন্ঠস্বর শুনতে পেলাম, তা ঐ সাতজন স্বর্গদূতকে বলছে, ‘যাও, ঈশ্বরের রোষের সেই সাতটি বাটি পৃথিবীতে ঢেলে দাও৷’ 2 তখন প্রথম স্বর্গদূত গিয়ে পৃথিবীর ওপরে তাঁর বাটিটি ঢেলে দিলেন, তাতে যাঁরা সেই পশুর ছাপ ধারণ করেছিল, যাঁরা তাঁর মূর্তির উপাসনা করেছিল তাদের গায়ে এক কুত্সিত বেদনাদায়ক ঘা দেখা দিল৷ 3 এরপর দ্বিতীয় স্বর্গদূত তাঁর বাটিটি সমুদ্রের উপর ঢেলে দিলেন৷ তাতে সমুদ্রের জল মরা মানুষের রক্তের মতো হয়ে গেল, আর তাতে সমুদ্রের মধ্যে যত জীবন্ত প্রাণী ছিল সবই মারা পড়ল৷ 4 এরপর তৃতীয় স্বর্গদূত তাঁর বাটিটি পৃথিবীর নদনদী ও জলের উত্সে ঢেলে দিলেন, তাতে সব জল রক্ত হয়ে গেল৷ 5 তখন আমি জল সমুদ্রের স্বর্গদূতকে বলতে শুনলাম:‘তুমি আছ ও ছিলে, তুমিই পবিত্র, তুমি ন্যায়পরায়ণ কারণ তুমি এইসব বিষয়ের বিচার করেছ৷ 6 ওরা পবিত্র লোকদের ও ভাববাদীদের রক্তপাত করেছে; আর তার প্রতিফলস্বরূপ আজ তুমিও এই সব লোককে রক্তপান করতে দিয়েছ, এটাই এদের প্রাপ্য়৷’ 7 তখন আমি যজ্ঞবেদীকে বলতে শুনলাম,‘হ্যাঁ, প্রভু ঈশ্বর যিনি সর্বশক্তিমান, তোমার বিচার সত্য ও ন্যায়সঙ্গত৷’ 8 পরে চতুর্থ স্বর্গদূত সূর্যের ওপরে তাঁর বাটিটি ঢেলে দিলেন৷ তাতে লোকদের আগুনে পোড়াবার ক্ষমতা সূর্য়কে দেওয়া হল৷ 9 তখন সেই প্রচণ্ড তাপে মানুষদের পোড়ানো হল৷ ঈশ্বরকে তারা অভিশাপ দিতে লাগল৷ এই সমস্ত আঘাতের উপর ঈশ্বরের কর্তৃত্ত্ব ছিল; কিন্তু তারা তবু তাদের মন ফিরালো না আর ঈশ্বরের মহিমা কীর্তন করল না৷ 10 এরপর পঞ্চম স্বর্গদূত তাঁর বাটিটি সেই পশুর সিংহাসনের ওপর ঢেলে দিলেন৷ ফলে তার রাজ্যের সব জায়গায় ঘোর অন্ধকার হয়ে গেল, আর লোকেরা যন্ত্রণায় নিজেদের জিভ কামড়াতে লাগল৷ 11 বেদনা ও ক্ষতের জন্য তারা স্বর্গের ঈশ্বরকে অভিশাপ দিতে লাগল, কিন্তু তারা তাদের কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনা করল না৷ 12 এরপর ষষ্ঠ দূত তার বাটিটি নিয়ে মহানদী ইউফ্রেটিসের ওপর ঢেলে দিলেন৷ তাতে নদীর জল শুকিয়ে গেল ও প্রাচ্যের রাজাদের জন্য আসার পথ প্রস্তুত হল৷ 13 এরপর আমি দেখলাম সেই সাপের মুখ থেকে, পশুর মুখ থেকে ও ভণ্ড ভাববাদীর মুখ থেকে ব্যাঙের মতো দেখতে একটি একটি করে তিনটি অশুচি আত্মা বেরিয়ে এল৷ 14 সেই অশুচি আত্মারা ভূতের আত্মা, যাঁরা নানা অলৌকিক কাজ করে৷ তারা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বিরুদ্ধে মহাবিচারের দিনে যুদ্ধ করার জন্য সমস্ত জগত্ ঘুরে রাজাদের একত্রিত করল৷ 15 ‘শোন! চোর য়েমন আসে আমি তেমনি আসব৷ ধন্য সেই ব্যক্তি য়ে জেগে থাকে, আর নিজের পোশাক নিজের কাছে রাখে, যাতে তাকে উলঙ্গ হয়ে না বেড়াতে হয় এবং লজ্জায় না পড়তে হয়৷’ 16 পরে ঐ অশুচি আত্মারা ইব্রীয় ভাষায় যাকে হরমাগিদোন বলে সেই স্থানে নিয়ে এসে রাজাদের একত্রিত করল৷ 17 এরপর সপ্তম স্বর্গদূত আকাশের ওপর তাঁর বাটিটি ঢেলে দিলেন৷ তখন স্বর্গের মন্দিরের সেই সিংহাসন থেকে শোনা গেল এক পরম উদাত্ত কন্ঠস্বর, ‘সমাপ্ত হল!’ 18 তাতে বিদ্য়ুত্ ঝলক, মেঘগর্জন, বজ্রপাত এবং ভয়ঙ্কর এক ভূমিকম্প হল৷ পৃথিবীতে মানুষের উত্পত্তিকাল থেকে এমন ভূমিকম্প আর কখনও হয় নি৷ 19 সেই মহানগরী তাতে ভেঙ্গে টুকরো হয়ে গেল, আর ধূলিসাত্ হয়ে গেল বিধর্মীদের সব শহর৷ ঈশ্বর মহান বাবিলকে শাস্তি দিতে ভুলে যান নি৷ তিনি তাঁর প্রচণ্ড ক্রোধে পূর্ণ সেই পানপাত্র মহানগরীকে দিলেন৷ 20 এর ফলে সমস্ত দ্বীপ অদৃশ্য হয়ে গেল, আর পর্বতমালা সমভূমি হয়ে গেল৷ 21 আকাশ থেকে মানুষের ওপরে বিরাট বিরাট শিলা পড়তে লাগল, এক একটি শিলা ছিল এক এক মন ভারী; আর এই শিলা বৃষ্টির জন্য লোকরা ঈশ্বরের নিন্দা করতে লাগল, কারণ সেই আঘাত ছিল নিদারুণ ভয়ঙ্কর এক আঘাত৷
Revelation 17:1 এরপর ঐ সাতটি বাটি যাদের হাতে ছিল, সেই সাতজন স্বর্গদূতদের মধ্যে একজন এসে আমায় বললেন, ‘এস, বহু নদীর ওপরে য়ে মহাবেশ্যা বসে আছে, আমি তোমাকে তার কি শাস্তি হবে তা দেখাবো৷ 2 তার সঙ্গে পৃথিবীর রাজারা য়ৌন পাপ করেছে, আর পৃথিবীর লোকরা তার অসত্ য়ৌন ক্রিয়ার মদিরা পান করে মত্ত হয়েছে.’ 3 তখন তিনি আত্মার পরিচালনায় আমাকে প্রান্তরের মধ্যে নিয়ে গেলেন৷ সেখানে আমি একটি নারীকে দেখলাম, সে লাল রঙের এক পশুর ওপর বসে আছে৷ সেই পশুটির সাতটা মাথা ও দশটা শিং, তারা সারা গায়ে ঈশ্বর নিন্দা সূচক নাম লেখা ছিল৷ 4 সেই নারীর পরনে ছিল বেগুনী ও লাল রঙের বসন, সোনা ও বহুমূল্য মণি-মুক্তা খচিত অলঙ্কার তার অঙ্গে, তার হাতে সোনার একটি পানপাত্র ছিল, ঘৃন্য দ্রব্যে ও তার য়ৌন পাপ মালিন্যে তা পূর্ণ৷ 5 তার কপালে রহস্যপূর্ণ এক নাম লেখা আছে:মহতী বাবিল, পৃথিবীর বেশ্যাদেরএবং পৃথিবীর যাবতীয় ঘৃন্য জিনিসের জননী৷ 6 আমি দেখলাম, সেই নারী ঈশ্বরের পবিত্র লোকদের রক্তে মাতাল হয়ে আছে৷ এই পবিত্র লোকরাই যীশুর বিষয়ে সাক্ষ্য দিয়েছিল৷সেই নারীকে দেখে আমি রীতিমতো অবাক হয়ে গেলাম৷ 7 সেই স্বর্গদূত আমায় জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি অবাক হচ্ছ কেন? আমি ঐ নারী ও তার বাহন পশু সম্পর্কে নিগূঢ়তত্ত্ব জানাচ্ছি৷ ঐ পশুটির সাতটি মাথা এবং দশটি শিং আছে৷ 8 তুমি য়ে পশুকে দেখলে, এক সময় সে বেঁচে ছিল, কিন্তু এখন সে বেঁচে নেই৷ সে পাতাল থেকে উঠে আসবে ও তার ধ্বংস স্থানে যাবে৷ জগত্ পত্তনের সময় থেকে পৃথিবী নিবাসী যত লোকের নাম জীবন পুস্তকে লিখিত নেই, তারা ঐ পশুকে দেখে বিস্মিত হবে, কারণ পশুটি একদিন ছিল, এখন আর নেই, কিন্তু পরে আবার আসবে৷ 9 ‘এটা বোঝার জন্য বিজ্ঞ মনের প্রযোজন৷ ঐ সপ্ত মস্তক হচ্ছে সপ্ত পর্বত, যার ওপর ঐ নারী বসে আছে৷ তারা আবার সপ্ত রাজার প্রতীক৷ 10 তাদের মধ্যে প্রথম পাঁচ জনের পতন হয়েছে৷ একজন আছে আর অন্য জন এখনও আসে নি৷ সে এলে কেবল অল্পকালই থাকবে৷ 11 য়ে পশু এক সময়ে জীবিত ছিল, আর এখন নেই, সেই হচ্ছে অষ্টম রাজা৷ এই অষ্টম রাজা সেই সাত রাজার একটি আর সে তার ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে৷ 12 ‘আর তুমি য়ে দশটি শিং দেখলে তা হল দশটি রাজা, তারা এখনও রাজ্য পায় নি, কিন্তু সেই পশুর সঙ্গে এক ঘন্টার জন্য রাজাদের মতো কর্তৃত্ত্ব করার ক্ষমতা পাবে৷ 13 এই দশ রাজার উদ্দেশ্য এক, তারা নিজেদের ক্ষমতা ও কর্তৃত্ত্ব সেই পশুকে দেবে৷ 14 তারা মেষশাবকের সঙ্গে যুদ্ধ করবে কিন্তু মেষশাবক তাদের পরাজিত করবে কারণ তিনি প্রভুদের প্রভু ও রাজাদের রাজা৷ তিনি তাঁর মনোনীত এবং বিশ্বস্ত লোকদের সাহায্যে তাদের পরাজিত করবেন৷ এই লোকদের তিনি আহ্বান করেছিলেন৷’ 15 আর স্বর্গদূত আমায় বললেন, ‘দেখ, ঐ গণিকা য়ে জলের ওপর বসে আছে, সেই জল হচ্ছে জাতিগণ, প্রজাগণ, জনগণ ও ভিন্ন ভাষাভাষীর লোকসমুহ৷ 16 তুমি য়ে দশটা শিং ও পশুকে দেখলে, তারা ঐ গণিকাকে ঘৃণা করবে৷ তারা তার সব কিছু কেড়ে নিয়ে তাকে উলঙ্গ করে তার দেহটাকে খাবে, তারপর তাকে আগুনে পুড়িয়ে দেবে৷ 17 এসব ঘটবে কারণ ঈশ্বর তাঁর ইচ্ছা পূরণ করতে তাদের হৃদয়ে এই প্রবৃত্তি দেবেন৷ সেজন্য তারা সকলে একচিত্ত হয়ে য়ে পর্যন্ত ঈশ্বরের বাক্য সফল না হয় সেই পর্যন্ত নিজের নিজের ক্ষমতা সেই পশুকে দেবে, যাতে সে রাজত্ব করতে পারে৷ 18 তুমি য়ে নারীকে দেখলে সে ঐ মহানগরীর প্রতীক, য়ে পৃথিবীর রাজাদের ওপরে কর্তৃত্ত্ব করে৷’
Revelation 18:1 এইসব ঘটনার পর আমি আর একজন স্বর্গদূতকে স্বর্গ থেকে নেমে আসতে দেখলাম৷ তিনি মহাপরাক্রান্ত স্বর্গদূত, তাঁর জ্যোতি সমস্ত পৃথিবীকে আলোকিত করে তুলল৷ 2 তিনি প্রবল শব্দে চেঁচিয়ে উঠলেন:‘পতন হল! মহানগরী বাবিলের পতন হল! সে ভূতের আবাসে পরিণত হয়েছে৷ সেই নগরী হয়েছে সব রকমের অশুচি আত্মার আবাস৷ সে যতো অশুচি পাখীদের বাসা এবং যতো নোংরা ও ঘৃন্য পশুদের নগরীতে পরিণত হয়েছে৷ 3 পৃথিবীর সমস্ত মানুষ তার অসত্ য়ৌন পাপের মদিরা ও ঈশ্বরের রোষ মদিরা পান করেছে৷ পৃথিবীর রাজারা তার সঙ্গে ব্যভিচার করেছে; আর পৃথিবীর ব্যবসাযীরা তার অসংযত বিলাসিতার সুবাদে ধনবান হয়ে উঠেছে৷’ 4 এরপর আমি স্বর্গ থেকে আর একটি কন্ঠস্বর শুনতে পেলাম, সে বলছে:‘হে আমার প্রজারা, ওখান থেকে বেরিয়ে এস, তোমরা য়েন ওর পাপের ভাগী না হও; আর ওর প্রাপ্য আঘাত য়েন তোমাদের ওপর না আসে৷ 5 কারণ ওর পাপ স্তূপীকৃত হয়ে গগণচুম্বী হয়েছে; আর ঈশ্বর ওর সব অপরাধ স্মরণ করেছেন৷ 6 সে অপরের সঙ্গে য়েমন ব্যবহার করেছে, তোমরাও তার প্রতি সেরূপ ব্যবহার কর৷ সে য়েমন কাজ করেছে, তোমরা তার দ্বিগুণ প্রতিফল তাকে দাও৷ অপরের জন্য পানপাত্রে সে য়ে পরিমাণ মেশাতো তোমরা তার জন্য সেই পাত্রে দ্বিগুণ মেশাও৷ 7 সে (বাবিল) যত অহঙ্কার ও বিলাসিতায় জীবন কাটাতো তোমরা তাকে তত যন্ত্রণা ও মনোকষ্ট দাও৷ কারণ সে নিজের বিষয়ে বলত, ‘আমি রাণী, রাণীর মতোই সিংহাসনে বসে আছি৷ আমি বিধবা নই, আর আমি কখনই দুঃখ পাব না৷ 8 অতএব এক দিনের মধ্যেই তার ওপর এই আঘাত আসবে; মৃত্যু, শোক ও দুর্ভিক্ষ আর আগুনে পুড়িয়ে তাকে ধ্বংস করা হবে৷ কারণ প্রভু ঈশ্বর যিনি তার বিচার করেছেন তিনি সর্বশক্তিমান৷’ 9 ‘জগতের য়ে সব রাজারা তার সঙ্গে য়ৌন পাপে লিপ্ত হয়েছে ও বিলাসে কাটিয়েছে, তারা তাকে জ্বলতে দেখে ও তার থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখে বিলাপ ও হাহাকার করবে৷’ 10 তার যন্ত্রণার ভয়াবহতা দেখে ভয়ে দূরে দাঁড়িয়ে বলবে:‘হায়! হায়! হে মহান নগরী! ও শক্তিশালী বাবিল নগরী! এক ঘন্টার মধ্যেই তোমার ওপরে শাস্তি নেমে এল!’ 11 আর পৃথিবীর ব্যবসাযীরা তার (বাবিলের) জন্য কাঁদছে ও হাহাকার করছে, কারণ তাদের বাণিজ্য দ্রব্য আর কেউ কেনে না৷ 12 তাদের বাণিজ্যদ্রব্যগুলি ছিল: সোনা, রূপো, মণি, মুক্তা, মসীনার কাপড়, বেগুনী রঙের কাপড়, রেশমের কাপড়, লাল রঙের কাপড়, সব রকমের চন্দন কাঠ, হাতির দাঁতের তৈরী বিভিন্ন জিনিসপত্র, মূল্যবান কাঠ, পিতলের, কাঁসার, লোহার ও মার্বেল পাথরের সব রকমের পাত্র, 13 আর দারুচিনি, মশলা, ধূপ, সুগন্ধি নির্যাস, মস্তকি, গুগ্গুল, মদ ও জলপাইয়ের তেল, ময়দা, আটা, গরু, মেষ, ঘোড়া গাড়ী আর মানুষের দেহ এবং প্রাণও৷ সেই ব্যবসাযীরা কেঁদে কেঁদে বলবে: 14 ‘হে বাবিল, য়ে সব ভাল ভাল জিনিসের প্রতি তোমার মন পড়ে ছিল তার সবই তোমার কাছ থেকে চলে গেছে৷ তোমার সব রকমের বিলাসিতা ও শোভা প্রাচুর্য়্য সবই ধ্বংস হয়ে গেছে৷ তুমি তা আর কখনই দেখতে পাবে না৷’ 15 ‘ঐ সব জিনিসের ব্যবসাযীরা তার ধনে ধনী হয়েছিল, তারা তার যন্ত্রণা দেখে ভয়ে দূরে দাঁড়িয়ে কাঁদবে,আর হাহাকার করে বলবে: 16 ‘হায়! হায়! হায় মহানগরী! সে মসীনার কাপড়, বেগুনী রঙের কাপড় ও লাল রঙের কাপড় পরত৷ সে সোনা, মণি, মুক্তা খচিত গয়না পরত৷ 17 এক ঘন্টার মধ্যে তার সেই মহাসম্পদ ধ্বংস হল!’‘আর প্রত্যেক জাহাজের প্রধান কর্মচারীরা, জলপথের যাত্রীরা, নাবিকরা ও সমুদ্রেই জীবিকা যাদের, তারা সকলে বাবিল থেকে সরে দাঁড়ালো৷ 18 জ্বলন্ত বাবিলের ধোঁয়া দেখে তারা চিত্কার করে বলতে লাগল, ‘আর কোন নগর এই মহানগরীর মত ছিল না!’ 19 তারা সকলে নিজেদের মাথায় ধুলো ছিটিয়ে হাহাকার করে বলতে লাগল:‘হায়! হায়! ঐ মহানগরীর কি দুর্দশাই না হল! যার সম্পদে সমুদ্রগামী জাহাজের কর্তারা ধনবান হত, এক ঘন্টার মধ্যে সে ধ্বংস হয়ে গেল৷ 20 এই জন্য হে স্বর্গ উল্লসিত হও! হে ঈশ্বরের পবিত্র লোকেরা! হে প্রেরিতেরা আর ভাববাদীরা, উদ্ভাসিত হও! কারণ সে তোমাদের প্রতি য়ে অন্যায় করেছে, ঈশ্বর তার শাস্তি তাঁকে দিয়েছেন৷’ 21 পরে এক পরাক্রান্ত স্বর্গদূত খুব বড় য়াঁতার মতো পাথর তুলে নিয়ে সমুদ্রে ফেলে দিয়ে বললেন:‘এই পাথরটির মতো মহানগরী বাবিলকে ছুঁড়ে ফেলা হবে; আর চিরকালের মতো সে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে৷ 22 তোমার মধ্যে বীণাবাদক, বাঁশীবাদক, তূরীবাদক ও গায়কদের গান-বাজনা আর কখনও শোনা যাবে না৷ তোমার মধ্যে আর কখনও কোন শিল্পকারকে পাওয়া যাবে না, গম ভাঙ্গার যাঁতার শব্দ আর কখনও শোনা যাবে না৷ 23 তোমার মধ্যে আর কখনও প্রদীপ জ্বলবে না, বর-কণের কথাবার্তা আর কখনও শোনা যাবে না৷ তোমার ব্যবসাযীরা পৃথিবীর মধ্যে বিখ্যাত হয়েছিল৷ তোমার তন্ত্র-মন্ত্রের জাদুতে সমস্ত জাতি ভ্রান্ত হয়েছিল৷ 24 বাবিল সমস্ত ভাববাদী, ঈশ্বরের পবিত্র লোক, আর পৃথিবীতে যত লোককে হত্যা করা হয়েছে, তার রক্তপাতের দোষে দোষী৷’
Revelation 19:1 এরপর আমি স্বর্গে এক বিশাল জনতার কলরব শুনলাম৷ সেই লোকরা বলছে:‘হাল্লিলুইয়া! জয়, মহিমা ও পরাক্রম আমাদের ঈশ্বরেরই, 2 কারণ তাঁর বিচারসকল সত্য ও ন্যায়৷ তিনি সেই মহান গণিকার বিচার নিষ্পন্ন করেছেন, য়ে তার য়ৌন পাপ দ্বারা পৃথিবীকে কলুষিত করত৷ ঈশ্বরের দাসদের রক্তপাতের প্রতিশোধ নিতে ঈশ্বর সেই বেশ্যাকে শাস্তি দিয়েছেন৷’ 3 তারপর স্বর্গের সেই লোকেরা বলে উঠল:‘হাল্লিলুইয়া! সেই বেশ্যা ভস্মীভূত হবে এবং যুগ যুগ ধরে তার ধোঁয়া উঠবে৷’ 4 এরপর সেই চব্বিশজন প্রাচীন ও চারজন প্রাণী সিংহাসনে যিনি বসেছিলেন, সেই ঈশ্বরের চরণে মাথা নত করে তাঁর উপাসনা করে বললেন:‘আমেন, হাল্লিলুইয়া!’ 5 পরে সিংহাসন থেকে এক বাণী নির্গত হল, কে য়েন বলে উঠল:‘হে আমার দাসরা, তোমরা যাঁরা তাঁকে ভয় কর, তোমরা ক্ষুদ্র কি মহান, তোমরা সকলে ঈশ্বরের প্রশংসা কর!’ 6 পরে আমি বিরাট জনসমুদ্রের রব, প্রবল জলকল্লোল ও প্রচণ্ড মেঘগর্জনের মতো এই বাণী শুনলাম:‘হাল্লিলুইয়া! আমাদের প্রভু যিনি সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, তিনি রাজত্ব শুরু করেছেন৷ 7 এস, আমরা আনন্দ ও উল্লাস করি, আর তাঁর মহিমা করি, কারণ মেষশাবকের বিবাহের দিন এল৷ তাঁর বধূও বিবাহের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করেছে৷ 8 তাকে পরিধান করতে দেওয়া হল শুচি শুভ্র উজ্জ্বল মসীনার বসন৷’সেই মসীনার বসন হল ঈশ্বরের পবিত্র লোকদের সত্কর্মের প্রতীক৷ 9 এরপর তিনি আমায় বললেন, ‘তুমি এই কথা লেখ৷ ধন্য তারা, যাঁরা মেষশাবকের বিবাহে নিমন্ত্রিত হয়েছে৷’ তারপর দূত আমায় বললেন, ‘এগুলি ঈশ্বরের সত্য বাক্য৷’ 10 আমি তাঁকে উপাসনা করার জন্য তাঁর চরণে মাথা নত করলাম৷ কিন্তু স্বর্গদূত আমায় বললেন, ‘আমার উপাসনা করো না! আমি তোমারই মত এবং তোমার য়ে ভাইরা যীশুর সাক্ষ্য ধরে রয়েছে তাদের মতো এক দাস৷ ঈশ্বরেরই উপাসনা কর, কারণ ভাববাদীর আত্মাই হল যীশুর সাক্ষ্য৷’ 11 এরপর আমি দেখলাম, স্বর্গ উন্মুক্ত, আর সেখানে সাদা একটা ঘোড়া দাঁড়িয়ে আছে৷ তার ওপর যিনি বসে আছেন, তাঁর নাম ‘বিশ্বস্ত ও সত্যময়’ আর তিনি ন্যায়সিদ্ধ বিচার করেন ও যুদ্ধ করেন৷ 12 আগুনের শিখার মতো তাঁর চোখ, আর তাঁর মাথায় অনেকগুলি মুকুট আছে; সেই মুকুটগুলির উপর এমন এক নাম লেখা আছে, যার অর্থ তিনি ছাড়া অন্য আর কেউ জানে না৷ 13 রক্তে ডোবানো পোশাক তাঁর পরণে; তাঁর নাম ঈশ্বরের বাক্য৷ 14 স্বর্গের সেনাবাহিনী সাদা ঘোড়ায় চড়ে তাঁর পেছনে পেছনে চলেছিল৷ তাদের পরণে ছিল শুচিশুভ্র মসীনার পোশাক৷ 15 একটি ধারালো তরবারি তাঁর মুখ থেকে বেরিয়ে আসছিল, যা দিয়ে তিনি পৃথিবীর সমস্ত জাতিকে আঘাত করবেন৷ লৌহ যষ্টি হাতে জাতিবৃন্দের ওপর তিনি শাসন পরিচালনা করবেন৷ সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের প্রচণ্ড ক্রোধের কুণ্ডে তিনি সব দ্রাক্ষা মাড়াই করবেন৷ 16 তাঁর পোশাকে ও উরুতে লেখা আছে এই নাম:‘রাজাদের রাজা ও প্রভুদের প্রভু৷’ 17 পরে আমি দেখলাম, একজন স্বর্গদূত সূর্যের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছেন৷ তিনি উঁচু আকাশ পথে য়ে সব পাখি উড়ে যাচ্ছে, তাদের উদ্দেশ্যে খুব জোরে চিত্কার করে বললেন: ‘এস, ঈশ্বর য়ে মহাভোজের আযোজন করেছেন, তার জন্য এক জায়গায় জড়ো হও৷ 18 এক, রাজাদের, প্রধান সেনাপতিদের ও বীরপুরুষদের মাংস, ঘোড়া ও ঘোড়-সওয়ারদের মাংস, স্বাধীন অথবা ক্রীতদাস, ক্ষুদ্র অথবা মহান সকল মানুষের মাংস খেয়ে যাও৷’ 19 তখন আমি দেখলাম ঐ ঘোড়ার ওপর যিনি বসেছিলেন, তিনি ও তাঁর সৈন্যদের সঙ্গে সেই পশু ও পৃথিবীর রাজারা তাদের সমস্ত সেনাবাহিনী নিয়ে যুদ্ধ করার জন্য একত্র হল৷ 20 কিন্তু সেই পশু ও ভণ্ড ভাববাদীকে ধরা হল৷ এই সেই ভণ্ড ভাববাদী, য়ে পশুর জন্য অলৌকিক কাজ করেছিল৷ এই অলৌকিক কাজের দ্বারা ভণ্ড ভাববাদী তাদের প্রতারণা করেছিল যাদের সেই পশুর চিহ্ন ছিল এবং যাঁরা তার উপাসনা করেছিল৷ ভণ্ড ভাববাদী এবং পশুটিকে জ্বলন্ত গন্ধকের হ্রদে ছুঁড়ে ফেলা হল৷ 21 যাঁরা বাকী থাকল তারা সকলে সেই সাদা ঘোড়ার সওয়ারীর মুখ থেকে বেরিয়ে আসা ধারালো তলোয়ারের আঘাতে মারা পড়ল; আর সমস্ত পাখি তাদের মাংস খেয়ে তৃপ্ত হল৷
Revelation 20:1 এরপর আমি একজন স্বর্গদূতকে স্বর্গ থেকে নেমে আসতে দেখলাম৷ সেই স্বর্গদূতের হাতে ছিল অতল গহ্বরের চাবি আর একটা বড় শেকল৷ 2 তিনি সেই নাগকে ধরলেন, এ সেই পুরানো সাপ, দিয়াবল বা শয়তান, তিনি তাকে হাজার বছরের জন্য বেঁধে রাখলেন৷ 3 স্বর্গদূত তাকে অতল গহ্বরের মধ্যে ছুঁড়ে ফেলে গহ্বরের মুখ বন্ধ করলেন ও তা সীলমোহর করে দিলেন, য়েন হাজার বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত সে পৃথিবীর জাতিবৃন্দকে আর বিভ্রান্ত করতে না পারে৷ ঐ হাজার বছর পূর্ণ হলে কিছু কালের জন্য তাকে ছাড়া হবে৷ 4 পরে আমি কয়েকটি সিংহাসন দেখলাম; আর তার ওপর যাঁরা বসে আছেন তাদের সকলকে বিচার করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে৷ যীশুর বিষয়ে সাক্ষ্য দেবার জন্য ও ঈশ্বরের বাণী প্রচারের জন্য যাদের শিরশ্ছেদ করা হয়েছিল, যাঁরা সেই পশুকে ও তার মূর্ত্তিকে পূজা করে নি, নিজেদের কপালে বা হাতে তার ছাপ নেয় নি, তাদের প্রাণ দেখতে পেলাম৷ আর তারা সকলে পুনর্জীবিত হয়ে সেই হাজার বছর ধরে খ্রীষ্টের সঙ্গে রাজত্ব করল৷ 5 য়ে পর্যন্ত সেই হাজার বছর শেষ না হল, সে পর্যন্ত বাকি মৃত লোকেরা পুনরুত্থিত হল না৷ এই হল প্রথম পুনরুত্থান৷ 6 য়ে কেউ এই প্রথম পুনরুত্থানের ভাগী হয় সে ধন্য ও পবিত্র৷ এই সব লোকদের ওপর দ্বিতীয় মৃত্যুর আর কোন কর্তৃত্ত্ব নেই৷ তারা বরং খ্রীষ্টের ও ঈশ্বরের যাজকরূপে তাঁর সঙ্গে হাজার বছর ধরে রাজত্ব করবে৷ 7 সেই হাজার বছর শেষ হলে শয়তানকে অতলস্পর্শী গহ্বরের কারাগার থেকে মুক্ত করা হবে৷ 8 সে সারা পৃথিবী জুড়ে সমস্ত জাতিকে বিভ্রান্ত করবে৷ সে গোগ ও মাগোগকেও বিভ্রান্ত করবে, শয়তান যুদ্ধের উদ্দেশ্যে তাদের একত্র করবে৷ তাদের সংখ্যা সমুদ্র সৈকতের অগণিত বালুকণার মতো৷ 9 তারা পৃথিবীর ওপর দিয়ে এগিয়ে চলবে, আর ঈশ্বরের লোকদের শিবির ও ঈশ্বরের প্রিয় নগরটি অবরোধ করবে৷ কিন্তু স্বর্গ থেকে আগুন নেমে শয়তানের সৈন্যদের ধ্বংস করবে৷ 10 তখন সেই শয়তান য়ে তাদের ভ্রান্ত করেছিল তাকে জ্বলন্ত গন্ধকের হ্রদে ছুঁড়ে ফেলা হবে, য়েখানে সেই পশু ও ভণ্ড ভাববাদীদের আগেই ছুঁড়ে ফেলা হয়েছে৷ সেখানে যুগ যুগ ধরে দিনরাত তারা যন্ত্রণা ভোগ করবে৷ 11 পরে আমি এক বিরাট শ্বেত সিংহাসন ও তার ওপর যিনি বসে আছেন তাঁকে দেখলাম৷ তাঁর সামনে থেকে পৃথিবী ও আকাশ বিলুপ্ত হল এবং তাদের কোন অস্তিত্ব রইল না৷ 12 আমি দেখলাম, ক্ষুদ্র অথবা মহান সমস্ত মৃত লোক সেই সিংহাসনের সামনে দাঁড়িয়ে আছে৷ পরে কয়েকটি গ্রন্থ খোলা হল এবং আরও একটি গ্রন্থ খোলা হল৷ সেই গ্রন্থটির নাম জীবন পুস্তক৷ সেই গ্রন্থগুলিতে মৃতদের প্রত্যেকের কাজের বিবরণ লিপিবদ্ধ ছিল এবং সেই অনুসারে তাদের বিচার হল৷ 13 য়ে সব লোক সমুদ্রগর্ভে নিক্ষিপ্ত হয়েছিল সমুদ্র তাদের সঁপে দিল, আর মৃত্যু ও পাতাল নিজেদের মধ্যে য়ে সব মৃত ব্যক্তি ছিল তাদের সমর্পণ করল৷ তাদের কৃতকর্ম অনুসারে তাদের বিচার হল৷ 14 পরে মৃত্যু ও পাতাল আগুনের হ্রদে ছুঁড়ে ফেলা হল৷ এই আগুনের হ্রদই হল আসলে দ্বিতীয় মৃত্যু৷ 15 জীবন পুস্তকে যাদের নাম লেখা দেখতে পাওয়া গেল না, তাদের সকলকে আগুনের হ্রদে ছুঁড়ে ফেলা হল৷
Revelation 21:1 এরপর আমি এক নতুন স্বর্গ ও নতুন পৃথিবী দেখলাম, কারণ প্রথম স্বর্গ ও প্রথম পৃথিবী বিলুপ্ত হয়ে গেছে; এখন সমুদ্র আর নেই৷ 2 আমি আরো দেখলাম, সেই পবিত্র নগরী, নতুন জেরুশালেম, স্বর্গ হতে ঈশ্বরের কাছ থেকে নেমে আসছে৷ কনে য়েমন তার বরের জন্য সাজে, সেও সেইভাবে প্রস্তুত হয়েছিল৷ 3 পরে আমি সিংহাসন থেকে এক উদাত্ত নির্ঘোষ শুনতে পেলাম, যা ঘোষণা করছে, ‘এখন মানুষের মাঝে ঈশ্বরের আবাস, তিনি তাদের সঙ্গে বাস করবেন ও তাদের ঈশ্বর হবেন৷ 4 তিনি তাদের চোখের সব জল মুছিয়ে দেবেন৷ মৃত্যু, শোক, কান্না যন্ত্রণা আর থাকবে না, কারণ পুরানো বিষয়গুলি বিলুপ্ত হল৷ 5 আর যিনি সিংহাসনে বসে আছেন তিনি বললেন, ‘দেখ! আমি সব কিছু নতুন করে করছি!’ পরে তিনি বললেন, ‘লেখ, কারণ এসব কথা সত্য ও বিশ্বাসয়োগ্য৷’ 6 যিনি সিংহাসনে বসেছিলেন পরে তিনি আমায় বললেন, ‘সম্পন্ন হল! আমি আলফা ও ওমেগা, আমিই আদি ও অন্ত৷ য়ে তৃষ্ণার্ত তাকে আমি জীবন জলের উত্স থেকে বিনামূল্যে জল দান করব৷ 7 য়ে বিজযী হয় সে-ই এসবের অধিকারী হবে৷ আমি তার ঈশ্বর হব, আর সে হবে আমার পুত্র৷ 8 কিন্তু যাঁরা ভীরু, অবিশ্বাসী ঘৃন্যলোক, নরঘাতক, য়ৌনপাপে পাপগ্রস্ত, মায়াবী, প্রতিমাপূজারী, যাঁরা মিথ্যাবাদী, এদের সকলের স্থান হবে সেই আগুন ও জ্বলন্ত গন্ধকের হ্রদে; এই হল দ্বিতীয় মৃত্যু৷’ 9 আর য়ে সপ্ত স্বর্গদূতদের কাছে সপ্ত সন্তাপপূর্ণ বাটি ছিল তাদের মধ্যে শেষ সন্তাপের বাটিটি যিনি ঢেলেছিলেন, তিনি এসে আমায় বললেন, ‘এস, আমি তোমাকে মেষশাবকের বধূকে দেখাব৷’ 10 আমি আত্মার আবেশে ছিলাম, সেই অবস্থায় তিনি আমাকে একটা খুব বড় উঁচু পাহাড়ের ওপর নিয়ে গেলেন আর স্বর্গে ঈশ্বরের কাছ থেকে য়ে পবিত্র নগরী, জেরুশালেম নেমে আসছিল তা দেখালেন৷ 11 তা ছিল ঈশ্বরের মহিমায় পূর্ণ বহুমূল্য মণির মতো, তার উজ্জ্বলতা সূর্য়কান্ত মণির মতো উজ্জ্বল ও স্বচ্ছ৷ 12 নগরের প্রাচীরটি খুব উঁচু এবং বড় ছিল৷ প্রাচীরের বারোটি ফটক ছিল৷ নগরের বারোটি ফটকে বারোজন স্বর্গদূত ছিল৷ সেই দ্বারগুলির ওপর ইস্রায়েলের বারো গোষ্ঠীর নাম লেখা ছিল৷ 13 পূর্বদিকে তিনটি দরজা, উত্তরদিকে তিনটি দরজা, দক্ষিণ দিকে তিনটি দরজা ও পশ্চিম দিকে তিনটি দরজা৷ 14 নগরের সেই প্রাচীরের বারোটি ভিত পাথর ছিল, আর সেই সব ভিত পাথরের ওপর মেষশাবকের বারোজন প্রেরিতের নাম লেখা আছে৷ 15 স্বর্গদূত, যিনি আমার সঙ্গে কথা বলছিলেন, তাঁর হাতে ঐ নগরটি, তার সব দরজা ও তার প্রাচীর মাপবার জন্য সোনার মাপকাঠি ছিল৷ 16 ঐ নগরটি ছিল চারকোণা, দৈর্য়্ঘে ও প্রস্থে সমান৷ তিনি নগরটি সেই মাপকাঠি দিয়ে মাপলে দেখা গেল তা দৈর্য়্ঘে প্রস্থে ও উচ্চতায় সমান এবং সেই মাপ হল 1500 মাইল৷ 17 পরে স্বর্গদূত নগরের প্রাচীর মাপলে দেখা গেল তা 144 হাত উঁচু৷ স্বর্গদূত মানুষের হাতের মাপ অনুযাযী তা মাপলেন, এই মাপই তিনি ব্যবহার করেছিলেন৷ 18 প্রাচীরের গাঁথনি সূর্য়কান্তমণির এবং নগরটি ছিল শুদ্ধ সোনায় তৈরী, য়েটা ছিল কাঁচের মতো স্বচ্ছ৷ 19 নগরের প্রাচীরের ভিত পাথরগুলিতে সব ধরণের মূল্যবান মণি খচিত ছিল৷ প্রথমটি সূর্য়কান্ত মণির, দ্বিতীয়টি নীলকান্ত মণির, তৃতীয়টি তাম্রমণির, চতুর্থটি পান্নামণির, পঞ্চমটি বৈদুর্য়মণির; 20 ষষ্ঠটি লাল বর্ণ মণির, সপ্তমটি স্বর্ণ মণির, অষ্টমটি ফিরোজা মণির, নবমটি পোখরাজ মণির, দশমটি হলুদ সবুজ বর্ণ মণির, একাদশতমটি রক্তাভ ফলসাবর্ণ মণির, দ্বাদশতমটি জামীরা মণির৷ 21 বারোটি সিংহদ্বার হচ্ছে বারোটি মুক্তা, একটি দ্বার এক একটি মুক্তার তৈরী৷ নগরের সড়কটি কাঁচের মতো স্বচ্ছ খাঁটি সোনার তৈরী৷ 22 সেই নগরে আমি কোন মন্দির দেখলাম না, কারণ প্রভু ঈশ্বর সর্বশক্তিমান ও মেষশাবক হচ্ছেন সেই নগরের মন্দির৷ 23 নগরটি আলোকিত করার জন্য সূর্য় ও চাঁদের প্রযোজন ছিল না, কারণ ঈশ্বরের মহিমা তা আলোকময় করে, আর মেষশাবকই তার আলোস্বরূপ৷ 24 এর আলোতে সমস্ত জাতি চলাফেরা করবে, আর জগতের রাজারা তাদের প্রতাপ সেখানে নিয়ে আসবে৷ 25 ঐ নগরের সিংহদ্বারগুলি কোন দিন কখনও বন্ধ হবে না, কারণ সেখানে কখনও কোন রাত্রি হবে না, 26 আর জাতিবৃন্দের সমস্ত প্রতাপ ও ঐশ্বর্য সেই নগরের মধ্যে আনা হবে৷ 27 অশুচি কোন কিছু শহরে প্রবেশ করতে পারবে না৷ কোন মানুষ য়ে ঘৃন্য কাজ করে অথবা য়ে অসত্ সে কখনও নগরে প্রবেশ করতে পারবে না৷ কেবল যাদের নাম মেষশাবকের জীবন পুস্তকে লেখা আছে শুধু তারাই সেখানে প্রবেশ করতে পারবে৷
Revelation 22:1 পরে তিনি আমাকে জীবনদাযী জলের একটি নদী দেখালেন৷ এই নদী স্ফটিকের মতো স্বচ্ছ, তা ঈশ্বরের ও মেষশাবকের সিংহাসন থেকে বয়ে চলেছে৷ 2 নদীটি নগরের রাজপথের মাঝখান দিয়ে বয়ে চলেছে৷ নদীর তীরেই জীবনবৃক্ষ আছে৷ বছরের বারো মাসই তাতে বারো বার ফল ধরে, প্রতি মাসে নতুন নতুন ফল হয়৷ সেই জীবন বৃক্ষের পাতা জাতিবৃন্দের আরোগ্য দায়ক৷ 3 নগরীতে অভিশপ্ত কোন কিছুই থাকবে না, সেখানে অধিষ্ঠিত থাকবে ঈশ্বর ও মেষশাবকের সিংহাসন৷ সেখানে ঈশ্বরের দাসরা তাঁর উপাসনা করবে, 4 তারা তাঁর শ্রীমুখ দর্শন করবে; আর ঈশ্বরের নাম তাদের কপালে লেখা থাকবে৷ 5 সেখানে রাত্রি আর হবে না, প্রদীপের আলো বা সূর্যের আলোর কোন প্রযোজন হবে না, কারণ প্রভু ঈশ্বর তখন সবার ওপর তাঁর আলো ছড়িয়ে দেবেন; আর তারা যুগে যুগে চিরকাল রাজার মত রাজত্ব করবে৷ 6 তখন স্বর্গদূত আমায় বললেন, ‘এই সমস্ত কথা সত্য ও বিশ্বাসয়োগ্য৷ প্রভু, যিনি সেই ভাববাদীদের আত্মার ঈশ্বর, তিনি তাঁর স্বর্গদূতকে পাঠিয়েছেন তাঁর দাসদের সেই সবকিছু দেখাবার জন্য, যা শীঘ্রই ঘটবে৷’ 7 ‘শোন, আমি শিগ্গির আসছি৷ ধন্য সেই জন, য়ে এই পুস্তকের লিখিত ভাববাণী পালন করে৷’ 8 আমি য়োহন এই সব দেখলাম ও শুনলাম৷ এইসব দেখা ও শোনার পর, য়ে দূত আমাকে এই সব দেখাচ্ছিলেন, তাঁর আরাধনার জন্য আমি তাঁর পায়ের ওপর উপুড় হয়ে পড়লাম৷ 9 তিনি তখন আমায় বললেন, ‘আমার উপাসনা করো না! আমি তোমার ও তোমার ভাইদের অর্থাত্ ভাববাদীদের মত একজন দাস৷ আমি সেই সমস্ত লোকের মত যাঁরা এই পুস্তকের বাক্য মেনে চলে৷ একমাত্র ঈশ্বরেরই উপাসনা কর৷’ 10 সেই স্বর্গদূত আমাকে আরো বললেন, ‘তুমি এই পুস্তকের ভাববাণীগুলি গোপন রেখো না, সে সব কথা পূর্ণ হবার সময় হয়ে এসেছে৷ 11 য়ে অন্যায় করছে, সে আরো অন্যায় করুক; আর য়ে কলুষিত, সে কলুষিত থাকুক৷ য়ে ধার্মিক সে এর পরে আরো ধর্মাচরণ করুক; আর য়ে পবিত্র সে আরো পবিত্র হোক্৷’ 12 ‘শোন! আমি শিগ্গির আসছি! আমি দেবার জন্য পুরস্কার নিয়ে আসছি, যার য়েমন কাজ সেই অনুসারে সে পুরস্কার পাবে৷ 13 আমি আল্ফাও ওমেগা, প্রথম ও শেষ, আদি ও অন্ত৷ 14 ‘যাঁরা তাদের পোশাক ধোয় তারা ধন্য৷ তারা জীবন বৃক্ষের ফল খাবার অধিকারী হবে ও সকল দ্বার দিয়ে নগরে প্রবেশ করতে পারবে৷ 15 আর নগরের বাইরে আছে সেই সব কুকুররা, যাঁরা মায়াবী, লম্পট, খুনে, প্রতিমাপূজক, আর যাঁরা মিথ্যা বলতে ভালবাসে ও মিথ্যা কথা বলে৷ 16 আমি যীশু, আমি আমার স্বর্গদূতকে পাঠালাম য়েন সে মণ্ডলীদের জন্য তোমাকে এসব কথা বলে৷ আমি দাযূদের মূল ও বংশধর৷ আমি উজ্জ্বল প্রভাতী তারা৷’ 17 আত্মা ও বধূ বলছেন, ‘এস!’ য়ে একথা শোনে সেও বলুক, ‘এস!’ আর য়ে পিপাসিত সেও আসুক৷ য়ে চায় সে এসে বিনামূল্যে জীবন জল পান করুক৷ 18 এই পুস্তকের সব ভাববাণী যাঁরা শুনবে, আমি তাদের দৃঢ়ভাবে বলছি, এই পুস্তকে যা কিছু লেখা হল, কেউ যদি তার সঙ্গে কিছু য়োগ করে তবে ঈশ্বর এই পুস্তকে য়ে সব সন্তাপের উল্লেখ আছে তা তার জীবনে য়োগ করবেন৷ 19 কেউ যদি এই ভাববাণী পুস্তকের বাক্য থেকে কিছু বাদ দেয়, তবে ঈশ্বর এই পুস্তকে য়ে জীবনবৃক্ষের কথা লেখা আছে তা থেকে ও পবিত্র নগর থেকে তার অংশ বাদ দেবেন৷ 20 যীশু যিনি বলছেন এই বিষয়গুলি সত্য, এখন তিনিই বলছেন, ‘হ্যাঁ, আমি শিগ্গির আসছি৷’আমেন৷ এস, প্রভু যীশু! 21 প্রভু যীশুর অনুগ্রহ তাঁর সকল লোকের সহবর্তী হোক্৷