1:1 অতীতে ঈশ্বর ভাববাদীদের মাধ্যমে বহুবার নানাভাবে আমাদের পিতৃপুরুষদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন৷ 2 এখন এই শেষের দিনগুলোতে ঈশ্বর আমাদের সঙ্গে আবার কথা বললেন৷ ঈশ্বর তাঁর পুত্রের দ্বারাই সমগ্র জগত সৃষ্টি করেছেন৷ তাঁর পুত্রকেই সবকিছুর উত্তরাধিকারী করেছেন৷ 3 একমাত্র ঈশ্বরের পুত্রই ঈশ্বরের মহিমার ও তাঁর প্রকৃতির মূর্ত প্রকাশ৷ ঈশ্বরের পুত্র তাঁর পরাক্রান্ত বাক্যের দ্বারা সবকিছু ধরে রেখেছেন৷ সেই পুত্র মানুষকে সমস্ত পাপ থেকে শুচিশুদ্ধ করেছেন৷ তারপর স্বর্গে ঈশ্বরের মহিমার ডানপাশের আসনে বসেছেন৷ 4 ঈশ্বর তাঁর পুত্রকে এমন এক নাম দিয়েছেন যা স্বর্গদূতদের নাম থেকে শ্রেষ্ঠ; আর স্বর্গদূতদের তুলনায় তিনি হয়ে উঠেছেন আরো মহান৷ 5 কারণ ঈশ্বর ঐ স্বর্গদূতদের মধ্যে কাকে কখন বলেছিলেন,‘তুমি আমার পুত্র; আজ আমি তোমার পিতা হয়েছি৷’গীতসংহিতা 2:7আবার ঈশ্বর কখনই বা স্বর্গদূতদের বলেছেন,‘আমি তার পিতা হব আর সে আমার পুত্র হবে৷’2 শমূয়েল 7:14 6 আবার তাঁর প্রথম পুত্রকে যখন তিনি জগতে নিয়ে এলেন তখন ঈশ্বর বললেন,‘ঈশ্বরের সমস্ত স্বর্গদূতরা তাঁর উপাসনা করুক৷’দ্বিতীয় বিবরণ 32:43 7 স্বর্গদূতদের বিষয়ে ঈশ্বর বলেন:‘আমার স্বর্গদূতদের আমি তৈরী করি বাযুর মতো করে আর আমার সেবকদের আগুনের শিখার মতো করে৷’গীতসংহিতা 104:4 8 কিন্তু তাঁর পুত্রের বিষয়ে ঈশ্বর বলেন:‘হে ঈশ্বর, তোমার সিংহাসন হবে চিরস্থাযী; আর ন্যায় বিচারের মাধ্যমে তুমি তোমার রাজ্য শাসন করবে৷ 9 তুমি ন্যায়কে ভালবাস এবং অন্যায়কে ঘৃণা কর৷ এই কারণে তোমার ঈশ্বর তোমাকে পরম আনন্দ দিয়েছেন; তোমার সঙ্গীদের থেকে তোমায় অধিক পরিমাণে দিয়েছেন৷’ গীতসংহিতা 45:6-7 10 ঈশ্বর একথাও বলেছেন:‘হে প্রভু, আদিতে তুমিই পৃথিবীর ভিত্তিমূল স্থাপন করেছ; স্বর্গ তোমারই হাতের সৃষ্টি৷ 11 সেসব একদিন অদৃশ্য হয়ে যাবে; কিন্তু তুমিই নিত্যস্থাযী৷ সেসব পোশাকের মতো পুরানো হয়ে যাবে৷ 12 তুমি সেসব পোশাকের মতো গুটিয়ে রাখবে; আর পোশাকের মতো সেগুলির পরিবর্তন হবে৷ কিন্তু তোমার কোন পরিবর্তন হবে না, তোমার অনুগ্রহ শেষ হবে না৷’গীতসংহিতা 102:25-27 13 কিন্তু ঈশ্বর স্বর্গদূতদের মধ্যে কাউকে কখনও বলেন নি:‘আমি তোমার শত্রুদের যতক্ষণ না তোমার পদানত করি, তুমি আমার ডানপাশে বস৷’গীতসংহিতা 110:1 14 ঐ স্বর্গদূতরা কি পরিচর্য়াকারী আত্মা নয়? আর যাঁরা পরিত্রাণ লাভ করেছে তাদের পরিচর্য়া করার জন্যই কি এদের পাঠানো হয় নি?
2:1 এই জন্য য়ে বাণী আমরা শুনেছি, তাতে আরো ভালভাবে মন দেওয়া আমাদের উচিত, য়েন আমরা তার প্রকৃত পথ থেকে বিচ্যুত না হই৷ 2 য়ে শিক্ষা স্বর্গদূতদের মুখ দিয়ে ঈশ্বর জানিয়েছিলেন ও যা সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছিল, সেই শিক্ষা যখনই ইহুদীরা অমান্য করে অবাধ্যতা দেখিয়েছে - তাদের শাস্তি হয়েছে, 3 তখন এমন মহত্ এই পরিত্রাণ যা আমাদেরই জন্য এসেছে তা অগ্রাহ্য় করলে আমরা কিভাবে রক্ষা পাব? এই পরিত্রাণের কথা প্রভু স্বয়ং ঘোষণা করেছিলেন; আর যাঁরা তাঁর কাছ থেকে এই বাণী শুনেছিল, তারাই আমাদের কাছে এই পরিত্রাণের সত্যতা প্রমাণ করল৷ 4 ঈশ্বরও নানা সঙ্কেত, আশ্চর্যজনক কাজ, অলৌকিক ঘটনা ও মানুষকে দেওয়া পবিত্র আত্মার নানা বরদানের মাধ্যমে তাঁর ইচ্ছানুয়াযী এবিষয়ে সাক্ষ্য রেখেছেন৷ 5 বাস্তবিক য়ে জগতের বিষয়ে আমরা বলছি, ঈশ্বর সেই ভাবী জগতকে তাঁর স্বর্গদূতদের কর্তৃত্ত্বাধীন রাখেন নি৷ 6 এটা শাস্ত্রের কোন এক জায়গায় লেখা আছে:‘হে ঈশ্বর, মানুষ এমন কি য়ে তার বিষয়ে তুমি চিন্তা কর? অথবা মানবসন্তানই বা কে য়ে তুমি তার কথা ভাব? 7 তুমি তাকে অল্প সময়ের জন্যই স্বর্গদূতদের থেকে নীচুতে রেখেছিলে; কিন্তু তুমি তাকেই পরালে সম্মান ও মহিমার মুকুট৷ 8 আর সব কিছুই তুমি রাখলে তার পদতলে৷’ গীতসংহিতা 8:4-6সবকিছু তার অধীনে করাতে কোন কিছুই তার কর্তৃত্বের বাইরে রইল না, যদিও এখন আমরা অবশ্য সব কিছু তার অধীনে দেখছি না৷ 9 কিন্তু আমরা যীশুকে দেখেছি, য়াঁকে অল্পক্ষণের জন্য স্বর্গদূতদের থেকে নীচে স্থান দেওয়া হয়েছিল৷ সেই যীশুকেই এখন সম্মান আর মহিমার মুকুট পরানো হয়েছে৷ কারণ তিনি মৃত্যু যন্ত্রণা ভোগ করেছেন এবং ঈশ্বরের অনুগ্রহে সকল মানুষের জন্য মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছেন৷ 10 কেবল ঈশ্বরই সেই জন য়াঁর দ্বারা সবকিছু সৃষ্টি হয়েছে এবং সবকিছুই তাঁর মহিমার জন্য, তাই অনেক সন্তানকে তাঁর মহিমার ভাগীদার করতে ঈশ্বর প্রযোজনীয় কাজটিই করলেন৷ তিনি তাদের পরিত্রাণের প্রবর্তক যীশুকে নির্য়াতন ভোগের মাধ্যমে সিদ্ধ ত্রাণকর্তা করেছেন৷ 11 যিনি পবিত্র করেন আর যাঁরা পবিত্র হয়, তারা সকলে এক পরিবারভুক্ত৷ সেই কারণেই তিনি তাদের ভাই বলে ডাকতে লজ্জিত নন৷ 12 যীশু বলেন,‘হে ঈশ্বর, আমি আমার ভাইযর কাছে তোমার নাম প্রচার করব, মণ্ডলীর মধ্যে তোমার প্রশংসা গান করব৷’ গীতসংহিতা 22:22 13 তিনি আবার বলেছেন, ‘আমি ঈশ্বরের ওপর নির্ভর করব৷’যিশাইয় 8:17তিনি আবার এও বলেছেন, ‘দেখ, এই আমি ও আমার সঙ্গে সেই সন্তানদের, ঈশ্বর আমাকে যাদের দিয়েছেন৷’যিশাইয় 8:18 14 ভাল, সেই সন্তানরা যখন রক্তমাংসের মানুষ, তখন যীশু নিজেও তাদের স্বরূপের অংশীদার হলেন৷ যীশু এইরকম করলেন য়েন মৃত্যুর মাধ্যমে মৃত্যুর অধিপতি দিয়াবলকে ধ্বংস করতে পারেন; 15 আর যাঁরা মৃত্যুর ভয়ে যাবজ্জীবন দাসত্বে কাটাচ্ছে তাদের যুক্ত করেন৷ 16 কারণ এটা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছেয়ে তিনি স্বর্গদূতদের সাহায্য করেন না, কেবল অব্রাহামের বংশধরদেরই সাহায্য করেন৷ 17 সেইজন্য সবদিক থেকে যীশুকে নিজের ভাইয়ের মতো হতে হয়েছে যাতে তিনি মানুষের পাপের ক্ষমার জন্য একজন দয়ালু ও বিশ্বস্ত মহাযাজকরূপে ঈশ্বরের সাক্ষাতে দাঁড়াতে পারেন৷ 18 যীশু নিজে পরীক্ষা ও দুঃখভোগের মধ্য দিয়ে গেছেন বলে যাঁরা পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তাদের যীশু সাহায্য করতে পারেন৷
3:1 তাই তোমরা সকলে যীশুর বিষয়ে চিন্তা কর৷ ঈশ্বর যীশুকে আমাদের কাছে পাঠিয়েছেন৷ তিনি আমাদের ধর্ম বিশ্বাসের মহাযাজক৷ আমার পবিত্র ভাই ও বোনেরা, আমি তোমাদের বলছি তোমরা এক স্বর্গীয় আহ্বান পেয়েছ৷ 2 ঈশ্বর যীশুকে আমাদের কাছে পাঠালেন আর তাঁকে তিনি আমাদের মহাযাজক করলেন৷ মোশির মতন যীশুও ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বস্ত ছিলেন৷ যীশুর কাছে ঈশ্বর যা কিছু চেয়েছিলেন, ঈশ্বরের সেই গৃহরূপ মণ্ডলীতে তিনি সে সবই করলেন৷ 3 কেউ যখন কোন গৃহ নির্মাণ করে তখন গৃহ থেকে গৃহনির্মাতার মর্য়াদা অধিক হয়, যীশুর বেলায়ও ঠিক তাই হয়েছে, সুতরাং মোশির থেকে অধিক সম্মান যীশুরই প্রাপ্য়৷ 4 প্রত্যেক গৃহ কেউ না কেউ নির্মাণ করে, কিন্তু ঈশ্বর সবকিছু নির্মাণ করেছেন৷ 5 মোশি ঈশ্বরের গৃহে সেবকরূপে বিশ্বস্তভাবে কাজ করেছিলেন আর ঈশ্বর ভবিষ্যতে যা বলবেন তা লোকদের কাছে মোশিই বললেন৷ 6 কিন্তু খ্রীষ্ট পুত্র হিসাবে ঈশ্বরের গৃহের কর্তা; আমরা বিশ্বাসীরাই তাঁর গৃহ, আর তাই থাকব যদি আমরা আমাদের সেই মহান প্রত্যাশা সম্পর্কে সাহস ও গর্ব নিয়ে চলি৷ 7 তাই পবিত্র আত্মা য়েমন বলছেন:‘আজ, তোমরা যদি ঈশ্বরের রব শোন, 8 অতীত দিনের মতো হৃদয় কঠিন করো না, য়ে দিন তোমরা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলে; সেদিন তোমরা প্রান্তরে ঈশ্বরের পরীক্ষা করেছিলে৷ 9 সেই প্রান্তরে তোমাদের পিতৃপুরুষরা চল্লিশ বছর ধরে আমার সমস্ত কীর্তি দেখতে পেয়েছিল, তবু তারা আমার ধৈর্য্য পরীক্ষা করল৷ 10 তাই আমি এই জাতির ওপর ক্রুদ্ধ হলাম ও বললাম, ‘এরা সব সময় ভুল চিন্তা করে, এই লোকেরা কখনও আমার পথ বুঝল না৷’ 11 তখন আমি ক্রুদ্ধ হয়ে এই শপথ করলাম:‘তারা কখনই আমার বিশ্রাম স্থানে প্রবেশ করতে পারবে না৷’ গীতসংহিতা 95:7-11 12 আমার ভাই ও বোনেরা, দেখো, তোমরা সতর্ক থেকো, তোমাদের মধ্যে কারো য়েন দুষ্ট ও অবিশ্বাসী হৃদয় না থাকে যা জীবন্ত ঈশ্বর থেকে তোমাদের দূরে সরিয়ে নিয়ে যায়৷ 13 তোমরা দিনের পর দিন একে অপরকে উত্সাহিত কর যতক্ষণ সময় ‘আজ’ আছে৷ পাপের ছলনা য়েন তোমাদের হৃদয়কে নির্মম না করে৷ 14 শুরুতে আমাদের য়ে বিশ্বাস ছিল যদি শেষ পর্যন্ত আমরা সেই বিশ্বাসে স্থির থাকি তাহলে আমরা সকলেই খ্রীষ্টের সহভাগী৷ 15 শাস্ত্র তো এই কথা বলে:‘আজ যদি তোমরা ঈশ্বরের রব শোন, তাহলে তোমাদের অন্তর কঠোর করো না, য়েমন সেই বিদ্রোহের দিনে করেছিলে৷’গীতসংহিতা 95:7-8 16 যাঁরা ঈশ্বরের রব শোনার পরও তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল, প্রশ্ন হল তারা কারা? মোশি যাদের মিশর থেকে বের করে নিয়ে এসেছিলেন তারাই কি নয়? 17 আর কাদের ওপরই বা ঈশ্বর চল্লিশ বছর ধরে ক্রুদ্ধ ছিলেন? সেই লোকদের ওপরে নয় কি যাঁরা পাপ করেছিল ও তার ফলে প্রান্তরে মারা পড়েছিল? 18 তিনি কাদের বিরুদ্ধেই বা শপথ করে বলেছিলেন, ‘এরা আমার বিশ্রামের স্থানে প্রবেশ করতে পারবে না?’ যাঁরা অবাধ্য হয়েছিল তাদের বিরুদ্ধে কি নয়? 19 তাহলে এখন আমরা দেখলাম য়ে, অবিশ্বাসের দরুনই তারা ঈশ্বরের বিশ্রামের স্থানে প্রবেশ করতে পারল না৷
4:1 ঈশ্বর সেই লোকদের য়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা এখনও আমাদের জন্য রয়েছে৷ এই সেই প্রতিশ্রুতি য়ে, আমরা প্রবেশ করতে পারব ও ঈশ্বরের বিশ্রাম পাব৷ তাই আমাদের খুব সতর্ক থাকা দরকার, য়েন তোমাদের মধ্যে কেউ ব্যর্থ না হও৷ 2 পরিত্রাণ লাভের জন্য সুসমাচার য়েমন ওদের কাছে প্রচার করা হয়েছিল তেমনি আমাদের কাছেও প্রচার করা হয়েছে, তবু সেই সুসমাচার শিক্ষা শুনেও তাদের কোন শুভ ফল দেখা গেল না, কারণ তারা তা শুনে বিশ্বাসের সঙ্গে গ্রহণ করে নি৷ 3 আমরা যাঁরা বিশ্বাস করেছি, তারাই সেই বিশ্রামের স্থানে প্রবেশ করতে সক্ষম৷ ঈশ্বর য়েমন বলেছিলেন,‘আমি ক্রুদ্ধ হয়ে শপথ করেছি: ‘এরা কখনও আমার বিশ্রামস্থলে প্রবেশ করতে পারবে না৷’’গীতসংহিতা 95:11একথা ঈশ্বর বলেছেন যদিও ঈশ্বরের সমস্ত কাজ জগত্ সৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গেই সমাপ্ত হয়েছিল৷ 4 শাস্ত্রের কোন কোন জায়গায় ঈশ্বর সপ্তাহের সপ্তম দিনের বিষয়ে বলেছিলেন: ‘সৃষ্টির সমস্ত কাজ শেষ করে সপ্তম দিনে তিনি বিশ্রাম করলেন৷’ 5 আবার শাস্ত্রের অন্য একস্থানে ঈশ্বর বলছেন: ‘আমার বিশ্রামে ঐ মানুষদের কখনই প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না৷’ 6 তবুও একথা এখনও সত্য য়ে কেউ সেই বিশ্রামে প্রবেশ করবে, কিন্তু সেই লোকেরা যাঁরা প্রথমে সুসমাচারের কথা শুনেছিল, অবাধ্য হওয়ার কারণে সেখানে প্রবেশ করে নি৷ 7 তখন ঈশ্বর আবার একটি দিন স্থির করলেন, আর সেই দিনের বিষয়ে তিনি বললেন, ‘আজ’৷ ঈশ্বর এর বহুদিন পর রাজা দাযূদের মাধ্যমে এই দিনটির বিষয়ে বলেছিলেন৷ য়েমন এ বিষয়ে আগেই শাস্ত্রের কথা উল্লেখ করা হয়েছে:‘আজ যদি তোমরা ঈশ্বরের রব শোন, তবে অতীত দিনের মতো তোমাদের হৃদয় কঠোর করো না৷’গীতসংহিতা 95:7-8 8 যিহোশূয় তাদের ঈশ্বরের প্রতিশ্রুত বিশ্রামের মধ্যে নিয়ে য়েতে পারেন নি৷ এবিষয়ে আমরা জানি কারণ ঈশ্বর এরপর আবার বিশ্রামের জন্য আর এক দিনের ‘আজ’ কথা উল্লেখ করেছেন৷ 9 এতে বোঝা যায় য়ে ঈশ্বরের লোকদের জন্য সেই সপ্তম দিনে য়ে বিশ্রাম তা আসছে, 10 কারণ ঈশ্বর তাঁর কাজ শেষ করার পর বিশ্রাম করেছিলেন৷ তেমনি য়ে কেউ ঈশ্বরের বিশ্রামে প্রবেশ করে সেও ঈশ্বরের মত তার কাজ শেষ পর্যন্ত সম্পন্ন করে৷ 11 তাই এস, আমরাও ঈশ্বরের সেই বিশ্রামে প্রবেশ করতে প্রাণপণ চেষ্টা করি, যাতে কেউ অবাধ্যতার পুরানো দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে পতিত না হই৷ 12 ঈশ্বরের বাক্য জীবন্ত ও সক্রিয়৷ তাঁর বাক্য দুপাশে ধারযুক্ত তলোয়ারের ধারের থেকেও তীক্ষ্ন৷ এটা প্রাণ ও আত্মার গভীর সংয়োগস্থল এবং সন্ধি ও অস্থির কেন্দ্র ভেদ করে মনের চিন্তা ও ভাবনার বিচার করে৷ 13 ঈশ্বরের সামনে কোন সৃষ্ট বস্তুই তাঁর অগোচরে থাকতে পারে না, তিনি সব কিছু পরিষ্কারভাবে দেখতে পান৷ তাঁর সাক্ষাতে সমস্ত কিছুই খোলা ও প্রকাশিত রয়েছে, আর তাঁরই কাছে একদিন সব কাজকর্মের হিসেব দিতে হবে৷ 14 আমাদের এক মহাযাজক আছেন, যিনি স্বর্গে ঈশ্বরের সাথে বাস করতে গেছেন৷ তিনি যীশু, ঈশ্বরের পুত্র৷ তাই এসো আমরা বিশ্বাসে অবিচল থাকি৷ 15 আমাদের মহাযাজক যীশু আমাদের দুর্বলতার কথা জানেন৷ যীশু এই পৃথিবীতে সবরকমভাবে প্রলোভিত হয়েছিলেন৷ আমরা য়েভাবে পরীক্ষিত হই যীশু সেইভাবেই পরীক্ষিত হয়েছিলেন, কিন্তু তিনি কখনও পাপ করেন নি৷ 16 সেইজন্যে বিশ্বাসে ভর করে করুণা সিংহাসনের সামনে এসো, যাতে আমাদের প্রযোজনে আমরা দয়া ও অনুগ্রহ পেতে পারি৷
5:1 প্রত্যেক ইহুদী মহাযাজককে মানুষের ভেতর থেকে মনোনীত করা হয়৷ ঈশ্বর বিষয়ে লোকদের যা করণীয় সেই কাজে সাহায্য করার জন্য যাজককে নিযোগ করা হয়৷ সেই যাজক লোকদের পাপের প্রায়শ্চিত্তের জন্য ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে উপহার ও বলি উত্সর্গ করেন৷ 2 অন্যান্য লোকদের মতো মহাযাজকও দুর্বল৷ তিনি অপর মানুষের অজ্ঞতা ও বিচ্য়ুতি থাকলেও তাদের সঙ্গে নরম ব্যবহার করতে সমর্থ য়েহেতু তিনিও অন্যান্য লোকদের মতো নিজের দুর্বলতার দ্বারা বেষ্টিত৷ 3 মহাযাজক মানুষের পাপের জন্য য়ে বলি উত্সর্গ করেন তার সাথে নিজে দুর্বল বলে নিজের পাপের জন্যও তাকে বলি উত্সর্গ করতে হয়৷ 4 মহাযাজক হওয়া সম্মানের বিষয়, আর কেউই নিজের ইচ্ছানুসারে এই মহাযাজকের সম্মানজনক পদ নিতে পারে না৷ হারোণকে য়েমন এই কাজের জন্য ঈশ্বর ডেকেছিলেন, তেমনি প্রত্যেক মহাযাজককে ঈশ্বরই ডাকেন৷ 5 কথাটা খ্রীষ্টের বেলায়ও প্রয়োজ্য৷ খ্রীষ্ট মহাযাজক হয়ে গৌরব দেবার জন্য নিজেকে মনোনীত করেন নি৷ কিন্তু ঈশ্বরই খ্রীষ্টকে মনোনীত করেছেন৷ ঈশ্বর খ্রীষ্টকে বলেছিলেন,‘তুমি আমার পুত্র, আজ আমি তোমার পিতা হলাম৷’ গীতসংহিতা 2:7 6 আর অন্য গীতে ঈশ্বর বললেন, ‘তুমি মল্কীষেদকেরমতো চিরকালের জন্য মহাযাজক হলে৷’গীতসংহিতা 110:4 7 খ্রীষ্ট যখন এ জগতে ছিলেন তখন সাহায্যের জন্য তিনি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছিলেন৷ ঈশ্বরই তাঁকে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করতে সমর্থ আর যীশু ঈশ্বরের নিকট প্রবল আর্তনাদ ও অশ্রুজলের সঙ্গে প্রার্থনা করেছিলেন৷ ঈশ্বরের ইচ্ছার প্রতি তাঁর নম্রতা ও বাধ্যতার জন্য ঈশ্বর যীশুর প্রার্থনার উত্তর দিয়েছিলেন৷ 8 যীশু ঈশ্বরের পুত্র হওয়া সত্ত্বেও দুঃখভোগ করেছিলেন ও দুঃখভোগের মধ্য দিয়ে বাধ্যতা শিখেছিলেন৷ 9 এইভাবে যীশু মহাযাজকরূপে পূর্ণতা লাভ করলেন; আর তাই তাঁর বাধ্য সকলের জন্য তিনি হলেন চিরকালের পরিত্রাণের পথ৷ 10 ঈশ্বর এইজন্যে তাঁকে মল্কীষেদকের মত মহাযাজক বলে ঘোষণা করলেন৷ 11 এই বিষয়ে আমাদের অনেক কিছু বলার আছে; কিন্তু তোমাদের কাছে তার অর্থ ব্যাখ্যা করা কঠিন, কারণ তোমরা তা বুঝতে চেষ্টা করো না৷ 12 এতদিনে তোমাদের শিক্ষক হওয়া উচিত ছিল; কিন্তু এটা বোধ হয় প্রযোজনীয় য়ে তোমাদের ঈশ্বরের বাণীর প্রাথমিক বিষয়গুলি কেউ শেখায়৷ কোন শক্ত খাবার নয়, তোমাদের প্রযোজন দুধের৷ 13 যার দুধের প্রযোজন সে তো শিশু৷ সেই ব্যক্তির ধার্মিকতার বিষয়ে য়ে শিক্ষা আছে সে সম্পর্কে কোন অভিজ্ঞতা নেই৷ 14 কিন্তু শক্ত খাবার তাদেরই জন্য যাঁরা শিশুর মতো আচরণ করে না এবং আত্মায় পরিপক্ক৷ নিজেদের শিক্ষা দিয়ে ও তা অভ্য়াস করে তারা ভাল মন্দের বিচার করতে শিখেছে৷
6:1 এই জন্য খ্রীষ্টের বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা আমাদের শেষ করে ফেলা উচিত৷ যা নিয়ে আমরা শুরু করেছিলাম পুনরায় সেই পুরানো শিক্ষামালার দিকে আর আমাদের ফিরে যাওয়া ঠিক নয়৷ মন্দ বিষয় থেকে সরে আসা, ঈশ্বরে বিশ্বাস করা এইসব করে আমরা খ্রীষ্টেতে জীবন শুরু করেছিলাম৷ 2 সেই সময় বিভিন্ন রকম বাপ্তিস্ম ও হস্তার্পণের বিষয়ে আমাদের শিক্ষা দেওয়া হয়েছিল৷ মৃতদের পুনরুত্থানের বিষয়ে শিক্ষা ও অনন্ত বিচার সম্বন্ধেও শিক্ষা দেওয়া হয়েছিল; কিন্তু এখন আমাদের আরো এগিয়ে যাওয়া ও উন্নত শিক্ষা গ্রহণ করা দরকার৷ 3 ঈশ্বর যদি চান তবে আমরা এই কাজ করব৷ 4 যাঁরা একবার অন্তরে সত্যের আলো পেয়েছে, স্বর্গীয় দানের আস্বাদ পেয়েছে ও পবিত্র আত্মার অংশীদার হয়েছে আর ঈশ্বরের বাক্যের মধ্যে য়ে মঙ্গল নিহিত আছে তার অভিজ্ঞতা লাভ করেছে ও ঈশ্বরের নতুন জগতের পরাক্রমের কথা জানতে পেরেছে অথচ তারপর খ্রীষ্ট থেকে দূরে সরে গেছে, এমন লোকেদের মন পরিবর্তন করে খ্রীষ্টের পথে তাদের ফিরিয়ে আনা আর সন্ভব নয়৷ কারণ তারা ঈশ্বরের পুত্রকে অগ্রাহ্য় করে তাঁকে আবার ক্রুশে দিচ্ছে ও সকলের সামনে তাঁকে উপহাসের পাত্র করছে৷ 5 6 7 য়ে জমি বারবার বৃষ্টি শুষে নেয় ও যাঁরা তা চাষ করে তাদের জন্য ভাল ফসল উত্পন্ন করে, সে জমি য়ে ঈশ্বরের আশীর্বাদে ধন্য তা বোঝা যায়৷ 8 কিন্তু যদি সেই জমি শেয়ালকাঁটা ও কাঁটাঝোপে ভরে যায় তবে তা অর্কম্মন্য জমি, তার ঈশ্বরের অভিশাপে অভিশপ্ত হবার ভয় আছে এবং তা আগুনে পুড়ে ছারখার হয়ে যাবে৷ 9 আমার প্রিয় বন্ধুরা, যদিও আমরা এরূপ বলছি, তবু তোমাদের সম্বন্ধে আমরা এখন দৃঢ় নিশ্চয় য়ে, তোমাদের অবস্থা এর থেকে ভালো হবে আর তোমরা যা কিছু করবে তা তোমাদের পরিত্রাণ লাভেরই পদক্ষেপ বিশেষ৷ 10 ঈশ্বর ন্যায় বিচারক, তোমাদের সব সত্ কর্মের কথা ঈশ্বর মনে রাখেন৷ তাঁর লোকদের তোমরা য়ে সাহায্য করেছ ও এখনও করে থাক, এর দ্বারা তোমরা ঈশ্বরের প্রতি তোমাদের ভালবাসাই প্রকাশ করেছ, এও কি তিনি ভুলতে পারেন? 11 কিন্তু আমরা চাই য়েন তোমাদের প্রত্যেকে তাদের সমস্ত জীবনে একই রকম তত্পরতা দেখায়, যাতে তোমরা সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিত হতে পার য়ে তোমাদের প্রত্যাশা পূর্ণ হবে৷ 12 আমরা চাই না য়ে তোমরা অলস হও; কিন্তু আমরা চাই যাঁরা বিশ্বাস ও ধৈর্য্যের দ্বারা ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতি লাভ করে, তোমরাও তাদের মতো হও৷ 13 ঈশ্বর অব্রাহামের কাছে একটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আর ঈশ্বর থেকে মহান কেউ নেই৷ তাই তাঁর থেকে মহান কোন ব্যক্তির নামে শপথ করতে না পারাতে তিনি নিজের নামে শপথ করলেন৷ 14 তিনি বললেন, ‘আমি অবশ্যই তোমাকে আশীর্বাদ করব ও তোমার বংশ অগনিত করব৷’ 15 এই প্রতিশ্রুতির বিষয়ে অব্রাহাম ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করলেন, পরে ঈশ্বর যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা তিনি লাভ করলেন৷ 16 সাধারণ মানুষ যখন তার থেকে মহান কোন ব্যক্তির নাম নিয়ে শপথ করে, সে তার প্রতিশ্রুতি পালন করবে কিনা সে বিষয়ে এই শপথের দ্বারা সব সংশয়ের অবসান হয়, সব তর্কের নিষ্পত্তি হয়ে যায়৷ 17 ঈশ্বর য়ে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন সেই প্রতিজ্ঞার উত্তরাধিকারীদের তিনি শপথের মাধ্যমে আরও নিশ্চয়তার সঙ্গে বলতে চাইলেন য়ে তাঁর সেই প্রতিজ্ঞা অপরিবর্ত্তনীয়৷ 18 ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতি ও শপথ কখনও বদলায় না৷ ঈশ্বর মিথ্যা কথা বলেন না ও শপথ করার সময়ে ছল করেন না৷ অতএব আমরা যাঁরা নিরাপত্তার জন্যে ঈশ্বরের কাছে ছুটে যাই, তাদের পক্ষে এই বিষয়গুলি বড় সান্ত্বনার৷ ঐ বিষয় দুটি ঈশ্বরের প্রদত্ত আশাতে জীবন অতিবাহিত করার জন্য আমাদের সান্ত্বনা ও শক্তি য়োগাবে৷ 19 আমাদের জীবন সম্পর্কে আমাদের য়ে প্রত্যাশা আছে তা নোঙরের মত দৃঢ় ও অটল৷ তা পর্দার আড়ালে স্বর্গীয় মন্দিরের পবিত্র স্থানে আমাদের প্রবেশ করায়৷ 20 যীশু, যিনি মল্কীষেদকের রীতি অনুযাযী চিরকালের জন্য মহাযাজক হলেন, তিনি আমাদের হয়ে সেখানে প্রবেশ করেছেন এবং আমাদের জন্য পথ খুলে দিয়েছেন৷
7:1 এই মল্কীষেদক শালেমের রাজা ও পরাত্পর ঈশ্বরেরযাজক ছিলেন৷ অব্রাহাম যখন রাজাদের পরাস্ত করে ঘরে ফিরছিলেন তখন এই মল্কীষেদক অব্রাহামের সঙ্গে সাক্ষাত্ করে তাঁকে আশীর্বাদ করেছিলেন৷ 2 অব্রাহাম যুদ্ধ জয় করে যা কিছু পেয়েছিলেন তার দশ ভাগের একভাগ তাঁকে দিয়েছিলেন৷ মল্কীষেদকের নামের অর্থ হল, ‘ন্যায়ের রাজা,’ এরপর তিনি আবার ‘শালেমের রাজা’ অর্থাত্ ‘শান্তিরাজ৷’ 3 মল্কীষেদকের মা, বাবা, বা তার পূর্বপুরুষের কোন বংশতালিক পাওয়া যায় না, তার শুরু বা শেষের কোন নথি নেই৷ ঈশ্বরের পুত্রের মতো তিনি হলেন অনন্তকালীন যাজক৷ 4 তাহলে তোমরা দেখলে, মল্কীষেদক কতো মহান ছিলেন৷ এমন কি আমাদের কুলপিতা অব্রাহাম যুদ্ধ জয় করে লুঠ করা দ্রব্যের দশ ভাগের এক ভাগ তাঁকে দিয়েছিলেন৷ 5 লেবির সন্তানদের মধ্যে যাঁরা যাজক হন তাঁরা তাঁদের ভাই ইস্রায়েলের সন্তানদের কাছ থেকে বিধি-ব্যবস্থা অনুসারে এক দশমাংশ গ্রহণ করার অধিকার লাভ করেন, যদিও তাঁরা উভয়েই অব্রাহামের বংশধর৷ 6 মল্কীষেদক লেবির বংশের ছিলেন না, কিন্তু তিনি অব্রাহামের কাছ থেকে দশমাংশ নিয়েছিলেন; আর ঈশ্বর যাকে আশীর্বাদ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলেন সেই অব্রাহামকে আশীর্বাদ করেছিলেন৷ 7 এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই য়ে ক্ষুদ্রতর ব্যক্তিই সব সময় মহত্তর ব্যক্তির কাছ থেকে আশীর্বাদ লাভ করে৷ 8 ইহুদী যাজকরা মরণশীল হয়েও এক দশমাংশ পেয়েছিলেন৷ কিন্তু মল্কীষেদক যিনি অব্রাহামের কাছ থেকে এক দশমাংশ পেয়েছিলেন তিনি জীবিত, শাস্ত্র এই কথা বলে৷ 9 আবার এও বলা য়েতে পারে য়ে লেবি নিজেও অব্রাহামের মধ্য দিয়ে মল্কীষেদককে দশমাংশ দিয়েছেন৷ 10 মল্কীষেদক যখন অব্রাহামের সঙ্গে সাক্ষাত্ করেন তখন লেবি তাঁর পিতৃকুলপতির (অব্রাহামের) দেহে অবস্থান করছিলেন৷ 11 যাঁরা যাজকের কাজ করতেন সেই লেবির বংশধরদের কাজের উপর ভিত্তি করে ঈশ্বর ইস্রায়েলীয়দের তাঁর বিধি-ব্যবস্থা দিয়েছিলেন৷ সেই যাজকের মাধ্যমে যখন লোকেরা আত্মিকভাবে সিদ্ধি লাভ করতে পারে নি তখন অন্য এক যাজকের আসার প্রযোজন হল৷ অন্য একজন যাজক যিনি হারোণের মতো নন কিন্তু মল্কীষেদকের মতো৷ 12 যখন যাজকত্ব বদলানো হয় তখন বিধি-ব্যবস্থারও পরিবর্তন আবশ্যক হয়ে পড়ে৷ 13 আমরা এসব কথা খ্রীষ্টের বিষয়ে বলছি৷ তিনি তো অন্য বংশভুক্ত৷ সেই বংশের কেউ তো যাজকরূপে যজ্ঞবেদীর পরিচর্য়া কখনও করেন নি৷ 14 কারণ এটা সুস্পষ্ট য়ে আমাদের প্রভু যিহূদা বংশ থেকেই এসেছেন; আর এই বংশের ব্যাপারে মোশি যাজক হওয়ার বিষয়ে কিছুই বলেন নি৷ 15 এই বিষয়গুলি আরও সুস্পষ্ট হয়ে যায় যখন আমরা মল্কীষেদকের মতো আর একজন যাজককে মূর্ত্তমান হতে দেখি৷ 16 তিনি মানুষের রীতি-নীতি এবং বিধি-ব্যবস্থা অনুযাযী যাজক হন নি, কিন্তু তিনি অবিনশ্বর জীবনী শক্তির অধিকারী হয়েই তা হয়েছিলেন৷ 17 কারণ তাঁর বিষয়ে শাস্ত্রে একথা বলা হয়েছে: ‘মল্কীষেদকের মতো তুমি অনন্তকালীন যাজক৷’ 18 পুরানো বিধান বাতিল করা হল, কারণ তা দুর্বল ও অকেজো হয়ে পড়েছিল৷ 19 কারণ মোশির বিধি-ব্যবস্থা কিছুই সিদ্ধ করতে পারে নি৷ এখন আমাদের কাছে মহত্তর আশা রয়েছে, যার মাধ্যমে আমরা ঈশ্বরের কাছে উপস্থিত হতে পারি৷ 20 আরো উল্লেখয়োগ্য বিষয় এই, য়ে ঈশ্বর যখন যীশুকে মহাযাজক করেন তখন ঈশ্বর শপথ করেছিলেন, অন্যরা যাজক হবার সময় ঈশ্বর কোন শপথ করেন নি, 21 কিন্তু তিনি যীশুকে যাজক করার সময় শপথ করলেন৷ ঈশ্বর বললেন:‘প্রভু এক শপথ করলেন, আর তিনি এ বিষয়ে তাঁর মন বদলাবেন না, ‘তুমি অনন্তকালীন যাজক৷’’ গীতসংহিতা 110:4 22 এই শপথের কারণে যীশু ঈশ্বরের সঙ্গে মানুষের উত্কৃষ্টতর এক চুক্তির জামিনদার হয়েছেন৷ 23 অনেকে যাজক হয়েছিলেন, কারণ মৃত্যু কোনও একজন যাজককে অনন্তকালের জন্য থাকতে দেয় নি৷ 24 কিন্তু ইনি (যীশু) চিরজীবি বলে তাঁর এই যাজকত্ব চিরস্থাযী৷ 25 তাই যাঁরা খ্রীষ্টের মাধ্যমে ঈশ্বরের কাছে আসে তাদের তিনি চিরকাল উদ্ধার করতে পারেন, কারণ তাদের জন্য তাঁর কাছে আবেদন করতে তিনি চিরকাল জীবিত আছেন৷ 26 প্রকৃতপক্ষে আমাদের যীশুর মতো এইরকম পবিত্র, নির্দোষ ও নিষ্কলঙ্ক মহাযাজক প্রযোজন ছিল৷ তিনি পাপীদের থেকে স্বতন্ত্র, আর আকাশ মণ্ডলের উর্দ্ধেও তাঁকে উন্নীত করা হয়েছে৷ 27 তিনি অন্যান্য যাজকদের মতো নন৷ অন্যান্য যাজকদের মতো প্রতিদিন আগে নিজের পাপের জন্য ও পরে লোকদের পাপের জন্য বলি উত্সর্গ করার তাঁর কোন প্রযোজন নেই, কারণ তিনি যখন নিজেকে বলিরূপে একবার উত্সর্গ করেন তখনই তিনি সেই কাজ চিরকালের জন্য সম্পন্ন করেছেন৷ 28 বিধি-ব্যবস্থানুসারে য়ে সব মহাযাজক নিযোগ করা হয় তারা দুর্বল মানুষ; কিন্তু পরে ঈশ্বরের শপথ বাক্যের দ্বারা, য়াঁকে মহাযাজকরূপে নিযোগ করা হয়, তিনি ঈশ্বরের পুত্র, যিনি চির সিদ্ধ৷
8:1 এখন আমরা য়ে বিষয় বলছি, তার প্রধান বক্তব্য হচ্ছে: আমাদের এক মহাযাজক আছেন, যিনি স্বর্গে ঈশ্বরের মহিমাময় সিংহাসনের ডানপাশে বসে আছেন৷ 2 তিনি সেই মহাপবিত্রস্থানে সেবা করছেন, যা প্রকৃত উপাসনার স্থান এবং য়ে উপাসনাস্থল মানুষের হাতে গড়া নয় বরং ঈশ্বর স্বয়ং তা নির্মাণ করেছেন৷ 3 প্রত্যেক মহাযাজককে বলি ও উপহার উত্সর্গ করার জন্যই নিযোগ করা হয়৷ তাই আমাদের এই মহাযাজককেও ঈশ্বরকে কিছু উত্সর্গ করতে হয়৷ 4 আমাদের মহাযাজক যদি পৃথিবীতে থাকতেন তবে তিনি কখনও যাজক হতেন না, কারণ পুরানো বিধি-ব্যবস্থা অনুযাযী এখানে যাজকরা ঈশ্বরকে উপহার নিবেদন করার জন্য রয়েছেন৷ 5 যাজকরা য়ে কাজ করেন তা কেবল স্বর্গীয় জিনিসগুলির নকল ছায়ামাত্র৷ মোশি যখন পবিত্র তাঁবু স্থাপন করতে যাচ্ছিলেন, তখন ঈশ্বর তাঁকে সতর্ক করে বলেছিলেন, ‘দেখো, পাহাড়ের ওপরে তোমাকে য়েমন শিবির দেখানো হয়েছিল তুমি ঠিক সেইরকমই করো৷’ 6 কিন্তু এখন যীশুকে য়ে কাজের জন্য নিযোগ করা হয়েছে তা ঐ যাজকদের থেকে অনেক গুণে মহত্৷ সেই একইভাবে যীশু য়ে নতুন চুক্তি ঈশ্বরের কাছ থেকে এনেছেন তা পুরাতন চুক্তিটির থেকে অনেক শ্রেষ্ঠ৷ এই নতুন চুক্তি শ্রেষ্ঠ বিষয়ের প্রতিশ্রুতির ওপর স্থাপিত হয়েছে৷ 7 কারণ ঐ প্রথম চুক্তি যদি নিখুঁত হতো, তাহলে তার জায়গায় দ্বিতীয় চুক্তি স্থাপনের প্রযোজন হতো না৷ 8 কিন্তু ঈশ্বর লোকদের মধ্যে ত্রুটি লক্ষ্য করে বলেছিলেন:‘দেখো, এমন সময় আসছে, যখন আমি ইস্রায়েলের লোকেদের ও যিহূদার লোকেদের সঙ্গে এক নতুন চুক্তি করব৷ 9 সেই চুক্তি অনুসারে নয় যা আমি তাদের পিতৃপুরুষদের সঙ্গে এর আগে করেছিলাম, য়েদিন আমি তাদের হাত ধরে মিশর দেশ থেকে বাইরে বের করে নিয়ে এসেছিলাম৷ আমার সঙ্গে তাদের য়ে চুক্তি হয়েছিল তাতে তাদের বিশ্বাস ছিল না; আর তাই আমি তাদের কাছ থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছিলাম, একথা প্রভু বলেন৷ 10 আমি ইস্রায়েল বংশের সঙ্গে এক নতুন চুক্তি স্থির করব; ভবিষ্যতে আমি এই চুক্তি স্থাপন করব, একথা প্রভু বলেন৷ আমি তাদের মনের মাঝে আমার বিধি-ব্যবস্থা দেবো আর তাদের হৃদয়ে আমার ব্যবস্থা লিখে দেবো৷ আমি তাদের ঈশ্বর হবো ও তারা আমার প্রজা হবে৷ 11 কাউকে আর তাদের সহ নাগরিকদের ও ভাইদের এই বলে শিক্ষা দেবার দরকার হবে না, প্রভুকে জানো, কারণ ছোট থেকে বড় পর্যন্ত সবাই আমাকে জানবে৷ 12 কারণ আমার বিরুদ্ধে তারা যতো অপরাধ করেছে সে সব আমি ক্ষমা করব, তাদের সকল পাপ আর কখনও স্মরণ করব না৷’ যিরমিয় 31:31-34 13 এই চুক্তিকে যখন ঈশ্বর নতুন বলছেন তখন প্রথমের চুক্তিটি পুরানো হয়ে যাচ্ছে৷ যা কিছু পুরানো তা তো জীর্ণ আর তা শিগ্গিরই বিলীন হয়ে যাবে৷
9:1 ঐ প্রথম চুক্তিতে উপাসনা করার নানা বিধিনিয়ম ছিল; আর মানুষের তৈরী এক উপাসনার স্থান ছিল৷ 2 উপাসনার স্থানটি ছিল এক তাঁবুর ভেতরে৷ যার প্রথম অংশকে বলা হতো পবিত্র স্থান, য়েখানে ছিল বাতিদান,টেবিল ও ঈশ্বরকে উত্সর্গীকৃত বিশেষ রুটি৷ 3 দ্বিতীয় পর্দার পেছনে আর একটি অংশ ছিল যাকে মহাপবিত্রস্থান বলা হত৷ 4 এই অংশে ছিল ধূপ জ্বালাবার জন্য সোনার বেদী ও চুক্তির সেই সিন্দুক, যার চারপাশ ছিল সোনার পাতে মোড়া৷ এর মধ্যে ছিল সোনার এক ঘটিতে মান্না ও হারোণের ছড়ি, য়ে ছড়ি মুকুলিত হয়েছিল; আর পাথরের সেই দুই ফলক যার ওপর নিয়ম চুক্তির শর্ত লেখা ছিল৷ 5 সেই সিন্দুকের ওপর ছিল সোনার দুই করূব স্বর্গদূতযা ঈশ্বরের মহিমা প্রকাশ করত৷ তার দয়ার আসনটির ওপর ছায়া ফেলে থাকত৷ বর্তমানে আমরা এর খুঁটিনাটি বর্ণনা দিতে পারি না৷ 6 যখন এইসব জিনিস পূর্বে বর্ণিত ব্যবস্থা অনুসারে প্রস্তুত হল, তখন যাজকরা প্রতিদিন উপাসনা করার জন্য প্রথম কক্ষে প্রবেশ করতেন৷ 7 কিন্তু মহাযাজক দ্বিতীয় কক্ষে কেবল একা বছরে একবার প্রবেশ করতেন; তিনি আবার রক্ত না নিয়ে প্রবেশ করতেন না৷ সেই রক্ত তিনি নিজের জন্য ও লোকদের দোষ-ত্রুটি ও অনিচ্ছাকৃত পাপের মার্জনার জন্য উত্সর্গ করতেন৷ 8 পবিত্র আত্মা এর দ্বারা আমাদের জানাচ্ছেন য়ে, যতদিন পর্যন্ত প্রথম তাঁবু ছিল, ততদিন মহাপবিত্র স্থানে প্রবেশের পথ খুলে দেওয়া হয় নি৷ 9 এটা আজকের জন্য একটা দৃষ্টান্তস্বরূপ৷ সেই দৃষ্টান্ত মতে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে উত্সর্গীকৃত ঐসব বলি ও উপহার উপাসনাকারীকে সম্পূর্ণভাবে শুদ্ধ করতে পারত না এবং উপাসনাকারীর হৃদয়কে সিদ্ধিলাভ করাতো না৷ 10 ঐ উপহারগুলি কেবল খাদ্য়, পানীয় ও নানা প্রকার বাহ্যিক শুচি স্নানের গণ্ডীতে বাঁধা ছিল৷ সে সব বিধি-ব্যবস্থাগুলি ছিল কেবল মানুষের দেহ সম্বন্ধীয়৷ সেগুলি ব্যক্তির হৃদয় সম্বন্ধীয় বিষয় ছিল না৷ নতুন আদেশ না আসা পর্যন্ত ঈশ্বর তাঁর লোকদের এইসব নিয়ম অনুসরণ করতে দিয়েছিলেন৷ 11 কিন্তু এখন মহাযাজকরূপে খ্রীষ্ট এসেছেন৷ আমরা এখন য়ে সব উত্তম বিষয় পেয়েছি, তিনি সেসবের মহাযাজক৷ পূর্বে যাজকরা তাঁবুর মতো কোন স্থানে সেবা করতেন, কিন্তু খ্রীষ্ট তেমনি করেন না৷ সেই তাঁবু থেকেও এক উত্তমস্থানে খ্রীষ্ট মহাযাজকরূপে সেবা করতেন৷ সেই স্থান সিদ্ধ, সেই স্থান মানুষের হাতে গড়া নয়, তা এই জগতের নয়৷ 12 খ্রীষ্ট একবার চিরতরে সেই মহাপবিত্রস্থানে প্রবেশ করেছেন৷ তিনি মহাপবিত্রস্থানে প্রবেশের জন্য ছাগ বা বাছুরের রক্ত ব্যবহার করেন নি, কিন্তু তিনি একবার চিরতরে নিজের রক্ত নিয়ে মহাপবিত্রস্থানে প্রবেশ করেছিলেন৷ খ্রীষ্ট সেখানে প্রবেশ করে আমাদের জন্য অনন্ত মুক্তি অর্জন করেছেন৷ 13 ছাগ বা বৃষের রক্ত ও বাছুরের ভস্ম সেই সব অশুচি মানুষের উপর ছিটিয়ে তাদের দেহকে পবিত্র করা হত, যাঁরা উপাসনা স্থলে প্রবেশের জন্য যথেষ্ট শুচি ছিল না৷ 14 তবে এটা কি ঠিক নয় য়ে খ্রীষ্টের রক্ত আরও কত অধিক কার্য়করী হতে পারে? অনন্তজীবি আত্মার মাধ্যমে খ্রীষ্ট ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে নিজেকে বলিদান করলেন পরিপূর্ণ উত্সর্গরূপে৷ তাই খ্রীষ্টের রক্ত আমাদের সমস্ত হৃদয়কে পাপ থেকে শুদ্ধ ও পবিত্র করবে, যাতে আমরা জীবন্ত ঈশ্বরের উপাসনা করতে পারি৷ 15 তাই খ্রীষ্ট তাঁর লোকদের জন্য ঈশ্বরের কাছে এক নতুন চুক্তি উপস্থিত করেছেন৷ খ্রীষ্ট এই নতুন চুক্তি এনেছেন য়েন ঈশ্বরের আহুত লোকেরা তাঁর প্রতিশ্রুত সব আশীর্বাদ পেতে পারে৷ ঈশ্বরের লোকরা সেই আশীর্বাদ অনন্তকাল ভোগ করবে৷ তারা সেসবের অধিকারী হবে কারণ প্রথম চুক্তির সময়ে তারা য়ে পাপ করেছে সেই পাপ থেকে তাদের উদ্ধার করতে খ্রীষ্ট মৃত্যুবরণ করলেন৷ 16 মানুষ মৃত্যুর পূর্বে একটা নিয়ম পত্রকরে যায়; কিন্তু নিয়মকারী যদি জীবিত থাকে তবে সেই নিয়মপত্র বা চুক্তির কোন অর্থই হয় না৷ 17 কারণ নিয়মকারীর মৃত্যু হলে তবেই নিয়ম পত্র বলবত্ হয়৷ 18 এইজন্য ঐ প্রথম চুক্তি যা ঈশ্বর ও তাঁর লোকদের মধ্যে সম্পন্ন হয়েছিল সেখানেও ঐ কথা প্রয়োজ্য৷ সেই চুক্তি বলবত্ করতে রক্তের প্রযোজন ছিল৷ 19 কারণ লোকদের কাছে মোশি বিধি-ব্যবস্থা থেকে সমস্ত আজ্ঞা পাঠ করে পরে তিনি জল ও রক্তবর্ণ মেষলোম আর একগোছা এসোবের ঘাস ব্যবহার করে গোবত্স ও ছাগদের রক্ত সেই পুস্তকটিতে ও লোকদের গায়ে ছিটিয়ে দিয়েছিলেন৷ 20 মোশি বলেছিলেন, ‘এই সেই রক্ত যা কার্য়কারী করছে সেই চুক্তি যার আজ্ঞাবহ হতে ঈশ্বর তোমাদের বলছেন৷’ 21 আর সেইভাবে মোশি পবিত্র তাঁবু ও উপাসনা সংক্রান্ত সব জিনিসের ওপর রক্ত ছিটিয়ে দিয়েছিলেন৷ 22 কারণ বিধি-ব্যবস্থা বলে য়ে প্রায় সব কিছুই রক্ত ছিটিয়ে শুচি করা প্রযোজন, আর রক্তপাত ব্যতিরেকে পাপের মোচন হয় না৷ 23 এই বিষয়গুলি ছিল আসল স্বর্গীয় বিষয়গুলির দৃষ্টান্ত, সেগুলিকে বলিদানের রক্তে শুচি করার প্রযোজন ছিল৷ কিন্তু যা প্রকৃত স্বর্গীয় বিষয় সেগুলি এর থেকে শ্রেষ্ঠতর বলিদানের দ্বারা শুচি হওয়া প্রযোজন৷ 24 খ্রীষ্ট স্বর্গে মহাপবিত্র স্থানে প্রবেশ করেছেন৷ মানুষের তৈরী কোন মহাপবিত্র স্থানে খ্রীষ্ট প্রবেশ করেন নি৷ পৃথিবীর তাঁবুর মহাপবিত্র স্থানে স্বর্গীয় স্থানের প্রতিচ্ছবি মাত্র; কিন্তু খ্রীষ্ট স্বর্গে প্রবেশ করেছেন, আর এখন আমাদের হয়ে তিনি ঈশ্বরের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন৷ 25 মহাযাজক বছরে একবার বলির য়ে রক্ত নিয়ে মহাপবিত্র স্থানে প্রবেশ করেন তা তার নিজের নয়৷ কিন্তু খ্রীষ্ট স্বর্গে প্রবেশ করেছেন মহাযাজকদের উত্সর্গের মতো বারবার নিজেকে উত্সর্গ করার জন্য নয়৷ 26 খ্রীষ্ট যদি তাই করতেন তবে জগত্ সৃষ্টির সময় থেকে তাঁকে বারবার প্রাণ দিতে হত৷ খ্রীষ্ট এসে একবার নিজেকে উত্সর্গ করেছেন৷ সেই একবারই চিরন্তন কাজের সমাপ্তি হয়েছে৷ জগতের অন্তিম কালেই খ্রীষ্ট নিজেকে বলিরূপে উত্সর্গ করে লোকদের পাপনাশ করতে এলেন৷ 27 মানুষের জন্য একবার মৃত্যু এবং মৃত্যুর পর তাঁর বিচার হয়৷ 28 বহুলোকের পাপের বোঝা তুলে নেবার জন্য খ্রীষ্ট একবার নিজেকে উত্সর্গ করলেন; তিনি দ্বিতীয়বার দর্শন দেবেন, তখন পাপের বোঝা তুলে নেবার জন্য নয়, কিন্তু যাঁরা তাঁর জন্য অপেক্ষা করছে তাদের পরিত্রাণ দিতে তিনি আসবেন৷
10:1 ভবিষ্যতে য়ে সকল উত্কৃষ্ট বিষয় আসবে, বিধি-ব্যবস্থা হচ্ছে তারই অস্পষ্ট ছায়া মাত্র৷ বিধি-ব্যবস্থা ঐসব বিষয়ের বাস্তবরূপ নয়৷ তাই যাঁরা ঈশ্বরের উপাসনা করতে আসে, বছর বছর তারা একই রকম বলিদান বারবার করে, কিন্তু বিধি-ব্যবস্থা সেই লোকদের সিদ্ধি দিতে পারে না৷ 2 বিধি-ব্যবস্থা যদি পারত, তবে ঐ বলিদান কি শেষ হত না? কারণ যাঁরা উপাসনা করে তারা যদি একবার শুচি হয় তবে তাদের পাপের জন্য নিজেকে আর দোষী ভাববার প্রযোজন নেই৷ কিন্তু বিধি-ব্যবস্থা তা করতে সক্ষম নয়৷ 3 ঐসব লোকের বলিদান বছর বছর তাদের পাপের ক্ষমা স্মরণ করিয়ে দেয়, 4 কারণ বৃষের কি ছাগের রক্ত পাপ দূর করতে পারে না৷ 5 সেইজন্যই খ্রীষ্ট এ জগতে আসার সময় বলেছিলেন:‘তুমি বলিদান ও নৈবেদ্য চাও নি, কিন্তু আমার জন্য এক দেহ প্রস্তুত করেছ৷ 6 তুমি হোমে ও পাপার্থক বলিদান উত্সর্গে প্রীত নও৷ 7 এরপর তিনি বললেন, ‘এই আমি! শাস্ত্রে আমার বিষয়ে য়েমন লেখা আছে, হে ঈশ্বর দেখ, আমি তোমার ইচ্ছা পূর্ণ করতেই এসেছি৷’গীতসংহিতা 40:6-8 8 প্রথমে তিনি বললেন, ‘বলিদান, নৈবেদ্য, হোমবলি ও পাপার্থক বলি তুমি চাও নি; আর তাতে তুমি প্রীত হও নি৷’ যদিও সেইসব বিধি-ব্যবস্থা অনুসারে উত্সর্গ করা হয়৷ 9 এরপর তিনি বললেন, ‘দেখো, আমি তোমার ইচ্ছা পালন করবার জন্যই এসেছি৷’ তিনি দ্বিতীয়টি প্রবর্তন করার জন্য প্রথমটিকে বাতিল করতে এসেছেন৷ 10 ঈশ্বরের ইচ্ছানুসারেই তিনি এই কাজ সমাপ্ত করেছেন৷ এইজন্যই খ্রীষ্ট তাঁর দেহ একবারেই চিরকালের জন্য উত্সর্গ করেছেন যাতে আমরা চিরকালের জন্য পবিত্র হই৷ 11 প্রত্যেক যাজক প্রত্যেকদিন দাঁড়িয়ে ঈশ্বরের সেবা করেন তাঁরা বারবার সেই একই বলি উত্সর্গ করেন৷ কিন্তু তাদের বলিদান কখনও পাপ দূর করতে পারে না৷ 12 খ্রীষ্ট পাপের জন্য একটি বলিদান উত্সর্গ করলেন যা সকল সময়ের জন্য যথেষ্ট৷ তারপর তিনি ঈশ্বরের দক্ষিণ পাশে বসলেন৷ 13 তাঁর শত্রুদের মাথা তাঁর পায়ের নীচে অবনত না হওয়া পর্যন্ত এখন তিনি সেখানে অপেক্ষা করছেন৷ 14 তিনি একটি বলিদান উত্সর্গ করে চিরকালের জন্য তাঁর লোকেদের নিখুঁত করেছেন৷ তারাই সেই লোক যাদের পবিত্র করা হয়েছে৷ 15 পবিত্র আত্মাও আমাদের কাছে এ বিষয়ে সাক্ষ্য দিচ্ছেন৷ প্রথমে তিনি বলেন: 16 ‘ঐ সময়ের পর প্রভু বলেছেন, আমি তাদের সঙ্গে এই চুক্তি করব৷ আমি তাদের হৃদয়ে আমার নিয়মগুলো গেঁথে দেব, আর তাদের মনে আমি তা লিখে দেব৷’যিরমিয় 31:33 17 এরপর তিনি বলেন: ‘আমি তাদের সব পাপ ও অধর্ম আর কখনও মনে রাখবো না৷’ যিরমিয় 31:34 18 তাই একবার যখন সেইসব পাপ ক্ষমা করা হল, তখন পাপের জন্য বলিদান উত্সর্গ করার আর কোন প্রযোজন নেই৷ 19 তাই আমার ভাই ও বোনেরা, মহাপবিত্র স্থানে প্রবেশ করার সম্পূর্ণ স্বাধীনতা আমাদের আছে৷ যীশুর রক্তের গুণে আমরা নির্ভীকতার সঙ্গে সেখানে প্রবেশ করতে পারি৷ 20 খ্রীষ্ট এই নতুন পথ একটি পর্দার মধ্য দিয়ে অর্থাত্ তাঁর দেহের মধ্য দিয়ে আমাদের জন্য খুলে দিয়েছেন৷ এ এক জীবন্ত পথ৷ এই নতুন পথে আমরা পর্দার মধ্য দিয়ে অর্থাত্ খ্রীষ্টের দেহের মধ্য দিয়ে ঈশ্বরের সামনে উপস্থিত হতে পারি৷ 21 তাই আমাদের এক মহান যাজক রয়েছেন যিনি ঈশ্বরের গৃহের ওপর কর্তৃত্ত্ব করেন৷ 22 আমাদের শুচি করা হয়েছে ও দোষী বিবেকের হাত থেকে মুক্ত করা হয়েছে৷ আমাদের দেহকে শুচিশুদ্ধ জলে ধৌত করা হয়েছে৷ তাই এস, আমরা শুদ্ধ হৃদয়ে বিশ্বাসের কৃত নিশ্চয়তায় ঈশ্বরের সামনে হাজির হই৷ 23 তাই এস, আমরা আমাদের প্রত্যাশাকে দৃঢ়ভাবে অবলম্বন করে থাকি এবং অপরের কাছে তাকে জানাতে ব্যর্থ না হই৷ আমরা ঈশ্বরের ওপর নির্ভর করতে পারি য়ে, তিনি যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা তিনি পূরণ করবেন৷ 24 আমাদের উচিত একে অপরের বিষয়ে চিন্তা করা, য়েন ভালবাসতে ও সত্ কাজ করতে পরস্পরকে উত্সাহ দান করতে পারি৷ 25 আমরা য়েন একত্র সমবেত হওয়ার অভ্যাস ত্যাগ না করি, য়েমন কেউ কেউ সেইরকম করছে৷ কিন্তু এস, আমরা পরস্পরকে উত্সাহ ও চেতনা দিই৷ তোমরা যতই সেই দিন এগিয়ে আসতে দেখছ, ততই এ বিষয়ে আরো বেশী করে উদ্যোগী হও৷ 26 সত্যের জ্ঞানলাভের পর যদি আমরা ইচ্ছাকৃতভাবে পাপ করে চলি, তবে সেই পাপের জন্য বলিদান উত্সর্গ করার মতো আর কিছু অবশিষ্ট থাকে না৷ 27 আমরা যদি পাপ করেই চলি তবে বিচারের জন্য সেই ভয়ঙ্কর প্রতীক্ষা আর প্রচণ্ড ক্রোধাগ্নি সমস্ত ঈশ্বর বিরোধীকে গ্রাস করবে৷ 28 কেউ যদি মোশির দেওয়া বিধি-ব্যবস্থা লঙঘন করতো তবে দুজন কিংবা তিনজন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণে নিষ্ঠুরভাবে তাকে হত্যা করা হত, তাকে ক্ষমা করা হত না৷ 29 ভেবে দেখো, য়ে লোক ঈশ্বরের পুত্রকে ঘৃণা করেছে, চুক্তির য়ে রক্তের মাধ্যমে সে শুচি হয়েছিল তা তুচ্ছ করেছে, আর যিনি অনুগ্রহ করেন সেই অনুগ্রহের আত্মাকে অপমান করেছে - হ্যাঁ, নতুন চুক্তির রক্তকে য়ে অবমাননা করেছে সেই ব্যক্তির কতোই না ঘোরতর শাস্তি হওয়া উচিত৷ 30 আমরা জানি, ঈশ্বর বলেন, ‘যাঁরা মন্দ কাজ করে, তাদের আমি শাস্তি দেব; তাদের প্রতিফল দেব৷’ঈশ্বর আবার বলেছেন, ‘প্রভু তাঁর লোকদের বিচার করবেন৷’ 31 জীবন্ত ঈশ্বরের হাতে গড়া পাপী মানুষের পক্ষে কি ভয়ঙ্কর বিষয়৷ 32 সেই আগের দিনগুলির কথা মনে করে দেখ, প্রথমে যখন তোমরা সত্য গ্রহণ করলে, তখন তোমাদের অনেক কষ্ট ও দুঃখভোগ করতে হয়েছিল, কিন্তু তা সত্ত্বেও তোমরা বেশ অটল ছিলে৷ 33 কখনও কখনও লোকেরা প্রকাশ্যে তোমাদের বিদ্রূপ করেছে ও অনেক লোকের সামনে তোমাদের নির্যাতিত হতে হয়েছে৷ কখনও অন্যের ওপর তোমাদের মতো নির্য়াতিত হচ্ছে দেখে তোমরা তাদের প্রতি সহানুভূতি দেখিয়েছ৷ 34 যাঁরা কারাগারে বন্দী ছিল, তোমরা তাদের সাহায্য করেছ ও তাদের দুঃখভোগের অংশ নিয়েছ৷ তোমাদের সম্পত্তি লুঠ করে নিলেও তোমরা আনন্দ করেছ, কারণ তোমরা জানতে য়ে এসব থেকে উত্কৃষ্ট ও চিরস্থাযী এক সম্পদ তোমাদের জন্য আছে৷ 35 তাই অতীতে তোমাদের য়ে সাহস ছিল তা হারিও না, কারণ সেই সাহস তোমাদের জন্য মহাপুরস্কার নিয়ে আসবে৷ 36 তোমাদের ধৈর্য্য ধরতে হবে, ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করার পর তোমরা তাঁর প্রতিশ্রুতি অনুসারে ফল লাভ করবে৷ 37 কারণ এখন থেকে অল্প সময়ের মধ্যে,‘য়াঁর আসবার কথা আছে তিনি আসবেন, তিনি দেরী করবেন না৷ 38 আমার দৃষ্টিতে যাদের ধার্মিক প্রতিপন্ন করেছি তারা বিশ্বাসের ফলেই বেঁচে থাকবে, কিন্তু সে যদি ভয়ে বিশ্বাস থেকে সরে যায় তবে আমি তার প্রতি সন্তুষ্ট হব না৷’হববকূক 2:3-4 39 কিন্তু আমরা এমন লোক নই যাঁরা বিশ্বাস থেকে সরে গিয়ে ধ্বংস হয়ে যায়, বরং আমরা সেই রকম লোক যাঁরা বিশ্বাসে রক্ষা পায়৷
11:1 বিশ্বাসের অর্থ হল আমরা যা প্রত্যাশা করি তা য়ে আমরা পাবই সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার ও বাস্তবে যা কিছু আমরা চোখে দেখতে পাই না তার অস্তিত্ব সম্বন্ধে প্রমাণ পাওয়া৷ 2 অতীতে ঈশ্বরের লোকেরা তাঁদের বিশ্বাসের দরুণই সুখ্যাতি লাভ করেছিলেন৷ 3 বিশ্বাসে আমরা বুঝতে পারি য়ে বিশ্ব ভুমণ্ডল ঈশ্বরের মুখের কথাতেই সৃষ্ট হয়েছিল, তাই চোখে যা দেখা যায় সেই দৃশ্য কোন কিছু প্রত্যক্ষ বস্তু থেকে উত্পন্ন হয় নি৷ 4 কযিন ও হেবল উভয়েই ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে বলিদান উত্সর্গ করেছিলেন; কিন্তু হেবল উত্তম বলে ঈশ্বরের কাছে গ্রাহ্য় হয়েছিলেন কারণ হেবলের বলিদান বিশ্বাসযুক্ত ছিল৷ ঈশ্বর বলেছিলেন য়ে হেবল যা উপহার দিয়েছিল তাতে তিনি প্রীত হয়েছিলেন৷ ঈশ্বর হেবলকে একজন ধার্মিক লোক বললেন, কারণ তার বিশ্বাস ছিল৷ যদিও হেবল মৃত; কিন্তু তাঁর বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে তিনি এখনও কথা বলছেন৷ 5 হনোককে পৃথিবী থেকে তুলে নেওয়া হয়েছিল, তিনি মরেন নি৷ এই পৃথিবী থেকে হনোককে তুলে নেবার পূর্বে হনোক এই সাক্ষী রেখে যান য়ে তিনি ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করেছিলেন৷ পরে লোকেরা হনোকের খোঁজ আর পেলেন না, কারণ ঈশ্বর তাঁকে কাছে রাখার জন্য নিজেই হনোককে তুলে নিয়েছিলেন৷ হনোকের জীবনে বিশ্বাস ছিল বলেই এমনটি সন্ভব হয়েছিল৷ 6 বিনা বিশ্বাসে ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করা যায় না, য়ে কেউ ঈশ্বরের কাছে আসে তাকে অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে য়ে ঈশ্বর আছেন; আর যাঁরা তাঁর অন্বেষণ করে, তাদের তিনি পুরস্কার দিয়ে থাকেন৷ 7 বিশ্বাসেই নোহ, যা যা কখনও দেখা যায় নি এমন সব বিষয়ে তাকে সতর্ক করে দেওয়া হলে তিনি তা গুরুত্ব সহকারে নিলেন এবং নোহ তাঁর পরিবারের রক্ষার জন্য এক জাহাজ নির্মাণ করলেন৷ এর দ্বারা তিনি (অবিশ্বাসী) জগতকে দোষী প্রতিপন্ন করলেন, আর বিশ্বাসের মাধ্যমে য়ে ধার্মিকতা লাভ হয় তার অধিকারী হলেন৷ 8 ঈশ্বরে বিশ্বাস ছিল বলেই ঈশ্বর যখন অব্রাহামকে আহ্বান করলেন, তিনি তাঁর বাধ্য হলেন, আর তাঁকে য়ে দেশ দেবেন বলে ঈশ্বর বলেছিলেন তা অধিকার করতে চললেন৷ তিনি কোথায় চলেছেন তা না জানলেও তিনি রওনা দিলেন৷ 9 তাঁর বিশ্বাসের বলেই তিনি ঈশ্বরের প্রতিশ্রুত সেই দেশে আগন্তুকের মতো জীবনযাপন করলেন৷ তাঁর বিশ্বাস ছিল বলেই তিনি তা করতে পেরেছিলেন৷ সেই প্রতিশ্রুত দেশে ইসহাক ও যাকোবের সাথে তিনি তাঁবুতে বাস করেছিলেন, যাঁরা তাঁর মতোই (একই প্রতিশ্রুতির) উত্তরাধিকারী ছিলেন৷ 10 কারণ অব্রাহাম সেই দৃঢ় ভিত্তিযুক্ত নগরের প্রতীক্ষায় ছিলেন স্বয়ং ঈশ্বর যার স্থপতি ও নির্মাতা৷ 11 অব্রাহাম বযোবৃদ্ধ হয়েছিলেন তাই তাঁর সন্তান হওয়ার সন্ভব ছিল না৷ তাঁর স্ত্রী সারা বন্ধ্যা ছিলেন৷ কিন্তু ঈশ্বরের ওপর অব্রাহামের বিশ্বাস ছিল, তাই ঈশ্বর শক্তি দিলেন য়েন তাঁদের সন্তানলাভ হয়৷ ঈশ্বর যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা য়ে তিনি পূর্ণ করতে পারেন এ বিশ্বাস অব্রাহামের ছিল৷ তিনি প্রায় মৃতকল্প ছিলেন; কিন্তু এই একটি লোকের মধ্য দিয়ে জন্ম নিয়েছিল আকাশের তারার মতো অজস্র বংশধর৷ 12 সেই এক ব্যক্তি থেকে সমুদ্র সৈকতে বালুকণার মতো অগনিত বংশধররা এলো৷ 13 এইসব মহান ব্যক্তিরা বিশ্বাস নিয়েই মারা গেলেন৷ ঈশ্বর যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তাঁরা কেউই বাস্তবে তা পান নি, কিন্তু দূর থেকে তা দেখেছিলেন ও তাকে স্বাগত জানিয়েছিলেন৷ তাঁরা খোলাখুলি স্বীকার করেছিলেন য়ে এই পৃথিবীতে তাঁরা প্রবাসী ও বিদেশী৷ 14 কারণ য়ে সব লোক এরকম কথা বলেন, তাঁরা য়ে নিজের দেশে ফেরার আশায় আছেন তা স্পষ্ট করেই ব্যক্ত করেন৷ 15 য়ে দেশ থেকে তাঁরা বাইরে বেরিয়ে এসেছিলেন, সেই দেশের কথা যদি মনে রাখতেন, তবে ইচ্ছা করলে সেখানে ফিরে য়েতে পারতেন৷ 16 কিন্তু এখন তাঁরা তার থেকে আরো ভাল দেশে, সেই স্বর্গীয় দেশে, যাবার আকাঙ্খা করছিলেন৷ এইজন্য ঈশ্বর নিজেকে তাঁদের ঈশ্বর বলে পরিচয় দিতে লজ্জা পান না, কারণ তিনি তাঁদের জন্য এক নগর প্রস্তুত করেছেন৷ 17 ঈশ্বর যখন অব্রাহামের বিশ্বাসের পরীক্ষা করছিলেন, অব্রাহাম তার কিছু পূর্বেই ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতি পান তবু তিনি তাঁর পুত্র ইসহাককে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে উত্সর্গ করতে নিয়ে গিয়েছিলেন৷ অব্রাহাম ঈশ্বরের নির্দেশ পালন করেছিলেন কারণ তাঁর বিশ্বাস ছিল৷ ঈশ্বর অব্রাহামকে পূর্বেই বলে রেখেছিলেন, ‘ইসহাকের মাধ্যমেই তোমার বংশধররা দেখা দেবে৷’ 18 19 অব্রাহাম বিশ্বাস করলেন য়ে ঈশ্বর মৃত্যুর মধ্য হতেও মানুষকে উত্থাপন করতে সমর্থ৷ বাস্তবে তাই হল, ঈশ্বর অব্রাহামকে তাঁর পুত্রকে বলি দেওয়া থেকে বিরত করলেন ফলে অব্রাহাম ইসহাককে য়েন মৃত্যুর মধ্য থেকেই ফিরে পেলেন৷ 20 সেই বিশ্বাসের বলেই ইসহাক ভবিষ্যতের বিষয় চিন্তা করে এষৌ ও যাকোবকে আশীর্বাদ করলেন কারণ তাঁর বিশ্বাস ছিল৷ 21 যাকোব বৃদ্ধ বয়সে মারা যাবার সময় বিশ্বাসের শক্তিতে য়োষেফের ছেলেদের প্রত্যেককে আশীর্বাদ করেছিলেন৷ তিনি লাঠির উপর ভর দিয়ে উঠে ঈশ্বরের উপাসনা করেছিলেন৷ যাকোবের বিশ্বাস ছিল বলেই তিনি এই সব করেছিলেন৷ 22 বিশ্বাসের বলেই য়োষেফ মৃত্যুশয়্য়ায় বলেছিলেন য়ে, ইস্রায়েলীয়রা মিশর দেশ ছেড়ে একদিন চলে যাবে৷ তাই তিনি তাঁর দেহাবশেষ নিয়ে কি করতে হবে তার নির্দেশ দিতে পেরেছিলেন৷ য়োষেফের বিশ্বাস ছিল বলেই তিনি ঐ কথা বলে গিয়েছিলেন৷ 23 মোশির জন্মের পর তাঁর মা-বাবা তিনমাস পর্যন্ত তাকে লুকিয়ে রেখেছিলেন৷ তাঁদের বিশ্বাস ছিল বলেই তাঁরা তা করেছিলেন৷ তাঁরা দেখলেন মোশি খুব সুন্দর এক শিশু, আর তাঁরা রাজার আদেশ অমান্য করতে ভয় পেলেন না৷ 24 মোশি বড় হয়ে উঠলেন ও পূর্ণ বয়স্ক মানুষে পরিণত হলেন৷ মোশি ফরৌণের মেয়ের পুত্র বলে পরিচিত হতে চাইলেন না৷ মোশি পাপের সুখভোগ করতে চাইলেন না, কারণ সে সব সুখভোগ ছিল ক্ষণিকের৷ 25 কিন্তু মোশি ঈশ্বরের লোকদের সঙ্গে দুঃখভোগ করাকেই বেছে নিলেন৷ মোশি তা করতে পেরেছিলেন কারণ তাঁর বিশ্বাস ছিল৷ 26 মিশরের সমস্ত ঐশ্বর্য অপেক্ষা খ্রীষ্টের জন্য বিদ্রূপ সহ্য করাকেই শ্রেয় মনে করলেন৷ ঈশ্বরের কাছ থেকে পুরস্কার লাভের আশায় মোশি তা করতে পেরেছিলেন৷ 27 মোশির বিশ্বাস ছিল তাই তিনি মিশর ত্যাগ করলেন৷ তিনি রাজার ক্রোধকে ভয় করলেন না৷ মোশি সুস্থির থাকলেন কারণ তিনি সেই ঈশ্বরের দিকে দৃষ্টি রাখলেন য়াঁকে কেউ দেখতে পায় না৷ 28 মোশি নিস্তারপর্ব পালন করে গৃহের দরজায় রক্ত লেপে দিলেন৷ দরজায় এইভাবে রক্ত লেপন করা হল য়েন সংহারকর্তা ইস্রায়েলীয়দের প্রথম পুত্র সন্তানদের স্পর্শ করতে না পারে৷ মোশির বিশ্বাস ছিল তাই তিনি এসব করতে পেরেছিলেন৷ 29 য়ে লোকদের মোশি নিয়ে চলেছিলেন তারা শুকনো জমির ওপর দিয়ে যাওয়ার মতো লোহিত সাগর হেঁটে পার হয়ে গেল৷ তাদের বিশ্বাস ছিল বলেই তারা তা করতে পেরেছিল৷ মিশরীয়রাও লোহিত সাগরের মধ্যে দিয়ে হেঁটে য়েতে চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তারা সবাই মারা পড়ল৷ 30 ঈশ্বরের লোকদের বিশ্বাসের জন্যই যিরীহোর প্রাচীর ভেঙ্গে পড়ল৷ লোকেরা প্রাচীরের চারপাশে সাতদিন ধরে ঘুরলো আর তার পরেই সেই প্রাচীর ভেঙ্গে পড়ল৷ 31 বিশ্বাসে বেশ্য়া রাহব, ইস্রায়েলীয় গুপ্তচরদের সাদরে গ্রহণ করে তাদের সঙ্গে বন্ধুর মতো ব্যবহার করায় নগর ধ্বংস হবার সময় ঈশ্বরের অবাধ্য লোকদের সঙ্গে সে বিনষ্ট হল না৷ 32 তোমাদের কাছে কি আমি আরো দৃষ্টান্ত তুলে ধরব? আমার যথেষ্ট সময় নেই য়ে আমি তোমাদের কাছে গিদিযোন, বারক, শিম্শোন, যিপ্তহ, দাযূদ, শমূয়েল ও ভাববাদীদের সব কথা বলি; ওঁদের প্রচণ্ড বিশ্বাস ছিল৷ 33 তাঁরা বিশ্বাসের দ্বারা রাজ্যসকল জয় করেছিলেন৷ তাঁরা যা ন্যায় তাই করলেন এবং ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতিগুলি পেলেন৷ তাঁরা সিংহদের মুখ বন্ধ করেছিলেন৷ 34 কেউ কেউ আগুনের তেজ নিস্প্রভ করলেন, তরবারির আঘাতে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেলেন৷ এঁদের বিশ্বাস ছিল তাই এঁরা এসব করতে পেরেছিলেন৷ বিশ্বাসের বলেই দুর্বল লোকেরা বলশালী লোকে রূপান্তরিত হয়েছিলেন; তাঁরা যুদ্ধের সময় মহাবিক্রমী হয়ে শত্রু সৈন্যদের পরাস্ত করেছিলেন৷ 35 কোন কোন লোক মৃতদের মধ্য থেকে পুনর্জীবিত হলেন আর পরিবারের নারীরা তাঁদের স্বামীদের ফিরে পেলেন৷ আবার অনেকে ভয়ঙ্কর পীড়ন সহ্য করলেন তবু তার থেকে নিষ্কৃতি চাইলেন না৷ তাঁরা বিশ্বাসে এসব সহ্য করলেন য়েন মহত্তর পুনরুত্থানের ভাগী হন৷ 36 কেউ কেউ বিদ্রূপ ও চাবুকের মার সহ্য করলেন, আবার অনেকে বেড়ি বাঁধা অবস্থায় কারাবাস করলেন৷ 37 কেউ বা মরলেন পাথরের আঘাতে, কাউকে বা করাত দিয়ে দুখণ্ড করা হল, কাউকে তরবারির আঘাতে মেরে ফেলা হল৷ কেউ কেউ নিঃস্ব অবস্থায় মেষ ও ছাগের চামড়া পরে ঘুরে বেড়াতেন, নির্যাতিত হতেন এবং খারাপ ব্যবহার পেতেন৷ 38 জগতটা এই ধরণের লোকের য়োগ্য ছিল না৷ এঁরা গুহায় ও মাটির গর্তে আশ্রয় নিয়ে মরুভূমি ও পর্বতে ঘুরে বেড়াতেন৷ 39 বিশ্বাসের জন্য এঁদের সুখ্যাতি করা হল, কিন্তু তাঁরা কেউ ঈশ্বরের সেই মহান প্রতিশ্রুতি পান নি৷ 40 ঈশ্বর আমাদের জন্য মহত্তর কিছু করতে চেয়েছিলেন, যাতে তাঁরা আমাদের সাথে মিলিত হয়ে পরিপূর্ণ হতে পারেন৷
12:1 আমাদের চারপাশে ঈশ্বর বিশ্বাসী ঐসব মানুষরা রয়েছেন৷ তাদের জীবন ব্যক্ত করছে বিশ্বাসের প্রকৃতরূপ, তাই আমাদের উচিত তাদের অনুসরণ করা৷ আমাদেরও উচিত সেই দৌড়ে য়োগ দেওয়া যা আমাদের জন্য নির্দিষ্ট আছে, কখনই থেমে যাওয়া উচিত নয়৷ জীবনে যা বাধার সৃষ্টি করতে পারে এমন সব কিছু আমরা য়েন দূরে ফেলে দিই৷ য়ে পাপ সহজে জড়িয়ে ধরে তা য়েন দূরে ঠেলে দিই৷ 2 আমাদের সর্বদাই যীশুর আদর্শ অনুযাযী চলা উচিত৷ বিশ্বাসের পথে যীশুই আমাদের নেতা; তিনি আমাদের বিশ্বাসকে পূর্ণতা দেন৷ তিনি ক্রুশের উপর মৃত্যুভোগ করলেন; ক্রুশের মৃত্যুর অপমান তুচ্ছ জ্ঞান করে তা সহ্য করলেন৷ তাঁর সম্মুখে ঈশ্বর য়ে আনন্দ রেখেছিলেন সেই দিকে দৃষ্টি রেখেই যীশু তা করতে পেরেছিলেন৷ এখন তিনি ঈশ্বরের সিংহাসনের ডানপাশে বসে আছেন৷ 3 যীশুর কথা ভাবো, যখন পাপীরা তাঁর বিরোধিতা করে অনেক নিন্দা মন্দ করেছিল, তখন তিনি এই সমস্ত বিরোধিতা সহ্য করেছিলেন৷ যীশু তা করেছিলেন যাতে তোমরাও তাঁর মতো সহিষ্ণু হও এবং চেষ্টা করা থেকে বিরত না হও৷ 4 পাপের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তোমরা এখনও মৃত্যুর মুখোমুখি হও নি৷ তোমরা ঈশ্বরের সন্তান, তিনি তোমাদের সান্ত্বনার কথা বলেন৷ 5 তোমরা সন্ভবতঃ সেই উত্সাহব্যঞ্জক কথা ভুলে গেছ৷ তিনি বলেছেন:‘হে আমার পুত্র, প্রভু যখন তোমায় শাসন করেন, মনে করো না য়ে তার কোন মূল্য নেই৷ তিনি যখন তোমায় সংশোধন করেন তখন নিরুত্সাহ হযো না৷ 6 কারণ প্রভু যাকে ভালবাসেন তাকেই শাসন করেন, সমস্ত পুত্রই পিতা কর্ত্তৃক শাসিত হয়৷’হিতোপদেশ 3:11-12 7 এখন যা কিছু কষ্ট পাচ্ছ তা পিতার কাছ থেকে শাসন বলে মেনে নাও৷ পিতা য়েমন তাঁর সন্তানকে শাসন করেন, তেমনি করেই ঈশ্বর তোমাদের জীবনে এইসব আসতে দিয়েছেন৷ সব সন্তানই পিতার অনুশাসনের অধীন৷ 8 তোমরা যদি কখনই শাসিত না হও (পুত্র মাত্রেই শাসিত হয়) তবে তোমরা তো তাঁর প্রকৃত সন্তান নও, যথার্থ পুত্র নও৷ 9 এই পৃথিবীতে আমাদের সবার পিতাই আমাদের মার্জিত ও সংশোধিত করেন এবং আমরা তাঁদের সম্মান করি৷ যিনি আমাদের আত্মিক পিতা তাঁর অনুশাসনের কাছে আমাদের সত্যিকারের জীবনের জন্য আমরা কি আরো বেশী মাথা নোয়াবো না? 10 পৃথিবীতে আমাদের পিতারা অল্প সময়ের জন্য শাস্তি দেন৷ কিন্তু ঈশ্বর আমাদের সাহায্য করার জন্য শাস্তি দেন য়েন আমরা তাঁর মত পবিত্র হই৷ 11 কোনও ধরণের শাসনই শাসনের মুহূর্তে আমাদের আনন্দ দেয় না, বরং আমরা তাতে দুঃখ পাই; কিন্তু এটা যাদের জীবনকে প্রভাবিত করেছে, পরে তাদের জীবনে ধার্মিকতা ও শান্তি রাজত্ব করে৷ 12 তাই তোমাদের শিথিল হাত দুটোকে শক্ত করো, অবশ হাঁটু দুটোকে সবল করে তোল৷ 13 তোমাদের চলার পথ সরল কর, খোঁড়া পা য়েন গাঁট থেকে খুলে না যায়, বরং তা য়েন সুস্থ হয়৷ 14 সবার সঙ্গে শান্তিতে জীবনযাপন করতে চেষ্টা কর, কারণ এই ধরণের জীবন ছাড়া কেউ প্রভুর দর্শন লাভ করে না৷ 15 দেখো, কেউ য়েন ঈশ্বরের অনুগ্রহ থেকে বঞ্চিত না হও৷ দেখো তোমাদের মধ্যে য়েন তিক্ততার শেকড় না গজিয়ে ওঠে৷ তোমাদের মধ্যে এমন লোক থাকলে গোটা দলকে কলুষিত করতে পারে৷ 16 সাবধান, কেউ য়েন য়ৌন পাপে না পড়ে অথবা এষৌর মতো ঈশ্বর ভক্তি জলাঞ্জলি না দেয়৷ এষৌ ছিল জ্যেষ্ঠ পুত্র, সে তার পিতার সমস্ত কিছুর উত্তরাধিকারী ছিল; কিন্তু এক বেলার খাবারের জন্য সে নিজের জন্মাধিকার বিকিয়ে দিয়েছিল৷ 17 তোমরা তো জানো, পরে সে বাবার আশীর্বাদ পাওয়ার চেষ্টা করেও বিফল হল৷ তাঁর বাবা তাকে সেই আশীর্বাদ দিতে অস্বীকার করলেন, কারণ এষৌ তার ভুল শোধরাবার কোন পথ খুঁজে পেল না৷ 18 তোমরা এক নতুন স্থানে এসেছ; ইস্রায়েলীয়রা য়েমন এক পাহাড়ের সামনে এসেছিল এ স্থান তেমন নয়৷ তোমরা সেই পাহাড়ের কাছে আসো নি যা স্পর্শ করা য়েত না, যা আগুনে জ্বলছিলো, তোমরা এমন স্থানে আসোনি যা কিনা অন্ধকারময়, বিষাদময়, ঝঞ্ঝা বিক্ষুদ্ধ৷ 19 তারা য়েমন শুনেছিল তেমন তূরীধ্বনি অথবা সেই কন্ঠস্বর তোমরা শুনতে পাচ্ছ না, যা শুনে তারা মিনতি করেছিল য়েন আর কোন বাক্য তাদের কখনও শোনানো না হয়৷ 20 কারণ য়ে আদেশ তাদের দেওয়া হয়েছিল তা তারা সহ্য করতে পারল না৷ তাদের বলা হল, ‘যদি কোন কিছু, এমন কি কোন পশু পর্যন্ত পর্বত স্পর্শ করে, তাকে পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলতে হবে৷’ 21 সেই দৃশ্য এমন ভয়ঙ্কর ছিল য়ে মোশি বললেন, ‘আমি অত্যন্ত ভয় পেয়েছি আর কাঁপছি৷’ 22 কিন্তু তোমরা সেরকম কোন স্থানে আসো নি৷ য়ে নতুন স্থানে তোমরা এসেছ তা হল সিযোন পর্বত৷ তোমরা জীবন্ত ঈশ্বরের নগরী স্বর্গীয় জেরুশালেমে এসেছ৷ তোমরা সেই জায়গায় এসেছ য়েখানে হাজার হাজার স্বর্গদূতরা পরমানন্দে একত্রিত হয়৷ 23 তোমরা এসেছ ঈশ্বরের প্রথম জাতদের সভাস্থলে, যাদের নাম স্বর্গে লিখিত রয়েছে৷ যিনি সকলের বিচারকর্তা সেই ঈশ্বরের কাছে এসেছ৷ সিদ্ধিপ্রাপ্ত আত্মার সমাবেশে এসেছ৷ 24 তোমরা যীশুর কাছে এসেছ যিনি ঈশ্বরের কাছ থেকে তাঁর লোকদের জন্য নতুন চুক্তি এনেছেন৷ সেই ছেটানো রক্তের কাছে এসেছ যা হেবলের রক্ত থেকে উত্তম কথা বলে৷ 25 সাবধান, ঈশ্বর যখন কথা বলেন তা শুনতে অসম্মত হযো না৷ তিনি পৃথিবীতে যখন সতর্কবাণী উচ্চারণ করলেন যাঁরা তাঁর কথা শুনতে অসম্মত হল তারা রক্ষা পেল না৷ এখন ঈশ্বর স্বর্গ থেকে বলছেন, তাঁর কথা না শুনলে তোমাদের অবস্থা ঐ লোকদের থেকেও ভয়াবহ হবে একথা সুনিশ্চিত জেনো৷ 26 সেই সময় তাঁর কথায় পৃথিবী কেঁপে উঠেছিল৷ কিন্তু এখন তিনি প্রতিজ্ঞা করেছেন, ‘আমি আর একবার পৃথিবীকে কাঁপিয়ে তুলব৷ এমনকি স্বর্গকেও কাঁপিয়ে তুলব৷’ 27 ‘আর একবার’ এর অর্থ হল সমস্ত সৃষ্ট বস্তু যাদের নাড়ানো যায় তাদের তিনি দূর করে দেবেন, সুতরাং যা কিছু অনড় তা হবে চিরস্থাযী৷ 28 আমাদের কৃতজ্ঞ হওয়া উচিত কারণ আমরা একটা জগতকে পেয়েছি যাকে নাড়ানো যায় না৷ আমরা কৃতজ্ঞ চিত্তে ঈশ্বরের উপাসনা করব যাতে তিনি প্রীত হন৷ আমরা তাঁর উপাসনা করবো শ্রদ্ধা ও ভীতির সঙ্গে৷ 29 কারণ আমাদের ঈশ্বর সর্বগ্রাসী অগ্নিস্বরূপ৷
13:1 তোমরা পরস্পরকে সাথী খ্রীষ্টীয়ান হিসেবে ভালবেসে য়েও৷ 2 অতিথি সেবা করতে ভুলো না৷ অতিথি সেবা করতে গিয়ে কেউ কেউ না জেনে স্বর্গদূতদের আতিথ্য করেছেন৷ 3 যাঁরা বন্দী অবস্থায় কারাগারে আছেন তাঁদের সঙ্গে তোমরা নিজেরাও য়েন বন্দী এ কথা মনে করে তাঁদের কথা ভুলো না৷ যাঁরা যন্ত্রণা পাচ্ছে তাদের ভুলো না; মনে রেখো তোমরাও তাদের সঙ্গে সঙ্গে যন্ত্রণা পাচ্ছো৷ 4 বিবাহ বন্ধনকে তোমরা সবাই অবশ্য মর্য়াদা দেবে, যাতে দুটি মানুষের মধ্যে পবিত্র সম্পর্ক রক্ষিত হয়, কারণ যাঁরা ব্যভিচারী ও লম্পট, ঈশ্বর তাদের বিচার করবেন৷ 5 তোমাদের আচার ব্যবহার ধনাসক্তিবিহীন হোক৷ তোমাদের যা আছে তাতেই সন্তুষ্ট থাক কারণ তিনি বলেছেন,‘আমি তোমাকে কখনও ত্যাগ করবো না; আমি কখনও তোমাকে ছাড়বো না৷’দ্বিতীয় বিবরণ 31:6 6 তাই আমরা সাহসের সঙ্গে বলতে পারি,‘প্রভুই আমার সহায়; আমি ভয় করবো না; মানুষ আমার কি করতে পারে৷’গীতসংহিতা 118:6 7 তোমাদের নেতাদের কথা স্মরণ কর, যাঁরা তোমাদের কাছে ঈশ্বরের বাণী প্রচার করে গেছেন৷ তাঁদের জীবনের আদর্শ ও উত্তম বিষয়গুলির চিন্তা কর, ও তাঁদের য়ে বিশ্বাস ছিল তার অনুসারী হও৷ 8 যীশু খ্রীষ্ট কাল, আজ আর চিরকাল একই আছেন৷ 9 নানাপ্রকার অদ্ভুত সব শিক্ষার দ্বারা বিপথে চলে য়েও না৷ হৃদয়কে ঈশ্বরের অনুগ্রহে শক্তিমান করো তবে খাওয়ার নিয়মকানুন পালনের দ্বারা নয় কারণ যাঁরা খাদ্য়াভ্যাসের খুঁটিনাটি মেনে চলেছে তার কোনও সুফলই তারা পায় নি৷ 10 আমাদের এক নৈবেদ্য আছে৷ য়ে যাজকরা পবিত্র তাঁবুতে উপাসনা করেন তাঁদের সেই নৈবেদ্য ভোজন করার কোন অধিকার নেই৷ 11 মহাযাজক পশুদের রক্ত নিয়ে মন্দিরের মহাপবিত্রস্থানে য়েতেন পাপের বলি হিসেবে; কিন্তু পশুদের দেহগুলি শিবিরের বাইরে পুড়িয়ে ফেলা হত৷ 12 ঠিক সেই মতোই যীশু নগরের বাইরে দুঃখভোগ করলেন৷ যীশু বলি হলেন য়েন তাঁর নিজের রক্তে তাঁর লোকদের পবিত্র করতে পারেন৷ 13 তাই আমাদেরও ঐ শিবিরের বাইরে যীশুর কাছে যাওয়া উচিত৷ যীশু য়েমন লজ্জা, অপমান সহ্য করেছিলেন, আমাদের উচিত্ সেই লজ্জা, অপমান বহন করা, 14 কারণ এখানে আমাদের এমন কোন নগর নেই যা চিরস্থাযী; কিন্তু য়ে নগর ভবিষ্যতে আসছে আমরা তারই প্রত্যাশায় রয়েছি৷ 15 তাই যীশুর মাধ্যমে আমরা ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে স্তবস্তুতি উতসর্গ করতে য়েন বিরত না হই৷ সেই বলিদান হল স্তব স্তুতি, যা আমরা তাঁর নাম স্বীকারকারী ওষ্ঠাধরে করে থাকি৷ 16 অপরের উপকার করতে ভুলো না৷ যা তোমার নিজের আছে তা অপরের সঙ্গে ভাগ করে নিতে ভুলো না, কারণ এই ধরণের বলিদান উত্সর্গে ঈশ্বর প্রীত হন৷ 17 তোমাদের নেতাদের আদেশ মেনে চলো, তাঁদের কর্তৃত্ত্বের অধীন হও, কারণ তোমাদের আত্মাকে নিরাপদে রাখার জন্য তাঁরা সতর্ক দৃষ্টি রাখছেন৷ তাঁদের কথা মেনে চলো কারণ তাঁদের এব্যাপারে হিসেব নিকেশ করতে হবে, যাতে তাঁরা আনন্দে এই কাজ করতে পারেন, যন্ত্রণা ও দুঃখ নিয়ে নয়৷ তাঁদের কাজকে কঠিন করে তুললে তোমাদের লাভ হবে না৷ 18 আমাদের জন্য প্রার্থনা করো৷ আমরা নিশ্চয় করে বলতে পারি য়ে, আমাদের শুদ্ধ বিবেক আছে; আর জীবনে যা কিছু করি তা শ্রেষ্ঠ উদ্দেশ্য নিয়ে করি৷ 19 আমি তোমাদের বিশেষভাবে এই প্রার্থনা করতে বলছি য়ে, আমি য়েন শিগ্গির তোমাদের কাছে ফিরে য়েতে পারি৷ এটাই আমি অন্য সব কিছু থেকে বেশী করে চাইছি৷ 20 শান্তির ঈশ্বর যিনি মৃতদের মধ্য থেকে আমাদের প্রভু যীশুকে ফিরিয়ে এনেছেন, রক্তের মাধ্যমে শাশ্বত চুক্তি অনুযাযী যিনি মহান মেষপালক, প্রার্থনা করি সেই ঈশ্বর য়েন তোমাদের প্রযোজনীয় সব উত্তম বিষয়গুলি দেন যাতে তোমরা তাঁর ইচ্ছা পালন করতে পার৷ আমি নিবেদন করি য়েন যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমেই তিনি তা সাধন করেন৷ যুগে যুগে যীশুর মহিমা অক্ষয় হোক৷ 21 22 প্রিয় ভাই ও বোনেরা, এই চিঠিতে আমি সংক্ষেপে য়ে উত্সাহজনক কথা তুলে ধরলাম তা ধৈর্য্য ধরে শুনবে৷ 23 তোমাদের জানাচ্ছি আমাদের ভাই তীমথিয় জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন৷ তিনি যদি শিগ্গির আসেন তবে আমি তাঁকে নিয়ে তোমাদের সঙ্গে দেখা করতে যাব৷ 24 তোমাদের নেতাদের ও ঈশ্বরের সকল লোককে আমাদের শুভেচ্ছা জানিও৷ যাঁরা ইতালী থেকে এখানে এসেছেন তাঁরা সকলে তোমাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন৷ 25 ঈশ্বরের অনুগ্রহ তোমাদের সকলের সহবর্তী হোক৷